রাজধানী ঢাকা শহরের মোট জনসংখ্যা ২ কোটি ১০ লাখ, যার সবাই ঢাকা ওয়াসার সেবা গ্রহণ করেছেন। তবে ওয়াসার মিটারভিত্তিক গ্রাহক ৩ লাখ ৮৭ হাজার।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্য হাজি মো. সেলিমের এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকেলে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ঋতুভেদে ঢাকায় দৈনিক পানির চাহিদা ২১০-২৬০ কোটি লিটার, যার পুরোটাই ঢাকা ওয়াসা সরবরাহ করে থাকে। ঢাকা ওয়াসার দৈনিক পানি উৎপাদন সক্ষমতা ২৭৫-২৮০ কোটি লিটার।
সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় সারা দেশের মোট ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৩৫২ কিলোমিটার সড়ক পাকা করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত আছে। বর্তমানে সারা দেশে পাকা সড়কের দৈর্ঘ্য ১ লাখ ৪০ হাজার ৬৯৯ কিলোমিটার এবং কাঁচা সড়কের দৈর্ঘ্য ২ লাখ ১২ হাজার ৬৫৩ কিলোমিটার।
সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, সারা দেশে সমবায় কৃষকদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৪০ কোটি ৩৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অধীনে সমবায় অধিদফতর এবং বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) বর্তমানে সারা দেশে সমবায় কৃষকদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৪০ কোটি ৩৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে সংসদ কাজে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্য অনুযায়ী—২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মে পর্যন্ত ১ হাজার ২৪৭টি কোম্পানি নিবন্ধিত হয়েছে।
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।
নেপালে চলমান বিক্ষোভ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের দেশে প্রত্যাবর্তন সাময়িকভাবে বিলম্বিত হয়েছে। আজ স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দলের দেশে ফেরার কথা থাকলেও পরিস্থিতির অবনতির কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সব ফ্লাইট বাতিল করে। ফলে দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাবৃন্দ বর্তমানে টিম হোটেলে অবস্থান করছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বার্তায় জানিয়েছে, দলের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দলের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এ বিষয়ে নেপালস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের প্রেক্ষাপটে দলের নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নেপালের সেনাবাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
এছাড়া যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া এবং টিম ম্যানেজার আমের খানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে দলের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন এবং দেশে দ্রুত প্রত্যাবর্তনে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ২০২৪-২৫ মেয়াদে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাউন্সিলের সি-ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়ে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে। এরই ধারাবাহিকতায় আসন্ন (২০২৬-২৭ মেয়াদে) আইএমও কাউন্সিলের নির্বাচনে ক্যাটাগরি ‘সি’-এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিদ্বন্দিতা করছে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোর সমর্থন কামনা করেছেন নৌপরিবহন ও শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি আজ মঙ্গলবার সকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আহবান জানান।
এ সময় নৌপরিবহন উপদেষ্টা আইএমও ভুক্ত সকল সদস্য রাষ্ট্রের মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন এবং নরওয়ের পক্ষেও আইএমও নির্বাচনে বাংলাদেশের সমর্থন কামনা করেন। জবাবে উপদেষ্টা নরওয়ের প্রতি বাংলাদেশের অকুন্ঠ সমর্থন থাকবে মর্মে রাষ্ট্রদূতকে জানান।
সাক্ষাৎকালে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত শিপিং সেক্টরে
কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে প্রণীত
আইএমও নেট জিরো ফ্রেমওয়ার্ক বাস্তবায়ন বিষয়ে আলোকপাত করেন।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা আইএমও কনভেনশন বাস্তবায়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ডিজিটালাইজেশন এবং সমুদ্র দূষণ রোধে বাংলাদেশের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন।
মেরিটাইম সেক্টরে কার্বন নিঃসরণ কমাতে বর্তমান সরকার যুগোপযোগী ও কার্যকর নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়ে
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের একটি অন্যতম মেরিটাইম কান্ট্রি। এদেশের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মেরিটাইম সেক্টরের উপর নির্ভরশীল। মেরিটাইম সেক্টরকে কার্বন মুক্ত করতে বন্দরগুলোতে অটোমেশন ও আধুনিক প্রযুক্তি চালু করা হচ্ছে। জাইকার সহযোগিতায় ন্যাশনাল পোর্টস স্ট্রাটেজি প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মোংলা বন্দরসহ অন্যান্য বন্দর গুলোকে পর্যায়ক্রমে গ্রীন পোর্ট এর রুপান্তর করা হচ্ছে।
জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে চীন থেকে দ্বৈত জ্বালানি ব্যবহারে সক্ষম দুইটি জাহাজ ক্রয় করা হচ্ছে। আরো তিনটি আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব জাহাজ কেনার পরিকল্পনা রয়েছে।প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে সরকার অভিযান পরিচালনা করছে।
তিনি আরও বলেন, জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বাংলাদেশ পরিবেশগত, পেশাগত সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। ঢাকার অদূরে বুড়িগঙ্গা নদীকে দূষণমুক্ত করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমে নরওয়েসহ অন্যান্য স্ক্যানডেভিয়ান দেশগুলোর প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা কামনা করেন উপদেষ্টা। এছাড়াও তিনি নরওয়ে সরকারকে নরওয়ের মেরিন ইনস্টিটিউটগুলোতে বাংলাদেশের মেধাবী মেরিনার ও প্রকৌশলীদের আধুনিক ও উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা বিশ্বের মেরিটাইম সেক্টরে পরিবেশ দূষণ রোধে উন্নত বিশ্বের রাষ্ট্র সমূহকে জীবাশ্ম জ্বালানির সাহায্যে চালিত মেরিন ইঞ্জিন বা অন্যান্য যন্ত্রাংশ উৎপাদন থেকে বিরত থাকার আহবান জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের শিপ রিসাইক্লিং শিল্পের উন্নয়নে নরওয়ে ধারাবাহিকভাবে সহযোগিতা করে আসছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে এ শিল্পের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। তিনি এ শিল্পের আধুনিকায়ন এবং সমুদ্র ও শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নরওয়ের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান। তিনি জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ কাজে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা টেকসই সামুদ্রিক উন্নয়নের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আইএমও’র কার্বনমুক্ত ভবিষ্যৎ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থনের কথা জানান।
সাক্ষাৎকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ২ হাজার ৫৫০টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, অভিযানকালে ৪৩৯ টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১১১টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে। সোমবার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা দায়ের করে ।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।‘
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (ডাকসু নির্বাচন) এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনকে জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা যাবে না। ডাকসু, জাকসুসহ যেসব নির্বাচন হচ্ছে এগুলো জাতীয় নির্বাচনের মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এর আগে তার সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ডাকসু নির্বাচন ভালোভাবে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা অবনতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। গণমাধ্যমেও অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ প্রচার হয়নি। এটা আনন্দের খবর।
উপদেষ্টা বলেন, ডাকসু, জাকসুসহ যেসব নির্বাচন হচ্ছে এগুলো জাতীয় নির্বাচনের মডেল। ডাকসুর পর জাকসুসহ যে কয়েকটা নির্বাচন হবে সেগুলোও ভালো পরিবেশে হবে বলে আশা করছি।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময় অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতে একটি উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
“তোমার বাড়ির রঙের মেলায় দেখেছিলাম বাইস্কোপ, বাইস্কোপের নেশায় আমায় ছাড়ে না” প্রেমিকের বাড়িতে বাইস্কোপ দেখার এমন আকুতি কোন প্রিয়া এখন আর করে না। বাইস্কোপও নেই, সেই বাইস্কোপওয়ালাও নেই। বাইস্কোপ দেখার আর কোনো আকুতি মিনতিও নেই। বাইস্কোপওয়ালারা এখন অন্য পেশায় জীবিকা নির্বাহ করে।
“ওই দেখা যায়, কেমন মজা/তাকদি না দিন জাবেদের ঘোড়া চইল্যা গেলো/ইলিয়াছ কাঞ্চণ আইস্যা গেলো/ চম্পাকে নিয়ে চইল্যা গেলো। আরে আরে কেমন মজা/ দেখেন তবে তক্কা মদিনা/তারপরেতে মধুবালা/এক্কাগাড়ীতে উত্তম কুমার আর সুচিত্রা সেন।” এরকম সুরের ধারা বর্ণনা দিয়ে গ্রাম্য জনপদে বাইস্কোপ দেখাতেন বাইস্কোপওয়ালারা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে- রূপগঞ্জে এখন আর এমন মজার বাইস্কোপ দেখা যায় না। ছোট্টবেলায় হাট-বাজারে, মেলায় দেখা যেতো বাইস্কোপ। আধুনিক বিজ্ঞানের মর্ডাণ সময়ে সেলুলয়েডের রঙিন যুগে এখন আর চোখেই পড়ে না এ মজার বাইস্কোপ। এখন শুধুই স্মৃতি। হাটবাজার মেলা ছাড়াও বাইস্কোপওয়ালারা মাথায় করে গ্রামে গ্রামে, বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বাইস্কোপের বাক্সটা নিয়ে মানুষকে ছবি দেখাত। তার হাতে থাকতো বাজনা বাজানোর জন্যে একটা বিষেশ ধরনের বাদ্যযন্ত্র। যে কারো বাড়িতে পৌছেই সেই বাজনা বাজিয়ে আওয়াজ দিত। বলতে শোনা যেত বাইস্কোপ দেখবেন গো বাইস্কোপ। তখন আশেপাশের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা মা-দের কাছে কাকুতি মিনতি করতো ওই বাইস্কোপ দেখার জন্যে। মায়েরা তখন বিরক্ত হয়ে ধানের গোলা থেকে বা চালের মটকা থেকে এক সের ধান বা চাল দিতেন। আর পাবি না কিন্তু এও বলে দিত। ছেলে মেয়েরাও রাজী হয়ে বলতো হ মা আর নিমুনা, আর দেখুম না। এই বলেই ধান নিয়ে ছুটে যেতো বাইস্কোপওয়ালার কাছে। বাইস্কোপওয়ালা তার ব্যাগের মতো থলেতে ধান ঢেলে রেখে দিত। ধান নিতে দেরি, আর বাইস্কোপের কাছে হাঁটু গেড়ে বসতে দেরি হতো না।
