সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ব্যাংক পরিচালকদের মেয়াদ বাড়ল, জাপার হইচই, ওয়াকআউট, স্পিকারের রুলিং

আপডেটেড
২২ জুন, ২০২৩ ০০:৩০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২১ জুন, ২০২৩ ২২:২০

পরিচালক পদে একটানা বারো বছর থাকার বিধান যুক্ত করে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে।

সংসদে পাস হওয়া বিলে খেলাপি ঋণগ্রহীতার ঋণ সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। অবশ্য এসব সংশোধনী সংসদে উপস্থাপিত বিলে বা স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদনে ছিল না।

বিলটি পাসের প্রতিবাদে সংসদ থেকে ওয়াক আউট করেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা।

বুধবার সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) বিল- ২০২৩’ পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

পরিচালক পদের মেয়াদ বাড়ানোর সংশোধনী প্রস্তাবটি যেভাবে আনা হয়েছে তা নিয়ে প্রবল আপত্তি জানান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, ব্যাংক লুটপাটের মূল হোতা পরিচালকেরা। তাদের সুবিধা দেয়ার জন্য আইন সংশোধন করা হচ্ছে। তারচেয়ে পরিচালকদের মেয়াদ আজীবন করে দেয়া হোক।

গত ৮ জুন ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) বিল–২০২৩ জাতীয় সংসদে তুলেছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সংশোধনীর মূল প্রস্তাবে পরিচালক পদের মেয়াদ বাড়ানো–কমানোর বিষয়ে কোনো প্রস্তাব ছিল না। পরে সেটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল। কমিটিও পরিচালক পদের মেয়াদ নিয়ে কোনো সংশোধনী আনেনি।

সংসদে বিলটি পাসের আগে টাঙ্গাইল-৬ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু পরিচালকদের মেয়াদ বাড়ানো ও খেলাপি ঋণগ্রহীতার ঋণ সুবিধা বিষয়ক সংশোধনী দুটি প্রস্তাব করেন। টিটু পরিচালকদের পদের মেয়াদ বিষয়ক সংশোধনীতে প্রস্তাব করেন- ‘আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন অথবা কোনো ব্যাংক-কোম্পানির সংঘস্মারক ও সংঘবিধিতে ভিন্নতর যা কিছুই থাকুক না কেন, ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০১৮ কার্যকর হবার পর কোনো ব্যক্তি কোনো ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক পদে একাদিক্রমে ১২ বছরের অধিক অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না।’

খেলাপি ঋণগ্রহীতার অনুকূলে ঋণ ছাড় বিষয়ক সংশোধনী প্রস্তাবে তিনি জানান, পরস্পর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গ্রুপভুক্ত কোনো খেলাপি ব্যক্তি বা ক্ষেত্রমত, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি যদি ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা না হয় অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি কর্তৃক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হবার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি খেলাপি বলে গণ্য হবে না, এবং এইরূপ প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে তৎকর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী ঋণ সুবিধা প্রদান করা যাবে।

টিটুর পরিচালক পদের সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখান জাতীয় পার্টির একাধিক সংসদ সদস্য। বিল পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা প্রশ্ন তোলেন, এভাবে বিলে সংশোধনী আনা যায় কি না। এ বিষয়ে তারা স্পিকারের ব্যাখ্যা দাবি করেন।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, পরিচালক পদের মেয়াদ ১২ বছর করার জন্য সরকারি দলের একজন সদস্য সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছেন। এটা বিল উত্থাপনের সময় ছিল না। যেহেতু সরকারি দলের সংসদ সদস্য এই প্রস্তাব দিয়েছেন তাই মনে হচ্ছে এটা গ্রহণ করা হবে। যে বিষয়টি সংসদে উত্থাপনই হয়নি সেটা চাওয়া হয় কী করে?

তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর হাত থেকে মুক্ত করতে হবে।

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘পরিচালকেরা হচ্ছেন ব্যাংক লুটপাটের মূল হোতা। কোনো পরিচালক সুপারিশ না করলে আমার মতো লোক গেলে ব্যাংকঋণ পাবে না।'

জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নু বলেন, ‘যে আইনের কোনো ধারা অর্থমন্ত্রী সংশোধনীতে আনেননি, যে ধারা সংশোধনের জন্য সংসদীয় কমিটি কোনো সুপারিশ করেনি, সেখানে একজন সরকারি দলের সদস্য কোন আইনে এই সংশোধনী আনলেন? তিনি এটা পারেন কি না? এটা জানা খুবই দরকার। অভিভাবক হিসেবে স্পিকার এটা বলবেন বলে আশা করি।’

মুজিবুল হক বলেন, ‘মনে হচ্ছে অর্থমন্ত্রীকে কনভিন্স করে সরকারি দল করেন, এমন অনেক ব্যাংকের পরিচালকদের সুপারিশে এটা আনা হয়েছে পাস করার জন্য। সেটা হলে আমরা আমাদের সব সংশোধনী প্রত্যাহার করলাম। কারণ, এর চেয়ে বড় অন্যায় আর হতে পারে না। যেখানে ব্যাংক লুটপাট করা হচ্ছে, বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে, আর বাংলাদেশ ব্যাংক বসে বসে তামাক খায়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান-পরিচালক হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে চলে যান। আপনারা দেখছেন না। আপনারা আছেন কাউকে ফেবার (সুবিধা দেয়া) করার জন্য। পরিচালকের মেয়াদ ১২ বছর করার এই প্রস্তাবকে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’

জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, এই আইনে সংশোধন আনা হচ্ছে শুধু ব্যাংকমালিকদের সুবিধা দেয়ার জন্য। বেসরকারি ব্যাংকগুলো এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর খবরদারি করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর কে হবেন, ডেপুটি গভর্নর কে হবেন—এগুলো তারা নির্ধারণ করে দেয়। ব্যাংকমালিকদের কাছে সরকার জিম্মি হয়ে গেছে।

ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক কারা—এই প্রশ্ন রেখে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘আমরা তার লিস্ট চাই। আমরা এই ভাগ্যবানদের সংসদে দেখতে চাই। সব দলীয় কর্মী ও আত্মীয়স্বজনকে স্বতন্ত্র পরিচালক করা হয়। তাঁরা ব্যাংকে যায় শুধু লোন দেওয়ার জন্য। ১০ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে দুই কোটি নিজে নিয়ে নিলেন। এক দিনে ধনী হয়ে গেলেন। যেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ। এখানে লুটপাট চলছে। আমরা কমানোর প্রস্তাব করছি না। এদের মেয়াদ আজীবন করে দেন। আমি এখন প্রস্তাব আনলাম। এই পরিচালকেরা আজীবন থাকবেন। আল্লাহ যত দিন হায়াত রাখছেন, আপনারা খাইতে থাকেন। আমরা দেখতে থাকি।’

প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে ব্যাংকমালিকদের অনুদান দেয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, তারা পত্রিকার প্রথম ও শেষ পাতায় বড় বড় ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন দেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে টাকা (চেক) দিচ্ছেন। আরও এক বস্তা (টাকা) খালেদা জিয়ার হাতে দেন। সেটা প্রকাশ করেন না। এদের চরিত্র একই। সাবধান হতে হবে, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ব্যাংকমালিকদের সুবিধা দেয়ার জন্য আইনটি আনা হয়েছে। তারা জনগণের টাকার অপব্যবহার করেন। সর্দিকাশি হলেই তারা ব্যাংকের টাকায় সিঙ্গাপুর চলে যান।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, সরকার তাদের প্রিয় পরিচালকদের কীভাবে পদে রাখবে, সেটা ভুলে গিয়েছিল। এ কারণে পরবর্তী সময়ে এই সংশোধনী আনা হয়েছে। যে প্রক্রিয়ায় আইনে সংশোধনী আনা হচ্ছে, তা সঠিক প্রক্রিয়া নয়।

বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, খেলাপি ঋণ ১৪ বছরে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৬ শতাংশে নেমেছে। সরকারি ব্যাংকের শাখা দ্বিগুণ বেড়েছে। ব্যাংকের আমানত ৭ গুণ বেড়েছে। বছরওয়ারি মুনাফা বেড়েছে ৮ গুণ। তিনি আশা করেন, তাঁর এই বক্তব্যে ভুল–বোঝাবুঝির কিছুটা অবসান হবে।

সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম তার সংশোধনী প্রস্তাব তুলতে গেলে জাপার সংসদ সদস্যরা হইচই শুরু করেন। তখন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, আগে সংসদ সদস্যকে সংশোধনী প্রস্তাব তুলতে দিন। এরপর বিষয়টির ব্যাখ্যা দেয়া হবে।

আহসানুল ইসলাম সংশোধনী প্রস্তাব তোলার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদের কার্যপ্রনালি বিধির সংশ্লিষ্ট বিধি উল্লেখ করে বলেন, মূল সংশোধনীতে বিলের ১০ দফায় সংশোধনীর প্রস্তাব ছিল। আর আহসানুল ইসলাম যে সংশোধনী প্রস্তাব এনেছেন, সেটিও এই দফার একটি উপদফা। এখানে বিলে কোনো নতুন ধারা যুক্ত করা হয়নি বা এমন কোনো নতুন দফাও যুক্ত করা হয়নি। এটি অপ্রাসঙ্গিক নয়।

স্পিকারের বক্তব্যের পর বিরোধী দলের সদস্য ফখরুল ইমাম কথা বলতে চাইলে স্পিকার মাইক না দিয়ে বলেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য, এটা আমার রুলিং। এ বিষয়ে আর আপনার কিছু বলার নেই।’

ফখরুল ইমাম এ সময় আবারও হাত তুললেও তাকে ফ্লোর দেয়া হয়নি। রুলিংয়ের পর অর্থমন্ত্রীকে ফ্লোর দেন স্পিকার। এ সময় মাইক ছাড়াই বিরোধী দলের সদস্যরা হট্টগোল, হইচই করতে থাকেন। পরে স্পিকার অর্থমন্ত্রীকে থামিয়ে দিয়ে বিরোধী দলের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা বিধির বাইরে কিছু করব না।’

তখনো বিরোধী দলের সদস্যরা হইচই, হট্টগোল করতে থাকেন। তাদের হইচইয়ের মধ্যেই ফ্লোর নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, তিনি আহসানুল ইসলামের সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করছেন।

এটি বলার সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা হইচই ও চিৎকার করে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। মাইক ছাড়াই কথা বলতে থাকেন মুজিবুল হক। কাজী ফিরোজ রশীদও দাঁড়িয়ে কথা বলতে শুরু করেন। একপর্যায়ে ফিরোজ রশীদকে মাইক দেয়া হয়। তিনি অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা যে আজীবনের কথা বললাম, আপনি কি সেটা গ্রহণ করলেন? এই একজন পরিচালক আমৃত্যু থাকবেন, সেটা গ্রহণ করছেন? না ১২ বছর করছেন? কোনটা, সেটা আমাদের স্পষ্ট বলতে হবে।’

