বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রাজনৈতিক সমঝোতার পথও খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র

কংগ্রেসম্যান এড কেইস (বাঁয়ে) ও রিচার্ড ম্যাকরমিক। ছবি: সংগৃহীত
কূটনৈতিক প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
কূটনৈতিক প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০৭

বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতার সুযোগ আছে কি না, তা খুঁজে দেখার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলেছে সফররত মার্কিন কংগ্রেসের দুই সদস্য এড কেইস ও রিচার্ড ম্যাকরমিক।

বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে প্রায় বছরখানেক ধরেই বিদেশি কূটনীতিকদের, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা অত্যন্ত সরব। দীর্ঘদিন ধরে তারা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলে আসছে তারা। তবে এবার রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়টি সামনে আনল যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন এক মোড় নিয়ে আসবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বৈশ্বিক বিভিন্ন উদ্যোগ, আগ্রহ ও তৎপরতা যেভাবে বাড়ছে তাতে সমঝোতার বিষয়ে এ ধরনের চাপ বাড়তে থাকবে বলেও মনে করা হচ্ছে। যদিও সরকার বারবারই বলে আসছে তারা কোনো ধরনের চাপ বোধ করছে না। বরং বারবারই সরকারের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দেয়া হচ্ছে।

গতকাল রোববার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রথমবারের মতো ঢাকায় আসা দুই মার্কিন কংগ্রেস সদস্য এড কেইস ও রিচার্ড ম্যাকরমিক। বৈঠকে তারা জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা জানতে চান। নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমঝোতার পথ আছে কি না, সেটিও জানতে চেয়েছেন তারা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

এমনকি বাংলাদেশ চীনের খপ্পরে পড়েছে কি না, তা-ও মার্কিন কংগ্রেসের দুই সদস্য জানতে চান।

রাজনৈতিক সমঝোতা নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (কংগ্রেস সদস্য) বলেছে, তোমাদের কোনো সমঝোতার পথ আছে কি না ওদের (বিএনপি) সঙ্গে। আমরা বলেছি, তাদের যে দাবি, সরকারের পদত্যাগ, ওটাতে সমঝোতার কোনো স্কোপ নেই।’

মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের কাছে তাদের দেশে নির্বাচন উপলক্ষে সরকারের পতন হয় কি না, সে প্রশ্ন রেখেছেন আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় তোমাদের দেশে (যুক্তরাষ্ট্র) কি সরকারের পতন হয়? নিশ্চয়ই না। এমন দাবি থাকলে তোমরা কি আলোচনায় বসবে? ওগুলোর প্রশ্নই উঠতে পারে না। আমরা আমাদের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন করব।’

দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিকতা থাকলে সুষ্ঠু ও সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন সম্ভব বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মোমেন বলেন, যতগুলো দল আছে, সব দল যদি নির্বাচনে যোগদান করে, তারা যদি আন্তরিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন চায়, তাহলে নির্বাচন সহিংসতা ছাড়া হবে। সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন হবে।

সরকার বা নির্বাচন কমিশন চাইলে সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনের বিষয়ে ‘গ্যারান্টি’ দেয়া যায় না বলে উল্লেখ করেন আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘তাদের (দুই কংগ্রেস সদস্য) কাছে বিভিন্ন লোকজন বলেছে, বাংলাদেশ একটি ভয়ংকর জায়গা। এরা চীনের খপ্পরে পড়ে গেছে। চীনের গোলাম হয়ে গেছে। এখানে অশান্তি আর অশান্তি। পুলিশ সব লোকজনকে ধরে মেরে ফেলছে। এই ধরনের একটি ধারণায় ভয় তাদের। তবে এসব কোনোটিই সত্য নয়।’

নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে, এ বিষয়ে কংগ্রেস সদস্যরা আশ্বস্ত হয়েছেন কি না, সে প্রশ্নের উত্তরে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সেটি তাদের জিজ্ঞেস করুন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, চীন নিয়ে ওরা (কংগ্রেসম্যানরা) বলেছে, তোমরা চীনের ভেতরে চলে যাচ্ছ। আমরা বলেছি, ‘চীনের ঋণের ফাঁদে যাচ্ছি না। আমরা চীন থেকে ঋণ নিয়েছি, সেটা এক পার্সেন্টের মতো। এটা কোনো বড় ইস্যু না।’

ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে যে আউটলুক তৈরি করেছি, সেটি বলেছি। আমরা চাই, ফ্রি, ফেয়ার, ইনক্লুসিভ ও সিকিউর ইন্দো-প্যাসিফিক। ফ্রি নেভিগেশন চাই। সবাই সমৃদ্ধ হবে, এমন ইন্দো-প্যাসিফিক আমরা চাই।’

রোহিঙ্গাদের অ্যাবজর্ব করে নেয়ার পরামর্শ

গত বছর বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ৬২ জন রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নেয়ার বিষয়ে দেশটির আগ্রহ নেই। বরং তাদের এ দেশের জনসংখ্যার সঙ্গে মিলিয়ে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই কংগ্রেসম্যান।

মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (কংগ্রেসম্যানরা) বলেছেন, রোহিঙ্গাদের কাজকর্ম নেই। তোমরা এদের (রোহিঙ্গাদের) তোমাদের দেশে কাজকর্ম দিয়ে দাও, তাদের অ্যাবজর্ব করে নাও।’ আমি বললাম, ‘দুনিয়ায় আমরা সবচেয়ে বেশি ঘনবসতির দেশ। আমাদের লোকদের কর্মসংস্থানের জন্য দেশের বাইরে পাঠাতে হচ্ছে। ওরা (রোহিঙ্গারা) দেশে ফেরত যাক। আমাদের অগ্রাধিকার প্রত্যাবাসন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তোমরা (যুক্তরাষ্ট্র) বলেছ, রোহিঙ্গাদের কিছু লোক নিয়ে যাবা, ৬২ জন নিয়েছ। তোমরা চিন্তা করতে পারো আরও লোক নেয়ার।’ ওরা (কংগ্রেসম্যানরা) বলেছে, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) এটি নিয়ে আগ্রহী নয়।

এই দুই কংগ্রেস সদস্য কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরের পরিস্থিতি দেখতে আসছেন বলে এর আগে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে গতকাল তারা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি ও সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের গুলশানের বাসায় বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

কূটনীতিকরা মনে করছেন, এসব মতবিনিময়ের সময় মার্কিন দুই রাজনীতিক বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন সম্পর্কে জানা-বোঝার চেষ্টা করেছেন। একই সঙ্গে দলগুলোর প্রতিও কোনো বিশেষ বার্তাও দিয়ে থাকতে পারেন তারা।

আগামী নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন বলে জানা গেছে। দেশটির ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের কৌশলগত পরিকল্পনা ও নীতিবিষয়ক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল টমাস জেমসের এ মাসের শেষ দিকে প্রতিরক্ষা সংলাপে যোগ দিতে ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। আগামী মাসের প্রথমার্ধে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার রূপরেখা চুক্তি (টিকফা) সংক্রান্ত পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকায় আসবেন মার্কিন বাণিজ্য দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ। এ ছাড়া অক্টোবরে ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সংলাপ আয়োজনের চেষ্টা চলছে।

এর আগে গত সপ্তাহে দুর্নীতি দমন বিষয়ে আলোচনার জন্য ঢাকা আসেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়কারী রিচার্ড ন্যাপিউ।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মানবাধিকার ও সুশাসন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহযোগিতা, অপ্রচলিত নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা বেড়েছে। তবে মানবাধিকার ও সুশাসন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাব এবং বাহিনীটির সাবেক ও বর্তমান সাত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতাকারীদের বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ আরোপসংক্রান্ত ভিসানীতি ঘোষণা করে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের মতোই বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরব হয়েছে অন্যান্য পশ্চিমা দেশ। শুরু থেকেই বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গত মাসে ইইউর প্রাক্‌-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল ঢাকায় বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে গেছে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে আগামী মাসে বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন ইইউর ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেফ বোরেল।


কমনওয়েলথ বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়ায় সহায়তায় আগ্রহী 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি আয়র্কর বোচওয়ে বলেছেন, আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক সংস্কারে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে আগ্রহী সংস্থাটি।

গতকাল লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বোচওয়ে বলেন, 'বাংলাদেশ যদি চায়, বিশেষ করে সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য, তাহলে আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।'

বোচওয়ে বলেন, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তা করা আগামী পাঁচ বছরের জন্য কমনওয়েলথের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার।

তিনি আরও জানান, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সংগ্রামে সহায়তা করাও সংগঠনের অগ্রাধিকারভিত্তিক লক্ষ্য।

কমনওয়েলথ ২.৭ বিলিয়ন জনগণের প্ল্যাটফর্ম উল্লেখ করে ঘানার এই নাগরিক বলেন, বর্তমানে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৮৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আগামী কয়েক বছরে তা কমপক্ষে ১ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি বলেন, কমনওয়েলথের অনেক সদস্য রাষ্ট্র জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এবং এর মধ্যে অনেক দেশ আকারে অত্যন্ত ছোট।

'আমরা তাদের জলবায়ু অর্থায়নে প্রবেশাধিকার পেতে সহায়তা করার চেষ্টা করব,' তিনি বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কমনওয়েলথ মহাসচিবকে ক্রীড়া খাতে সম্ভাবনা অনুসন্ধান এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে তরুণদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর আহ্বান জানান।

'ক্রীড়া শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি একটি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও। আমরা ক্রীড়াবিদদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য উৎসাহ দিচ্ছি। কমনওয়েলথের স্মরণীয় হয়ে ওঠার জন্য ক্রীড়া হতে পারে একটি ভালো মাধ্যম,' বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

কমনওয়েলথ মহাসচিব জানান, চলতি মাসে তারা ঢাকায় একটি যুব প্রোগ্রাম আয়োজন করতে যাচ্ছেন।

