বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও সোমবার শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন মহান মে দিবস পালিত হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ উপলক্ষে ছিল নানা আয়োজন।
শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক নীতি আদর্শ বজায় রেখে বাংলাদেশের কলকারখানায় উৎপাদন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করে রাজধানীতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষদের প্রতি শুভেচ্ছা জানান। এছাড়া নানা আয়োজনে সারা দেশের বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান দিবসটি পালন করেছে।
বাগেরহাট
দিবসটি উপলক্ষে এদিন সকালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অরিবিন্দু বিশ্বাসের নেতৃত্ব অনুষ্ঠিত র্যালিতে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
জেলার মোংলায় সকাল ১০টায় মোংলা বন্দর শ্রমিক কর্মচারী সংঘ চত্বর থেকে র্যালি বের হয়। এতে জাতীয় শ্রমিক লীগের মোংলা বন্দর আঞ্চলিক শাখা, মোংলা বন্দর শ্রমিক কর্মচারী সংঘ, মোংলা বন্দর যন্ত্রচালিত মাঝিমাল্লা সংঘ, মোংলা পোর্ট পৌরসভা রিক্সা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন ও মোংলা ওয়ার্কশপ ইউনিয়নের শ্রমিক-কর্মচারী এবং নেতৃবৃন্দরা অংশ নেন। পরে শ্রমিক-কর্মচারী সংঘ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় মে দিবসের আলোচনা সভা।
নড়াইল
নড়াইলে মহান মে দিবস পালনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে বিশাল শোভাযাত্রা বের করা হয়।
নওগাঁ
দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় নওগাঁ জেলা শহরের সরিষা হাটির মোড়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে জেলা শ্রমিক লীগের আয়োজনে পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। পরে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে নওগাঁ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জিলা স্কুল মাঠ থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ করে।
লালমনিরহাট
বেলা ১১টার দিকে লালমনিরহাট সরকারি হাই স্কুল মাঠ থেকে র্যালি শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে লালমনিরহাট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে গিয়ে শেষ হয়। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ উল্লাহ।
নেত্রকোণা
দিবসটি উপলক্ষে এদিন নেত্রকোণায় জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে নানান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা।
নাটোর
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নাটোরে শহরের কানাইখালী মাঠ থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভুঁঞার নেতৃত্বে শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন অংশ নেয়। পরে অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লাভলী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মে দিবস উপলক্ষে সকালে উপজেলার দয়ারামপুরে বকুল কনভেনশন হলে শতাধিক শ্রমজীবী নারীদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
রাঙামাটি
মহান মে দিবস ও শ্রমিক সংহতি দিবস উপলক্ষে রাঙামাটিতে জেলা শ্রমিক লীগের র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোক্তার আহমদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শামছুল আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার।
জামালপুর
মে দিবস উপলক্ষে সোমবার সকালে জামালপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি মালগুদাম মোড় থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বকুল তলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ ও জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি মশিউর রহমান বাবু।
কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে পতাকা উত্তোলন, র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন জেলায় গবাদি পশুর মধ্যে অ্যানথ্রাক্স (তড়কা) রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় রোগটির বিস্তার রোধ ও নিয়ন্ত্রণে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জরুরি ও সমন্বিত কার্যক্রম শুরু করেছে। অ্যানথ্রাক্স একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত জুনোটিক রোগ, যা গবাদি পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর, স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে গবাদি পশুর টিকাদান, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, উঠান বৈঠক, পথসভা, লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর গবাদিপশুর তড়কা রোগ প্রতিরোধে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন প্রকাশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করেছে। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে আক্রান্ত এলাকা পর্যবেক্ষণ, অসুস্থ পশু জবাই প্রতিরোধ এবং খামারের প্রতিটি পশুকে টিকার আওতায় আনতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
