অবশেষে চালু হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। সেতু বিভাগের পরিকল্পনা অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হতে পারে। সেই লক্ষ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার উড়াল সড়কের শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। এই পথে বসে গেছে কার্পেটিং। চলছে রোড মার্কিং কাজ। যান চলাচলে প্রস্তুত হচ্ছে উড়াল সড়ক।
প্রকল্পের উদ্বোধনের বিষয়ে জানতে চাইলে সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের সারসংক্ষেপ শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে প্রথম থেকেই টোল দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।’
বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে তিন ভাগে। এর মধ্যে মূল উড়াল সড়কের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। তা ছাড়া ২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৩১টি র্যাম্প আছে উড়াল সড়ক থেকে বিভিন্ন জায়গার ওঠা-নামার জন্য। প্রথম ধাপে বিমানবন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত, দ্বিতীয় ধাপে বনানী রেলস্টেশন থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত কাজ করা হচ্ছে। আর তৃতীয় ধাপে মগবাজার লেভেল ক্রসিং থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত নির্মাণকাজও পুরোদমে শুরু হয়েছে।
প্রকল্প এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আগামী মাসে উড়াল সড়কের একাংশ চালু করতে প্রকল্পের কাজ বেশ জোরেশোরে চলছে দিন-রাত। বিশেষ করে কাওলা, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও ও ফার্মগেট অংশে। এই অংশে সাড়ে ১১ কিলোমিটার পথের কাজ প্রায় শেষ। এখন টুকিটাকি ফিনিশিং কাজ হচ্ছে। পুরো পথে বসে গেছে ল্যাপ পোস্ট। রোড মার্কিং ও রোড সাইন দেয়ার কাজ চলছে। ছয়টি টোলপ্লাজার কাজ শেষ। এই অংশে উড়াল সড়ক থেকে ওঠা-নামার জন্য প্রায় ১৬টি র্যাম্প আছে। সেগুলো কাজ প্রায় শেষ। তবে র্যাম্পের কিছু কাজ বাকি আছে, সেগুলো করা হচ্ছে। এই মাসের মধ্যে সব কাজ শেষ করার টার্গেট আছে প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের।
প্রকল্পের অগ্রগতির নথি বলছে, প্রথম ধাপের বিমানবন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ। দ্বিতীয় ধাপের বনানী রেলস্টেশন থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ। আর তৃতীয় ধাপে মগবাজার লেভেল ক্রসিং থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৯ শতাংশ কাজ হয়েছে। ফলে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬৫ শতাংশ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘শেষ মুহূর্তের কিছু ফিনিশিং কাজ আছে, সেগুলোই চলমান আছে। এই মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে সব কাজ। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে সেপ্টেম্বরের যেকোনো সময় উদ্বোধন হতে পারে। তবে আমাদের দিক থেকে আমরা প্রস্তুত আছি উড়াল সড়কে যানবাহন চলাচলের জন্য। প্রকল্পের বাকি অংশের কাজও দ্রুতগতিতে চলছে। আমাদের টার্গেট ২০২৪ সালের জুনে তেজগাঁও থেকে মগবাজার লেভেল ক্রসিং হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত পুরো পথ চালু হয়ে যাবে।’
এদিকে প্রকল্পের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশে ওঠা-নামার ১৬টি র্যাম্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে। তবে সেপ্টেম্বরে উদ্বোধনের পর সবগুলো র্যাম্প চালু হবে না। যেগুলোর প্রয়োজন হবে, সেসব র্যাম্প খুলে দেয়া হতে পারে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, একটি র্যাম্প চালাতে অনেক খরচ হবে। যদি ওই পথে ট্রাফিক না থাকে, তাহলে র্যাম্প খুলে দিয়ে লাভ হবে না।’
আংশিক চালু হলে কতটা সুফল মিলবে
রাজধানীর যানজট নিরসনে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সড়কে চলাচলে নানা বিড়ম্বনা থেকে মুক্ত হয়ে বিরামহীনভাবে যান চলাচলের সুযোগ থাকবে উড়াল সড়কে। ফলে খুব কম সময়ে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট চলাচল করা যাবে। তবে এখন দেখার বিষয় আংশিক চালু হলে কতটা স্বস্তি মেলে এই পথে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এক্সপ্রেসওয়ে আংশিক চালু করে তার সুফল মিলবে না। এ ধরনের উড়াল সড়ক একটি অটোবায়াস সমাধান। ছোট ছোট গাড়ি বা ব্যক্তিগত গাড়ির সমাধান হতে পারে। কিন্তু রাইডশেয়ারিং কার এবং গণপরিবহন টোল দিয়ে কখনো উঠবে না এক্সপ্রেসওয়েতে। কিন্তু সড়কের বেশির ভাগ অংশজুড়ে চলে এসব যানবাহন। ফলে এটি কিন্তু গণপরিবহনের সুবিধা দিতে পারছে না। নগর উন্নয়নের দর্শনের সঙ্গে এক্সপ্রেসওয়ে যায় না। যানজট নিরসনে যে উপযোগিতা নিরসন করার কথা, এই এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে তা সম্ভব না।’
এক প্রকল্পে ১৩ বছর শেষ
