বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
৯ পৌষ ১৪৩২

৩০ দিনে ২১২টি যানবাহনে আগুন

রাজধানীর বাড্ডায় দুর্বৃত্তদের আগুনে পোড়া একটি বাস। ফাইল ছবি
আপডেটেড
২৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০৭
শেখ শফিকুল বারী
প্রকাশিত
শেখ শফিকুল বারী
প্রকাশিত : ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০৭

সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে মাসজুড়ে অবরোধ ও হরতালের মতো কর্মসূচি দিয়েছে দলটি। সমমনা দলগুলো ধারাবাহিকভাবে বিএনপির কর্মসূচির অনুরূপ কর্মসূচি দিয়ে এ আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার শুরু হচ্ছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর দিনব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ডাকা হয়েছে হরতাল। তবে গত এক মাসে এ অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে শাসকদলকে যতটা না চাপে ফেলেছে তার চেয়েও চাপে আছেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। বন্ধ হয়ে গেছে নিরাপদে চলাচল। ভরা মৌসুমে বন্ধ হয়ে গেছে পর্যটন ব্যবসা। এর পেছনের কারণ যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়ার একের পর এক ঘটনা।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে গতকাল ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিনে হরতাল-অবরোধ ও মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ২২৩টি আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কয়েকটি স্থাপনা থাকলেও অধিকাংশ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে যানবাহনে। গত এক মাসে ২১২টি যানবাহনে আগুন দিয়েছে দুর্বত্তরা। দিনে গড়ে ৭টি যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে দৈনিক গড়ে পুড়ছে ৫টি বাস।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টাতেও আগুন দেয়া হয়েছে ৫টি যানবাহনে। ফায়ার সার্ভিসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ১টি, হবিগঞ্জে ১টি, পাবনায় ১টি, টাঙ্গাইলে ১টি ও খুলনায় ১টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ১টি ট্রেনের বগি, ৩টি বাস ও ১টি ট্রাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এদিকে চলামান হরতকাল অবরোধ কর্মসূচিতে নাশকতায় জড়িত গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, দলীয় বড় পদ পাওয়ার জন্য এবং টাকার বিনিময়ে বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটছে। এমনকি যাদের সুনির্দিষ্ট আয়ের পথ নেই তাদের টাকার বিনিময়ে, কখনো খাবারের বিনিময়ে বাসে আগুন দিতে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে। আবার এসব আগুন দেয়ার ঘটনার ভিডিও ধারণ করে বড় ভাইদের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয় নাশকতাকারীদের। জানা গেছে, বড় ভাইরা এসব ধারণকৃত নাশকতার ভিডিও দেশে-বিদেশে উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের কাছে পাঠিয়ে থাকেন।

গত ২৮ অক্টোবর থেকে ফায়ার সার্ভিসের দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করছে দেখা যায়, চলমান হরতাল- অবরোধে যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে বেশি। এর মধ্যে বাসের সংখ্যাই বেশি। দিনে গড়ে ৭টি যানবাহনের মধ্যে ৫টিই বাস। জেলা হিসেবে গাজীপুর জেলায় আগুনের ঘটনা বেশি।

উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বগুড়া সদর উপজেলায় আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। এলাকাভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, রাজধানীর মিরপুর এলাকায় সবচেয়ে আগুনের ঘটনা বেশি। এরপরই রয়েছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা। এসব আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৪০০টি ইউনিট ও ২ হাজারের অধিক সদস্য কাজ করেছেন। সব ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ২জন সদস্য ও ৩জন সাধারণ নাগরিক আহত হন।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা মো. শাজাহান শিকদার এসব তথ্য উল্লেখ করে মঙ্গলবার দৈনিক বাংলাকে বলেন, গত এক মাসে যেসব আগুনের ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে কিছু স্থাপনা থাকলেও বেশির ভাগ যানবাহন। গড়ে প্রতিদিন ৭টি যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে যার মধ্যে ৫টিই গণপরিবহনের যাত্রীবাহী বাস। এসব ঘটনায় দিন থেকে রাতে বেশি আগুন দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর থেকে ২৮ নভেম্বর সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ৩০ দিনে ১৩২টি বাস, ৩৫টি ট্রাক, ১৬টি কাভার্ড ভ্যান, ৮টি মোটর সাইকেল, ২টি প্রাইভেটকার, ৩টি মাইক্রোবাস, ৩টি পিকআপ, ৩টি সিএনজি, ৩টি ট্রেন ও ৩টি লেগুনায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া, ১টি করে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, ১টি পুলিশের গাড়ি, ১টি নছিমন ও ১টি অ্যাম্বুলেন্সে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে ১১টি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বিএনপি অফিস ৫টি, আওয়ামী লীগ অফিস ১টি, পুলিশ বক্স ১টি, কাউন্সিলর অফিস ১টি, বিদ্যুৎ অফিস ২টি, বাস কাউন্টার ১টি, শোরুম ২টি আরও ২টি স্থাপনা পুড়ে যায়।

এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে শিকড় পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়ার সময় হাতেনাতে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. আসাদুল তালুকদার (৩০) ও মো. ইউসুফ শেখ (২৭)। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিরপুরের পল্লবী থানাধীন ১২ নম্বর সেকশনের ৭ নম্বর রোডে কেএফসির সামনে বাসটিতে আগুন দেয়ার সময় হাতেনাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে পলাতক বিএনপি নেতা মামুনের নির্দেশে এবং ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বাসটিতে আগুন দেয়া হয় বলে স্বীকার করেছে গ্রেপ্তারকৃতরা।

গণপরিবহনে আগুন দেয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে গত ১ মাসে বাসে আগুন দেয়ার সময় এখন পর্যন্ত ৩২ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের সুনির্দিষ্ট আয়ের পথ নেই তাদের টাকার বিনিময়ে আবার কখনো খাবারের বিনিময়ে বাসে আগুন দিতে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন নেতার নির্দেশনার পর এটি বাস্তবায়ন করা হয়।


আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

আপডেটেড ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪:২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) নরসিংদী এলাকা থেকে আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) বিশেষ অনুরোধে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আতাউর রহমান বিক্রমপুরীর বিরুদ্ধে তিন মাসের একটি বিশেষ ডিটেনশন বা আটকাদেশ রয়েছে এবং সেই আদেশ কার্যকর করতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গ্রেপ্তারের পর আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী আতাউর রহমানকে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর আজ বুধবার সকালে তাঁকে টঙ্গী পূর্ব থানা থেকে কড়া পাহারায় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ডিবি পুলিশ তাঁকে আটক করার পর থানায় হস্তান্তর করেছিল। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনি আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লা আল মামুন নিশ্চিত করেছেন যে, আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে বর্তমানে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এ রাখা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একটি সুনির্দিষ্ট আটকাদেশ কার্যকর করার লক্ষ্যেই এই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি কারা কর্তৃপক্ষের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছেন এবং তাঁর বিষয়ে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


বায়ুদূষণে আবারও বিশ্ব তালিকায় শীর্ষে ঢাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ মহানগরী ঢাকা আজ আবারও বায়ুদূষণের শীর্ষে অবস্থান করছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় রাজধানীর বায়ুমান সূচক বা একিউআই স্কোর রেকর্ড করা হয়েছে ২৩৯। এই মানদণ্ড অনুযায়ী ঢাকার বাতাস বর্তমানে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে, যা নগরবাসীর জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমকি স্বরূপ। দূষণের এই আন্তর্জাতিক তালিকায় ঢাকার পরেই অবস্থান করছে কায়রো, তেহরান, দিল্লি ও সারায়েভোর মতো শহরগুলো, তবে সেগুলোর স্কোর ঢাকার চেয়ে বেশ নিচে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর শীতের আগমনের সাথে সাথে অর্থাৎ নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকার বাতাসের গুণমান দ্রুত কমতে থাকে। এর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যত্রতত্র নির্মাণাধীন স্থাপনা, সংস্কারহীন ভাঙাচোরা রাস্তা থেকে ওড়া ধুলোবালি, ইটভাটার ধোঁয়া এবং যানবাহনের নির্গত কালো ধোঁয়া। বৃষ্টিহীন শীতের দিনে এসব দূষিত কণা বাতাসের নিম্নস্তরে আটকে থাকে, ফলে দূষণের মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়। আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, সূচক ১০১ থেকে ১৫০ হলে তা সংবেদনশীল মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়, আর ২০১ পার করলে তা মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞরা জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন। তাঁরা পরামর্শ দিয়েছেন যে, ধুলোবালি নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত শহরের প্রধান সড়কগুলোতে পানি ছিটানো এবং নির্মাণাধীন এলাকাগুলো যথাযথভাবে ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে। একইসাথে শহরের বায়ুমান উন্নত করতে অযোগ্য ও পুরোনো মোটরযান চলাচল বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। এমন বিষাক্ত বাতাস শিশু ও বৃদ্ধদের শ্বাসকষ্টসহ দীর্ঘমেয়াদী ফুসফুসের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে বিধায় নগরবাসীকে সচেতন থাকারও পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্যবিদরা। মূলত সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া ঢাকার বাতাসের এই বিপজ্জনক অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা।


