প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকৌশলীদের দেশের উন্নয়নের মূল শক্তি হিসেবে অভিহিত করে তাদের বাংলাদেশের বিদ্যমান উন্নয়নের ধারাকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্বে থাকায় বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সবাই আন্তরিক থাকবেন যাতে আমরা উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী শনিবার রাজধানীর আইইবি প্রাঙ্গণে ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (আইইবি) ৬০তম কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
দেশের জনগণের উন্নয়নে প্রকৌশলীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা (প্রকৌশলী) দেশের উন্নয়নের মূল শক্তি।’
‘বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে এবং আপনাদের (প্রকৌশলী) কাছে এটাই আমার একমাত্র চাওয়া। ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশের উন্নয়নের যাত্রা কেউ ঠেকাতে পারবে না’, বলেন সরকারপ্রধান।
২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডেল্টা প্লান-২১০০’ বাস্তবায়ন হবে যাতে দেশের কেউ আর ভোগান্তির শিকার না হয় এবং এতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম একটি সম্মানজনক ও উন্নত জীবন পাবে।’
তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, আমাদের সরকার কখনোই কোনো অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে না।
সরকারপ্রধান জানান, যে বিষয়টির ওপর তিনি সর্বদা জোর দেন তা হল কোন পরিকল্পনা দেশের জনগণের জন্য সর্বোত্তম সুবিধা বয়ে আনবে এবং সরকার তা থেকে আয় করতে সক্ষম হবে।
‘মেগা প্রকল্প নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু প্রকল্পগুলো শেষ হলেই এর সুফল সাধারণ মানুষ ভোগ করছে।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, যারা এসব মেগা প্রকল্পের সমালোচনা করেন, তারা কী বলতে চান।
তিনি বলেন, ‘আমরা যে প্রকল্পই নিই না কেন, প্রথমেই আমরা ভাবি দেশের মানুষ কতটা উপকৃত হবে। আর সেই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কী রিটার্ন হবে এবং কত দ্রুত সেটা আসবে।’
শেখ হাসিনা জানান, তিনি কখনোই কোনো দেশ বা কোনো সংস্থার দেয়া বিপুল পরিমাণ অর্থের কোনো প্রকল্প গ্রহণ করেন না, যা দেশ ও জনগণের জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনে না।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের (প্রকৌশলীদের) অবহিত করতে চাই এবং আমি এটা কখনোই মেনে নেব না। কারণ, আমি সেটাই করবো, যা আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার যে উন্নয়ন করেছে তা রাজধানীকেন্দ্রিক নয়। আমরা গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত উন্নয়ন করেছি। সরকার বিদুৎ সরবরাহ, যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়ন এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হওয়ায় গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে অভিবাসনের প্রবণতা কমেছে।’
সারাদেশে শতাধিক অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বিচারে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে দেয়া হবে না। আমরা শিল্পায়নের জন্য বিশেষ অঞ্চল সৃষ্টি করেছি- যেখানে সব ধরনের সেবা পাওয়া যাবে। খাদ্য উৎপাদন অব্যহত রাখতে আমাদের আবাদী জমিকে রক্ষা করতে হবে।’
তিনি দেশে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও কৃষিখাতে দীর্ঘ সময় ধরে ভর্তুকি দেয়া অব্যাহত না রাখার বিষয়ে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমাদের এই ভর্তুকির পরিমাণ কমাতে হবে। এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে।’
আইইবির সভাপতি প্রকৌশলী মো. নজরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাত হোসেন (শিবলু)।
অনুষ্ঠানে আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোল্লা মো. আব্দুল হোসেন স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অনারারি সেক্রেটারি প্রকৌশলী কাজী খাইরুল বাশার অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের ওপর গানসহ একটি ভিডিও প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন স্তরের প্রকৌশলী, কেন্দ্র, উপ-কেন্দ্র, প্রকৌশল বিভাগ ও এএমআরই বিভাগের স্নাতকদের হাতে পুরস্কার (স্বর্ণপদক) ও সনদপত্র তুলে দেন।
প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের প্রতিনিধিদল।
আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারা প্রবারণা পূর্ণিমার মাহাত্ম্য বর্ণনা করে প্রধান উপদেষ্টাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বিহার পরিদর্শনেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
এসময় রাজধানীর উত্তরায় বৌদ্ধদের শেষকৃত্যের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ।
বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিষয়টি অবহিত করার পর ১০ দিনের মধ্যে শ্মশানের জন্য স্থান বরাদ্দ করে দেওয়া হয়েছে। এটা ইতিহাসে অনন্য।
ঢাকায় বৌদ্ধধর্মের কেউ মারা গেলে শেষকৃত্যের জন্য বহু পথ পারি দিয়ে চট্টগ্রামে যেতে হতো। এখন মৃত্যুর পরে একটা জায়গা হলো।’
বৈঠকে এ বছর কঠিন চীবর দান উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পর্কেও প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক সহযোগিতার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ।
পাশাপাশি, তীর্থযাত্রার জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনা, বৌদ্ধ পন্ডিত, ধর্মগুরু ও দার্শনিক অতীশ দীপঙ্করের নামে সরকারিভাবে একটি জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন দাবির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের অধ্যক্ষ বুদ্ধপ্রিয় মহাথের, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের ভিক্ষু কল্যাণ জ্যোতি, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমা, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির ঢাকা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব জয় দত্ত বড়ুয়া এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া, মং হলা চিং, সুশীল চন্দ্র বড়ুয়া, অধ্যাপক ববি বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া ও রাজীব কান্তি বড়ুয়া।
পাশাপাশি ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসময় উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস
ধর্ষণের অভিযোগ তুলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করা এবং শারদীয় দুর্গাপূজার মণ্ডপে অসুরের মুখে দাড়ি লাগিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চক্রান্তের পেছনে ফ্যাসিস্ট দোসরদের মদদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিস্ট ও তাদের সহযোগীরা কয়েকটি পূজামণ্ডপে অসুরের মুখে দাড়ি লাগিয়ে ধর্মীয় বিভেদ, সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও সহিংসতা সৃষ্টির পায়তারা করেছিল। এ ঘটনায় কিছু ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীদেরও ইন্ধন ছিল।
তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী একটি দেশে দূর্গাপূজার প্রতিমা তৈরির সময় আমাদের প্রধান উপদেষ্টাকে যেভাবে উপস্থাপনের সংবাদ পাওয়া গেছে, অসুরের মুখের দাড়ি লাগিয়ে দেওয়ার কাজটির মধ্যে তারই যোগসূত্র দেখা যাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা, গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের কড়া নজরদারি এবং দূর্গাপূজা উদযাপনের জন্য গঠিত পূজমণ্ডপ কমিটির সহযোগিতাসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতায় কুচক্রীদের চক্রান্ত নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে। গতবারের ন্যায় এবারও সারাদেশে শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পূজামণ্ডপে অসুরের মুখে দাড়ি লাগানোর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ বছর শারদীয় দুর্গাপূজায় সারাদেশে ৭৯৩টি পূজামণ্ডপে অসুরের মুখে দাড়ি লাগানো হয়েছে। এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে এত তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে, মেডিকেল রিপোর্টে সে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ পাহাড়ের সাধারণ জনগণের সহযোগিতায় এ ঘটনা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে মোকাবিলা করা সক্ষম হয়েছে। ইতোমধ্যে পার্বত্য এলাকায় অবরোধ ও ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ব্রিফিংয়ের সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি ও আইজিপি বাহারুল আলম উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস
ফাঁকি দেয়া রাজস্ব পুনরুদ্ধার কার্যক্রমকে অধিকতর গতিময় করে কর ফাঁকি প্রতিরোধের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মাঠ পর্যায়ের কর অঞ্চলসমূহের Intelligence & Investigation Cell (IIC) এর কার্যক্রম জোরদার করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর অডিট, ইন্টেলিগেন্স এন্ড ইনভেস্টিগেশন) এর দপ্তর হতে জারীকৃত উক্ত নির্দেশনায় প্রতিটি কর অঞ্চল কর্তৃক Intelligence & Investigation টিম গঠন, টিমসমূহের কার্য পদ্ধতি, টিমের সুপারিশ প্রণয়নের ভিত্তি এবং ফাঁকি দেয়া কর পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণের জন্য কমিটির অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।
বিভিন্ন প্রকারের গোয়েন্দা তথ্য, কর ফাঁকির অভিযোগ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য, আয়কর নথি ও বিভিন্ন রেজিস্টারে ঘষা-মাজা বা কাটা-ছেঁড়া, অস্বাভাবিক পরিমান করমুক্ত আয় প্রদর্শন, করযোগ্য আয় এবং পরিশোধিত করের তুলনায় সম্পদ বিবরণীতে অস্বাভাবিক পরিমান নীট সম্পদ প্রদর্শন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট টিম অনুসন্ধান ও তথ্য বিশ্লেষণ কার্যক্রম শুরু করবে।
