হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সংরক্ষিত এলাকায় শুল্ক বিভাগের গুদামের লকার ভেঙে ৫৫ দশমিক ৫১ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় করা মামলাটি ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উত্তরা বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহ আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি।
বুধবার ডিবির উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আকরাম হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বিমানবন্দরে কাস্টমস হাউজের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির মামলাটি বিমানবন্দর থানা থেকে অধিকতর তদন্তের জন্য ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছি। এই স্বর্ণ চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।’
তবে কাকে কাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই স্বর্ণ চুরির ঘটনা গত ২ সেপ্টেম্বর শুল্ক বিভাগের নজরে আসে। তবে বিষয়টি প্রকাশ পায় পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর। পরে বিমানবন্দরের কাস্টমস হাউজের ওই গুদামে ইনভেন্টরি শেষে ৫৫ দশমিক ৫১ কেজি স্বর্ণ চুরি হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয়। এরপর ৩ সেপ্টেম্বর রাতে বিমানবন্দর প্রিভেন্টিভ টিমের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় কাস্টমসের যুগ্ম-কমিশনার মিনহাজ উদ্দীনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে ঢাকা কাস্টমস হাউজ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা কাস্টমস হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও গুদামের দায়িত্বে থাকা মাসুদ রানার যুগ্ম কমিশনারকে জানান, বিমানবন্দর লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ডস সংলগ্ন ট্রানজিট গোডাউন টিজিআর ১-এর গুদামে প্রবেশ করে তিনি শুল্ক বিভাগের মূল্যবান পণ্যসামগ্রী রাখার একটি স্টিলের আলমারির লকার ভাঙা দেখতে পান। তিনি ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তাৎক্ষণিক কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার ও কমিশনার গুদাম পরিদর্শনে গিয়ে ভেতরে একটি স্টিলের আলমারির লকার ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। তারা গোডাউনে কর্মরত এ, বি, সি ও ডি শিফটের দায়িত্বরত চার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা, মো. সাইদুর রহমান শাহেদ, মো. শহিদুল ইসলাম ও আকরাম শেখ, এবং দায়িত্বে থাকা সিপাই মো. রেজাউল করিম মোহাম্মদ, মোজাম্মেল হক, মো. আফজাল হোসেন ও নিয়ামত হাওলাদারকে লকার ভাঙার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় তারা কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি। পরে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে বিমানবন্দর থানায় মামলা করা হয়।
আজ দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশন এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার এখন রুটিন ওয়ার্ক করবে। কমিশনের ব্যবস্থা আমাদের বিরুদ্ধে গেলেও তাকে আওয়ামী লীগ সাধুবাদ জানাবে। নির্বাচন সংক্রান্ত সারাদেশে যে কোনো ঘটনার বিষয়ে প্রশাসনিক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত তথ্য নেওয়ার এখতিয়ার এখন নির্বাচন কমিশনের। কমিশন নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তাতে আস্থা আছে আওয়ামী লীগের।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত কোথাও কোন সংঘাত, বিশৃঙ্খলা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পুরো দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিবে আওয়ামী লীগ তা মেনে নিবে।
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা অপরাধ নয় জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, শাজাহান ওমরের মতো অনেকেই ভেতরে ভেতরে বলছেন জীবনেও আর বিএনপি করবো না। প্রার্থী স্বতন্ত্র হোক বা দল মনোনীত হোক- এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। বিএনপি’র নেতৃত্বের প্রতি দলটির নেতাকর্মীরা হতাশ এবং আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এ থেকেই দলটির সাবেক ও বর্তমান নেতারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। কাজেই অংশগ্রহণমুলক নির্বাচন বলতে যা বোঝায় ২৯ টি নিবন্ধিত দল অংশ নিয়েছে।
বিএনপির ভুল নীতির জন্য দলটির নেতাদের দায়ী করে তিনি বলেন, বিএনপি’র কর্মীরা হতাশ। তারা আওয়ামী লীগের প্রতি নয়, তাদের নেতাদের প্রতিই হতাশ। কারণ, বিএনপি নিজেরাই ভুল নীতি নিয়েছে। এ জন্য আজ নিজেরাই বিভক্ত হয়ে গেছে।
কোনো দলকে ভেঙ্গে দেওয়া আওয়ামী লীগের নীতি নয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি’র চলমান একদফা দাবি গভীর গর্তে পড়ে গেছে। তাদের আন্দোলন ভুলের চোরাবালিতে আটকে গেছে। এখন যত চেষ্টাই করুক লাভ নেই। বিএনপি আর আন্দোলন করতে পারবে না।
দেশের জনগণ ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু দল নির্বাচন বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকলেও জনগণ নির্বাচনমুখী। আন্দোলনের নামে কিছু দল নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছে এখনও চাচ্ছে। কিন্তু বিজয়ের মাসে নবশক্তিতে বলিয়ান জনগণ ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে। তারাই বিএনপিকে প্রতিহত করবে।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও সুজিত রায় নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনোয়ার হোসেন ও নির্মল চ্যাটাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল নির্বাচনে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে জয়ী হয়েছে বাংলাদেশ।
লন্ডনে শুক্রবার জাতিসংঘের শিপিং সংক্রান্ত বিশেষায়িত এই এজেন্সির ৩৩তম অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ সালের জন্য ৪০ সদস্যের নতুন আইএমও কাউন্সিল নির্বাচিত হয়।
আন্তর্জাতিক শিপিং পরিষেবা প্রদানে সর্বাধিক আগ্রহী এমন দশটি দেশ ‘এ’ ক্যাটাগরিতে, আন্তর্জাতিক সমুদ্রবাহিত বাণিজ্যে সর্বাধিক আগ্রহী এমন দশটি দেশ ‘বি’ ক্যাটাগরিতে এবং ‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত নয়, অথচ যাদের সামুদ্রিক পরিবহন বা নেভিগেশনে বিশেষ আগ্রহ রয়েছে এবং যাদের কাউন্সিলে নির্বাচন বিশ্বের সব প্রধান ভৌগোলিক অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করবে এমন ২০টি দেশ ‘সি’ ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়।
