বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
১৬ শ্রাবণ ১৪৩২
গ্রেনেড হামলা মামলা

১৯ বছরেও হাইকোর্ট পেরোয়নি, এ বছরেও সম্ভাবনা কম

আপডেটেড
২১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০
আব্দুল জাব্বার খান
প্রকাশিত
আব্দুল জাব্বার খান
প্রকাশিত : ২১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০

ইতিহাসের বর্বরোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলাটি বিচারের প্রথম ধাপ পেরিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে হাইকোর্ট বিভাগে ঝুলে আছে। ঘটনার ১৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো হাইকোর্টে বিচারাধীন মামলাটি। তবে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে চলতি বছরেই হাইকোর্ট থেকে মামলাটির সমাপ্তি ঘটবে। অন্যদিকে আসামিপক্ষ বলছে যেভাবে থেমে থেমে শুনানি হচ্ছে তাতে এ বছরেও শেষ হবে না।

২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার ডেথ রেফারেন্সসহ আসামিদের করা আপিল শুনানি গত বছরের ৫ ডিসেম্বর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুরু হয়। এরপর মুলতবি করে করে মামলাটিতে এখনো পেপারবুক পড়াও শেষ হয়নি। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তার দাবি, চলতি বছরের মধ্যেই হাইকোর্টে মামলাটি শেষ হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এ মামলায় পেপারবুক পড়া প্রায় শেষ। অল্প কিছু পৃষ্ঠা বাকি আছে। বিচারাধীন মামলার জ্যেষ্ঠ বিচারক কিছু দিন অসুস্থ থাকায় বেঞ্চটি বসছে না। তিনি সুস্থ হয়ে এলে বন্ধের পরে কোর্ট বসলে আশা করি অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। বন্ধের (অবকাশ) পরে যখন কোর্ট শুরু হবে তখন আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক পেশ করার সুযোগ পাবেন। তাদের বক্তব্য শেষ হলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আমাদের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ পাব। এরপর হয়তো ১০ থেকে ১২ কার‌্য দিবসেই শেষ হয়ে যাবে।

হাইকোর্টের রায়েও বিচারিক আদালতের রায় বহাল থাকবে এমনটি প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য থাকবে, বিচারিক আদালত অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণভাবে আইনগতভাবে রায় দিয়েছেন। এই রায় যাতে বহাল থাকে সেই প্রার্থনা করব আমরা। আশা করছি চলতি বছরের মধ্যেই মামলা শেষ হবে।’

এ মামলায় আসামিপক্ষে রয়েছেন একাধিক আইনজীবী। তাদের মধ্যে আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘২১ আগস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের রায় হয়েছে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর। এ মামলায় হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শেষ হলে আসামিপক্ষ থেকে আমরা শুনানি করব, তার জন্য আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। সামনে হাইকোর্টের দেড় মাসের একটা ভ্যাকেশন (অবকাশ) রয়েছে। এরপর কোর্ট শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষ শেষ করবে। তারপর আসামিপক্ষে আমাদের সময় দিতে হবে। যেহেতু আসামিপক্ষে অনেক আইনজীবী রয়েছেন প্রত্যেককে সময় দিতে হবে। সবার বক্তব্য শেষ হলে তবেই মামলাটি রায়ের জন্য যাবে। তাতে মনে হচ্ছে না এ বছরই মামলাটি শেষ হবে।’

এ মামলার অন্যতম আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মামলাটিকে বলা হয়, জজ মিয়া নাটক। আসলে সব থেকে বড় নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে মুফতি হান্নানের মাধ্যমে। এ মামলায় একসময় ৬০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি হয়ে গিয়েছিল। সেই চার্জশিটে কোথাও তারেক রহমান, বাবরের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তাদের আজ্ঞাসহ তদন্তকারী কর্মকর্তা দিয়ে নতুন করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। যেখানে মুফতি হান্নানকে দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি করা হয়। পরে কিন্তু হান্নান অস্বীকার করেছেন- তিনি এমন জবানবন্দি দেননি। এটা দিয়ে প্রমাণ হয়, এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তির হয়রানি করার জন্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আসামি করা হয়েছে। আশা করি উচ্চ আদালতে তারা নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।’

