বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৩ আশ্বিন ১৪৩২

প্রার্থী বেশি,প্রতিদ্বন্দ্বী কম

ফাইল ছবি
আপডেটেড
২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:১৪
তানজিমুল নয়ন
প্রকাশিত
তানজিমুল নয়ন
প্রকাশিত : ২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন ২ হাজার ৭১৩ জন প্রার্থী। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩২টি দল। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন ৭৪৭ জন। সে হিসাবে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যয়নপত্র নিয়ে নির্বাচনে উপস্থিত ১৯৬৬ জন প্রার্থী। আর স্বতন্ত্রদের মধ্যে অন্তত ৪০০ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন। তবে সাধারণ মানুষের অভিযোগ, নির্বাচনে আসা বড় দল আওয়ামী লীগের মূল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বাইরে অন্যদলগুলোর বেশির ভাগ প্রার্থীই আসনগুলোর মানুষের কাছে অচেনা। প্রায় প্রতিটি আসনেই নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন এমন অনেক অচেনা মুখ যাদের প্রার্থিতা পেতে সমস্যা না হলেও নির্বাচনী লড়াইয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে পরিচিত হতেই পার হয়ে যাবে প্রচারণার বেশির ভাগ সময়। ফলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, নির্বাচনে প্রার্থী আছে অনেক বেশি, কিন্তু, প্রতিদ্বন্দ্বী কম।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ৩০০ আসনের বিপরীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের (নৌকা) ৩০৩ জন, জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) ৩০৪ জন, জাকের পার্টি (গোলাপ ফুল) ২১৮ জন, তৃণমূল বিএনপি (সোনালী আঁশ) ১৫১ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি- এনপিপি (আম) ১৪২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) ১১৬ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (মশাল) ৯১ জন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (ফুলের মালা) ৪৭ জন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ) ১৩ জন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি) ১৮ জন, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার) ৩৯ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল) ১৩ জন, গণফ্রন্ট (মাছ) ২৫ জন, গণফোরাম (উদীয়মান সূর্য) ৯ জন, ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার) ৪৫ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) ৩৭ জন, জাতীয় পার্টি-জেপি (বাইসাইকেল) ২০ জন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) ৩৪ জন, গণতন্ত্রী পার্টি (কবুতর) ১২ জন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) ৩৩ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশ (কুলা) ১৪ জন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (একতারা) ৮২ জন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম (নোঙর) ৪৯ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট- বিএনএফ (টেলিভিশন) ৫৫ জন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি) ৭৪ জন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ- বিএমএল (হাত-পাঞ্জা) ৫ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- ন্যাপ (কুঁড়েঘর) ৬ জন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মই) একজন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (রিকশা) একজন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (খেজুর গাছ) একজন এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (হারিকেন) দুইজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

এদিকে মনোনয়ন জমার শেষ দিনেই ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের সময়সীমা বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ফলে বিএনপিসহ যে দলগুলো নির্বাচন বর্জন করেছে তাদের আর মত পাল্টে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসার দৃশ্যমান কোনো সুযোগ নেই। আন্দোলনরত দলগুলোও অবশ্য আগেই এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দিয়েছে।

ফলে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর যাচাই-বাছাই শেষে যেসব প্রার্থী টিকে যাবেন তারাই থাকবেন নির্বাচনী দৌড়ে। তবে প্রতিটি আসনে ভোটের লড়াইয়ে যারা যাচ্ছেন তাদের বেশির ভাগেরই দলের নাম সাধারণ মানুষ জানে না। আর দল অচেনা বলে প্রার্থীরাও অচেনা। ফলে তাদের ধারণা নির্বাচনী লড়াইয়ে আসলে টিকে থাকবেন বড় দলের পরিচিত মুখগুলো। এর মধ্যে শাসক দলের মার্কা নিয়ে লড়াই করা প্রার্থীরা যেমন আলোচনায় থাকবেন, তেমনই অনেক আসনেই তাদের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমাতে পারেন নির্বাচনে আসা আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। কেননা, দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বেশির ভাগই স্থানীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত এবং তাদের মোটামুটি ভোট ব্যাংক অথবা এলাকাবাসীকে প্রভাবিত করার সক্ষমতা রয়েছে। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া ৭৪৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে অন্তত ৪০০ জনই আওয়ামী লীগের।
যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত কয়েক দিনের মতো গতকালও বলেছেন, দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ঢালাওভাবে নির্বাচন করতে পারবেন না। এ ছাড়া ১৪-দলীয় জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির সম্ভাবনা রয়েছে আওয়ামী লীগের। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসতে পারবেন জোটের এমন প্রার্থীরাই কেবল থাকবেন বিবেচনায়। আর ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এর ফলে এটা স্পষ্ট যে, জোটের সঙ্গে সমঝোতা হলে কয়েকটি আসনে আওয়ামী লীগ যাদের মনোনয়ন দিয়েছে তাদেরও রণে ভঙ্গ দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে।

তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচনী কৌশল হিসেবে এবার দলীয় মার্কার বাইরে দলীয় প্রার্থীদের স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানোর সুযোগ দেয়ায় নির্বাচনে আসা প্রার্থীদের কতজন আবার দল চাইলে নির্দেশ মেনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন সেটাও আছে দেখার বিষয়।

তবে এই আলোচনার বাইরে থেকে যাচ্ছে বেশির ভাগ প্রার্থী যারা বিভিন্ন দল থেকে নির্বাচনে এলেও জনগণের কাছে নিজের দল, দলীয় প্রতীক এবং নিজের পরিচয় প্রকাশ করার সুযোগ পাবেন। তবে প্রতিটি আসনে স্থানীয় ভোটারদের কাছে তারা এখনো অচেনা এবং নতুন মুখ হিসেবে বিবেচিত।

