বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তথ্যমন্ত্রী

জাতীয় প্রেসক্লাবে দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
১ জুন, ২০২৩ ২১:২৮
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১ জুন, ২০২৩ ২১:২৭

দেশবিরোধী অপশক্তির হাত থেকে দেশ রক্ষার জন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত এবং দেশি-বিদেশি প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তি তাকে হত্যা করে। এখন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন দেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে, তখনও স্বাধীনতাবিরোধীরা জঙ্গিগোষ্ঠিকে সঙ্গে নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এই দেশবিরোধী অপশক্তির হাতে দেশকে তুলে দেয়া হবে না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় পার্টি (জেপি) আয়োজিত ‘নির্ভীক সাংবাদিক ও দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

জাতীয় পার্টি (জেপি) মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাদেক সিদ্দিকী, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তসহ অনেকে বক্তব্য দেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যেসব দেশবিরোধী অপশক্তি আন্তর্জাতিক শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশকে পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে তাদের পরাভূত করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সেটি যদি আমরা কার্যকরভাবে করতে পারি, তাহলে আমাদের পক্ষে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভবপর হবে এবং দেশকে সমৃদ্ধির পথে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায়, মানিক মিয়াদের স্বপ্নের ঠিকানায় আমরা পৌঁছাতে পারবো।’

সদ্য প্রস্তাবিত আগামী ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটি ২০০৯ সালের বাজেটের তুলনায় সাড়ে ৯ গুণ বেশি। ২০০৯ সালে আমাদের জিডিপির আকার ছিলো ১০০ বিলিয়ন ডলার, আর আজকে জিডিপির আকার হচ্ছে ১ ট্রিলিয়ন ডলার প্লাস অর্থাৎ প্রায় ১০ গুণ।’

বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জানানো প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে দেখবেন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আছে বাজেটের পরে গতানুগতির একটা বক্তব্য দেবে, এটা গত ১৪ বছর ধরে দেখছি। তারা বলে- এই বাজেট উচ্চভিলাষী, বাস্তবায়নযোগ্য না, জনগণের কল্যাণ আনবে না -এইসব। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এই সকল বাজেট গত ১৪ বছর ধরে আমরা বাস্তবায়ন করেছি, বাস্তবায়নের হার ৯৭ শতাংশ। করোনা মহামারির মধ্যেও সব মিলিয়ে ৯৫ শতাংশের কাছাকাছি ছিল।’

সাংবাদিক মানিক মিয়ার স্মৃতিচারণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান সরকার ইত্তেফাক বন্ধ করে দিয়েছিল, মানিক মিয়াকে গ্রেপ্তারও করেছে। কতটুকু রোষানল থাকলে সেটি করা হয়! এই গ্রেপ্তার রাজনৈতিক কারণেই, অন্য কোনো অভিযোগ ছিল না। সুতরাং মরহুম মানিক মিয়া আমাদের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনে, যে পথ ধরেই স্বাধীনতা সংগ্রাম, সেই ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।’

দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিতে গণমাধ্যমের গুরুত্ব তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মানিক মিয়া, জহুর হোসেন চৌধুরীসহ আরও কয়েকজন আমাদের সাংবাদিকদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে, মানুষের মুক্তির জন্য একজন সাংবাদিক বা একটা পত্রিকা যে কি অবদান রাখতে পারে সেটির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছেন মরহুম মানিক মিয়া এবং তার পত্রিকা ইত্তেফাক।’

অনুষ্ঠানে সভাপতি জেপি মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও মানিক মিয়ার মধ্যে খুব নিবিড় পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা আন্দোলনকে মানিক মিয়া প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন দিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলনে মাঠে ছিলেন বঙ্গবন্ধু আর কলমে ছিলেন মানিক মিয়া।’


কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না: প্রধান উপদেষ্টা

বুধবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কেউ সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে আমরা তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা আর যেন কোনো স্বৈরাচারের হাতে পড়তে না হয় উল্লেখ করে বলেন, আমাদের সন্তানদের জন্য একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রূপরেখা তৈরি করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমরা যাতে বলতে পারি আমরা একটি গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি, আমরা যাতে সকলেই দাবি করতে পারি যে এই দেশটি আমাদের- আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।

গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে ড. ইউনূস তার ভাষণে বলেন, আমরা সংস্কার চাই। আমাদের একান্ত অনুরোধ, আমাদের ওপর যে সংস্কারের গুরু দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই দায়িত্ব দিয়ে আপনারা দর্শকের গ্যালারিতে চলে যাবেন না। আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকুন। আমরা একসঙ্গে সংস্কার করবো। এটা আমাদের সবার দায়িত্ব।

দেশবাসীকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সংস্কার আনার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, আপনারা নিজ নিজ জগতে সংস্কার আনুন। একটা জাতির সংস্কার শুধুমাত্র সরকারের সংস্কার হলে হয় না। আপনি ব্যবসায়ী হলে আপনার ব্যবসায় সংস্কার আনুন। ব্যবসায়ী গোষ্ঠিরা তাদের নিজ নিজ সমিতির মাধ্যমে সংস্কার আনুন। সমিতিতে সংস্কার আনুন। নতুন করে সমিতির গঠনতন্ত্র সংশোধন করুন।

