রোববার, ৬ অক্টোবর ২০২৪

রাষ্ট্রপতির ক্ষমা ছাড়া খালেদার সামনে আর কোনো সুযোগ নেই: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বুধবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৪ অক্টোবর, ২০২৩ ১৬:৩৫

চিকিৎসার জন্য বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে চাইলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা ছাড়া আর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

বুধবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান। এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও আইন সচিব মো. গোলাম সারোয়ার উপস্থিত ছিলেন। খবর বাসসের।

সংবাদ সম্মেলনটি করা হয় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে। মঙ্গলবার মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আইনমন্ত্রী একসময় বলেছিলেন—দণ্ড স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকতে দেওয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই। অথচ তার কিছুদিন পর খালেদা জিয়া বাসায় এসেছিলেন।’

তার এ বক্তব্য প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কোথাও এমন কথা আমি বলিনি। আমি ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেওয়া বক্তব্যে কখনো আইনের বাইরে কোনো কথা বলিনি। একজন আইনজীবী হিসেবে আমি সংবিধান ও ফৌজদারী কার্যবিধি জানি।’

বিএনপি মহাসচিবকে এ সময় সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ কথা বলার আহ্বান জানান আইনমন্ত্রী।

চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার আইনি কোনো সুযোগ আছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার ক্ষমতা প্রয়োগ করে ফেলেছেন। পুনরায় এ ক্ষমতা প্রয়োগের আর কোনো সুযোগ নেই। রাষ্ট্রপতির কাছে তারা ক্ষমা চাইতে যাবে কি না সে পরামর্শ আমি দিতে চাই না। তবে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা ছাড়া আর কোনো সুযোগ নেই।’

রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে হলে খালেদা জিয়াকে দোষ স্বীকার করে আবেদন করতে হবে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া সাংবিধানিক অধিকার। খালেদা জিয়া চাইলে ক্ষমা চেয়ে সাজা মওকুফ করার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারেন।’

বিগত সময়ে রাজনীতিবিদ আ স ম আবদুর রব ও হাজী মো. সেলিম দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পরও তাদের দুজনকে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আবদুর রবকে মুক্তি দেওয়া হয় সামরিক শাসন চলাকালে। তাকে ফৌজদারি কার্যবিধির ক্ষমতাবলে মুক্তি দেওয়া হয়নি। আর হাজী সেলিমের দণ্ডাদেশ বহাল থাকার পর তিনি আপিল করেন। আপিল করার পর হাইকোর্ট বিভাগ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে। তিনি ওই সময়ের আগেই দেশে চলে আসেন।’

আনিসুল হক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ব্যাপারে আইনে কোথাও বলা নেই বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার। তাকে শর্তযুক্ত মুক্তি দেওয়া হয়। তাতে বলা আছে, বিদেশে যেতে পারবেন না। খালেদা জিয়ার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়টি রাজনৈতিক নয়। এটি আইনি বিষয়।’

আইনমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি। তার বিদেশে যাওয়ার সময় কোনো শর্ত ছিল না। তাকে অনুমতি নিতে হয়নি।

আনিসুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১/১১ পরবর্তী সময়ে তার বিরুদ্ধে আনা মামলায় জামিন লাভ করে বিদেশ গিয়েছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য মতামত রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নয়, আইনি প্রয়োগ। খালেদা জিয়াকে তার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে চিকিৎসার জন্য শর্তযুক্ত মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০১ এর (১) ক্ষমতাবলে সরকারের নির্বাহী আদেশে সেটা পাসড অ্যান্ড ক্লোজড হয়ে গেছে। সেটা খোলার আর কোনো অবকাশ নেই।’


দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যায় ক্ষতি ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকা: সিপিডি

পুরোনো ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রতি দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সৃষ্ট বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য উঠে এসেছে।

আজ রোববার ধানমন্ডির সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিজেই জানিয়েছেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে যা জিডিপির ২৬ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি ও বন খাত, যা ৫ হাজার ১৬৯ কোটি টাকার সমান।

ফাহমিদা বলেন, ‘নোয়াখালী জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। কুমিল্লা জেলায় ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা।’ অবকাঠামো খাতে ৪ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকার এবং আবাসন খাতে ২ হাজার ৪০৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও এসময় জানান তিনি।

কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলাসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়েও এসময় তাকে কথা বলতে শোনা গেছে।

উল্লেখ্য, গতকালও দেশের উত্তরাঞ্চল শেরপুরে নতুন করে আরও ৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানির কারণে প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশে বন্যা সৃষ্টি হয়। এতে ফসল ও আবাদি জমিসহ ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয় জাতীয় সম্পদের।

বিষয়:

সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি
আপডেটেড ৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১৮:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘বাসস্থানসহ অন্যান্য সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর।’ আগামীকাল সোমবার ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ উপলক্ষ্যে আজ রোববার দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার। বর্তমান সরকার মানুষের বাসস্থানসহ এ মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর।’

