শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২০ ভাদ্র ১৪৩২

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন ৭ অক্টোবর

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের ৮২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
৮ আগস্ট, ২০২৩ ১৮:০৯
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৮ আগস্ট, ২০২৩ ১৮:০১

আগামী ৭ অক্টোবর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের ‘সফট লঞ্চিং’ (আংশিক উদ্বোধন) হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান।

তিনি বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত তৃতীয় টার্মিনালের ৮২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। উদ্বোধনের আগে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করার পরিকল্পনা আছে। প্রতিদিন ১১-১২ হাজার কর্মী নিরলসভাবে কাজ করছেন। ৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন।’

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় এই টার্মিনালের নির্মাণকাজ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বেবিচক চেয়ারম্যান।

উদ্বোধনের কতদিন পর যাত্রীরা টার্মিনাল ব্যবহার করতে পারবেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মফিদুর রহমান বলেন, ‘উদ্বোধনের দিন পরীক্ষামূলক একটি উড়োজাহাজ এখানে চালিয়ে দেখা হবে। তবে আগামী বছরের শেষের দিকে টার্মিনালটি পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারবেন যাত্রীরা। নির্মাণকাজ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দর যাত্রীদের ব্যবহার করতে দেয়ার আন্তর্জাতিক নিয়ম নেই।’

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই টার্মিনালের নির্মাণকাজ আগামী বছরের এপ্রিলে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই আমরা চলতি বছরে কাজ শেষ করেছি। বাকি সময়ের মধ্যে বিমানবন্দর পরিচালনায় কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।’

‘নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার জন্য এবং সফট ওপেনিংকে সামনে রেখে এখানে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। নির্মাণাধীন এই টার্মিনালের ফিচারগুলো অত্যন্ত অত্যাধুনিক। টার্মিনালটি যখন যাত্রীদের জন্য খুলে দেয়া হবে, এর ডিজাইন এবং সেবা দেখে তাদের মন আনন্দে ভরে উঠবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন এই টার্মিনাল নির্মাণ হলে যাত্রীসেবা দেয়ার ধারণক্ষমতা প্রতি বছর ১৬ মিলিয়নে পৌঁছাবে। আর আমরা যদি আগের টার্মিনালটা ধরি তাহলে ধারণক্ষমতা পৌঁছাবে ২৪ মিলিয়নে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মফিদুর রহমান বলেন, ‘সফট ওপেনিংয়ের পর আমাদের কিছু বর্ধিত কাজ এখানে চলবে। তাছাড়া ব্যাগেজ হ্যান্ডেলিং, লাগেজ হ্যান্ডেলিং, লিফট ও এসকেলেটরসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ইনস্টল করতে হবে এবং পরীক্ষা করতে হবে। এসময় সিস্টেম ইন্টিগ্রেশনসহ নানা কার্যক্রম চলমান থাকবে।’

গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের অগ্রগতি নিয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের কাজ জাপান করবে বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের যেহেতু আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট পরিচালনার অভিজ্ঞতা আছে, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে কীভাবে এটি পরিচালনা করবে। তবে তাদের সঙ্গে চুক্তি হতে আগামী বছর সময় লেগে যাবে। এর মাঝে চুক্তির আগে বেবিচকের কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘যেকোনো দেশে একাধিক গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলার থাকে। তবে এটি নির্ভর করে এয়ারলাইন্সগুলোর ওপর। আমরা অপারেশন মেইনটেইন্যান্স করতে পারতাম। তখন আমাদের বাড়তি জনবল দরকার হতো। বিমানবন্দরের সেবা প্রাইভেট কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে থাকলে সেবার মান ভালো হয়।’

নতুন বিমানবন্দরে রাডার বসানো নিয়ে তিনি বলেন, ‘অক্টোবরের রাডার ওপেনিং হওয়ার কথা ছিল। নতুন রাডারের সেবা অক্টোবরে পাওয়া সম্ভব হবে। রাডার এসে গেছে। কিন্তু ওপেনিংয়ের জন্য এয়ার ট্রাফিক টাওয়ারসহ যা যা দরকার ছিল তাতে সময় লাগছে।’

পুরো রানওয়ের কাজ কখন শেষ হবে এবং কোনো রাজনৈতিক চাপ আছে কি-না এমন প্রশ্নে মফিদুর রহমান বলেন, ‘থার্ড টার্মিনালের কাজ শেষ হলে রানওয়ের কাজ হাতে নেওয়া হবে। এজন্য বাজেটের দরকার আছে। তবে তড়িঘড়ি করে থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করতে রাজনৈতিক কোনো চাপ নেই। আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব কাজ রুটিন মাফিক শেষ করতে পারব। এ বছরের শেষের দিকে কাজ শেষ হবে।’

দেশের প্রধান বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর। সে সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে আরও সাত হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ালে প্রকল্পের আকার দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির নির্মাণ শুরু হয়। খরচের বেশির ভাগ আসছে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকার কাছ থেকে। সংস্থাটি ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি দুই লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বাকি পাঁচ হাজার ২৫৮ কোটি তিন লাখ ৮৮ হাজার টাকা দিচ্ছে সরকার।


প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কের সাক্ষাৎ, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি

বৃহস্পতিবার যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস। ছবি : প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক
আপডেটেড ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০০:৪৭
বাসস

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস বৃহস্পতিবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

সাক্ষাৎকালে লুইস জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে জোরালো সহযোগিতার প্রশংসা করেন। তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকার এবং চলমান সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

