বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পেঁয়াজ নিয়ে তেলেসমাতি

মূল্য কারসাজির জন্য ১৩৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
ভারতের রপ্তানি বন্ধের খবরে এক দিনে দেশের বাজারে পেয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
সুলতান আহমেদ
প্রকাশিত
সুলতান আহমেদ
প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০২

রাজধানীর বনানী কাঁচাবাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে তুমুল বাকবিতণ্ডা। গতকাল শনিবার সকালে পেঁয়াজের দামের পরিস্থিতি জানতে বাজারে গিয়ে দেখা গেল এমন ঘটনা। ক্রেতার অভিযোগ, আগের দিন বিক্রেতা যে পেঁয়াজ বিক্রি করেছে ১৩০ টাকা কেজি দরে, তা এখন চাচ্ছেন ২৫০ টাকা কেজি। অন্যদিকে বিক্রেতা বলছেন, আড়তে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়েছে তাই তাদের কিছুই করার নেই। ক্রেতা আনিস রহমানকে সাংবাদিক পরিচয় দিতেই ক্ষোভ ঝাড়েন গণমাধ্যমের ওপরেও। ‘আপনারা সত্য কথা কেন তুলে ধরেন না! এইটা কোন দেশের বাজার পরিস্থিতি হতে পারে? এ দেশে বাজার দেখার জন্য কি কেউ নাই?’ এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তিনি। অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী আনিস আরও জানান, ‘এক দিনে আগে যে জিনিস ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে তা শুধু ঘোষণায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়া কোনোভাবেই মানা যায় না। আমি শিওর এসব ব্যবসায়ীরা নতুন করে পেঁয়াজ কেনেননি, তবে দাম ঠিকই দ্বিগুণ করে দিয়েছেন’।

মিরপুরের একটি বাজারেও একই চিত্র পাওয়া গেল। দোকানদারদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা কাটাকাটি হচ্ছে ক্রেতাদের। সবারই প্রশ্ন- ভারত শুধু রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, এখন দোকানে যেসব পেঁয়াজ রয়েছে তা আগেই কেনা, তাহলে দাম বাড়বে কেন? যদিও এর কোনো সদুত্তর নেই বিক্রেতাদের কাছে। মধ্যবয়সি জলিল মিয়া জানান, খবর শোনার পর কিছু পেঁয়াজ কিনে রাখার জন্য বাজারে এসেছেন। ভেবেছেন ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হলে দাম বাড়তে পারে পেঁয়াজের। তবে তার চিন্তার চেয়েও বেশ আগেই যে বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। বলেন, ‘আমাদের চেয়ে ব্যবসায়ীরা অনেক বেশি চালাক, আমরা যা ভেবেছি তার আগেই দাম বাড়িয়ে বসে আছে তারা। মিরপুরের বাজারগুলোতেও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি দরে। অবশ্য এখনো যেসব ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে রয়েছে সেগুলোর দাম ১৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। এক দিনের ব্যবধানে কেন পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেল এমন প্রশ্নের জবাবে বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা কিনে আনি আড়ত থেকে, আপনারা তাদের ধরেন। আমরা ভাই ছোট ব্যবসায়ী, আমরা এগুলা বলতে পারি না। আমরা কিনে আনি যে দামে তার চেয়ে ১০-২০ টাকা লাভে বিক্রি করে দেই’।

মিরপুর, কারওয়ানবাজার, মৌলভীবাজার, শ্যামবাজার পাইকারি আড়তগুলোতেও একই চিত্র। আগে কিংবা পড়ে যখনই কেনা থাক না কেন দাম বাড়াতে কেউই পিছপা হননি বিক্রেতারা। কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা এক ক্রেতা জানালেন, তিনি দাম দেখে না কিনেই চলে যাচ্ছেন । আরেক ক্রেতা জানালেন, দাম বাড়তে পারে ভেবে ২০ কেজি পেঁয়াজ কেনার চিন্তা করে বাজারে এসেছেন, তবে দাম দেখে এখন ২ কেজি কিনেই চলে যাবেন তিনি। ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ আর নতুন কি, আমাদের ভাগ্যই এমন। কোথা থেকে আমদানি বন্ধের ঘোষণা দিলো আর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাজারে দাম বাড়া শুরু হলো’।

