শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
৯ কার্তিক ১৪৩২

বাবাকে এগিয়ে আনতে যাওয়া যুবকের প্রাণ কাড়ল বাস

ফাইল ছবি
আপডেটেড
২ জুন, ২০২৩ ১৪:৫৮
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২ জুন, ২০২৩ ১৪:৫৭

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় মো. মিরাজ মিয়া (২৫) নামে এক যুবক প্রাণ হারিয়েছেন।

শুক্রবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভোর ৫টায় মৃত ঘোষণা করেন।

যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. তুহিন বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলের কাছে পড়ে থাকতে দেখে ওই যুবককে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাই। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায় ওই যুবক যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে হেঁটে যাওয়ার সময় বেপরোয়া একটি বাস তাকে ধাক্কা দেয়। বাসটি তৎক্ষণাৎ ধরা যায়নি। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গাড়িটিকে শনাক্তর চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’

মিরাজের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলায়। তিনি যাত্রাবাড়ীর কাজলা নয়ানগর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

সকাল ৭টার দিকে মিরাজ মিয়ার চাচতো ভাই মোহাম্মদ নাজমুল ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে এসে তার মরদেহ শনাক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই দর্জির কাজ করতেন। ভোরে চাঁদপুরের গ্রামের বাড়ি থেকে তার বাবা সদরঘাটে আসার কথা ছিল। সেজন্য সকালে বাসা থেকে বের হয়ে সদরঘাট যাচ্ছিলেন মিরাজ। কিন্তু পথেই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।’


লিবিয়া থেকে দেশে ফিরল আরও ৩০৯ বাংলাদেশি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি ও আশপাশের এলাকা থেকে অবৈধভাবে অবস্থানরত ৩০৯ বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) যৌথ প্রচেষ্টায় এই প্রত্যাবাসন সম্পন্ন হয়।

বিমানবন্দর প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের (বিএমইটি) সহকারী পরিচালক মোহম্মদ শাহেদ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, বাংলাদেশি নাগরিকদের বহনকারী বিশেষ একটি ফ্লাইট শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইওএমর কর্মকর্তারা তাদের স্বাগত জানান। বিমানবন্দরে ফিরে আসা বাংলাদেশিদের বহনকারী বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটটি ফ্লাই ওয়া ইন্টারন্যাশনাল পরিচালনা করে।

তিনি আরও জানান, বিমানবন্দরে আইএমওর মাধ্যমে প্রত্যেককে ছয় হাজার করে টাকা ও খাবারসহ প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক থেকে তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতায় করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ফিরে আসা নাগরিকদের অধিকাংশই মানব-পাচারকারীদের প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন, যাদের অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। লিবিয়ায় অবস্থানকালে অনেকেই অপহরণ ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানা যায়।

শুক্রবার সরকারের দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই উদ্যোগে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, লিবিয়া সরকার ও আইও-এম একসঙ্গে কাজ করেছে।


পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানি হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে পাকিস্তানি হাইকমিশনার ইমরান হায়দার সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ছবি: পাকিস্তানি হাইকমিশন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, সাক্ষাৎকালে দু’দেশের সাম্প্রতিক যোগাযোগ ও মন্ত্রী পর্যায়ের সফরের প্রশংসা করেন উভয়পক্ষ। এর মধ্যে গত আগস্টে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।

গত এপ্রিলে রাজধানীতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ সভা সফলভাবে হওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পায়। এছাড়া দীর্ঘ বিরতির পর আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠককেও স্বাগত জানান উভয় পক্ষ।

উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সন্তোষ প্রকাশ করে জানান, সম্প্রতি ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালুসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে উভয় দেশ অগ্রগতি লাভ করেছে।

এ সময় তারা দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। পাশাপাশি একাধিক খাতে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।সূত্র : বাসস


অতীতের সব ভুলের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন জামায়াত আমির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অতীতের ভুলের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় দলটি ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত যত ভুল করেছে, তার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘৪৭ থেকে আজকের দিন পর্যন্ত আমাদের দ্বারা যে যেখানে যত কষ্ট পেয়েছেন আমরা বিনাশর্তে তাদের কাছে মাফ চাই।
জামায়াত আমির বলেন, এই এপোলজি (ক্ষমা প্রার্থনা) কমপক্ষে তিনবার চেয়েছি। অধ্যাপক গোলাম আযম, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং আমিও চেয়েছি। কিছুদিন আগে এ টি এম আজহার যখন জেল থেকে মুক্তি পেলেন তখনো বলেছি। শুধু এখন নয়, ’৪৭ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামীর দ্বারা কেউ যদি কোনো কষ্ট পান, কারো কোনো ক্ষতি হয়ে থাকে, আমি সব ব্যক্তি এবং সংগঠনের পক্ষে নিঃশর্তে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই, আপনারা আমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।
তিনি আরো বলেন, আমরা ভুল করি নাই বলব কিভাবে।
আমাদের ১০০টার মধ্যে ৯৯টা সিদ্ধান্ত সঠিক, একটা তো বেঠিক হতে পারে। সেই বেঠিক একটা সিদ্ধান্তের জন্য জাতির ক্ষতি হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে আমার কোনো সিদ্ধান্তের জন্য যদি জাতির ক্ষতি হয়, তাহলে আমার মাফ চাইতে অসুবিধা কোথায়।
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই পিআরসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গণভোট করতে হবে।
ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী সংখ্যালঘুরা নির্বিঘ্নে থাকবে।


