শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ‘স্মার্ট মন্ত্রিসভা’

আপডেটেড
১৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০৩
ফারাজী আজমল হোসেন
প্রকাশিত
ফারাজী আজমল হোসেন
প্রকাশিত : ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ তরুণ নেতৃত্ব ও তরুণ চিন্তা-চেতনাকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছে। এ কারণেই দলটির সাধারণ সম্পাদক থেকে সভাপতি হয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তৎকালীন রাজনীতির হিসাবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একঝাঁক তরুণকে নিয়ে পঞ্চাশের দশক থেকেই এগিয়ে চলেছিল আওয়ামী লীগ। যার ফল হিসেবে ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯, ১৯৭০ এবং সর্বোপরি ১৯৭১ সালে ইতিহাস রচনা করে দেশের তরুণ ও সাধারণ মানুষের সম্মুখযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশ।

২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যখন তার ইশতেহারে ‘দিন বদলের সনদ’ ঘোষণা করে, তখনও ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হয় তরুণদের। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদের জন্য ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের ঘোষণায়ও রয়েছে তরুণদের প্রাধান্য দেওয়ার কথা। আর আওয়ামী লীগের নতুন মন্ত্রিসভায়ও রয়েছে সেই ছাপ। অনেকেই এই মন্ত্রিসভাকে স্মার্ট মন্ত্রিসভা বলেও আখ্যায়িত করছেন।

বরাবরের মতোই আওয়ামী লীগের এবারের মন্ত্রিসভায়ও শিক্ষিত এবং মেধাবীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রায় ৫ জনের বেশি সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক ও আমলা রয়েছেন। রয়েছেন চিকিসৎসক ও গবেষক। ফলে স্পষ্ট করেই বলা যায়, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য যে চারটি স্তম্ভের কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার তার বক্তব্যে বলেছেন, তার একটি তিনি নতুন মন্ত্রিসভার মাধ্যমে স্থাপনের আভাস দিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ স্মার্ট সরকার তৈরির জন্যই শিক্ষিত ও যোগ্য একটি মন্ত্রিসভা গড়ে তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে এই মন্ত্রিসভা উন্নত বাংলাদেশ গড়ার জন্য অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দেশপ্রেমের জন্য কাজ করবে বলেও মনে করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের এবারের মন্ত্রিসভায় ১৯ জন নতুন মন্ত্রী হয়েছেন, সেই সঙ্গে বাদ পড়েছেন সদ্য সাবেক কেবিনেটের ১৯ জন মন্ত্রী। এই মন্ত্রিসভার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো শিক্ষিত এবং বিশেষজ্ঞদের প্রাধান্য দেওয়া। এবারের মন্ত্রিপরিষদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন কয়েকজন। যার মধ্যে একজন রয়েছেন মন্ত্রিপরিষদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। একাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভায় সফলভাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হিসেবে কাজ করা ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ এবারের মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। নানাবিধ আন্তর্জাতিক কারণে বিগত দুই বছর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য আগামী ৫ বছরও চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমকে। আর সেই চ্যালেঞ্জের জন্য দলটির অন্যতম নির্ভরযোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে হাছান মাহমুদকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম ওয়ার্ড শাখা ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতির জীবন শুরু করা ড. হাছান মাহমুদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সেই সঙ্গে তিনি এর আগে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন আঙ্গিকে উষ্ণ করতে চায় বাংলাদেশ। আর এ কারণেই তাকে বেছে নেওয়া।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমকে গতিশীল রাখতে বিগত বছরগুলোর মতোই ওবায়দুল কাদেরের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। আর এ কারণেই আবারও এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যার পর থেকে কলেজ জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত এই নেতা ৫ বছর জেলে বন্দি থাকেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় জেলেবন্দি এই নেতাকে ছাত্রলীগের সভাপতি ঘোষণা করা হয়। নিজ আসন নোয়াখালী-৫ থেকে এখন পর্যন্ত ৫ বার বিজয়ী হয়েছেন ওবায়দুল কাদের। ২০১৪ সাল থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। অন্যদিকে ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। দলটির সবচেয়ে দীর্ঘ সময় দায়িত্বে থাকা সাধারণ সম্পাদকও তিনি।

এবারের মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ একটি নাম আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকলেও পূর্বে মন্ত্রী হিসেবে তার অভিজ্ঞতা ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিচালনার। ২০০৮ সালের নির্বাচনে দিনাজপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, অর্থ বিভাগকে নতুন করে সাজাতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষত অর্থ খাত এবং এই সংশ্লিষ্ট দুর্নীতি বন্ধে শক্ত হাতে বিষয়গুলো দমনের জন্য কাউকে খোঁজা হচ্ছিল। আওয়ামী লীগের ইশতেহারেও এবার এ বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। আর দৃঢ়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং শক্তহাতে অর্থ খাতের দুর্নীতিকে মোকাবিলার জন্যই আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে বেছে নেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া নিয়েও রয়েছে আলোচনা। আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত এই সংসদ সদস্যকে দীর্ঘদিন ক্ষমতার কেন্দ্রের খুব কাছাকাছি দেখা যায়নি। তার মন্ত্রী হওয়া এবং গৃহায়ন ও গণূপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব অর্জনের বিষয়টি দলীয় ফোরামেও প্রশংসা কুড়িয়েছে। সাবেক এই আমলা ২০১১ সালে উপনির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

