দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শোবিজ তারকারা ভোট দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
রাজধানীর সিটি কলেজে ভোট দেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস। ভোট দেওয়ার ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আমি ভোট দিয়েছি। আপনি দিয়েছেন কি?’
ঢাকা- ১০ আসনে ফেরদৌস নৌকার মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন। বিপুল ভোটে তিনি জয়লাভ করতে যাচ্ছেন।
রাজধানী ধানমন্ডির গভর্মেন্ট হাইস্কুল ভোটকেন্দ্রে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ভোট দিয়েছেন অভিনেত্রী ও শিল্পী মেহের আফরোজ শাওন। ভোট দিয়ে কালি দেওয়া আঙুলের ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন ‘ভোট দিয়ে আসলাম’।
মানিকগঞ্জে নিজের নির্বাচনি এলাকায় সকাল ১০টার দিকে ভোট দিয়েছেন সংগীতশিল্পী ও সংসদ সদস্য মমতাজ। কেন্দ্রে গিয়ে তিনি বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে ভোট প্রদানের ছবি তিনি তার ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।
গুলশান মডেল হাই স্কুলে ভোট দিয়েছেন গান বাংলা টেলিভিশনের কর্ণধার তাপস ও তার স্ত্রী মুন্নী। তাপস ভোট দেওয়ার ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘জয় বাংলা’।
অভিনেত্রী তারিন জাহান ভোট দিয়ে হাতের অমোচনীয় কালি প্রদর্শন করা ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আমি আমার ভোট দিয়েছি, আপনি?’
তরুণ প্রজন্মের দুই অভিনয়শিল্পী সৌম্য ও দিব্য প্রথমবার ভোট দিলেন। তাদের মা অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি তার ফেসবুকে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। দুই ছেলের ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘প্রথমবার ভোট। যারা ভোট বর্জন করেছে, তারা তরুণদের আবেগ বর্জন করেছে। আমার ভোট, আমার দেশ, ভালোবাসি বাংলাদেশ।’
কালো টাকা সাদা করার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সব সুযোগ অধ্যাদেশের মাধ্যমে চিরতরে বাতিলের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্বাধীন বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ২১ বার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যা দুর্নীতিকে পুরস্কৃত ও সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করে। সংস্থাটি দাবি করে, এসব সুবিধা অসাংবিধানিক, বৈষম্যমূলক এবং দুর্নীতিসহায়ক।
টিআইবি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিলের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও আরও কিছু বিদ্যমান দুর্নীতিসহায়ক, অসাংবিধানিক ও বৈষম্যমূলক বিধান অবিলম্বে বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার বিধান বাতিলের সিদ্ধান্তকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখি। অর্থ উপদেষ্টার এই সুযোগ বন্ধের প্রতিশ্রুতি আমাদের আশান্বিত করেছে। তবে আয়কর আইন, ২০২৩-এ এখনো তিনটি বিধান রয়ে গেছে, যা কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ দেয়।
তিনি জানান, এই বিধানগুলো হলো— বিশেষ কর প্রদানের মাধ্যমে বিল্ডিং বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ প্রদর্শন, স্থাপনা বা ভূমিতে আগে করা অপ্রদর্শিত বিনিয়োগ নির্দিষ্ট কর দিয়ে রিটার্নে দেখানোর সুযোগ এবং স্বপ্রণোদিতভাবে আয়ের তথ্য প্রদর্শন করে তার ওপর নিয়মিত হারে কর প্রদানের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১০ শতাংশ জরিমানার মাধ্যমে বৈধতার সুযোগ।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই তিনটি ক্ষেত্রেই যেহেতু বৈধ উৎসের সামঞ্জস্য নিশ্চিতের বাধ্যবাধকতা নেই, সে কারণে অপ্রদর্শিত আয়ের নামে কালো টাকার বৈধতার সুযোগ নেওয়া হয়, যা সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তিনি আরও জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের তৃতীয় সুপারিশেও উৎসবিহীন আয় বৈধ করার যেকোনো রাষ্ট্রীয় চর্চা স্থায়ীভাবে বন্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘অতীত অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বারবার দেওয়া হলেও, এর ফলে সরকারের রাজস্ব আহরণ কখনোই সেভাবে বাড়েনি। যতটুকু হয়েছে, তার জন্য নৈতিকতার বিসর্জন অগ্রহণযোগ্য। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেটে দৃষ্টান্ত স্থাপনের অংশ হিসেবে প্রয়োজনীয় অধ্যাদেশের মাধ্যমে উল্লিখিত ধারাগুলোসহ কালো টাকা সাদা করার সকল প্রকার সুযোগ চিরতরে বাতিল করা হবে।’
টিআইবি এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টাকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠিও দিয়েছে জানিয়ে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আশা করি, আমরা এর ইতিবাচক প্রতিফলন দেখতে পাব।’
সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। পাশাপাশি দেশের সব জায়গায় একবারে না হলেও বিভিন্ন জেলায় কমবেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বুধবার (২১ মে) সারা দেশের সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ (বুধবার) রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো, হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেইসঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণও হতে পারে। তাছাড়া, সারা দেশের দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপামাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৮-১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।
এদিকে, গতকাল (মঙ্গলবার) যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ (বুধবার) রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে সর্বোচ্চ ১৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
ঈদুল আজহা সামনে রেখে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য নির্বিঘ্ন রাখতে ৫ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত (ঈদের দিন ব্যতীত) সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতেও সব কাস্টমস হাউস ও স্টেশন খোলা থাকবে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এর আগে, গত ১৪ মে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে সময়ের গুরুত্ব উল্লেখ করে এনবিআরে একটি চিঠি পাঠান বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন। রপ্তানিতে কোনো ধরনের বিলম্ব অর্থনৈতিক ক্ষতি ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় ব্যাহত করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
বিজিএমইএর এই অুনরোধের পর ঈদের দিন ব্যতীত বাকি ছুটির সময়ে সব কাস্টমস হাউস ও স্টেশন খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বর্তমানে দেশের পোশাক শিল্প একাধিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক, শ্রম অস্থিরতা, কাঁচামালের উচ্চমূল্য, ব্যাংক ঋণে উচ্চ সুদের হার, চলমান জ্বালানি সংকট ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি।
এসব প্রতিকূলতার মধ্যেও রপ্তানিকারকরা সফলভাবে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখেছেন এবং নিরবচ্ছিন্ন রপ্তানি আদেশ পেয়ে চলেছেন। এই ধারা অব্যাহত রাখতে বন্দর, কাস্টমস, ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ধারাবাহিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে বিজিএমইএ।
এ ছাড়া চলমান রপ্তানি আদেশ সময়মতো পাঠাতে ব্যর্থ হলে তা বাতিলের সম্ভাবনা তৈরি হবে, যেটি রপ্তানিকারক ও দেশের অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে বলেও চিঠিতে সতর্ক করা হয়।
এসব কারণ বিবেচনা করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসসহ প্রধান কাস্টমস অফিসগুলো
দেশের রপ্তানি খাতকে সচল রাখা এবং তৈরি পোশাক শিল্পকে আন্তর্জাতিক সময়সীমা পূরণে সহায়তা করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এনবিআর।
বৃষ্টি শুরু হলেও ঢাকার বাতাসের মানে তেমন উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। শহরটির বাতাস এখনও বাসিন্দাদের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’।
বুধবার (২১ মে) সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে ১৬২ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে ঢাকা।
এ বাতাস শহরটির মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিকে বাড়িয়ে তুলছে। বায়ুর মান ও দূষণের শহরের অবস্থান অনুযায়ী আজ (বুধবার) ঢাকার বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
পাকিস্তানের লাহোর, ভারতের দিল্লি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরগুলি যথাক্রমে ১৯০, ১৬৭ ও ১৫৭ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম, দ্বিতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ’মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ’অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ’খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে ’বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো-বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
সপ্তম বাংলাদেশি হিসেবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করলেন ইকরামুল হাসান শাকিল। হেঁটে ৮৪ দিনে কক্সবাজার থেকে এভারেস্টের শিখরে পৌঁছান তিনি। গতকাল সোমবার পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গটির চূড়ায় পৌঁছে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান এ স্বপ্নবাজ তরুণ।