তিনি আরো জানান, কমনওয়েলথের ১.৫ বিলিয়ন জনগণ তরুণ এবং তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত করার জন্য তারা কাজ করছেন।

তিনি জানান, তারা কমনওয়েলথ বৃত্তিগুলো পুনর্গঠনের পরিকল্পনাও করছেন, একটি ক্ষেত্র যা প্রধান উপদেষ্টা গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

সাক্ষাৎকালে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।


চামড়ার বাজারে এবারও হতাশা, গোড়ায় গলদ রেখে দাম নির্ধারণ

আপডেটেড ১১ জুন, ২০২৫ ১২:২৪
ইউএনবি

এবারের ঈদুল আজহায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোরবানির পশুর চামড়ার বর্ধিত নতুন দাম নির্ধারণ করে দিলেও নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি হয়নি বলে অভিযোগ মৌসুমি ব্যবসায়ীদের। ট্যানারি মালিকরা বলছেন, মূল সমস্যা সমাধান না করে চামড়ার দাম বাড়ালেই বাজার চাঙ্গা হবে না।

কোরবানির প্রথম ৭২ ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে সবচেয়ে বেশি চামড়া এসেছে লালবাগের পোস্তায়। কাঁচা চামড়ার এ আড়তে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা শহরের নানা জায়গা থেকে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছেন চামড়া। তবে তাদের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না তারা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন দর অনুযায়ী, এ বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।

ট্যানারির হিসাব অনুযায়ী, ৩০ বর্গফুট কিংবা এর চেয়ে বেশি আকারের চামড়াকে বড়, ২০ বর্গফুটের ওপরের চামড়াকে মাঝারি এবং ২০ বর্গফুটের নিচের চামড়াকে ছোট চামড়া হিসেবে ধরা হয়।

এ হিসাবে সর্বনিম্ন দাম ধরলেও একটি বড় চামড়ার দাম দাঁড়ায় ১ হাজার ৮০০ টাকা, মাঝারি ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ১৫ ফুটের ছোট চামড়ার দাম হয় ৯০০ টাকা। কিন্তু মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় চামড়া বিক্রি করতে পারছেন। এর চেয়ে বেশি দামে কোনোভাবেই চামড়া বিক্রি করা সম্ভব হয়নি।

চামড়া ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন বলেন, ‘কোরবানির দিন বিকালে প্রতি পিস চামড়া ৬০০ টাকায় বিক্রি করেছি। ৯০০ টাকা দাম বলে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও ক্রেতা পাওয়া যায়নি।’

একই অভিযোগ জানিয়ে আরেক মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী মিলন সরকার বলেন, ‘কেউ ফুট মেপে চামড়া কেনেনি। পিস হিসেবে গড়পড়তা ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায় চামড়া বিক্রি করেছি। সরকার দাম বাড়িয়েছে শুনে মাদরাসা–লিল্লাহ বোর্ডিং থেকে বেশি দামে চামড়া কিনে বড় বিপদে পড়তে হয়েছে।’

কেন সরকারের নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা হচ্ছে না—এমন প্রশ্নের জবাবে পোস্তার আড়তদাররা জানান, এবার চামড়ার বাজার আগেরবারের চেয়েও খারাপ। নির্ধারিত দামে চামড়া কিনলে লোকসান দিয়ে ট্যানারির কাছে চামড়া বিক্রি করতে হবে।

এ বিষয়ে কাঁচা চামড়ার সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) মহাসচিব টিপু সুলতান বলেন, ‘যারা চামড়ায় অর্থলগ্নি করত, এবার তাদের অনেকেই এ ব্যবসা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। অনেক ব্যবসায়ী আগের সরকারের রাজনীতিতে সরাসরি জড়িত ছিলেন, তারা পলাতক। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের হাতে নেই নগদ টাকা। আগে যে ব্যবসায়ী ১০ হাজার পিস চামড়া কিনতেন, এবার তারা কিনছেন ৫ হাজার পিস করে।’

এ ছাড়া পোস্তায় প্রচুর নষ্ট চামড়াও এসেছে উল্লেখ করে টিপু বলেন, ‘৩০ শতাংশেরও বেশি চামড়া পচে গেছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লবণ না লাগিয়ে কাঁচা চামড়া নিয়ে এসেছেন। বিক্রি করতে করতে অনেক চামড়া হয় পচে গেছে, না হলে মান হারিয়েছে। সরকার লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করলেও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লবণ না দিয়ে চামড়া এনেছেন। এতেও দাম অনেক কমেছে।’

ঈদের তৃতীয় দিন সাভার চামড়া শিল্পনগরী পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান জানান, সরকারের পক্ষ থেকে চামড়া সংরক্ষণে ৩০ হাজার টন লবণ বিতরণ করা হয়েছে।

