শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার হওয়া অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।
এতে বলা হয়, ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে জনস্বার্থে সরকারি কর্ম থেকে বিরত রাখা আবশ্যক ও সমীচীন।
তাকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৩৯ (১) ধারার বিধান মোতাবেক ১১/৯/২০২৩ তারিখ থেকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি পুলিশ অধিদপ্তরে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।
গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম ও বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিমকে শাহবাগ থানায় নিয়ে গিয়ে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে এডিসি হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, নারীঘটিত একটি বিষয়ে ঘটনার সূত্রপাত।
আনোয়ার হোসেন নাঈমের ভাষ্যে, তারা শাহবাগের বারডেম হাসপাতাল হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসের দিকে যাচ্ছিলেন। হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সামনে রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুনের সঙ্গে এডিসি হারুনকে তর্কাতর্কি করতে দেখেন। তখন তারা বিষয়টি মিটমাট করে দেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর এডিসি হারুন ১০-১৫ জন পুলিশ সদস্যকে ডেকে এনে তাদের ওপর হামলা করেন। এরপর নাঈম ও মুনিমকে শাহবাগ থানা নিয়ে বুট জুতা দিয়ে লাথি, কিল ও ঘুষি মারা হয়। নাঈমের মুখমণ্ডল মারাত্মক জখম হয়। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনাটির পর সমালোচনার ঝড় উঠলে এডিসি হারুন অর রশিদকে রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণে নির্বাচনের যে সময় বলা হয়েছে, তা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলের সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, ‘উনি (প্রধান উপদেষ্টা) কী কারণে এপ্রিল মাসে নিয়ে যেতে চাইলেন, আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।’
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর একটি গণমাধ্যমকে এমন প্রতিক্রিয়া জানান রুহিন হোসেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যেকোনো দিন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা জানান।
এ বিষয়ে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘জনগণ এবং অধিকাংশ রাজনৈতিক দল যা চায়, তার আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। কারণ, আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, অবশ্যই ২০২৫-এর মধ্যে নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন।’
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে, তাতে যত দেরি হবে, ততই সাধারণ মানুষের জীবনের সংকট ঘনীভূত হবে। চট্টগ্রাম বন্দরসহ নানা ধরনের যে ঘটনাগুলো হচ্ছে, সেটা দেশের স্বার্থে রক্ষিত হবে না, বিদেশের স্বার্থই রক্ষিত হবে। সুতরাং নির্বাচন এ বছরের মধ্যেই অনুষ্ঠিত করাটাই জরুরি বলে মনে করি। আমি আশা করব প্রথম উপদেষ্টা এই বছরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে বলবেন।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যেকোনো একদিন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ ঘোষণা দেন তিনি।
ভাষণের শুরুতে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, ছাত্র-ছাত্রী, বয়স্ক, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাইকে সালাম জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি সবাইকে হিংসা-বিদ্বেষমুক্ত দেশ গড়ার আহ্বান জানান।
পরে নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি জানি, আগামী জাতীয় নির্বাচন কখন হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানার জন্য রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে বিপুল আগ্রহ রয়েছে। আমি বারবার বলেছি, এই নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ের মধ্যে দেশে নির্বাচন উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যা যা করা দরকার, সরকার তাই করছে।