অনুসন্ধান পর্যায়ে কর ফাঁকির সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট টিম রাজস্ব পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে Intelligence & Investigation কমিটির অনুমোদনের জন্য প্রতিবেদন দাখিল করবে। রাজস্ব ফাঁকির সুস্পষ্ট তথ্য-উপাত্ত থাকলে সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলের Intelligence & Investigation কমিটি রাজস্ব পুনরুদ্ধারের আইনি কার্যক্রম গ্রহণের জন্য অনুমোদন প্রদান করবে।
প্রতিটি কর অঞ্চলকে মাসিক ভিত্তিতে নির্ধারিত ছকে তথ্য-উপাত্ত সন্নিবেশ করে Intelligence & Investigation কার্যক্রম হতে সৃষ্ট অতিরিক্ত দাবি এবং অতিরিক্ত দাবী হতে কর আদায়ের বিস্তারিত তথ্য পরবর্তি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রেরণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
Intelligence & Investigation Cell এর কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে ফাঁকি দেয়া রাজস্ব পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে, কর ফাঁকি দেয়ার প্রবনতা হ্রাস পাবে এবং সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ কর সংস্কৃতির বিকাশ লাভ করবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
-জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী বসতি মেলা শুরু হচ্ছে।
আগামী ৬ ও ৭ অক্টোবর ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের লবীতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউক আয়োজিত এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, এ বসতি মেলায় ৬০টি স্টলে আবাসন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবাগুলো প্রদর্শন করবে।
মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ০৮টা পর্যন্ত চলবে। মেলা প্রাঙ্গণ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় অপরাধী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের আনুষ্ঠানিক তদন্ত শিগগিরই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আজ রোববার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে সম্প্রতি চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দিয়েছে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) নামে একটি রাজনৈতিক দল। তার ভিত্তিতে গুরুত্ব দিয়ে অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সুতরাং বলা যেতে পারে যে, এই মুহূর্তে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপরাধী সংগঠন হিসেবে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য প্রাথমিক তদন্তের কাজটা আমরা শুরু করতে যাচ্ছি। পুরোদমে শুরু হলে আমরা বলতে পারবো দলটির বিচারের মুখোমুখি হওয়ার ব্যাপারটা কতদূর রয়েছে। তবে অভিযোগটি এখন গুরুত্ব দিয়ে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করা হচ্ছে। খুব সহসাই আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, চলতি মাসেই হয়তো আমরা উল্লেখযোগ্য কিছু অগ্রগতি দেখতে পাবো। ইতিমধ্যে অনেকগুলো মামলার বিচার চলছে। বেশ কয়েকটি মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া মামলা সম্পর্কিত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এ সপ্তাহে ঘটবে। অনেক বড় বড় মামলার চার্জশিট দাখিল হবে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ও দাখিল হবে বলে আশা করছি।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আজ রোববার তাদের জাহাজ পৌঁছানোর কথা থাকলেও আরও দেরি হবে বলে জানিয়েছেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম। ছোট নৌকাগুলোর কাছাকাছি থাকতে গতি কমিয়ে দেওয়ায় এই দেরি হবে। তবে কোথায় বা কখন আটকানো হতে পারে, তা আগেভাগে বলা কঠিন বলেও জানান তিনি।
আজ রোববার বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম এসব কথা জানান।
পোস্টে শহিদুল আলম লেখেন, ‘শান্ত সমুদ্র আর দারুণ রোদ। গত রাতটা খোলা ডেকে ঘুমিয়েছি আমি। আজ আমাদের গাজায় পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু ছোট নৌকাগুলোর কাছাকাছি থাকতে গতি কমিয়ে দেওয়ায় এখন আরও দেরি হবে। তবে বিপদের এলাকা তার অনেক আগেই শুরু হয়, আর কোথায় বা কখন আমাদের আটকানো হতে পারে, তা আগেভাগে বলা কঠিন।’
শহিদুল আলম গাজা অভিমুখে থাকা কনশানস নৌযানে আছেন। কনশানস হলো আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) এবং থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি) নৌবহরের একটি জাহাজ।
এফএফসি হলো ইসরায়েলের অবরোধ ভাঙতে ও গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার’ যৌথ আয়োজক জোটগুলোর একটি।
শহিদুল আলম কনশানস নামের যে নৌযানটিতে অবস্থান করছেন, সেটিকে তিনি ওই বহরের সবচেয়ে বড় নৌযান বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি সবার শেষে (গত ৩০ সেপ্টেম্বর) ইতালি থেকে রওনা করেছিল। আর কনশানসের আগে ওই আটটি নৌযান রওনা করেছিল। এ ছাড়া আরও দুটি নৌকাও আগে ছিল। তবে ওই দুটি নৌকার অবস্থান এখনো নিশ্চিত নয়। কনশানস সবার শেষে রওনা করলেও এটির গতি বেশি হওয়ায় আগে রওনা করা আটটি নৌযানকে ছুঁয়ে ফেলেছে।
