বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদলের বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২১ নভেম্বর, ২০২৩ ২১:২৬

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেছে ঢাকায় সফররত কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদল।

মঙ্গলবার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে বেলা ১১টায় এ বৈঠক শুরু হয়। পৌনে এক ঘণ্টার বৈঠকে কমনওয়েলথের চারজন প্রতিনিধি অংশ নেন।

বৈঠকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনের প্রয়োগ এবং বিচার বিভাগের ভূমিকাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘বিদ্যমান আইন, নির্বাচনে জুডিশিয়ারি কী কাজ করে, কী সমস্যা হয়, আইনের প্রয়োগ কীভাবে হয়, ইসির কী ক্ষমতা আছে, পর্যবেক্ষকরা কোন আইনে আসেন- এসব তথ্য জানতে চেয়েছেন; আমি তাদের সেসব বিষয়ে বলেছি।'

এ ছাড়া আরও নানা বিষয় নিয়েও তারা কথা বলেছেন বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। এ সময় তার সঙ্গে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি শেখ মোহাম্মদ মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।


কাজ দিয়ে বিশ্বকে দেখাব বাংলাদেশের বন্ধু ও সেরা অংশীদার চীন: রাষ্ট্রদূত ইয়াও

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ ২০:৩৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

২০২৩ সাল চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও গভীর করার বছর হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেছেন, ‘তথাকথিত চীনের ফাঁদ নিছক বানোয়াট’ বরং এই প্রকল্পগুলো চীনের উপকারে আসে। চীনের লভ্যাংশ এবং চীনের সুযোগ বাংলাদেশের জনগণের জন্য। কাজ করেই আমরা বিশ্বকে দেখাব সত্যিকারের বন্ধু এবং সেরা অংশীদার বলতে আসলে কী বোঝায়। এ সময় চীনকে বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উন্নয়ন অংশীদার এবং সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে দাবি করে তিনি বলেন, এই সম্পর্ক ও বন্ধুত্বকে দুই দেশের সর্বস্তরের মানুষ ব্যাপকভাবে সমর্থন করে।

গত মঙ্গলবার রাতে দূতাবাসে ২০২৩ সালের চীন সরকারের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া বাংলাদেশিদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতায় হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টা কেউ প্রতিধ্বনিত করবে না।’

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইআরডি উইং চিফ অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. মো. আলম মোস্তফা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ধারাবাহিক অগ্রগতির পাশাপাশি মাঝে মাঝে কিছু বিরক্তিকর আওয়াজ উঠে আসছে। তবে বাংলাদেশ-চীন সহযোগিতা দুই দেশের জনগণের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত বন্ধুত্ব অনেক গভীরে নিহিত। সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিকনির্দেশনা ছাড়া এটা অসম্ভব ছিল। এই মূল্যবান অর্জনটি আপনারদের মতো বিভিন্ন খাত ও অবস্থানের অবদানকারীদের দ্বারা যৌথভাবে অর্জিত হয়েছে, তাই এটি হৃদয় দিয়ে লালন করা উচিত এবং যত্ন সহকারে বজায় রাখা উচিত।’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি শেষ হওয়া তৃতীয় বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরাম ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশনে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং উচ্চমানের বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা করার জন্য আটটি বড় পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘আগামী বছর চীন আরও দ্বিপক্ষীয় প্রশিক্ষণ কর্মসূচি প্রদান করবে, যা আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি অংশগ্রহণকারীকে উপকৃত করবে।’

বর্তমানে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে ৫০টি ফ্লাইট চলাচল করছে এবং সাপ্তাহিক ভিত্তিতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ আমাদের দুই দেশ থেকে যাতায়াত করে। এই সুবিধা আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে আরও একটি সুসংবাদ রয়েছে। তা হলো- ঢাকা থেকে বেইজিং পর্যন্ত আরও সরাসরি ফ্লাইট খুব শিগগিরই চালু করা হবে, যাতে আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ ফ্লাইটের বিকল্প চালু করা যায় এবং জনগণের মধ্যে বিনিময় আরও সুবিধাজনক হয়।’

তিনি বলেন, বিআরআই বাংলাদেশের জন্য উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশংসা করেছেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই দরজা কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মেগা প্রকল্প বহন করে না, বরং দুই দেশের জনগণের মধ্যে আদান-প্রদান এবং পারস্পরিক শিক্ষাকেও উৎসাহিত করে।’

তিনি বলেন, চীন এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিগুলো ভালোভাবে বাস্তবায়িত এবং দ্বিপক্ষীয় বিনিময়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার ফলে চীন-বাংলাদেশ কৌশলগত অংশীদারত্বকে সহযোগিতার একটি নতুন স্তরে নিয়ে আসা যায়।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ শুধু ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশীই নয়, কৌশলগত অংশীদারও। ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে আদান-প্রদান ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ হয়েছে এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা ফলপ্রসূ ফলাফল বয়ে এনেছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক লাভজনক সহযোগিতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’

তিনি বলেন, চীন টানা ১৩ বছর ধরে বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে টিকে আছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক বিনিয়োগের একটি প্রধান উৎস। যার মধ্যে ৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ স্টক এবং আরও বহুমুখী বিনিয়োগের খাত অনুসন্ধান করা হচ্ছে।’

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৭০০ চীনা কোম্পানি নিবন্ধিত রয়েছে, তারা ৭টি রেলপথ, ১২টি সড়ক, ২১টি সেতু ও ৩১টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে।
চীন সরকারের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বাংলাদেশি কর্মকর্তা, কারিগরি বিশেষজ্ঞ, তরুণ গবেষক এবং মিডিয়া প্রতিনিধি এ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে এবং সব সেমিনার সবার কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