আলোচনার মূল বিষয় ছিল আসন্ন জাতীয় নির্বাচন। জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়ক ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে সংস্থাটির চলমান সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

লুইস বলেন, ‘জাতিসংঘ সম্পূর্ণভাবে ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পক্ষে। এটি দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

সাক্ষাৎকালে তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘ কীভাবে সহায়তা করতে পারে তা নিয়েও আলোচনা করেন।

দুই পক্ষই সরকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্কার উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে জাতিসংঘের সম্প্রসারিত সহায়তার উপায় খুঁজে দেখেন।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন সভা এবং এই মাসের শেষ দিকে রোহিঙ্গা সম্মেলনের প্রস্তুতিও পর্যালোচনা করা হয়। উভয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা তহবিলের ঘাটতি মোকাবিলা এবং রোহিঙ্গা জনগণের জন্য টেকসই আন্তর্জাতিক সংহতি ও বাড়তি সমর্থনের জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

লুইস বাংলাদেশের সংস্কার ও রূপান্তর প্রক্রিয়ার প্রতি জাতিসংঘের অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং দেশের টেকসই উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধি অর্জনে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।


মৎস্য অধিদপ্তরের প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অধূমপায়ীদের সুরক্ষা এবং তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে তামাক বিরোধী সংগঠন তাবিনাজ (তামাক বিরোধী নারী জোট)। সভাটি আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আব্দুর রউফ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (প্রশাসন), পরিচালক (অভ্যন্তরীণ মৎস্য), প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, উপপরিচালক, সিনিয়র সহকারী পরিচালক, সহকারী পরিচালক ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ প্রায় ৪০ জন কর্মকর্তা।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আতাউর রহমান মাসুদ। তিনি তামাকজাত দ্রব্যের ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক এবং এর বহুমুখী প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তাবিনাজের পরিচালক সীমা দাস সীমু তার বক্তব্যে ধোঁয়ামুক্ত ও ধোঁয়াযুক্ত তামাকজাত দ্রব্য এবং গবেষণালব্ধ তথ্য তুলে ধরেন। তাবিনাজ কর্মী শারমিন কবীর বীণা গ্রামীণ তামাক চাষ ও এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোকপাত করেন।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ও কর্মপরিকল্পনা দেন।

সুপারিশসমূহ:
১. অফিস প্রাঙ্গণে ধূমপানের জন্য কোনো স্মোকিং জোন থাকবে না।
২. ক্যান্টিনে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হবে।
৩. দেশব্যাপী মৎস্য অধিদপ্তরের সকল অফিস প্রাঙ্গণকে শতভাগ তামাকমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
৪. সকল অফিস প্রাঙ্গণে ‘তামাকমুক্ত এলাকা’ লেখা সম্বলিত সাইনেজ প্রতিস্থাপন করা হবে।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা তামাকমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার প্রয়াসে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।


উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।


ইউরোপে পাড়ি দিতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে বাংলাদেশির মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

উত্তর আফ্রিকার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছনোর চেষ্টারত এক বাংলাদেশি মারা গেছেন। সাগর পাড়ি দিতে যে নৌকায় তিনি চড়ে বসেছিলেন, সেটি লাম্পেদুসা পর্যন্ত পৌঁছলেও ওই বাংলাদেশি পৌঁছেছেন প্রাণহীন দেহে। যাত্রাপথেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার নাম-পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

ইতালির লাম্পেদুসা উপকূলে পৌঁছনো ১০ মিটার দীর্ঘ একটি নৌকা থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করেন দেশটির কোস্ট গার্ড ও ফিন্যানশিয়াল পুলিশের সদস্যরা। ওই নৌকায় থাকা আরও ৫১ জন অভিবাসীকেও উদ্ধার করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের ধারণা, সম্ভবত অভিবাসীবাহী নৌকাটির হাইড্রোকার্বন বা জ্বালানির বিষাক্ত ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি কালা পিসানার মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন এলেই তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

যেসব অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে আছে মিসরীয়, বাংলাদেশি, ইরিত্রীয়, ইথিওপীয়, সিরীয় ও সুদানের নাগরিকরা। এদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন অপ্রাপ্তবয়স্কও আছে।

উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় ইমব্রিয়াকোলা জেলার অভিবাসনকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ওই দিন রাতে লাম্পেদুসার ফাভারোলো জেটিতে নামার পরপরই অভিবাসীরা জানান, উদ্ধারকারীরা আসার আগে তাদের একজন সঙ্গী সমুদ্রে পড়ে যান এবং তাকে আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ইতালি সরকারের নেওয়া কঠোর পদক্ষেপের কারণে দেশটিতে ২০২৪ সাল থেকে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কমেছে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।

২০২৪ সালের শুরু থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইতালিতে সমুদ্রপথে যাওয়া অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার ৯৯৯ জন। কিন্তু এ বছরের একই সময়ে তা কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৪৩ হাজার ৮৬০ জন।

তবে ২০২৩ সালে একই সময়ে রেকর্ড এক লাখ ১৪ হাজার ৮৬৭ জন অভিবাসী গিয়েছিল।

এদিকে চলতি বছর যাওয়া অভিবাসীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশিরা। ১৩ হাজার ২৭১ জন বাংলাদেশি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছেছে। এর পরই আছে ইরিত্রিয়া। দেশটির পাঁচ হাজার ৮১১ জন নাগরিক পৌঁছেছে ইতালিতে। আর এরপর আছে মিসর, পাকিস্তান, সুদান, ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার নাম।


