আগামী ৩০ জানুয়ারি বিকেল ৩টায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হবে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে নতুন অধিবেশন আহ্বান করেছেন। এদিকে এ সংসদে নির্বাচিত এমপিদের শপথ সম্পন্ন হওয়ার পর থেকেই সংরক্ষিত নারী আসনে কারা জায়গা পাচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে উৎসুক মহলে তুমুল আলোচনা। আর সংরক্ষিত আসন যারা প্রত্যাশা করছেন তারা শুরু করেছেন গণভবন, দলীয় কার্যালয়সহ দলের সিনিয়র নেতা ও সংসদ সদস্যদের কাছে দৌড়ঝাঁপ।
ইসি সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান জানিয়েছেন, সংসদ অধিবেশন শুরু হওয়ার পরপরই সংরক্ষিত নারী আসনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এ ঘোষণা আসার আগে থেকেই গত কয়েক দিন ধরেই সারা দেশের বিভিন্ন স্তরের প্রথিতযশা নারীরাসহ আওয়ামী লীগের নেত্রীরা ধরনা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনসহ নানা স্থানে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলের মুখপাত্র সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কোনো তথ্য না জানালেও বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে সম্ভাব্য তালিকার অনেক নাম।
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন এখন ৫০টি। আওয়ামী লীগের বাইরে স্বতন্ত্র সদস্যরা ৬২টি আসনে জয়লাভ করায় ওই ৫০টি আসনের মধ্যে অন্তত ১০টি আসন যাবে স্বতন্ত্রদের কোটায়। আইন অনুযায়ী, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা জোট গঠন করে নারী এমপি নির্বাচিত করতে পারবেন। বিরোধী দলের স্বীকৃতি পাওয়ার পাশাপাশি সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন নিয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের জোটবদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের প্যানেলে কারা সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য মনোনীত হতে যাচ্ছেন সে বিষয়ে কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে নারী নেত্রীদের একাংশ স্বতন্ত্র সদস্যদের জোট থেকে মনোনয়ন পাওয়ার তদবিরে নেমেছেন।
সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে স্বতন্ত্র জোটের মনোনয়ন পেতে এরই মধ্যে জোর তদবিরে নেমেছেন আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পদধারী, ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী, আইনজীবী, উদ্যোক্তা, উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা, শিক্ষক, শোবিজ অঙ্গনের তারকা অভিনেত্রীসহ বিভিন্ন স্তরের নারী নেত্রীরা।
এর আগে দশম সংসদে ১৬ স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মিলে তিনজন সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য নির্বাচিত করেছিলেন। আর একাদশ সংসদে তিনজন সংসদ সদস্য অন্যদের সঙ্গে মিলে একজন নির্বাচিত করেন।
এ জন্য দলীয় ও স্বতন্ত্র জোট থেকে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। যদিও ৬২ স্বতন্ত্র সদস্যদের ৫৮ জনই আওয়ামী লীগের জেলা-উপজেলার পদধারী ব্যক্তি, তাই তারা স্বতন্ত্রই থেকে যাবেন নাকি দলে ফিরবেন তার সুরাহা এখনো হয়নি। স্বতন্ত্র সদস্যদের কোনো নেতাও এখনো ঠিক হয়নি। এ অবস্থায় গতকাল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে স্বতন্ত্র-নৌকা একসঙ্গে মিলেমিশে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় সংসদেও এই বার্তা বহাল থাকলে স্বতন্ত্র সদস্যরা যদি দলীয় এমপি হিসেবে যোগ দেন তাহলে স্বতন্ত্র কোটার ৯টি সংরক্ষিত আসন চলে যাবে আওয়ামী লীগের বলয়ে।
বাকি চার স্বতন্ত্র সদস্য আওয়ামী লীগ দলীয় না হওয়ায় তারা স্বতন্ত্র হিসেবে যদি বিবেচিত হন সে ক্ষেত্রে দশম ও একাদশ সংসদের মতো তারা যৌথভাবে নির্বাচন করতে পারবেন একটি সংরক্ষিত আসন। আর জাতীয় পার্টি ১১টি আসন পাওয়ায় তারা নির্বাচন করতে পারবেন সম্ভবত ৩টি সংরক্ষিত আসন। বাকি তিন দলের তিন সদস্য মিলে একজন সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচন করতে পারার কথা, অবশ্য তারা যদি এতে একমত থাকেন। তবে হিসাব এতটা সরল নাও হতে পারে। এ বিষয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
তবে আওয়ামী লীগ এককভাবে সংরক্ষিত আসনগুলোর অন্তত ৩৫টি যে পাচ্ছে তাতে কোনো সংশয় নেই। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। স্বতন্ত্ররা দলীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে যুক্ত হলে সংরক্ষিত ৫০ নারী আসনের ৪৫টি নির্বাচনের এখতিয়ার চলে যাবে শেখ হাসিনার কোর্টে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, সদ্যসমাপ্ত সংসদের নারী এমপিদের অনেককে বাদ দিয়ে আনা হতে পারে নতুন মুখ। বর্তমান নারী এমপিদের আমলনামা এখন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার হাতে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নারী নেত্রীরা গণভবনে যাওয়া-আসাও বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে কেউ কেউ জানান।