গত আগস্টে জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত চার বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠক করেন। ইউএনবি


নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে আমরা সাংবিধানিকভাবে বাধ্য: সিইসি

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে আমরা সাংবিধানিকভাবে বাধ্য এবং এই বিষয়টা আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের স্পষ্ট করে বুঝিয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

বৈঠক শেষে সিইসি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর চার্লস হোয়াইটলিসহ ৭টি দেশের রাষ্ট্রদূত এসেছিলেন। এটাকে আমরা বলি ইইউ ডেলিগেশন। তারা আগেও একাধিকবার এসেছেন। তাদের একটা এক্সপার্ট ইলেকশন পর্যবেক্ষণ টিম আসবেন বলে জানিয়েছেন। ইতোমধ্যেই চারজন এসেছেন। তারা দীর্ঘ সময় আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনেছেন। আমাদের প্রস্তুতিটা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এটা তারা জানতেন না। তারা আজও এসেছেন, এর মধ্যে আমাদের কী কী অগ্রগতি হয়েছে সেগুলো আমরা তাদের জানিয়েছি। আমরা আগের মতোই স্পষ্ট করে জানিয়েছি, নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার, পিসফুল এবং ক্রেডিবল যাতে হয়- সেটি নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, ‘আমরা তাদের জানিয়েছি, আমাদের মাননীয় কমিশনাররা বিগত দুই সপ্তাহ ধরে বাইরে বাইরে ঘুরেছেন এবং তারা জনগণ ও প্রশাসনকে বিষয়গুলো অবহিত করেছেন। যাতে করে প্রশাসন স্থানীয়ভাবে তাদের সব শক্তিকে সমন্বিত করে; যাতে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত হয়। তারা আমাদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে আমরা সাংবিধানিকভাবে বাধ্য। এটা আমরা খুব স্পষ্ট করে তাদের বুঝিয়েছি। আমার বিশ্বাস, আমাদের যে সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা এটা তারা বুঝতে পেরেছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে যদি কোনো মতবিরোধ থাকে, বিভেদ-বিভাজন থাকে সেখানে কোনভাবেই আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এর আগে, ইইউ’র প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আজ বিকেল ৩টায় নির্বাচন কমিশন বৈঠকে বসে। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য চার কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে ইইউর পক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর চার্লস হোয়াইটলির নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেপুটি হেড অব মিশন ব্রেন্ড স্পাইনার, সংস্থাটির পলিটিক্যাল অফিসার সেবাস্তিয়ান রিগার ব্রাউন, সুইডেনের অ্যাম্বাসেডর আলেকজান্ডার বার্গ ফন লিন্দ্রে, ডেনমার্কের অ্যাম্বাসেডর ক্রিস্টিয়ান ব্রিক্স মুলার, স্পেনের অ্যাম্বাসেডর ফ্রান্সিসকো ডি আসিস বেনিতেজ সালাস, ইতালির অ্যাম্বাসেডর আন্তোনিও অ্যালেসান্দ্রো, কিংডম অব নেদারল্যান্ডসের অ্যাম্বাসেডর ইরমা ফেন ডুয়েরেন, ফ্রান্সের ডেপুটি হেড অব মিশন গুইলাম অড্রেম ডে কারড্রেল ও জার্মান অ্যাম্বাসির এক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।


স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে বর্তমান এমপিদের পদত্যাগ করতে হবে না: ইসি রাশেদা

ইসি রাশেদা। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন নির্বাচনে এমপিদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে না। দলীয় হোক, নির্দলীয় হোক বা সংরক্ষিত নারী আসনের হোক- সংসদ সদস্য পদে থেকেই তিনি প্রার্থী হতে পারবেন।

আজ বুধবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে গণমাধ্যমকে দেওয়া বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

একইসঙ্গে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ অনুযায়ী এই এমপিদের নির্বাচনী এলাকার এক শতাংশ ভোটারের সইও জমা দিতে হবে না।

গণমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা গতকাল রাজশাহীতে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চাইলে বর্তমান এমপিদের পদত্যাগ করতে হবে। আইনে এমনটাই বলা হয়েছে।

তবে আজকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দলীয় টিকিটে নির্বাচিত এমপিদের তাদের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে না। সংরক্ষিত আসন কিংবা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত এমপিরা নিজ নিজ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।


গরুর মাংস ৫৮০ টাকা কেজি

ডিম,মুরগীতেও স্বস্তি
আপডেটেড ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০৬:৪৮
সুলতান আহমেদ

দেশের বাজারে কোনো পণ্যের একবার দাম বেড়ে গেলে তা কমার নজির খুব বেশি নেই। বিশেষ করে গরুর মাংসের মতো অতি জনপ্রিয় পণ্যের দাম হঠাৎ করেই কমে আসবে তা হয়তো অনেকের প্রত্যাশার বাইরে। তবে বাস্তবে ঘটেছে তাই। রাজধানীর বেশ কিছু জায়গায় এখন গরুর মাংস নেমে এসেছে ৬০০ টাকার ঘরে। কোথাও কোথাও বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা কেজি দরে। যা নিয়ে স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের মনে। তাই তো এখন রাজধানীর অলি-গলি কিংবা চায়ের দোকানে আলোচনায় উঠে আসছে গরুর মাংসের দাম হঠাৎ কমে যাওয়ার প্রসঙ্গটি।