তিনি আরও বলেন, আপনি শ্রমিক হলে আপনার ক্ষেত্রে আপনি সংস্কার করুন। আপনি রাজনৈতিক নেতা-কর্মী হলে আপনার ক্ষেত্রে সংস্কার করুন। আপনি প্রতিষ্ঠান প্রধান হলে আপনার প্রতিষ্ঠানে সংস্কার আনুন। আমি এটাকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই সংস্কারের মাধ্যমে আমরা জাতি হিসেবে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে চাই। আমাদের এই যাত্রা আমাদের পৃথিবীর একটি সম্মানিত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করুক এটাই আমাদের সবার কাম্য।

রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিগত মাসে আমি বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথকভাবে বসেছি। তাদের সঙ্গে মতামত বিনিময় করেছি। তারা আমাদের উৎসাহিত করেছেন। ছাত্র, শ্রমিক জনতার বিপ্লবের লক্ষ্যের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। সংস্কারের কাজে পূর্ণ সহযোগতিা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকের কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ব্যবসায়ীদের কাছে আমাদের সরকারের লক্ষ্যগুলি ব্যাখ্যা করেছি। তারাও আমাদের লক্ষের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র শ্রমিক জনতার ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে এবং হাজারো মানুষের আত্মদানের বিনিময়ে বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে। এই গণঅভ্যুত্থানের বার্তা ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য একটি অভূতপূর্ব সময় ও সুযোগ আমরা এর মধ্যে দিয়ে অর্জন করেছি। এখন বাংলাদেশে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা রোধ এবং জনমালিকানা ভিত্তিক, কল্যাণমুখী ও জনস্বার্থে নিবেদিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে কিছু জাতীয়ভিত্তিক সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এসব সংস্কার ভাবনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি বলেন, আমরা যেহেতু জনগণের ভোটাধিকার ও জনগণের মালিকানায় বিশ্বাস করি, সেহেতু নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়নে আমাদের সংস্কার ভাবনায় গুরুত্ব পেয়েছে। আমরা মনে করি নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব আশঙ্কা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সাথে সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের কথা আমরা ভাবছি।

ড. ইউনূস বলেন, নির্বাচনব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। এসব প্রতিষ্ঠানের সংস্কার জনমালিকানা ভিত্তিক, জবাবদিহিমূলক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়ও অবদান রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এর পাশাপাশি করে সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব ও স্বার্থ নিশ্চিত করার জন্য এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তাকে প্রতিফলিত করার জন্য সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজন আমরা অনুভব করছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে উল্লেখ করেন, এসব বিষয়ে সংস্কার করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে সরকার প্রাথমিকভাবে ছয়টি কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব কমিশনের কাজ পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককেএই কমিশনগুলো পরিচালিনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর পর আরও বিভিন্ন বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

এসব কমিশনের অন্য সদস্যদের নাম কমিশন প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। কমিশনগুলোর আলোচনা ও পরামর্শসভায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ছাত্র, শ্রমিক, জনতা আন্দোলনের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত হওয়ার পর কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাজ আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে শুরু করতে পারবে বলে প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন এবং এটি পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পরামর্শসভার আয়োজন করবে।

চূড়ান্ত পর্যায়ে ছাত্র সমাজ, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক তিন থেকে সাত দিনব্যাপী একটি পরামর্শসভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে এই রূপরেখা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার একটি ধারণাও দেওয়া হবে।

ড. ইউনূস বলেন, এই আয়োজন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তা বাস্তবায়ন এবং রাষ্ট্র পুনঃনির্মাণ তাগিদের ঐক্যবন্ধনে গোটা জাতিকে শক্তিশালী ও আশাবাদী করে তুলবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দ্বিতীয় বারের মতো জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন ড. ইউনূস। এর আগে ২৫ আগস্ট তিনি জাতির উদ্দেশে প্রথমবারের মত ভাষণ দেন।


সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরে শতাধিক পোশাক কারখানা বন্ধ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশে গার্মেন্ট শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। শ্রমিকদের নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে চলছে তাদের আন্দোলন, বিক্ষোভ ও সমাবেশ। সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরের শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষের কারণে সেখানকার কারখানাগুলোতে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

জানা যায়, শ্রমিকদের এই বিক্ষোভের জেরে সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরের ১১৪ পোশাক কারখানা বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ৫৪টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। বাকিগুলো শ্রমিকরা উপস্থিত হয়েও কাজ না করায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানা যায়।