ব্যবসায়ীদের লবণ বিতরণের পরেও কেন তারা লবণযুক্ত চামড়া আড়তে আনেননি—এমন প্রশ্নের জবাবে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার শুধু আড়তে লবণ দিয়েছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানেন না যে কোথা থেকে বিনামূল্যে লবণ সংগ্রহ করতে হয়। তাই অনেকেই লবণ না পেয়ে নিজে টাকা দিয়ে কিনেছেন, অনেকে আবার লবণ না লাগিয়েই চামড়া আড়তে নিয়ে গেছেন।’

সরকারের দেওয়া বিনামূল্যের লবণ পাননি উল্লেখ করে আরেক ব্যবসায়ী সুমন মৃধা বলেন, ‘নিজেই লবণ কিনে চামড়ায় লাগিয়েছি। একেকটি বড় সাইজের গরুর চামড়ায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকার লবণ দিতে হয়। ছাগলের চামড়ায় কম করে হলেও ৫০ টাকার লবণ লাগে।’

এদিকে, সোমবার যশোরের সবচেয়ে বড় চামড়ার মোকাম রাজারহাট পরিদর্শন শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, ১৫ বছর ধরে চামড়া শিল্পে নৈরাজ্য চলছে। একদিনে চামড়া শিল্পের এত বড় সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব নয়। কাঁচা চামড়া রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা দেশে দাম না পেলে বিদেশে চামড়া রপ্তানি করতে পারবেন।

মৌসুমি ব্যবসায়ীদের জন্য চামড়া রপ্তানি একেবারেই অসম্ভব; এমনকি দেশে যেসব চামড়ার আড়ত আছে, তাদের সিংহভাগের রপ্তানি সক্ষমতা নেই বললেই চলে—এমন মন্তব্য করে বিএইচএসএমএর মহাসচিব বলেন, ‘রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে সরকার যদি মনে করে যে কাঁচা চামড়া রপ্তানি চাট্টিখানি ব্যাপার, তাহলে তারা ভুল ভাবছেন। চামড়া রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করতে যে পরিমাণ শ্রম এবং সক্ষমতা লাগে, তার কিছুই আড়তদারদের নেই।’

‘দাম না পেলে চামড়া রপ্তানি করুক—এ ধরনের কথা এক ধরনের হঠকারিতা’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দোষ কি সিন্ডিকেটের, নাকি সমন্বয়ে গলদ?

এপেক্স ট্যানারির চামড়া বিভাগে প্রায় তিন দশক ধরে কাজ করেছেন নজরুল ইসলাম খান। ট্যানারিটির সাবেক এই মহাব্যবস্থাপক বলেন, ‘কোরবানির ঈদ এলেই সিন্ডিকেটের কথা তোলা হয়, যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। এত বছরেও সরকার দেখাতে পারল না কারা আসলে সিন্ডিকেট করে। বাস্তবিক অর্থে চামড়ার বাজারে কোনো সিন্ডিকেট নেই। মূল সমস্যা সমন্বয়ে।’

‘সরকারের নীতির সঙ্গে ট্যানারি মালিকদের অনেক ক্ষেত্রে যোগসাজশ থাকে না। আড়তদারদের কথা শোনার কেউ নেই। আর এই বাহাত্তর ঘণ্টায় যারা চামড়ার মৌসুমি ব্যবসায়ী হিসেবে কাজ করেন, এত বছরেও তাদের দেওয়া হয়নি কোনো প্রশিক্ষণ, জানেন না চামড়া কীভাবে সংরক্ষণ করতে হয়।’

নজরুল বলেন, ‘সকালে পশু কোরবানি হলে নিয়ম দুপুরের মধ্যে আড়তে চামড়া নিয়ে যাওয়া এবং বিকালে আড়ত থেকে ট্যানারিতে তা স্থানান্তর করা। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ট্যানারিতে চামড়া আনতে আনতে রাত দশটা–এগারোটা বেজে যায়। সঠিকভাবে চামড়া সংরক্ষণ না করে এত দীর্ঘ সময় বাইরে রাখার কারণে চামড়ায় পচন ধরে, ফলে মান কমে যায়। বিশেষ করে রাত ১২টার পর ট্যানারিতে যেসব চামড়া আসে, তার সিংহভাগই থাকে পচা ও নিম্নমানের।’

সরকারের সঙ্গে ট্যানারি মালিকদের সমন্বয়হীনতা প্রসঙ্গে খাতটির মালিক সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘ট্যারিফ কমিশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ফুটপ্রতি চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল, সেটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় না মেনে নিজের মতো দাম নির্ধারণ করেছে। অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে দাম দিয়েছে তা লবণযুক্ত চামড়ার। আমরা ট্যানারি মালিকরা সরাসরি কাঁচা চামড়াও কিনি। এবার সারা দেশ থেকে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ চামড়া কেনার লক্ষ্যমাত্রা, সেখানে কাঁচা চামড়া কিনেছি ৩ লাখ ৭৫ হাজারটি। এই কাঁচা চামড়ার দাম কী হবে, সে বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো ধরনের নির্দেশনা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘ট্যারিফ কমিশন থেকে কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণের কথা উঠলেও আমলে নেয়নি মন্ত্রণালয়। এতে করে বিপদে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে ট্যানারি মালিকদের দেওয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরেক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ছোট সাইজের লবণযুক্ত চামড়ার দাম সর্বনিম্ন ১ হাজার ৩৫০ টাকা। সে হিসাবে ১৭ ফুটের ছোট চামড়ার দাম বর্গফুটপ্রতি পড়ে প্রায় ৮০ টাকা, যা আবার নির্ধারিত মূল দামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বাস্তবতা বিবর্জিত নানামুখী এ ধরনের সিদ্ধান্তে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা শুরুতে খুশি হলেও পরে এসে আবারও হতাশ হতে হয়েছে তাদের।’