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘দেশের উন্নয়নকে বেগবান ও টেকসই করার লক্ষ্যে এ সকল প্রতিকূলতাকে নির্মূল করার জন্য সরকার সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশের অনেক শহরের মতোই বাংলাদেশের শহর বা নগরগুলো এখনো অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই নগর উন্নয়ন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারে নাই। দারিদ্র্য, বৈষম্য, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা, নাগরিক নিরাপত্তাহীনতা, পরিবেশগত বিপর্যয় তথা জলবায়ু পরিবর্তনের নানা অভিঘাতে ভুগছে এ দেশের ছোটো-বড় বিভিন্ন শহর।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তারুণ্য শক্তি, সাহস ও পরিবর্তনের প্রতীক। বৈষম্যহীন, শোষণহীন ও কল্যাণকর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার বিগত দিনের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণই প্রমাণ করে তারুণ্যকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না। এখনকার তরুণেরা অনেক বেশি আধুনিক এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে অগ্রগামী।

তিনি তরুণদের অদম্য মেধা, পরিশ্রম, ঐকান্তিক নিষ্ঠা ও সততা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন আলোয় উদ্ভাসিত করবে বলে দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করেন।

মুহাম্মদ ইউনূস প্রযুক্তিগত জ্ঞান, উৎকর্ষ ও তরুণদের উদ্যোগ আর প্রবীণ অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান আমাদের দেশে উন্নত ও নিরাপদ নগর প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশে যথাযথ মর্যাদায় ‘বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৪’ উদ্‌যাপিত হতে যাচ্ছে জেনে আনন্দ প্রকাশ এবং দিবসটির সকল কার্যক্রমের সাফল্য কামনা করেন।

উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতিসংঘ ১৯৮৬ সাল থেকে প্রতি বছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ হিসেবে উদ্‌যাপন করে আসছে। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবারকে বিশ্ব বসতি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে, তার পরের বছর থেকেই বিশ্বব্যাপী পালন হয়ে আসছে দিবসটি।


রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের আন্তরিকভাবে সমর্থন দিয়েছে: মাহফুজ আলম

শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকের পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তৃতীয় দফায় গতকাল শনিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সংলাপে সব রাজনৈতিক দল সরকারকে আন্তরিকভাবে সমর্থন দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, ‘গতকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে সব রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তরিকভাবে সমর্থন দিয়েছে।’

সংলাপ শেষে শনিবার রাতেই সাংবাদিকদের সঙ্গে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেন তিনি। মাহফুজ আলম বলেন, ‘তারা (রাজনৈতিক দলগুলো) এটিকে তাদের নিজস্ব সরকার হিসেবে বিবেচনা করছে। সংলাপে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রস্তাব চেয়েছে এবং বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ছয়টি সংস্কার কমিশন রয়েছে এবং নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ সংলাপ অব্যাহত থাকবে।’

ছয় সংস্কার কমিশন বিষয়ে সাংবাদিকদের কারা এক প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘ছয়টি সংস্কার কমিশন ডিসেম্বর মাসে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করবে, তখন সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছানো হবে।’ সেই ঐকমত্যের ওপর সময়সীমা নির্ভর করছে জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনসহ নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতির কাজ একই সঙ্গে এগিয়ে যাবে।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এদিন দুপুর আড়াইটায় সংলাপ শুরু হয়। রাত ৯টা পর্যন্ত চলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনা। সংলাপে নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, জনপ্রশাসন পুনর্বিন্যাস ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেরসহ আরও নানাবিধ আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা এসব উদ্বেগ নিরসনে তার সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলোকে জানান এবং তারা সবাই সহযোগিতার অঙ্গীকার করেন।


সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৪ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

রোববার সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ ২০২৪-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে সেনাবাহিনীর উপস্থিত কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ ২০২৪-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার আইএসপিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রথম পর্বের এই পদোন্নতি পর্ষদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদবির যোগ্য কর্মকর্তারা পরবর্তী পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হবেন।

প্রধান উপদেষ্টা পদোন্নতি পর্ষদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সিক্ত নতুন বাংলাদেশে সকলকে স্বাগত জানান এ সময় তিনি জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সকলকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সশস্ত্র বাহিনী তথা সেনাবাহিনীর শহিদসহ সকল বীর সেনানীদেরও স্মরণ করেন, যাদের আত্মত্যাগ জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

প্রধান উপদেষ্টা পদোন্নতির জন্য অফিসারদের পেশাগত দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণাবলি, শৃঙ্খলার মান, সততা, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্য এবং সর্বোপরি নিযুক্তিগত উপযুক্ততার ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে নির্বাচনী পর্ষদের সদস্যদের নির্দেশনা প্রদান করেন।