গরুর মাংসের দাম কমার প্রভাব পড়েছে মুরগির বাজারেও। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৩০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে। পাশাপাশি কমেছে কক, লেয়ারসহ অন্য সব ধরনের মুরগির দাম। ক্রেতাদের আরও স্বস্তি দিচ্ছে ডিমের দাম আরেকধাপ কমায়। রাজধানীর বেশির ভাগ বাজারে এখন এক ডজন ডিম মিলছে ১২০ টাকায়।

রাজধানীর মিরপুরের কালশী রোডের পাশেই সাংবাদিক আবাসিক এলাকা। যার পশ্চিম পাশ ঘেঁষে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা কেজি দরে। তাও আবার চোখের সামনে জবাই করে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। সকাল থেকেই ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায় সেখানে। বিক্রেতারা জানালেন, আগে যেখানে একটি গরু বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হতো এখন সেখানে ৪ থেকে ৫টি গরু বিক্রি হচ্ছে প্রতিদিন। পাশেই লালমাটিয়া এলাকায় মাইকিং করে ৫৮০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করতে দেখা গেল। সেখানে ছুটির দিনগুলোতে লম্বা লাইন ধরতেও দেখা যায় ক্রেতাদের। বিক্রেতারা বলছেন, কিছুটা কম দামে গরু কিনতে পারছেন তারা, তাই কমে বিক্রি করছেন।

মাংস বিক্রেতা রাজু জানালেন, গেল দুই-তিন সপ্তাহ ধরে কমে এসেছে গরুর মাংসের দাম। কেন কমে এসেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানুষের কাছে এহন কেনার মতোন টাকা নাই রে ভাই, ৮০০ টাকায় কেউ গরু কিনতে চায় না, এহন কমে পাইলে আমরা গরু আনি, না পাইলে আনি না।’ গরুর মাংসের দাম কমে আসার পেছনে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর হরতাল-অবরোধ ভূমিকা রাখছে বলেও জানালেন অনেক বিক্রেতা। রাজনৈতিক হট্টগোল থাকায় বিয়েসহ সামাজিক অনুষ্ঠান কমে এসেছে। তাতে বড় পরিমাণে গরুর মাংসের চাহিদা কমেছে, যার প্রভাব পড়েছে দামে। এ ছাড়া বাজারে পর্যাপ্ত মাছের সরবরাহ ও দাম কম থাকায় মাংসের দামে এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে বলে জানা গেছে।

শুধু তাই নয়, গেল কয়েক মাসে নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে অনেকটা নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতাদের। এমন পরিস্থিতিতে বাড়তি দামে গরুর মাংস কিনতে অনেকেই আগ্রহী নন। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে মাংস আমদানি হওয়ায় রাজধানীর অনেক রেস্তোরাঁয় এখন সেসব মাংস বিক্রি হচ্ছে। ফলে দেশের অভ্যন্তরে মাংসের চাহিদা কমেছে। মাংস কিনতে আসা মুহিব মিয়া জানালেন, ৫৮০ টাকায় মাংসের দাম শুনে তিনি কিনতে এসেছেন। বলেন, ‘আমাদের দেশে তো কোনো দিন গরুর মাংসের দাম এভাবে কমতে দেখি নাই, কম দাম শুনে ভাবছিলাম কেমন না কেমন গরু দেবে, এখন সামনা-সামনি এসে জবাই করা দেখে ৩ কেজি কিনলাম।’ মিরপুর-১১ নম্বর বাজারেও মিলছে ৬০০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস। পাশাপাশি মিরপুর, কাজীপাড়া, মোহাম্মদপুর, পুরান ঢাকার নাজিরা বাজার, হাজারিবাগসহ রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় এখন ৬০০ টাকায় মিলছে এক কেজি গরুর মাংস।

তবে ভিন্ন চিত্রও রয়েছে। বাড়তি দামে মাংস বিক্রির চিন্তা থেকে এখনো বের হতে পারেননি অনেক বিক্রেতা। সেসব দোকানে এখনো গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির নিত্যপণ্যের দামের তালিকায়ও সেই চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে আপলোড করা মূল্যতালিকায় দেখা যায় রাজধানী ঢাকাতে গরুর মাংসের সর্বনিম্ন দাম দেখানো হয়েছে ৬০০ টাকা, অন্যদিকে সর্বোচ্চ দাম দেখানো হয়েছে ৬৫০ টাকা। তবে গত সপ্তাহের হিসাবে প্রতিষ্ঠানটি সর্বোচ্চ দাম দেখাচ্ছে ৭৫০ টাকা প্রতি কেজি। টিসিবির হিসাবে, এক মাস আগে গরুর মাংসের দাম ছিল ৭৮০ টাকা প্রতি কেজি। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম কমেছে প্রায় ১৮০ টাকা। গরুর মাংসের একেক জায়গায় একেক দাম দেখে হতবাক ক্রেতারাও। সচেতন দু-একজন ক্রেতা বিষয়টি নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন বিক্রেতাদের সঙ্গে।

কেন মাংসের দাম তার দোকানে বেশি এমন- প্রশ্নের জবাবে মাংস বিক্রেতা নান্নু মিয়া জানান, দেশি ষাঁড় গরু জবাই করেন তিনি। তবে তার দোকান থেকে এক কিলোমিটার দূরেই দেখা যায়, ষাঁড় গরু জবাই করে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন অন্য বিক্রেতারা। গরুর মাংস কিনতে আসা আরেক ক্রেতা জমির উদ্দিন বলেন, ‘দাম বাড়ার সময় প্রতিযোগিতা শুরু হয় কে কত আগে বাড়াবে, কমার সময় তা দেখা যায় না। বরং বড় দোকানগুলোতে এখনো ভালো মাংসের অজুহাতে বাড়তি দাম নিচ্ছে।’

