মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

আলোচিত ওয়াহিদ-আঞ্জুর বিয়ে অবৈধ: হাইকোর্ট

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল ছবি
আপডেটেড
৭ জুন, ২০২৩ ১৬:২৩
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৭ জুন, ২০২৩ ১৫:২০

সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাই প্রয়াত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের সঙ্গে ভারতীয় নাগরিক আঞ্জু কাপুরের বিয়ে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

এ-সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ রায়ের ফলে আঞ্জু কাপুরকে উইল করা বাড়িটি তার অধীনে থাকল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।

আদালতে জগলুল ওয়াহিদের দুই কন্যার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

তিনি বলেন, উইলকৃত সেই বাড়িতে বসবাসকারী জগলুল ওয়াহিদের কন্যারা মুসলিম আইন অনুযায়ী তাদের সম্পত্তির অধিকার পাবেন।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘আমরা জেনেছি আঞ্জু কাপুর বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে গিয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে।’

ভারত থেকে ২০০৩ সালের আগস্ট মাসে আঞ্জু কাপুর বাংলাদেশে এসে ইউটাস গ্রুপ অব কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। ২০১৩ সালের ৩১ জুলাই পেশায় পাইলট মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের মৃত্যু হয়।

এ-সংক্রান্ত মামলা থেকে জানা যায়, গৃহকর্তা জগলুল ওয়াহিদের মৃত্যুর পর বাড়ির মালিকানা নিয়ে বিরোধে তার দুই মেয়ে অবস্থান নেন ওই বাড়ির সামনে। ওই দুই বোনের দাবি, বাড়ির দখল বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করা ভারতীয় নাগরিক আঞ্জু কাপুরের হাতে। তিনি কিছুতেই ওই বাড়িতে তাদের ঢুকতে দিচ্ছেন না।

একপর্যায়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই প্রতিবেদন নজরে নিয়ে হাইকোর্ট স্ব-প্রণোদিত আদেশ দেন। আদেশের পর মেয়েদের তাদের বাবা মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের গুলশান-২-এর ৯৫ নম্বর সড়কের বাড়িতে প্রবেশ করতে দেয়া হয় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।

পরে বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফায় হাইকোর্টে শুনানি হয় এবং হাইকোর্ট রুল জারি করেন। একই সঙ্গে ভারতীয় নাগরিক আঞ্জু কাপুরের সঙ্গে জগলুল ওয়াহিদের বিয়ে ও বাড়ি উইল করা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের চার সিনিয়র আইনজীবীর (অ্যামিকাস কিউরির) অভিমত শোনেন হাইকোর্ট।

অবশেষে আইনজীবীদের অভিমত বিবেচনায় নিয়ে এবং জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে আজ রায় দিলেন হাইকোর্ট।


আরও কয়েকদিন ঝড়-বৃষ্টির আভাস

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৭ মে, ২০২৪ ০০:২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত কয়েক দিন ধরেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় এপ্রিল মাসের অব্যাহত থাকা তীব্র দাবদাহ অনেকটাই কমেছে। ফলে জনজীবনে বেশ স্বস্তিদায়ক অবস্থা দেখা যাচ্ছে। গরমে হাপিত্যেশ অবস্থা থেকে মুক্তি মিলেছে। চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ঝড়-বৃষ্টির যে পূর্বাভাস ছিল তা অব্যাহত আছে।

রোববার রাতে রাজধানীতে শীতল ছোঁয়া নিয়ে এসেছে ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি। এই অবস্থা আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এর আগে দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলেমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোতে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

গতকাল সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তর তথ্যমতে, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার কথা। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। আর আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তাপপ্রবাহ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ তাপপ্রবাহ অধিকাংশ জায়গায় কমতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

এদিকে আজ মঙ্গলবার রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শিলাবৃষ্টিও হতে পারে কোথাও কোথাও। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আর আবহাওয়া অফিস আগামীকাল বুধবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত দেওয়া এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, এ সময়ের মধ্যে দেশের সব বিভাগে বজ্রঝড়, কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। এ ছাড়া বিক্ষিপ্তভাবে হতে পারে শিলাবৃষ্টিও। এ ছাড়া রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে জানান, সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ সময়ে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অধিকাংশ জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে।

এদিকে দেশজুড়ে আগামী ছয়-সাত দিন বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টির প্রবণতা থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রেকর্ড একটানা তাপপ্রবাহের পর রোববার রাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির দেখা মেলে। প্রচণ্ড গরমে জনজীবনে কিছুটা ‘স্বস্তি’ আসে তাতে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন সোমবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা ছিল বেশি। আগামী ছয়-সাত দিনও সারা দেশে বিচ্ছিন্ন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা অব্যাহত থাকবে।’

সোমবার বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ফেনীতে সর্বোচ্চ ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