এবারের ‘সি’ ক্যাটাগরির কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচনে ২৫টি দেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ১৬৮টি বৈধ ভোটের মধ্যে বাংলাদেশ ১২৮টি ভোট পেয়ে ১৬তম হয়ে নির্বাচিত হয়।
দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
এটি আজ সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ১ হাজার ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১ হাজার ৪৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নং ৬) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, আজ সকাল ৯টা থেকে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদী-অববাহিকায় শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা কুয়াশা পড়তে পারে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় আজ বাতাসের গতিবেগ পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮-১২ কিলোমিটার।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৭৩ শতাংশ।
আগামী ৫ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা রয়েছে।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৫টা ১০ মিনিটে এবং আগামীকাল ঢাকায় সূর্যোদয় ভোর ৬টা ২৫ মিনিটে।
রাজধানীর হাতিরপুলের মোতালেব প্লাজার আবাসিক ভবনের আট তলা থেকে পড়ে নাজমা (১৬) নামে এক গৃহকর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি আনা হয়। আজ ভোরের দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।
আহত গৃহকর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা গৃহকর্ত্রী রাশেদা জামান বলেন, ‘আমি মোতালেব প্লাজার আবাসিক ভবনের একটি ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করি। গতরাত সাড়ে ১১টার দিকে আমরা খাওয়া-দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে ছিলাম। তখন আমাদের সিকিউরিটি গার্ড জানায় আপনাদের ফ্ল্যাট থেকে কাজের মেয়ে লাফ দিয়ে পাশের ভবনের পাঁচ তলা ছাদে পড়ে আছে। তখন আমারা সেখানে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি। পরে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালের দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাশেদা জামান আরও বলেন, ‘ওই গৃহকর্মী গত কয়েকদিন ধরে তার গ্রামে বাড়ি ময়মনসিংহ যাওয়ার জন্য আমাকে বলেছিল। আমি বলেছি দেশে হরতাল অবরোধ চলছে পরিস্থিতি ভালো হলে যাবে। এর পর সে কীভাবে নিচে পড়ল এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারি না।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘গৃহকর্মীর মরদেহটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে।’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন ২ হাজার ৭১৩ জন প্রার্থী। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩২টি দল। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন ৭৪৭ জন। সে হিসাবে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যয়নপত্র নিয়ে নির্বাচনে উপস্থিত ১৯৬৬ জন প্রার্থী। আর স্বতন্ত্রদের মধ্যে অন্তত ৪০০ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন। তবে সাধারণ মানুষের অভিযোগ, নির্বাচনে আসা বড় দল আওয়ামী লীগের মূল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বাইরে অন্যদলগুলোর বেশির ভাগ প্রার্থীই আসনগুলোর মানুষের কাছে অচেনা। প্রায় প্রতিটি আসনেই নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন এমন অনেক অচেনা মুখ যাদের প্রার্থিতা পেতে সমস্যা না হলেও নির্বাচনী লড়াইয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে পরিচিত হতেই পার হয়ে যাবে প্রচারণার বেশির ভাগ সময়। ফলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, নির্বাচনে প্রার্থী আছে অনেক বেশি, কিন্তু, প্রতিদ্বন্দ্বী কম।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ৩০০ আসনের বিপরীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের (নৌকা) ৩০৩ জন, জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) ৩০৪ জন, জাকের পার্টি (গোলাপ ফুল) ২১৮ জন, তৃণমূল বিএনপি (সোনালী আঁশ) ১৫১ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি- এনপিপি (আম) ১৪২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) ১১৬ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (মশাল) ৯১ জন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (ফুলের মালা) ৪৭ জন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ) ১৩ জন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি) ১৮ জন, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার) ৩৯ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল) ১৩ জন, গণফ্রন্ট (মাছ) ২৫ জন, গণফোরাম (উদীয়মান সূর্য) ৯ জন, ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার) ৪৫ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) ৩৭ জন, জাতীয় পার্টি-জেপি (বাইসাইকেল) ২০ জন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) ৩৪ জন, গণতন্ত্রী পার্টি (কবুতর) ১২ জন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) ৩৩ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশ (কুলা) ১৪ জন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (একতারা) ৮২ জন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম (নোঙর) ৪৯ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট- বিএনএফ (টেলিভিশন) ৫৫ জন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি) ৭৪ জন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ- বিএমএল (হাত-পাঞ্জা) ৫ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- ন্যাপ (কুঁড়েঘর) ৬ জন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মই) একজন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (রিকশা) একজন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (খেজুর গাছ) একজন এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (হারিকেন) দুইজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