গতকাল দুপুরে ফেসবুক পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে ইকরামুল হাসান শাকিলের অভিযান সমন্বয়কেরা জানান, ‘এই মাত্র খবর পেলাম শাকিল সামিট করেছে এবং সুস্থ আছে। ক্যাম্প ৪-এ নেমে এসেছে। নেটওয়ার্ক না থাকায় বিস্তারিত তথ্য এখন দেয়া যাচ্ছে না।’
এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকত থেকে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ার উদ্দেশ্যে হেঁটে যাত্রা শুরু করেছিলেন ইকরামুল হাসান শাকিল। তিনি এই অভিযানের নাম দিয়েছেন ‘সি টু সামিট’।
‘সি টু সামিট’ অভিযানে তিনি চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা ও মুন্সিগঞ্জ হয়ে ১২ দিন পর ঢাকায় পৌঁছান। রাজধানীতে কয়েক দিনের বিরতি দিয়ে তিনি আবারও হাঁটা শুরু করেন এবং গাজীপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ হয়ে ২৮ মার্চ পৌঁছান পঞ্চগড়ে। ২৯ মার্চ ইকরামুল হাসান বাংলাদেশ থেকে প্রবেশ করেন ভারতে। এরপর ভারতের জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং হয়ে ৩১ মার্চ পৌঁছান নেপালে। প্রায় এক হাজার ৪০০ কিলোমিটারের বেশি পথ হেঁটে গত ২৯ এপ্রিল এভারেস্ট বেজক্যাম্পে পৌঁছান ইকরামুল হাসান। এরপর কয়েক ধাপে নানা বাধা পেরিয়ে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গটির চূড়া জয় করেন এ বাংলাদেশি। এর আগে ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ার পর্বতারোহী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপ ভারতের গঙ্গাসাগর থেকে ৯৬ দিনে প্রায় ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পদচিহ্ন রাখেন।
হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা বিচার প্রক্রিয়াকে প্রহসনে পরিণত করছে বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি।
এনসিপি বলছে, জুলাই 'গণহত্যা'র সাথে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় না এনে এ ধরণের লোকদেখানো ও ঢালাওভাবে আসামী করা মামলায় গ্রেফতার ও জামিন না দিয়ে কারাগারে প্রেরণের ঘটনা 'গণহত্যা'র বিচার প্রক্রিয়াকে লঘু করে দেখানোর প্রবণতা সৃষ্টি করছে।
সোমবার জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
এর আগে গতকাল ভাটারা থানায় দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরবর্তীতে আজ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানে হামলা ও গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ চলতি মাসেই কোনো রকম বাধাবিপত্তি ছাড়াই দেশত্যাগ করেছেন।
অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রিত ৬২৬ জন ব্যক্তির পরিচয় এখনো প্রকাশিত হয়নি।
জুলাই 'গণহত্যা'র সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত পতিত ফ্যাসিবাদি ও এর সমর্থকরা এখনও জনপরিসরে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এদেশের নাগরিকবিরোধী অপতৎপরতা জারি রেখেছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে এনসিপি।
বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামো ও প্রশাসনের মধ্যে থাকা একটি পক্ষ এই ধরণের অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ‘জুলাই গণহত্যা’ এবং এর বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় বলে মনে করে এনসিপি।
এনসিপি তাদের বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, গণহত্যার বিচারে আমরা দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। বিচার কার্যক্রমকে গতিশীল করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল – ২ গঠনের সিদ্ধান্ত নিলেও এখন পর্যন্ত এর বাস্তবায়নকল্পে আমরা কোনো প্রজ্ঞাপন দেখতে পাইনি।
আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই জুলাই 'গণহত্যা'র বিচারপ্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি।
এই লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আশু ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছে এনসিপি।
হরেদরে মামলা এবং মামলা বাণিজ্যের বিষয়টিকে আমলে নিয়ে মামলা গ্রহণের ব্যাপারেও সতর্কতা অবলম্বন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আহ্বান জানিয়েছে এনসিপি।
নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমান মাছউদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ আর নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে না। দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে। এ কারণে দলটি বর্তমানে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
