রোববার, ২০ জুলাই ২০২৫
৪ শ্রাবণ ১৪৩২

বিদ্যুৎ-পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দাশেরকান্দি পয়ঃনিষ্কাশন প্ল্যান্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
আপডেটেড
১৩ জুলাই, ২০২৩ ১৬:৪৬
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ১৩ জুলাই, ২০২৩ ১৬:৪২

বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘অপ্রয়োজনে পানি এবং বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন না, দয়া করে এগুলো ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন। আপনিও এতে উপকৃত হবেন। কারণ এতে বিলও কম হবে।’

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার সকালে দাশেরকান্দি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (এসটিপি) নামে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ একক পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং একটি উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থায় পৌঁছানোর জন্য একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিআরডি) মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বিভাগীয় শহর, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করুন।’

অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংক এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) সহায়তায় পাগলা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এটির পয়ঃনিষ্কাশন ক্ষমতা ২০ কোটি মেট্রিক টন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার সরকার ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং উন্নত স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাপনার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’

সরকার প্রধান বলেন, তার সরকারের উদ্যোগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ প্রকল্পের অধীনে সরকার বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং উন্নত স্যুয়ারেজ সুবিধা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চায়। তিনি বলেন, ‘গ্রামের মানুষ তাদের নাগালের মধ্যে সমস্ত শহুরে সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

দাশেরকান্দি প্লান্টের দৈনিক ৫০ লাখ টন পয়ঃনিষ্কাশন শোধনের ক্ষমতা রয়েছে, যা রাজধানীর মোট পয়ঃনিষ্কাশনের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। রাজধানীর আশপাশের নদীগুলোকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে এই প্ল্যান্ট মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।

চীনের অর্থায়নে ৩,৪৮২.৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৬২.২ একর জমিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। ব্যয়ের মধ্যে ১,১০৬.৪২ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে, ১০ কোটি টাকা ওয়াসা তহবিল থেকে এবং অবশিষ্ট ২,৩৬৬ কোটি টাকা চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক থেকে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে এসেছে।

২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকার শতভাগ পয়ঃনিষ্কাশন শোধনের জন্য পাগলা, উত্তরা, রায়েরবাজার এবং মিরপুর এলাকায় আরও চারটি পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার নির্মাণের লক্ষে সরকারের একটি মহাপরিকল্পনা রয়েছে। এই বর্জ্যের ৯০ শতাংশ পাইপলাইন কভারেজের মাধ্যমে এবং অবশিষ্ট ১০ শতাংশ বাসাবাড়িগুলো থেকে সংগ্রহ করা হবে।

২০৩০ সালের মধ্যে সারাদেশে উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্ল্যান্টটি এসডিজি লক্ষ্য-৬ বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।

খিলগাঁও থানার অন্তর্গত, আফতাবনগর সংলগ্ন দাশেরকান্দি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টটি গুলশান (একাংশ), বনানী, তেজগাঁও, নিকেতন, মগবাজার, মালিবাগ, আফতাবনগর, বাড্ডা, কলাবাগান, পান্থপথ, ধানমন্ডি (একাংশ) ও হাতিরঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করবে।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম ও বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বক্তব্য রাখেন।

প্রকল্পটিতে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টন প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতাসহ স্লাজ শুকানো ও পোড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ২০১৭ সালের ১ আগস্ট এই প্লান্টের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পাওয়ার চায়নার অধীনে চেংডু ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন প্রকল্পের ডিজাইন ও নির্মান শেষে প্রকল্পটি এক বছরের কার্যক্রম ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে ওয়াসার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ঢাকার চারপাশে নদী দূষণ রোধে পাঁচটি শোধনাগার নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালে ওয়াসার গৃহীত মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে দাশেরকান্দি স্যুয়ারেজ ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্টটি নির্মিত হয়েছে। প্রকল্প অনুযায়ী, প্রগতি সরণিতে রামপুরা সেতুর পশ্চিম পাশে একটি বর্জ্য উত্তোলন স্টেশন, রামপুরা থেকে আফতাবনগর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার ট্রাঙ্ক স্যুয়ারেজ লাইন এবং দাশেরকান্দিতে মূল শোধনাগার নির্মিত হয়েছে।