এদিকে মনোনয়ন জমার শেষ দিনেই ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের সময়সীমা বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ফলে বিএনপিসহ যে দলগুলো নির্বাচন বর্জন করেছে তাদের আর মত পাল্টে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসার দৃশ্যমান কোনো সুযোগ নেই। আন্দোলনরত দলগুলোও অবশ্য আগেই এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দিয়েছে।
ফলে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর যাচাই-বাছাই শেষে যেসব প্রার্থী টিকে যাবেন তারাই থাকবেন নির্বাচনী দৌড়ে। তবে প্রতিটি আসনে ভোটের লড়াইয়ে যারা যাচ্ছেন তাদের বেশির ভাগেরই দলের নাম সাধারণ মানুষ জানে না। আর দল অচেনা বলে প্রার্থীরাও অচেনা। ফলে তাদের ধারণা নির্বাচনী লড়াইয়ে আসলে টিকে থাকবেন বড় দলের পরিচিত মুখগুলো। এর মধ্যে শাসক দলের মার্কা নিয়ে লড়াই করা প্রার্থীরা যেমন আলোচনায় থাকবেন, তেমনই অনেক আসনেই তাদের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমাতে পারেন নির্বাচনে আসা আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। কেননা, দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বেশির ভাগই স্থানীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত এবং তাদের মোটামুটি ভোট ব্যাংক অথবা এলাকাবাসীকে প্রভাবিত করার সক্ষমতা রয়েছে। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া ৭৪৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে অন্তত ৪০০ জনই আওয়ামী লীগের।
যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত কয়েক দিনের মতো গতকালও বলেছেন, দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ঢালাওভাবে নির্বাচন করতে পারবেন না। এ ছাড়া ১৪-দলীয় জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির সম্ভাবনা রয়েছে আওয়ামী লীগের। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসতে পারবেন জোটের এমন প্রার্থীরাই কেবল থাকবেন বিবেচনায়। আর ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এর ফলে এটা স্পষ্ট যে, জোটের সঙ্গে সমঝোতা হলে কয়েকটি আসনে আওয়ামী লীগ যাদের মনোনয়ন দিয়েছে তাদেরও রণে ভঙ্গ দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে।
তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচনী কৌশল হিসেবে এবার দলীয় মার্কার বাইরে দলীয় প্রার্থীদের স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানোর সুযোগ দেয়ায় নির্বাচনে আসা প্রার্থীদের কতজন আবার দল চাইলে নির্দেশ মেনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন সেটাও আছে দেখার বিষয়।
তবে এই আলোচনার বাইরে থেকে যাচ্ছে বেশির ভাগ প্রার্থী যারা বিভিন্ন দল থেকে নির্বাচনে এলেও জনগণের কাছে নিজের দল, দলীয় প্রতীক এবং নিজের পরিচয় প্রকাশ করার সুযোগ পাবেন। তবে প্রতিটি আসনে স্থানীয় ভোটারদের কাছে তারা এখনো অচেনা এবং নতুন মুখ হিসেবে বিবেচিত।
যেমন দল হিসেবে এবারই প্রথম নির্বাচন করছে তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি। এসব দলের বেশির ভাগ প্রার্থী নিজ নিজ এলাকার ভোটারদের কাছে নতুন পরিচয়ে উপস্থিত হবেন। অনেকে আবার খুব বেশি পরিচিত নন। একইভাবে তাদের নির্বাচনী প্রতীক যথাক্রমে সোনালী আঁশ, নোঙর ও একতারা চেনাতেও এবার তাদের বিশেষ প্রস্তুতি নিতে হবে।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনএমের প্রার্থীদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য আছেন ৬ জন এবং তৃণমূলের প্রার্থীদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য আছেন ৫ জন।
এদিকে, গতকাল আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদের বলেছেন, বিএনপির ১৫ কেন্দ্রীয় নেতাসহ সাবেক ৩০ জন সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে কাদের সিদ্দিকী, লতিফ সিদ্দিকী, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর মতো নেতাও আছেন। আবার আগে বিএনপিতে প্রভাব ছিল দলটির এমন সাবেক নেতারাও আছেন নির্বাচনে। এদের মধ্যে তৈমূর আলম, সমশের মবিন চৌধুরীর নাম উল্লেখযোগ্য।
তবে এদের বাইরে নির্বাচনের মাঠে থাকা বেশির ভাগ প্রার্থীই অচেনা। এ বিষয়ে গাজীপুর-৪ আসনের একজন প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমার দল এলাকায় তেমন পরিচিত নয়। দলের প্রচার চালাতে ও এলাকার মানুষের কাছে নিজের পরিচয় তুলে ধরতে এবার ভোট করতে আসা। আমিও জানি নির্বাচনে জয়লাভ করার অবস্থান এখনো আমার বা আমার দলের তৈরি হয়নি। তবে এক দিনে তো কিছুই হয় না। আমাদের দলের আদর্শ ও কর্মসূচি দেশের মানুষ ও এলাকার মানুষকে জানাতে আমরা নির্বাচনে এসেছি।’
অন্যদিকে লালমনিরহাট-৩ আসনে মনোনয়ন জমা দেয়া প্রার্থীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই সদর আসনে ৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সদ্য পদত্যাগকারী সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাবেদ হোসেন বক্কর, জাতীয় পার্টি থেকে জাহিদ হাসান, তৃণমূল বিএনপি থেকে শামীম আহম্মেদ চৌধুরী, জাকের পার্টি থেকে সকিউজ্জামান মিয়া, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল থেকে আশরাফুল আলম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) থেকে আবু তৈয়ব মো. আজমুল হক পাটোয়ারী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) থেকে শ্রী হরিশ চন্দ্র রায় মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তবে এবার তিনি এ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেননি। ফলে এ আসনে নির্বাচনে অংশ নেয়া সব প্রার্থীই নতুন এবং নতুন একজন সংসদ সদস্য পাবে লালমনিরহাট সদরবাসী। তবে নতুন হলেও জেলা ও শহরের রাজনীতিতে পুরনো মুখ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান। ছাত্ররাজনীতি করায় জাবেদ হোসেন বক্করও সেখানে পরিচিত মুখ। জাকের পার্টি ও জাসদের প্রার্থীকেও অনেকে চেনেন। তবে সাম্যবাদী দল, এনপিপির প্রার্থীর মতো জাতীয় পার্টির প্রার্থীও এলাকার সবার চেনা মুখ নন। ফলে যে আসন থেকে জাতীয় পার্টি বর্তমান সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে সেখানে নতুন মুখ দেয়ায় মাঠের রাজনীতিতে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন এলাকার অনেক বাসিন্দা।
