শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

উন্নয়নশীল দেশে কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবায় বৈশ্বিক সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে এক উচ্চ-স্তরের সাইড-ইভেন্টের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বক্তব্য দেন। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:৩১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের চাবিকাঠি। সবার কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোর এ প্রচেষ্টাকে সহায়তার জন্য উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা বহুপাক্ষিক অর্থায়ন সংস্থাগুলোসহ আমাদের উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি উন্নয়নশীল বিশ্বে কমিউনিটি-ক্লিনিক স্বাস্থ্য সেবায় তাদের সহায়তার হাত প্রসারিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে ‘শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ অব কমিউনিটি ক্লিনিক: ইনোভেটিভ অ্যাপ্রোচ অ্যাচিভিং ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ ইনক্লুসিভ অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি’ শীর্ষক উচ্চ-স্তরের সাইড-ইভেন্টের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে এ কথা বলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন ও সার্বজনীন স্বাস্থ্যের বিষয়ে আমাদের সম্মিলিত কাজকে ত্বরান্বিত করার জন্য এই বছর শপথ নেওয়ার সময় আমরা আপনাদের উপস্থিতিতে উৎসাহিত বোধ করছি।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘গ্লোবাল সাউথের উদীয়মান কণ্ঠস্বর হিসেবে হিসেবে বাংলাদেশ অর্থপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারত্বের সম্ভাব্য উপায় হিসেবে ইস্যুটিতে চ্যাম্পিয়ন হবে। আমাদের দিক থেকে, বাংলাদেশ আগ্রহীদের সঙ্গে উপলব্ধি এবং দক্ষতা বিনিময় করতে প্রস্তুত আছে। সব সুখের মূলে রয়েছে স্বাস্থ্য। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চারদিকে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি মন্ত্রী ও বিশেষজ্ঞদের প্রতি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ-যারা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং এই মুহূর্তে তাদের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি যে, এই সাইড ইভেন্ট স্বাস্থ্য এবং আমাদের জনগণ ও কমিউনিটির কল্যাণে আমাদের অভিন্ন অঙ্গীকারের আরেকটি নিদর্শন হয়ে থাকবে।’

স্বাস্থ্যসেবা তৃণমূলে পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করেন। এগুলো হলো তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় রোধ করতে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করার জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে বিশেষত এনসিডিগুলোর জন্য উন্নত ডিজিটাল স্বাস্থ্য ও ডায়াগনস্টিক পরিষেবা প্রদান করতে সক্ষম করে তোলা এবং ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মতো ক্রমবর্ধমান জলবায়ু-জনিত স্বাস্থ্য সংকট মোকাবেলায় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর সক্ষমতা আরও উন্নত করা। অন্য দুটি হলো মানসিক স্বাস্থ্য এবং স্নায়ুবিক ব্যাধির জন্য স্ক্রিনিং ও চিকিৎসা সেবা উন্নত করা যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারকে সেবা প্রদান করা এবং একটি শক্তিশালী ডেটা-চালিত স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কার্যক্রমের জন্য প্রাথমিক বিল্ডিং ব্লক হিসাবে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ব্যবহার করা যায়।

এ সময় ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) বিষয়ভিত্তিক রাষ্ট্রদূত সায়মা ওয়াজেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সিনিয়র পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক একটি ধারণা যা বাংলাদেশে সময়ের পরীক্ষায় দাঁড়িয়ে গেছে। এটি এখন আমাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এই মডেলটিকে বাকি উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি সর্বোত্তম অনুশীলন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।’

তিনি জানান, জাতিসংঘ এটিকে ‘শেখ হাসিনা উদ্যোগ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় তিনি বিনম্রচিত্তে কৃতজ্ঞতা বোধ করছেন।

প্রধানমন্ত্রী জানান, ১৯৯৬ সালে তিনি যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন, তখন ‘সকলের জন্য স্বাস্থ্য’ সুবিধার উন্নয়নে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ছিল তাদের চালু করা উদ্ভাবনী ধারণাগুলোর মধ্যে একটি।

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা আমাদের জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমার পিতা, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘এখন প্রায় ১৪ হাজার ৫০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে, যা স্বাস্থ্য, পরিবার-পরিকল্পনা এবং পুষ্টি-সম্পর্কিত পরিষেবাগুলোর জন্য ওয়ান-স্টপ সেন্টার হিসাবে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, এগুলো এখন সারা দেশে কাজ করছে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নবজাতক, শিশু এবং মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’

কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর প্রতিটি ছয় হাজার লোককে সেবার আওতায় আনবে বলে আশা করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ক্লিনিকগুলো সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের একটি অনন্য মডেলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, স্থানীয় লোকেরা এর জন্য জমি সরবরাহ করে এবং সরকার পরিচালনার খরচ বহন করে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ)-এর বিষয়ভিত্তিক রাষ্ট্রদূত সায়মা ওয়াজেদ।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে সিন্ট মার্টেনের প্রধানমন্ত্রী সিলভেরিয়া এলফ্রিডা জ্যাকবস জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া এবং সর্বজনীন স্বাস্থ সেবা কভারেজ অর্জনকারী বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

মালদ্বীপের স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সাফিয়া মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, এত শক্তিশালী নারী নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে পেরে তিনি অভিভূত।

তিনি সবার কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার উপায়গুলো সহজ করার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘে নিযুক্ত স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভূমিকা নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও দেখানো হয়।


বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ শ্রমিক নেবে জাপান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ক্রমবর্ধমান শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত এক লাখ শ্রমিক নিয়োগের কথা জানিয়েছে জাপানি কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা।

আজ বৃহস্পতিবার টোকিওতে ‘বাংলাদেশ সেমিনার অন হিউম্যান রিসোর্সেস’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘জাপানে বাংলাদেশিদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজনীয় সব কিছু করবে।’

তিনি বলেন, ‘এটা আমার জন্য সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ও প্রেরণার দিন। এটি শুধু কাজ করার জন্য নয়, বরং জাপানকে জানারও দ্বার উন্মোচন করবে বাংলাদেশের মানুষের জন্য।’

সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টা দুটি সমঝোতা স্মারকের সাক্ষী হন। প্রথমটি বাংলাদেশের ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) ও কাইকম ড্রিম স্ট্রিট (কেডিএস)-এর মধ্যে, যার একটি জাপান-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগ; দ্বিতীয়টি বিএমইটি ও জাপানের ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (জাপানে ৬৫টির বেশি কোম্পানির একটি ফেডারেশন) এবং জেবিবিআরএ (জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি)-র মধ্যে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানটি একটি দ্বার উন্মোচনের প্রতীক।’ তিনি উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের দেশ, যার অর্ধেকই ২৭ বছরের নিচে।

তিনি বলেন, ‘সরকারের কাজ হলো তাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া।’

শিজুওকার কর্মপরিবেশ উন্নয়ন সমবায়ের তত্ত্বাবধায়ক সংস্থার প্রতিনিধি পরিচালক মিতসুরু মাতসুশিতা বলেন, ‘অনেক জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশিদের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছে এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি মেধাবীদের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের প্রতিভা লালন করা আমাদের দায়িত্ব।’

এনবিসিসি চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা স্মরণ করেন যে প্রায় ১৪ বছর আগে অধ্যাপক ইউনূস জাপানে এসেছিলেন এবং ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে নারীদের সহায়তার গল্প বলেছিলেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের ফেডারেশন তরুণ ও দক্ষ শ্রমিকের জন্য বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনাময় উৎস হিসেবে দেখছে। তারা উভয় দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে আমরা এক লাখ বাংলাদেশি শ্রমিককে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।’

ওয়াতামি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট মিকি ওয়াতানাবে জানান, বাংলাদেশে তাদের প্রতিষ্ঠিত একটি স্কুল প্রতিবছর ১৫০০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেয়, এবং তারা এই সংখ্যা ৩০০০-এ উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা গ্রহণকারীরা জাপানের চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারবে।’

জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনি অ্যান্ড স্কিল্ড ওয়ার্কার কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (জেইটিসিও) চেয়ারম্যান হিরোআকি ইয়াগি জাপানের শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনও ভাষা শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে।

জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের (এমএইচএলডব্লিউ) প্রতিমন্ত্রী নিকি হিরোবুমি বলেন, ‘জাপানে জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে এবং সে কারণে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সহায়তা প্রয়োজন হবে।’

তিনি বলেন, ‘এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, জাপানের জন্যও একটি আশাব্যঞ্জক দিক হতে পারে।’

স্বাগত বক্তব্যে জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে শ্রমিক সংকট এক কোটি ১০ লাখ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। বাংলাদেশ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরও দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারে


প্রেমের জেরে স্বামী-স্ত্রী খুন, প্রেমিক আটক 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে প্রেমের জেরে স্বামী-স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, স্ত্রীর প্রেমিক এই জোড়া খুনের সঙ্গে জড়িত। নিহতরা হলেন- পাপ্পু (৩৬) ও তার স্ত্রী দোলন আক্তার দোলা (২৮)।

হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে গাউস (৩৩) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। আটক গাউসের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায়। নিহত দোলা ও পাপ্পুর বাড়ি বরগুনায়।