কেউ চাঁদাবাজি করলে তা মুখের ওপর বলব: সারজিস আলম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শনিবার (১৯ জুলাই) বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন- জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের পর কেউ যদি চাঁদাবাজি করে তা মুখের ওপর বলে দেওয়া হবে। এ সময়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন।

সারজিস আলম বলেন, এই বাংলাদেশে আবারও নতুন করে মুজিববাদী, ভারতপন্থী শক্তিগুলো এখন সক্রিয় হচ্ছে। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু এই বাংলাদেশে বাংলাদেশপন্থী ব্যতীত অন্য কোনো দেশপন্থী, কোনো বাদপন্থী শক্তির আর জায়গা হবে না। ‘আমাদের একটা আকাঙ্ক্ষা ছিল গত জুলাইয়ের, ওই আগস্টের ৫ তারিখে আমাদের যেই স্বপ্ন ছিল, আরেক আগস্ট আসতে চলেছে, আমাদের সেই স্বপ্নগুলো পূরণ হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা সুশীল সরকারের ভূমিকা চাই না। আমরা তাদের অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের ভূমিকায় দেখতে চাই,’।

সারজিস আরও বলেন, এই বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদের জায়গা হতে দেওয়া যাবে না। অন্য যেকোনো দেশের নামের কোনো আধিপত্যবাদের জায়গা বাংলাদেশে হতে দেওয়া যাবে না।

‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমাদের বিচার লাগবে। এই বাংলাদেশে খুনি হাসিনার বিচার হতেই হবে, তার বিচারের রায় কার্যকর দেখতে চাই।’

এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই দেশের বিচার বিভাগকে কোনো দলের বিচার বিভাগ হিসেবে দেখতে চাই না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ক্ষমতার তোষামোদ করা বাহিনী হিসেবে আমরা দেখতে চাই না।

তিনি বলেন, বাহাত্তরের মুজিববাদী সংবিধানকে একপাশে রেখে কোনোদিন এই বাংলাদেশে বাংলাদেশপন্থী বাংলাদেশ সম্ভব নয়। আমাদের নতুন সংবিধান লাগবে, আমাদের গণপরিষদ নির্বাচন লাগবে, আমাদের নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের সংখ্যালঘু ভাইবোনদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

সারজিস বলেন, আমাদের ১৯৪৭ সালের উপনিবেশবিরোধী যে আকাঙ্ক্ষা, একাত্তরের স্বাধীনতার যে আকাঙ্ক্ষা, চব্বিশের মুক্তির যে আকাঙ্ক্ষা—সেই আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হবে।

‘ফ্যাসিস্টবিরোধী চব্বিশের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ মানে এই নয়, আমরা অন্ধভাবে কারো দালালি করব। কেউ যদি চাঁদাবাজি করে, তা আমরা মুখের উপরে বলব। কেউ যদি সিন্ডিকেট চালায়, আমরা সেটাও বলব। কেউ যদি দখলদারিত্ব করে, আমরা সেটাও বলব। তবে আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই চালিয়ে যাব,’ যোগ করেন সারজিস।

তিনি বলেন, রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, কিন্তু রাজনীতির যে সৌন্দর্য, এই সৌন্দর্য যেন আমরা ধারণ করি—তাহলেই আগামীর বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন ব্যক্তি আক্রমণে রূপ না নেয়। ফ্যাসিস্টবিরোধী ২৪-এর শক্তি আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।

রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু মুজিববাদের প্রশ্নে, স্বৈরাচারের প্রশ্নে অভ্যুত্থানের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।


দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি তত জটিল হচ্ছে: ফখরুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

অযথা বিলম্ব না করে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে, দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে। এতে যারা গণতন্ত্র ও শোষণহীন সমাজে বিশ্বাস করে না; তারা ফের জোট পাকাচ্ছে।’

শনিবার (১৯ জুলাই) জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে এক আলোচনায় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে এই মঞ্চ গঠন করেছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সরকারকে আহ্বান করব, অযথা বিলম্ব না করে সমস্যা চিহ্নিত করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলুন। এরপর সমস্যা শেষ করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান। সেটিই বোধহয় একমাত্র পথ।’

৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে নতুন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ পেয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু মনে হচ্ছে, দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে। এতে যারা গণতন্ত্রে, জনগণের অগ্রাযাত্রায় ও একটি শোষণহীন সমাজব্যবস্থা গড়ে ওঠার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, তারা আবার জোট পাকাচ্ছে। যে ফ্যাসিস্ট শক্তিকে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলাম, তারা ভেতরে ভেতরে আবার সংগঠিত হচ্ছে এবং ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার চক্রান্ত করে যাচ্ছে।’

দেশে মবতন্ত্র, হত্যা, ছিনতাই ও গুম ভয়াবহভাবে বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ করে এ সময় উদ্বেগ প্রকাশ করেন ফখরুল। বলেন, ‘যে সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে, এটা যদি হারিয়ে ফেলি, তাহলে বাংলাদেশ আরও পিছিয়ে যাবে। প্রতিবার জনগণ ও আমাদের ছেলেরা প্রাণ দেবে, একটা সুযোগ তৈরি হবে, আর নিজেদের দায়িত্বহীনতার কারণে সেই সুযোগ হারাব—সেটা হতে পারে না।’

তাই দেরি না করে সংস্কার, জুলাই সনদ ও নির্বাচন—এই তিনটি বিষয় সামনে রেখে যত দ্রুত এগিয়ে যাওয়া যায়, দেশের জন্য ততই মঙ্গল হবে বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব।

তার দাবি, ‘নিঃসন্দেহে সেই দায়িত্ব এই অন্তর্বর্তী সরকারের। তবে যত দেরি করছেন, ততই পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে। এতে অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যারা রয়েছে, তারা আবার সংঘটিত হয়ে গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে কাজ শুরু করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের সেই লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সক্ষম হবেন।’

‘বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল আখ্যায়িত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করতে চাই। অতীতে যেমন সব বাধা উপেক্ষা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, আগামী দিনগুলোতেও কোনো আমাদের বাধা ঠেকাতে পারবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ ও স্বাধীনতা হচ্ছে আমাদের মূল কথা। সেখানে আমাদের কোনো আপস নেই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও আমাদের কোনো আপস নেই। আলোচনা, সহনশীলতা ও অন্যের মতকে মেনে নেওয়া—সবকিছু মিলিয়ে আমরা এমন একটি জায়গায় পৌঁছাতে পারব, যেখান আমরা নতুন করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পৌঁছাতে পারি।’

এ সময়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


প্রয়োজনে লাশ উত্তোলন করে গোপালগঞ্জে নিহতদের ময়নাতদন্ত হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষে পাঁচজন নিহতের লাশ প্রয়োজনে কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘নিহতের স্বজনরা লাশের ময়নাতদন্ত করতে চাননি, তাই হয়নি। কিন্তু যদি সরকার প্রয়োজন মনে করে, তাহলে এখনো ময়নাতদন্তের সুযোগ আছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, গোপালগঞ্জের পুরো ঘটনা সাংবাদিকরা লাইভ করেছেন। এখানে লুকোচুরির কিছু নেই। যা হয়েছে, সবার সামনেই হয়েছে।

গোপালগঞ্জের সংঘর্ষে দায় কার—এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি যা প্রতিবেদন দেবে, সেখান থেকেই জানা যাবে আসলে কেন এমন ঘটনা ঘটল।

থার্ড টার্মিনাল পরিদর্শন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা জানান, এ টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে যাত্রীদের বিদ্যমান অনেক সমস্যা লাঘব হবে। টার্মিনালের ইমিগ্রেশন পুরোপুরি কার্যকর করতে মন্ত্রণালয় প্রস্তুত আছে। ইমিগ্রেশনে ৪০০-এর মতো সদস্য থাকবে।

টার্মিনালের উদ্বোধন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি অন্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়ত্তে যা আছে, সেখান থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’


জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে দেশব্যাপী চলচ্চিত্র প্রদর্শনী আগামীকাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে আগামীকাল দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘পিপল হু ফট ফর আস’ ও ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট: স্টোরি অব মুসতাক আহমদ’সহ জুলাইয়ের চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে।