দুদক সংস্কারে নতুন অধ্যাদেশ জারি: বাড়ছে ক্ষমতা ও সদস্য সংখ্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন-২০০৪-এর সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে সংস্থাটির কাঠামো এবং ক্ষমতায় আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অনুমোদনক্রমে এই অধ্যাদেশটি কার্যকর করা হয়েছে। নতুন এই বিধানে কমিশনের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি, তদন্তের পরিধি বাড়ানো এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এখন থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন অনধিক পাঁচজন কমিশনারের সমন্বয়ে গঠিত হবে, যা আগে ছিল তিনজন। এই পাঁচজনের মধ্যে অন্তত একজন নারী এবং একজন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি এই কমিশনারদের মধ্য থেকে একজনকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করবেন। আইটি বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করার মূল উদ্দেশ্য হলো আধুনিক ও ডিজিটাল দুর্নীতির রহস্য উন্মোচন এবং প্রযুক্তিগত তদন্ত কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করা।

কমিশনার নিয়োগের জন্য গঠিত কমিটি প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগের ‘সার্চ কমিটি’র নাম পরিবর্তন করে এখন রাখা হয়েছে ‘যাচাই-বাছাই কমিটি’। এই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ বিচারক, যা আগে ছিল প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব। কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে থাকবেন প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি), সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান এবং জাতীয় সংসদের স্পিকার কর্তৃক মনোনীত সরকারি ও বিরোধী দলের দুইজন সংসদ সদস্য। তবে সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় সংসদ সদস্যদের ছাড়াই এই কমিটি গঠন করা যাবে।

দুদকের তদন্ত ও অভিযানের ক্ষমতাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো এনফোর্সমেন্ট ও গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি সরাসরি আইনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা আগে কেবল বিধির ওপর নির্ভরশীল ছিল। এ ছাড়া মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের অনুসন্ধানে দুদককে ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে কেবল ঘুষ ও দুর্নীতি নয়, বরং দলিল জালকরণ, প্রতারণা, মুদ্রা পাচার, চোরাচালান, শুল্ক ও কর সংক্রান্ত অপরাধ এমনকি পুঁজিবাজারে ইনসাইডার ট্রেডিং বা মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ব্যবহার করে জালিয়াতির মতো অপরাধগুলোও দুদকের তদন্তের আওতায় আসবে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর টিআইবি-র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানকে প্রধান করে গঠিত দুদক সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে এই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে। যদিও টিআইবি কিছু কৌশলগত সুপারিশ বাদ পড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল, তবে সরকার মনে করছে এই নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে দুদক আরও বেশি কার্যকর ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। বিশেষ করে আর্থিক অপরাধ ও অর্থ পাচার রোধে দুদকের এই বর্ধিত ক্ষমতা দুর্নীতি দমনে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে।


টিএফআই সেলে গুম ও নির্যাতন: শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

র‍্যাবের টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে চলা গুম ও ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই ঐতিহাসিক আদেশ প্রদান করেন। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের বহুল আলোচিত গুম ও টিএফআই সেলে নির্যাতনের বিচারিক কার্যক্রম দাপ্তরিকভাবে শুরু হলো।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল আজ শুনানির শুরুতে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের করা অব্যাহতির আবেদনগুলো খারিজ করে দেন। এরপর কারাগারে থাকা ১০ সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো পড়ে শোনানো হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম টিএফআই সেলের অভ্যন্তরে সংঘটিত বীভৎসতার বিবরণ তুলে ধরে জানান, সেখানে গুম হওয়া ব্যক্তিদের ভাগ্য ছিল অনিশ্চিত; কাউকে বছরের পর বছর আটকে রেখে পরে কারাগারে পাঠানো হতো, আবার কাউকে দীর্ঘ সময় পর অজ্ঞাত কোনো স্থানে ফেলে আসা হতো।