বিষয়টা আরও স্পষ্ট হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনার ৬টি আসন বিশ্লেষণ করলে। দৈনিক বাংলার খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনার এই ৬টি আসনের জন্য সেখানে ৫৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে যারা সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচন করবেন, তাদের অধিকাংশেরই রাজনীতিতে তেমন কোনো পরিচিতি নেই। হঠাৎ করেই তারা কেন সংসদ নির্বাচনে আগ্রহী হলেন, এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উত্তরও দেননি অধিকাংশ প্রার্থী।
খুলনা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের মনোনীত ৬ জন প্রার্থী, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ২ জন এবং জাতীয় পার্টির একজন প্রার্থীর রাজনৈতিক পরিচিতি রয়েছে। বাকি ৪৪ জন প্রার্থী কখনো রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় ছিলেন না।
খুলনা প্রতিনিধির বিশ্লেষণ অনুযায়ী খুলনা-১ আসনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৬ জন। তারা হলেন, জাকের পার্টির মো. আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ননী গোপাল মণ্ডল, জাতীয় পার্টির কাজী হাসানুর রশিদ, তৃণমূল বিএনপির গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রশান্ত কুমার রায় ও আবেদ আলী শেখ।
এদের মধ্যে ননী গোপাল মণ্ডল ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। রাজনীতিতে তার পরিচিতি রয়েছে। তবে বাকি চারজন রাজনীতিতে একেবারেই অপরিচিত। তারা প্রত্যেকেই এবার প্রথম সংসদ নির্বাচন করছেন। এদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রশান্ত কুমার রায় পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সাবেক সচিব।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমি নির্বাচন করছি। আমাকে ডামি প্রার্থীও বলা যাবে। এটা দলীয় নির্দেশেই হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের ননী গোপাল মণ্ডল বলেন, ‘দল আমাকে আবারও সুযোগ দিয়েছে। আমি দলের সম্মান রাখব বলে আশাবাদী।’
তবে বাকি চার প্রার্থীর তেমন কোনো রাজনৈতিক পরিচিতি নেই। জাতীয় পার্টীর কাজী হাসানুর রশিদ ও তৃণমূল বিএনপির গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিকের কাছে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলেও কোনো উত্তর মেলেনি।
আর জাকের পার্টি মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘দল থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে বলেছে, তাই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি।’
অন্যদিকে খুলনা-২ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৯ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, গণতন্ত্র পার্টির মো. মতিয়ার রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের দেবদাস সরকার, জাকের পার্টির ফরিদা পারভিন, ইসলামী ঐক্যজোটের হিদায়েতুল্লাহ, জাতীয় পার্টির মো. গাউসুল আজম, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বাবু কুমার রায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাঈদুর রহমান।
এদের মধ্যে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীর রাজনৈতিকভাবে পরিচিতি রয়েছে। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। তবে বাকিদের আগে কখনো রাজনৈতিক মাঠে দেখা যায়নি।
কেন প্রার্থী হয়েছেন- এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ কংগ্রেসের দেবদাস সরকার বলেন, ‘অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়ন জমা দেয়া হচ্ছে, তাই আমরাও দিচ্ছি।’
খুলনা-৩ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৫ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের এস এম কামাল হোসেন, জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন, জাতীয় পার্টির মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্বতন্ত্র প্রার্থী কাইজার আহমেদ ও ফাতেমা জামান সাথী।
এদের মধ্যেও শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের প্রার্থীর রাজনৈতিক পরিচিতি রয়েছে। তিনি দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। তিন বারের সংসদ সদস্য ও দুই বারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানকে সরিয়ে তাকেই আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে। তবে ওই আসনেরও বাকি চারজনের তেমন কোনো রাজনৈতিক পরিচিতি নেই।
খুলনা-৪ আসন থেকে মনোনয়ন নিয়েছেন ১৪ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের আব্দুস সালাম মূর্শেদী, জাকের পার্টির শেখ আনছার আলী, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের এস এম আজমল হোসেন, জাতীয় পার্টির মো. ফরহাদ আহমেদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. মোস্তাফিজুর রহমান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনিরা সুলতানা, ইসলামী ঐক্যজোটের রিয়াজ উদ্দীন খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জুয়েল রানা, এম ডি এহসানুল হক, মো. রেজভী আলম, এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা, আতিকুর রহমান ও এইচ এম রওশান জমির।
এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের আব্দুস সালাম মূর্শেদী বর্তমান সংসদ সদস্য। ২০১৮ সালের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে তিনি জয়ী হয়েছিলেন।
এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারার দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। তিনি ওই আসনের তিন বারের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার আপন ভাই।
তিনি বলেন, এলাকার মানুষের দোয়া নিয়ে মাঠে নেমেছি। জয়-পরাজয় এলাকার মানুষই নির্ধারণ করবেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই আসনে আওয়ামী লীগের এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এলাকার ভোটাররা বলছেন, বাকি ১২ জন প্রার্থীদের নাম খুব একটা শোনেননি তারা। কেউ কেউ একেবারেই অপরিচিত।
