শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২৯ ভাদ্র ১৪৩২

তাপমাত্রা ও বৃষ্টি নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৩০ আগস্ট, ২০২৩ ১২:৪২

দেশের কোথাও দমকা হাওয়া আবার কোথাও বজ্রসহ বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হতে পারে বলেও আভাস দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া চার জেলা ও এক বিভাগের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটি।

বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমনটি জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্ট হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ফরিদপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নীলফামারীর সৈয়দপুর এবং খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়া সামান্য পরিবর্তন হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং বঙ্গোপসাগরের দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।


নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন অধ্যাপক ইউনূসের

আপডেটেড ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৪:৪২
বাসস

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ।

আজ এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এবং আমার নিজের পক্ষ থেকেও আমি নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার নিয়োগে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’

অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, নেপালের জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন হিসেবে সুশীলা কার্কির দায়িত্বগ্রহণকে বাংলাদেশ গুরুত্ব সহকারে দেখছে।

তিনি বলেন, ‘একজন দীর্ঘদিনের বন্ধু ও প্রতিবেশী হিসেবে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার দক্ষ নেতৃত্বে নেপাল ও এর দৃঢ়চেতা জনগণ শান্তি, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যাবে।’

প্রধান উপদেষ্টা নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলীতে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন।

বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত ও পূর্ণ আরোগ্য কামনা করি।’

অধ্যাপক ইউনূস আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক তাঁর নেতৃত্বে আরও জোরদার হবে।

তিনি সুশীলা কার্কির সুস্বাস্থ্য ও সফলতা এবং নেপালের জনগণের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।


যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি ২২ শতাংশ বৃদ্ধি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পাল্টা শুল্ক পুরোপুরি কার্যকর হয়েছে গত মাসে। এর আগে গত জানুয়ারি থেকে জুলাই (সাত মাসে) এই বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২২ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির এই হার যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শীর্ষ পাঁচ রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।

চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে ৪৯৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। শুধু জুলাইয়ে রপ্তানি হয়েছে ৭০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি।

গত ৩১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন বিভিন্ন দেশের পণ্য আমদানির ওপর সংশোধিত পাল্টা শুল্কহার ঘোষণা করে। গত ৭ আগস্ট এই শুল্কহার কার্যকর হয়। সংশোধিত হার অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের পণ্যে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বসেছে। ভারতীয় পণ্যের ক্ষেত্রে হারটি দাঁড়িয়েছে ২৫ শতাংশ। আর ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া ও পাকিস্তানের পাল্টা শুল্কের হার ১৯ শতাংশ। এখন পর্যন্ত চীনের পণ্যে পাল্টা শুল্ক ৩০ শতাংশ।

একাধিক তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক বলেন, চীনের হারানো ক্রয়াদেশের একটা অংশ বাংলাদেশে আসছে। ছয় থেকে আট মাস ধরে তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। পাল্টা শুল্কের কারণে সামনের মৌসুম থেকে আরও বাড়তি ক্রয়াদেশ আসতে পারে। যদিও কোনো কোনো ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাড়তি শুল্কের একটি অংশ বহন করতে রপ্তানিকারকদের চাপ দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দীর্ঘদিন ধরে চীন শীর্ষস্থানে থাকলেও উভয় দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে সেই জায়গাটি দখলে নিয়েছে ভিয়েতনাম। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ভিয়েতনাম ৯৪৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি। শুধু জুলাইয়ে ভিয়েতনাম ১৬৯ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এক্ষেত্রে তাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ১২ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে চীন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ে চীন ৬৯২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ কম। শুধু জুলাইয়ে চীন ১১৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ৩৮ শতাংশ কম। শীর্ষ ১০ রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে চীনের রপ্তানিই সবচেয়ে বেশি কমেছে।

অটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চতুর্থ শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক ভারত চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ৩৩১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ২৬৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৮০ শতাংশ।

বাংলাদেশের একাধিক উদ্যোক্তা জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়ায়। তখন থেকেই চীন থেকে অল্প অল্প ক্রয়াদেশ সরছে। গত বছর নির্বাচনী প্রচারণায় চীনের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের অনেকে বাংলাদেশে বাড়তি ক্রয়াদেশ দেওয়া শুরু করে। সে জন্য দেশটিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়তে থাকে।

