দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তার বহিস্কারাদেশ কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
সোমবার বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ইকবাল মনোয়ারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
শিহাব উদ্দিন খান জানান, সাংবাদিক ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কারাদেশের সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আদালত। তার বিরুদ্ধে কোনো প্রসিডিংও চলবে না। একই সঙ্গে রুল জারি করেছেন আদালত। শিক্ষা সচিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, জনসংযোগ কর্মকর্তা এবং মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। নিজের বহিস্কারাদেশ চ্যালেঞ্জ করে গতকাল রোববার রিট করেন ইকবাল।
এর আগে তিন দিনের সময় দিয়ে গত বুধবার আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু নোটিশ অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় রিট দায়ের করা হয়।
আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান আরও জানান, যে অফিস আদেশের মাধ্যমে ইকবালকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সে আদেশে কোনো আইন বা বিধির উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া তার সংবাদে উল্লেখিত উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃতের আপাত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উপাচার্য তার ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই ইকবালকে বহিষ্কার করেছেন।
গত ৩১ জুলাই উপাচার্যের বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এরপর ২ আগস্ট সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক ও যায়যায়দিনের প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত সরকারি কর্মকমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রণ এবং ন্যায়পাল নিয়োগ প্রক্রিয়ার আলোচনায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বিএনপি।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২০তম দিনের আলোচনার শুরুতে ওয়াকআউটের সিদ্ধান্ত জানায় দলটি।
বেলা সাড়ে ১১টার পরে বিষয়টি আলোচনার জন্য উপস্থাপন করেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ জানান, তাদের দল এ আলোচনায় অংশ নেবে না।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা উপস্থিত থাকবেন কিন্তু আলোচনায় অংশ নেবেন না। একটি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ না নিলে পুরো সংলাপ বন্ধ করা সম্ভব নয়।
অবশ্য কিছু সময় পর বিএনপি আবার আলোচনায় যোগ দেয়।
তবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, একটি বড় দল আলোচনায় অংশ না নিলে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। আলোচনায় অগ্রসর হওয়া সম্ভব নয়।
কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভায় মাদকবিরোধী অভিযানে ১০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ সৈয়দ নূর (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
অভিযানে ১টি ওয়ান শুটার গান, ১টি এলজি, ১ রাউন্ড তাজা গুলি ও ১টি গুলির খালি খোসা উদ্ধার করা হয়।
সোমবার বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে আরো বলা হয়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) জানতে পারে, একটি অপরাধীচক্র সমুদ্রপথে মাদক এনে টেকনাফ ও আশপাশের এলাকায় বেচাকেনা করছে। এরপর লে. কর্নেল আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে বিজিবির একাধিক দল টেকনাফ শহরের বিভিন্ন স্থানে একযোগে অভিযান চালায়।
একপর্যায়ে টেকনাফ পৌরসভার খানকারপাড়া এলাকা ঘিরে ফেলে বিজিবি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় রোববার দুপুরে সৈয়দ নূরকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মাদক সরবরাহকারী মো. হারুন অর রশিদ বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে মাদকের একটি প্যাকেট নূরের কাছে রেখে আরেকটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে নূরের বাড়ি তল্লাশি করে বিপুল পরিমান মাদক, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
আটক নূর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পাশেই সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধা নিয়ে গড়ে উঠা আধুনিক শোধনাগার। প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত হওয়া এ শোধনাগারই এরই মধ্যে চালুও হয়েছে। তবে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় নাচোল পৌরসভার ট্রাকে করে নিয়ে আসা শহরের সব ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে আগের মতই রাস্তার পাশে। এতে করে এত টাকা খরচে নির্মিত হওয়া আধুনিক শোধনাগারটি খুব একটা কাজে আসছে না, উল্টো বর্জ্য শোধনাগারের সামনে থাকা ময়লা-আবর্জনার স্তুপে ছড়াচ্ছে দূর্গন্ধ, পথচারী, ওই এলাকার বাসিন্দা সবাই পড়েছেন ভোগান্তিতে।
নাচোল উপজেলার দরবেশপুর এলাকায় সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে নির্মিত এ শোধনাগারের কার্যক্রম গত ৭ জুলাই উদ্বোধন করেন সাবেক পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলুফা সরকার। এরপর থেকেই কয়েকজন শ্রমিক সেখানে কাজ করছেন। তবে তাদের কেউই কোন ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহার করছেন না, নেই কোন নির্ধারিত মাস্ক ও পোষাক। যা তাদের বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুকিতে ফেলে দিচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, রাস্তার পাশেই ময়লা এনে জমা করে রাখার কারনে এলাকায় টেকায় যাচ্ছে না, দূগন্ধে বসবাস করায় কঠিন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আতাউর রহমান বর্জ্য শোধনাগারের জন্য আনা ময়না আবর্জনা রাস্তায় পাশেই স্তুপ করে রাখা হচ্ছে এতে ছড়াচ্ছে দূগন্ধ, এলাকাবাসীর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।