চামড়া খাতের গোড়ায় গলদ

বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয় ১১৩ কোটি ডলার, যা সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কমে হয়েছে ৯৬ কোটি ১৪ লাখ ৯০ হাজার ডলার।

দিন দিন কেন এ খাতে রপ্তানির বাজার সংকুচিত হয়ে আসছে—সে প্রসঙ্গে চামড়া রপ্তানিকারক ইমা লেদার এক্সপোর্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবুল হোসাইন বলেন, ‘২০১৭ সালে রাজধানী থেকে ট্যানারি হেমায়েতপুরে স্থানান্তরের পর এখন পর্যন্ত এসব ট্যানারি এলডব্লিউজি (লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ) সার্টিফিকেট পায়নি। এ সনদ না থাকার কারণে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের চামড়া রপ্তানি একরকম বন্ধ হয়ে আছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের চামড়া রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার চীন। অল্প কিছু চামড়া ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে যায়। পশ্চিমা বাজার ধরতে না পারায় এ খাত থেকে ব্যবসা গুটিয়ে অনেকেই বাধ্য হয়ে চলে যাচ্ছেন।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাভার ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটে (এসটিআইই) নির্মিত সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (সিইটিপি) এখনো কার্যকর হয়নি। এই প্ল্যান্ট পুরোপুরি কার্যকর না হলে এলডব্লিউজি সনদ মিলবে না। মূলত এই সনদের অভাবেই বিদেশে বেশি দামে চামড়া বিক্রির সুযোগবঞ্চিত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এর ফলে বড় ক্ষতির মুখে পড়ছেন ট্যানারি মালিকদের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহিন আহমেদ বলেন, ‘চামড়া রপ্তানিতে আমরা চীনের কাছে জিম্মি। চীনের ব্যবসায়ীদের একটি বড় সিন্ডিকেটের কাছে আমরা বাধ্য হয়ে একেবারে কম দামে চামড়া বিক্রি করছি। যেখানে প্রতি বর্গফুট চামড়া ১ ডলার ২০ সেন্টে বিক্রি করার কথা, সেখানে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৬০ সেন্টে।’

তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা ঠিক করে দিলেও এ দামে চামড়া কিনে রপ্তানি করতে গেলে প্রতি বর্গফুটে বাংলাদেশি মুদ্রায় দাম পাওয়া যাবে ৭০ টাকার মতো; ক্ষেত্রবিশেষে তার চেয়েও কম।’

প্রস্তুতকৃত চামড়ার রপ্তানিমূল্য এত কম হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে কম দামে চামড়া কিনতে হয় ট্যানারি মালিকদের। সিইটিপি ঠিক না করে স্থানীয় বাজারে চামড়ার দাম বাড়ালেও স্বাভাবিকভাবেই তাই সুবিধাবঞ্চিত হবেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি এ খাত মুখ থুবড়ে পড়বে বলে শঙ্কা ট্যানারি সংশ্লিষ্টদের।


পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে যুক্তরাজ্যকে টিআইবিসহ তিন সংস্থার আহ্বান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত পাচারকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং তাদের পাচার করা অবৈধ অর্থ বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে জরুরি ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তিনটি দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা— ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), স্পটলাইট অন করাপশন এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-ইউকে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফর উপলক্ষে মঙ্গলবার (১০ জুন) এক যৌথ বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সংস্থাগুলো।

যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত সন্দেহভাজন অর্থ পাচারকারী বাংলাদেশি অলিগার্ক, যাদের দুর্নীতি ও চৌর্যবৃত্তির সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহের যথেষ্ট কারণ রয়েছে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারে দেশটির আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রচেষ্টা জোরদার করতে দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাগুলো।

এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও জবাবদিহিমূলক সুশাসনের পথে অগ্রযাত্রার অভূতপূর্ব সম্ভাবনার বর্তমান সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে এগিয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্রসংস্কারের চলমান উদ্যোগ, বিশেষ করে দুর্নীতির কার্যকর নিয়ন্ত্রণের অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে পাচার হওয়া সম্পদ বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিতে যুক্তরাজ্যকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে এমন জোরালো বার্তা দিতে হবে যে, চূড়ান্ত বিবেচনায় অর্থপাচারকারীদেরকে শুধু উৎস হিসেবে বাংলাদেশই নয়, গন্তব্য দেশ যুক্তরাজ্যেও কার্যকরভাবে জবাবদিহি করতে হয়।’

