শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫
১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

তৃতীয় লিঙ্গের ছদ্মবেশে মাদক বিক্রি, ২ রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার

ছবি: দৈনিক বাংলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৮:১১

ঢাকার সাভার এলাকা থেকে তৃতীয় লিঙ্গের ছদ্মবেশী দুই রোহিঙ্গা মাদক বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাট্যালিয়ন (র‌্যাব)। শুক্রবার সকালে সাভারের নিউমার্কেট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০ হাজার ৩০০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- রফিক ওরফে কাজল হিজড়া (১৮), মামুনুর ওরফে পরিমনি হিজড়া (২৩)।

র‌্যাব-৪ এর সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মাজহারুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে জানান, গ্রেপ্তার দুজই রোহিঙ্গা। তারা দীর্ঘদিন ধরে তৃতীয় লিঙ্গের ছদ্মবেশ ধারণ করে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ইয়াবার এনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছিলেন। তারা তৃতীয় লিঙ্গের মতো স্পর্শকাতর ছদ্মবেশ ধারণ করে ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিত। পরে সেসব ইয়াবার ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করতেন। তাদের একজন কাজল এবং পরিমনি হিজড়া নামে পরিচয় দিতেন। এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান মাজহারুল ইসলাম।

বিষয়:

১৫ শতাংশ শুল্ক কমানো অন্তর্বর্তী সরকারের আরেকটি সফলতা : আসিফ নজরুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ আরোপ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। যা অন্তর্বর্তী সরকারের আরেকটি সফলতা।

তিনি আজ শুক্রবার তার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন।

ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ। অ্যানাদার সাকসেস অফ ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট’।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ আরোপ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। শুল্ক নিয়ে হোয়াইট হাউসের এক ঘোষণায় এই পরিমাণের কথা উল্লেখ করা হয়।


"জুলাই আর্ট ওয়ার্ক" এর উদ্বোধন: দেয়ালের ভাষায় ইতিহাস, স্মৃতি ও প্রতিরোধের চিত্রায়ণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার মেট্রোরেল পিলারের অঙ্কিত গ্রাফিতি “জুলাই আর্ট ওয়ার্কের” আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

আজ রাজধানীর আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, "এই গ্রাফিতিগুলো আমাদেরকে আওয়ামী স্বৈরশাসনের ভয়াল দিনগুলো এবং জনগণের সাহসী প্রতিরোধের ইতিহাস বারবার স্মরণ করিয়ে দেবে। ভবিষ্যতে এ দেশে যেন আর কোনো স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে লক্ষ্যে এসব গ্রাফিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।"

সভাপতির বক্তব্যে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন,
"ফ্যাসিবাদ ইস্যুতে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার বিষয়টি মাথায় রেখেই এই গ্রাফিতি কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের উত্থান এবং তার পতনের ইতিহাস তুলে ধরাই ছিল এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। গত একবছরে অনেক রং ফিকে হয়ে গেলেও, জুলাইয়ের চেতনা আজও অমলিন।"

"দেয়ালের ভাষা: স্মৃতি, প্রতিরোধ ও জনতার ইতিহাস"—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অঙ্কিত জুলাই আর্ট ওয়ার্কে ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রতিরোধের এক শক্তিশালী চিত্রমালা উপস্থাপন করা হয়েছে।

দেয়ালচিত্রগুলোর মাধ্যমে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক দমন-পীড়নের ভয়াবহ অধ্যায়, এবং ২০২৪ সালের ৩৬ দিনের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নানা দৃশ্য—মিছিল, সংঘর্ষ, গ্রেপ্তার, আত্মত্যাগ—উপস্থাপিত হয়েছে।

গুম, হত্যা, ভোট ডাকাতি, শিক্ষাব্যবস্থার ধ্বংস ও নাগরিক অধিকারের হরণ—এসব বাস্তবতার প্রতিবিম্ব যেন ফুটে উঠেছে রং ও রেখার প্রতিটি আঁচড়ে। শহিদ আবরার, ফেলানির মুখাবয়ব আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, স্মৃতি কেবল আবেগ নয়—এটি রাজনৈতিক সংগ্রামের অস্ত্র।

এই গ্রাফিতি কার্যক্রমকে বিশ্বব্যাপী জনগণের প্রতিরোধশিল্পের ধারাবাহিকতায় একটি আধুনিক সংযোজন হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

দক্ষিণ আমেরিকার স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলন, ফিলিস্তিনের দেওয়ালে প্রতিবাদচিত্র, যুক্তরাষ্ট্রে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার, কিংবা মায়ানমারে জান্তা-বিরোধী বিক্ষোভের মতো—এই দেয়ালচিত্রও হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের জনগণের প্রতিরোধের প্রতীক।

উল্লেখ্য, ঢাকার মেট্রোরেল পিলারগুলো এতদিন ছিল উন্নয়নের প্রতীক; আজ তা হয়ে উঠেছে বিকল্প ইতিহাসের ক্যানভাস।

ছাত্রজনতা ও নাগরিক সমাজ নিজেদের শিল্পী, লেখক ও ইতিহাস-নির্মাতা হিসেবে প্রকাশ করেছে এই দেয়ালে। এটি কেবল গ্রাফিতির প্রদর্শনী নয়—একটি সামাজিক, রাজনৈতিক এবং নান্দনিক আন্দোলনের প্রামাণ্য দলিল।


যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সুস্পষ্ট কূটনৈতিক বিজয়: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুগান্তকারী বাণিজ্য চুক্তি সই উপলক্ষে বাংলাদেশের শুল্ক আলোচক দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এই চুক্তিকে একটি ‘সুস্পষ্ট কূটনৈতিক বিজয়’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।

শুল্ক নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে টানা তিন দিন আলোচনা করে। এরপর বাংলাদেশের ওপর আরোপিত শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করে যুক্তরাষ্ট্র।

এই নতুন শুল্ক ঘোষণার পর শুক্রবার (১ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে শুল্ক আলোচক দলকে অভিনন্দন অধ্যাপক ইউনূস।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি যুগান্তকারী বাণিজ্য চুক্তি করায় বাংলাদেশের শুল্ক নিয়ে আলোচকদের আমরা গর্বের সঙ্গে অভিনন্দন জানাই। এটি একটি সুস্পষ্ট কূটনৈতিক বিজয়।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রত্যাশিত হারের চেয়ে ১৭ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশ শুল্কহার নির্ধারণের মাধ্যমে আমাদের আলোচকরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা ও অগ্রগতিতে অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং অবিচল প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল। আজকের সাফল্য আমাদের জাতির দৃঢ়তা ও শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির একটি শক্তিশালী প্রমাণ।

তিনি জানান, ফেব্রুয়ারি থেকে আলোচকরা নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন এবং শুল্ক, অশুল্ক ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক জটিল আলোচনার মধ্য দিয়ে সফলভাবে পথ অতিক্রম করেছেন।

প্রেস সচিব শফিকুল আলামের মাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে আমাদের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অক্ষুণ্ন থাকল। সেই সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা বাজারে প্রবেশাধিকার আরও বাড়ল এবং আমাদের জাতীয় স্বার্থও সুরক্ষিত হলো।

এই অর্জন শুধু বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থানকেই শক্তিশালী করেনি বরং আরও বেশি সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে যা ভবিষ্যতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি ও স্থায়ী সমৃদ্ধির পথ তৈরি করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।


কিছুদিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা: আইন উপদেষ্টা

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংস্কার ও সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংস্কার ও সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ভোট দিতে সবাই পারবেন। আমাদের হেন উদ্যোগ নেই, যা নেওয়া হচ্ছে না। ভোটাধিকারের কথা বলছেন? ক্লাসে যখন যেতাম। জিজ্ঞেস করতাম ছাত্রদের- তোমাদের মধ্যে কে কে ভোট দিয়েছো? তারা হাসাহাসি শুরু করত। কেউ কেউ বলত স্যার ভোট দিয়েছি, তবে দশ বারোটা। ৯০ শতাংশ বলতো তারা ভোট দেয়নি। যা হোক আমাদের সেই দুঃখ ঘুচবে। আমরা ১৮ বছর ধরে ভোট দিতে পারিনি।

কবে আগামী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে— জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের সময় তো... জাস্ট ওয়েট করেন, কিছুদিনের মধ্যে ঘোষণা শুনবেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই- এর সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করি। ২০০৮-এর নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ আছে। আপনারা যারা সাংবাদিকরা আছেন, কাজ করেন, অনেক ভয়াবহ তথ্য পাবেন ২০০৮-এর নির্বাচন নিয়ে।

উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনী কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন দেখবে। আমি শুধু আমাদের সরকারের নিয়তের কথা আপনাদেরকে বলতে পারি। আমাদের নিয়ত আছে বাংলাদেশের ইতিহাসে বেস্ট ইলেকশন দেওয়ার, এটা স্যার (প্রধান উপদেষ্টা) আমাদের সবসময় বলেন।

এদিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত এক বছরে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আইন সংস্কার হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন-১৯৭৩ সংশোধন , সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ-২০২৫ প্রণয়ন, দেওয়ানি ও ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন, আইনগত সহায়তা প্রদান আইন সংশোধন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে যুগোপযোগী বিধান যুক্ত করা হয়েছে। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ,২০২৫ প্রণয়ন করে পূর্বের সাইবার নিরাপত্তা আইনের নিপীড়নমূলক ধারাগুলো এবং এসবের অধীনে দায়ের হওয়া মামলাগুলো বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বিধিমালা ও বিবাহ নিবন্ধন বিধিমালা সংশোধন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।

উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার হিসেবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের পদ সৃজনের ক্ষমতা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উপর ন্যস্ত করে ‘বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস গঠন বিধিমালা, ২০২৫’ এবং জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের সরকারের আইন ও বিচার বিভাগে পদায়নের সুনির্দিষ্ট বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের সকল আদালত প্রাঙ্গণে তথ্য ও সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। আদালতে দক্ষ কর্মচারী নিয়োগের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগের কার্যক্রম চালু করার জন্য নীতিমালা প্রস্তুত হয়েছে।

দুর্নীতি প্রতিরোধে অধস্তন আদালতের বিচারকদের সম্পত্তির হিসাব গ্রহণ এবং সংগৃহীত হিসাবের নথিসমূহ পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, সাব-রেজিস্ট্রারদের জন্য ব্যক্তিগত তথ্য বিবরণী তৈরি করা হয়েছে। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার উপর সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধের প্রসিকিউশন কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে।