খোঁজ নিয়ে যানা গেছে, রাজধানীর বৃহৎ পাইকারি বাজারগুলোতে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ যেগুলো ছিল তার দাম বেড়ে হয়েছে ১৬০ থেকে ১৮০ কেজি। এ ছাড়া নতুন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। তবে পুরোনো দেশি পেঁয়াজ পাইকারি বাজারেই বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা কেজি দরে। তবে কেন এক দিনের ব্যবধানে দামের এই উল্লম্ফন তার সদুত্তর দিতে পারেননি কোনো পাইকারি ব্যবসায়ী। শ্যামবাজারের একজন পাইকারি ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘যখন অন্যরা দাম বাড়িয়েছে তখন তাদেরও বাড়াতে হয়েছে। সবাই দাম বাড়ালে আমার একার কী দোষ বলেন?’ উল্টো প্রশ্ন করেন সেই ব্যবসায়ী। তিনি জানান, পুরো বাজার যে নিয়মে চলছে তারাও সেই নিয়মেই দাম বাড়িয়েছেন। তবে সেই নিয়নমটা কী প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘চাহিদা বাড়লে দাম বাড়বে, আবার সরবরাহ কম থাকলে দাম বাড়বে এটাই নিয়ম।’

বাজারের এমন পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শ্যামবাজার পাইকারি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মাজেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, তাদের কথাও কর্ণপাত করেন না ব্যবসায়ীরা। তিনি বলেন ‘এখানে আমাদের কী করার আছে বলেন? সরকার তাদের ধরুক, আমরা চাই না কিছু অসৎ ব্যবসায়ীর জন্য আমাদের সবাইকে কথা শুনতে হোক।’ তারা সরকারকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করেন কি না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘সবসময় আমরা তা করতে পারি না, আমরা কিছু করলে ব্যবসায়ীরা বলে সে সরকারের দালাল।’ তবে তিনি জানান, গতকাল শনিবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেট এসে দোকানদার ১১০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য করেছেন।

অন্য কোনো বছরই এমন সময় পেঁয়াজের দাম বাড়ার নজির নেই। শীত শুরু হওয়ায় দেশের যেসব জায়গায় পেঁয়াজের আবাদ হয় সেসব জায়গা থেকে পেঁয়াজ উঠাতে শুরু করেছেন কৃষকরা। অবশ্য আবদুল মাজেদ জানালেন, ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ আসা শুরু হবে। তখন দাম অনেকটাই কমে আসবে। এ ঘটনায় ইতিবাচক দিক হিসেবে তিনি উল্লেখ্য করেন। ‘কৃষকরা এবার পেঁয়াজ চাষ করে লাভের মুখ দেখবেন। যেখানে ৩০ টাকা কেজি পেতে কষ্ট হয়, সেখানে আজকে ১০০ টাকা কেজি জমিতেই বিক্রি হচ্ছে, এটা কল্পনাও করতে পারেননি চাষিরা।’ বলেন আবদুল মাজেদ।

পেঁয়াজের হঠাৎ ঝাঁঝ রাজধানী ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন বিভাগ, জেলা, এমনকি উপজেলায়ও। গতকাল শনিবার আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে উঠে এসেছে এমন চিত্র। শুধু দাম বৃদ্ধিই নয়, কোথাও কোথাও পেঁয়াজ হঠাৎ উধাও করে দেয়া হয়েছে বাজার থেকে।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে পেঁয়াজের বাজারেও চলছে চরম নৈরাজ্য। ঘণ্টায় ঘণ্টায় দাম বাড়ছে অতি প্রয়োজনীয় এ পণ্যের। কোথাও কোথাও ২৪ ঘণ্টায় কেজিতে বেড়েছে ১৩০ টাকা পর্যন্ত। দেশি ও আমদানি করা দুই ধরনের পেঁয়াজের দামই বেড়েছে। শনিবার বেশিরভাগ বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৪০ টাকায়। আগের দিন ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা। তারপরও বাজারে অনেক জায়গায় দেখা নেই পেঁয়াজের।

ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘটনার জেরে দেশের বাজারে একদিনের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা উভয় পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁয়াজের এমন অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ভোক্তারা। তারা বলছেন, ভারত তাদের বাজার ঠিক রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে; কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রীতিমতো নৈরাজ্য শুরু করেছেন। এক কেজি পেঁয়াজে ১৩০ টাকা পর্যন্ত মুনাফা করছেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত রপ্তানি বন্ধ করার কারণে বাজারে ব্যবসায়ীদের হাতে তেমন পেঁয়াজ নেই। যেহেতু চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম, তাই বাজার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এ জন্য পাইকাররা দেশি পেঁয়াজ মজুদ করে রেখেছেন। শনিবার রিয়াজুদ্দিন বাজারেও ভোরে যে দাম ছিল, সকাল ৯টায় তা কেজিতে ৭০/৮০ টাকা বেড়ে যায়।

পাবনা: পেঁয়াজের এলাকা হিসেবে পরিচিত পাবনায়ও পেঁয়াজের দাম বাড়ছে দফায় দফায়। দাম নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় কয়েকটি বাজারে অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় দুটি বাজারের ৬ আড়ৎদারকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জেলা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহমুদ হাসান রনি জানান, আমদানি বন্ধ হওয়ায় হঠাৎ করেই বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পায়। তার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার দুপুরে পাবনা সদর উপজেলার সিংড়া বাজার ও শহরের বড় বাজারের আড়তে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দেখা যায়, ১০৫ টাকায় কিনে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ীরা। এ সময় অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রির দায়ে ৬ পাইকারি ব্যবসায়ীকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এদিকে অভিযানের খবর পেয়ে বেশকিছু খুচরা ব্যবসায়ী দোকান ফেলে পালিয়ে যায়। পরে সেখানে দাঁড়িয়ে পালিয়ে যাওয়া খুচরা ব্যবসায়ীর দোকানে থাকা সব পেঁয়াজ নির্ধারিত দামে বিক্রি করা হয়। পেঁয়াজ কেনা ছিল ১০৫ টাকা কেজি। পরে সেই পেঁয়াজ উপস্থিত ক্রেতাদের মধ্যে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়।

মৌলভীবাজার: একই অজুহাতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার হাটবাজারেও ব্যবসায়ীরা কেজিতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দাম বৃদ্ধি করেছেন। ক্রেতাদের অভিযোগ, কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর, ভানুগাছ, মুন্সীবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে যে পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে তা এক লাভে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় উঠেছে। দোকানে পূর্বের পেঁয়াজ মজুদ থাকার পরও ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম আদায় করছেন। এসব বিষয়ে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তেমন কোনো তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।

শমশেরনগর বাজারের ক্রেতা জাবের আলী, আলমগীর হোসেন, শাহজাহান আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমদানি বন্ধ শুনেই ব্যবসায়ীরা কেজিতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন, যা মোটেও কাম্য নয়। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম আদায় করে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা। এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছেন ক্রেতারা।

এদিকে, এক দিনের ব্যবধানে অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় মাঠে নেমেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। প্রয়োজনীয় এই পণ্যটির মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে বাজারে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছে সরকারি এই সংস্থা।

গতকাল শনিবার সারা দেশে এই অভিযানে ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করা এই সংস্থা।

সন্ধ্যায় অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঢাকা মহানগরীতে অধিদপ্তরের ৪টি টিম বাজারে অভিযান পরিচালনা করেছে। এ ছাড়া অন্যান্য বিভাগীয় শহরসহ দেশের ৫৪টি জেলায় একযোগে ৫৭টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। ভোক্তা অধিকার রক্ষায় অধিদপ্তরের এ কার্যক্রম আগামীকাল রোববারও সারা দেশে অব্যাহত থাকবে।

আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারত। এতে দেশের বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। গতকাল শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ১৮০-২০০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ২২০-২৪০ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে।


দুই উপদেষ্টার সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও এনসিপি নেতাকে দুদকে তলব

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক দুই ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) তুহিন ফারাবি ও ডা. মাহমুদুল হাসান এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব এ বি এম গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

তাদের আগামী ২০, ২১ ও ২২ মে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ ইস্যু করেছেন সংস্থাটির অনুসন্ধান কর্মকর্তা।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘তুহিন ফারাবি ও মাহমুদুল হাসানকে ২০ মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরকে ২১ মে এবং মোয়াজ্জেম হোসেনকে ২২ মে ডাকা হয়েছে।’

