মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
১৫ পৌষ ১৪৩২

ব্যাংক পরিচালকদের মেয়াদ বাড়ল, জাপার হইচই, ওয়াকআউট, স্পিকারের রুলিং

আপডেটেড
২২ জুন, ২০২৩ ০০:৩০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২১ জুন, ২০২৩ ২২:২০

পরিচালক পদে একটানা বারো বছর থাকার বিধান যুক্ত করে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে।

সংসদে পাস হওয়া বিলে খেলাপি ঋণগ্রহীতার ঋণ সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। অবশ্য এসব সংশোধনী সংসদে উপস্থাপিত বিলে বা স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদনে ছিল না।

বিলটি পাসের প্রতিবাদে সংসদ থেকে ওয়াক আউট করেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা।

বুধবার সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) বিল- ২০২৩’ পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

পরিচালক পদের মেয়াদ বাড়ানোর সংশোধনী প্রস্তাবটি যেভাবে আনা হয়েছে তা নিয়ে প্রবল আপত্তি জানান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, ব্যাংক লুটপাটের মূল হোতা পরিচালকেরা। তাদের সুবিধা দেয়ার জন্য আইন সংশোধন করা হচ্ছে। তারচেয়ে পরিচালকদের মেয়াদ আজীবন করে দেয়া হোক।

গত ৮ জুন ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) বিল–২০২৩ জাতীয় সংসদে তুলেছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সংশোধনীর মূল প্রস্তাবে পরিচালক পদের মেয়াদ বাড়ানো–কমানোর বিষয়ে কোনো প্রস্তাব ছিল না। পরে সেটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল। কমিটিও পরিচালক পদের মেয়াদ নিয়ে কোনো সংশোধনী আনেনি।

সংসদে বিলটি পাসের আগে টাঙ্গাইল-৬ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু পরিচালকদের মেয়াদ বাড়ানো ও খেলাপি ঋণগ্রহীতার ঋণ সুবিধা বিষয়ক সংশোধনী দুটি প্রস্তাব করেন। টিটু পরিচালকদের পদের মেয়াদ বিষয়ক সংশোধনীতে প্রস্তাব করেন- ‘আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন অথবা কোনো ব্যাংক-কোম্পানির সংঘস্মারক ও সংঘবিধিতে ভিন্নতর যা কিছুই থাকুক না কেন, ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০১৮ কার্যকর হবার পর কোনো ব্যক্তি কোনো ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক পদে একাদিক্রমে ১২ বছরের অধিক অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না।’

খেলাপি ঋণগ্রহীতার অনুকূলে ঋণ ছাড় বিষয়ক সংশোধনী প্রস্তাবে তিনি জানান, পরস্পর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গ্রুপভুক্ত কোনো খেলাপি ব্যক্তি বা ক্ষেত্রমত, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি যদি ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা না হয় অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি কর্তৃক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হবার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি খেলাপি বলে গণ্য হবে না, এবং এইরূপ প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে তৎকর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী ঋণ সুবিধা প্রদান করা যাবে।

টিটুর পরিচালক পদের সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখান জাতীয় পার্টির একাধিক সংসদ সদস্য। বিল পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা প্রশ্ন তোলেন, এভাবে বিলে সংশোধনী আনা যায় কি না। এ বিষয়ে তারা স্পিকারের ব্যাখ্যা দাবি করেন।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, পরিচালক পদের মেয়াদ ১২ বছর করার জন্য সরকারি দলের একজন সদস্য সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছেন। এটা বিল উত্থাপনের সময় ছিল না। যেহেতু সরকারি দলের সংসদ সদস্য এই প্রস্তাব দিয়েছেন তাই মনে হচ্ছে এটা গ্রহণ করা হবে। যে বিষয়টি সংসদে উত্থাপনই হয়নি সেটা চাওয়া হয় কী করে?

তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর হাত থেকে মুক্ত করতে হবে।

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘পরিচালকেরা হচ্ছেন ব্যাংক লুটপাটের মূল হোতা। কোনো পরিচালক সুপারিশ না করলে আমার মতো লোক গেলে ব্যাংকঋণ পাবে না।'

জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নু বলেন, ‘যে আইনের কোনো ধারা অর্থমন্ত্রী সংশোধনীতে আনেননি, যে ধারা সংশোধনের জন্য সংসদীয় কমিটি কোনো সুপারিশ করেনি, সেখানে একজন সরকারি দলের সদস্য কোন আইনে এই সংশোধনী আনলেন? তিনি এটা পারেন কি না? এটা জানা খুবই দরকার। অভিভাবক হিসেবে স্পিকার এটা বলবেন বলে আশা করি।’

মুজিবুল হক বলেন, ‘মনে হচ্ছে অর্থমন্ত্রীকে কনভিন্স করে সরকারি দল করেন, এমন অনেক ব্যাংকের পরিচালকদের সুপারিশে এটা আনা হয়েছে পাস করার জন্য। সেটা হলে আমরা আমাদের সব সংশোধনী প্রত্যাহার করলাম। কারণ, এর চেয়ে বড় অন্যায় আর হতে পারে না। যেখানে ব্যাংক লুটপাট করা হচ্ছে, বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে, আর বাংলাদেশ ব্যাংক বসে বসে তামাক খায়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান-পরিচালক হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে চলে যান। আপনারা দেখছেন না। আপনারা আছেন কাউকে ফেবার (সুবিধা দেয়া) করার জন্য। পরিচালকের মেয়াদ ১২ বছর করার এই প্রস্তাবকে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’

জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, এই আইনে সংশোধন আনা হচ্ছে শুধু ব্যাংকমালিকদের সুবিধা দেয়ার জন্য। বেসরকারি ব্যাংকগুলো এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর খবরদারি করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর কে হবেন, ডেপুটি গভর্নর কে হবেন—এগুলো তারা নির্ধারণ করে দেয়। ব্যাংকমালিকদের কাছে সরকার জিম্মি হয়ে গেছে।

ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক কারা—এই প্রশ্ন রেখে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘আমরা তার লিস্ট চাই। আমরা এই ভাগ্যবানদের সংসদে দেখতে চাই। সব দলীয় কর্মী ও আত্মীয়স্বজনকে স্বতন্ত্র পরিচালক করা হয়। তাঁরা ব্যাংকে যায় শুধু লোন দেওয়ার জন্য। ১০ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে দুই কোটি নিজে নিয়ে নিলেন। এক দিনে ধনী হয়ে গেলেন। যেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ। এখানে লুটপাট চলছে। আমরা কমানোর প্রস্তাব করছি না। এদের মেয়াদ আজীবন করে দেন। আমি এখন প্রস্তাব আনলাম। এই পরিচালকেরা আজীবন থাকবেন। আল্লাহ যত দিন হায়াত রাখছেন, আপনারা খাইতে থাকেন। আমরা দেখতে থাকি।’

প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে ব্যাংকমালিকদের অনুদান দেয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, তারা পত্রিকার প্রথম ও শেষ পাতায় বড় বড় ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন দেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে টাকা (চেক) দিচ্ছেন। আরও এক বস্তা (টাকা) খালেদা জিয়ার হাতে দেন। সেটা প্রকাশ করেন না। এদের চরিত্র একই। সাবধান হতে হবে, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ব্যাংকমালিকদের সুবিধা দেয়ার জন্য আইনটি আনা হয়েছে। তারা জনগণের টাকার অপব্যবহার করেন। সর্দিকাশি হলেই তারা ব্যাংকের টাকায় সিঙ্গাপুর চলে যান।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, সরকার তাদের প্রিয় পরিচালকদের কীভাবে পদে রাখবে, সেটা ভুলে গিয়েছিল। এ কারণে পরবর্তী সময়ে এই সংশোধনী আনা হয়েছে। যে প্রক্রিয়ায় আইনে সংশোধনী আনা হচ্ছে, তা সঠিক প্রক্রিয়া নয়।

বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, খেলাপি ঋণ ১৪ বছরে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৬ শতাংশে নেমেছে। সরকারি ব্যাংকের শাখা দ্বিগুণ বেড়েছে। ব্যাংকের আমানত ৭ গুণ বেড়েছে। বছরওয়ারি মুনাফা বেড়েছে ৮ গুণ। তিনি আশা করেন, তাঁর এই বক্তব্যে ভুল–বোঝাবুঝির কিছুটা অবসান হবে।

সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম তার সংশোধনী প্রস্তাব তুলতে গেলে জাপার সংসদ সদস্যরা হইচই শুরু করেন। তখন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, আগে সংসদ সদস্যকে সংশোধনী প্রস্তাব তুলতে দিন। এরপর বিষয়টির ব্যাখ্যা দেয়া হবে।

