গণমাধ্যমের ওপর ভিসানীতি প্রয়োগের বিষয়ে ঢাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্যে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘গণমাধ্যমে ভিসানীতি প্রয়োগের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নীতির পরিপন্থী। বাংলাদেশের গণমাধ্যম উগ্রবাদী শক্তি, জঙ্গি, জামায়াত ইসলামীর মতো যুদ্ধাপরাধীর দল, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যারা প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলোকে নির্মূল করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে সোচ্চার ভূমিকা রাখছে। এর ফলে বাংলাদেশ তালেবানের মতো একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়নি।’
বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, ‘গণমাধ্যমের ওপর ভিসানীতি নিয়ে হাসের বক্তব্যটিকে কট্টরপন্থী ও স্বাধীনতাবিরোধীরা স্বাগত জানিয়েছে। এই পক্ষটি অন্যান্য নীতিতে পশ্চিমাদের নিন্দা করে, মুক্তচিন্তকদের শত্রু মনে করে এবং তারা ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধীদের দায়মুক্তির পক্ষে।’
“হাসের বক্তব্যকে জামায়াতে ইসলামীর মুখপত্র হিসেবে পরিচিত ‘বাঁশের কেল্লা’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে স্বাগত জানিয়ে পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে হাসকে ‘একজন সত্যিকারের বন্ধু’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অতীতে এই পেজে ব্লগার ও মুক্তচিন্তকদের হত্যার পক্ষে নানা বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। ফলে, এই পেজে হাসের বিবৃতি নিয়ে উল্লাস আসলে ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিকদের জন্য নিগূঢ় বার্তা দেয়।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা দেখেছি, জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধ, ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিকদের কণ্ঠরোধ ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য নিয়ে ‘বাঁশের কেল্লা’ পেজে আস্ফালন চলছে।”
এতে বলা হয়, ‘আমরা দেখেছি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ভিসানীতিতে গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করা থেকে বিরত ছিলেন। কিন্তু হাস তার বক্তব্য প্রত্যাহার না করায় ধারণা করা যায়, গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়তো চূড়ান্ত। এরই মধ্যে সম্পাদক ও সাংবাদিকেরা এটির নিন্দা করেছেন। হাসের এই বক্তব্যের কারণে সংবাদমাধ্যমগুলো সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশে বাধাপ্রাপ্ত হবে বলে অনেকেই মত দিয়েছেন।’
হাসের দ্বৈতনীতির বিষয়টি তার বক্তব্যে উঠে এসেছে উল্লেখ করে বিশিষ্ট নাগরিকরা বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশে আসার পর থেকে তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু তার এখনকার অবস্থান গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’
‘মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা ছিল, গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না দিলে তারাও ভিসানীতির আওতায় আসবে। কিন্তু হাসের বিবৃতিতে দেখা যায়, বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রতিশ্রুতি, আর সেখানে গণমাধ্যমের ভূমিকার যে সুযোগ ছিল, সেটিকে মারাত্মক বাধাগ্রস্ত করবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক প্রচেষ্টা দেখেছি, যা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিপন্ন করার সম্ভাবনা রাখে। র্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের নিষেধাজ্ঞার দাবি উত্থাপনে বড় ভূমিকা রেখেছেন দেশটির বিতর্কিত মার্কিন সিনেটর বব মেনেন্ডেজ। এ ছাড়া ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষরে একটি বিবৃতি প্রদান করা, যেখানে দাবি করা হয়েছে, বর্তমান সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে, যা একেবারে বাস্তবতাবিবর্জিত এবং ন্যায়সঙ্গত নয়। ফলে, এই বিষয়গুলো আমাদের চিন্তা করতে বাধ্য করে যে এ ধরনের কার্যক্রমের পেছনে ভিন্ন কোনো ইচ্ছা রয়েছে কি না।’
বিশিষ্টজনদের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অতীতে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে জামায়াত এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা থেকে শুরু করে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের হামলা আমরা দেখেছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা ব্যতীত এসব সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা অসম্ভব। বিএনপি-জামায়াত সর্বশেষ যেই জোট সরকার গঠন করেছিল, সে সময়ও ২৮ হাজারের বেশি হামলা চালানো হয় সংখ্যালঘুদের ওপর, যেখানে তাদের সম্পত্তি, বাড়িঘর দখলসহ মন্দিরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়, জীবন্ত মানুষকে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এ বিষয়ে তৎকালীন সরকারকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। কিন্তু