গরুর মাংসের দাম কমে যাওয়ার কারণ জানতে দৈনিক বাংলা যোগাযোগ করে প্রান্তিক খামারিদের সঙ্গেও। বগুড়ার খামারি জাহিদ হোসেন জানান, তার এলাকায় এখন গরুর মাংসের দাম বেশ খানিকটা কমেছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গরুর খাদ্যের দাম কিছুটা কমে এসেছে। এ ছাড়া গরু পালন করতে এখন প্রান্তিক খামারিরা ঘাসের ওপর বেশি নির্ভর করছে। তাতে গরুর খাদ্য কেনার খরচ বেচে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই দেখা যায় কোরবানির ঈদের কয়েক মাস পরে গরুর মাংসের দাম কিছুটা কমে আসে, তবে এ বছর বেশি পরিমাণে কমেছে।’ এতে খামারিরা লোকসানে পড়বে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘লোকসানে কেউ গরু বিক্রি করবে বলে আমার মনে হয় না। ’

বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাদিক অ্যাগ্রোর কর্ণধার ইমরান হোসেন জানান, দানাদার খাদ্যের দাম বাড়ায় খামারিরা এখন প্রাকৃতিকভাবে ঘাস চাষে মনোযোগ বাড়িয়েছেন। তাতে তাদের উৎপাদন খরচ অনেকটা কমে গেছে। বলেন, খামারিদের খরচ কমায় তারা কম দামে গরু বিক্রি করেও সন্তুষ্ট রয়েছেন, বাজারে দামও কমে এসেছে।


৩০ দিনে ২১২টি যানবাহনে আগুন

রাজধানীর বাড্ডায় দুর্বৃত্তদের আগুনে পোড়া একটি বাস। ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০৭
শেখ শফিকুল বারী

সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে মাসজুড়ে অবরোধ ও হরতালের মতো কর্মসূচি দিয়েছে দলটি। সমমনা দলগুলো ধারাবাহিকভাবে বিএনপির কর্মসূচির অনুরূপ কর্মসূচি দিয়ে এ আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার শুরু হচ্ছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর দিনব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ডাকা হয়েছে হরতাল। তবে গত এক মাসে এ অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে শাসকদলকে যতটা না চাপে ফেলেছে তার চেয়েও চাপে আছেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। বন্ধ হয়ে গেছে নিরাপদে চলাচল। ভরা মৌসুমে বন্ধ হয়ে গেছে পর্যটন ব্যবসা। এর পেছনের কারণ যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়ার একের পর এক ঘটনা।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে গতকাল ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিনে হরতাল-অবরোধ ও মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ২২৩টি আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কয়েকটি স্থাপনা থাকলেও অধিকাংশ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে যানবাহনে। গত এক মাসে ২১২টি যানবাহনে আগুন দিয়েছে দুর্বত্তরা। দিনে গড়ে ৭টি যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে দৈনিক গড়ে পুড়ছে ৫টি বাস।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টাতেও আগুন দেয়া হয়েছে ৫টি যানবাহনে। ফায়ার সার্ভিসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ১টি, হবিগঞ্জে ১টি, পাবনায় ১টি, টাঙ্গাইলে ১টি ও খুলনায় ১টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ১টি ট্রেনের বগি, ৩টি বাস ও ১টি ট্রাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এদিকে চলামান হরতকাল অবরোধ কর্মসূচিতে নাশকতায় জড়িত গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, দলীয় বড় পদ পাওয়ার জন্য এবং টাকার বিনিময়ে বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটছে। এমনকি যাদের সুনির্দিষ্ট আয়ের পথ নেই তাদের টাকার বিনিময়ে, কখনো খাবারের বিনিময়ে বাসে আগুন দিতে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে। আবার এসব আগুন দেয়ার ঘটনার ভিডিও ধারণ করে বড় ভাইদের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয় নাশকতাকারীদের। জানা গেছে, বড় ভাইরা এসব ধারণকৃত নাশকতার ভিডিও দেশে-বিদেশে উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের কাছে পাঠিয়ে থাকেন।

গত ২৮ অক্টোবর থেকে ফায়ার সার্ভিসের দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করছে দেখা যায়, চলমান হরতাল- অবরোধে যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে বেশি। এর মধ্যে বাসের সংখ্যাই বেশি। দিনে গড়ে ৭টি যানবাহনের মধ্যে ৫টিই বাস। জেলা হিসেবে গাজীপুর জেলায় আগুনের ঘটনা বেশি।

উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বগুড়া সদর উপজেলায় আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। এলাকাভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, রাজধানীর মিরপুর এলাকায় সবচেয়ে আগুনের ঘটনা বেশি। এরপরই রয়েছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা। এসব আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৪০০টি ইউনিট ও ২ হাজারের অধিক সদস্য কাজ করেছেন। সব ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ২জন সদস্য ও ৩জন সাধারণ নাগরিক আহত হন।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা মো. শাজাহান শিকদার এসব তথ্য উল্লেখ করে মঙ্গলবার দৈনিক বাংলাকে বলেন, গত এক মাসে যেসব আগুনের ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে কিছু স্থাপনা থাকলেও বেশির ভাগ যানবাহন। গড়ে প্রতিদিন ৭টি যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে যার মধ্যে ৫টিই গণপরিবহনের যাত্রীবাহী বাস। এসব ঘটনায় দিন থেকে রাতে বেশি আগুন দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর থেকে ২৮ নভেম্বর সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ৩০ দিনে ১৩২টি বাস, ৩৫টি ট্রাক, ১৬টি কাভার্ড ভ্যান, ৮টি মোটর সাইকেল, ২টি প্রাইভেটকার, ৩টি মাইক্রোবাস, ৩টি পিকআপ, ৩টি সিএনজি, ৩টি ট্রেন ও ৩টি লেগুনায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া, ১টি করে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, ১টি পুলিশের গাড়ি, ১টি নছিমন ও ১টি অ্যাম্বুলেন্সে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে ১১টি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বিএনপি অফিস ৫টি, আওয়ামী লীগ অফিস ১টি, পুলিশ বক্স ১টি, কাউন্সিলর অফিস ১টি, বিদ্যুৎ অফিস ২টি, বাস কাউন্টার ১টি, শোরুম ২টি আরও ২টি স্থাপনা পুড়ে যায়।

এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে শিকড় পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়ার সময় হাতেনাতে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. আসাদুল তালুকদার (৩০) ও মো. ইউসুফ শেখ (২৭)। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিরপুরের পল্লবী থানাধীন ১২ নম্বর সেকশনের ৭ নম্বর রোডে কেএফসির সামনে বাসটিতে আগুন দেয়ার সময় হাতেনাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে পলাতক বিএনপি নেতা মামুনের নির্দেশে এবং ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বাসটিতে আগুন দেয়া হয় বলে স্বীকার করেছে গ্রেপ্তারকৃতরা।

গণপরিবহনে আগুন দেয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে গত ১ মাসে বাসে আগুন দেয়ার সময় এখন পর্যন্ত ৩২ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের সুনির্দিষ্ট আয়ের পথ নেই তাদের টাকার বিনিময়ে আবার কখনো খাবারের বিনিময়ে বাসে আগুন দিতে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন নেতার নির্দেশনার পর এটি বাস্তবায়ন করা হয়।


আমরা চাই বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে আসুক: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পিআইবি প্রকাশিত ‘ফিচার সংকলন-এসডিজি ও উন্নয়নমূলক’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ২৮ নভেম্বর, ২০২৩ ২২:০০
বিশেষ প্রতিনিধি

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমরা চাই বিএনপি টেররিস্ট (সন্ত্রাসী) কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে আসুক, সুস্থ রাজনীতির পথে হাঁটুক, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।’

মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) প্রকাশিত ‘ফিচার সংকলন-এসডিজি ও উন্নয়নমূলক’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ এবং কর্মকর্তারা মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।

নির্বাচন কমিশন চায় বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিক- এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও চাই বিএনপি ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতি, মানুষ পোড়ানো, মানুষের সম্পত্তি, গাড়ি পোড়ানোর রাজনীতি, চোরাগোপ্তা হামলা যেগুলো টেররিস্ট অরগানাইজেশন করে, এই টেররিস্ট কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে আসুক, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য আমি শুনেছি। আমি মনে করি তিনি যথার্থ বলেছেন। আশা করি, বিএনপির শুভবুদ্ধির উদয় হবে।’

বিএনপি নির্বাচনের আগে সরকার পতনের ঘোষণা দিয়েছে- এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এমন বহু ঘোষণা আগেও শুনেছি এবং যতবার ঘোষণা দেয় ততবার তারা পালিয়ে যায় বা হারিয়ে যায়। যেমন ২৮ অক্টোবর এবং এর আগে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ঘোষণা দিয়েছিল। খালেদা জিয়া সমাবেশে যোগ দেবেন, সেটাও বলেছিল। এ সমস্ত ঘোষণা আসলে তাদেরকে হাস্যকর করেছে। তারা এ সমস্ত ঘোষণা দিয়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করার চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। প্রকৃত অর্থে বিএনপি এখন তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে টেররিস্ট অরগানাইজেশনে রূপান্তরিত হয়েছে, তাদের লিডাররাও টেররিস্ট লিডারে পরিণত হয়েছে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে দিনক্ষণ বলে অমুক তারিখে ফেলে দেয়ার কথা বলা এটাই তো টেররিস্ট ঘোষণা।’

এর আগে বইয়ের মোড়ক উন্মোচনকালে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা খুবই প্রয়োজন। এটি ছাড়া কোনো দেশ উন্নত হতে পারেনি। আমরা সিঙ্গাপুরের উদাহরণ দিই, সেখানে স্বাধীনতার পর থেকে একই দল রাষ্ট্র ক্ষমতায়। মালয়েশিয়ায় একনাগাড়ে ২২ বছর যদি মাহাথির মোহাম্মদ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে না থাকতেন, তাহলে মালয়েশিয়া সে রকম উন্নত হতে পারত না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে গত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিল সেটি আমরা বলতে পারি না। যেভাবে ২০১৩-১৪-১৫ সালে এবং সময়ে সময়ে জ্বালাও-পোড়াও করা হয়েছে এবং হচ্ছে, এগুলো দেশের এবং রাজনীতির স্থিতিশীলতা সবকিছুই বিনষ্ট করছে। এ দেশে ধ্বংসাত্মক রাজনীতি এবং সবকিছুতে না বলার নেতিবাচক রাজনীতি দেশের উন্নয়নের জন্য প্রচণ্ড অন্তরায়। ভারতে বহুধাবিভক্ত রাজনীতি এবং কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে অহি-নকুল সম্পর্ক। কিন্তু দেশের প্রয়োজনে তারা এক টেবিলে বসে এবং সরকারকে সমর্থন জানায়।’