এ ছাড়া সৎ, নীতিবান ও নেতৃত্বের অন্যান্য গুণাবলি সম্পন্ন অফিসাররাই উচ্চতর পদোন্নতির দাবিদার বলে তিনি মন্তব্য করেন। তা ছাড়া রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে যে সমস্ত অফিসার সামরিক জীবনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যোগ্য নেতৃত্ব প্রদানে সফল হয়েছেন সেই সব অফিসারদেরকে পদোন্নতির জন্য নির্বাচন করার নির্দেশনা প্রদান করেন।

তিনি বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে দেশকে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা করেছে। ফলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আবারও দেশের মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা অনুষ্ঠানে পৌঁছলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী, চিফ অব জেনারেল স্টাফ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার তাকে স্বাগত জানান।

কর্মব্যস্ততার মাঝেও উপস্থিত হয়ে নির্বাচনী পর্ষদ উদ্বোধন করায় সেনাবাহিনী প্রধান, প্রধান উপদেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সচিবও উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর উপস্থিত কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফটোসেশন করেন এবং পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লিপিবদ্ধ করেন।


গণতন্ত্রের প্রকৃত অনুশীলনের জন্য ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন রয়েছে: জবি উপাচার্য

রোববার জবির কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জবি প্রতিনিধি

গণতন্ত্রের প্রকৃত অনুশীলনের জন্য ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন রয়েছে তবে এর প্রচলিত কালচার পরিবর্তন করতে হবে বলে জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। আজ রোববার জবির কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ছাত্র আন্দোলনে আহত হওয়া জবি শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীদের উদ্যোগে আজ ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার ভাবনা’ শীর্ষক একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্টসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

জুলাই বিপ্লবে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারকারী শহিদ ও আহত শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনের বিষয় আছে যা সময় সাপেক্ষ। অতি দ্রুত দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সংস্কার করে শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা শুরু করার চিন্তা রয়েছে।’ এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করে সহকারী হিসেবে জবি শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন তিনি।

উপাচার্য আরও বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের সমন্বিতভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।’ এ সময় শিক্ষার্থীরা জবির গুণগত ও অবকাঠামোগত বিভিন্ন সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে তাদের অভিমত প্রকাশ করেন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহা. তাজাম্মুল হক এবং পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) ড. কে. এ. এম. রিফাত হাসানসহ আরও অনেকে।


সেপ্টেম্বরে ২৫৩ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকার চোরাচালানি পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত সেপ্টেম্বরে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে ২৫৩ কোটি ৫৬ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকার চোরাচালানি পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আজ রোববার (৬ অক্টোবর) বিজিবির সদর দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।

জব্দকৃত চোরাচালানের মধ্যে রয়েছে- ২৬ কেজি ৭৫৩ গ্রাম স্বর্ণ, ১০ কেজি রূপা, ২ কেজি ৯৯৩ গ্রাম সাপের বিষসহ ২ কোটি ৯৪ হাজার ৪৮২টি কসমেটিক্স, ২৫ হাজার ৪৪২টি শাড়ি, ১১ হাজার ৬২০টি পোশাক, ৪০ হাজার ১৬ বর্গ মিটার থান কাপড়, ১ হাজার ৯৭৮ ঘনফুট কাঠ, ২৪ হাজার ৬৬৭ কেজি চা পাতা, ৪ লক্ষ ৭৭ হাজার ৪৫০ কেজি চিনি, ৪ হাজার ৪১ কেজি সার, ১ লক্ষ ১১ হাজার ৯৮০ ঘনফুট কয়লা, ১২ হাজার ৯০০টি মোবাইলের ডিসপ্লে, ১ হাজার ৯৬০টি চশমা, ৩০ হাজার ৬৮৭ কেজি সুতা ও কারেন্ট জাল।

এ ছাড়াও রয়েছে- ৪৫ হাজার ৬১২ কেজি সুপারি, ২৮ হাজার ৪১৬ কেজি মাছ, ৩ হাজার ৭৭৪ কেজি পেঁয়াজ, ৩৭ হাজার ৬১৭ কেজি রসুন, ৪ হাজার ৬০৪ কেজি জিরা, ১টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ৯টি ট্রাক, ১৭টি পিকআপ, ৭টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৮টি ট্রলি, ১শ ৯১টি নৌকা, ২১টি সিএনজি/ইজিবাইক, ১শ ৮টি মোটরসাইকেল এবং ২১টি বাইসাইকেল। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে দুটি পিস্তল, একটি গান জাতীয় অস্ত্র, ১০টি ককটেল এবং সাত রাউন্ড গুলি।