বিচার কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন করার অনেক উদাহরণ দিয়ে ড. আসিফ নজরুল বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের Attestation সেবাকে শতভাগ অনলাইন প্রক্রিয়ায় রূপান্তর করা হয়েছে। বিচারপ্রার্থী জনগণের জামিনপ্রাপ্তি সহজীকরণের লক্ষ্যে অনলাইনে বেইলবন্ড জমা দেওয়ার নিমিত্ত প্রথমবারের মতো সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হয়েছে। শিগগিরই পরীক্ষামূলকভাবে সফটওয়্যারটির ব্যবহার শুরু হবে।

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলার প্রত্যাহারের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, জেলা পর্যায়ে গঠিত কমিটি এবং আইন ও বিচার বিভাগ কর্তৃক এজাহার, চার্জশিটসহ বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনার পর ১৫ হাজারেরও বেশি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া সাইবার আইনের অধীনে ৪০৮ টি স্পিচ অফেন্স সংক্রান্ত মামলা এবং জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে দায়ের করা ৭৫২টি হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসব মামলা প্রত্যাহারের কারণে কয়েক লক্ষ্য রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ও স্বাধীন মতের মানুষ হয়রানি থেকে রেহাই পেয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, বর্তমান সরকারের কার্যকালে আইন মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমে লক্ষণীয় গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন- গত এক বছরে মন্ত্রী পর্যায়ে নিষ্পত্তিকৃত নথির সংখ্যা ১২৮৩টি, বিগত সরকারের একই সময়ে ৮৩৪ টি নথি নিষ্পত্তি হয়েছিলো। গত এক বছরে আইন মন্ত্রণালয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগসহ অন্যান্য দপ্তরে ৩৯১টি বিষয়ে আইনি মতামত প্রদান করেছে (গত সরকারের আমলে ছিল ১৮০টি)। এ সময়ে সনদ, এফিডেভিট, দলিলসহ ৩৬ ধরনের মোট ১,৫৯,৫৪৪টি ডকুমেন্ট সত্যায়ন হয়েছে যা আগের তুলনায় দ্বিগুণ।

নতুন দায়িত্ব হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশন, গুম সংক্রান্ত অপরাধ তদন্ত কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে আইন মন্ত্রণালয় থেকে সাচিবিক সহায়তা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো বিধিমালা ও প্রবিধানগুলোকে কোডিফাই করার কাজ শুরু হয়েছে।

সারাদেশের বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে ৪৮৮৯ জন সরকারি আইন কর্মকর্তা এবং অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে ২৭৪ জন এটর্নিকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারক ও প্রসিকিউটর নিয়োগ করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে পাঁচজন বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগে ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগে সাচিবিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।


শেখ হাসিনার দেশত্যাগের এক বছর পরও মানবাধিকার সংকট প্রকট: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হাজার হাজার মানুষ গত বছর রাজপথে নেমে বাংলাদেশের কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করেছিল। এরপর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এক বছর ধরে ক্ষমতায় আছে অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার রক্ষার চ্যালেঞ্জিং কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হচ্ছে। গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

এইচআরডব্লিউর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে যে ভীতি, দমন-পীড়ন ও গুমের মতো ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটত, তার কিছুটা অবসান ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার কথিত রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনে নির্বিচার আটক করছে। মানবাধিকার সুরক্ষায় তারা এখনো কাঠামোগত সংস্কার আনতে পারেনি।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, মানবাধিকারভিত্তিক গণতন্ত্র গড়ার আশায় এক বছর আগে যারা শেখ হাসিনার নিপীড়নমূলক শাসনের বিরুদ্ধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের সেই আশা এখনো পূরণ হয়নি।

মীনাক্ষী গাঙ্গুলি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যেন এক জায়গায় আটকে আছে। একদিকে সংস্কারবিহীন নিরাপত্তা বাহিনী, অন্যদিকে মাঝেমধ্যে সহিংস ধর্মীয় কট্টরপন্থি এবং এমন কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে সামলাতে হচ্ছে, যারা বাংলাদেশিদের অধিকার রক্ষার চেয়ে শেখ হাসিনার সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে বেশি আগ্রহী।

২০২৪ সালে গঠিত ১১টি সংস্কার কমিশন, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় ও দেশি-বিদেশি মানবাধিকারকর্মীরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে যেসব বিস্তারিত সুপারিশ দিয়েছে, যা এখনো বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে।

এদিকে সরকার বিপুল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। যেমন উচ্ছৃঙ্খল জনতার সহিংসতা (মব ভায়োলেন্স), রাজনৈতিক সহিংসতা এবং রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য চরমপন্থি গোষ্ঠীর বিশেষ করে নারী অধিকার, সমকামী, উভকামী ও ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিবিরোধী ধর্মীয় কট্টরপন্থিদের হাতে সাংবাদিকদের হয়রানি উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলছে। ২৬ ও ২৭ জুলাই রংপুর জেলায় হিন্দু সংখ্যালঘুদের অন্তত ১৪টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত করেছে একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা। আর পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে।

টানা পাঁচ সপ্তাহের বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। জাতিসংঘের তথ্যমতে, পাঁচ সপ্তাহের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হন। নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। কিন্তু এখনো হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, যা নিরাপত্তা খাতে জরুরি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে।

গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা বাহিনী ও বর্তমানে নিষিদ্ধ (কার্যক্রম) আওয়ামী লীগের সমর্থকদের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন। গত বছরের গণআন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে গঠিত হয় জাতীয় নাগরিক পার্টি।