বাংলাদেশের শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি অনন্ত গ্রুপ। গত অর্থবছরে শিল্প গ্রুপটির ছয়টি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে ৪৬ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে।


সরকারি চিকিৎসকদের মানতে হবে ৮ নির্দেশনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ওষুধ কম্পানির সরবরাহ করা ওষুধের তালিকা সরকারি হাসপাতালের টেবিলে না রাখাসহ চিকিৎসকদের ৮ নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে মানতে হবে বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা জারি করা হয়।

নির্দেশনার মূল দিকগুলো হলো–
১. কোনো অবস্থাতেই বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক বা ওষুধ কম্পানির নামাঙ্কিত প্যাডে প্রেসক্রিপশন বা পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া যাবে না।

২. সরকারি হাসপাতালে যে পরীক্ষা ও ওষুধ বিদ্যমান, তা বাইরের প্রতিষ্ঠান থেকে করানো বা কিনতে রোগীকে বলা যাবে না।

৩. সরকার অনুমোদিত বা সরবরাহ করা সিল ছাড়া অন্য কোনো বেসরকারি সিল ব্যবহার করা যাবে না। তবে জেনেরিক নামের বিজ্ঞাপনবিহীন সিল ব্যবহার করা যাবে।

৪. ওষুধ কম্পানির সরবরাহ করা ওষুধের তালিকা সরকারি হাসপাতালের টেবিলে রাখা যাবে না।

৫. কোনো কম্পানির প্রতিনিধি রোগীর প্রেসক্রিপশন বা ব্যক্তিগত তথ্যের ছবি তোলা বা সংগ্রহ করতে পারবেন না।

৬. সপ্তাহে নির্ধারিত দুই দিন– সোমবার ও বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত প্রতিনিধিরা চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।

৭. এ সময়ের বাইরে হাসপাতালে অবস্থান করলে সংশ্লিষ্ট কম্পানির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৮. সাক্ষাতের সময় কম্পানি কর্তৃক প্রদত্ত আইডি কার্ড অবশ্যই দৃশ্যমান স্থানে রাখতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট কম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। একইসঙ্গে চিকিৎসকদের প্রতিও কঠোর অবস্থান নেয়া হবে, যাতে সরকারি সেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা বিনষ্ট না হয়।


সাপ কামড়ে সাপুড়ের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শেরপুর জেলা প্রতিনিধি

শেরপুরে সাপ ধরার সময় বিষাক্ত সাপের কামড়ে এক সাপুড়ে মারা গেছে ।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মৃত সাপুড়ে জামাল মিয়া (৭০) শেরপুর সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নের ডুবারচর গ্রামের বাসিন্দা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা যুবদল নেতা ও সাপুড়ের ভাতিজা রিপন।

এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, সাপুড়ে জামাল উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে সাপ ধরে আসছিলেন। সে ঝারফুকও দিতো। সাপ ধরে সাপ দিয়ে খেলাও দেখাতো। গতকাল ১২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে সাপুড়ে জামাল উদ্দিন পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার ইসলামপুরের ৪নং চরে গ্রামে একটি বিষাক্ত সাপ ধরতে যান। ধরার সময় সাপটি তার হাতের আঙ্গুলে কামড় দেয়। কিন্তু সাপুড়ে বিষয়টি আমলে নেয়নি। ঘণ্টা দুয়েক পরে ওঝার শরীরে বিষক্রিয়া শুরু হলে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত সদর হাসপাতালে আনা হয়।

মৃতের স্বজনদের দাবি, হাসপাতালে এন্টিভেনাম নেই বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে জানান। পরে একটি এন্টিভেনাম বাহির থেকে সংগ্রহ করে দেওয়ার পরেও তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে তাকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

শেরপুর জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিম মিয়া জানান, হাসপাতালে এন্টিভেনাম সরবরাহ আছে। রোগীর সঙ্গে এন্টিভেনাম নিয়ে কি হয়েছে, তা আরএমওকে (আবাসিক মেডিকেল অফিসার) জানানো হয়েছে। বিষয়টি দেখা হবে।


