এবারের ঈদযাত্রায় (ঈদুল আজহা) দেশের সড়ক মহাসড়কে ২৭৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯৯ জন নিহত এবং ৫৪৪ জন আহত হয়েছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শনিবার সকালে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এবারের ঈদে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও পরিবহন ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ মানুষের কম যাতায়াত হয়েছে। বর্তমান সরকারের বিগত ১৪ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় অনেক ভালো ছিল। ঈদের ছুটি একদিন বাড়ানোর সুফল মিলেছে। দেশে ঈদযাত্রায় মোট যাতায়াতের প্রায় ৮ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর নজরদারীর কারণে এবারের ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। কিছু কিছু সড়কের অবস্থা ভালো হওয়ায় সেসকল রুটে ভোগান্তি কমার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা ১৫ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং প্রাণহানি ৩৩ দশমিক ১১ শতাংশ কমেছে। তবে পরিকল্পনার গলদে উত্তরাঞ্চলের পথে যানজটের ভোগান্তির পাশাপাশি কিছু কিছু রুটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য হলেও কর্তৃপক্ষ বরাবরের মতো দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ঈদযাত্রা শুরুর দিন ২২ জুন থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা জুলাই পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ২৭৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯৯ জন নিহত এবং ৫৪৪ জন আহত হয়েছেন। ২০২২ সালের ঈদুল আজহায় যাতায়াতের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ১৫ দশমিক ১৬ শতাংশ, প্রাণহানি ৩৩ দশমিক ১১ শতাংশ এবং আহত ৪২ দশমিক ২৭ শতাংশ কমেছে। উল্লেখিত সময়ে রেলপথে ২৫টি ঘটনায় ২৫ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১০টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, আহত ১৫ জন এবং ৬ জন নিখোঁজ হয়েছেন।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে দুর্ঘটনার শীর্ষে মোটরসাইকেলের অবস্থান থাকলেও এবারের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পশুবাহী যানবাহনের ব্যাপক চলাচল ও ঈদযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যানের অবাধ চলাচলের কারণে এসব যানই এবারের ঈদে দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে। এবারের ঈদে ৮৮টি ট্রাক-পিকআপ-কভার্ডভ্যান দুর্ঘটনায় ৯৩ জন নিহত ও ১৯৩ জন আহত হয়েছেন। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩১ দশমিক ৭৬ শতাংশ, নিহতের ৩১ দশমিক ১০ শতাংশ এবং আহতের ৩৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ প্রায়। এরসঙ্গে পাল্লা দিয়ে ৯১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৯৪ জন নিহত ও ৭৭ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩২ দশমিক ৮৫ শতাংশ, মোট নিহতের ৩১ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং মোট আহতের ১৪ দশমিক ১৫ শতাংশ।
দুর্ঘটনাগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৩ দশমিক ০৫ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-লরি, ১৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল, ১৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ বাস, ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ কার-মাইক্রো-জিপ, ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা-মাহিন্দ্রা ও ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা এসব দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল।
এগুলোর মধ্যে ২৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৫৪ দশমিক ৫১ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা দেয়ার ঘটনা, ১০ দশমিক ১০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনা, ০ দশমিক ৭২ শতাংশ ট্রেনের সাথে যানবাহনের সংঘর্ষের ঘটনা এবং ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে ঘটেছে।
ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এসব দুর্ঘটনার ৩৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৯ দশমিক ২৪ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে এবং ২৯ দশমিক ৬০ শতাংশ ফিডার রোডে ঘটেছে। সারাদেশে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ১ দশমিক ৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে ঘটেছে।
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে আরো এক হাজার ১৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৬৬৯ জন। অন্যান্য ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৪৬৮ জন।
আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৬৬৯ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪৬৮ জন। মোট গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক হাজার ১৩৭ জনকে।
অভিযান কার্যক্রমে ১টি পিস্তল, ১টি দেশীয় তৈরি এলজি, ১টি গুলি, ১টি গুলির খোসা, ৫ রাউন্ড কার্তুজ, ৫ রাউন্ড সিসা বুলেট ও ১টি বার্মিজ চাকু জব্দ করা হয়।
বিশেষ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের রাখাইনের জন্য মানবিক করিডোর দেওয়ার বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, করিডোর দেওয়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসতে হবে নির্বাচিত সংসদ থেকে। কারণ, এ ধরনের সিদ্ধান্ত স্পর্শকাতর।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার নয়াপল্টনে মহান মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। এই সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।