এ প্রকল্পের সংস্লিষ্ট কর্মকর্তা তাহসিনা সিরাজ জানান, ময়লা আবর্জনা পৌরসভার, তারা আমাদের এখানে পৌচ্ছে দিবে। আমাদের শোধনাগারের মধ্যেই তাদের ট্রাক নিয়ে আসবে। তাহলে শোধনাগারের সামনে সড়কের পাশেই কেন ময়লার স্তুপ। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন আমি বিষয়টি দেখছি।
শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার বিষষে উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম জানান, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে, আমি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলব।
নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক কামাল হোসেন বলেন, আমি নতুন এসেছি, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিব।
হেপাটাইটিস নির্মূলের লক্ষ্য অর্জনে আজ পালন করা হবে ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’। বিশ্বের অনান্য দেশের মত বাংলাদেশেও দিবসটি উপলক্ষ্যে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও আজ ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘আসুন এটি ভেঙে ফেলা যাক’।
তিনি আরো বলেন, লিভার রোগ সম্পর্কে অজ্ঞতা, সময়মত চিকিৎসা না করা এবং নানা কুসংস্কারের কারণে দেশে লিভার রোগের প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করছে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৪.৪ শতাংশ হেপাটাইটিস-বি এবং ০.৬ শতাংশ হেপাটাইটিস-সি ভাইরাসে আক্রান্ত। প্রতিবছর বহু মানুষ হেপাটাইটিস, লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যান্সার ও লিভার ফেইলিওরে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান।
সচেতনতা ও সময়মতো সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এসব রোগ প্রতিরোধ এবং সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব। স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর বলেও আশা প্রকাশ করেন।
২০০৮ সালের ২৮ জুলাই প্রথমবার বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস পালনের উদ্যোগ নেয় ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস অ্যালায়েন্স’। ২০১১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটিকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়। এরপর থেকে প্রতিবছর এই দিনে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস হল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত ১১টি আনুষ্ঠানিক বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য প্রচারের একটি। নোবেল বিজয়ী বারুচ স্যামুয়েল ব্লুমবার্গ হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস আবিষ্কার করেন। তার জন্মদিন ২৮ জুলাইকেই ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
বিশ্বজুড়ে আজ বিনামূল্যে স্ক্রিনিং, টক শো, প্রচারণা, কনসার্ট এবং টিকাদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি পালিত হচ্ছে। প্রতি বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও বিশ্ব হেপাটাইটিস অ্যালায়েন্স এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
২০২৪ সালের ২৯ জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখ্যান করে মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা এবং অনলাইনে তা ব্যাপক ভাবে প্রচারের কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে গণমাধ্যমকর্মীদের খুদে বার্তা পাঠিয়ে নতুন কর্মসূচির কথা জানান।
এতে বলা হয়, হত্যা ও নির্যাতনের বিচার না করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে নির্মম উপহাস করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখ্যান করে ৩০ জুলাই মঙ্গলবার মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা এবং অনলাইনে তা ব্যাপক প্রচারের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবির বিষয়টিও তিনি খুদে বার্তায় উল্লেখ করেন। নতুন কর্মসূচির কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার করা হয়।
কর্মসূচি ঘোষণার পর সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে এ কর্মসূচি পালন করতে শুরু করে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এই কর্মসূচি ঘোষণার পর অনেক তারকাও ফেসবুক প্রোফাইল ছবি পরিবর্তন করেন।
এদিকে সোমবার দুপুরে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীর সভার বৈঠকে কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলনকে ঘিরে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে মঙ্গলবার দেশব্যাপী শোক পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বলা হয়, শোক পালনের অংশ হিসেবে কালো ব্যাজ ধারণ করা হবে। আর নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
এদিকে সোমবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের ‘জিম্মি’ করে বিবৃতি আদায়ের প্রতিবাদ, গুম-গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং ছাত্র-জনতার হত্যার বিচারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এইদিন শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের মধ্যেও ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, কুমিল্লা, বরিশাল, ঠাকুরগাঁও, বগুড়া, যশোর, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালীসহ কয়েক জেলার কিছু স্থানে বিক্ষোভ করেন তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এদিনও কর্মসূচিস্থল থেকে শিক্ষার্থীদের আটক করে।