আহসানুল ইসলাম সংশোধনী প্রস্তাব তোলার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদের কার্যপ্রনালি বিধির সংশ্লিষ্ট বিধি উল্লেখ করে বলেন, মূল সংশোধনীতে বিলের ১০ দফায় সংশোধনীর প্রস্তাব ছিল। আর আহসানুল ইসলাম যে সংশোধনী প্রস্তাব এনেছেন, সেটিও এই দফার একটি উপদফা। এখানে বিলে কোনো নতুন ধারা যুক্ত করা হয়নি বা এমন কোনো নতুন দফাও যুক্ত করা হয়নি। এটি অপ্রাসঙ্গিক নয়।

স্পিকারের বক্তব্যের পর বিরোধী দলের সদস্য ফখরুল ইমাম কথা বলতে চাইলে স্পিকার মাইক না দিয়ে বলেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য, এটা আমার রুলিং। এ বিষয়ে আর আপনার কিছু বলার নেই।’

ফখরুল ইমাম এ সময় আবারও হাত তুললেও তাকে ফ্লোর দেয়া হয়নি। রুলিংয়ের পর অর্থমন্ত্রীকে ফ্লোর দেন স্পিকার। এ সময় মাইক ছাড়াই বিরোধী দলের সদস্যরা হট্টগোল, হইচই করতে থাকেন। পরে স্পিকার অর্থমন্ত্রীকে থামিয়ে দিয়ে বিরোধী দলের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা বিধির বাইরে কিছু করব না।’

তখনো বিরোধী দলের সদস্যরা হইচই, হট্টগোল করতে থাকেন। তাদের হইচইয়ের মধ্যেই ফ্লোর নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, তিনি আহসানুল ইসলামের সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করছেন।

এটি বলার সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা হইচই ও চিৎকার করে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। মাইক ছাড়াই কথা বলতে থাকেন মুজিবুল হক। কাজী ফিরোজ রশীদও দাঁড়িয়ে কথা বলতে শুরু করেন। একপর্যায়ে ফিরোজ রশীদকে মাইক দেয়া হয়। তিনি অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা যে আজীবনের কথা বললাম, আপনি কি সেটা গ্রহণ করলেন? এই একজন পরিচালক আমৃত্যু থাকবেন, সেটা গ্রহণ করছেন? না ১২ বছর করছেন? কোনটা, সেটা আমাদের স্পষ্ট বলতে হবে।’

মুজিবুল হকও একই ধরনের বক্তব্য দেন। এ সময় বিরোধী দলের সদস্যরা হইচই করতে থাকলে কিছু সময়ের জন্য সংসদে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।

পরে স্পিকার অর্থমন্ত্রীকে আবারও মাইক দেন। তবে তিনি কথা বলেননি। একপর্যায় স্পিকার সংশোধনী ভোটে দেন। দফাভিত্তিক সব সংশোধনী ভোটে দেয়া হয়। এ সময় জাতীয় পার্টির সদস্যরা হইচই করে ওয়াকআউট করে সংসদ কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান।

অবশ্য কিছু সময় পর জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা আবার সংসদের অধিবেশন কক্ষে ফিরে আসেন।

পাস হওয়া বিলে হয়েছে, কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একটি একক পরিবারের সদস্যের বাইরে তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা নিয়ন্ত্রণাধীন সর্বোচ্চ দু’টি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষে প্রতিনিধি পরিচালক থাকতে পারবে। তবে কোনো ব্যাংকের পর্ষদে কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষে একজনের অধিক ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক নিযুক্ত হতে পারবে না।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংকের পর্ষদে প্রাকৃতিক ব্যক্তিসত্ত্বা বিশিষ্ট ব্যক্তি শেয়ারহোল্ডারের পক্ষে অপর কোনো ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হতে পারবে না। অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি ব্যাংকের শেয়ারের মালিক হলে তার প্রতিনিধি হিসেবে অন্য কোনো ব্যক্তিকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে না।

বিদ্যমান আইনে কোনো ব্যাংক পরিচালক একইসময়ে অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকতে পারবেন না। তবে এই আইন কার্যকর হবার পর সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে বিমা কোম্পানির পরিচালক হওয়ার সুযোগ রয়েছে। যদিও ২০১০ সালে প্রণীত বিমা আইন অনুযায়ী কোনো বীমা কোম্পানির পরিচালক ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক হতে পারেন না। সংশোধনী বিলে কোনো ব্যাংক পরিচালকের একইসঙ্গে বিমা কোম্পানির পরিচালক পদে থাকার সুযোগ বাতিল করা হয়েছে।