আরেক আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এ মামলায় পেপারবুক পড়া শুরু হয়েছে। তবে জ্যেষ্ঠ বিচারক অসুস্থ থাকায় কোর্ট বসছে না। সব পক্ষ শুনে মামলাটি শেষ করতে আরও দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হবে’ বলেও মনে করেন তিনি।

বর্বরোচিত এ ঘটনার ১৪ বছর পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। একই সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় এবং ১১ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। এরপর ওই বছরের ২৭ নভেম্বর দুই মামলার রায়সহ প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পৃষ্ঠার নথি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়। পরে ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি মামলায় আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য গ্রহণ করেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। সে সময়ে দ্রুত পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন। পরে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলার পেপারবুক তৈরি হয়। এরপর ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত হয়ে বিজি প্রেস থেকে হাইকোর্টে আসে। এরপর সেটা যাচাই-বাছাই করে প্রস্তুত করা হয় পেপারবুক। পরে প্রধান বিচারপতি মামলাটি শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন।

ঘটনার বিবরণ

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তবে হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের ৩ শতাধিক নেতা-কর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন।

তদন্ত শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ১১ জুন দেয়া অভিযোগপত্রে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়। তখন জানা যায়, শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে হামলার ছক করা হয়েছিল। পাকিস্তান থেকে এসেছিল হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড।

এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। দুই বছর তদন্তের পর আরও ৩০ জনকে আসামি করে ২০১১ সালের ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর ফলে এ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২।

বিচার শেষে মামলার রায়

দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মামলার ঐতিহাসিক রায় প্রদান করা হয়। রায়ে ৪৯ জনকে সাজা দেয়া হয়।

চাঞ্চল্যকর এ মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-লুৎফুজ্জামান বাবর, আব্দুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজির সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক বিএনপি নেতা মোহাম্মদ হানিফ।

পরিকল্পনা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০২/১২০খ/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করেন আদালত।

আর এ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।

তাদের দণ্ডবিধির ৩০২/১২০খ/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয়ার পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।

এ ছাড়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহুদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আমিন, ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপকমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডির সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

এ মামলার আসামিদের মধ্যে ভিন্ন মামলায় মুফতি হান্নানসহ তিনজনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আর পলাতক রয়েছেন তারেক রহমানসহ ১৬ আসামি।

সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের যত মামলা

২১ আগস্ট মামলা ছাড়াও এক সময়ের প্রভাবশালী মন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের বিরুদ্ধে রয়েছে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার সাজা। এ মামলাটিতেও তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে। মামলাটি এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন।

এ ছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের এক মামলায় ৮ বছরের কারাদণ্ডের সাজা হয় তার বিরুদ্ধে। এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই থেকে কারাগারে আছেন বাবর।

বিষয়:

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের ৩৬তম সভা অনুষ্ঠিত

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের ৩৬তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি : পিআইডি
আপডেটেড ৩১ জুলাই, ২০২৫ ১৭:১৭
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের ৩৬তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়, সভায় ‘স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এছাড়া, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং-সাপেক্ষে ‘স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে।


আজকের মধ্যে আলোচনা শেষ করতে চায় কমিশন : অধ্যাপক আলী রীয়াজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জুলাই সনদ প্রণয়নের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আজই রাষ্ট্রসংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আলোচনা শেষ করতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আজ একথা জানিয়েছেন।

আজ সকাল সাড়ে এগারোটা থেকে শুরু হওয়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ২৩তম দিনের আলোচনার শুরুতে সূচনা বক্তব্যে তিনি একথা জানান।

তিনি বলেন, আজকের মধ্যেই অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিষ্পত্তির মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শেষ করা হবে। এরপর রাষ্ট্র সংস্কারের সনদের চূড়ান্ত খসড়া দলগুলোকে পাঠানো হবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত হবে বহুল আকাঙ্ক্ষিত জুলাই সনদ।

ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় ৬টি কমিশনের সুপারিশগুলোর সারাংশগুলোর মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনায় ঐকমত্য হয়েছে। ১৩টি বিষয়ে নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্য হয়েছে এবং বাকি অমীমাংসিত আলোচনাগুলো নিষ্পত্তির মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শেষ হবে আজ।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে ইতোমধ্যেই জুলাই সনদের পটভূমি খসড়া দেয়া হয়েছে। সেগুলোর ওপর দলগুলোর দেয়া সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে কমিশন।

তিনি জানান, দলগুলোর পারস্পারিক আলোচনার মধ্যদিয়ে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান হতে পারে বলেও আশা করা যাচ্ছে।

এরপর চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য তাদের কাছে পাঠানো হবে। সেখানে দলগুলো স্বাক্ষর করবে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আজকের আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে-উচ্চকক্ষ গঠন ও নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্রের মূলনীতি, সরকারি কর্ম কমিশন, দুদক, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান ও নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করছেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজ এ আলোচনায় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া উপস্থিত রয়েছেন।


সিজিএসের প্রতিবেদন জুন মাসে ৩২৪টি মিথ্যা তথ্য শনাক্ত 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) ২০২৫ সালের জুন মাসে ৩২৪টি যাচাইকৃত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের ঘটনা শনাক্ত করেছে, যেখানে দেখা গেছে বাংলাদেশে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্যের ব্যবহার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।

গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিজিএস এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের জুনে সিজিএস ৩২৪টি যাচাইকৃত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের ঘটনা শনাক্ত করেছে। যার মধ্যে রাজনৈতিক ভুয়া তথ্যের সংখ্যা ২৫৩টি, যা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে জনমতকে প্রভাবিত করার একটি স্পষ্ট প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।

এছাড়া বিনোদনসংক্রান্ত বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের সংখ্যা ছিল ২৪টি। এরপর ধর্মীয় (১৯টি), অনলাইন হোক্স (১৮টি), কূটনৈতিক (৫টি), অর্থনৈতিক (৪টি) এবং পরিবেশসংক্রান্ত (একটি) ভুয়া তথ্য ছিল।

প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্যের মূল লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছেন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নেতারাও, যে সংখ্যা মোট ১২৪টি। মিথ্যা তথ্যের আরও লক্ষ্য ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (৪৮), সেলিব্রিটি (২৫), ধর্মীয়সংক্রান্ত (১৬), রাজনৈতিক দল (১৩), সরকারি প্রতিষ্ঠান (১৬), অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (৬), বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (২) এবং ধর্মীয় ব্যক্তিকেন্দ্রিক (১)।

তবে, ৭৩টি ঘটনা অনির্দিষ্ট হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে, যেখানে ভুয়া তথ্য কোনো নির্দিষ্ট কাউকে লক্ষ্য করে করা হয়নি বরং সামগ্রিকভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সামাজিক মাধ্যম ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যেখানে ৩২৪টি ঘটনার মধ্যে ৩১৬টি ঘটেছে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, থ্রেডস এবং এক্স (টুইটার)-এর মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে এবং ৮টি ভুয়া তথ্য অনলাইন নিউজ পোর্টালে ছড়ানো হয়েছে।


অবশেষে আলোর মুখ দেখছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা

* কাজ শুরু জানুয়ারিতে * ব্যয় হবে ১২ হাজার কোটি টাকা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশের উত্তরাঞ্চলের ২ কোটি মানুষের দুঃখ তিস্তা। এই তিস্তাকে ঘিরেই এই অঞ্চলে লাখো মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্বাহ হয়। কৃষি থেকে শুরু করে জেলে সবাই এই নদীর ওপর নির্ভরশীল। বছরের পর বছর এই নদীর ভাঙনে সর্বশান্ত হচ্ছে হাজারও মানুষ। হাজার হাজার মানুষ নদী ভাঙনের শিকার হয়ে বাস্তুহারা হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উত্তরের অবহেলিত এসব মানুষের একটাই স্বপ্ন তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন হোক।

সব দ্বিধা কাটিয়ে অবশেষে আলোর মুখ দেখছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা। ১০ বছর মেয়াদে ১২ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে। যেখানে বিনিয়োগ করবে বাংলাদেশ ও চীন সরকার। ইতোমধ্যে চীন দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল তিস্তার মাঠ পর্যায়ের জরিপ করছে।

