রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫
২৬ শ্রাবণ ১৪৩২

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ‘স্মার্ট মন্ত্রিসভা’

আপডেটেড
১৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০৩
ফারাজী আজমল হোসেন
প্রকাশিত
ফারাজী আজমল হোসেন
প্রকাশিত : ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ তরুণ নেতৃত্ব ও তরুণ চিন্তা-চেতনাকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছে। এ কারণেই দলটির সাধারণ সম্পাদক থেকে সভাপতি হয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তৎকালীন রাজনীতির হিসাবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একঝাঁক তরুণকে নিয়ে পঞ্চাশের দশক থেকেই এগিয়ে চলেছিল আওয়ামী লীগ। যার ফল হিসেবে ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯, ১৯৭০ এবং সর্বোপরি ১৯৭১ সালে ইতিহাস রচনা করে দেশের তরুণ ও সাধারণ মানুষের সম্মুখযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশ।

২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যখন তার ইশতেহারে ‘দিন বদলের সনদ’ ঘোষণা করে, তখনও ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হয় তরুণদের। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদের জন্য ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের ঘোষণায়ও রয়েছে তরুণদের প্রাধান্য দেওয়ার কথা। আর আওয়ামী লীগের নতুন মন্ত্রিসভায়ও রয়েছে সেই ছাপ। অনেকেই এই মন্ত্রিসভাকে স্মার্ট মন্ত্রিসভা বলেও আখ্যায়িত করছেন।

বরাবরের মতোই আওয়ামী লীগের এবারের মন্ত্রিসভায়ও শিক্ষিত এবং মেধাবীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রায় ৫ জনের বেশি সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক ও আমলা রয়েছেন। রয়েছেন চিকিসৎসক ও গবেষক। ফলে স্পষ্ট করেই বলা যায়, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য যে চারটি স্তম্ভের কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার তার বক্তব্যে বলেছেন, তার একটি তিনি নতুন মন্ত্রিসভার মাধ্যমে স্থাপনের আভাস দিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ স্মার্ট সরকার তৈরির জন্যই শিক্ষিত ও যোগ্য একটি মন্ত্রিসভা গড়ে তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে এই মন্ত্রিসভা উন্নত বাংলাদেশ গড়ার জন্য অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দেশপ্রেমের জন্য কাজ করবে বলেও মনে করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের এবারের মন্ত্রিসভায় ১৯ জন নতুন মন্ত্রী হয়েছেন, সেই সঙ্গে বাদ পড়েছেন সদ্য সাবেক কেবিনেটের ১৯ জন মন্ত্রী। এই মন্ত্রিসভার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো শিক্ষিত এবং বিশেষজ্ঞদের প্রাধান্য দেওয়া। এবারের মন্ত্রিপরিষদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন কয়েকজন। যার মধ্যে একজন রয়েছেন মন্ত্রিপরিষদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। একাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভায় সফলভাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হিসেবে কাজ করা ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ এবারের মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। নানাবিধ আন্তর্জাতিক কারণে বিগত দুই বছর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য আগামী ৫ বছরও চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমকে। আর সেই চ্যালেঞ্জের জন্য দলটির অন্যতম নির্ভরযোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে হাছান মাহমুদকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম ওয়ার্ড শাখা ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতির জীবন শুরু করা ড. হাছান মাহমুদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সেই সঙ্গে তিনি এর আগে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন আঙ্গিকে উষ্ণ করতে চায় বাংলাদেশ। আর এ কারণেই তাকে বেছে নেওয়া।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমকে গতিশীল রাখতে বিগত বছরগুলোর মতোই ওবায়দুল কাদেরের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। আর এ কারণেই আবারও এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যার পর থেকে কলেজ জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত এই নেতা ৫ বছর জেলে বন্দি থাকেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় জেলেবন্দি এই নেতাকে ছাত্রলীগের সভাপতি ঘোষণা করা হয়। নিজ আসন নোয়াখালী-৫ থেকে এখন পর্যন্ত ৫ বার বিজয়ী হয়েছেন ওবায়দুল কাদের। ২০১৪ সাল থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। অন্যদিকে ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। দলটির সবচেয়ে দীর্ঘ সময় দায়িত্বে থাকা সাধারণ সম্পাদকও তিনি।

এবারের মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ একটি নাম আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকলেও পূর্বে মন্ত্রী হিসেবে তার অভিজ্ঞতা ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিচালনার। ২০০৮ সালের নির্বাচনে দিনাজপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, অর্থ বিভাগকে নতুন করে সাজাতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষত অর্থ খাত এবং এই সংশ্লিষ্ট দুর্নীতি বন্ধে শক্ত হাতে বিষয়গুলো দমনের জন্য কাউকে খোঁজা হচ্ছিল। আওয়ামী লীগের ইশতেহারেও এবার এ বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। আর দৃঢ়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং শক্তহাতে অর্থ খাতের দুর্নীতিকে মোকাবিলার জন্যই আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে বেছে নেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া নিয়েও রয়েছে আলোচনা। আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত এই সংসদ সদস্যকে দীর্ঘদিন ক্ষমতার কেন্দ্রের খুব কাছাকাছি দেখা যায়নি। তার মন্ত্রী হওয়া এবং গৃহায়ন ও গণূপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব অর্জনের বিষয়টি দলীয় ফোরামেও প্রশংসা কুড়িয়েছে। সাবেক এই আমলা ২০১১ সালে উপনির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

তিনি ১৯৭১ সালে মুজিব বাহিনীর অধীনে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলে তিনি দেশব্যাপী গণতান্ত্রিক ছাত্রআন্দোলন ও প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখেন।

১৯৭৫ সালের ২০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিলের নেতৃত্বদান ও ৪ নবেম্বর ঢাকার রাজপথে প্রথম প্রতিবাদ মিছিলের অন্যতম সংগঠক হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৬ সনের অক্টোবরে গ্রেফতার হয়ে প্রায় ২ বছর কারাবরণ করেন এবং ১৯৭৮ সালের সেপ্টেম্বরে মাসে হাইকোর্টের নির্দেশে মুক্তি পান।