এছাড়া, কোনো পরিচালক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে বিদ্যমান আইনে কিছু বলা নেই। কিন্তু একজন পরিচালক আরও কোন কোন কোম্পানিতে পরিচালক থাকতে পারবেন না বলে বিলে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ব্যাংকের পরিচালক হলে একই সময়ে তিনি অন্য কোনো ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা কোম্পানি বা এসব কোম্পানির কোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক থাকতে পারবেন না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় এমন কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান যা ওই ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বিমা কোম্পানির উপর নিয়ন্ত্রণ বা যৌথ নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব বিস্তার করে- এমন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকবে না বলেও বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিদ্যমান আইনে বিকল্প পরিচালক নিয়োগের সুযোগ থাকলেও তার মেয়াদকাল এবং বিকল্প পরিচালকদের যোগ্যতা সম্পর্কে কিছু বলা নেই। নতুন আইনে এসব বিষয় সুনির্দিষ্ট করা হচ্ছে।

খসড়া আইনে বলা হয়েছে, কোনো পরিচালক কমপক্ষে নিরবচ্ছিন্নভাবে তিন মাস বিদেশে অবস্থান করলে তার অনুপস্থিতির কারণে পর্ষদ চাইলে মূল পরিচালকের বিপরীতে বছরে সর্বোচ্চ একবার একজন বিকল্প পরিচালক নিযুক্ত করতে পারবে। পরিচালক নিয়োগের যেসব শর্ত রয়েছে, সেগুলো বিকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।

খসড়া আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক-কোম্পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার স্বার্থে উহার পর্ষদ এবং পর্ষদ কমিটিগুলোর কর্মপরিধি বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সময় সময় নির্দেশনা জারি করতে পারবে।

নতুন আইনে ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর উপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পাবে। এতে নতুন ধারা যোগ করে বলা হয়েছে, যে উদ্দেশ্যেই ব্যাংক কোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন করুক না কেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত হার বা পরিমাণের বেশি সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধন হিসেবে বিনিয়োগ করতে পারবে না।

নতুন আইনের আওতায় সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার যোগ্যতা ও উপযুক্ততার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারি করবে।

ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিদেশ যাওয়া, বাড়ি-গাড়ি ও কোম্পানি নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ তাদের রাজনৈতিক দলের কমিটিতে না রাখার বিধান রেখে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অধিকতর সংশোধন করতে একটি বিল সংশোধন আনা হয়েছে। এই বিলে এক পরিবার থেকে তিন জনের বেশি ব্যাংক পরিচালক হওয়া যাবে না এরকম বিধান রয়েছে।

সংসদে পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা শনাক্ত ও চূড়ান্ত করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুটি পৃথক কমিটি গঠন করবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সময়ে সময়ে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাবে।

তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চাইলে ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে আপিল করতে পারবে এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। এছাড়া ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞাসহ বেশকিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেবার সুযোগ রাখা হয়েছে।

বিষয়:

২০২৫ সালে যে নক্ষত্রদের হারিয়েছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন ডেস্ক

ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে ২০২৫ সাল বিদায় নিলেও বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতি অঙ্গনের জন্য এই বছরটি ছিল গভীর শোক আর হারানোর। বছরজুড়েই দেশ হারিয়েছে বেশ কয়েকজন কিংবদন্তি এবং প্রতিভাবান তারকাকে, যাঁদের দীর্ঘদিনের সাধনা ও সৃষ্টি এ দেশের সাংস্কৃতিক ভিত্তি মজবুত করেছিল। বছরের শুরুতেই চলচ্চিত্র জগত বড় এক ধাক্কা খায় সোনালি যুগের জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জনা রহমানের প্রয়াণে। ৪ জানুয়ারি ভোরে ৩ শতাধিক সিনেমার এই অভিনেত্রী না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। তাঁর রেশ কাটতে না কাটতেই ৫ জানুয়ারি বিদায় নেন বরেণ্য অভিনেতা প্রবীর মিত্র, যাঁর চরিত্রাভিনেতা হিসেবে অসামান্য নৈপুণ্য বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে। এরপর ২৫ মার্চ নিভে যায় সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম বাতিঘর ও ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সন্‌জীদা খাতুনের জীবনপ্রদীপ, যিনি আজীবন রবীন্দ্রসংগীত ও লোকজ সংস্কৃতিকে লালন করেছেন।