জানা গেছে, ১১টি আসনে বিজয়ী জাপার দুটি সংরক্ষিত আসনে দলের দুই কো-চেয়ারম্যান শেরীফা কাদের ও সালমা ইসলামের মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত। এর বাইরে ৪৮ জনের মনোনয়ন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করছে। তাই আওয়ামী লীগের সাবেক এমপিদের পাশাপাশি অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টায় আছেন। চলছে তাদের যোগাযোগ ও তদবির।
সাধারণ নির্বাচনের মতো এই নির্বাচনেও বেশ কিছু নতুন মুখ আসবে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তবে একাদশ সংসদের সংরক্ষিত নারীদের অনেকেই দ্বাদশ সংসদে থাকছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে চট্টগ্রাম ব্যুরো জানিয়েছে, সংরক্ষিত নারী আসনে জায়গা পেতে চট্টগ্রামের অনেক নেত্রীকেই দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা গেছে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারেন এমন সম্ভাব্যদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান কায়সারের কন্যা, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান, চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দীন, কাউন্সিলর জোবাইরা নার্গিস খান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপির মা অ্যাডভোকেট কামরুন্নাহার, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চেমন আরা তৈয়ব, সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুণ লুবনা, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বাসন্তী পালিত, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মোছলেম উদ্দীন আহমদের স্ত্রী শিরিন আহমেদ, ডা. আফসারুল আমীনের স্ত্রী কামরুন্নেছা, অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জুবায়দা সরোয়ার নিপা, সাবেক কাউন্সিলর রেখা আলম চৌধুরী এবং আঞ্জুমান আরা বেগম।
অন্যদিকে সংরক্ষিত আসনে আরও প্রার্থী হতে চান ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও শহীদ স ম আলাউদ্দিনের মেয়ে শিক্ষক লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সমাজকল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান জেসমিন প্রেমা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও একাদশ সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকারসহ অনেকেই।
এদিকে শোবিজের অনেক তারকাই সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও লবিং করছেন বলে জানা যায়। সেই নামের তালিকায় রয়েছেন নারী উদ্যোক্তা ও অভিনেত্রী তারানা হালিম, শমী কায়সার, অভিনেত্রী তানভীন সুইটি, তারিন আহমেদ, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, মাহিয়া মাহি ও শাহনূরসহ আরও কয়েকজন অভিনেত্রী। এর মধ্যে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি রাজশাহী-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেরে যান।
এ ছাড়া সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য থেকে যারা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করে হেরে গেছেন তাদের অনেকেই এখন সংরক্ষিত কোটায় ফের আসন ফিরে পেতে চান বলেও শোনা যাচ্ছে। এর বাইরে গত সংসদের সংরক্ষিত কোটায় নির্বাচিত প্রায় সবাই এবারও মনোনয়ন পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছেন।
আর জেলা কোটা থেকে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন প্রতিটি জেলার নারী নেত্রীরা।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলের সরকারি গেজেট প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত ৯ জানুয়ারি নির্বাচনে বিজয়ীদের গেজেট প্রকাশ হয়েছে। সেই হিসেবে আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে এ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিন। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে এক ভিডিও বার্তায় তারেক রহমান গতকাল রোববার এ শুভেচ্ছা জানান। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা গতকাল থেকে শুরু হয়েছে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ প্রতিটি গোষ্ঠী-গোত্র-সম্প্রদায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে যার যার ধর্ম পালন করবে, ধর্মীয় উৎসব পালন করছে, করবে— এটিই বাংলাদেশের আবহমানকালের ধর্মীয় সামাজিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির সৌন্দর্য।
তিনি বলেন, একজন বাংলাদেশি হিসেবে এর ভেতর দিয়েই পরিস্ফুটিত হয়ে ওঠে আমাদের বিভিন্ন ধর্ম-গোত্র-সম্প্রদায়ের মধ্যকার পারস্পরিক বন্ধুত্ব, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য এবং ভ্রাতৃত্ব। আমাদের রাষ্ট্র এবং সংবিধানে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী, সংশয়বাদী প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা বিধানের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পবিত্র হাদিসেও এ ব্যাপারে নির্দেশনা রয়েছে— ‘যে ব্যক্তি রাষ্ট্রের নিরাপত্তাপ্রাপ্ত অমুসলিমকে নির্যাতন করে, তার অধিকার খর্ব করে, তাকে সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ চাপিয়ে দেয় বা তাদের অসম্মতিতে ধন-সম্পদ হরণ করে নেয়; এ ধরনের জুলুমের বিরুদ্ধে আমাদের প্রিয় নবী তার উম্মতদেরকে সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, কেয়ামতের দিন আমিই সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়ব।’