তিনি বলেন, এখানে মনে রাখা জরুরি, বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকে যতবার গভীর সংকটে নিমজ্জিত হয়েছে তার সবগুলোরই প্রধান কারণ ছিল ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন। ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বারবার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার মধ্য দিয়ে একটি রাজনৈতিক দল বর্বর ফ্যাসিস্টে পরিণত হয়েছিল। এই ধরনের নির্বাচন যারা আয়োজন করে তারা জাতির কাছে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায়। এমন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে দল ক্ষমতায় আসে তারাও জনগণের কাছে ঘৃণিত হয়ে থাকে।
‘এ সরকারের একটি বড় দায়িত্ব হলো একটি পরিচ্ছন্ন, উৎসবমুখর, শান্তিপূর্ণ, বিপুলভাবে অংশগ্রহণের পরিবেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। এমন একটি নির্বাচন আয়োজন করা যাতে করে দেশ ভবিষ্যতে নতুন সংকটে না পড়ে। এজন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার। যেই প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত সেগুলোতে যদি সুশাসন নিশ্চিত করা না যায় তাহলে ছাত্র-জনতার সকল আত্মত্যাগ বিফলে যাবে।’
‘সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিনটি ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। সে বিবেচনায় আগামী রোজার ঈদের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য জায়গায় পৌঁছাতে পারব বলে বিশ্বাস করি। বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার—যা কিনা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি আমাদের সম্মিলিত দায়—সে বিষয়ে আমরা দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পারব। এতে আমাদের ওপর আপনাদের অর্পিত ম্যান্ডেট ন্যূনতম হলেও বাস্তবায়ন করে যেতে পারব। সে বিবেচনায় ও ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য সকল পক্ষের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। পাশাপাশি, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন সংক্রান্ত চলমান সংস্কার কার্যক্রম পর্যালোচনা করে আমি আজ দেশবাসীর কাছে ঘোষণা করছি যে আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত সময়ে আপনাদের কাছে নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রদান করবে।’
তিনি বলেন, আমরা এমন নির্বাচন চাই যা দেখে অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মা তৃপ্তি পাবে, তাদের আত্মা শান্তি পাবে। আমরা চাই আগামী নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোটার, সবচেয়ে বেশি প্রার্থী ও দল অংশ নিক। এটা সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকুক।
বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক বার্তায় তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ এবং সারা বিশ্বের মুসলমানদের প্রতি আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানাই। আমি তাদের সুখ-সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করি। ঈদ মোবারক।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ঈদুল আজহা সবার জীবনে শান্তি, আনন্দ ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। তিনি লেখেন, ‘এই উৎসব যেন সমাজে ঐক্য ও সম্প্রীতি জাগিয়ে তোলে। আমি এই বিষয়ে মহান আল্লাহর রহমত কামনা করি।’
বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেকের পক্ষেই এবারের ঈদ পুরোপুরি উপভোগ করা কঠিন হয়ে পড়বে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘লাগামহীন মূল্যস্ফীতি, খাদ্যদ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের তীব্র সংকট সাধারণ মানুষের জীবনকে গভীর দুর্ভোগে ফেলেছে। “সীমিত আয়ের মানুষ টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে।’
তিনি ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ভাগ করে নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘ঈদের দিনে নিশ্চিত করতে হবে যেন কেউ না খেয়ে না থাকে। ঈদের আনন্দ হোক সমষ্টিগত, যেন সবাই একই কাতারে আসতে পারে।’
ঈদুল আজহার ত্যাগের আদর্শ তুলে ধরে বিএনপি নেতা বলেন, ‘ঈদুল আজহা ত্যাগের উৎসব। এর মূল শিক্ষা হলো আত্মোৎসর্গ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে—আল্লাহর কাছে পশুর মাংস বা রক্ত পৌঁছায় না, পৌঁছে কেবল তোমাদের অন্তরের তাকওয়া।’