মুজিবুল হকও একই ধরনের বক্তব্য দেন। এ সময় বিরোধী দলের সদস্যরা হইচই করতে থাকলে কিছু সময়ের জন্য সংসদে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।

পরে স্পিকার অর্থমন্ত্রীকে আবারও মাইক দেন। তবে তিনি কথা বলেননি। একপর্যায় স্পিকার সংশোধনী ভোটে দেন। দফাভিত্তিক সব সংশোধনী ভোটে দেয়া হয়। এ সময় জাতীয় পার্টির সদস্যরা হইচই করে ওয়াকআউট করে সংসদ কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান।

অবশ্য কিছু সময় পর জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা আবার সংসদের অধিবেশন কক্ষে ফিরে আসেন।

পাস হওয়া বিলে হয়েছে, কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একটি একক পরিবারের সদস্যের বাইরে তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা নিয়ন্ত্রণাধীন সর্বোচ্চ দু’টি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষে প্রতিনিধি পরিচালক থাকতে পারবে। তবে কোনো ব্যাংকের পর্ষদে কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষে একজনের অধিক ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক নিযুক্ত হতে পারবে না।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংকের পর্ষদে প্রাকৃতিক ব্যক্তিসত্ত্বা বিশিষ্ট ব্যক্তি শেয়ারহোল্ডারের পক্ষে অপর কোনো ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হতে পারবে না। অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি ব্যাংকের শেয়ারের মালিক হলে তার প্রতিনিধি হিসেবে অন্য কোনো ব্যক্তিকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে না।

বিদ্যমান আইনে কোনো ব্যাংক পরিচালক একইসময়ে অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকতে পারবেন না। তবে এই আইন কার্যকর হবার পর সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে বিমা কোম্পানির পরিচালক হওয়ার সুযোগ রয়েছে। যদিও ২০১০ সালে প্রণীত বিমা আইন অনুযায়ী কোনো বীমা কোম্পানির পরিচালক ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক হতে পারেন না। সংশোধনী বিলে কোনো ব্যাংক পরিচালকের একইসঙ্গে বিমা কোম্পানির পরিচালক পদে থাকার সুযোগ বাতিল করা হয়েছে।

এছাড়া, কোনো পরিচালক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে বিদ্যমান আইনে কিছু বলা নেই। কিন্তু একজন পরিচালক আরও কোন কোন কোম্পানিতে পরিচালক থাকতে পারবেন না বলে বিলে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ব্যাংকের পরিচালক হলে একই সময়ে তিনি অন্য কোনো ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা কোম্পানি বা এসব কোম্পানির কোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক থাকতে পারবেন না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় এমন কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান যা ওই ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বিমা কোম্পানির উপর নিয়ন্ত্রণ বা যৌথ নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব বিস্তার করে- এমন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকবে না বলেও বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিদ্যমান আইনে বিকল্প পরিচালক নিয়োগের সুযোগ থাকলেও তার মেয়াদকাল এবং বিকল্প পরিচালকদের যোগ্যতা সম্পর্কে কিছু বলা নেই। নতুন আইনে এসব বিষয় সুনির্দিষ্ট করা হচ্ছে।

খসড়া আইনে বলা হয়েছে, কোনো পরিচালক কমপক্ষে নিরবচ্ছিন্নভাবে তিন মাস বিদেশে অবস্থান করলে তার অনুপস্থিতির কারণে পর্ষদ চাইলে মূল পরিচালকের বিপরীতে বছরে সর্বোচ্চ একবার একজন বিকল্প পরিচালক নিযুক্ত করতে পারবে। পরিচালক নিয়োগের যেসব শর্ত রয়েছে, সেগুলো বিকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।

খসড়া আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক-কোম্পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার স্বার্থে উহার পর্ষদ এবং পর্ষদ কমিটিগুলোর কর্মপরিধি বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সময় সময় নির্দেশনা জারি করতে পারবে।

নতুন আইনে ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর উপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পাবে। এতে নতুন ধারা যোগ করে বলা হয়েছে, যে উদ্দেশ্যেই ব্যাংক কোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন করুক না কেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত হার বা পরিমাণের বেশি সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধন হিসেবে বিনিয়োগ করতে পারবে না।

নতুন আইনের আওতায় সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার যোগ্যতা ও উপযুক্ততার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারি করবে।

ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিদেশ যাওয়া, বাড়ি-গাড়ি ও কোম্পানি নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ তাদের রাজনৈতিক দলের কমিটিতে না রাখার বিধান রেখে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অধিকতর সংশোধন করতে একটি বিল সংশোধন আনা হয়েছে। এই বিলে এক পরিবার থেকে তিন জনের বেশি ব্যাংক পরিচালক হওয়া যাবে না এরকম বিধান রয়েছে।

সংসদে পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা শনাক্ত ও চূড়ান্ত করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুটি পৃথক কমিটি গঠন করবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সময়ে সময়ে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাবে।

তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চাইলে ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে আপিল করতে পারবে এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। এছাড়া ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞাসহ বেশকিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেবার সুযোগ রাখা হয়েছে।