এবারের মন্ত্রিসভায় তরুণদের স্থান দেওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হয়ে রয়েছেন শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (চট্টগ্রাম-৯)। চট্টগ্রামের রাজনৈতিক পরিবারের এই সদস্য সর্বশেষ মন্ত্রিসভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন। এবার সরাসরি তাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। মহিবুল হাসান চৌধুরী লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্স থেকে স্নাতক পাশ করে লন্ডন থেকে ব্যারিস্টারি সম্পন্ন করেন। তিনি ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি সর্বকনিষ্ঠ সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হন। তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষাব্যবস্থায় যে আমূল পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা রয়েছে, সেখানে দীর্ঘ সময় কাজ করার লক্ষ্য নিয়েই তরুণ একজনকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সরকারের পক্ষে লিয়াজোঁ করে যাচ্ছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী (ঢাকা-৯)। নিজ আসনে জনপ্রিয় এই সংসদ সদস্যকে এবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। দেশের সবচেয়ে সফল বিসিবি সভাপতি হিসেবে এখনো তাকে বিবেচনা করা হয়, যার তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস মর্যাদা লাভ করে। সামনে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জলবায়ু পরিবর্তন। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন উন্নত দেশগুলোর অর্থ ছাড়। আর এ বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেগোসিয়েশনের প্রয়োজন থেকেই এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে সাবের হোসেন চৌধুরীকে নিয়ে আসা।

টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে চমক দেখিয়েছেন ডা. সামন্ত লাল সেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। দেশজুড়ে গঠিত বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করা এই ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বড় ধরনের বিপ্লব ঘটাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির জন্য সুপরিচিত একজন চিকিৎসক তিনি।

শপথপাঠ অনুষ্ঠানে নিজ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে খ্যাতনামা এ চিকিৎসক বলেন, ‘আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে মন্ত্রী হবো। এটা আমার কাম্য ছিল না। যাই হোক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা রেখে মন্ত্রিত্ব দিয়েছেন, আমি সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করব।’

মন্ত্রিত্ব পাওয়ার বিষয়ে অবাক হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের ফোন পেয়ে আমি ভেবেছিলাম, তার মনে হয় কোনো রোগী আছে এখানে। কিন্তু তার কথা শুনে আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। আমি তো প্রথমে বিশ্বাসই করিনি! ভেবেছিলাম ভুল ফোন হতে পারে। তবে সত্যিই আমি মন্ত্রী হলাম। এটা আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ।’

মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন না হওয়া আসাদুজ্জামান খান কামাল (ঢাকা-১২) তার সঠিক অবস্থানেই রয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত বিগত কয়েক বছর জঙ্গিদের উত্থানের আপ্রাণ চেষ্টা, চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উত্থান তথা সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য তার ভূমিকাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। আর এ কারণেই তার চলমান কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে এই মন্ত্রণালয়ে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। ২০০৮ সাল থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে রয়েছেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। ২০১৪ সালে প্রথম স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন তিনি। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে নতুন মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এবারও একই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

আওয়ামী লীগের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা আ ক ম মোজাম্মেল হক (গাজীপুর-১) আবারও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় নেতৃত্বদানের মাধ্যমেই ছাত্রলীগ রাজনীতিতে পদযাত্রা। তিনি ১ মেয়াদে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও দুই মেয়াদে সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরে সর্বপ্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধে তিনি সশস্ত্র প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ব্রিগেডিয়ার জাহান জেবের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন এবং ব্রিগেডিয়ার জাহানজেবকে জয়দেবপুর থেকে ফেরত চলে আসতে বাধ্য করেন। তিনি স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনবারের বেশি। ২০০৮ সালে পৌর মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করে গাজীপুর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা আব্দুস সালামকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক রেখে কাজ করে যাওয়া পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কেও দুর্নীতি মোকাবিলায় বেশ কঠোর কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। আর এ কারণেই দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম এমন একজনকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত হন। ১৯৯৬ সাল থেকে নিজ আসনে (ময়মনসিংহ-৯) আওয়ামী লীগের প্রার্থী তিনি।

এবারের মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফরহাদ হোসেন (মেহেরপুর-১)। তিনি আবারও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।

এই মন্ত্রিসভার আরেকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মো. আব্দুস শহীদ (মৌলভীবাজার-৪) কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ ১৯৭৩ সালে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ গণমহাবিদ্যালয়ে যোগদান করে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন। তিনি এক সময় চিফ হুইপ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।

এদিকে মো. তাজুল ইসলাম ২০১৯ সাল থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বড় কোনো সমালোচনা না থাকায় এবারও এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। মো. ফরিদুল হক খান (জামালপুর-২) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে থাকলেও এবার তিনি পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে এই মন্ত্রণালয় পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন। সাধন চন্দ্র মজুমদার (নওগাঁ-১) রয়েছেন তার আগের দায়িত্বে খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে। অতীতে বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মুহাম্মদ ফারুক খান বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেছেন।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন (কিশোরগঞ্জ-৬) পেয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। রাজবাড়ী-২ আসন থেকে পঞ্চমবারের মতো জয় পেয়ে প্রথমবারের মতো মন্ত্রিসভায় মো. জিল্লুল হাকিম। রেলমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া এই রাজনীতিবিদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বিগত তিনটি সরকারেরই টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ছাত্র জীবনে তিনি বাম ধারার রাজনীতিক ছিলেন। পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক হিসেবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।

প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সফলতার সঙ্গে নিজেদের দায়িত্ব পালন করায় এবারও নসরুল হামিদ (ঢাকা-৩) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। টানা চারবার ঢাকা-৩ আসনের এই সংসদ সদস্য বিগত ১০ বছর ধরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। কেননা এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই।

যিনি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন, তিনিও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। পূর্ণমন্ত্রীহীন মন্ত্রণালয় লাভ করা প্রতিমন্ত্রী হলেন মোহাম্মদ আলী আরাফাত। ঢাকা-১৭ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনে প্রথম নির্বাচিত হওয়া এই তরুণ রাজনীতিবিদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। রাজনৈতিক বিষয়ে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনায় অত্যন্ত দক্ষ ও গবেষক এই তরুণ রাজনীতিবিদ চলতি সংসদে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন এটা অনেক আগে থেকেই দলীয় আলোচনায় ছিল।