দৌলতপুরে ব্যবসায়ী অপহরণ, আতঙ্ক ছড়াতে গুলি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর এলাকায় সাইফুল ইসলাম (৪০) নামে একজনকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি ওই এলাকার মৃত মিরাজ মালিথার ছেলে এবং দীর্ঘদিন ধরে ছাগল ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাইফুল ইসলাম রাতের খাবার শেষে বাড়ি থেকে বৈরাগীরচর বাজারে যাওয়ার পথে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নদীপথে এসে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। অপহরণকারীরা ৭-৮ জন ছিল, তারা যাবার সময় আতঙ্ক ছড়াতে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে এবং পরে সাইফুলকে স্পিডবোটে তুলে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

এ ঘটনায় মরিচা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান বলেন, সাইফুল একজন পরিচিত ছাগল ব্যবসায়ী। রাত ৯টার দিকে বৈরাগীরচর বাজারে যাওয়ার পথে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং যাবার সময় আতঙ্ক ছড়াতে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোড়ে।

অপহরণের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান শেখ জানান, রাত ৯টার দিকে সাইফুল নামে একজনকে অপহরণ করা হয়েছে এমন একটি খবর পেয়েছি। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। তবে, এখনও পর্যন্ত ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেয়নি।


সবজির দাম কিছুটা কমলেও অন্য পণ্যের দাম চড়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অবশেষে কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় কয়েকটি সবজির দাম কমলেও এখনো স্বস্তি ফেরেনি বাজারে। কারণ বেশিরভাগ সবজির দাম ৮০ টাকার ওপরে। এর সঙ্গে উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব ধরনের মাছ। বিশেষ করে ভরা মৌসুমে ইলিশের দাম আকাশচুম্বী। পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে। শুধু কিছুটা স্বস্তি এসেছে ডিমের বাজারে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম কমেছে। কিন্তু ক্রেতাদের ভাষ্য, সবজির দাম এখনো বেশি। বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় টমেটো ১২০-১৩০ টাকা, দেশি গাজর ৮০ টাকা, চায়না গাজর ১০০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ১০০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১৪০-১৬০ টাকা, শিম ১৫০-১৬০ টাকা, দেশি শসা ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৮০-১০০ টাকা, পটোল ৭০-১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, ধুন্দল ৭০-৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০-১০০ টাকা, বরবটি ৮০-১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, মুলা ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৬০-২০০ টাকা, ধনেপাতা (মানভেদে) ২০০-৪০০ টাকা, শসা (হাইব্রিড) ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৭০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০-৫০ টাকা, এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ২০-৪০ টাকা করে।

গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজিতে ভারতীয় টমেটোর দাম ২০-৩০ টাকা, চায়না গাজরের দাম ২০ টাকা, লম্বা বেগুনের দাম ২০ টাকা, কালো গোল বেগুনের দাম ১০ টাকা, দেশি শসার দাম ২০ টাকা, করলার দাম ২০ টাকা, কাঁকরোলের দাম ২০ টাকা, ঢ্যাঁড়সের দাম ২০ টাকা, চিচিঙ্গার দাম ১০ টাকা, ধুন্দলের দাম ২০ টাকা, হাইব্রিড শসার দাম ২০ টাকা কমেছে। আর প্রতি পিসে লাউয়ের দাম কমেছে ২০-৩০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

দাম কমে যাওয়ার কথা জানিয়ে মিরপুর ৬ নাম্বার বাজারে সবজি বিক্রেতা মো. জসিম বলেন, আজ সব সবজির দাম কমে গেছে। গেলো সপ্তাহের থেকে আজ দাম কম। সামনে হয়তো আরও কমে যাবে। কারণ, সিজন বদলাবে তাই দামও কমবে।

এদিকে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী তানভীর মাহমুদ বলেন, এ রকম কমাকে কম দাম বলে না। যখন সবার কাছে কম মনে হবে তখনই কম দাম বলা যাবে। দাম কমেছে ১০-২০ টাকা করে। কিন্তু সব সবজির দাম এখনও ৮০ টাকার ওপরে। এটাকে কি কম দাম বলে?