পিএসসির নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্ন বিক্রির মূল হোতা গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) অধীনে থানা শিক্ষা অফিসার পদে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষার ‘৯০ শতাংশ কমন সাজেশন’ দেওয়ার নামে চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারক চক্রের মূলহোতাকে গ্রেপ্তারন করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি)।

সিআইডি জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার জামালপুরের মেলান্দহ থেকে প্রশ্ন ফাঁসের নামে প্রতারণা করার অভিযোগে মতিউর রহমান (৩২) নামে প্রতারক চক্রের এই মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার নাসির উদ্দিনের পুত্র।

গতকাল বুধবার সিআইডির সুপারনিউমারী অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহিদুল ইসলাম সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতারক চক্রটি আগামী ১২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য পিএসসির অধীন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার (এটিইও) পদের পরীক্ষার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘সিক্রেট সাজেশন শিট’ শিরোনামে প্রলোভনমূলক পোস্ট দেয়।

ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পোস্ট দিয়ে বলা হয়, যারা আগ্রহী তাদেরকে ৫৫০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তরসহ দেয়া হবে। যেখান থেকে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কমন পড়বে।

আগ্রহীদের অগ্রিম অর্থ প্রদান করে, প্রশ্নসেট সংগ্রহের জন্য ইনবক্সে আলাপ করতে বলা হয়। এই লোভনীয় অফার পেয়ে অনেক চাকরি প্রত্যাশী এই চক্রের সঙ্গে আলাপ করে। তাদের কাছ থেকে সর্বনিম্ন ২৮০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়ে প্রশ্ন সরবরাহ করেছে চক্রটি।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নজরে আসলে পিএসসির পক্ষ থেকে সিপিসিতে অভিযোগ করলে বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে কাজ শুরু করে। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে প্রতারক চক্রটির মূলহোতা মতিউরকে সনাক্ত করে সিআইডি জামালপুর ও জেলা পুলিশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ সময় প্রতারণায় ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ও ১টি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। যাতে তার জড়িত থাকার প্রমাণ পায় সিআইডি।

সিআইডি কর্মকর্তা আরও জানান, চক্রের অন্যান্য আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে সিআইডির অভিযান অব্যাহত

রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতকে আদালতে উপস্থাপনসহ আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

চাকরি প্রার্থীদের জন্য বাজারে এমন অনেক গাইড পাওয়া যাচ্ছে- এমন এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, বাজারে গাইড হচ্ছে শিক্ষার্থীদের ধারণা লাভের উপায়। পক্ষান্তরে আসামির কার্যক্রম হচ্ছে প্রলোভন দেখিয়ে অর্থসাৎ ও প্রতারণা।

প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির যুক্ত থাকার ফলে আগামী ১২ তারিখ পরীক্ষা হবে কি-না— এমন এক প্রশ্নের উত্তরে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (নন-ক্যাডার) দিলাওয়েজ দারদুনা বলেন, পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘটনায় পরীক্ষায় কোনো প্রভাব পড়বে না।


সাবেক আইজিপির জবানবন্দি হাসিনার দুঃশাসনের অকাট্য দলিল: চিফ প্রসিকিউটর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাজসাক্ষী হয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের জবানবন্দি শেখ হাসিনার দুঃশাসনের এক অকাট্য দলিল। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গতকাল সংবাদ সংস্থা বাসসকে বলেন, ‘চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তা অবশ্যই শেখ হাসিনার দুঃশাসনের অকাট্য দলিল।’

জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ গত মঙ্গলবার জবানবন্দি দেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

সেসময় তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তাকে ফোন করে জানান যে আন্দোলন দমনে সরাসরি প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তখন তিনি পুলিশ সদর দপ্তরে ছিলেন এবং তার সামনে ছিলেন তৎকালীন অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদার। পরে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের এই নির্দেশনা তৎকালীন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ সারাদেশে পৌঁছে দেন প্রলয় কুমার। সেদিন থেকেই মারণাস্ত্র ব্যবহার শুরু হয়।

চৌধুরী মামুন আরও জানান, এই মারণাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে অতি উৎসাহী ছিলেন ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর ও ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। এক্ষেত্রে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশ ছিল, যেকোনো মূল্যে আন্দোলন দমন করতে হবে।

সাবেক আইজিপি তার জবানবন্দিতে বলেন, শেখ হাসিনাকে মারণাস্ত্র ব্যবহারে প্ররোচিত করতেন ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান, আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম, ফজলে নূর তাপস ও মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমাতে হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার বিষয়ে জবানবন্দিতে তিনি বলেন, হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। যার পরামর্শ দিয়েছিলেন র‌্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক হারুন অর রশীদ। আন্দোলনপ্রবণ এলাকাগুলো ভাগ করে ব্লক রেইড দিয়ে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও আহত করা হয়। আন্দোলন দমনে সরকারকে উৎসাহিত করেন আওয়ামীপন্থি বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও ব্যবসায়ীরা।

জবানবন্দিতে ‘কোর কমিটি’র মিটিং বিষয়ে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতি রাতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ধানমন্ডির বাসায় ‘কোর কমিটি’র বৈঠক হত। সব বৈঠকেই আন্দোলন দমনসহ সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হত। একটি বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক করার সিদ্ধান্ত হয়।

