ইন্দোনেশিয়া থেকে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ৩১ হাজার টন কয়লা নিয়ে মোংলা সমুদ্রবন্দরে আসা লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি পানাগিয়া কানালার বিরুদ্ধে আটকাদেশ প্রত্যাহার করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে এই জাহাজে থাকা কয়লা খালাসে আর বাধা নেই। একটি জরুরি সম্পূরক কার্যতালিকা তৈরি করে শনিবার বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ অফিসার সূত্রে জানা যায়, জাহাজে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা রয়েছে বিষয়টি জানার পর আদালত জাতীয় স্বার্থে আগের আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এছাড়া মামলার বাদী ও বিবাদী উভয়পক্ষ সমঝোতার আবেদন আদালতে দাখিল করবেন বলেও জানান তিনি। শনিবারের এ আদেশ দ্রুত মোংলা সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে বলেছেন আদালত। আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, গত বুধবার ইন্দোনেশিয়া থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ৩১ হাজার টন কয়লা নিয়ে মোংলা সমুদ্রবন্দরে আসা লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি পানাগিয়া কানালার বিরুদ্ধে একটি মামলায় আটকাদেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পরবর্তী নির্দেশের আগ পর্যন্ত মোংলা সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষকে জাহাজটির এনওসি (অনাপত্তি সনদ) প্রদানের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
এই জাহাজের নামে দুই কোটি ৯৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৮২ দশমিক ৬৬ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে হাইকোর্ট বিভাগে চায়নার সিসিএক্স শিপিং কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিনিধি মো. আবুল হাসানের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী আটকাদেশ দিয়েছিলেন। পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত জাহাজটি যাতে মোংলা বন্দর ত্যাগ করতে না পারে, সেজন্য বন্দরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্টকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেয়া হয়।
কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র রামপালের জন্য ৩১ হাজার টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের বহিনোঙর হাড়বাড়িয়া ১১-তে ভেড়ানো রয়েছে জাহাজটি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাড্ডা থানা এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আলামিন হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ সোমবার তাকে হাজির করা হয়।
এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরী তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যার অভিযোগে করা মামলায় পরের দিন ১৪ আগস্ট তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ।
মামলার সূত্রে জানা গেছে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকায় ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি চালায় পুলিশ। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আলামিন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় রাজধানীর বাড্ডা থানায় আলামিনের মা মনিহার বেগম একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আজ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। আবহাওয়ার ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আজ সোমবার একথা বলা হয়েছে।
এ ছাড়া দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনার মংলায় ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন রংপুরের ডিমলায় ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ ঢাকায় বাতাসের গতিবেগ উত্তর ও উত্তরপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ০৮-১২ কি. মি.।
সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৫টা ৩৩ মিনিটে এবং আগামীকাল ঢাকায় সূর্যোদয় ভোর ৫টা ৫৬ মিনিটে।
বাংলাদেশে আরও বেশি সংখ্যক নারীর কাজের সুযোগ হলে পণ্য, সেবা ও কৃষি খাতে উৎপাদন ২৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে বলে ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশে শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা বেশি হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এই দেশে প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি হবে। গত সপ্তাহে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া উন্নয়ন হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়েছে, যদি শুধু উৎপাদন খাতে আরও বেশি সংখ্যক নারী কাজ পান, তাহলে বাংলাদেশে উৎপাদন ২১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