এই মামলায় বর্তমানে কারাগারে থাকা ১০ আসামি হলেন— র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম। তাঁদের আজ কড়া নিরাপত্তায় সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

অন্যদিকে, মামলার প্রধান আসামি শেখ হাসিনাসহ সাতজন বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। পলাতক অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক দুই মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন ও ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ এবং সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম। পলাতক এসব আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কাজ চালানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং তাঁদের জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী (স্টেট ডিফেন্স) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছিল এবং ২২ অক্টোবর ১০ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। আজ অভিযোগ গঠনের আদেশের পর ট্রাইব্যুনাল খুব শিগগিরই সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করবেন। এই বিচার কাজকে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় আজ নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই বিচার প্রক্রিয়া বাংলাদেশের মানবাধিকার রক্ষা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এক নতুন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


একনেকে ৪৬ হাজার কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ২২টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের ১৪টি নতুন প্রকল্প ছাড়াও ৫টি সংশোধিত এবং ৩টি মেয়াদ বৃদ্ধিকৃত প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে ৩০ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট অর্থ প্রকল্প ঋণ ও সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে তিনটি বড় প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে কর্ণফুলী টানেলের সংযোগ সড়ক উন্নয়ন এবং ঢাকা-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণে ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প। এছাড়াও দিনাজপুর সড়ক বিভাগাধীন হিলি-ঘোড়াঘাট জাতীয় মহাসড়ককে যথাযথ মানে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে নারায়ণগঞ্জের আলীগঞ্জে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৮টি ১৫ তলা ভবন নির্মাণের সংশোধিত প্রকল্পটিও সভায় অনুমোদন পেয়েছে।

স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ঢাকা ওয়াসা প্রশিক্ষণ একাডেমি স্থাপন, সিলেটের জলাবদ্ধতা নিরসন ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং পটুয়াখালী জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন। জ্বালানি খাতের উন্নয়নে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাঙ্গামাটি জেলার কর্ণফুলী ও সংশ্লিষ্ট নদীসমূহের পানি ব্যবস্থাপনা এবং সুরমা-কুশিয়ারা নদী অববাহিকার উন্নয়ন সংক্রান্ত চারটি বড় প্রকল্পের সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মোংলা ও সাভারে দুটি বড় উন্নয়ন প্রকল্প এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নার্সিং শিক্ষা ও গবেষণার সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। শিক্ষা খাতে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিইউপি-এর উন্নয়নে পৃথক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গাজীপুরের কোনাবাড়িতে দুস্থ শিশুদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পুনর্নির্মাণ এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে দারুল আরকাম ইসলামী শিক্ষা পরিচালনার দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটিও চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাবৃন্দ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও পরিকল্পনা উপদেষ্টার নিজস্ব ক্ষমতাবলে অনুমোদিত ৫০ কোটি টাকার কম ব্যয় সম্বলিত ১০টি ছোট প্রকল্প সম্পর্কে সভায় অবহিত করা হয়, যার মধ্যে অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৩ এবং র‍্যাবের আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মতো প্রকল্পগুলো রয়েছে। সামগ্রিকভাবে এই প্রকল্পগুলো দেশের অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।


তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন: শাহজালাল বিমানবন্দরে ২৪ ঘণ্টা ভিজিটর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী ছাড়া সর্বসাধারণ ও সহযাত্রীদের প্রবেশের ওপর ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। বেবিচকের মুখপাত্র কাওছার মাহমুদ জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা, যাত্রীসেবা ও অপারেশনাল শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে বিশেষ নিরাপত্তাজনিত কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, মূলত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লন্ডন থেকে দেশে ফেরার মাহেন্দ্রক্ষণকে কেন্দ্র করেই এই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তাঁর বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-২০২ ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করার কথা রয়েছে। তারেক রহমানের এই আগমনকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল রাখতে বিমানবন্দর এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। ওই সময়ে বৈধ টিকিট ও পাসপোর্ট ছাড়া কাউকে বিমানবন্দর এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তবে তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে নির্ধারিত একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল বিমানবন্দরের ভেতরে থাকার অনুমতি পাবে।