সোমাবার রাজধানীর পল্টন, সেগুনবাগিচা, সায়েন্সল্যাব, ইসিবি চত্বর, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরসহ কয়েকটি এলাকায় জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া ও লাঠিচার্জে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। শুধু ঢাকায় জমায়েত হওয়ার স্থান থেকে কমপক্ষে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
২৯ জুলাই অফিস-আদালতে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে। রাজধানীর অধিকাংশ এলাকার পরিবেশ প্রায় স্বাভাবিক ছিল। অধিকাংশ সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
দশম দিনের মতো দেশে কারফিউ অব্যাহত থাকে, যদিও দিনের বেলার কারফিউ শিথিল থাকার সময় সীমা বাড়ানো হয়।
সোমবার সকাল থেকেই বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)’কে তাদের হেলিকপ্টার ব্যবহার করে টহল দিতে দেখা যায়। সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে টহল দিতে দেখা যায়।
এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে বসানো হয় চেকপোস্ট। পুলিশ মাইকিং করে কাউকে এক জায়গায় জড়ো না হতে হুঁশিয়ারিও দেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে অবস্থান করেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে তাদের খাওয়ানোর ছবি প্রকাশ করাকে জাতির সঙ্গে মশকরা বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি ও আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে রিটের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে হাইকোর্ট এ কথা বলেন।
এদিকে রাতে গণভবনে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বৈঠকে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধে ১৪ দলের নেতারা একমত হন।
বৈঠকে শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দলের নেতারা মনে করেন, ‘বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল ও শিবির তাদের দোসর জঙ্গি গোষ্ঠীকে নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাই ১৪ দলের নেতারা সর্বসম্মতিক্রমে জামায়াত ও শিবিরকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধে একমত হয়েছেন।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে মৃত্যু, গুলিবর্ষণ, গ্রেপ্তারসহ নির্যাতনের নানা ঘটনার সত্য উদঘাটনে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়। সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ‘গণহত্যার বিচার চাই; গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার ও নির্যাতন বন্ধ করো’ শীর্ষক আইনজীবীদের এক মানববন্ধন থেকে এই কমিশন গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার কর্তৃক প্রকাশিত চলমান কোটা আন্দোলনে নিহতদের নাম ও সংখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে নিহতের এ সংখ্যা অনেক বেশি।
এদিকে আন্দোলনে শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ড ও সামগ্রিক ঘটনা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ তদন্তসহ ছয় দফা দাবি জানায় গণতন্ত্র মঞ্চ। দাবিগুলোর মধ্যে ছিল, দ্রুত কারফিউ প্রত্যাহার, সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবিসহ বিশেষ বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া, ইন্টারনেট পুরোপুরি চালু, আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার পরিকল্পনাকারী, নির্দেশদাতা ও বাস্তবায়নকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা, গ্রেপ্তারকৃত বিরোধী নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের মুক্তি এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, গোয়েন্দা বাহিনীর তুলে নেওয়া আন্দোলনকারী নেতাদের মুক্তি, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু ও ব্লক রেইড বন্ধ করা।
চলমান ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে জুলাই মাস জুড়ে সংঘটিত মৃত্যুর ঘটনাকে ‘জুলাই হত্যাকাণ্ড’ বলে আখ্যা দেন শিক্ষকরা। এ ছাড়া সারা দেশে হত্যা-গুম-গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আতঙ্ক-হয়রানি বন্ধ এবং আটককৃতদের মুক্তির দাবি জানান বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত শতাধিক শিক্ষক।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে আটকে রেখে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা পাঠে বাধ্য করাকে ‘অনৈতিক’ ও ‘গর্হিত অপরাধ’ বলে উল্লেখ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি জানায়, ডিবি জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। নিরাপত্তা হেফাজতের কোনো আইনি ভিত্তি নেই।
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি ঘটনার তদন্ত দাবি করে বিবৃতি দেন বিক্ষুব্ধ ৭৪ বিশিষ্ট নাগরিক। ২৯ জুলাই প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের বেশিরভাগই কম বয়সী ও শিক্ষার্থী।
সরকারি আদেশে (জিও) পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ না থাকায় সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীরা কোন পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তাই বিদেশ ভ্রমণের আদেশে পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করার জন্য চিঠি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