পর্দা ওঠলো বাইস্কোপের, মুখের মাঝে দুই হাত দিয়ে চুপি দিয়ে দেখতে থাকতো বাইস্কোপ। বাইস্কোপওয়ালা এক হাতে বাইস্কোপের রিল ঘুরাতে থাকতো আর বলতে থাকতো কি যাচ্ছে আর সামনে কি আসছে। বলতে শোনা যেতো কি সুন্দর দেখা গেলো আলোমতি আইস্যা গেলো, কি সুন্দর দেখা গেলো প্রেমকুমার আইস্যা গেলো ইত্যাদি। বর্তমান সেলুলয়েডের রঙিন ফিতা, অনলাইন আর ইন্টানেটের যুগে এখন আর সেই মনোরম বাইস্কোপ দেখাই যায় না। ছোট্টবেলার সেই বাইস্কোপ এখন শুধুই স্মৃতি। মাত্র দশ পয়সা দিয়ে অথবা এক হেড় বা এক পট ধান বা চাল দিয়ে দেখা যেতো এই বাইস্কোপ।
খামারপাড়া গ্রামের বৃদ্ধজন আওয়াল আলী বলেন, কি হবে রে বাবা এসব ঘেঁটেগুঁটে। যা হারাবার তা হারিয়েই যাবে। যা চলে যাবার তা রুখবে সাধ্য কার? ধরে রাখবে কে? প্রযুক্তির যে জোয়ার। না হারিয়ে যাবে কোথায়? উপায় নাইরে বাজান, উপায় নাই। শিলপাটাটা ধারকাটাওয়ালা, ঘোলওয়ালা, কটকটিওয়ালা, কুলুরা, বেদেরা আজ কোথায় হারিয়ে গেলোগো বাবা? সবাই হয়তো আছে। শুধু পেশাটা বদলে ফেলেছে। আবার হয়তো অনেকেই মরে গেছে।
কিছুই করার নাই। মানুষের জীবনাচরন বদলে গেছে। তাই তার অনুষঙ্গ হারিয়ে যাবে এঁটাইতো স্বাভাবিক। ঈদের আনন্দ, হিন্দুদের পূজা পার্বন আর বিভিন্ন মেলায় দেখা যেত বাইস্কোপ। এগুলো এখন শুধুই স্মৃতি। ছোট্ট শিশু থেকে আরম্ভ করে বুড়োরাও দেখতো একটা বক্সের মধ্যে সুন্দর করে পোস্টার সাজানো বাইস্কোপ। গ্রামাঞ্চলে ভ্রাম্যমান সিনেমা হলের ছবি নামে পরিচিত । গাঁয়ের ছেলে-বুড়োরা ছুটত তার পেছন পেছন। আবার কেউ কেউ তাকে ছবিওয়ালাও বলত। হাতে থাকতো তার একটা ডুগডুড়ি।
বাজাতে বাজাতে গ্রাম্য মেঠো পথ ধরে হাঁটতো। দল বেঁধে সবাই একখানে জড়ো হতো গাঁয়ের শিশু-কিশোর ও কুলবধুরা। তারপর শুরু হতো সিনেমা। তার আগে অবশ্যই টিকিট কিনে নিতে হতো। বক্সের চারখানা ফুটোয় আট জোড়া চোখ লাগিয়ে সেই স্বপ্নের সিনেমা দেখতো গাঁও-গেরামের মানুষরা। সে সবই এখন সূদুর অতীত। কারো মনে পড়ে, কারো পড়ে না। এখন আর দেখা যায় না সেই ছবিওয়ালাকে। কালেরগর্ভে কোথায় যে হারিয়ে গেলো তারা তা বর্তমান প্রজন্মের কেউ জানেনা।
চাকরিজীবি ছালাম মুল্লা বলেন, আমি নিজে দেখেছি ওই বাইস্কোপ। দুপুরে বাড়ির উঠানে বক্সটা নিয়ে বসত। বাড়ির সবাই পর্যায়ক্রমে দেখতাম। মজাই লাগতো। সেই ছবিওয়ালা আজ আর নেই। আস্তে আস্তে সব বিলীন হয়ে যাবে আমাদের অতীতের সব ঐতিহ্য। আমরা এখন আকাশ সংস্কৃতির ঘেরাটোপে বন্দী।
রূপগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ভুইয়া পরিবারের সন্তান ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান দপিু ভুইয়া বলেন, ৩০ বছর আগেও বাইস্কোপওয়ালাকে আমার গ্রাম রূপসীতে ছবি দেখাতে আসতে দেখেছি। কতই না কান্ড করতাম এ বাইস্কোপ দেখার জন্যে। বাবা-মায়ের অনেক বকুনি খেয়েও বাইস্কোপ দেখতাম। আর কতই না মজা করতাম , আনন্দ পাইতাম এ বাইস্কোপ দেখে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। সভ্যতা আমাদের অনেক কিছু উপহার দিয়েছে। কেড়েও নিয়েছে বাইস্কোপের মতো আরো অনেক কিছু।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরিফুল এম খানকে যুক্তরাষ্ট্রের আয়রন ডোম প্রকল্পের নেতৃত্বে নিয়োগ দিয়েছে পেন্টাগন। সম্প্রতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মার্কিন বিমানবাহিনীর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
রোববার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও টিভির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘গোল্ডেন ডোম’ নামে পরিচিত এই কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কর্মসূচির পরিচালক হিসেবে শরিফুল এম খান এর নীতি, কৌশল এবং প্রযুক্তি উন্নয়নের সবকিছু তত্ত্বাবধান করবেন। এই প্রকল্পটি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত জুন মাসে মেজর জেনারেল এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতির জন্য যেসব সামরিক কর্মকর্তাকে মনোনীত করেছিলেন, শরিফুল খান তাদের মধ্যে অন্যতম। গত ১৩ জুন ওই ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ১৫ জন সামরিক কর্মকর্তাকে মেজর জেনারেল পদে এবং ৫৫ জনকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতির জন্য মনোনীত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. ওসমান সিদ্দিক গত ২০ আগস্ট একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে জানান যে, নতুন পদে শরিফুল এম. খানের অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
১৯৯৭ সালে ইউএস এয়ার ফোর্স একাডেমি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান মহাকাশ প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট অপারেশন এবং জাতীয় গোয়েন্দা অভিযানে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন এবং একাধিক সামরিক সম্মাননা পেয়েছেন।