ঢাকা শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য ২০১১ সালের জুনে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের উদ্বোধন হয়েছিল। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) আওতায় প্রকল্পটির ২০১৬ সালে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু উড়াল সড়কের নকশা বদল, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা, অর্থের সংস্থানসহ নানা জটিলতায় নির্মাণকাজ শেষ করার সময়সীমা পাঁচবার পিছিয়েছে। প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে উড়াল সড়কের নির্মাণকাজ শেষ করার প্রথম সময়সীমা ছিল ২০১৭ সাল। সেটি পিছিয়ে হয় ২০১৮। তারপর আবার পিছিয়ে হয়েছে ২০২২ সাল। এই সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার চতুর্থবার সে সময়সীমা পিছিয়ে দাঁড়ায় ২০২৩ সালের জুনে। তবে সর্বশেষ পুরো প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ করার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে শুরুতে উড়াল সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকায়। এরপর কাজের ধীরগতির সঙ্গে বাড়তে থাকে প্রকল্পের মেয়াদ। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নে সর্বশেষ ট্যাক্স, ভ্যাটসহ প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৬ কোটি ৭০ লাখ ৭ হাজার ১৫৩ টাকা।
২১ বছর টোল আদায় করবে বিনিয়োগকারী
ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই কোম্পানি লিমিটেড হচ্ছে বিনিয়োগকারী কোম্পানি। এতে ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের ৫১ শতাংশ, চায়না শানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের (সিএসআই) ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
প্রকল্পের সূত্র বলছে, প্রকল্পটি পিপিপি আওতায় বিনিয়োগকারীর সঙ্গে সরকারের চুক্তি হয়েছে ২৫ বছরের। সাড়ে তিন বছর নির্মাণকাজ শেষে বাকি সাড়ে ২১ বছর টোল আদায় করবে বিনিয়োগকারী অংশীদার প্রতিষ্ঠান। তারপর এর মালিকানা পুরোপুরি বুঝে পাবে সরকার।
এক্সপ্রেসওয়েটিতে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মতো দুই ও তিন চাকার কোনো যানবাহন এই উড়াল সড়কে চলতে পারবে না। একই সঙ্গে টোল ছাড়া কোনো যানবাহন উড়াল সড়কে উঠতে পারবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পবিত্র হজের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। এখন হাজিরা সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশি হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট। যা চলবে ১০ জুলাই পর্যন্ত।
মিনায় শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপ এবং কাবা ঘরে ফরজ তাওয়াফ শেষে মিনায় ফিরছেন হাজিরা। ফেরার পথে অনেকে পথ হারিয়ে আশ্রয় নেন মক্কার হজ মিশনে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে এ বছর ৮৭ হাজার ১৫৭ জন হজ পালন করেছেন। এর মধ্য ১৯ জন হজ যাত্রী মৃত্যুবরণ করেন। চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৪৩৬টি ভুয়া হজ এজেন্সি বন্ধ করে দিয়েছে এবং ৪৬২ জনকে আইন ভঙ্গ করায় গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে চলতি বছর পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবে গিয়ে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ১৮৮ বাংলাদেশি। এ ছাড়া ১৯ জন দেশটির সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এবার হজ অনুষ্ঠিত হয় ৫ জুন। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট ছিল ২৯ এপ্রিল আর হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার শেষ ফ্লাইট ছিল ৩১ মে।
ভারতসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এসব দেশে ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা এই সতর্কবার্তা জারি করে।
এতে বলা হয়, অমিক্রনের নতুন সাব ভেরিয়েন্ট এলএফ.৭, এক্সএফজি, জেএন-১ ও এনবি ১.৮.১ এর সংক্রমণ বিভিন্ন দেশে বাড়ছে, যা আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের সকল স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি জোরদার করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদের স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, দেশে প্রবেশপথে থার্মাল স্ক্যানার ও ডিজিটাল হ্যান্ড হেল্ড থার্মোমিটারের মাধ্যমে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করতে হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিই মজুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জনসচেতনতা বাড়াতে করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রচার করতে হবে এবং জনগণকে ভারতসহ সংক্রমণপ্রবণ দেশগুলোতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে, আইসিডিডিআরবির গবেষকেরা জানান, করোনার আরও দুটি নতুন ধরন— এক্সএফজি ও এক্সএফসি শনাক্ত হয়েছে, যেগুলো অমিক্রন জেএন-১ এর উপধরন এবং সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি। এই পরিস্থিতিতে জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, দিনে সাতবার বা প্রয়োজনমতো অন্তত ২৩ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নাক-মুখ ঢাকতে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু বা কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে অন্তত তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