আবারও নৌ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। নিজ আসনে (দিনাজপুর-২) জনপ্রিয় এই সংসদ সদস্য ২০০৮ সাল থেকেই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর থেকে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। তার মন্ত্রণালয়ে কোনো মন্ত্রী নেই। একই রকমভাবে মন্ত্রী নেই জুনাইদ আহমেদ পলক (নাটোর-৩) এর ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে। তিনি এককভাবে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে এই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। ২০০৮ সাল থেকে তরুণ এই রাজনীতিবিদ নিজ আসনে জনপ্রিয় হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন এবং ২০১৪ সাল থেকে তিনি আইসিটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কাজ করছেন।

আওয়ামী লীগের অন্যতম সফল সাধারণ সম্পাদক এবং মুক্তিযুদ্ধকালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা তাজউদ্দীন আহমেদের কন্যা বেগম সিমিন হোসেন রিমি (গাজীপুর-৪) রয়েছেন মহিলা ও শিশু =বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। এ ছাড়াও মো. মহিববুর রহমান (পটুয়াখালী-৪)- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়; জাহিদ ফারুক (বরিশাল-৫)- পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়; কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি)- পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়; বেগম রুমানা আলী (গাজীপুর-৩)- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়; শফিকুর রহমান চৌধুরী (সিলেট-২)- প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়; আহসানুল ইসলাম টিটু (টাঙ্গাইল-৬)-বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রথমবারের মতো দায়িত্ব লাভ করেছেন।

বিষয়:

মাজারে হামলা করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না: ধর্ম উপদেষ্টা

আপডেটেড ১০ আগস্ট, ২০২৫ ১৬:৫৬
রাকিবুল হাসান রোকেল, স্টাফ রিপোর্টার-কিশোরগঞ্জ

দেশের যেকোনো মাজার, মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় হামলা চালালে বা ধ্বংসের চেষ্টা করলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

আজ (রোববার, ১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ পরিদর্শন শেষে একথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘মাজারে কিছু হামলার ঘটনা ঘটেছে, যার রিপোর্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে রয়েছে। আমি আন্তঃমন্ত্রণালয় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য। এসব বিষয় প্রতিমাসে আলোচনায় আসে। প্রতিটি মাজার ও মসজিদ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি, সিসি ক্যামেরা বসান।

এতে হামলাকারী চিহ্নিত করা সহজ হবে। সামাজিক সচেতনতা সবচেয়ে জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি মাজারে পুলিশ মোতায়েন সম্ভব নয়, তাই সর্বস্তরের মানুষকে এসব ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তায় অংশ নিতে হবে।’

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এরইমধ্যে বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং কিছু ব্যক্তি গ্রেপ্তারও হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্দিষ্ট মামলার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবে।’

পাগলা মসজিদের ফাণ্ডে ৯০ কোটি টাকারও বেশি রয়েছে জানিয়ে ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, খুব শিগগিরই দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদের ১০ তলা ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হবে। আধুনিক তুরস্কে বসফরাস প্রণালীর পাশে যে মসজিদগুলো আছে, দৃষ্টিনন্দন, মাল্টিপারপাস সেটির আদলে পাগলা মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে। ১০ তলা বিশিষ্ট এই ভবনে বহুমুখী কাজ সম্পন্ন করা হবে। অনাথ-এতিমদের জন্য লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা হবে। ধর্মীয় শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা, একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়া, আইটি সেকশন থাকবে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের মেয়াদের মধ্যেই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘পাগলা মসজিদের ৯০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এফডিআর হিসেবে রাখা আছে, যা থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ গরিব, অসহায়, অনাথ ও অসুস্থদের জন্য ব্যয় করা হয়। ইতিমধ্যে প্রায় ৮০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। আজ আমি প্রস্তাব করেছি—স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দরিদ্র শিক্ষার্থীদেরও এই তহবিল থেকে সহায়তা দেওয়া হোক। এতে শিক্ষার সুযোগ বাড়বে।’

পাগলা মসজিদ পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইমরানুল ইসলাম, আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা শিব্বির আহমদসহ মসজিদ কমিটির সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া এলাকায় জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র পরিদর্শন করেন ধর্ম উপদেষ্টা। পরে পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্স ঘুরে দেখে মোতাওয়াল্লীদের সাথে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।

দুপুরে তিনি আল জামিয়াতুল এমদাদিয়া কর্তৃক আয়োজিত “ইসলামী অর্থনীতির গুরুত্ব” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে সেখান থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশে যাত্রা করার কথা রয়েছে।


খসড়া তালিকা প্রকাশ : দেশের মোট ভোটার ১২ কোটি ৬১ লাখ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২০২৫ সালের হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪০ লাখ ৬ হাজার ৯১৬ জন এবং নারী ভোটার ৬ কোটি ২১ লাখ ৬২ হাজার ৭৬০ জন।

ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ রোববার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ২০২৫ সালে ভোটার অন্তর্ভুক্তির হার ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং ভোটার বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

আখতার আহমেদ জানান, গত ২ মার্চ ভোটারের সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। পরবর্তীতে বাদ পড়া ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ হালনাগাদ কার্যক্রমে নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে ৪৫ লাখ ৭১ হাজার ২১৬ জন। একই সময়ে মৃত ও অযোগ্য ভোটার হিসেবে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯০ জনকে। ফলে সম্পূরক তালিকা অনুযায়ী দেশের মোট ভোটার দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনে।

তিনি আরও বলেন, সম্পূরক খসড়া তালিকা আজ (রোববার) আমাদের সব অফিসে প্রকাশ করা হয়েছে। কোনো তথ্য সংশোধনের প্রয়োজন হলে তা জানাতে হবে এবং প্রাপ্ত সংশোধনী যাচাই করে ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

ইসি সচিব জানান, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তাদের অন্তর্ভুক্ত করে আরও একটি তালিকা প্রকাশ করা হবে। নবীন ভোটারদের দীর্ঘসময় অপেক্ষা না করানোর জন্য নতুন আইনে এই সুযোগ রাখা হয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, এ বছর মোট তিনবার ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে প্রথমটি করা হয়েছে গত ২ মার্চ। দ্বিতীয়টি আগামী ৩১ আগস্ট এবং তৃতীয়টি ৩১ অক্টোবর প্রকাশ করা হবে।


চীনে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য উন্নত চিকিৎসা সুবিধা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

চীনের বিভিন্ন হাসপাতাল বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী রোগীদের উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে।

ইউনান প্রদেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান কুনমিং টোংরেন হাসপাতাল ইতোমধ্যে বিপুল সংখ্যক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী রোগীর সফল চিকিৎসা সম্পন্ন করেছে।

