রাজধানীর কদমতলীর একটি বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের নারী ও শিশুসহ পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন।
গত রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে কদমতলীর জুরাইনের মাদবর বাজারের সলিমুল্লাহ রোডের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
রাত ৩টার দিকে দগ্ধ অবস্থায় ওই বাসার পাঁচজনকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। এরা হলেন আলতাফ সিকদার (৭০), তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম (৫০), মেয়ে মুক্তা খাতুন (৩০), মুক্তার স্বামী আতাহার আলী (৩৫) ও তাদের মেয়ে আফসানা (৫)।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, গভীর রাতে জুরাইন থেকে নারী-শিশুসহ দগ্ধ অবস্থায় পাঁচজনকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। এদের মধ্যে আতাহার আলীর ৫০ শতাংশ, মুক্তা খাতুনের ৪৫ শতাংশ, আলতাফ সিকদারের ২ শতাংশ, মর্জিনা বেগমের ৫ শতাংশ ও শিশু আফসানার ২৫ শতাংশ ফেস বার্ন হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনকে জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি দুজনকে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আলতাফের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কচুয়া গ্রামে। তার শ্যালক মো. মাহাবুব জানান, আলতাফ জুরাইনের ওই বাড়ির নিচতলার বাসায় ভাড়া থাকতেন। তার মেয়ে মুক্তা এক সপ্তাহ আগে বাবার বাসায় সপরিবারে বেড়াতে আসেন।
তিনি বলেন, ‘ওই বাসায় গ্যাসের সংযোগ রয়েছে, কিন্তু দিনের বেলা লাইনে গ্যাস থাকে না। সেজন্য মধ্যরাতেই রান্নার কাজ সেরে ফেলতে হয়। ধারণা করা হচ্ছে জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।’
দীর্ঘ ৩৭ বছর পর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন বাংলাদেশের দুই সাঁতারু নাজমুল হক হিমেল ও মাহফিজুর রহমান সাগর। গতকাল মঙ্গলবার ১৬ ঘণ্টা সাঁতরিয়ে তারা ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে দুই সাঁতারু লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।
বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শাহিন জানিয়েছিলেন, দুজনই এক ফ্লাইটে লন্ডন যাচ্ছেন।
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে যুক্তরাজ্য গিয়ে অন্তত ১০ দিন অনুশীলন করবেন এই দুই সাঁতারু।
এর আগে বাংলাদেশের তিনজন সাঁতারু ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমকারী প্রথম এশীয় সাঁতারু ব্রজেন দাস। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ সালের মধ্যে মোট ছয়বার চ্যানেলটি অতিক্রম করেন তিনি।
তখন এই চ্যানেল সবচেয়ে কম সময়ে সাঁতরে পার হওয়ার রেকর্ডও গড়েছিলেন তিনি।
এরপর ১৯৬৫ সালে আবদুল মালেক ও ১৯৮৭ সালে মোশাররফ হোসেন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন। ইংলিশ চ্যানেলের পানির তাপমাত্রা ১৫ থেকে ১৯ ডিগ্রির মতো থাকে। সেখানে সাঁতরানো যেকোনো সাঁতারুর জন্যই চ্যালেঞ্জিং।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হতে যাচ্ছে আগামী ১১ আগষ্ট।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের এডিশনাল রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) কৃষিবিদ ড. ফারুক আহম্মদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া বাকৃবির নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্রীয় ওরিয়েন্টেশন আগামী ৯ আগষ্ট সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১০ আগষ্ট নবাগত শিক্ষার্থীদের অনুষদভিত্তিক এবং হলভিত্তিক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তীতে ১১ আগষ্ট থেকে ক্লাস শুরু হবে।
ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপকে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টার অংশ হিসেবে দেখছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের ‘পাল্টা শুল্কের’ ক্ষতিপূরণে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে চীন।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিকাব টক অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন। ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ নিয়ে জানতে চাইলে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন এ ধরনের পাল্টা শুল্কের বিপক্ষে। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ককে দেশটির আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টার অংশ বলে মনে করে চীন। এ শুল্ক আরোপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ব্যবস্থাকে অবমাননা করা এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য সহায়ক নয়। এটি অযৌক্তিক, অন্যায্য ও অন্যায়।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ডব্লিউটিওর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘পাল্টা শুল্কের’ ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা দেবে চীন। পাশাপাশি বাংলাদেশের রপ্তানি বাজারের সম্প্রসারণ ও রপ্তানির দক্ষতা বাড়ানোর ওপরও জোর দেন তিনি।
ইয়াও ওয়েন জানান, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের জন্য ২০২৮ সাল পর্যন্ত শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখবে চীন।
ডিকাব সভাপতি এ কে এম মঈনউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন।
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘চীন চাইছে বাংলাদেশে একটি সুশৃঙ্খল, সফল ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কেবল বাংলাদেশের জনগণের, বাইরের কোনো দেশের নয়।’
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সাবেক ডিক্যাব সভাপতি শামিম আহমেদের মৃত্যুতে এবং সম্প্রতি উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিশু ও অন্যান্য নিরীহ মানুষের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত ইয়াও জানান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি লক্ষ্য করেই চীন এই উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘চীনের বহু ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ রয়েছে। এ উদ্যোগটি সর্বশেষ সংযোজন মাত্র।’
গত কয়েক মাসে বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সব রাজনৈতিক দলকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশে এখন সুযোগ রয়েছে তাই চীন সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত।
এর আগে বিএনপি ও জামায়তসহ কিছু দলের সঙ্গে এ ধরনের যোগাযোগে বাধা ছিল। এ নিয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আপনারা তো জানেনই!’