দুই বছর ধরে ইসরায়েল বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছে। এ সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করে আসছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭০ দজনের বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, অনেকে আটক ও কারাগারে বন্দী আছেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি হওয়া রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট জনগণের মতামত ছাড়াই করা হয়েছে। বন মন্ত্রণালয়কে চাপ প্রয়োগ করে বনভূমি ছাড়তেও বাধ্য করা হয়েছে।
রোববার সকালে রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেক ক্যাসলে রিজনাল ইনফ্র্যাসট্রাকচার মনিটরিং অ্যালাইয়েন্স কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শেষ এক দশকে ঋণ, মুদ্রাস্ফীতি আর ভুল বিনিয়োগ জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো যা কখনও শোধরানো হয়নি। জনগণের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বিদেশি বিনিয়োগ আসায় দেশের নিরাপত্তা, পরিবেশ, বন সব কিছুই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক ১৯ কর্মকর্তার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের মধ্যে রয়েছেন তিন সাবেক গভর্নর, বেশ কয়েকজন সাবেক ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তাসহ ভারতীয় দুই নাগরিক।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে দুদক এই তথ্য চায়। ওই চিঠিতে কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, দায়িত্বের পরিধি, কর্মস্থল ও সংশ্লিষ্ট তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা, নীতি শিথিলতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।
তালিকায় তিন সাবেক গভর্নর
তথ্য তলব করা কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রিজার্ভ চুরির সময় গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন ড. আতিউর রহমান। ঘটনার পর একই বছরের ১৫ মার্চ তিনি পদত্যাগ করেন।
এছাড়া সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান, এসএম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, আহমেদ জামাল এবং বিএফআইইউয়ের সাবেক প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাসের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। তালিকায় আরও রয়েছেন সাবেক নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা।
বর্তমান কর্মকর্তারাও তদন্তের আওতায়
বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান কর্মকর্তাদের মধ্যে রাজশাহী অফিসের নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক, আইসিটি বিভাগের দেবদুলাল রায়, কমন সার্ভিস বিভাগ-২ এর পরিচালক মো. তফাজ্জল হোসেন, বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ও অফিসার্স কাউন্সিলের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মসিউজ্জামান খান ও রাহাত উদ্দিনের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, মসিউজ্জামান খানের নাম দুবার উল্লেখ করা হয়েছে, তবে দুদক নিশ্চিত করেছে যে তিনি একই ব্যক্তি। মেজবাউল হক গত ১৪ সেপ্টেম্বর এক মাসের নোটিশে পদত্যাগ করেন।
দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, রিজার্ভ রক্ষণাবেক্ষণ এবং লেনদেন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত বিভাগগুলোর একাধিক কর্মকর্তা ওই সময় দায়িত্বে ছিলেন।
২০১৬ সালের রিজার্ভ চুরির ঘটনা
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে প্রায় ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো দুই কোটি ডলার ফেরত আসে তাৎক্ষণিকভাবে। ফিলিপাইনে স্থানান্তরিত আট কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি ডলার পরবর্তীতে ফেরত পাওয়া যায়। বাকি ছয় কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্ধারে এখনো ১২টি মামলা চলমান রয়েছে।
ঘটনার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট, আইটি, পেমেন্ট সিস্টেম ও অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং—এই চারটি বিভাগ সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল।
ভারতীয় দুই নাগরিকের তথ্যও তলব
দুদকের চিঠিতে ভারতীয় নাগরিক নীলা ভান্নান ও রাকেশ আস্তানার বিষয়েও তথ্য চাওয়া হয়েছে। নীলা ভান্নান রিজার্ভ চুরির আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে তিনটি ব্যাংকের লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য ‘সুইফট’ সংযোগের কাজ করেন। আর রিজার্ভ চুরির পর সাইবার নিরাপত্তা দুর্বলতা নিরূপণ ও ‘ফায়ারওয়াল’ ভেদ করে কীভাবে টাকা স্থানান্তর হলো তা যাচাই করতে রাকেশ আস্তানাকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তদন্তের অংশ হিসেবে সব তথ্য যাচাইয়ের পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে নবম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ।