আজ সোমবার সকালে রাজশাহীর আঞ্চলিক লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আয়োজিত ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ ২০২৫: পরবর্তী মূল্যায়ন ও টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
আবদুর রহমান মাছউদ আরো বলেন, ‘সরকার আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করেছে এবং কমিশনের পক্ষ থেকে দলটির নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে। যতদিন এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না হচ্ছে, ততদিন আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন কতটা গ্রহণযোগ্য হবে-সে বিষয়ে মন্তব্য করার সময় এখনও আসেনি। তবে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।’
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। এছাড়াও রাজশাহী বিভাগের সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তা, বিভাগীয় কমিশনার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারাও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রবিবার (১৮ মে) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৪ জন।
সোমবার (১৯ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছে ৮৪ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১২ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও ৭২ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৯ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩ হাজার ৫৩৬ জন। এর মধ্যে ৬০ দশমিক ০ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ০ শতাংশ নারী।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস লুটপাট হওয়া সম্পদ ও অর্থ পুনরুদ্ধারের পর সেই সম্পদ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে একটি তহবিল গঠনের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস বিফ্রিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘লুটপাট হওয়া অর্থ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি তহবিল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা, যা জনকল্যাণে ব্যবহার করা হবে।’
এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারের অগ্রগতি নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, এই তহবিল বর্তমান আইন অনুযায়ী গঠিত হবে। তবে প্রয়োজনে তহবিল গঠনের জন্য আইন সংশোধন করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, ‘আমি আশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে এই তহবিল গঠন করা সম্ভব হবে। তবে পরবর্তী নির্বাচিত সরকারকে তা চালিয়ে নিতে হবে।’
বিমানের চাকা খুলে পড়ার ঘটনা তদন্তে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার (১৯ মে ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড।
বিমান কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার (১৬ মে) দুপুরে ড্যাশ-৮ বহরের বিজি-৪৩৬ ফ্লাইটটি কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসে। উড্ডয়নের কিছু সময় পরেই বিমানটির পিছনের একটি চাকা খুলে নিচে পড়ে যায়। এরপরই ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ জরুরি অবতরণের জন্য ঢাকার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে (এটিসি) অবহিত করেন।
পরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে। বিমানে শিশুসহ মোট ৭১ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের কেউ আহত হননি এবং সবাই নিরাপদে আছেন বলে নিশ্চিত করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনার পর পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন এবং কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। চিফ অব ফ্লাইট সেফটির নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট সেফটি ইনভেস্টিগেশন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ছাড়া, প্রকৌশল ও ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট পরিদপ্তরের আওতায় অপর একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ। ঘটনার মূল কারণ অনুসন্ধান, এ সম্পর্কিত রক্ষণাবেক্ষণের শর্ত ও রেকর্ড পরীক্ষা এবং এমন ঘটনা ভবিষ্যতে যেন না ঘটে, সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় এই কমিটিকে।
তিন কর্মদিবসের মধ্যে এই দুই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা জন্য বলা হয়েছে। চাকার বিয়ারিং ত্রুটির কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে বরাত দিয়ে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