যেমন দল হিসেবে এবারই প্রথম নির্বাচন করছে তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি। এসব দলের বেশির ভাগ প্রার্থী নিজ নিজ এলাকার ভোটারদের কাছে নতুন পরিচয়ে উপস্থিত হবেন। অনেকে আবার খুব বেশি পরিচিত নন। একইভাবে তাদের নির্বাচনী প্রতীক যথাক্রমে সোনালী আঁশ, নোঙর ও একতারা চেনাতেও এবার তাদের বিশেষ প্রস্তুতি নিতে হবে।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনএমের প্রার্থীদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য আছেন ৬ জন এবং তৃণমূলের প্রার্থীদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য আছেন ৫ জন।

এদিকে, গতকাল আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদের বলেছেন, বিএনপির ১৫ কেন্দ্রীয় নেতাসহ সাবেক ৩০ জন সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে কাদের সিদ্দিকী, লতিফ সিদ্দিকী, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর মতো নেতাও আছেন। আবার আগে বিএনপিতে প্রভাব ছিল দলটির এমন সাবেক নেতারাও আছেন নির্বাচনে। এদের মধ্যে তৈমূর আলম, সমশের মবিন চৌধুরীর নাম উল্লেখযোগ্য।

তবে এদের বাইরে নির্বাচনের মাঠে থাকা বেশির ভাগ প্রার্থীই অচেনা। এ বিষয়ে গাজীপুর-৪ আসনের একজন প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমার দল এলাকায় তেমন পরিচিত নয়। দলের প্রচার চালাতে ও এলাকার মানুষের কাছে নিজের পরিচয় তুলে ধরতে এবার ভোট করতে আসা। আমিও জানি নির্বাচনে জয়লাভ করার অবস্থান এখনো আমার বা আমার দলের তৈরি হয়নি। তবে এক দিনে তো কিছুই হয় না। আমাদের দলের আদর্শ ও কর্মসূচি দেশের মানুষ ও এলাকার মানুষকে জানাতে আমরা নির্বাচনে এসেছি।’

অন্যদিকে লালমনিরহাট-৩ আসনে মনোনয়ন জমা দেয়া প্রার্থীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই সদর আসনে ৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সদ্য পদত্যাগকারী সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাবেদ হোসেন বক্কর, জাতীয় পার্টি থেকে জাহিদ হাসান, তৃণমূল বিএনপি থেকে শামীম আহম্মেদ চৌধুরী, জাকের পার্টি থেকে সকিউজ্জামান মিয়া, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল থেকে আশরাফুল আলম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) থেকে আবু তৈয়ব মো. আজমুল হক পাটোয়ারী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) থেকে শ্রী হরিশ চন্দ্র রায় মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তবে এবার তিনি এ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেননি। ফলে এ আসনে নির্বাচনে অংশ নেয়া সব প্রার্থীই নতুন এবং নতুন একজন সংসদ সদস্য পাবে লালমনিরহাট সদরবাসী। তবে নতুন হলেও জেলা ও শহরের রাজনীতিতে পুরনো মুখ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান। ছাত্ররাজনীতি করায় জাবেদ হোসেন বক্করও সেখানে পরিচিত মুখ। জাকের পার্টি ও জাসদের প্রার্থীকেও অনেকে চেনেন। তবে সাম্যবাদী দল, এনপিপির প্রার্থীর মতো জাতীয় পার্টির প্রার্থীও এলাকার সবার চেনা মুখ নন। ফলে যে আসন থেকে জাতীয় পার্টি বর্তমান সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে সেখানে নতুন মুখ দেয়ায় মাঠের রাজনীতিতে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন এলাকার অনেক বাসিন্দা।

বিষয়টা আরও স্পষ্ট হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনার ৬টি আসন বিশ্লেষণ করলে। দৈনিক বাংলার খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনার এই ৬টি আসনের জন্য সেখানে ৫৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে যারা সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচন করবেন, তাদের অধিকাংশেরই রাজনীতিতে তেমন কোনো পরিচিতি নেই। হঠাৎ করেই তারা কেন সংসদ নির্বাচনে আগ্রহী হলেন, এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উত্তরও দেননি অধিকাংশ প্রার্থী।

খুলনা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের মনোনীত ৬ জন প্রার্থী, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ২ জন এবং জাতীয় পার্টির একজন প্রার্থীর রাজনৈতিক পরিচিতি রয়েছে। বাকি ৪৪ জন প্রার্থী কখনো রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় ছিলেন না।

খুলনা প্রতিনিধির বিশ্লেষণ অনুযায়ী খুলনা-১ আসনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৬ জন। তারা হলেন, জাকের পার্টির মো. আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ননী গোপাল মণ্ডল, জাতীয় পার্টির কাজী হাসানুর রশিদ, তৃণমূল বিএনপির গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রশান্ত কুমার রায় ও আবেদ আলী শেখ।

এদের মধ্যে ননী গোপাল মণ্ডল ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। রাজনীতিতে তার পরিচিতি রয়েছে। তবে বাকি চারজন রাজনীতিতে একেবারেই অপরিচিত। তারা প্রত্যেকেই এবার প্রথম সংসদ নির্বাচন করছেন। এদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রশান্ত কুমার রায় পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সাবেক সচিব।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমি নির্বাচন করছি। আমাকে ডামি প্রার্থীও বলা যাবে। এটা দলীয় নির্দেশেই হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের ননী গোপাল মণ্ডল বলেন, ‘দল আমাকে আবারও সুযোগ দিয়েছে। আমি দলের সম্মান রাখব বলে আশাবাদী।’

তবে বাকি চার প্রার্থীর তেমন কোনো রাজনৈতিক পরিচিতি নেই। জাতীয় পার্টীর কাজী হাসানুর রশিদ ও তৃণমূল বিএনপির গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিকের কাছে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলেও কোনো উত্তর মেলেনি।

আর জাকের পার্টি মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘দল থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে বলেছে, তাই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি।’

অন্যদিকে খুলনা-২ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৯ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, গণতন্ত্র পার্টির মো. মতিয়ার রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের দেবদাস সরকার, জাকের পার্টির ফরিদা পারভিন, ইসলামী ঐক্যজোটের হিদায়েতুল্লাহ, জাতীয় পার্টির মো. গাউসুল আজম, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বাবু কুমার রায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাঈদুর রহমান।