বিষয়:

ই-পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে ভোগান্তি ও দুর্নীতি কমবে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ই-পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে নিঃসন্দেহে ভোগান্তি ও দুর্নীতি কমবে, সময়ও বাঁচবে।

সোমবার সকালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ই-পারিবারিক আদালতের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সবচেয়ে বড় অফিস হোয়াটসঅ্যাপ। তিনি হোয়াটসঅ্যাপেই বেশি কাজ করেন। কাজেই আমাদেরও ডিজিটাইলেশনের দিকে আগানো উচিত।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ে আমরা ২১টি রিফর্ম করেছি। আমরা আশা করি, আমাদের পরে যে রাজনৈতিক দল আসবে তারা দেশকে ভালোবেসে এগুলো ধরে রাখবে।

আসিফ নজরুল বলেন, পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে আমরা তা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছি। এখন ২০ জেলায় চালু করেছি, যাওয়ার আগে ৬৪ জেলায় চালু করব। আশা করি, ৫ বছরের মধ্যে মামলার জট ৫০ শতাংশ কমে যাবে।


নববধূকে হত্যার অভিযোগ স্বামী গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বগুড়ায় কয়েক মাস আগে পরিবারে অমতে প্রেম করে বিয়ে করেন রিয়াজুল ইসলাম নাফিজ। এরপর কৈপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যে তাদের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। রোববার তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া শুরু হলে রিয়াজুল একপর্যায়ে তার স্ত্রী আফিয়া আক্তার স্বপ্নাকে (২০) হত্যা করে। পরে পুলিশ রিয়াজুলকে গ্রেপ্তার করে। স্বজনদের অভিযোগ, তিন মাস আগে পরিবারের অমতে প্রেম করে নাফিজ ও স্বপ্না বিয়ে করে। পরে নাফিজের পরিবার বিয়ের মেনে নিতে আফিয়ার পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা ও ১টি মোটরসাইকেল যৌতুক দাবি করে। এ নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার নিজ গ্রামে গিয়ে রোববার দুপুরে কৈপাড়া ভাড়া বাসায় ফেরেন আফিয়া। এরপর সন্ধ্যায় তিনি মুঠোফোনে কয়েকবার বাবা-মাকে ফোন করে তাকে বাঁচানোর আকুতি জানাতে থাকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্বামী–স্ত্রী তুমুল ঝগড়া করছিলেন। হঠাৎ নীরবতা নেমে আসায় সন্দেহবশত বাসায় ঢুকে স্বপ্নাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। রিয়াজুল ঝগড়ার একপর্যায়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে।

ঘটনার পরপরই উত্তেজিত এলাকাবাসী রিয়াজুলকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে আটক করে এবং লাশ থানায় নিয়ে যায়। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বগুড়া সদর থানার ওসি হাসান বসির জানান, “এটি হত্যা নাকি অন্য কোনো কারণে মৃত্যু— তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সব দিক তদন্ত করা হচ্ছে। হত্যার অভিযোগে স্বামীকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।


২৭ নভেম্বর থেকেই ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ীই আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। গতকাল রোববার রাতে জারি করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন সিদ্ধান্ত জানায় কমিশন।

এতে বলা হয়েছে, পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনের দাবিতে বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজশাহী ও ময়মনসিংহে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধের কারণে শনি ও রোববার বেশ কয়েক ঘণ্টা ট্রেন চলাচলও বন্ধ থাকে। আন্দোলনকারীরা পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে অনশন কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেন।

এতে আরো বলা হয়, পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে কিছু প্রার্থী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছেন এবং কেউ কেউ সংগঠিতভাবে অনশনেও বসেছেন। তাদের কয়েকজন প্রতিনিধি কমিশনের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন, সমাবেশ করেছেন এবং কমিশন কার্যালয় ঘেরাও করার ঘটনাও ঘটেছে।

কমিশন জানায়, ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয় ২০২৪ সালের নভেম্বরে। আবেদন জমা নেয়া হয় ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত। চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ১০ হাজার ৬৪৪ জনকে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য মনোনীত করা হয়। এরপর চলতি বছরের ৩ জুন লিখিত পরীক্ষার তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। তাই পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য মাত্র দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে—এ দাবি বাস্তবসম্মত নয় বলে উল্লেখ করে পিএসসি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি কখনোই সীমিত সময়ের বিষয় নয়; বরং দীর্ঘ সময়ের পড়াশোনা ও ধারাবাহিক অনুশীলনের ওপরই এ প্রস্তুতি নির্ভর করে। পরীক্ষা এড়ানো বা পিছিয়ে দেয়ার প্রবণতা একজন সম্ভাব্য সরকারি চাকরি–প্রার্থীর শৃঙ্খলাবোধের সঙ্গে যায় না বলেও উল্লেখ করে কমিশন।

পিএসসি জানায়, বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ক্যাডার ও নন–ক্যাডার পরীক্ষার জট দূর করাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। দ্রুত পরীক্ষা সম্পন্ন ও ফল প্রকাশ নিশ্চিত করতে মে–জুনে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়, যার আওতায় দুটি বিশেষ বিসিএসসহ বহু পরীক্ষার কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন কোনো পরীক্ষা পেছালে রোডম্যাপ বাস্তবায়নে ব্যাঘাত তৈরি হবে—এই কারণেই পরীক্ষা পেছানোর প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানায় কমিশন।