সাংবিধানিক আদেশ জারির এখতিয়ার সরকারের নাই: সালাহউদ্দিন আহমদ

* রাষ্ট্র কোনো আবেগের ওপর চলে না। রাষ্ট্র আইনকানুন, বিধিবিধান, নিয়মকানুনের মধ্য দিয়ে চলে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই জাতীয় সনদকে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার দেওয়ার ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ইউট্যাব আয়োজিত ‘২৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থান: তারুণ্যের ভাবনায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক এক আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যদিও কেউ বলছে যে, জুলাই গণঅভ্যত্থানের জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী এখন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা সেই আইনটা, আদেশটা জারি করতে পারেন। সেটা বৈপ্লবিক কথা, ইমোশনাল কথা, রাষ্ট্র কোনো ইমোশনের ওপরে চলে না। রাষ্ট্র আইনকানুন, বিধিবিধান, নিয়মকানুনের মধ্য দিয়ে চলে।’
গত ১৭ আগস্ট জুলাই সনদ সই হলেও কীভাবে তা বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়ে এখনও সুপারিশ দেয়নি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত বুধবার এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেছে কমিশন। গতকাল বৃহস্পতিবার আবার তাদের পরাশর্ম নেবে কমিশন, তার আগে কমিশন সদস্যরা নিজেরা বৈঠক করবেন।
সুপারিশের প্রাথমিক খসড়ার খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে— জুলাই সনদ বাস্তাবায়নে একটি আদেশ জারি করা হবে। সনদের অধীনে গণভোট নিয়ে একটি অধ্যাদেশ করা হবে।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমি কালকে বলতে শুনলাম যে, এটা ‘এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল অর্ডার’ করে জাতীয় সনদ জারি করতে পারে এবং সেটা প্রধান উপদেষ্টাকে বলা হচ্ছে যে, প্রধান উপদেষ্টা এটা জারি করতে পারেন।’
তবে প্রধান উপদেষ্টার ‘আইন জারির কোনো অধিকার বাংলাদেশের সংবিধানে নেই’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘অযৌক্তিকভাবে কেউ যদি বলে যে, এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল অর্ডার করে এই সনদকে জারি করতে হবে।...প্রধান উপদেষ্টা তো সরকার প্রধান। সরকার প্রধানের আইন জারি করার কোনো রাইট আমাদের কনস্টিটিউশনে নেই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যার জারি করার কথা, তিনি জারি করলেন না, যথাযথ কর্তৃপক্ষ জারি করল না, সেই বিতর্ক যাতে ভবিষ্যতে না ওঠে, সে জন্য আমরা যেন পলিটিক্যাল ইমোশন থেকে সরে আসি। এ আহ্বান আমি সব পক্ষকে জানাব।’
তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল বলেছে, জনমতের চাপে অবশেষে বিএনপি জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাবে একমত হয়েছে। অথচ জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব বিএনপির ছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘দুটি রাজনৈতিক দল ছাড়া বাকি সবাই এ (গণভোট) প্রস্তাবে একমত হয়। আমি দুটি রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ করছি না। তবে দুটি দলের একটি জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে গিয়েছে। অপর একটি রাজনৈতিক দল এখন জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ খুঁজছে। তাদের কিছু দাবিদাওয়া আছে। সে বিষয়ে আলাপ–আলোচনা এখন যে পর্যায়ে হচ্ছে, আমি আশা করি, হয়তো তাদের দাবিদাওয়ার বিষয়ে একটা যৌক্তিক সমাধানও আসবে।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি দরকার হলো আমাদের মানসিক সংস্কার। আমরা ঐকমত্য কমিশনে আইনি সংস্কার, সাংবিধানিক সংস্কার নিয়ে কথা বলছি। যত সংস্কারই আমরা করি না কেন, জাতীয় ভিত্তিতে যদি আমাদের মানিসক সংস্কার না হয়, সেই আইনি ভিত্তিকে আমরা বাস্তবে রূপ দিতে পারব না। এটা মোদ্দাকথা।’
জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৭ অক্টোবর। তবে ওই অনুষ্ঠানে যায়নি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।