এদিকে গাজীপুরের কাশিমপুরের ভবানীপুর এলাকায় ‘বিগবস’ নামে একটি কারখানায় আগুন লাগানোর খবর পাওয়া গেছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা তাদের তাড়িয়ে দেন বলে জানা যায়। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে বুধবার সকালে নির্দিষ্ট সময়ে অধিকাংশ কারখানায় শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে কারখানায় উপস্থিত হওয়ার পরও কাজ না করায় ৫৭টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় ৫৪টি কারখানা বন্ধ করা হয়। অর্থাৎ এসব কারখানার শ্রমিকেরা কাজ না করলে মজুরি পাবেন না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিজিএমইএর নেতারা গতকাল মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) পর্ষদ সভা করে আজ কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তবে নেতাদের একটি অংশ আশুলিয়ার মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে শ্রম আইনের নির্দিষ্ট ধারায় কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী আজকে কারখানা খোলা হয়নি। শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, যারা পারছেন, তারা কারখানা চালাচ্ছেন। আর যারা পারছেন না, কারখানা ছুটি দিয়ে দিচ্ছেন। তবে শিল্পাঞ্চলের কোথাও থেকে কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) অধিকাংশ শ্রমিক কাজে যোগ দিলেও দুপুরের পর অনেক কারখানায় অসন্তোষ দেখা দেয়। ৩২টি কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে ভেতরে বসে থাকেন। একপর্যায়ে কর্তৃপক্ষ ছুটি ঘোষণা করলে তারা বেরিয়ে যান। কারখানা মালিকরা জানান, এরই মধ্যে শ্রমিকদের বেশকিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। আশুলিয়ায় ৪২টি কারখানা বন্ধ ছিল। এ ছাড়া গাজীপুরের ২৫টি কারখানায় কাজ হয়নি শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে। এদিন বেতনের দাবিতে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। মঙ্গলবার বেতন দেওয়ার কথা ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, অর্থ নগদ করাতে না পারায় শ্রমিকদের বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। আশুলিয়ার জিরাবো, নিশ্চিন্তপুর, নরসিংহপুর, সরকার মার্কেট, জামগড়া, বাইপাইলসহ আশপাশ এলাকায় ছিল যৌথ বাহিনীর টহল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রমিক অন্তোষ নিরসনে অনেক কারখানা কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়েছে। কিছু কারখানায় শ্রমিক-মালিকের মধ্যে দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। এই আলোচনা ফলপ্রসূ হলে সেখানে পরিস্থিতি শান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে কয়েকটি কারখানার কর্মকর্তা জানান, শ্রমিকরা এমন কিছু দাবি উপস্থাপন করছেন, যা মেনে নেওয়া কঠিন। শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা নিয়ে গত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিজিএমইএ কার্যালয়ে একটি জরুরি বৈঠক হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন কারখানা মালিক, শ্রমিক সংগঠনের নেতা ও রাজনৈতিক নেতারা। বৈঠকে শ্রমিকদের হাজিরা বোনাস ও টিফিন বিল বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

শ্রমিকদের অভিযোগ, সরকার ২০১৮ সালে শ্রমিকদের বেতনের গেজেট প্রকাশের পর ২০২৩ সালে সেটি সংশোধন করে। এতে শ্রমিকদের দক্ষতা অনুযায়ী এ, বি, সি ক্যাটেগরিতে বেতন নির্ধারিত হয়। কিন্তু ওই গেজেট অনুযায়ী তারা বেতন পাচ্ছেন না। গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শ্রমিকরা হঠাৎ করে আন্দোলনে নেমেছে। বিভিন্ন স্থানে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সঙ্গে কাজ করছে পুলিশ।’

এদিকে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া বেতন আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বুধবার চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি। এ সময় উপদেষ্টা আসিফ জানান, সাভার আশুলিয়ায় পোশাক কারখানাগুলোতে যে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে সেগুলোতে আজ কিংবা বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে।

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে শ্রমসংক্রান্ত অভিযোগ পর্যালোচনা কমিটি করা হয়েছে, যেখানে যে কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন। শ্রমিকদের আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারীরা অসন্তোষ ছড়াচ্ছে বলেও জানান তিনি। এদিকে শনিবারের (১৪ সেপ্টেম্বর) মধ্যে শ্রম অসন্তোষ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম। একই সঙ্গে এই সময়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ অর্ডার অন্য দেশে চলে গেছে বলেও জানান তিনি। বুধবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আরএমজি এবং নন-আরএমজি সেক্টরের শ্রম অসন্তোষ পরিস্থিতি পর্যালোচনাপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সভাপতিত্বে সভায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, আজ কারখানাগুলো সুন্দরভাবে চালু হয়েছে। কিন্তু একটি বড় প্রতিষ্ঠানের গতকাল মঙ্গলবার বেতন দেওয়ার কথা ছিল। দিতে না পারায় দুপুর থেকে ওই কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আশপাশের কিছু কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামী শনিবার থেকে সব কারখানা নিরবিচ্ছিন্নভাবে স্বাভাবিকভাবে চলতে পারবে।

শ্রমিক অসন্তোষে কতগুলো কারখানা আক্রান্ত হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, আশুলিয়া, জিরাবো, জিরানী জোনে ৪০৮টি কারখানা রয়েছে। গত কয়েক দিনের শ্রমিক অসন্তোষে এ সব এলাকার ৪০ থেকে ৬০টি কারখানা বন্ধ আছে। কিছু বন্ধ রেখেছে ইচ্ছাকৃত আর কিছু শ্রমিক অসন্তোষের জন্য।


চাকরির চেয়ে ব্যবসা করতেই বেশি আগ্রহী জেন-জি প্রজন্ম

আপডেটেড ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:২০
বাণিজ্য ডেস্ক

যুগে যুগে স্বাধীনচেতা মানুষেরা ধরাবাঁধা চাকরির চেয়ে ব্যবসা করতেই বেশি আগ্রহী ছিলেন। পৃথিবীতে এখন যে প্রজন্মকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি মাতামাতি হচ্ছে, সেই জেন-জি প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের এক ব্যাংকের সমীক্ষায় দেখা গেছে, জেন-জি প্রজন্মের বেশির ভাগ মানুষ ধরাবাঁধা চাকরির চেয়ে ব্যবসা করতেই বেশি আগ্রহী।