তিনি ১৯৭১ সালে মুজিব বাহিনীর অধীনে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলে তিনি দেশব্যাপী গণতান্ত্রিক ছাত্রআন্দোলন ও প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখেন।

১৯৭৫ সালের ২০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিলের নেতৃত্বদান ও ৪ নবেম্বর ঢাকার রাজপথে প্রথম প্রতিবাদ মিছিলের অন্যতম সংগঠক হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৬ সনের অক্টোবরে গ্রেফতার হয়ে প্রায় ২ বছর কারাবরণ করেন এবং ১৯৭৮ সালের সেপ্টেম্বরে মাসে হাইকোর্টের নির্দেশে মুক্তি পান।

এবারের মন্ত্রিসভায় তরুণদের স্থান দেওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হয়ে রয়েছেন শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (চট্টগ্রাম-৯)। চট্টগ্রামের রাজনৈতিক পরিবারের এই সদস্য সর্বশেষ মন্ত্রিসভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন। এবার সরাসরি তাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। মহিবুল হাসান চৌধুরী লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্স থেকে স্নাতক পাশ করে লন্ডন থেকে ব্যারিস্টারি সম্পন্ন করেন। তিনি ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি সর্বকনিষ্ঠ সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হন। তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষাব্যবস্থায় যে আমূল পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা রয়েছে, সেখানে দীর্ঘ সময় কাজ করার লক্ষ্য নিয়েই তরুণ একজনকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সরকারের পক্ষে লিয়াজোঁ করে যাচ্ছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী (ঢাকা-৯)। নিজ আসনে জনপ্রিয় এই সংসদ সদস্যকে এবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। দেশের সবচেয়ে সফল বিসিবি সভাপতি হিসেবে এখনো তাকে বিবেচনা করা হয়, যার তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস মর্যাদা লাভ করে। সামনে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জলবায়ু পরিবর্তন। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন উন্নত দেশগুলোর অর্থ ছাড়। আর এ বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেগোসিয়েশনের প্রয়োজন থেকেই এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে সাবের হোসেন চৌধুরীকে নিয়ে আসা।

টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে চমক দেখিয়েছেন ডা. সামন্ত লাল সেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। দেশজুড়ে গঠিত বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করা এই ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বড় ধরনের বিপ্লব ঘটাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির জন্য সুপরিচিত একজন চিকিৎসক তিনি।

শপথপাঠ অনুষ্ঠানে নিজ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে খ্যাতনামা এ চিকিৎসক বলেন, ‘আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে মন্ত্রী হবো। এটা আমার কাম্য ছিল না। যাই হোক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা রেখে মন্ত্রিত্ব দিয়েছেন, আমি সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করব।’

মন্ত্রিত্ব পাওয়ার বিষয়ে অবাক হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের ফোন পেয়ে আমি ভেবেছিলাম, তার মনে হয় কোনো রোগী আছে এখানে। কিন্তু তার কথা শুনে আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। আমি তো প্রথমে বিশ্বাসই করিনি! ভেবেছিলাম ভুল ফোন হতে পারে। তবে সত্যিই আমি মন্ত্রী হলাম। এটা আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ।’

মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন না হওয়া আসাদুজ্জামান খান কামাল (ঢাকা-১২) তার সঠিক অবস্থানেই রয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত বিগত কয়েক বছর জঙ্গিদের উত্থানের আপ্রাণ চেষ্টা, চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উত্থান তথা সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য তার ভূমিকাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। আর এ কারণেই তার চলমান কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে এই মন্ত্রণালয়ে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। ২০০৮ সাল থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে রয়েছেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। ২০১৪ সালে প্রথম স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন তিনি। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে নতুন মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এবারও একই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

আওয়ামী লীগের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা আ ক ম মোজাম্মেল হক (গাজীপুর-১) আবারও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় নেতৃত্বদানের মাধ্যমেই ছাত্রলীগ রাজনীতিতে পদযাত্রা। তিনি ১ মেয়াদে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও দুই মেয়াদে সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরে সর্বপ্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধে তিনি সশস্ত্র প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ব্রিগেডিয়ার জাহান জেবের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন এবং ব্রিগেডিয়ার জাহানজেবকে জয়দেবপুর থেকে ফেরত চলে আসতে বাধ্য করেন। তিনি স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনবারের বেশি। ২০০৮ সালে পৌর মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করে গাজীপুর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা আব্দুস সালামকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক রেখে কাজ করে যাওয়া পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কেও দুর্নীতি মোকাবিলায় বেশ কঠোর কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। আর এ কারণেই দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম এমন একজনকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত হন। ১৯৯৬ সাল থেকে নিজ আসনে (ময়মনসিংহ-৯) আওয়ামী লীগের প্রার্থী তিনি।

এবারের মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফরহাদ হোসেন (মেহেরপুর-১)। তিনি আবারও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।

এই মন্ত্রিসভার আরেকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মো. আব্দুস শহীদ (মৌলভীবাজার-৪) কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ ১৯৭৩ সালে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ গণমহাবিদ্যালয়ে যোগদান করে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন। তিনি এক সময় চিফ হুইপ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।