তাদের বিরুদ্ধে কেনাকাটায় কমিশন ও বদলি বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল উপদেষ্টাদের এপিএস ও পিওর দুর্নীতি অনুসন্ধান শুরু করার দাবি নিয়ে দুদকে আসে যুব অধিকার পরিষদ। মার্চ টু দুদক কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুদকে আসেন। পরে দলটির পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল দুদকে স্মারকলিপি জমা দেয়। এ ছাড়া হাইকোর্টের দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাদিম মাহমুদ ও অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামও প্রায় একই ধরনের অভিযোগ দুদকে দাখিল করেন।

গত ২২ এপ্রিল যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেন পদত্যাগ করেন। গত ২৫ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে দুদককে তদন্ত করার অনুরোধ জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের পিও ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, গত ২১ এপ্রিল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে পাঠ্যবই ছাপানোর কাগজ কেনায় কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ আছে।


ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ২ হাজার ১ মামলা

আপডেটেড ১৫ মে, ২০২৫ ১৭:১৬
বাসস

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ১টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।

এছাড়াও অভিযানকালে ১৯০টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১৩২টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।

গতকাল বুধবার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ অভিযান চালিয়ে এসব মামলা দায়ের করে।

ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে।


চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে একটি সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চাই: আলী রীয়াজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চব্বিশের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে আকাঙ্ক্ষার স্ফুরণ ঘটেছে তার একটি সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ঢাকার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সঙ্গে আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

তিনি বলেন, ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে আমরা একটি জাতীয় সনদে প্রতিফলিত করতে চাই। ভবিষ্যতে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল এই সনদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করবে৷

ঐকমত্য কমিশনের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশাকে ধারণ করে বলে মন্তব্য করেন আলী রীয়াজ। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বাংলাদেশের নতুন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা এদেশের মানুষ এবং রাজনৈতিক শক্তিগুলোর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফল উল্লেখ করে আলোচনার সূচনায় অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ যেমন প্রকাশ হয়েছে, তেমনি তাদের প্রত্যাশাকেও প্রকাশ করেছে। বার বার ফ্যাসিবাদের উত্থান হোক; তা দেশের মানুষ চায় না। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে সবার সমানাধিকার থাকবে, নাগরিকের অধিকার সুনিশ্চিত হবে এবং ভিন্নমতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে।

কমিশনের সহ-সভাপতি আরও বলেন, সংস্কার কমিশনগুলো থেকে প্রাপ্ত সুপারিশমালা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে কমিশন। এ দায়িত্ব কেবল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নয় বরং রাজনৈতিক দলগুলোকেই মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হতে হবে।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে দলটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতনসহ ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের হয়ে আলোচনায় নিখিল দাশ, জনার্দন দত্ত নানটু, প্রকৌশলী শম্পা বসু, ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী, জুলফিকার আলী, আহসান হাবিব বুলবুল, খালেকুজ্জামান লিপন, আবু নাঈম খান বিপ্লব এবং রাহাত আহম্মেদ অংশ নেন।


অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের কারণে দেশে বছরে ২৫ হাজার মানুষের মৃত্যু

বিশ্ব লবণ সচেতনতা সপ্তাহ-২০২৫
আপডেটেড ১৫ মে, ২০২৫ ১২:০৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

দৈনিক অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের ফলে দেশে উক্ত রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্করা প্রতিদিন গড়ে ৯ গ্রাম লবণ গ্রহণ করছেন, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রার (৫ গ্রাম) চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। এর ফলে প্রতি বছর দেশে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছে বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে ‘বিশ্ব লবণ সচেতনতা সপ্তাহ-২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আবদুল আউয়াল রিজাতী'র সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগগুপ্ত ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনস্টিটিউটের লবণ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সমন্বয়ক ডা. আহমাদ খাইনুল আবরার।