স্যানট্যানডার ব্যাংক যুক্তরাজ্যের সমীক্ষায় জেন-জি প্রজন্মের তরুণদের এ প্রবণতা উঠে আসে। সমীক্ষার তথ্যানুসারে, ৭৬ শতাংশ জেন-জি কারও অধীনে কাজ করতে আগ্রহী নন। ৯টা-৫টার একঘেয়ে কর্মজীবন তাঁদের পছন্দ নয়। জেন-জিদের ৭৭ শতাংশ বিশ্বাস করেন, তাদের ব্যবসা শুরু করার যোগ্যতা আছে।

ইয়াহু ফাইন্যান্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের প্রজন্মের সঙ্গে সঙ্গে এখানে জেন-জিদের বড় ধরনের ব্যবধান দেখা যায়। তারা নিজেই নিজের বস বা কর্তা হতে চান। অথচ মিলেনিয়ালদের মধ্যে এই প্রবণতা ছিল ৫৭ শতাংশ। জেনারেশন এক্সের মধ্যে ৩৬ শতাংশ ও বেবি বুমারদের মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশের মধ্যে এ প্রবণতা দেখা গেছে।

জেন-জি প্রজন্মের মানুষদের জন্ম ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে। মিলেনিয়াল হলেন তারা, যাদের জন্ম ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে। জেন এক্সের মানুষদের জন্ম ১৯৬৫ থেকে ১৯৮০ সালে মধ্যে আর বেবি বুমারদের জন্ম ১৯৪৬ থেকে ১৯৬৪ সালের মধ্যে।

বেশির ভাগ জেন-জি মনে করেন, ডিজিটাল যুগে ব্যবসাসংক্রান্ত তথ্য ইন্টারনেটেই পাওয়া যায়। ডিজিটাল প্রযুক্তির বাড়বাড়ন্ত তাঁদের ব্যবসার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধিতে অনুঘটকের কাজ করেছে। আগের প্রজন্মের হাতে সে সুযোগ ছিল খুবই সীমিত। সে জন্য তারা পড়াশোনা করে চাকরির খোঁজ করতেন ও দীর্ঘ দিন সেই চাকরি করে যেতেই বেশি আগ্রহী ছিলেন।

জরিপে অংশ নেওয়া ৩৯ শতাংশ বিশ্বাস করেন, স্মার্টফোন থেকে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব। ৪৫ শতাংশ মনে করেন যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শোভন আয় করা যেতে পারে।

জেন-জি প্রজন্ম অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ও প্রযুক্তিনির্ভর। ১৯৯৭ সালের আগে যাদের জন্ম, তাদের তুলনায় জেন-জিদের ব্যবসার প্রতি ঝোঁক অনেকটাই বেশি। এই প্রজন্মের তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে। একসময় যেমন বেশি বেশি কাজ করা বা দীর্ঘ সময় অফিসে থাকার চল ছিল, সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই প্রজন্ম বেরিয়ে আসছে।

অন্যান্য জরিপেও জেন-জিদের পছন্দের ধরনের পরিবর্তন আসার বিষয়টি ধরা পড়েছে। দেখা গেছে, ফ্রিল্যান্সিংয়ের জোয়ারের যুগে ৯টা-৫টা কাজের পরিবর্তে নিজেদের সুবিধাজনক সময়ে কাজ করতেই তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

চলতি বছর সান ফ্রান্সিসকো-ভিত্তিক অনলাইন মার্কেটপ্লেস ‘আপওয়ার্ক’ যুক্তরাষ্ট্রের ১ হাজার ৭০ জন ‘জেন-জি’ প্রজন্মের মানুষের ওপর আরেকটি জরিপ পরিচালনা করে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের সবাই ছিলেন ফ্রিল্যান্সার। দেখা যায়, ৫৩ শতাংশ জেন-জি সপ্তাহে গড়ে ৪০ ঘণ্টা অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করেন। এদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ জেন-জি কর্মী দুই বছরের বেশি সময় ধরে ফ্রিল্যান্সিং করছেন। তারা সেটাই করে যেতে চান। অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে, পেশা বলতে এতকাল মানুষ যা বুঝেছে, সেই ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে চান তারা।

বিশ্লেষকেরা বলেন, জেন-জিদের এই মনোভাবের মূল কারণ হলো, পেশার ও পেশাগত বিকাশের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আরোপ। আরেকটি বিষয় হলো, নীতি-নৈতিকতাসংক্রান্ত পুরোনো ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন। জেন-জিরা পুরোনো নীতি–নৈতিকতাসম্পন্ন কর্তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করবেন না বা কর্তাদের পছন্দের আলোকে ক্যারিয়ার গড়বেন না। সে কারণে তারা ৯টা-৫টার প্রথাগত চাকরি ছুড়ে ফেলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন।

জেন-জিদের মধ্যে যারা প্রথাগত কাজ করছেন, সেখানেই তাদের স্বকীয় চিন্তার বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়। আরেক গবেষণায় দেখা যায়, ছোটবেলায় বয়স্করা তাদের সঙ্গে যেমন আচরণ করেছেন, অফিসে কেউ তাদের সঙ্গে সে রকম আচরণ করলেই বিপদ। দেখা যায়, তারা আর সেই ব্যক্তির সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ পান না। অর্থাৎ জেন-জিরা বস হিসেবে বা জ্যেষ্ঠ সহকর্মী হিসেবে কাউকে আলাদা করে দেখতে রাজি নন। সবার সঙ্গেই একই রকম আগ্রহ, উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করতে চান তারা। পোশাকের বিধান মান্য করার ক্ষেত্রেও তাদের আপত্তি আছে।