ডিরেক্টর অব দ্য পলিটিক্যাল সেকশন জং জিংয়ের নেতৃত্বে চীনা প্রতিনিধি দলটি মতবিনিময় করেছে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ ও তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনসহ নদী পাড়ের মানুষের সঙ্গে। মতবিনিময় শেষে তারা আশ্বস্ত করেছেন চীন সরকার দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে চায়। সবকিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারিতেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন চীনের এই কর্মকর্তা।

‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও’ সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাফিয়ার রহমান বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে শুষ্ক মৌসুমে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত তিস্তার সব পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। আর বর্ষাকালে তিস্তায় প্রবাহিত হয় তিন থেকে ৪ লাখ ঘনফুট পানি। গজলডোবার সব কপাট খুলে দেয় ভারত। দ্রুত বেগে নেমে আসা তিস্তার পানিতে উত্তরের পাঁচ জেলা নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যায়। ভাঙনের পাশাপাশি ব্যাপক ফসলি জমি ক্ষতির মুখে পড়ে। ফলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি তোলে তিস্তা অববাহিকার মানুষ।’

রিভারাইন পিপলের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর তিস্তার ভাঙন ও প্লাবনে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির মুখে পড়েন উত্তরের ৫ জেলার বাসিন্দা। এছাড়া বাস্তুভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে।

তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, ‘১০ বছরের বেশি সময় ধরে আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে অববাহিকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে আসছি। বিগত আওয়ামী সরকার তিস্তাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়েছিল, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তাতে তিস্তা পাড়ের মানুষের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটেছে।’

চলতি বছরের ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে টানা ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করেছিল তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির সংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে, তিস্তার দুই পারে পুনরুদ্ধারকৃত ১৭৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে উঠবে ইকোপার্ক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন, আধুনিক কৃষি, মৎস্য খামার, কৃষিভিত্তিক কলকারখানা, জনবসতি ও স্যাটেলাইট টাউন।’

তিনি আরও বলেন, তিস্তা খননের ফলে ব্রহ্মপুত্র দিয়ে যমুনা সঙ্গে সারা বছর একটি নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল হবে। তিস্তার শাখা প্রশাখা ও উপনদী গুলো হবে এক একটি জলাধার। মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চল হবে একটি স্বপ্নের ঠিকানা। হাজারও মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অর্থনীতির ক্ষেত্রে ঘটবে এক নীরব বিপ্লব। অবহেলিত এসব মানুষের কথা চিন্তা করেই আমরা আন্দোলনে নেমেছি। আশা করছি আমাদের আন্দোলন সফল হবে।

নদী বিশেষজ্ঞ ড. তুহিন ওয়াদুদ মনে করেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এই অঞ্চলের মানুষের একটি ন্যায্য দাবি। অবশ্যই বাংলাদেশ সরকার চীন সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত তা বাস্তবায়ন করবে। এই কাজটি হলে উত্তরাঞ্চল বদলে যাবে।

গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাৎ দিবস ও জুলাই শহীদ দিবস অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘২০২৬ সালের জানুয়ারিতে শুরু হবে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ। যেখানে যৌথভাবে বিনিয়োগ করবে বাংলাদেশ ও চীন সরকার। ১০ বছর মেয়াদে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। প্রথম ৫ বছরে সেচ, ভাঙন রোধ, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ গুরুত্ব পাবে।’

তিনি বলেন, ইআরডি থেকে তিস্তা মহাপরিকল্পনার খসরা এখন চীন সরকারের কাছে। আমরা আশা করছি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই কাজ শুরু হবে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কতা জারি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ডিজিটাল পেমেন্ট সেবাদাতাদের ওপর বড় ধরনের সাইবার হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগ থেকে এক চিঠিতে এ সতর্কতা জানানো হয়। এতে বলা হয়, আগামী দিনে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই), ব্যাংক, আর্থিক খাত, স্বাস্থ্যসেবা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সাইবার হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে এমন আশঙ্কার কথা ওঠে এসেছে।

চিঠিতে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সাইবার সুরক্ষা ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

যেসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলল বাংলাদেশ ব্যাংক:

১. সার্ভার, ডেটাবেইস ও আইটি সিস্টেম নিয়মিত আপডেট করতে হবে।

২. অপ্রয়োজনীয় পোর্ট বন্ধ এবং কমপক্ষে অনুমতিভিত্তিক এক্সেস নিশ্চিত করতে হবে।

৩. সংরক্ষিত ডেটার গুরুত্ব অনুযায়ী নিয়মিত ব্যাকআপ ও রিস্টোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। ৩-২-১ ব্যাকআপ কৌশল অনুসরণে উৎসাহিত করা হয়েছে।

৪. ডেটা স্থানান্তর, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষেত্রে অ্যানক্রিপশন বাধ্যতামূলক।

৫. গুরুত্বপূর্ণ সব সিস্টেমে মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (এমএফএ) চালু করতে বলা হয়েছে।

৬. নিরাপত্তা নজরদারির জন্য এবং অন্যান্য সিকিউরিটি টুলস ব্যবহারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

৭. অ্যান্ডপয়েন্ট ডিটেকশন অ্যান্ড রেসপন্স (ইডিআর), অ্যান্টিভাইরাস ইত্যাদি সফটওয়্যারের হালনাগাদ এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

৮. সম্ভাব্য হামলার ঘটনা মোকাবিলায় ইনসিডেন্ট রেসপন্স প্ল্যান এবং বিশেষায়িত টিম প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।

৯. সন্দেহজনক লগইন, ফাইল পরিবর্তন বা এক্সটারনাল সংযোগ মনিটর করতে এবং প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে।

১০. রিমোট এক্সেস, ভিপিএন ও প্রিভিলেজড অ্যাকাউন্ট নিয়মিত রিভিউ করে প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ আরোপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

১১. সাইবার হামলার কোনো লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে।

১২. ২৪/৭ বেসিসে নিরাপত্তা মনিটরিং সেন্টার পরিচালনায় প্রয়োজনীয় জনবল নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

১৩. সিস্টেমের উচ্চ সক্ষমতা ও স্থায়িত্ব বজায় রাখতে লোড ব্যালেন্সার স্থাপন ও বিকল্প পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

১৪. প্রতিষ্ঠানের বিজনেস কনটিনিউটিপ্ল্রান অ্যান্ড ডিজাস্টার রিকভারি প্ল্যান হালনাগাদ করে তা বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, এসব পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো- যেকোনো সম্ভাব্য সাইবার হামলা প্রতিরোধ, ক্ষয়ক্ষতি কমানো এবং ঝুঁকি মোকাবিলায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিটি দেশের সব তফসিলি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং পেমেন্ট সেবা প্রদানকারীদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানগুলো সময়ক্ষেপণ না করে এখনই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।


শেখ হাসিনাকে রাতের ভোটের আইডিয়া দেন জাবেদ পাটোয়ারী

সাবেক আইজিপি মামুনের জবানবন্দি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

২০১৮ সালের নির্বাচনে রাতেই ৫০ শতাংশ ব্যালট বাক্স ভরে রাখতে শেখ হাসিনাকে আইডিয়া দিয়েছিলেন তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক মামলায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের জবানবন্দিতে ওঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। চলতি বছরের ২৪ মার্চ পাঁচ পৃষ্ঠার এই জবানবন্দি দেন তিনি।

জবানবন্দিতে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আরও জানান- গুম, নির্যাতন ও ক্রসফায়ারের সিরিয়াস নির্দেশনা আসত প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে। সরাসরি নির্দেশনা দিতেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকি। এসব কার্যক্রমের অনেক কিছুই পুলিশের সর্বোচ্চ পদে থেকেও তার অজানা থাকত।

তিনি বলেন, কাউকে উঠিয়ে আনা, গুম করে রাখার মতো বিষয়গুলো সাবেক সামরিক উপদেষ্টা জেনারেল তারিক সিদ্দিকি সরাসরি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতেন। এ ব্যাপারে পুলিশের আইজি হওয়া সত্ত্বেও আমাকে সবকিছু অবহিত করা হতো না।