বাংলাদেশে পোশাক শিল্পে অগ্রগতি সত্ত্বেও বৃহত্তর উৎপাদন খাতে নারী-পুরুষের ব্যবধান অনেক বেশি বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ২০২২ ও ২০২৩ সালে বাংলাদেশে শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণের হার ৩৭ শতাংশেই স্থির হয়ে আছে। সরবরাহের সীমাবদ্ধতা, নিয়ন্ত্রণমূলক আইন ও রক্ষণশীল সামাজিক রীতিনীতিকে আরও বেশি নারীর কাজে যোগ দেওয়ার পেছনে বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বিশ্বব্যাংকের এই প্রক্ষেপণের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেছেন, দেশের পোশাক শিল্পে মূল শক্তি নারী। তবে, তারা আরও কিছু কারণকে চিহ্নিত করেছেন যা বেশি সংখ্যক নারীকে কাজে যোগ দিতে নিরুৎসাহিত করে। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, ‘নিয়োগকর্তারা প্রায়ই নারীদের কাজে নিতে দ্বিধায় থাকেন। অনেক প্রতিষ্ঠানে এখনো নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নেই।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে যদি আরও বেশি সংখ্যক নারী কৃষি খাতে যোগ দেন, তবে শ্রম উৎপাদনশীলতা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি কর্মস্থলে লিঙ্গ বৈষম্য কমবে। লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে পারলে সেবা খাতে লাভের সম্ভাবনা ৮ দশমিক ১২ শতাংশ।
সেলিম রায়হান বলেন, ‘শিশু ও বয়স্কদের যত্ন নেওয়ার কাজটি অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নারীদের দেওয়া হয়। এটি কর্মসংস্থানের সুযোগকে সীমাবদ্ধ করে। কর্মসংস্থানে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।’
‘সুরক্ষার বিষয়গুলো কর্মক্ষেত্রে নারীর কম অংশগ্রহণের কারণ,’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘পরিবহন ব্যবস্থাও গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের উচিত এসব বিষয় খেয়াল রাখা।’ বিশ্বব্যাংক বলেছে, বাংলাদেশে নারী সুরক্ষা আইন দুর্বল। ফলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মারাত্মক ঘাটতি দেখা দেয়। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সমাজ নারীদের প্রতি সবচেয়ে রক্ষণশীল। প্রতিবেদন অনুসারে, উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশে শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণের হার সবচেয়ে নিচের দিকে। পুরুষের হারের তুলনায় অনেক কম।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রান্সিসকা ওনসোর্গ বলেন, ‘উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর গড় ৫৪ শতাংশের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণের হার ৩২ শতাংশের অনেক কম।’ তবে দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে রপ্তানি খাতের সঙ্গে এর বৈপরীত্য আছে। যেমন, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক, ভারতে কল সেন্টার ও শ্রীলঙ্কায় টেক্সটাইল শিল্পে নারীর অংশগ্রহণ বেশি। বিশ্বব্যাংক বলেছে, শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ালে ভারতের উৎপাদন ২৩ শতাংশ, পাকিস্তানের ২১ শতাংশ, নেপালের ২২ শতাংশ ও শ্রীলঙ্কার ২৮ শতাংশ বাড়বে। বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রানজিস্কা ওনসোর্গ বলেন, ‘নারীর কর্মসংস্থান বাড়াতে সব পক্ষের উদ্যোগ প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সরকার, বেসরকারি খাত, সমাজ ও পরিবারের ভূমিকা আছে।’
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে রোববার শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
চণ্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে গত ৯ অক্টোবর থেকে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫ দিন রাজধানীসহ দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে উৎসবের শেষ হয়।
এ বছর দেবী দুর্গার আগমন হয় দোলায় বা পালকিতে। দেবীর এই আগমনের ফলাফল হবে মড়ক। যা শুভ ইঙ্গিত নয়। এ ছাড়াও দেবী স্বর্গে গমন করবেন ঘোটকে বা ঘোড়ায়। শাস্ত্রমতে দেবীর গমন বা আগমন ঘোটকে হলে ফলাফল ছত্রভঙ্গ হয়। শাস্ত্রমতে এই ঘোটকে গমনের ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খল অবস্থাকে ইঙ্গিত করে। এটি যুদ্ধ, বিগ্রহ, আশান্তি, বিপ্লবের ইঙ্গিত দিয়ে থাকে।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে, যা তার বাবার গৃহ। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিদায়ের করুণ ছোঁয়ায় সারিবদ্ধভাবে একে একে বুড়িগঙ্গা নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা।
একই সময় রাজধানীর উপকণ্ঠে তুরাগ নদীতে চলে বিসর্জন। সড়কে পুলিশের টহল ও নদীতে ছিল নৌপুলিশের টহল। ফায়ার সার্ভিসের টিমও দায়িত্ব পালন করে।
এদিকে দুপুরে পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বের হয় বর্ণাঢ্য বিজয়া শোভাযাত্রা। বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জনে অংশ নিতে দুপুর গড়াতেই ভক্তরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপ থেকে ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেন পলাশীর মোড়ে।
পরে শত শত ট্রাক প্রতিমা নিয়ে সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। ঢাকেশ্বরী থেকে শুরু করে বিজয়া শোভা যাত্রাটি শহীদ মিনার, হাইকোর্ট, পুলিশ হেড কোয়ার্টার, গোলাপ শাহ মাজার, কোর্ট এলাকা হয়ে সদরঘাট পৌঁছে। রাস্তায়, বিভিন্ন ভবনে পুলিশ ছিল সতর্কাবস্থায়। রাস্তার পাশে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
অধিকাংশ মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হলেও ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রতিমাটি রেখে দেওয়া হয়। কিন্তু পূজার কাজে ব্যবহৃত দেবীর ফুল, বেলপাতা ও ঘট বিসর্জন দেওয়া হয়।