ঢাকায় মিরপুর ১০ ও বসিলায় শহীদদের স্মরণে সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে এসব আয়োজন করা হবে।

আগামীকাল (রোববার) ২০ জুলাই ‘গণহত্যা ও ছাত্রজনতার প্রতিরোধ দিবস’ স্মরণে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিউজিক ভিডিও শেয়ার করা হবে। যার থিম মিউজিক হবে ‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’। কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন ‘একটি শহিদ পরিবারের সাক্ষ্য’ ডকুমেন্টারির পার্ট-৬ প্রচার এবং একজন জুলাই যোদ্ধার স্মৃতিচারণের ভিডিও শেয়ার করা হবে।

সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ফেইসবুক পেইজ, ইউটিউব চ্যানেল ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হবে।

সকল মোবাইল গ্রাহকের কাছে ভিডিও’র ইউআরএল পাঠানো হবে। এদিনে ঢাকায় মোহাম্মদপুরে উর্দুভাষী বাংলাদেশিদের নিয়ে কাওয়ালী সন্ধ্যার আয়োজন করা হবে।


সাবেক এমপি মান্নানের মৃত্যুতে তারেক রহমানের শোক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সিরাজগঞ্জ- ৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনের ৪ বারের সংসদ সদস্য (এমপি) আব্দুল মান্নান তালুকদারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আজ এক শোকবার্তায় তারেক রহমান মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকার্ত পরিবারবর্গ, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

তারেক রহমান বলেন, আব্দুল মান্নান তালুকদার নিজ এলাকায় জনপ্রিয় নেতা হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের নীতি ও আদর্শে গভীরভাবে আস্থাশীল এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শনে গভীরভাবে বিশ্বাসী ছিলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে বিএনপিকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে তিনি নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করে গেছেন। তিনি জনসেবার মহান লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি করেছেন এবং সংসদ সদস্য থাকাকালীন নিজ এলাকার উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ব্যাপক অবদান রেখেছেন।

আব্দুল মান্নান তালুকদার আজ শুক্রবার ঢাকায় নিজ বাসভবনে বেলা ১১টার দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।

মরহুম আব্দুল মান্নান তালুকদার বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির নির্বাহী সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৯১, ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬, জুন ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (পরপর চার বার) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।


জামায়াতের মহাসমাবেশ: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নেতাকর্মীদের ঢল

মহাসমাবেশ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের কর্মী-সমর্থকের ঢল। ছবি: জামায়াতের ফেসবুক পেজ
আপডেটেড ১৯ জুলাই, ২০২৫ ১৪:০৫
ইউএনবি

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার দুপুরে ‘জাতীয় মহাসমাবেশ’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ উপলক্ষে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল করে সেখানে জড়ো হচ্ছেন দলের নেতাকর্মীরা।

শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তার অনেক আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

এই সমাবেশের সভাপতিত্ব করবেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাও এতে বক্তব্য দেবেন বলে জানানো হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত থেকেই দলের অনেক নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। শনিবার ভোর হতেই রাজধানীর নানা প্রান্ত দিয়ে মিছিল নিয়ে উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন তারা। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।

এ সময় তাদের কারও মাথায় কাপড় বাঁধা ছিল, কেউ কেউ দলের পতাকা বহন করছিলেন, কেউবা আবার বাংলাদেশের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা হাতে মিছিল করছিলেন। অনেকের পরনে ছিল দলের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা খচিত টি-শার্টও।

জামায়াত নেতাদের দাবি, দলটির সাত দফা দাবির পক্ষে জনমত গড়ে তুলতেই এই সমাবেশের আয়োজন।

দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা জানিয়েছেন, দেশের ইতিহাসে এককভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ এটিই প্রথম। অবশ্য এর আগে বিএনপির সঙ্গে জোটে থাকাকালীন কিছু সমাবেশে যৌথ অংশগ্রহণ করেছিল।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান উত্তেজনা ও সম্প্রতি গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের কথিত হামলার ঘটনায় যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রেক্ষাপটে এমন একটি আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দলের এক সূত্র।