রোববার (৫ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেল এ সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। এ দিন ট্রাইব্যুনালে তিনজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে, ২৫ সেপ্টেম্বর অষ্টম দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
ওই দিন জবানবন্দি দিয়েছেন তিন সাক্ষী। এর মধ্যে এক পুলিশ সদস্যও ছিলেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাদের জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন ১৭ জন।
ট্রাইব্যুনালে ওই দিন প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ান ও মামুনুর রশীদ।
১৪ আগস্ট সপ্তম দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনজন। এর মধ্যে দুজন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্য ছিলেন। তারা হলেন- কনস্টেবল অজয় কুমার ও কনস্টেবল আবদুর রহমান।
১১ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠ কার্যদিবসে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রাজধানীর নিউমার্কেটের দোকানের কর্মচারী মো. টিপু সুলতান ও নৌবাহিনীতে মালামাল সরবরাহকারী মো. মনিরুজ্জামান।
৭ সেপ্টেম্বর পঞ্চম দিনের মতো জবানবন্দি দেন তিনজন। এর মধ্যে একজন শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের মা সানজিদা খান দীপ্তি। বাকি দুজন হলেন- আনাসকে গুলি করতে দেখা প্রত্যক্ষদর্শী রাব্বি হোসেন ও ব্যবসায়ী আবদুল গফুর।
২১ আগস্ট চতুর্থ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। ওই দিন ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন শহীদ রাকিব হোসেন হাওলাদারের বাবা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও বড় ভাই রাহাত হাওলাদার। তারা দুজনই হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।
১৩ আগস্ট তৃতীয় দিনে সাক্ষ্য দেন শহীদ ইয়াকুবের মা রহিমা আক্তার, তার প্রতিবেশী চাচা শহীদ আহমেদ ও শহীদ মো. ইসমামুল হকের ভাই মহিবুল হক।
১২ আগস্ট দ্বিতীয় দিনে জবানবন্দি দিয়েছেন দুজন। এর মধ্যে একজন কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আঞ্জুয়ারা ইয়াসমিন ও আরেকজন শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদের বাবা শেখ জামাল হাসান।
১১ আগস্ট চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সূচনা বক্তব্য শেষে মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন শহীদ আনাসের বাবা সাহরিয়ার খান পলাশ। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১৪ জন জবানবন্দি দিয়েছেন।
এ মামলার গ্রেফতার চার আসামি হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।
পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।
গত ১৪ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।
চলতি বছরের প্রথম আট মাসে সারা দেশে ৫৪ নারী যৌন হয়রানি এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৫৪ কন্যাশিশু। একই সময়ে ৩৯০ কন্যাশিশু ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। আর আত্মহত্যা করেছে ১০৪টি শিশু। কন্যাশিশুর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতার চিত্র পর্যবেক্ষণবিষয়ক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।
গতকাল শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছে এডুকো বাংলাদেশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের আট মাসে ৩৪ জন শিশু অপহরণ ও পাচারের শিকার হয়েছে।
এর মধ্যে ১৮ জন কন্যাশিশুকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এই সময়ে ৮৩ জন কন্যাশিশু খুন হয়েছে এবং ৫০ জন কন্যাশিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে, যাদের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন তুলে ধরেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর সৈয়দা আহসানা জামান এ্যানি। তিনি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে অবশ্যই নারীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে, যাতে একজন নারী বা কন্যাশিশু যেকোনো সময়ে কোনো ধরনের সহিংসতার ভয় ছাড়াই ঘর-বাসা থেকে বের হতে পারেন এবং নির্বিঘ্নে পথ চলতে পারেন।
জানুয়ারি থেকে আগস্টের এই সময়ে মোট ৫৪ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। তবে ২০২৩ সালের তুলনায় কম। ২০২৪ সালের একই সময়ে ২৮ জন এবং ২০২৩ সালে ১১৭ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কন্যাশিশু ও নারীরা পথেঘাটে, যানবাহনে, বাজারে, জনবহুল স্থানে, এমনকি শিক্ষা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বাসাবাড়িতে হরহামেশা যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