স্পটলাইট অন করাপশনের নির্বাহী পরিচালক সুসান হাওলি বলেন, ‘সময়ের অপচয় না করে তাৎক্ষণিকভাবে যুক্তরাজ্য সরকারের উচিত বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ জব্দের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও অর্থ পুনরুদ্ধারে সংশ্লিষ্ট আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।’

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকের পলিসি ডিরেক্টর ডানকান হেমস বলেন, ‘অর্থপাচারের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য সরকার যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, তার প্রতিফলন ঘটাতে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চৌর্যবৃত্তির মাধ্যমে অর্জিত (বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত) যুক্তরাজ্যে ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড সম্পদের যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, যথাযথভাবে অনুসন্ধান করে যুক্তরাজ্য সরকারকে তা জব্দ করতে হবে।’

তার আহ্বান, ‘ইউকে সরকারের প্রতিশ্রুতি যেন শুধু কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পুনর্যাত্রার প্রচেষ্টায় কার্যকরভাবে সহযোগীর ভূমিকা পালন করতে হবে।’

উল্লেখ্য, দ্য অবজারভার ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকের তদন্তে যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের মালিকানাধীন কমপক্ষে ৪০ কোটি পাউন্ড মূল্যের সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) ইতিমধ্যে ৯ কোটি পাউন্ড মূল্যের সম্পদ জব্দ করেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দুর্নীতি নির্মূল ও শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে পাচার হওয়া কোটি কোটি পাউন্ড পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার আনুমানিক পরিমাণ প্রতি বছর ১১০০ কোটি পাউন্ড (১৬০০ কোটি ডলার)। বাংলাদেশ সরকারের গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির অনুমান অনুসারে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বার্ষিক ১৬ বিলিয়ন ডলার হারে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার দেশ থেকে পাচার হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ইউনুস এর আগে দুর্নীতি নির্মূল এবং শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার সরকারের শ্বেতপত্র কমিশনের অনুমান অনুসারে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে প্রতি বছর গড়ে ১১০০ কোটি পাউন্ড (১৬০০ কোটি ডলার) করে মোট ২৩৪ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার শান্তি পুনরুদ্ধার ও জবাবদিহি নিশ্চিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অন্যদিকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রসচিব ‘অর্থ পাচারের স্বর্ণযুগ শেষ হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন।


বেশি পশু কোরবানি হয়েছে রাজশাহী বিভাগে, সিলেটে সবচেয়ে কম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঈদুল আজহা মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব। ধর্মীয় উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এবারের ঈদুল আজহায় সারা দেশে বিপুল সংখ্যক পশু কোরবানি করা হয়েছে। এ বছর বাংলাদেশে ঈদুল আজহায় ৯১ লাখের বেশি পশু কোরবানি করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু ও ছাগলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

আজ মঙ্গলবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সরকারি সংস্থা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবমতে, ২০২৫ সালে দেশে ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৪টি পশু কোরবানি হয়েছে। যার মধ্যে গরু/মহিষ ৪৭ লাখ ৫ হাজার ১০৬টি, ছাগল/ভেড়া ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮টি। এছাড়া অন্যান্য পশু কোরবানি হয়েছে ৯৬০টি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর মূলত পশু কোরবানির হিসাব করে থাকে। অধিদপ্তর বলছে, স্তরায়িত দৈব নমুনায়নের (স্ট্র্যাটিফায়েড র‍্যান্ডম স্যাম্পলিং) ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করে এবারের হিসাব করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলার ৩টি গ্রাম (ছোট, মাঝারি এবং বড়) থেকে অন্তত এক শতাংশ নমুনা সংগ্রহ করে হিসাবটি করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার কোরবানির পশু অবিক্রীত ছিল ৩৩ লাখ ১০ হাজার ৬০৩টি। কারণ হিসেবে অধিদপ্তর বলছে, এবার কোরবানির পশুর উৎপাদন বেশি ছিল। তাই পশু অবিক্রীত থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তা ছাড়া অবিক্রীত এই পশু সামনে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে দরকার পড়বে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এবার সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে সিলেট বিভাগে। এই সংখ্যা ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮২৩ টি। এরপর কম পশু কোরবানি হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। এই সংখ্যা ৩ লাখ ৮৩ হাজার ১৬২টি। আর সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে রাজশাহী বিভাগে। এই সংখ্যা ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৭১। এর পর বেশি কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এই সংখ্যা ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৪০টি। চট্টগ্রাম বিভাগে কোরবানি হয়েছে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩২টি গবাদিপশু। খুলনা বিভাগে কোরবানি হয়েছে ৮ লাখ ৪ হাজার ২২৪ টি গবাদিপশু।

বরিশাল বিভাগে কোরবানি হয়েছে ৪ লাখ ৭৮৩টি গবাদিপশু। রংপুর বিভাগে কোরবানি হয়েছে ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯টি গবাদিপশু।


দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩৮ জন আক্রান্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সোমবার (৯ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৮ জন।