বছরের মাঝামাঝি সময়ে ২ জুলাই চিরবিদায় নেন ‘সাগরের তীর থেকে’ খ্যাত কালজয়ী কণ্ঠশিল্পী জীনাত রেহানা। তাঁর রেশ কাটতে না কাটতেই ২৭ জুলাই আকস্মিক মৃত্যু হয় তরুণ প্রজন্মের প্রিয় সংগীতশিল্পী ও ব্যান্ড ‘ওন্ড’-এর সদস্য এ কে রাতুলের, যিনি ছিলেন কিংবদন্তি চিত্রনায়ক জসীমের সন্তান। সংগীতাঙ্গনে শোকের ছায়া আরও ঘনীভূত হয় ১৩ সেপ্টেম্বর, যখন লোকসংগীতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী ও একুশে পদকপ্রাপ্ত লালনকন্যা ফরিদা পারভীন শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর প্রয়াণ বাংলাদেশের লোকজ সংগীতের ধারায় এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করেছে।

বছরের শেষ ভাগেও হারানোর মিছিল থামেনি। ২৭ নভেম্বর মারা যান জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘ফিডব্যাক’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও কিংবদন্তি গিটারিস্ট সেলিম হায়দার। তাঁর সৃষ্টির ঠিক একদিন পরই ২৮ নভেম্বর আধুনিক গানের পরিচিত কণ্ঠস্বর জেনস সুমন আমাদের ছেড়ে চলে যান। ২০২৫ সালের এই বিদায়গুলো কেবল একেকটি জীবনের অবসান নয়, বরং বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্যের ইতিহাসের একেকটি সোনালি অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি। এই নক্ষত্ররা শারীরিকভাবে বিদায় নিলেও তাঁদের গান, অভিনয় আর অনন্য সব সৃষ্টি এ দেশের মানুষের হৃদয়ে এবং জাতীয় ইতিহাসে চিরকাল অম্লান হয়ে থাকবে। মূলত তাঁদের দেখানো পথ ধরেই আগামী দিনের সাংস্কৃতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।


বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে শ্রদ্ধা: বিপিএলের আজকের সব ম্যাচ স্থগিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আজকের নির্ধারিত ম্যাচগুলো স্থগিত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে এক আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।

বিসিবি জানিয়েছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বর্তমানে সারাদেশে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে। তাঁর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ সিলেটের মাঠে অনুষ্ঠিতব্য ‘সিলেট টাইটান্স বনাম চট্টগ্রাম রয়্যালস’ এবং ‘ঢাকা ক্যাপিটালস বনাম রংপুর রাইডার্স’–এর মধ্যকার ম্যাচ দুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থগিত হওয়া এই ম্যাচগুলোর নতুন সূচি পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতা ও লিভার সিরোসিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি অত্যন্ত সংকটময় সময় পার করছিলেন।

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর এই প্রয়াণে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রাজনৈতিক অঙ্গনের পাশাপাশি ক্রীড়া জগতেও এর প্রভাব পড়েছে। বিপিএলের মতো বড় আসরের খেলা স্থগিত রেখে তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করল ক্রিকেট বোর্ড। বর্তমানে জানাজা ও দাফনের প্রস্তুতির কারণে লিগের পরবর্তী সূচি নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।


বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শেখ হাসিনার শোক: ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান অপরিসীম’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন তাঁর দীর্ঘদিনের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা এক বিশেষ শোকবার্তায় বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের প্রশংসা করে বলেছেন, এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়ার অবদান অপরিসীম। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক পোস্টের মাধ্যমে এই শোকবার্তাটি প্রচার করা হয়।

শোকবার্তায় শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে এবং বিশেষ করে বিএনপির নেতৃত্বের ক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এটিই শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আসা প্রথম কোনো বড় ধরণের আনুষ্ঠানিক শোকবার্তা। রাজনৈতিক বৈরিতা থাকা সত্ত্বেও দেশের ইতিহাসের এক চরম শোকাবহ ও গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে শেখ হাসিনার এই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া এবং খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক কৌতূহল ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

আবেগঘন এই বার্তায় শেখ হাসিনা আরও বলেন, “আমি তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য শোকাহত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আমি প্রার্থনা করি যেন মহান আল্লাহ তাঁর পরিবার এবং বিএনপির সকল স্তরের নেতাকর্মীকে এই কঠিন শোক সহ্য করার শক্তি দান করেন।” মূলত দেশের দুই শীর্ষ নেত্রীর দীর্ঘ কয়েক দশকের রেষারেষির অবসান ঘটিয়ে এই মৃত্যু যেন রাজনীতির অঙ্গনে এক ভিন্ন মাত্রার শোকের আবহ তৈরি করেছে।

উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতা, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসসহ নানা বার্ধক্যজনিত সমস্যার সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ৭৯ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন। সোমবার দিবাগত রাত ২টার পর তাঁর শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যান। চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টার পর সকালে তাঁর চিরবিদায়ের খবরটি নিশ্চিত করেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।

নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অগ্রসেনানী হিসেবে ‘আপসহীন নেত্রী’র খ্যাতি পাওয়া বেগম খালেদা জিয়া টানা ৪১ বছর বিএনপির হাল ধরেছিলেন। তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের অন্যতম অনন্য রেকর্ড হলো, তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে একাধিকবার সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও কখনো কোনো আসনে পরাজিত হননি। তিনি তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং দুইবার জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শত জুলুম ও কারাবরণ সত্ত্বেও দেশ ছেড়ে না যাওয়ার যে অদম্য জেদ তিনি আমৃত্যু বজায় রেখেছিলেন, তা তাঁকে এ দেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় করে রাখবে। তাঁর এই মহাপ্রয়াণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামোর এক শক্তিশালী স্তম্ভের পতন ঘটল।


বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতিসংঘের গভীর শোক প্রকাশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ঢাকার জাতিসংঘ কার্যালয় থেকে পাঠানো এক আনুষ্ঠানিক বার্তার মাধ্যমে এই শোক ও সমবেদনা জানানো হয়। বার্তায় জাতিসংঘ উল্লেখ করেছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার এই চিরবিদায় একটি অত্যন্ত দুঃখজনক মুহূর্ত। সংস্থাটি তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার ও নিকটজনদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ দিন বার্ধক্যজনিত ও বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভোগার পর আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এ দেশের মানুষের কাছে ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিত বেগম খালেদা জিয়া। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রয়াণে জাতীয় রাজনীতিতে এক বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তাঁর অদম্য নেতৃত্ব ও বলিষ্ঠ ভূমিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে অম্লান হয়ে থাকবে। জাতিসংঘের এই শোকবার্তা তাঁর বৈশ্বিক গুরুত্ব এবং বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের প্রতি এক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিরই বহিঃপ্রকাশ। বর্তমানে দেশজুড়ে এই কিংবদন্তি নেত্রীর বিদায়ে গভীর শোকের ছায়া বিরাজ করছে।


বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গভীর শোক প্রকাশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশে অবস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বার্তার মাধ্যমে এই শোক জানানো হয়। বার্তায় ইইউ উল্লেখ করেছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তারা বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।

উল্লেখ্য, আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য এই নেত্রী। গত ২৩ নভেম্বর ফুসফুসের সংক্রমণ ও তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। কিডনি ও লিভার জটিলতা ছাড়াও তিনি দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস ও ডায়াবেটিসের মতো নানা বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।

বেগম খালেদা জিয়ার এই চিরবিদায়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য অধ্যায়ের অবসান ঘটল। তাঁর মৃত্যুতে ইতোমধ্যেই দেশি-বিদেশি বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান, রাজনৈতিক দল এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো শোকবার্তা পাঠাচ্ছে, যার ধারাবাহিকতায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও এই বিশেষ বার্তাটি দেওয়া হলো। মূলত বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর ভূমিকার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটি তাদের সমবেদনা প্রকাশ করেছে। বর্তমানে দেশজুড়ে শোকের ছায়া বিরাজ করছে এবং এই কিংবদন্তি নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে প্রস্তুতি চলছে।


জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বেগম জিয়ার জানাজা, দাফন হবে শহীদ জিয়ার পাশেই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম নামাজে জানাজা আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) জোহর নামাজের পর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা এবং সংলগ্ন মানিক মিয়া এভিনিউতে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাঁকে শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভা শেষে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আইন উপদেষ্টা জানান, বেগম খালেদা জিয়ার দাফন ও জানাজার যাবতীয় প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের প্রতিটি মিশনে এই বরেণ্য নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শোক বই খোলা হবে। সভার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে বেগম জিয়ার বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেন এবং তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই কিংবদন্তি নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, লিভার সিরোসিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় দীর্ঘ লড়াই শেষে আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রয়াণে জাতীয় রাজনীতিতে একটি দীর্ঘ ও গৌরবময় অধ্যায়ের অবসান ঘটল। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রামে তাঁর আপসহীন নেতৃত্ব ও অদম্য মনোবল এ দেশের মানুষের হৃদয়ে তাঁকে এক অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছে। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ পুরো দেশজুড়ে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বর্তমানে তাঁর মরদেহ এভারকেয়ার হাসপাতালে রাখা হয়েছে এবং আগামীকালকের জানাজা সফল করতে বিএনপি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে।