শেখ হাসিনার মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা ১৩ নভেম্বর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। আগামী ১৩ নভেম্বর রায়ের তারিখ ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইবুনাল-১-এ মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে যুক্তি খণ্ডন শেষে সমাপনী বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তারা উভয়েই দুই আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে সমাপনী বক্তব্য দেন রাষ্ট্রনিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী আমির হোসেন।
এ মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকেও আসামি করা হয়েছে। তবে নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে এরই মধ্যে তিনি সাক্ষ্য দিয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদ ও মঈনুল করিম। টানা পাঁচ দিনের যুক্তিতর্কে একাত্তর পরবর্তী আওয়ামী লীগের ইতিহাসসহ ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলের চিত্র তুলে ধরেন প্রসিকিউশন। গুম-খুন, হত্যাকাণ্ডের বর্ণনাও দেওয়া হয়। উপস্থাপন করা হয় বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত।
মামলার মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার কার্যক্রম সম্পন্ন হয় ৮ অক্টোবর। গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান কামাল ও চৌধুরী মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ এনেছেন প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠার। জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।


কোন কোন রাজনৈতিক দল টালবাহানা করে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

কোন কোন রাজনৈতিক দল নানা টালবাহানা করে নির্বাচনকে পেছানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু জনগণ আর সেই পুরনো রাজনীতির ফাঁদে পা দেবে না—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি মিলনায়তনে ‘মহানায়ক শহীদ জিয়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা এমন একসময় অতিক্রম করছি, যখন গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের কারণে দেশে অর্থনীতি ও রাজনীতি কার্যত ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার এখন আমাদের সহযোগিতায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করছে, যার মাধ্যমে সব কিছু পুনরায় গুছিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে।’
দেশকে এগিয়ে নিতে হলে একটি নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংস্কারের মধ্য দিয়ে বিএনপির জন্ম হয়েছে। জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন। দেশের ভালো সব কিছু বিএনপির হাতেই হয়েছে। কিন্তু এমনভাবে কথা বলা হয় যেন বিএনপি ভিলেন।’
জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বগুণের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘মানুষকে আকর্ষণ করার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল শহীদ জিয়ার। জাতি গঠনে তিনি কাজ করেছেন। কিন্তু তার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল আওয়ামী লীগ। ক্ষণজন্মা মানুষদের এত সহজে মুছে ফেলা যায় না। জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস ধারণ করেছে। তারেক রহমানও জিয়াউর রহমানের দেখানো পথেই হাঁটছেন।’
‘মহানায়ক শহীদ জিয়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, উপদেষ্টা ও কবি আব্দুল হাই শিকদার (গ্রন্থের সম্পাদক), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন প্রমুখ।


নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে ৩৬ প্রস্তাব বিএনপির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ৩৬ দফা প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ প্রস্তাবসমূহ উপস্থাপন করেন দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
এ সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী নির্বাচন একটি উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে যে শঙ্কা, তা কেটে যাবে।
তিনি বলেন, ‘বিগত তিন নির্বাচন, নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। গত ১৫ বছরে যাদের চরিত্র হনন করেছি, তারা বিগত ১৫ মাসে ঠিক হয়ে যাবে—এটা আশা করা ঠিক নয়। আমরা কমিশনকে সতর্ক করেছি এদের বিষয়ে সচেতন থাকতে।’
ড. আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল সিইসির সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। প্রতিনিধিদলে আরো ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ ও সাবেক ইসি সচিব ড. মোহাম্মদ জাকারিয়া।
৩৬ দফা প্রস্তাব: ১. বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিতের জন্য এখনই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে এই সরকারের ও নির্বাচন কমিশনের দৃঢ় ভূমিকা পালন করতে হবে।

২. নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে মাঠ প্রশাসনকে সম্পূর্ণ ঢেলে সাজাতে হবে। যেমন— ডিসি, ইউএনও, এসপি, ওসি এবং ক্ষেত্রমতে কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, সবার জন্য প্রযোজ্য হবে। উল্লেখ্য যে জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে এ ধরনের পুনর্বিন্যাস একটি রুটিন প্রক্রিয়া, যা অবশ্য করণীয়।

৩. বিগত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের অবৈধ নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সব বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের কোনোরূপ নির্বাচনী দায়িত্ব প্রদান করা যাবে না।

৪. রিটার্নিং অফিসার হিসেবে প্রশাসনের অফিসারদের পাশাপাশি সম্ভাব্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তা (ইলেকশন সার্ভিস) কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে দক্ষ, সৎ, অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৫. নির্বাচনকালীন নির্বাচনের সমগ্র প্রক্রিয়ায় জড়িত বেসামরিক প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব কর্মকর্তার বদলি, পদায়ন, অবস্থান, দায়িত্ব ও তাঁদের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের ভার নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে নিতে হবে। সব ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের কমপক্ষে এক সপ্তাহ পূর্ব হতে সামরিক বাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশসহ সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