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে এ বছর ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ মাছ রপ্তানি করবে বাংলাদেশ। গতকাল সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। ভারতে শর্তসাপেক্ষে ইলিশ রপ্তানির নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতি বছরই ইলিশ রপ্তানি করে বাংলাদেশ। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের ইলিশের চাহিদা বেশি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, ১১ সেপ্টেম্বর অফিস চলাকালে হার্ড কপিতে আবেদন করতে পারবেন আগ্রহী রপ্তানিকারকেরা। আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, ইআরসি, আয়কর সার্টিফিকেট, ভ্যাট সার্টিফিকেট, বিক্রয় চুক্তিপত্র, মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্সসহ সংশ্লিষ্ট দলিলাদি দাখিল করতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে আরও বলা হয়, প্রতি কেজি ইলিশের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য সাড়ে ১২ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে সরকার। ইতোমধ্যে যারা আহ্বান ব্যতিরেকেই আবেদন করেছেন, তাদেরও নতুনভাবে আবেদন দাখিল করতে হবে।
গতবারের চেয়ে অর্ধেক ইলিশ রপ্তানির অনুমতি
গত বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে শেষ পর্যন্ত ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল। এবার এর অর্ধেক ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলো। গতবার সব মিলিয়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে।
অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি ইলিশ রপ্তানি না করা, অনুমতি কোনোভাবেই হস্তান্তর না করা এবং অনুমোদিত রপ্তানিকারক ছাড়া ঠিকায় (সাব-কন্ট্রাক্ট) রপ্তানি না করার শর্তও থাকছে। বলা হয়েছে, সরকার যেকোনো সময় রপ্তানি বন্ধ করতে পারবে।
দুদকের মামলার আসামি ও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে চিকিৎসা খরচ গ্রহণের কারণে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক খান মো. মীজানুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়।
এর আগে গত রোববার তাকে বদলি করে দুদকের এনআইএস এবং উন্নয়ন সহযোগী ও সমন্বয় (দেশীয়) বিভাগের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, পরিচালক খান মো. মীজানুল ইসলাম কমিশনের অনুসন্ধান-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক মাহাবুবুল আনামের কাছ থেকে চিকিৎসা খরচ বাবদ অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন।
গোপন অনুসন্ধানে দুদক জানতে পারে, গত ১৭ আগস্ট মীজানুল ইসলাম এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ২০ আগস্ট ছাড়পত্র নেন। কিন্তু চিকিৎসা বাবদ বকেয়া দুই লাখ চার হাজার একশত বত্রিশ টাকা তিনি নিজে পরিশোধ না করে অনুসন্ধান-সংশ্লিষ্ট মাহাবুবুল আনামের প্রদত্ত গ্যারান্টির ভিত্তিতে ছাড়পত্র নেন।
অভিযোগের গুরুত্ব ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিবেচনায় বিষয়টি গত ৪ সেপ্টেম্বর দুদকের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি দমন কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হয়। সেখানে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দুদক জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮ অনুসারে মীজানুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ আদেশ জারির তারিখ থেকেই কার্যকর হবে এবং বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি নিয়ম অনুযায়ী খোরাকি ভাতা পাবেন।
গত ২৭ জানুয়ারি তিন বিমানবন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করে দুদক। এর দুটি মামলার আসামির তালিকায় ছিলেন এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক মাহাবুবুল আনাম।
রাজধানীর বাড্ডায় চালককে খুন করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। ছিনতাই করা অটোরিকশাটি প্রকৃত মালিকের গ্যারেজেই বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েন তারা।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে বাড্ডা কাঠালদিয়া, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটের বিপরীত পাশ থেকে রিকশাচালক মাসুদ ওরফে কাজলের (৪২) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের শ্যালক মো. সেলিম জানান, কাজলের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলায়। তিনি ভাটারার ফাসেরটেক এলাকায় বসবাস করতেন; তার স্ত্রী ও তিন সন্তান গ্রামে থাকেন। ঢাকায় ভাড়ায় অটোরিকশা চালাতেন কাজল।
তিনি আরও জানান, রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নতুনবাজার এলাকার গ্যারেজ থেকে রিকশা নিয়ে বের হয়েছিলেন কাজল, এরপর আর বাসায় ফেরেননি। রাতে দুই যুবক তার রিকশা নিয়ে একই গ্যারেজে বিক্রি করতে গেলে গ্যারেজ মালিক সেটি চিনে ফেলেন। এ সময় মালিকের প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি তারা, বরং রিকশাটিকে নিজেদের বলে দাবি করেন ছিনতাইকারীরা।
পরে গ্যারেজমালিক ও স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কাজলকে খুন করে বাড্ডার কাঠালদিয়ায় মরদেহ ফেলে রেখে এসেছেন ওই দুই যুবক। পরবর্তীতে সোমবার বেলা ১২টার দিকে সেখান থেকে কাজলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, চালককে হত্যার পর রিকশা বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন দুই ঘাতক। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