গতকাল বুধবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মিরপুর-১১ নম্বরের বি ব্লকের ৩৫ নম্বর বাসায় এ ঘটনা ঘটে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে পল্লবী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্তকে আটক ও রক্তমাখা ছুরি জব্দ করে। মরদেহ উদ্ধারের করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আটক যুবক গাউস মিয়া সৌদিপ্রবাসী। তিনি সৌদি আরবে থাকার সময় নিহত দোলার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর তাদের মধ্যে প্রায়ই ফোনে কথা হতো। গাউস মিয়া গত জানুয়ারি মাসে দেশে আসেন। তিনি দোলার বাসার কাছেই বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করেন। পরে বিভিন্ন সময় তার সঙ্গে গাউস মিয়ার দেখা করতেন। কিন্তু তিনি জানতেন না দোলা বিবাহিতা। গাউস মিয়া গতকাল সকালে দোলা ও পাপ্পুকে এক সঙ্গে এক রিকশায় যেতে দেখনে। পরে খোঁজ নিয়ে তিনি জানকে পারেন, দোলার সঙ্গে থাকা ব্যক্তি তার স্বামী। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বাসায় ফিরে যান। পরে বাসা থেকে ছুরি নিয়ে এসে দোলা ও তার স্বামী পাপ্পুকে কুপিয়ে হত্যা করেন।

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পরকীয়ার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। বিস্তারিত তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো হবে।


পারস্পরিক বৈশ্বিক আস্থা হুমকির মুখে: নিক্কেই ফোরামে প্রফেসর ইউনূস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিশ্ব বর্তমানে চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক আস্থা হুমকির মুখে।

তিনি আজ টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে অনুষ্ঠিত ৩০তম নিক্কেই ফোরাম ‘ফিউচার অব এশিয়া’র উদ্বোধনী অধিবেশনের মূল বক্তব্যে এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বৈশ্বিক আস্থা এখন হুমকির মুখে। জাতির মধ্যে, সমাজের অভ্যন্তরে, এমনকি নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও আস্থা হ্রাস পাচ্ছে।’

‘উত্তাল বিশ্বে এশিয়ার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বিশ্ব ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠছে।

ইউনূস বলেন,‘আমরা এক গভীর অনিশ্চিত সময় পার করছি। আমরা এমন একটি বিশ্বকে প্রত্যক্ষ করছি যেখানে শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে, উত্তেজনা বাড়ছে এবং পারস্পরিক সহযোগিতা সবসময় নিশ্চিত থাকছে না।’

অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, এশিয়া ও তার বাইরের বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে এবং শান্তি দিন দিন অধরা হয়ে উঠছে।

‘ইউক্রেন, গাজা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে যুদ্ধ ও মানবসৃষ্ট সংঘাত হাজারো মানুষের জীবন ও জীবিকা ধ্বংস করে দিচ্ছে’, বলেন প্রফেসর ইউনূস।

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ এক নির্মম রূপ নিয়েছে এবং সাম্প্রতিক ভূমিকম্প দেশটির গভীর মানবিক সংকটকে আরও অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সম্প্রতি আমাদের দুই প্রতিবেশীর মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু ব্যয়বহুল যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখজনক যে আমরা কোটি কোটি টাকা যুদ্ধের পেছনে ব্যয় করছি, অথচ লাখ লাখ মানুষ না খেয়ে বা ন্যূনতম চাহিদার জন্য লড়াই করছে।’

অধ্যাপক ইউনূস যুদ্ধবিরতির জন্য উভয় দেশের নেতাদের ধন্যবাদ জানান এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সহাবস্থানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে, অন্যদিকে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও নতুন নতুন নৈতিক প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে।’

প্রফেসর ইউনূস বলেন, বাণিজ্যিক বিধিনিষেধ বেড়ে যাওয়ায় মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থার ভিত্তি চ্যালেঞ্জের মুখে এবং আর্থিক বৈষম্য সমাজে বেড়েই চলেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ায় এমন বিভাজনের কারণে অসন্তোষ ও অস্থিরতা দেখা গেছে, যা শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন ডেকে এনেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশে শাসনব্যবস্থার সাম্প্রতিক পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গত বছর শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে একটি পরিবর্তন ঘটেছে এবং এরপর তাঁর সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা আমাদের জনগণের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে, ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এটি আমাদের ভুলগুলো সংশোধন করার, নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার এবং একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ার সুযোগ।’

বহুমুখী অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, প্রফেসর ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখছে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এবং মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের আবাসস্থল এশিয়া অনিশ্চয়তার কেন্দ্রস্থলে, একই সঙ্গে সম্ভাবনারও কেন্দ্রে।’