সন্দেহজনক রোগীদের বিষয়ে বলা হয়েছে, কেউ অসুস্থ হলে তিনি যেন ঘরে থাকেন এবং প্রয়োজন হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করেন। রোগীকে অবশ্যই মাস্ক পরতে বলা হয়েছে এবং জটিল পরিস্থিতিতে আইইডিসিআরের হটলাইনে (০১৪০১-১৯৬২৯৩) যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সময়মতো ব্যবস্থা গ্রহণ ও সর্বসাধারণের সতর্কতা বজায় রাখার মাধ্যমেই এই নতুন সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো সম্ভব বলেও উল্লেখ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রবিবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে কারো মৃত্যু হয়নি। এই সময়ের মধ্যে পাঁচ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।
সোমবার (৯ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন আরও পাঁচজন।
এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৪৭ জনে। আর মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৫০০ জনে।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ সময়ে শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ২০ শতাংশ। মোট করোনা পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এ নিয়ে করোনায় সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৬ জনে।
চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আমিরাতের একটি ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, এই সফরে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি রাজা চার্লসের হাত থেকে গ্রহণ করবেন ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’।
সফরসঙ্গী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।
এ ছাড়া, দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন করে পুনরুজ্জীবিত এবং অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ার লক্ষ্যে এই সফর অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর। প্রধান উপদেষ্টা ৯ জুন ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন এবং ১৪ জুন দেশে ফিরবেন।’
সম্প্রতি ভারতে করোনায় সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এতে দেশটিতে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৪৯১ জনে পৌঁছেছে। তাই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আগাম সতর্কতা হিসেবে ভারত থেকে যেসব রুটের ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করে, সেসব ফ্লাইটের সব যাত্রী স্ক্রিনিং শুরু করেছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে ভারতের চেন্নাই, কলকাতা, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ, মুম্বাই থেকে ঢাকায় ফ্লাইট আসে। এই ফ্লাইটগুলো পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ গণমাধ্যমকে জানান, পার্শ্ববর্তী দেশে করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও জোরদার করা হয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা। গত ২ জুন থেকেই বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ। ভারত থেকে আগত যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত সংখ্যত মাস্ক এবং পিপিই রাখা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে। পাশাপাশি বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট থেকে আগত যাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রবেশপথে বসানো হয়েছে থার্মাল স্ক্যানার।
বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত নির্দেশনা ও সতর্কতা প্রচারও চলছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এ সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলো কার্যকর থাকবে।
ভারতের স্বাস্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে কেরালায়। সেখানে বর্তমান সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৯৫৭ জন। অপরদিকে গুজরাটে এই সংখ্যা ৯৮০ জন, পশ্চিমবঙ্গে ৭৪৭ জন, দিল্লিতে ৭২৮ জন কর্ণাটকে ৪২৩ জন এবং মহারাষ্ট্রে ৬০৭ জন।