খুলনা-৫ আসনের জন্য মনোনয় জমা দিয়েছেন ৭ জন। তারা হলেন- জাতীয় পার্টির মো. শহীদ আলম, জাকের পার্টির সামাদ সেখ, আওয়ামী লীগের নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ সেলিম আকতার, বাংলাদেশ কংগ্রেসের এস এম এ জলিল, ইসলামী ঐক্যজোটের তরিকুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন।
এদের মধ্যে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ একাধিক বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী। এ ছাড়া আকরাম হোসেন ফুলতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এই আসনেও আওয়ামী লীগের এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা। বাকি যারা প্রার্থী হয়েছেন এলাকার রাজনীতিতে তাদের তেমন কোনো পরিচিতি নেই বলে জানা গেছে।
খুলনা-৬ আসনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ১২ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. রশীদুজ্জামান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. আবু সুফিয়ান, জাকের পার্টির শেখ মর্তুজা আল মামুন, জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধু, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মির্জা গোলাম আজম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের এস এম নেওয়াজ মোরশেদ, তৃণমূল বিএনপির গাজী নাদীর উদ্দীন খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম রাজু, গাজী মোস্তফা কামাল, জি এম মাহবুবুল আলম, মো. মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর ও মো. অহিদুজ্জামান মোড়ল।
এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. রশীদুজ্জামানের কোনো দলীয় পদ নেই। তিনি একসময় পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্যসচিব ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জামানত হারিয়েছিলেন। তবে তাকেই মনোনয়ন দিয়ে চমক সৃষ্টি করেছে ক্ষমতাসীন দল। ওই আসনে রাজনৈতিকভাবে পরিচিত রয়েছে জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধুর। তিনি আগেও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। বাকি প্রার্থীদের তেমন কোনো রাজনৈতিক পরিচিতি নেই। এলাকার সবার কাছে পরিচিত মুখও নন অনেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশির ভাগ আসনেই ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থীদের স্থানীয়রা তেমন একটা চেনেন না। তবে বিরোধীদের এক অংশ নির্বাচন বর্জন করায় রাজনীতির নতুন সমীকরণ মেলাতে ছোট দলগুলোই নির্বাচনে হতে যাচ্ছে বড় দলগুলোর সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনীযুদ্ধ পার হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী।
জাসদের মাঠপর্যায়ের এক রাজনীতিবিদ জসিম মণ্ডল বলেন, ‘নির্বাচন একটা বড় খেলা। এখানে সবাই নামে নিজ নিজ সমীকরণ মেলানোর জন্য। রাজনৈতিক দলগুলোর সমীকরণ হয় এক ধরনের, আবার প্রার্থীর সমীকরণ হয় আরেক ধরনের। সবাই নির্বাচনে জয়ী হতে যেমন অংশ নেয় না তেমনই কেউ কেউ নির্বাচনে যায় অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করতে। আবার অনেকের কাছে ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণই বড় কথা।’ জয়-পরাজয়ের চেয়েও বড় বিষয় এ সময় পোস্টারিং করে নিজের ছবি ও পরিচিতি পুরো এলাকার মানুষকে দেখানো যায়। এটাও বা কম কিসে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশের প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরই আছে নির্বাচনে দাঁড়ানোর অধিকার। তাই কটা টাকা খরচ করে অনেকেই পরিচিতি বাড়ানোর সুযোগ নেয়। এর ফল তো অসীম-সারাজীবন নানাভাবে এর সুফল মেলে। যারা রাজনীতিতে আছেন, কেবল তারাই বোঝেন নির্বাচনে অংশ নিতে পারার গুরুত্ব।
মার্কিন সরকারের গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ সরকারের অন্য কর্মকর্তারা প্রায়ই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দেশটির জিরো টলারেন্স নীতির ওপর জোর দেন এবং আল-কায়েদা ও আইএসআইএসের মতো বিশ্বব্যাপী সংঘটিত জিহাদি জঙ্গি গোষ্ঠীর উপস্থিতি অস্বীকার করে চলেন।
‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেরোরিজম-২০২২’ এর বাংলাদেশ অংশে বলা হয়, বিশেষত আল-কায়েদা অনুমোদিত গোষ্ঠী, জামাত-উল-মুজাহিদীন (জেএমবি) এবং আইএসআইএস অনুমোদিত জেএমবি শাখা, নব্য জেএমবির মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোতে কর্তৃপক্ষ কঠোরভাবে আমলে নেয়ায় ২০২২ সালে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী সহিংসতার অল্প কিছু ঘটনা ঘটেছে।
অক্টোবরে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আল-কায়েদা অনুপ্রাণিত একটি গোষ্ঠী জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াকে নির্মূলের জন্য অভিযানের ঘোষণা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশিক্ষিত বাংলাদেশ পুলিশ কয়েক ডজন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ অনুসারে, গত অক্টোবরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালানোর প্রশিক্ষণ নিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থানকালে আল-কায়েদা অনুপ্রাণিত একটি গোষ্ঠী জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াকে ব্যাহত করতে র্যাব অভিযান চালায়।
কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, জঙ্গি গোষ্ঠীটি জাতিগত বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে সহযোগিতা করেছিল। কর্তৃপক্ষ বছরের বাকি সময়জুড়ে কয়েক ডজন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া সদস্যকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিয়েছে।
২০১৫ সালে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনে হামলার ঘটনায় প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেলকে গত ২০ নভেম্বর ছিনিয়ে নিয়ে যায় জঙ্গিরা।
কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ ঘোষিত আল-কায়েদা অনুমোদিত আনসার আল-ইসলামের ২০ সন্দেহভাজন সদস্যকে পালানোর পরিকল্পনা এবং অথবা কার্যকর করতে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করে। ছিনিয়ে নেয়া আসামিরা ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত পলাতক ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কারাগার ব্যবস্থায় মৌলবাদ থেকে সহিংসতা এবং সন্ত্রাসী নিয়োগ গুরুতর উদ্বেগ হিসেবেই রয়ে গেছে। সিটিটিসিইউ (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৩ সালে বাংলাদেশের নির্বাচিত কারাগারগুলোতে বাস্তবায়নের জন্য সহিংসতা থেকে একটি সমন্বিত ‘ডেরাডিকালাইজেশন’ প্রোগ্রাম তৈরি শুরু করে।
