রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ এবং বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অন্যান্য পরিষেবার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন আকাশ পথে যাত্রী চলাচলের ক্ষেত্রে সুযোগসুবিধা, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে।’
শনিবার ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং’ উপলক্ষ্যে শুক্রবার দেয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এই টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এক নতুন যুগে প্রবেশ করল। এর ফলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক যোগাযোগ, টেকসই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বিমান পরিবহন সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রয়োজনে আকাশপথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা জরুরি। এ লক্ষ্যে সরকার ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার আয়তনের নতুন তৃতীয় টার্মিনাল ভবনটিতে অত্যাধুনিক ফ্যাসিলিটিজসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ এয়ার ট্রাফিক মুভমেন্টের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে, যা দেশের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমি মনে করি। নবনির্মিত এ টার্মিনালের মাধ্যমে বছরে অতিরিক্ত ১৬ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে যা যোগাযোগ ও পরিবহন ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুখী-সমৃদ্ধ, উন্নত, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের দূরদর্শিতা, সঠিক দিক-নির্দেশনা এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। আমি আশা করি, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল দেশের যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাবে, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত করবে এবং নতুন নতুন গন্তব্য বাংলাদেশের আকাশপথের সঙ্গে যুক্ত হবে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণের পাশাপাশি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় নতুন আমদানি-রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স নির্মাণের ফলে আকাশপথে ব্যবসা যোগাযোগ বৃদ্ধিসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। বিমান পরিবহন খাতের উন্নয়ন ও এ খাতকে যুগোপযোগী করার নিমিত্ত সংশ্লিষ্ট সকলে নিষ্ঠার সাথে কাজ করবেন- এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা।’
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল আকাশ পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সফলতা বয়ে আনবে।
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনসহ ১০ দফা দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন আরএকে সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশ তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাধা দিলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় শ্রমিকরা।
রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনা বাজার এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন কারখানার কয়েক শ’ শ্রমিক।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও বিক্ষোভ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া অব্যাহত ছিল। এ ঘটনায় মহাসড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষাভরত শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থানা ও শিল্প পুলিশের বহু সদস্য এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। তাদের সরাতে টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে।’
নারী জাগরণ ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে সারাদেশে ‘জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। দেশব্যাপী এ কর্মসসূচির আয়োজন করে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের। প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে গতকাল শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জুলাইয়ের চেতনায় দেশ গড়তে ঢাকাসহ ৬৪ জেলা-উপজেলায় ভার্চুয়ালি লাখো কন্ঠে শপথ বাক্য পাঠ করান সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। দৈনিক বাংলার ব্যুরো, জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত;
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজগঠনে লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর নওগাঁর সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।
জেলা সমাজসেবা কর্যালয়ের উপপরিচালক নূর মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে- সিভিল সার্জন ডা: আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবনুল আবেদীন, নওগাঁ মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আমেনা খাতুন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মাহফুজ আলম শ্রাবণের মা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নওগাঁয় নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বি বক্তব্য রাখেন।
পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি এবং জেলা শিশু পারিবারের সদস্যদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
হারুনার রশীদ বুলবুল, কেশবপুর (যশোর): জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে যশোরের কেশবপুরে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার কেশবপুর উপজেলা প্রশাসন, মহিলাবিষয়ক ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে সকাল ১০টায় স্থানীয় প্রাথমিক শিক্ষক মিলনায়তনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. রেকসোনা খাতুনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক, সমাজ সেবা অফিসার মো. রোকনুজ্জামান, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রুপালি রানী, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোছা. আনজু মনোয়ারা, প্রেসক্লাব কেশবপুরের সভাপতি ওয়াজেদ খান ডবলু, নিউজ ক্লাবের সাধারন সম্পাদক হারুনার রশিদ বুলবুল, এনসিপির উপজেলা শাখার আহবায়ক সম্রাট হোসেন, ও সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার প্রভাত কুমার দাস প্রমুখ। সভার শুরুতে জুলাই আন্দোলনে শহীদের স্বরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর শপথ বাক্য পাঠ করান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. রেকসোনা খাতুন ।
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, আজ একটি মহান দায়িত্ব নিতে যাচ্ছি। যা শুধু একাট রাষ্ট্রীয় কর্তব্য নয় বরং একটি মানবিক ও নৈতিক আহবান। একটি যত্নশীল নতুন দেশ গড়ার অঙ্গীকার।
অঙ্গীকার করছি, দেশের সকলকে এক সাথে নিয়ে দারিদ্র্যমুক্ত, সহিংসতা মুক্ত, মানবিক ও সাম্যের দেশ গড়ব। কারণ সরকার মানে আমি, আর রাষ্ট্র মানে আমরা।
দেশের সকল নাগরিককে সামাজিক সুরক্ষার চাদরে ঢেকে দিতে আমরা বদ্ধ পরিকর। সেবার অভিগমত্য নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব।
শেষে ২৩০টি অসহায় পরিবারের মাঝে ৩০ কেজি চালের কার্ড বিতরণ করা হয়।
বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি দুটি পর্বে দেখানো হয়। এরমধ্যে প্রথম পর্বে ভিডিও কনফারেন্সে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজগঠনে লাখো কন্ঠে শপথ পাঠের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে সংযুক্ত থাকা এবং দ্বিতীয় পর্বে সমাজগঠনে নারী ও শিশুর সুরক্ষা বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারুফ আফজাল রাজন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাগাতিপাড়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রিয়াজুল ইসলাম, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শিরিন আখতার, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর একেএম আফজাল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান, উপজেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি আরিফুল ইসলাম তপু ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নাটোর জেলা শাখার সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মোনায়েম ইসলাম রুমি সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থার নেতারা।
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতাসহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা।
এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর পাংশায় জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কণ্ঠে শপথ বাক্য পাঠ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার পাংশা উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এ শপথ বাক্য পাঠ করান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা তহমিদা খানম, সমবায় কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতিনিধি ডা. শর্মি আহম্মেদ এবং দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল ইসলাম।
শপথ পাঠ শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের সুবিধাভোগী নারীদের মাঝে একটি করে ফলদ ও ভেষজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়। পরে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
আমিনুল ইসলাম বনি, রাজশাহী: রাজশাহীতে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে প্রশাসন ও সমাজ সেবা কার্যালয়ের আয়োজনে এবং উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় অনুষ্ঠানের শুরুতেই জুলাই শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে করা হয় মোনাজাত। পরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি, বিভাগীয় কমিশনার রাজশাহী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলে মোহাম্মদ শাহজাহান, পিপিএম (বার), পিএইচডি, উপমহাপুলিশ পরিদর্শক, রাজশাহী রেঞ্জ রাজশাহী। ফারজানা ইসলাম পুলিশ সুপার রাজশাহী। সভাপতিত্ব করে আফিয়া আখতার, জেলা প্রশাসক, রাজশাহী।
জামাল হোসেন পান্না, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া):
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান গতকাল শনিবার উপজেলা পরিষদের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়।
নবীনগর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও মহিলা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজনের প্রথম পর্বে ভিডিও কনফারেন্সে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজগঠনে লাখো কন্ঠে শপথ পাঠের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে সংযুক্ত থাকা এবং দ্বিতীয় পর্বে সমাজগঠনে নারী ও শিশুর সুরক্ষা বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাজীব চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. রুহুল আমিন, নবীনগর প্রেসক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন শান্তি সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থার নেতারা।
নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। তবে সে অনুযায়ী আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশকে যাতে আমরা উন্নতির জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে পারি সেই দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে এবং আমাদেরকে একতাবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি শনিবার সকালে নরসিংদী জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠন: সামাজিক নিরাপত্তা, নারী ও শিশুর মর্যাদা সুরক্ষা এবং সমাজের মানবিক দর্শন শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন।
নরসিংদী জেলা প্রশাসন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত উক্ত আলোচনা সভায় নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ আমিরুল হক শামীম, নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কলিমুল্লাহ, নরসিংদী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নরসিংদী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেন। এছাড়া আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নরসিংদী জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মাসুদুল হাসান তাপস ও নরসিংদী মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক সেলিনা আক্তার ও নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা জাহান সরকার প্রমুখ।
কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি :গাজীপুরের কাপাসিয়ায় জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে "সেবা মেলা ও লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ" অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল শনিবার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী একযোগে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন থেকে অনুষ্ঠানটি ভার্চুয়ালি দেশব্যাপী প্রচার করা হয়। এতে কাপাসিয়া উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে পরিষদ মিলনায়তনে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধা, শহীদ পরিবার, আহত যোদ্ধা, সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের প্রতিনিধিগণ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন উপস্থিতি ছিলেন। অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করেন যোদ্ধা শামিমা আক্তার শিমু, শহীদ জাকিরের স্ত্রী জান্নাতুন নাঈম। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ডা. তামান্না তাসনীম।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন এবং উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এবং বিআরডিবি কর্মকর্তা দিলারা আক্তার মনি ফকিরের পরিচালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নূরুল আমিন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আউলিয়া খাতুন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আতিকুর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল আরিফ সরকার, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. এজাজ মিয়া, বিআরডিবি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সেলিম হোসেন আরজু, গাজীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা শেফাউল হক, গাজীপুর জেলা মহিলা দলের সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি শাহনাজ পারভীন শিখা প্রমুখ।
জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে উপস্থিত সকলে দাঁড়িয়ে শপথ বাক্য পাঠ, সাংস্কৃতিক পর্বে গান ও কবিতা আবৃত্তি, উপজেলা পরিষদ চত্বরে বৃক্ষ রোপন, সমাজসেবা কার্যালয়ের সুবিধাভোগী ৬ টি এতিমখানা মাদরাসাকে অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।
এইচ এম মোজাহিদুল ইসলাম নান্নু, পটুয়াখালী: জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজগঠনে লাখো কন্ঠে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত। গতকাল শনিবার পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম শাহাজাদা এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ খালেদুর রহমান মিয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফফাত আরা জামান উর্মি, সহকারী কমিশনার ভূমি চন্দন কর, জেলা জামাতের আমির অ্যাড. নাজমুল আহসান, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের আহবায়ক মো. জাকির হোসেন।
এসময় জুলাই আগষ্টের গনঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতারা এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আবু তাহের ভূঁইয়া, ফেনী :
ফেনীতে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কন্ঠে শপথ বাক্য পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে । গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সহায়তায় শপথ বাক্য পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভার্চুয়ালি সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান সমাজকল্যাণ ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
শপথ বাক্য পাঠ শেষে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সামাজিক নিরাপত্তায় নারী-শিশুর মর্যাদা, সুরক্ষা এবং সাম্যতার মানবিক দর্শন বিষয়ক বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী। শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা শাহ মুহাম্মদ কায়সারের পরিচালনায় বক্তব্য দেন সিভিল সার্জন ডা: রুবাইয়াত বিন করিম, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নাসরীন আক্তার, জামায়াতের আমির মুফতি আবদুল হান্নান, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-সম্পাদক আজিজ উল্যাহ আহমদী, ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিয়া চৌধুরী সাবা, ছাত্র প্রতিনিধি প্রিন্স মাহমুদ আজিম, ওমর ফারুক, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি জিয়া উদ্দিন। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইসমাইল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরীন কান্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফি উল্যাহ, সমাজসেবা বিভাগের সহকারী পরিচালক শহীদুল ইসলাম ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা ও জুলাই সম্মুখসারির যোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জুলাই পূনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণলয়ের উদ্যোগে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের আয়োজনে গতকাল শনিবার উপজেলার পরিষদ হলরুমে এ শপথ গ্রহণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী, থানা অফিসার ইনচার্জ সোলাইমান শেখ, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, উপজেলা প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম পুলক, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, উপজেলা জামায়াতের সাধারন সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বুলবুল, দৌলতপুর সরকারি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়ার আলী, ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে রকি আহমেদ সহ সাংবাদিকবৃন্দ, শিক্ষক ছাত্র ছাত্রী ও উপজেলা সামাজসেবা কর্যালয়ের সুবিধা ভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে তিনটি দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে জুলাই পুনর্জাগনে সমাজ গঠনে সৈয়দপুরে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। এসব দপ্তর হলো উপজেলা প্রশাসন, সমাজসেবা ও মহিলাবিষয়ক।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্থানীয়ভাবে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-ই-আলম সিদ্দিকী। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য বলেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরুন্নাহার শাহাজাদী, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ, উপজেলা প্রকৌশলী এমএম আলী রেজা রাজু, সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আখতার শাহিন, উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জাতীয় নাগরিক পার্টির উপজেলা আহ্বায়ক আজাদ হোসেন, সমাজসেবী অধ্যাপক শওকত হায়াৎ শাহ প্রমুখ।
এর আগে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুর্শিদের ভার্চুয়ালি বক্তব্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই শ্রবণ করেন। একই সঙ্গে উপদেষ্টা পরিচালিত শপথ বাক্য অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত সবাই পাঠ করেন।
গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তুহিন হোসেন এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোর্শেদ, সমাজ সেবা কর্মকর্তা এখলাস মিয়া, প্রেসক্লাবের সভাপতি জয়নাল আবেদীন, শহীদ ইমনের ছোট ভাই হাফেজ সুজন মিয়া, শহীদ হৃদয়ের ছোট বোন জেসমিন আক্তারসহ জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা। উপস্থাপনা করেন কৃতি শিক্ষার্থী ফারিয়া জাহান মুন ।
কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী) প্রতিনিধি : জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে শপথ গ্রহণ করলেন নারী ও পুরুষরা। শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে দেশব্যাপী জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কন্ঠে শপথ পাঠ অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিযষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। এতে সভাপতিত্ব করেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. মহি উদ্দিন। এ অনুষ্ঠান হতে ভার্চুয়ালি শপথ পাঠের সময় কিশোরগঞ্জ উপজেলায় অংশগ্রহণকারীরা শপথ গ্রহণ করেন। এসময় উপস্থিতিদের চোখে মুখে ফুটে উঠে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনের স্বপ্ন। এতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার জাকির হোসেন। আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: নীল রতন দেব, কিশোরগঞ্জ এপি ম্যানেজার সাগর ডি কস্তা, প্রেস ক্লাব সভাপতি ও দৈনিক আমার দেশ কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি আবু হাসান শেখ, দি রেড জুলাইয়ের কিশোরগঞ্জ কমিটির আহবায়ক মোতালেব হোসেন, জুলাই অভ্যূথ্থানে আহত সিয়াম হোসেন ও জয়িতা মরিয়ম বেগম।
ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা জুলাই পুনর্জাগরণ সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের আয়োজনে জুলাই পূনঃ জাগরণ সমাজ গঠনে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম।
উপস্থিত ছিলেন ভেড়ামারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনোয়ার হোসাইন, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বিশ্বাস, উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম, সহকারী প্রকৌশলী (জনস্বাস্থ্য) মো. আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. জহির উদ্দিন, জাতীয় মহিলা সংস্থার প্রতিনিধি মো. আসমান আলীসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বিভিন্ন সুবিধাভোগী, মহিলা ও শিশুবিষয়ক অধিদপ্তরের সুবিধাভোগী, জুলাই কন্যা, জুলাই গণঅভ্যুত্থান অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোছাদ্দেক হোসাইন, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে এবং উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের সহযোগিতায় জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কন্ঠে শপথ পাঠ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল
শনিবার উপজেলা পরিষদ হল রুমে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম। উপজেলা মহিলাবিষয়ক অফিসের কর্মকর্তা দিদারুল আলম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রিদওয়ানুল করিম। বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল, লোহাগাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি এম সাইফুল্লাহ চৌধুরী ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার মো: জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর : ফরিদপুরে জুলাই পুনর্জাগরনে সমাজ গঠনে লাখো কন্ঠে শপথ পাঠ যথাযোগ্য মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমাজ সেবা ও মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুর্শিদ। জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক এ এস এম আলী আহসান এর সভাপতিত্বে এবং শহর সমাজ সেবা অফিসার এস এম সুজাউদ্দিন রাশেদের সঞ্চালনায় অনুষ্টানে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)মো: সোহরাব হোসেন, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল, ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসান , উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান, জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক মাশউদা হোসেন, প্রবীণ সমাজসেবক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এম এ সামাদ, অধ্যাপক শেখ আব্দুস সামাদ , মহানগর বিএনপির আহবায়ক এএফএম কাইয়ুম জঙ্গি, জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় সূরা সদস্য অধ্যাপক আব্দুত তাওয়াব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কাজী রিয়াজ, এস ডি সির নির্বাহী পরিচালক কাজী আশরাফুল হাসান, এ সময় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং তাদের ভোটকেন্দ্রে ফিরিয়ে আনা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। বিশেষ করে নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে নির্বাচন কমিশন।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করার চ্যালেঞ্জ তো বহুবিধ। নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে দেখা দিচ্ছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, মানুষের আস্থা ফেরানো। নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে, নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি।’
‘দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করা। ভোট দিতে না পেরে মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তাই নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা চাই, সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে আসুক। বিশেষ করে নারী ভোটারদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার হচ্ছে উল্লেখ করে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনের আগে যথাসম্ভব সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে প্রযুক্তির অপব্যবহার। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রিস্টাইলে যাচাই-বাছাই না করে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।’
‘এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) পদ্ধতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে হুবহু নকল করা হচ্ছে একজনের বক্তব্য। এজন্য দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। আধুনিক যুগে এটি অস্ত্রের চেয়েও ভয়াবহ। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় সমস্যা।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সন্ত্রাস দমন এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলবে। আমরা চাই স্বচ্ছ নির্বাচন। রাতের আঁধারে কোনো কার্যক্রম নয়, দিনের আলোতেই সব কিছু করতে চাই যাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়। আমরা জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই।’
সব অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য মিডিয়াকর্মীদের সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে সিইসি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা ওয়াদাবদ্ধ। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। একটি নির্বাচনে বহুবিধ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ভোটারদের ফিরিয়ে আনার জন্যই আমরা কাজ করছি।’
মতবিনিময় সভায় খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের আহতদের চিকিৎসায় পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে ঢাকায় সফররত চীনের উহান থার্ড হাসপাতালের একটি মেডিকেল টিম।
শনিবার (২৬ জুলাই) চীনা দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। আহতদের চিকিৎসায় যা যা প্রয়োজন, তার সবকিছুই করতে চায় তারা।
বাংলাদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপ করে দলটি ক্ষতস্থানে সংক্রমণ রোধ এবং আহতদের নিয়মিত যত্ন নেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে পরামর্শ দিয়েছে।
তারা আহতদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ, ক্ষতস্থান পরিষ্কার, ড্রেসিং পরিবর্তন, ধমনীতে পাংচার এবং অস্ত্রোপচারে সহায়তা প্রদানসহ নানা কাজে অংশ নেন।
এ ছাড়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের চিকিৎসকদের সঙ্গেও বাংলাদেশের চিকিৎসকদের যৌথ পরামর্শে অংশ নেয় চীনা মেডিকেল দলটি।
সাগরের নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এতে উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি, উপকূলীয় জেলাগুলো ও চরে এক থেকে তিন ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস দেখা দেতে পারে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর এমন তথ্য জানিয়েছে। এ সময়ে দেশের চারটি বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৬টায় ঝাড়খণ্ড ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
মৌসুমী বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
এতে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
এদিকে আবহাওয়ার এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার মধ্যরাতে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন ঝাড়খণ্ডে অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরসমূহের উপর দিয়ে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এছাড়া অমাবস্যা ও নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর ১-৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান স্মরণে জুলাই মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃক আজ শনিবার (২৬ জুলাই) বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ডিএসসিসি অঞ্চল-৭ এর ৭১ নং ও ৭২ নং ওয়ার্ডে (গ্রীন মডেল টাউন - মান্ডা এলাকা) পরিচালিত এ অভিযানে কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া এঁর উপস্থিতিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ০৬:০০ ঘটিকায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের ছয় শতাধিক কর্মী এবং স্থানীয় জনগণ এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের অংশ হিসেবে ড্রেন, নর্দমা ও ফুটপাতের ময়লা পরিষ্কার ও মশার ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দা, রেড ক্রিসেন্ট এবং বিডি ক্লিন সদস্যদের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক একটি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
পরিচ্ছন্নতা প্রোগ্রাম চলাকালীন সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, নগরবাসীর পরিচ্ছন্নতা অভ্যাস পরিবর্তনের লক্ষ্যে বিশেষ অভিযান পরিচালনা শুরু করেছিলাম, তার ইতিবাচক ফলাফল দৃশ্যমান হচ্ছে। সচিব আরও বলেন, অভিযানসমূহ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে সিটি কর্পোরেশনের সম্পর্ক উন্নয়ন ও অঞ্চলভিত্তিক প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা প্রণয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, "নাগরিক সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নই আমাদের অভিযানের মূল উদ্দেশ্য।" ডিএসসিসির ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে নাগরিকরাই সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন অঞ্চলভিত্তিক এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয় প্রধান এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। কয়েক দিনের মধ্যেই তথ্য কমিশন গঠন-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী একজন প্রধান তথ্য কমিশনার এবং দু’জন তথ্য কমিশনার নিয়ে এই কমিশন গঠিত হবে। দু’জন তথ্য কমিশনারের মধ্যে ন্যূনতম একজন হবেন নারী।
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৫ জনে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে জারিফ ফারহান নামের ১৩ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী মারা যায় বলে জানান স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন। পরে সোয়া দশটার দিকে মাসুমা নামের আরেক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
নিহত জারিফ মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। শ্বাসনালীসহ শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে সে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিল।
বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন শুক্রবার বিকালে জানিয়েছিলেন, চিকিৎসাধীন পাঁচ শিক্ষার্থীর অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’। এরপর আজ সকালেই এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর কথা জানানো হয়।
অন্যদিকে, এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মাসুমা নামের ওই নারীর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
দুজনের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হলেও লাশদুটি এখনও তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি বলে জানানো হয়েছে।
এ নিয়ে বার্ন ইনস্টিটিউটে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ জনে, আর সবমিলিয়ে এ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলো ৩৫ জনের।
সোমবার দুপুরে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটি ভবনের মুখে বিধ্বস্ত হয়। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত যে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই শিশু।
অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দীনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বার্ন ইনস্টিটিউটের অনেকেই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। সুস্থ ১৫ জনকে আজ শনিবার থেকেই ছাড়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার অন্যতম সহযোগী ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। তার বহুল বিতর্কিত রায়ই শেখ হাসিনাকে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করার সুযোগ করে দিয়েছিল।
দেশের গণতন্ত্র ধ্বংসকারী সাবেক এই প্রধান বিচারপতি এখন কারাগারে। গত বৃহস্পতিবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া এই বিচারকের গ্রেপ্তারে দেশজুড়ে গণতন্ত্রমনা মানুষের মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস বইছে। এছাড়া বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সরকারকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি খায়রুল হককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মোতে, সুশাসন ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে এই গ্রেপ্তার জাতির ইতিহাসে বড় সাফল্যের ঘটনা হিসাবে জায়গা করে নেবে। একইসঙ্গে এ গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়ে গেল-অন্যায় করে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কেউ কোনোদিন রেহাই পাবে না।
জানা গেছে, বিচারপতি খায়রুল হকের নামে এখন পর্যন্ত চারটি মামলা আছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী ও নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় পৃথক দুটি মামলা রয়েছে। এছাড়া দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় আরও দুটি মামলা আছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের হাত ধরেই দেশের বিচারাঙ্গন কলুষিত হয়। শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট শাসক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি সব অপকর্মের বীজ বপন করে গেছেন। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ রুদ্ধ করাসহ খালেদা জিয়াসহ জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা এবং জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও বাতিল করে দেন। এর ফলে শেখ হাসিনা ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে বিনা ভোটে টানা তিনবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেয়ে যান। এজন্য আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসনকে দীর্ঘায়িত করার ক্ষেত্রে খায়রুল হককে ‘জনক’ বলা যেতে পারে। এর বিনিময়ে তিনি আওয়ামী লীগ আমলে আইন ও রীতি লঙ্ঘন করে বেআইনিভাবে নানা সুবিধাও নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। প্রধান বিচারপতি থাকাকালে ত্রাণ তহবিলের টাকায় নিজের চিকিৎসা করে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি।
রাজনৈতিক একটি বিষয়কে আদালতের আওতাধীন করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক নন বলে রায় দিয়েছিলেন এবিএম খায়রুল হক।
এরপর দুজনকে ডিঙিয়ে দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে এবিএম খায়রুল হক শপথ নেন ২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় পরের বছর ২০১১ সালের ১৭ মে অবসর গ্রহণ করেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে খায়রুল হক ছিলেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটলে ১৩ আগস্ট তিনি আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না।
এছাড়া বিতর্কিত একাধিক বিচারপতিকে শপথ পড়ানো, আগাম জামিনের এখতিয়ার কেড়ে নেওয়া, খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তিনি দেশের বিচারব্যবস্থাকে চরমভাবে বিতর্কিত ও ধ্বংস করে গেছেন।
সর্বোচ্চ আদালতে দলবাজির ন্যক্কারজনক নজির সৃষ্টি করে গেছেন বিচারপতি খায়রুল হক। দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও অনুভূতির বিপরীতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারে তিনি সর্বোচ্চ আদালতে কাজ করে গেছেন। তার দেওয়া একটি পূর্ণ ও একটি সংক্ষিপ্ত রায়ের অজুহাতে শেখ হাসিনা সংবিধান সংশোধনের নামে গোটা সংবিধান তছনছ করে দেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধান থেকে উঠিয়ে দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার ইঙ্গিতে বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে মামলার বিতর্কিত রায় দেন। অবসরে যাওয়ার কিছুদিন আগে ২০১১ সালের ১০ মে তিনি ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার সংক্ষিপ্ত আদেশটি দেন। রায়ে বলা ছিল, ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে আগামী দুটি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে। অথচ সুদীর্ঘ ১৬ মাস পর ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত রায়ের চূড়ান্ত লিখিত আদেশে বিচারপতি খায়রুল হক কেবল নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা যেতে পারে বলে নির্দেশনা দিয়ে পূর্ণাঙ্গ লিখিত রায়ে স্বাক্ষর করেন। লিখিত এই রায়ে পরবর্তী দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকবে—বিষয়টি ছিল না। অবসরে গিয়ে বিচারপতি খায়রুল হক নীতিনৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে নিজের দেওয়া আদেশ কোনো রকম অতিরিক্ত শুনানি ছাড়াই পাল্টে দেন, যা ছিল নজিরবিহীন এবং বিচারদর্শনের গুরুতর লঙ্ঘন। এতে তিনি বিচারপতির যে শপথ নিয়েছিলেন তা লঙ্ঘন করেছেন। একটি স্বৈরাচারী রেজিমকে টিকিয়ে রাখতে যা যা খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায়, তার সবই তিনি করেছেন।
২০১১ সালের ৩০ জুন বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী সংসদে পাস হয়। এ আইনের ২০ ও ২১ ধারাবলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দলীয় সরকারের অধীনে প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ উন্মুক্ত করে। এর ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে ‘বিনা ভোটের নির্বাচন’, ২০১৮ সালে ‘রাতের ভোট’ এবং ২০২৪ সালে ‘ডামি নির্বাচনের’ প্রহসন করেন। খায়রুল হকের রায়ের প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ওই তিনটি তামাশার নির্বাচনের আগের তিন মাস নিজেকে কথিত নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার দাবি করতেন।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তাকে আদালতে হাজির করা হলে শুনানিতে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানিয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম বলেন, তিনি হাসিনার ক্রীতদাস ছিলেন। হাসিনার নির্দেশে বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছেন। সেই অবিচারের ফলে তিনি আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন। হাসিনার সব মামলায় তাকে যুক্ত করা হোক সেই প্রত্যাশা করছি।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার বলেন, তিনি কলঙ্কিত প্রধান বিচারপতি। তার কারণে দীর্ঘ ১৭ বছর হাজার হাজার মানুষ নির্যাতন, গুম ও হত্যার শিকার হয়েছেন। তিনি প্রধান বিচারপতি হওয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হাজার হাজার মানুষকে জীবন দিতে হয়। তার কারণেই শেখ হাসিনা স্বৈরাচার হয়েছেন।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, এমন একজন লোক কিভাবে প্রধান বিচারপতি হয় সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি প্রধান বিচারপতির জায়গাটা কলঙ্কিত করেছেন। তিনি ছোট থেকেই অনেক পাপী ছিলেন। শুনানি শেষে একদল আইনজীবী তার ফাঁসি চেয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় অনেককেই বলতে শুনা যায়, একজন বিচারপতি হিসেবে খায়রুল হক যে অপরাধ করেছেন তাকে কমপক্ষে একশ বার ফাঁসি দেওয়া উচিত। তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশে যত রাজনৈতিক হত্যা ও গুম হয়েছে তার জন্য বিচাপতি খায়রুল হক দায়ী। কেননা, তিনি শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হওয়ার লাইসেন্স দিয়ে গেছেন।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চাঁদপুরে ফুলে উঠেছে মেঘনা। জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা বেড়েছে প্রায় ৩ ফুট। এতে করে মেঘনার উপকূলীয় এলাকার সড়ক, পুকুর ও বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। ফলে ঘরে-বাইরে স্থানীয়দের কষ্ট বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সাপ আতঙ্ক।
চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে জানা গেছে, জোয়ারের সময় মেঘনার পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটারের ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, গতকাল (শুক্রবার) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মেঘনার পানির উচ্চতা বাড়ে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গতকাল বিকাল থেকেই চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার নদী অববাহিকার ৩০টি চর এলাকায় পানি বেড়েছে। এ ছাড়াও চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পুরান বাজার এলাকায় নদীর পানি সড়কের সমান উচ্চতায় রয়েছে। ফলে বাঁধটিও রয়েছে হুমকির মুখে।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় শহরের পুরান বাজার রনাগোয়াল ও পশ্চিম শ্রীরামদী এলাকার দিনমজুর মরন ঢালী, ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ও ভুলু দাসসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে।
তারা বলেন, বৃহস্পতিবার পানি কিছুটা কম ছিল। তবে আজ (শুক্রবার) বিকাল থেকে বাতাসের তীব্রতার সঙ্গে সঙ্গে নদীর ঢেউ এবং পানির উচ্চতাও বেড়েছে। এ সময় আমাদের বাসাবাড়ি, দোকানেও পানি উঠে যায়। পানি বাড়ায় দ্রুত দোকানের মালপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা মনির শেখ, সাজ্জাদ হোসেন ও শহিদুল্যাহ মাস্টারসহ কয়েকজন জানান, ফেরিঘাট এলাকায় পানি রাস্তা ছুঁই ছুঁই। আশপাশের নীচু সড়কে পানি উঠে গেছে।
সদরের চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ গাজী বলেন, ‘সেচ প্রকল্পের বাইরে সব বাড়ি, উঠান, রাস্তা ও পুকুরে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে। আমার পুকুরের ওপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মাছগুলো ভেসে যাচ্ছে। কী করমু, নিরুপায়! হঠাৎ বানের পানি আইসা পড়ল!’
তিনি আরও বলেন, ‘বাতাসের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই পানি দ্রুত বাড়ছে। এতে মাছচাষীদের বেশি ক্ষতি হচ্ছে। কারণ অনেকে এখনও বেড় দিতেও পারে নাই। পাকা সড়কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, সেচ প্রকল্পের বাইরের মাছচাষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের মাছ সংরক্ষণের জন্য সতর্ক করা হচ্ছে।
হাইমচর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা আশরাফুল হক জানান, জুলাইয়ের মাসিক সভায় মৎস্যচাষীদের আগেভাগেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে যে ২৪ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পাবে। এরপরও উপজেলা মৎস্য বিভাগ থেকে জেলেদের সতর্ক করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা শাহ্ মো. শোয়েব বলেন, ‘নিম্নচাপের কারণে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ১ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পাবে—এই সতর্কবার্তা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে।’
চাঁদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহরুল হক বলেন, ‘নদীর পানি বৃদ্ধির বিষয়টি আমরা অবগত। আমাদের কর্মকর্তারাও সতর্ক রয়েছেন।’
তিনি আরও জানান, মেঘনার পানির উচ্চতা বাড়লেও বেশি সময় তা স্থায়ী হবে না। আজকে (শুক্রবার) বিকালে জোয়ারের সময় পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে (২১ সেন্টিমিটার) প্রবাহিত হয়েছে। পরে জোয়ারের সময় কমে যাবে।
সামরিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে সিলেটের জালালাবাদ সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক আর্মি কমান্ডের (ইউএসএআরপিএসি) যৌথ মহড়া শুরু হয়েছে। ছয় দিনব্যাপী এই মহড়া চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত। এতে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডের ১০০ জন সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা ন্যাশনাল গার্ডের ৬৬ জন।
শুক্রবার মহড়া শুরুর দিন জালালাবাদে প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড সদর দপ্তরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক আর্মি কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডিং জেনারেল মেজর জেনারেল অ্যাসকট এ উইন্টার। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে ছিলেন সেনাবাহিনী এয়ার ডিফেন্স পরিদপ্তরের পরিচালক, সামরিক প্রশিক্ষণ পরিদপ্তরের পরিচালক ও প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডের কমান্ডার।
আইএসপিআর জানিয়েছে, এক্সারসাইজ টাইগার লাইটনিং (টিএল)-২০২৫ মহড়ার মূল উদ্দেশ্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে দুই দেশের সেনাবাহিনীর পারস্পরিক সহযোগিতা ও যৌথ প্রস্তুতি জোরদার করা।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আশা করছে, ছয় দিনের এই মহড়া অংশগ্রহণকারী সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কারিগরিভাবে বৈধ হলেও এটি কার্যত ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিরাপদ এলাকায় গড়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)। তারা জানায়, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এরিয়ার (বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ অঞ্চল) মধ্যে পড়েছে। বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এরিয়ায় থাকা স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ জনসমাগম হয়, এমন সব প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেওয়া উচিত।
বিআইপির ‘মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা: জননিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের দায় ও করণীয়’ শীর্ষক এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে এসব বিষয় উঠে এসেছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাংলামোটরে প্ল্যানার্স টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব বিষয় তুলে ধরেছে বিআইপি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বিআইপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ তামজিদুল ইসলাম। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিমানবন্দরের রানওয়ের পর ৫০০ ফুট এলাকায় কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না। এর পরের ১৩ হাজার ফুট বা প্রায় ৪ কিলোমিটার অঞ্চলকে অ্যাপ্রোচ এরিয়া বলা হয়, যেখান দিয়ে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাপ্রোচ এলাকায় ১৫০ ফুট উচ্চতার স্থাপনা নির্মাণে সরকারের নগর কর্তৃপক্ষ ও বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দিক থেকে কোনো বাধা নেই। সেসব স্থাপনার কী ধরনের ব্যবহার হবে, সে বিষয়েও কোনো নির্দেশনা নেই সরকারের সংস্থাগুলোর। প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাপ্রোচ এলাকায় এ ধরনের স্থাপনা কারিগরিভাবে বৈধ হলেও কার্যত অনিরাপদ।
প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় পরিকল্পনাবিদ তামজিদুল ইসলাম বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপে অ্যাপ্রোচ এলাকার স্থাপনার উচ্চতা নিয়ন্ত্রণের কথা বলা আছে। কিন্তু সেখানকার ভূমির কী ধরনের ব্যবহার হবে, তা উল্লেখ নেই। গণজমায়েত হয় এ রকম কোনো স্থাপনার জন্য সেখানকার ভূমি ব্যবহার করা উচিত নয়। কৃষিজমি ও সবুজায়ন করা যেতে পারে, তবে এমন কিছু করা যাবে না, যাতে সেখানে পাখি আসে।
আন্তর্জাতিকভাবে বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে অনুসরণ করা আদর্শিক মান ব্যাখ্যা করে তামজিদুল ইসলাম বলেন, আদর্শ মান অনুযায়ী বিমানবন্দর শহর থেকে দূরে থাকে। এই বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এলাকায় একাধিক আবাসিক এলাকা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে মাইলস্টোন স্কুলে যাতায়াত সহজ ছিল। না হলে হাসপাতালে নিতে দেরি হওয়ায় প্রাণহানি আরও বেশি হতে পারত।
গত সোমবার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ, যাদের অনেকের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।
সংবাদ সম্মেলনে বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, অ্যাপ্রোচ এরিয়া থেকে স্কুল, কলেজ, মসজিদ ও মাদ্রাসার মতো জনসমাগম হয়, এমন সব স্থাপনা সরাতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা ঘটলে মৃত্যুর মিছিল ঠেকানো সম্ভব হবে না। বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের জায়গা তদন্ত করে যত ধরনের ব্যত্যয় হয়েছে, সেগুলো অনুসন্ধান করতে হবে। স্থাপনার উচ্চতায় ব্যত্যয় থাকলেও বাড়তি অংশ ভেঙে ফেলতে হবে।
জনবহুল এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান উড়ানোর সুযোগ নেই উল্লেখ করে আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ঢাকা থেকে বিমানবন্দর দূরে ছিল। ঢাকাকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ বলে যে একটা জিনিস আছে, তা ভুলে যাওয়া হয়েছে। তা না হলে বিমানবন্দরের উড্ডয়ন-অবতরণের পাশে স্কুল-কলেজের মতো অবকাঠামো হওয়ারই কথা নয়। মৌলিক ব্যাকরণ ভুলে যাওয়া হয়েছে।
১৯৯৫ সালে যখন ঢাকা মহানগর উন্নয়ন পরিকল্পনা (ডিএমডিপি) হয়, তখনো মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এলাকা জলাশয় ছিল। এটি বিমানবন্দরের জন্য উপযোগী ছিল উল্লেখ করে আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, মাইলস্টোনের জন্য নিচু এলাকা ভরাট করতে দেয় রাজউক।
মাইলস্টোনের নিচু এলাকা ভরাটে রাজউক কেন বাধা দেয়নি, সেই প্রশ্ন রেখে এই পরিকল্পনাবিদ বলেন, রাজউক ও বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কেউ নিজেদের দায়িত্ব পালন করেনি। যারা ভবন তৈরি করেছেন, তারা নিজেরাও অঙ্গীকার ঠিক রাখেননি।
আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, কয়েক দশক ধরে রাষ্ট্রে যে চর্চা হয়েছিল, তাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে ভূমি ও ভবন নিয়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ওপরের পর্যায় থেকে চাপ দিয়ে অনুমোদন নিয়ে নেওয়া হয়েছে। মাইলস্টোনের কয়েকটি ভবনের অনুমোদন আছে, কয়েকটির নেই। যে ভবনে বিমান আঘাত করেছে, সম্ভবত সেটির অনুমোদন নেই।
বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এলাকায় জনসমাগম হয়, এমন স্থাপনা কত আছে, তা যাচাইয়ে সরকারের পক্ষ থেকে উচ্চপর্যায়ের কমিটি করা উচিত বলে মনে করেন বিআইপির সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান।
এই পরিকল্পনাবিদ বলেন, যিনি মাইলস্টোন নির্মাণ করেছেন, তার দায় আছে। এছাড়া বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনুমতি ও অনাপত্তিপত্র নেওয়ার বিষয় আছে। যারা অনুমতি ও অনাপত্তিপত্র দিয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের দায়ভার আছে। দায়ভার আছে, এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনলে হয়তো ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়ানো যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিআইপির সহসভাপতি পরিকল্পনাবিদ সৈয়দ শাহরিয়ার আমিন।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের পোর্ট। চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের সম্পত্তি। এটা আমাদের কাছেই থাকবে। যদি কেউ অন্যভাবে অপপ্রচার করে থাকে আমি আশা করব দেশের স্বার্থে এ ধরনের অপপ্রচার যেন না করে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে বিদেশি অপারেটরের সম্পৃক্ততা নিয়ে সম্প্রতি যেসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে নৌ উপদেষ্টা বলেন, ‘কিছু মহল বলে বেড়াচ্ছে, আমরা বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দিচ্ছি। এটা সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা। বাস্তবতা হলো, আন্তর্জাতিক মানের বন্দরের দক্ষতা বাড়াতে হলে আন্তর্জাতিকভাবে অভিজ্ঞ অপারেটরদের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। আমরা সামনের দিকে যেতে চাই। আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেতে চাই। আমরা নিজেদের মধ্যে পড়ে থাকতে চাই না।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বন্দরে আন্তর্জাতিক মানের কেমিক্যাল শেড উদ্বোধন করেন।
উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত বলেন, এনসিটি নিয়ে আপনারা বহুত আলোচনা শুনেছেন। আমিও এখানে টেকওভার করার পর থেকে আলোচনাগুলো শুনছি। ১৭-১৮ বছর যারা এনসিটিতে ছিলেন আমি বলবো যে ভালো কাজই করেছেন। খারাপ করেননি। তারা তাদের মতো কাজ করেছেন। কিন্তু তাদের থেকে আরও বেশি ইফিশিয়েন্ট করার জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এখানে যে কনটেইনার লোড হচ্ছে তা সিঙ্গাপুর যাবে। ট্রান্সশিপমেন্ট হবে। সিঙ্গাপুরে বেশিরভাগ পোর্টই প্রাইভেটলি পরিচালনা হচ্ছে। আমাদের যদি ইফিশিয়েন্সি বাড়াতে হয় তাহলে বাইরের টেকনোলজিস আনতে হবে। নিজেরা নিজেরা করছি। নিজেরা অনেক ইফিশিয়েন্টলি করছি। এ ইফিশিয়েন্সি বাড়ানোর জন্য আমাদের দরকার হচ্ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করানো।
নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, একটা পোর্ট তখনি আন্তর্জাতিক অঙ্গণে প্রবেশ করবে যখন একটা আন্তর্জাতিক অপারেটর আসবে। ভুলে যাবেন না একটা অপারেটর, আরেকটা পরিচালনা। পরিচালনা কিন্তু আমাদের। আমরা শুধু এখানে যাকে আগে দিয়েছিলাম তার জায়গায় হয়ত আরেকজনকে দিচ্ছি। এটা সম্পূর্ণ ইফিশিয়েন্সি বাড়াবার জন্য। কারণ আমার ব্যক্তিগত কোনো ইন্টারেস্ট নেই। আমি চট্টগ্রামের বাসিন্দাও না।
তিনি বলেন, ইন্টেরিম পিরিয়ডের জন্য আমরা এনসিটি ড্রাইডককে দিয়েছি। যার সঙ্গে নেভি রয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত, জানতে পেরেছি আগের থেকে গড়ে ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটা কিন্তু বড় ধরনের অগ্রগতি। আমি আশা করব, এটা যাতে ধরে রাখে।
বন্দরের ট্যারিফ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, বন্দরের ট্যারিফ আলোচনা করে বাড়িয়েছি। এককভাবে মন্ত্রণালয় বাড়ায়নি। আন্তঃমন্ত্রণালয়ে কথা হয়েছে এবং স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন মেইন পোর্টের ট্যারিফ দেখার পর দেখা গেছে এখনো এখানে ট্যারিফ অনেক কম। এমনকি মোংলা থেকেও কম।
তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালের পর বন্দরের ট্যারিফ আর বাড়ানো হয়নি। আপনি দেখেন ১৯৮৬ সালের এক টাকার মূল্য এখন কত হয়েছে!
এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী, চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুকসহ নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের কর্মকর্তারা।