অতীতের দলীয় পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের পুনরাবৃত্তির মতোই পুলিশ পরে নির্বিচার শত শত কথিত আওয়ামী লীগ সমর্থককে আটক করে। ৮ হাজার ৪০০ জনের বিরুদ্ধে ১০টি হত্যা মামলা করে। এই মামলার আসামিদের বেশির ভাগই অজ্ঞাত ব্যক্তি। তবে সরকার ‘গণগ্রেপ্তারের’ অভিযোগ নাকচ করেছে।

২০২৪ সালের ৬ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুলিশ ৯২ হাজার ৪৮৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, অধিকাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ হত্যার। ১ হাজার ১৭০টির বেশি মামলায় প্রায় ৪০০ সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতা-কর্মীর নামোল্লেখ করা হয়েছে। এসব মামলায় আরও শত শত অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে সরবরাহ করা তথ্যে দেখা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ২০২৪ সালের আন্দোলনকালের হত্যা বা হত্যাচেষ্টার অন্তত ৬৮টি মামলার আসামি হয়ে গত অক্টোবর থেকে কারাগারে আছেন। তবে এসব ঘটনার মধ্যে ৩৬টি ঘটেছিল এমন সময়ে, যখন তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। অন্যান্য অনেক ঘটনার মতো এখানেও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়নি। অন্যান্য বড় রাজনৈতিক মামলায় আটক ব্যক্তিরাও অভিযোগ করছেন, তাদের ভিত্তিহীন অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের চিকিৎসাসেবা ও জামিন থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

প্রথম মামলার বিচার ৩ আগস্ট শুরু হওয়ার কথা। যেখানে অভিযুক্ত তিনজনের একজন শেখ হাসিনা, যার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে। তবে অনেক মামলার বিচার শুরুর কোনো দৃশ্যমান সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। আর যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।

দমনমূলক বিশেষ ক্ষমতা আইনের অধীনে শত শত মানুষকে আটক করা হয়ে থাকতে পারে। এই আইনে অভিযোগ ছাড়াই যে কাউকে আটক করা যায়। আগের সরকার ভিন্নমত দমনে এই আইন ব্যবহার করেছিল। এ ছাড়া গত ফেব্রুয়ারিতে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামের অভিযানে ৮ হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষকে ধরপাকড় করা হয় বলে জানা গেছে, যাঁদের অনেকে আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে অভিযোগ।

গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে অনেকেই নির্বিচার এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আটক করা হয়েছে। অন্যদিকে শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর যেসব সদস্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের খুব কমসংখ্যক ব্যক্তির বিরুদ্ধেই সরকার মামলা করেছে।

জুলাই মাসে বাংলাদেশ পুলিশের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, গত বছরের জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত প্রাণঘাতী সহিংসতার ঘটনায় মাত্র ৬০ পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বছরের ওই সহিংসতার ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য কুখ্যাত র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ (র‍্যাব) পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অনেকগুলো ইউনিট অংশ নিয়েছিল।

অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট শেখ হাসিনার আমলে সংঘটিত গুমের ঘটনা তদন্তে একটি কমিশন গঠন করে। একদিন পর ২৯ আগস্ট ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব অল পারসন্স ফ্রম এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স বা গুম থেকে প্রত্যেক মানুষের সুরক্ষা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সনদ আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করে বাংলাদেশ। গুম কমিশন এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০টির বেশি অভিযোগ পেয়েছে। তারা এরই মধ্যে দুটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আরেকটি আগামী ডিসেম্বরে প্রকাশের কথা রয়েছে।

কমিশনের সদস্যরা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বলেছেন, তারা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অনেক প্রমাণ নষ্ট করেছে, সহযোগিতা কমিয়ে দিয়েছে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে বাধা দিচ্ছে। অভিযুক্ত সদস্যদের অনেকেই এখনো বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থায় কর্মরত রয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।

ইউনূস সরকার পুলিশ, বিচার বিভাগ, নারী অধিকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আইন ও সংবিধান সংস্কারের জন্য ১১টি কমিশন গঠন করেছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার সেগুলো গ্রহণ করেনি। রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছার জন্য সংস্কার কর্মসূচি উল্লেখযোগ্যভাবে সংকুচিত করা হলেও সেই চেষ্টা বেশ ধীর হয়ে পড়েছে।

সব ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের সম্পূর্ণ, সমান, অর্থবহ এবং নিরাপদ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। বিষয়টি নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারসহ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১৩২৫ নম্বর প্রস্তাবের সঙ্গে সংগতি রেখে করার কথা বলা হয়েছে।

নিজেদের সময়কালের পরেও যাতে মানবাধিকার রক্ষায় সহায়ক হয়, সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বিচার আটক বন্ধ করা উচিত। বিশেষ করে, বিচার শুরু হওয়ার আগেই আটক রাখা যে নিয়ম নয়, বরং ব্যতিক্রম—এই বিষয়টি তাদের নিশ্চিত করা উচিত। নিরাপত্তা বাহিনীর যেসব সদস্য গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত, তাদের বিচারকে সমর্থন করার মধ্য দিয়ে দায়মুক্তি দেওয়া বন্ধ করা উচিত।

নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। নিরাপত্তা খাতের সংস্কার শুরু করা উচিত, যার মধ্যে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বিলুপ্ত করা অন্যতম। নারীর অধিকার ও নারীদের পূর্ণ প্রতিনিধিত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, বিদেশি সরকার ও জাতিসংঘকে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করা উচিত। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে এটা করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর উচিত বাংলাদেশ ত্যাগ করা ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিচার করা। প্রয়োজনে এক্ষেত্রে সর্বজনীন বিচারব্যবস্থাকে (ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন) কাজে লাগানো যেতে পারে। তাদের (বিদেশি সরকার ও জাতিসংঘকে) স্পষ্ট করতে হবে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ওপরই জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা অভিযানে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ নির্ভর করবে।

এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ‘ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার যে বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে সে বিষয়ে কারও কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে সত্যিকারের ও টেকসই পরিবর্তন আনতে হলে এখন অনেক কাজ করা দরকার।’

মীনাক্ষী বলেন, যেসব রাজনৈতিক দলের সদস্য অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেন, তাদের উচিত এ ধরনের অপরাধ যেন আর কখনো না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে সংস্কারের পক্ষে দাঁড়ানো এবং সবার অধিকার রক্ষায় সমর্থন জানানো।


প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের ৩৬তম সভা অনুষ্ঠিত

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের ৩৬তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি : পিআইডি
আপডেটেড ৩১ জুলাই, ২০২৫ ১৭:১৭
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের ৩৬তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়, সভায় ‘স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এছাড়া, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং-সাপেক্ষে ‘স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে।


আজকের মধ্যে আলোচনা শেষ করতে চায় কমিশন : অধ্যাপক আলী রীয়াজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জুলাই সনদ প্রণয়নের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আজই রাষ্ট্রসংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আলোচনা শেষ করতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আজ একথা জানিয়েছেন।

আজ সকাল সাড়ে এগারোটা থেকে শুরু হওয়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ২৩তম দিনের আলোচনার শুরুতে সূচনা বক্তব্যে তিনি একথা জানান।

তিনি বলেন, আজকের মধ্যেই অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিষ্পত্তির মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শেষ করা হবে। এরপর রাষ্ট্র সংস্কারের সনদের চূড়ান্ত খসড়া দলগুলোকে পাঠানো হবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত হবে বহুল আকাঙ্ক্ষিত জুলাই সনদ।

ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় ৬টি কমিশনের সুপারিশগুলোর সারাংশগুলোর মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনায় ঐকমত্য হয়েছে। ১৩টি বিষয়ে নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্য হয়েছে এবং বাকি অমীমাংসিত আলোচনাগুলো নিষ্পত্তির মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শেষ হবে আজ।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে ইতোমধ্যেই জুলাই সনদের পটভূমি খসড়া দেয়া হয়েছে। সেগুলোর ওপর দলগুলোর দেয়া সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে কমিশন।

তিনি জানান, দলগুলোর পারস্পারিক আলোচনার মধ্যদিয়ে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান হতে পারে বলেও আশা করা যাচ্ছে।

এরপর চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য তাদের কাছে পাঠানো হবে। সেখানে দলগুলো স্বাক্ষর করবে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আজকের আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে-উচ্চকক্ষ গঠন ও নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্রের মূলনীতি, সরকারি কর্ম কমিশন, দুদক, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান ও নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করছেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজ এ আলোচনায় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া উপস্থিত রয়েছেন।


সিজিএসের প্রতিবেদন জুন মাসে ৩২৪টি মিথ্যা তথ্য শনাক্ত 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) ২০২৫ সালের জুন মাসে ৩২৪টি যাচাইকৃত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের ঘটনা শনাক্ত করেছে, যেখানে দেখা গেছে বাংলাদেশে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্যের ব্যবহার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।

গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিজিএস এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের জুনে সিজিএস ৩২৪টি যাচাইকৃত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের ঘটনা শনাক্ত করেছে। যার মধ্যে রাজনৈতিক ভুয়া তথ্যের সংখ্যা ২৫৩টি, যা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে জনমতকে প্রভাবিত করার একটি স্পষ্ট প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।

এছাড়া বিনোদনসংক্রান্ত বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের সংখ্যা ছিল ২৪টি। এরপর ধর্মীয় (১৯টি), অনলাইন হোক্স (১৮টি), কূটনৈতিক (৫টি), অর্থনৈতিক (৪টি) এবং পরিবেশসংক্রান্ত (একটি) ভুয়া তথ্য ছিল।

প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্যের মূল লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছেন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নেতারাও, যে সংখ্যা মোট ১২৪টি। মিথ্যা তথ্যের আরও লক্ষ্য ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (৪৮), সেলিব্রিটি (২৫), ধর্মীয়সংক্রান্ত (১৬), রাজনৈতিক দল (১৩), সরকারি প্রতিষ্ঠান (১৬), অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (৬), বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (২) এবং ধর্মীয় ব্যক্তিকেন্দ্রিক (১)।

তবে, ৭৩টি ঘটনা অনির্দিষ্ট হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে, যেখানে ভুয়া তথ্য কোনো নির্দিষ্ট কাউকে লক্ষ্য করে করা হয়নি বরং সামগ্রিকভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সামাজিক মাধ্যম ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যেখানে ৩২৪টি ঘটনার মধ্যে ৩১৬টি ঘটেছে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, থ্রেডস এবং এক্স (টুইটার)-এর মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে এবং ৮টি ভুয়া তথ্য অনলাইন নিউজ পোর্টালে ছড়ানো হয়েছে।