এদিকে মো. তাজুল ইসলাম ২০১৯ সাল থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বড় কোনো সমালোচনা না থাকায় এবারও এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। মো. ফরিদুল হক খান (জামালপুর-২) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে থাকলেও এবার তিনি পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে এই মন্ত্রণালয় পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন। সাধন চন্দ্র মজুমদার (নওগাঁ-১) রয়েছেন তার আগের দায়িত্বে খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে। অতীতে বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মুহাম্মদ ফারুক খান বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেছেন।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন (কিশোরগঞ্জ-৬) পেয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। রাজবাড়ী-২ আসন থেকে পঞ্চমবারের মতো জয় পেয়ে প্রথমবারের মতো মন্ত্রিসভায় মো. জিল্লুল হাকিম। রেলমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া এই রাজনীতিবিদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বিগত তিনটি সরকারেরই টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ছাত্র জীবনে তিনি বাম ধারার রাজনীতিক ছিলেন। পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক হিসেবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।

প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সফলতার সঙ্গে নিজেদের দায়িত্ব পালন করায় এবারও নসরুল হামিদ (ঢাকা-৩) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। টানা চারবার ঢাকা-৩ আসনের এই সংসদ সদস্য বিগত ১০ বছর ধরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। কেননা এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই।

যিনি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন, তিনিও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। পূর্ণমন্ত্রীহীন মন্ত্রণালয় লাভ করা প্রতিমন্ত্রী হলেন মোহাম্মদ আলী আরাফাত। ঢাকা-১৭ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনে প্রথম নির্বাচিত হওয়া এই তরুণ রাজনীতিবিদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। রাজনৈতিক বিষয়ে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনায় অত্যন্ত দক্ষ ও গবেষক এই তরুণ রাজনীতিবিদ চলতি সংসদে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন এটা অনেক আগে থেকেই দলীয় আলোচনায় ছিল।

আবারও নৌ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। নিজ আসনে (দিনাজপুর-২) জনপ্রিয় এই সংসদ সদস্য ২০০৮ সাল থেকেই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর থেকে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। তার মন্ত্রণালয়ে কোনো মন্ত্রী নেই। একই রকমভাবে মন্ত্রী নেই জুনাইদ আহমেদ পলক (নাটোর-৩) এর ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে। তিনি এককভাবে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে এই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। ২০০৮ সাল থেকে তরুণ এই রাজনীতিবিদ নিজ আসনে জনপ্রিয় হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন এবং ২০১৪ সাল থেকে তিনি আইসিটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কাজ করছেন।

আওয়ামী লীগের অন্যতম সফল সাধারণ সম্পাদক এবং মুক্তিযুদ্ধকালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা তাজউদ্দীন আহমেদের কন্যা বেগম সিমিন হোসেন রিমি (গাজীপুর-৪) রয়েছেন মহিলা ও শিশু =বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। এ ছাড়াও মো. মহিববুর রহমান (পটুয়াখালী-৪)- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়; জাহিদ ফারুক (বরিশাল-৫)- পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়; কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি)- পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়; বেগম রুমানা আলী (গাজীপুর-৩)- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়; শফিকুর রহমান চৌধুরী (সিলেট-২)- প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়; আহসানুল ইসলাম টিটু (টাঙ্গাইল-৬)-বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রথমবারের মতো দায়িত্ব লাভ করেছেন।

বিষয়:

মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল সংশোধনীর খসড়ায় উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ২৮তম সভায় আইন প্রণয়ন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের যাচাই-বাছাই শেষে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

এছাড়া, ‘জুলাই বিপ্লব অধ্যাদেশে শহীদ ও আহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদনও নীতিগতভাবে দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এই পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে।

‘জুলাই বিপ্লব অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়াটি পর্যালোচনা করার জন্য কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে রয়েছে- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।

উপদেষ্টা পরিষদ খসড়া ড্রেজিং এবং ড্রেজিং উপকরণ ব্যবস্থাপনা নীতি ২০২৪-এ অনুমোদন দিয়েছে। এর লক্ষ্য সুসমন্বিত ও পরিকল্পিত ড্রেজিং কার্যক্রম এবং ড্রেজিং উপকরণের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা।

দীর্ঘদিনের পুরাতন হাইড্রোগ্রাফিক জরিপের ভিত্তিতে প্রদত্ত ইজারাধীন বালুমহালের ক্ষেত্রে নূতন করে ইজারা কার্যক্রম গ্রহণের পূর্বে পুনরায় হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ সম্পন্ন করে ইজারা কার্যক্রম গ্রহণ করা; সূর্যাস্তের পর বালু উত্তোলন বন্ধ করা এবং অবৈধভাবে উত্তোলিত বালু নিলামে বিক্রয় না করে সরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজে ব্যবহার করার বিধান অন্তর্ভুক্ত করে ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০’-এর আওতায় জারিকৃত ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১১’ হালনাগাদ করতে হবে। ভূমি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

ভূমি মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলেও সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।

এছাড়াও, উপদেষ্টা পরিষদ ‘জাতীয় জীন ব্যাংক ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৪’-প্রণয়ন সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেছে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে জাতীয় জীন ব্যাংকের প্রয়োজনীয়তা যথাযথভাবে নিরূপণ না করে সাভারে উক্ত প্রতিষ্ঠান ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতীত জাতীয় জীন ব্যাংকের ভবন ও সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোর যথোপযুক্ত ব্যবহারের একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব সারসংক্ষেপসহ উপদেষ্টা পরিষদ-বৈঠকে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নেতৃত্বে কৃষি মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাবৃন্দের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এই কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।

আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক জাতীয় নগর নীতি ২০২৫ খসড়াও অনুমোদন করেছে।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্যের নেতৃত্বে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি প্রস্তাবিত ‘জাতীয় নগর নীতি ২০২৫’ পুনর্গঠন করবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ এই কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।

উপদেষ্টা পরিষদ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুত স্থানীয়ভাবে পরিচালিত অভিযোজন কাঠামো (এলএলএএফ) খসড়াটিও অনুমোদন করেছে।

এই কাঠামোর লক্ষ্য সারা দেশে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন উদ্যোগ পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে স্থানীয় অগ্রাধিকার ও সক্ষমতা একীভূত করা।


টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

মেলেনি সুরাহা
চার দফা দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কাকরাইল মোড়ে অবস্থানরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। ছবি: মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জবি প্রতিনিধি

টানা দ্বিতীয় দিনের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে কাকরাই মোড়সহ পুরো এলাকা।

ছবি: মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

বৃহস্পতিবার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চলা এ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানের পাশাপাশি উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক স্লোগান দেন। আন্দোলনে বোতল হাতে নিয়ে ‘বোতল বোতল’ স্লোগান দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এদিন কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থানস্থলে শিক্ষার্থীদের এই স্লোগান দিতে দেখা যায়। এই সময় তারা মোড়ের ট্রাফিক সিগনাল লাইটের খুঁটিতে বোতল টানিয়ে দেন।

ছবি: মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

সরেজমিনে দেখা যায়, একশত জনের মত শিক্ষার্থী বোতল হাতে একত্রিত হয়ে ‘বোতল-বোতল’ স্লোগান দিতে থাকেন। পরে প্রায় ২০-২৫টি বোতল ছোট্ট রশিতে বাঁধেন। এই বোতলগুলো হাতে নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

এই বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র হৃদয় কুমার রায় বলেন, ‘শুধুমাত্র একটা বোতল নিক্ষেপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি কথা না বলে চলে গেছেন। অথচ পুলিশের হামলায় আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন। রাষ্ট্রীয় পদে বসে তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উদ্যত্মপূর্ণ আচরণ করেছেন। আমরা তার প্রতিবাদে বোতল হাতে বিক্ষোভ করছি ও ‘বোতল-বোতল’ স্লোগান দিচ্ছি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা যৌক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। অথচ আমাদের আন্দোলনে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জ করেছে। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কিছু নেতা বোতল নিক্ষেপের ঘটনাকে বড় করে দেখাচ্ছেন। তারা আমাদের শিক্ষকদের ওপর হামলাকেও তুচ্ছ করে দিচ্ছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।

ছবি: মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

এর আগে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গতকাল বুধবার রাতে কাকরাইল মসজিদের সামনে যান অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। রাত ১০টার দিকে তিনি সেখানে পুলিশি ব্যারিকেটের সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। হঠাৎ তাকে লক্ষ্য করে একটি পানির বোতল নিক্ষেপ করা হয়। বোতলটি গিয়ে উপদেষ্টার মাথায় লাগে।

পরে বোতল নিক্ষেপকারী সেই ছাত্র অর্থনীতি বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের হুসাইন বলেন, ‘গতকালের ঘটনাটি ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বোতল ছুঁড়ে মারি নাই। বোতলটি আকাশের দিকে নিক্ষেপ করি। কাউকে আহত বা অপমান করার জন্য কাজটি করি নাই। আমি কোনো ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নই। আমার ব্যাপারে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।’

উপদেষ্টা মাহফুজকে লক্ষ্য করে পানির বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা। তারা এ ঘটনাকে ‘নিকৃষ্ট’ বলে মন্তব্য করেছেন।

পরে প্রেস বিফ্রিংএ মাহফুজ বলেন, ‘তাদের নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তির প্রতি যে হিংসা আট মাস ধরে রয়েছে এবং তাদের যে হিংস্রতা অনলাইনে দেখা যায়, তারা আজকে এখানে এটা করেছেন।’

তবে রাত ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন দাবি করে বলেন, ‘বোতল নিক্ষেপের ঘটনার সঙ্গে জবির সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা কোনোভাবেই দায়ী নন। উপদেষ্টা মাহফুজ তার ব্যক্তিগত ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি। তার মানসিক কাউন্সিল প্রয়োজন।’

এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শাটডাউন ঘোষণা করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন। এদিন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘোষণা আলোচনা শেষে কাকরাইলে চলমান আন্দোলনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার নিয়ে এসেছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি আদায়ের জন্য এসেছি। আমাদের উপরে নির্বিচারে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অরাজকতা এবং অন্যায়। আমরা কারও বিরুদ্ধে এখানে কথা বলতে আসিনি কোন ষড়যন্ত্র করতে আসেনি। আমাদের অধিকার চাইতে আমাদের দাবি আদায়। রাবিয়া আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরব না। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন চলবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষা পরীক্ষা কার্যক্রম চলবে না দাবি আদায় করে আমরা ঘরে ফিরব।’

তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে এখান থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য যদি কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় ভালো হবে না। আমার চোখের সামনে আমার কোন শিক্ষার্থীকে কেউ আঘাত করতে পারবে না।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান ‘আবাসন চাই, বঞ্চনা নয়’, ‘বাজেট কাটছাঁট চলবে না’, ‘হামলার বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। প্রায় ২৪ ঘন্টা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাকরাইলে অবস্থান করছে। অবস্থান কর্মসূচি পালন করায় অনেক শিক্ষার্থী ক্লান্ত হলেও আন্দোলন থেকে সরেনি কেউ। কেউ কেউ রাতভর রাস্তায় ঘুমিয়ে আজ সকালেও অবস্থান করছেন।

গতকাল বুধবার সকাল ১১ টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লং মার্চে শুরু করে শিক্ষক শিক্ষার্থী। লং মার্চটি গুলিস্থান, মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে আসলে ১২ টা ৪০ মিনিটে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে লং মার্চে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের উপর। এ সময় ছত্রভঙ্গ করতে গরম পানি ছোড়ে। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের উপর লাঠি চার্জ করে পুলিশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক সহ শতাধিক আহত হয়েছেন।

পরবর্তীতে রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ সামনে বিফ্রিং করতে আসেন। মাহফুজ এর বিফ্রিংএ অসন্তুষ্ট হন শিক্ষার্থীরা। এদিকে উপদেষ্টা মাহফুজের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীরা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয় এবং কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন শিক্ষার্থীরা।

ছবি: মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫–২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কোনো কাটছাঁট ছাড়াই অনুমোদন করতে হবে; জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে; শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।


নিবন্ধিত ৫ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) আজ জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)-এর নিবন্ধিত পাঁচ রোহিঙ্গাকে কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে।

বিজিবি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, পাঁচ রোহিঙ্গা একই পরিবারের সদস্য এবং তারা ভারতের আসামের মাটিয়া শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছিলেন।

২২তম বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ব্যাটালিয়নের একটি টহল দল ৭ মে সকাল ৬টার দিকে কুড়িগ্রাম জেলার চরভুরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ভাওয়ালকুড়ি সীমান্তের নতুনহাট বাজার এলাকা থেকে তাদের আটক করে।

আটককৃতরা হলেন- মোহাম্মদউল্লাহ (৪৪), তার স্ত্রী রোমানা বেগম (৩৫), তাদের সন্তান তাহমিনা আক্তার (২০), রেদোয়ান (১৫) ও তাসমিনা আক্তার (১৩)।

পরিবারটি মূলত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বুথিডং জেলার কোয়াইংডং এলাকার বাসিন্দা। বিজিবি তাদের কাছ থেকে ইউএনএইচসিআর, নয়াদিল্লিতে ইস্যু করা পাঁচটি নিবন্ধন কার্ড উদ্ধার করেছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা বিজিবিকে জানিয়েছে যে, তারা দুই বছর আগে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে ভারতের আসামের মাটিয়া ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়।

৭ মে ভোরে বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছালে বিজিবি তাদের আটক করে।

আটক রোহিঙ্গারা দাবি করেছেন যে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাদের জোর করে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে।

বিজিবি জানিয়েছে, তারা বর্তমানে বিষয়টি তদন্ত করছে এবং এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করছে।

এ বিষয়ে সোনাহাট আলফা কোম্পানির কমান্ডার সুবেদার মো. আইয়ুব হোসেন বলেন, ঘটনার পর সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক রয়েছে।


দুই উপদেষ্টার সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও এনসিপি নেতাকে দুদকে তলব

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক দুই ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) তুহিন ফারাবি ও ডা. মাহমুদুল হাসান এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব এ বি এম গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

তাদের আগামী ২০, ২১ ও ২২ মে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ ইস্যু করেছেন সংস্থাটির অনুসন্ধান কর্মকর্তা।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘তুহিন ফারাবি ও মাহমুদুল হাসানকে ২০ মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরকে ২১ মে এবং মোয়াজ্জেম হোসেনকে ২২ মে ডাকা হয়েছে।’

তাদের বিরুদ্ধে কেনাকাটায় কমিশন ও বদলি বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল উপদেষ্টাদের এপিএস ও পিওর দুর্নীতি অনুসন্ধান শুরু করার দাবি নিয়ে দুদকে আসে যুব অধিকার পরিষদ। মার্চ টু দুদক কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুদকে আসেন। পরে দলটির পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল দুদকে স্মারকলিপি জমা দেয়। এ ছাড়া হাইকোর্টের দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাদিম মাহমুদ ও অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামও প্রায় একই ধরনের অভিযোগ দুদকে দাখিল করেন।

গত ২২ এপ্রিল যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেন পদত্যাগ করেন। গত ২৫ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে দুদককে তদন্ত করার অনুরোধ জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের পিও ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, গত ২১ এপ্রিল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে পাঠ্যবই ছাপানোর কাগজ কেনায় কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ আছে।


ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ২ হাজার ১ মামলা

আপডেটেড ১৫ মে, ২০২৫ ১৭:১৬
বাসস

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ১টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।

এছাড়াও অভিযানকালে ১৯০টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১৩২টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।