এ ছাড়াও গত মাসে বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে ১২ লক্ষ ৮২ হাজার ৯৪৩ পিস ইয়াবা, ৯ কেজি ৪১৩ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১৬ কেজি ৮৭৪ গ্রাম হেরোইন, ২৯ হাজার ১৬৪ বোতল ফেনসিডিল, ২০ হাজার ৬৩৮ বোতল বিদেশি মদ, ১৩৭ লিটার বাংলা মদ, ১ হাজার ৩৪৭ ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৯৯৮ কেজি গাঁজা, ৮৯ হাজার ৪৪ প্যাকেট বিড়ি-সিগারেট, ২ লক্ষ ৬২ হাজার ৭০১টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট-ইনজেকশন, ৩ হাজার ৭৭২ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ২৫ কেজি ৪৪৪ গ্রাম কোকেন, ৬৩০ বোতল এমকেডিল/কফিডিল, ৩ লক্ষ ৭ হাজার ৫৮০টি বিভিন্ন প্রকার ঔষধ, ৮৪ লক্ষ ৯ হাজার ৪৮০টি এ্যানগ্রো/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ১৩ বোতল এলএসডি এবং ৩৮ হাজার ৬৫৫টি অন্যান্য ট্যাবলেট।

সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৪১ জন চোরাচালানি এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ২৯৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ২৪ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৬২১ জন মিয়ানমারের নাগরিককে আটকের পর তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

বিষয়:

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান

রোববার জলবায়ু সহিষ্ণু সমাজের জন্য নারী (ফেজ-২) প্রকল্পের অ্যানুয়াল কমিউনিটি অফ প্র্যাকটিস (কপ) নেটওয়ার্ক কনভেনশন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি আজ রোববার মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘ক্ষমতায়ন: জলবায়ু সহিষ্ণু সমাজের জন্য নারী (ফেজ-২)’ প্রকল্পের অ্যানুয়াল কমিউনিটি অফ প্র্যাকটিস (কপ) নেটওয়ার্ক কনভেনশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রয়োজন। উজানের দেশগুলোকে আগে থেকে বৃষ্টিপাত, স্ট্রাকচারের অবস্থা ও পানি ছাড়ার সময় জানাতে হবে। উজান-ভাটির দেশগুলোকে একসাথে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে খাদ্য সংকট এড়াতে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জিরো কার্বন নির্গমন ও লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে অর্থ আনতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নারীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় উল্লেখ করে তিনি অভিযোজনের জাতীয় পরিকল্পনায় নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে সুইডেন দূতাবাসের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন মারিয়া স্ট্রিডসম্যান ও ইউএন উইমেনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলী সিং।

অনুষ্ঠানে ‘উইমেন্স ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক’ ঘোষণা করা হয় এবং পাঁচ নারী উদ্যোক্তাকে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নারীর ভূমিকা শীর্ষক পদক-২০২৪’ প্রদান করা হয়।

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন ও প্রশমন প্রচেষ্টায় নারীদের অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্ব বাড়ানোর কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু সহনশীলতা ও লিঙ্গ সমতার ওপর বিভিন্ন প্যানেল আলোচনা, কর্মশালা ও উপস্থাপনা অনুষ্ঠিত হয়।


সুষ্ঠু নির্বাচন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার

# নির্বাচনের রোডম্যাপ জানতে চেয়েছে বিএনপি # জামায়াত চায় নির্বাচনের পাশাপাশি সংস্কারের রোডম্যাপ # আরও তিন জোট ও একটি দলের সঙ্গে বৈঠক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শনিবার দুপুরে যমুনায় সংলাপে বসে বিএনপির ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নতুন দফা রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ৬ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রতিশ্রুত ৬টি খাতে সংস্কার শুরুর আগে গতকাল শনিবার দ্বিতীয় দফায় দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল দুপুর আড়াইটায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে এর সূত্রপাত। পরে জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, ইসলামী ঐক্যজোট, গণতান্ত্রিক বাম জোট ও এবি পার্টির সঙ্গেও সংলাপ করেন তিনি। বৈঠক শেষে বেরিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে জানান, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের বিষয়ে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং তিনি জানিয়েছেন, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক নম্বর অগ্রাধিকার।

ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে অংশ নেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাউদ্দিন আহমেদ। বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল জানান, বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আগামী জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ জানতে চেয়েছে বিএনপি।

শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সংলাপে নির্বাচন-সংস্কারের, রোডম্যাপ দিতে বলেছি। ইউনিয়ন পরিষদ বাতিলের দাবি জানিয়েছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের কারণে বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি। জাতীয় পরিচয়পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে দেওয়ার যে আইন করা হয়েছে বিগত সরকারের সময়ে, সেটিও বাতিল চেয়েছে বিএনপি। মির্জা ফখরুল বলেন, বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি যাতে নির্বাচন সংস্কার কমিটিতে না থাকে, সেটিও তারা চেয়েছেন। ফ্যাসিবাদের সময় গঠিত সব ইউনিয়ন পরিষদ বাতিলের দাবিও জানিয়েছেন তারা।