বাতাসের মান মানুষের সার্বিক জীবনযাত্রার ওপরে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ধরনেরই প্রভাব ফেলে। কোনো শহরের বাতাসের দূষণের মাত্রা বেশি থাকলে সেখানকার মানুষের বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এ কারণে বাতাস এত গুরুত্বপূর্ণ।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার প্রতিদিন বিশ্বের বিভিন্ন শহরের বাতাসের মানসহ তালিকা প্রকাশ করে। আজ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই তালিকায় ১২৭টি দেশ থাকলেও কোনো শহরের বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ ছিল না। তবে ১০টি দেশের বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে ছিল। এর মধ্যে এই সময়ে তালিকার শীর্ষে ছিল ফিলিপাইনের মানামা। শহরটির একিউআই স্কোর ছিল ১৪৫।
এদিকে, আজ ফের পাকিস্তানের লাহোরের বাতাসের মানে অবনতি দেখা গেছে। শহরটির একিউআই স্কোর ১৩২। এই স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে লাহোর। ১৩১ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে উগান্ডার কাম্পালা।
অন্যদিকে, ঢাকার বাতাস আজও ‘মাঝারি’ পর্যায়েই রয়েছে। টানা কয়েকদিন ধরেই এই পর্যায়ে রয়েছে শহরটির বাতাস। একিউআই স্কোর ছিল ৮২। স্বাস্থ্যকর না হলেও এই মানের বাতাসকে অস্বাস্থ্যকরও বলা চলেনা।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা করছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ, প্রার্থী ও ভোটাররা।
এবারের নির্বাচনে মোট ৮টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৮১০টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। একজন ভোটার গড়পড়তা ১০ মিনিট সময় ব্যয় করে ভোটদান শেষ করতে পারবেন।
সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। তবে বিকেল ৪টার মধ্যে বুথে উপস্থিত সকল ভোটারদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে, এমনকি লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদেরও ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকবে বলে প্রশাসন জানায়। নির্বাচনের দিন ক্যাম্পাসে সকল শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত বাসের ব্যবস্থা থাকবে। ভোটারদের সময়মতো উপস্থিতি নিশ্চিতে সব বাস সার্ভিসের সময়সূচি অনুযায়ী চলবে।
এবারের ডাকসু নির্বাচনে ২৮টি পদের বিপরীতে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নারী প্রার্থী আছেন ৬২ জন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, বামজোট, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের মতো রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে নিজেদের প্যানেল দিয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যাও কয়েক শতাধিক।
প্রায় ৪০ হাজার ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন, তা ধরেই প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী, আজ ডাকসুর ২৮টি ও হল সংসদ নির্বাচনের ১৩টি মিলিয়ে মোট ৪১টি ভোট দেবেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
অন্যবারের তুলনায় এবার ডাকসুতে ব্যালটের আকার বেড়েছে। এবার ডাকসুতে থাকছে পাঁচ পৃষ্ঠার ব্যালট। আর হল সংসদের থাকছে এক পৃষ্ঠার ব্যালট। এ ভোট দিতে হবে অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) শিটে।
এরই মধ্যে ভোট দেওয়ার নিয়মকানুন ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস। এই ভিডিও চিত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে।
পাশাপাশি ভোট প্রদানে ছাত্র–ছাত্রীকে উৎসাহিত করতে তিনটি অনুষদ ও একটি ইনস্টিটিউটে সভা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসব সভায়ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নতুন ভোটারদের ভোটদানের পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো হয়েছে।
ভোটার তার সুবিধাজনক সময়ে নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রে যাবেন। ভোটকেন্দ্রে থাকা পোলিং কর্মকর্তাকে ভোটার তার পরিচয় নিশ্চিত করবেন।
ভোটার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হলে তার লাইব্রেরি কার্ড অথবা পে-ইন স্লিপ দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করবেন। অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা হল আইডি কার্ড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি কার্ড দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করবেন।
পরিচয় নিশ্চিতের পর ভোটারের আঙুলে অমোচনীয় কালির দাগ দেবেন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা।
ভোটার তালিকায় নিজের নামের পাশে স্বাক্ষর করবেন ভোটার। এরপর পোলিং কর্মকর্তাকে ভোটার নম্বর জানাতে হবে।
নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ভোটারদের ব্যাগ, মোবাইল ফোন, স্মার্ট ওয়াচ, যেকোনো ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, পানির বোতল ও তরল জাতীয় কোনো পদার্থ নিয়ে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে থাকছে নিষেধাজ্ঞা।