অবশেষে চুয়াডাঙ্গায় স্বস্তির বৃষ্টি

টানা তাপপ্রবাহের পর চুয়াডাঙ্গায় শুরু হয়েছে স্বস্তির বৃষ্টি। সোমবার দুপুর ৩টা ৩৫ মিনিট থেকে শুরু হয় বৃষ্টিপাত। সঙ্গে ছিল শিলা ও বজ্রপাত। বয়ে গেছে ঝোড়ো হাওয়া। এর আগে চুয়াডাঙ্গার আকাশে মেঘের লুকোচুরি ছিল। দুপুর ৩টা থেকে মেঘের আনাগোনা বেড়ে যায়। এরপর ঝরতে থাকে বৃষ্টিধারা। গত এপ্রিল মাসজুড়ে এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে অতি তীব্র আকারের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। গত এক মাসের মধ্যে মাত্র ৪ দিন স্বাভাবিক তাপমাত্রা বিরাজ করছিল এ জেলায়। টানা এ খরতাপের মধ্যে বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনছিল মানুষ। অবশেষে সেই বহুল কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা মেলায় জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে।

চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়া যায়। কোথাও কোথাও বৃষ্টি ও ঝড়ের খবর পাওয়া গেলেও সোমবার দুপুরের পর থেকে চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। সন্ধ্যা ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৪ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ১২ মে পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টিতে জনমনে স্বস্তি

টানা তীব্র দাবদাহের পরে অবশেষে পটুয়াখালীতে নামল স্বস্তির বৃষ্টি। বৃষ্টিতে জনজীবনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। সোমবার (৫ মে) বিকাল ৫টার পর থেকে পটুয়াখালীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। সঙ্গে ছিল হালকা দমকা হাওয়া। পরে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে মাঝারি আকারে বৃষ্টি শুরু হয়। আকাশ মেঘলা থাকায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।

গত এপ্রিল মাসজুড়ে এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পটুয়াখালীর ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। টানা খরতাপের মধ্যে বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনছিল মানুষ। অবশেষে সেই বহুল কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা মেলায় জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে।

দীর্ঘদিন তীব্র তাপপ্রবাহের পর খুলনায়ও দেখা মিলল স্বস্তির বৃষ্টি। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রপাতের সঙ্গে কিছু কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত এপ্রিল মাসজুড়ে এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে খুলনার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। টানা এ খরতাপের মধ্যে বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনছিল মানুষ। স্বস্তির বৃষ্টি দেখে অনেকেই উচ্ছ্বাসে ভিজতে নেমে যান।

অন্যদিকে টানা কয়েক দিনের তীব্র থেকে অতি তীব্র দাবদাহের পর গোপালগঞ্জে দমকা হাওয়ার সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। তবে বৃষ্টিতে বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। সোমবার (৬ মে) বিকাল থেকে আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। বিদ্যুৎ চমকানোর সঙ্গে শোনা যায় মেঘের গর্জন, হয় বজ্রপাতও। সন্ধ্যায় শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। সন্ধ্যার পর বাড়তে থাকে বৃষ্টি। জনমনে আসে স্বস্তি। বৃষ্টি আর শীতল হাওয়ায় গরম থেকে মুক্তি পেয়েছে মানুষ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজতে দেখা যায় অনেককেই। এদিকে জেলায় এখনো যেসব চাষিরা বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেননি, তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র গরমের পর বরগুনায় হঠাৎ স্বস্তির বৃষ্টি নেমেছে। সোমবার বিকাল ৫টার পর থেকে বরগুনার বিভিন্ন জায়গায় স্বস্তির বৃষ্টির সঙ্গে বইছে দমকা হাওয়া। হঠাৎ বৃষ্টিতে জনজীবনে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।

বিকাল ৪টা থেকে আকাশে গুমট ভাব। কালো মেঘে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে বরগুনার বিভিন্ন জায়গা। আধাঘণ্টা পরই বিভিন্ন জায়গায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। কৃষকরা জানান, এ বৃষ্টি আমাদের কাছে ঈদের খুশির মতো। বৃষ্টির কারণে ডাল, তেল ও বোরো ফসলের সজীবতা ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এ জন্য বৃষ্টি হওয়ায় একটু স্বস্তি পেয়েছেন তারা।


চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক  

জাতীয় সংসদে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, আপাতত সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেই সরকারের। তবে আগামীতে চাকরিতে বয়সসীমা বাড়াব কি-বাড়াব না, বাড়ালে ভালো হবে কি না, এটি আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আরও আলাপ-আলোচনা করা হবে। সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে পৃথক দুটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সম্পূরক প্রশ্নে চাঁদপুর-৫ আসনের রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম ও সংরক্ষিত আসনের এমপি ফরিদা ইয়াসমিন চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে কি না তা জানতে চান।