এদের মধ্যে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীর রাজনৈতিকভাবে পরিচিতি রয়েছে। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। তবে বাকিদের আগে কখনো রাজনৈতিক মাঠে দেখা যায়নি।

কেন প্রার্থী হয়েছেন- এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ কংগ্রেসের দেবদাস সরকার বলেন, ‘অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়ন জমা দেয়া হচ্ছে, তাই আমরাও দিচ্ছি।’

খুলনা-৩ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৫ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের এস এম কামাল হোসেন, জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন, জাতীয় পার্টির মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্বতন্ত্র প্রার্থী কাইজার আহমেদ ও ফাতেমা জামান সাথী।

এদের মধ্যেও শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের প্রার্থীর রাজনৈতিক পরিচিতি রয়েছে। তিনি দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। তিন বারের সংসদ সদস্য ও দুই বারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানকে সরিয়ে তাকেই আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে। তবে ওই আসনেরও বাকি চারজনের তেমন কোনো রাজনৈতিক পরিচিতি নেই।

খুলনা-৪ আসন থেকে মনোনয়ন নিয়েছেন ১৪ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের আব্দুস সালাম মূর্শেদী, জাকের পার্টির শেখ আনছার আলী, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের এস এম আজমল হোসেন, জাতীয় পার্টির মো. ফরহাদ আহমেদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. মোস্তাফিজুর রহমান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনিরা সুলতানা, ইসলামী ঐক্যজোটের রিয়াজ উদ্দীন খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জুয়েল রানা, এম ডি এহসানুল হক, মো. রেজভী আলম, এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা, আতিকুর রহমান ও এইচ এম রওশান জমির।

এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের আব্দুস সালাম মূর্শেদী বর্তমান সংসদ সদস্য। ২০১৮ সালের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে তিনি জয়ী হয়েছিলেন।

এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারার দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। তিনি ওই আসনের তিন বারের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার আপন ভাই।

তিনি বলেন, এলাকার মানুষের দোয়া নিয়ে মাঠে নেমেছি। জয়-পরাজয় এলাকার মানুষই নির্ধারণ করবেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই আসনে আওয়ামী লীগের এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এলাকার ভোটাররা বলছেন, বাকি ১২ জন প্রার্থীদের নাম খুব একটা শোনেননি তারা। কেউ কেউ একেবারেই অপরিচিত।

খুলনা-৫ আসনের জন্য মনোনয় জমা দিয়েছেন ৭ জন। তারা হলেন- জাতীয় পার্টির মো. শহীদ আলম, জাকের পার্টির সামাদ সেখ, আওয়ামী লীগের নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ সেলিম আকতার, বাংলাদেশ কংগ্রেসের এস এম এ জলিল, ইসলামী ঐক্যজোটের তরিকুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন।

এদের মধ্যে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ একাধিক বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী। এ ছাড়া আকরাম হোসেন ফুলতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এই আসনেও আওয়ামী লীগের এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা। বাকি যারা প্রার্থী হয়েছেন এলাকার রাজনীতিতে তাদের তেমন কোনো পরিচিতি নেই বলে জানা গেছে।

খুলনা-৬ আসনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ১২ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. রশীদুজ্জামান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. আবু সুফিয়ান, জাকের পার্টির শেখ মর্তুজা আল মামুন, জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধু, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মির্জা গোলাম আজম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের এস এম নেওয়াজ মোরশেদ, তৃণমূল বিএনপির গাজী নাদীর উদ্দীন খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম রাজু, গাজী মোস্তফা কামাল, জি এম মাহবুবুল আলম, মো. মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর ও মো. অহিদুজ্জামান মোড়ল।

এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. রশীদুজ্জামানের কোনো দলীয় পদ নেই। তিনি একসময় পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্যসচিব ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জামানত হারিয়েছিলেন। তবে তাকেই মনোনয়ন দিয়ে চমক সৃষ্টি করেছে ক্ষমতাসীন দল। ওই আসনে রাজনৈতিকভাবে পরিচিত রয়েছে জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধুর। তিনি আগেও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। বাকি প্রার্থীদের তেমন কোনো রাজনৈতিক পরিচিতি নেই। এলাকার সবার কাছে পরিচিত মুখও নন অনেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশির ভাগ আসনেই ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থীদের স্থানীয়রা তেমন একটা চেনেন না। তবে বিরোধীদের এক অংশ নির্বাচন বর্জন করায় রাজনীতির নতুন সমীকরণ মেলাতে ছোট দলগুলোই নির্বাচনে হতে যাচ্ছে বড় দলগুলোর সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনীযুদ্ধ পার হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী।

জাসদের মাঠপর্যায়ের এক রাজনীতিবিদ জসিম মণ্ডল বলেন, ‘নির্বাচন একটা বড় খেলা। এখানে সবাই নামে নিজ নিজ সমীকরণ মেলানোর জন্য। রাজনৈতিক দলগুলোর সমীকরণ হয় এক ধরনের, আবার প্রার্থীর সমীকরণ হয় আরেক ধরনের। সবাই নির্বাচনে জয়ী হতে যেমন অংশ নেয় না তেমনই কেউ কেউ নির্বাচনে যায় অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করতে। আবার অনেকের কাছে ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণই বড় কথা।’ জয়-পরাজয়ের চেয়েও বড় বিষয় এ সময় পোস্টারিং করে নিজের ছবি ও পরিচিতি পুরো এলাকার মানুষকে দেখানো যায়। এটাও বা কম কিসে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশের প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরই আছে নির্বাচনে দাঁড়ানোর অধিকার। তাই কটা টাকা খরচ করে অনেকেই পরিচিতি বাড়ানোর সুযোগ নেয়। এর ফল তো অসীম-সারাজীবন নানাভাবে এর সুফল মেলে। যারা রাজনীতিতে আছেন, কেবল তারাই বোঝেন নির্বাচনে অংশ নিতে পারার গুরুত্ব।