জলবায়ু বিষয়ে কর্মকাণ্ডে নেতৃত্বের কণ্ঠস্বর হিসেবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিযুক্ত মানুষের পক্ষে বিশ্বব্যাপী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে 'ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড' এ ভূষিত করেছে আইওএম এবং জাতিসংঘ সমর্থিত গ্লোবাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট মোবিলিটি সংস্থা।
শুক্রবার দুবাইতে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন-কপ ২৮ এর সাইডলাইনে একটি উচ্চ-স্তরের প্যানেল অধিবেশনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি রাষ্ট্রদূত ডেনিস ফ্রান্সিস এবং ইন্টারন্যাশনাল অর্গাইনাইজেশন ফর মাইগ্রেশন-আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি পোপের কাছ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন।
কপ-২৮ এ বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের প্রধান তথ্যমন্ত্রী ও পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ এ সময় 'অভিযোজন এবং সহনশীলতার জন্য জলবায়ু গতিশীলতাকে বাগে আনা' (Harnessing Climate Mobility for Adaptation and Resilience) শীর্ষক উচ্চ-স্তরের এ প্যানেল অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
জলবায়ু গতিশীলতার বিষয়টিকে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আলোচনার মূলধারায় আনার এখনই উপযুক্ত সময় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ক্লাইমেট মোবিলিটি সামিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ুজনিত কারণে বাধ্য হয়ে অভিবাসন এবং বাস্তুচ্যুতির দিকটি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে নিয়ে আসেন। এর আগেও বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরে ঢাকায় আইওএমের সহযোগিতায় আয়োজিত দুটি সংলাপ এবং গত বছর মিশরের শার্ম এল শাইখে কপ ২৭ এ বিষয়টি তুলে ধরেছে, জানান হাছান মাহমুদ।
একইসাথে কক্সবাজারে বাস্তুচ্যুত ৪,৪০০ পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম বহুতল সামাজিক আবাসন প্রকল্প নির্মাণসহ জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উদ্যোগের নানা দিক তুলে ধরেন তিনি।
মন্ত্রী হাছান বলেন, ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং জলবায়ু গতিশীলতা এবং এ থেকে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের ক্রমাগত নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বের সমর্থন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সন্তুষ্ট যে, এখন জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলির একটি বিস্তৃত জোট এই ইস্যুতে একযোগে কাজ করছে।
পুরস্কার প্রদানকারী গ্লোবাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট মোবিলিটি সংস্থাটি জাতিসংঘ, আঞ্চলিক আন্তঃসরকারি সংস্থা এবং উন্নয়ন অর্থ সংস্থাগুলির সাথে সহযোগিতায় জলবায়ু গতিশীলতা মোকাবিলায় সহযোগিতামূলক বিস্তৃত সমাধানের জন্য কাজে ব্যাপৃত।
কমনওয়েলথ মহাসচিবের সঙ্গে তথ্যমন্ত্রীর বৈঠক
এ দিন বিকেলে দুবাইয়ে কপ ২৮ সম্মেলনস্থলে কমনওয়েলথ সেক্রেটারি জেনারেল প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ডের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এ সময় বন ও পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবু জাফরসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে মন্ত্রী হাছান সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে, কমনওয়েলথ মহাসচিব তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। একইসঙ্গে তার সাথে দেশের রাজনৈতিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।'
দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার আবহাওয়ার দুই নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলে, ‘দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
‘এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।’
সতর্কতা সংকেত ও নৌযানের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
‘উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।’
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ৪ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ ২১ জন প্রার্থীকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ শুক্রবারের মধ্যে তাদের শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সাংবাদিকদের হেনস্তা, অস্ত্রধারী ব্যক্তিকে নিয়ে শোডাউন, মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটানোসহ বিভিন্ন কারণে বৃহস্পতিবার ২১ প্রার্থীকে শোকজ করেছে কমিশন।
শোকজ লেটার পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে আছেন- বর্তমান ৪ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। তারা হলেন-নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী নাটোর-৩ আসনের প্রার্থী জুনাইদ আহমেদ পলক।
শোকজ পেয়েছেন সাবেক ২ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীও। তারা হলেন- সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও নরসিংদী-৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এবং সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
এদিকে আলোচিত ক্রিকেটার মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাকিব আল হাসানকেও শোকজ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এ ছাড়া শোকজ খেয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ঢাকা-৬ আসনের প্রার্থী কাজী ফিরোজ রশীদ, ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন, চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার, পটুয়াখালী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিব্বুর রহমান, রংপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তুষার কান্তি মণ্ডল, লক্ষ্মীপুর-১ আসনে নৌকার প্রার্থী সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ার হোসেন খান, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, নাটোর-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল এবং ময়মনসিংহ-১১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু।