রফিকুল ইসলাম তার প্রশ্নে বলেন, সরকারি চাকরিতে যোগদানের যে বয়সসীমা রয়েছে তা অনেক আগে নির্ধারণ করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে আমাদের দেশের মানুষের আয়ুষ্কাল ৬২ বছর থেকে ৭২ বছরে এসে পৌঁছেছে। এখন এটা অত্যন্ত যৌক্তিক হবে সরকারি চাকরিতে যোগদানের বর্তমান বয়সসীমা শিথিল করে অন্তত ৩৫ বছরের কাছে নিয়ে যান। এটা হলে কর্মসংস্থানের অভাবে আমাদের হতাশাগ্রস্ত তরুণ ও যুব সমাজ প্রতিযোগিতায় এসে সরকারি চাকরিতে ঢুকতে পারবে। আমি সরকারকে অনুরোধ করব বয়সসীমা শিথিল করার সময় এসেছে। সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টির সময় হয়েছে। আমাদের ‘না’ একটা মনোভাব রয়েছে-এটা থেকে বেরিয়ে ‘হ্যাঁ’-তে চলে আসতে হবে।

জবাবে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, গত ১৫ বছরে সরকার অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চাকরির বয়স ছিল ২৭ বছর, সেখান থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছরে উন্নীত করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য সেটা ৩২ বছর করা হয়েছে। চাকরি থেকে অবসরের বয়স ৫৭ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়েছে। আমরা সবসময় যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জনবল কাঠামো ও নিয়োগ প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করে থাকি। যুগের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে আমরা পরিবর্তনও করে থাকি।

চাকরিতে প্রবেশ ও বেরিয়ে যাওয়ার (অবসর) বয়সটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরি ঘিরে এখন বেশ আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত মেধাবীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগদান করছেন। সরকারি চাকরির পরিবেশ থেকে শুরু করে বেতন কাঠামো নতুন প্রজন্মের কাছে বড় আকর্ষণ তৈরি করেছে। সরকারের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা একটি সম্মানের বিষয়। আবার চাকরির নিরাপত্তা থেকে শুরু করে বেতন কাঠামো অত্যন্ত সুন্দর এবং কাজের পরিবেশও সুন্দর হয়েছে।

বয়স বাড়ানো প্রশ্নে তিনি বলেন, এটি নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। আমরা সবসময় বলে আসছি, ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট যারা তাদের রিক্রুট করতে চাই। এটা সরকারের একটা পলিসি। আমরা বিসিএস-এর মাধ্যমে দেখে থাকি ২২/২৩ বছর বয়স থেকেই তারা বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকেন। তারা ৬/৭ বছর সময় পেয়ে থাকেন। এ জন্য তারা যোগদানের যথেষ্ট সময় পাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টি সংসদে জানিয়েছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা সবসময় যুগের প্রয়োজনে নতুন যেটা করলে ভালো হবে সেটা চিন্তা-ভাবনা করে থাকি। তবে আমি মনে করি, এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। আমরা চাকরির বয়স আগামীতে বাড়াব কি বাড়াব না, বাড়ালে ভালো হবে কি না?- এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। এটা নিয়ে ভবিষ্যতে আরও আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারব।

সংরক্ষিত আসনের ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, চাকরির বয়স ৩৫ বছর করার জন্য শিক্ষামন্ত্রী একটি আধাসরকারি পত্র (ডিও লেটার) দিয়েছেন। সরকারের এটা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি না?

জবাবে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের একটি পত্র আমরা এরই মধ্যে পেয়েছি। আগেই বলেছি এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও আলাপ-আলোচনা করব। তবে আপাতত চাকরির প্রবেশের বয়স বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমাদের সিদ্ধান্ত নেই। এটা নিয়ে আরও আলোচনা-পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে দেখব।


সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় রয়েছে

শিগগিরই সুদহার বাজারভিত্তিক করা হবে
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। কৃষি খাতের উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘শিল্প খাতের উৎপাদন এখন ধারাবাহিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগও আছে সঠিক পথে। অর্থনীতিতে এখন একমাত্র সমস্যা মূল্যস্ফীতি। তবে রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে না পারাটাও একটি ইস্যু।’

রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে রোববার ফার্স্ট ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন। ‘পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে উন্নয়নের পথ অনুসন্ধান’ শীর্ষক এ সম্মেলন যৌথভাবে আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ ও বণিক বার্তা। দুদিনব্যাপী এ সম্মেলনের প্রথম দিনের দ্বিতীয় প্লেনারিতে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। দুপুরে ‘ফিসক্যাল অ্যান্ড মনিটরি পলিসি ইন দ্য ইভলভিং ইকোনমিক অর্ডার’ শীর্ষক এ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও ফজলে কবির, সাবেক অর্থ সচিব ড. মোহাম্মদ তারেক ও মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘সরকারের বিনিয়োগ তেমন একটা কমেনি। সামাজিক খাতের বিনিয়োগ বিশেষ করে সুরক্ষা নীতিগুলোর পরিধি বেড়েছে। সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষকে সুরক্ষা দিতেই এটি করা হয়েছে। এ মুহূর্তে দেশের রাজস্ব ঘাটতি অত বেশি নয়। জিডিপির তুলনায় আমাদের রাজস্ব ঘাটতি এখনো দক্ষিণ এশিয়ার সর্বনিম্নদের একটি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করেছে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারকে কোনো ধরনের ঋণ দেওয়া হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে রেফারেন্স রেট অনুসারে ব্যাংকের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে। শিগগিরই এটি আরও বেশি বাজারভিত্তিক করা হবে। বর্তমান সুদহার নির্ধারণের পদ্ধতিটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা। পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে সুদহার নির্ধারণে ব্যাংকের স্বাধীনতা থাকবে। চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে ব্যাংকগুলো এটি নির্ধারণ করতে পারবে।’

বি‌নিময় হারের বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘এক্ষেত্রে কিছুটা প্রতিকূলতা আছে। অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে আমরা ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছি। পরবর্তী সময়ে এটিও বাজারভি‌ত্তিক করে দেওয়া হবে। মুদ্রানী‌তি প্রণয়ন কমিটিতে আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তারা থাকলেও এখন আমরা বাইরের বিশেষজ্ঞদেরও অন্তর্ভুক্ত করেছি।’

তিনি বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণের স্বার্থে আমাদের আমদানির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হয়েছে। নিরুৎসাহিত করা হয়েছে কম গুরুত্বপূর্ণ ও বিলাসপণ্য আমদানিতে। পাঁচ মাস ধরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। এ সময়ে প্রতি মাসে গড়ে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। চার মাস ধরে সরকারের চলতি হিসাব ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। তবে পুরো বছরের চিত্রটি এমন ছিল না। দেশের ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট এখনো নেতিবাচক।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রিজার্ভ ক্ষয়- এ দুটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে বলে জানান গভর্নর। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমরা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। এক্ষেত্রে শুধু চাহিদা কমাচ্ছি না, বরং জোগান বাড়ানোর লক্ষ্যেও কাজ করছি। কৃষি ও এসএমইতে ঋণের জোগান বাড়ানো হয়েছে। রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রেও বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘আমাদের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে হবে। আমরা দেখছি, আদায়কৃত রাজস্বের মধ্যে প্রত্যক্ষ কর এক-তৃতীয়াংশ। বাকি দুই-তৃতীয়াংশই পরোক্ষ কর। এর অর্থ হলো- ধনীদের তুলনায় গরিবদের বেশি কর দিতে হচ্ছে।’

ভর্তু‌কির বিপরীতে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বাজারে অর্থের সরবরাহ বাড়ার বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘বিশেষ বন্ড থেকে ১ লাখ কোটি টাকা তৈরি হয়েছে বলে একজন আলোচক উল্লেখ করেছেন। কিন্তু টাকা তৈরির বিষয়টি এতটা দ্রুততার সঙ্গে হয় না। বন্ডের মাধ্যমে অর্থের সরবরাহ বাড়ার জন্য কয়েক বছর সময় লাগে।’

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমদানি নিয়ন্ত্রণের ফলে এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় কমে গেছে। ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাত যাতে ঋণ পায় সেটি বাংলাদেশ ব্যাংককে দেখতে হবে। মূল্যস্ফীতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে সবকিছুতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে প্রবৃদ্ধি যাতে কমে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির মধ্যে সমন্বয় সাধন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন সাবেক গভর্নর ফজলে কবির। এ বিষয়ে তিনি বলেন, কভিডের সময় যেসব প্রণোদনা দেওয়া হয়েছিল, সেক্ষেত্রে মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির কার্যকর সমন্বয় করা হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এরপর গুরুত্ব দিতে হবে প্রবৃদ্ধিকে। মূল্যস্ফীতির হারকে সাড়ে ৯ থেকে ৭ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে হবে। এটি দরিদ্রদের ওপর ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে। এজন্য আরো বেশকিছু সময় সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বহাল রাখতে হবে। তবে শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। এ জন্য আরও বেশকিছু ফ্যাক্টর রয়েছে। সেগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে।’