প্রথা অনুযায়ী প্রতিমা বিসর্জনের পর সেখান থেকে জল এনে (শান্তিজল) মঙ্গলঘটে নিয়ে তা আবার হৃদয়ে ধারণ করা হয়। আগামী বছর আবার এ শান্তিজল হৃদয় থেকে ঘটে, ঘট থেকে প্রতিমায় রেখে পূজা করা হবে। রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ধ্যা আরতির পর মিশনের পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এরপর ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করেন ও মিষ্টিমুখ করেন।
সারা দেশে এ বছর ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ২৫২ টি। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি করা হয় মণ্ডপ পাহারার জন্য।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআর জানায়, গতকাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সাক্ষাৎকালে সেনাবাহিনী প্রধান কুশলাদি বিনিময়ের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা সেনাবাহিনী প্রধানকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।
সাংবাদিকদের মধ্যে যারা সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, উস্কানিদাতা ছিল এবং গণহত্যার সমর্থন করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনে আহতদের অনুদানের চেক হস্তান্তরের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, 'শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আন্দোলনে আহত-নিহতদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে।'
আহতদের বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
নাহিদ ইসলাম বলেন, 'ঢাকা মেডিকেলে আসার আগে অনেকে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের সেই খরচ আমরা দিয়ে দেবো।'
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, 'যারা সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, উস্কানিদাতা ছিল এবং গণহত্যার সমর্থন করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। এর বাইরে অন্যায়ভাবে কারও বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হলে, তা খতিয়ে দেখতে তথ্য মন্ত্রণালয়ে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোনো সাংবাদিক বা তার পরিবার মনে করে যে মামলার মাধ্যমে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে, তাহলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা তাদের সহযোগিতা করব।'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে ১৭৬ জন হতাহতকে মোট ১ কোটি ৭১ লাখ ৪২ হাজার টাকা সহায়তা করেছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। রোববার দুপুরে আহতদের দেখতে ও আর্থিক সহায়তা দিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যান তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের পুরাতন বার্ন ইউনিটে ভর্তি থাকা মোট ৩০ জনকে ৩০ লাখ টাকার অনুদান দেওয়া হয়েছে। প্রতি জনকে চেকের মাধ্যমে এক লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে তাদের আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। এ পর্যন্ত ১ কোটি ৭১ লাখ ৪২ হাজারের বেশি টাকা সহযোগিতা করা হয়েছে।
রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা আহতদের আর্থিক অনুদান দিতে দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলাম উপস্থিত হন। হাসপাতালে ভর্তি থাকা প্রতি রোগীর চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং তাদের হাতে ১ লাখ টাকার চেক তুলে দেন। পরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দুই উপদেষ্টার মাঝে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে শহীদ মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ সাংবাদিকদের বলেন, প্রতি শহিদ পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ও সব আহত ব্যক্তিদের একলাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এটি শেষ নয়, এ সাহায্য চলমান থাকবে বিভিন্নভাবে।
আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০ জনকে ৩০ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট সর্বমোট ৩৩ জনকে ৩৩ লাখ টাকার বেশি ও এবং পঙ্গু হাসপাতালে আহত ৫৯ জনের জন্য ৫৯ লাখ ৪১ হাজার টাকার বেশি। এ টাকাটা তাদের বিকাশের মাধ্যমে চলে যাবে। এ পর্যন্ত আমরা আমাদের ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আহত ও শহিদ পরিবারকে ১ কোটি ৭১ লাখ ৪২ হাজার ৫০ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৭৬ জন পরিবারকে এ আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে যেটা চলমান থাকবে বলে জানান স্নিগ্ধ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দুর্নীতি দমন, অর্থ পাচার রোধ এবং চুরি যাওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারে সহযোগিতা জোরদারের উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র। রোববার পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন ও ওয়াশিংটনে বৈশ্বিক দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক শেলবি স্মিথ-উইলসনের মধ্যে বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
আলোচনায় সংস্কারের জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা, মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স (এমএলএ) চুক্তি এবং ক্রয় ব্যবস্থা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং গণমাধ্যমের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বিনিময়ের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ‘অংশীদার’, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তাদের নেতৃস্থানীয় অংশীদার এবং প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) শীর্ষ উৎস হিসেবে মূল্য দেয়।