গত শুক্রবার কুনমিং টোংরেন হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট শেন লিং বাংলাদেশী সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলাপকালে জানান, সম্প্রতি একটি বাংলাদেশী পরিবার তাদের কিশোর পুত্রের চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে এসেছে।

তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে এক বিশেষ ভিডিও বার্তাও শেয়ার করেন। এতে রোগীর বাবা জানান, তিনি প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে, বিশেষ করে ভারতের মতো দেশে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পাননি, আবার কিছু দেশে চিকিৎসার খরচ অত্যন্ত বেশি হওয়ায় সেখানে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি।

পরে তিনি চীনে সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নত চিকিৎসা সুবিধা পেয়ে সন্তুষ্ট হন।

রোগীর বাবা আরও জানান, চিকিৎসা শুরু করার আগে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা পুরো চিকিৎসা প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছেন এবং পুরো প্রক্রিয়াটি বোঝার পরই পরিবার চিকিৎসার জন্য সম্মত হন।

শেন লিং বলেন, কুনমিং টোংরেন হাসপাতালে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশুদের চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক দক্ষ ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে। এছাড়া, ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হাসপাতাল দোভাষী সেবা প্রদান করে থাকে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের নেতৃত্বে ২৩ সদস্যের গণমাধ্যম প্রতিনিধি দল ৬ থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত কুনমিং সফর করে ইউনান প্রদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।

শনিবার প্রতিনিধি দলটি দেশে ফিরে এসেছে।


আসন্ন নির্বাচনে পুলিশের জন্য ৪০ হাজার ‘বডিক্যাম’ সংগ্রহের পরিকল্পনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশের জন্য কমপক্ষে ৪০ হাজার শরীরে ধারণ উপযোগী ক্যামেরা (বডি-ওয়্যার ক্যামেরা) সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

শনিবার (৯ আগস্ট) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় এই পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকস চৌধুরী এবং ফয়েজ তৈয়ব আহমেদও সভায় উপস্থিত ছিলেন।

ফয়েজ তৈয়ব আহমেদ বলেন, ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা সংগ্রহের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে যা সাধারণত ‘বডিক্যাম’ নামে পরিচিত। এই ডিভাইসগুলো হাজার হাজার ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অক্টোবরের মধ্যে বডিক্যামগুলো সংগ্রহ করতে চাই যাতে পুলিশ বাহিনী এসব ক্যামেরার এআই সক্ষমতাসহ মূল বৈশিষ্ট্যগুলোর ওপর পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ পেতে পারে।’

তিনি জানান, ক্যামেরা সরবরাহের জন্য জার্মানি, চীন ও থাইল্যান্ডের তিনটি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা নির্বাচনের সময় ডিভাইসগুলো তাদের বুকে পরবেন।

এই ক্যামেরাগুলো দ্রুত কিনে হাজার হাজার পুলিশ কর্মীর জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে এ সময় কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই সমস্ত ভোটকেন্দ্রে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, তাতে খরচ যাই হোক না কেন। আমাদের লক্ষ্য হলো ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ করা।’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেলিযোগাযোগ ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী আসন্ন ভোটের জন্য একটি নির্বাচনী অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনার কথাও জানান।

তার প্রস্তাব অনুসারে, অ্যাপটি ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ওপর বিশদ তথ্য প্রদান করবে। এর মধ্যে প্রার্থীর বিবরণ, ভোটকেন্দ্রের আপডেট ও অভিযোগ জমা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।

প্রস্তাবিত অ্যাপটি দ্রুত চালু করতে এবং দেশের ১০ কোটিরও বেশি ভোটারের জন্য এটি ব্যবহার উপযোগী কিনা, তা নিশ্চিত করতেও কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।


আজ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে ইসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হালনাগাদ ভোটার তালিকার খসড়া আজ রোববার প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে কারও তথ্যে ভুল থাকলে সংশোধনের সুযোগ মিলবে ১২ দিন। ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের কর্মকর্তারা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এবারের হালনাগাদে ৪৪ লাখের মতো নতুন ভোটার যুক্ত হচ্ছেন।

এদেরই তথ্য খসড়া সম্পূরক তালিকায় প্রকাশ করা হবে রবিবার। উপজেলা কর্মকর্তারা এই তালিকা নির্দিষ্ট স্থানে সাঁটিয়ে দেবেন।

সম্পূরক ভোটার তালিকা প্রকাশের পর যোগ্য ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্তি, মৃত্যুজনিত বা অন্তর্ভুক্তি হওয়ার অযোগ্য ব্যক্তির নাম কর্তন, ভোটার স্থানান্তর এবং কোনো সংশোধন বা ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য দরখাস্ত (ফরম-২, ফরম-১২, ফরম-১৩ ও ফরম-১৪ এর মাধ্যমে দরখাস্ত করতে হবে) দাখিল করা যাবে ২১ আগস্ট পর্যন্ত।

দাখিলকৃত দরখাস্তসমূহ সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার ও রেজিস্ট্রেশন অফিসার কর্তৃক নিষ্পত্তির শেষ করা হবে ২৪ আগস্টের মধ্যে।

এরপর অন্যান্য কাজ শেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩১ আগস্ট।

বর্তমানে দেশে ভোটার রয়েছে ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। এদিকে যাদের বয়স ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তারাও এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন।


ব্রিটেনে দেউলিয়া হওয়ার পথে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের ৩ কোম্পানি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাজ্যে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর তিনটি কোম্পানির দায়িত্ব নিয়েছে আর্থিক সংস্থা গ্রান্ট থর্নটনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। সংবাদমাধ্যম বিসনাউ গত শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই তিনটি কোম্পানির মোট সম্পদের পরিমাণ ১৪২ মিলিয়ন পাউন্ড। গত ২৯ জুলাই এগুলোর দায়িত্ব নেয় প্রশাসন সংস্থা।

সাধারণত কোনো কোম্পানি ঋণ পরিশোধ বা কার্যক্রম চালাতে ব্যর্থ হলে সেগুলো দেউলিয়ার পথে চলে যায়। তখন প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে এগুলো বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের কোম্পানিগুলোতে দুরবস্থা তৈরি হওয়ায় এগুলো প্রশাসন সংস্থার অধীনে নেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের আবাসন ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতির দায়ে তাকে ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযুক্ত করেছে।