সভায় বলা হয়, উচ্চমাত্রায় লবণ গ্রহণের একটি বড় উৎস হলো প্রক্রিয়াজাত খাবার। এ ধরনের খাবারে লবণের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। এই অতিরিক্ত লবণ নীরব ঘাতকের মতো দেশে হৃদরোগসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগের মহামারি সৃষ্টি করছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে অবিলম্বে একটি সমন্বিত জাতীয় লবণ গ্রহণ হ্রাস কৌশল গ্রহণ করা এবং খাদ্যের মোড়কের সামনে ‘ফ্রন্ট অফ প্যাক লেবেলিং’ বাধ্যতামূলক প্রয়োজন। খাদ্য মোড়কের সামনে সহজবোধ্যভাবে দেওয়া ফ্রন্ট অফ প্যাক লেবেলের মাধ্যমে ভোক্তারা সহজেই লবণ, চিনি ও চর্বির মত স্বাস্থ্যহানিকর উপাদানের পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন হয়ে স্বাস্থ্যকর পণ্য বেছে নিতে সক্ষম হবেন।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, লবণ শুধু স্বাদের উপাদান নয়, অতিরিক্ত গ্রহণ করলে এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগসহ অসংক্রামক রোগের বড় ঝুঁকি তৈরি করে। তিনি জাতীয় পাঠ্যক্রমে লবণের ক্ষতিকর প্রভাব অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান; যাতে শিশুদের মধ্যে শুরু থেকেই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে ওঠে।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান মুস্তাক হাসান মো. ইফতেখার বলেন, অধিকাংশ প্রক্রিয়াজাত খাবারে অতিরিক্ত লবণ থাকে, কিন্তু বোধগম্য লেবেলিং না থাকার কারণে জনগণ তা বুঝে উঠতে পারে না। তিনি ফ্রন্ট-অফ-প্যাক লেবেলিং ব্যবস্থা চালুর পাশাপাশি মোড়কে পুষ্টি উপাদানসমূহের সঠিক কর্তৃপক্ষের নিয়মিত নজরদারির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সরকার বদ্ধ পরিকর। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত কার্য পরিকল্পনা রয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ করে চলছে। সম্প্রতি অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি উদ্যোগে জাতীয় লবণ গ্রহণ হ্রাস কৌশল প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি দ্রুত এটি বাস্তবায়ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শোয়েব বলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মোড়কিকরণ আইন অনুযায়ী মোড়কে লবণ, চিনি ও চর্বির পরিমাণ উল্লেখ বাধ্যতামূলক হলেও অনেক কোম্পানি তা করে না, অথবা এমনভাবে উল্লেখ করে যা ভোক্তারা পড়তে পারেন না। জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি মোড়কিকরণ আইন সংশোধন করে সহজবোধ্য ফ্রন্ট-অফ-প্যাক লেবেলিং ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় খাদ্যভ্যাস পরিবর্তনের বিকল্প নেই। তিনি দেশের জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য পরিবেশ তৈরিতে সরকারের সার্বিক প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন। জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও দেশের সুস্থ ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য তিনি সরকারি বেসরকারি সকলের সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে এ জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিফায়ী বলেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন ধরে লবণ গ্রহণ হ্রাসের জন্য প্রক্রিয়াজাত খাবারে লুকানো লবণ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে আসছে। জনস্বার্থে সরকারিভাবে প্রক্রিয়াজাত খাবারে সর্বোচ্চ লবণের মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। সেই জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো জরুরি।

উল্লেখ্য, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১২ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত ‘বিশ্ব লবণ সচেতনতা সপ্তাহ’পালিত হয়। এই সচেতনতা সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘অতিরিক্ত লবণ বর্জন করি, সুস্থ জীবন পড়ি’।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সাইদুল আরেফিন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনসিটি বিষয়ক কর্মকর্তা ডা. ফারজানা আক্তার পারভিন, বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির অসংক্রামক রোগ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ডা. মো. মাবুল হক খান, জাতীয় পুষ্টিসেবার ডেপুটি প্রোগ্রাম প্রোগ্রাম ম্যানেজার আজমেরী শারমিনসহ, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা।


শিক্ষার্থীদের নতুন বিশ্ব গড়ার স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

আজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বক্তব্য রাখেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শিক্ষার্থীদের নতুন এক বিশ্ব গড়ার স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ বুধবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত নতুন কিছু গড়ার সক্ষমতা রাখি।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়।

সমাবর্তন ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা চাইলে আমাদের মতো করে এক নতুন বিশ্ব গড়ে তুলতে পারি।’ তবে, তিনি বলেন, প্রত্যেকেরই স্বপ্ন থাকা দরকার- কেমন পরিবেশ ও সমাজ তারা প্রতিষ্ঠা করতে চায় সেই সম্পর্কে।

গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পটভূমি স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে যে সভ্যতা চলছে তা একটি ধ্বংসাত্মক অর্থনীতির সভ্যতা।