ব্যারিস্টার আরমানের টাস্কফোর্স ইন্টেলিজেন্স (টিএফআই) সেলে বন্দি থাকার বিষয়টিও জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন সাবেক এই শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে জ্বীন বলে ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কেন না, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কার্যকর মনে করা হতো তাকে।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েই জুলাই আন্দোলন দমনে ব্যবহার হয় মারণাস্ত্র ও হেলিকপ্টার থেকে গুলি। শেখ হাসিনার নির্দেশনার কথা সে সময়ে পুলিশ প্রধানকে সরাসরি জানান তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আন্দোলন দমনের পরিকল্পনা হতো প্রতিরাতের বৈঠকে।

জবানবন্দিতে সাবেক এই আইজিপি বলেছেন, গত বছরের ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতিরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় বৈঠক হতো তাদের। বৈঠকে দুইজন সচিব, এসবি প্রধান মনিরুল, ডিবির হারুন, র‌্যাবের মহাপরিচালক, আনসারের ডিজি, এনটিএমসির জিয়াউল আহসানসহ অনেকে উপস্থিত থাকতেন। মূলত এ বৈঠকেই সব পরিকল্পনা হতো।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ২৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।


৩৯টি সংসদীয় আসনে সীমানা পরিবর্তনের খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে ৪২টি আসনে পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে কারিগরি কমিটি। এর মধ্যে ৩৯টি আসনে সীমানা সামান্য পরিবর্তনের অনুমোদন দিয়েছে ইসি।

এছাড়া ২৫০ আসনের বিষয়ে কারো কোনো আপত্তি আবেদন না আসায় বিদ্যমান সীমানাই বহাল রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব তথ্য জানান। এ সময় ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। কমিশনের অনুমোদনের পর প্রস্তাবিত ৩০০ আসন নিয়ে ১০ আগস্টের মধ্যে দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার জানান, যে আসনে সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছে সেখানে একটি আসন বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করেছে কারিগরি কমিটি। এছাড়া সবচেয়ে কম ভোটার যে আসনে, সেখান থেকে একটি আসন কমানোর বিষয়ে প্রস্তাব করেছে কমিটি। এক্ষেত্রে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানোর এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কারিগরি কমিটি সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছে যে জেলায় সেই জেলায় একটি আসন বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন এবং সর্বনিম্ন ভোটার যে জেলায় সেই জেলায় একটি আসন কমানোর প্রস্তাব করেছেন। সেই আলোকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টেকনিক্যাল কমিটির তথ্যানুযায়ী, সর্বোচ্চ ভোটার হচ্ছে গাজীপুরে। আর বাগেরহাট জেলায় সবচেয়ে কম। মানে বিশেষায়িত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী তারা ভোটার সংখ্যা এবং জনসংখ্যা অ্যানালাইসিস করে প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের প্রস্তাব হচ্ছে বাগেরহাটে একটি আসন কমবে, গাজীপুরে জনসংখ্যা ও ভোটারের সংখ্যার ভিত্তিতে একটি আসন বাড়বে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ৬৪ জেলার গড় ভোটার নির্ধারণ করেছি ৪ লাখ ২০ হাজার ৫০০। গাজীপুরে একটি আসন বাড়ালে এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমালে সমতা চলে আসে। বাকিগুলোয় আসন কমবেশি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। দুই জেলার আসনই ‘অ্যাফেক্টেড’ হয়েছে। আর কোথাও ঝামেলা নেই। প্রায় ৩৯ থেকে ৪২টি আসনে এডজাস্টমেন্ট রয়েছে।’

সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে খসড়া গেজেট আজই প্রকাশ করা হবে উল্লেখ করে তিনি জানান, এ সংক্রান্ত দাবি-আপত্তি গ্রহণ করা হবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। পরে আসন ভিত্তিক শুনানি শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আপত্তি কম থাকলে দ্রুতই চূড়ান্ত হবে সীমানা নির্ধারণ।

আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, ৩৯টি আসনে ছোট-বড় সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলো হলো- পঞ্চগড় -১ ও ২। রংপুর- ৩। সিরাজগঞ্জ -১ ও ২। সাতক্ষীরা-৩ ও ৪। শরিয়তপুর- ২ ও ৩। ঢাকা ২, ৩, ৭, ১০, ১৪ ও ১৯। গাজীপুর-১, ২, ৩, ৫ ও ৬। নারায়ণগঞ্জ ৩, ৪ ও ৫। সিলেট- ১ ও ৩। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ ও ৩। কুমিল্লা ১, ২, ১০ ও ১১। নোয়াখালী ১, ২, ৪ ও ৫। চট্টগ্রাম ৭ ও ৮ এবং বাগেরহাট ২ ও ৩।

নির্বাচন কমিশনার আরো জানান, সংবিধানের ১১৯ ও ১২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের এখতিয়ার ইসির। এই ধারাবাহিকতায় ইসি একটি কমিটি গঠন করে। পরবর্তী সময় সীমানা নির্ধারণের জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬ জুলাই সীমানা নির্ধারণে ভূগোলবিদ, নগরবিদ, পরিসংখ্যানবিদসহ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ৯ সদস্যের বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী টিম ৬৪ জেলার ৩০০ আসনের সীমানা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে। আইন অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও আদমশুমারিকে গুরুত্ব দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।


বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া পুলিশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে বৈঠক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

বাংলাদেশ পুলিশ এবং মালয়েশিয়া রয়েল পুলিশ আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়।

আজ বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের হল অব প্রাইডে বাংলাদেশ পুলিশ ও মালয়েশিয়া রয়েল পুলিশের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ বাহারুল আলম বিপিএম। অপরদিকে মালয়েশিয়া পুলিশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন রয়েল মালয়েশিয়া পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান আজমান বিন আব্দ. রাযাক (Mr. Azman Bin Abd Razak)। প্রতিনিধিদলে মালয়েশিয়া রয়েল পুলিশের সাত সদস্য ছিলেন।

আইজিপি মালয়েশিয়া রয়েল পুলিশের প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বিরাজমান সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন।

সাক্ষাতকালে প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ও রয়েল মালয়েশিয়া পুলিশের মধ্যে সন্ত্রাসবাদ, মানবপাচার, অর্থপাচার ও পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। উভয় দেশের পুলিশ যথাসময়ে তথ‍্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রদানে সচেষ্ট থাকার প্রত‍্যাশা ব‍্যক্ত করেন।

এ সময় র‍্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, বিপিএম, পিপিএম, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজি মোঃ গোলাম রসুল, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, বিপিএম পিপিএম এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


পাঁচ আগস্ট ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তার শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

পাঁচ আগস্ট ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তার শঙ্কা নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বুধবার (৩০ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

এসবির অভিযান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা পুরো বাংলাদেশের না; এটা ডিএমপির অভিযান। ডিএমপিকে জিজ্ঞাসা করলে আপনারা বিস্তারিত জানতে পারবেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়। ধরুন—নিজের জন্য আপনি আমাকে ধরেছেন। প্রয়োজন হয়েছে বলেই ধরেছেন। ডিএমপির অভিযানের ব্যাপারে আপনারা ডিএমপি কমিশনারের কাছে যান।’

তিনি বলেন, পাঁচ আগস্ট ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তার শঙ্কা নেই। আল্লাহ চাইলে সবকিছু ভালো হবে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, অন-অ্যারাইভাল ভিসা বাতিল হচ্ছে না। যেসব দেশের সঙ্গে আমাদের অন-অ্যারাইভালের চুক্তি আছে আমরা তাদেরকে অন-অ্যারাইভাল ভিসা দিচ্ছি। যাদের সঙ্গে চুক্তি নেই, তাদের আমরা অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেব না।

তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়ার একটা টিম এসেছিল। তারা আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিল।


কোটালীপাড়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের খবরে শতাধিক দোকানপাট সরিয়ে নিয়েছে দখলকারীরা

আপডেটেড ৩০ জুলাই, ২০২৫ ১৩:৫৬
কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় উপজেলায় আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের আগেই শতাধিক দোকানপাট নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নিয়েছে দখলকারীরা।

আজ বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উচ্ছেদ অভিযান টিম উপজেলার জিরো পয়েন্ট পশ্চিমপাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে এমন চিত্র দেখতে পান।