‘আমাদের চ্যালেঞ্জগুলো বিশাল, কিন্তু আমাদের সম্মিলিত শক্তিও বিশাল। এ বাস্তবতায়, আমি বিশ্বাস করি এশিয়ার সামনে একটি সুযোগ, এমনকি একটি দায়িত্ব রয়েছে ভিন্ন পথ দেখানোর: শান্তির, সংলাপের, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের। শুধু সংখ্যাগত নয়, মানুষের কল্যাণ, আস্থা ও আশার উন্নয়ন,’ তিনি বলেন।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘আমরা এই চ্যালেঞ্জগুলোর মুখে অসহায় নই। বরং, আমরা ইতিহাসের একটি সন্ধিক্ষণে আছি। আজকের সিদ্ধান্তগুলো নির্ধারণ করবে আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য কেমন পৃথিবী রেখে যাব। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, কেবল সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্যে নয়, বরং সমাধান খুঁজে পেতে।’

তিনি বলেন, ‘এই সমাধানগুলো যেন অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায্য এবং মানবিকতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে।’

প্রফেসর ইউনূস প্রায়ই উল্লেখ করা নিজের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘অর্থ উপার্জন আনন্দের বিষয়। কিন্তু মানুষকে সুখী করা, সেটিই প্রকৃত আনন্দ।’

তিনি বলেন,‘আমাদের মনোযোগ সরাতে হবে, ব্যক্তিগত মুনাফা থেকে সমষ্টিগত কল্যাণে। স্বল্পমেয়াদি অর্জন থেকে দীর্ঘমেয়াদী স্বপ্নের দিকে।’

তিনি বলেন, ‘তাঁর নিজের জীবনের যাত্রায় গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা থেকে শুরু করে দরিদ্র নারীদের ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া এবং সারা বিশ্বে সামাজিক ব্যবসার ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া পর্যন্ত, তিনি একটি বিষয় স্পষ্টভাবে শিখেছেন; মানুষ কষ্ট পাওয়ার জন্য জন্মায়নি।’

‘মানুষ সীমাহীন সম্ভাবনা নিয়ে জন্মায়। আমাদের শুধু তাদের সঠিক সুযোগটি দিতে হবে,’ তিনি বলেন।

‘তিনটি শূন্য’- শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব, শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ - এই তত্ত্ব উপস্থাপন করে ড. ইউনূস বলেন, এটি কোনো স্বপ্ন নয়, বরং একটি দিকনির্দেশনা।

‘যেখানে একটি লক্ষ্যে সরকার, ব্যবসা, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্যক্তি একযোগে কাজ করতে পারে,’ তিনি বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের প্রয়োজন এমন একটি নতুন ধরনের অর্থনীতি, যা প্রতিযোগিতার ওপর নয়, সহানুভূতির ভিত্তিতে গড়ে উঠবে। শুধু ভোগের ওপর নয়, অন্যের কল্যাণ হয় এমন অর্থনীতি হবে। এখানেই আমাদের ভবিষ্যৎ।’

নিক্কেই ফোরাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ফিউচার অব এশিয়া’ একটি আশাবাদের মঞ্চ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নিক্কেই এমন একটি পরিসর তৈরি করেছে যেখানে সংলাপ সমাধানে রূপ নেয়, এবং যেখানে আস্থা কেবল একটি শব্দ নয়, বরং একটি লক্ষ্য—যার দিকে আমরা একসাথে এগিয়ে যাই।’

তিনি বলেন, ‘এশিয়ার ভবিষ্যৎ কেবল অর্থনীতি বা ভূরাজনীতির বিষয় নয়, এটি মানুষের, ভাবনার এবং সাহসের বিষয়।’

ইউনূস বলেন,‘চলুন, আমাদের চারপাশের অস্থিরতা দেখে ভীত না হয়ে এটিকে একটি আহ্বান হিসেবে নিই—নতুন করে ভাবার, পুনর্গঠনের এবং একসাথে জাগরণের আহ্বান।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভয়ের দ্বারা নয়, সম্ভাবনার দ্বারা; শক্তির দ্বারা নয়, উদ্দেশ্যের দ্বারা পরিচালিত হই। চলুন, একটি উত্তম বিশ্বের কল্পনা করতে সাহসী হই। চলুন, একে অপরের প্রতি আস্থা রাখি। চলুন, শুধু প্রয়োজনীয়তার কারণে নয়, বরং আন্তরিক ইচ্ছে থেকে একে অপরকে সহযোগিতা করি।’

তিনি বলেন, ‘এশিয়ার ভবিষ্যৎ এখনো লেখা হয়নি—আমরাই তা একসঙ্গে লিখব।’

প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ ও জাপান একসঙ্গে কাজ করে এশিয়ার ভাগ্য এমনকি বিশ্বের ভাগ্যও পুনর্লিখন করতে পারে।’