প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ তারেক বলেন, ‘শক্তিশালী বেসরকারি খাত ও ব্যবসায়িক গ্রুপ ব্যতীত কোনো দেশই উন্নত হতে পারবে না। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রবৃদ্ধির জন্য তাদের আমাদের প্রয়োজন। তবে এক্ষেত্রে একটি সমস্যা আছে। সেটি হচ্ছে যদি এসব ব্যক্তি নীতিনির্ধারক হয়ে যান তাহলে সবকিছুই নিচের দিকে যাবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি গ্রুপ সবকিছুকেই প্রভাবিত করছে, এমনকি রাজনীতিবিদদেরও। ফলে নীতিনির্ধারকরা যদি নীতি প্রণয়নের বিষয়টি নিজেদের হাতে না নিতে পারেন তাহলে আমি মনে করি আমাদের পক্ষে বিদ্যমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না। স্থানীয় ও বৈশ্বিকভাবে টাকার মূল্যমান বজায় রাখা, আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ও ব্যাংক খাতের সুশাসন নিশ্চিত করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল কাজের মধ্যে পড়ে। প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক এটি ভালোভাবে করতে পারছে কিনা? প্রবৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে। কোনো সন্দেহ নেই যে এটি প্রয়োজন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে সবসময়ই কি এটি প্রয়োজনীয়? প্রবৃদ্ধি যদি বাংলাদেশের বর্তমান মূল্যস্ফীতিকে প্রভাবিত করে তাহলেও কি এটি প্রয়োজনীয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা বিভাগ এ বিষয়টি বিশ্লেষণ করতে পারে।’

অর্থ বিভাগের সাবেক সচিব ও সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী প্যানেল আলোচনায় বলেন, ‘সরকারের ব্যয়ের ক্ষেত্রে বরাদ্দগত কিছু বড় ইস্যু রয়েছে। আমাদের পরিচালন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে রাজস্ব আয়ের উদ্বৃত্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর মানে হচ্ছে আমাদের রাজস্ব উদ্বৃত্ত না থাকলে উন্নয়ন ব্যয়ের শতভাগই ঋণের মাধ্যমে করতে হবে। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি থাকা সত্ত্বেও সার ও বিদ্যুতের ভর্তুকির বিপরীতে ২০ হাজার কোটি টাকার ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। এতে সরকারের তহবিল থেকে নগদ অর্থ না গেলেও আর্থিক ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে এর মাধ্যমে বাজারে ১ লাখ কোটি টাকারও বেশি অর্থের সরবরাহ বাড়বে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় থাকা সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়লেও ভাতার পরিমাণ বাড়েনি। অন্যদিকে সরকারের পরিচালন ব্যয়ে সামাজিক অবকাঠামোর অবদান কমছে। ভৌত অবকাঠামোতে আমাদের বিনিয়োগের প্রবণতা বেশি। আমি বলছি না যে এক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার প্রয়োজন নেই। তবে আমাদের অবকাঠামোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রশাসন ও টিডিএম অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহমান খান, বাজেট ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব সিরাজুন নূর চৌধুরী, ঋণ ব্যবস্থাপনা অধিশাখার অতিরিক্ত সচিব হাসান খালেদ ফয়সাল, সামষ্টিক অর্থনীতি-১ শাখার উপসচিব ড. মো. রাশেদুর রহমান সরদার, সামষ্টিক অর্থনীতি-৩ শাখার উপসচিব তৌহিদ ইলাহী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের পিএফএম রিফর্মস লিডারশিপ, কো-অর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং স্কিমের প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ অ্যান্ড কো-অর্ডিনেটর (উপসচিব) মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান, বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. শেখ মনিরুজ্জামান, এনসিসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুন নেওয়াজ সেলিম, সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ইসলামী ব্যাংকের এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এমডি আবুল কাশেম মো. শিরিন, ঢাকা ব্যাংকের এমডি এমরানুল হক, ওয়ান ব্যাংকের এমডি মো. মনজুর মফিজ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের এমডি জাফর আলম, মধুমতি ব্যাংকের এমডি মো. সফিউল আজম, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের এমডি হাবিবুর রহমান, সিটিজেনস ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ মাসুম, ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক এমডি ফারুক মঈনউদ্দীন, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি মো. আরফান আলী ও এনসিসি ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদ, প্রাইম ব্যাংকের ডিএমডি নাজিম এ চৌধুরী, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডি সাব্বির আহমেদ, লংকাবাংলা ক্যাপিটাল মার্কেটস অপারেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী, লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) খন্দকার সাফাত রেজাসহ আর্থিক খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।


গাছ কাটা-লাগানো বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল  

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গাছ লাগানো ও কাটার ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা তৈরি না করা এবং দাবদাহ ও তাপপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিয়ে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ।

অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, কুষ্টিয়া জেলা এলাকায় সামাজিক বনায়নের আওতায় কয়েক হাজার গাছ কাটা এবং দাবদাহ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার আর্জি পেশ করে রিটটি আনা হয়। গাছ লাগানো ও গাছ কাটা নিয়ে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমরা রিটটি দায়ের করা হয়।