আরেক ক্রেতা কামরুল হাসান বলেন, সবজি-মাছ-মাংস সবকিছুর দাম বেশি। বেতন পাই কত টাকা আর খরচ কত টাকা; অন্যান্য খরচতো আছেই। এভাবে চলা সত্যিই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।

আলু-পেঁয়াজের দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি লাল ও সাদা আলু ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল বিক্রি হয় শুধু ২৫ টাকায়। আর বগুড়ার আলুর দাম বেড়েছে কেজিতে পাঁচ টাকা।

গতকাল আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হয়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ৭৫ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা করে। দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, লাল আলু ২৫ টাকা, সাদা আলু ২৫ টাকা, বগুড়ার আলু ৩৫-৪০ টাকা, দেশি রসুন ১০০-১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০-১৫০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ১৬০-১৮০ দরে বিক্রি হচ্ছে।

এখনো সহনীয় পর্যায়ে আসেনি মাছ-মাংসের বাজার। উচ্চ দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ, গরু ও খাসির মাংস এবং সব ধরনের মুরগির মাংস।

গতকাল বাজারে ইলিশ মাছ আকার ও ওজন অনুযায়ী ৭০০-২৪০০ টাকা, রুই ৩৫০-৬০০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৭০০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০-৮০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি ৪০০-৬০০ টাকা, কৈ ২৫০ টাকা, পাবদা ৪০০-৭০০ টাকা, শিং ৫০০-১২০০ টাকা, টেংরা ৬০০-১০০০ টাকা, বেলে ৮০০-১২০০ টাকা, মেনি ৬০০-১০০০ টাকা, বোয়াল ৬০০-১২০০ টাকা, রূপচাঁদা ১০০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া গরুর মাংস ৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা, কক মুরগি ৩০০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৯০-২৯৫ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি ডজন মুরগির লাল ডিম ১২০ টাকা এবং সাদা ডিম ১১৫-১২০ টাকা, হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকা দরে।

এক্ষেত্রে আজ প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৭-১০ টাকা, কক মুরগির দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা করে। আর কেজিতে লেয়ার মুরগির দাম ২৫ টাকা, দেশি মুরগির দাম ২০ টাকা কমেছে। এছাড়া প্রতি ডজনে লাল ডিমের দাম ১০-২০ টাকা, সাদা ডিমের দাম পাঁচ টাকা এবং হাঁসের ডিমের দাম কমেছে ১০-২০ টাকা করে।

মুদি দোকানের কয়েকটি পণ্যের দামে পরিবর্তন এসেছে। এর মধ্যে প্রতিটি দুই কেজি ওজনের প্যাকেটজাত আটার দাম বেড়েছে ১০ টাকা এবং কেজিতে কালো গোল মরিচের দাম বেড়েছে ৮০ টাকা করে। আর প্রতি কেজিতে খেসারি ডালের দাম কমেছে ২০ টাকা, বুটের ডালের দাম কমেছে পাঁচ টাকা এবং খোলা চিনির দাম কমেছে পাঁচ টাকা করে। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।

প্যাকেট পোলাও চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ৯০-১৩০ টাকা, ছোট মসুর ডাল ১৫৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১০৫ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, মাষকলাই ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৪৫০-১৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১১০ টাকা, খোলা চিনি ১০০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৩০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এলাচি ৪৭৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১২৮০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১৩৫০ টাকা ও কালো গোল মরিচ ১১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।


শেখ হাসিনার শাসনামলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার যেন দিনের আলোয় চুরি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার (২ লাখ ৩৪ হাজার ডলার বা ২৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা) বাংলাদেশ থেকে লুট হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি) নতুন একটি তথ্যচিত্রে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে।

তথ্যচিত্রের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিলিয়ন ডলার যেন প্রকাশ্য দিবালোকে চুরি (বাংলাদেশ’স মিসিং বিলিয়ন্স, স্টোলেন ইন প্লেইন সাইট)।’ মূলত দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার এবং তা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা নিয়ে তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হয়েছে।