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে অপর নাগরিকের নিরাপত্তা এবং সম্মান রক্ষায় যথাযথ ভূমিকা রাখবে এবং নৈতিক দায়িত্ব পালন করবে, এটিই স্বাভাবিক রীতি। তবে শারদীয় উৎসবকে ঘিরে ফ্যাসিবাদী শাসনামলের মতো কেউ যাতে কোনোরকম সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি কিংবা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার মতো কোনো অপচেষ্টা করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক এবং সজাগ থাকার জন্য আমি দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাই।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি আমার আহ্বান, আপনারা উৎসাহ উদ্দীপনা সহকারে নিশ্চিন্তে নিরাপদে সারাদেশে উৎসব আনন্দ উদযাপন করুন। সৌহার্দ্য সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিন। আমি এবং আমার দল বিএনপি বিশ্বাস করে— ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাবার অধিকার সবার।
তারেক রহমান বলেন, সবশেষে আমি আবারো আমার এবং আমাদের দল অর্থাৎ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের দল বিএনপির পক্ষ থেকে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানাই।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশ ও জাতি পুনর্গঠনে সহযোগিতা এবং সক্রিয় অবদান রাখার জন্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের (এনআরবি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ’ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের ফলে যে পরিবর্তনের স্বপ্ন আমরা দেখছি তা এগিয়ে নিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের নিজ নিজ সক্ষমতা অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
দেশ গঠনে সবার ভূমিকা থাকবে জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘দূরে গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে খেলা দেখব এমন হবে না। গ্যালারিতে বসে দেখার দিন শেষ। আমরা এখন নিজে খেলব।’
নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় শনিবার ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সফররত বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘের এই সফরে রাজনৈতিক নেতারা যোগ দেওয়ায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘উনারা এ সফরে যোগ দিতে সম্মত হয়েছে বলে আমাদের আস্থা অনেক বেড়ে গেল।’
প্রধান উপদেষ্টা প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি একেবারে নিচে নেমে গিয়েছিল। আপনাদের রেমিট্যান্সই তা বাঁচিয়েছে। অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পেছনে আপনাদের রেমিট্যান্সই মূল চালিকা শক্তি।’
প্রধান উপদেষ্টা জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী।
তরুণদের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত তরুণ জনশক্তি রয়েছে। বিদেশি কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তর করে এ মানবসম্পদ কাজে লাগাতে এবং বাংলাদেশকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
প্রবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা এখন বাংলাদেশের অংশ। আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিনিয়োগ ও ধারণা নিয়ে আসুন।’
তিনি আশ্বাস দেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে।
আঞ্চলিক অর্থনীতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নেপাল, ভুটান ও ভারতের সাত রাজ্য সমুদ্রবন্দরের অভাবে স্থলবেষ্টিত। যদি আমরা তাদের জন্য সমুদ্র উন্মুক্ত করি, সবাই উপকৃত হবে। সুযোগ নিশ্চিত হলে সবাই বাংলাদেশমুখী হবে।’
২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস জানান, ইতোমধ্যে সামুদ্রিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বহু অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য প্রস্তুত।’ পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরের গ্যাস সম্পদ অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন একটি প্রেজেন্টেশন দেন। এতে তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর গত ১৫ মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি তুলে ধরেন।
তিনি রেমিট্যান্সে ২১ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে তিনি বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকারি উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন।
আশিক চৌধুরী প্রবাসীদের অব্যাহত সহায়তা কামনা এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনে ভোটদানের পদ্ধতি বর্ণনা করেন।