এদের মধ্যে মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে অস্ত্রধারীসহ শোডাউন দিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার কারণে। সাকিব আল হাসানকে শোকজ দেয়া হয়েছে বড় গাড়িবহর নিয়ে মাগুরা শহরে ঢোকা এবং নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে। আর চট্টগ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে কারণ দর্শানো হয় এক সাংবাদিককে হেনস্তা এবং অন্য সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভেঙে ফেলার অভিযোগে।
আচরণবিধি ভাঙার কারণে আরও অনেক প্রার্থীকে শোকজ দেয়া হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পর যেন তর সইছিল না সাধারণ মানুষের। অবশেষে আজ অবসান হচ্ছে দীর্ঘ প্রতীক্ষার। আজ ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে জনসাধারণের জন্য চালু হচ্ছে কক্সবাজার এক্সপ্রেস। ঢাকা ও কক্সবাজার দুই জায়গা থেকেই কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনটি উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ চলাচলের উদ্বোধন করা হবে। কক্সবাজারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবির।
একই দিন রাত পৌনে ১০টায় ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকেও উদ্বোধন হবে ট্রেনটির। এ সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান উপস্থিত থেকে কক্সবাজারগামী যাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার এক্সপ্রেসে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন ছাড়বে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায়। চট্টগ্রামে এসে পৌঁছাবে রাত ৩টা ৪০ মিনিটে। ২০ মিনিট যাত্রাবিরতি দিয়ে রাত ৪টায় কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। কক্সবাজারে পৌঁছাবে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে। অর্থাৎ রাজধানী থেকে পর্যটন শহরে যেতে সময় লাগবে ৮ ঘণ্টা ১০ মিনিট।
অন্যদিকে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেন ছাড়বে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে। এই ট্রেন চট্টগ্রামে আসবে বেলা ৩টা ৪০ মিনিটে। আর ঢাকায় পৌঁছবে রাত ৯টা ১০ মিনিটে।
জানা গেছে, ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সাতকানিয়ায় নির্মিত চারটি সেতু ট্রেন ট্রায়ালের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে। কক্সবাজার স্টেশনে পদায়ন করা হয়েছে একজন ইনচার্জসহ মোট ৪ জন স্টেশন মাস্টারকে। এ ছাড়া বাড়ানো হয়েছে প্রয়োজনীয় লোকবল।
ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তায় ১০ জন রেলওয়ে পুলিশ নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার পুলিশ ইনচার্জ এসএম শহিদুল ইসলাম।
রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ১ ডিসেম্বর কক্সবাজার থেকে ঢাকা বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচলের জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। দফায় দফায় সভা করে সব পদক্ষেপ নিয়েছি।
যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার স্টেশন মাস্টার মো. গোলাম রাব্বানী বলেন, কক্সবাজার থেকে ঢাকায় প্রথম বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচলে আমরা প্রস্তুত। নির্দিষ্ট সময়ে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেন কক্সবাজার ছেড়ে যাবে। যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা থাকবে।
ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯৫ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৩২৫ টাকা, এসি সিটের ১ হাজার ৫৯০ টাকা এবং এসি বার্থের (ঘুমিয়ে যাওয়ার আসন) ভাড়া ২ হাজার ৩৮০ টাকা।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া ২০৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৩৮৬ টাকা, এসি সিটের ৪৬৬ এবং এসি বার্থের ৬৯৬ টাকা।
গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রেল নেটওয়ার্কে ৪৮তম জেলা হিসেবে যুক্ত হয় কক্সবাজার।
এ সময় তিনি বলেছিলেন, পঞ্চগড় থেকে কক্সবাজার অথবা রাজশাহী থেকে কক্সবাজার, দক্ষিণাঞ্চল সুন্দরবন থেকে কক্সবাজার, এমনকি গোপালগঞ্জ-ফরিদপুর অর্থাৎ সমগ্র বাংলাদেশ থেকেই যাতে সহজে কক্সবাজার আসা যায় সেই পদক্ষেপও আমরা নেব। এই যোগাযোগগুলো সম্পন্ন হলে আমাদের পর্যটনের ক্ষেত্রে একটা বিরাট পরিবর্তন আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
কক্সবাজারে নির্মাণ করা হয়েছে আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন বলেন, ছয়তলার এই স্টেশনে রয়েছে চলন্ত সিঁড়ি, মালামাল রাখার লকার, হোটেল, রেস্তোরাঁ, শপিংমলসহ আধুনিক সব সুবিধা। ৪৬ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতা সংবলিত স্টেশনটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এতে আছে কনভেনশন হল, ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন বুথ, এটিএম বুথ, এমনকি প্রার্থনার স্থানও। স্টেশনে ফুড কোর্ট, হোটেল ও শপিং কমপ্লেক্সের বিষয়টি বাইরের এজেন্সি দ্বারা টেন্ডারিংয়ের মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে।
দোহাজারী-কক্সবাজার ও মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১০ সালে শুরু হয়ে ২০১৩ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল একনেকে অনুমোদিত হয় এবং এ লাইনে ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। কিন্তু জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ২০১৬ সালে সংশোধিত প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকায়। এই বাজেটে এডিবি ঋণ দেয় ১৩ হাজার ১১৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা আর বাকি ৪ হাজার ৯১৯ কোটি ৭ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