‘ওয়ান হেলথ’ কর্মসূচির আওতায় স্থানীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নিয়মিত উঠান বৈঠক ও প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করছেন। অসুস্থ পশু জবাই না করা, মৃত পশুকে খোলা স্থানে বা পানিতে না ফেলা, বরং গভীরভাবে মাটিচাপা দেওয়া এবং যেকোনো পশুজনিত অসুস্থতার ক্ষেত্রে দ্রুত নিকটস্থ ভেটেরিনারি হাসপাতাল বা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
রংপুর ও গাইবান্ধা জেলাকে অ্যানথ্রাক্সপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অতিসত্বর প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান (এলআরআই) রংপুর বিভাগে প্রায় ৩০ লাখ অ্যানথ্রাক্স টিকা সরবরাহ করবে, যার মধ্যে রংপুর ও গাইবান্ধা জেলাতেই ২০ লাখ টিকা প্রেরণ করা হবে।
রংপুর জেলার নয়টি উপজেলায় পীরগাছা (৫৩,৪০০), কাউনিয়া (৩৪,০০০), রংপুর সদর (২৬,৫০০), মিঠাপুকুর (৩৪,৫০০), গংগাচড়া (৪,৮০০), তারাগঞ্জ (৪,৩০০), বদরগঞ্জ (৫,০০০) ও পীরগঞ্জ (৫,০০০) এ পর্যন্ত মোট ১ লাখ ৬৭ হাজার গরুর শরীরে টিকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উঠান বৈঠক,পথসভা এবং প্রশিক্ষণ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলার ৩৬টি কসাইখানায় গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ৩৬টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া গবাদিপশুর শরীরে অ্যানথ্রাক্স টিকা প্রদানের জন্য ৩২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ২৬ হাজার ৪০০ গরুর শরীরে টিকা দেওয়া হয়েছে। আক্রান্ত এলাকায় দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মৃত গরু পুঁতে ফেলা, টিকাদান, মাইকিং, উঠান বৈঠক এবং লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং ৫টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আজ গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে দিনব্যাপী সংলাপ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গতকাল রোববার ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় টিভি মিডিয়া ও দুপুর আড়াইটায় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে বসবে সংস্থাটি। দুদফায় ৪০ জনের মতো গণমাধ্যম প্রতিনিধির সংলাপে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
৭ অক্টোবর নারী নেত্রী ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার কথা রয়েছে ইসির। এরপর জুলাই যোদ্ধা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও বসবে ইসি। ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, সংলাপে উঠে আসা মতামত তার কমিশন বাস্তবায়ন করবে।
এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ভোটের সংলাপ শুরু করে ইসি। ওইদিন সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সংলাপ শুরুর দিন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অর্ধেকেরও বেশি অংশ নেননি। ইসির প্রথম দিনের সংলাপে মোট ৩০ জন করে অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
জাতীয় জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তির জন্য নির্বাচনের আগে গণভোট চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তির জন্য গণভোটের বিষয়ে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল একমত। তবে তাদের দল গণভোট নির্বাচনের আগেই চায়।
গতকাল রোববার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান–সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চতুর্থ দিনের আলোচনা চলছে। এই আলোচনার বিরতিতে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন হামিদুর রহমান আযাদ।