এ সময় চীন বাংলাদেশের এক বিশ্বস্ত শুভাকাঙ্ক্ষী, প্রতিবেশী ও অংশীদার হিসেবে সবসময় পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও।
বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা করতে চীন অভিজ্ঞতা বিনিময়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য হ্রাস, দুর্যোগ প্রতিরোধ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহযোগিতা জোরদারের প্রস্তুতি রেখেছে বলে তিনি জানান।
দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে চীন বাংলাদেশের পাশাপাশি এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সঙ্গেও একত্রে আধুনিকতা অর্জন এবং এশিয়ার উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনে অবদান রাখতে চায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত জানান, সম্প্রতি কুনমিংয়ে চীন-বাংলাদেশ-পাকিস্তান ত্রিপক্ষীয় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে বাস্তব অগ্রগতি অর্জনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
বাংলাদেশকে বৈশ্বিক দক্ষিণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং আঞ্চলিক উন্নয়নের মূল অংশীদার হিসেবে চিহ্নিত করে ইয়াও বলেন, ‘বাংলাদেশ সবসময়ই চীনের প্রতিবেশি কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। আমরা বাংলাদেশের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় এবং বাইরের হস্তক্ষেপ প্রতিরোধে বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে আসছি।’
এ সময় ‘এক চীন’ নীতির প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার ও চীনের মৌলিক স্বার্থ ও প্রধান উদ্বেগে দৃঢ় সমর্থনেরও প্রশংসা করেন তিনি।
ত্রিপক্ষীয় এই উদ্যোগে কেন শুধু বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, বাকি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকে নয়- এমন প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় দেশকেও এ উদ্যোগ সম্পর্কে অবহিত করেছে। তবে তারা কেমন সাড়া দিয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ছয়টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতির কথা বললেও তা নিয়ে আলোচনা না করেই হঠাৎ করে জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এটি সঠিক কাজ বলে মনে করছে না দলটি।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেছেন, ‘আমরা এটির তীব্র বিরোধিতা করছি। আলোচনার পদ্ধতি নিয়েই আলোচনা হয়নি, অথচ তারা খসড়া প্রকাশ করেছে। এটা আমরা গ্রহণ করতে পারি না।’
গতকাল মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের সংলাপের বিরতিতে এ কথা বলেন জাবেদ রাসিন। তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, নির্বাচনের আগেই সেগুলোর আইনগত ভিত্তি পেতে হবে এবং সেই ভিত্তিতেই পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হতে হবে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রশ্নে আলোচনায় ‘র্যাঙ্ক চয়েস’ পদ্ধতি নিয়ে কয়েক দিন ধরে আলোচনা চলছিল বলে জানান জাবেদ রাসিন। তিনি বলেন, ‘এই পদ্ধতি অনুযায়ী আজ বিচার বিভাগ থেকে আরও দুই সদস্যকে যুক্ত করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব এসেছে, যাঁরা ভোট দেবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই প্রস্তাবে একমত হয়েছি। আমাদের সঙ্গে প্রায় সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে, কেবল বিএনপি ও কিছু সহযোগী দল ছাড়া।’
এনসিপির এই নেতা জানান, জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেসব মৌলিক সংস্কার ছাড়া ‘ফ্যাসিবাদী কাঠামো দূর করা সম্ভব নয়’, সেগুলোর যদি বাস্তবায়ন না হয়, তবে জুলাই সনদে সই করা হবে কি না, তা দলের ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ১০ আগস্ট খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে ২১ আগস্ট পর্যন্ত দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে আগামী ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে ইসি। গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব নাসির উদ্দিন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব বলেন, ভোটার তালিকা আইন সংশোধন দেরিতে হওয়ার কারণে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, একটি সম্পূরক ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে প্রথমে। কিন্তু তা প্রকাশের আগেই আইন সংশোধন হয়ে আসায় এখন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই একটি পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা প্রকাশের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, নতুন তালিকায় প্রায় ৪৫ লাখের বেশি নতুন ভোটার যুক্ত হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া তালিকা থেকে বাদ যাবে ২১ লাখ মৃত ভোটার।