করোনা মহামারির পর সামগ্রিকভাবে মানুষের চিন্তার জগতেও পরিবর্তন এসেছে। ২০২০ সালের পর উন্নত দেশের অনেক মানুষ চাকরি ছেড়েছেন। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৪ কোটি ৭০ লাখ মানুষ চাকরি ছেড়েছেন। এরপর ২০২২ সালে চাকরি ছাড়েন ৫ কোটির বেশি মানুষ। দেশটিতে এভাবে মানুষের গণহারে চাকরি ছাড়ার ঘটনা ‘গ্রেট রেজিগনেশন’ বা ‘গণহারে পদত্যাগ’ হিসেবে খ্যাত। এরপর অবশ্য সেই ধারা থেমে যায়। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে কর্মসংস্থানের পরিমাণ আবার প্রাক্-মহামারি পর্যায়ে ফেরত যায়। এরপরই শুরু হয় সিইওদের চাকরি ছাড়ার হিড়িক।


জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক অবস্থানে র‌্যাব

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) জানিয়েছে, সম্প্রতি রাষ্ট্রবিরোধী কিছু অপশক্তি দেশে উগ্রবাদ ছড়াচ্ছে। অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। জঙ্গিবাদ দমনে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থানে থাকবে বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে রোল মডেল। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদবিরোধী কার্যক্রমে র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাবের জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার হয় বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। প্রতিষ্ঠা থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের ৩ হাজার ১৪ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনেছে র‌্যাব।

জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের ছাড় না দিতে সব ব্যাটালিয়নগুলোকে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে র‌্যাব মহাপরিচালক নির্দেশ দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার জঙ্গিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় যাতে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে না পরে সে জন্য র‌্যাব ফোর্সেস জামিনে মুক্তিপ্রাপ্তদের ওপর কঠোর নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে না গিয়ে জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত কেউ যদি কোনও অপরাধ কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনবে র‌্যাব। উগ্রবাদে জড়িত দুষ্কৃতকারী চক্রগুলোকে চিহ্নিত করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে র‌্যাব ফোর্সেস অঙ্গীকারবদ্ধ।

বিষয়:

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সচেতন থাকতে হবে

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাকরি, শৃঙ্খলা পরিপন্থি, কোনো স্ট্যাটাস, মন্তব্য, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে সারা দেশের নিম্ন আদালতের বিচারকদের নির্দেশনা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভূঞা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাগণের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের অনুসরণীয় নির্দেশনাসমূহ আবশ্যিকভাবে প্রতিপালনের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিটি জারি করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কতিপয় বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ এ জারি করা সার্কুলারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনাসমূহ প্রতিপালন করছে না, যা অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অত্র কোর্টের গোচরীভূত হয়েছে যে, কোনো কোনো বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা বিচারিক কর্ম ঘণ্টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছেন এবং কোনো কোনো বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার নিয়োগকারী ও নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে নানাবিধ বিরূপ মন্তব্য করছেন, যা চাকরি শৃঙ্খলা ও বিধিমালার পরিপন্থি এবং অসদাচরণের সামিল। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে অত্র কোর্ট প্রদত্ত নির্দেশনাসমূহ আবশ্যিকভাবে প্রতিপালন করত কোনো অবস্থাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাকরি শৃঙ্খলা পরিপন্থি অপ্রয়োজনীয় কোনো স্ট্যাটাস, মন্তব্য/শেয়ার না করার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

‘বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার দেশের প্রচলিত আইন ও বিধি-বিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। কোনো অবস্থাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাকরি শৃঙ্খলা পরিপন্থি অপ্রয়োজনীয় কোনো স্ট্যাটাস, মন্তব্য/শেয়ার না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আদিষ্ট হয়ে নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক প্রচারিত এই নির্দেশনা অমান্য করলে তা ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য হবে এবং এক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭’-এর পাশাপাশি প্রচলিত অন্যান্য আইন ও বিধি-বিধান প্রযোজ্য হবে।’


ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বেশি জরুরি: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মানুষের মাঝে যেসব বৈষম্য রয়েছে তা উত্তরণের চেষ্টা করা হবে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমরাও ফেরেশতা না। আমাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দেন। আমরা সহায়তা চাই।’

গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর হোটেল সোনাগাঁওয়ে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) আয়োজিত ২৪তম আইসিএবি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সমাজে আকাশসমান বৈষম্য। অনেক মানুষ আছেন, যারা মাসে একবারও মাংস খেতে পারেন না। যা দুঃখজনক, কিন্তু এটাই বাস্তবতা। এ অবস্থা থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করব।’

এ সময় সমাজের মানুষ কীভাবে বৈষম্যের শিকার তার একটি বাস্তব উদাহরণ তুলে ধরেন অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগের কথা, আমরা অফিসে যে পিয়নকে দিয়ে অফিসের লাঞ্চ নিয়ে আসতাম, তাকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি কী লাঞ্চ নিয়ে আসছো। সে টিফিন ক্যারিয়ারে খাবার নিয়ে আসছে। খুলে দেখি কয়েক টুকরা কাঁচা কলা আর এক গাদা ঝোল। ক্যান ইউ ইমাজিন মডার্ন যুগে...!’