অবশেষে আলোর মুখ দেখছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা

* কাজ শুরু জানুয়ারিতে * ব্যয় হবে ১২ হাজার কোটি টাকা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশের উত্তরাঞ্চলের ২ কোটি মানুষের দুঃখ তিস্তা। এই তিস্তাকে ঘিরেই এই অঞ্চলে লাখো মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্বাহ হয়। কৃষি থেকে শুরু করে জেলে সবাই এই নদীর ওপর নির্ভরশীল। বছরের পর বছর এই নদীর ভাঙনে সর্বশান্ত হচ্ছে হাজারও মানুষ। হাজার হাজার মানুষ নদী ভাঙনের শিকার হয়ে বাস্তুহারা হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উত্তরের অবহেলিত এসব মানুষের একটাই স্বপ্ন তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন হোক।

সব দ্বিধা কাটিয়ে অবশেষে আলোর মুখ দেখছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা। ১০ বছর মেয়াদে ১২ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে। যেখানে বিনিয়োগ করবে বাংলাদেশ ও চীন সরকার। ইতোমধ্যে চীন দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল তিস্তার মাঠ পর্যায়ের জরিপ করছে।

ডিরেক্টর অব দ্য পলিটিক্যাল সেকশন জং জিংয়ের নেতৃত্বে চীনা প্রতিনিধি দলটি মতবিনিময় করেছে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ ও তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনসহ নদী পাড়ের মানুষের সঙ্গে। মতবিনিময় শেষে তারা আশ্বস্ত করেছেন চীন সরকার দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে চায়। সবকিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারিতেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন চীনের এই কর্মকর্তা।

‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও’ সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাফিয়ার রহমান বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে শুষ্ক মৌসুমে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত তিস্তার সব পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। আর বর্ষাকালে তিস্তায় প্রবাহিত হয় তিন থেকে ৪ লাখ ঘনফুট পানি। গজলডোবার সব কপাট খুলে দেয় ভারত। দ্রুত বেগে নেমে আসা তিস্তার পানিতে উত্তরের পাঁচ জেলা নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যায়। ভাঙনের পাশাপাশি ব্যাপক ফসলি জমি ক্ষতির মুখে পড়ে। ফলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি তোলে তিস্তা অববাহিকার মানুষ।’

রিভারাইন পিপলের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর তিস্তার ভাঙন ও প্লাবনে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির মুখে পড়েন উত্তরের ৫ জেলার বাসিন্দা। এছাড়া বাস্তুভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে।

তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, ‘১০ বছরের বেশি সময় ধরে আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে অববাহিকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে আসছি। বিগত আওয়ামী সরকার তিস্তাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়েছিল, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তাতে তিস্তা পাড়ের মানুষের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটেছে।’

চলতি বছরের ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে টানা ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করেছিল তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির সংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে, তিস্তার দুই পারে পুনরুদ্ধারকৃত ১৭৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে উঠবে ইকোপার্ক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন, আধুনিক কৃষি, মৎস্য খামার, কৃষিভিত্তিক কলকারখানা, জনবসতি ও স্যাটেলাইট টাউন।’

তিনি আরও বলেন, তিস্তা খননের ফলে ব্রহ্মপুত্র দিয়ে যমুনা সঙ্গে সারা বছর একটি নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল হবে। তিস্তার শাখা প্রশাখা ও উপনদী গুলো হবে এক একটি জলাধার। মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চল হবে একটি স্বপ্নের ঠিকানা। হাজারও মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অর্থনীতির ক্ষেত্রে ঘটবে এক নীরব বিপ্লব। অবহেলিত এসব মানুষের কথা চিন্তা করেই আমরা আন্দোলনে নেমেছি। আশা করছি আমাদের আন্দোলন সফল হবে।

নদী বিশেষজ্ঞ ড. তুহিন ওয়াদুদ মনে করেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এই অঞ্চলের মানুষের একটি ন্যায্য দাবি। অবশ্যই বাংলাদেশ সরকার চীন সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত তা বাস্তবায়ন করবে। এই কাজটি হলে উত্তরাঞ্চল বদলে যাবে।

গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাৎ দিবস ও জুলাই শহীদ দিবস অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘২০২৬ সালের জানুয়ারিতে শুরু হবে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ। যেখানে যৌথভাবে বিনিয়োগ করবে বাংলাদেশ ও চীন সরকার। ১০ বছর মেয়াদে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। প্রথম ৫ বছরে সেচ, ভাঙন রোধ, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ গুরুত্ব পাবে।’

তিনি বলেন, ইআরডি থেকে তিস্তা মহাপরিকল্পনার খসরা এখন চীন সরকারের কাছে। আমরা আশা করছি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই কাজ শুরু হবে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কতা জারি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ডিজিটাল পেমেন্ট সেবাদাতাদের ওপর বড় ধরনের সাইবার হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগ থেকে এক চিঠিতে এ সতর্কতা জানানো হয়। এতে বলা হয়, আগামী দিনে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই), ব্যাংক, আর্থিক খাত, স্বাস্থ্যসেবা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সাইবার হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে এমন আশঙ্কার কথা ওঠে এসেছে।