এর আগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেছিলেন, খসড়া ভোটার তালিকায় যে ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন দ্রুতই এ তালিকা প্রকাশ করা হবে।
সবশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। আগামী ফেব্রুয়ারির শুরুতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পুরোদমে প্রস্তুতির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনও জোরেশোরে এগোচ্ছে নির্বাচনের পথে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করতে পারেন বলে জানা গেছে।
হংকংভিত্তিক টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান হানডা ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি বাংলাদেশে ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে হানডা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান হান চুন এই বিনিয়োগ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
হানডা শুরুতে বাংলাদেশের বস্ত্রখাতে ১৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করে এবং এ লক্ষ্যে গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করে।
পরে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার জোরালো সহযোগিতার কারণে হানডা তার বিনিয়োগ পরিকল্পনা ২৫০ মিলিয়ন ডলারে উন্নতি করেছে।
কোম্পানিটি এখন বাংলাদেশে তিনটি কারখানা স্থাপন করবে—দুটি গার্মেন্টস প্রসেসিং এবং একটি নিটিং ও ডায়িং ইউনিট—যার মাধ্যমে ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হান চুন বলেন, ‘বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, যেমন বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ), বেজা (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ) এবং বেপজা (বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ)-এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা আত্মবিশ্বাস পেয়েছি এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে আসতে চাই।’
বিডা, বেজা ও বেপজা কর্মকর্তারা বলেন, এটি বাংলাদেশের বস্ত্রখাতে অন্যতম বৃহৎ একক চীনা বিনিয়োগ।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস হানডা ইন্ডাস্ট্রিজের বিনিয়োগ পরিকল্পনাকে স্বাগত জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাতে আপনি চীনা বিনিয়োগের নেতৃত্ব নিন এবং অন্য চীনা বিনিয়োগকারীদেরও এখানে আসার জন্য উৎসাহিত করুন।’
বাংলাদেশি ডিজাইনারদের প্রশিক্ষণ প্রদানের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যাতে তারা ক্রেতাদের পছন্দ-রুচি বুঝে কাজ করতে পারেন।
হান চুন প্রধান উপদেষ্টার কাছে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থাপিতব্য কারখানার একটি নকশা উপস্থাপন করেন।
প্রধান উপদেষ্টা নকশাটি দেখে বলেন, ‘এটি আমার কাছে একটি চমৎকার চিত্রকলার মতো লাগছে।’
প্রথম ধাপে ৮০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে মিরসরাইয়ে গার্মেন্টস কারখানার জমি ইজারার চুক্তি বুধবার স্বাক্ষরিত হবে।
দ্বিতীয় ধাপের জমি ও অন্যান্য সুবিধাদি চূড়ান্তকরণের প্রক্রিয়া চলমান, যা ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সাক্ষাৎকালে অন্যান্যের মধ্যে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান এবং হানডা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট হেং জেলি।
ঢাকার মাঠ ও পার্কসমূহের ব্যবস্থাপনায় ক্লাবভিত্তিক মডেল থেকে সরে এসে কমিউনিটিভিত্তিক ব্যবস্থাপনার দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।
মঙ্গলবার গুলশানের নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসির অষ্টম কর্পোরেশন সভায় এ তথ্য জানান প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ঢাকার মাঠ ও পার্কসমূহের ব্যবস্থাপনায় ক্লাবভিত্তিক মডেল থেকে বেরিয়ে কমিউনিটিভিত্তিক মডেলের দিকে এগোচ্ছে ডিএনসিসি।
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ঢাকার পাবলিক পার্কগুলোতে সর্বসাধারণের প্রবেশ একটি অধিকার। এই অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ক্লাবভিত্তিক মডেল থেকে সরে এসে কমিউনিটিভিত্তিকভাবে পার্কগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। আমরা নতুন করে আর কোনো ক্লাবকে মাঠের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিচ্ছি না।
পর্যায়ক্রমে ঢাকার সকল মাঠ ও পার্ক ডিএনসিসির উদ্যোগে এলাকাবাসীর সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হবে। এর ফলে মাঠ ও পার্কগুলোতে নাগরিক মালিকানার ধারণা তৈরি করা যাবে।
এরই অংশ হিসেবে আজকের কর্পোরেশন সভায় গুলশানের বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ পার্ক এবং ডা. ফজলে রাব্বি পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গুলশান সোসাইটিকে দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসক আরও বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্যই হলো মাঠ এবং পার্কগুলো সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া। আমরা ক্লাবভিত্তিক মাঠ ব্যবস্থাপনা থেকে বেরিয়ে কমিউনিটিভিত্তিক ব্যবস্থাপনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