ভারতে ইলিশ রপ্তানি শুরু, প্রথম চালানে গেল কত টন

আপডেটেড ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১১:৩৮
বেনাপোল প্রতিনিধি 

আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত একটার দিকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সাতটি ট্রাকে ইলিশ পাঠানো হয়। ৩৭ দশমিক ৪৬ মেট্রিক টন ইলিশ নিয়ে ট্রাকগুলো ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, ভারতের কলকাতার ৫টি প্রতিষ্ঠান ইলিশ আমদানি করছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ন্যাশনাল ট্রেডিং, এফএনএস ফিশ, জয় শান্তসী, মা ইন্টারন্যাশনাল ও আর জে ইন্টারন্যাশনাল। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি করেছে সততা ফিশ, স্বর্ণালি এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, বিশ্বাস এন্টারপ্রাইজ ও লাকী ট্রেডিং নামের প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশ সরকার আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে ভারতে মোট এক হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।

এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি করতে পারবে ৫০ টন ইলিশ, ২৫টি প্রতিষ্ঠান ৩০ টন করে (৭৫০ টন), ৯টি প্রতিষ্ঠান ৪০ টন করে (৩৬০ টন) এবং দুটি প্রতিষ্ঠান ২০ টন করে (৪০ টন) ইলিশ ভারতে রপ্তানি করতে পারবে।

বেনাপোল মৎস্য কোয়ারেন্টিন কর্মকর্তা সজীব সাহা বলেন, ‘প্রতিকেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলারআগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে রপ্তানি শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের।’


লিবিয়ার উপকূলে নৌকায় আগুন, অন্তত ৫০ সুদানি শরণার্থীর মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

লিবিয়ার উপকূলে সুদানি শরণার্থীবাহী একটি নৌকায় আগুন লাগার ঘটনায় অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, ওই দুর্ঘটনার সময় নৌকাটিতে ৭৫ জন শরণার্থী ছিলেন।

মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

আইওএম জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ২৪ জনকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি এক্স-এ পোস্ট করে বলেছে, সমুদ্রপথে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

এর আগেও সমুদ্রপথে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। গত মাসে ইয়েমেন উপকূলে একটি নৌকা ডুবে অন্তত ৬৮ শরণার্থী ও অভিবাসীর মৃত্যু হয়, নিখোঁজ হয় আরও অনেকে।

আইওএম-এর তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত বছরই ভূমধ্যসাগরে ২ হাজার ৪৫২ অভিবাসী বা শরণার্থী প্রাণ হারিয়েছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সমুদ্রপথগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।

২০১১ সালে লিবিয়ার সাবেক নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে দেশটি আফ্রিকা থেকে ইউরোপগামী শরণার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়েছে। গাদ্দাফির আমলে আফ্রিকার বহু মানুষ লিবিয়ায় কাজ করলেও তাঁর পতনের পর দেশটিতে বিভিন্ন মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সংঘাতে স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়।

গত আগস্টে ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপের কাছে দুটি নৌকা ডুবে অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়। তার আগে জুন মাসে লিবিয়া উপকূলে দুটি জাহাজডুবিতে অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয় বা নিখোঁজ হন।

মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা বলছে, লিবিয়ায় আটক শরণার্থী ও অভিবাসীরা নিয়মিতভাবে নির্যাতন, ধর্ষণ ও অর্থ আদায়ের শিকার হচ্ছেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন অভিবাসন ঠেকাতে লিবিয়ার কোস্টগার্ডকে সরঞ্জাম ও অর্থসহায়তা দিয়েছে। কিন্তু ওই কোস্টগার্ডের সঙ্গে নির্যাতন ও অপরাধে জড়িত মিলিশিয়ার সম্পর্ক থাকার অভিযোগ উঠেছে।

এনজিওগুলো বলছে, সরকারি সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ কার্যক্রম কমিয়ে দেওয়ায় এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সীমিত করায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়া অভিবাসীদের জীবন আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে যুদ্ধ, সংঘাত ও নির্যাতন থেকে পালিয়ে আসা বহু মানুষ লিবিয়ায় আটকে পড়ছেন এবং অমানবিক অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।


ভুয়া প্রমাণিত হলে জুলাই যোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা: মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভুয়া প্রমাণিত হলে জুলাই যোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি পরিলক্ষিত হয়েছে যে, কিছু কিছু গণমাধ্যমে ভুয়া জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধা শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে। ওই সংবাদগুলোর প্রতি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের গেজেট প্রকাশ এবং ভাতাসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতে জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের এম.আই.এস ভুক্ত যে তালিকা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে ইতোমধ্যে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

জুলাই শহীদ এবং জুলাই যোদ্ধার তালিকায় যে সকল ভূয়া জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল তাদের নাম যাচাই বাছাই করে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ইতোমধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।

এছাড়াও গণমাধ্যমে যে সকল ভুয়া জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের নাম প্রকাশিত হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর তা পুনরায় যাচাই-বাছাই করছে।

কোনো প্রকার ভুয়া প্রমাণিত হলে তাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


সুষ্ঠু নির্বাচন করতে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব চান ইসির কর্মকর্তারা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব চান নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তারা। গতকাল মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মনির হোসেন জানান, ২৭ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবি নিয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত হবে সারা দেশের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সম্মেলন।

তিনি আরো বলেন, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে কমিশনকে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।

কমিশন তা আমলে নিয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকেও ভালো নির্বাচনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তিনটি দাবির পাশাপাশি সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে কমিশনকে বেশ কিছু পরামর্শও দেওয়া হয়।

কর্মকর্তাদের সুপারিশগুলোর মধ্যে আরো আছে—পদ সৃজন, আপগ্রেডেশন এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিকসহ প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যস্তকরণ।

এ সময় অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যসচিব মোহাম্মদ মতিয়ুর রহমান, উপজেলা, থানা ও সমমান ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক আশফাকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।