তিনি বলেন, ‘আমরা যে অর্থনীতি তৈরি করেছি তা মানুষের জন্য নয়, বরং ব্যবসার জন্য।’ তিনি উল্লেখ করেন, ব্যবসাকেন্দ্রিক এই সভ্যতা আত্মঘাতী এবং তা টিকবে না।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দীর্ঘদিন পর তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আনন্দিত। তিনি স্মরণ করেন, ১৯৭২ সালে চবিতে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।

তিনি ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ এবং কীভাবে গ্রামীণ ব্যাংক চট্টগ্রামে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের সহায়তা করতে গঠিত হয়েছিল তা তুলে ধরেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের জন্ম হয়েছিল চবির অর্থনীতি বিভাগে।

অনুষ্ঠানে, চবি কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক ইউনূসকে ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন এবং বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদানের জন্য সম্মানসূচক ডক্টরেট অব লিটারেচার (ডি লিট) উপাধিতে ভূষিত করে।

চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার অধ্যাপক ইউনূসের হাতে ডি লিট সনদ তুলে দেন।

সমাবর্তনে শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফয়েজসহ অন্যান্যরাও বক্তব্য রাখেন।

চবি প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) মো. কামাল উদ্দিনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

চবি আজ দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ সমাবর্তনের আয়োজন করে, যেখানে ২২,৫৮৬ জন শিক্ষার্থীকে সনদ প্রদান করা হয়।


দাবি আদায় না-হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান করছেন জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

দাবি আদায় না-হওয়া পর্যন্ত রাজপথে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা অভিমুখে কাকরাইল মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান করছেন।

বুধবার (১৪ মে) বিকাল সাড়ে তিনটার সময় এই ঘোষণা দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বলেন, আমাদের শিক্ষক ও ছাত্রদের ওপর হামলা চালানো ঘাতক পুলিশের বিচার করতে হবে।

এসময় জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেন, ‘সরকারের এই কর্মকাণ্ডে আমরা মর্মাহত। আমার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর চালানো হামলায় শতাধিক আহত হয়েছেন। পুলিশের এই হামলার বিচার করতে হবে।’

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা, ‘জেগেছে রে জেগেছে, জবিয়ান জেগেছে’; ‘আমার ভাই অনাহারে যমুনা কি করে’; ‘এসেছি যমুনায় যাবো না খালি হাতে’; ‘আমার ভাই আহত কেন ইন্টেরিম জবাব চাই’ এসব স্লোগান দেন।

এদিন বিকাল ৩টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন মঞ্জুর মোর্শেদ উপস্থিন হন।

এদিন, বেলা ১১টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লং মার্চ শুরু করেন জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এতে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এই ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।

লং মার্চটি মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিং মোড়ে গেলে কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, গরম পানি নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, সহকারী প্রক্টর নাইম সিদ্দিকি, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসিরউদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমন প্রমুখ।

পুলিশের লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসে গুরুতর আহত হয়ে অন্তত ৩০ জন জবি শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, ‘আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমার সহকারী প্রক্টরের ওপরও পুলিশ আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচারণ করেছে। এর বিচার না-হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না।’

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসিতে যান। কিন্তু ইউজিসি থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জুলাই ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো—জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করেই অনুমোদন করতে হবে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।


চট্টগ্রাম রেঞ্জ ও সিএমপিতে চালু হচ্ছে অনলাইন জিডি সেবা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

চট্টগ্রাম রেঞ্জের সকল জেলার সকল থানা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সকল থানায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৫ মে) থেকে চালু হচ্ছে অনলাইন জিডি সেবা।

প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনার আলোকে পুলিশি সেবা সহজীকরণের অংশ হিসেবে থানায় না এসে ঘরে বসেই সকল ধরনের জিডি অনলাইনে করার সুবিধা চালু করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, প্রাথমিক পর্যায়ে গত ১৫ এপ্রিল ২০২৫ সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সকল থানা এবং চাঁদপুর জেলা পুলিশের সকল থানায় অনলাইন জিডি সেবা চালু হয়েছে।

ইতোপূর্বে অনলাইনে শুধুমাত্র হারানো এবং প্রাপ্তি সংক্রান্ত জিডি করা যেত। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য রেঞ্জ ও মেট্রোতেও অনলাইন জিডি সেবা চালু হবে।