ডিজিএফআই এই প্রস্তাব দেয় উল্লেখ করে মামুন বলেন, তিনি এর বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে পরে রাজি হন। আর সমন্বয়কদের আটকের দায়িত্ব তৎকালীন ডিবি প্রধান হারুনকে দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ডিজিএফআই ও ডিবি তাদের আটক করে ডিবি হেফাজতে নিয়ে আসে। সমন্বয়কদের ডিবি হেফাজতে এনে আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আপস করার জন্য চাপ দেওয়া হয় এবং তাদের আত্মীয়স্বজনদের ডিবিতে এনে চাপ দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সমন্বয়কদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে টেলিভিশনে বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়। এ ব্যাপারে তৎকালীন ডিবি প্রধান হারুন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন সাবেক এই আইজিপি। তিনি জানান, ডিবির তৎকালীন প্রধান হারুনকে ‘জিন’ বলে ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বেলা ১১টায় গণভবনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিরাপত্তা সমন্বয় কমিটির বৈঠক সম্পর্কেও তথ্য দিয়েছেন আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি জানান, ওই বৈঠকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, এসবির প্রধান, ডিজিএফআইয়ের প্রধান, এনএসআইয়ের প্রধানের সঙ্গে তিনিসহ মোট ২৭ জন উপস্থিত ছিলেন। জুলাই আন্দোলন দমন এবং নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। সেখানে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন তুলে ধরছিল। কিন্তু চারদিকে পরিবেশ-পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ায় বৈঠকটি মুলতবি করা হয়।

তবে ওইদিন রাতে গণভবনে আবারও বৈঠক ডাকা হয় বলেও জবানবন্দিতে জানান সাবেক আইজিপি মামুন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে শেখ রেহানা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, র‌্যাবের মহাপরিচালক ও সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মজিবুর রহমানসহ তিনিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে তৎকালীন ডিজিএফআই প্রধান ও এসবির প্রধান বাইরে অপেক্ষমাণ ছিলেন।

ওই বৈঠকে ৫ আগস্ট আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঠেকানোর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়, পুলিশ ও সেনাবাহিনী সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করবে। ওই বৈঠক থেকে সেনাবাহিনীর অপারেশন কন্ট্রোল রুমে যান বলে জবানবন্দিতে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, সেখানে (কন্ট্রোল রুম) তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, র‌্যাবের মহাপরিচালক, ডিজিএফআইয়ের প্রধান, এসবির প্রধান ও মজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ঢাকা শহরের প্রবেশমুখে কঠোর অবস্থান নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় এবং ৪ আগস্ট রাত সাড়ে ১২টায় সেনাবাহিনীর অপারেশন কন্ট্রোল রুম থেকে তারা সবাই চলে যান।

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের বিষয়ে জবানবন্দিতে তিনি জানান, সেদিন সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আমার দপ্তরে যাই। এর মধ্যে উত্তরা-যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন পথ দিয়ে ছাত্র-জনতা স্রোতের মতো প্রবেশ করতে থাকে। দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে জানতে পারি ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তিনি কোথায় যাবেন তা জানতাম না। এরপর বিকেলে আর্মির হেলিকপ্টার এসে পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে আমাকে প্রথমে তেজগাঁও বিমানবন্দরের হেলিপ্যাডে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ক্যান্টনমেন্টের অফিসার্স মেসে নিয়ে যাওয়া হয়। হেলিকপ্টারে আমার সঙ্গে এসবি প্রধান মনিরুল, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিব ও ডিআইজি আমেনা ছিলেন।

পরে হেলিকপ্টারে এডিশনাল ডিআইজি প্রলয়, এডিশনাল আইজি লুৎফুল কবিরসহ অন্যদেরও সেখানে নেওয়া হয়। পরদিন ৬ অগাস্ট আইজিপি হিসেবে তার নিয়োগ চুক্তি বাতিল করা হয় এবং ক্যান্টনমেন্টে থাকাকালে ৩ সেপ্টেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলেও জানান মামুন।

আন্দোলনের দিনগুলোর বর্ণনা দিতে গিয়ে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ২৭ জুলাই আন্দোলন চলাকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আমরা নারায়ণগঞ্জে আন্দোলনের পরিস্থিতি দেখতে যাই। পথে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে আমরা কিছুক্ষণ অবস্থান করি।

ওই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মোবাইলে একটি ভিডিও দেখান ওয়ারি জোনের ডিসি ইকবাল। ভিডিও দেখিয়ে ইকবাল বলেন যে, ‘গুলি করি, একজন মরে। সেই যায়। বাকিরা যায় না।’ পরবর্তীতে এই ভিডিও সারাদেশে ভাইরাল হয়।

২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজির দায়িত্বে ছিলেন উল্লেখ করে জবানবন্দিতে আল-মামুন বলেন, তখন পুলিশের আইজিপি ছিলেন জাবেদ পাটোয়ারী। নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ৫০ শতাংশ ব্যালট ভর্তি করে রাখার পরামর্শ শেখ হাসিনাকে এই জাবেদ পাটোয়ারী দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন।

পরবর্তীতে সরকারের পক্ষ থেকে ডিসি, এসপি, ইউএনও, এসিল্যান্ড, ওসি ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সেই নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং তারা সেটা বাস্তবায়ন করেন। যেসব পুলিশ কর্মকর্তা এই নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করেছেন, তাদের পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করা হয়।

২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত র‌্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, র‌্যাব সদর দপ্তর পরিচালিত উত্তরাসহ র‌্যাব-১ এর কার্যালয়ের ভেতরে টিএফআই সেল (টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন সেল) নামে একটি বন্দিশালা ছিল। র‌্যাবের অন্যান্য ইউনিটের অধীনেও অনেক বন্দিশালা ছিল। এসব বন্দিশালায় রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী এবং সরকারের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের আটকে রাখা হত, যা একটা কালচারে (সংস্কৃতি) পরিণত হয়েছিল।