তীব্র গরমে গত বছর বাংলাদেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশে তীব্র গরমের কারণে প্রতি বছর বিপুল কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। আর্থিক দিক থেকেও এই ক্ষতির পরিমাণ বিশাল। বিশ্বব্যাংকের এক নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান তাপজনিত অসুস্থতায় শুধু ২০২৪ সালেই প্রায় ২৫ কোটি কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে। এতে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন থেকে ১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার, যা জিডিপির প্রায় ০.৩ থেকে ০.৪ শতাংশ। টাকার অংকে এই ক্ষতির পরিমাণ ২১ হাজার কোটিরও বেশি।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে 'অ্যান আনসাসটেইনেবল লাইফ: দ্য ইমপ্যাক্ট অব হিট অন হেলথ অ্যান্ড দ্য ইকোনমি অব বাংলাদেশ' শীর্ষক এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, যখন তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়, তখন কর্মীদের উৎপাদনশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। গরম বেড়ে যাওয়া বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

১৯৭৬ থেকে ২০২৩ সালের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার তথ্য বিশ্লেষণ এবং ২০২৪ সালে ১৬ হাজার মানুষকে নিয়ে করা দুই দফা জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৮০ সালের পর থেকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে অনভূত তাপমাত্রা বেড়েছে ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর ফলে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী কাশি, অবসাদসহ নানা শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি বিষণ্নতা ও উদ্বেগের মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাও বাড়ছে।

তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ১৯৮০ সালের পর থেকে দেশের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর এ সময়ে ঢাকায় বেড়েছে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ, ঢাকার তাপমাত্রা জাতীয় গড়ের চেয়ে প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি।

বিশ্বব্যাংক বলছে, তাদের প্রতিবেদন শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতার সঙ্গে তাপের সম্পর্ক পর্যালোচনা করেছে। এতে উদ্বেগজনক চিত্র পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া জনগণের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কাশির সমস্যা সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। শীতে যেখানে কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার হার ৩.৩ শতাংশ, গ্রীষ্মে আক্রান্তের হার বেড়ে ৬ শতাংশ হয়েছে। ৬৬ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কাশির প্রবণতা বেশি। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রা থাকলে, দীর্ঘমেয়াদি কাশির হার ২২.৭ শতাংশ বেড়ে যায়।

জরিপে অংশগ্রহণকারী ২.৬ শতাংশ ব্যক্তির মধ্যে তাপজনিত ক্লান্তি দেখা গিয়েছিল। ৩৬ বছর থেকে ৬৫ বছর বয়সী কর্মক্ষম জনগণের এবং ৬৬ বছরের বেশি বয়সি প্রবীণদের মধ্যে গ্রীষ্মকালে তাপজনিত ক্লান্তি সবচেয়ে বেশি ছিল। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার তুলনায়, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায়, তাপজনিত ক্লান্তির সম্ভাবনা ২৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায় বলে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রীষ্মকালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হার ৪.৪ শতাংশ ছিল, শীতকালে এটি ছিল ১.৮ শতাংশ। এই রোগে সবচেয়ে বেশি ভূক্তভোগী হয় নারী ও ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার তুলনায়, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর তাপমাত্রায় ডায়রিয়ার সম্ভাবনা ৪৭.৭ শতাংশ বেড়ে যায়।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে উষ্ণায়ন মানসিক স্বাস্থ্যেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। জরিপে দেখা গেছে, শীতে যেখানে বিষণ্নতায় ভোগার হার ১৬.২ শতাংশ থাকে, গ্রীষ্মে তা বেড়ে ২০ শতাংশ হয়। একইভাবে শীতে যেখানে অস্থিরতা বা উদ্বেগজনিত মানসিক সমস্যার হার ৮.৩ শতাংশ পাওয়া গেছে, গ্রীষ্মে তা বেড়ে ১০ শতাংশ হয়েছে। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার তুলনায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় এই দুই সমস্যা যথাক্রমে ২৩.৮ শতাংশ এবং ৩৭.১ শতাংশ বেড়ে যায়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন—পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য) ডা. মো. সায়েদুর রহমান। এই আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশনস অফিসার ইফফাত মাহমুদ এবং সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ওয়ামেক এ. রাজা।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ডিভিশনাল ডিরেক্টর জাঁ পেসমে, সাউথ এশিয়া হেলথ নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন প্র্যাকটিস ম্যানেজার ড. ফেং ঝাও।


জিআইসিসি সম্মেলনে সেতু বিভাগের সচিবে'র অংশগ্রহন

আপডেটেড ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২১:৪০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ওয়েস্টিন পারনাস হোটেলে আজ থেকে ০৩(তিন) দিনব্যাপী (১৬-১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার কো-অপারেশন কনফারেন্স (জিআইসিসি)-২০২৫ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। সম্মেলনে সেতু সচিব সেতু বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের উপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সেতু সচিব প্রেজেন্টেশনে উল্লেখ করেন সেতু বিভাগের কয়েকটি প্রকল্পে কোরিয়ান ইডিসিএফ/ইডিপিএফ (EDCF/EDPF) অর্থানয়ের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের পরিবহন খাতে দক্ষিণ কোরিয়ার কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।

জিআইসিসি-২০২৫ সম্মেলনের লক্ষ্য কোরিয়ান নির্মাণ সংস্থাগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি করা এবং বিভিন্ন দেশের প্রকল্প বাস্থবায়নকারীদের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করা। এটি মূলত একটি বিজনেস-টু-বিজনেস প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, যেখানে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো বিদেশী সরকার, প্রজেক্ট ডেভেলপার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে। সম্মেলনে প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ৩০টি দেশের মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এবং কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় নির্মাণ সংস্থাগুলির কর্মকর্তারা রয়েছেন।

এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো: বিভিন্ন দেশের আসন্ন অবকাঠামো প্রজেক্ট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদান, বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন, নতুন প্রজেক্টে অংশগ্রহণের জন্য চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং কোরিয়ান উন্নত প্রযুক্তি যেমন স্মার্ট সিটি, হাই-স্পিড রেল, এবং স্মার্ট পোর্ট সিস্টেমের সাথে পরিচিতি করা।