এদিকে, তারেক রহমান লন্ডন থেকেই সংশ্লিষ্টদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন যেন তাঁর দেশে ফেরা উপলক্ষে সাধারণ বিমানযাত্রীরা কোনো ধরনের হয়রানি বা সমস্যার শিকার না হন। তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ফ্লাইটের দায়িত্ব থেকে বিতর্কিত দুই কেবিন ক্রুকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরের ভিআইপি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দফায় দফায় বৈঠক করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, তারেক রহমান বিমানবন্দর ত্যাগ না করা পর্যন্ত পুরো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি নিশ্ছিদ্র ও কঠোর নিরাপত্তা বলয় সক্রিয় থাকবে। মূলত যাত্রী সাধারণের স্বাচ্ছন্দ্য এবং ভিআইপি প্রটোকল বজায় রাখাই এই নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য।


উৎসবমুখর নির্বাচনের পূর্ণ সক্ষমতা পুলিশের রয়েছে: আইজিপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছেন যে, একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও উৎসবমুখর নির্বাচন উপহার দেওয়ার মতো পূর্ণ সক্ষমতা বাংলাদেশ পুলিশের রয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রিটার্নিং অফিসার ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। আইজিপি স্পষ্ট করে জানান, জুলাই-পরবর্তী অস্থিরতা ও প্রতিকূল পরিস্থিতি কাটিয়ে পুলিশ এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং যেকোনো বিশৃঙ্খলা দমনে বাহিনী কঠোর প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

পুলিশ প্রধান বলেন, সম্প্রতি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাস্তা বা মহাসড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা কঠোরভাবে বন্ধ করার সময় এসেছে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যদি সর্বত্র শৃঙ্খলা বা ‘অর্ডার’ প্রতিষ্ঠিত করা না যায়, তবে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাই মহাসড়ক বা জনপদে অস্থিরতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি। এছাড়া, তিনি নির্বাচন কমিশনের নেওয়া সময়োপযোগী পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করেন, বিশেষ করে ইলেক্টরাল ইনকোয়ারি কমিটিকে সংক্ষিপ্ত বিচারের (সামারি ট্রায়াল) মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সাজার ক্ষমতা দেওয়া এবং ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রয়োজনে যেকোনো বাহিনীর সহায়তা নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টিকে তিনি অত্যন্ত কার্যকর বলে অভিহিত করেন।

মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনিক পরিবর্তনের বিষয়ে আইজিপি নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা চান। তিনি উল্লেখ করেন, এসপি বা তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের বদলির ক্ষেত্রে কমিশনের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকলেও কনস্টেবল বা সাব-ইন্সপেক্টরের মতো সর্বনিম্ন পদের রদবদলের ক্ষেত্রেও কমিশনের পূর্বানুমতি প্রয়োজন কি না, সে বিষয়ে একটি স্পষ্ট নির্দেশিকা থাকা প্রয়োজন। পরিশেষে তিনি দেশবাসী ও নির্বাচন কমিশনকে আশ্বস্ত করে বলেন যে, পুলিশ তার সর্বশক্তি দিয়ে এবারের নির্বাচনকে সফল ও শান্তিপূর্ণ করতে বদ্ধপরিকর। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


ভারতে বাংলাদেশের মিশনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান ঢাকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে সৃষ্ট চরম উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে তাঁকে মন্ত্রণালয়ে ডেকে নিয়ে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশন চত্বরের অপ্রীতিকর ঘটনা এবং সোমবার শিলিগুড়িতে বাংলাদেশ ভিসা সেন্টারে চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলোর ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। একটি আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারত সরকারকে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাগুলোর বিষয়ে বাংলাদেশের কড়া অবস্থানের কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে এ ধরনের পূর্বপরিকল্পিত সহিংসতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক শিষ্টাচারের চরম লঙ্ঘন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড কেবল কর্মকর্তাদের নিরাপত্তাকেই হুমকির মুখে ফেলে না, বরং দুই দেশের পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহনশীলতার মূল্যবোধকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বাংলাদেশ সরকার এই সহিংসতা ও ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এটিকে অত্যন্ত দুঃখজনক হিসেবে অভিহিত করেছে।