একনেক অনুমোদনের পর, প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০১০ সালের ১ জুলাই ২০২২ সালের ৩০ জুন ধরা হয়। এ রেলপথ নির্মাণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ১ হাজার ৩৬৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব হয়। প্রকল্পের ১৬৫ একর সংরক্ষিত বনাঞ্চল ডি-রিজার্ভকরণসহ প্রকল্পে ব্যবহারে অনুমতি পেতে কালক্ষেপণ হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে সব কাজ শেষ হতে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
কক্সবাজারের সঙ্গে শুধু ঢাকা নয়, পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গেও এ রেলপথ যুক্ত হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবির।
আজ ১ ডিসেম্বর। শুরু হলো মহান বিজয়ের মাস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্নসাধ পূরণ হয় এ মাসেই। বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় আসে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। বিশ্বের মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে।
বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নপূরণ হওয়ার পাশাপাশি লাখ লাখ তাজা প্রাণ বিসর্জন আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই অর্জন হওয়ায় বেদনাবিধূর এক শোকগাথার মাসও এই ডিসেম্বর।
এ মাসেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর আল-শামসদের সহযোগিতায় হানাদার গোষ্ঠী দেশের মেধাবী, শ্রেষ্ঠ সন্তান-বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। সমগ্র জাতিকে মেধাহীন করে দেয়ার এ ধরনের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের দ্বিতীয় কোনো নজির বিশ্বে নেই।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ আর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর জল, স্থল আর আকাশপথে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর চারদিক থেকে ভেসে আসতে থাকে। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। যেখান থেকে ৭ মার্চ স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম,’ বলে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, সেখানেই পরাজয়ের দলিলে স্বাক্ষর করেন পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজী। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। আর জাতি অর্জন করে হাজার বছরের স্বপ্নের স্বাধীনতা।
বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে পাক বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং তাঁর ডাকে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র জনযুদ্ধে ১৬ ডিসেম্বর জাতির চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।
৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার স্বাক্ষর এবারের বিজয়ের মাস নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পালিত হবে। মহান এ বিজয়ের মাস উদ্যাপনে জাতীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
দেশের বিদ্যমান বিদ্যুৎসেবা নিয়ে গড়ে ৯৩.৮১ শতাংশ গ্রাহক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে বলে এক জরিপে উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে গ্রাহক সন্তুষ্টি সমীক্ষার চূড়ান্ত প্রতিবেদন নিয়ে মন্তব্যকালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিদ্যুৎ পরিষেবা গ্রাহকদের কাছে আরও সহজলভ্য করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা অন্যতম চ্যালেঞ্জ। প্রযুক্তির ব্যবহার যত বাড়বে, সেবার মান ও সেবা প্রদান তত উন্নত হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইনসহ দপ্তরপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল নিতে হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ অপরিহার্য। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সাশ্রয়ী ব্যবহার করতে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
পাওয়ার সেলের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এ সমীক্ষা কার্যক্রমের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ছিল মাইডাস বাংলাদেশ।
১৫ হাজার ২৪৫ জন গ্রাহকের মধ্যে এ সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে। যার মধ্যে আবাসিক গ্রাহক ১৩৮৬২ (৯০.৯৩%), শিল্প গ্রাহক ১৩৫ (০.৮৯%), বাণিজ্যিক গ্রাহক ১২২০ (৮%) এবং সেচ গ্রাহক ২৮ জন (০.১৮%)। প্রাপ্ত বৈদ্যুতিক পরিষেবার ৯৩.৮১% গ্রাহক সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রাপ্ত পরিষেবার মান সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ৮৭.১৩% এবং কাঙ্ক্ষিত সময়ের মধ্যে পরিষেবা প্রাপ্তি নিয়ে ৯২.৯৭% সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কল সেন্টার/হটলাইনের মাধ্যমে অভিযোগের সাড়া প্রদান সম্পর্কে ৮৯.০১% গ্রাহক ইতিবাচক মতামত দিয়েছেন।
সমীক্ষায় গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে আধুনিক ও ওয়ান স্টপ ডিজিটাল সার্ভিস সেন্টার করা, লজিস্টিক সাপোর্ট বৃদ্ধি, অনলাইন বিলিং সিস্টেম, প্রিপেইড মিটারের সংখ্যা বাড়ানো, দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন লোকবল বাড়ানো, তদারকি সভা নিয়মিত করা, মেরামত কার্যক্রম সম্পর্কে গ্রাহকদের পূর্বেই অবহিত করা ইত্যাদি বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় স্থানীয় ব্যাংক, থানাসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে তথ্য নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিকে উপস্থিত থেকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান এরই মধ্যে নির্দেশনাটি ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধির উপস্থিতি, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি ঋণখেলাপিদের তথ্য, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফৌজদারি মামলা সম্পর্কিত তথ্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের স্থানীয় প্রতিনিধি আয়কর রিটার্নের তথ্য, ঠিকাদার বা আর্থিক সংশ্লেষ আছে এমন প্রার্থীদের তথ্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত থাকার জন্য স্থানীয়ভাবে নির্দেশনা দিতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, এরপর বাছাইয়ের সময় তাদের দেয়া তথ্য গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে মনোনয়নপত্র গ্রহণ বা বাতিলের সিদ্ধান্ত দিতে হবে।