বিসনাউ জানিয়েছে, সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন জেটিএস প্রপার্টিস লিমিটেড, রুখমিলা প্রপার্টিস লিমিটেড এবং নিউ ভেঞ্চার্স (লন্ডন) লিমিটেডে গত ২৯ জুলাই প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। সাইফুজ্জানের যেসব কোম্পানি ইতিমধ্যে প্রশাসকের অধীনে গেছে, সেগুলোর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হলো এ তিনটি। এগুলোর মধ্যে জেটিএসের সম্পদের পরিমাণ ৭৭ মিলিয়ন। যা অন্য দুটি কোম্পানির চেয়ে বেশি।

তথ্য অনুযায়ী, এ তিনটি ‘আবাসন কোম্পানির’ কাছে বিভিন্ন ব্যাংক ৭৮ মিলিয়ন পাউন্ড পাবে। এরমধ্যে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ডিবিএস সাইফুজ্জামানের জেটিএসের বিভিন্ন প্রপার্টির বিপরীতে ঋণ দিয়েছে।

এর আগে চলতি বছরের শুরুতে সাইফুজ্জামানের আরও তিনটি কোম্পানিতে প্রশাসক নিয়োগের তথ্য জানিয়েছিল বিসনাউ। যেগুলোর মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ২৯ মিলিয়ন পাউন্ড। মূলত লন্ডনে থাকা ফ্ল্যাট দেখিয়ে এ ধরনের ঋণ নেওয়া হয়।

গত সপ্তাহে বিসনাউ জানিয়েছিল, চলতি বছরের শুরুতে সাইফুজ্জামানের যেসব কোম্পানিতে প্রশাসক বসানো হয় সেগুলোর সম্পদ বিক্রি করা শুরু করেছে গ্র্যান্ড থর্নটন।

সাবেক আওয়ামী এমপি ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান যুক্তরাজ্যে ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি সম্পদ কিনেছিলেন। অথচ মন্ত্রী হিসেবে তিনি নির্দিষ্ট বেতন পেতেন। দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা সাইফুজ্জামানের ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদ জব্দ করেছে।


সামুদ্রিক ও নদী সম্পদ সংরক্ষণে বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার - মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক

আপডেটেড ৯ আগস্ট, ২০২৫ ২২:৩৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো: আবদুর রউফ বলেছেন, দেশের নদী ও সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায় সরকার ইতোমধ্যে বহুমুখী ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সমুদ্র থেকে টেকসই মাছ আহরণ নিশ্চিত করাই অন্যতম লক্ষ্য।

আজ সকালে মহিপুরে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মৎস্য অধিদপ্তর পটুয়াখালী এবং ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প আয়োজিত 'অবৈধ ট্রলবোটের সরঞ্জামাদি স্বেচ্ছায় অপসারণ ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সুরক্ষা' বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন ।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, নদী ভরাট ও দূষণ প্রতিরোধে প্রস্তুতকৃত বিস্তারিত তালিকা নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং নদীর খননকাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চলমান থাকবে। এছাড়া, নদী ও সমুদ্রপথে সৃষ্ট ডুবোচর শনাক্তে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে নির্দেশনা দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

তিনি গুরুত্বারোপ করে বলেন, অবৈধ ট্রলার ব্যবহার, ছোট আকারের মাছ ধরা এবং নিষিদ্ধ মৌসুমে মাছ আহরণের বিরুদ্ধে সারাবছর অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ কার্যক্রমে প্রশাসন, কোস্টগার্ড, স্থানীয় সরকার ও মৎস্য অধিদপ্তরের যৌথ তৎপরতা চালু রয়েছে। তিনি আরো বলেন , অবৈধ ট্রলবোট মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, যা মাছের উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করে এবং মাছের স্বল্পতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবৈধ ট্রলবোট বন্ধ করলে সমুদ্রে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মহাপরিচালক বলেন, ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে গভীর সমুদ্র থেকে টুনা মাছ আহরণের জন্য গবেষণা চলমান রয়েছে এবং বেসরকারি খাতকেও এ কাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, মৎস্যজীবীদের জন্য ভিজিএফ সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভারতের মাছ ধরার সময়সূচি সমন্বয়ের উদ্যোগ নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, “সমন্বিত প্রচেষ্টা, কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণে সফলতা অর্জিত হবে।' একসাথে কাজ করলে বাংলাদেশ সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সভায় অন্যান্য বক্তারা ভিজিএফ সহায়তা বৃদ্ধি, নদী খনন, ডুবোচর চিহ্নিতকরণ এবং ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানান।

এসময় জেলে প্রতিনিধি সিদ্দিক মাঝি সমুদ্রে অবরোধ চলাকালীন সরকার থেকে প্রাপ্ত সুবিধা বাড়িয়ে দেওয়া এবং বৈরী আবহাওয়াতে জেলেদের সমুদ্র থেকে নিরাপদভাবে সরিয়ে নিতে আধুনিক নৌযান চালু করার দাবি জানান। এসময় জেলেরা দাবি করেন এ মৌসুমে সাগরে পর্যাপ্ত ইলিশসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ধরা পড়ছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে অনেক সময় ইলিশসহ অন্যান্য মাছের আহরণ কমে যাচ্ছে।

মতবিনিময় সভায় মৎস্য অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগের পরিচালক মোঃ আলফাজ উদ্দীন শেখের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. মো: আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন ইমাম হাসান আজাদ, পটুয়াখালী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক জুয়েল রানা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: কামরুল ইসলাম। এসময় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, মৎস্যজীবীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মতবিনিময় সভার আগে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো: আবদুর রউফের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল মহিপুর মৎস্য আড়ত পরিদর্শন করেন। আজকের এ মতবিনিময় সভার মাধ্যমে অবৈধ ২৮ টি ট্রলবোটের সরঞ্জামাদি স্বেচ্ছায় অপসারণ করা হয়।


শুধু শিক্ষক নয় অভিভাবকদেরকেও সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিতে হবে : শিল্প সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শিউলি আফরোজ সাথী, মাগুরা প্রতিনিধি