উড়োজাহাজটির প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কানাডার ডি-হেভিল্যান্ড এয়ারক্রাফট কোম্পানি। তাদের ভাষ্যে, কোম্পানির প্রস্তুত করা ম্যানুয়ালে চাকার বিয়ারিং ত্রুটি দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট চাকা অথবা টায়ার বিচ্যুত হয়ে খুলে পড়ার ঘটনা ঘটতে পারে। তদন্ত শেষে প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে এক বিবৃতিতে জানান তারা।
ঘটনার দিন ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানের বাঁ পাশে থাকা চাকা (নম্বর ২) অনুপস্থিত থাকার কথা নিশ্চিত করেন প্রকৌশলীরা। পরে সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকায় অবস্থানরত ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজগুলোর সব চাকা বিমানের প্রকৌশল বিভাগ পর্যবেক্ষণ করা হয়।
এ ছাড়াও, বিষয়টি তদন্ত করতে সোমবারের মধ্যে ডি-হেভিল্যান্ড এয়ারক্রাফট কোম্পানি একটি বিশেষায়িত কারিগরি দল পাঠাতে সম্মত হয়েছে বলে জানায় বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।
তারা জানায়, যাত্রীদের নিরাপত্তা ও উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধে এবং ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে।
কোন নির্ধারিত হাটের উদ্দেশে যাচ্ছে, এমন গাড়ি মাঝপথে থামানো হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (১৯ মে) পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, প্রতি বছরের মতো ঈদের আগে আমরা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা করলাম। এখানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সেক্টরের অনেকেই ছিলেন।
‘আপনারা জানেন যে আমাদের গরুর হাটগুলো শৃঙ্খলার মধ্যে থাকে না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে যেসব গরুর গাড়ি আসবে, সেসবের সামনে সুনির্দিষ্ট হাটের তথ্য থাকতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানে-সেখানে গরু নামাতে পারবে না। রাস্তায় গরু না নামিয়ে নির্ধারিত স্থানে নামাতে হবে। প্রতিটি হাটেই আনসার রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু হাটে ৭৫ জন করে আবার কিছু হাটে কম-বেশি হতে পারে। নিরাপত্তার পাশাপাশি গরুর চিকিৎসক থাকতে হবে। কোনভাবেই যেন অসুস্থ গরু বিক্রি না হয় ‘
‘অনেক সময় গরুর আঘাতে মানুষ আহত হন, এজন্য ফাস্টএইডেরও ব্যবস্থা রাখতে হবে। এবছর শতকরা ৫ টাকা হাসিল নিলেও আগামীবছর ১০০ টাকায় ৪ টাকা নিতে হবে।’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘টেন্ডার হয়ে যাওয়ায় এ বছরই এটা করতে পারলাম না। এ নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। আর ঈদের ৫ দিন আগে থেকে বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। ঈদের পর ৩ দিন চলাচল বন্ধ থাকবে। এটা কোনো অবস্থায় রাতে চলতে পারবে না।’
গত ২০২৩ সালের তুলনায় দেশে বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার। বেকার জনগোষ্ঠীর হার বাড়ার ক্ষেত্রে মহিলাদের কোনো অবদান নেই। অর্থাৎ এক লাখ ৬০ হাজার বেকার পুরুষের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
গতকাল রোববার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ-২০২৪ এর চতুর্থ কোয়ার্টারের গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলোর সাময়িক ফলাফল প্রকাশ করেছে।
বিবিএস জানায়, দেশে বর্তমানে ২৬ লাখ ২০ হাজার বেকার জনগোষ্ঠী রয়েছে। যা ২০২৩ সালে ছিল ২৪ লাখ ৬০ হাজার। বর্তমানে পুরুষ বেকার রয়েছে ১৮ লাখ, যা ২০২৩ সালে ছিল ১৬ লাখ ৪০ হাজার। এ ছাড়া বর্তমানে মহিলা বেকারের সংখ্যা ৮ লাখ ২০ হাজার, যা ২০২৩ সালেও ছিল ৮ লাখ ২০ হাজার। অর্থাৎ মহিলা বেকারের সংখ্যা না বাড়লেও বেড়েছে পুরুষ বেকারের সংখ্যা।
বিবিএস জানায়, যারা বিগত ৭ দিনে কমপক্ষে ১ ঘণ্টাও কোনো কাজ করেননি কিন্তু কাজ করার জন্য গত ৭ দিন ও আগামী দুই সপ্তাহের জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং গত ৩০ দিনে বেতন/মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে কোনো না কোনো কাজ খুঁজেছেন, তাদেরকেই বেকার জনগোষ্ঠী হিসেবে ধরা হয়েছে।
সাধারণত যারা শুধুমাত্র নিজেদের ভোগের জন্য কাজ করেন তাদের আইএলওর ১৩তম গাইডলাইন হিসেবে কর্মে নিয়োজিত ধরা হয়, আর যারা মজুরি বা মুনাফার জন্য কাজ করেন তাদের আইএলওর ১৯তম গাইডলাইন হিসেবে কর্মে নিয়োজিত ধরা হয়।
দেশে কর্মে নিয়োজিত বা শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ফলে বেড়েছে বেকার মানুষের সংখ্যা। বছরের শুরুতে বেকার মানুষের সংখ্যা কম থাকলেও বছর শেষে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এতে বছরের ব্যবধানে দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার। এই সময়ে কৃষি, সেবা এবং শিল্প, সবখাতেই কমেছে কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী। নারীর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে পুরুষ বেকারের সংখ্যা বেড়েছে বেশি।