গণভোট কবে হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘জনগণ গণভোটে অভ্যস্ত নয়। আমরা মনে করি, জাতীয় নির্বাচনকে কোনো ধরনের সমস্যা করা ছাড়া নভেম্বর অথবা ডিসেম্বরে এটা হতে পারে। তফসিলের আগেও হতে পারে। গণভোট হয়ে গেলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে কোনো ধরনের বাধা নেই। জনগণকে একটা জটিল অবস্থায় ফেলে না দিয়ে সহজভাবে এগোলে আমরাও বাঁচি, জাতিও বাঁচে।’
জামায়াতের এই নেতা বলেন, গণভোট হলে এটা কখনো চ্যালেঞ্জ করতে গেলে টিকবে না। পার্লামেন্ট এটাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না।
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘গণভোটের রেজাল্ট যদি আমাদের বিপক্ষেও যায়, আমরা এখানে ছাড় দেব। আমরা জনগণের সিদ্ধান্তকে মেনে নেব। এটি নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের এই নেতা বলেন, গণভোট আগে না পরে, এটা আলোচনার সুযোগ আছে। সবাই গণভোটের পক্ষে একমত হয়েছে। গণভোট আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে একটা নিদের্শনা দিতে হবে। এরপর কমিশন গণভোটের আয়োজন করতে পারবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও জামায়াতের আইনজীবী শিশির মনির।
দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৯ জনের মৃত্যু এবং ১ হাজার ৪২ জনের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। চলতি বছর মশাবাহিত রোগটিতে এক দিনে মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ।
এর আগে ২১ সেপ্টেম্বরও ৯ জনের মৃত্যু তথ্য দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আর সর্বোচ্চ ৮৪৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হন ২৮ সেপ্টেম্বর।
শুক্রবার ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় ঢাকার বাইরের অনেক জেলার তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখায় আসে না। রোববার এসব তথ্য আসে, ফলে প্রায়ই রোববার হাসপাতালে ভর্তি রোগী এবং মৃতের সংখ্যা বেশি হয়।
গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, এ নিয়ে চলতি বছর ৪৯ হাজার ৯০৭ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন। আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১২ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সবশেষ যে ৯ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন, ডিএনসিসি কোভিড-১৯ হাসপাতালে একজন, মিটফোর্ড হাসপাতালে একজন এবং কক্সবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে একজন চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এদের মধ্যে চারজন পুরুষ, পাঁচজন নারী। তাদের বয়স ১৭ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে।
এ বছর ডেঙ্গু নিয়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হন সেপ্টেম্বরে; মৃত্যুও ছিল সর্বোচ্চ। গেল মাসে ১৫ হাজার ৮৬৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন; মৃত্যু হয় ৭৬ জনের। অক্টোবরের চার দিনে হাসপাতালে ভর্তি হলেন ২ হাজার ৫৬৫ জন; আর মৃত্যু হলো ১৪ জনের।
এর আগে জুলাই মাসে ১০ হাজার ৬৮৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এ ছাড়া জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে মাসে ১৭৭৩ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫১ জন এবং অগাস্টে ১০ হাজার ৪৯৬ জন রোগী ভর্তি হন।
জুলাই মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪১ জনের মৃত্যু হয়। তার আগে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে সাতজন, মে মাসে তিনজন, জুনে ১৯ জন ও অগাস্টে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়। মার্চ মাসে কারো মৃত্যুর তথ্য দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩২২ জন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার।
এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে ১৯৮ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৪ জন, খুলনা বিভাগে ৭২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৮২ জন, রংপুর বিভাগে ২৩ জন, বরিশাল বিভাগে ১৯৫ জন এবং সিলেট বিভাগে ৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
ডেঙ্গু নিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২ হাজার ৪৩৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৭৮৭ জন, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ৬৫২ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে থেমে থেমে রোদ ও বৃষ্টির এমন আবহাওয়া এডিস মশার বংশ বিস্তারে উপযুক্ত বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত দেন। পাশাপাশি পূজার ছুটিতে বাসাবাড়ি, অফিসে বংশবিস্তারের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ফলে চলতি অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।
বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম পূজা ধনসম্পদ এর দেবী ‘লক্ষ্মীপূজা’ আজ। শাস্ত্রমতে, ধনসম্পদ, সৌভাগ্য ও সৌন্দর্যের দেবী লক্ষ্মী। তিনি বিষ্ণুর পত্নী, বিষ্ণুর শক্তিরও উৎস।
লক্ষ্মীর বাহন প্যাঁচা। বিষ্ণু রাম ও কৃষ্ণ রূপে অবতার গ্রহণ করলে, লক্ষ্মী সীতা ও রাধা রূপে তাদের সঙ্গিনী হন। কোজাগরী পূর্ণিমা রাতে দেবী লক্ষ্মী ধনধান্যে ভরিয়ে দিতে ভক্ত গৃহে আসেন। প্রাচীনকাল থেকেই রাজা-মহারাজা, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ গৃহস্থ সবাই দেবী লক্ষ্মীর পূজা দিয়ে আসছেন। শারদীয় দুর্গোৎসব শেষে প্রথম পূর্ণিমা তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই পূজা করে থাকেন।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, আজ বেলা ১১টা ৫৪ মিনিট থেকে পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে। কাল সকাল ১০টা ১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডে এই তিথি শেষ হবে।
লক্ষ্মীকে নিয়ে বাংলার জনসমাজে বিভিন্ন জনপ্রিয় গল্প প্রচলিত আছে। এই গল্পগুলো পাঁচালি আকারে লক্ষ্মীপূজার দিন পাঠ করা হয়। একে লক্ষ্মীর পাঁচালি বলা হয়।
লক্ষ্মীপূজার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো- সিঁদুর, ঘট, ধান, মাটি, আম্রপল্লব, ফুল, দূর্বা, তুলসীপাতা, হরীতকী, চন্দন, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য, আতপ চাল ও জল। লক্ষ্মীপূজায় মঙ্গলঘট, ধানের ছড়ার সঙ্গে গৃহস্থের আঙিনায় শোভা পায় চালের গুঁড়োর আলপনায় লক্ষ্মীর ছাপ। এ উপলক্ষে রমণীরা উপবাস ব্রত পালন করেন।
লক্ষ্মী পূজায় রাত্রি জাগরণ করা হয়। কোজাগরী অর্থাৎ কে জাগরী বা কে জেগে আছো। শাস্ত্র মতে এই রাতে লক্ষ্মী সকলের বাড়িতে যান। যে গৃহের দরজা বন্ধ থাকে ও গৃহস্থরা ঘুমিয়ে থাকেন, সেখান থেকে লক্ষ্মী ফিরে আসেন। এ কারণে এই লক্ষ্মী পূজাকে কোজাগরী বলা হয় এবং রাত্রি জাগরণের নিয়ম রয়েছে। বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরে ঘরেই দেবী লক্ষ্মীর পূজা হয়ে থাকে। গৃহস্থরা প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীর পূজা করেন।
হঠাৎ অতিবৃষ্টির কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলের চারটি প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে এবং এতে বন্যার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র গতকাল রোববার এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটির বিশেষ বার্তায় বলা হয়েছে, রোববার সকাল ৯টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত অথবা এ সময়ের কাছাকাছি সময়ে দেশের মধ্যে এবং উজানের অঞ্চলে বিচ্ছিন্নভাবে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।
বন্যার ঝুঁকি রয়েছে বিশেষ করে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলগুলোতে, যেখানে পানির স্তর দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় এবং ভারতের উজানের অংশে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের পঞ্চগড়ে ১১৮ মিলিমিটার, নীলফামারীর ডালিয়ায় ৮৫ মিলিমিটার এবং কুড়িগ্রামের পাটেশ্বরীতে ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে ২৬১ মিলিমিটার, কোচবিহারে ১৯০ মিলিমিটার, জলপাইগুড়িতে ১৭২ মিলিমিটার এবং শিলিগুড়িতে ১৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
এ ছাড়া অরুণাচল প্রদেশের পাসিঘাটে ৮৯ মিলিমিটার এবং সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জনসাধারণকে সতর্ক করে বলেছে, নদীসংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত মানুষ পানির দ্রুত বৃদ্ধি ও বন্যার ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে জরুরি প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বলা হয়েছে, যাতে প্রয়োজন হলে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো যায়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে এক ধরনের রাজনৈতিক ঐক্যে পৌঁছেছে দলগুলো। এটি বড় ধরনের অর্জন। তবে গণভোটের সময়সূচি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে এখনো কিছু মতভেদ রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল রোববার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, "জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে বলে মনে করি। ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, তাদের সম্মতির জন্য একটি গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছেন।’
গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দুপুর পৌনে ১২টায় শুরু হয়ে মাঝে এক ঘণ্টার বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলা সংলাপের উদ্দেশ্য ছিল ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নির্ধারণ, বিশেষ করে সংবিধানসংক্রান্ত সংস্কারের সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য বড় রকমের অর্জন এবং একটি বড় রকমের পদক্ষেপ এবং একটি প্রথম পদক্ষেপ। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী, অন্যান্য বিষয়গুলোতেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই ঐক্যগুলো তুলতে পারব।
তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে আইনসভা তৈরি হবে, সেই আইনসভা যেন মৌলিক সাংবিধানিক সংস্কারগুলো করতে পারে এবং তাকে টেকসই করতে পারে, এজন্য এই আইনসভাকে চিহ্নিত করা বা আলাদা বৈশিষ্ট্য দেয়া দরকার ।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি জানান, এ বিষয়ে ইতোপূর্বে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এখন অনেকে এ বিষয়ে কিছুটা সরে আসছেন। অধিকাংশ দলই এখন এরকম মত দিচ্ছে যে ১০৬ অনুচ্ছেদের আওতায় সুপ্রিম কোর্টের মতামত প্রয়োজন নাও হতে পারে। এ জন্য দলগুলোকে ধন্যবাদ। আশা করি, একটি সুনির্দিষ্ট সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দিতে পারব। প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, আমরা ১৫ অক্টোবরের মধ্যে একটি মিমাংসায় আসতে পারব।
তিনি জানান, জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার বিষয়ে তিন চতুর্থাংশ দলের কাছে নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। অনেকে নাম দিয়েছেন, অনেকে এখনো দেননি। দ্রুত নাম দিতে তিনি দলগুলোকে অনুরোধ করেন।
দুয়েক দিনের মধ্যে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আবারও বৈঠকে বসবে কমিশন বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, আলোচনায় অংশ নেওয়া ৩০টি রাজনৈতিক দলের তিন-চতুর্থাংশই ইতোমধ্যে সনদে সই দেওয়ার জন্য তাদের প্রতিনিধিদের নাম কমিশনে পাঠিয়েছে।
অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, কমিশনের মেয়াদ ১৫ অক্টোবরের পর বাড়ানোর প্রয়োজন তারা আর দেখছেন না।
তিনি আরও জানান, রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গে কমিশনের পরবর্তী বৈঠক হবে আগামী ৮ অক্টোবর। এছাড়া জুলাই সনদের বাস্তবায়নসংক্রান্ত সর্বশেষ প্রস্তাবের আইনি ও সাংবিধানিক কাঠামো পরিষ্কার করতে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সঙ্গে আলাদা বৈঠকের পরিকল্পনাও রয়েছে।
জ্বর হওয়ার সাথে সাথে সবাইকে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মঈনুল আহসান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, ‘সকল জ্বরের রোগীকে জ্বর হওয়ার সাথে সাথে নিকটস্থ হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো এবং ডেঙ্গু রোগ শনাক্ত হলে অনতিবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’
মঈনুল আহসান বলেন, এক দিনে ডেঙ্গু রোগে ৯ জনের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। পর্যালোচনায় দেখা যায় ৯ জনের মধ্যে ৭ জন হাসপাতালে ভর্তির দিনই মৃত্যুবরণ করেছেন।
মূলত হাসপাতালে আসতে দেরি করার কারণে ডেঙ্গু রোগ জটিল আকার ধারণ করেছিল বিধায় তাদের চিকিৎসা দেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ ছিল না। বাকি ২ জনের ১ জনও ভর্তির পরদিনই মৃত্যুবরণ করেছেন। দেরিতে হাসপাতালে বা চিকিৎসকের কাছে উপস্থিত হওয়ার কারণে জটিল রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া দুরূহ হয়ে পড়ছে।
ডেঙ্গু চিকিৎসার বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ অত্যন্ত সতর্ক ও তৎপর রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সকল হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার পর্যাপ্ত কিট, স্যালাইন এবং ওষুধ মজুত আছে।
তবে মৃত্যু কমানোর জন্য একইসাথে দ্রুত ডেঙ্গু শনাক্তকরণ, গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসাদান এবং মশক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর হওয়া প্রয়োজন। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সরকারি অফিসগুলোকে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক থেকে সরিয়ে আনতে সচিবালয়কে দিয়েই যাত্রা শুরু করা হয়েছে।
নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে সচিবালয় সম্পূর্ণরূপে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক মুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
রোববার বাংলাদেশ সচিবালয়ে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, পানির বোতলসহ একবার ব্যবহার্য অন্যান্য প্লাস্টিকের ব্যবহার ডিসেম্বরের মধ্যে বন্ধ করা হবে। দেশে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক আইনত নিষিদ্ধ না হলেও, সরকার এটিকে নিরুৎসাহিত করছে। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দূতাবাস ও বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ক্যাম্পাসকে প্লাস্টিকমুক্ত ঘোষণা করেছে।
এর আগে, সকালে সচিবালয়ের ২ ও ৫ নম্বর প্রবেশপথে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বাস্তবায়ন কার্যক্রম মনিটরিং করেন।
এ সময় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্লাস্টিক ব্যাগ ও ফাইল সংগ্রহ করে তাদের কাপড়ের বিকল্পে ব্যাগ সরবরাহ করা হয়।
সচিবালয়ের ভেতরে সচেতনতামূলক পোস্টার, বোর্ড ও স্ট্যান্ডি পরিদর্শনের পাশাপাশি পর্যটন করপোরেশনের ক্যাফেটেরিয়া ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্যান্টিনও ঘুরে দেখেন।
এছাড়া সচিবালয়ের সব প্রবেশপথে পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিকভাবে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বহন রোধে তল্লাশি চালান।
প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের প্রতিনিধিদল।
আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারা প্রবারণা পূর্ণিমার মাহাত্ম্য বর্ণনা করে প্রধান উপদেষ্টাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বিহার পরিদর্শনেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
এসময় রাজধানীর উত্তরায় বৌদ্ধদের শেষকৃত্যের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ।
বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিষয়টি অবহিত করার পর ১০ দিনের মধ্যে শ্মশানের জন্য স্থান বরাদ্দ করে দেওয়া হয়েছে। এটা ইতিহাসে অনন্য।
ঢাকায় বৌদ্ধধর্মের কেউ মারা গেলে শেষকৃত্যের জন্য বহু পথ পারি দিয়ে চট্টগ্রামে যেতে হতো। এখন মৃত্যুর পরে একটা জায়গা হলো।’
বৈঠকে এ বছর কঠিন চীবর দান উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পর্কেও প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক সহযোগিতার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ।
পাশাপাশি, তীর্থযাত্রার জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনা, বৌদ্ধ পন্ডিত, ধর্মগুরু ও দার্শনিক অতীশ দীপঙ্করের নামে সরকারিভাবে একটি জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন দাবির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের অধ্যক্ষ বুদ্ধপ্রিয় মহাথের, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের ভিক্ষু কল্যাণ জ্যোতি, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমা, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির ঢাকা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব জয় দত্ত বড়ুয়া এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া, মং হলা চিং, সুশীল চন্দ্র বড়ুয়া, অধ্যাপক ববি বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া ও রাজীব কান্তি বড়ুয়া।
পাশাপাশি ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসময় উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস
ধর্ষণের অভিযোগ তুলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করা এবং শারদীয় দুর্গাপূজার মণ্ডপে অসুরের মুখে দাড়ি লাগিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চক্রান্তের পেছনে ফ্যাসিস্ট দোসরদের মদদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিস্ট ও তাদের সহযোগীরা কয়েকটি পূজামণ্ডপে অসুরের মুখে দাড়ি লাগিয়ে ধর্মীয় বিভেদ, সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও সহিংসতা সৃষ্টির পায়তারা করেছিল। এ ঘটনায় কিছু ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীদেরও ইন্ধন ছিল।
তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী একটি দেশে দূর্গাপূজার প্রতিমা তৈরির সময় আমাদের প্রধান উপদেষ্টাকে যেভাবে উপস্থাপনের সংবাদ পাওয়া গেছে, অসুরের মুখের দাড়ি লাগিয়ে দেওয়ার কাজটির মধ্যে তারই যোগসূত্র দেখা যাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা, গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের কড়া নজরদারি এবং দূর্গাপূজা উদযাপনের জন্য গঠিত পূজমণ্ডপ কমিটির সহযোগিতাসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতায় কুচক্রীদের চক্রান্ত নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে। গতবারের ন্যায় এবারও সারাদেশে শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পূজামণ্ডপে অসুরের মুখে দাড়ি লাগানোর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ বছর শারদীয় দুর্গাপূজায় সারাদেশে ৭৯৩টি পূজামণ্ডপে অসুরের মুখে দাড়ি লাগানো হয়েছে। এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে এত তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে, মেডিকেল রিপোর্টে সে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ পাহাড়ের সাধারণ জনগণের সহযোগিতায় এ ঘটনা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে মোকাবিলা করা সক্ষম হয়েছে। ইতোমধ্যে পার্বত্য এলাকায় অবরোধ ও ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ব্রিফিংয়ের সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি ও আইজিপি বাহারুল আলম উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস
ফাঁকি দেয়া রাজস্ব পুনরুদ্ধার কার্যক্রমকে অধিকতর গতিময় করে কর ফাঁকি প্রতিরোধের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মাঠ পর্যায়ের কর অঞ্চলসমূহের Intelligence & Investigation Cell (IIC) এর কার্যক্রম জোরদার করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর অডিট, ইন্টেলিগেন্স এন্ড ইনভেস্টিগেশন) এর দপ্তর হতে জারীকৃত উক্ত নির্দেশনায় প্রতিটি কর অঞ্চল কর্তৃক Intelligence & Investigation টিম গঠন, টিমসমূহের কার্য পদ্ধতি, টিমের সুপারিশ প্রণয়নের ভিত্তি এবং ফাঁকি দেয়া কর পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণের জন্য কমিটির অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।
বিভিন্ন প্রকারের গোয়েন্দা তথ্য, কর ফাঁকির অভিযোগ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য, আয়কর নথি ও বিভিন্ন রেজিস্টারে ঘষা-মাজা বা কাটা-ছেঁড়া, অস্বাভাবিক পরিমান করমুক্ত আয় প্রদর্শন, করযোগ্য আয় এবং পরিশোধিত করের তুলনায় সম্পদ বিবরণীতে অস্বাভাবিক পরিমান নীট সম্পদ প্রদর্শন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট টিম অনুসন্ধান ও তথ্য বিশ্লেষণ কার্যক্রম শুরু করবে।
অনুসন্ধান পর্যায়ে কর ফাঁকির সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট টিম রাজস্ব পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে Intelligence & Investigation কমিটির অনুমোদনের জন্য প্রতিবেদন দাখিল করবে। রাজস্ব ফাঁকির সুস্পষ্ট তথ্য-উপাত্ত থাকলে সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলের Intelligence & Investigation কমিটি রাজস্ব পুনরুদ্ধারের আইনি কার্যক্রম গ্রহণের জন্য অনুমোদন প্রদান করবে।
প্রতিটি কর অঞ্চলকে মাসিক ভিত্তিতে নির্ধারিত ছকে তথ্য-উপাত্ত সন্নিবেশ করে Intelligence & Investigation কার্যক্রম হতে সৃষ্ট অতিরিক্ত দাবি এবং অতিরিক্ত দাবী হতে কর আদায়ের বিস্তারিত তথ্য পরবর্তি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রেরণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
Intelligence & Investigation Cell এর কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে ফাঁকি দেয়া রাজস্ব পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে, কর ফাঁকি দেয়ার প্রবনতা হ্রাস পাবে এবং সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ কর সংস্কৃতির বিকাশ লাভ করবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
-জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী বসতি মেলা শুরু হচ্ছে।
আগামী ৬ ও ৭ অক্টোবর ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের লবীতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউক আয়োজিত এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, এ বসতি মেলায় ৬০টি স্টলে আবাসন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবাগুলো প্রদর্শন করবে।
মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ০৮টা পর্যন্ত চলবে। মেলা প্রাঙ্গণ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।