৬. নির্বাচনপূর্ব ও নির্বাচনকালীন সময়ে অনিয়ম রোধে কমিটি গঠন ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বর্তমানে বিধান বলবৎ রয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন, অবলোকন এবং নির্বাচনকে জনগণের নিকট দৃশ্যমান বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য বিচার বিভাগীয় ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদেরও ম্যাজিস্ট্রেরিয়্যাল ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।

৭. ভোটারগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ অবাধ, নির্বিঘ্ন, স্বচ্ছ ও দৃশ্যমান করার জন্য ভোটকেন্দ্রের গোপনীয় কক্ষের কার্যক্রম ব্যতীত ভোটকেন্দ্রের অন্যান্য অভ্যন্তরীণ দৃশ্য বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ সৃষ্টির নিমিত্ত সিসি ক্যামেরা সংস্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. নির্বাচনী সময়সূচি ঘোষণার সাথে সাথে প্রত্যেক জেলার জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে এবং প্রত্যেক উপজেলা/থানায় উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার কার্যালয়ে একটি করে অভিযোগ নিরসন কেন্দ্র (Complain Redress Centre) চালু করতে হবে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো অভিযোগ প্রাপ্তির ১২ ঘণ্টার মধ্যে বা যত দ্রুত সম্ভব তা নিষ্পত্তি করে অভিযোগকারীকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে।

৯. জুলাই ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সারাদেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিংবডি গঠিত হয়েছে। হঠাৎ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার ঠিক পূর্বমুহূর্তে এ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তড়িঘড়ি করে ১ নভেম্বরের মধ্যে নতুন করে নির্বাচন সম্পন্নের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয়। এই কার্যক্রমের ফলে সারাদেশে শিক্ষক/শিক্ষিকাদের বার্ষিক পরীক্ষার একাডেমিক কার্যক্রম, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, ভোটকেন্দ্রের নির্বাচনের প্রাক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো একটি বৃহৎ কার্যক্রমে শিক্ষক/শিক্ষিকা, অভিভাবক/অভিভাবিকা তথা ভোটারদের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিংবডি নির্বাচন সংক্রান্ত নির্দেশনা স্থগিত করতে হবে।

১০. নির্বাচনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বা পোলিং পারসোনাল তথা প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে সর্বমহলের নিকট চিহ্নিত এমন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নিয়োগ প্রদান করা যাবে না। যেমন, ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইবনে সিনা ইত্যাদি। উল্লেখযোগ্য যে, ইতোমধ্যে ইসলামী ব্যাংক সারাদেশে প্রায় ৫০০০ কর্মকর্তা/কর্মচারীকে নিয়োগ বাতিল করেছে এবং এসব শূন্য পদে তড়িঘড়ি করে দলীয় লোকজন নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে মর্মে জনশ্রুতি রয়েছে।

১১. লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে জুলাই ’২৪ ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলসমূহের নেতাকর্মীদের নামে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে দায়েরকৃত মিথ্যা, বানোয়াট ও গায়েবি মামলাসমূহ নির্বাচনী সময়সূচি জারির পূর্বেই প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১২. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বেই বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় বিবেচনায় প্রদত্ত সকল অস্ত্র সরকারের কাছে জমা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।

১৩. সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা অগণিত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৪. সীমান্ত পথে আসা অবৈধ অস্ত্র, নকল টাকা, কালো টাকার অনুপ্রবেশ বন্ধের ব্যবস্থা করতে হবে।

১৫. সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানে এবং দূতাবাসগুলোতে চুক্তিভিত্তিক সকল নিয়োগ বাতিল করতে হবে।

১৬. নির্বাচন অবাধ, বিশ্বাসযোগ্য, শান্তিপূর্ণ ও পক্ষপাতহীন হতে হবে। ভোটারদের স্বাধীন ভোটাধিকার প্রয়োগে সম্ভাব্য সকল প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের অনুকূল পরিবেশ ও সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

১৭. নির্বাচনে সম্ভাব্য সকল কারচুপির সুযোগ প্রতিরোধ করে নিখুঁত ও ত্রুটিমুক্ত ফলাফল নিশ্চিত করতে হবে।

১৮. ভোটকেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগে অর্থশক্তি, পেশিশক্তি ব্যবহার ও প্রভাব প্রতিরোধ করতে হবে।

১৯. নির্বাচনী এলাকায় বহিরাগত কোনো লোক নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে না।

২০. নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের গৃহীত সাংবিধানিক শপথের প্রতি অনুগত থেকে নিরপেক্ষ ও সাহসী হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সংবিধান ও আইনের প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগে নির্ভীক হতে হবে।

২১. নির্বাচন যে অবাধ, নিরপেক্ষ ও কারচুপিমুক্ত হচ্ছে তা দেশ ও জাতির কাছে দৃশ্যমান হতে হবে।

২২. সকল ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

২৩. কোনো রাজনৈতিক দল, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কর্তৃক বিতর্ক তৈরি করে এমন কোন বক্তব্য যাতে না দেয় তার প্রাক ব্যবস্থা থাকতে হবে।