বর্তমান সরকার নির্বাচিত হয়ে আসার পর রাষ্ট্রের সহায়তায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়েছে। আর সাম্প্রদায়িক এই সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা দেখতে পেলাম, ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখার প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ঘটেনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দণ্ডপ্রাপ্ত এবং আত্মস্বীকৃত খুনিদের ক্ষেত্রে, যাদের যুক্তরাষ্ট্র আশ্রয় প্রদান করছে। এটি বাংলাদেশের জন্য এমন এক জঘন্য হত্যাকাণ্ড, যা মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটায়। সুতরাং আমরা মনে করি যে ভিসানীতিটি কীভাবে প্রয়োগ করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করা যৌক্তিক। কারা এর অনুমোদন দেবে এবং এই ধরনের পদক্ষেপের বৈধতা নিয়ে কারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা বোঝাটাও জরুরি। কারণ, আমরা রাষ্ট্রদূতের কার্যকলাপ দেখেছি এবং অন্যান্য কার্যাবলিও দেখেছি, যা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া মৌলবাদী শক্তিগুলোর জন্য বারুদ হিসেবে কাজে এসেছে।’
বিবৃতিতে লেখক, অধিকারকর্মী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাপরাধবিরোধী প্রচারক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ মোট ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক স্বাক্ষর করেছেন।
তাদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক শাহরিয়ার কবীর, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শহীদজায়া সালমা হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, আইনজীবী ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, চলচ্চিত্রনির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর সাত্তার, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক নূরন নবী, অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, চিকিৎসক শেখ বাহারুল আলম, চিকিৎসক ইকবাল কবীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজকর্মী সুব্রত চক্রবর্ত্তী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূতত্ত্ববিদ মকবুল-ই এলাহী চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল গাফ্ফার, কবি জয়দুল হোসেন, সমাজকর্মী কাজী লুৎফর রহমান, সমাজকর্মী কামরুননেসা মান্নান, আইনজীবী আজাহার উল্লাহ্ ভূঁইয়া, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়।
রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এখন এক বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। যতদূর চোখ যায়, কেবল মানুষের মাথা। দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে শেষ বিদায় জানাতে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরের আগেই গোটা রাজধানীর রাজপথ যেন শোকার্ত মানুষের দখলে চলে গেছে। যেখান থেকে আর কোনোদিন ফেরা হবে না, সেই অনন্ত যাত্রায় খালেদা জিয়ার সঙ্গী আজ লাখ লাখ মানুষের শ্রদ্ধা, অকৃত্রিম ভালোবাসা আর তপ্ত চোখের জল।
জানাজাস্থলে উপস্থিত সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দলীয় নেতাকর্মী—কারও চোখই আজ শুকনো নেই। প্রিয় নেত্রীকে হারানোর বেদনায় অনেকে হাউমাউ করে কেঁদে উঠছেন, আবার কেউ নিরবে চোখ মুছছেন। একে অপরকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন সবাই। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী এই নেত্রী জীবনের শেষ মুহূর্তে যে কেবল একটি দলের নেত্রী নন, বরং জাতীয় ঐক্যের প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন, মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত জনস্রোতই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। সারাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ শেষবারের মতো এই ‘আপসহীন’ নেত্রীকে একনজর দেখতে ছুটে এসেছেন। প্রকৃতিও যেন আজ তাঁর বিদায়ে করুণা দেখাচ্ছে; গত কয়েকদিনের হাড়কাঁপানো কনকনে শীত ও কুয়াশা সরিয়ে আকাশে উঠেছে ঝলমলে মিষ্টি রোদ, যা আগত জনতাকে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে।
আজ বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটের দিকে রাষ্ট্রীয় প্রোটোকলে লাল-সবুজ জাতীয় পতাকায় মোড়ানো একটি ফ্রিজার ভ্যানে করে বেগম জিয়ার মরদেহ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা সংলগ্ন এলাকায় আনা হয়। এর আগে সকালে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে মরদেহ নেওয়া হয়েছিল গুলশানে তাঁর ছেলে তারেক রহমানের বাসভবনে। সেখান থেকেই শুরু হয় এই বিশাল শোকযাত্রা। দুপুর দেড়টা নাগাদ দেখা যায়, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ছাপিয়ে মানুষের এই স্রোত ফার্মগেট ও এর আশপাশের সড়কগুলোতেও আছড়ে পড়েছে। পুরো এলাকাকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডনিসহ নানা বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগে গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টায় ৭৯ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বেগম খালেদা জিয়া। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি চড়াই-উতরাই ও প্রতিকূলতা পাড়ি দেওয়া এই নেত্রীর প্রয়াণে আজ দেশজুড়ে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে এবং সারাদেশে সাধারণ ছুটি চলছে। জানাজা শেষে তাঁকে শেরেবাংলা নগরে তাঁর স্বামী ও স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই সমাহিত করা হবে। এক মহাকাব্যিক রাজনৈতিক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার অপেক্ষায় এখন এ দেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়া এই মহীয়সী নেত্রী।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে শরিক হতে এবং তাঁর প্রতি অন্তিম শ্রদ্ধা জানাতে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকা পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। ঢাকা পৌঁছেই তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো আনুষ্ঠানিক শোকবার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।
আজ বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে তিনি রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বিমানবন্দরে জয়শঙ্করকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া উইংয়ের মহাপরিচালক ইশরাত জাহান এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাও বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ দুপুরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিতব্য বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণ করবেন। ভারত সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি মরহুমার কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। জয়শঙ্করের এই ঝটিকা সফর বাংলাদেশের এক বরেণ্য নেত্রীর প্রয়াণে ভারতের পক্ষ থেকে গভীর সমবেদনা ও বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আজ সারাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক এবং সাধারণ ছুটির মধ্য দিয়ে প্রিয় নেত্রীকে বিদায় জানানোর প্রস্তুতি চলছে, যার সাক্ষী হতে ভারতের এই উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে শরিক হতে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে শোকার্ত মানুষের ঢল নেমেছে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী দুপুর ২টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতিতে পুরো এলাকা এক বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। প্রিয় নেত্রীকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে এবং জানাজায় অংশ নিতে আসা মানুষের ভিড় সংসদ ভবন এলাকা ছাড়িয়ে আশপাশের সকল সড়কে বিস্তৃত হয়েছে।
এর আগে আজ সকালে এক আবেগঘন পরিবেশে বেগম জিয়ার মরদেহ এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানে তাঁর ছেলে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসভবনে নেওয়া হয়। যদিও শুরুতে মরদেহ তাঁর দীর্ঘদিনের স্মৃতিবিজড়িত বাসভবন ‘ফিরোজা’য় নেওয়ার কথা ছিল, তবে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে তা গুলশান-২ এর নর্থ অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে নেওয়া হয়। সকাল ৮টা ৫৩ মিনিটে হাসপাতাল থেকে বের হওয়া মরদেহবাহী গাড়িটি ৯টা ১৬ মিনিটে বাসভবনে পৌঁছালে সেখানে এক শোকাতুর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
বাসভবনে পৌঁছানোর পর তারেক রহমান অশ্রুসিক্ত নয়নে মায়ের কফিনের পাশে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি কফিনের পাশে বসে অত্যন্ত একাগ্রচিত্তে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন। এ সময় পরিবারের সদস্য এবং উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মরদেহ জানাজার জন্য মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রিয় নেত্রীর জানাজায় অংশ নিতে আসা লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন পরম শ্রদ্ধায় শেষ মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছেন। এক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী এই মহীয়সী নেত্রীর বিদায়ে রাজধানী আজ শোকে স্তব্ধ ও লোকে লোকারণ্য।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ এখন রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অবস্থান করছে। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার ঠিক পরেই জাতীয় পতাকায় মোড়ানো মরদেহবাহী গাড়িটি জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা সংলগ্ন এলাকায় প্রবেশ করে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় তাঁর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ইমামতি করবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। বরেণ্য এই নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে সকাল থেকেই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও সংসদ ভবন এলাকায় লাখো মানুষের ঢল নেমেছে।