চিঠিতে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সাইবার সুরক্ষা ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

যেসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলল বাংলাদেশ ব্যাংক:

১. সার্ভার, ডেটাবেইস ও আইটি সিস্টেম নিয়মিত আপডেট করতে হবে।

২. অপ্রয়োজনীয় পোর্ট বন্ধ এবং কমপক্ষে অনুমতিভিত্তিক এক্সেস নিশ্চিত করতে হবে।

৩. সংরক্ষিত ডেটার গুরুত্ব অনুযায়ী নিয়মিত ব্যাকআপ ও রিস্টোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। ৩-২-১ ব্যাকআপ কৌশল অনুসরণে উৎসাহিত করা হয়েছে।

৪. ডেটা স্থানান্তর, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষেত্রে অ্যানক্রিপশন বাধ্যতামূলক।

৫. গুরুত্বপূর্ণ সব সিস্টেমে মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (এমএফএ) চালু করতে বলা হয়েছে।

৬. নিরাপত্তা নজরদারির জন্য এবং অন্যান্য সিকিউরিটি টুলস ব্যবহারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

৭. অ্যান্ডপয়েন্ট ডিটেকশন অ্যান্ড রেসপন্স (ইডিআর), অ্যান্টিভাইরাস ইত্যাদি সফটওয়্যারের হালনাগাদ এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

৮. সম্ভাব্য হামলার ঘটনা মোকাবিলায় ইনসিডেন্ট রেসপন্স প্ল্যান এবং বিশেষায়িত টিম প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।

৯. সন্দেহজনক লগইন, ফাইল পরিবর্তন বা এক্সটারনাল সংযোগ মনিটর করতে এবং প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে।

১০. রিমোট এক্সেস, ভিপিএন ও প্রিভিলেজড অ্যাকাউন্ট নিয়মিত রিভিউ করে প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ আরোপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

১১. সাইবার হামলার কোনো লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে।

১২. ২৪/৭ বেসিসে নিরাপত্তা মনিটরিং সেন্টার পরিচালনায় প্রয়োজনীয় জনবল নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

১৩. সিস্টেমের উচ্চ সক্ষমতা ও স্থায়িত্ব বজায় রাখতে লোড ব্যালেন্সার স্থাপন ও বিকল্প পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

১৪. প্রতিষ্ঠানের বিজনেস কনটিনিউটিপ্ল্রান অ্যান্ড ডিজাস্টার রিকভারি প্ল্যান হালনাগাদ করে তা বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, এসব পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো- যেকোনো সম্ভাব্য সাইবার হামলা প্রতিরোধ, ক্ষয়ক্ষতি কমানো এবং ঝুঁকি মোকাবিলায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিটি দেশের সব তফসিলি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং পেমেন্ট সেবা প্রদানকারীদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানগুলো সময়ক্ষেপণ না করে এখনই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।


শেখ হাসিনাকে রাতের ভোটের আইডিয়া দেন জাবেদ পাটোয়ারী

সাবেক আইজিপি মামুনের জবানবন্দি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

২০১৮ সালের নির্বাচনে রাতেই ৫০ শতাংশ ব্যালট বাক্স ভরে রাখতে শেখ হাসিনাকে আইডিয়া দিয়েছিলেন তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক মামলায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের জবানবন্দিতে ওঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। চলতি বছরের ২৪ মার্চ পাঁচ পৃষ্ঠার এই জবানবন্দি দেন তিনি।

জবানবন্দিতে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আরও জানান- গুম, নির্যাতন ও ক্রসফায়ারের সিরিয়াস নির্দেশনা আসত প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে। সরাসরি নির্দেশনা দিতেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকি। এসব কার্যক্রমের অনেক কিছুই পুলিশের সর্বোচ্চ পদে থেকেও তার অজানা থাকত।

তিনি বলেন, কাউকে উঠিয়ে আনা, গুম করে রাখার মতো বিষয়গুলো সাবেক সামরিক উপদেষ্টা জেনারেল তারিক সিদ্দিকি সরাসরি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতেন। এ ব্যাপারে পুলিশের আইজি হওয়া সত্ত্বেও আমাকে সবকিছু অবহিত করা হতো না।

ব্যারিস্টার আরমানের টাস্কফোর্স ইন্টেলিজেন্স (টিএফআই) সেলে বন্দি থাকার বিষয়টিও জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন সাবেক এই শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে জ্বীন বলে ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কেন না, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কার্যকর মনে করা হতো তাকে।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েই জুলাই আন্দোলন দমনে ব্যবহার হয় মারণাস্ত্র ও হেলিকপ্টার থেকে গুলি। শেখ হাসিনার নির্দেশনার কথা সে সময়ে পুলিশ প্রধানকে সরাসরি জানান তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আন্দোলন দমনের পরিকল্পনা হতো প্রতিরাতের বৈঠকে।

জবানবন্দিতে সাবেক এই আইজিপি বলেছেন, গত বছরের ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতিরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় বৈঠক হতো তাদের। বৈঠকে দুইজন সচিব, এসবি প্রধান মনিরুল, ডিবির হারুন, র‌্যাবের মহাপরিচালক, আনসারের ডিজি, এনটিএমসির জিয়াউল আহসানসহ অনেকে উপস্থিত থাকতেন। মূলত এ বৈঠকেই সব পরিকল্পনা হতো।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ২৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।