বড় পরিসরে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রেল, সড়ক ও নৌপথে নেতাকর্মীদের ঢাকায় আনতে দলটি ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রায় ১০ হাজার বাস, চারটি বিশেষ ট্রেন ও কয়েকটি লঞ্চ ভাড়া নেওয়া হয়েছে বলে জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই সমাবেশ ইতিহাসে মোড় ঘোরানো এক মুহূর্ত হয়ে থাকবে। ১০ লাখের বেশি মানুষ অংশ নেবেন বলে আমরা আশা করছি। শুধু জামায়াত কর্মীরা নয়, বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার পরিবর্তন চাওয়া সাধারণ মানুষও এতে উপস্থিত হবেন বলে আশা করছি।’


ফ্যাসিবাদ-মুজিববাদের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে: এনসিপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের লড়াইয়ের সময় গোপালগঞ্জে হামলা হয়েছে। আরও ১০ জায়গায় হামলা হলেও আমাদের দমন করা যাবে না।

তিনি বলেন, সামনে আরেকটি লড়াই আছে। লড়াইয়ে মুন্সীগঞ্জবাসীকে পাশে চাই। শুক্রবার (১৮ জুলাই) দুপুরে মুন্সীগঞ্জের সুপার মার্কেটে এনসিপির পথসভায় বক্তব্য এসব কথা বলেন তিনি।

নাহিদ বলেন, ফ্যাসিবাদ ও মুজিববাদের বিরুদ্ধে পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। ফ্যাসিবাদ ও মুজিববাদের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। তিনি বলেন ‘ভবিষ্যতের নির্বাচনে প্রবাসীরা যেন ভোট দিতে পারে, তা আমরা নিশ্চিত করব।’ মুন্সীগঞ্জের নদী ভাঙন, অবৈধ বালু দখলসহ নানা অনিয়ম বন্ধে কাজ করার আশ্বাসও দেন এই নেতা।

সভায় সারজিস বলেন, ফ্যাসিবাদ নির্মূল না হলে দেশ স্বাধীন হবে না। শুধু গোপালগঞ্জে নয়, যেখানেই ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসীরা থাকবে, সেখানেই ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে প্রতিরোধ করতে হবে। দেশের বাইরে থেকে যারা হত্যার পরিকল্পনা করছে তাদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘হাসিনার বিচার করতে হবে। তার মৃত্যুদণ্ড দেখে মরতে চাই।’

দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। তিনি বলেন নেতানির্ভর নয়, নীতিনির্ভর রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে। সব রাজনৈতিক দলকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আগামী মাসের ৩ আগস্ট জাতীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করে ছাড়ব।

পথসভায় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা সবাইকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

এর আগে মুন্সীগঞ্জ শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে একটি পদযাত্রা সুপার মার্কেটের শহীদ চত্বরে এসে যোগ দেয়।


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে প্রতীকী ম্যারাথনে উপদেষ্টা আসিফ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জুলাই-যোদ্ধাসহ আন্দোলনে আহত ও নিহত পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে এক প্রতীকী ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) আয়োজিত এই বিশেষ কর্মসূচিতে বিভিন্ন বয়সের প্রতিযোগীদের সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে আয়োজিত এ প্রতীকী ম্যারাথন ছিল এবারের গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপনের অন্যতম অংশ।

আজ সকাল ৭টায় এই ম্যারাথনের উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। শুরুতে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

ম্যারাথন শেষে উপদেষ্টা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এই অভ্যুত্থান দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আজকের এই প্রতীকী ম্যারাথনে অংশ নিয়ে আমরা অভ্যুত্থানের সেই মহান আত্মত্যাগীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি এবং তরুণ প্রজন্মকে সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি।’

এক হাজার প্রতিযোগী নিয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রতীকী ম্যারাথনটি বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র থেকে শুরু হয়ে গণভবন, সংসদ ভবন, খামারবাড়ি হয়ে আবারও চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এসে শেষ হয়।


ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে : নাহিদ ইসলাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, মুজিববাদের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছি, এই লড়াইয়ে আমরা জিতবো।

তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, সামনে আরো একটি লড়াই আসছে। আমরা সে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সাহসিকতার সঙ্গে সে লড়াই মোকাবিলা করতে হবে।’