কমেছে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা
দেশে বর্তমানে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমেছে ৭ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার, অন্যদিকে ২০২৩ সালে যা ছিল ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। ফলে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমেছে ১৭ লাখ ২০ হাজার জন। পুরুষ ও নারী শ্রম শক্তি কমেছে। দেশে সব থেকে বেশি মানুষ কাজ করে কৃষি খাতে। এরপরই রয়েছে সেবা ও শিল্পখাত। দেশে যুব শ্রম শক্তি ২ কোটি ২৬ লাখ, ২০২৩ সালে যা ছিল ২ কোটি ৬৭ লাখ। ফলে এক বছরে দেশে যুব শ্রম শক্তিও কমেছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নিয়ম অনুসারে, বেকার জনগোষ্ঠী মূলত তারাই যারা গত সাত দিনের মধ্যে মজুরির বিনিময়ে এক ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ পাননি এবং গত এক মাস ধরে কাজ খুঁজেছেন, কিন্তু মজুরির বিনিময়ে কোনো কাজ পাননি। তারা বেকার হিসেবে গণ্য হবেন। বিবিএস এই নিয়ম অনুসারেই বেকারের হিসাব দিয়ে থাকে। তবে বিবিএস এবার দুইভাবে শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে বিবিএস জানিয়েছে, শ্রমশক্তির তৃতীয় প্রান্তিকের ফলাফলটি ১৩তম এবং ১৯তম আইসিএলএস অনুযায়ী তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। আইএলও প্রণীত ১৩তম এবং ১৯তম আইসিএলএসে কর্মে নিয়োজিত প্রাক্কলনে পার্থক্য রয়েছে।
বিবিএস জানায়, শ্রমশক্তি জরিপে ১৫ বছর ও তদুর্ধ্ব বয়সি পুরুষ-নারী এবং শহর-পল্লী অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে শ্রমবাজারের সূচকসমূহ ত্রৈমাসিকভিত্তিতে প্রাক্কলন করা হয়। দেশব্যাপী ১ হাজার ২৮৪টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে সর্বমোট ৩০ হাজার ৮১৬টি খানা (একত্রিতভাবে বসবাসরত গোষ্ঠী বা পরিবার) থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। দেশের ৬৪টি জেলায় ১০৭ জন (নারী ৫৭ এবং পুরুষ ৫০) প্রশিক্ষিত তথ্য সংগ্রহকারীদের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য হতে শ্রমশক্তি, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সূচকসমূহের অগ্রগতি, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অগ্রগতি নির্ণয়ক সূচক এবং সর্বোপরি জাতীয় শ্রমশক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার ও কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব নিরসনে পরিকল্পনা প্রণয়ন সম্ভব হবে। এ জরিপের মাধ্যমে লিঙ্গভিত্তিক কর্মসংস্থান, বেকারত্ব, শ্রম অভিবাসন ব্যয়, খাত এবং পেশাভেদে শ্রমশক্তি, প্রাতিষ্ঠানিক এবং অ-প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান, কর্মঘণ্টা এবং মজুরি সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রস্তুত করা হয়। এ জরিপের মাধ্যমে শ্রমবাজারের মৌসুমভিত্তিক তারতম্য সংশ্লিষ্ট তথ্যাদিও পাওয়া যায়।
ভারত সরকারের আমদানি নিষেধাজ্ঞার পর যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে তৈরি পোশাকের ৩৬টি ট্রাক আটকা পড়েছে। পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষের ‘গেইট পাস’ অনুমতি না পাওয়ায় পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো ভারতে যেতে পারেনি বলে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান।
ভারত সরকারের আমদানি নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে জানতে চাইলে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, ‘এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি আমরা পাইনি। পত্র-পত্রিকায় দেখেছি। বেনাপোল বন্দর দিয়ে শনিবার পর্যন্ত সব পণ্য রপ্তানি হয়েছে।’
‘তবে রোববার সকাল থেকে অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হলেও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাক জাতীয় কোনো পণ্য রপ্তানি হয়নি। বিভিন্নভাবে জানতে পেরেছি ৩০ থেকে ৩৫ ট্রাক পণ্য এখানে আটকে আছে।’
বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাকসহ প্রায় সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত সরকার।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের এক মাসের মাথায় ভারতের এই পাল্টা নিষেধাজ্ঞা এল, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করার কথা বলেছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