পাঁচ দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে আম রপ্তানি শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের মানুষ এখনও ভালোভাবে আম খাওয়ার সুবিধা না পেলেও এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে আম রপ্তানির কার্যক্রম। গতকাল যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, সৌদি আরব, কাতার ও বাহরাইনে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ থেকে আম রপ্তানির কার্যক্রম শুরু হয়। এসব দেশে ১৩ টন আমের চালান পাঠানো হয়েছে। গতকাল প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে আম রপ্তানি উদ্বোধন করেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে আয়োজিত আম রপ্তানির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, আম রপ্তানি বাড়াতে সরকার কাজ করছে। কারণ বিদেশে বাংলাদেশের আমের বিপুল চাহিদা রয়েছে।

উপদেষ্টা এ সময় বলেন, আমের উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়াতে প্রকল্পের মাধ্যমে আম উৎপাদন করা হচ্ছে। আম চাষীদের প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে কৃষি প্রণোদনা দেওয়া হবে। স্বল্প মূল্যে হর্টিকালচার সেন্টার থেকে কৃষকরা উন্নত জাতের আমের চারা পাবেন। প্রণোদনার মাধ্যমে হর্টিকালচার সেন্টারে আমের চারার উৎপাদন বাড়াতে উপদেষ্টা এ সময় নির্দেশ দেন।

কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে সবাইকে আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, কৃষক যাতে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পান সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

দেশে কৃষি জমির পরিমাণ কমলেও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সুবাদে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়েছে। আম চাষের ক্ষেত্রেও উৎপাদন বাড়ানোর প্রযুক্তি ও জাত উন্নয়নে গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জোর দিতে হবে বলে উপদেষ্টা উল্লেখ করেন। আম চাষি ও রপ্তানিকারকগণ বাগানে আমের ব্যাগিং, প্যাকিং, পরিবহন, প্রণোদনাসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানালে উপদেষ্টা বিষয়গুলো সমাধানে কাজ করার আশ্বাস দেন।

কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহমুদুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম উপস্থিত ছিলেন।


ঢাকার বাতাস আজ কানাডা, ফিনল্যান্ডের রাজধানীর চেয়েও স্বাস্থ্যকর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গত কয়েকদিন টানা বৃষ্টির কারণে ঢাকার বাতাসের মান মাঝারি থাকলেও তা ভালোর কাছাকাছি অবস্থান করছিল। তবে আজ ভোর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে সেই বাধা পেরোতে পেরেছে বাংলাদেশের রাজধানী।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ১০টায় আইকিউ এয়ারের তথ্য বলছে, ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ৩৯।

কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ফলে আজ ঢাকার বায়ুমানের তুলনা কেবল বিশ্বের স্বাস্থ্যকর বাতাসের শহরগুলোর সঙ্গে।

৩৯ একিউআই স্কোর নিয়ে ঢাকা আজ অবস্থান করছে দূষিত বাতাসের শহরগুলোর তালিকার ৮০ নম্বরে। এর ফলে আজ সকালে পর্তুগালের রাজধানী লিসবন (৫০), জাপানের টোকিও (৫০), কানাডার মন্ট্রিয়াল (৪৯), ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি (৪৭), ইতালির রোম (৪৭), যুক্তরাষ্ট্রের লেক সল্ট সিটি (৪৭) ও লস অ্যাঞ্জেলেস (৪৩) এবং নেদারল্যান্ডসের রটেরডামের (৪৬) মতো শহরগুলোকে পেছনে ফেলেছে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর অন্যতম ঢাকা।

পরিচ্ছন্নতায় এসব শহরের বেশিরভাগের সুনাম থাকলেও ঢাকাবাসী আজ তাদের বাসিন্দাদের চেয়ে স্বাস্থ্যকর শ্বাস নিচ্ছে।

এই সময়ে মাত্র ৩ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বিশুদ্ধ বায়ুর শহর রাশিয়ার ক্রাসনোইয়ার্স্ক। আর দুদিন আগে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া অস্ট্রেলিয়ার সিডনি রয়েছে এই তালিকার তিনে। সিডনির বায়ুমান এখন ১৩।

অপরদিকে, ২০২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর হিসেবে উঠে এসেছে কুয়েতের রাজধানী কুয়েত সিটির নাম। ১৬৪, ১৫৯ ও ১৫৪ স্কোর নিয়ে তার পরেই রয়েছে যথাক্রমে মিসরের কায়রো, পাকিস্তানের লাহোর ও ভারতের দিল্লি।

কণা দূষণের একিউআই মান ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে ‘মাঝারি’, আর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