"আমরা মেধাবী খুঁজি না, মেধাবী তৈরি করি" এই স্লোগানকে সামনে রেখে মাগুরা আব্দুল কাদের গণি একাডেমী স্কুলের আয়োজনে অভিভাবক সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার দুপুরে জেলা অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য কালে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ওবায়দুর রহমান বলেন, শুধু শিক্ষকদের নয় সন্তানদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিতে হবে অভিভাবককে। নিয়মিত লেখাপড়া করে কিনা, স্কুলে ঠিক মত যায় কিনা এসব খোঁজ অভিভাবক কে নিতে হবে।

সমাবেশে গভর্নিং বডির সভাপতি ফারুকুজ্জামানের সভাপতিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহবায়ক আলী আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব কিশোর, ঢাকা মিরপুর গ্রীনফিল্ড স্কুল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি সামছুল আলম, আব্দুল গনি একাডেমীর প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিন প্রমুখ।

সমাবেশে সাত শতাধিক অভিভাবক, শিক্ষক এবং ছাত্ররা উপস্থিত ছিলেন।


কারাগারে ৭০ হাজার বন্দীর নৈতিকতা শিক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে: ধর্ম উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

দেশের ৬৮টি কারাগারে প্রায় ৭০ হাজার কয়েদি ও হাজতিকে নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

তিনি বলেন, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শিক্ষা দেওয়ার জন্য ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নামাজের ব্যবস্থা, নৈতিকতা ভিত্তিক বইপুস্তক ও জায়নামাজ বিতরণসহ নানা কর্মসূচি শুরু করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি গত এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, কারাগারে ভিন্ন ধর্মালম্বী কয়েদিরাও নিজ ধর্মচর্চা ও ধর্মীয় গ্রন্থ অধ্যয়নের সুযোগ পাচ্ছেন। অল্প দিনের মধ্যেই প্রথম কিস্তিতে বিপুল সংখ্যক ধর্মীয় বই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা হবে।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন করেছেন তিনি। উপদেষ্টা বলেন, আগে কারাগারে নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার তেমন কোন উদ্যোগ ছিল না। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই কারাবন্দীদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টির কাজ শুরু হয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জ কারাগারে ২৫শ’ বন্দি পবিত্র কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করেছেন।

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, কারাগারে বন্দিদের মধ্যে নৈতিকতা ও আদর্শ মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে, যাতে তারা কারাগার থেকে বের হয়ে সুষ্ঠু ও ভালো জীবনযাপন করতে পারে। এ জন্য প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি আরও জানান, কারাবন্দিদের মানবাধিকার রক্ষায় সরকার সবসময় সচেষ্ট রয়েছে। ইসলামি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে কারাগারে লাইব্রেরি পরিচালনা ও ধর্ম শিক্ষা প্রদান কার্যক্রম চলছে।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, কারাবন্দিরা যার যার ধর্ম অনুযায়ী শিক্ষা নিলে মনীষীদের জীবন থেকে নৈতিকতা, আদর্শ ও মূল্যবোধ অর্জন করতে পারবে। এজন্য বই বিতরণ ও শিক্ষক নিয়োগ বাড়ানো হবে। বর্তমানে ইসলামি ফাউন্ডেশনের একজন শিক্ষক কারাগারে এ সংক্রান্ত কাজ করছেন। আগামীতে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

তিনি আরও বলেন, কারাগারে থাকা সবাই অপরাধী নয়, অনেকেই মিথ্যা মামলায় বন্দি। তাই আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত কাউকে দোষী বলা যায় না। আমরা কারাগারকে প্রকৃত অর্থে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

ধর্ম উপদেষ্টা জানান, এ বছর নির্বিঘ্ন হজ পালনের পাশপাশি সাশ্রয় হয়েছে খরচও। ফলে সরকারের পক্ষ থেকে ৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ফেরত পেয়েছেন সরকারি হজযাত্রীরা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সহযোগিতায় এবারের হজ ব্যবস্থা বিশ্বের সেরা হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ড. খালিদ বলেন, বাংলাদেশিদের সুষ্ঠুভাবে হজ পালনে মন্ত্রণালয় ছাড়াও ৮৭ হাজার ১শ’ জন হাজীরও অবদান রয়েছে। কারন তারা সৌদি আরবে নিয়ম মেনে হজ পালন করেছেন।

গত এক বছরে ধর্ম মন্ত্রণালয় মসজিদ-মাদ্রাসায় অনুদান দিয়েছে। হাজারো মক্তবে ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান ছাড়াও ব্যাপক ওয়াকফ সম্পত্তিও উদ্ধার করেছে।

ধর্ম উপদেষ্টা জানান, রাজনৈতিক চাপ না থাকার কারণে সরকারের নিয়ম মেনে সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছেন।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে যাকাত ফান্ড থেকে অসহায়, দরিদ্র ও অসুস্থদের মধ্যে প্রায় ১১ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য ও অনুদান দেওয়া হয়েছে। ইমাম মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ৪ হাজার ৬২০ জনকে ৫ হাজার টাকা করে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা অনুদান এবং ৬শ’ জনকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, হাওর এলাকায় জনগণের জীবনমান উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণে ইমামদের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর যার মাধ্যমে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকাসক্তি, নারী ও শিশু নির্যাতন, মানবপাচার, যৌতুক ও বাল্যবিবাহরোধে কাজ চলছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় এ বছর ধর্মীয় উপাসনালয়ের সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য ২ হাজার ৯৬৪টি মসজিদে ১৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা, ১০৪৩টি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় ৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং ৭৩৩টি ঈদগাহ ও কবরস্থানে ৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।

হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ৩০৭টি মন্দিরে ১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, ৫৭টি শ্মশানে ২৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা, বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ১১২টি প্যাগোডায় ৫৬ লাখ টাকা ও ২৯টি বৌদ্ধ শ্মশানে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, খ্রিস্টান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ২৯টি গীর্জায় ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ১টি সেমিট্রিতে ৫০ লাখ টাকা সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।

এছাড়া, ৩ হাজার ১৪০ জন দুস্থকে ৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।

‘নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম’ শীর্ষক প্রকল্পটি গত ২৪ মে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। এর আওতায় প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখ শিক্ষার্থীকে কুরআন শিক্ষা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ৭৬ হাজার ৬৭০ জন ইমাম, মুয়াজ্জিন ও শিক্ষিত নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হয়েছে।