পিএসসি ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সময়সূচিও প্রকাশ করেছে।

কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে ২৭ নভেম্বর এবং চলবে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরীক্ষাকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৮টি বিভাগীয় শহরে—ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ। তবে পদ–সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয় পরীক্ষার আয়োজন শুধুমাত্র ঢাকাতেই হবে বলে জানানো হয়েছে।

পিএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, সবাই যেন ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখ থেকেই পরীক্ষায় অংশ নেন।


ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতিদের অংশগ্রহণে ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

আগামী ২৭ নভেম্বর বিকেল ৩টায় সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স রুমে ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মো. আতিকুস সামাদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, ফুলকোর্ট সভায় অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ফুলকোর্ট সভা বিচারপতিদের কথা বলার নিজস্ব ফোরাম। এতে নীতি-নির্ধারণী বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশংকা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, গত দেড় বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার ফলে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অবনতির কোনও আশংকা নেই।

রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসবে, সেই সময়ে বিভিন্ন দলের মিছিল-মিটিংয়ের সংখ্যা বেড়ে যাবে। তবে এ সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কোন সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি, তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির মধ্যেই ছিল। আমাদের গত দেড় বছরের প্রচেষ্টায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।’

ভূমিকম্প হলে করণীয় বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘ভূমিকম্প নিয়ে অনেক দেশ কিছু অ্যাপ তৈরি করেছে যার মাধ্যমে ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার ১০ সেকেন্ড পূর্বে সতর্কতামূলক বার্তা জানানো হয়।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশেও এ ধরনের আগাম সতর্কতামূলক মোবাইল অ্যাপ চালু করা যায় কি না সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে বিশেষ করে নগর এলাকায় উন্মুক্ত বা খোলা জায়গার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। ভূমিকম্প প্রতিরোধে আমাদের এসব বিষয়ে নজর দিতে হবে। তিনি এসময় সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণের আহ্বান জানান।

ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ডসহ বিভিন্ন দুর্যোগকালীন সময়ে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন অগ্নিদুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট যথেষ্ট সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। তবে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে সেটা ভিন্ন বিষয়। সবাইকে মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি।

ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


লাল-হলুদ ও সবুজ জোনে ভাগ করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা হবে: ইসি সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইসি সচিবালয়ের সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, সারাদেশকে লাল, হলুদ ও সবুজ- এই তিন জোনে ভাগ করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি বোচওয়ের সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংভাদিকদের এ কথা বলেন।

ইসি সচিব বলেন, তিনি আমাদের কাছে দেশের বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাদের জানিয়েছি, সারাদেশকে লাল, হলুদ ও সবুজ—এই তিন জোনে ভাগ করা হচ্ছে এবং সে অনুযায়ী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

আখতার আহমেদ বলেন, বৈঠককালে কমনওয়েলথ মহাসচিব জানিয়েছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশকে যেকোনো ধরনের প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা দিতে কমনওয়েলথ প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি বলেন, কমনওয়েলথ মহাসচিব আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন, কমনওয়েলথের সদস্য সংখ্যা ৫৬টি দেশ। আমরা যদি কোনো ধরনের সহযোগিতা চাই, তারা তা করতে প্রস্তুত। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের নির্বাচন-সংক্রান্ত সহযোগিতায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

ইসি সচিব জানান, মহাসচিব প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে নির্বাচনী প্রস্তুতি, অগ্রগতি এবং বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রথমবারের মতো ভোট অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগকে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে দেখেছেন।

তিনি আরও বলেন, ৫৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম প্রবাসীদের ভোট অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে—এটা তারা প্রশংসা করেছেন। নির্বাচনের জন্য যেসব সামগ্রী প্রয়োজন হবে, সে বিষয়ে তাদের ধারণা দেওয়া হয়েছে।

মহিলা ভোটারদের অংশগ্রহণ ও হালনাগাদ ভোটার তালিকা নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মহাসচিব। মৃত ভোটারদের বাদ দেওয়ার বিষয়টি তারা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন।

তথ্য বিকৃতি, অপতথ্য ও ভুয়া সংবাদ বিষয়ে কমনওয়েলথ সতর্ক থাকতে বলেছে। এ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, আমরা তাদের জানিয়েছি গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা নিয়মিত তথ্য জানাচ্ছি এবং ভবিষ্যতে এটি আরও বাড়ানো হবে।

মহাসচিব শার্লি বোচওয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস ও আস্থা তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, নির্বাচন বিষয়ে প্রচার-প্রচারণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ইসি সচিব জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা পাওয়া গেলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রত্যাশিত সফলতা অর্জন সম্ভব হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি বোচওয়ের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।

উল্লেখ্য, কমনওয়েলথ মহাসচিব গত বৃহস্পতিবার পাঁচ দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন।


মেজর সিনহা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সাবেক ওসি প্রদীপ

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার হোতা হিসেবে টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে চিহ্নিত করে পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

রায়ে হাইকোর্ট উল্লেখ করেছেন, সাবেক ওসি প্রদীপের পরিকল্পনা অনুযায়ী সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহাকে চার রাউন্ড গুলি করে হত্যা করেন একই থানার তৎকালীন এসআই লিয়াকত আলী।

রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সাগির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ প্রকাশিত ৩৭৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ মন্তব্য করেন।