গতকাল রোববার সব মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব/সচিবদের কাছে এ চিঠি পাঠিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্ন সময় কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণের সরকারি আদেশ জারি করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের বিদেশ ভ্রমণের সরকারি আদেশে (জিও) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীর পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করা হচ্ছে না। সরকারি আদেশে পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ না থাকায় কর্মকর্তা/কর্মচারীরা কোন পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
এমতাবস্থায়, কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণের সরকারি আদেশে (জিও) পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করার জন্য অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় পুলিশের সদস্যসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের শুনানি আজ।
সোমবার (২৮ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ আজ এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি করবেন বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার (২৫ জুলাই) কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ছয় আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এই ছয় আসামি হলেন— সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলাম, রাফিউল, আনোয়ার পারভেজ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী আশেক।
গত ১০ জুলাই পলাতক ২৬ আসামিকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে, ৩০ জুন আবু সাঈদ হত্যায় পুলিশের সদস্যসহ মোট ৩০ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই বিকালে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। আবু সাঈদ ছিলেন জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রথম শিক্ষার্থী।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় ৭১ জন নির্বাচন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ইসি সচিবালয়ের সহকারী সচিব মোহাম্মদ শহীদুর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বদলির আদেশ জারি করা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, ‘বদলিকৃত কর্মকর্তাগণ আগামী ৩ আগস্টের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হবেন, অন্যথায় আগামী ৪ আগস্ট তারিখে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত মর্মে গণ্য হবেন।’
বদলিকৃত ৭১ নির্বাচন কর্মকর্তার বেশিরভাগই উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা।
এছাড়া নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকার সহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেনকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সহকারী সচিব পদে পদায়ন করা হয়েছে।
অপর দিকে, কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দা সাদিকা সুলতানাকে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকার সহকারী পরিচালক করা হয়েছে।
আইকনিক মসজিদ নির্মাণে ২৪৪ কোটি টাকা দেবে সৌদি সরকার। আটটি আইকনিক মসজিদ নির্মাণে সৌদি সরকারের রাজকীয় অনুদান থেকে এ অর্থ দেওয়া হবে।
আজ সচিবালয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ড. আব্দুল্লাহ জাফর এইচ বিন আবিয়াহ এ কথা জানান।
ধর্ম উপদেষ্টা জানান, সৌদি অর্থায়নে আইকনিক মসজিদ নির্মাণের কাজ যথা দ্রুত সম্ভব শুরু করা হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিভাগ থেকে এ মসজিদ নির্মাণের বিষয়ে জমির প্রস্তাব পাওয়া গেছে। বাকিগুলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড় ও বন্ধুত্বপূর্ণ। বর্তমানে এদেশের প্রায় ৩২ লাখ লোক সৌদি প্রবাসী। তারা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখছেন। ঠিক একইভাবে সৌদি সরকারের ভিশন-২০৩০ বাস্তবায়নে সেদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
আগামীতে দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে বলে উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ বছর অত্যন্ত সুন্দর ও সাবলীল হজ ব্যবস্থাপনার জন্য ধর্ম উপদেষ্টা সৌদি সরকার ও সেদেশের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান।
একইসঙ্গে তিনি আগামী বছরের হজ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কতিপয় বিষয়ে সৌদি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মিনা, আরাফা ও মুজদালিফায় ওয়াশরুমের সংখ্যা বৃদ্ধি, নিরবচ্ছিন্ন পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং মিনার তাঁবুতে বিছানার সাইজ বাড়ানোর বিষয়ে উপদেষ্টা সৌদি রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ জানান।
রাষ্ট্রদূত এ সকল প্রস্তাবের বিষয়ে তাঁর দেশের সরকার এবং হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার আশ্বাস দেন।
এছাড়া, তিনি বাংলাদেশ উন্নয়নে সৌদি সরকারের সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
সাক্ষাৎকালে তাঁরা দু’দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক আগামীতে আরো মজবুত ও সুসংহত করার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়া হজযাত্রীদের লাগেজ পরিবহনে আরএফআইডি ট্যাগ সংযোজন, ঢাকায় অ্যারাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউট স্থাপনসহ দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
এসময় ধর্ম সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক ও হজ অনুবিভাগের যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জুরুল হক উপস্থিত ছিলেন।
অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান) এর সদস্যপদ পেতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় সমর্থন জানাতে মালয়েশিয়ার প্রতি পুনরায় আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ রোববার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মালয়েশিয়ার পিপলস জাস্টিস পার্টির সহ-সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কন্যা নুরুল ইজ্জাহ আনোয়ার।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আসিয়ানের অংশ হতে চাই এবং আপনাদের সমর্থন আমাদের প্রয়োজন।’