তারেক রহমান বলেন, বিদেশি স্বার্থ নয়, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভারত, পাকিস্তান কিংবা মিয়ানমার নয়, সবার আগে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ১৮ কোটি মানুষের দেশে প্রায় আট কোটি মানুষই শ্রমজীবী। এসব শ্রমজীবীরাই এ দেশের প্রাণ। উন্নয়ন ও অর্থনীতির প্রাণ তারাই। মেহনতি মানুষকে বঞ্চিত রেখে মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণ সম্ভব নয়। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটলেও আজ পর্যন্ত জনগণের রাজনৈতিক অধিকার পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় শ্রমজীবী মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে না।
‘বিএনপি একাধিকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। কিন্তু কোনো নেতাকর্মীকে বিদেশে পালিয়ে যেতে হয়নি। কারণ, আমরা জনগণের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য’- বললেন তারেক রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, শিল্প-কারখানা থেকে শুরু করে সর্বত্র শ্রমিকরা এখনো নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি দেখা গেলেও সাধারণ মানুষের আয় বাড়ছে না।
সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে তারেক বলেন, দেশে সংস্কার নিয়ে শোরগোল চলছে। কিন্তু সেই কর্মযজ্ঞে শ্রমজীবী মানুষের কণ্ঠস্বর কোথায়? রাষ্ট্র ও সরকারের কাছে জনগণের কথা পৌঁছাতে নির্বাচিত সংসদ ও সরকার প্রয়োজন। কারণ, প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিতরা জনগণের কথা শুনতে বাধ্য।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের গুণগত পরিবর্তনের জন্য যেমন প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার, তেমনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অপরিহার্য।’
অভিযোগ করে তারেক রহমান বলেন, ‘সরকারের একটা অংশ সংস্কার ও নির্বাচন মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায়। এটা সঠিক পথ নয়। প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।’
এর আগে বেলা ২টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমাবেশ শুরু হয়।
সমাবেশ ঘিরে বেলা ১২টা থেকে রাজধানী এবং এর আশপাশের জেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শ্রমিক নেতারা নয়াপল্টনের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। এতে নয়াপল্টন এলাকায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
নেতাকর্মী-সমর্থকদের জমায়েত ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। হাজারো শ্রমিকের উপস্থিতি সমাবেশটি রূপ নিয়েছে জনসমুদ্রে।
সমাবেশ ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। রঙিন টুপি, টি-শার্ট, ব্যানার ও ঢোল নিয়ে উপস্থিত হন শ্রমিক নেতারা। তাদের কন্ঠে স্লোগান ওঠে-‘দুনিয়া মজদুর এক হও, লড়াই করো’। শ্রমিকদের এ সার্বজনীন স্লোগানের পাশাপাশি ‘অবিলম্বে সংসদ নির্বাচন চাই, নির্বাচন দিতে হবে, দিতে হবে’ এ স্লোগানও উচ্চারিত হয়।
সমাবেশস্থলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা। শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইনের সভাপতিত্বে সমাবেশে শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমূল বিশ্বাস, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, মজিবুর রহমান সারওয়ার, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন মহান মে দিবস পালিত হয়েছে।
শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক, নীতি, আদর্শ বজায় রেখে বাংলাদেশের কলকারখানায় উৎপাদন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করে রাজধানীতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়বো এ দেশ নতুন করে’।
মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ৫ জন শ্রমিকের পরিবারের হাতে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সুলতান উদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাংবোর একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়।
এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তর বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।
মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনের সড়কে অস্থায়ী মঞ্চে এই সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন সভাপতিত্ব করেন।
এদিকে মহান মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর পল্টন মোড়ে শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
ফেডারেশনের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আ ন ম শামসুল ইসলাম সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
মহান মে দিবস উপলক্ষে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পূর্বের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় এক শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি মুহাম্মদ রমজান আলী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।
মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় পত্রিকাসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা ও টকশো সম্প্রচার করেছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর/সংস্থার মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়সমূহ জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কদ্বীপ ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে।
এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন দিবসটি পালন করছে শোভাযাত্রা, শ্রমিক সমাবেশ, আলোচনা সভা, সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ট্রেড ইউনিয়ন ও শ্রমিক ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন পৃথক কর্মসূচি পালন করে।
গত এপ্রিল মাসে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ২৯৬টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার।
বাংলাদেশে চলমান গুজব এবং ভুয়া খবর, অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ায় দায়িত্বে নিয়োজিত রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে রিউমার স্ক্যানার।