তদন্ত ও নিরাপত্তার দাবিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ বলেছে, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ভারতে থাকা বাংলাদেশের প্রতিটি মিশন ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোর কঠোর সুরক্ষা নিশ্চিত করা দিল্লির দায়িত্ব। একই সঙ্গে শিলিগুড়ি ও নয়াদিল্লির ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ আশা করে, ভিয়েনা কনভেনশনসহ আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ভারত সরকার অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে বিদেশি মিশনের মর্যাদা রক্ষা করবে।


ভারতীয় হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের মিশনগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার কিছু আগে পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আল সিয়ামের কার্যালয়ে এই তলব করা হয়। এ সময় ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনারও তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ভারতের বিভিন্ন স্থানে থাকা বাংলাদেশের মিশন ও দূতাবাসগুলোতে বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে হাইকমিশনারের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের মিশনগুলোর সুরক্ষা ব্যবস্থা অবিলম্বে জোরদার করার জন্য প্রয়োজনীয় ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জোরালো অনুরোধ জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১০ দিনের ব্যবধানে এটি দ্বিতীয়বারের মতো ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করার ঘটনা। এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর তাঁকে তলব করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত উসকানিমূলক বক্তব্য নিয়ে বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছিল। পাশাপাশি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের ভারতে পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে অথবা তারা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করে থাকলে তাদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফেরত পাঠানোর বিষয়ে দিল্লির সক্রিয় সহযোগিতা চেয়েছিল ঢাকা। মূলত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েন এবং কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই আজকের এই তলব ও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।


নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন: মার্কিন বিশেষ দূতকে প্রধান উপদেষ্টার দৃঢ় অঙ্গীকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়েই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে নিজের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, দীর্ঘ স্বৈরাচারী শাসনামলে দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, তাই এখন সাধারণ মানুষ তাদের সেই অধিকার প্রয়োগের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত সার্জিও গোরের সঙ্গে এক টেলিফোন আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী এই গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনা, গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত ইস্যু তরুণ রাজনৈতিক কর্মী শহীদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সার্জিও গোর সাম্প্রতিক শুল্ক আলোচনায় সফল নেতৃত্বের জন্য প্রফেসর ইউনূসকে অভিনন্দন জানান। এই আলোচনার ফলে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে, যা দেশের বাণিজ্যের জন্য এক বড় মাইলফলক। আলাপকালে মার্কিন বিশেষ দূত শহীদ ওসমান হাদির জানাজায় মানুষের বিশাল উপস্থিতির বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন দূতকে অবহিত করেন যে, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসনের সমর্থকেরা নির্বাচন প্রক্রিয়া নসাৎ করতে বিপুল অর্থ ব্যয় করছে এবং তাদের পলাতক নেতা বিদেশ থেকে সহিংসতা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে, অন্তর্বর্তী সরকার যেকোনো ধরনের নাশকতামূলক পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং একটি সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। নির্বাচনের আর মাত্র প্রায় ৫০ দিন বাকি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার একটি অবাধ ও স্মরণীয় নির্বাচন উপহার দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

এই ফোনালাপের সময় প্রধান উপদেষ্টার পাশে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। মার্কিন বিশেষ দূতের এই যোগাযোগ ও সহযোগিতা বাংলাদেশের বর্তমান সংস্কার প্রক্রিয়ায় একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


আমরা এমন নির্বাচন চাই, যেখানে ভয় ও বাধা থাকবে না: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভয়হীন ও মুক্ত পরিবেশে ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করার বিষয়ে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যেখানে ভয় থাকবে না, বাধা থাকবে না—থাকবে শুধু জনগণের মুক্ত ও নির্ভীক মতপ্রকাশ। সরকার সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘ভোটের গাড়ি’ শীর্ষক প্রচারণার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০২৬ সালের গণভোট সামনে রেখে ভোটারদের সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনি দেশের মালিক। এ দেশ আগামী পাঁচ বছর আপনার পক্ষে কে চালাবে সেটা আপনি ঠিক করুন। আপনার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিন। সৎ ও যোগ্য প্রার্থী বেছে নিন। চিন্তা-ভাবনা করে ভোট দিন।’