এ আয়োজনে ‘ব্রিজিং বর্ডারস: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ডায়াস্পোরা এনগেজমেন্ট’ শীর্ষক একটি ইন্টারেক্টিভ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এটি সঞ্চালনা করেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলসহ তিনজন এতে অংশ নেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জন্য তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে আবেগঘন বক্তব্য রাখেন।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ‘শেপিং টুমোরো: দ্য ফিউচার অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক আরেকটি প্যানেল আলোচনা সঞ্চালনা করেন। এতে প্যানেলিস্ট হিসেবে এনসিপি নেতা তাসনিম জারা, বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির এবং জামায়াত নেতা নাকিবুর রহমান অংশ নেন।
এ আয়োজনে ‘শুভেচ্ছা’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপের উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা, যা প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা, নির্দেশনা এবং বিনিয়োগের সুযোগ প্রদানের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
সূত্র: বাসস
পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে ‘জুম্ম-ছাত্র জনতা’র ব্যানারে গত শনিবার ভোর পাঁচটা থেকে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। কর্মসূচির কারণে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল রোববার সকালে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভ করেন অবরোধকারীরা।
এদিকে এই ঘটনায় গুইমারায় গুলিতে তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। গুলিতে তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) আহসান হাবিব পলাশ।
তিনি বলেন, গুইমারায় গুলিতে তিনজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তাদের লাশ হাসপাতালে রয়েছে। তবে কার গুলিতে কীভাবে মারা গেছে, বিস্তারিত জানা যায়নি। তিনি আরও বলেন, গুলিতে তিনজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আরও কয়েকজন আহত হওয়ারও ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, এই ঘটনায় আহত হয়েছেন মেজরসহ ১৩ সেনা সদস্য, গুইমারা থানার ওসিসহ তিনজন পুলিশ সদস্য এবং আরও অনেকে।
খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ সাবের গণমাধ্যমকে বলেন, গুইমারা থেকে তিনজন পুরুষের লাশ এসেছে খাগড়াছড়ি জেলা হাসপাতালে। তাদের লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। সোমবার সকালে ময়নাতদন্ত করা হবে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে গুইমারা থেকে আনা আহত কয়েকজন চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে ওই কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওইদিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে ছয় দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এই ধর্ষণের প্রতিবাদে ‘জুম্ম-ছাত্র জনতা’র ব্যানারে অবরোধ চলাকালে রোববার দুপুরে গুইমারার একটি বাজারে আগুন দেওয়া হয়েছে। আগুনে বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান পুড়ে যায়। এ সময় বাজারের পাশে থাকা বসতঘরও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোববার দুপুর একটায় খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার রামেসু বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
বাজারটি চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে। বাজারে আগুন দেওয়ার ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে আগুনে বাজারের দোকানপাট জ্বলতে দেখা যায়। বাজারের দোকান মালিকদের অধিকাংশ পাহাড়ি বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার পর খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল আছে। এর আগে দুপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে অবরোধের সমর্থনকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলির শব্দ শোনা যায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মংসাজাই মারমা ও কংজরী মারমা জানান, অবরোধের সমর্থনে তারা খাদ্যগুদামের সামনের সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এলে তাদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের ওপর গুলি করেন বলে অভিযোগ করেন এই দুজন। তারা বলেন, গুলির পরপরই লোকজন ভয়ে দিগ্বিদিক পালিয়ে যান। এরপর ২০-২৫ জন লোক এসে রামেসু বাজার ও বসতবাড়ি লুটপাট করে এবং যাওয়ার সময় আগুন ধরিয়ে দেন। এসব লোকের সঙ্গে মুখোশ পরা লোকও ছিল। এ সময় দোকানপাট ও বসতবাড়ির সঙ্গে অনেকগুলো মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
খাগড়াছড়ির গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী জানান, অবরোধ নিয়ে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে ঝামেলা চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গেও ঝামেলা হয়। এখন পরিস্থিতি উত্তপ্ত।