রিউমার স্ক্যানারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক থেকে গণনাকৃত এই সংখ্যার মধ্যে জাতীয় বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ১০১টি ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ মিলেছে, যা মোট ভুল তথ্যের ৩৪ শতাংশ। এছাড়া রাজনৈতিক বিষয়ে ৯৫টি, আন্তর্জাতিক বিষয়ে ৩৮টি, ধর্মীয় বিষয়ে ২৭টি, বিনোদন ও সাহিত্য বিষয়ে আটটি, শিক্ষা বিষয়ে সাতটি, প্রতারণা বিষয়ে ১০টি, খেলাধুলা বিষয়ে ৯টি ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে। মার্চ মাসে ২৯৮টি ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছিল।
গত বছর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম এবং ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারের হার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে রিউমার স্ক্যানার।
রিউমার স্ক্যানারের ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান টিমের অনুসন্ধানে প্রাপ্ত এসব ঘটনায় তথ্য কেন্দ্রিক ভুলই ছিল সবচেয়ে বেশি ১৩৮টি। এছাড়া ভিডিও কেন্দ্রিক ভুল ছিল ১০৫টি এবং ছবি কেন্দ্রিক ভুল ছিল ৫৩টি। শনাক্ত হওয়া ভুল তথ্যগুলোর মধ্যে মিথ্যা হিসেবে ১৮০টি, বিভ্রান্তিকর হিসেবে ৬৬টি এবং বিকৃত হিসেবে ৪৮টি ঘটনাকে সাব্যস্ত করা হয়েছে। এছাড়া, সার্কাজম বা কৌতুক হিসেবে হাস্যরসাত্মক ঘটনাকে বাস্তব দাবির প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক করা হয়েছে দুইটি।
রিউমার স্ক্যানার জানায়, প্লাটফর্ম হিসেবে গত মাসে ফেসবুক পেইজে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। সংখ্যার হিসেবে যা ২৭৬টি। এছাড়া ইউটিউবে ৫৪টি, ইনস্টাগ্রামে ৪৮টি, এক্সে ৪৪টি, টিকটকে ২৪টি, থ্রেডসে ১৩টি ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। ভুল তথ্য প্রচারের তালিকা থেকে বাদ যায়নি দেশের গণমাধ্যমও। ১৪টি ঘটনায় দেশের একাধিক গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার হতে দেখেছে রিউমার স্ক্যানার।
রিউমার স্ক্যানার টিমের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এপ্রিল মাসে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে জড়িয়ে ১২টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। ভুল তথ্যগুলোর ধরণ বুঝতে এগুলোকে রিউমার স্ক্যানার দুইটি আলাদা ভাগে ভাগ করেছে। সরকারের পক্ষে যায় এমন ভুল তথ্যের প্রচারকে ইতিবাচক এবং বিপক্ষে যায় এমন অপতথ্যের প্রচারকে নেতিবাচক হিসেবে ধরে নিয়ে রিউমার স্ক্যানার দেখতে পেয়েছে যে, এসব অপতথ্যের প্রায় ৮৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই সরকারকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
রিউমার স্ক্যানার জানায়, এপ্রিলে ২৯টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়েও, যা চলতি বছরের মাসগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে প্রায় ৮৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই তাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
রকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে ড. আসিফ নজরুলকে জড়িয়ে তিনটি, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে জড়িয়ে দুইটি, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে জড়িয়ে দুইটি, আ ফ ম খালিদ হোসেনকে জড়িয়ে একটি, শেখ বশিরউদ্দীনকে জড়িয়ে একটি এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে জড়িয়ে একটি ভুল তথ্য প্রচার শনাক্ত করেছে রিউমার স্ক্যানার।
রিউমার স্ক্যানার আরও জানায়, এপ্রিলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপিকে জড়িয়ে সবচেয়ে বেশি ১৩টি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে। এসব অপতথ্যের সবগুলোই দলটির প্রতি নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করার সুযোগ রেখেছে। এই সময়ে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে একটি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে দুইটি এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে নয়টি অপতথ্যের প্রচার করা হয়েছে। দলটির ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে জড়িয়ে এই সময়ে দুইটি এবং যুবদলকে জড়িয়ে একটি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে।
রিউমার স্ক্যানার জানায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে জড়িয়ে ছয়টি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে। এসব অপতথ্যের সবগুলোই দলটির প্রতি নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করার সুযোগ রয়েছে। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমানকে জড়িয়ে এই সময়ে দুইটি অপতথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। দলটির ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে এই সময়ে ছয়টি অপতথ্য প্রচার শনাক্ত করেছে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান টিম।
জাতীয় নাগরিক পার্টিকে জড়িয়ে গত মাসে তিনটি অপতথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। এই দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে জড়িয়ে গত মাসে দুইটি অপতথ্যের প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া দলটির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহকে জড়িয়ে তিনটি, সারজিস আলমকে জড়িয়ে দুইটি, নুসরাত তাবাসসুমকে জড়িয়ে একটি অপতথ্য প্রচার শনাক্ত করেছে রিউমার স্ক্যানার।
ভুল তথ্যের রোষানল থেকে রক্ষা পায়নি রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোও। এপ্রিলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে জড়িয়ে ছয়টিসহ এই বাহিনীকে জড়িয়ে ১৬টি ভুল তথ্য প্রচার শনাক্ত করেছে রিউমার স্ক্যানার। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের বিষয়ে ছড়ানো ৯টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমার স্ক্যানার।