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে গুলশানে তাঁর ছেলে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসভবন থেকে মরদেহবাহী ফ্রিজার ভ্যানটি জানাজাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তারেক রহমান, তাঁর সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান, কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ একটি বিশেষ বাসে করে এই শোকাবহ যাত্রায় শামিল হন। আজ সকালেই এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বেগম জিয়ার মরদেহ গুলশানের বাসভবনে নেওয়া হয়েছিল, যেখানে স্বজন ও কর্মীরা অশ্রুসিক্ত নয়নে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। মরদেহ জানাজাস্থলে আনার সময় পুরো গুলশান ও সংসদ ভবন এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয় এবং যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে এবং তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ইতিমধ্যে ভারত, পাকিস্তান ও নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা ঢাকায় পৌঁছেছেন। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই ‘আপসহীন’ নেত্রী। তাঁর প্রয়াণে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সরকার আজ থেকে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে এবং আজ বুধবার সারাদেশে সাধারণ ছুটি পালন করা হচ্ছে। জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেরেবাংলা নগরে তাঁর স্বামী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই সমাহিত করা হবে। এক বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামমুখর রাজনৈতিক জীবনের ইতি টেনে আজ চিরনিদ্রায় শায়িত হতে যাচ্ছেন এ দেশের ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী এই নারী ব্যক্তিত্ব।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা পৌঁছেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের (পার্লামেন্ট) স্পিকার সরদার আইয়াজ সাদিক। সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের কাউন্সেলর (প্রেস) মো. ফসিহ উল্লাহ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বরেণ্য এই নেত্রীর প্রয়াণে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁর শেষ বিদায়ে শরিক হতে স্পিকার সরদার আইয়াজ সাদিক এই সংক্ষিপ্ত সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজায় ইমামতি করবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব। এরপর শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।
উল্লেখ্য, বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে আন্তর্জাতিক মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর জানাজায় অংশ নিতে পাকিস্তানের স্পিকার ছাড়াও ইতিমধ্যে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকটি দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা ঢাকায় পৌঁছেছেন। বরেণ্য এই নেত্রীর বিদায়ে প্রতিবেশী দেশগুলো বাংলাদেশের মানুষের শোকের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। মূলত এক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক নেত্রীর চিরবিদায়বেলাকে মর্যাদাপূর্ণ করতে দেশি-বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এই সমাগম ঘটছে।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে এবং তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকা পৌঁছেছেন। দুপুর ১১টা ৫৫ মিনিটে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে গতকালই জানানো হয়েছিল যে, সেদেশের সরকার ও জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে জয়শঙ্কর বাংলাদেশের এই প্রবীণ নেত্রীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেবেন। তাঁর এই সফরটি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এটিই ভারত সরকারের কোনো মন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর।
বিমানবন্দরে অবতরণের পর এস জয়শঙ্কর সরাসরি জানাজাস্থল অভিমুখে রওনা হয়েছেন। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আজ জোহর নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিতব্য বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় তিনি শরিক হবেন। তিনি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে মরহুমার কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন এবং তাঁর বিদেহী আত্মার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। জয়শঙ্করের এই উপস্থিতিকে দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের প্রতি ভারতের সম্মান প্রদর্শনের একটি বড় নিদর্শ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। বরেণ্য এই নেত্রীর বিদায়ে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত বাংলাদেশের জনগণের শোকের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ রাষ্ট্রীয় প্রোটোকল ও কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এসে পৌঁছেছে। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটের দিকে লাল-সবুজ রঙের জাতীয় পতাকায় মোড়ানো একটি ফ্রিজার ভ্যানে তাঁর মরদেহ সেখানে আনা হয়। এসময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা হিউম্যান চেইন তৈরি করে মরদেহের সুরক্ষা নিশ্চিত করেন। এর আগে বেলা ১১টা ৫ মিনিটে তাঁর ছেলে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গুলশান বাসভবন থেকে মরদেহবাহী গাড়িটি যাত্রা শুরু করেছিল। সকালে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে মরদেহ বের করার পর সেটি প্রথমে গুলশানে নেওয়া হয়, যেখানে পরিবারের স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীরা তাঁদের প্রিয় নেত্রীকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানান।