‘আমি বললাম আমি তো একবেলা মাংস না খেলে বিপদ, মাছ না খেলে...। বলে স্যার আমি মাসে একবেলা মাংস খেতে পারি না। দিস ইস মেজরিটি’, বলেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘আমরা বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করব। একেবারে আকাশসমান বৈষম্য- এটা গ্রহণযোগ্য না। আমরা ফেরেশতা না। আমাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দেন। আমরা সহায়তা চাই।’

অনুষ্ঠানে ব্যাংক খাত নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি এ সময়ে সবচেয়ে বেশি জরুরি। টাকা-পয়সার হিসাব ঠিকমতো না রাখলে একসময় না একসময় ধরা পড়বেনই। তাই এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে।’

সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘অতীতে যারা কোনো কিছুই তোয়াক্কা করতেন না, তাদের অবস্থা এখন আমরা দেখতেই পাচ্ছি। প্রায় সবগুলো ব্যাংকের প্রতিবেদনই আমরা দেখছি, সেখানে প্রকৃত চিত্র উঠে আসে না। তাই দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের জন্য সঠিক নিরীক্ষা জরুরি।’

অনুষ্ঠানে সেরা বার্ষিক প্রতিবেদন, সমন্বিত প্রতিবেদন ও করপোরেট সুশাসনের জন্য পুরস্কার পেয়েছে ব্যাংক, বিমা ও উৎপাদনসহ মোট ১৩ খাতের ২২ প্রতিষ্ঠান। বিজয়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ এই তিন শ্রেণিতে পুরস্কৃত করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, আইসিএবি সভাপতি মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দীন প্রমুখ।

বিষয়:

বৈষম্যহীন ও গতিশীল অর্থনীতির জন্য টাস্কফোর্স গঠন

ড. কেএএস মুরশিদ। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈষম্যহীন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে সরকার উন্নয়ন কৌশল পুনর্বিন্যাস করার লক্ষ্যে ১২ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. কে এ এস মুরশিদের নেতৃত্বে ‘অর্থনীতির পুনঃকৌশলীকরণ এবং ন্যায়সংগত ও টেকসই উন্নয়নের জন্য সম্পদ সংগ্রহ’ শীর্ষক এ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পরিকল্পনা বিভাগ থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

এতে বলা হয়, বৈষম্যহীন ও টেকসই উন্নয়ন কৌশল প্রণয়নের জন্য টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। এটি একটি ন্যায্য, টেকসই ও গতিশীল অর্থনীতির ভিত্তি স্থাপনে আগামী তিন মাসের মধ্যে একটি প্রাথমিক পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করবে।

টাস্কফোর্সে আরও নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।

টাস্কফোর্সের অন্য সদস্যরা হলেন বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আখতার মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান, কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের গবেষণা বিভাগের সাবেক প্রধান ড. আবদুর রাজ্জাক, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুশফিক মোবারক, বুয়েটের অধ্যাপক ড. শামসুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, এমসিসিআইর সাবেক সভাপতি নাসিম মঞ্জুর, বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. মনজুর আহমেদ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফাহিম মাশরুর এবং পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. মো. কাওসার আহমেদ।


কৃষি উপদেষ্টার সঙ্গে এফএওর প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এফএওর প্রতিনিধি ড. জিয়াওকুন শির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎকালে সাম্প্রতিক বন্যায় কৃষির ক্ষয়ক্ষতি, কৃষির উন্নয়নে কারিগরি ও পরামর্শ সহায়তা ও কৃষিজ পণ্য রপ্তানি বহুমুখীকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এফএওর প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এফএও অনেক বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে। আমরা আশা করি, এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’

তিনি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বন্যায় আক্রান্ত ২৩টি জেলার মধ্যে ১১টি জেলায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করে বন্যা-পরবর্তী কৃষি পুনর্বাসনে এফএওর সহযোগিতা কামনা করেন।

ড. জিয়াওকুন শি বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস পুনর্ব্যাক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে এফএও সবসময় সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। এফএও ভবিষ্যতেও বাংলাদেশকে বীজ, কৃষি প্রযুক্তি, কারিগরি ও পরামর্শ সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতে কৃষি মন্ত্রণালয় বাস্তবায়িত ‘প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রিনিউরশিপ অ্যান্ড রেজিলেন্স’ প্রকল্পে এফএও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে জনগণের পুষ্টিমান নিশ্চিত হবে। পার্টনার প্রকল্পের ১৮টি কর্মসূচিতে কৃষি মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

কৃষি খাতের বিভিন্ন তথ্য (ডাটা) নিয়মিতভাবে এফএও-এর সঙ্গে বিনিময় করার জন্য প্রতিনিধি দল আগ্রহ প্রকাশ করলে কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ বিষয়ে সব সময় সহযোগিতা করা হবে বলে জানান।

এফএওর প্রতিনিধি তার সংস্থার ‘এক দেশ এক পণ্য’ (ওসেপ-ওয়ান কান্ট্রি ওয়ান প্রোডাক্ট) কর্মসূচির মাধ্যমে সদস্য দেশসমূহের একটি কৃষি পণ্য, ফসল ও ফল রপ্তানিতে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের মৌসুমি ফল আম রপ্তানিতে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