তথ্যচিত্রের শুরুতেই দেখানো হয়েছে শেখ হাসিনার পতনের প্রেক্ষাপট। ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে সরকারি চাকরিতে কোটা ঘিরে শেখ হাসিনার শাসন নিয়ে জমে থাকা ক্ষোভ ফেটে পড়ে। এ সময়ে হাসিনা ক্রমে আরও স্বৈরাচারী হয়ে উঠছিলেন; বিরোধীদের গণহারে কারাবন্দি করছিলেন। আর শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠদের দুর্নীতি এবং দেশের বিপুল অর্থ বিদেশে পাচারের খবর দেখে দেখে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিল। পাচার হওয়া এই অর্থের বড় একটি অংশ যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছে।

এতে দেশটির লেবার পার্টির এমপি ও সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকসহ শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারের কয়েক সদস্যও অভিযুক্ত। অবকাঠামো প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় টিউলিপ সিদ্দিক ঘিরে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। ফ্ল্যাট দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের শুরুর দিকে টিউলিপ মন্ত্রীর পদ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এছাড়া এফটির সাংবাদিকরা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে দেখেন, তিনি যুক্তরাজ্যে ৩০০টির বেশি সম্পত্তির মালিক।

আর্থিক খাতের দুর্নীতি নিয়ে কাজ করা ব্রিটিশ সংস্থা স্পটলাইট অন করাপশনের উপপরিচালক হেলেন টেলর বলেন, পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র দেশের একজন মন্ত্রীর জন্য যুক্তরাজ্যে অন্তত ৩০০টি সম্পত্তি কেনা বিস্ময়কর। যেখানে এক ব্যক্তি বছরে দেশের বাইরে ১২ হাজার ডলারের বেশি নিতে পারেন না।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) ৩৫০টি সম্পত্তি শনাক্ত করে জব্দ করেছে, যা এফটির খোঁজ পাওয়া ৩০০টির বেশি সম্পত্তির সঙ্গে মিলে যায়। তথ্যচিত্রে জানানো হয়, ২০০৯ থেকে ২৩ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে বলে অন্তর্বর্তী সরকার প্রাক্কলন করছে।

লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের অর্থনীতির অধ্যাপক মোশতাক খান বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশে দুর্নীতির সাধারণ ধারা হলো, শাসক দলকে তার সমর্থকদের মধ্যে টাকা বিলাতে হয়। তা না হলে ক্ষমতায় টিকতে পারে না। আমার মনে হয়, শাসনামলের শেষ দিকে আওয়ামী লীগ অর্থনীতি ও নিজেদের দল– দুয়েরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল।’

প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার শাসনকালে শাসকদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইর সাহায্যে বিভিন্ন ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রসঙ্গটি তুলে ধরা হয়। বলা হয়, কিছু ব্যাংকের পরিচালককে গোয়েন্দারা অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে শেয়ার হস্তান্তর কাগজে সই করিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করত। আর সেই শেয়ার যেত পুরোনো শাসকদের ঘনিষ্ঠদের হাতে।

অন্তর্বর্তী সরকারের অনুমান, এস আলম ও তাঁর গ্রুপ বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক হাজার কোটি ডলার, এমনকি তার চেয়েও বেশি অর্থ বের করে নিয়েছে।

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন খতিয়ে দেখছে, সাবেক শাসন-ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প থেকে টাকা সরিয়েছেন কিনা। এর একটি হলো পদ্মা সেতু, যে প্রকল্পে দুর্নীতির শঙ্কায় বিশ্বব্যাংক ঋণ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। আরেকটি ছিল দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।

ড. মোশতাক খান বলেন, এগুলোর কিছুই গোপন ছিল না। পত্রপত্রিকায় ছিল, মিডিয়ায় আলোচনা হতো, দুর্নীতি ছিল প্রকাশ্য, চোখের সামনে; কিন্তু কিছু করার ক্ষমতা কারও ছিল না। অধিকাংশ মানুষ ছিল আতঙ্কে। তারা জানত, কথা বললে গায়েব হয়ে যেতে পারে। দুর্নীতির কথা সবাই জানত, তবু চুপ করে থাকত।