অনলাইন জিডি সেবা পেতে গুগল প্লে স্টোর থেকে 'অনলাইন জিডি' অ্যাপ ডাউনলোডের পর রেজিস্ট্রেশন করে এ সেবা পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে একাধিকবার রেজিস্ট্রেশন করার প্রয়োজন নেই। রেজিস্ট্রেশন অথবা অনলাইন জিডি করতে কোনো ধরনের অসুবিধা হলে ০১৩২০০০১৪২৮ হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। হটলাইন নম্বরটি ২৪ ঘণ্টা চালু আছে।

বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা দ্রুততম সময়ে ও সহজে পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


দুদকের মামলায় জামিন পেলেন জোবাইদা রহমান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা ওই মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ থেকে খালাস চেয়ে করা আপিল আবেদনও শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন আদালত।

বুধবার (১৪ মে) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জোবাইদা রহমানের আইনজীবী কায়সার কামাল। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জোবাইদা রহমানকে জামিন দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে, গতকাল (মঙ্গলবার) এই আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা চেয়ে জোবাইদা রহমানের করা আবেদন মঞ্জুর করেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। একইসঙ্গে আপিল দায়েরের অনুমতি দেওয়া হয়। পরে গতকালই এই মামলায় খালাস চেয়ে আপিল দায়ের করা হয়। এই আপিলের সঙ্গে জামিনের আবেদনও করেন জোবাইদা রহমান।

আদালতে জোবাইদা রহমানের পক্ষে আজ (বুধবার) শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহাজান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে আইনজীবী আসিফ হাসান শুনানি করেন।

পরে আইনজীবী কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। এ মামলার আপিল শুনানির জন্য যাবতীয় নথিও তলব করা হয়েছে।’

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জুবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। পরের বছর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

পরে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট করা এই মামলার রায় দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান। ওই রায়ে তারেক রহমানকে ৯ বছর কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

পরে এই মামলায় জোবাইদা রহমানের সাজা স্থগিত করে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে সাজা স্থগিত চেয়ে জুবাইদা রহমানের করা আবেদন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলায় তাকে দেওয়া দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।

২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়েন জুবাইদা রহমান। এরপর থেকে লন্ডনেই ছিলেন তিনি।

সেখান থেকে ৬ মে শাশুড়ি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে ১৭ বছর পর দেশে ফেরেন জুবাইদা রহমান।

দেশে ফিরে আপিল করার জন্য ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। আবেদনটি মঙ্গলবার কার্যতালিকায় উঠলে সেটি মঞ্জুর করেন আদালত।


প্রধান উপদেষ্টাকে ডি লিট ডিগ্রি প্রদান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বুধবার সম্মানসূচক ডক্টরেট অফ লিটারেচার (ডি.লিট) ডিগ্রি প্রদান করেছেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদানের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি লিট ডিগ্রি প্রদান করেছে।

আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁকে এই ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে চবি উপাচার্য ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার অধ্যাপক ইউনূসের হাতে ডি লিট ডিগ্রির সনদ তুলে দেন।

এ সময় চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মো. কামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।


ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চললেও কূটনৈতিক উত্তেজনা এখনো থামেনি। এবার পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় এক কূটনীতিককে ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করেছে ইসলামাবাদ। কূটনীতির ভাষায় ‘পারসোনা নন গ্রাটা’র অর্থ হচ্ছে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’। ওই কূটনীতিককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তান ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইসলামাবাদ থেকে এএফপি এই খবর জানায়।

এদিকে বুধবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে ওই কূটনীতিকের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিধিবহির্ভূত কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের এক কর্মীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত জানাতে গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল।

এর আগে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানের এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ওই কর্মকর্তা ভারতে তাঁর সরকারি অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন। তাই তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চার দিনের সামরিক সংঘাতের পর চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেই দুই প্রতিবেশী দেশ আবারও পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নিল।


জবি শিক্ষার্থীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

আবাসন ভাতাসহ তিন দফা দাবিতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রার সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড এবং জল-কামান নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।

বুধবার (১৪ মে) দুপুর পৌঁনে ১২টার দিকে পূর্বঘোষিত ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি অনুযায়ী সেগুনবাগিচার কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে শিক্ষার্থী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।

কাঁদানে গ্যাসে আহত শিক্ষার্থী সামিউল রহমান বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক দাবির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। আমার উপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে।’