শুক্রবার(১৮ জুলাই) দুপুর ১২টায় বিচার, সংস্কার ও দেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে জুলাই পদযাত্রায় অংশ নিয়ে, মুন্সীগঞ্জ শহরের কৃষি ব্যাংক চত্বরের পথসভায় নাহিদ ইসলাম একথা বলেন।

এনসিপি’র আহ্বায়ক বলেন, ‘গোপালগঞ্জে ফ্যাসিবাদীরা হামলা করেছে। আরো হামলা হবে। কিন্তু আমাদের দমন করা যাবে না। পাড়ায় পাড়ায় প্রতিবাদের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।’

তিনি সকলকে সরব হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে আমাদের আরো লড়াই করতে হবে। আমরা প্রতিবাদ করতে শিখেছি। আমরা আমাদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করেই ঘরে ফিরবো।

নাহিদ ইসলাম বলেন, দেশে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী হচ্ছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বেহাল দশা। যাতায়াত ব্যবস্থা নাজুক, কর্মসংস্থান নেই। এসব বাধা ও সমস্যার সমাধান করে জনগণ এখন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায়।

এনসিপি’র মুন্সীগঞ্জের প্রধান সমন্বয়কারী মাজেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে পথসভায় আরো বক্তব্য রাখেন- উত্তারঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা।

সারজিস আলম বলেন, শোষণমুক্ত দেশ গড়তে এখনো অনেক পথ বাকী আছে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সে পথ পাড়ি দিতে হবে। ফ্যাসিবাদীদের জায়গা করে দিলে, তারা আরো ভয়ংকর হয়ে উঠবে। সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বিদেশে থাকা নির্দেশদাতাদের গ্রেফতার করে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

পরে নেতৃবৃন্দ শহরের প্রধান জামে মসজিদে শহীদ ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের জন্য দোয়ায় অংশগ্রহণ করেন।


বাংলাদেশে স্টারলিংক চালু, কার্যকর সহায়তা পাওয়ায় প্রশংসা করলেন স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশে স্টারলিংক সফলভাবে চালু করার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার।

শুক্রবার(১৮ জুলাই) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন।

লরেন ড্রেয়ার বলেন, ‘আমরা ১৫০টি দেশ ও অঞ্চলে কাজ করি। আমরা এত দক্ষতা ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ আগে কখনও দেখিনি। স্পেসএক্স-এর সব সহকর্মীর পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আপনার লোকজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।’

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ সফরের জন্য ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এখন বর্ষাকাল, দেশের এক মনোরম সময়। সুন্দর পরিবেশ। চারদিকে সবুজ আর পানি। কিন্তু বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির বাস্তবতাও আছে। সেজন্য আমাদের ভালো কানেক্টিভিটির স্বার্থে নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তির প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পার্বত্য অঞ্চলের দূরবর্তী এলাকাগুলোতে উন্নত কানেক্টিভিটির বিশেষ প্রয়োজন। এসব অঞ্চলে ভালো স্কুল শিক্ষক ও ডাক্তার নেই। আমরা ১০০টি স্কুলে অনলাইন শিক্ষা চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি, যা বিচ্ছিন্ন এলাকার শিক্ষার্থীদের উপকারে আসবে।

অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি, যাতে দূরবর্তী এলাকার মানুষ অনলাইনে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারে। তাদের চিকিৎসার ইতিহাস ডিজিটালি সংরক্ষিত থাকবে, এর ফলে ভবিষ্যতে পরামর্শ দেয়া সহজ হবে।’

তিনি বলেন, ‘এটি প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে খুব কার্যকর ভূমিকা রাখে। নারীদের এ সময় ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য আরেকজন সহযোগীর প্রয়োজন হয়। ডিজিটাল হেলথ সেবা হলে তারা ঘরে বসেই ডাক্তার দেখাতে পারবেন।’

অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরাও ডিজিটাল হেলথ সেবা থেকে উপকৃত হবেন। তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা ভাষার কারণে অনেক সময় ডাক্তারের কাছে যেতে অস্বস্তিতে ভোগেন। কী বলবেন-এটা নিয়ে ভাবেন। তবে ডিজিটাল হেলসথ সেবা হয়ে গেলে বিদেশ থেকেই বাংলাদেশের ডাক্তারের সাথে তারা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শের জন্য কথা বলতে পারবেন।’