বর্তমানে সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় এক শোকাতুর ও নিস্তব্ধ পরিবেশ বিরাজ করছে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আজ জোহরের নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এই জানাজায় ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। জানাজা শেষে তাঁকে শেরেবাংলা নগরে তাঁর স্বামী ও স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। বরেণ্য এই নেত্রীর শেষ বিদায়ে শ্রদ্ধা জানাতে ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন।
জানাজা ও দাফন প্রক্রিয়া সুশৃঙ্খল রাখতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। গত ৩০ ডিসেম্বর ভোরে ৭৯ বছর বয়সে এই মহীয়সী নেত্রীর প্রয়াণে আজ দেশজুড়ে সাধারণ ছুটি এবং তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক চলছে। সারা দেশ থেকে আসা লাখ লাখ মানুষ তাঁদের প্রিয় ‘আপসহীন’ নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে সংসদ ভবন ও এর আশপাশের রাস্তায় ভিড় করছেন। এক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের ইতি টেনে আজ প্রিয়তমা পতির পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন এ দেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়া বেগম খালেদা জিয়া।
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাঁর পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাষ্ট্রপতি তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।
অধ্যাপক সায়েদুর রহমান প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় সরকারের নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তবে তাঁর এই আকস্মিক পদত্যাগের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ সরকারিভাবে জানানো হয়নি। তাঁর এই বিদায় প্রশাসনিক মহলে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দুইজন উচ্চপদস্থ বিশেষ সহকারী পদত্যাগ করলেন। এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী খোদা বকশ চৌধুরী তাঁর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। বর্তমানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে তাঁর শূন্য হওয়া পদে নতুন কেউ নিয়োগ পাবেন কি না, সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। সরকার এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে এই রদবদলকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলেও নানা বিশ্লেষণ চলছে। মূলত দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবেই এই পরিবর্তনগুলো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকা পৌঁছেছেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালা নন্দা শর্মা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভাণ্ডারি এবং বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব এম ফরহাদুল ইসলাম।
নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই সফর বাংলাদেশের এই প্রবীণ নেত্রীর প্রতি নেপাল সরকারের গভীর শ্রদ্ধা এবং তাঁর তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন নেপাল-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে রাখা অনন্য অবদানের প্রতি সম্মান জানানোরই একটি প্রতিফলন। নেপাল সরকার মনে করে, খালেদা জিয়ার শাসনকালে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছিল।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিতব্য বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় তিনি শরিক হবেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদের পাশাপাশি তিনিও ভারত ও পাকিস্তানের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সাথে থেকে মরহুমার বিদেহী আত্মার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে এবং রাষ্ট্রীয় শোক কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করে আগামী ১ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) কাঠমান্ডু ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে নেপালি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। বরেণ্য এই নেত্রীর প্রয়াণে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে নেপাল বাংলাদেশের জনগণের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে শোকার্ত মানুষের ঢল নেমেছে। দীর্ঘদিনের প্রিয় নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ সাতসকালেই সভাস্থলে এসে জড়ো হয়েছেন। জানাজা শুরু হতে কয়েক ঘণ্টা বাকি থাকলেও পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকা ইতিমধ্যে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। আগত মানুষের চোখে-মুখে প্রিয় ‘আপসহীন’ নেত্রীকে হারানোর গভীর শোক ও বেদনা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।