পাশাপাশি বাংলাদেশে উৎপাদিত অন্যান্য মৌসুমি ফলসহ বিভিন্ন শস্য, রপ্তানি সম্প্রসারণ ও বহুমুখীকরণে কাজ করার জন্য এফএও প্রতিনিধিদল আগ্রহ জানালে কৃষি উপদেষ্টা বলেন, আমের পাশাপাশি আমাদের প্রচুর কাঁঠালও উৎপাদন হয়, রপ্তানির অগ্রাধিকারে কাঁঠালকেও রাখা যায়। কৃষি পণ্য রপ্তানির বিষয়ে মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে বলে উপদেষ্টা জানান।


পূজা উদযাপনে সরকারের বরাদ্দ ৪ কোটি টাকা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সরকার এবার স্বাচ্ছন্দ্যে পূজা উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এবছর আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরকারিভাবে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। বিগত সরকারের সময় বরাদ্দ ছিল মাত্র ২কোটি টাকা। পাশাপাশি পূজামণ্ডপগুলোতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রদের এক বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আজ বুধবার ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে একটি চক্র ধর্ম নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে; যাতে সত্য বিন্দুমাত্র ছিল না। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় কোনো কোনো জায়গায় কিছু ঘটনা ঘটেছে; তবে তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আমরা উপদেষ্টারা চেয়ার দখল করে বসে থাকার জন্য ক্ষমতায় আসিনি। রাষ্ট্র, নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে সংস্কারপূর্বক মেরামত করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসার পর সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে আমরা সরে যাব। এ জন্য সকল রাজনৈতিক দলসহ দেশের প্রতিটি মহলকে সহযোগিতা করা দরকার।

হেফাজত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময় হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা মামলা রুজু করা হয়েছে এর তালিকাসহ দায়িত্বশীলদের কাছে জানালে এসব মামলা থেকে বা তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রত্যাহার করা হবে।

হাটহাজারী মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক আল্লামা শেখ আহমদের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা খলিল আহমেদ কুরাইশ কাসেমী। উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক বোরহান উদ্দীন মো. আবু আহসান, মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক আল্লামা মুফতি জসিম উদ্দিন, আল্লামা দিদার কাসেম, আল্লামা সোয়েব জমিরী, মুফতি কেফায়েতুল্লাহ, নাজিরহাট মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমী ও হাটহাজারী মডেল থানার ওসি হাবিবুর রহমান।

এদিকে হাটহাজারী মাদ্রাসা সংলগ্ন শ্রী শ্রী শীতাকালি মন্দির পরিদর্শন করেন ধর্ম উপদেষ্ঠা। এসময় উপস্থিত মন্দির পরিচালনা কমিটি ও ভক্তদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন মুন্সি বিজয় কুমার বণিক। মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক উদয় সেনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। মন্দির পরিচালনা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষক শিমুল কান্তি মহাজন, চবি শিক্ষক শিপক কৃষ্ণ দেবনাথ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এরপর উপদেষ্টা হাটহাজারী পৌরসভার একটি মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন।


তিন সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুতের অবস্থা উন্নতির আশ্বাস

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, বড়পুকুরিয়ায় কারিগরি সমস্যা হয়েছে যা দ্রুত মেরামত করা হচ্ছে; রামপাল পুনরায় চালু হয়েছে; আদানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং দ্রুত গ্যাস আমদানি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুতের বর্তমান অবস্থার উন্নতি হবে।

আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোটার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা এ কথা জানান।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সঙ্গে অন্য সরকারের পার্থক্য হলো, বর্তমান সরকার কোনো পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নয়, এই সরকার ছাত্র-জনতার রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে গঠিত সরকার। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুতের বর্তমান অবস্থার উন্নতি হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

ফাওজুল কবির খান বলেন, ২০১০ সালের বিশেষ আইন স্থগিত ও বিআরসি আইনের ৩৪ক ধারা বাতিল, তেলের দাম কমানো, কোম্পানির চেয়ারম্যান থেকে সচিবদের অপসারণ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের লুটপাটের কাঠামো ভেঙে দেয়া, বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধের জন্য বদলি ও নিয়োগের নির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সব ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যাতে কাজ পায় সেটা নিশ্চিত করারও নির্দেশনা দিয়েছি। ওপেন টেন্ডারে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন।

উপদেষ্টা বলেন, আমার কোনো পছন্দের লোক নেই। কোনো পরিসংখ্যানে বিশ্বাস করি না, মানুষের সত্যিকারের কী উপকার হলো তার মাধ্যমে কাজের বিচার করা হবে। উন্নয়ন বিচার করা হবে বাস্তব অবস্থা দিয়ে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে সাংবাদিকদের।

প্রতিনিধিদল ফাওজুল কবির খানকে নতুন দ্বায়িত্বের জন্য স্বাগত জানিয়ে বলেন, তারা তাদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের মাধ্যমে এ খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি তুলে ধরে একটি টেকসই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত গঠনে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন।


বাংলাদেশের পানি ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা বাড়াবে চীন: পরিবেশ উপদেষ্টা

বুধবার সচিবালয়ে পরিবেশ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের পানি ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণে চীন সহায়তা বাড়াবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পানিসম্পদ ও পরিবেশবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