এদিকে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনকে নিয়ে রোববার দুপুরে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখার উদ্দিন খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করে একটা পক্ষ ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি সব জাতিগোষ্ঠীকে মিলেমিশে থাকার আহ্বান জানান।
এদিকে খাগড়াছড়ি শহরে গতকাল সকাল থেকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে দেখা যায়। শহরের মোড়ে মোড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অবস্থান দেখা গেছে। বাজার ও বাজারের আশপাশে কোনো দোকানপাট খোলেনি। প্রয়োজনীয় কাজে যারা বের হচ্ছেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
হতাহতের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুঃখ প্রকাশ
খাগড়াছড়িতে দুষ্কৃতকারীদের হামলায় তিনজন পাহাড়ি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন মেজরসহ ১৩ সেনা সদস্য, গুইমারা থানার ওসিসহ তিনজন পুলিশ সদস্য এবং আরও অনেকে। এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গভীর দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।
গতকাল রোববার রাতে মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ফয়সল হাসান এই তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলায় দুষ্কৃতকারীদের হামলায় তিন জন পাহাড়ি নিহত এবং মেজরসহ ১৩ জন সেনাসদস্য, গুইমারা থানার ওসিসহ তিন জন পুলিশ সদস্য এবং আরো অনেকে আহত হন। এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গভীর দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ মর্মে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শিগগিরই তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
ততক্ষণ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণ করে শান্ত থাকার জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে যমুনা সেতুর বর্তমান রেললেনের সঠিক ব্যবহারের জন্য ডেক সংস্কার ও সংশ্লিষ্ট কাজের সম্ভাব্যতা যাচাই, বিশদ নকশা প্রণয়ন এবং ভবিষ্যতে একটি নতুন অ্যানেক্স সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন করার জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও আইইউটি-ডেভকন জেভি-এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আওতায় উভয় পক্ষের মধ্যে মোট ১৪,২৯,৮৫,৪০৫.৪১ (চৌদ্দ কোটি ঊনত্রিশ লক্ষ পঁচাশি হাজার চারশত পাঁচ টাকা একচল্লিশ পয়সা) টাকার আর্থিক চুক্তি সম্পাদিত হয়। উক্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ, সচিব, সেতু বিভাগ ও নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এর পক্ষে প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো: ফেরদাউস এবং আইইউটি-ডেভকন জেভি-এর পক্ষে অধ্যাপক ড. শাকিল মোহাম্মদ রিফাত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং আইইউটি-ডেভকন জেভি-এর প্রতিনিধিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তির আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি যমুনা সেতুর ডেকের ওপর অবস্থিত সকল কম্পোনেন্ট পুনর্বিন্যাস করে বর্তমান ৬.৩১৫মিটার প্রশস্তের দুই-লেন একমুখী ট্রাফিক-কে ৭.৩০মিটার প্রশস্তের দুই-লেন একমুখী ট্রাফিক-এ পরিণত করার কাজে কারিগরী পরামর্শ প্রদান করবে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সমীক্ষা প্রতিবেদন ও নকশা প্রণয়নসহ কাজটি বাস্তবায়নে ঠিকাদার নিয়োগের বিওকিউ, কারিগরী স্পেসিফিকেশনসহ দরপত্র দলিল প্রস্তুত ও নির্মাণ কাজ তদারকিতে সহায়তা গ্রহণ করা হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সচিব বলেন, দ্রুত চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে জনদুর্ভোগ লাঘবের বিষয়ে মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান-এর সদয় নির্দেশনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে সেতুর বর্তমান রেললেনের ডেক সংস্কার এবং সংশ্লিষ্ট আনুষঙ্গিক কাজের যথাযথ সম্ভাব্যতা যাচাই করে সেতুর গুরুত্বপূর্ণ অংশটিকে কার্যকর ও নিরাপদ ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হবে। এর ফলে সেতুর ওপর এবং সংযুক্ত এপ্রোচ রোডে বিশেষ করে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার সময় যে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়, তা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে সচিব আরও বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান ট্র্যাফিকের চাপ এবং পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে উন্নত ও দ্রুত যোগাযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যমুনা নদীর উপর বিদ্যমান সেতুর পাশে একটি নতুন অ্যানেক্স সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন করা হবে। এই যাচাইয়ে