সংকট থেকে উত্তরণে ১১টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে যৌন হয়রানি, উত্ত্যক্তকরণ ও নিপীড়ন রোধে সর্বস্তরের জন্য ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’ অনুমোদন; শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার সব ঘটনাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা; ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ এলে ধর্ষণের শিকার নারী ও কন্যার পরিবর্তে অভিযুক্ত ব্যক্তিকেই প্রমাণ করতে হবে যে সে এ ঘটনা ঘটায়নি, এ–সম্পর্কিত প্রচলিত আইনের বিধান সংশোধন করা; হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল গঠনের কঠোর নির্দেশনা মনিটরিংয়ের ভিত্তিতে নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন বিষয় রয়েছে।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি বদিউল আলম মজুমদারের সভাপতিত্বে এবং অপরাজেয় বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানুর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের পলিসি, অ্যাডভোকেসি, ইনফ্লুয়েঞ্জিং অ্যান্ড ক্যাম্পেইনের পরিচালক নিশাত সুলতানা, আইনজীবী ফাহমিদা রিংকী।
কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার বাংলাদেশের প্রতি অভিনন্দন বার্তা দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেছেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতি যেভাবেই পরিবর্তিত হোক না কেন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচটি নীতির ভিত্তিতে দুই দেশ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন এবং বাংলাদেশ ঐতিহ্যবাহী বন্ধু ও ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদানের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। উভয় পক্ষই পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সমান আচরণ এবং উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতার একটি চমৎকার উদাহরণ স্থাপন করেছে।
সি চিন পিং বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও বাংলাদেশ তাদের রাজনৈতিক পারস্পরিক আস্থা ক্রমাগত সুসংহত করেছে। উচ্চমানের বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তব সহযোগিতা ক্রমাগত প্রসারিত হয়েছে। দুই দেশের ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব আরও গভীর হয়েছে।
চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে সি চিন পিং
জানান, তিনি কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীকে ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার, পারস্পরিক উপকারী সহযোগিতা আরও গভীর করার, দুই দেশের জনগণের জন্য আরও বেশি সুবিধা প্রদান এবং বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নে বৃহত্তর অবদান রাখার সুযোগ হিসেবে গ্রহণের জন্য কাজ করতে প্রস্তুত।
এদিকে, পৃথক বার্তায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ ও চীন যৌথভাবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পারস্পরিক বিশ্বাস এবং স্থায়ী সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে একটি গভীর বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছে, যা দুই দেশের জনগণের জন্য বাস্তব সুবিধা বয়ে এনেছে।
তিনি বলেন, আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অভিন্ন সমৃদ্ধি বৃদ্ধিতে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে চীনের দীর্ঘমেয়াদী ও মূল্যবান সহায়তার জন্য বাংলাদেশ অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
তিনি আস্থা প্রকাশ করেন, দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও ফলপ্রসূ ফলাফল বয়ে আনবে।
অপরদিকে, কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীতে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং এবং বাংলাদেশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসও একে অপরকে অভিনন্দন বার্তা দিয়েছেন।
লি বলেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নয়নকে আমরা অত্যন্ত মূল্য দেই। ৫০তম বার্ষিকীকে উচ্চমানের বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা ত্বরান্বিত করার এবং চীন-বাংলাদেশ ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ হিসেবে গ্রহণের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত চীন।
ড. ইউনূস বলেন, গত ৫০ বছরে দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হয়েছে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্থিতিশীলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা ফলপ্রসূ ফলাফল এনে দিয়েছে, যা সত্যিই উদযাপনের যোগ্য।
তিনি আরও বলেন, ধারাবাহিক ও বৃহত্তর ফলাফল অর্জনের জন্য বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ওমরাহ পালন সবসময়ই মুসলিমদের জন্য স্বপ্নের সফর। তবে ভিসা, হোটেল বুকিং ও পরিবহন ব্যবস্থাপনায় জটিলতা অনেক সময় ভ্রমণকারীদের বিপাকে ফেলে। অনেকে এজেন্টের ওপর নির্ভর করেন, আবার কেউ কেউ পর্যটক ভিসায় গিয়ে ওমরাহ পালন করে থাকেন। কিন্তু সম্প্রতি সৌদি আরব নতুন নিয়ম চালু করেছে, যা ভ্রমণ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খল করবে।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে খালিজ টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন থেকে ভিসা আবেদন থেকে শুরু করে হোটেল, পরিবহন সবকিছুই সরকারি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে করতে হবে। এমন বেশ কিছু শর্ত মানতে হবে ওমরাহ করতে ইচ্ছুক মুসল্লিদের।