গতকাল বুধবার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ অভিযান চালিয়ে এসব মামলা দায়ের করে।

ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে।


চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে একটি সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চাই: আলী রীয়াজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চব্বিশের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে আকাঙ্ক্ষার স্ফুরণ ঘটেছে তার একটি সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ঢাকার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সঙ্গে আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

তিনি বলেন, ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে আমরা একটি জাতীয় সনদে প্রতিফলিত করতে চাই। ভবিষ্যতে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল এই সনদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করবে৷

ঐকমত্য কমিশনের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশাকে ধারণ করে বলে মন্তব্য করেন আলী রীয়াজ। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বাংলাদেশের নতুন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা এদেশের মানুষ এবং রাজনৈতিক শক্তিগুলোর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফল উল্লেখ করে আলোচনার সূচনায় অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ যেমন প্রকাশ হয়েছে, তেমনি তাদের প্রত্যাশাকেও প্রকাশ করেছে। বার বার ফ্যাসিবাদের উত্থান হোক; তা দেশের মানুষ চায় না। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে সবার সমানাধিকার থাকবে, নাগরিকের অধিকার সুনিশ্চিত হবে এবং ভিন্নমতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে।

কমিশনের সহ-সভাপতি আরও বলেন, সংস্কার কমিশনগুলো থেকে প্রাপ্ত সুপারিশমালা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে কমিশন। এ দায়িত্ব কেবল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নয় বরং রাজনৈতিক দলগুলোকেই মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হতে হবে।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে দলটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতনসহ ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের হয়ে আলোচনায় নিখিল দাশ, জনার্দন দত্ত নানটু, প্রকৌশলী শম্পা বসু, ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী, জুলফিকার আলী, আহসান হাবিব বুলবুল, খালেকুজ্জামান লিপন, আবু নাঈম খান বিপ্লব এবং রাহাত আহম্মেদ অংশ নেন।


অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের কারণে দেশে বছরে ২৫ হাজার মানুষের মৃত্যু

বিশ্ব লবণ সচেতনতা সপ্তাহ-২০২৫
আপডেটেড ১৫ মে, ২০২৫ ১২:০৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

দৈনিক অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের ফলে দেশে উক্ত রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্করা প্রতিদিন গড়ে ৯ গ্রাম লবণ গ্রহণ করছেন, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রার (৫ গ্রাম) চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। এর ফলে প্রতি বছর দেশে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছে বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে ‘বিশ্ব লবণ সচেতনতা সপ্তাহ-২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আবদুল আউয়াল রিজাতী'র সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগগুপ্ত ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনস্টিটিউটের লবণ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সমন্বয়ক ডা. আহমাদ খাইনুল আবরার।

সভায় বলা হয়, উচ্চমাত্রায় লবণ গ্রহণের একটি বড় উৎস হলো প্রক্রিয়াজাত খাবার। এ ধরনের খাবারে লবণের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। এই অতিরিক্ত লবণ নীরব ঘাতকের মতো দেশে হৃদরোগসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগের মহামারি সৃষ্টি করছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে অবিলম্বে একটি সমন্বিত জাতীয় লবণ গ্রহণ হ্রাস কৌশল গ্রহণ করা এবং খাদ্যের মোড়কের সামনে ‘ফ্রন্ট অফ প্যাক লেবেলিং’ বাধ্যতামূলক প্রয়োজন। খাদ্য মোড়কের সামনে সহজবোধ্যভাবে দেওয়া ফ্রন্ট অফ প্যাক লেবেলের মাধ্যমে ভোক্তারা সহজেই লবণ, চিনি ও চর্বির মত স্বাস্থ্যহানিকর উপাদানের পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন হয়ে স্বাস্থ্যকর পণ্য বেছে নিতে সক্ষম হবেন।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, লবণ শুধু স্বাদের উপাদান নয়, অতিরিক্ত গ্রহণ করলে এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগসহ অসংক্রামক রোগের বড় ঝুঁকি তৈরি করে। তিনি জাতীয় পাঠ্যক্রমে লবণের ক্ষতিকর প্রভাব অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান; যাতে শিশুদের মধ্যে শুরু থেকেই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে ওঠে।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান মুস্তাক হাসান মো. ইফতেখার বলেন, অধিকাংশ প্রক্রিয়াজাত খাবারে অতিরিক্ত লবণ থাকে, কিন্তু বোধগম্য লেবেলিং না থাকার কারণে জনগণ তা বুঝে উঠতে পারে না। তিনি ফ্রন্ট-অফ-প্যাক লেবেলিং ব্যবস্থা চালুর পাশাপাশি মোড়কে পুষ্টি উপাদানসমূহের সঠিক কর্তৃপক্ষের নিয়মিত নজরদারির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সরকার বদ্ধ পরিকর। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত কার্য পরিকল্পনা রয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ করে চলছে। সম্প্রতি অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি উদ্যোগে জাতীয় লবণ গ্রহণ হ্রাস কৌশল প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি দ্রুত এটি বাস্তবায়ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শোয়েব বলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মোড়কিকরণ আইন অনুযায়ী মোড়কে লবণ, চিনি ও চর্বির পরিমাণ উল্লেখ বাধ্যতামূলক হলেও অনেক কোম্পানি তা করে না, অথবা এমনভাবে উল্লেখ করে যা ভোক্তারা পড়তে পারেন না। জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি মোড়কিকরণ আইন সংশোধন করে সহজবোধ্য ফ্রন্ট-অফ-প্যাক লেবেলিং ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় খাদ্যভ্যাস পরিবর্তনের বিকল্প নেই। তিনি দেশের জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য পরিবেশ তৈরিতে সরকারের সার্বিক প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন। জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও দেশের সুস্থ ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য তিনি সরকারি বেসরকারি সকলের সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে এ জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিফায়ী বলেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন ধরে লবণ গ্রহণ হ্রাসের জন্য প্রক্রিয়াজাত খাবারে লুকানো লবণ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে আসছে। জনস্বার্থে সরকারিভাবে প্রক্রিয়াজাত খাবারে সর্বোচ্চ লবণের মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। সেই জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো জরুরি।