নতুন বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বিশেষভাবে তরুণ সমাজ, নারী ভোটার ও প্রথমবারের মতো হওয়া ভোটারদের এগিয়ে আসতে বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি তরুণ সমাজ, নারী ভোটার এবং প্রথমবারের ভোটারদের প্রতি- আপনারা এগিয়ে আসুন। প্রশ্ন করুন, জানুন, বুঝুন এবং ভোট দিন। আপনার সিদ্ধান্তে গড়ে উঠবে আগামী দিনের বাংলাদেশ, নতুন বাংলাদেশ।’

একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে দেশের প্রতিটি নাগরিকেরও দায়িত্ব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ভোটাধিকার কারও দয়া নয়- এটি আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমেই আমরা ঠিক করি, আমাদের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়; এটি রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব।’

তিনি আরও বলেন, ‘চলুন, ভোট দিই- নিজের জন্য, দেশের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, নতুন পৃথিবীর জন্য।’

‘ভোটের গাড়ি’ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এই সুপার ক্যারাভান কেবল একটি গাড়ি নয়, এটি গণতন্ত্রের আনন্দ বাণী বহনকারী বহর। এটি জানিয়ে দেবে, আপনার একটি ভোট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা মনে করিয়ে দেবে নিষ্ক্রিয়তা নয়, অংশগ্রহণই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।’

তিনি জানান, এবারের নির্বাচনে ভোটারদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি জুলাই জাতীয় সনদের ওপর গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘ নয় মাস ধরে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে এই সনদ প্রস্তুত করা হয়েছে। জনগণ এই সনদে সমর্থন দিলে দেশের ভবিষ্যৎ দীর্ঘমেয়াদে নিরাপদ ও স্থিতিশীল হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সনদের পক্ষে থাকলে গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। সামনে আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ওপর গণভোট।’

এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে যাত্রা শুরু করেছে ১০টি ভোটের গাড়ি- সুপার ক্যারাভান। এসব গাড়ি দেশের ৬৪টি জেলা ও ৩০০টি উপজেলায় ঘুরে বেড়াবে। তারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দেবে, ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করবে এবং গণতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দেবে।

গণতান্ত্রিক এই যাত্রাকে সফল করতে তিনি সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।


তারেক রহমানকে বরণ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশবাসী

তারেক রহমানকে সংবর্ধনা দিতে ৩০০ ফিট এলাকায় মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে বরণ ও সংবর্ধনা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশবাসী। রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় প্রস্তুত হচ্ছে বিশাল মঞ্চ।

গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে বিশ্বরোড থেকে পূর্বাচলমুখী ৩০০ ফিট সড়কের একটি অংশজুড়ে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়। বিএনপির নেতারা জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে কমিটির সদস্যরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিএনপি নেতারা বলেন, তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য দেশবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ২৫ ডিসেম্বর ঢাকায় পৌঁছে বনানী-কাকলী হয়ে ৩০০ ফিট এলাকায় আসবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সেখানে আয়োজিত মূল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দেবেন।

এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, মঞ্চের দুই পাশে তাবু স্থাপন করা হয়েছে— যেখানে আপাতত ডেকোরেটরের সরঞ্জাম রাখা হয়েছে। রাস্তার ল্যাম্প পোস্টে লাগানো হচ্ছে মাইক।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে মঞ্চের আশেপাশে উৎসুক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ জড়ো হয়ে আছেন। কেউ কাজের তদারকি করছেন, আর কারোবা সাংগঠনিক কাজে মনোযোগ। দলটির সিনিয়র নেতারাও আসছেন, কাজের অগ্রগতি দেখছেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন মঞ্চের কাছে।

প্রস্তুতি সম্পর্কে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের এখানে যারা ডেকোরেটরের কাজ করছেন… মাইক লাগানো হচ্ছে। নিরাপত্তার বিষয়টা আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবকিছু তো আমাদের হাতে নাই। আমাদের ছেলেরা রাউন্ড দ্য ক্লক এখানে আছে, কাজ করছে। যাদের দায়িত্ব স্টেজ বানানো, মাইকের কাজ এগুলো চলছে।’

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে পুরো জাতি একটা শঙ্কা মধ্যে আছে, প্রতিটা মুহূর্তেই। নিরাপত্তা যতটুকু এনসিওর করা দরকার, আমরা চেষ্টা করছি। বাকিটা আল্লাহর হাতে। সরকারের পক্ষ থেকে অসহযোগিতা নাই।’