সম্পদ উদ্ধার টাস্কফোর্সের পরামর্শদাতা ইফতি ইসলাম বলেন, ‘আপনি যখন বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার চুরি করেন, তখন আপনি বিশ্বের সেরা আর্থিক কাঠামোবিদ, পরামর্শক ও আইনজীবীদের ভাড়া করতে পারেন, যারা আপনার টাকা সরানো ও লুকাতে সাহায্য করেন। এটা সম্পদ উদ্ধারে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। আপনি টাকার হদিস না পেলে তা ফেরত আনতে পারবেন না।’

সম্পদ উদ্ধারের আরেক সমস্যা হলো, এতে প্রায়ই সমঝোতা করা লাগে। অর্থাৎ যে ব্যবসায়ী বা ধনকুবের টাকা চুরি করে দেশ থেকে পাচার করেছে, তার সঙ্গে চুক্তি করা। তখন একদিকে টাকা ফেরত আনা, অন্যদিকে বাংলাদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হয়।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মানুষ বলে, সব টাকা আদায় সম্ভব নয়। আমরা যেটুকু পারি, তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। কিন্তু তার জন্য কঠিন প্রমাণ খুঁজে বের করতে হবে, পথ অনুসরণ করতে হবে; সংশ্লিষ্ট বিদেশি সরকারের সহযোগিতা পেতে হবে।

এফটির এগ্রিকালচার ও কমোডিটি করেসপনডেন্ট সুজ্যানা স্যাভিজ বলেন, যদি ইউনূস প্রশাসন অন্য দেশের সরকারগুলোকে যেমন যুক্তরাজ্যে এনসিএ যা করেছে, তেমন পদক্ষেপে রাজি করাতে পারে, তাহলে চাকা ঘুরতে শুরু করবে এবং থামানো কঠিন হবে। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একটি বড় প্রশ্ন রয়ে গেছে। যারা শেখ হাসিনার আমলে অর্থ পাচার করেছে, তারা ভবিষ্যতের সরকারের ওপর কতটা প্রভাব বিস্তার করবে, তার ওপরেই নির্ভর করবে দেশে দুর্নীতি কতটা ব্যাপক থাকবে।

এফটির দক্ষিণ এশিয়া ব্যুরোপ্রধান জন রিড বলেন, বাংলাদেশের ‘বিপ্লব’ একটি টার্নিং পয়েন্ট বলে মনে হয়েছে। তবে এমনও হতে পারে, দেশ আবার এমন এক অবস্থায় ফিরে যাবে, যেখানে এক দল রাজনৈতিক শক্তির হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত থাকবে। তফাত শুধু– এবার তা আওয়ামী লীগ নয়; বিএনপি হতে পারে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রাফিয়া রেহনুমা হৃদি বলেন, ‘আমাদের ভয়, আমরা হয়তো আমাদের শহীদদের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারব না। এটাই এখন সবচেয়ে বড় আশঙ্কা।’


ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের কোন বিকল্প আমাদের হাতে নেই : প্রধান উপদেষ্টা

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন শুধুমাত্র একটি সাধারণ নির্বাচনই নয়, এটি হচ্ছে একটি ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন যার মাধ্যমে আগামীর বাংলাদেশের পথরেখা নির্ধারিত হবে। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদেরকে অবশ্যই মৌলিক সংস্কারগুলো চূড়ান্ত করে ফেলতে হবে। একই সঙ্গে মাথায় রাখতে হবে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের কোন বিকল্প আমাদের হাতে নেই।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানতম তিনটি মেন্ডেটের অন্যতম হচ্ছে সংস্কার। তাই নির্বাচন ও বিচারের মতোই সমান গুরুত্ব দিয়ে জুলাই সনদের বিষটিকে দেখতে হবে।’

দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব এবং এ সংক্রান্ত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে গঠিত ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটির প্রস্তাবনাগুলোও উপস্থাপন করা হয়।

কমিশন সদস্যরা জানান, খুব শিগগিরই কমিশন তাদের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জমা দেবে। এই বিষয়টিকে সামনে এগিয়ে নিতে আগামী রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারো বৈঠক করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ, কমিশন সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, ড. আসিফ নজরুল, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানও বৈঠকে অংশ নেন।