নতুন সেতুর সম্ভাব্য স্থান, কারিগরি চ্যালেঞ্জ, অর্থনৈতিক প্রভাব এবং পরিবেশগত দিকগুলি নিবিড়ভাবে বিশ্লেষণ করা হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, আনোয়ারায় ১ হাজার মেট্রিকটন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি খাদ্যগুদাম আছে আরও ৫শ মেট্রিকটন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজের অগ্রগতি হয়েছে। আশাকরি আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এ সময় তিনি প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন এবং নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে জোর দেন। রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় আনোয়ারার সদরে নির্মাধীণ ৫০০ মেট্রিকটন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন খাদ্য গুদাম পরিদর্শনে আসেন তিনি কথা বলেন।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে নতুন খাদ্য গুদাম ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় আনোয়ারা, সাতকানিয়া ও সন্দ্বীপে ৩টি প্রজেক্টে ১০কোটি ৭৪লাখ ৩৩হাজার ৩২টাকায় তিন উপজেলায় ৩টি খাদ্য গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের জুলাই মাসে।
পরিদর্শনে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম কায়সার আলী,
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ রিয়াদ কামাল রনি, আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার, আনোয়ারা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জান্নাতুল আকসা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন। ছবি: বাসস
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, এ বছর নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা নিয়ে কোথাও কোনো শঙ্কা নেই।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মোট ২ লাখ ৩ হাজার ৫৬৪ জন আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এছাড়া ৭০ হাজার পুলিশ, ১ লক্ষ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও ৪৩০ প্লাটুন বিজিবি'র সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
এছাড়াও প্রত্যেকটি পূজা মণ্ডপে মনিটরিং কমিটি করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পার্বত্য এলাকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতির সমাধানে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় থেকে অনেক স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’
এ সময় পূজাকে ঘিরে গুজব ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, কোর কমিটির বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, দুর্গাপূজার সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, খাগড়াছড়ির উদ্ভূত পরিস্থিতি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে ।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি একেবারে নিচে নেমে গিয়েছিল। আপনাদের রেমিট্যান্সই তা বাঁচিয়েছে। অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পেছনে আপনাদের রেমিট্যান্সই মূল চালিকা শক্তি।’
শনিবার ম্যানহাটনের নিউইয়র্ক মেরিয়ট মার্কুইসে (১৫৩৫ ব্রডওয়ে) অনুষ্ঠিত ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ আয়োজনে অংশ নেন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী।
তরুণদের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত তরুণ জনশক্তি রয়েছে। বিদেশি কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তর করে এ মানবসম্পদ কাজে লাগাতে এবং বাংলাদেশকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা এখন বাংলাদেশের অংশ। আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিনিয়োগ ও ধারণা নিয়ে আসুন।’
তিনি আশ্বাস দেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে।
আঞ্চলিক অর্থনীতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নেপাল, ভুটান ও ভারতের সাত রাজ্য সমুদ্রবন্দরের অভাবে স্থলবেষ্টিত। যদি আমরা তাদের জন্য সমুদ্র উন্মুক্ত করি, সবাই উপকৃত হবে। সুযোগ নিশ্চিত হলে সবাই বাংলাদেশমুখী হবে।’
২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস জানান, ইতোমধ্যে সামুদ্রিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বহু অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য প্রস্তুত।’
পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরের গ্যাস সম্পদ অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন। তিনি জানান, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গৃহীত পদক্ষেপের ফলে মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে। গত এক বছরে বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) দ্বিগুণ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আশিক চৌধুরী ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রবাসীদের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে ‘হারনেসিং ডায়াসপোরা অ্যাজ আ ন্যাশনাল অ্যাসেট’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়। এটি পরিচালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