সতর্কতার অংশ হিসেবে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগ এবং শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ও সামান্দা ইউনিয়নে বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড ভোলা বেইস ও পুলিশের সমন্বয়ে পৃথক দুটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালে ২৭৪ পিছ ইয়াবা ও ১৫ গ্রাম গাঁজা সহ এক মাদককারবারী কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ সোমবার মধ্যরাত ৩টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোলা সদর উপজেলার সামান্দা ইউনিয়নে সামান্দা গ্রাম থেকে ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৫ শত টাকা মূল্যের ২৭৪ পিস ইয়াবা ও ১৫ গ্রাম গাঁজা এবং নগদ ১২ হাজার ৮ শত ৪৫ টাকাসহ মাদক ব্যবসায়ী আব্বাসকে (৩৮) গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তী আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য আসামীকে জব্দকৃত সকল আলামত সহ ভোলা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড দক্ষিণ জোন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড। উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং চোরাচালান রোধে অনেকাংশে উন্নত হয়েছে। সীমান্তে চোরাচালান রোধে কোষ্টগার্ড কতৃক ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অনভিজ্ঞতার কারণে অনেকে চামড়ায় দেরিতে লবণ দিয়েছেন। এতে করে চামড়া নষ্ট হওয়ায় এবং মান কমে যাওয়ায় অনেকে কাঙ্ক্ষিত দাম পাননি বলে মন্তব্য করেছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
আজ সোমবার সাভার চামড়া শিল্পনগরী পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় চামড়ার দর কমে যাওয়া নিয়ে আড়তদার ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আদিলুর জানান, এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৮ হাজার পিস চামড়া এসেছে শিল্পনগরীতে। ঢাকায় আছে সাড়ে ৭ লাখ পিস।
চলতি বছর ৩০ হাজার টন লবণ বিতরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোভাবেই যাতে চামড়া না পঁচে বা দাম পড়ে না যায় তাই সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও অনভিজ্ঞতার কারণে কিছু চামড়া নষ্ট হয়েছে, যদিও এর পরিমাণ কম। যাদের চামড়া নষ্ট হয়েছে এবং মান কমে গেছে তারা দাম কম পেয়েছেন।’
তিনি দাবি করেন, ‘চামড়ায় লবণ দেওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। অনেকেই দেরিতে লবণ দিয়েছেন, যার প্রভাব চামড়ার মানে পড়েছে। ফলে দামও কমেছে অনেক ক্ষেত্রে। তবে সরকারের তৎপরতার কারণে এ বছর খুব অল্পসংখ্যক চামড়াই নষ্ট হয়েছে।’
এ ছাড়া, গবাদি পশুর ল্যাম্পি স্কিন রোগের কারণে চলতি বছর ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে বলেও উল্লেখ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমিয়েছেন।
গতকাল রোববার (৮ জুন) সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে একটি ফ্লাইটে অনেকটা গোপনে তিনি সিঙ্গাপুর গেছেন বলে জানা গেছে।
আজ সোমবার সকালে ইমিগ্রেশন পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। শেখ কবির হোসেনের বিরুদ্ধে টাকা পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সরকারি বড় বড় পদ দখল করে রাখার অভিযোগ রয়েছে।
শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাবান একটি চক্রের সহায়তায় শেখ কবির বিমানবন্দর ছাড়তে সক্ষম হন।
২০১১ সাল থেকে বিমা কোম্পানির মালিকদের সমিতি বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) একটানা সভাপতি ছিলেন শেখ কবির হোসেন। আওয়ামী লীগের শাসনামলে শেখ হাসিনার চাচা হিসেবে শেখ কবিরের পরিচিতির কারণে দুই বছর মেয়াদি বিআইএর কমিটির কোনো স্বাভাবিক নির্বাচন হতো না। এ ছাড়া শেখ কবির বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি ও বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সদস্য এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মেম্বার অব গভর্নরস, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যাসোসিয়েশন, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) চেয়ারম্যান ছিলেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, তদন্তে দোষী হলে আইনের আওতায় নেওয়া হবে, কেউ নির্দোষ হলে কেন সাজা দেব?
আজ সোমবার ডিএমপির যাত্রাবাড়ী থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘ঈদকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি, যাতে করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। রাস্তাঘাটে দু’একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। দু’একটা চুরি-চামারি হচ্ছে, তবে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাই ঈদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আমি মোটামুটি খুশি।’
একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি বিদেশে গেছেন এবং তিনি দেশেও ফিরে এসেছেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি– এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেকে বলেছেন যে কিছু কিছু মামলা আছে যেগুলোর কোনো তদন্ত হয়নি। তদন্তে যারা দোষী হয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আপনারাই (সাংবাদিক) সবসময় বলেছেন যেন নির্দোষরা কোনো অবস্থায় সাজা না পায়। এজন্য আমাদের তদন্তটা করতে দিন, যদি তদন্তে কেউ দোষী হয় তাহলে কাউকেই আইনের বাইরে রাখা হবে না, তাকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব।’
ফৌজদারি মামলার তদন্তে দোষী বা অপরাধ মোটামুটি প্রমাণিত না হওয়ার আগ পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘নির্দোষ একজন মানুষকে কেন সাজা দেব?’