২৪. নির্বাচনে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িকতার বিষ-বাষ্প ছড়ায়- এমন সকল অপপ্রচার রোধ করতে হবে।

২৫. ভোটারদের প্রভাবিত করে এরূপ ধর্মীয় প্রলোভন বা ধর্মীয় দণ্ড প্রদানের ভীতি প্রদর্শন রোধ করতে হবে।

২৬. অর্থ, দুর্নীতি ও সহিংসতা অর্থাৎ Trippple ‘C’ (Cash, Corruption, Criminality)- এর অসৎ প্রভাবমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে।

২৭. ভোটকেন্দ্র নির্ধারণে বিধি-বিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভোটকেন্দ্রকে ভোটারদের কাছাকাছি নিয়ে যেতে হবে। যতদূর সম্ভব কম সংখ্যক ভোটার নিয়ে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করাই উত্তম। এতে কম দূরত্ব অতিক্রম করে ভোটারগণ সহজেই ভোটকেন্দ্রে ভোটদানে উৎসাহিত হবেন।

২৮. নির্বাচনের যাবতীয় নিয়মকানুন-ভোটাধিকার, ভোটদান প্রক্রিয়া ইত্যাদি সম্পর্কে ভোটারসহ আপামর জনসাধারণকে পত্র-পত্রিকা, রেডিও-টেলিভিশন, লিফলেট ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভোটার সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

২৯. নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইনে বর্ণিত সকল নির্বাচনী কর্মকর্তাদের (রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট, ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাবৃন্দ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তা ও সদস্যবৃন্দ) সার্বিক নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে কোন গাফিলতি পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

৩০. ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজ ব্যসার্ধের মধ্যেই কেবল নয় বরং এর বাইরেও নির্বাচনী এলাকার যেকোনো স্থানে সন্ত্রাসী তৎপরতা তাৎক্ষণিকভাবে দমন করতে হবে।

৩১. স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের তাদের নিজস্ব জেলায় দায়িত্ব প্রদান করা যাবে না। তাছাড়া রাজনৈতিক মতাদর্শী বা কোনো দলীয় ভাবধারা প্রচার করে এমন পর্যবেক্ষণ সংস্থাকে পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া যাবে না।

৩২. আনসার ও ভিডিপি মোতায়েনের ক্ষেত্রে কোনক্রমেই নিজ জেলায় মোতায়েন করা যাবে না।

৩৩. কমিউনিটি পুলিশকে কোনোভাবেই ভোটকেন্দ্রে মোতায়েন করা যাবে না।

৩৪. ছবিসহ ভোটার তালিকা পোলিং পার্সোন্যালসহ সকল পোলিং এজেন্টদেরকেও যথাসময়ে সরবরাহ করতে হবে।

৩৫. ভোট গণনা শেষ হবার পরপরই নির্বাচনের ফলাফল প্রতিটি কেন্দ্র হতে সরাসরি ঘোষণা করতে হবে।

৩৬. প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ আইনানুগ স্বচ্ছতার সাথে করতে হবে। বিভিন্ন দেশে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দানে ইচ্ছুক রেজিস্টার্ড প্রবাসী ভোটারদের তালিকা রাজনৈতিক দলকে যৌক্তিক সময়ের পূর্বেই সরবরাহ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, অবশ্য পরে ড. আব্দুল মঈন খান সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, তারা কোনো লিখিত প্রস্তাব দেননি।
যদিও বিএনপির এই নেতার হাতে ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে করণীয় প্রস্তাবসমূহ নির্বাচন কমিশনের সহিত সভার জন্য প্রস্তাবিত কার্যপত্র’ শীর্ষক একটি দলিল দেখা গেছে।


পলাতক আসামিরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না

* জোটের প্রার্থী হলেও ভোট করতে হবে নিজ দলের প্রতীকে * ইসি প্রয়োজনে পুরো আসনের ভোট বাতিল করতে পারবে * একক প্রার্থীর ক্ষেত্রে থাকছে ‘না’ ভোটের বিধান * প্রার্থীর দেশি-বিদেশি আয়ের তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক
    * সংশোধিত আরপিও অনুমোদন