বিএনপির মহাসচিব জানান, ২০১৪ সাল থেকে পরপর তিনটি বিতর্কিত ও ভুয়া নির্বাচন করেছে যেসব নির্বাচন কমিশন, সেই কমিশনগুলোর প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যদের আইনের আওতায় আনার কথা বলেছেন তারা। সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককেও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা মনে করি, বিচারপতি খায়রুল হক নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার মূল হোতা। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় দিয়ে এই বিচারপতি নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংসের মূল ভূমিকা পালন করেন। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে অনেকে দোসর হয়ে কাজ করেছে এবং লুটপাট ও মানুষের ওপর নির্যাতনে সহায়তা করেছে। এ ছাড়া গুম-খুন ও গণহত্যায় সহায়তাকারীদের অনেকেই এখনো নিজ নিজ জায়গায় বহাল আছে, অবিলম্বে তাদের সরিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সেসব পদে নিয়োগ করার দাবিও তারা জানিয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জেলা প্রশাসকদের নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের নিয়োগ বাতিল করতে বলেছি। চুক্তিভিত্তিক কিছু নিয়োগ বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যেও দুই-একজন আছেন যারা এই গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবের যে স্পিরিট, সেটাকে ব্যাহত করছেন, তাদের সরানোর কথা বলেছি।’

বিচার বিভাগের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, বিচার বিভাগের হাইকোর্ট বিভাগে এখনো পরিবর্তন হয়নি, বেশির ভাগ নিয়োগ ছিল দলীয় ভিত্তিতে। এদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। অতি দ্রুত পিপি ও জিপি নতুন নিয়োগের কথা বলেছি। তিনি বলেন, ‘যাদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিষয়টা আমরা দেখার জন্য বলেছি। ২০০৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আমলে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা গায়েবি, ভুয়া সাজানো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা প্রত্যাহারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’

কিছু আমলা কিছু পুলিশ কর্মকর্তা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তি এবং মন্ত্রীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। কার সহযোগিতায় পালাচ্ছে সেই বিষয় সরকারকে দেখার কথাও উল্লেখ করেছেন বলে জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আরেকটা বিষয় জোর দিয়ে বলেছি, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে আছেন। ভারতে থেকে তার মাধ্যমে যে সমস্ত প্রচারণা চলছে, এই বিষয়টাতে ভারতের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য; অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভারত সরকারের সঙ্গে কথা বলবে।’

এ ছাড়া গুম-খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে, জাতিসংঘের একটি দল এসেছে, তাদের সেভাবে সহযোগিতা করছে না, দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে কিছু মানুষ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উসকানি দিচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে-এসব প্রসঙ্গ সংলাপে তুলে ধরেছেন বলে জানান বিএনপির মহাসচিব। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে দুটি রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াত। বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে অংশ নিতে যমুনায় আসেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। ঘণ্টাব্যাপী ওই সংলাপ শেষে বেরিয়ে সেখানে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের জামায়াত আমির বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে দুটি রোডম্যাপ চেয়েছে তার দল।

সংলাপে জামায়াতের পক্ষ থেকে সংস্কারকে এক নম্বর অগ্রাধিকার হিসেবে তুলে ধরা হয় বলে জানান শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সংস্কারের সময় কী হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা দুটি বিষয় চেয়েছি, একটা রোডম্যাপ হবে সংস্কারের, আরেকটা নির্বাচনের। সংস্কার সফল হলে নির্বাচন সফল হবে। দুটি বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, ‘৯ অক্টোবর আপনাদের মাধ্যমে সংস্কারের ব্যাপারে আমাদের প্রস্তাবনাগুলো আমরা জাতির সামনে উন্মুক্ত করব। আমরা আমাদের চিন্তা জাতির সামনে তুলে ধরব কী কী সংস্কার এই মুহূর্তে প্রয়োজন, কী কী সংস্কার পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের লাগবে।’ সরকার দেশ শাসনের জন্য আসেনি, দেশ শাসনের সুষ্ঠু পথ বিনির্মাণের জন্য তারা এসেছে বলেও মন্তব্য করেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, ‘সরকারের কাজ হচ্ছে, গত তিনটি নির্বাচনে জাতি বঞ্চিত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে একটা গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করা। এ জন্য কিছু মৌলিক বিষয়ে তাদের সংস্কার করতেই হবে। কী কী মৌলিক বিষয়ে তারা সংস্কার করবে—সংলাপে আমরা সেই বিষয়ে কথা বলেছি।’

শফিকুর রহমান জানান, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে। জনগণ এবং সরকার একসঙ্গে কীভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত করতে পারে; সব ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে- সে বিষয়গুলো নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, বর্তমান যে সরকার আছে, তারা কোন ধরনের পক্ষ-বিপক্ষের মানসিকতা না নিয়ে, নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে দেশকে একটা ভালো পর্যায়ে নিয়ে নির্বাচন দিতে সক্ষম হবেন।’

জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা শুরু থেকে বলে আসছিলাম সংস্কারের জন্য সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে চাই। সেই যৌক্তিক সময়টা কী হবে? এটা নিয়ে অচিরেই আমরা কাজ করব। এটা দেরি হবে না- এভাবে আমরা সামনে আগাতে চাই। দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার জন্য করণীয় কী, এমন একটি প্রশ্ন এসেছিল। আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করেছি।’ শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে সংলাপে অংশ নেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, আ ন ম শামসুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল হালিম প্রমুখ। পরে একইদিনে গণতন্ত্র মঞ্চ, ইসলামী ঐক্যজোট, গণতান্ত্রিক বাম জোট ও এবি পার্টির সঙ্গেও সংলাপ করেন প্রধান উপদেষ্টা। এসব বৈঠকে দলগুলো সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে তাদের মনোভাব ও অবস্থান তুলে ধরে। তবে সবগুলো দল সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় সময় দেবে বলে মত প্রকাশ করে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ, আদিলুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।


ডেঙ্গুতে এক বছরে তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড!

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে ডেঙ্গুর নীরব হানা চলছেই। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে এ বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৮২ জনে। শনিবার এই মৃত্যুর সংখ্যা টপকে গেছে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর রেকর্ড। আর তা দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণের লিখিত রেকর্ডে এরই মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে গেছে। এর অর্থ এডিস মশার কামড়ের ভরা মৌসুমে বিপজ্জনক অবস্থার দিকে এগোচ্ছে দেশ। এর আগে ২০২৩ সালে ১৭০৫ জন মারা গিয়েছিল ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে, যা এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু। তার আগে ২০২২ সালে ২৮১ জন এবং ২০১৯ সালে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল এই রোগে।

আজ একদিনে যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে তাদের দুজন বরিশাল বিভাগের, একজন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং দুজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে মারা গেছেন। এ বছর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৯৭ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বরিশালে ২০ জন, চট্টগ্রামে ২২ জন, ঢাকা বিভাগে ৬ জন, খুলনায় ১০ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। তবে এ বছরে এখনো রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার সারা দেশের হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৯২৭ জন রোগী। নতুন ভর্তি রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৩৬৫ জনে। গত একদিনে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪৪১ জন, ঢাকা বিভাগে ১৬৪ জন, চট্টগ্রামে ৪৯ জন, বরিশালে ৫৫ জন, খুলনায় ৭৬ জন, ময়মনসিংহে ৩৮ জন রাজশাহী বিভাগে ১৮ জন, রংপুর বিভাগে ৩০ জন, বরিশাল বিভাগে ১০২ জন এবং সিলেট বিভাগে ৯ রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে ৩৬৭৯ জন রোগী।

সেপ্টেম্বর মাসে দেশে সবচেয়ে বেশি ২২ হাজার ৫২৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এই মাসে সবচেয়ে বেশি ৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর অক্টোবরের প্রথম পাঁচ দিনে ৪৪২৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে; মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। এর আগে জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১১ জন; যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এপ্রিল মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫০৪ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। মে মাসে ৬৪৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। জুন মাসে ৭৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। জুলাই মাসে ২৬৬৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়, তাদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়। অগাস্টে ৬৫২১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, যাদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৭০৫ জনের মৃত্যু হয় ওই বছর।


মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের জন্য বিমানবন্দরে হবে স্পেশাল লাউঞ্জ: আসিফ নজরুল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান-বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ১৮ হাজার বাংলাদেশিকে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। এটার মানে এই নয় যে নতুন কর্মী। এই ১৮ হাজার মানে নতুন চাকরি না। ১৭ হাজারের কিছু বেশি কর্মী যাদের সব কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও গত ৩১ মের আগে। তাদের সুযোগ দেওয়া হবে।

শনিবার প্রবাসী কল্যাণ ভবনের বিজয় একাত্তর হলে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ বিষয়ে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড এবং মালয়েশিয়ার পার্কেসোর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্যারকে বলেছিলাম এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এই ১৮ হাজার বাংলাদেশিকে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। এখন একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, প্রতিশ্রুতি মানেই কিন্তু নিশ্চিত না। আমরা মালয়েশিয়ায় আমাদের হাইকমিশন এবং আমাদের মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই প্রতিশ্রুতি কার্যকর করতে যত দ্রুত সম্ভব প্রচেষ্টা চালাব। আজ রাতে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে মিটিং আছে, সেখানে আমি বিষয়টি নিয়ে আলাপ করব। আমরা একটি রোডম্যাপ তৈরি করব।’