প্রধান উপদেষ্টা লরেন ড্রেয়ারের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা এখানে ছোট ছোট যে উদ্যোগ নিচ্ছি, আপনারা এগুলোকে বৈশ্বিক পরিসরে নিয়ে যেতে পারেন।’

লরেন ড্রেয়ার অধ্যাপক ইউনুসের আইডিয়ার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আপনি যে দৃষ্টান্ত তৈরি করছেন, তা নিয়ে অন্য নেতাদের সঙ্গে আমরা কথা বলতে পারি। আমরা বলবো-অধ্যাপক ইউনূস যদি নিজের দেশে এগুলো করতে পারেন, তাহলে আপনারাও আপনার দেশে করতে পারেন।’

তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অধ্যাপক ইউনূসের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।

স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সরকারি সেবাগুলো দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আপনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমি প্রায়ই বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করি, তাই জানি দুর্নীতি কীভাবে একটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে। প্রযুক্তির মাধ্যমে সেবা বিকেন্দ্রীকরণ এবং সুশাসন নিশ্চিত করা একটি অর্থবহ দৃষ্টিভঙ্গি।’

বৈঠকে স্পেসএক্সের গ্লোবাল এনগেজমেন্ট কনসালট্যান্ট রিচার্ড গ্রিফিথস, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এবং বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


শহীদ পরিবার ও আহতদের নিয়ে আত্মপ্রকাশ করল ‘নাপুস’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শহীদ পরিবার ও আহতদের নিয়ে আত্মপ্রকাশ করল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস (নাপুস)।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত ঋদ্ধি লাইব্রেরির অডিটোরিয়ামে এক মতবিনিময় সভার মধ্য দিয়ে সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদ পরিবারের সদস্য ও আহত ছাত্ররা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। শ্রদ্ধা জানানো শেষে মতবিনিময় সভায় নাপুসের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সংগঠক শিপার মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ক্রাউন ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী শহীদ মো. আকরাম খান রাব্বির পিতা মো. ফারুক খান ও ইউডার শিক্ষার্থী শহীদ জুলফিকার হাসান শাকিলের মা বিবি আয়েশা।

এ সময় বিবি আয়েশা বলেন, ‘আমার ছেলেকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই। যদি মৃত্যুর আগেও আমি আমার ছেলের বিচার দেখে মরতে পারি, তাও আমার আত্মার শান্তি পাবে।’

শহীদ আকরামের বাবা ফারুক খান বলেন, ‘যে আওয়ামী লীগ আমার ছেলে এবং এদেশের হাজারো মানুষকে হত্যা করেছে, তারা যেন এই দেশের মাটিতে আর রাজনীতি করার সুযোগ না পায়— এটাই আমাদের শহীদ পরিবারের চাওয়া।’

আহত জুলাইযোদ্ধা কাদিউল হাসান তানিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি আহত হওয়ার পর থেকে নানা সংকট ও সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। কোনো ধরনের সহযোগিতা পাইনি। ফলে আমার পড়াশোনা ও চিকিৎসা আজ অনিশ্চয়তার মুখে।’

ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টসের সংগঠক আশরাফ জামানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন- সংগঠনটির মুখ্য সংগঠক তৌফিক, সংগঠক হুমায়ুন শফিক ও সদস্য শেরিফ ফারুকী।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- নাপুসের সংগঠক আল মাহমুদ অপু, মো. ওমর ফারুক, মাহমুদুল হাসান আশিক ও আদিত্য চৌধুরী প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনায় দোয়া করা হয়।


গোপালগঞ্জের ঘটনায় গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল: সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গোপালগঞ্জের ঘটনায় গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা। তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর থাকলে গোপালগঞ্জে এত বড় ঘটনা ঘটতো না। গোয়েন্দা ব্যর্থতাই গোপালগঞ্জের ঘটনার জন্য দায়ী।

‍শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর এফডিসিতে ‘মব সন্ত্রাস প্রতিরোধে করণীয়’ নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