ভুল তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে রিউমার স্ক্যানার দেখেছে যে, এই সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ভুয়া কনটেন্ট শনাক্ত হয়েছে ১৯টি। একই সময়ে ডিপফেক ভিডিও শনাক্ত করা হয়েছে তিনটি।
ফিলিস্তিনের গাজায় 'চলমান গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে' বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি দেয়া হয়। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রিউমার স্ক্যানার এপ্রিলে এ সংক্রান্ত অন্তত ৩৮টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে। গেল মাসে কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১১টি ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, ঢাকায় ২৬ এপ্রিল সুন্নি মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পাঁচটি ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে।
গত মাসে গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ও ভুয়া ফটোকার্ড ব্যবহার করে ৫৮টি ঘটনায় দেশি ও বিদেশি ২৫টি সংবাদমাধ্যমকে জড়িয়ে ৬২টি ভুল তথ্য প্রচার শনাক্ত করেছে রিউমার স্ক্যানার।
দেশের বিভিন্ন জেলায় অস্থায়ীভাবে প্রতি ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার কিংবা তার চেয়ে বেশি বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রপাতসহ বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
আজ বৃগস্পতিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক সতর্কবার্তায় এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বেলা পৌনে ১২টা থেকে পরবর্তী ২-৬ ঘণ্টার ঢাকা, শেরপুর, নরসিংদী, বি বাড়ীয়া, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, , সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার ওপর দিয়ে অস্থায়ীভাবে প্রতি ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বা এর অধিক গতিবেগে দমকা আজো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি ও বজ্রপাত হতে পারে।
এ সময়ে বজ্রপাত থেকে রক্ষায় বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে বলা হয়েছে, বজ্রপাত হলে ঘরের মধ্যে থাকতে হবে। জানালা ও দরজা বন্ধ রাখতে হবে। সম্ভব হলে যাত্রা এড়িয়ে চলতে হবে। বজ্রপাত হলে নিরাপদ আশ্রয়ে আশ্রয় নিতে হবে।
তবে গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়া যাবে না বলে সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, কংক্রিটের মেঝেতে শোয়া যাবে না এবং কংক্রিটের দেয়ালে হেলান দেওয়াও যাবে না। পাশাপাশি বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের প্লাগ খুলে রাখতে হবে।
কেউ জলাশয়ে থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে উঠে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বিদ্যুৎ পরিবাহক বস্তু থেকে দূরে থাকুন। শিলা বৃষ্টির সময় ঘরে অবস্থান করুন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শ্রমিকদের আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। এজন্য তিনি শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের প্রথম কাজ হলো শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আশু করণীয় নিয়ে যাত্রা শুরু করা। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রতিটি সুপারিশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘শ্রমিক মালিক এক হয়ে গড়বো এ দেশ নতুন করে’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে এবারের মে দিবস উদযাপিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ৫ জন শ্রমিকের পরিবারের হাতে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সুলতান উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাংবোর একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়।
ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম কমিয়েছে সরকার। সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা কমিয়ে আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নতুন এ দাম বুধবার দিনগত মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, ডিজেলের বিক্রয়মূল্য প্রতি লিটার ১০৫ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১০৪ টাকা, কেরোসিন ১০৫ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১০৪ টাকা এবং অকটেন ১২৬ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১২৫ টাকা, পেট্রোল ১২২ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১২১ টাকায় পুনঃনির্ধারণ/সমন্বয় করা হয়েছে। যা ১ মে ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমা-বাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে দেশে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
এ জন্য ‘জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ নির্দেশিকা’র আলোকে মে মাসের জন্য তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিতে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে বলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ গত ১ ফেব্রুয়ারি সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা বাড়িয়ে বর্তমান দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ মূল্য মার্চ ও এপ্রিল মাসেও বহাল ছিল।
‘মানবিক করিডর’ নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কক্সবাজার হয়ে জাতিসংঘের ‘মানবিক করিডর’-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, সরকার তথাকথিত মানবিক করিডর নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি।”
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হলো, জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে যদি মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়, তবে বাংলাদেশ লজিস্টিক সহায়তা দিতে আগ্রহী থাকবে।’