প্রবাসীদের জন্য বিমানবন্দরে স্পেশাল লাউঞ্জের ব্যবস্থা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে যেসব শ্রমিক ভাই-বোন যাচ্ছেন তাদের জন্য বিমানবন্দরে আলাদা স্পেশাল লাউঞ্জের ব্যবস্থা করব। আমরা জায়গা ঠিক করেছি। সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করি দুই সপ্তাহের মধ্যে হয়ে যাবে। লাউঞ্জ হলে প্রবাসী শ্রমিক ভাই-বোনদের যন্ত্রণা অনেক লাঘব হবে। এর পাশাপাশি অন্যান্য যে ভিআইপি সুবিধা, সেগুলোও থাকবে। বিমানবন্দরে প্রবেশের মুহূর্ত থেকে প্লেনে ওঠার আগ পর্যন্ত যে লাউঞ্জ থাকে সেই পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে তাদের সঙ্গে একজন লোক থাকবে সহায়তার জন্য।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিন, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক হামিদুর রহমান প্রমুখ।


বাংলাদেশের সোনার খনি হচ্ছে ইলিশ সম্পদ: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ফরিদা আখতার। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইলিশ সম্পদ বাংলাদেশের ‘সোনার খনি’ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, দেশের মানুষকে সচেতন করে নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ ধরা থেকে জেলেদের বিরত রেখে এই সম্পদ রক্ষা করতে হবে।

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর লঞ্চঘাটে শনিবার দুপুরে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে জেলেসহ বিভিন্ন পর্যায়ের স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে সচেতনতা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ইলিশ রক্ষায় যদি অভিযান চালিয়ে জেলেদের ধরতে হয়, তবে তার চেয়ে দুঃখজনক ও লজ্জার আর কী হতে পারে? এটা আমরা করতে চাই না, আমরা চাই আপনারা (জেলেরা) নিজে থেকে নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকবেন।’

ফরিদা আখতার বলেন, ‘সুরেশ্বর মাছ ঘাটকে মৎস্য অবতরণকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে যারা মাছের ব্যবসা করেন, তারা নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ মাছ বিক্রি করবেন না। আপনাদের কারণে হয়তো জেলেরা মাছ ধরবে, এতে তাদের বদনাম হবে। এটা আমরা চাই না।’

নৌপুলিশ ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শরীয়তপুরের পদ্মা নদীর ইলিশ রক্ষায় বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের জীবিকা নির্বাহের জন্য সুবিধা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। বর্তমানে পদ্মার জেলেরা যে সুযোগ-সুবিধা পান, তার চেয়ে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন,‘আমাদের মানুষ দামের কারণে ইলিশ খেতে পায় না, আমরা চেষ্টা করব মানুষ যেন ইলিশ খেতে পারেন। দামের কারণে সাধারণ মানুষ ইলিশ খেতে পারবে না, এটা বড় ধরনের অন্যায়। এই অন্যায় বন্ধ করতে আমাদের চেষ্টা করতে হবে। যদি নিষিদ্ধ সময়ে আপনারা ইলিশ ধরা বন্ধ করেন, তবে ইলিশ বৃদ্ধি পেয়ে বাজারে ইলিশের দাম কমে যাবে। দাম কমলে সাধারণ মানুষ ইলিশ খেতে পারবে। দেশের ইলিশ বৃদ্ধি করতে আমাদের পক্ষ থেকে যা করা দরকার, তা আমরা করব। আমি আশা করব, আপনাদের দিকটাও আপনারা করবেন। ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত আপনারা পদ্মার অভয় আশ্রমে ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি করা থেকে বিরত থাকবেন।’

শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সাদিয়া জেরিনের সভাপতিত্বে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, ঢাকা মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহের মহাপরিচালক অনুরাধা ভদ্র, পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জেলে ও মৎস্যজীবীদের মাঝে বক্তব্য দেন।


আ.লীগের নেতারা আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই পালিয়েছেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিগত সরকারের (আওয়ামী লীগ) নেতারা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট পালিয়ে গেছেন। এই তিন দিনে পালিয়েছেন। এখন পালানো কঠিন হয়ে গেছে। বর্ডার এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’