তিনি বলেন, মানুষ আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় পশু কোরবানি করে। ‘পবিত্র ঈদুল আজহা প্রতি বছর ফিরে আসে আত্মশুদ্ধি, আত্মতৃপ্তি ও আত্মত্যাগের মহাসন্দেশ নিয়ে।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সামাজিক বৈষম্য এবং অর্থনৈতিক সংকটের মাঝেও দেশের মুসলিম জনগণের হৃদয়ে ঈদের অফুরন্ত আনন্দ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ দেড় দশক ধরে এক কঠিন ফ্যাসিবাদী সময় পার করেছে।’
তিনি বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট চক্রের পতনের পর এবার ঈদুল আজহা কিছুটা স্বস্তির পরিবেশে উদযাপিত হচ্ছে।’
তারেক রহমান জনগণকে সমাজ গঠনে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘শান্তি, ঐক্য, সম্প্রীতি ও উচ্চ নৈতিকতার ভিত্তিতে নতুন করে সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। যাতে করে চরম বৈষম্য দূর হয় এবং দুনীতি, লুটপাট ও অর্থপাচারের মতো অপরাধ আর কোনোদিন না ঘটে।’
উল্লেখ্য, ২০০৮ সাল থেকে তারেক রহমান তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জায়মা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে লন্ডনে বসবাস করছেন।
রাজধানীর পশুর হাটে এবার বড় গরুর চাহিদা একেবারেই তলানিতে। দাম অর্ধেক কমিয়েও ক্রেতা না মেলায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
আজ শুক্রবার সরেজমিনের নতুন বাজার ১০০ ফিট গরুর হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটে আসা ৫ লাখ টাকার ওপরে অধিকাংশ গরুই রয়ে গেছে অবিক্রিত।
এই হাটে শোভা পাচ্ছে ১৫০০ কেজি ওজনের ‘সুলতান’। কেরাণীগঞ্জ থেকে ফ্লেকভিহ জাতের এই গরুটি এনেছেন মুহম্মদ রাজিব।
তিনি বলেন, ‘শুরুতে ১২ লাখ টাকা চেয়েছিলাম, দাম সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এখন দাম কমিয়ে ৮ লাখ বলার পরেও ক্রেতা পাচ্ছি না। শেষদিন সর্বোচ্চ দাম উঠেছে মাত্র ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। এখন কেউ ৬ লাখ টাকা বললেও এই গরু ছেড়ে দিবো।’
‘৬ লাখ টাকায় গরু বিক্রি করলে বড় লোকসান হবে। আমি এই গরু বাছুর অবস্থায় আড়াই লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি। প্রায় তিন বছর ধরে গরু লালন পালন করে বড় করেছি। নিজে বাদেও দুইজন লোক রেখেছি গরুর দেখভালের জন্য। প্রতিদিন গরুর খাবারের পেছনেই ১২০০-১৫০০ টাকা খরচ হয়েছে। এই গরু এখন কয়েক লাখ টাকা লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে চেয়েও ক্রেতা পাচ্ছি না,’ আক্ষেপ করে বলেন রাজিব।
একই হাটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ‘রাজা সুন্দরী’ নামে ১ হাজার কেজি ওজনের গরু এনেছে সোহাগ আলি। বলেন, ‘শুরুতে ১০ লাখ টাকা দাম বলেছিলাম। সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ৫ লাখ টাকা। তখন বিক্রি করিনি। এখন কেউ ৪ লাখ টাকা বললেও বিক্রি করে দিবো।’
‘এই গরু নিয়ে আসতে যে খরচ, অবিক্রীত অবস্থায় আবার ফেরত নিয়ে গেলে বড় লোকসান হয়ে যাবে। এখন লাভের চিন্তা বাদ দিয়ে চিন্তা করছি কত কম লোকসানে গরু বিক্রি করা যায়,’ বলেন এ ব্যবসায়ী।
এই গরু বাদেও সোহাগ হাটে দুটি এলবিনো জাতের মহিষ এনেছেন। শুরুতে জোড়া ৮ লাখ বললেও এখন ৪ লাখ বলেও ক্রেতা পাচ্ছেন না।
হাটে নেপালি জাতের তিনটি গরু এনেছেন আরেক ব্যবসায়ী মঈনুল। তিনটি গরুর দাম ১৫ লাখ টাকা চেয়েছিলেন শুরুতে। এখন তিন লাখ টাকায় প্রতিটি গরু ছাড়ার চিন্তা করলেও পাচ্ছেন না আগ্রহী ক্রেতা।
বড় গরু নিয়ে আফসোস করে গরু ব্যবসায়ী ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর যারা বড় গরু হাটে এনেছেন তাদের থেকে অভাগা কেউ নেই। শখের গরু রীতিমতো অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
নওগাঁ থেকে হাটে এ ব্যবসায়ী এনেছেন ১২০০ কেজি ওজনের ‘কালাচাঁদ’। পাঁচ বছর ধরে এই গরু কোরবানির হাঁটে বিক্রির জন্য উপযুক্ত করেছেন, বুকে আশা নিয়ে এসেছেন ঢাকায়। কিন্তু সব গুঁড়েবালি। শঙ্কা করছেন, অবিক্রিত অবস্থায় গরু নিয়ে ফিরতে হবে তাকে।
বাজারে গরুর পাশাপাশি লাখ টাকা দামের শৌখিন ছাগলের চাহিদাও তলানিতে। নওগাঁ থেকে আরেক ব্যবসায়ী এনেছেন ২ লাখ টাকা মূল্যের ছাগল। শুরুর দিকে ক্রেতারা ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাম বললেও ঈদের আগের দিন দাম নেমেছে ৫০-৬০ হাজার টাকায়।