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে গতকাল সোমবার রাত ৮টা থেকে টানা ৩৪ ঘণ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রবেশপথ সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ করা হয়েছে, যা কাল বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বলবত থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ থেকে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথ (শাহবাগ, পলাশী, দোয়েল চত্বর, শিববাড়ী ক্রসিং, ফুলার রোড, উদয়ন স্কুল ও নীলক্ষেত) সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ আইডি কার্ডধারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রবেশ করতে পারবেন। এছাড়া, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যরা নিজ নিজ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিচয়পত্রের ফটোকপি দেখিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন (অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক, রোগী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সাংবাদিক ও ফায়ার সার্ভিসের যানবাহন) ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না।
ডাকসু নির্বাচনে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরাও ভোট দেবেন। তারা ভোট দেবেন ব্রেইল পদ্ধতিতে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভোট ব্যবস্থা করা হয়েছে উল্লেখ করে রিটার্নিং কর্মকর্তা সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থীর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা রয়েছে এবং যারা ব্রেইল পড়তে পারেন, তাদের জন্য প্রথমবারের মতো আমরা ব্রেইল পদ্ধতিতে ব্যালট পেপার ছাপিয়েছি।’
আপত্তি নিষ্পত্তি ও সংশোধনের পর এবারের নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ২০ হাজার ৮৭৩ জন ছাত্র এবং ১৮ হাজার ৯০২ জন ছাত্রী ভোটার রয়েছেন।
ছাত্র ভোটারদের মধ্যে অমর একুশে হলে ১২৯৫ জন, কবি জসীমউদ্দিন হলে ১৩০৩ জন, জগন্নাথ হলে ২২২২ জন, শেখ মুজিবুর রহমান হলে ১৬০৬ জন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলে ১৯৯৮ জন, ফজলুল হক মুসলিম হলে ১৭৬২ জন, বিজয় একাত্তর হলে ২০২৭ জন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ১৭৫১ জন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ১৯৫৭ জন, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ৬৬৪ জন, মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ১৪৯৯ জন, স্যার এ এফ রহমান হলে ১৩৭৭ জন এবং হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ১৪০২ জন রয়েছেন।
এছাড়া, ছাত্রী ভোটারদের মধ্যে রোকেয়া হলে ৫৬৪১ জন, শামসুন নাহার হলে ৪০৮৪ জন, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ২১০৩ জন, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৪৪৩৪ জন এবং ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ২৬৪০ জন আছেন।
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে গতকাল সোমবার বিকেল থেকে বন্ধ রয়েছে ঢাবি মেট্রো স্টেশন। গতকাল বিকেল ৪টা থেকে ও আজ পুরো দিন স্টেশন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ডিএমটিসিএলের এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনসংলগ্ন যাতায়াতের জন্য বিকল্প পন্থা অবলম্বন করার আহ্বান জানানো হয়।
সারাদেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে: উপাচার্য
বহুল প্রতীক্ষিত ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে আসতে বলেছেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, সারাদেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা শুভ কামনা জানাচ্ছেন। এখন একটি ভালো নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের উত্তরণের প্রক্রিয়াকে, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে যে কাজ করছে, তাতে তোমরা তোমাদের ভূমিকা পালন করবে, সেটাই প্রত্যাশা করছি।
গতকাল বিকাল পৌনে ৪টার দিকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ে অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ ভিডিও বার্তা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন তোমরা চেয়েছো; গভীরভাবে প্রত্যাশা করেছো; গণঅভ্যুত্থানের মৌলিক মূল্যবোধগুলোর সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণও। গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য সমন্বিত একটি প্রাতিষ্ঠানিক একটি ভয়েস তৈরি করা। এসব গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধকে আমরা তুলে ধরবার জন্য তোমাদের আগ্রহে এবং ব্যাপক চাহিদার ভিত্তিতে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করেছি। তোমাদের অনুষ্ঠান নির্ভয়ে তোমরা ভোট দিতে আসবা, আমরা তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছি।’
