শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫
১৮ আশ্বিন ১৪৩২
ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান গ্রহণ

পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের যুগে বাংলাদেশ

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ফাইল ছবি
আপডেটেড
৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরএনপিপি) জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার ইউরেনিয়াম হস্তান্তরের এই অনুষ্ঠান (গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি) সম্পন্ন হয়। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে এলিট ক্লাবে নাম লেখাল বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহারকারী রাষ্ট্র হিসেবেও স্বীকৃতি পাচ্ছে বাংলাদেশ।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভের কাছ থেকে আরএনপিপি কর্তৃপক্ষের হয়ে এই তেজস্ক্রিয় জ্বালানি গ্রহণ করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। এ সময় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসিও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় বলেন, বাংলাদেশ আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। এই পরামাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার আরেকটি পদক্ষেপ।

তিনি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়েছে। আমরা নিউক্লিয়ার যুগে প্রবেশ করেছি।’

বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুপ্রতিম দেশ রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকায় শেখ হাসিনা তাঁর সরকার, দেশবাসী এবং তাঁর ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে পুতিনকে ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশ-রাশিয়া বন্ধুত্ব অটুট থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুষ্ঠানস্থল থেকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।

অনুষ্ঠানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ২০২৪ সালে প্রথম ইউনিটে ১,২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৬ সালে চালু হবে। দুটি ইউনিটে মোট ২,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। বাংলাদেশ রাশিয়ার বন্ধু রাষ্ট্র। শুধু ১৯৭১-ই নয়, রাশিয়া সবসময়ই বাংলাদেশের বন্ধু থাকবে।

বাসস জানায়, প্রেসিডেন্ট পুতিনের বক্তৃতার উদ্ধৃতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এইমাত্র আমরা প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছ থেকে শুনেছি ২০২৬ সালে আমাদের দ্বিতীয় ইউনিট এবং ২০২৪ সালে প্রথম ইউনিট চালু হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। অচিরেই প্রথম ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। আর এই বিদ্যুৎ হবে অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব।’

এর আগে তাঁর সরকার ২০২৩ সালের মধ্যে প্রথম ইউনিট থেকে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল বলেও জানান তিনি।

‘অচিরেই প্রথম ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে,’ যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য আমরা পৃথক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করেছি। যেকোনো ধরনের দুর্যোগে আমাদের এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে দিকটা খেয়াল রেখে এই প্লান্টের ডিজাইন প্রণয়ন এবং নির্মাণকাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। তা ছাড়া, ব্যবহৃত জ্বালানি (স্পেন্ট ফুয়েল) ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি সই করেছি। রাশিয়ান ফেডারেশন এসব স্পেন্ট ফুয়েল তাদের দেশে ফেরত নিয়ে যাবে বলে আমাদের কথা দিয়েছে।

রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসি, রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

শুরুতে আরএনপিপি-এর প্রথম ব্যাচের পারমাণবিক জ্বালানি তৈরি ও বিতরণের ওপর একটি অডিও-ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়, যেখানে আরএনপিপি প্রকল্প পরিচালক এবং এনপিসিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. শওকত আকবর আরএনপিপি-এর পরিচিতি তুলে ধরেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মো. আলী হোসেন। পরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষ থেকে রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তরের জন্য জ্বালানি সরবরাহের সনদ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের হাতে জ্বালানি সরবরাহের একটি মডেল তুলে দেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু, জাতীয় সংসদের উপনেতা এবং দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক গণভবন প্রান্তের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে এই শক্তিকে শান্তির জন্য ব্যবহারের এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির বাস্তবায়নের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, পরমাণু শক্তি আমরা শান্তি রক্ষায় ব্যবহার করব। আমরা বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্রের সাধারণ ও সম্পূর্ণ নির্মূল এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির বাস্তবায়নের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছি। আমরা ‘বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন’ প্রণয়ন করেছি এবং একটি স্বাধীন পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছি।

এই কর্তৃপক্ষ ‘আইএইএ’-এর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিটি স্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে আমরা সরকার গঠন করি। ২০২০ সালের মধ্যে ‘সবার জন্য বিদ্যুৎ’ সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে ‘ভিশন স্টেটমেন্ট ও পলিসি স্টেটমেন্ট অন পাওয়ার সেক্টর রিফর্মস’ প্রণয়ন ও অনুমোদন করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা জ্বালানি নীতিতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করি। ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প’ বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করি। ‘বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্ল্যান-২০০০’ প্রণয়ন করি। ‘আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা’ ‘আইএইএ’-এর সহযোগিতা চাই। ‘আইএইএ’-এর আন্তরিক সহায়তায় আমরা একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনাও গ্রহণ করি এবং একটি বিশেষ কমিটিও করে দেয়া হয়।