গত শুক্রবার ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে তিনি এক্স হ্যান্ডেলে একটি সংক্ষিপ্ত বার্তা শেয়ার করেন।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ মানবিক সহযোগিতা, জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং শ্রম অধিকারের প্রতি সমর্থন নিয়ে জসিম উদ্দিনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।’
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্র সচিব ও আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতা, মানবিক সাড়া এবং রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান ও শ্রম অধিকার বিষয়ে ‘ফলপ্রসূ আলোচনা’ করেছেন।
তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড ভার্মার সঙ্গে একটি ‘ফলপ্রসূ বৈঠক’ করেছেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর ও সম্প্রসারণ, পারস্পরিক স্বার্থের ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি নবায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করা নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে।
পররাষ্ট্র সচিব ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জন বাসের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া, দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা গভীর করার উপায় এবং অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলোতে কার্যকর সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করেন।
হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ সহকারী ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক লিন্ডসে ডব্লিউ ফোর্ডের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
তারা সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কর্মসূচি, গণতান্ত্রিক উত্তরণ, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যু, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, রোহিঙ্গা সংকট এবং শ্রম আইন নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র সচিব ছাড়াও দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী ইউএসটিআর ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণে পারস্পরিক সহযোগিতা, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা থেকে উৎপাদিত আরএমজির ডিএফকিউএফ প্রবেশাধিকার, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের নিবন্ধন সহজীকরণ ও নিবন্ধন ফি কমানো, শ্রম আইন সংস্কার এবং ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কোঅপারেশনে (ডিএফসি) প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র সচিব এবং প্রধান কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি মধ্যাহ্নভোজ বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থের বিস্তৃত বিষয়গুলোর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছিল।
মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যাম্বাসাডর ডোনাল্ড লু, ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি মার্তা সি ইয়ুথ, অ্যাসিসট্যান্ট ডেপুটি সেক্রেটারি নিকোল চুলিক, অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি মনিকা অ্যাগার জ্যাকবসেন এবং পরিচালক আল্লা পি কামিনস।
ওয়াশিংটন সফরের আগে পররাষ্ট্র সচিব নিউইয়র্ক সফর করেন।
আশ্বিন মাস শেষের দিকে। আর তিন দিন পরই শীতের আগমনি বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে আসবে হেমন্তকাল। শরৎকালের আশ্বিনজুড়েই এবার সারা দেশে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। আকাশে থেমে থেমে মেঘের উপস্থিতি আর জমিনে ঝরেছে প্রচণ্ড বৃষ্টি। ফলে প্রকৃতিতে অনেকটা কমেছে তাপপ্রবাহ। এ বছর শীতের আগমন আগেভাগেই হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এখন থেকেই মাঝরাতের পর উত্তরাঞ্চলের জেলার গ্রামগুলোতে কুয়াশার উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা যায়। তাই তো কার্তিক মাস আসার আগেই আরেক দফায় প্রকৃতিতে ঝড়-বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
দুই জেলার ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এ জন্য এসব অঞ্চলের নদীবন্দরেও সতর্কতা দেখাতে বলা হয়েছে।
রোববার ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি এসব অঞ্চলে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে সকাল সাড়ে ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়।
ওই পূর্বাভাসে বলা হয়- ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চল সমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার সকালে দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু চট্টগ্রাম অঞ্চল ব্যতীত বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের অবশিষ্টাংশ থেকে বিদায় নিতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে এই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৬৬০ জন।