রাজধানীর উত্তরা এপিবিএন সদর দপ্তরে শনিবার বিকেলে শহীদ মীর মুগ্ধের স্মরণ সভা, মিলাদ মাহফিল, মীর মুগ্ধ ভবন ও এপিবিএন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রবেশ তোরণ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজধানীসহ সারা দেশে যেসব মামলা হচ্ছে তার মধ্য অনেককে অকারণে আসামি করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন পুলিশ বাদী হয়ে কোনো মামলা করছে না। এই মামলাগুলো করছে সাধারণ জনগণ। তারা ১০ জনের নাম দিচ্ছেন, হয়ে যাচ্ছে ১০০ জনের নামে মামলা। অনুসন্ধানে যে দোষী সাব্যস্ত হবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ওবায়দুল কাদের ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সাবেক প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়েছে। তারা কোথায় আছেন, তারা কেন গ্রেপ্তার হচ্ছেন না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদিকরা) আমাদের তথ্য দিন। আমাদের দায়িত্ব তাদের গ্রেপ্তার। আপনাদের দায়িত্ব আমাদের তথ্য দেওয়া। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে, আপনারাও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করুন। পলাতকদের তথ্য পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তথ্য প্রদানের জন্য প্রয়োজনে খরচের ব্যয়ভার বহন করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের চিকিৎসা সরকার করবে। প্রয়োজনে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে, কোনো কিছুতে কার্পণ্য করা হবে না।’


দেশের ৩২ হাজার মণ্ডপে নিরাপত্তা দেবে ২ লক্ষাধিক আনসার

মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের ৩২ হাজার ৬৬৬টি পূজামণ্ডপে ২ লাখ ১২ হাজার ১৯২ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। আনসার সদস্যরা আগামী ৮ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ছয় দিন পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শনিবার বিকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আনসার বাহিনীর প্রধান।
মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সকল নিরাপত্তা সংস্থার মূল্যায়নের ভিত্তিতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় পূজামণ্ডপগুলোতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ এবং সাধারণ হিসেবে আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অধিক গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে ৮ জন এবং গুরত্বপূর্ণ মণ্ডপে ৬ জন ও সাধারণ মণ্ডপে ৬ জন করে আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়া বিশেষ বিবেচনায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপের মধ্য থেকে ১৫ হাজার ৩২টি পূজামণ্ডপে ৫৩ হাজার ১৪৮ জন আনসার-ভিডিপি সদস্য ৬ ও ৭ অক্টোবর পর্যন্ত কাজ করবে।
পূজার নিরাপত্তায় এ বছর প্রথমবারের মতো স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে ব্যাটালিয়ন আনসার উল্লেখ করে তিনি বলেন, সারা দেশে ৬৪টি জেলায় যেকোনও আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যাটালিয়ন আনসারদের ৯২টি টিম মোবাইল স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। প্রতিটি টিমে ছয় জন করে সদস্য থাকবে।

মহাপরিচালক বলেন, পূজায় আট দিন নিয়মিত নিরাপত্তা টহলের মাধ্যমে সব পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা সমন্বয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালনকালে জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জরুরি সেবা প্রদানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন।
ডিজি বলেন, এ বছর প্রথমবারের মতো মোতায়েন করা সদস্যদের প্রাপ্য ভাতা পূজা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিতরণ করা হবে, যা গুরুত্বপূর্ণ ডিউটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের আরও বেশি উৎসাহ ও মনোবল বাড়াতে সহায়তা করবে। এছাড়া শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের স্বার্থে বাহিনীর সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাড়া অন্য সব সদস্যের ছুটি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিটি পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জেনেছি অনেক পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়নি। সেসব পূজামণ্ডপে আনসার সদস্যরা অধিক গুরুত্বসহকারে দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পূজামণ্ডপে ও আশপাশে কোনও ঘটনা ঘটলে যেন সঙ্গে সঙ্গে তা ভিডিও করে আমাদের কাছে পাঠানো হয়। এসব ভিডিও আমরা সংগ্রহ করবো, যাতে কোনও ধরনের গুজব ছড়িয়ে না পড়ে।
ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পর আনসার সদস্যদের বিদ্রোহের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, অঙ্গীভূত আনসার সদস্যদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আমাদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই তদন্ত কমিটির প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমরা প্রায় ১৩ হাজার ৮০ জন আনসার সদস্যকে সাময়িক স্থগিত করে রেখেছিলাম। তাদের স্থগিত করার পর আমরা তাদের কোনো ডিউটি দেইনি। তবে আমরা এই ১৩ হাজার ৮০ জনকে আরও যাচাই-বাছাই করেছি। আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা বা তেমনভাবে সম্পৃক্ততা ছিল না, এমন ৪ হাজার ৬৬৯ জনকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় এনে কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করেছি।
তিনি আরও বলেন, এখনও ৮ হাজার ৬১১ জন আনসার সদস্যকে সাময়িক স্থগিত করে রাখা হয়েছে। আর আন্দোলনের সময় যারা খুবই আগ্রাসী এবং হিংসাত্মক ভূমিকা পালন করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৪৪৭ জন আনসার সদস্য গ্রেপ্তার রয়েছেন। উচ্ছৃঙ্খল আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আনসার মহাপরিচালক আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব সুষ্ঠুভাবে ও আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপন করা সম্ভব হবে। এজন্য দেশের সব নাগরিককে এই সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সময়োচিত তথ্য প্রদানের মাধ্যমে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখতে সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি।


banner close