‘ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিলেন খালেদা জিয়া’, জিএম কাদেরের শোক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অনন্য অধ্যায়ের প্রতিনিধি ছিলেন। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক শোকবার্তায় তিনি এই বর্ষীয়ান নেত্রীর প্রয়াণে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন। জিএম কাদের উল্লেখ করেন যে, খালেদা জিয়া তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে রাষ্ট্র পরিচালনা এবং দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা সুসংহত করতে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর প্রয়াণে দেশ একজন অভিজ্ঞ ও প্রভাবশালী রাজনীতিককে হারাল, যা জাতীয় রাজনীতিতে এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি করল।

শোকবার্তায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও অগণিত রাজনৈতিক সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি মনে করেন, বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলা এবং দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এ দেশের ইতিহাসের পাতায় চিরকাল অম্লান হয়ে থাকবে।

উল্লেখ্য, বার্ধক্যজনিত ও শারীরিক নানা জটিলতার সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিত বেগম খালেদা জিয়া। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের এই চিরবিদায়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি যুগের অবসান ঘটল। জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে তাঁর আপসহীন নেতৃত্ব তাঁকে এ দেশের সাধারণ মানুষের কাছে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল। বরেণ্য এই রাজনীতিকের প্রয়াণে সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।


খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। একই সাথে মরহুমার প্রতি সম্মান জানিয়ে আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ সরকারের এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আগামীকাল বুধবার থেকে শুরু করে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত (৩১ ডিসেম্বর এবং ১ ও ২ জানুয়ারি) তিন দিনব্যাপী রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হবে। এই সময়ে দেশের সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশের মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং দেশের উন্নয়নে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার এই বিশেষ সম্মান প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিসসহ নানা বার্ধক্যজনিত জটিলতায় দীর্ঘ লড়াই শেষে আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান এই নেত্রী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তাঁর এই প্রয়াণে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ইতোমধ্যেই রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা এবং বিশ্বনেতারা তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সরকারের এই ঘোষণার ফলে আগামীকাল দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত ও ব্যাংক-বীমায় সাধারণ ছুটি বলবৎ থাকবে। এক কিংবদন্তি নেত্রীর বিদায়বেলাকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করতেই রাষ্ট্র এই শোকাতুর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।


বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর শোক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক শোক বার্তায় তিনি এই বর্ষীয়ান নেত্রীর প্রয়াণে নিজের এবং পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে গভীর সমবেদনা জানান। শেহবাজ শরীফ বলেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে বেগম জিয়া যে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন এবং দেশ ও জাতির জন্য যে আজীবন অবদান রেখে গেছেন, তা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

শোকবার্তায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানের একজন ‘নিবেদিত বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, এই শোকাবহ মুহূর্তে পাকিস্তানের সরকার এবং সেদেশের সাধারণ মানুষ বাংলাদেশের জনগণের পাশে রয়েছে। শেহবাজ শরীফ আরও বলেন, এই কঠিন সময়ে তাঁদের আন্তরিক সমবেদনা ও প্রার্থনা মরহুমার শোকসন্তপ্ত পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং পুরো বাংলাদেশের মানুষের সাথে রয়েছে। তিনি মহান আল্লাহর কাছে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করেন।

উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় দীর্ঘ দিন লড়াই করার পর আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৯ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর এই চিরবিদায়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা শোক জানাচ্ছেন, যার ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এই গভীর সহমর্মিতা প্রকাশ করা হলো। মূলত দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে বেগম জিয়ার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের বিষয়টিই এই শোকবার্তায় স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।


ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীতে খালেদা জিয়ার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে: নরেন্দ্র মোদি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তার মাধ্যমে তিনি এই প্রবীণ নেত্রীর প্রয়াণে তাঁর পরিবার এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। নরেন্দ্র মোদি তাঁর বার্তায় খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করার পাশাপাশি এ দেশের উন্নয়ন এবং ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