এই আইনজীবী বলেন, কুষ্টিয়ায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় ১০ বছর আগে কয়েক হাজার গাছ লাগানো হয়। সেই গাছগুলোর মধ্যে গত বছর ১০ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়। সম্প্রতি আরও ৩ হাজার গাছ কেটে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমাদের নজরে আসে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে গাছ লাগানো ও গাছ কাটা নিয়ে কোনোরূপ নীতিমালা নেই। এ বিষয়ে ফিনল্যান্ডের উদাহরণ টেনে আইনজীবী বলেন, সেখানে একটি গাছ কাটা হলে তিনটি গাছ লাগানোর নিয়ম রয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজিসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে রেসপনডেন্ট (বিবাদী) করা হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বিষয়:

‘সুন্দরবনের আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসায় সন্তুষ্ট প্রধানমন্ত্রী’

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর নিজ কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

প্রতিকূলতার মাঝেও সুন্দরবনের আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভবিষ্যতে যাতে আর এ ধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেদিকেও তিনি খেয়াল রাখতে বলেছেন।

আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী তার নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এসব কথা জানান। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

সচিব বলেন, সুন্দরবনের আগুন লাগার বিষয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ বিষয়টি আরও কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বনের আগুন নেভানোর পর সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা করা যায় না। এ জন্য এখনও কয়েক দিন গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা লাগবে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অবহিত হওয়ার পর কার্যক্রমের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সুন্দরবনের আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৫৫জন কর্মী কাজ করেছেন। দেড় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী কাজ করেছেন। দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দূর থেকে পাওয়ার পাম্পের মাধ্যমে পানি এনে ব্যবহার করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, গভীর জঙ্গলে রাতে কাজ করা যায়নি। দিনে কাজ করতে হয়েছে। ঝুঁকিও ছিল। সব মিলিয়ে বড় একটি চ্যালেঞ্জিং কজি তারা সম্পন্ন করেছেন, এজন্য তারা (ফায়ার সার্ভিস) ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।


লোডশেডিং শূন্যে নেমে এসেছে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৬ মে, ২০২৪ ২২:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে লোডশেডিংয়ের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আজ সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমি মনে করি, আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছি। আজ দেখবেন জিরো লোডশেডিং। ধীরে ধীরে (লোডশেডিং) কমে আসছে।’

তিনি বলেন, ‘সারা বাংলাদেশের কিছু কিছু অঞ্চলে আমাদের কিছুটা লোডশেডিং করতে হয়েছে। বিশেষ করে, গ্রামাঞ্চলের অনেক জায়গায়। গত একমাস ধরে এটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের বেশ কিছু তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ আছে। সেটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তেল ও আর্থিক স্বল্পতা ছিল। যারা তেল আনার কথা, যেসব প্রাইভেট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, তারা আনতে পারছিল না। যে কারণে প্রথম দিকে দেড় হাজার মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং ছিল। সেটা কমে এসেছে। পরে ৫০০ থেকে শূন্যে নেমে এসেছে। আশা করছি, ভবিষ্যতে এটা ভালোর দিকে যাবে। আমরা চেষ্টা করছি, নিজেদের দিক থেকে তেল সরবরাহ করার। এখন সেটার ব্যবস্থা চলছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন ভালো পরিস্থিতিতে আছি। এ বিষয়গুলো পার্লামেন্টে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন- যত দ্রুত সম্ভব গ্রামাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে হবে। আমরা সেটার ব্যবস্থা করে একটা ভালো অবস্থায় আছি।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা মনে হয় না, কোথাও লোডশেডিং করে আরেক জায়গায় দেওয়ার ব্যবস্থা আর করতে হবে।


লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে শপথবাক্য পাঠ করালেন প্রধানমন্ত্রী

সোমবার লালমনিরহাট জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক শ্যামলকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সোমবার লালমনিরহাট জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক শ্যামলকে শপথবাক্য পাঠ করান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিমের পরিচালনায় এ শপথ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন জানিয়েছেন, শপথ অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী জনগণের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তাদের প্রত্যাশা পূরণে জনপ্রতিনিধিদের কাজ করার আহ্বান জানান। এ সময় পরিপূর্ণ দায়িত্ব পালনে স্থানীয় পর্যায়ে সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে আবু বকর সিদ্দিক শ্যামল বিজয়ী হন।


গাছ কাটা-লাগানো বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গাছ লাগানো ও কাটার ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা তৈরি না করা এবং দাবদাহ ও তাপপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ সোমবার এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিয়ে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ।

অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ বলেন, ‘কুষ্টিয়া জেলা এলাকায় সামাজিক বনায়নের আওতায় কয়েক হাজার গাছ কাটা এবং তাপপ্রবাহ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার আর্জি পেশ করে রিটটি আনা হয়। গাছ লাগানো ও গাছ কাটা নিয়ে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়ায় আমরা রিটটি দায়ের করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় ১০ বছর আগে কয়েক হাজার গাছ লাগানো হয়। সেই গাছগুলোর মধ্যে গত বছর ১০ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়। সম্প্রতি আরও ৩ হাজার গাছ কেটে ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমাদের নজরে আসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে গাছ লাগানো ও গাছ কাটা নিয়ে কোনরূপ নীতিমালা নেই।’ এ বিষয়ে ফিনল্যান্ডের উদাহরণ টেনে আইনজীবী বলেন, সেখানে একটি গাছ কাটা হলে তিনটি গাছ লাগানোর নিয়ম রয়েছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান বন সংরক্ষন কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজিসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে রেসপনডেন্ট (বিবাদী) করা হয়েছে।

বিষয়:

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়াতে বললেন রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধান কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ সোমবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দলের সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘উচ্চশিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা খুবই জরুরী। দেশব্যাপী উচ্চশিক্ষা বিস্তারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সার্বিক তত্ত্বাবধান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারে সেই লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের ওপরও গুরুত্বারোপ করতে হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য স্থপতি অধ্যাপক ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার অধ্যাপক আবদুস সালাম হাওলাদার এবং রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উচ্চতর প্রশিক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। এ ছাড়া শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি দক্ষতা-ভিত্তিক কর্মসূচি চালু করার ও পরামর্শ দেন।

এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।


রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় ওআইসির সহযোগিতা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি
আপডেটেড ৬ মে, ২০২৪ ১৬:৪৬
বাসস

রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারের দাবিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় আইনি ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য ওআইসির সদস্য দেশগুলোর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

আজ সোমবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গাম্বিয়ার বানজুলে ১৫তম ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিনের অধিবেশনে পশ্চিম আফ্রিকার স্থানীয় সময় রোববার অপরাহ্নে ওআইসি মহাসচিব হিসেইন ব্রাহিম তাহার উপস্থিতিতে গাম্বিয়ার বিচার মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল দাওদা এ জালও ওআইসি নেতৃবৃন্দের সামনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার অগ্রগতি তুলে ধরেন।

অধিবেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করায় গাম্বিয়াকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সম্মেলনে হাছান মাহমুদ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, আইন ও আর্থিক বিষয়ে ওআইসির সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে। সভায় সৌদি আরব, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ফিলিস্তিনসহ উপস্থিত সদস্য রাষ্ট্রসমূহের প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত ও স্থায়ী সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এ সময় গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদৌ তাঙ্গারা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।


বজ্রসহ শিলা বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ৬ মে, ২০২৪ ১২:২৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সারা দেশে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রসহ শিলা বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আজ সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারেও বলে জানায় সংস্থাটি।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা-ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।

তিনি আরও জানান, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অধিকাংশ জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।


ব্যাংক ঋণের সুদ হার খুব বেশি বাড়বে না: গভর্নর

গতকাল রোববার ‘ফিসক্যাল অ্যান্ড মনিটরি পলিসি ইন দ্য ইভলভিং ইকোনমিক অর্ডার’ সেশনে বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্তমানে রেফারেন্স রেট অনুসারে ব্যাংকের সুদহার নির্ধা‌রিত হ‌চ্ছে। আমরা বাজার ভিত্তিক সুদ হারের খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। শিগগিরই এটি বাজারের উপর ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সুদহার নির্ধারণের ব্যবস্থাটি এক‌টি অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে বাজারভিত্তিক সুদহার নির্ধার‌ণে ব্যাংকের স্বাধীনতা থাকবে। এখন যে সুদ হার চলছে তা থেকে আর বেশি বাড়বে না।’

গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত প্রথম ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে ‘ফিসক্যাল অ্যান্ড মনিটরি পলিসি ইন দ্য ইভলভিং ইকোনমিক অর্ডার’ সেশনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ ও বণিক বার্তার যৌথ উদ্যোগে ‘পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে উন্নয়নের পথ অনুসন্ধান’ প্রতিপাদ্যে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

বি‌নিময় হারের বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে কিছুটা প্রতিকূলতা আছে। অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে আমরা ক্রলিং পেগ পদ্ধ‌তি চালু করতে যাচ্ছি। পরবর্তীতে এটিও বাজার ভি‌ত্তিক করে দেওয়া হবে। মুদ্রানী‌তি প্রণয়ন ক‌মি‌টিতে আগে অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তারা থাকলেও বর্তমানে আমরা বাইরের বিশেষজ্ঞদেরও এখানে অন্তর্ভুক্ত ক‌রে‌ছি।’