একিউআই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।

ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।


অধ্যাপক ইউনূসের ৩০তম নিক্কেই ফোরামে যোগদান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বৃহস্পতিবার ৩০তম নিক্কেই ফোরাম: 'ফিউচার অব এশিয়া'র উদ্বোধনী অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেছেন।

তিনি 'উত্তাল বিশ্বে এশিয়ার চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক সেশনে বক্তব্য প্রদান করবেন।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে অধিক টেকসই এবং ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ গঠনে এশিয়ার দেশসমূহের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত পদক্ষেপের ওপর জোর দেবেন।

নিক্কেই ফোরাম সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে সকালে নিক্কেই ইনকর্পোরেটেডের শীর্ষ নির্বাহীরা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

আজ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত একটি মানবসম্পদ উন্নয়ন সেমিনারে অংশগ্রহণ করবেন। যেখানে ৩০০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারী উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি এই অনুষ্ঠানে বিশেষ ভাষণ প্রদান করবেন, যেখানে জাপানের দক্ষ জনশক্তির চাহিদা পূরণে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনার ওপর আলোকপাত করা হবে।

অধ্যাপক ইউনূস জাইকার প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকোর সঙ্গে একটি বৈঠকেও মিলিত হবেন। এ বৈঠকে বাংলাদেশে চলমান উন্নয়ন সহযোগিতা ও জাইকা অর্থায়িত প্রকল্পসমূহ পর্যালোচনা করা হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রণীত কর্মসূচি অনুযায়ী, তিনি জাপানের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম—নিক্কেই, এনএইচকে, আসাহি শিম্বুন, আসাহি টিভি ও নিপ্পন টিভিকে একান্ত সাক্ষাৎকার দেবেন।

আজ সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা নিক্কেই ফোরামের সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথিদের সম্মানে আয়োজিত এক নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন।


জিলহজের চাঁদ দেখা গেছে, ঈদুল আজহা ৭ জুন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দেশের আকাশে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামী ৭ জুন ঈদুল আজহা পালিত হবে।

আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সভাকক্ষে আরবি ১৪৪৬ সনের জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা কমিটির সভা এমন সিদ্ধান্ত এসেছে।

এতে সভাপতিত্ব করবেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

আজ চাঁদ দেখা দেওয়ায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১৪৪৬ হিজরি সনের জিলহজ মাস গণনা শুরু হবে। এছাড়া সৌদি আরবে মঙ্গলবার জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে।

সে হিসাবে দেশটিতে ১০ জিলহজ আগামী ৬ জুন (শুক্রবার) পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্‌যাপিত হবে। গালফ নিউজের খবরে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ইন্দোনেশিয়া একই দিন ঈদুল আজহা উদ্‌যাপনের ঘোষণা দেয়।


কাল নিক্কেই ফোরামে বক্তব্য দেবেন অধ্যাপক ইউনূস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামীকাল ৩০তম নিক্কেই ফোরাম ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য প্রদান করবেন।

তিনি ‘অসহিষ্ণু বিশ্বে এশিয়ার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে আরও টেকসই এবং ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ গঠনে এশিয়ার দেশসমূহের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত পদক্ষেপের ওপর জোর দেবেন।

আগামীকাল নিক্কেই ফোরামের সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে, নিক্কেই ইনকর্পোরেশনের শীর্ষ নির্বাহীরা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন।

পরে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা টোকিওতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত একটি মানবসম্পদ উন্নয়ন সেমিনারে অংশগ্রহণ করবেন। যেখানে ৩শ’ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারী উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

তিনি এই অনুষ্ঠানে বিশেষ ভাষণ দেবেন। ভাষণে জাপানের দক্ষ জনশক্তির চাহিদা পূরণে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনার ওপর আলোকপাত করা হবে।

অধ্যাপক ইউনূস জাইকার প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকোর সঙ্গে একটি বৈঠকেও মিলিত হবেন। ওই বৈঠকে বাংলাদেশে চলমান উন্নয়ন সহযোগিতা ও জাইকা অর্থায়িত প্রকল্পসমূহ পর্যালোচনা করা হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রণীত কর্মসূচি অনুযায়ী, তিনি জাপানের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম- নিক্কেই, এনএইচকে, আসাহি শিম্বুন, আসাহি টিভি ও নিপ্পন টিভিকে একান্ত সাক্ষাৎকার দেবেন।

আগামীকাল সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা নিক্কেই ফোরামের সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথিদের সম্মানে আয়োজিত এক নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন।


ঈদুল আজহায়  সংবাদপত্রে ঈদের ছুটি ৫ দিন 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে সংবাদপত্র পাঁচদিন বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। নোয়াব জানিয়েছে, ৫ থেকে ৯ জুন সংবাদপত্রে ঈদের ছুটি থাকবে। এ কারণে ৬ থেকে ১০ জুন সংবাদপত্র বন্ধ থাকবে।