এছাড়াও সম্মেলনের বাকী অংশে বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের প্যানেল আলোচনা, বিভিন্ন দেশের প্রজেক্ট ব্রিফিং, ব্যক্তিগত বিজনেস মিটিং, কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো তাদের নতুন প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে।


ভুয়া প্রমাণিত হলে জুলাই যোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা : মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ভুয়া প্রমাণিত হলে জুলাই যোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি পরিলক্ষিত হয়েছে যে, কিছু কিছু গণমাধ্যমে ভূয়া জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধা শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে। উক্ত সংবাদগুলোর প্রতি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের গেজেট প্রকাশ এবং ভাতাসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতে জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের এম.আই.এস ভুক্ত যে তালিকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে ইতোমধ্যে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

জুলাই শহীদ এবং জুলাই যোদ্ধার তালিকায় যে সকল ভূয়া জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল তাদের নাম যাচাই বাছাই করে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ইতোমধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।

এছাড়াও গণমাধ্যমে যে সকল ভুয়া জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের নাম প্রকাশিত হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর তা পুনরায় যাচাই-বাছাই করছে।

কোনো প্রকার ভুয়া প্রমাণিত হলে তাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


ধর্ম মত নির্বিশেষে সবাই আমরা এক পরিবারের সদস্য: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। ছবি : প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেইজ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সমান মর্যাদার অধিকারী এবং ধর্ম, মত বা অর্থনৈতিক অবস্থার ভিত্তিতে কাউকে কোনোভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। পুরো জাতি একটি পরিবার। পরিবারের ভেতরে মতভেদ থাকতে পারে, ব্যবহারের পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু পরিবার একটি অটুট জিনিস—এটাকে কেউ ভাঙতে পারবে না। আমরা যেন জাতি হিসেবে এই অটুট পরিবার হয়ে দাঁড়াতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

আজ রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। এর আগে তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘যত ধর্মীয় পার্থক্য থাকুক, মতের পার্থক্য থাকুক, রাষ্ট্রের কোনো অধিকার নেই বৈষম্য করার। রাষ্ট্র দায়িত্ববদ্ধ সবাইকে সমান মর্যাদা দেওয়ার জন্য। সে যেই ধর্মেই বিশ্বাস করুক, যে মতবাদেই বিশ্বাস করুক, ধনী হোক কিংবা গরিব—রাষ্ট্রের কাছে সে একজন নাগরিক। নাগরিকের সকল অধিকার সংবিধানে লিপিবদ্ধ আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র আমাদের তালিকা করে দিয়েছে আমার প্রাপ্য কী। কোনো সরকারের অধিকার নেই কাউকে বঞ্চিত করার, সামান্যতম পরিমাণেও নয়। আমরা নাগরিক—আমাদের প্রতি কোনো রকম বৈষম্য করা যাবে না। এ অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের সবসময় সোচ্চার থাকতে হবে।’

নাগরিক অধিকার প্রসঙ্গে তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যত কথাই বলুন, তার মধ্যে বারে বারে বলুন—আমি এ দেশের নাগরিক, আমার সংবিধান প্রদত্ত সকল অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তখন দেখবেন সবাই আপনাদের সঙ্গী হবে। সারা দেশের মানুষ একসঙ্গে থাকবে, কারণ সবার সমস্যাই একই—নিজের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।’

নাগরিক অধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা বারবার লাঞ্ছিত হই, অপমানিত হই, নানা বৈষম্যের শিকার হই। কেন? কারণ নাগরিক অধিকারের প্রশ্নে আমরা হতাশ হয়ে গেছি। এখন আর হতাশ হওয়া চলবে না। নতুন বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো—সবার নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা।’

প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা চাই না নিরাপত্তা বাহিনীর ঘেরাটোপে থেকে ধর্ম পালন করতে। আমরা চাই নাগরিক হিসেবে মুক্তভাবে যার যার ধর্ম পালন করতে। এ অধিকার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ভূমিকা পালন করছে, আমরা এজন্য কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমাদের এমন একটি দেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে মানুষের ধর্মীয় উৎসব পালনে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ঘেরাটোপের প্রয়োজন হবে না।’

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা তার ব্যক্তিগত অনুভূতির কথাও ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম এবার হয়তো আমাকে এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত করা হবে। কিন্তু আমি নাছোড়বান্দা। আমি বললাম, যাবই। এই আনন্দ থেকে আমি নিজেকে দূরে রাখতে চাইনি। যদিও শারদীয় দুর্গাপূজার সময়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের অধিবেশনে সরকার প্রধান হিসেবে আমাকে থাকতে হবে, তাই আমি আগেভাগে এসেছি আপনাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গতবার যখন এখানে এসেছিলাম, তখনও বলেছিলাম—আমরা সবাই একটি পরিবার। পারিবারিক মতভেদ থাকবেই, কিন্তু পরিবার ভাঙবে না।’

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস সাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ধর্ম উপদেষ্টা ড.আ ফ ম খালিদ হোসেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দে প্রমূখ বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।


জনবল ও ঔষধ সংকটে ৩টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল‍্যাণ কেন্দ্র এখন নিজেই অসুস্থ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মেহেরপুর প্রতিনিধি  

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল‍্যাণ কেন্দ্রে একটিতে চাষ করা হচ্ছে হলুদ,অন‍্যটিতে শুকানো হচ্ছে পাট,রাতে মাদক সেবীর আড্ডা

বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৬ সালে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের দৌড়গোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষে মেহেরপুর গাংনী উপজেলায় তিনটি ইউনিয়ন ষোলটাকা, কাজিপুর ও ধানখোলা চালু করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র।

গত সাত মাস যাবৎ কোনো ওষুধ বরাদ্দ না থাকায় সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। আর কেরামতি বেড়েছে গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারদের।