আব্বাস বলেন, ‘লাখো মানুষের সমাগমের পরিকল্পনা আমরা করি নাই। যদি লাখো মানুষ সমাবেত হয়ে যায়, সেটা তো আমাদের কিছু করার নাই। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসবেন। দেশে মানুষের মধ্যে একটা জাগরণ তো আছে। সে জাগরণের প্রতিফলন এখানে ঘটবে। এটা আমরা আশা করি।’

এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। সোমবার বেশ কয়েকজন পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্যান্টনমেন্ট জোনের পুলিশ ইন্সপেক্টর টি এম আব্দুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। তবে এটা রেগুলার চেকপোস্ট— যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনও ঘটনা না ঘটে। এখানের অবস্থা ভালো। গাড়ি আসতেছে তাদের চেক করা হচ্ছে।’

আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘‘তিনশ ফিটে সংবর্ধনা হবে। সেখানে নানা আয়োজন থাকবে বলে আশা করছি। পুরো শিডিউল নির্ধারণ হলে জানাতে পারবো।’

তিনি আরও জানান, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের দিন সকাল থেকেই মঞ্চে নানামুখী আয়োজন থাকবে। সাংস্কৃতিক পরিবেশনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি যুক্ত হতে পারে বলেও জানান তিনি।

সূত্র জানিয়েছে, সরকারি ও দলীয় মিলিয়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। মূল মঞ্চ, গণমাধ্যমের কর্মীরা নিরাপত্তা বলয়ে থাকবেন।


মব ভায়োলেন্সকে ক্ষমতার স্তম্ভ বিবেচনা রাষ্ট্রের দায়িত্বে অধিষ্ঠিতদের : ইফতেখারুজ্জামান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রকাঠামোর অভ্যন্তরে ‘মবতন্ত্র’ শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রকাঠামোর দায়িত্বে যারা অধিষ্ঠিত, তারা মব ভায়োলেন্সের পেছনের শক্তিকে তাদের ক্ষমতার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হিসেবে বিবেচনা করেন।’

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ এবং নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তার প্রতিবাদে সংবাদপত্রের মালিক ও সম্পাদকদের দুটি সংগঠন- নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) ও সম্পাদক পরিষদের যৌথ প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গতকাল সোমবার ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শিরোনামে এই সভা পরিচালনা করেন দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আজকে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, আমাদের সকলের, দেশবাসীর দায় এটা প্রতিহত করা, কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু মূল দায়িত্ব সরকারের। দেশের মানুষের নিরাপত্তায় সরকার কী করছে, সে প্রশ্নের উত্তর সরকারকে দিতে হবে।

প্রতিবাদ সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পেশাজীবী সংগঠন, ব্যবসায়ী সংগঠন, সাংবাদিক সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সংহতি জানাতে আসেন। সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় এই দুই গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বরেণ্য নাগরিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, সাংবাদিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা বলেছেন, এই হামলা কোন একটি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে নয়; এটি সরাসরি গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকারের ওপর আঘাত।

বক্তারা বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, শুধু গণমাধ্যম নয়, এটি গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। শিক্ষা ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত। যারা ‘মবের’ নামে নৈরাজ্য করছে, তাদের ঠেকাতে সরকার কেন তৎপর হয় না, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে সমাবেশ থেকে। সভায় বক্তাদের ভাষ্য, এই হামলার ঘটনায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ছিল ‘ভয়ঙ্কর’। প্রতিবাদ সভা থেকে স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার জন্য ‘ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের’ ডাক দিয়েছেন সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, লেখক, ব্যবসায়ী, নাগরিক ও পেশাজীবী সমাজের প্রতিনিধিরা।

সভাশেষে হোটেলের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। বক্তারা বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা ও গণতন্ত্রের বিকাশে সাংবাদিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী এবং সব পেশাজীবী মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ এখন সময়ের দাবি।

সমাপনী বক্তব্যে নোয়াব সভাপতি ও সমকাল প্রকাশক এ কে আজাদ বলেন, সবাই একটা কথা বলেছেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এটা প্রতিরোধ করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত না ডেইলি স্টার, প্রথম আলো, ছায়ানট, উদীচীসহ সকল হামলার বিচার না হবে, ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের মতামতের ভিত্তিতে আগামী মাসের মাঝামাঝি বড় আকারের মহাসম্মেলন করাও ঘোষণাও দেন।


banner close