সব মিলিয়ে যারা বড় গরু এনেছেন তাদের শঙ্কা এবার কোরবানির ঈদে তাদের অনেকের গরু বিক্রি পর্যন্ত হবে না। আর গরু বিক্রি হলেও লোকসান হবে ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলিম জনগোষ্ঠীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আগামীকাল শনিবার ‘পবিত্র ঈদুল আজহা’ উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলিম জনগোষ্ঠীকে জানাই শুভেচ্ছা এবং ঈদ মোবারক।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও চরম ত্যাগের অনুপম নিদর্শন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাইল (আঃ)-কে কোরবানি করতে উদ্যত হন। এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে সারা বিশ্বের মুসলমানগণ ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ ও আত্মদানের এই সুমহান দৃষ্টান্ত কেয়ামত পর্যন্ত বিশ্ববাসীর কাছে অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘ঈদুল আজহা মানুষকে শান্তি, ত্যাগ ও সাম্য শেখায়। মুসলমানগণ কোরবানিকৃত পশুর গোস্ত গরিব আত্মীয়স্বজন ও দুঃস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে সবাইকে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করেন। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ত্যাগ, আত্মশুদ্ধি, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি ছড়িয়ে পড়ুক-এই হোক ঈদের চাওয়া।’
পবিত্র ঈদুল আজহার ত্যাগের শিক্ষা নিজেদের ভেতর ধারণ করার আহবান জানিয়ে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আসুন জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশকে একটি বৈষম্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলি।’
ঈদুল আজহার এ দিনে প্রধান উপদেষ্টা মহান আল্লাহর কাছে বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও উন্নতি প্রার্থনা করেন।
চোখের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ড থেকে আজ শুক্রবার রাতে দেশে ফিরছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি ব্যাংককের রুটনিন আই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী মির্জা ফখরুলের দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান শুক্রবার দুপুরে বাসস’কে জানান, দলের মহাসচিব রাতে দেশে ফিরবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘রাত ১১টায় ব্যাংকক থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন মির্জা ফখরুল। তাকে বহনকারী ফ্লাইটটি রাত ১টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
এর আগে, চোখের জটিলতাসহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে গত ১৩ মে রাত ২টা ৪৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন মির্জা ফখরুল। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে আজ দুপুরে বাসস’কে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রেস উইং জানিয়েছে, পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে এই ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
আসন্ন ঈদুল আজহায় ঢাকায় নেওয়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে শতভাগ নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজধানীজুড়ে ৫০০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ঈদের নামাজ স্বাভাবিক নিয়মে অনুষ্ঠিত হবে এবং সারাদেশে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
তিনি জানান, জাতীয় ঈদগাহে যারা নামাজ আদায় করবেন, তাদের নিজস্ব জায়নামাজ আনতে হবে না, কারণ সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছুটির মধ্যেও সারাদেশে দায়িত্বে রয়েছে।’
ঈদের ছুটিতে প্রায় ফাঁকা রাজধানীর নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকা শহরের অলিগলিতে ৫০০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে ছোটখাটো ঘটনা ঘটে—আমরা এমন ঘটনাও রোধে কাজ করছি।’
থানায় মামলা করতে না পারার অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন,‘যদি কোনো কর্মকর্তা মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মহাখালী বাস টার্মিনালে যাত্রী হয়রানির সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক সাংবাদিকের উপর হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছে, আমরা এটির তদন্ত করছি।’