মামলায় পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। এমন বিধান যুক্ত করে নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ঢাকার তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার নানা দিক তুলে ধরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, বিভিন্ন মামলায় পলাতক ব্যক্তিরা নির্বাচন করতে পারবেন না, এটিও যুক্ত করা হয়েছে।
পলাতক আসামি বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘পলাতক হচ্ছে—আদালত যখন পলাতক ঘোষণা করেন। যেদিন আদালত আপনাকে আসতে বলছেন, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে, আসছেন না—আদালত পলাতক ঘোষণা করেন। বিচার চলাকালে পলাতক হয়।’
আগে ভোটের সময় জোটভুক্ত হয়ে জনপ্রিয় বা বড় দলের প্রতীকে ভোট করার সুযোগ থাকলেও এবার নির্বাচনী জোট হলেও প্রার্থীদের নিজ দলের প্রতীকে জাতীয় নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করতে হবে।
সংশোধিত আরপিওর নানা দিক তুলে ধরে আইন উপদেষ্টা বলেন, যদি নির্বাচনী জোট হয়, তাহলে জোটের অংশ হলেও দলের যে প্রতীক তা দিয়ে নির্বাচন করতে হবে, যাতে ভোটাররা ক্লিয়ার আইডিয়া পায় প্রার্থী কোন দলের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে সংজ্ঞা, সেখানে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার সম্পর্কিত যেসব বিধান ছিল তা বিলুপ্ত করা হয়েছে।
এর ফলে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও পুলিশের মতো ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তিন বাহিনীকে নির্বাচনী দায়িত্ব দিতে আলাদা কোনো আদেশের প্রয়োজন হবে না।
সংশোধিত আরপিওতে ‘না’ ভোটের বিধান রাখার কথা জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, যে সংসদীয় আসনে একজন প্রার্থী থাকবেন সেখানে ভোটারেরা ‘না’ ভোট দিতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের ভুয়া, সাজানো নির্বাচন যেন না হয়—সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন যে প্রার্থী—পছন্দ না, সেখানে না ভোট দিতে পারবে।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন— নির্বাচনে যারা প্রার্থী থাকবেন, তাদের দেশি উৎস ও বিদেশি উৎস থেকে আয়, সম্পত্তি, সবকিছুর বিবরণ নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে। এটা আমরা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে দেব (পাবলিশ)। সবাই জানবে। আপনাদের এলাকার যে প্রার্থী আছে, কার কত আয়, কোথা থেকে আয়, কী সম্পত্তি— এটা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন। এ-সংক্রান্ত একটা বিধান এই আইনে থাকবে। নির্বাচনে জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার করা হয়েছে।’
রাজনৈতিক দলের অনুদানের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকার বেশি হলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেওয়ার বিধান করা হয়েছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, ‘যিনি অনুদান দেবেন, তার ট্যাক্স রিটার্নও দিতে হবে।’
অনিয়ম বন্ধে ইসি প্রয়োজনে পুরো আসনের ভোট বাতিল করতে পারবে—এমন বিধান যুক্ত করার তথ্য দিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।তিনি বলেন, ‘আগের আইনে বিধান ছিল—কোনো ভোটকেন্দ্রে গণ্ডগোল হলে কেন্দ্রের ফলাফল বাতিলের। এখন ইসি যদি মনে করে একটা নির্বাচনী এলাকাতেই এত অনিয়ম হয়েছে, পুরো এলাকার ভোট বাতিল করা উচিত; তাহলে সেটা করতে পারবে। সে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।’
নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বিধান আরপিও যুক্ত করা হয়েছে। এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভিাটিং চালু করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে অনলাইনে নিবন্ধন সেরে ডাকযোগে ভোট দিতে পারবেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। পাশাপাশি কারা হেফাজতে থাকা, সরকারি কর্মকর্তা, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা এভাবে ভোট দিতে পারবেন।
ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার বিধানটিও যুক্ত করা হয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।
প্রসঙ্গত, আগে চলতি মাসেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে। সেই সংশোধনী অনুযায়ী মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো মামলায় কারও বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে সেই ব্যক্তি জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
গত বছর জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) অনেক নেতার বিচার চলছে। এ ছাড়া অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দলটির বহু নেতা আত্মগোপনে চলে গেছেন, যাদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী–এমপিরা রয়েছেন। তাদের প্রায় সবার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, হত্যা, হত্যাচেষ্টাসহ নানা অভিযোগে মামলা হয়েছে। এই নেতারা আদালত থেকে পলাতক ঘোষিত হলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পাবেন না।


ইসি কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না: সিইসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশন কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত (টিওটি) প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই)-এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য সিইসি এ কথা বলেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের উদ্দেশে করে বলেন, ‘এই ম্যাসেজটা আপনাদের দিতে চাই যে, আপনারা কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। সম্পূর্ণভাবে আইন অনুযায়ী নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকবেন। আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনও কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। তা ছাড়া আমরাও আপনাদের অন্যায় কোনো আদেশ দেব বা হুকুম দেব না। আপনারা ধরে রাখতে পারেন, রিলেভেন্ট টু ইলেকশন (নির্বাচন সম্পর্কিত) যে আইন প্রচলিত আছে সেই আইন অনুযায়ী আমাদের নির্দেশনা যাবে বা আপনারা সেভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। একটা সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারার চেষ্টা করবেন।’
সিইসি বলেন, আমরা কামনা করি, আপনারা আইনসম্মতভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে (প্রফেশনালি) কাজ করবেন। আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। এই দেশের এই দুরবস্থার মূল কারণ হলো, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থাকা। যে জাতি আইনের প্রতি যতটা শ্রদ্ধাশীল, সেই জাতি তত সভ্য। সভ্য দুনিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। আমাদের এই কালচারটা কাল্টিভেট করতে হবে।’