বুধবার নোয়াব সভাপতি এ. কে. আজাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নোয়াবের নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫ থেকে ৯ জুন ঈদের ছুটি পালন করা হবে। তাই ৬ থেকে ১০ জুন কোনো সংবাদপত্র প্রকাশিত হবে না।


টোকিওতে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী

আপডেটেড ২৮ মে, ২০২৫ ১৭:০৪
বাসস

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগের (জেআইপিএফএল) সভাপতি তারো আসো আজ বুধবার টোকিও’র ইম্পেরিয়াল হোটেলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা চার দিনের সরকারি সফরে আজ জাপান পৌঁছান। সফরকালে তিনি নিক্কেই ফোরামের ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন।

আগামী ৩১ মে প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।


‘ট্রেজার গান’ দেখতে চাওয়ায় মাদক কারবারিদের হাতে খুন হন সাম্য: ডিবি

আপডেটেড ২৮ মে, ২০২৫ ১৪:১৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খাবার খেতে গিয়ে মাদক কারবারিদের কাছে ট্রেজার গান (ইলেক্ট্রিক শক দেওয়ার মেশিন) দেখতে পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য। সেই ট্রেজার গান দেখতে চাওয়া নিয়ে তাৎক্ষণিক ধস্তাধস্তিতে মাদক কারবারিদের সুইস গিয়ারের ছুরিকাঘাতে নিহত হন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এ-সংক্রান্ত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী ও ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।

এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে তিনজনকে ঘটনার দিন রাতে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ এবং পরে আরো আটজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির হাতে গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. রাব্বি ওরফে কবুতর রাব্বি (২৫), মেহেদী হাসান (২৫), নাহিদ হাসান পাপেল (২১), মো. রিপন (২০), মো. সোহাগ (৩৩), মো. রবিন (১৮), মো. হৃদয় ইসলাম (২৪) ও সুজন সরকার (২৭)।

এর আগে গত ১৩ মে ঘটনার রাতেই শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- তামিম হাওলাদার (৩০), সম্রাট মল্লিক (২৮) ও পলাশ সরদার (৩০)।

এ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের মধ্যে দুই জন ইতোমধ্যে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।

ব্রিফিংয়ে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত বলেন, গত ১৩ মে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কতিপয় দুর্বৃত্তদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। এবং ঘটনার রাতেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ, প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনাস্থলে সরাসরি উপস্থিত ও হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারীদের শনাক্ত করা হয়। আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে কক্সবাজার, মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন জায়গায় ডিবির একাধিক দল ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে এই সংক্রান্ত আরো ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন ১৩ মে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে সাম্য এবং তার দুই বন্ধু একটি মোটরসাইকেলে করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যায়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মূলত মাদক ব্যবসার একটি চক্র আছে। মেহেদী সেই চক্রের মূল হোতা। তার গ্রুপের একজন রাব্বির হাতে একটি ট্রেজার গান ছিল। সেই ট্রেজার গানটি দেখে সাম্য সেটি কি জানতে চায়। জানতে চাওয়ার একটি পর্যায়ে তাদের মধ্যে যখন ধস্তাধস্তি হয়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীদের অন্য যারা সেখানে ছিল তারা ঘটনাস্থলে আসে এবং ধস্তাধস্তির একটি পর্যায়ে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।

তিনি আরো বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে আমরা এখন পর্যন্ত জানতে পেরেছি, ওই মাদক কারবারিদের একজন সদস্য রাব্বি তাৎক্ষণিকভাবে সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনেক ফুডকার্ট (খাবার গাড়ি) ছিল। সেখানে অনেক রাত পর্যন্ত খাবার পাওয়া যেত। আমরা এখন পর্যন্ত জানতে পেরেছি, সাম্য এবং তার দুই সহপাঠী খাবার খেতে সেখানে যায়। খাবারের জন্য গেলে ট্রেজার গানটি দেখে সাম্যের সন্দেহ হয়। জিনিসটা কি সেটি দেখার জন্য এবং সেটি নিতে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাটি ঘটে।