দেশের নানা জেলা থেকে আসা সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীরা আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তাঁদের অনুভূতি ব্যক্ত করছেন। নরসিংদী থেকে আসা আমির হোসেনের মতো অনেকেই নিজের টাকা খরচ করে প্রিয় নেত্রীর শেষ বিদায়ে শরিক হতে ছুটে এসেছেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা সমর্থকদের মতে, খালেদা জিয়ার মতো সাহসী ও দেশপ্রেমিক নেত্রী বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভিড় সংসদ ভবনের চারপাশের এলাকা ছাড়িয়ে সংলগ্ন সড়কগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে। প্রিয় নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা করেছে।
বিশাল এই জনসমাগমকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে গড়ে তোলা হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়। জানাজা ও দাফন কার্যক্রম সুশৃঙ্খল রাখতে এবং যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সংসদ ভবন, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এবং জিয়া উদ্যান এলাকায় মোট ২৭ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন যে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে শুরু করে দাফনস্থল পর্যন্ত পুরো রুটজুড়ে পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরা কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ বুধবার দুপুর ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে তাঁর স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই সমাহিত করা হবে। গতকাল থেকেই জানাজার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। এক বর্ণাঢ্য ও আপসহীন রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে আজ চিরবিদায় নিচ্ছেন এই মহীয়সী নেত্রী, যার সাক্ষী হতে রাজধানী আজ শোকে স্তব্ধ ও লোকে লোকারণ্য। আমজনতার এই বাঁধভাঙা ভিড় প্রমাণ করছে এ দেশের মানুষের হৃদয়ে বেগম খালেদা জিয়ার স্থান কতটা সুগভীর।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ের লক্ষ্যে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় এক বিশাল জানাজার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, বাদ জোহর এই জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মানুষের বিপুল সমাগম বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে মরদেহবাহী কফিন রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউজুড়ে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লাখো মানুষের সমাগম ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সাধারণ মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে জানাজায় অংশ নিতে পারেন, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় দপ্তরগুলো গত রাত থেকেই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন সাধারণ মানুষ অবস্থান করতে পারেন, সে বিষয়ে বিশেষ ট্রাফিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হবে বেগম জিয়ার মরদেহ। সেখানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
দাফন প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও মর্যাদাপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য জিয়া উদ্যান এলাকায় জনসাধারণের প্রবেশে কিছুটা কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। সমাহিত করার সময় সেখানে উপস্থিত থাকবেন মরহুমার পরিবারের সদস্যবৃন্দ, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, বিদেশি সরকারের প্রতিনিধি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ। দাফন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই এলাকা এবং এর আশপাশে সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখা হবে। মূলত এক বর্ণাঢ্য ও দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সমাপ্তি ঘটিয়ে আজ তাঁর প্রিয়তমা পতির পাশেই চিরস্থায়ী ঠিকানা পেতে যাচ্ছেন এ দেশের মানুষের কাছে ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিত বেগম খালেদা জিয়া। সারা দেশে আজ সাধারণ ছুটি এবং তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক চলছে। দাফন সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত রাজধানী জুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ও শোকাতুর পরিবেশ বজায় থাকবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর গুলশান থেকে এক বিশাল শোকবহ পরিবেশে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। লাল-সবুজ রঙের জাতীয় পতাকায় মোড়ানো একটি বিশেষ ফ্রিজার ভ্যানে করে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই যাত্রাপথ এবং সংসদ ভবন এলাকা জুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েক স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় নিশ্চিত করা হয়েছে।