হরতাল-অবরোধ নিয়ে প্রশ্নে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নিজেদের স্বার্থের জন্য মানুষ, গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো কেন? সাধারণ মানুষ তো কোনো দোষ করেনি। আর দিনের পর দিন অবরোধ ডেকে যেভাবে বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে, তারপরও মানুষ কিছুই মানছে না। অবরোধের মধ্যে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ট্রাফিক জ্যাম হচ্ছে এবং দূরপাল্লার গাড়িও চলছে। এ সমস্ত কর্মসূচি কেউ মানছে না, তাদেরকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বলছে, তোমাদের কীসের অবরোধ আমরা মানি না। এরপরও বিএনপির লজ্জা হয় না। আসলে যাদের লজ্জা হারিয়ে গেছে তাদের লজ্জা লাগার কোনো কারণ নেই। বিএনপির লজ্জাও হারিয়ে গেছে।’


বই উৎসব কবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে: শিক্ষামন্ত্রী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় নির্বাচনের কারণে এবার বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি বই উৎসব করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি নিজেই। তিনি বলেছেন, ‘এবার বই উৎসবটা ঠিক ১ তারিখে (জানুয়ারি) করব নাকি নির্বাচনের পরে ১০-১১ তারিখে হবে, সেটা নিয়ে আলোচনা চলছে। আমরা একটা সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করছি।’

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মঙ্গলবার স্কুলে ভর্তির লটারি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান মন্ত্রী।

ডা. দীপু মনি বলেন, ‘বই উৎসব নিয়ে এখন আমাদের ভাবতে হচ্ছে। যেহেতু ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। নির্বাচনের পরের সময়টা আসলে কেমন থাকবে, সেটাও আমাদের একটু বিবেচনায় নিতে হবে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়। সে কারণে এবার বই উৎসবটা ঠিক ১ তারিখে করব নাকি নির্বাচনের পরে ১০ থেকে ১১ তারিখ করব, সেটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করছি। সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে খুব শিগগির সেটা জানাতে পারব।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যে লটারিটা হচ্ছে, সেটাও আর পরে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা নভেম্বরের মধ্যেই এটা শেষ করছি আজকে। আবার বার্ষিক পরীক্ষা, বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নও এগিয়ে এনে দ্রুত শেষ করছি। নির্বাচনের আগের যে পরিবেশ-পরিস্থিতি সেটা আমাদের অবশ্যই মাথায় নিতে হবে, বিবেচনা করতে হবে।’

নবম শ্রেণি ও ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির বই ছাপানোর কাজ শুরু না হওয়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যেগুলো এখনো ছাপানো শুরু হয়নি, সেগুলো সব ছাপানো শুরু হয়ে যাবে। বই উৎসব যখনই করি না কেন, শতভাগ বই শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছে দেয়া হবে।’


বেতারের গুণী শিল্পী সাইফুল ইসলামের মৃত্যুতে তথ্যমন্ত্রীর শোক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বাংলাদেশ বেতারের জ্যেষ্ঠ অনুষ্ঠান ঘোষক ও সাবেক মুখ্য নাট্য প্রযোজক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ বাসায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে সাইফুল ইসলাম (৭৮) ইন্তেকাল করেন। তাঁর ইন্তেকালের সংবাদে শোকাহত মন্ত্রী প্রয়াতের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

ড. হাছান মাহমুদ তার শোকবার্তায় সদ্য প্রয়াত এই কণ্ঠশিল্পী ও প্রযোজকের দীর্ঘ কর্মময় জীবনের কথা স্মরণ করে বলেন, সাইফুল ইসলাম অর্ধশত বছরের বেশি সময় ধরে জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যমে যে অবদান রেখেছেন, মুক্তিযুদ্ধকালে ও পরবর্তীতে দেশের মানুষের চেতনার সমৃদ্ধিতে যে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন, তা ভুলবার নয়।

মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশ বেতারের রংপুর কেন্দ্রের প্রথম অনুষ্ঠান ঘোষক হিসেবে ১৯৬৭ সালের ১৬ নভেম্বর যোগদান করেন। ২০০৪ সালে ঢাকা কেন্দ্রের মুখ্য নাট্য প্রযোজক হিসেবে চাকুরি থেকে অবসরে যান। এরপর থেকে মৃত্যুকাল অবধি বেতারের বিভিন্ন ইউনিটে ডিউটি অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন।

প্রয়াত সাইফুল ইসলামের স্ত্রী রওনক জাহান বাংলাদেশ বেতারের সংবাদ এবং উত্তরণ উপস্থাপিকা। মঙ্গলবার বাদ আসর ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে জানাযার পর সাইফুল ইসলামের মরদেহ রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত হয়েছে।


'স্মার্ট বাংলাদেশ' গঠনে চীন বাংলাদেশের পাশে থাকবে: রাষ্ট্রদূত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চীন 'স্মার্ট বাংলাদেশ' গঠনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

রাজধানীর আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ‘বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট’ প্রকল্পে চীন শতভাগ অর্থায়ন করছে বলে জানান তিনি।

প্রকল্পটির বিষয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রথম পর্যায়ে ২৫ বছর প্রকল্পটির দায়িত্বে থাকবে চীনের সিএমইসি (চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন)। ডিএনসিসির এই বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্পটি মেগা প্রকল্প না হলেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এর মাধ্যমে স্মার্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে এ প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মঙ্গলবার আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

আগামী জানুয়ারি থেকে পুরোদমে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে সিএমইসির প্রকৌশলী ও কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছেন। তাদের কিছু যন্ত্রপাতি প্ল্যান্টে চলে এসেছে আরও যন্ত্রপাতি দ্রুতই পৌঁছাবে।