অপরাধী গ্রেপ্তার করার কয়েকদিন পরে বের হয়ে আরও বেশি অপরাধে জড়িয়ে যায়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেনন, ‘এটা তো আর পুলিশের হাতে না। এটা আদালতের বিষয়। কিছুদিন আগে আপনারা দেখেছেন, দুজন শীর্ষ সন্ত্রাসী ছাড়া পাওয়ার পর আবারও অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ায় তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এমন যদি কেউ অবৈধকাজে জড়িয়ে যায় তাহলে তাকেও ছাড়া হবে না, পুঁটিমাছ কিংবা রুই কাতলা হোক কাউকে ছাড় নেই। আইন সবার জন্য সমান।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এবার নিরাপত্তা নিয়ে আমি ১০০ ভাগ কনফিডেন্ট আছি।
পদ্মা সেতু দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজার ৪৮৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৫ কোটি ৪৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা। এটিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ টোল আদায়ের রেকর্ড।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) গত বছরের একদিনে সর্বোচ্চ প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ টাকার টোল আদায়ের রেকর্ড ভেঙে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা টোল আদায় করা হয়।
ঈদুল আজহার ১০ দিনের লম্বা ছুটির প্রথম দিনেই এই রেকর্ড হয়েছে। তবে ছুটি ছাড়াই আগের দিন বুধবার (৪ জুন) পদ্মা সেতুতে একদিনে ৪ কোটি ৯ লাখ টাকারও বেশি টোল আদায় করা হয়েছে। এদিন ৩৭ হাজার ৪৬৫ গাড়ি পারাপার হয়েছে সেতুটি দিয়ে।
বৃহস্পতিবার মাওয়া প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছে ৩৫ হাজার ৯৮৫টি যান। এতে মাওয়ায় টোল প্লাজায় টোল আদায় হয় ৩ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ৮০০ টাকা।
আর জাজিরা প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করে ১৬ হাজার ৫০২টি যান। এসব যানবাহন থেকে ২ কোটি ২৬ লাখ ৮৪ হাজার ২০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে বলে জানান আলতাফ।
এর আগে, ২০২২ সালের ২৬ জুন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী দিনে সর্বোচ্চ ৫১ হাজার ৩১৬টি যানবাহন পারাপারের রেকর্ড ছিল। আর ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড ছিল ৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ৭০০ টাকা।
পদ্মা সেতুর দায়িত্বে থাকা যুগ্ম সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) আলতাফ হোসেন সেখ বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু তিন বছর পূর্তি। এ পর্যন্ত টোল আদায় হয়েছে ২ হাজার ৪৫২ কোটি ৮২ লাখ টাকার বেশি । এই সময়ে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৬৪ হাজার ২১৮ যান পারাপার হয়েছে।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তিন জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন আরও তিনজন।
এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৫০০ জনে। আর শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৩৯ জনে।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ সময়ে শনাক্তের হার ছিল ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। মোট করোনা পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এ নিয়ে করোনায় সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৬০ জনে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কুরবানির পশুর বর্জ্য পরিবেশসম্মতভাবে ব্যবস্থাপনার নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ সময় যত্রতত্র পশু জবাই, উচ্ছিষ্ট ফেলা ও বর্জ্য ফেলে রাখার কারণে পরিবেশ দূষণ, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও জনদুর্ভোগ তৈরি হয়, যা প্রতিরোধে সকলের সচেতন অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্ধারিত স্থানে কুরবানির পশু জবাই নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছ পরিবেশ মন্ত্রণালয়। উন্মুক্ত বা অনির্ধারিত স্থানে পশু জবাই থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে । জবাইয়ের সময় ও পরবর্তী কার্যক্রমে যথাযথ ব্যক্তিগত সুরক্ষা (যেমন: গ্লাভস, মাস্ক, এপ্রোন) নিশ্চিত করতে হবে। পশুর রক্ত, গোবর ও অন্যান্য পরিত্যক্ত অংশ নির্ধারিত গর্তে ফেলে মাটি চাপা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