আশরাফুল হুদা বলেন, জুলাই চেতনা নস্যাৎ করে পতিত প্রধানমন্ত্রীকে পুনর্বাসন করার জন্য চক্রান্ত চলছে, যাতে নির্বাচন পিছিয়ে যায়। গোপালগঞ্জের ঘটনা তারই উদাহরণ।

পুলিশের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ না করে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে দিলে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। শহরের মাঝে ঘটনা ঘটে যাওয়ার দুই দিন পরে ভাইরাল হবার পর পুলিশের তৎপর হওয়াটা দুঃখজনক। এখানে পুলিশের কোনে গাফিলতি থাকলে তারও সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত।

আশরাফুল বলেন, মব ভায়োলেন্স শুধু ভুক্তভোগীরাই করে না। নৈরাজ্য সৃষ্টি ও রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য কেউ কেউ টার্গেট করে বিএনপির ওপর দোষ চাপিয়ে দেওয়ার জন্য এ ধরনের মব ভায়োলেন্স করছে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, মব সন্ত্রাস জাতীয় জীবনে এক নতুন আপদ হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশটা মবের মুল্লুকে পরিণত হচ্ছে। সমাজের ক্যান্সার মব সন্ত্রাস। মব কালচার গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে কলঙ্কিত করছে। এটা বন্ধ করা না গেলে জনজীবনে আতঙ্ক বাড়তে থাকবে। অফিস, আদালত, রাস্তা-ঘাট, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, ট্রেন স্টেশন সর্বত্র ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করবে।

১/১১’র সময় লগি—বৈঠা দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে মানুষ হত্যার মাধ্যমে মবের বীজ রোপিত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন কিরণ। তিনি বলেন, সেদিন রাজধানীর পল্টনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে সাপের মতো পিটিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। তার বিচার এখনো হয়নি।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সর্বত্র মব জাস্টিসের নামে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা বৃথা যাবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

মব জাস্টিস তথা মব সন্ত্রাস প্রতিকারে করণীয় নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ৭ দফা সুপারিশ করেছে- ১) মব সন্ত্রাস প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা পোষণ করা ২) বিচার ব্যবস্থার জটিলতা দূর করে বিচারহীনতার সংস্কৃতি পরিহারের মাধ্যমে দক্ষ, স্বচ্ছ ও ন্যায়বিচারভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামো তৈরি করা ৩) জনগণের মধ্যে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ গড়ে তুলে সচেতনতা বৃদ্ধি করা ৪) গুজবের ওপর ভিত্তি করে কোনোভাবেই যাতে মব সন্ত্রাস ছড়াতে না পারে তার জন্য সোস্যাল মিডিয়ার ওপর সরকারের নজরদারি বাড়ানো। কাট পেস্ট করে ঘৃণা ছড়ানোর লক্ষ্যে তৈরি করা মিথ্যা কনটেন্টগুলো অপসারণে বিটিআরসিকে আরও তৎপর হওয়া ৫) আগামী জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনী ইশতেহারে মব সন্ত্রাসকে আশ্রয় প্রশ্রয় না দেওয়ার অঙ্গীকার করা ৬) মব সন্ত্রাস প্রতিরোধে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভারসাম্য তৈরির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং সুশিক্ষার মাধ্যমে অপরাধ প্রবণতা কমিয়ে আনা ৭) মব জাস্টিস প্রতিরোধে গণমাধ্যমকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করা।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা মব সন্ত্রাস বৃদ্ধির প্রধান কারণ’ শীর্ষক ছায়া সংসদে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি’র বিতার্কিকদের পরাজিত করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক সাইদুর রহমান, সাংবাদিক আহমেদ সরওয়ার, সাংবাদিক এম এম বাদশাহ্ ও সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মিশন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।


ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৪

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যু ঘটনা থামছে না। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় একজন একজনের মৃত্যু হয়েছে। আর এই সময়ে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১১৪ জন রোগী।

বুধবার (১৬ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে বিভাগটিতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৪৩ জন। বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১৪ জন।

নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৯ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৮৫ জন। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৭ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৬ হাজার ৩৯৫ জন। এর মধ্যে ৫৮ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।


banner close