তার ভাষ্যমতে, অপহরণ, গোপন বন্দিশালায় আটক, নির্যাতন এবং ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হত্যার মত কাজগুলো র‌্যাবের এডিজি (অপারেশন) এবং র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালকেরা সমন্বয় করতেন। আর র‌্যাবের মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে উঠিয়ে আনা, আটক রাখা কিংবা হত্যা করার নির্দেশনাগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আসত এবং এই নির্দেশনাগুলো সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের মাধ্যমে আসত বলে জানতে পারেন বলেও জবানবন্দি দেন সাবেক আইজিপি।

সেসব নির্দেশনা চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করে সরাসরি এডিজি (অপারেশন) ও র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালকদের কাছে পাঠানো হতো বলে উল্লেখ করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

ব্যারিস্টার আরমান আটক থাকার বিষয়টি তিনি আইজিপির দায়িত্ব গ্রহণের সময় জানানো হয় বলেও উল্লেখ করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেন, র‌্যাবের সাবেক ডিজি বেনজীর আহমেদ বিষয়টি আমাকে অবহিত করেন। তাকে তুলে আনা এবং গোপনে আটক রাখার সিদ্ধান্ত সরকারের ছিল।

বিষয়টি জানার পর আমি প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকের সঙ্গে কথা বলি। তিনি আমাকে বলেন, ‘ঠিক আছে, রাখেন। পরে বলব।’ কিন্তু পরে আর কিছু তিনি জানাননি। এরপর আমি কয়েকবার বিষয়টি তুলেছিলাম, কিন্তু কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমন করতে গিয়ে সরকারের আদেশে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে নৃশংস হত্যাকাণ্ড হয়েছে উল্লেখ করে জবানবন্দিতে সাবেক আইজিপি বলেন, আমি পুলিশ প্রধান হিসেবে লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী। জুলাই আন্দোলনে যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তার জন্য আমি অপরাধবোধ ও বিবেকের তাড়নায় রাজসাক্ষী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরবর্তী সময়ে আমি ট্রাইব্যুনালে স্বজন হারানোদের কান্না, আকুতি ও আহাজারি দেখেছি। ভিডিওতে নৃশংসতা দেখে অ্যাপ্রুভার হওয়ার সিদ্ধান্ত আমি যৌক্তিক মনে করছি।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে হত্যাকাণ্ডের পর আগুন দিয়ে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মত বিভৎসতা আমাকে ভীষণভাবে মর্মাহত করেছে। আমি সাড়ে ৩৬ বছর পুলিশে চাকরি করেছি। পুলিশের চাকরি খুবই ট্রিকি। সব সময় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। চাকরি জীবনের শেষ পর্যায়ে আমার দায়িত্বশীল সময়ে এসব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এর দায় আমি স্বীকার করছি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে এই গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। আমি প্রত্যেক নিহতদের পরিবার, আহত ব্যক্তি, দেশবাসী ও ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা চাইছি। আমাকে দয়া করে ক্ষমা করে দিবেন। আমার এই সত্য ও পূর্ণ বর্ণনার মাধ্যমে সত্য উদঘাটন হলে আল্লাহ যদি আমাকে আরও হায়াত (বাঁচিয়ে রাখেন) দান করেন, বাকি জীবনে কিছুটা হলেও অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাব।

এদিকে, সাবেক আইজিপির জবানবন্দি দেওয়ার পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রাজসাক্ষী হওয়া চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ক্ষমা পাবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনাল নেবেন। তিনি নিজের বিবেকের তাড়নায় অপরাধ স্বীকার করেছেন। নিজের পক্ষ থেকে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেছিলেন।

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, সাবেক আইজিপি ট্রাইব্যুনালে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, বিশ্বের কোন আদালতেই এ সাক্ষ্যকে দুর্বল প্রমাণ করার সুযোগ নেই। এটি একটি অকাট্য অপ্রতিরোধ্য সাক্ষ্য। এটি শুধু জুলাই-আগস্টের ঘটনা নয়, বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে যত গুম-খুন হয়েছে তার বিরুদ্ধে অকাট্য দলিল হিসেবেও কাজ করবে।

ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন বিএম সুলতান মাহমুদ, প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, মঈনুল করিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্য প্রসিকিউটররা।

এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। আর সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।


আজ থেকে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হবে স্বর্ণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দুই দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে আবারও স্বর্ণের দাম বেড়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৮৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটিই দেশের ইতিহাসে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন দাম সমন্বয়ের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। আজ বৃহস্পতিবার থেকেই কার্যকর হবে নতুন দাম।

স্থানীয় বাজারে বিশুদ্ধ স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সমন্বয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাজুস।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৮৩২ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭০ হাজার ৭০৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩১৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ২১ হাজার ১৬৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

এর আগে, সবশেষ গত ১ সেপ্টেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৮৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। আর ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা কার্যকর হয়েছিল গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছর মোট ৪৯ বার দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হলো, যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ৩৩ বার, আর কমেছে মাত্র ১৬ বার। ২০২৪ সালে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল মোট ৬২ বার, যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।

স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮১১ টাকায়। এ ছাড়াও ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭২৬ টাকায়।


ভোটারপ্রতি ১০ টাকা ব্যয় করতে পারবেন প্রার্থী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারপ্রতি একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ১০ টাকা ব্যয় করতে পারবেন বিধানসহ একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাব এনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন আইন মন্ত্রণালয় পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সরকারের কাছে পাঠানো সংস্কারের প্রস্তাবের সার্বিক বিষয় সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী আইন সংস্কার নিয়ে মাসখানেক ধরে দফায় দফায় পর্যালোচনা করে নির্বাচন কমিশন। এরপর আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়, সেখানে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন এসব প্রস্তাব পাঠালেও কোনটা থাকবে, কোনটা থাকবে না, তা নির্ভর করবে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের ওপর।

আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে সরকারের সায় পেলে রাষ্ট্রপতি সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করবেন।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রথমবারের মতো ফেরারি আসামিদের ভোটে অযোগ্য ঘোষণার বিধান আরপিওতে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কোনো আদালতে দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত হলে অযোগ্যতার বিধান রয়েছে বিদ্যমান আইনে।

আরপিওতে নতুন বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, যে কোনো ফৌজদারি মামলায় ফেরারি আসামি হলে অযোগ্য হবেন। অপব্যবহারের আশঙ্কা থেকে এটা করতে চাইনি। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে এটা করা হয়েছে। সামনে যদি অপব্যবহার হয়, তবে আবার এটা পর্যালোচনা করতে হবে।

এই নির্বাচন কমিশনার জানান, এবার প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছে ইসি।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ থাকলেও অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিধান রাখা হয়নি।

ভোটারপ্রতি ১০ টাকা হারে আসনের ভোটার সংখ্যার সমান ব্যয় এর সুযোগ রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে ২৫ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয়ের সুযোগ ছিল প্রত্যেক প্রার্থীর। সে বিধান বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আসনভিত্তিক ভোটার তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সব থেকে বেশি ভোটার রয়েছে গাজীপুর-২ আসনে। এই আসনের ভোটার ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৭২৬ জন। অন্যদিকে, সবচেয়ে কম ভোটারের আসন হচ্ছে ঝালকাঠি-১ আসনে। এই আসনে ভোটার ২ লাখ ১২ হাজার ১২ জন।

এবার ভোটারপ্রতি ১০ টাকা হারে ব্যয়ের সুযোগ রেখে প্রস্তাব দেওয়ায় গাজীপুরের এই আসনটিতে ভোটারের জন্য সর্বোচ্চ প্রায় ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ের সুযোগ থাকছে। এ ছাড়া ঢাকা ১৯ আসনে সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ লাখ ভোটারের জন্য ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন প্রার্থীরা।

এ নির্বাচন কমিশনার জানান, অনিয়ম হলে রিটার্নিং অফিসার একটি বা একাধিক কেন্দ্র বা পুরো আসনের নির্বাচন বাতিল করতে পারবেন।


হকি ফেডারেশনের সাবেক সহ-সভাপতির ১১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ কোটি ৯৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাবেক সহ-সভাপতি ও ব্যবসায়ী সফিউল্লাহ আল মুনিরের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বুধবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, সম্পদ অর্জনে আসামির বৈধ উৎসের পরিমাণ ৪৯ লাখ ৭৮ হাজার ৪৭৬ টাকা। অনুসন্ধানকালে আসামির নামে ১১ কোটি ৪৪ লাখ ৯০ হাজার ১২৫ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। যার মধ্যে ১০ কোটি ৯৫ লাখ ১১ হাজার ৬৪৯ টাকার সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।

দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান ইনডেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী সফিউল্লাহ আল মুনির বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সহসভাপতি ও এশিয়া কাপ হকি ২০১৭-এর টুর্নামেন্ট কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া, তিনি ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের স্থায়ী সদস্য ও হকি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।


বেবিচক চেয়ারম্যানের সাথে পাকিস্তান সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ দুপুর ১২টায় বেবিচক সদরদপ্তরে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক, বিএসপি, জিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, এসিএসসি, পিএসসি (Air Vice Marshal Md Mostafa Mahmood Siddiq, BSP, GUP, ndc, afwc, acsc, psc) এর সাথে পাকিস্তান সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালক জনাব নাদির শাফি দার (Mr. Nadir Shafi Dar) এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল পুনঃস্থাপন বিষয়ে ফলপ্রসূ মতবিনিময় হয় এবং উভয় পক্ষই এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বৈঠকে ভবিষ্যতে বিমান চলাচল খাতে প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো আরও সুদৃঢ় করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

উভয় পক্ষ আশা প্রকাশ করেন যে, বিমান চলাচল পুনঃস্থাপন হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, পর্যটন ও জনগণের পারস্পরিক যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেবিচক এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং PIA এর CEO ।


গাছের শুকনো ডাল পাতা এখন আর ফেলনা নয় মাগুরা থেকে এগুলো রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শিউলি আফরোজ সাথী, মাগুরা

একটা সময় গাছের শুকনো ডাল পাতা গাছের নিচেই পচে নষ্ট হতো , আবার গ্রামে মাটির চুলায় এগুলো জ্বালানি হিসেবে ও ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে এগুলো দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।

মানুষ নয় বিভিন্ন ধরনের পশু-পাখি যেমন কুকুর, বিড়াল, খরগোশ, ইঁদুর, গিরগিটি, সাপ ও পাখির জন্য গাছের শুকনো ডাল - পাতা এবং ঘাস রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হচ্ছে পশু পাখির বাসা সহ খেলনা, পোশাক, খাবার ইত্যাদি। আর এসব তৈরি করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মাগুরার সফল উদ্যোক্তা রহমতুল ইসলাম বিদ্যুৎ ।