এবারের ডাকসু নির্বাচনকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘এবারের নির্বাচনটি বিভিন্ন কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ নির্বাচন ঐতিহাসিক। এবার অনেক কিছু আমরা করেছি, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে আগে ঘটেনি। আমাদের ৮১০টি বুথ থাকবে। প্রায় ৪০ হাজার ভোটার। প্রথমবারের মতো আমরা হল থেকে বেরিয়ে এসে কেন্দ্রীয়ভাবে ৮টি কেন্দ্রে এ নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছি। সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য সব রকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা, তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা; প্রশিক্ষিত ও নিবেদিতপ্রাণ পোলিং কর্মকর্তা।’
জয়-পরাজয় মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে উল্লেখ করে প্রার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, ‘সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে এ পর্যায়ে এসেছি পরস্পর পরস্পরের হাত ধরে। এখন বাকি পথটুকু আমরা খুব স্বচ্ছন্দে পার হতে পারব বলে বিশ্বাস করি। যেহেতু নির্বাচন প্রক্রিয়া; কিছু প্রার্থী জিতবেন, কিছু প্রার্থী জিতবেন না। জয়-পরাজয় থাকবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, বিজয়ী এবং বিজিত; উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। গণতান্ত্রিক একটি প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয়করণ বা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে আপনি আপনার ভূমিকা পালন করলেন। বহু বছর আমরা ঐতিহাসিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। সেই প্রক্রিয়ায় বিজয়ী এবং বিজিতকে ভূমিকা রাখছেন এবং রাখতে হবে। এটিই বিরাট সার্থকতা।’
হস্তক্ষেপের প্রশ্নই আসে না: সেনাবাহিনী
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। গতকাল সোমবার বাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এমনটা জানানো হয়েছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরও (আইএসপিআর) তাদের পেজে পোস্টটি শেয়ার করেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের প্রশ্নই আসে না। এর আগেও সেনাবাহিনী কর্তৃক আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে।’
একটি স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুজব ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এ ধরনের বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার স্বাভাবিক স্থিতিশীলতা বিনষ্টের অপচেষ্টা মাত্র, যা সার্বিক নির্বাচনী পরিবেশকে ব্যাহত করতে পারে।’
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আশা করে- দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিতব্য কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন যেন সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করে।’
নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট জোরদার থাকবে : ডিএমপি কমিশনার
ডাকসু নির্বাচনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট জোরদার থাকবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। সোমবার বিকেলে টিএসসিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে তিনি এ কথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার জানান, গতকাল রাত ৮টা থেকে ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে লাইসেন্সধারী অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। এখন ১৭৭১ জন পুলিশ নিরাপত্তায় কাজ করছে, মঙ্গলবার ২০৯৬ জন থাকবে, এর বাইরে র্যাব ও বিজিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও থাকবে।
তিনি বলেন, কোনো কারণে আইন হাতে তুলে নেয়া যাবে না। অবাঞ্ছিত লোকদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করতে হবে। নিরাপত্তায় ৮টি চেকপোস্ট, মোবাইল পেট্রোল, বিশেষায়িত টিম, সোয়াদ টিম, ডিবি সাদা পোশাকে থাকবে এবং সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং করা হবে।
যারা সাইবার অ্যাটাক করছে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন হয়েছে ৩৭ বার। এবারের নির্বাচন হচ্ছে ৩৮তম বারের মতো। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচন হয়। তবে সে নির্বাচনও হয় উচ্চ আদালতের রায়ের পর। ওই নির্বাচনে ভিপি (সহসভাপতি) হন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নুরুল হক নুর এবং জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) গোলাম রাব্বানী নির্বাচিত হন।
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ডাকসু নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ভিপি নির্বাচিত হন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং জিএস পদে নির্বাচিত হন মাহবুবুর জামান। স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ১৯ বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও হয় মাত্র ৭ বার। এরপর ১৯৯১ সালের পর থেকে ডাকসু নির্বাচন যেন অতীত হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন, বিক্ষোভ, ধর্মঘট করে ডাকসু নির্বাচনের দাবি জানানো হয়। এরপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ায় ২০১৯ সালে হাইকোর্টের একটি রায়ে ডাকসু নির্বাচনের পথ খোলে।