প্রেস কাউন্সিলের নতুন সদস্য মতিউর রহমান চৌধুরী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’

বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।

এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।


পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

আপডেটেড ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২১:০৫
বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।

এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


পুলিশের স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।

পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’

সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।


সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে মূসক অব্যাহতির সিদ্ধান্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

৫ হাজার ডিডব্লিউটির বেশি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে আরোপিত সাড়ে ৭ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।

পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ৫ হাজার ডিডব্লিউটির বেশি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে আমদানি পর্যায়ে আরোপিত সাড়ে ৭ শতাংশ মূসক অব্যাহতির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ মনে করছে, এ অব্যাহতির ফলে সরকারি-বেসরকারি উভয় খাতেই জাহাজ সংগ্রহ সহজ হবে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও কর্মসংস্থানে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এটা শুধু ব্যবসার জন্য নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

সভায় ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থনের প্রসঙ্গও গুরুত্ব পায়।

এ বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, আমরা ফিলিস্তিনি প্রশ্নে সবসময়ই স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছি। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ আয়োজিত ‘হাই লেভেল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন দ্য পিসফুল সেটেলমেন্ট অব দ্য কোশ্চেন অব প্যালেস্টাইন’ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন। এ ছাড়া আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর দোহায় ওআইসির জরুরি সম্মেলনে অংশ নেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

সংস্কার কমিশনের অগ্রগতির বিষয়েও বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে প্রেস সচিব জানান, এ পর্যন্ত ৫১টি সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়েছে, ৩৭টি সুপারিশ আংশিক বাস্তবায়নের পথে এবং বাকি সুপারিশগুলোও বাস্তবায়নাধীন। কিছু সুপারিশ রাজনৈতিক প্রকৃতির, যা নির্বাচিত সরকারের সময় বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, অনেকে ভুলভাবে মনে করছেন যে সংস্কার হচ্ছে না। আসলে প্রতিটি মন্ত্রণালয় নিয়মিতভাবে বড় বড় সংস্কার করছে। ব্যাংকিং, এনার্জি, রাজস্ব, শ্রম—প্রায় সব খাতেই সংস্কার হয়েছে এবং এগুলো অব্যাহত আছে।

সভায় শ্রম খাতের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়। প্রেস সচিব বলেন, শ্রম কমিশনের ৮২টি সুপারিশের অনেকগুলো ইতোমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে। শ্রম আইন সংশোধন হলে বাকি সুপারিশগুলোর বেশিরভাগই কার্যকর হয়ে যাবে। আমাদের শ্রম মন্ত্রণালয় আইএলও’র সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। গত বছর যে ১৮ দফা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে, সেটা বড় অর্জন। ওই অনুযায়ী শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্তও কার্যকর হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।


আগামী নির্বাচনে প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবে : সিইসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত প্রবাসী ভোটার ও জাতীয় পরিচয়পত্রধারী (এনআইডি) বাংলাদেশিরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।

এজন্য ‘পোস্টাল ব্যালট বিডি’ নামে একটি অ্যাপ তৈরির কাজ চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।

আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক তথ্যবিবরণীতে জানানো হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, টরন্টো আয়োজিত ‘স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের কার্যক্রমের উদ্বোধন এবং প্রবাসীদের ভোট প্রদানে উদ্বুদ্ধকরণ’ বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিদেশে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদানের জন্য প্রবাসীদেরকে আহ্বান জানান।

এসময় তিনি বাংলাদেশের নির্বাচনের সামগ্রিক চিত্র ও নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি তুলে ধরার পাশপাশি প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা কীভাবে ভোট প্রদান করবেন সে বিষয়ে আলোচনা করেন।

প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে কানাডা সফরে এসে তাদের সাথে মতবিনিময় করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং এ ধরনের মতবিনিময় সভা আয়োজন করায় কনস্যুলেটের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।

কনসাল জেনারেল মো. ফারুক হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করে এবং প্রবাসীরা নির্বাচন কমিশনারের সাথে বিষয়ভিত্তিক মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কানাডায় বসবাসরত ব্যবসায়ী, ডাক্তার, প্রকৌশলী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী প্রবাসী বাংলাদেশী।


banner close