ধর্ম উপদেষ্টা জানান, ওয়াকফ এস্টেটের মোতাওয়াল্লী ও পরিচালনা কমিটির মেয়াদ সংক্রান্ত সেবা ম্যানুয়াল থেকে স্বয়ংক্রিয় (অটোমেটেড) সিস্টেমে রূপান্তর করার কাজ চলছে। এই সিস্টেম চালু হলে অনলাইনে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে এবং ওয়াকফ সম্পত্তির তথ্য মনিটরিং সহজ হবে।


ছাত্র জনতার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে  বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান পরিচালনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃক আজ শনিবার (৯ আগস্ট) বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ডিএসসিসি অঞ্চল-৮ এর ৬৬ নং ওয়ার্ডে পরিচালিত এ অভিযানে কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া এঁর উপস্থিতিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

সকাল ০৬:০০ ঘটিকায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের ছয় শতাধিক কর্মী এবং স্থানীয় জনগণ এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের অংশ হিসেবে ড্রেন, নর্দমা ও ফুটপাতের ময়লা পরিষ্কার ও মশার ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দা, রেড ক্রিসেন্ট এবং বিডি ক্লিন সদস্যদের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক একটি র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও মশক নিয়ন্ত্রণে এলাকার নির্মাণাধীন ভবনের জমা পানিতে এডিস মশার লার্ভা আছে কি না তা পরীক্ষা করে ভবন মালিকদের সতর্ক করা হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া এলাকাবাসীকে যত্রতত্র ময়লা না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলার জন্য আহবান জানিয়ে বলেন, আপনারা নির্ধারিত জায়গায় ময়লা জমিয়ে রাখবেন, সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সে ময়লা সংগ্রহ করবে। এলাকাবাসী দায়িত্বশীল আচরণ করলে, তার সুফল তারা পাবেন। এলাকাবাসীর সমস্যা সমাধানে, দলমত নির্বিশেষে একটি নাগরিক কমিটি গঠনের কথা বলেন, যার মাধ্যমে এলাকার সমস্যাগুলো আমাদের জানাবেন, সকলে মিলে সেসব সমস্যার সমাধান করব।

পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম,প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


আগামী নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে নির্বাচন কমিশন : সিইসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক পক্ষের পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করবে না। বরং দেশের ১৮ কোটি মানুষের স্বার্থে কাজ করবে।

শনিবার সকালে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সিইসি বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্বে অবহেলা ও সমস্যা সৃষ্টিকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচনের প্রতি মানুষের আস্থা কমে গেছে, তাই ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানোর প্রবণতা বেড়েছে, যা মোকাবেলায় কমিশন কাজ করছে।

তিনি নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ভোট দেওয়া শুধু নাগরিক দায়িত্ব নয়, এটি ঈমানের দায়িত্বও।

সিইসি জানান, এখনই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে না, তবে ঘোষণার দু’মাস আগে তারিখ জানানো হবে। স্বল্প সময়ে নির্বাচন সফলভাবে আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।

তিনি আরও বলেন, মানুষের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া কমে যাওয়ায় আস্থা ফেরানোই বড় চ্যালেঞ্জ। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা হবে।

সভা শেষে সিইসি নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেবেন।

তিনি বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন স্বচ্ছ ও সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।


বাজারে স্বস্তি নেই, চাপে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা

বেড়েছে ডিম, মুরগি, পেঁয়াজসহ সব ধরনের সবজির দাম
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজি-কাঁচামরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেশ চড়া। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। পাশাপাশি দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, ডিম ও মুরগির। সব মিলিয়ে নিত্যপণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মধ্য ও স্বল্প আয়ের মানুষদের।

বাজারে পেঁয়াজ ও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পেয়েছে। খুচরা পর্যায়ে ১৫–২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি পেঁয়াজ। প্রতি ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। তবে সরবরাহ বাড়ায় কিছুটা কমেছে ইলিশের দাম। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

খুচরা বিক্রেতারা জানান, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। আর ডিমের চাহিদা বেড়েছে, সে তুলনায় সরবরাহ বাড়েনি। এ কারণে পণ্য দুটির দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। সরবরাহ ঠিক হলে দাম কমে আসবে।

রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে চার–পাঁচ দিন আগেও মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যেত ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। তবে হঠাৎ কেজিতে ১৫–২০ টাকা বেড়েছে। তাতে গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন বাজারে এক কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর কৃষকের ঘরে মজুত থাকা অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। এতে বাজারে পণ্যটির সরবরাহ কমেছে। আবার বৃষ্টির কারণেও সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। মূলত এই দুই কারণে পেঁয়াজের দাম এখন বাড়তি।

ক্রেতারা বলছেন, নিত্যপণ্যের বাজারদর তাদের ওপর একটা বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। কারণ এই মুহূর্তে বাজারে চাল, সবজিসহ ডিম থেকে শুরু করে মসলাজাতীয় পণ্য, সবকিছুর দামই চড়া। দামের চাপে অনেকে বাজারের পণ্যের তালিকা ছোট করতে বাধ্য হচ্ছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। সরবরাহ কম দেখিয়ে গত সপ্তাহের ১০০ টাকার গোল বেগুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ৭০ টাকার লম্বা বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০০ টাকার দেশি শসা বর্তমানে ১২০, ৬০ টাকা হাইব্রিড শসা ৮০, ৬০ টাকার ঝিঙ্গা ৮০, ৫০ টাকার লাউ ৭০ থেকে ৮০, ৮০ টাকার করলা পৌঁছেছে ১০০-তে।

এদিকে পটোল ৬০, বরবটি ৮০, চিচিঙ্গা ৬০, কাঁকরোল ৮০, ঢ্যাঁড়স ৬০, চায়না গাজর ১২০ থেকে ১৪০, দেশি গাজর ৮০, পেঁপে ৩০, টমেটো ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কুমড়ো কেজি প্রতি ৪০, কচুরমুখী ৬০, লেবুর হালি ৩০, কচুর লতি ৮০, আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। কাঁচামরিচের দাম ২০০ থেকে আড়াইশ টাকা কেজি।

গত এক মাসে বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। গত মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশে, জুনে যা ছিল ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট সাইজের ইলিশ এতদিন ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়।

মাঝারি সাইজের ইলিশের দাম এতদিন ছিল ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা যা কমে হয়েছে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এক কেজি বা এক কেজির ওপরে ইলিশ কদিন আগেও ২৪০০ থেকে ২৬০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন দাম ২০০০ থেকে ২৩০০ টাকা।