বাংলাদেশ ২০২০ সালে আসিয়ানের খাতভিত্তিক সংলাপ অংশীদার হওয়ার জন্য আবেদন করে।
প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আসিয়ানের বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে থাকা মালয়েশিয়া বাংলাদেশের আবেদন মঞ্জুরের ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে, যাতে বাংলাদেশ প্রথমে খাতভিত্তিক সংলাপের অংশীদার এবং পরবর্তীতে এই আঞ্চলিক সংস্থার পূর্ণ সদস্যপদ পেতে পারে।’
সাক্ষাৎকালে নুরুল ইজ্জাহ ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সম্প্রতি সংঘটিত বিমান দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আমাদের দেশের জন্য একটি দুঃখজনক ও মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা অনেক মানুষকে হারিয়েছি।’
প্রধান উপদেষ্টা নুরুল ইজ্জাহকে মালয়েশিয়ার পিপলস জাস্টিস পার্টির সহ-সভাপতি হওয়ায় অভিনন্দন জানান।
প্রধান উপদেষ্টা নুরুল ইজ্জাহর সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কার নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ছাত্ররা বুকে গুলি খেয়ে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে উৎখাত করেছে। এটি তরুণদের নেতৃত্বাধীন একটি আন্দোলন ছিল, কিন্তু সব শ্রেণির মানুষ এতে অংশ নিয়েছে। ছাত্ররা দেয়াল ও রাস্তা রাঙিয়ে তুলেছে জুলাই বিদ্রোহের চেতনায়।’
অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এশিয়া দ্রুত বার্ধক্যের দিকে এগোচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশে বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে। আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেকের বয়স ২৭ বছরের নিচে। এখানে শিল্প গড়ে তুলুন এবং বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করুন। এতে আমাদের দুই দেশের অর্থনীতির উপকার হবে।’
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সারাদেশের সব কমিটি স্থগিত ঘোষণা করেছেন সংগঠনটির সভাপতি রশিদুল ইসলাম রিফাত।
আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর শাহবাগে চলমান বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ডাকা এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে রিফাত বলেন, অর্গানোগ্রামের জরুরি মিটিংয়ে সম্মিলিত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যতীত সারাদেশের সব কমিটি আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থগিত ঘোষণা করা হলো। সংগঠনটির আগামী কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হবে, তা পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে জানানো হবে।
গত ২৫ জুন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত এ কমিটিতে রশিদুল ইসলাম (রিফাত রশীদ) সভাপতি ও মো. ইনামুল হাসান সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মুঈনুল ইসলাম ও মুখপাত্র পদে সিনথিয়া জাহীন আয়েশা নির্বাচিত হন।
ওইদিন রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় ফল ঘোষণা করা হয়।
শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, বাংলাদেশে আর কখনো যেন ভয় ও নিপীড়নের শাসন ফিরে না আসে। একটি দমন-পীড়নমূলক শাসন ব্যবস্থার পতনের পর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে জুলাই বিপ্লব নিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের দমনমূলক শাসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্রে পরিণত করা হয়। গুম ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা। হাজারো রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী, ছাত্রনেতা ও সাংবাদিককে অপহরণ, নির্যাতন বা স্থায়ীভাবে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বহু পরিবার আজও জানে না, তাদের সন্তান জীবিত নাকি অচেনা কোন কবরে শায়িত আছে।
উপদেষ্টা আরো বলেন, নির্বাচন, গণমাধ্যম ও ছাত্র আন্দোলনের কণ্ঠ রোধ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা অপকৌশল ব্যবহৃত হয়েছিল। কারাগারগুলো অপরাধীদের নয়, দেশপ্রেমিকদের দিয়ে ভরে গিয়েছিল। ফেসবুক পোস্টই ডেকে আনত মাঝরাতের পুলিশি অভিযান। শুধু মত প্রকাশের দায়ে একটি ভালো বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখা ছাত্রকে পিটিয়ে আহত কিংবা শহীদ করা হয়েছে।
সম্মেলনে মূলবক্তা ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, কূটনীতিক জন এফ. ড্যানিলোভিচ।
সম্মেলনের শুরুতে শহীদ জাহিদুজ্জামান তানভীনের বাবা ও মা তাদের বক্তৃতায় দ্রুত জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানান। ছাত্রনেতা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে এ সম্মেলনে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, কূটনীতিক ও মানবাধিকার কর্মীরা বক্তৃতা দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রিসার্চ অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটেড থট (আরআইটি), ইউনিভার্সিটি অব রেজিনা (কানাডা), নানইয়াং টেকনোলজিকাল ইউনিভার্সিটি (সিঙ্গাপুর), কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি (যুক্তরাষ্ট্র), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চ (সিপিএসআর), ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাসি, সোচ্চার এবং ইনসাফ যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সম্মেলনের আহ্বায়ক হলেন অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ।