সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

২৮ অক্টোবর কী হয়েছিল, আর কী হবে?

ফারাজী আজমল হোসেন
প্রকাশিত
ফারাজী আজমল হোসেন
প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর, ২০২৩ ০৮:৪০

২৮ অক্টোবরকে ঘিরে আরও একবার দারুণ তর্জন-গর্জন বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে। দেশের প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মারমুখী ও হুমকিমূলক বক্তব্য শোনা যাচ্ছে। যেমনটা শোনা গিয়েছিল ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর। সরকার ২৮ অক্টোবর সমাবেশের অনুমতি না দিলে অলিতে-গলিতে ছড়িয়ে পড়ার কথা বলেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। কিন্তু কেন ২৮ তারিখকে ঘিরে বিএনপি’র এই আয়োজন? কেন বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজার দিন আয়োজিত এই সমাবেশ পেছাতে অনুরোধ জানানো হলেও তাতে কর্ণপাত করছে না বিএনপি-জামায়াত?

এই প্রশ্নের উত্তর রয়েছে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে, কার্যত যেদিন ক্ষমতা হারায় বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় ঐক্যজোট। মূলত অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলে রাখার বিএনপি-জামায়াতের সব চেষ্টা এই দিন ব্যর্থ হয়ে যায়। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে অবস্থান গড়ে তুলে এই দিন কার্যত রাজপথের দখল নেয় আওয়ামী লীগ। কেননা, ২৭ অক্টোবর রাতে সাংবিধানিকভাবে ভেঙে যায় বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোটের সংসদ। মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া এবং বিএনপি-জামায়াত মনোনীত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে কে এম হাসান দায়িত্বভার গ্রহণ না করতে চেয়ে বিবৃতি প্রদানের মাধ্যমে দীর্ঘ ৪ বছর ধরে চলমান ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে যায়।

২০০৬ সালে সংলাপের নামে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে বিএনপি-জামায়াত জোট। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০০১-০৬ সালের বিএনপি সরকারের একটি সিদ্ধান্ত এমন একটি প্রক্রিয়া শুরু করে দেয়, যেটা সম্ভবত গোটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিতর্কের মুখে ফেলে দেয়।

২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তারা সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। এই সংশোধনীর কয়েকটি দিক ছিল- সংরক্ষিত মহিলা আসন ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৪৫টি করা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসর নেয়ার বয়স ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ করা এবং সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রদর্শনের বিধান করা।

২০০৪ সালের ১৬ মে সংসদে এই সংশোধনীর জন্য বিল উত্থাপন করেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ। যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়ানো। সংবিধানের এই সংশোধনী একেবারেই সাদামাটা কোনো বিষয় ছিল না। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই করা হয়েছিল। এর পেছনে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার ইচ্ছে লুকায়িত ছিল বলে অনেকে মনে করেন। কারণ, তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালু ছিল। সংবিধান অনুযায়ী সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হবেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান।

তৎকালীন সময়ে বিরোধী দলে থাকা আওয়ামী লীগ এই সংশোধনীকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে জানায়, বিএনপি তাদের পছন্দসই ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা করার জন্য নানা আয়োজন করেছে।

২০০৩ সালের জুন মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান কে এম হাসান। তখন অভিযোগ উঠেছিল যে, বিএনপি সরকারের পছন্দের কারণেই জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে কে এম হাসানকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছিল। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে কে এম হাসানকে ১৩তম প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়ার সময় তার আগে আরও দুইজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ছিলেন। সুতরাং স্পষ্টতই বিএনপি কে এম হাসানকে নিয়োগ দিয়েছিল দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর মূল উদ্দেশ্য ছিল, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি কে এম হাসান অবসরের পরপরই যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে পারেন।

এদিকে বিচারপতি কে এম হাসান যেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে না পারেন সে জন্য ২০০৪ সাল থেকেই তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ জানিয়ে দেয় কে এম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক প্রধান হিসেবে মেনে নেয়া হবে না। শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের বক্তব্য ছিল, কে এম হাসান ‘বিএনপির লোক’ এবং একসময় তিনি বিএনপি থেকে নির্বাচনও করতে চেয়েছিলেন। এ ছাড়া তিনি বিএনপির কমিটিতেও ছিলেন বলে অভিযোগ আনা হয়।

কিন্তু বিএনপিও তাদের পরিকল্পনা অনুসারে কে এম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার জন্য সংবিধান পরিবর্তন থেকে শুরু করে আরও বেশ কিছু অনিয়ম করেছিল সে সময়ে। ২০০১-০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত তাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের কারণে নিশ্চিত ছিল, ভোটের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায় আসার কোন সম্ভাবনা নেই। ফলে ভোট কারচুপির জন্য সব পন্থাই অবলম্বন করেছিল তারা। এ সময় নিজেদের বাছাইকৃত ব্যক্তিকে সময়মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা করার জন্য সংলাপের নামে সময়ক্ষেপণ করে আসছিলেন বিএনপি মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিলের সঙ্গে তার সংলাপ যে কোনো পথ খুঁজে পাবে না তা একরকম নিশ্চিত ছিল। আর এ কারণেই তৎকালীন সময় বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সরাসরি নির্দেশ প্রদান করেন, কে এম হাসান যদি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেয়, তাহলে সারা দেশ থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যাতে লগি-বৈঠা হাতে ঢাকায় চলে আসে।

যেহেতু ২০০৬ সালের ২৭ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মেয়াদের শেষ দিন ছিল। সুতরাং কে এম হাসানকে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হতো ২৮ অক্টোবর। বেশ রাত পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না জানতে পারায় লগি ও বৈঠা- যা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার অংশ, তা হাতে নিয়ে ঢাকায় অবস্থান নিতে থাকে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। আওয়ামী লীগের এই অবস্থানকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষ হয় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশ কিছু এলাকায়। এদিকে এদিনের আগেই কে এম হাসান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়ে দেন।

কার্যত এদিন রাজপথে পরাজিত হয় জামায়াত-বিএনপি। শুরু হয় নতুন ষড়যন্ত্র। সংবিধান অনুযায়ী সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব না নিলে তার আগের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা। এভাবে চারটি বিকল্প ছিল সংবিধানে। কেউ দায়িত্ব নিতে না চাইলে সর্বশেষ উপায় হিসেবে রাষ্ট্রপতির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেব দায়িত্ব নেয়ার কথা। কিন্তু তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ সংবিধানের সব বিকল্প না দেখে নিজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

রাষ্ট্রপতি বিএনপির মনোনীত হলেও তিনি যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নেন, তখন আওয়ামী লীগ সরাসরি আপত্তি করেনি। বরং তারা জানায়, রাষ্ট্রপতি কতটা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সেটি তারা পর্যবেক্ষণ করবেন। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদের কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। একপর্যায়ে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে চারজন সদস্য পদত্যাগ করেন। শুরু হয় আরেক সংকট। আওয়ামী লীগ এবং অন্য বিরোধী দলগুলোর তীব্র আপত্তির মুখেও ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ইয়াজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এমন এক পরিস্থিতিতে চরম রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভেঙে দেয়।

বিএনপি যেভাবে ক্ষমতা হারিয়েছিল রাজপথে, একইভাবে ২৮ অক্টোবরকে কেন্দ্র করে রাজপথের দখল নিতে চায় বিএনপি। এ বিষয়ে দলটির শীর্ষ বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৮ অক্টোবর সফল আন্দোলন গড়ে তোলার বিষয়ে খুব একটা আশাবাদী নয় তারা। কিন্তু তারেক রহমানের নির্দেশে এই সমাবেশ করা হচ্ছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে নিজেদের সর্বোচ্চ শক্তি প্রদর্শন করতে চায় তারা। কিন্তু ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের মতো সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং কার্যত রাজপথের দখল নেয়ার মতো অবস্থা বিএনপি ও তার জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর এখনো তৈরি হয়নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২৮ অক্টোবর সমাবেশের ডাক অনেকটা ‘স্ট্যান্ডবাজির’ মতো বিষয়। অতীতের কোনো একটি তারিখকে ঘিরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে বিশ্বে কখনো কেউ সমর্থ হয়নি। সুতরাং এটি রাজনৈতিক এক ধরনের উচ্চাভিলাষ। বরং রাজনৈতিকভাবে সফল হতে বিএনপির উচিত বিকল্প চিন্তা করা। বিশেষত জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এবং জনসম্পৃক্ত বিষয়গুলো নিয়ে কীভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা যায়, সে বিষয়ে বিএনপির কাজ করা উচিত।

এর আগে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর কার্যত সাংবিধানিকভাবে ও রাজপথে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল বিএনপি। কিন্তু এখন সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় থাকার পাশাপাশি রাজপথেও স্পষ্ট অবস্থান রয়েছে আওয়ামী লীগের। সেই ক্ষেত্রে আরও একবার ১০ ডিসেম্বরের গোলাপবাগ মাঠের মতো সমাবেশ করে বিদায় নিতে হতে পারে বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের।


দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৮৪

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রবিবার (১৮ মে) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৪ জন।

সোমবার (১৯ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছে ৮৪ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১২ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও ৭২ জন।

বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৯ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ নারী।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩ হাজার ৫৩৬ জন। এর মধ্যে ৬০ দশমিক ০ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ০ শতাংশ নারী।


লুটপাটের অর্থ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস লুটপাট হওয়া সম্পদ ও অর্থ পুনরুদ্ধারের পর সেই সম্পদ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে একটি তহবিল গঠনের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।

আজ সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস বিফ্রিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘লুটপাট হওয়া অর্থ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি তহবিল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা, যা জনকল্যাণে ব্যবহার করা হবে।’

এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারের অগ্রগতি নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, এই তহবিল বর্তমান আইন অনুযায়ী গঠিত হবে। তবে প্রয়োজনে তহবিল গঠনের জন্য আইন সংশোধন করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, ‘আমি আশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে এই তহবিল গঠন করা সম্ভব হবে। তবে পরবর্তী নির্বাচিত সরকারকে তা চালিয়ে নিতে হবে।’


বিমানের চাকা খুলে পড়ার ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বিমানের চাকা খুলে পড়ার ঘটনা তদন্তে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার (১৯ মে ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড।

বিমান কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার (১৬ মে) দুপুরে ড্যাশ-৮ বহরের বিজি-৪৩৬ ফ্লাইটটি কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসে। উড্ডয়নের কিছু সময় পরেই বিমানটির পিছনের একটি চাকা খুলে নিচে পড়ে যায়। এরপরই ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ জরুরি অবতরণের জন্য ঢাকার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে (এটিসি) অবহিত করেন।

পরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে। বিমানে শিশুসহ মোট ৭১ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের কেউ আহত হননি এবং সবাই নিরাপদে আছেন বলে নিশ্চিত করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনার পর পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন এবং কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। চিফ অব ফ্লাইট সেফটির নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট সেফটি ইনভেস্টিগেশন কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ ছাড়া, প্রকৌশল ও ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট পরিদপ্তরের আওতায় অপর একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ। ঘটনার মূল কারণ অনুসন্ধান, এ সম্পর্কিত রক্ষণাবেক্ষণের শর্ত ও রেকর্ড পরীক্ষা এবং এমন ঘটনা ভবিষ্যতে যেন না ঘটে, সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় এই কমিটিকে।

তিন কর্মদিবসের মধ্যে এই দুই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা জন্য বলা হয়েছে। চাকার বিয়ারিং ত্রুটির কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে বরাত দিয়ে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

উড়োজাহাজটির প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কানাডার ডি-হেভিল্যান্ড এয়ারক্রাফট কোম্পানি। তাদের ভাষ্যে, কোম্পানির প্রস্তুত করা ম্যানুয়ালে চাকার বিয়ারিং ত্রুটি দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট চাকা অথবা টায়ার বিচ্যুত হয়ে খুলে পড়ার ঘটনা ঘটতে পারে। তদন্ত শেষে প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে এক বিবৃতিতে জানান তারা।

ঘটনার দিন ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানের বাঁ পাশে থাকা চাকা (নম্বর ২) অনুপস্থিত থাকার কথা নিশ্চিত করেন প্রকৌশলীরা। পরে সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকায় অবস্থানরত ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজগুলোর সব চাকা বিমানের প্রকৌশল বিভাগ পর্যবেক্ষণ করা হয়।

এ ছাড়াও, বিষয়টি তদন্ত করতে সোমবারের মধ্যে ডি-হেভিল্যান্ড এয়ারক্রাফট কোম্পানি একটি বিশেষায়িত কারিগরি দল পাঠাতে সম্মত হয়েছে বলে জানায় বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।

তারা জানায়, যাত্রীদের নিরাপত্তা ও উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধে এবং ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে।


গরু বহনকারী গাড়ি মাঝপথে থামানো যাবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১৯ মে, ২০২৫ ১৪:২৬
ইউএনবি

কোন নির্ধারিত হাটের উদ্দেশে যাচ্ছে, এমন গাড়ি মাঝপথে থামানো হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সোমবার (১৯ মে) পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, প্রতি বছরের মতো ঈদের আগে আমরা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা করলাম। এখানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সেক্টরের অনেকেই ছিলেন।

‘আপনারা জানেন যে আমাদের গরুর হাটগুলো শৃঙ্খলার মধ্যে থাকে না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে যেসব গরুর গাড়ি আসবে, সেসবের সামনে সুনির্দিষ্ট হাটের তথ্য থাকতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানে-সেখানে গরু নামাতে পারবে না। রাস্তায় গরু না নামিয়ে নির্ধারিত স্থানে নামাতে হবে। প্রতিটি হাটেই আনসার রাখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিছু হাটে ৭৫ জন করে আবার কিছু হাটে কম-বেশি হতে পারে। নিরাপত্তার পাশাপাশি গরুর চিকিৎসক থাকতে হবে। কোনভাবেই যেন অসুস্থ গরু বিক্রি না হয় ‘

‘অনেক সময় গরুর আঘাতে মানুষ আহত হন, এজন্য ফাস্টএইডেরও ব্যবস্থা রাখতে হবে। এবছর শতকরা ৫ টাকা হাসিল নিলেও আগামীবছর ১০০ টাকায় ৪ টাকা নিতে হবে।’

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘টেন্ডার হয়ে যাওয়ায় এ বছরই এটা করতে পারলাম না। এ নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। আর ঈদের ৫ দিন আগে থেকে বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। ঈদের পর ৩ দিন চলাচল বন্ধ থাকবে। এটা কোনো অবস্থায় রাতে চলতে পারবে না।’


দেশে বেকার বেড়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ২০২৩ সালের তুলনায় দেশে বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার। বেকার জনগোষ্ঠীর হার বাড়ার ক্ষেত্রে মহিলাদের কোনো অবদান নেই। অর্থাৎ এক লাখ ৬০ হাজার বেকার পুরুষের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

গতকাল রোববার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ-২০২৪ এর চতুর্থ কোয়ার্টারের গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলোর সাময়িক ফলাফল প্রকাশ করেছে।

বিবিএস জানায়, দেশে বর্তমানে ২৬ লাখ ২০ হাজার বেকার জনগোষ্ঠী রয়েছে। যা ২০২৩ সালে ছিল ২৪ লাখ ৬০ হাজার। বর্তমানে পুরুষ বেকার রয়েছে ১৮ লাখ, যা ২০২৩ সালে ছিল ১৬ লাখ ৪০ হাজার। এ ছাড়া বর্তমানে মহিলা বেকারের সংখ্যা ৮ লাখ ২০ হাজার, যা ২০২৩ সালেও ছিল ৮ লাখ ২০ হাজার। অর্থাৎ মহিলা বেকারের সংখ্যা না বাড়লেও বেড়েছে পুরুষ বেকারের সংখ্যা।

বিবিএস জানায়, যারা বিগত ৭ দিনে কমপক্ষে ১ ঘণ্টাও কোনো কাজ করেননি কিন্তু কাজ করার জন্য গত ৭ দিন ও আগামী দুই সপ্তাহের জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং গত ৩০ দিনে বেতন/মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে কোনো না কোনো কাজ খুঁজেছেন, তাদেরকেই বেকার জনগোষ্ঠী হিসেবে ধরা হয়েছে।

সাধারণত যারা শুধুমাত্র নিজেদের ভোগের জন্য কাজ করেন তাদের আইএলওর ১৩তম গাইডলাইন হিসেবে কর্মে নিয়োজিত ধরা হয়, আর যারা মজুরি বা মুনাফার জন্য কাজ করেন তাদের আইএলওর ১৯তম গাইডলাইন হিসেবে কর্মে নিয়োজিত ধরা হয়।

দেশে কর্মে নিয়োজিত বা শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ফলে বেড়েছে বেকার মানুষের সংখ্যা। বছরের শুরুতে বেকার মানুষের সংখ্যা কম থাকলেও বছর শেষে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এতে বছরের ব্যবধানে দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার। এই সময়ে কৃষি, সেবা এবং শিল্প, সবখাতেই কমেছে কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী। নারীর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে পুরুষ বেকারের সংখ্যা বেড়েছে বেশি।

কমেছে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা

দেশে বর্তমানে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমেছে ৭ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার, অন্যদিকে ২০২৩ সালে যা ছিল ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। ফলে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমেছে ১৭ লাখ ২০ হাজার জন। পুরুষ ও নারী শ্রম শক্তি কমেছে। দেশে সব থেকে বেশি মানুষ কাজ করে কৃষি খাতে। এরপরই রয়েছে সেবা ও শিল্পখাত। দেশে যুব শ্রম শক্তি ২ কোটি ২৬ লাখ, ২০২৩ সালে যা ছিল ২ কোটি ৬৭ লাখ। ফলে এক বছরে দেশে যুব শ্রম শক্তিও কমেছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নিয়ম অনুসারে, বেকার জনগোষ্ঠী মূলত তারাই যারা গত সাত দিনের মধ্যে মজুরির বিনিময়ে এক ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ পাননি এবং গত এক মাস ধরে কাজ খুঁজেছেন, কিন্তু মজুরির বিনিময়ে কোনো কাজ পাননি। তারা বেকার হিসেবে গণ্য হবেন। বিবিএস এই নিয়ম অনুসারেই বেকারের হিসাব দিয়ে থাকে। তবে বিবিএস এবার দুইভাবে শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে বিবিএস জানিয়েছে, শ্রমশক্তির তৃতীয় প্রান্তিকের ফলাফলটি ১৩তম এবং ১৯তম আইসিএলএস অনুযায়ী তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। আইএলও প্রণীত ১৩তম এবং ১৯তম আইসিএলএসে কর্মে নিয়োজিত প্রাক্কলনে পার্থক্য রয়েছে।

বিবিএস জানায়, শ্রমশক্তি জরিপে ১৫ বছর ও তদুর্ধ্ব বয়সি পুরুষ-নারী এবং শহর-পল্লী অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে শ্রমবাজারের সূচকসমূহ ত্রৈমাসিকভিত্তিতে প্রাক্কলন করা হয়। দেশব্যাপী ১ হাজার ২৮৪টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে সর্বমোট ৩০ হাজার ৮১৬টি খানা (একত্রিতভাবে বসবাসরত গোষ্ঠী বা পরিবার) থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। দেশের ৬৪টি জেলায় ১০৭ জন (নারী ৫৭ এবং পুরুষ ৫০) প্রশিক্ষিত তথ্য সংগ্রহকারীদের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য হতে শ্রমশক্তি, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সূচকসমূহের অগ্রগতি, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অগ্রগতি নির্ণয়ক সূচক এবং সর্বোপরি জাতীয় শ্রমশক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার ও কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব নিরসনে পরিকল্পনা প্রণয়ন সম্ভব হবে। এ জরিপের মাধ্যমে লিঙ্গভিত্তিক কর্মসংস্থান, বেকারত্ব, শ্রম অভিবাসন ব্যয়, খাত এবং পেশাভেদে শ্রমশক্তি, প্রাতিষ্ঠানিক এবং অ-প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান, কর্মঘণ্টা এবং মজুরি সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রস্তুত করা হয়। এ জরিপের মাধ্যমে শ্রমবাজারের মৌসুমভিত্তিক তারতম্য সংশ্লিষ্ট তথ্যাদিও পাওয়া যায়।


বেনাপোলে আটকে গেল তৈরি পোশাকবোঝাই ৩৬ ট্রাক

স্থলবন্দর দিয়ে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞায় ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন: বাণিজ্য উপদেষ্টা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারত সরকারের আমদানি নিষেধাজ্ঞার পর যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে তৈরি পোশাকের ৩৬টি ট্রাক আটকা পড়েছে। পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষের ‘গেইট পাস’ অনুমতি না পাওয়ায় পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো ভারতে যেতে পারেনি বলে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান।

ভারত সরকারের আমদানি নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে জানতে চাইলে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, ‘এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি আমরা পাইনি। পত্র-পত্রিকায় দেখেছি। বেনাপোল বন্দর দিয়ে শনিবার পর্যন্ত সব পণ্য রপ্তানি হয়েছে।’

‘তবে রোববার সকাল থেকে অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হলেও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাক জাতীয় কোনো পণ্য রপ্তানি হয়নি। বিভিন্নভাবে জানতে পেরেছি ৩০ থেকে ৩৫ ট্রাক পণ্য এখানে আটকে আছে।’

বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাকসহ প্রায় সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত সরকার।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের এক মাসের মাথায় ভারতের এই পাল্টা নিষেধাজ্ঞা এল, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করার কথা বলেছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

গত বছর (২০২৩-২৪ অর্থবছর) বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায় ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। এদিকে বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকটি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। যেসব পণ্যের এলসি/টিটি এরই মধ্যে হয়ে গেছে সেসব পণ্য যাতে আমদানি করা যায় তার জন্য কাস্টমসে আলোচনা চলছে।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৭ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি করে, গত অর্থবছরে তা প্রায় অপরিবর্তিত ছিল। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি করেছে ১৭ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে রপ্তানি হয়েছে ১১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকার পণ্য। যেসব দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে, তার মধ্যে ভারত একটি, যেখানে প্রতিবছর প্রায় ৭০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। এর মধ্যে ৯৩ শতাংশের মত পোশাক পণ্য স্থলপথেই রপ্তানি হয়। ফলে ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা এ খাতের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দেখা দেবে বলে ব্যবসায়ীদের শঙ্কা।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান আরও বলেন, ‘স্থলপথে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে কার্যত ভারতের সঙ্গে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে। আমদানিকারকরা বেনাপোল ও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে থাকে কলকাতায়। সেটা বন্ধ হয়ে গেল। নৌপথে পণ্য পরিবহন করা এসব রপ্তানিকারকদের পক্ষে সম্ভব না। এতে খরচের পাশাপাশি সময়ের কারণে সেটা তারা পারবেন না।’

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ভারত সরকার স্থলবন্দর দিয়ে গার্মেন্টস সামগ্রী আমদানি নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। স্থলপথে এসব পণ্য রপ্তানিতে খরচ অনেক কম হতো কিন্তু সমুদ্র ও বিমান পথে পণ্য রপ্তানিতে খরচ অনেক বেশি হবে।’

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, বছরে ১০ থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেশিরভাগ আমদানিকারকেরা বেনাপোল বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী। এ পথে রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পাট, পাটের তৈরি পণ্য, গার্মেন্টস, তৈরি পোশাক, কেমিকেল, বসুন্ধারা টিসু, মেলামাইন, মাছ উল্লেখ্যযোগ্য।

ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন

স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যসহ সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে দাবি করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

এ বাস্তবতা তুলে ধরে বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এমন মন্তব্য করেন।

‘আমরা নিশ্চয় এই অবস্থানগুলোকে তুলে ধরবো এবং সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবো। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা এই পদক্ষেপে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভৌগলিকভাবে সংযুক্ত দুটি দেশ আমরা। এটা বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার একটা প্রক্রিয়া। উভয়পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে এটার একটা উপযুক্ত সিদ্ধান্ত আনতে পারবো। আমাদের আরও কিছু বন্দর এখনও খোলা আছে,’ বলেন শেখ বশিরউদ্দীন।

তিনি জানান, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। স্থানীয় স্থলবন্দরে বিশেষ করে আখাউড়া ও ডাউকি সীমান্তভিত্তিক কিছু সিদ্ধান্তের কথা শুনেছি। আনুষ্ঠানিকভাবে জানার পর সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। এখন বিষয়টি বিশ্লেষণ করবো।’

তবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যকে স্বাভাবিক বাণিজ্য প্রবাহ বলে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা যেটা আমাদের থেকে নেয়, সেটা সুলভ মূল্যের কারণেই নেয়। আমরাও একই কারণে তাদের পণ্য কিনি। সুতরাং এখানে স্বাভাবিক বাণিজ্য প্রবাহের বিষয়গুলো আমরা তুলে ধরবো।’

‘আমরা আমাদের বৈচিত্রকরণ ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি ঘটাবো,’ যোগ করেন শেখ বশিরউদ্দীন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে খুব বেশি যে আসবাব যায়, তা না। পোশাকপণ্য যায়, আমরা প্রতিযোগিতা সক্ষমতার মাধ্যমেই এগুলো পাঠিয়ে থাকি। দুপক্ষের জন্যই লাভজনক বিধায় এগুলো যায়। আশা করি, উভয় দেশের ভোক্তা ও উৎপাদনের স্বার্থে এটা চলমান থাকবে।’

এর আগে ট্রান্সশিফমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ায় কী ধরনের প্রবাহ পড়েছে, জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা দাবি করেন, ‘ট্রান্সশিফমেন্টের কোনো প্রভাব আমাদের ওপর নেই। নিজস্ব সক্ষমতা ব্যবহার করে নিজস্বভাবেই এই সমস্যা সমাধান করেছি।’

সূত্র: বিডিনিউজ, ইউএনবি


২০২৫-২৬ অর্থবছরের ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনএসি) আজ পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রেখে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিয়েছে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন এনইসি চেয়ারপার্সন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার এডিপির মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা এবং প্রকল্প ঋণ ও অনুদান হিসেবে আসবে ৮৬ হাজার কোটি টাকা।

তবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে ৮ হাজার ৫৯৯ দশমিক ৭১ কোটি টাকা যুক্ত করলে, আগামী অর্থবছরের জন্য মোট এডিপির আকার দাঁড়াবে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৯ দশমিক ৭১ কোটি টাকা।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, অনুমোদিত এডিপি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নতুন বাজেটের অংশ, যা ২ জুন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ঘোষণা করবেন।

ড. মাহমুদ বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটের মূল কৌশল হলো অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা, মুল্যস্ফীতি হ্রাস করা, বাজেট ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং বাজেটকে টেকসই করা।

তিনি আরো বলেন, ‘একই সঙ্গে দেশি বা বিদেশি ঋণের ফাঁদে না পড়ে ঋণ পরিশোধে বা উন্নয়ন ও পরিচালন ব্যয় মেটাতে যেন অতিরিক্ত চাপ না হয় তা নিশ্চিত করাই হবে আমাদের লক্ষ্য। আমরা অতিতে যে দুষ্টচক্রে পড়েছিলাম সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করব।’

রাতারাতি রাজস্ব আদায় বাড়ানো সম্ভব নয় উল্লেখ করে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, তা সত্ত্বেও সরকার বাজেট ঘাটতি জিডিপির চার শতাংশের মধ্যে রেখে ব্যয় সমান রাখার চেষ্টা করবে।

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির প্রবণতা বিবেচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হঠাৎ করে বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি কমাতে পারবে না।

ড. মাহমুদ বলেন, শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ছাড়াও এই বাজেট ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বাজেট হবে না যেখানে স্বল্পমেয়াদে সাধারণ মানুষকে সন্তুষ্ট করার জন্য এমন কোনও ব্যয় করা হবে না যা পরবর্তীতে দায় বাড়িয়ে দিতে পারে।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, জাপানের অর্থায়নে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্প ছাড়া নতুন কোনো মেগা প্রকল্প বা দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প নতুন এডিপিতে নেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, কিছু অসুবিধা সত্ত্বেও সরকার উন্নয়ন অংশীদার এবং বিদেশি পক্ষগুলোর কাছে বছরের পর বছর ধরে বকেয়া পাওনা ধীরে ধীরে পরিশোধ করছে।

সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, এ বছর এটি কম হবে কারণ ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে অনেক প্রকল্প যাচাই-বাছাই করেছে, বরাদ্দ কমিয়েছে, তহবিলের অপব্যবহার রোধ করেছে যার ফলে বাস্তবায়নের ধারা কিছুটা ধীর হয়ে গেছে।

পায়রা বন্দর, কর্ণফুলী টানেল এবং বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) এর মতো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদে প্রকৃত ফলাফল বিবেচনা না করেই পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এই প্রকল্পগুলো গ্রহণ করা হয়েছিল।

আগামী অর্থবছরের জন্য নতুন এডিপির আকার চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় ১৪ হাজার কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, যা পরবর্তীতে সংশোধিত হয়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা।

নতুন এডিপি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন, উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে প্রণীত হয়েছে।

এছাড়াও, কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আইসিটি, পরিবহন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং অঞ্চলভিত্তিক সুষম উন্নয়ন নিশ্চিতকরণের মতো খাতগুলোকে নতুন এডিপিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

নতুন এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত ৫৮ হাজার ৯৭৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। এরপর রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩২ হাজার ৩৯২ দশমিক ২৬ কোটি টাকা (১৪ দশমিক ৮ শতাংশ), শিক্ষা খাত ২৮ হাজার ৫৫৭ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা (১২ দশমিক ৪২ শতাংশ), গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধাবলী খাত ২২ হাজার ৭৭৬ দশমিক ৪০ কোটি টাকা (৯ দশমিক ৯০ শতাংশ) এবং স্বাস্থ্য খাত ১৮ হাজার ১৪৮ দশমিক ১৪ কোটি টাকা (৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ) বরাদ্দ পেয়েছে।

এই পাঁচটি খাতে মোট বরাদ্দের প্রায় ৭০ শতাংশ বরাদ্দ পেয়েছে।

শীর্ষ ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার ৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে, এরপর রয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ৩২ হাজার ৩২৯ দশমিক ৫৭ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ বিভাগ ২০ হাজার ২৮৩ দশমিক ৬২ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ১৩ হাজার ৬২৫ দশমিক ৩ কোটি টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১২ হাজার ১৫৪ দশমিক ৫৩ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ১১ হাজার ৬১৭ দশমিক ১৭ কোটি টাকা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১১ হাজার ৩৯৮ দশমিক ১৬ কোটি টাকা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ৯ হাজার ৩৮৭ দশমিক ৬২ কোটি টাকা, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ৮ হাজার ৪৮৯ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় ৭ হাজার ৭১৪ দশমিক ৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে।

নতুন এডিপিতে মোট ১ হাজার ১৭১টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে ৯৯৩টি বিনিয়োগ প্রকল্প, ১৯টি সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প, ৯৯টি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প এবং ৬০টি সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প রয়েছে।

প্রস্তাবিত এডিপিতে ৭৯টি প্রকল্প পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের জন্য রাখা হয়েছিল এবং বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় বাস্তবায়নের জন্য ২২৮টি প্রকল্প রাখা হয়েছিল।

এছাড়া, নতুন এডিপিতে ২৫৮টি প্রকল্প আবশ্যিকভাবে সমাপ্ত করার লক্ষ্যে রাখা হয়েছিল। যার মধ্যে ২১২টি বিনিয়োগ প্রকল্প, ১১টি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্প, ১৮টি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প এবং ১৭টি সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প।

সংশ্লিষ্ট সচিববৃন্দ এবং পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।


অনিয়মকারীদের আঁখড়া ইন্টারন্যাশনাল লিজিং!

নেপথ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আলমগীর।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের আশীর্বাদপুষ্ঠ পলাতক সাবেক প্রদানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাবাজন কাজী আলমগীরকে পর্যায়ক্রমে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিযুক্ত করেন।

পরবর্তীতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এর সাবেক চেয়ারম্যান শেখ হাসিনার পিএস ১ জনাব এন আই খান বিগত জানুয়ারি ১১,২০২৪ ইং তারিখে শেখ হাসিনার নির্দেশে, আস্তাবাজন কাজী আলমগীরকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর তিনি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এ কমিশন বানিজ্যে জড়িয়ে পড়েন। তথ্য গোপন করে বড় অংকের সুদ মওকুপ এবং নিয়ম বহির্ভূত আমানত নগদায়ন সহ যাবতীয় অনিয়মে তিনি অভিযুক্ত।

ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫ তারিখের অভ্যন্তরীন তদন্তে প্রতিবেদনে এন আই খানের অপকর্মের দোষী সহযোগিদের বরখাস্ত না করে বেতন বৃদ্ধি সহ পদোন্নতি প্রদান করে নৈতিক অবক্ষয়ের পরিচয় দিয়েছেন।

মানব সম্পদ বিভাগের প্রধান জসিম উদ্দিন খান, সিএফও আবু বকর সিদ্দিক, কোম্পানী সচিব আসাদুজ্জামান, চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এডভোকেট শিহাবুর রহমান এবং লায়াব্যালিটি অপারেশন বিভাগের প্রধান সাহানা আক্তার সীমা সহ এন আই খানের ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের অনিয়ম স্বত্তেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি বরং মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক নব নিযুক্ত পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করে অনিয়মকারীদের বহাল তবিয়্যতে রেখেছেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব কাজী আলমগীরের এহেন কার্যক্রম ফাইন্যান্স কোম্পানী আইন ২০২৩ এর ১৯ ধারার লঙ্ঘন। এই বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সাবেক কর্মকর্তা হাসান মোহাম্মদ তারেক বাংলাদেশ ব্যাংকে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর অফিসের সামনে কাজী আলমগীরের অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন করেন।


স্ত্রী সতর্ক করেছে, পদ ছাড়ার পর আমি একা হয়ে যাব: প্রেস সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিবের দায়িত্বে থাকা শফিকুল আলমকে তার স্ত্রী সতর্ক করেছেন, বর্তমান পদ ছাড়ার পর তিনি একা হয়ে যাবেন। নিকটাত্মীয় এবং বন্ধু-বান্ধবরা তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না।

গতকাল শনিবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে স্ত্রীর সতর্কবার্তাটি সবার সঙ্গে শেয়ার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই প্রেস কর্মকর্তা।

শফিকুল আলম লিখেছেন, ‘স্বৈরশাসনের সময় আমি প্রায়ই বিরোধী নেতাদের বিষয়ে লিখতাম, যারা ওই শাসনবিরোধী ছিলেন এবং যারা জাতির আশার আলো হিসেবে কাজ করছিলেন। তাদের আত্মীয়স্বজনরা প্রায়ই আমার সেই পোস্টগুলো শেয়ার দিতেন। মাঝেমধ্যে আমার লেখা এবং সাংবাদিকতার প্রশংসা করে তারা আমাকে বার্তাও পাঠাতেন।’

প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘এখন আমি যখন অন্তর্বর্তী সরকারের একটি সংবেদনশীল পদে দায়িত্ব পালন করছি, দেখলাম ওই ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ আমাকে আনফ্রেন্ড করেছেন। আমি আর আগের আমি নেই। কারও কারও কাছে আমি অহংকারী হয়ে উঠেছি। কারও কাছে ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণু একজন প্রেস কর্মকর্তা।’

তিনি লিখেছেন, ‘এই মুহূর্তে এসে আমার সাংবাদিকতার পুরো সময়টুকুতে তৈরি হওয়া অনেক ফেসবুক বন্ধুকে হারানোর ভয় জাগছে। আমার কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে ইতোমধ্যে আমার অনেক আত্মীয় সম্পর্ক খারাপ করেছে। আমার স্ত্রী সতর্ক করেছে, এই পদ ছাড়ার পর আমি একা হয়ে যাব।’

প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘কিন্তু এতে আমার কিছু যায় আসে না। আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে সহিংস কিছু ঘটনা নথিভুক্ত করার সময়ও আমি একা ছিলাম। বিহারীদের অধিকারের পক্ষে কথা বলার সময়, তাদের সঙ্গে হওয়া অন্যায় তুলে ধরার সময়ও আমি একাই ছিলাম। আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ন্যায্যতা এবং ন্যায়বিচারের সঙ্গে আমি কাজ করছি কি না তা নিশ্চিত করা। আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমি কি সঠিকভাবে পালন করছি? এবং দ্বিতীয়ত, আমি কি এটা করতে গিয়ে কারও ক্ষতি করছি?’

নিজের চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়ে শফিকুল আলম লিখেছেন, ‘ক্ষমতা এমনভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত করে, যা কেউ কল্পনাও করতে পারে না বা উপলব্ধি করতে পারে না। আব্বাসীয় আমলে সুফিরা সরকারি পদ এড়িয়ে চলতেন। ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো তারা অন্যদের ক্ষতি করবেন না, সেটা নিশ্চিত করা।’

সবশেষ তিনি লেখেন, ‘এখন পর্যন্ত, এটাই আমার প্রতিজ্ঞা। আশা করি আমার লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছি ভেবে ভবিষ্যতে গর্ব করতে পারব।’

প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালানোর পর গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব হিসেবে গত ১৩ আগস্ট নিয়োগ পান শফিকুল আলম।


পরিস্থিতি ঘোলাটে না করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে না করে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শনিবার (১৭ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আবারও আহ্বান জানিয়ে বলবো পরিস্থিতি অযথা ঘোলাটে না করে জাতীয় নির্বাচনের সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা করুন।’

এ সময় জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে তাদের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি। অন্যথায় পতিত স্বৈরাচারকে মোকাবিলা করা সহজ হবে না বলেও সতর্ক করেন বিএনপি নেতা।

তিনি আরও বলেন, ‘ আশা করি, সরকার খুব শিগগিরই জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে এবং লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালন করবে।’

দেশে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক রীতিনীতি ও ব্যবস্থাগুলোকে শক্তিশালী করা অত্যন্ত জরুরি বলে মত দেন তারেক রহমান। একারণে তিনি ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার উপর জোর দেন।

তিনি বলেন, ‘এখনই সময় গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার, যাতে ভবিষ্যতে কোনো একনায়ক বা ফ্যাসিস্ট জনগণের অধিকার হরণ করতে না পারে।’

তবে এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছা ও সক্ষমতার ঘাটতি ইতোমধ্যে জনমনে হতাশা সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তারেক।

তার ভাষ্যে, ‘একটি সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার আশায় জনবান্ধব রাজনৈতিক দলগুলো এখনো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।’

তারেক রহমান বলেন, বিএনপিসহ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোই অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য তাদের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে একটি রোড ম্যাপ ঘোষণা আহ্বান জানিয়েছে আসছে। সব কিছু বিবেচনা করলে আমরা দেখতে পাই, সরকার সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি। বরং তারা নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণাকে ছোট-বড় সংস্কারের নতুন শর্তের ফাঁদে ফেলছে।’

জনগণের কাছে সরকারের পরিকল্পনা ও মনোভাব পরিষ্কার না হওয়ায় দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন দেখছি কোনো না কোনো দাবি নিয়ে মানুষ রাস্তায় নামছে। মাত্র ১০ মাসের মাথায় সরকারের ভেতরে এবং বাইরে কিন্তু এক ধরনের অস্থিরতা দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’

‘জনআকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হলে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়তেই থাকবে। আমরা মনে করি অস্থিরতা এভাবে বাড়তে থাকলে সরকারের পক্ষে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। সুতরাং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের সক্ষমতা সম্পর্কে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার কোনো অভিজাত ক্লাব বা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান নয়; এটি একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, যার সঙ্গে প্রতিটি নাগরিকের সরাসরি সম্পর্ক থাকা উচিত।’

তারেক রহমান বলেন, ‘যদি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও ব্যবস্থাগুলো উপেক্ষিত হয় এবং ডিপলিটিকাইজেশনকে (অরাজনীতিকরণ) উৎসাহিত করা হয়, তাহলে সাময়িকভাবে কিছু ব্যক্তি উপকৃত হতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্র, গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রপন্থী জনগণই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

এ সময় রোহিঙ্গা সংকটে রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ খোলার পরিকল্পনা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।

তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা আবারও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, করিডোর কিংবা বন্দর দেওয়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ নয়। এই সিদ্ধান্ত নেবে জনগণের ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ বা জনগণের সরকার। বর্তমান সরকারের আইনগত ও রাজনৈতিক বৈধতা নিয়ে হয়ত প্রশ্ন নেই। তবে এই সরকার কোনোভাবেই জনগণের কাছে জবাবদিহি মূলক সরকার নয়।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যের ওপর ভিত্তি করে এবং জুলাই আন্দোলনে হাজারো মানুষের প্রাণের বিনিময়ে বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক বৈধতার ভিত্তি রচিত হয়েছে। অথচ জুলাই আগস্টের আন্দোলনে কতজন শহীদ হয়েছে কতজন আহত হয়েছেন, দশ মাসেও কিন্তু সরকার শহীদদের তালিকা ও সংখ্যা চূড়ান্ত করতে পারেনি।

দুঃখ প্রকাশ করে বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, এখন যদি জুলাই আগস্টের শহীদদের হতাহতদের তথ্য কেউ জানতে চান তাহলে কী নির্দিষ্ট সেই তথ্য পাওয়া যাবে? এ ব্যাপারে কিন্তু বিরাট সন্দেহ বা প্রশ্ন রয়ে গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে গণঅভ্যুত্থানের সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে দশ মাসেও যদি জুলাই আগস্টের শহীদদের তালিকা চূড়ান্ত না করতে পারে, তাহলে সেটা সরকারের সক্ষমতা বহন করে কিনা এই প্রশ্নটি রেখে যাচ্ছি।

এখানে আরেকটি প্রশ্ন এসে যায় সরকার কী হতাহতদের ব্যাপারে উদাসীন নাকি ক্ষমতার মোহে আচ্ছন্ন? এটিই এখন দেশের বহু মানুষের বড় জিজ্ঞাসা।


ইশরাককে মেয়র পদে শপথ পড়াতে কর্মসূচি, অবরুদ্ধ নগরভবন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি চলছে। রবিবার (১৮ মে) সকাল ৯টা থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে নগর ভবনের সামনে আসেন তার সমর্থকরা।

তারা নগর ভবনের ফটকগুলোয় অবস্থান নিয়েছেন, ভেতরের বিভিন্ন ফটকে ঝুলিয়েছেন তালা। এতে নগর সংস্থার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এ সময়ে নিজেদের দাবি তুলে ধরতে বিভিন্ন স্লোগান দিতেও দেখা গেছে ইশরাক সমর্থকদের।

এর মধ্যে রয়েছে- ‘শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘শপথ নিয়ে তালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘অবিলম্বে ইশরাক হোসেনের শপথ চাই, দিতে হবে’, ‘জনতার মেয়র ইশরাক ভাই, অন্য কোনো মেয়র নাই’ প্রভৃতি। এ সময়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন তারা।

পুরান ঢাকার বাসিন্দা শফিউর রহমান নামের এক বিএনপিকর্মী বলেন, ‘ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে টালবাহানা করা হচ্ছে। আর এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

সূত্রাপুর থেকে আসা জেহাদ হোসেন বলেন, ‘জনগণের ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ইশরাক। মেয়র হিসেবে দ্রুত দায়িত্বে আমরা তাকে দেখতে চাই।’

‘সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন, কেন তাকে এখনো শপথ গ্রহণ করানো হচ্ছে না? শপথ যত দিন পড়ানো হবে না, ততো দিন আমরা রাজপথ ছাড়ছি না। যদি এটা নিয়ে কোনো টালবাহানা হয়, আমরা আরও বড় কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো,’ বলেন তিনি।

এরআগে শনিবার ইশরাককে মেয়র পদে শপথ পড়াতে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা হয়েছে। পরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন ইশরাকের সমর্থকরা। ডিসেম্বরে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক কাজ চলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি ভবনে।

নিজেকে ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শনিবার স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠিও দেন ইশরাক হোসেন। এরপর সন্ধ্যায় ডাকেন সংবাদ সম্মেলন।

এক সাংবাদিক ইশরাকের কাছে জানতে চান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সঙ্গে তার কোনো বিরোধ আছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বা অন্য কোনো উপদেষ্টার সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত বিরোধও নাই, ব্যক্তিগত সম্পর্কও নাই।’

তবে এই কর্মসূচির কারণে দাপ্তরিক কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন নগর সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, ‘অফিসে ঢুকতে পারছি না। এ কারণে আমরা সাইটগুলো পরিদর্শন করছি, উন্নয়নমূলক কাজগুলো সরেজমিনে দেখছি।’

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান এখনও হয়নি।


চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে আটক করা হয়েছে।

রবিবার (১৮ মে) বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। তাকে রাজধানী ভাটারা থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।

তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন ঘটনায় রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলায় রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে।

ভাটারা থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘নুসরাত ফারিয়াকে ইমিগ্রেশন থেকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে আমার থানায় মামলা রয়েছে। তাকে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত হস্তান্তর করা হয়নি।’

‘যতটুকু জানতে পেরেছি, তাকে ডিবি অফিসে নেওয়া হচ্ছে। তবে তাকে কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে, সেটা নিশ্চিত নই,’ বলেন তিনি।

২০২৩ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগালের ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রে শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুসরাত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

এছাড়া, বান্দরবান জেলাসহ খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

গতকাল (শনিবার) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ ভোর ৬ টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাঙামাটিতে ১২১ মিলিমিটার। এছাড়া সিলেটে ৯৪, কুতুবদিয়ায় ৭৫, কক্সবাজারে ৭৩ এবং গোপালগঞ্জ ও সৈয়দপুরে ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯১ শতাংশ। ঢাকায় বাতাসের গতি দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।

ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে।


banner close