ষোলটাকা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল‍্যাণ কেন্দ্রের ভিতরে চাষ করা হয়েছে হলুদ। আর এই উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন কাজিপুর। সেই কেন্দ্রটিতে দিনের বেলায় শুকানো হয় পাট। আর সন্ধ্যা লাগলেই পরিণত হয় মাদক সেবীদের আকড়া হিসেবে। আর ধানখোলায় ঝুলছে তালা।

কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তিনটি ইউনিয়নের কয়েক লাখ সাধারণ মানুষ। বর্তমানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল দশা।

মেডিকেল অফিসারসহ চারটি পদের মধ্যে রয়েছে মাত্র একজন উপসহকারী কমিউিনিটি মেডিকেল অফিসার।

তা ছাড়া ওষুধ ও জনবল সংকটে নরমাল ডেলিভারি, প্রসূতি সেবা, কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্যসেবা, সাধারণ স্বাস্থ্যসেবাসহ নানা সেবা বন্ধ রয়েছে। ফলে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তিনটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ।

একেকটি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন মেডিকেল অফিসার, একজন উপসহকারী কমিউিনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন ফার্মাসিস্ট ও একজন পিয়নের পদ থাকলেও সেখানে নামমাত্র একজন উপসহকারী কমিউিনিটি মেডিকেল অফিসার দিয়ে চলছে এই সব উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

এদিকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর ভবন ও বাসভবন দুটিই একেবারই ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। ছাদ থেকে ঢালায় খসে খসে পড়ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যার পর পরিত্যক্ত ভবনে বসছে নিয়মিত মাদকের আড্ডা।

সেবা প্রার্থী ষাট বছর উধ্বো জমেলা খাতুন বলেন,আমার বয়স হয়েছে আর রোগেও পাল্লা দিয়েছে। গরীব মানুষ ঔষধ কিনতে টাকা থাকে না। এই হাপানি রোগ নিয়ে দির্ঘদিন ভুগছি। এই হাসপাতালে এসে ঔষধ নিয়ে খেলে কম থাকে। একটু আরাম পাই। অথচ গত ৫/৬ মাস যাবৎ কোনো ওষুধ নেই। জরুরি চিকিৎসার জন্য গাংনী, মেহেরপুর কিংবা কুষ্টিয়া যেতে হয়। কিছু দিন আগে সহড়াবাড়িয়া গ্রামের এক কৃষক হঠাৎ অসুস্থ হলে গাংনী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায়।

কাজিপুর গ্রামের বাসিন্দা জুয়াদ আলী বলেন, আমরা সিমান্ত এলাকার মানুষ হওয়াই বড় পাপ করে ফেলেছি। আমরা রাষ্ট্রের নাগরিক সেবার অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত হয়ে আছি। আমাদের ইউনিয়ন পারিবারিক স্বাস্থ‍্য কেন্দ্র খাতা কলমে আছে। আর সেবার ক্ষেত্রে শূন‍্য।

ষোলটাকা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো নামেই আছে, এখানে ডাক্তার ও নার্স নেই। প্রয়োজনীয় ওষুধ সময় মতো পাওয়া যায় না। বেশির ভাগ সময় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকে।বতর্মান হাসপাতালের ভিতরে হলুদ চাষ হচ্ছে। আর অন‍্য সময় মাদকসেবীদের দখলে। তাই জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তার এবং নার্সের প্রয়োজন।

ধানখোলা ইউনিয়নের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ফিরোজ বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর কোয়ার্টার ভবনগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় সেখানে কোনো ডাক্তার থাকতে পারেন না। তাই রাতের আঁধারে চিকিৎসার জন্য রোগীদের শহরে নিয়ে যেতে হয়। এ ছাড়া, নিয়মিত ওষুধ পাওয়া যায় না।এতে গ্রামের মানুষের চিকিৎসাসেবা পেতে ব্যহত হচ্ছে।

ষোলটাকা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, জনবল ও ওষুধ সংকট রয়েছে। জনবল ও ওষুধ দিলে কিছুটা হলেও স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব হবে। তা ছাড়া চারজনের কাজ একাই করতে হয়।

কাজিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলম হুসাইন বলেন, আমার ইউনিয়ন পরিষদের কাছেই অবস্থিত ইউনিয়ন পরিবার ও স্বাস্থ‍্য কেন্দ্র। এটির অধিকাংশ ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। সন্ধ্যায় পর যখন এলাকা ফাকা থাকে তখন মাদকসেবীরা আড্ডায় বসে। অনেক ভবনের জ্বানালা দরজা খুলে বিক্রি করে দিয়েছে মাদক সেবীরা। আমারা সিমান্ত এলাকার মানুষ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে হলে ১৫ কিলো যাওয়া লাগে। তাই এটি দ্রুত চালু করা দরকার।

এদিকে মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. এ.কে.এম. আবু সাঈদ বলেন, দ্রুত ওষুধ সরবরাহ করা হবে এবং শিগগিরই জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। সপ্তাহে দুই কিংবা তিন দিন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র কিছু সময়ের জন্য খোলা থাকলেও বাকি সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করতে হয় ওই সব উপসহকারী কমিউিনিটি মেডিকেল অফিসারদের।


প্রধান উপদেষ্টার ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তিনি সেখানে উপস্থিত হন।

মন্দির পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টা সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে এক শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় যোগ দিয়েছেন।


ওজোনস্তর রক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য : পরিবেশ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ওজোনস্তর রক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য। তিনি বলেন, ওজোনস্তর ক্ষয়ের ফলে মানবস্বাস্থ্য, কৃষি উৎপাদন ও প্রাণিজগৎ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তবে মন্ট্রিয়ল প্রটোকলের মতো কার্যকর আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কারণে পৃথিবী আজ ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। এটি একটি দৃষ্টান্ত যে, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে আন্তর্জাতিক আইনও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা।