মেয়র জানান, ডিএনসিসির বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্মার্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হবে। বর্জ্য সম্পদে রূপান্তরিত হবে এবং পরিবেশবান্ধব পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়ে উঠবে।

মতবিনিময়কালে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফুল ইসলাম, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী, চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের প্রকৌশলী এবং ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


খান আকরামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে রায় কাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বাগেরহাটের খান আকরামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাব্যুনাল। গতকাল মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এমএলবি মেছবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহীনুর ইসলামসহ তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল মামলার রায় ঘোষণা করবেন।

এ মামলায় সাত আসামির মধ্যে খান আকরাম হোসেন (৬০), শেখ মোহম্মদ উকিল উদ্দিন (৬২), মো. মকবুল মোল্লা (৭৯) কারাবন্দি। আর পলাতক রয়েছেন খান আশরাফ আলী (৬৫), রুস্তম আলী মোল্লা (৭০), শেখ ইদ্রিস আলী (৬১), শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল (৬৪)।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর রানা দাসগুপ্ত, তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন।

আসামিদের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগ আনা হয়। ২০১৭ সালের ৩১ মে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নেয়া হয়। পরে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।

প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ আমরা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি তাদের সর্বোচ্চ সাজা হবে।’

আসামিদের বিরুদ্ধে যে সাত অভিযোগ

অভিযোগ ১: ১৯৭১ সালের ২৬ মে ১৫/২০ জন রাজাকার ও ২৫/৩০ জন পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীর সদস্যসহ বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ থানাধীন চাপড়ী ও তেলিগাতীতে নিরীহ নিরস্ত্র মুক্তিকামী মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে ৪০/৫০টি বাড়ির মালামাল লুট করে, বাড়িঘরে আগুন দিয়ে ধ্বংস করে, দুজন নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করে এবং ১০ জন স্বাধীনতার পক্ষের মানুষকে গুলি করে হত্যা করে।

অভিযোগ ২: ১৯৭১ সালের ৭ জুলাই আসামিরা বাগেরহাটের কচুয়া থানাধীন হাজরাখালী ও বৈখালী রামনগরে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের চারজন লোককে আটক ও অপহরণ করে আবাদের খালের ব্রিজে হত্যা করে মরদেহ খালে ফেলে দেয়।

অভিযোগ ৩: ১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর একই জেলার মোড়লগঞ্জ থানাধীন ঢুলিগাতী গ্রামে হামলা চালিয়ে দুজন নিরস্ত্র বীর মুক্তিযোদ্ধাকে আটক, নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে।

অভিযোগ ৪: ১৯৭১ সালের ১৭ নভেম্বর একই জেলার কচুয়া থানাধীন বিলকুল ও বিছট গ্রামে হামলা চালিয়ে চারজন স্বাধীনতার পক্ষের লোককে আটক ও অপহরণ করে কাঁঠালতলা ব্রিজে এনে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেয়।

অভিযোগ ৫: ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর একই জেলা ও থানার বিলকুল গ্রাম থেকে নিরস্ত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আলী নকীবকে আটক ও অপহরণ করে মোড়লগঞ্জ থানার দৈবজ্ঞহাটির গরুর হাটির ব্রিজের ওপরে নিয়ে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করে।

অভিযোগ ৬: ১৯৭১ সালের ১৬ অক্টোবর বাগেরহাটের কচুয়া থানাধীন উদানখালী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের উকিল উদ্দিন মাঝিকে আটক করে হত্যা করে এবং তার মেয়ে তাসলিমাকে আটক ও অপহরণ করে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে আসে। কচুয়া রাজাকার ক্যাম্প ও আশপাশের রাজাকার ক্যাম্পে দীর্ঘদিন সলিমাসহ চারজনকে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ দখলদারমুক্ত হলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার ক্যাম্প তল্লাশি করে তাসলিমাকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পৌঁছে দেন।

অভিযোগ ৭: বাগেরহাটের কচুয়া থানাধীন গজালিয়া বাজারে হামলা চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রীধাম কর্মকার ও তার স্ত্রী কমলা রানী কর্মকারকে আটক করে নির্যাতন করেন। আসামিরা শ্রীধাম কর্মকারকে হত্যা করে কমলা রানী কর্মকারকে অপহরণ করে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে এনে আটকে রাখে। উল্লিখিত আসামিসহ কচুয়া রাজাকার ক্যাম্প ও আশপাশের রাজাকার ক্যাম্পে কমলা রানী কর্মকারসহ আটক অন্যান্য চারজনকে দীর্ঘদিন ধর্ষণ করে। প্রায় এক মাস শারীরিক নির্যাতনের পর কমলা রানী কর্মকার অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।


ভুটানে বাংলাদেশ দূতাবাস ভবন নির্মাণকাজ শুরু

ভুটানে বাংলাদেশ দূতাবাস নির্মাণের কাজ শুরু। ছবি: দেশটিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সৌজন্যে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

হিমালয়ের লীলাভূমি ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে বাংলাদেশ দূতাবাস ভবনের নির্মাণকাজ শুরুর জন্য ঠিকাদার বাছাই সম্পন্ন হয়েছে।

এ বিষয়ে থিম্পুর নতুন কূটনৈতিক এলাকা হেজো-সামতেলিংয়ে ভুটান সরকরের দেয়া জমিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গত সোমবার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

থিম্পুতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভুটান ও বাংলাদেশ নিজ নিজ রাজধানীতে উভয় দেশের দূতাবাস ভবন নির্মাণের জন্য পরস্পরকে জমি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভুটান সরকার থিম্পুর সুপ্রিম কোর্টের পাশে নির্ধারিত কূটনৈতিক এলাকায় বাংলাদেশের জন্য ১ দশমিক ৫ একর জমি প্রদান করে। ওই জমিতে দূতাবাস ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