শোকবার্তায় মোদি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়ার অবদান সবসময় অম্লান হয়ে থাকবে। ২০১৫ সালে তাঁর ঢাকা সফরের সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে ব্যক্তিগত সাক্ষাতের স্মৃতিচারণ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেগম জিয়ার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও আদর্শিক উত্তরাধিকার ভবিষ্যতেও দুই দেশের অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করতে বিশেষ অনুপ্রেরণা জোগাবে। তিনি বিনম্র শ্রদ্ধায় এই বরেণ্য নেত্রীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।

উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিসসহ নানা জটিলতা নিয়ে দীর্ঘ সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর এই প্রয়াণে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও বিশ্বনেতারা শোকবার্তা পাঠাচ্ছেন, যার ধারাবাহিকতায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এই আন্তরিক প্রতিক্রিয়া জানানো হলো। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মোদির এই শোকবার্তা দুই দেশের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক মৈত্রী এবং বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিরই বহিঃপ্রকাশ।


বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে রাষ্ট্রপতির গভীর শোক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক বিশেষ শোক বার্তায় তিনি এই বর্ষীয়ান নেত্রীর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বেগম খালেদা জিয়ার ‘আপসহীন ভূমিকা’ এ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বার্তায় উল্লেখ করেন যে, বেগম জিয়ার চলে যাওয়া জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার, দলের অগণিত নেতাকর্মী ও অনুসারীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। শোকাতুর এই মুহূর্তে তিনি দেশবাসীকে মরহুমার স্মৃতির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি তাঁর জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার উদাত্ত আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস এবং লিভার সিরোসিসের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে আজ মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, যেখানে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর এই চিরবিদায়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বর্ণাঢ্য ও দীর্ঘ অধ্যায়ের অবসান ঘটল। বর্তমানে তাঁর মৃত্যুতে রাষ্ট্র ও প্রশাসনের উচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে শোকের আবহ বিরাজ করছে।


দুপুরে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) আনুমানিক দুপুর ১২টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তার মাধ্যমে এই বিশেষ ভাষণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

লিভার সিরোসিসসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় দীর্ঘ লড়াই শেষে আজ ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৯ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এ দেশের মানুষের ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিত বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর এই মহাপ্রয়াণে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে এক বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে।

আজ সকালেই এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বেগম জিয়ার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে জাতি আজ তার এক মহান অভিভাবককে হারাল। তাঁর মৃত্যুতে আমি ব্যক্তিগতভাবে গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত।” প্রধান উপদেষ্টা মনে করেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে খালেদা জিয়ার নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টার এই ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং বাংলাদেশ বেতার থেকে একযোগে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে বেগম খালেদা জিয়ার স্মৃতির প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন, তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অবদান এবং বর্তমান শোকাবহ পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে ধৈর্য ধারণ ও শান্তি বজায় রাখার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন। তাঁর এই ভাষণের দিকে এখন অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে পুরো দেশ।


বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে চীনের প্রধানমন্ত্রীর গভীর শোক প্রকাশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো এক বিশেষ শোকবার্তায় তিনি এই শোক প্রকাশ করেন। ঢাকায় নিযুক্ত চীনা দূতাবাস থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

শোকবার্তায় লি কিয়াং বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের একজন অভিজ্ঞ ও প্রবীণ রাজনীতিক হিসেবে অভিহিত করার পাশাপাশি তাঁকে চীনা জনগণের একজন দীর্ঘদিনের ও অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে স্মরণ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, বেগম জিয়ার প্রধানমন্ত্রিত্বকালে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সমতা এবং উভয়ের কল্যাণের ওপর ভিত্তি করে একটি শক্তিশালী ও সমন্বিত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব গড়ে উঠেছিল। এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে এবং দুই দেশের মৈত্রীকে সুদৃঢ় করতে তাঁর অসামান্য অবদানের কথা চীন সরকার সবসময় অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে মূল্যায়ন করে।

চীনের প্রধানমন্ত্রী আরও জানান যে, বেইজিং সবসময়ই বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার মাধ্যমে এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও আধুনিক ও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যেতে চীন সরকার সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে, যাতে উভয় দেশের সাধারণ মানুষ সুফল ভোগ করতে পারে।

উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিসসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর এই প্রয়াণে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও কূটনীতিকরা গভীর শোক প্রকাশ করে বার্তা পাঠাচ্ছেন। বরেণ্য এই নেত্রীর বিদায়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বড় শূন্যতার সৃষ্টি হলো বলে মনে করছে বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র চীন।


banner close