তিনি জানান, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্য অনুযায়ী রাখাইন রাজ্যে তীব্র মানবিক সংকট চলছে।
দুর্যোগকালীন সময়ে বিভিন্ন দেশকে সহায়তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যার সাম্প্রতিক উদাহরণ ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়ে মিয়ানমারকে সহায়তা প্রদান করা।
প্রেস সচিব সতর্ক করে বলেন, ‘এছাড়াও, আমরা উদ্বিগ্ন যে এ ধরনের মানবিক সংকট দীর্ঘ হলে রাখাইন থেকে আরও মানুষের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে, যা আমরা সামাল দিতে পারব না।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্বাস করে যে জাতিসংঘ-সমর্থিত মানবিক সহায়তা রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে এবং শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখাইনে সহায়তা পাঠানোর বাস্তবসম্মত একমাত্র পথ হলো বাংলাদেশ।
শফিকুল আলম বলেন, এই রুট ব্যবহার করে সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে লজিস্টিক সহায়তা প্রদানে সম্মত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তবে, রাখাইনে সহায়তা প্রদানের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যথাসময়ে আমরা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করব।’
বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিশ্বের বড় কোনো শক্তি এই করিডরের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে যে প্রতিবেদন করা হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও প্রপাগান্ডা বলে তিনি দাবি করেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘বিগত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে একের পর এক বিদ্বেষপূর্ণ বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে আমরা দেখেছি, যা এখনো চলছে। এ ধরণের প্রচারণাও তার ব্যতিক্রম নয়।’
আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করি যেখানে যুদ্ধের প্রস্তুতি না রাখাটা আত্মঘাতী। এ মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমান বাহিনীর বীর উত্তম এ কে খন্দকার ঘাঁটিতে ছিল বার্ষিক মহড়া। ‘আকাশ বিজয়’ নামে হয় এ বছরের বাৎসরিক মহড়া। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি যুদ্ধবিরোধী মানুষ। পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক এটা আমরা কামনা করি না। যুদ্ধ প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। কাজেই যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়েও একটা ঘোরতর আপত্তি। কিন্তু এমন বিশ্বে আমরা বাস করি, প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি আমাদের ঘিরে থাকে। তো সেখানে প্রস্তুতি না নিয়ে থাকা এটা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
‘কাজেই এই পরিস্থিতির মধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতি না নেয়াটা আত্মঘাতী। প্রস্তুতি নিতে হলে আধা-আধি প্রস্তুতির কোনো জায়গা নাই।’ বলেন তিনি।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে বিমান বাহিনী। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তৎপর থাকতে হবে। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে আত্মনির্ভরতার প্রমাণ দিয়েছে বিমান বাহিনী। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য সরকার সহযোগিতা করছে বাহিনীটিকে। পেশাগত কারিগরি সক্ষমতা বজায় রাখতে হবে।
দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যুগোপযোগী বিমান বাহিনী গড়ে তুলতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, সকালে প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেয়া এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লার বন্যাকবলিত পরিবারের মাঝে পুনর্বাসনকৃত ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।
লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে আনতে বিএনপির অনুরোধে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে ঢাকায় ফেরত আনতে বিএনপির পক্ষ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অনুরোধ নিয়ে কাজ করছে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে। জানা যায়, খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে দেশে ফেরাতে কাতারের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের আয়োজন করতে গত সপ্তাহে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে চিঠি লিখেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, তবে ‘আশঙ্কামুক্ত’ নয়। তথাপি তিনি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে দেশে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় চিকিৎসক বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে দেশে ফেরাতে পরামর্শ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিএনপির মহাসচিবের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার লন্ডন ও দোহার বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফেরাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বিএনপির চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে একটি দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। কভিড-১৯ মহামারির সময় বিগত সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দীনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর লন্ডন ক্লিনিক থেকে গত ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। অর্ধযুগের বেশি সময় পর এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করেছেন খালেদা জিয়া। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কারাবন্দি অবস্থায় চারটি ঈদ কেটেছে কারাগারে ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।