উল্লেখ্য, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১২ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত ‘বিশ্ব লবণ সচেতনতা সপ্তাহ’পালিত হয়। এই সচেতনতা সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘অতিরিক্ত লবণ বর্জন করি, সুস্থ জীবন পড়ি’।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সাইদুল আরেফিন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনসিটি বিষয়ক কর্মকর্তা ডা. ফারজানা আক্তার পারভিন, বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির অসংক্রামক রোগ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ডা. মো. মাবুল হক খান, জাতীয় পুষ্টিসেবার ডেপুটি প্রোগ্রাম প্রোগ্রাম ম্যানেজার আজমেরী শারমিনসহ, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা।


শিক্ষার্থীদের নতুন বিশ্ব গড়ার স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

আজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বক্তব্য রাখেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শিক্ষার্থীদের নতুন এক বিশ্ব গড়ার স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ বুধবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত নতুন কিছু গড়ার সক্ষমতা রাখি।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়।

সমাবর্তন ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা চাইলে আমাদের মতো করে এক নতুন বিশ্ব গড়ে তুলতে পারি।’ তবে, তিনি বলেন, প্রত্যেকেরই স্বপ্ন থাকা দরকার- কেমন পরিবেশ ও সমাজ তারা প্রতিষ্ঠা করতে চায় সেই সম্পর্কে।

গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পটভূমি স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে যে সভ্যতা চলছে তা একটি ধ্বংসাত্মক অর্থনীতির সভ্যতা।

তিনি বলেন, ‘আমরা যে অর্থনীতি তৈরি করেছি তা মানুষের জন্য নয়, বরং ব্যবসার জন্য।’ তিনি উল্লেখ করেন, ব্যবসাকেন্দ্রিক এই সভ্যতা আত্মঘাতী এবং তা টিকবে না।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দীর্ঘদিন পর তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আনন্দিত। তিনি স্মরণ করেন, ১৯৭২ সালে চবিতে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।

তিনি ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ এবং কীভাবে গ্রামীণ ব্যাংক চট্টগ্রামে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের সহায়তা করতে গঠিত হয়েছিল তা তুলে ধরেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের জন্ম হয়েছিল চবির অর্থনীতি বিভাগে।

অনুষ্ঠানে, চবি কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক ইউনূসকে ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন এবং বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদানের জন্য সম্মানসূচক ডক্টরেট অব লিটারেচার (ডি লিট) উপাধিতে ভূষিত করে।

চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার অধ্যাপক ইউনূসের হাতে ডি লিট সনদ তুলে দেন।

সমাবর্তনে শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফয়েজসহ অন্যান্যরাও বক্তব্য রাখেন।

চবি প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) মো. কামাল উদ্দিনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

চবি আজ দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ সমাবর্তনের আয়োজন করে, যেখানে ২২,৫৮৬ জন শিক্ষার্থীকে সনদ প্রদান করা হয়।


দাবি আদায় না-হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান করছেন জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

দাবি আদায় না-হওয়া পর্যন্ত রাজপথে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা অভিমুখে কাকরাইল মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান করছেন।

বুধবার (১৪ মে) বিকাল সাড়ে তিনটার সময় এই ঘোষণা দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বলেন, আমাদের শিক্ষক ও ছাত্রদের ওপর হামলা চালানো ঘাতক পুলিশের বিচার করতে হবে।

এসময় জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেন, ‘সরকারের এই কর্মকাণ্ডে আমরা মর্মাহত। আমার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর চালানো হামলায় শতাধিক আহত হয়েছেন। পুলিশের এই হামলার বিচার করতে হবে।’

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা, ‘জেগেছে রে জেগেছে, জবিয়ান জেগেছে’; ‘আমার ভাই অনাহারে যমুনা কি করে’; ‘এসেছি যমুনায় যাবো না খালি হাতে’; ‘আমার ভাই আহত কেন ইন্টেরিম জবাব চাই’ এসব স্লোগান দেন।

এদিন বিকাল ৩টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন মঞ্জুর মোর্শেদ উপস্থিন হন।

এদিন, বেলা ১১টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লং মার্চ শুরু করেন জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এতে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এই ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।

লং মার্চটি মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিং মোড়ে গেলে কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, গরম পানি নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, সহকারী প্রক্টর নাইম সিদ্দিকি, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসিরউদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমন প্রমুখ।