থাইল্যান্ডে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
রবিবার (৮ জুন) দিবাগত রাত ১টা ২৫ মিনিটে থাই এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। রাত তিনটার দিকে তিনি বিমানবন্দর ছাড়েন বলে বিমানবন্দরের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র ইউএনবিকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, ৮ মে গভীর রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি ।
আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলাটি দায়ের হয়। মামলাটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ওবায়দুল কাদেরের নামও রয়েছে।
আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে (প্রশাসন) প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এছাড়া এই ঘটনায় ইমিগ্রেশন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) তাহসিনা আরিফকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে মো. আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের সদর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. আজহারুল ইসলাম ও এসবির এটিএসআই মো. সোলায়মাকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১ সিপিএসসি নরসিংদীর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল গত ৯ জুন সোমবার রাত ৩ ঘটিকার সময় নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলায় এক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। র্যাব-১১ সিপিএসসি নরসিংদী এর অভিযানে শিবপুর থানাধীন কারারচর এলাকার এপেইস ফিলিং স্টেশনের সন্নিকটে একটি প্রাইভেটকার আটক করে এবং এর ভিতর থেকে ৯ হাজার ৭শত ৫০ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট, দুটি মোবাইল সেট ও মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার আটক করে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মো: মানিক মিয়া (৪৮) পিতা: মো: আব্দুল বারিক সাং-চাউরা, থানা-বিজয়নগর-জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
র্যাব-১১ সিপিএসসি নরসিংদী ক্যাম্প কমান্ডার জুয়েল রানা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ধৃত: আসামী মানিক মিয়া জানায়, সে দীর্ঘদিন যাবত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীর নিকট সরবরাহ করে আসছিলো। এব্যাপারে শিবপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দেশের ৬ অঞ্চলে মৃদু তাপপ্রবাহ বইছে। রাজশাহী, রংপুর, খুলনা বিভাগসহ ফেনী ও ময়মনসিংহ জেলায় প্রচন্ড গরম। এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টা এমন অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। একইসঙ্গে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রাও সামান্য বাড়তে পারে। ফলে দেশজুড়ে গরমের অনুভূতি আরও কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ সোমবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
এমন অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বুধবার (১১ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। তবে ওইদিন সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। ওইদিনও সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। একইসঙ্গে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রাও সামান্য কমতে পারে।
অন্যদিকে, চলতি সপ্তাহের শেষদিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই উৎসব ত্যাগ, উদারতা ও ঐক্যের চেতনায় মানুষকে একত্রিত করে—এমন অভিন্ন বার্তা উঠে এসেছে দুই নেতার শুভেচ্ছাবার্তায়।
গতকাল রোবরার অন্তর্বর্তী সরকারের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে উভয় নেতার শুভেচ্ছাবার্তা প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার ( ৬ জুন) মোদিকে পাঠানো চিঠিতে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার এই চেতনা আমাদের দুই জাতিকে জনগণের কল্যাণে একসঙ্গে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে বলে আমি আত্মবিশ্বাসী।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদুল আজহা হচ্ছে এমন একটি সময়, যা মানুষকে আত্মবিশ্লেষণের সুযোগ দেয় এবং বৃহত্তর মানবিকতার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে।’
প্রধানমন্ত্রী মোদির চিন্তাশীল বার্তা, আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং ঈদের অভিনন্দন তাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।
চিঠিতে তিনি আরও লেখেন, ‘আমি আপনাকে ও আপনার মাধ্যমে ভারতের জনগণকে এই পবিত্র উপলক্ষে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতে চাই।’
এ ছাড়াও, মোদির সুস্বাস্থ্য ও সুখ এবং ভারতের জনগণের জন্য শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন অধ্যাপক ইউনূস।
এর আগে, ৪ জুন বাংলাদেশের জনগণ ও অধ্যাপক ইউনুসকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানান নরেন্দ্র মোদি।
তিনি বলেন, ‘এই পবিত্র উৎসব ভারতের সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশব্যাপী ইসলাম ধর্মাবলম্বী কোটি কোটি মানুষের মধ্যে বিপুল আনন্দ ও উৎসাহের সঙ্গে এই উৎসব উদযাপিত হয়।’
শুভেচ্ছাবার্তায় তিনি আরও বলেন, ‘এটি আমাদের ত্যাগ, সহানুভূতি ও ভ্রাতৃত্বের চিরন্তন মূল্যবোধের কথা মনে করিয়ে দেয়, যেটি একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গঠনের জন্য অত্যন্ত জরুরি।’
এ ছাড়া, বার্তায় তিনি অধ্যাপক ইউনূসের সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনাও করেন।