এর আগে, আজ (বুধবার) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে যমুনা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন জবি শিক্ষার্থীরা। সোয়া ১২টার দিকে গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট মোড়ে পৌঁছালে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। তবে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সামনে এগিয়ে যান।

তার আগে, গতকাল (মঙ্গলবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে জবির বাজেট বৃদ্ধি ও আবাসন সংকট নিরসন বিষয়ে আলোচনা হলেও দাবি মানা হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা।

এরপর ‘জবি ঐক্য’ নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নতুন এক প্লাটফর্ম থেকে তিন দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনা অভিমুখে লং মার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো—আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা, জবির ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করেই অনুমোদন করতে করা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা।

আন্দোলনে উপস্থিত রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোশাররাফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলাল হুসাইন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, সদস্যসচিব সামসুল আরেফিন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. আসাদুল ইসলাম, সেক্রেটারি মো. রিয়াজুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সভাপতি আব্দুল ওয়াহিদ, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান আকাশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি একে এম রাকিব সাধারণ সম্পাদক রায়হান হাসান রাব্বিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।


চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড : প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম সফরের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বন্দরের সক্ষমতা সম্পর্কে ব্রিফিং করেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের বন্দরে উন্নীত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্বের খ্যাতিসম্পন্ন বন্দর ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

প্রধান উপদেষ্টার চট্টগ্রাম সফরের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বন্দরের সক্ষমতা সম্পর্কে তাঁর কাছে ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ।’

তিনি বলেন, ‘যদি সরকারের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হয়, তাহলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি বদলাতে হলে চট্টগ্রাম বন্দরই আমাদের আশা। এটি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’

চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। কিন্তু যদি হৃৎপিণ্ড দুর্বল হয়, কোনো ডাক্তারই তা আর ভালো করতে পারে না। তাই একে বিশ্বমানের করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বন্দর ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত বৈশ্বিক পর্যায়ের শীর্ষ সংস্থাগুলোকে আগেও ডাকা হয়েছিল, কিন্তু কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এই হৃৎপিণ্ডকে আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। এজন্য আমি নেপাল ও ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্ব রাজ্যের (সেভেন সিস্টার্স) কথা বলেছি। যদি তারা এতে যুক্ত হয়, তারা উপকৃত হবে, আমরাও হবো। যারা যুক্ত হবে না, তারা পিছিয়ে পড়বে।’

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে নিজের শৈশবস্মৃতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই সফরের জন্য আমি অপেক্ষা করছিলাম। চট্টগ্রাম বন্দর আমার জন্য নতুন কিছু নয়। আমি শৈশব থেকেই এর সঙ্গে পরিচিত। এটি অনেক বদলেছে, তবে দুঃখের বিষয় হলো পরিবর্তন ধীর গতির। আমি যখন সুযোগ পেলাম, তখন থেকেই ভেবেছি কী করা যায়।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বিশ্ব অনেক এগিয়ে গেছে, আর আমরা অনেক পিছিয়ে পড়েছি। কেউ গুরুত্ব দেয় না। এজন্য আমি পরিবর্তনের জন্য চাপ দিচ্ছি। আমি বলেছি বন্দরের পরিচালনার দায়িত্ব বিশ্বের শীর্ষ অপারেটরদের হাতে তুলে দিতে। আশা করি সবাই একদিন বুঝবে।’

নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন প্রধান উপদেষ্টার বন্দর উন্নয়নের আগ্রহের প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের আশেপাশে একাধিক টার্মিনাল নির্মাণ কনটেইনার জট কমাতে সাহায্য করবে। ‘আমি আশা করি আগামী ছয় মাসের মধ্যেই আপনি পরিবর্তন দেখতে পাবেন,’ বলেন তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বন্দর আধুনিকায়ন করার বিকল্প নেই।’

তিনি জানান, বাংলাদেশের ৯২ শতাংশ বৈদেশিক বাণিজ্য এবং তার ৯৮ শতাংশ নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল দিয়ে সম্পন্ন হয়।

মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাকৃতিক কারণে ২০০ মিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারে না। এ কারণে বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।


চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ সকালে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ সকালে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছেন।

এর আগে তিনি আজ সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে চট্টগ্রাম পৌঁছান। চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনের পাশাপাশি তিনি আজ সারাদিন বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।


banner close