রায়ে বলা হয়, ‘যে কোনো সন্দেহের ঊর্ধ্বে প্রমাণিত হয়েছে যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাস এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও হোতা ছিলেন। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং ভুক্তভোগী মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে বুকে আঘাত করেন, যার ফলে তার দুইটি পাঁজর ভেঙে যায়, এবং তার জুতাসহ বাঁ পা ভুক্তভোগীর ঘাড়ের বাম পাশে চেপে ধরেন মৃত্যু নিশ্চিত করতে।’

রায়ে আরও বলা হয়, ‘সহ-আসামি লিয়াকত আলী, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, ঘটনাস্থলে এসে ভুক্তভোগীকে হত্যার উদ্দেশ্যে চারটি গুলি করেন। ট্রায়াল কোর্ট দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার অধীনে প্রদীপ কুমার দাস ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড যথাযথভাবে প্রদান করেছে।’

সাক্ষী, রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপিত প্রমাণ, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও পরিস্থিতিগত সাক্ষ্য বিশ্লেষণ করে বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ দেন।

পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর দণ্ডিতরা হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করতে পারবেন বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।

ট্রায়াল কোর্টের রায়ের ডেথ রেফারেন্স (মামলার নথি) ও দণ্ডিতদের আপিল শুনানি শেষে চলতি বছরের ২ জুন হাইকোর্ট এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় প্রদীপ কুমার দাস ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। একই মামলায় ট্রায়াল কোর্ট প্রদত্ত অন্য ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রাখেন। এই ছয়জন হলেন— সাবেক এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, সাবেক কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মা এবং পুলিশ সোর্স মো. নিজামুদ্দিন, মো. নুরুল আমিন ও মো. আয়াজ উদ্দিন। আটজন দণ্ডিতই বর্তমানে কারাগারে আছেন।


শেখ হাসিনা, জয় ও পুতুলের রায় ২৭ নভেম্বর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা পৃথক তিন মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ২৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন।

দুদক-এর পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহম্মেদ সালাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৪ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুদক-এর উপপরিচালক সালাহউদ্দিন।

মামলার তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক-এর সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।

শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলায় অন্য আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউক-এর সাবেক সদস্য শফি উল হক, খুরশীদ আলম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

অপরদিকে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ১৪ জানুয়ারি সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলাটি করেন দুদক-এর সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।

তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরও দুই জনসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক-এর সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।

শেখ হাসিনা ও জয় ছাড়াও এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক কামরুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সদস্য মো. নুরুল ইসলাম, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

এছাড়াও, রাজধানীর পূর্বাচলে ১০ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি দুদক-এর সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলাটি করেন।

তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক-এর সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।

মামলার অপর ১৬ আসামি হলেন— জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউক-এর সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমান, তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।


হাসিনা-কামালকে ফেরাতে দিল্লিকে ঢাকার চিঠি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী হস্তান্তরের জন্য ভারতকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। চিঠিতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও ফেরত চাওয়া হয়েছে। রোববার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানান।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত চেয়ে ভারতের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। গত শুক্রবার দিল্লির বাংলাদেশ মিশন থেকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুদিন আগে চিঠি সরাসরি দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে।

গত বছর জুলাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে গত ১৭ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর তাকে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে প্রথমবারের মতো চিঠি দিল বাংলাদেশ।

অবশ্য দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের অনুরোধ জানিয়ে ভারতকে এর আগে গত বছরের ২০ ও ২৭ ডিসেম্বর চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ। ভারত ওই সব চিঠির কোনো উত্তর দেয়নি।

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর ওই দিন বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল। আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন অনতিবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। দুই দেশের মধ্যে থাকা প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে দুজনকে হস্তান্তর করাটা ভারতের জন্য অবশ্যপালনীয় দায়িত্বও বটে।’

পরে এই রায় নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি, স্থিতিশীলতাসহ বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব সময় সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।’


কমনওয়েলথ দাবা প্রতিযোগিতায় সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষার্থীদের সাফল্য

আপডেটেড ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১৮:৩১
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ৮ থেকে ১৮ নভেম্বর মালয়েশিয়ার কুয়ালালমপুরে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ দাবা প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের তাশরিক শায়হান শান ওপেন ক্যাটাগরির শেষ রাউন্ডে ভারতের গ্র্যান্ডমাস্টার শ্যাম নিখিল-কে পরাজিত করে ওপেন অনূর্র্ধ্ব-২০ বিভাগে রৌপ্যপদক জিতেছে। সে ৯ খেলায় ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে।

ওমেন ক্যান্ডিডেট মাস্টার ওমনিয়া বিনতে ইউসুফ লুবাবা মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগে ৯ খেলায় ৬ পয়েন্ট অর্জন করে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে। অন্যদিকে প্রতিযোগিতার ব্লিটজ ক্যাটাগরীতে সাউথ পয়েন্ট স্কুলের আজান মাহমুদ বাংলাদেশের পক্ষে অনুর্ধ্ব-১০ এ বিভাগীয় পুরষ্কার জিতে নেয়ার কৃতিত্ব অর্জন করে।

বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের আরও উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে; মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১০ ওমেন ক্যান্ডিডেট মাস্টার ওয়ারিসা হায়দার ৪র্থ। ওপেন অনূর্ধ্ব-১০ ক্যাটাগরিতে সাউথ পয়েন্ট স্কুলের রায়হান রশীদ মুগ্ধ ৯ খেলায় ৬-পয়েন্ট অর্জন করে ৫ম পুরস্কার পায়। বাংলাদেশের সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজের অন্যান্য কৃতি দাবারুদের মধ্যে অনূর্ধ্ব-১২ সাফায়েত কিবরিয়া আজান ৯ খেলায় ৫ পয়েন্ট, মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১২-এ সিদরাতুল মুনতাহানা নাফি ৯ খেলায় ৪ পয়েন্ট অর্জন করে।

উল্লেখ্য কমনওয়েলথভুক্ত বিভিন্ন দেশের মোট ৩৭৩-জন দাবারু সাম্প্রতিক এ দাবা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে, যাদের মধ্যে ছিল ৮ জন গ্র্যান্ডমাষ্টার, ৮ জন আন্তর্জাতিক মাষ্টারসহ ফিদে টাইটেলধারী সর্বমোট ৬০-জন দাবারু।

উল্লেখ্য উক্ত কমনওয়েলথ দাবার মত আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের তরুণ দাবাড়ুরা দুর্দান্ত কৃতিত্ব দেখিয়ে প্রমাণ করেছে তাদের প্রতিভা বিশ্বমানের।

এসব সাফল্য তথা অর্জনের জন্য সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার এম এ রশিদ ও মালিবাগ ক্যাম্পাসের অধ্যক্ষ কর্ণেল মো: শামসুল আলম, পিএসসি (অব:) সাউথ পয়েন্টের খুদে দাবাড়ু ও সংশ্লিষ্ট অভিভাবকবৃন্দসহ সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে গুণগত মানের লেখাপড়ার পাশাপাশি বেশিবেশি খেলাধুলা, বিতর্ক প্রতিযোগীতা ও সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা। যাতে শিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে অধিকতর আত্মবিশ্বাসি, মানবিক ও আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা যায়।

বিশেষ করে আমরা শিক্ষার্থীদেরকে সাফল্য, ব্যর্থতা বা হারজিতকে গুরুত্ব না দিয়ে খেলাধুলাসহ সকল প্রতিযোগীতায়ই অংশগ্রহণের ব্যপারে উৎসাহিত করি। যার অংশ হিসেবে এসব সাফল্য সংবাদগুলো যেমনই হোক সংবাদপত্র ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশের ব্যপারেও গুরুত্ব দিয়ে থাকি।


২০২৫-২৬ কর বছরের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়ালো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ১৯ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে এক বিশেষ আদেশের মাধ্যমে ২০২৫-২৬ কর বছরের ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাগণের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বৃদ্ধি করে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ নির্ধারণ করেছে। একই সাথে ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে কোন করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলে অসমর্থ হলে ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের নিকট সুনির্দিষ্ট যৌক্তিকতাসহ আবেদন করা যাবে মর্মে আরো একটি আদেশ জারী করা হয়েছে।

এ বছর ৬৫ (পঁয়ষট্টি) বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী করদাতা, মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি কর্তৃক রিটার্ন দাখিল এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশী নাগরিকগণ ব্যতীত সকল ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ২০২৫-২৬ কর বছরে বেশ কয়েক শ্রেণির করদাতাগণকে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাদকতা হতে অব্যাহতি দেয়া হলেও তাঁরা ইচ্ছা পোষণ করলে অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন।

করদাতার পক্ষে তাঁর ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিও এবছর অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। এছাড়া, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী করদাতাগণের ক্ষেত্রে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাদকতা না থাকলেও তাঁর পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ই-মেইল এড্রেস ইত্যাদি তথ্য [email protected] ই-মেইলে প্রেরণ পূর্বক আবেদন করলে আবেদনকারীর ই-মেইলে OTP এবং Registration Link প্রেরণ করা হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী করদাতাগণও ই-রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করত: সহজেই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন।

কোনরুপ কাগজপত্র বা দলিলাদি (upload) আপলোড না করে সম্মানিত করদাতাগণ তাঁদের আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের প্রকৃত তথ্য ই-রিটার্ন সিস্টেমে এন্ট্রি করে সহজে ঝামেলাহীনভাবে ঘরে বসেই ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং অথবা মোবাইল ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিস (বিকাশ, নগদ ইত্যাদি)-এর মাধ্যমে অনলাইনে আয়কর পরিশোধ করে ই-রিটার্ন দাখিল করে তাৎক্ষণিকভাবে নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্ন দাখিলের acknowledgement slip এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখপূর্বক স্বয়ংক্রিয়ভাবে আয়কর সনদ প্রিন্ট নিতে পারেন বিধায় দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সকল বাংলাদেশী করদাতার কাছে ই-রিটার্ন দাখিল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া সহজবোধ্য করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত বছরের ন্যায় এ বছরেও সম্মানিত করদাতাগণকে অনলাইন রিটার্ন দাখিলের জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছে। করদাতাগণ ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ বছর করদাতার ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি তথা আয়কর আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস, কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস এবং চার্টার্ড সেক্রেটারিজগণকে ও ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়ার ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে।

ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোন সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা প্রদানের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছে। উক্ত কল সেন্টারের ০৯৬৪৩ ৭১ ৭১ ৭১ নম্বরে ফোন করে করদাতাগণ e-Return সংক্রান্ত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন। এছাড়া, www.etaxnbr.gov.bd এর eTax Service অপশন হতে করদাতাগণ e-Return সংক্রান্ত যে কোন সমস্যা লিখিতভাবে জানালে তার সমাধান পাচ্ছেন। অধিকন্তু, সারাদেশের সকল কর অঞ্চলে স্থাপিত ই-রিটার্ন হেল্প-ডেস্ক হতে অফিস চলাকালীন সময়ে ই-রিটার্ন দাখিল বিষয়ক সকল সেবা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। সম্মানিত করদাতাগণ নিজ নিজ কর অঞ্চলে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে অথবা টেলিফোনের মাধ্যমে ই-রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত যাবতীয় সেবা গ্রহণ করছেন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সকল সম্মানিত ব্যক্তি করদাতাগণকে ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বিনীত অনুরোধ করছে। উল্লেখ্য,অদ্যাবধি প্রায় ১৮ লক্ষের অধিক ব্যক্তি করদাতা এ বছর অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করেছেন।


গুমের দুই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩ ও ৭ ডিসেম্বর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি আগামী ৩ ও ৭ ডিসেম্বর।

এই দুই মামলায় গ্রেফতারকৃত ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে হাজিরের পর প্রসিকিউসনের আবেদনে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শুনানির দিন ধার্য করেন।

সেই সাথে এই দুই মামলায় পলাতক আসামি শেখ হাসিনার পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

এছাড়া এই দুই মামলায় পলাতক অপর আসামিদের জন্য রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

আজ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউসন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানি করেন।

এ সময় অপর প্রসিকিউটর ও আসামি পক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

আজ সকালে ঢাকা সেনানিবাসে স্থাপিত সাময়িক কারাগার থেকে বাংলাদেশ জেলের বিশেষ প্রিজন ভ্যানে করে এই দুই মামলার আসামী ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।

সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালের আনার প্রেক্ষাপটে ট্রাইব্যুনালকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়।

ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সেনা, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি’র বিপুল সংখ্যক সদস্যের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী ও ডিজিএফআই-এর সাবেক পাঁচ মহাপরিচালসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গত ৮ অক্টোবর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

এই দুই মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামীদের ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী দুই মামলার আসামি সেনা কর্মকর্তাকে হাজিরের পর গত ২২ অক্টোবর তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল-১।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

এই ট্র্যাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য বিচারক হলেন— মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গুমের এই দুই মামলায় যে ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তারা হলেন— র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে), র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম ও ডিজিএফআই-এর সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।

অন্যদিকে, জুলাই আগস্টে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় গ্রেফতার লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত বিন আলম মুনকে আগামীকাল ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য রয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর, গত ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে ১৫ জন কর্মরত সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়ার কথা জানায় সেনাবাহিনী।

আর্মি অফিসার্স মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, দুটি মামলার ৩০ জন আসামির মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে নয় জন অবসরপ্রাপ্ত, একজন এলপিআরে গেছেন ও বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১৫ জন।

পরবর্তীতে ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে গত ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব মো. হাফিজ আল সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ৫৪১(১) এর ক্ষমতাবলে এবং দি প্রিজন অ্যাক্ট এর ধারা ৩ এর বি অনুসারে ঢাকা ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোড সংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত ‘এমইএস’ বিল্ডিং নং-৫৪-কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো।’ সূত্র: বাসস


সেন্ট মার্টিনে ১ ডিসেম্বর থেকে যাবে জাহাজ

থাকছে রাতে থাকার সুযোগও
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে। থাকছে রাতে থাকার সুযোগও। তবে দৈনিক দুই হাজারের বেশি পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবেন না।

কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া জেটিঘাট থেকে সকাল সাতটায় জাহাজ ছেড়ে যাবে। পরের দিন বিকাল তিনটায় সেন্ট মার্টিন থেকে সেই জাহাজ কক্সবাজারে ফিরে আসবে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা দুই মাস পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য সাতটি জাহাজ প্রস্তুত করা হয়েছে।

এদিকে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত করা হয়। তবে রাতে থাকার ব্যবস্থা না থাকায় এখন পর্যন্ত একজন পর্যটকও দ্বীপ ভ্রমণে যাননি। জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় আগামী আট দিনেও কোনো পর্যটকের দ্বীপ ভ্রমণের সুযোগ নেই।

পর্যটকবাহী জাহাজ মালিকদের সংগঠন ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের’ সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বলেন, রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় নভেম্বর মাসে কোনো পর্যটক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে যেতে আগ্রহ দেখাননি। এ কারণে জাহাজ চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ১ ডিসেম্বর থেকে টানা দুই মাস রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা আছে। পর্যটকেরাও দ্বীপ ভ্রমণে যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

কক্সবাজার শহর থেকে সেন্ট মার্টিনের দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা। জাহাজগুলো হলো—এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বারো আউলিয়া, এমভি বে ক্রুজ, এমভি কাজল, কেয়ারী সিন্দাবাদ, কেয়ারী ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন ও আটলান্টিক ক্রুজ।

সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সরকারি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্ট মার্টিনে কোনো নৌযান চলাচল করতে পারবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা গণমাধ্যমকে বলেন, পর্যটক পারাপারের সময় জাহাজগুলোকে কঠোর নজরদারিতে রাখা হবে। দুই হাজারের বেশি পর্যটক যেতে দেওয়া হবে না। এ জন্য নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট ও সেন্ট মার্টিন জেটিঘাটে পৃথক তল্লাশির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।


banner close