সিইসি আরও বলেন, ‘আমরা চাই সর্বস্তরের মানুষ আইন মেনে চলবে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে এবং সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করবে। যে গন্ডির মধ্যে আমার কাজ থাকবে সেখানেই আমি আইনকে বাস্তবায়ন করব। আমরা চাইব আপনারা আইনদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আপনাদের দায়িত্ব পালন করবেন।’

সিইসি আরও বলেন, নির্বাচনের মধ্যে সমন্বয়টা একটা বড় জিনিস। আপনারা যেহেতু উপজেলা পর্যায়ে নিয়োজিত আছেন। সমন্বয়ের দায়িত্বটা মূলত আপনাদের উপরে নির্ভর করে। সুতরাং নির্বাচনের সময়ও এই সমন্বয়টা খুবই জরুরি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রিসাইডিং অফিসার ও কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের সাথে সমন্বয় করতে হবে। জেলার যে ইলেকশন মনিটরিং সেল থাকবে ওটার সাথে সমন্বয়। এই সার্বিক সমন্বয়টা আপনাদের খুব সিরিয়াসলি করতে হবে। এই দায়িত্বটা আপনাদের কাঁধে নিতে হবে। যেকোনো ক্রাইসিস হলে আপনারা চেষ্টা করবেন শুরুতেই যাতে এটার সমাধান করা যায়।

ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আব্দুর রহমানেল মাছউদ, নির্বাচন কমিশনার বেগম তাহমিদা আহমদ, নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এবং নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

বেগম তাহমিদা আহমদ বলেন, আমরা সাহসী হব, তবে অতি সাহসী না। অতীতে অতি উৎসাহী হয়ে অনেকে অনেক কিছু করেছেন। এবার এসব করা যাবে না।

তিনি বলেন, আগের প্রশিক্ষণ ভুলে গিয়ে এখন যেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সেটি নিতে হবে। আগের নির্বাচন আমরা সবাই মিলে নষ্ট করেছি।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের আপনাদের প্রতি ম্যাসেজ হচ্ছে সামনের নির্বাচন নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই। সঠিক কাজ করবেন, ইসি আপনাদের সঙ্গে আছে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলক কোনো কাজ করলে সাংঘাতিক পেরেশানিতে পড়বেন। আর সঠিকভাবে কাজ করার জন্য যা যা সহায়তা লাগে তা আমরা দেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাহসের সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে। চাকরির মান-মর্যাদা রক্ষার জন্য এবং অস্তিত্বের প্রশ্নে আমাদের না করার কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচনের একটা আবহ সৃষ্টি করতে হবে।’

মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, সুশৃঙ্খল পরিবেশ ভালো নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। মোবাইল কোর্ট আয়নার মতো স্বচ্ছ হতে হবে। পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। এখন থেকে মোবাইল কোর্ট রেগুলার করতে হবে। এই নির্বাচনে যারা ভালো দায়িত্ব পালন করবে তাদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচন মাঠে যারা আছেন তারা যেন তাদের আচরণবিধি মেনে চলেন। প্রশাসন কঠোরভাবে নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাবে। এবারের নির্বাচনে সমন্বিতভাবে মাঠ প্রশাসন যে, একটা দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারি তা আমরা দেখিয়ে দেব।’


তামাকমুক্ত সমাজ গঠনে জনমত গড়ে তুলতে হবে: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, তামাকমুক্ত সমাজ গঠনে জনমত ও জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা, ‘তরুণ চিকিৎসকদের ভূমিকা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, একজন ধূমপায়ী চিকিৎসক রোগীকে ধূমপানে বাঁধা দিলে তিনি গ্রহণ করবেন না। তাই চিকিৎসকদেরকে ধূমপান পরিহার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় ও এসেম্বলিতে তামাকের ক্ষতিকারক দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। এছাড়া শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের সময়েও এ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এ সময় উপদেষ্টা তামাকমুক্ত বিদ্যালয় ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের কর্মসূচি পরিচালক শেখ মোমেনা মনি, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার সরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান, সিটিএফকে, বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ডা. ফারজানা রহমান মুনমুন অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।


অক্টোবরের ২১ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৮.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে অক্টোবরের ২১ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৮.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৮৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

গত বছর একই সময়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১ হাজার ৭১৪ মিলিয়ন ডলার।

চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রবাসীরা ৯ হাজার ৪৩৯ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮ হাজার ২৫৭ মিলিয়ন ডলার।


সেন্টমার্টিন ভ্রমণে ট্রাভেল পাস বাধ্যতামূলক, মানতে হবে ১২ নির্দেশনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নতুন করে ভ্রমণ নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। দ্বীপে প্রবেশের জন্য এবার থেকে ট্রাভেল পাস বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ-২ শাখা থেকে ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা, ২০২৩’ এর আলোকে ১২ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়।