আজ বুধবার সচিবালয়ে পরিবেশ উপদেষ্টার নিজ দপ্তরে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ প্রতিশ্রুতি দেন। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে পানি ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সুরক্ষায় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, চীন বন্যার সময় পানি সম্পর্কিত তথ্য ভাগাভাগির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। চীন দুই দেশের মধ্যে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ বাড়ানোরও প্রস্তাব দিয়েছে বলেও জানান পানিসম্পদ ও পরিবেশ উপদেষ্টা। পানি ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা বাড়াতে যৌথ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নদী ব্যবস্থাপনা, বন্যা প্রতিরোধ ও অবকাঠামো প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করা যাবে।

তিনি বলেন, পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় চীনের মতো বন্ধু রাষ্ট্রের সহযোগিতা জরুরি। উভয় দেশের মধ্যে ভবিষ্যতে সহযোগিতা বাড়ানোর আশা প্রকাশ করেন এই উপদেষ্টা।

সাক্ষাৎকালে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু এবং এই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। নদী দূষণ নিয়ন্ত্রণ, সৌর শক্তি, বৈদ্যুতিক যানবাহন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও স্মার্ট পানি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।

বৈঠকে পরিবেশ ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক এবং চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


তৌফিক-ই-ইলাহী ৪ দিনের রিমান্ডে

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর বাড্ডায় মো. সুমন শিকদার হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ বুধবার বিকেলে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক রেজাউল আলম আসামিকে আদালতে হাজির করেন। পরে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত আসামি তৌফিক-ই-এলাহী ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার তথ্য পাওয়ায় ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে। এমতাবস্থায় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিকে আরো ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও পলাতক আসামিদের পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড একান্ত প্রয়োজন।

রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রপক্ষ। তৌফিক-ই-ইলাহী পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ডিবির একটি টিম তৌফিক-ই-এলাহীকে গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় বাড্ডার ফুজি টাওয়ারের উত্তর পাশে প্রগতি সরণিতে রাস্তার ওপর গুলিতে নিহত হন সুমন সিকদার। এ ঘটনায় তার মা মাসুমা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭৯ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় তৌফিক-ই-ইলাহী কে সাসপেক্টেড আসামি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সাবেক এ জ্বালানি উপদেষ্টা সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০০২ সালে অবসরে যান তিনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি, খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন।


ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বীর বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস যা জানালো

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাময়িক বরখাস্ত ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কিছু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধরেছেন বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

বুধবার সংস্থাটির মিডিয়া সেল থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।

সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে যেন কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয় সে কারণে ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বীর বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থেকে বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

এতে বলা হয়, ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী ২০১৭ সালের ৮ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ৪ বছর ৫ মাস ফায়ার সার্ভিসের ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীন বিভিন্ন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (ঢাকা-৪৭, ৬১ ও ৭১) কর্মরত ছিলেন। তাকে ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালকের অধীনে লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (চট্টগ্রাম-৪৭) বদলি করা হয়। মাত্র ৮ মাসের মাথায় তৎকালীন আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে নিজেকে সাবেক ছাত্রলীগ পরিচয় দেয়া রেজায়ে রাব্বী পুনরায় ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (ঢাকা-৭২) বদলি হন। এর পর থেকে পুনরায় তিনি ২ বছর ১ মাস ফায়ার সার্ভিস ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীনে বিভিন্ন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (যথাক্রমে ঢাকা-৭২ ও ৫৭) কর্মরত ছিলেন। গত ১৯ আগস্টে তাকে লালমনিরহাট-১ কর্ম অঞ্চলে সংযুক্ত আদেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু তিনি কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে অদ্যাবধি কর্মস্থলে যোগদান করা থেকে বিরত আছেন।

গত ১৭ জুলাই দেশে চলমান পরিস্থিতিতে সকল ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টরগণকে নিজ নিজ কর্ম অঞ্চলের ফায়ার স্টেশনে অবস্থান করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী তৎকালীন কর্ম অঞ্চলের অধীন ফায়ার স্টেশনে গত ১৯ জুলাই থেকে ২২ জুলাই বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন। তিনি কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে নতুন সংযুক্ত আদেশকৃত কর্মস্থলে যোগদান থেকেও বিরত থাকেন। এ সময় কিছু গণমাধ্যমে তার বিষয়ে ‘ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িত ফায়ার সার্ভিস কর্মী রাব্বী লাপাত্তা শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধিদপ্তরের ‘সাময়িক বরখাস্ত আদেশ-৩০(২৪)’ দ্বারা তাকে ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে গত ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ১২ নং বিধিমতে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মূলত নিজের অপরাধ আড়াল করার লক্ষ্যে তিনি মিডিয়ায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে বিষোদগারমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন, যা চাকরি শৃঙ্খলার পরিপন্থী।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘সাময়িক বরখাস্ত আদেশ ০৭(২৩)’ দ্বারা গত ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ফায়ারফাইটার মো. আব্দুল হান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ‘বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তি আদেশ-১০(৩৪)’ দ্বারা গত ৫ সেপ্টেম্বর তাকে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হয়। তার স্ত্রী পরিচয়দানকারী জনৈক মহিলা তাকে গুম করার যে অভিযোগ তুলেছেন তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে আজ ১১ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘ডিজির বিরুদ্ধে আন্দোলনের চেষ্টা, ফায়ারফাইটার গ্রেপ্তার’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে ডিবির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্ট মামলায় আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে’।


banner close