হোটেল ব্যবসায়ী নাসির শেখ বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে এখানে দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করে আসছি। এই উচ্ছেদে নিঃস্ব হয়ে গেলাম।

মিস্টির দোকানঘরের মলিক দেলোয়ার শেখ বলেন, প্রতি মাসে ১৪ হাজার টাকা পেতেন দোকান ঘর ভাড়া থেকে। আজ নিঃস্ব হয়ে গেলাম। এই দোকান ভাড়া ছিল আমার আয়ের একমাত্র উৎস। তারপরও সরকরি নির্দেশনা মেনে নিজেই দোকনঘর সরিয়ে নিয়েছি।

গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সামিউল কাদের খান বলেন, পশ্চিমপাড়া এলাকায় সড়কের সাথে জায়গা দখল করে অবৈধভাবে নির্মিত শতাধিক স্থাপনা (ব্যবসা প্রতিষ্ঠান) সরিয়ে নেওয়ার জন্য গত ২৬ জুলাই মৌখিকভাবে জানানো হয়। পূর্ব নির্ধারিত সময়নুযায়ী আজ উচ্ছেদ অভিযানে এসে দেখতে পাই বেশিরভাগ স্থাপনাগুলো নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নিয়েছে। বাকিগুলো সরানোর কাজ চলছে।

তিনি আরো বলেন, সড়কের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার স্বার্থে সড়কের আশপাশে যেকোনো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান চলবে। আমরা সকলকে অনুরোধ করছি, মহাসড়কের জায়গা দখল করে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করবেন না।”

উচ্ছেদ অভিযানে নের্তৃত্ব দেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আমীরুল মোস্তফা। এ সময় গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের সার্ভেয়ার শামীম আহমেদ ও কোটালীপাড়া থানা পুলিশের সদস্যেরা উপস্থিত ছিলেন।


এলডিসি থেকে উত্তরণ বিষয়ক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ৩০ জুলাই, ২০২৫ ১৩:৪৪
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বুধবার বেলা ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।


৮ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে পুলিশের বিশেষ সতর্কতা

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২৯ জুলাই থেকে আগামী ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। গত সোমবার দেশের বিভিন্ন পুলিশের ইউনিটে বিশেষ সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি পালনকালে ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)। গত সোমবার এসবির এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি পুলিশের সব বিভাগকে পাঠিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে এসবি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের সময়কাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে এসবি।

নির্দেশনাগুলো হলো ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা। ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত সন্দেহজনক ব্যক্তিসহ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল অভিযান পরিচালনা করা। মোবাইল প্যাট্রোল জোরদার করা। গুজব রোধে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা।

এছাড়া কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসবিকে অবহিত করার কথাও বলা হয়েছে।


৩৭ বছর পর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিলেন ২ বাংলাদেশি সাঁতারু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দীর্ঘ ৩৭ বছর পর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন বাংলাদেশের দুই সাঁতারু নাজমুল হক হিমেল ও মাহফিজুর রহমান সাগর। গতকাল মঙ্গলবার ১৬ ঘণ্টা সাঁতরিয়ে তারা ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে দুই সাঁতারু লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।

বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শাহিন জানিয়েছিলেন, দুজনই এক ফ্লাইটে লন্ডন যাচ্ছেন।

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে যুক্তরাজ্য গিয়ে অন্তত ১০ দিন অনুশীলন করবেন এই দুই সাঁতারু।

এর আগে বাংলাদেশের তিনজন সাঁতারু ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমকারী প্রথম এশীয় সাঁতারু ব্রজেন দাস। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ সালের মধ্যে মোট ছয়বার চ্যানেলটি অতিক্রম করেন তিনি।

তখন এই চ্যানেল সবচেয়ে কম সময়ে সাঁতরে পার হওয়ার রেকর্ডও গড়েছিলেন তিনি।

এরপর ১৯৬৫ সালে আবদুল মালেক ও ১৯৮৭ সালে মোশাররফ হোসেন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন। ইংলিশ চ্যানেলের পানির তাপমাত্রা ১৫ থেকে ১৯ ডিগ্রির মতো থাকে। সেখানে সাঁতরানো যেকোনো সাঁতারুর জন্যই চ্যালেঞ্জিং।


banner close