মরদেহবাহী গাড়িটি গুলশান-২, কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, মহাখালী ফ্লাইওভার এবং বিজয় সরণি হয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের ৬ নম্বর গেট দিয়ে দক্ষিণ প্লাজায় প্রবেশ করবে। এর আগে আজ সকাল ৮টা ৫৪ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে মরদেহ বের করে গুলশানে তাঁর ছেলে তারেক রহমানের বাসভবনে নেওয়া হয়। সেখানে পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন এবং দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা বিএনপি নেতাকর্মীরা অশ্রুসিক্ত নয়নে তাঁদের প্রিয় নেত্রীকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানান। কফিনের পাশে বসে তারেক রহমানের কোরআন তেলাওয়াতের দৃশ্য সেখানে উপস্থিত সবাইকে আবেগপ্লুত করে তোলে।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আজ জোহরের নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজায় ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। জানাজা শেষে তাঁকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেরেবাংলা নগরে তাঁর স্বামী ও স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে। বরেণ্য এই নেত্রীর শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং শ্রদ্ধা জানাতে ভারত ও পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন।
জানাজা ও দাফন প্রক্রিয়া সুশৃঙ্খল রাখতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এবং সংসদ ভবন সংলগ্ন এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডিএমপি ও র্যাবের পাশাপাশি ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে ৭৯ বছর বয়সে এই মহীয়সী নেত্রীর প্রয়াণে আজ দেশজুড়ে সাধারণ ছুটি এবং তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক চলছে। সারা দেশ থেকে আসা লাখ লাখ মানুষ তাঁদের প্রিয় ‘আপসহীন’ নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে ভিড় করছেন। এক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে আজ প্রিয়তমা পতির পাশেই ঠাঁই নিতে যাচ্ছেন এ দেশের কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়া বেগম খালেদা জিয়া।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ এখন গুলশানে তাঁর ছেলে এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসভবনে রাখা হয়েছে। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে এক আবেগঘন পরিবেশে প্রিয় নেত্রীকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে এবং শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে ভিড় করছেন দলের শীর্ষ নেতা ও স্বজনরা। কফিনের পাশে বসে পরম মমতায় মায়ের আত্মার মাগফিরাত কামনায় কোরআন তেলাওয়াত করছেন শোকাতুর তারেক রহমান।
এর আগে আজ সকাল ৯টার কিছু আগে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বেগম জিয়ার মরদেহ বের করা হয়। জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিনে করে মরদেহবাহী গাড়িটি কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গুলশানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। দীর্ঘ ১ মাস ৭ দিন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গতকাল ভোরে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ সকালে হাসপাতাল থেকে মরদেহ বের করার সময় সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
তারেক রহমানের গুলশানের বাসভবনে বর্তমানে তাঁর কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য ঘনিষ্ঠ সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন। মায়ের কফিনের পাশে বসে তারেক রহমানের কোরআন তেলাওয়াতের দৃশ্যটি উপস্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে গভীর আবেগের সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রবাস থেকে ফিরে মায়ের সেবা করার সুযোগ পেলেও শেষ পর্যন্ত তাঁকে চিরতরে হারাতে হওয়ায় তারেক রহমানের চোখে-মুখে ছিল গভীর শোকের চিহ্ন।
পরিবারের সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ জানাজার জন্য নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। আজকের রাষ্ট্রীয় শোক ও সাধারণ ছুটির দিনে সারাদেশের মানুষ তাঁদের প্রিয় নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। বাসভবন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিএনপির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দল নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। মূলত এক কিংবদন্তি নেত্রীর বিদায়ে এখন পুরো গুলশান এলাকায় এক বিষাদময় নীরবতা বিরাজ করছে।