তবে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পাঁচ বছর পরে এবার পুরো ভবন নির্মাণের আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি সেরে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাছাই করে বাংলাদেশ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভুটান সরকারের দেয়া জমিতে ভবন নির্মাণের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে দেশটির ‘বজ্র বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচন করা হয়।

এ উপলক্ষে গত সোমবার বাংলাদেশ দূতাবাস এবং বজ্র বিল্ডার্সের সঙ্গে ভবন নির্মাণের আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে সই করেন ভুটানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শিবনাথ রায় এবং বজ্র বিল্ডার্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জামশো।

এ উপলক্ষে দূতাবাস ভবনের নির্ধারিত স্থানে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং বিশেষ প্রার্থনা ও মোনাজাতের পর আনুষ্ঠানিক চুক্তি সই শেষে দুই দেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

অনুষ্ঠানে ভুটানের পঞ্চম রাজার রয়েল চেম্বারলিন এবং চতুর্থ রাজার রয়েল চেম্বারলিন, পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র সচিব, ভুটানে নিযুক্ত ভারতের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স, ভুটানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং থিম্পু সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ দূতাবাসের দূতালয় প্রধান সুজন দেবনাথ।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শিবনাথ রায় বলেন, থিম্পুতে বাংলাদেশের নিজস্ব দূতাবাস ভবন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার কূটনৈতিক সুসম্পর্কের পরিচয় বহন করে।

এ ভবনের মাধ্যমে দুই দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং দ্বিপক্ষীয় বহুমুখী সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাজধানী শহরে বাংলাদেশের নিজস্ব দূতাবাস ভবন নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী যে নীতিমালা গ্রহণ করেছেন, এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সে লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। এই প্রকল্পটিতে সহযোগিতা করার জন্য তিনি ভুটান ও বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান।

থিম্পুতে বাংলাদেশ ভবন নির্মাণ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত সময় ধরা হয়েছে ১৮ মাস। এতে ১ দশমিক ৫ একর জমিতে দূতাবাস ভবন, রাষ্ট্রদূতের বাসভবন, স্টাফ কোয়ার্টার্স ও মাল্টিপারপাস হলসহ মোট ৪টি ভবন নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক কার্যাবলী সম্পাদিত হবে।


খাবারের বিনিময়েও বাসে আগুন দিতে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যাদের সুনির্দিষ্ট আয়ের পথ নেই তাদের টাকার বিনিময়ে, কখনো খাবারের বিনিময়ে বাসে আগুন দিতে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে গত ১ মাসে বাসে আগুন দেওয়ার সময় এখন পর্যন্ত ৩২ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের সুনির্দিষ্ট আয়ের পথ নেই তাদের টাকার বিনিময়ে আবার কখনো খাবারের বিনিময়ে বাসে আগুন দিতে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন নেতার নির্দেশনার পর এটি বাস্তবায়ন করা হয়।

তিনি বলেন, ঢাকার প্রবেশমুখে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এর সঙ্গে সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েনসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া পুলিশের রেসপন্স টাইম কমানো হয়েছে। যেকোনো ঘটনা ঘটলে পুলিশ যাতে দ্রুততম সময়ে রেসপন্স করতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর পল্টনে বিএনপির কার্যালয় তালাবদ্ধ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, যাদের অফিস তারাই তালাবদ্ধ করে রেখেছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সে যে অবস্থানেই থাকুক সেটি বিবেচ্য বিষয় নয়। আমরা আসামিকে আসামি হিসেবেই গ্রেপ্তার করছি।

ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, অনেক জায়গায় খবর প্রচার করা হয় যে, হরতাল-অবরোধের কারণে ট্রেডিশনাল ক্রাইমের দিকে পুলিশের নজর কম। কিন্তু বিষয়টি সঠিক নয়, সবদিকেই আমাদের পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে। যেখানে যে ঘটনা ঘটছে প্রতিহত করা সম্ভব হলে সেটি প্রতিহত করা হচ্ছে। আর প্রতিহত করা সম্ভব না হলে জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুততম সময়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


বিএনপির নির্বাচনে আসা না আসা তাদের ব্যাপার: ইসি আনিসুর

আপডেটেড ২৮ নভেম্বর, ২০২৩ ১৬:০৮
কক্সবাজার প্রতিনিধি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি আসবে কি আসবে না সেটি তাদের ব্যপার বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিসুর রহমান।

তিনি বলেছেন, ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে সবাই আসবে এটি স্বাভাবিক। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এখনো সুযোগ থাকার কথা বিএনপিকে বলেছেন। যদি তারা আসে তাহলে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করা হবে।’

মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলার শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন ইসি আনিসুর।

তিনি বলেন, ‘কোনো আসনকে হালকাভাবে নেয়া হচ্ছে না। প্রত্যেক আসনই গুরুত্বপূর্ণ। পরিস্থিতি খারাপ হতে সময় লাগে না। তাই ব্যাপক প্রস্তুতি রাখা হবে। প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে কাজ করে যাবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যা করা প্রয়োজন কমিশন তা করবে। সেই উদ্দেশ্যে আমরা চার কমিশনার সারাদেশে সরেজমিনে যাচ্ছি।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজুল ইসলাম, কক্সবাজার র‍্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন, কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, ৩০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান তানজিদ ও টেকনাফস্থ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদসহ জেলার শীর্ষ কর্মকর্তারা।


banner close