মঙ্গলবার (১০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ৩৮ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৩ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৫ জন।

বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৬ মে পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ হাজার ১৫ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।


হজের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট, দেশে ফিরেছেন ৩৬৯ হাজি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পবিত্র হজ সম্পন্ন করে প্রথম ফিরতি ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন ৩৬৯ জন হাজি। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৫৪ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ‘এসভি-৩৮০৩’ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এ সময় বিমানবন্দরের বোর্ডিং ব্রিজে হাজিদের স্বাগত জানান বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া। তিনি ফুল দিয়ে প্রথম ফিরতি ফ্লাইটের হাজিদের বরণ করে নেন।

বিমানবন্দরে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও হজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, আজ আরও সাতটি ফিরতি ফ্লাইটে আড়াই হাজারের বেশি হাজি দেশে ফিরবেন। ফিরতি হজ ফ্লাইট চলবে আগামী ১১ জুলাই পর্যন্ত।

এ বছর হজ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৫ হাজার ৩০২ জন ধর্মপ্রাণ মুসল্লি সৌদি আরবে গেছেন। এরমধ্যে প্রথম হজ ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যায় ২৯ এপ্রিল। এরপর প্রায় এক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে হজযাত্রীদের বহন করে ফ্লাইটগুলো পরিচালিত হয়। সর্বশেষ হজ ফ্লাইটটি যায় গত ১ জুন। পুরো এই সময়ে মোট ২২০টি হজ ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৫ হাজার ৩০২ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে গেছেন।

জানা গেছে, এবার হজ ফ্লাইট পরিচালনায় অংশ নেয় তিনটি এয়ারলাইনস। সেগুলো হচ্ছে —বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এয়ারলাইনস এবং ফ্লাইনাস। ফিরতি যাত্রার ক্ষেত্রেও এসব এয়ারলাইনস প্রতিদিন নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ফ্লাইট পরিচালনা করবে।


মামলা বাণিজ্যে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

মামলা বাণিজ্য ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

আজ মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

উপদেষ্টা জানান, পুলিশ বিভাগের সংস্কারের অংশ হিসেবে পাইলট একটা প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছে। সারাদেশে অনলাইনে মামলা ও জিডি গ্রহণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য আর থানায় আসতে হবে না। এ ছাড়া, আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাচের ঘর করে দেওয়া হবে, এতে বাইরে থেকেই দেখা যাবে তার সঙ্গে কি রকম আচরণ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘মামলা বাণিজ্য ও দুর্নীতির সাথে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তবে হ্যাঁ, বাংলাদেশের দুর্নীতি সবচেয়ে বড় সমস্যা। এটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে দেশ অনেক এগিয়ে যেত।’

জুলাই আন্দোলনের মামলা নিষ্পত্তি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, জুলাই আগস্টের হত্যা মামলাগুলোর বাদী জনগণ। তাদের মামলার আসামি অনেক বেশি থাকায় এবং কে দোষী আর কে নির্দোষ, তা বের করে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করতে দেরি হচ্ছে।

এ সময় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ড. মো. নাজমুল খানসহ সহ জিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।


হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু আজ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পবিত্র হজের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। এখন হাজিরা সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশি হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট। যা চলবে ১০ জুলাই পর্যন্ত।

মিনায় শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপ এবং কাবা ঘরে ফরজ তাওয়াফ শেষে মিনায় ফিরছেন হাজিরা। ফেরার পথে অনেকে পথ হারিয়ে আশ্রয় নেন মক্কার হজ মিশনে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে এ বছর ৮৭ হাজার ১৫৭ জন হজ পালন করেছেন। এর মধ্য ১৯ জন হজ যাত্রী মৃত্যুবরণ করেন। চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৪৩৬টি ভুয়া হজ এজেন্সি বন্ধ করে দিয়েছে এবং ৪৬২ জনকে আইন ভঙ্গ করায় গ্রেপ্তার করেছে।

এদিকে চলতি বছর পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবে গিয়ে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ১৮৮ বাংলাদেশি। এ ছাড়া ১৯ জন দেশটির সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এবার হজ অনুষ্ঠিত হয় ৫ জুন। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট ছিল ২৯ এপ্রিল আর হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার শেষ ফ্লাইট ছিল ৩১ মে।


করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ভারতসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এসব দেশে ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা এই সতর্কবার্তা জারি করে।

এতে বলা হয়, অমিক্রনের নতুন সাব ভেরিয়েন্ট এলএফ.৭, এক্সএফজি, জেএন-১ ও এনবি ১.৮.১ এর সংক্রমণ বিভিন্ন দেশে বাড়ছে, যা আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের সকল স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি জোরদার করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদের স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, দেশে প্রবেশপথে থার্মাল স্ক্যানার ও ডিজিটাল হ্যান্ড হেল্ড থার্মোমিটারের মাধ্যমে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করতে হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিই মজুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জনসচেতনতা বাড়াতে করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রচার করতে হবে এবং জনগণকে ভারতসহ সংক্রমণপ্রবণ দেশগুলোতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এদিকে, আইসিডিডিআরবির গবেষকেরা জানান, করোনার আরও দুটি নতুন ধরন— এক্সএফজি ও এক্সএফসি শনাক্ত হয়েছে, যেগুলো অমিক্রন জেএন-১ এর উপধরন এবং সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি। এই পরিস্থিতিতে জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, দিনে সাতবার বা প্রয়োজনমতো অন্তত ২৩ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নাক-মুখ ঢাকতে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু বা কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে অন্তত তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