ভর্তু‌কির বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বাজারে অর্থের সরবরাহ বাড়ার বিষয়ে তি‌নি বলেন, বন্ড থেকে এক লাখ কোটি টাকা তৈরি হয়েছে বলে একজন আলোচক উল্লেখ করেছেন। কিন্তু টাকা তৈরির বিষয়টি এতটা দ্রুততার সঙ্গে হয় না। বন্ডের মাধ্যমে অর্থের সরবরাহ বাড়ার জন্য কয়েক বছর সময় লাগে। সুদহার নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন একটি নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করছে। এর ফলে ঋণের সুদ এখন প্রতি মাসেই বাড়ছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকে ঋণের সর্বোচ্চ সুদ ছিল ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। মার্চে তা বেড়ে হয় ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ।

এই সেশনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফজলে কবীর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. এম তারেক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।

এর আগে ঋণের ওপর সর্বোচ্চ সুদের হার নির্ধারিত ছিল ৯ শতাংশে। গত জুলাই মাসে সুদের হার বেধে দেওয়ার ওই পদ্ধতি থেকে সরে আসে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল বা স্মার্ট পদ্ধতিতে ঋণের সুদের ভিত্তি হার নির্ধারিত হয়। এই ভিত্তি হারের সঙ্গে এর আগে বাড়তি ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ সুদ যুক্ত হলেও এবারে বাংলাদেশ ব্যাংক ৩ শতাংশ সুদ যোগ করার জন্য বলেছে। ভিত্তি হার ও বাড়তি সুদ এই দুইয়ে মিলে ঋণের চূড়ান্ত সুদহার নির্ধারণ করে ব্যাংকগুলো। মার্চ মাস শেষে স্মার্ট হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশে। এর সঙ্গে ৩ শতাংশ সুদ যুক্ত করলে ঋণের সুদ দাঁড়ায় ১৩ দশমিক শূন্য ৫৫ শতাংশ।

বিষয়:

উপজেলা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ বুধবার

প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ মধ্যরাতে
ফাইল ছবি।
আপডেটেড ৬ মে, ২০২৪ ০৪:৫৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ সোমবার রাত ১২ টায়। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বুধবার (৮ মে)।

এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নির্বাচন বর্জন করায় মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের মধ্যেই। এদিকে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে প্রথম ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৭০ জনেরও বেশি নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

অন্যদিকে দলীয় এমপি-মন্ত্রীদের স্বজনদের নির্বাচনে প্রার্থী না হতে বারবার নির্দেশনা দেওয়ার পরও তৃণমূলের সব জায়গায় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মানাতে বাধ্য করতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

হলফনামায় মামলা ও আয় বিবরণীর তথ্য গোপন করায় গতকাল রোববার তার মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল। নোয়াখালীর ৩টি উপজেলার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল।

মনোনয়ন বাতিলকৃত প্রার্থীরা হলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ও বেগমগঞ্জের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিম।

রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, হলফনামায় মামলা-সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ না করে তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এ এস এম সেলিমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের মনোনয়নপত্র হলফনামায় চারটি মামলার তথ্য গোপন করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষিত হয়। মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নুর হোসেন মাসুদ ও মো. মনির হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, মনোনয়নপত্র বাতিলকৃত প্রার্থীরা আগামী ৬ মে থেকে ৮ মে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রার্থীতা ফিরে পেতে আপিলের সুযোগ রয়েছে। আগামী ২৯ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর সদর উপজেলা, বেগমগঞ্জ উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের বিরত রাখা দলের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এখানে আইনগত কোনো বিষয় নেই।

গতকাল ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করলে নির্বাচনটি আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে এ ভাবনা থেকে আওয়ামী লীগ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ স্থগিত করেছে। এর মানে এই নয় যে অন্যান্য দলগুলো নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ করতে পারবে না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো সংঘাতে নেই। তবে সত্য বললে তাদের স্বার্থে আঘাত লাগলে তো কিছু করার নেই। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদ দমনে যে আচরণ করা হয়েছিল, একই রকম নির্মম আচরণ এখন করা হচ্ছে। এটা বললে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার কী আছে?

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের মানবাধিকার নিয়ে তারা কথা বলে। আমরা কি এসব নিয়ে কথা বলতে পারব না? আমাদের দেশে তারা যে দৃষ্টিতে মানবাধিকার দেখে সে দৃষ্টিতে নিজের দেশে দেখবে না কেন? তাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব নেই এমন কথা তো আমরা বলিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে যখন বিরোধীরা ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, যখন সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়, পুলিশকে পিটিয়ে মারে তখন যুক্তরাষ্ট্র চুপ থাকে।’

কাদের বলেন, ‘যুদ্ধের কারণে বিশ্বে যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে তা বাংলাদেশেও আছে। বাংলাদেশ এ প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। আমদানি-রপ্তানি, জ্বালানি, ডলার সংকট এগুলো অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তাই সে ক্ষেত্রে আমরা চাপে আছি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম ও এস এম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, সংস্কৃতি-বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।


banner close