প্রশাসক জানান, আমরা কোনো মাঠ বা পার্ক ইজারা দেব না। এগুলো কমিউনিটির মাধ্যমে কমিটি করে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হবে, যেন মাঠ ও পার্কগুলো সবসময় সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা যায়।
উল্লেখ্য, গুলশানের শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ স্মৃতি পার্কসহ যেসব মাঠ ও পার্ক পূর্বে সম্পন্ন চুক্তির ভিত্তিতে ক্লাবের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে, সেগুলোর কার্যক্রম মনিটরের জন্য আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে স্থানীয় জনগনের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটির মাধ্যমে পার্ক ও খেলার মাঠ কেন্দ্রিক জনগনের অধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া যথাযথ নিয়মে পার্ক ও মাঠ পরিচালিত হচ্ছে কিনা সেটি এ কমিটি সার্বক্ষণিক মনিটর করবে।
চলমান চুক্তির মেয়াদ শেষে, পরবর্তীতে ক্লাবভিত্তিক মডেলে আর পার্ক ও মাঠ ব্যবস্থাপনা করা হবে না।
মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিচার নিশ্চিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সংস্কারের পাশাপাশি জুলাইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের আইনের আওতায় আনতে আমরা বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, ন্যায়বিচার মানে কেবল শাস্তি নয়—ন্যায়বিচার মানে এমন একটি রাষ্ট্র গঠন, যেখানে রাষ্ট্রক্ষমতা আর কখনও জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার হবে না।
আজ মঙ্গলবার ঢাকায় একটি হোটেলে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনের উপর জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জাতির ত্যাগ, সাহস এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আন্তরিক সহায়তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আজ আমরা একত্র হয়েছি একটি গভীর তাৎপর্যময় ঘটনার—জুলাই বিপ্লবের প্রথম বার্ষিকী—স্মরণে। এটি ছিল এমন এক মুহূর্ত, যখন হাজার হাজার বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ—যাদের অধিকাংশই তরুণ—অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল এবং দেশের মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ পুনরুদ্ধার করেছিল। তাদের সাহস শুধু আমাদের জাতির জন্য নয়, সমগ্র মানবজাতির পক্ষেই উচ্চারিত হয়েছিল।’
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনের কথা স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক দিনে, আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষত জাতিসংঘের অবিচল সমর্থনের কথাও স্মরণ করতে চাই, যারা সবসময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে—১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা সংকট এবং গত বছরের জুলাই ও আগস্টের অন্ধকার দিনগুলোতেও।’
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘ সকল মানুষের—জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ বা সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে—অবিচ্ছেদ্য অধিকার সংজ্ঞায়িত ও রক্ষার লক্ষ্য নিয়েছিল। মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা পৃথিবীর একটি নৈতিক দিকনির্দেশক হয়ে ওঠে, এবং তার মূলনীতি বাংলাদেশের সংবিধানেও সুপ্রতিষ্ঠিত। তবুও গত ১৬ বছরে, বাংলাদেশের নাগরিকদের এই অধিকার বারবার খর্ব করা হয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো দখল করা হয়েছে, স্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছে এবং সহিংসতা হয়ে উঠেছিল শাসনের মূল হাতিয়ার।
তবে গতবছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্পষ্টতা, সংকল্প এবং অসাধারণ সাহসিকতার সাথে নিজেদের অধিকার পুনরুদ্ধার করেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গতবছরের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের দপ্তরকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই কয়েক সপ্তাহে প্রায় ১,৪০০ মানুষ প্রাণ হারায়। এই সহিংসতা ছিল পরিকল্পিত, সংগঠিত এবং পূর্ববর্তী সরকারের সর্বোচ্চ স্তর থেকে পরিচালিত। এই সহিংসতা শুধু নিন্দনীয় নয়, বরং তা মানবতা বিরোধী অপরাধ সম্পর্কেও গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য সত্য উন্মোচন শুধু ন্যায়বিচারের জন্য নয়, নিজেদের শোধরানোর জন্যও অপরিহার্য।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই অনুসন্ধানকে আরও সমর্থন করেছে আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা, যার মধ্যে বিবিসি এবং আল জাজিরার রিপোর্টও রয়েছে। জাতিসংঘের হাইকমিশনারের দপ্তরের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ, তারা শুধু এই নিপীড়নের প্রামাণ্য নথি প্রস্তুত করেনি, বরং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন আর কখনো না ঘটে, তার জন্য একটি বিস্তৃত সুপারিশমালাও প্রদান করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমান সরকার মানবাধিকার সুরক্ষায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে—যেমন দণ্ডবিধির সংশোধন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা বিষয়ে আন্তর্জাতিক কনভেনশনে যোগদান এবং জাতিসংঘের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর। এই চুক্তির আওতায় ঢাকায় একটি সহায়তাকারী মিশন গঠিত হচ্ছে, যা সরকার ও সুশীল সমাজকে কারিগরি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দেবে।
তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টার্কসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবিচল সহায়তা এবং একাত্মতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শুরু থেকেই জাতিসংঘ আমাদের রূপান্তর প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ও সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার স্বপ্নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার উপর জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য কাজ করছি—যার লক্ষ্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা। এমন একটি সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই, যেখানে সবাই শান্তি, স্বাধীনতা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, গত বছরের ঘটনাগুলো আমরা স্মরণ করছি, যারা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন এই স্বপ্নের জন্য। তাদের আত্মত্যাগ আমাদের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় রচনা করেছে। তারা একটি নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছেন—এই আশায় যেখানে মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণ দৃঢ়ভাবে থাকবে।
২০২৬ সালের একুশে পদক প্রদানের জন্য মনোনয়ন প্রস্তাব আহ্বান করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে এ বছর ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর/সংস্থা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা প্রশাসক এবং স্বাধীনতা ও একুশে পদকে ভূষিত সুধীজনকে মনোনয়ন প্রস্তাব সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ভাষা আন্দোলন, শিল্পকলা (সংগীত, নৃত্য, অভিনয়, চারুকলাসহ সকল ক্ষেত্র) মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অর্থনীতি, সমাজসেবা, রাজনীতি, ভাষা ও সাহিত্য এবং সরকার নির্ধারিত অন্য যে কোনো ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় ও গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্যক্তি (জীবিত বা মৃত), গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাকে এ পদক প্রদান করা হবে।
এ সংক্রান্ত সকল তথ্য ও নীতিমালা এবং মনোনয়ন প্রস্তাবের ফরম সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (www.moca.gov.bd) এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (www.moi.gov.bd) পাওয়া যাবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক আব্দুস সবুরের মুত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও সচিব মাহবুবুর রহমান।
তিনি মঙ্গলবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্তেকাল করেন।
পৃথক শোকবার্তায় বাণিজ্য উপদেষ্টা ও বাণিজ্য সচিব মরহুমের বিদেহ আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
তিন ক্যাটাগরির আহত আরও এক হাজার ৭৫৭ জন জুলাই যোদ্ধার গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার।
সোমবার (২৯ জুলাই) রাতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তালিকার গেজেট প্রকাশ করা হয়।
‘ক’ শ্রেণির (অতি গুরুতর আহত) ১০৯ জন, ‘খ’ শ্রেণির (গুরুতর আহত) ২১০ জন ও আট বিভাগে ‘গ’ শ্রেণির (আহত) এক হাজার ৪৩৮ জন জুলাই যোদ্ধার গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
‘গ’ শ্রেণির মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ২২৬ জন, রংপুর বিভাগে ৯০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১১১ জন, বরিশাল বিভাগে ১১৬ জন, সিলেট বিভাগে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে ১৬৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৩৬ জন এবং ঢাকা বিভাগের ৪০৬ জন জুলাই যোদ্ধা রয়েছেন।
'জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫' এর ৭ (খ) ধারা এবং রুলস অব বিজনেস ১৯৯৬ এর সিডিউল-১ (অ্যালোকেশন অব বিজনেস) এর ক্রমিক নং ২৩-এ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে দেওয়া ক্ষমতাবলে এই গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে পাওয়া তালিকা যাচাই-বাছাই করে প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
এ নিয়ে মোট জুলাই যোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়ালো ‘ক’ শ্রেণিতে ৬০২ জন, ‘খ’ শ্রেণিতে এক হাজার ১১৮ জন ও ‘গ’ শ্রেণিতে ১২ হাজার ৩৮ জন।