ইলিশের দাম কমলেও অন্যান্য মাছ বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। রুই-কাতলা সাইজভেদে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, শিং ও মাগুর ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, বোয়াল ও কোরাল ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা এবং গলদা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৫০০ আর বাগদা চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকায়।

এক দিনে গরুর মাংসের দাম কিছুটা কমেছে। বেশিরভাগ বাজারে এতদিন ৮০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি হলেও আজ দাম নেমেছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায়। তবে খাসি বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই; কেজি ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা।

চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগির মাংস। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। গত সপ্তাহের ১৬০ টাকা কেজির মুরগি স্থানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। দাম বাড়তি সোনালি মুরগির। ৩০০ টাকা কেজির পাকিস্তানি সোনালি মুরগি এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়।

চালের বাজারেও নেই স্বস্তি। চড়া চালের দাম আবারও ঊর্ধ্বমুখী। মাস দেড়েক ধরে উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে চাল। মোটা চালের দামই এখন ৬০ টাকার বেশি। মাঝারি মানের এক ধরনের কিছু মিনিকেট ও নাজির রয়েছে, যেটা শুধু ৬৫-৭০ টাকায় পাওয়া যায়। এছাড়া বাকি সব চালের দাম সাধারণত ৭৫-৮৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আর খুব ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চালের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা ছুঁইছুঁই করছে।

বাজারে আসা অনেক ক্রেতাই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘একদিকে আয় বাড়েনি, অন্যদিকে নিত্যপণ্যের দামে আগুন। বাজার করতে গেলে লিস্ট ছোট করতে হয়।’

নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ভোক্তারা বলছেন, সবজির সঙ্গে চাল, পেঁয়াজ, ডিম ও মাংসের দাম বাড়ায় তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।


ফেসবুক গ্রুপে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র

অ্যাডমিন মেজর সাদিকের স্ত্রী
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফেসবুকে ‘ওডিবি-এম-১৭০১ (অপারেশন ঢাকা ব্লকেড)’ নামে একটি গোপন গ্রুপ খুলে সেখানে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশে কর্মরত সুমাইয়া তাহমিদ জাফরিনের বিরুদ্ধে। তিনি অবসরপ্রাপ্ত মেজর সাদিকুল হকের স্ত্রী। গ্রুপটির অন্যতম অ্যাডমিনও তিনি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের পাঠানো তথ্য গুগল শিটে এন্ট্রি দিতেন সুমাইয়া। তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের তথ্য সংগ্রহ, গোপন কোড তৈরি এবং অনলাইন মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে সদস্যদের সমন্বয়ের কাজ করতেন। এমনকি রাজধানীর পথে ঘুরে বেড়ানো টোকাইদেরও সংগ্রহ করে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের পরিকল্পনা হয় ওই গ্রুপের মাধ্যমে।

রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টার ছাড়াও বিভিন্ন রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট ও আবাসিক ফ্ল্যাটে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন সুমাইয়া ও তার স্বামী। এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত আরও বেশকিছু নাম উঠে এসেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অনুসন্ধানে। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গেরিলা প্রশিক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে মামলায় সুমাইয়াকে ৫ দিনের রিমান্ডের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ এ আদেশ দেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ৮ জুলাই রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলে ৩০০ থেকে ৪০০ জন অংশ নেন। তারা সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন।

বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারাদেশ থেকে লোকজন এসে ঢাকায় সমবেত হবেন। তারা ঢাকার শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করবেন।

এ ঘটনায় ১৩ জুলাই ভাটারা থানার এসআই জ্যোতির্ময় মণ্ডল সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। সুমাইয়াকে গত বুধবার গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ডিবির তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সুমাইয়া ইউনিলিভার বাংলাদেশে টেরিটরি ম্যানেজার হিসাবে টঙ্গীর গাজীপুর শাখায় কর্মরত।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুমাইয়া ও তার স্বামী মেজর সাদেকুল হক পূর্বাচলে সি-সেল নামে রিসোর্টে, কাঁটাবনে রেস্টুরেন্টে এবং মিরপুর ডিওএইচএসে একাধিকবার রাষ্ট্রবিরোধী গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। এছাড়া উত্তরায় ১২ নম্বর সেক্টর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের বিপরীতে প্রিয়াংকা সিটির দুই নম্বর গেটসংলগ্ন সুমাইয়ার একটি ফ্ল্যাটে একাধিকবার গোপন বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল—কীভাবে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডকে গতিশীল ও সমর্থকদের উৎসাহিত করা যায় এবং দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করা যায়। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে বৈঠকগুলোতে বিস্তর আলোচনা হয়। প্রশিক্ষণের উদ্দেশেও কয়েকবার একত্রিত হয়েছিলেন তারা।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, সুমাইয়াকে বুধবার মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি। রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের ঘটনায় সুমাইয়ার কী ধরণের ভূমিকা ছিল, তার সঙ্গে আরও কারা ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, সুমাইয়ার বিষয়ে বিধিবিধান মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।

গত বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ সুমাইয়ার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন তাকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. জেহাদ হোসেন। সুমাইয়ার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজিজুল হক দিদার ও কাইয়ুম হোসেন নয়ন রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তারা বলেন, বিদেশি সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থেকে সরকারকে উৎখাতের জন্য ভাটারায় একটি কনভেনশন হলে একত্রিত হয় তারা।

সুমাইয়া জাফরিনের আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহীন বলেন, বাদী মামলায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন এ ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত। মামলার এজাহারে সুমাইয়ার নাম নেই। ১১ জুলাই মামলা হয়েছে আর তাকে সন্দিগ্ধ আসামি হিসাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬ আগস্ট। কোনো আসামি ১৬৪, ১৬১ ধারায় জবানবন্দিতে এ নাম বলেননি। এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন সুমাইয়া।

তিনি বলেন, কেবি কনভেনশন হলে এএসপি পরিচয়ে অন্য কেউ ঢুকেছে। কিন্তু আমার নামে দোষ চাপানো হচ্ছে। সেখানে আগে থেকে সব কিছু অ্যারেঞ্জ করা ছিল। আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ওখানে গিয়েছিলাম। ওখানে কী ধরনের কাজ হচ্ছিল সে সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। কিছু জানার থাকলে আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমাকে রিমান্ডে দিয়েন না স্যার (বিচারক)। আমি কোনো অন্যায় করিনি।


banner close