সন্দেহজনক রোগীদের বিষয়ে বলা হয়েছে, কেউ অসুস্থ হলে তিনি যেন ঘরে থাকেন এবং প্রয়োজন হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করেন। রোগীকে অবশ্যই মাস্ক পরতে বলা হয়েছে এবং জটিল পরিস্থিতিতে আইইডিসিআরের হটলাইনে (০১৪০১-১৯৬২৯৩) যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সময়মতো ব্যবস্থা গ্রহণ ও সর্বসাধারণের সতর্কতা বজায় রাখার মাধ্যমেই এই নতুন সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো সম্ভব বলেও উল্লেখ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।


দেশে আরও পাঁচজনের শরীরে করোনা শনাক্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

রবিবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে কারো মৃত্যু হয়নি। এই সময়ের মধ্যে পাঁচ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।

সোমবার (৯ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন আরও পাঁচজন।

এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৪৭ জনে। আর মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৫০০ জনে।

এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ সময়ে শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ২০ শতাংশ। মোট করোনা পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এ নিয়ে করোনায় সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৬ জনে।


লন্ডনের উদ্দেশে দেশ ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আমিরাতের একটি ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, এই সফরে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি রাজা চার্লসের হাত থেকে গ্রহণ করবেন ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’।

সফরসঙ্গী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।

এ ছাড়া, দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন করে পুনরুজ্জীবিত এবং অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ার লক্ষ্যে এই সফর অনুষ্ঠিত হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর। প্রধান উপদেষ্টা ৯ জুন ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন এবং ১৪ জুন দেশে ফিরবেন।’


ভারত থেকে আগত যাত্রীদের নিয়ে বাড়তি সতর্কতা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সম্প্রতি ভারতে করোনায় সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এতে দেশটিতে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৪৯১ জনে পৌঁছেছে। তাই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আগাম সতর্কতা হিসেবে ভারত থেকে যেসব রুটের ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করে, সেসব ফ্লাইটের সব যাত্রী স্ক্রিনিং শুরু করেছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

বর্তমানে ভারতের চেন্নাই, কলকাতা, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ, মুম্বাই থেকে ঢাকায় ফ্লাইট আসে। এই ফ্লাইটগুলো পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ গণমাধ্যমকে জানান, পার্শ্ববর্তী দেশে করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও জোরদার করা হয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা। গত ২ জুন থেকেই বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ। ভারত থেকে আগত যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত সংখ্যত মাস্ক এবং পিপিই রাখা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে। পাশাপাশি বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট থেকে আগত যাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রবেশপথে বসানো হয়েছে থার্মাল স্ক্যানার।

বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত নির্দেশনা ও সতর্কতা প্রচারও চলছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এ সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলো কার্যকর থাকবে।

ভারতের স্বাস্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে কেরালায়। সেখানে বর্তমান সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৯৫৭ জন। অপরদিকে গুজরাটে এই সংখ্যা ৯৮০ জন, পশ্চিমবঙ্গে ৭৪৭ জন, দিল্লিতে ৭২৮ জন কর্ণাটকে ৪২৩ জন এবং মহারাষ্ট্রে ৬০৭ জন।

সতর্কতার অংশ হিসেবে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগ এবং শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।


ভোলায় কোষ্টগার্ড ও পুলিশের পৃথক অভিযান, এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

আপডেটেড ৯ জুন, ২০২৫ ১৯:২৬
ভোলা প্রতিনিধি

ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ও সামান্দা ইউনিয়নে বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড ভোলা বেইস ও পুলিশের সমন্বয়ে পৃথক দুটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালে ২৭৪ পিছ ইয়াবা ও ১৫ গ্রাম গাঁজা সহ এক মাদককারবারী কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ সোমবার মধ্যরাত ৩টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোলা সদর উপজেলার সামান্দা ইউনিয়নে সামান্দা গ্রাম থেকে ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৫ শত টাকা মূল্যের ২৭৪ পিস ইয়াবা ও ১৫ গ্রাম গাঁজা এবং নগদ ১২ হাজার ৮ শত ৪৫ টাকাসহ মাদক ব্যবসায়ী আব্বাসকে (৩৮) গ্রেপ্তার করা হয়।

পরবর্তী আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য আসামীকে জব্দকৃত সকল আলামত সহ ভোলা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড দক্ষিণ জোন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড। উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং চোরাচালান রোধে অনেকাংশে উন্নত হয়েছে। সীমান্তে চোরাচালান রোধে কোষ্টগার্ড কতৃক ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।


banner close