ছোটবেলা থেকেই পশু পাখির প্রতি ভালবাসা এবং নিজের মধ্যে শিল্পবোধ পুষে রেখেছিলেন এই উদ্যোক্তা। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে দীর্ঘ ১৪ বছর যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে লেখাপড়া ও ব্যবসা শেষ করে ২০১৮ সালে ফিরে আসেন নিজ জেলা মাগুরার কেশব মোড়ের বাসিন্দা রহমতুল ইসলাম বিদ্যুৎ। জাপানিজ স্ত্রী ও কন্যার অনুপ্রেরণায় তৈরি করেন সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব কারখানা । জাপান -বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব কারখানাটির নামকরণ করা হয় "বোল্ড পার্টনারস লিমিটেড"।

মাগুরা- যশোর মহাসড়কের পাশে জাগলা এলাকায় ৪০ বিঘা জমির উপর গড়ে তোলেন ১০০% পরিবেশ বান্ধব এই কারখানা। নিজেদের উৎপাদিত ও সম্পূর্ণ দেশীয় পণ্য দিয়ে তৈরি পরিবেশবান্ধব এ কারখানায় কাজ করেন আড়াইশত নারী কর্মী । প্রায় ৩৫০ প্রকার প্রোডাক্ট তৈরি করা হয় এখানে। এছাড়াও আশেপাশের গ্রামের আরও তিন শতাধিক নারী ও পুরুষ কর্মী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করছেন এখানে। প্রায় পাঁচ শতধিক নারী পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এখানে । অনেক প্রতিবন্ধীও কাজ করেন এখানে। তারা ঘরে বসেই বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি করেন কারখানার কর্মীরা সেগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে আসে। রহমতুল ইসলাম বিদ্যুৎ প্রথমে সবাইকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজ শেখান। বর্তমানে এখান থেকে প্রতিবছর ৫ থেকে ৬ লক্ষ ডলারের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে । এসব পণ্য ইউরোপ আমেরিকা কানাডা জাপান সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়।

কয়েক বছর আগেও ফেলে দেয়া হতো পেঁপে গাছের নল ও পাতা। এখন সেগুলো দিয়ে তৈরি করা হয় প্রায় ৩০ প্রকার পশু ও পাখির বাসা। এইসব পণ্য তৈরি করতে লাগে বাঁশ ,পাটের দড়ি ,আম ও নিম গাছের শুকনো ডাল , পাতা,ঘাস ইত্যাদি।

এছাড়াও পেঁপে পাতা, আনারস ও আখ দিয়ে রোল বানিয়ে পশুর খাবার তৈরি করা হয়। এমনকি নীলকন্ঠ ফুল দিয়ে তৈরি করা হয় পশু পাখির পোশাক ও খাবার ।কারখানার পাশাপাশি প্রায় ২০ একর জমিতে এসব পণ্য তৈরি করার জন্য যে কাঁচামাল প্রয়োজন সেই গাছ গুলো রোপন করা হয় । পুরোপুরি চাহিদা পূরণ না হওয়ায় পাশের গ্রামগুলো থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করা হয় ।এসব পণ্য তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছে মাগুরা সদর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ,কেচুয়া ডুবি, জাগলা ,টিলা ,ভাবনহাটি ও বড়ষোলই গ্রামের মানুষজন।

সকাল ৭ঃ৩০ মিনিটে কারখানায় প্রবেশ করে কিছু নিয়ম মেনে কাজ শুরু করতে হয়। প্রথমে ব্যায়াম করে মিটিংএ যোগ দিতে হবে। তারপর মাস্ক পোশাক এবং ক্যাপ পরিধান করে হাতের ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে কারখানায় প্রবেশ করতে হয় । যার যার ধর্ম সুন্দরভাবে পালন করার ব্যবস্থা আছে। এখানে পর্যাপ্ত সিকিউরিটির ব্যবস্থা আছে। বিভিন্ন ধরনের দেশি-বিদেশি কুকুর , বিড়াল, পুকুর ভরা মাছ বিভিন্ন জাতের হাঁস ,মুরগি ,ছাগল ও গরু পালন করা হয় । এই কারখানার মালিক এবং শ্রমিকদের মধ্যে যথেষ্ট সুসম্পর্ক রয়েছে। সুবিধা বঞ্চিত নারীরা কারখানায় কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছে । বাইরে থেকে আসা শ্রমিকদের যাতায়াতের খরচ প্রতিদিন দিয়ে দেয়া হয় ।এছাড়া কেউ ওভারটাইম করলে তার অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করে দেয়া হয়।

কারখানার নারী কর্মী মেরিনা জানান , এখানে কাজ করে আমাদের সংসার খুব ভালোভাবেই চলে যায় এতে আমরা অনেক খুশি।

টিলা গ্রামের সাপ্লাইয়ার সৈয়দ আলী ও বিল্লাল হোসেন মোল্লা বলেন, ৮ থেকে ১০ প্রকার প্রোডাক্ট এ কারখানায় সাপ্লাই দেই তা দিয়ে আমাদের আয় ভালোই হচ্ছে।

ষাট ঊর্ধ্ব নারী ঝরনা বেগম বলেন, যা আয় করি তা দিয়ে ভালোভাবেই সংসার চলে যাই ইনশাল্লাহ। এছাড়া ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াও করাতে পারি। আমি ঘাস দিয়ে পাখির বাসা তৈরি করি এগুলো বিদেশে বিক্রি হয়।

গীতা রানী মল্লিক জানান, আমাদের কারখানায় সকালে এসে পোশাক পড়তে হয় ব্যায়াম করতে হয় এখানে ৮ ঘন্টা ডিউটি করি ওভারটাইম থাকলে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে দেয়া হয় ।আমাদের মালিক আমাদেরকে ভালো চোখেই দেখেন এছাড়া যাতায়াতের জন্য ভাড়া দিয়ে দেন।