তিনি আরও বলেন, তদন্ত কার্যক্রম এখনো চলমান আছে। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে এখন পর্যন্ত আমরা পেয়েছি। এর নেপথ্যে আর কোনো ঘটনা আছে কিনা, অন্য কোনো বিষয় আছে কি না সেটি নিবিড়ভাবে দেখা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা তদন্ত করতে গিয়ে দেখেছি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক কারবারিদের তিনটি গ্রুপ রয়েছে। একটি গ্রুপ তিন নেতার মাজারের ওখানে, একটি মাঝখানে, একটি ছবির হাটে। তিনটি গ্রুপই মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে। একটি গ্রুপের দায়িত্বে আছে মেহেদী। যে ৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছে সবাই মেহেদীর গ্রুপের। সে ওই গ্রুপের দলনেতা। মেহেদী মূলত সুইস গিয়ারগুলো সাপ্লাই দিয়ে থাকে। ঘটনার দিন একটি কালো ব্যাগে করে মেহেদী সুইস গিয়ারগুলো আনে এবং তাৎক্ষণিকভাবে বাকিদের কাছে সরবরাহ করে।

এই হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই ঘটনার মূল আসামি আমাদের রিমান্ডে এলে আমরা হত্যাকাণ্ডের মূল মোটিভটি বের করার চেষ্টা করব।


কমেছে জিডিপি, বেড়েছে মাথাপিছু আয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমলেও বেড়েছে মাথাপিছু আয়। বিবিএসের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায় ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশে, যা আগের অর্থবছর ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ছিল ৪ দশমিক ২২ শতাংশ।

মঙ্গলবার (২৭ মে) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এই প্রাথমিক হিসাবের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।

এর আগের অর্থবছর ২০২২–২৩ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। জিডিপি (সামগ্রিক দেশজ উৎপাদন) মানে হলো নির্দিষ্ট সময়ে দেশের ভেতরে উৎপাদিত সকল পণ্য ও সেবার চূড়ান্ত মূল্য।

বিবিএস জানায়, দেশের মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৮২০ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আগের অর্থবছরে এ আয় ছিল ২ হাজার ৭৩৮ ডলার। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে ৮২ ডলার আয় বেড়েছে।

এর আগে ২০২১–২২ অর্থবছরে দেশের সর্বোচ্চ মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৯৩ ডলার। তবে ডলার বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ার কারণে পরবর্তী দুই অর্থবছরে এই আয় কমে যায়। এরপর ২০২২–২৩ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৪৯ ডলারে। সর্বশেষ ২০২৩–২৪ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় আরও কমে হয় ২ হাজার ৭৩৮ ডলার।

মূলত ডলার বিনিময় হার বৃদ্ধির কারণে বিবিএসের গণনায় মাথাপিছু আয়ের হিসাবে পার্থক্য দেখা যায়। চলতি অর্থবছরে প্রতি ডলারের গড় বিনিময় হার আনুমানিক ধরা হয়েছে ১২০ দশমিক ২৯ টাকা, যেখানে আগের অর্থবছরে এই হার ছিল ১১১ দশমিক ০৬ টাকা।

এই অর্থবছরে টাকার হিসাবে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২২১ টাকা, যা গত অর্থবছরের ৩ লাখ ৪ হাজার ১০২ টাকা থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

মাথাপিছু আয় যেভাবে গণনা করা হয়

মাথাপিছু আয় বলতে কোনো ব্যক্তি এককভাবে যত টাকা আয় করেছেন তা নয়। এটি হলো দেশের মোট জাতীয় আয় (দেশীয় আয় + প্রবাসী আয়) কে জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে যে গড় আয় পাওয়া যায়, সেটিই মাথাপিছু আয় হিসেবে ধরা হয়।


সরকারি যাকাত তহবিল দারিদ্র্য বিমোচনে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখছে: ধর্ম উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সরকারি যাকাত তহবিল দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তহবিলটি শক্তিশালী করলেই দারিদ্র্য নিরসনে কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে সাতকানিয়ার বাবুনগর জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে স্থানীয় দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে সরকারি যাকাত তহবিলের অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ধর্ম উপদেষ্টা যাকাত গ্রহীতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, সরকারি যাকাত তহবিল থেকে প্রাপ্ত অর্থ পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগাতে হবে। নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আয়বর্ধক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে হবে।

তিনি গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালন, মৎস্য চাষ, শাকসবজি উৎপাদন ও কুটির শিল্প স্থাপনসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কার্যক্রম শুরু করার পরামর্শ দেন, যা দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক হবে।

সরকারি যাকাত তহবিলকে শক্তিশালী করার জন্য যাকাত প্রদান বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ড. খালিদ বলেন, তহবিল শক্তিশালী হলে দেশের দরিদ্র জনগণের জীবনমান পরিবর্তিত হবে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। তিনি সমাজের বিত্তবানদের দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান।

এ সময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক সরদার সরোয়ার আলম ও সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সরকারি যাকাত তহবিল থেকে মোট ৬৪ জন দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে ছয় লাখ পনের হাজার টাকার চেক বিতরণ করা হয়।

পরে ধর্ম উপদেষ্টা নূরে হাবিব ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনায় দুই শতাধিক গরীব-অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।


banner close