১. ভিসার সময় হোটেল বুকিং বাধ্যতামূলক
এখন থেকে ভিসার আবেদন করার সময়ই হোটেল বুক করতে হবে। অনুমোদিত হোটেল মাসার সিস্টেম বা নুসুক অ্যাপের মাধ্যমে বেছে নিতে হবে।
আরব আমিরাত ভিত্তিক আসা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী কায়সার মাহমুদ বলেন, ‘হোটেল ও পরিবহণ ব্যবস্থা সৌদি আরবের ‘মাসার’ নামক ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত। এমনকি ট্যাক্সিও পোর্টালের মাধ্যমে বুক করতে হয়, যাতে শুধু অনুমোদিত পরিষেবা ব্যবহার করা যায়।’
২. আত্মীয়ের বাসায় থাকলে সৌদি আইডি লাগবে
পরিবার বা আত্মীয়ের বাসায় থাকার ক্ষেত্রে হোস্টের ইউনিফাইড সৌদি আইডি ভিসার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। সময় পরিবর্তন বা সফর পিছালেও একই আইডি সিস্টেমে হালনাগাদ করতে হবে।
৩. পর্যটক ভিসায় ওমরাহ নয়
এখন থেকে পর্যটক ভিসায় ওমরাহ পালন সম্ভব নয়। যারা চেষ্টা করবেন, তাদের থামিয়ে দেয়া হতে পারে এবং মদিনার রিয়াজুল জান্নাতেও প্রবেশ বন্ধ থাকবে।
৪. ওমরাহ ভিসা বাধ্যতামূলক
বাধ্যতামূলক ওমরাহ ভিসা সকল হজযাত্রীদের নুসুক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একটি ডেডিকেটেড ওমরাহ ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে, হয় ই-ভিসা হিসেবে অথবা অনুমোদিত অপারেটরদের মাধ্যমে প্যাকেজ বুকিং করে।
৫. কঠোর ভ্রমণসূচি নিয়ম
ভিসার সঙ্গে সফরসূচি জমা দিতে হবে, যা পরে পরিবর্তন বা স্থগিত করা যাবে না। নির্ধারিত সময়ের বেশি অবস্থান করলে জরিমানা দিতে হবে।
মাহমুদ বলেন,‘আপনি যদি অনুমোদিত পরিকল্পনার বাইরে আপনার অবস্থান বাড়াতে চান, তাহলে তা করা যাবে না। যদি ফেরার যাত্রা স্থগিত করা হয়, তাহলে এজেন্টদের ব্যক্তি প্রতি ৭৫০ রিয়াল থেকে শুরু করে জরিমানা করা হয় এবং এমনকি সিস্টেম ব্লকেজের সম্মুখীন হতে পারে।’
৬. কিছু দেশের জন্য ভিসা অন অ্যারাইভাল
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা বা শেনজেন দেশগুলোর ভিসাধারীরা শর্তসাপেক্ষে ভিসা অন অ্যারাইভাল পাবেন। শর্ত হলো, আগে এসব দেশে অন্তত একবার ভ্রমণ করতে হবে এবং এবং ভিসার মেয়াদ এক বছর হতে হবে।
৭. বিমানবন্দরে বুকিং যাচাই
আগমনের পর বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষ নুসুক বা মাসার সিস্টেমে থাকা হোটেল ও পরিবহন বুকিং যাচাই করবে। কোনো কিছু অনুপস্থিত থাকলে জরিমানা বা ভ্রমণে বাধা দেয়া হতে পারে।
৮. অনুমোদিত ট্যাক্সি ও পরিবহণ ব্যবহার বাধ্যতামূলক
পথচারী ট্যাক্সি বা যে কোনো গাড়ি নেওয়া যাবে না। শুধুমাত্র নুসুক অ্যাপের মাধ্যমে অনুমোদিত ট্যাক্সি, বাস বা ট্রেন ব্যবহার করতে হবে।
৯. হারামাইন ট্রেনের নির্দিষ্ট সময়
হারামাইন এক্সপ্রেস ট্রেন রাত ৯টার পর আর চলে না। তাই এ সময়ের পর আসলে আগে থেকেই অনুমোদিত পরিবহন বুক করতে হবে। অন্যথায় হজযাত্রীরা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
১০. নিয়ম ভাঙলে কড়া জরিমানা
যে কোনো নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য ভারি জরিমানা রয়েছে। নিয়ম ভঙ্গের জন্য কর্তৃপক্ষ হজযাত্রী এবং এজেন্ট উভয়ের উপরই বড় ধরনের জরিমানা আরোপ করতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২৫ সালের মানবপাচার (টিআইপি) বিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় স্তরে স্থান দেওয়া হয়েছে। দেশের শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন এবং বিশ্বব্যাপী অভিবাসনের চাপ সংশ্লিষ্ট চলমান চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও মানবপাচার মোকাবিলায় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য এবং টেকসই অগ্রগতির স্বীকৃতি এটি।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার মানবপাচার নির্মূলের সর্বনিম্ন মান সম্পূর্ণরূপে পূরণ না করলেও আগের তুলনায় এখন উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চলছে। বর্তমান সরকার পূর্ববর্তী প্রতিবেদনের সময়ের তুলনায় সামগ্রিকভাবে ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা প্রদর্শন করেছে। সে কারণে বাংলাদেশের অবস্থান এই তালিকায় দ্বিতীয় স্তরে।
প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশ মানবপাচার রোধে ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আন্তঃসংস্থা সমন্বয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে।
ভুক্তভোগী শনাক্তকরণ এবং সুরক্ষা পরিষেবা বৃদ্ধি, সম্মুখ সারির কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণ এবং আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ‘ন্যাশনাল রেফারেল মেকানিজম’ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রশংসা করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