এই সংক্রান্ত বিধিমালা অনুযায়ী, ‘ক’ শ্রেণির আহতরা এককালীন ৫ লাখ টাকা পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তাদের ২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বাকি ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এরা প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন।
‘খ’ শ্রেণির আহতরা এককালীন ৩ লাখ টাকা পাবেন। গত অর্থবছরে তাদের এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি ২ লাখ টাকা চলতি অর্থবছরে দেওয়া হবে। তারা মাসিক ১৫ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন।
‘গ’ শ্রেণির আহতরা এককালীনে এক লাখ টাকা দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে এ টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তারা প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, নারী গৃহকর্মীর অধিকার সুরক্ষায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
সোমবার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন অডিটোরিয়ামে গণসাক্ষরতা অভিযান, বিএনএসকে, সবুজের অভিযান ফাউন্ডেশন, আভাস, সহায় এবং আশার আলো সোসাইটির আয়োজনে অক্সফাম ইন বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় আয়োজিত ‘নারী গৃহকর্মী সম্মেলন-২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম সচিব এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে তিনটি কনভেনশনে স্বাক্ষর করার বিষয়ে কাজ করছি, যা বাস্তবায়িত হলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত হবে। ফলে শ্রমিক নির্যাতন বন্ধে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবে।
তিনি গৃহকর্মী নির্যাতন রোধেও সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
সম্মেলনে গৃহকর্মীদের জন্য ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, কর্মঘণ্টা ও ছুটির আইনি স্বীকৃতি, শারীরিক-মানসিক নির্যাতন বন্ধ, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তি এবং বিশেষ আইন প্রণয়নের দাবি জানানো হয়।
শ্রম সচিব উত্থাপিত দাবিগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ আকারে পাঠানোর আশ্বাস দেন। কোনো গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯, ১৬৩৫৭ ও ১০৯২১ নম্বরে যোগাযোগ করারও পরামর্শ দেন তিনি।
এম সফিকুজ্জামান জানান, গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫ বাস্তবায়নে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।
সম্মেলনে মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা এবং জুলাই শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধূরী। আলোচনায় অংশ নেন বিলস-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, নারী সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক, অক্সফামের প্রতিনিধি তারেক আজিজ, বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক এবিএম খোরশেদ আলম প্রমুখ।
এ সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, গৃহকর্মী ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ হিন্দু পরিবারের সার্বিক অবস্থা পরিদর্শন শেষে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ বিস্তারিত জানিয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল গতকাল সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, ২২টি পরিবারের মধ্যে ১৯টি পরিবার বর্তমানে তাদের বাড়িতেই আছে। কটুক্তির অভিযোগে আটককৃত রঞ্জন কুমার রায় এবং তার চাচার পরিবারসহ মোট ০৩টি পরিবার পার্শ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন।
আজ থেকেই জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের বাড়িঘর মেরামত করার কাজ শুরু করা হবে।
তিনি পরিবারগুলোর সাথে কথা বলেছেন এবং তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়োজিত রয়েছে।
এদিকে রংপুরের পুলিশ সুপার মো: আবু সাইম জানান, হিন্দু পরিবারগুলোর ওপর হামলার ঘটনায় মোট ১২ টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই বাড়িগুলোতে ২২ টি পরিবার বসবাস করতো।
তিনি জানান, রঞ্জন আটক হওয়ার পর থেকেই তার বাবা, দাদা এবং চাচার পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আছেন। অন্যান্য ১৯ টি পরিবারের সকল পুরুষ সদস্য তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ই আছেন। ঘরবাড়ি ভাংগা থাকায় কিছু নারী সদস্য মালামাল নিয়ে রিক্সাভ্যান যোগে অন্যত্র চলে গেছে।
স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও এলাকায় সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে প্রশাসন ও পুলিশ এর সাথে কাজ করছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত হলে নারী সদস্যগণসহ সকলেই নিজ নিজ বাড়িতে ফিরবেন বলে জানান তিনি।
এই হামলার ঘটনায় দায়ীদের সনাক্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।