মঙ্গলবার বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, উন্নত দেশগুলো অর্থ ও প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করায় ওজোনস্তর রক্ষায় বৈশ্বিক সাফল্য এসেছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়ও একইভাবে উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি ও সহযোগিতা অপরিহার্য। আমরা চাই, সমালোচনাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপে রূপান্তরিত করা হোক। ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক আচরণে পরিবর্তন আনলেই টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব, তিনি যোগ করেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান। বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক এবং ইউএনডিপির প্রতিনিধি প্রমুখ । মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন মানিক,

অনুষ্ঠানে বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।


বৃষ্টি থামার আভাস নেই, তাপমাত্রা নিয়ে নতুন বার্তা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশে আগামী পাঁচ দিন টানা বৃষ্টি ঝরতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও অতিভারি বর্ষণ হওয়ার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটি বলছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে— এ অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

পাশাপাশি সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, আগামীকাল বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেই সঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে দিনের ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

আগামী শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।

এ সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

এ ছাড়া আগামী শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে। এ সময়ের মধ্যে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই।


বিতর্কিত ওয়াকফ আইনের কয়েকটি ধারা স্থগিত করলো ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের শীর্ষ আদালত মুসলিমদের সম্পত্তি নিয়ে একটি বিতর্কিত আইনের মূল ধারাগুলো স্থগিত করেছে। তবে আইনটিকে সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে।

গত এপ্রিল মাসে ভারতের পার্লামেন্ট প্রণীত ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনটিতে মুসলিমদের দান করা এবং কোটি কোটি ডলার মূল্যের সম্পত্তি পরিচালনার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়। এর বিরুদ্ধে মুসলিম সংগঠন এবং বিরোধী দলগুলোর আনা আবেদনের শুনানি করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

আবেদনকারীরা বলছেন, আইনটি মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকার লঙ্ঘন করে। কিন্তু সরকারের যুক্তি হলো, এর লক্ষ্য মুসলিমদের সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা আরও স্বচ্ছ করা। ইসলামী ঐতিহ্যে ওয়াকফ হলো সম্প্রদায়ের কল্যাণের জন্য মুসলমানদের প্রদত্ত একটি দাতব্য বা ধর্মীয় দান। এই ধরনের সম্পত্তি বিক্রি বা অন্য কোনো উদ্দেশে ব্যবহার করা যাবে না।

মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান এবং এতিমখানার জন্য এগুলো ব্যবহার করা হয় বলে ভারতের ২০ কোটি মুসলমানের কাছে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।

ঐতিহাসিকভাবে এই সম্পত্তিগুলো ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে এসেছে। এগুলো পরিচালনার জন্য রাজ্য-স্তরের ওয়াকফ বোর্ড গঠন বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।

কিন্তু এই বছরের শুরুর দিকে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন সরকার আইনটি সংশোধন করে এতে নতুন বিধান যুক্ত করে। ওয়াকফ সম্পত্তি কীভাবে নির্ধারণ এবং পরিচালনা করা হবে, তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছিল। ভারতে মুসলিমদের দান করা জমি নিয়ে অবিরাম আইনি লড়াই।

গতকাল সোমবার ভারতের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি এজি মাসিহের একটি বেঞ্চ পুরো আইনটি বাতিল করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে তারা একটি বিতর্কিত বিধান স্থগিত করেছে, যে বিধান সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে দেয় যে, বিতর্কিত সম্পত্তি ওয়াকফ কিনা।

ঐতিহাসিকভাবে মৌখিক ঘোষণা বা সম্প্রদায়ের রীতিনীতির মাধ্যমে দান করা অনেক সম্পত্তি মুসলিম সম্প্রদায়ের ক্রমাগত ব্যবহারের কারণে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবে বৈধতা পেয়েছে।

সরকারি তথ্য থেকে জানা যায়, ভারতে (কাগজে) ৮৭২৮৫২টি ওয়াকফ সম্পত্তির মধ্যে কমপক্ষে ১৩২০০টি আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে আছে। ৫৮ হাজার ৮৮৯টি দখল করা হয়েছে এবং ৪৩৬০০০টিরও বেশি সম্পত্তির অবস্থা অস্পষ্ট।

নতুন আইনের অধীনে, ওয়াকফ বোর্ডগুলোকে কোনো সম্পত্তি ওয়াকফ হিসেবে দাবি করার জন্য বৈধ নথি সরবরাহ করতে হবে। বিরোধের ক্ষেত্রে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সরকারের ওপর নির্ভর করবে।

আদালত বলেছে, সরকারকে নাগরিকের অধিকার নির্ধারণের অনুমতি দেওয়া ভারতীয় সংবিধানের অধীনে নির্বাহী ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতা পৃথকীকরণের পরিপন্থি।

আরেকটি বিতর্কিত ধারা বাতিল করা হয়েছে, যেটির অধীনে ওয়াকফ দাতাকে কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে একজন ‘ধর্মপ্রাণ মুসলিম’ হতে হবে।

বর্তমানে ওয়াকফ সম্পত্তিগুলো রাজ্য-স্তরের বোর্ড এবং একটি কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যেখানে রাজ্য সরকারের মনোনীত সদস্য, মুসলিম আইনপ্রণেতা, রাজ্য বার কাউন্সিলের সদস্য ও ইসলামী পণ্ডিতরা এই সম্পত্তিগুলোর ব্যবস্থাপকরা থাকেন।

বিচারকরা ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমদের যুক্ত করার বিধান স্থগিত রাখতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে তারা ২২ সদস্যের ফেডারেল বোর্ডে অমুসলিম সদস্যের সংখ্যা চার জন এবং ১১ সদস্যের রাজ্য বোর্ডে তিন জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন।

আদালত আরও বলেছে, ‘মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের চেষ্টা করা উচিত।’

মুসলিম গোষ্ঠী এবং বিরোধী দলগুলোর ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে পার্লামেন্টে আইনটি পাস হওয়ার পরপরই এপ্রিলের গোড়ার দিকে মামলাটি শীর্ষ আদালতে গড়ায়।

তথ্য: বিবিসি


banner close