এরপর সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এ প্রকল্প আর আগায়নি এবং ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এই রূপপুর পরমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প আবারো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার, বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রূপপুর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করি। বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়া এটি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে। তা ছাড়া ‘আইএইএ’ শুরু থেকেই আমাদের নানাভাবে সহায়তা করে আসছে। এ জন্য আমি রাশিয়ান ফেডারেশন সরকার, আইএইএ এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁর রাশিয়া সফরে পুতিনের সঙ্গে মস্কোতে বৈঠক এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের কথা স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালের ২ অক্টোবর প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছি। এখন পর্যন্ত আপনার সর্বাত্মক সহযোগিতায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।’

তিনি বন্ধুরাষ্ট্র ভারত এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও ধন্যবাদ জানান এই নির্মাণ কাজে সহযোগিতার জন্য।

তিনি ২০১৭ সালে ‘আইএইএ’-এর তৎকালীন মহাপরিচালক ইউকিও আমানোর আমন্ত্রণে ভিয়েনা সফরের সময় ‘আইএইএ’-এর সদর দপ্তরে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে সে সময় এ প্রকল্পে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে তাদের সার্বিক সহায়তা ও মনিটরিং করার আহ্বানের উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, সেই থেকে ‘আইএইএ’ আমাদের এ বিষয়ে সার্বিক সহায়তা প্রদান করছে। এরপর ২০১৭ ও ২০১৮ সালে আমি এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের কংক্রিট ঢালাইয়ের উদ্বোধন করি। ২০২১ ও ২০২২-এ এই কেন্দ্রের যথাক্রমে ইউনিট-১ ও ইউনিট-২-এর রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল স্থাপন করি। আজ এই কেন্দ্রে পারমাণবিক জ্বালানি সংযুক্ত হলো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রেটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় জনবলকে রাশিয়ান ফেডারেশন যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। যেহেতু বন্ধুপ্রতিম ভারতেও একই রকম একটি প্রকল্প হচ্ছে-সে জন্য আমাদের কিছু জনবলকে প্রশিক্ষণের জন্য আমরা ভারতেও পাঠিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াকে প্রস্তাবিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন জাতির পিতা। সে অনুযায়ী কিছু কাজও হয়েছিল। দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর এই মেগা প্রকল্পটিসহ সব জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড থেমে যায়।


ইউএনজিএ সফরে গণতন্ত্র ও মানবিক সংহতির অঙ্গীকার তুলে ধরেছেন অধ্যাপক ইউনূস: প্রেস সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের দায়িত্বশীল বৈশ্বিক ভূমিকাকে আরও সুদৃঢ় করেছে। এতে গণতান্ত্রিক শাসন, মানবিক সংহতি ও গঠনমূলক আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি নতুনভাবে প্রতিফলিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।সূত্র : বাসস

আজ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি প্রধান উপদেষ্টার ইউএনজিএ সফরের সাফল্যগুলো তুলে ধরেন।

শফিকুল আলম জানান, অধ্যাপক ইউনূস গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে ইউএনজিএ-র উচ্চপর্যায়ের অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব দেন। সেখানে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে বক্তব্য রাখেন, বিশ্বনেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন এবং গণতন্ত্র, মানবিক নেতৃত্ব ও ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেন।

প্রেস সচিব বলেন, ইউএনজিএ-র ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থার প্রতি অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি স্বাধীন, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে বৈশ্বিক মহলকে আশ্বস্ত করেন যে বাংলাদেশ জনগণ ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের লালিত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় প্রস্তুত।

শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সফরে তিন রাজনৈতিক দলের ৬ প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘এটাই প্রথমবার এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ প্রতিনিধিদল একসঙ্গে সফরে যোগ দিল। তারা কূটনীতিক, প্রবাসী নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব যোগাযোগ বিশ্বের কাছে শক্তিশালী বার্তা পৌঁছে দিয়েছে যে গোটা বাংলাদেশই গণতান্ত্রিক, স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে একসঙ্গে এগোচ্ছে।’

বিশ্বনেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার কৌশলগত বৈঠক প্রসঙ্গে আলম বলেন, অধ্যাপক ইউনূস উচ্চপর্যায়ের একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন, যা বাংলাদেশের বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব জোরদার ও যৌথ অগ্রাধিকারের প্রসারে ভূমিকা রাখে।

তিনি জানান, ইতালি, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো ও ভুটানের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে গণতান্ত্রিক শাসন, বাণিজ্য, জলবায়ু সহনশীলতা ও মানব উন্নয়নের বিষয় গুরুত্ব পায়।

আলম আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপো গ্রান্ডি, ইউনিসেফ নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল, জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল রাবাব ফাতিমা, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমা এবং আইএমএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার সঙ্গে বৈঠক করেন।

এছাড়া অধ্যাপক ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নিয়ে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূতের সঙ্গেও তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হয়, যেখানে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও বহুপাক্ষিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ভূমিকা উঠে আসে।

রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক নেতৃত্ব প্রসঙ্গে আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সফরের মূল বিষয় ছিল রোহিঙ্গা ইস্যু। সেখানে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এক মিলিয়নের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষের প্রতি অব্যাহত মানবিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়। জাতিসংঘ সংস্থা ও দাতা দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সংকট যেন বৈশ্বিক মনোযোগ থেকে হারিয়ে না যায় সে আহ্বান জানান। প্রেস সচিব জানান, এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি আনতে সক্ষম হন।

শফিকুল আলম বলেন, জবাবদিহি ও উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরতে অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘকে অনুরোধ জানান বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের অগ্রগতির একটি স্বাধীন মূল্যায়ন পরিচালনা করতে। এ অনুরোধ ঢাকার অর্থনৈতিক যাত্রাপথে আস্থা ও গঠনমূলক আন্তর্জাতিক মূল্যায়নের প্রতি উন্মুক্ততা প্রকাশ করে।

প্রেস সচিব জানান, ইউএনজিএ সফরে বিদেশে কর্মসংস্থান ও শ্রমশক্তি রপ্তানির নতুন সুযোগও উন্মোচিত হয়। কসোভো, আলবেনিয়া ও ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনায় বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য শ্রমবাজার সম্প্রসারণের বিষয়ে সম্ভাবনা খোঁজা হয়েছে। তিনি বলেন, এসব সুযোগ প্রবাসী আয় বাড়াতে ও নতুন অংশীদার দেশের সঙ্গে জনগণের পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সহায়ক হবে।


গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটক করায় নিন্দা বাংলাদেশের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজার উদ্দেশ্যে যাওয়া মানবিক সহায়তাকারী নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটকের ঘটনায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজ আটকের ঘটনা আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে ঢাকা।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়।

অবিলম্বে ইসরায়েলকে নিঃশর্তভাবে আটক সব মানবিক সহায়তা কর্মী ও অ্যাক্টিভিস্টদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলছে, অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে গণহত্যা বন্ধ ও মানবিক অবরোধ তুলে নিতে ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মানবিক সহায়তা বহনকারী নৌবহরটি ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি বৈশ্বিক সংহতির প্রতিনিধিত্ব করে। ইসরায়েলি বাহিনীর উচিত গাজায় বেসামরিক জনগণের জন্য বাধাহীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ এই চরম দুর্দশা ও ভোগান্তির সময়ে ফিলিস্তিনের জনগণের সঙ্গে অবিচল সংহতি বজায় রাখার কথা পুনরায় ব্যক্ত করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়।

প্রায় ৪৫টি জাহাজ নিয়ে গঠিত‌‌ ‌‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহর গত মাসে স্পেন থেকে গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফিলিস্তিনপন্থী রাজনীতিবিদ ও মানবাধিকারকর্মীরা রয়েছেন। তাদের মধ্যে সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও আছেন। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ওপর ইসরায়েলের আরোপিত অবরোধ ভাঙাই ছিল এই নৌবহরের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি যুদ্ধে ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। গত বুধবার থেকেই ইসরায়েলি নৌবাহিনী ফ্লোটিলার বহরে থাকা নৌযান আটক করতে শুরু করে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শত মত মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিক ও সাংবাদিকদের বহনকারী গাজা অভিমুখী ফ্লোটিলার ৪৫টি জাহাজের প্রায় সবগুলোই আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই মানবাধিকার কর্মীরা ইসরায়েলের আরোপিত গাজার সামুদ্রিক অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করছিলেন।


ভাষাসৈনিক আহমদ রফিকের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক

আপডেটেড ৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:৫২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভাষাসৈনিক, কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আহমদ রফিক ছিলেন ভাষা আন্দোলনের এক অগ্রগণ্য সাক্ষী ও সংগ্রামী কণ্ঠস্বর। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন অনন্য কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও রবীন্দ্রতত্ত্বচর্চার দিশারি। শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনার মাধ্যমে তিনি বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন।

রবীন্দ্রচর্চার ক্ষেত্রে তার অবদান দুই বাংলায় সমানভাবে শ্রদ্ধার আসন পেয়েছে। কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাঁকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেছে, যা তাঁর বিদগ্ধতার স্বীকৃতি।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘দেশের সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার জগতে আহমদ রফিকের প্রয়াণ এক অপূরণীয় ক্ষতি। দৃষ্টিশক্তি ও শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও তিনি শেষ দিন পর্যন্ত জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে গেছেন।’

মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তিনি বলেন, ‘আহমদ রফিকের জীবন ও কর্ম ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে তাকে স্মরণ করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, শুভানুধ্যায়ী ও সাহিত্য-সংস্কৃতিমনা জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।সূত্র -বাসস


সুমুদ ফ্লোটিলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুহি আখতার

আপডেটেড ৩ অক্টোবর, ২০২৫ ০২:৩৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

শরণার্থী ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মানবিক সহায়তার কাজ করে আসছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ অধিকারকর্মী রুহি লরেন আখতার। তার সংস্থা ‘রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড ব্যানানাস’ (আরবিবি) মূলত বাস্তুচ্যুত ও যুদ্ধপীড়িত মানুষের মধ্যে খাদ্য-ত্রাণ বিতরণসহ নানা সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে তিনি গাজার উদ্দেশে যাত্রা করা মানবিক ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র একজন সহযাত্রী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক পোস্টে দেখা গেছে, রুহি আখতার ফ্লোটিলায় যোগ দিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন এবং গাজার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভয়কে পাশ কাটিয়ে মানবতার বার্তা পৌঁছে দেওয়াই তাদের লক্ষ্য।
সারা বিশ্বের মানুষের নজর এখন এই নৌবহরের দিকে। ফিলিস্তিনের গাজার মানুষের জন্য ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৪০টির মধ্যে অন্তত ২৪টি নৌযান এখনো গাজার উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ট্র্যাকার অনুসারে, এসব নৌযান এখনো ইসরায়েলি বাহিনীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই অগ্রসর হচ্ছে।
এসবের মধ্যে ‘মিকেনো’ নামের একটি জাহাজ গাজার আঞ্চলিক জলসীমায় প্রবেশ করেছে বলে জানা গেছে। রুহি এবং তার সহযাত্রীরা ভয়কে পাশ কাটিয়ে মানবতার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে অটল।
রুহি আখতারের পিতার নাম কাপ্তান মিয়া। তিনি বিলাত প্রবাসী বাংলাদেশি।রুহি যুক্তরাজ্যের মরপেথে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং বর্তমানে এলসউইক ওয়ার্ডে বসবাস করছেন। তিনি একজন মানবিক সহায়তা কর্মী এবং অধিকারকর্মী। গাজার মানুষের জন্য জরুরি সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি চলমান ইসরায়েলি অবরোধের প্রতিবাদ জানাতে তিনি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
১৮ সেপ্টেম্বর তিনি তিউনিসিয়ার গামার্থ বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেন। তার নৌকায় ১২ জন রয়েছেন।
তারা তিউনেসিয়া, স্পেন, গ্রিস ও ইতালি থেকে রওনা হওয়া ৪০টিরও বেশি নৌযানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। রুহি ২০২৪ সালে তার অসাধারণ বৈশ্বিক মানবিক কাজের জন্য যুক্তরাজ্যের নর্থ ইস্ট বাংলাদেশি অ্যাওয়ার্ডসে ‘বাংলাদেশি পার্সন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারে ভূষিত হন।
তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি গাজার উদ্দেশ্যে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছি, কারণ অন্যায়ের মুখে নীরব থাকা কোনো সমাধান নয়। বহুদিন ধরে ফিলিস্তিনিরা খাদ্য, পানি, জমি, মৌলিক নিরাপত্তা এবং চলাচলের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। একজন মানবিক কর্মী হিসেবে আমি দেখেছি, এক টুকরো রুটি বা সামান্য বিশুদ্ধ পানি কিভাবে সবচেয়ে অন্ধকার সময়ে আশা ফিরিয়ে আনতে পারে। এই নৌবহর হলো সংহতির প্রতীক, যা মনে করিয়ে দেয় বিশ্ব তাকিয়ে আছে, এবং আমরা গাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে থাকব যতদিন না তারা মুক্ত হয়। কারণ আমাদের কেউই মুক্ত নই, যতদিন না ফিলিস্তিন মুক্ত।’
রুহি ও তার সংস্থা আগে গ্রিস, গাজা এবং অন্যান্য এলাকায় বাস্তুচ্যুত ও যুদ্ধপীড়িত মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য ও সহায়তা বিতরণ করেছে। সংস্থার অনেক সদস্যই নিজে বাস্তুচ্যুত বা সংঘাত-প্রবণ এলাকার মানুষ, অর্থাৎ শরণার্থী। রুহি ন্যায়বিচারের পক্ষে দৃঢ় কণ্ঠস্বর। গাজার উদ্দেশ্যে নৌবহরে যোগ দেওয়ার আগে তিনি এবং তার সাথীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে ত্রাণের প্যাকেজ প্রস্তুত করেছেন।
এদিকে ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে জানান, আটক হওয়া নৌযানগুলোতে অন্তত ২০১ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে শুধু স্পেন থেকেই ছিলেন ৩০ জন, ইতালির ২২ জন, তুরস্কের ২১ জন ও মালয়েশিয়ার ১২ জন। গাজা থেকে ১২৯ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরে অবস্থানকালে ইসরায়েলি বাহিনী ফ্লোটিলায় বাধা দেয়।
তাদের অন্তত আটটি নৌযান থামানো হয়—দেইর ইয়াসিন, হিউগা, স্পেক্টার, আদারা, আলমা, সিরিয়াস, আরোরা ও গ্রান্ডি ব্লু। তবে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোট ১৩টি নৌযান আটকানো হয়েছে।
‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ গাজার মানুষের জন্য সমুদ্রপথে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ। বহরে প্রায় ৪৪ দেশের ৫০০ মানুষ রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়ামের নাগরিকসহ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধি, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা।


তরমুজ-বাঁশি-বেগুন ও লাউসহ এনসিপিকে ৫০ প্রতীকের তালিকা ইসির

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

৫০টি প্রতীক থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) নিজেদের মার্কা বাছাই করতে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন সহায়তা শাখার উপ-সচিব মো. রফিকুল ইসলাম দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে ইসির দেওয়া ৫০টি প্রতীকের তালিকায় নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ী শাপলা অন্তর্ভুক্ত নেই।

চিঠিতে বলা হয়েছে, এনসিপি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে, যা প্রাথমিক পর্যালোচনায় বিবেচিত হয়েছে। আবেদনপত্রে প্রতীক হিসেবে পছন্দের ক্রমানুযায়ী শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোন উল্লেখ করা হয়; যা পরে পরিবর্তন (শাপলা, লাল শাপলা বা সাদা শাপলা) করা হয়। উল্লেখ্য, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৯ (১) অনুযায়ী প্রার্থিত প্রতীক শাপলা অন্তর্ভুক্ত নেই।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার বিধান উল্লেখ করে চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই আদেশ বা বিধিমালার অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কোনও দল মনোনীত সব প্রার্থীর জন্য নির্ধারিত প্রতীক থেকে পছন্দ করা যেকোনও একটি প্রতীক বরাদ্দ করা হবে এবং এইভাবে বরাদ্দ করা প্রতীক দলটির জন্য সংরক্ষিত থাকবে, যদি না তারা পরবর্তী সময়ে নির্ধারিত প্রতীকগুলোর মধ্য থেকে অন্য কোনও প্রতীক লাভের জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করে। দলের নিবন্ধনের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৯(১)-এ উল্লিখিত প্রতীকের তালিকা থেকে বরাদ্দ হয়নি এমন একটি প্রতীক পছন্দ করে নির্বাচন কমিশনকে আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে চিঠিতে।

যে ৫০টি প্রতীক থেকে এনসিপিকে তাদের মার্কা পছন্দ করতে বলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে– আলমারি, খাট, উটপাখি, ঘুড়ি, কাপ-পিরিচ, চশমা, দালান, বেগুন, চার্জার লাইট, কম্পিউটার, জগ, জাহাজ, টিউবওয়েল, টিফিন ক্যারিয়ার, টেবিল, টেবিল ঘড়ি, টেলিফোন, ফ্রিজ, তবলা, বক, মোরগ, কলম, তরমুজ, বাঁশি, লাউ, কলস, চিংড়ি, থালা, বেঞ্চ, লিচু, দোলনা, প্রজাপতি, বেলুন, ফুটবল, ফুলের টব, মোড়া, বালতি, কলা, বৈদ্যুতিক পাখা, মগ, মাইক, ময়ূর, মোবাইল ফোন, শঙ্খ, সেলাই মেশিন, সোফা, স্যুটকেস, হরিণ, হাঁস ও হেলিকপ্টার।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি প্রথমে শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোনের যেকোনও একটি প্রতীক তাদের দেওয়ার জন্য আবেদন জানায়। তার কিছু দিন পর সে আবেদনে সংশোধন এনে শাপলা, সাদা শাপলা বা লাল শাপলা দেওয়ার আবেদন করে।

এদিকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ইসি সচিব বলেছেন, এনসিপি শাপলা প্রতীক পাচ্ছে না। আমাদের ১১৫টার যে শিডিউল করা হয়েছে সেখানে শাপলা প্রতীক নেই। নিয়মটা হলো, সংরক্ষিত প্রতীক যেটা আছে সেটার ভেতর থেকে একটা নিতে হবে। সে প্রতীকে যদি শাপলা না থাকে তাহলে দেওয়ার সুযোগটা কোথায়?

গত ২২ সেপ্টেম্বর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, আমরা আজও শাপলা, সাদা শাপলা, লাল শাপলা চেয়েছি। এই সিদ্ধান্ত থেকে সরছি না। এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু এই তিনটি প্রতীকের মাধ্যমেই নিবন্ধন হতে হবে।


বিশ্বখ্যাত প্রাণিবিজ্ঞানী ড. জেন গুডলের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বন্ধু, বিশ্বখ্যাত প্রাণিবিজ্ঞানী ড. জেন গুডলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বন্ধু, বিশ্বখ্যাত প্রাণিবিজ্ঞানী, প্রাইমাটোলজিস্ট, নৃতত্ত্ববিদ ও পরিবেশ সংরক্ষণকর্মী ড. জেন গুডলের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

আজ এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় বন্ধু ড. জেন গুডলের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তিনি ছিলেন বিশ্বখ্যাত প্রাণিবিজ্ঞানী, প্রাইমাটোলজিস্ট, নৃতত্ত্ববিদ ও পরিবেশ সংরক্ষণকর্মী।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিরলস কর্মী হিসেবে জেন শান্তি, টেকসই উন্নয়ন, ন্যায়বিচার এবং পৃথিবীর সব প্রাণের পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘প্রকৃতি আজ তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কণ্ঠস্বরকে হারাল। এ ক্ষতি আমাদের হৃদয়ে গভীর বেদনা তৈরি করেছে। আমি আজ তাঁর অসামান্য অর্জন ও অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি, যা তাঁর পার্থিব জীবনশেষের পরও দীর্ঘকাল ধরে প্রভাব বিস্তার করবে।’

বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু জেন নব্বইয়ের দশকে এই দেশে এসে গ্রামীণ ব্যাংকের নারীর ক্ষমতায়ন কার্যক্রমে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন এবং আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নিজের কাজে সেই নীতিমালা প্রয়োগ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘তিনি আমাদের দেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। জেন আমাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করেছেন এবং আমাদের কাজের প্রশংসা করেছেন। এমনকি সম্প্রতি জুন ২০২৫-এ অনুষ্ঠিত সামাজিক ব্যবসা দিবসের সম্মেলনেও তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তাঁর সমর্থন ও অনুপ্রেরণার জন্য আমি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। তিনি শুধু আমাকে নয়, পৃথিবীর কোটি মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছেন’।

তিনি আরো বলেন, ‘তোমার আত্মা শান্তিতে থাকুক, জেন। পৃথিবী তোমাকে গভীরভাবে মিস করবে।’ সূত্র : বাসস


উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দুর্গা পূজা উদযাপিত হচ্ছেঃ ডিএসসিসি প্রশাসক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির ও হরিজন সেবক সমিতি আয়োজিত মিরন জিল্লা সিটি কলোনি পূজা মণ্ডপ আজ রাতে পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো: রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।

পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এর পক্ষ থেকে শারদীয় শুভেচ্ছা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও ডিএসসিসি প্রশাসক। এছাড়া, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আরতি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও হরিজন সম্প্রদায়ের সাথে মতবিনিময় করেন।

পরিদর্শনকালে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বলেন, "সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ আমাদের বাংলাদেশ। জুলাই পরর্বতী এই বাংলাদেশে ধর্মের নামে, গোষ্ঠীর নামে, সম্প্রদায়ের নামে কোনো বৈষম্য থাকবে না।" তিনি বলেন, মাননীয় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার নির্দেশক্রমে প্রতিটি জেলায় হরিজন সম্প্রদায়ের আবাসন নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া, হরিজন সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়ন ও সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্তির জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

ডিএসসিসি প্রশাসক বলেন, "ডিএসসিসি এলাকায় ১৬৯ টি পূজা মণ্ডপে উৎসবমুখর পরিবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজা উৎযাপিত হচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, পূজা নির্বিঘ্ন করতে মণ্ডপ ও তৎসংলগ্ন এলাকার রাস্তা মেরামত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মশক নিধনের বিশেষ ব্যবস্থা ও আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, ডিএসসিসিতে কর্মরত হরিজন সম্প্রদায়ের সদস্যদের জন্য দশতলাবিশিষ্ট চারটি ভবন নির্মাণসহ সকল নাগরিক সুবিধাদি নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি জানান।

পূজা পরিদর্শনে ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মোঃ মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।


রাতে নয়, এবারের ভোট দিনে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হবে। সবাই ভোট দিতে পারবেন। ভোট হবে দিনের বেলা, রাতের বেলা নয়। নতুন নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পুরোনো ঠিকানায় চলে যাব। আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। সুযোগ সব সময় আসে না। একবার সুযোগ আসতে ৫৪ বছর লেগে যায়। আবার কবে সুযোগ আসবে জানি না। তাই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যই শক্তি, শক্তিই শান্তি।’
রাজধানীর বকশিবাজারে গতকাল বুধবার সকালে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার ২৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ৫৪ বছর পর সুযোগ এসেছে। এ সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করা যাবে না।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘অতি আধুনিক শিক্ষার নামে মাদ্রাসা শিক্ষায় কোরান-হাদিস থেকে সরে গিয়ে কোণঠাসা হয়ে গেছে। মনে রাখতে হবে মাদ্রাসা শিক্ষা বিশেষায়িত শিক্ষা। আধুনিকতার পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষার মূল ভিত্তি থাকতে হবে কোরান এবং হাদিস, ফেকাহ।’
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আলিয়া পদ্ধতির মাদ্রাসার অবদান স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মতো। অনেক যোগ্য ব্যক্তি এখানে তৈরি হয়েছেন। আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আরবি, ইংরেজি জানলে বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও বৃত্তি পাবেন।’
রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে যুগ যুগ ধরে আলিয়া মাদ্রাসা ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করি। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির নামে দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করতে হবে। এ সময় ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমদের আল্লাহ এক, কোরান এক, কেবলা এক। এই মিল আমাদের এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসবে।’


বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ সৃষ্টি 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন নৌবাহিনী পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার আজ বৃহস্পতিবার সকালে জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় অবস্থান করছে।

জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের সকাল ৯টার বার্তায় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের উপকূলের পূর্বদিকে এবং কলকাতা থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। সেখানে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৬৫ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ায় ঘণ্টায় ৮৩ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড হয়েছে।

আবহাওয়া সংস্থাটি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘শক্তি’। আজ রাতেই এটি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার মধ্যবর্তী উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর এখনো একে ‘গভীর নিম্নচাপ’ হিসেবেই গণ্য করছে।

ঘূর্ণিঝড় সরাসরি বাংলাদেশ অতিক্রম করবে না। তবে এর প্রভাবে বাংলাদেশসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের উপরে এখনও বর্ষা মৌসুম চলছে। বর্ষা মৌসুম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাধারণত বঙ্গোপসাগরে পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার মতো অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করে না। ফলে বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পূর্বেই ঘূর্ণিঝড় শক্তি সৃষ্টি হওয়া খুবই ব্যতিক্রম একটি ঘটনা। এখানে উল্লেখ্য যে এই বছর বর্ষা মৌসুমে বঙ্গোপসাগরে রেকর্ড সংখ্যক মৌসুমি লঘুচাপ, নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে একের পর এক, যা ছিল বঙ্গোপসাগরে রেকর্ড।


দিনের তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা, অপরিবর্তিত থাকবে রাতে 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।

আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

পাশাপাশি সারাদেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘন হয়ে প্রথমে নিম্নচাপে এবং পরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।

আজ ভোরে এটি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে এবং আরও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

সকালে ঢাকায় ঢাকায় বাতাসের গতি ছিল দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিমি। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।

গতকাল (বুধবার) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নরসিংদীতে ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ৫১ মিনিটে।


সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলি হানা, কেমন আছেন শহিদুল আলম?

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

শহিদুল আলম কেমন আছেন- সারা দেশের মানুষের মনে এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাঁক খাচ্ছে। গাজামুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় বাংলাদেশ থেকে যোগ দিয়েছেন আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম। বুধবার (১ অক্টোবর) রাতে এই নৌবহরে হানা দিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এরই মধ্যে ১৩টি জাহাজ থেকে গ্রেটা থানবার্গসহ দুই শতাধিক কর্মী-সমাজসেবীকে বন্দি করেছে ইসরায়েল।

জানা গেছে, শহিদুল আলম কনসায়েন্স নামে একটি বড় জাহাজে রয়েছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেটি আটক হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

ফেসবুকে শহিদুল আলমের সবশেষ পোস্ট দেখা যাচ্ছে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আগে (এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত)। ওই পোস্টে তিনি ইসরায়েলকে ইঙ্গিত করে ইংরেজিতে লেখেন, ‘আমরা বারবার যাত্রা করবো। কারণ এই জলসীমা তোমাদের নয়, ওই ভূখণ্ডও তোমাদের নয়; যতক্ষণ না ফিলিস্তিন স্বাধীন হচ্ছে।’

এর আগে একাধিক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন শহিদুল আলম। এর একটিতে বুধবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, আমার ‘ড্রোন ওয়াচ’ দেখাচ্ছে- আরও এক ঘণ্টা যেতে হবে, যেখানে আমরা সাধারণত সম্ভাব্য আক্রমণের প্রতি নজর রাখি। আমার ওয়াচে এর আগে একটি তুর্কি জাহাজ দেখা গেছে, তবে এখন পর্যন্ত বিপজ্জনক কিছু ঘটেনি।

আরেক ভিডিওতে তিনি বলেন, আজ সন্ধ্যায় সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে, বজ্রপাত হয়, বিপদ আসে। আমরা দ্রুত ঝড়ের আগে যেতে চেষ্টা করি। তখন আরেকটা ব্যাপারও ছিল। আমরা জানতে পারি, আমাদের সবচেয়ে সামনের যে ফ্লোটিলা আলমা, তাতে ইসরায়েলি জলদস্যুরা হামলা শুরু করে। আমরা এই উত্তাল ঝড়ের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। সবার পেছনে সবচেয়ে বড় জাহাজে রয়েছি আমরা। কাজেই আমাদের ওপর কী আসবে তা এখনো বোঝা যাচ্ছে না। ইসরায়েল যেটা করছে, অন্যদের ওপর আক্রমণ করে আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে।


দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) যোগদান শেষে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল ৯টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বুধবার, বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা ১০ মিনিটে নিউইয়র্ক ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা। সেসময় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে বিদায় জানান।


আজ বিজয়া দশমী, দেবী বিসর্জন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আজ বিজয়া দশমী। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাঁচ দিনব্যাপী শারদ উৎসবের শেষ দিন। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। দশমী মানেই দেবীদুর্গার ফিরে যাওয়া, আর ভক্তদের অপেক্ষা আরও একটি বছরের।

এদিন সকাল থেকেই বিহিতপূজার মাধ্যমে পালিত হচ্ছে দশমীপূজা। প্রতিমা নিরঞ্জনের পর আলিঙ্গনের মাধ্যমে প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানানোর দিন বিজয়া দশমী।

বিহিতপূজা শেষে দর্পণ-বিসর্জন দেওয়া হবে। বিজয়া দশমীতেই দুর্গা কৈলাসে গমন করেন, তাই দুর্গাকে বিদায় জানাতে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠবেন ভক্তরা। অন্তরে দেবী মাকে রেখে বিদায়ের সুর বাজবে ঢাক ও শঙ্খের ধ্বনিতে। মণ্ডপে মণ্ডপে পুরোহিতের মন্ত্র পড়ার পাশাপাশি ভক্তদের চোখে থাকবে বেদনার জল।

এরপর পূজার সব কার্যক্রম শেষে দেবীদুর্গাকে দেওয়া হবে বিসর্জন। দশমীতে দেবী মর্ত্যলোক ছাড়বেন দোলায় চড়ে। বিসর্জন উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বাড়তি নিরাপত্তা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

মহা ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে গত রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) শুরু হয় পাঁচ শারদীয় দুর্গোৎসব। দশমীর বিহিতপূজা ও দর্পণ-বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় শারদীয় দুর্গোৎসব।


banner close