সরকার ১ হাজার ৪৬২ জন পাচারের শিকারকে শনাক্ত করেছে। শনাক্ত হওয়াদের মধ্যে ১৪৪ জন যৌনকর্মী হিসেবে পাচারের শিকার হয়েছে এবং ২৮৫ জনকে জোরপূর্বক শ্রম দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৩৩ জন অন্যান্য ধরনের পাচারের শিকার হয়েছে। পূর্ববর্তী প্রতিবেদনে একই সময়ে ১ হাজার ২১০ জন ভুক্তভোগীকে শনাক্ত করা হয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের শনাক্ত করার পর সরকার তাদের সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক, সমাজকল্যাণ, প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় পরিচালিত কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে এসব ভুক্তভোগীদের স্বাস্থ্যসেবা, আইনি সহায়তা ও আশ্রয়ের সুযোগও প্রদান করা হচ্ছে।
সরকার সুশীল সমাজের সঙ্গে সমন্বয় করে ভুক্তভোগীদের সেবার ব্যাপারে পুলিশ, অভিবাসন কর্মকর্তা ও শ্রম পরিদর্শকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এই পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক মানবপাচার-বিরোধী মানদণ্ডের সঙ্গে জাতীয় চর্চাকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার মূল পদক্ষেপ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবপাচার নেটওয়ার্ক তদন্তে ইন্টারপোল, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বৈশ্বিক অংশীজনদের সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান সহযোগিতার কথাও স্বীকার করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
পাচারবিরোধী পক্ষগুলোকে শক্তিশালী করার এবং অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এবং কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)-এর মধ্যে সমন্বয় সুদৃঢ় করার জন্য সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরা হয়েছে এতে।
সরকার জাতীয় মানবপাচার বিরোধী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শক্তভাবে পাচার প্রতিরোধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাচার প্রতিরোধ ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমের জন্য এ বছর ৬২১ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন টাকা বরাদ্দ করে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৮-২০২৫ বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছে। আগের বছরের তুলনায় এবার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের পাচার-বিরোধী কমিটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় মুদ্রিত পত্রিকা, রেডিও এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে।
এভাবে প্রচারের মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসন, শ্রম অধিকার এবং প্রতারণামূলক নিয়োগের ঝুঁকি সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো ১০৪টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে এবং বিদেশগামী কর্মীদের জন্য প্রস্থান-পূর্ব প্রশিক্ষণ সেশন চালু করেছে। এর মধ্যে নারী গৃহকর্মীদের জন্য ৩০ দিনের একটি বিশেষায়িত কোর্সও রয়েছে।
বিদেশে আমাদের দেশ থেকে যাওয়া শ্রমিকদের শোষণের ঝুঁকি কমানোই এসব পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য।
সরকার মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও ব্রুনাইয়ের মতো প্রধান গন্তব্যস্থলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক শ্রম চুক্তি জোরদার করেছে। এছাড়া, অভিবাসী শ্রমিকদের অতিরিক্ত ফি থেকে বাঁচানোর জন্য নিয়োগকর্তা প্রদত্ত নিয়োগ মডেল প্রতিষ্ঠা করেছে।
অভিবাসীদের ভবিষ্যত বিবেচনায় জাতীয় একটি নীতিও চালু করা হয়েছে। প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য গৃহীত একটি সমন্বিত পরিকল্পনা এটি। পাচার থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরাও এর অন্তর্ভুক্ত, যেন প্রত্যাবর্তনের পর তারা জীবিকার সুযোগ পায়।
ক্ষতিগ্রস্তদের প্রত্যাবাসন এবং আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা সহজ করার জন্য ২০১৫ সালে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কাজ অব্যাহত রেখেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে পাচারবিরোধী সমন্বয় জোরদার করার জন্য ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছে।
প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, দেশের চলমান সংস্কার, প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা সব ধরনের মানবপাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার দৃঢ় রাজনৈতিক ইচ্ছার প্রতিফলন।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্তরে স্থান পাওয়ার বিষয়টি আইনের শাসন জোরদার, অভিবাসী কর্মীদের সুরক্ষা এবং পাচারের শিকারদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রতি দেশটির ক্রমবর্ধমান প্রতিশ্রুতিকে নির্দেশ করে। সরকার মানবপাচার রোধে কাঠামোগত উন্নয়নে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। সূত্র : বাসস