পুলিশের লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসে গুরুতর আহত হয়ে অন্তত ৩০ জন জবি শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, ‘আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমার সহকারী প্রক্টরের ওপরও পুলিশ আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচারণ করেছে। এর বিচার না-হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না।’

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসিতে যান। কিন্তু ইউজিসি থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জুলাই ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো—জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করেই অনুমোদন করতে হবে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।


চট্টগ্রাম রেঞ্জ ও সিএমপিতে চালু হচ্ছে অনলাইন জিডি সেবা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

চট্টগ্রাম রেঞ্জের সকল জেলার সকল থানা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সকল থানায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৫ মে) থেকে চালু হচ্ছে অনলাইন জিডি সেবা।

প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনার আলোকে পুলিশি সেবা সহজীকরণের অংশ হিসেবে থানায় না এসে ঘরে বসেই সকল ধরনের জিডি অনলাইনে করার সুবিধা চালু করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, প্রাথমিক পর্যায়ে গত ১৫ এপ্রিল ২০২৫ সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সকল থানা এবং চাঁদপুর জেলা পুলিশের সকল থানায় অনলাইন জিডি সেবা চালু হয়েছে।

ইতোপূর্বে অনলাইনে শুধুমাত্র হারানো এবং প্রাপ্তি সংক্রান্ত জিডি করা যেত। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য রেঞ্জ ও মেট্রোতেও অনলাইন জিডি সেবা চালু হবে।

অনলাইন জিডি সেবা পেতে গুগল প্লে স্টোর থেকে 'অনলাইন জিডি' অ্যাপ ডাউনলোডের পর রেজিস্ট্রেশন করে এ সেবা পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে একাধিকবার রেজিস্ট্রেশন করার প্রয়োজন নেই। রেজিস্ট্রেশন অথবা অনলাইন জিডি করতে কোনো ধরনের অসুবিধা হলে ০১৩২০০০১৪২৮ হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। হটলাইন নম্বরটি ২৪ ঘণ্টা চালু আছে।

বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা দ্রুততম সময়ে ও সহজে পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


দুদকের মামলায় জামিন পেলেন জোবাইদা রহমান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা ওই মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ থেকে খালাস চেয়ে করা আপিল আবেদনও শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন আদালত।

বুধবার (১৪ মে) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জোবাইদা রহমানের আইনজীবী কায়সার কামাল। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জোবাইদা রহমানকে জামিন দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে, গতকাল (মঙ্গলবার) এই আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা চেয়ে জোবাইদা রহমানের করা আবেদন মঞ্জুর করেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। একইসঙ্গে আপিল দায়েরের অনুমতি দেওয়া হয়। পরে গতকালই এই মামলায় খালাস চেয়ে আপিল দায়ের করা হয়। এই আপিলের সঙ্গে জামিনের আবেদনও করেন জোবাইদা রহমান।

আদালতে জোবাইদা রহমানের পক্ষে আজ (বুধবার) শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহাজান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে আইনজীবী আসিফ হাসান শুনানি করেন।

পরে আইনজীবী কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। এ মামলার আপিল শুনানির জন্য যাবতীয় নথিও তলব করা হয়েছে।’

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জুবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। পরের বছর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

পরে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট করা এই মামলার রায় দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান। ওই রায়ে তারেক রহমানকে ৯ বছর কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

পরে এই মামলায় জোবাইদা রহমানের সাজা স্থগিত করে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে সাজা স্থগিত চেয়ে জুবাইদা রহমানের করা আবেদন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলায় তাকে দেওয়া দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।

২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়েন জুবাইদা রহমান। এরপর থেকে লন্ডনেই ছিলেন তিনি।

সেখান থেকে ৬ মে শাশুড়ি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে ১৭ বছর পর দেশে ফেরেন জুবাইদা রহমান।

দেশে ফিরে আপিল করার জন্য ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। আবেদনটি মঙ্গলবার কার্যতালিকায় উঠলে সেটি মঞ্জুর করেন আদালত।


প্রধান উপদেষ্টাকে ডি লিট ডিগ্রি প্রদান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বুধবার সম্মানসূচক ডক্টরেট অফ লিটারেচার (ডি.লিট) ডিগ্রি প্রদান করেছেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদানের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি লিট ডিগ্রি প্রদান করেছে।

আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁকে এই ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে চবি উপাচার্য ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার অধ্যাপক ইউনূসের হাতে ডি লিট ডিগ্রির সনদ তুলে দেন।

এ সময় চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মো. কামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।


ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চললেও কূটনৈতিক উত্তেজনা এখনো থামেনি। এবার পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় এক কূটনীতিককে ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করেছে ইসলামাবাদ। কূটনীতির ভাষায় ‘পারসোনা নন গ্রাটা’র অর্থ হচ্ছে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’। ওই কূটনীতিককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তান ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইসলামাবাদ থেকে এএফপি এই খবর জানায়।

এদিকে বুধবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে ওই কূটনীতিকের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিধিবহির্ভূত কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের এক কর্মীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত জানাতে গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল।

এর আগে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানের এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ওই কর্মকর্তা ভারতে তাঁর সরকারি অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন। তাই তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চার দিনের সামরিক সংঘাতের পর চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেই দুই প্রতিবেশী দেশ আবারও পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নিল।


banner close