আজ রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে গণমাধ্যমকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৩২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৭ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১১, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০৭, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১২১, খুলনা বিভাগে ৭১ জন রয়েছেন। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ২৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২০, রংপুর বিভাগে ১৭ এবং সিলেট বিভাগে ১ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে গত এক দিনে সারা দেশে ৬৯৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৬৪৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৪২ হাজার ৪৭০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২১৪ জনের। এছাড়া গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ সমাজে বিরাজমান অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে সকলকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, প্রধান বিচারপতি রোববার শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে এক শুভেচ্ছা বার্তায় একথা বলেন।
টাঙ্গাইল কুমুদিনী কমপ্লেক্সের পূজা উদযাপন কমিটির কাছে এ শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো হয়।
শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধান বিচারপতি বলেন, আবহমান কাল হতে ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে শারদোৎসব উদযাপনের সংস্কৃতি আমাদেরকে ভ্রাতৃত্ববোধ, বহুত্ববাদ, সহিষ্ণুতা ও একত্রে পথচলার শিক্ষা দেয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই উদাহরণ একদিকে যেমন আমাদেরকে ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদার জন্য লড়াই করতে শেখায়, তেমনিভাবে আমাদের সামাজিক দায়িত্ববোধ, তথা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অধিকার সুরক্ষায় আমাদের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে- তা নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়।
শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি আরও বলেন, সমাজে বিরাজমান অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে সাম্প্রদায়িক সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে একত্রে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে, আইন পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে তিনি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে ন্যায়ের পথে থেকে যাবতীয় অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিরতিহীনভাবে কাজ করার মাধ্যমে সমাজে মানবাধিকার, শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের প্রয়াত দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার বাড়ির ঐতিহ্যবাহী পুজামণ্ডপসহ কুমুদিনী হাসপাতাল ও ভারতেশ্বরী হোমসসহ কুমুদিনী কমপ্লেক্সের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন।
প্রধান বিচারপতির পূজামণ্ডপ পরিদর্শন ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে উপস্থিত ছিলেন- টাঙ্গাইলের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ নাজিমুদ্দৌলা, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার খান, জেলা প্রশাসক শরীফা হক, পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব শরীফুল আলম ভূঁঞা ও স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন।
বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিমে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আজ রোববার সকালে একথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
যেখানে বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু চট্টগ্রাম অঞ্চল ব্যতীত বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের অবশিষ্টাংশ থেকে বিদায় নিতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।’
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের বিষয়ে বলা হয়, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আরও বলা হয়, দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুঙ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
হজযাত্রীদের প্রাথমিক নিবন্ধন আগামী ২৩ অক্টোবরের মধ্যেই শেষ করতে হবে।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগে এ সংক্রান্ত বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সৌদি সরকারের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুসারে মিনা ও আরাফায় তাঁবু নির্ধারণ ও সার্ভিস কোম্পানীর সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন কার্যক্রম ২৩ অক্টোবর থেকে শুরু হবে।
তাঁবু বরাদ্দ প্রদান করার ক্ষেত্রে আগে আসলে আগে পাবেন নীতি অনুসরণ করা হয়ে থাকে। এ কারণে ২৩ অক্টোবরের মধ্যেই হজযাত্রী নিবন্ধন শেষ না হলে মিনা ও আরাফায় কাঙ্খিত জোনে তাঁবু বরাদ্দ পাওয়া যাবে না।
তাঁবু গ্রহণ ও সার্ভিস কোম্পানীর সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনে দেরি হলে হজযাত্রীদের জামারাহ থেকে অনেক দূরে পাহাড়ী এলাকা কিংবা নিউ মিনা এলাকায় অবস্থান করতে হবে। ফলে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে প্রখর রোদ ও গরমের মধ্যে দীর্ঘপথ হাটতে হবে যা তাদের জন্য কষ্টকর হবে।
সে কারণে সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার সার্থে আগামী ২৩ অক্টোবরের মধ্যে হজগমনেচ্ছু ব্যক্তিদেরকে ৩ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।