গত বছর (২০২৩-২৪ অর্থবছর) বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায় ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। এদিকে বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকটি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। যেসব পণ্যের এলসি/টিটি এরই মধ্যে হয়ে গেছে সেসব পণ্য যাতে আমদানি করা যায় তার জন্য কাস্টমসে আলোচনা চলছে।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৭ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি করে, গত অর্থবছরে তা প্রায় অপরিবর্তিত ছিল। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি করেছে ১৭ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে রপ্তানি হয়েছে ১১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকার পণ্য। যেসব দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে, তার মধ্যে ভারত একটি, যেখানে প্রতিবছর প্রায় ৭০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। এর মধ্যে ৯৩ শতাংশের মত পোশাক পণ্য স্থলপথেই রপ্তানি হয়। ফলে ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা এ খাতের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দেখা দেবে বলে ব্যবসায়ীদের শঙ্কা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান আরও বলেন, ‘স্থলপথে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে কার্যত ভারতের সঙ্গে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে। আমদানিকারকরা বেনাপোল ও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে থাকে কলকাতায়। সেটা বন্ধ হয়ে গেল। নৌপথে পণ্য পরিবহন করা এসব রপ্তানিকারকদের পক্ষে সম্ভব না। এতে খরচের পাশাপাশি সময়ের কারণে সেটা তারা পারবেন না।’
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ভারত সরকার স্থলবন্দর দিয়ে গার্মেন্টস সামগ্রী আমদানি নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। স্থলপথে এসব পণ্য রপ্তানিতে খরচ অনেক কম হতো কিন্তু সমুদ্র ও বিমান পথে পণ্য রপ্তানিতে খরচ অনেক বেশি হবে।’
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, বছরে ১০ থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেশিরভাগ আমদানিকারকেরা বেনাপোল বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী। এ পথে রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পাট, পাটের তৈরি পণ্য, গার্মেন্টস, তৈরি পোশাক, কেমিকেল, বসুন্ধারা টিসু, মেলামাইন, মাছ উল্লেখ্যযোগ্য।
ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন
স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যসহ সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে দাবি করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
এ বাস্তবতা তুলে ধরে বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এমন মন্তব্য করেন।
‘আমরা নিশ্চয় এই অবস্থানগুলোকে তুলে ধরবো এবং সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবো। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা এই পদক্ষেপে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভৌগলিকভাবে সংযুক্ত দুটি দেশ আমরা। এটা বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার একটা প্রক্রিয়া। উভয়পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে এটার একটা উপযুক্ত সিদ্ধান্ত আনতে পারবো। আমাদের আরও কিছু বন্দর এখনও খোলা আছে,’ বলেন শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি জানান, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। স্থানীয় স্থলবন্দরে বিশেষ করে আখাউড়া ও ডাউকি সীমান্তভিত্তিক কিছু সিদ্ধান্তের কথা শুনেছি। আনুষ্ঠানিকভাবে জানার পর সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। এখন বিষয়টি বিশ্লেষণ করবো।’
তবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যকে স্বাভাবিক বাণিজ্য প্রবাহ বলে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা যেটা আমাদের থেকে নেয়, সেটা সুলভ মূল্যের কারণেই নেয়। আমরাও একই কারণে তাদের পণ্য কিনি। সুতরাং এখানে স্বাভাবিক বাণিজ্য প্রবাহের বিষয়গুলো আমরা তুলে ধরবো।’
‘আমরা আমাদের বৈচিত্রকরণ ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি ঘটাবো,’ যোগ করেন শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে খুব বেশি যে আসবাব যায়, তা না। পোশাকপণ্য যায়, আমরা প্রতিযোগিতা সক্ষমতার মাধ্যমেই এগুলো পাঠিয়ে থাকি। দুপক্ষের জন্যই লাভজনক বিধায় এগুলো যায়। আশা করি, উভয় দেশের ভোক্তা ও উৎপাদনের স্বার্থে এটা চলমান থাকবে।’
এর আগে ট্রান্সশিফমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ায় কী ধরনের প্রবাহ পড়েছে, জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা দাবি করেন, ‘ট্রান্সশিফমেন্টের কোনো প্রভাব আমাদের ওপর নেই। নিজস্ব সক্ষমতা ব্যবহার করে নিজস্বভাবেই এই সমস্যা সমাধান করেছি।’
সূত্র: বিডিনিউজ, ইউএনবি