৩৯টি সংসদীয় আসনে সীমানা পরিবর্তনের খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে ৪২টি আসনে পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে কারিগরি কমিটি। এর মধ্যে ৩৯টি আসনে সীমানা সামান্য পরিবর্তনের অনুমোদন দিয়েছে ইসি।

এছাড়া ২৫০ আসনের বিষয়ে কারো কোনো আপত্তি আবেদন না আসায় বিদ্যমান সীমানাই বহাল রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব তথ্য জানান। এ সময় ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। কমিশনের অনুমোদনের পর প্রস্তাবিত ৩০০ আসন নিয়ে ১০ আগস্টের মধ্যে দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার জানান, যে আসনে সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছে সেখানে একটি আসন বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করেছে কারিগরি কমিটি। এছাড়া সবচেয়ে কম ভোটার যে আসনে, সেখান থেকে একটি আসন কমানোর বিষয়ে প্রস্তাব করেছে কমিটি। এক্ষেত্রে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানোর এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কারিগরি কমিটি সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছে যে জেলায় সেই জেলায় একটি আসন বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন এবং সর্বনিম্ন ভোটার যে জেলায় সেই জেলায় একটি আসন কমানোর প্রস্তাব করেছেন। সেই আলোকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টেকনিক্যাল কমিটির তথ্যানুযায়ী, সর্বোচ্চ ভোটার হচ্ছে গাজীপুরে। আর বাগেরহাট জেলায় সবচেয়ে কম। মানে বিশেষায়িত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী তারা ভোটার সংখ্যা এবং জনসংখ্যা অ্যানালাইসিস করে প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের প্রস্তাব হচ্ছে বাগেরহাটে একটি আসন কমবে, গাজীপুরে জনসংখ্যা ও ভোটারের সংখ্যার ভিত্তিতে একটি আসন বাড়বে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ৬৪ জেলার গড় ভোটার নির্ধারণ করেছি ৪ লাখ ২০ হাজার ৫০০। গাজীপুরে একটি আসন বাড়ালে এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমালে সমতা চলে আসে। বাকিগুলোয় আসন কমবেশি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। দুই জেলার আসনই ‘অ্যাফেক্টেড’ হয়েছে। আর কোথাও ঝামেলা নেই। প্রায় ৩৯ থেকে ৪২টি আসনে এডজাস্টমেন্ট রয়েছে।’

সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে খসড়া গেজেট আজই প্রকাশ করা হবে উল্লেখ করে তিনি জানান, এ সংক্রান্ত দাবি-আপত্তি গ্রহণ করা হবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। পরে আসন ভিত্তিক শুনানি শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আপত্তি কম থাকলে দ্রুতই চূড়ান্ত হবে সীমানা নির্ধারণ।

আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, ৩৯টি আসনে ছোট-বড় সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলো হলো- পঞ্চগড় -১ ও ২। রংপুর- ৩। সিরাজগঞ্জ -১ ও ২। সাতক্ষীরা-৩ ও ৪। শরিয়তপুর- ২ ও ৩। ঢাকা ২, ৩, ৭, ১০, ১৪ ও ১৯। গাজীপুর-১, ২, ৩, ৫ ও ৬। নারায়ণগঞ্জ ৩, ৪ ও ৫। সিলেট- ১ ও ৩। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ ও ৩। কুমিল্লা ১, ২, ১০ ও ১১। নোয়াখালী ১, ২, ৪ ও ৫। চট্টগ্রাম ৭ ও ৮ এবং বাগেরহাট ২ ও ৩।

নির্বাচন কমিশনার আরো জানান, সংবিধানের ১১৯ ও ১২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের এখতিয়ার ইসির। এই ধারাবাহিকতায় ইসি একটি কমিটি গঠন করে। পরবর্তী সময় সীমানা নির্ধারণের জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬ জুলাই সীমানা নির্ধারণে ভূগোলবিদ, নগরবিদ, পরিসংখ্যানবিদসহ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ৯ সদস্যের বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী টিম ৬৪ জেলার ৩০০ আসনের সীমানা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে। আইন অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও আদমশুমারিকে গুরুত্ব দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।


বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া পুলিশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে বৈঠক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

বাংলাদেশ পুলিশ এবং মালয়েশিয়া রয়েল পুলিশ আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়।

আজ বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের হল অব প্রাইডে বাংলাদেশ পুলিশ ও মালয়েশিয়া রয়েল পুলিশের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ বাহারুল আলম বিপিএম। অপরদিকে মালয়েশিয়া পুলিশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন রয়েল মালয়েশিয়া পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান আজমান বিন আব্দ. রাযাক (Mr. Azman Bin Abd Razak)। প্রতিনিধিদলে মালয়েশিয়া রয়েল পুলিশের সাত সদস্য ছিলেন।

আইজিপি মালয়েশিয়া রয়েল পুলিশের প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বিরাজমান সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন।

সাক্ষাতকালে প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ও রয়েল মালয়েশিয়া পুলিশের মধ্যে সন্ত্রাসবাদ, মানবপাচার, অর্থপাচার ও পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। উভয় দেশের পুলিশ যথাসময়ে তথ‍্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রদানে সচেষ্ট থাকার প্রত‍্যাশা ব‍্যক্ত করেন।

এ সময় র‍্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, বিপিএম, পিপিএম, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজি মোঃ গোলাম রসুল, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, বিপিএম পিপিএম এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


banner close