তরুণদের কর্মসংস্থান, আত্মমর্যাদা এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি অর্জনে কারিগরি প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নাই। তিনি বলেন, ইউসেপ বাংলাদেশের এই উদ্যোগ সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের জন্য একটি মাইলফলক। দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তরুণদের শুধু কর্মসংস্থান নয় বরং মর্যাদা, অন্তর্ভুক্তি এবং জাতীয় অগ্রগতিতে সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি আজ ঢাকায় মিরপুরে অবস্থিত ইউসেপ কমপ্লেক্সে ইউসেপ বাংলাদেশ জেন্ডার ডাইভার্স কমিউনিটি এবং জুলাই ২০২৪ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী যুবাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে একটি বিস্তৃত দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ইউসেপ বাংলাদেশের চেয়ারপার্সন ড. ওবায়দুর রবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ সাইদুর রহমান খান, ইউসেপ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড.মো. আবদুল করিম। অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, সিভিল সোসাইটি প্রতিনিধি, ইউসেপ কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রশিক্ষণার্থী এবং সাংবাদিকগণ অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, আমরা সাম্যের স্বপ্ন দেখি, গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখি। ৭১, ৯১, ২৪ এর আন্দোলনে বারবার যেখানে মানুষ স্বপ্নের কথা বলেছে কিন্তু স্বপ্ন আমরা পূরণ করতে পারিনি, আমরা গণতন্ত্র পাইনি। ২৪ এর আন্দোলন এই দেশের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। এখন সময় এসেছে নব-নির্মাণের। ৭১এর পরে আমরা যা পারিনি , ২৪ এর পরে তাই তাইই করতে হবে। ২৪ এর স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে চাই। এজন্য আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, একটি দেশকে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হলে সেই দেশের মানুষকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে আগে। সর্বোচ্চ উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায় সে দেশের জনগোষ্ঠী এবং রাষ্ট্র মিলেই উন্নতির শিখরে পৌছাতে পেরেছে। আমাদের দেশের উন্নয়নে সকল জনগোষ্ঠী এবং রাষ্ট্র যদি একসাথে মিলেমিশে এগুতে পারি তাহলে আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রান্তিক দুর্বল জনগোষ্ঠীর স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে। নারী নির্যাতন রোধেও আমার মন্ত্রণালয় কাজ করছে। বাস স্টপেজে, গণপরিবহণে নারী নির্যাতন রোধে তৃতীয় লিঙ্গের জেন্ডাররা যদি ড্রাইভিং শিখে বিশেষায়িত বাস ড্রাইভিং করতে পারে তাহলে গণপরিবহনে নারীদের উপর নির্যাতনের মাত্রা অনেকাংশে কমে আসবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উপদেষ্টা বলেন, হিংসাত্মক মনোভাব নয়, ভালোবাসার দিক দিয়ে যদি এদেশ ও মানুষকে দেখি তাহলে দেশের উন্নয়ন অবশ্যম্ভাবী।
উপদেষ্টা ইউসেপ কমপ্লেক্সে পরিচালিত কেয়ারগিভিং, জাপানি ভাষা এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স পরিদর্শন করেন এবং ইউসেপ বাংলাদেশের উইমেন্স কর্নারের উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি বলেন,এ কর্মসূচি শুধু প্রশিক্ষণেই সীমাবদ্ধ নয় বরং অংশগ্রহণকারীদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থানের পথ উন্মুক্ত করবে।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলম বলেছেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন। এ ধরনের উদ্যোগ সাংবাদিকদের পেশাগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। সোমবার (৮ই সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে গ্রুপ বিমা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স পিএলসির সঙ্গে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রায় দুই হাজার সদস্যের মধ্যে বিমা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে শুধু সরকারি উদ্যোগই যথেষ্ট নয়, বেসরকারি খাতকেও এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বিমা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও সাংবাদিকদের কল্যাণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে প্রতি তিন মাস পরপর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাংবাদিককে কল্যাণ অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। গত অর্থবছরে সাংবাদিকদের মেধাবী সন্তানদের বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। উপদেষ্টা জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মপরিধি বাড়ানো হয়েছে।
মাহফুজ আলম বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষা-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়া লেজিসলেটিভ বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নেও সরকার কাজ করছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এই গণঅভ্যুত্থানে যাঁরা ত্যাগস্বীকার করেছেন, তাঁদের লড়াইয়ের গল্প জনগণের নিকট তুলে ধরতে হবে। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের অবদান গণমাধ্যমে প্রচার করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাঈদ আহমেদ, ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজিম উদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।