বর্তমানে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ দেশের চারটি জেলার বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ঘর বিতরণ করেছেন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পে নির্মিত মোট তিনশটি ঘর ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলায় বিতরণ করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকরা সুবিধাভোগীদের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন।
অধ্যাপক ইউনূস ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি চারটি জেলায় অনুষ্ঠিত ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
ফেনীতে ১১০টি, নোয়াখালীতে ৯০টি, কুমিল্লায় ৭০টি এবং চট্টগ্রামে ৩০টি ঘর সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে সুবিধাভোগীরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানান।
প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে, বরাদ্দকৃত টাকার অর্ধেক দিয়েই সুষ্ঠু ভাবে প্রকল্প শেষ করায় প্রকল্পের সাথে যুক্ত সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক এবং সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই বিশেষ গৃহায়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।
কক্সবাজার হয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ কিংবা অন্যকোনো সংস্থার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ইউএনবিকে জানান, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি সরকার।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হলো— যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে মানবিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে বাংলাদেশ সেক্ষেত্রে যৌক্তিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) তথ্যমতে, রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে চরম মানবিক সংকট বিদ্যমান।
শফিকুল আলম জানান, বাংলাদেশ সবসময়ই সংকটকালে অন্যান্য দেশকে সহায়তা করে এসেছে, সম্প্রতি মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পরও সেখানে মানবিক সহায়তা পাঠানো হয়েছে।
রাখাইন রাজ্যে মানবিক সংকট অব্যাহত থাকলে তা বাংলাদেশে নতুন করে বাস্তুচ্যুত মানুষের ঢল নামার কারণ হতে পারে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রেস সচিব।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জাতিসংঘের দেওয়া মানবিক ত্রাণ সহায়তা রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করবে এবং শরণার্থীদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে।’
শফিকুল আলম জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাখাইনে সহায়তা পৌঁছানোর একমাত্র কার্যকর রুট হচ্ছে বাংলাদেশ। এ পথে ত্রাণ পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে যৌক্তিক সহায়তা দিতে সম্মত।
তবে রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যথাসময়ে এ বিষয়ে দেশের সংশ্লিষ্ট স্বত্বভোগীদের (স্টকহোল্ডার) সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’
রাখাইন রাজ্যে যোগাযোগের জন্য মানবিক করিডর দেওয়ার বিষয়ে একটি বড় শক্তির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে যা বলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং কল্পিত অপপ্রচার বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে ধারাবাহিক মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে, এটি তারই অংশ। এ ধরনের অপপ্রচার আমরা আগেও দেখেছি, এখনো চলছে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার জন্য নাগরিক প্ল্যাটফর্ম (এসডিজি) এর আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা হবে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মূল বিষয়।
মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) অফিসে ‘বাংলাদেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা: বর্তমান পরিস্থিতি এবং সংস্কার চিন্তাভাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি বৈষম্যমূলক নীতির পরিবর্তন করা উচিত। এই ক্ষেত্রগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এর পাশাপাশি, আমাদের মানব সম্পদের বিকাশ করতে হবে।’
কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য সিটিজেনস প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজি’স এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং সম্ভাব্য নীতিগত পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়ে জাতীয় উদ্যোগসমূহকে ত্বরান্বিত করার জন্য এই মিডিয়া ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সিপিডি’র সম্মানিত ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সরকারকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি যথাযথ মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি এখন বিভিন্ন দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে। দুর্ভাগ্যবশত, নীতিনির্ধারকরা তাদের কথা যথাযথভাবে শুনছেন না এবং তাদের বিষয়গুলো পর্যাপ্ত মিডিয়া কভারেজ পাচ্ছে না।’
গত বছর সিপিডি নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সহযোগিতায় তৃণমূল পর্যায়ে একটি সামাজিক নিরীক্ষা পরিচালনা করে। এই উদ্যোগে অংশগ্রহণ করেন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, প্রশিক্ষণার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, সরকারি কর্মকর্তা এবং কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা।
গবেষণায় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদান পদ্ধতি, তাদের কার্যকারিতা, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে কারিগরি শিক্ষা সনদের গ্রহণযোগ্যতা এবং শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষণার্থীদের প্রতি নেতিবাচক সামাজিক মনোভাব সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
এই গবেষণার ভিত্তিতে পরবর্তীতে ২ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে ঢাকায় একটি জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।