জবাইকৃত পশুর উচ্ছিষ্ট যেমন রক্ত, চামড়া, নাড়িভুঁড়ি, হাড়, শিং, গোবর ইত্যাদি যেন কোনো অবস্থাতেই খোলা জায়গায় না ফেলা হয়, বরং নির্ধারিত ডাস্টবিন বা স্থানেই ফেলা উচিত। কুরবানির মাংস বিতরণ বা বর্জ্য অপসারণে প্লাস্টিক নয়, বরং পরিবেশবান্ধব (বায়োডিগ্রেডেবল) ব্যাগ বা পাত্র ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
কুরবানির বর্জ্য দ্রুত ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অপসারণে স্থানীয় প্রশাসনকে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করা আমাদের সামাজিক ও নাগরিক দায়িত্ব। পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে আমরা যেমন নিজেরা সুস্থ থাকি, তেমনি আমাদের চারপাশকেও নিরাপদ রাখি।
পরিচ্ছন্নতা শুধু শারীরিক নয়, এটি আমাদের ঈমানেরও অঙ্গ। আসুন, পরিচ্ছন্ন কুরবানির মাধ্যমে আমরা আমাদের ধর্মীয়, সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করি এবং একটি স্বাস্থ্যসম্মত, পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে আসি।
অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
আজ সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে অস্থায়ীভাবে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছেন ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
প্রশাসক বলেন, “ঈদের দিন সকাল ৭:৩০টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে জামাত আয়োজন অনুপযুক্ত হলে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৮:০০টায় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।”নামাজ আদায়কারী মুসল্লিদের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সেবা ব্যবস্থা, যেমন: প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লির জন্য বিশাল আয়োজনে ঈদ জামাতের আয়োজন, ভিআইপি ব্লকে একসাথে ২৫০ জনের নামাজের ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন, অজু, পয়ঃনিষ্কাশন ও সুপেয় পানির সুব্যবস্থা, মেডিকেল টিম ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পৃথক প্রবেশ ও প্রস্থান গেট, নারী মুসল্লির জন্য পৃথক ব্লকে নামাজের ব্যবস্থা ও পৃথক প্রবেশপথ। তিনি আরও জানান, নগরবাসীর কোরবানির পশু কেনাবেচার সুবিধার্থে ০৮টি জায়গায় অস্থায়ী হাট স্থাপন করা হয়েছে। এসব হাটে থাকবে: পরিচ্ছন্নতা কর্মী, পুলিশ ও এটিএম বুথ, পশু স্বাস্থ্য সেবার জন্য চিকিৎসক ও মেডিকেল টিম। হাট শেষ হওয়ার পরপরই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পন্ন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
শাহজাহান বলেন, কোরবানির পশুর বর্জ্য ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের লক্ষ্যে ডিএসসিসির প্রায় ১০ হাজার পরিচ্ছন্নতা কর্মী, ২০৭টি ডাম ট্রাক, ২০০টি মিনি ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন ও যন্ত্রপাতি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আমরা এবার ৩০,০০০ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণের প্রস্তুতি রেখেছি। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে ১ লক্ষ ৪০ হাজার বায়ো-ডিগ্রেডেবল ব্যাগ, ৪০ টন ব্লিচিং পাউডার ও ২২২ গ্যালন স্যাভলন বিতরণ করা হয়েছে। ইদের জামায়াত, কোরবানি হাট ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্যে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা- কর্মচারীর ইদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। কুরবানির হাট ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নগর ভবনের জরুরি পরিচালন কেন্দ্রে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।
নগরবাসীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে নির্ধারিত স্থানে কোরবানি দিতে এবং বর্জ্য যত্রতত্র না ফেলে সহযোগিতা করতে। নগরবাসীকে ইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রশাসক বলেন, “আপনারা সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইদের জামাতে অংশ নিন, আমরা সর্বোচ্চ নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করবো, ইনশাআল্লাহ।”
ব্রিফিংয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমানসহ সকল বিভাগীয় প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।