পুরুষকর্মী তাওহিদ ইসলাম জানান , কম্পানির নিয়ম কানুন অনেক সুন্দর আমরা সকালে আসি ৮ ঘন্টা কাজ করি, আলাদা পোশাক পড়ে কারখানায় প্রবেশ করি।

সফল উদ্যোক্তা রহমতুল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন , কুকুর, বিড়াল ,খরগোশ ,ইঁদুর ,সাপ ,গিরগিটি ,সহ বিভিন্ন প্রাণীর খাবার পোশাক বাসা ও খেলনা প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক প্রোডাক্ট তৈরি করা হয় যা ১০০% প্রকৃতি থেকে নেয়া। পণ্যের গুণগত মান ঠিক থাকায় বছরে প্রায় একশত কনটেইনার পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। বিশ্বে পোষা প্রাণীর খাবার পোশাক ও খেলনার বাজার প্রায় ১৪০ বিলিয়ন ডলারের। তৈরি পোশাকের বাইরে এই খাতে নজর দেওয়া গেলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসবে দেশে দারিদ্রতা কমবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের দারিদ্রকে বিক্রি করি না আমরা স্কিল বিক্রি করি ।

কারখানার শ্রমিকরা মালিকের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন ,এমন উদ্যোক্তা বাংলাদেশে বৃদ্ধি পেলে একদিকে যেমন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে তেমনি বৈদেশিক আই ও বৃদ্ধি পাবে ।


সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায় বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১৪ (এসডিজি) অর্জনের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণের একমাত্র উপায়।

আজ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ আহ্বান জানান।

তিনি আজ জাপানের টোকিওতে সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশন ভবনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় ঢাকায় তার বাসভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য প্রদানকালে একথা বলেন।

‘ওশেন ডিকেড ফিফথ ফাউন্ডেশনস ডায়ালগ হাই-লেভেল রাউন্ডটেবল উইথ অ্যাম্বাসেডরস, এক্সপার্টস অ্যান্ড প্র্যাকটিশনার্স’ সভার “ড্রাইভিং ওশেন লিডারশিপ অ্যান্ড ইনোভেশন: অ্যাডভান্সিং গভার্নেন্স, ব্লু ইকোনমি, অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স টু অ্যাচিভ থার্টি বাই থার্টি” শীর্ষক এক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে প্লাস্টিক দূষণে নবম অবস্থানে রয়েছে, যার বড় অংশই আসে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে। প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় চলমান বৈশ্বিক চুক্তিতে ভৌগোলিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য বিশেষ বিধান থাকা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, জাহাজভাঙা শিল্প বাংলাদেশের উপকূলের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে হংকং কনভেনশনকে তিনি “অপর্যাপ্ত” বলে অভিহিত করেন।

উপদেষ্টা বলেন, সাগর ও মহাসাগর রক্ষায় বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব ও বহুমুখী সহযোগিতা জোরদার করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১৪ (এসডিজি) অর্জনের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণের একমাত্র উপায়।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের অর্থনীতি, আঞ্চলিক যোগাযোগ ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এ ছাড়া সরকার ইতোমধ্যে ‘অ্যাসেসমেন্ট অব কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন বায়োডাইভার্সিটি রিসোর্সেস অ্যান্ড ইকোসিস্টেম’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যার মাধ্যমে জাতীয় ডাটাবেজ, সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ প্রটোকল তৈরি হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও এর প্রভাব বিষয়ে গবেষণাও সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি বাংলাদেশের সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের অনন্য সম্পদ তুলে ধরে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা একই সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রজাত মাছের বিপুল সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের সামুদ্রিক মাছের সম্পদ যথাযথভাবে মূল্যায়িত হয়নি।

আন্তর্জাতিক অংশীদাররা চাইলে বাংলাদেশে টেকসই সীফুড প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগ করতে পারেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সতর্ক করে বলেন, যদি বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাবে। এতে লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। একই বিপদে রয়েছে বিশ্বের ৫২টি ছোট দ্বীপরাষ্ট্র। তাই বৈশ্বিক সংহতি এখন সময়ের দাবি।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট আতসুশি সুনামি, জাপানে নরওয়ে দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিন ইগ্লুম ও ইউনেস্কো-আইওসি’র চেয়ার অধ্যাপক ইউতাকা মিচিদা, চেয়ার প্রমুখ।


যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জেনেভায় জাতিসংঘের দপ্তরগুলোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলামকে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়ামের পররাষ্ট্র সচিব পদে নিয়োগের পর থেকে এই পদটি খালি ছিল।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। রাষ্ট্রদূত আরিফুল ইসলাম ইতোমধ্যে জেনেভা থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে যোগদান করেছেন।

গত বছরের জুনে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হয়ে জাতিসংঘের জেনেভা কার্যালয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। এর আগে শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তারেক মো. আরিফুল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিসিএস (পররাষ্ট্র ক্যাডার) ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা তারেক মো. আরিফুল ইসলাম ১৯৯৮ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন।

তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে পুরকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটি থেকে কূটনীতি ও বাণিজ্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, আঞ্চলিক সহযোগিতা, মানবাধিকার ও অভিবাসন বিষয়ে তার বিশেষ আগ্রহ রয়েছে।

পেশাগত জীবনে আরিফুল ইসলাম নিউইয়র্কে জাতিসংঘের স্থায়ী মিশনে বাংলাদেশের উপস্থায়ী প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনেও কাজ করেছেন। বাংলাদেশে সর্বশেষ ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মহাপরিচালকের (দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগ) দায়িত্ব পালন করেছেন।


banner close