নতুন নির্দেশনার মূল দিকগুলো

১. বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্টমার্টিনে চলাচল করতে পারবে না।

২. পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অনুমোদিত ওয়েব পোর্টাল থেকে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে থাকবে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড। কিউআর কোডবিহীন টিকিট নকল হিসেবে বিবেচিত হবে।

৩. দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি ও পর্যটকসংখ্যা এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে।

৪. নভেম্বর মাসে শুধুমাত্র দিনের বেলায় দ্বীপ ভ্রমণের অনুমতি থাকবে—রাত্রিযাপন করা যাবে না।

৫. ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সীমিত আকারে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে।

৬. ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।

৭. প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক সেন্টমার্টিনে প্রবেশ করতে পারবেন না।

৮. দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

৯. কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

১০. সৈকতে মোটরসাইকেল বা অন্য কোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচলও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

১১. নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সামগ্রী যেমন চিপসের প্যাকেট, স্ট্র, প্লাস্টিক চামচ, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ছোট পানির বোতল বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

১২. পর্যটকদের নিজস্ব ফ্লাস্ক বা বোতল সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে প্লাস্টিক ব্যবহারের পরিমাণ কমে।

পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিয়ন্ত্রণহীন পর্যটনের কারণে সেন্টমার্টিনের ইকোসিস্টেম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই দ্বীপের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে পর্যটন কার্যক্রম ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা হচ্ছে।

দ্বীপে প্রবেশ ও অবস্থানের প্রতিটি ধাপ এখন থেকে ডিজিটাল ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে তদারক করা হবে।


নিরপেক্ষতার রূপরেখা নিয়ে সিইসির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে ৩৬ দফা সম্বলিত একটি রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

এসব প্রস্তাবনা নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক করবে দলের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের নেতৃত্বে দলের প্রতিনিধি দলটি সিইসির কাছে এই ৩৬ দফা প্রস্তাবনা তুলে দেবে। গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির সভায় এই রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয় বলে দলের শীর্ষ পর্যায়ের সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজে বিতর্কিত ও চার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে চায় না বিএনপি:

বিএনপির চূড়ান্ত করা রূপরেখায় উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো— বিগত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ‘বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ’ নির্বাচনগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনী দায়িত্বে না রাখা।

এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত চারটি প্রতিষ্ঠানের (ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও ইবনে সিনা) কর্মকর্তাদের আগামী নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো কাজ বা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ না দেয়ার প্রস্তাব করেছে দলটি। বিএনপির অভিমত, এসব কর্মকর্তাদের নির্বাচনী কাজে সম্পৃক্ত করা হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

৩৬ দফার উল্লেখযোগ্য দিকগুলো হলো:

নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে বিএনপির ৩৬ দফা প্রস্তাবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থান পেয়েছে-

অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা: বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে দৃঢ় ভূমিকা পালন করতে হবে।

প্রশাসনিক রদবদল: নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠ প্রশাসনকে (ডিসি, ইউএনও, এসপি, ওসি, কমিশনার, পুলিশ কমিশনার) সম্পূর্ণ ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি রিটার্নিং অফিসার হিসেবে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের (ইলেকশন সার্ভিস) মধ্য থেকে দক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটি স্থগিত: সম্প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তড়িঘড়ি করে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি নির্বাচন সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অবিলম্বে স্থগিত করতে হবে, যা নির্বাচনী কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে।

মামলা প্রত্যাহার: লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে নির্বাচনী সময়সূচি ঘোষণার পূর্বেই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলসমূহের নেতাকর্মীদের নামে বিগত স্বৈরাচারি সরকারের আমলে দায়েরকৃত মিথ্যা, বানোয়াট ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল: নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এবং দূতাবাসগুলোতে চুক্তিভিত্তিক সকল নিয়োগ বাতিল করতে হবে।

অভিযোগ কেন্দ্র চালু: নির্বাচনী সময়সূচি ঘোষণার সাথে সাথে প্রত্যেক জেলার নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে এবং উপজেলা/থানায় অভিযোগ নিরসন কেন্দ্র চালু করে দ্রুত অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার ও উপদেষ্টাদের নিরপেক্ষতা দাবি:

বিএনপির পর্যবেক্ষণে সরকারের কিছু উপদেষ্টার বক্তব্য, তৎপরতা ও কার্যক্রমে সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল-পদায়ন নিয়ে কিছু উপদেষ্টা পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন এবং গত বছরের পটপরিবর্তনের পর প্রশাসনে জামায়াত-ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

এ অবস্থায় বিএনপি গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করে তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন থেকে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে থাকা দল-ঘনিষ্ঠদের বিষয়েও পদক্ষেপ নিতে বলেছে।


banner close