আলোচনায় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের সম্পদ এবং জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তারা বড় ভূমিকা রেখেছেন।
আরেকটি প্যানেল সেশন পরিচালনা করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান। আলোচনায় বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির, জামায়াত নেতা মোহাম্মদ নকীবুর রহমান এবং এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ড. তাসনিম জারা বক্তব্য দেন।
তাসনিম জারা তার বক্তৃতায় নারী ও তরুণদের সম্পৃক্ত করে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ার ওপর জোর দেন, যেখানে সবার অংশগ্রহণ ও মতামত থাকবে। তিনি বলেন, ‘যখন সবাই একসঙ্গে কাজ করে, ইতিহাস বদলায়। আমরা একসঙ্গে ইতিহাস বদলাবো।’
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনও বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানটি নানা আয়োজনমুখর ছিল। এতে ছিল প্লেনারি সেশন, নতুন ডিজিটাল অ্যাপ উদ্বোধন এবং প্রবাসী সম্পৃক্ততা। এতে প্রবাসীরা তাদের অভিজ্ঞতা, মতামত ও উদ্বেগ ভাগ করে নেওয়ার পাশাপাশি নীতিনির্ধারক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরাসরি সংলাপের সুযোগ পান। অনুষ্ঠানে ‘শুভেচ্ছা অ্যাপ’ উদ্বোধন করা হয়।
‘এনআরবি কানেক্ট ডে’ ছিল এক বিশেষ সমাবেশ, যেখানে ব্যবসা, একাডেমিয়া, স্বাস্থ্যসেবা, প্রযুক্তি ও সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি একত্রিত হন। এতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনুসন্ধান, নাগরিক সেবা গ্রহণ এবং টেকসই সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রভাব সৃষ্টির মাধ্যমে প্রবাসীদের সম্পৃক্ততা জোরদারের সুযোগ তৈরি হয়।
শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৫ নির্বিঘ্নে সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল অধিদপ্তর ও সংস্থার প্রায় ৮০ হাজার সদস্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সারাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় একাধিক প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৫ সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল অধিদপ্তর ও সংস্থার প্রায় ৮০ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবী সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত থাকবেন।
উল্লেখযোগ্য প্রস্তুতি হিসেবে:
🔹 পূজা মণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: এবারে দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিটি পূজামণ্ডপে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে মন্ডপ ভিত্তিক পূজা বাস্তবায়ন কমিটির সাথে পূজা মন্ডপে উপস্থিত থেকে পূজা মন্ডপের শৃঙ্খলা রক্ষায় আগত দর্শনার্থীদের সহযোগিতা করবেন। পূজা মন্ডপে আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য বিভাগের প্রতিনিধিদের সাথে সমন্বিত সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নারী, শিশু ও বয়স্কদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
🔹 নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্ক: সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পূজামণ্ডপে মনিটরিং টিমের কার্যক্রমে সমন্বয় করে “সহায়তা ডেস্ক”স্থাপন করা হবে। এখানে নারী ও শিশুরা যে কোনো প্রয়োজনে সহায়তা পাবে। জরুরি প্রয়োজনে হটলাইন নম্বর-১০৯৮ এবং ১০৯ এর পাশাপাশি কন্ট্রোলরুমের টেলিফোন নম্বর ০১৮১৮২১১৭৬৩, ০১৯২০৯৫০১৫২,
০১৭৪৯৮১৯৪২২,
০১৭১১০৫৯৮০৭,
০১৯৫৮১৯৩২৪১ চালু থাকবে।
🔹 আর্থিক সহায়তা: সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে স্বল্প আয়ের হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজামণ্ডপসমূহে অনুদান প্রদান করা হয়েছে, যাতে তারা পূজা আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারে।
🔹জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম: নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা রোধে পূজাকে ঘিরে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালু করা হয়েছে।
🔹 অভিযোগ গ্রহণ ব্যবস্থা: যদি কোনো নারী বা শিশু পূজা চলাকালীন মণ্ডপে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় হয়রানির শিকার হন, সে জন্য অভিযোগ গ্রহণের বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এক প্রেরিত বিবৃতিতে বলেন, “ধর্মীয় উৎসবের আনন্দ সবাই মিলে ভাগ করে নেওয়ার অধিকার সকল নাগরিকের আছে। নারী ও শিশুর নিরাপত্তা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই আমাদের অগ্রাধিকার।”
উপদেষ্টা জানান, “সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সরকারের পক্ষ থেকে সকল সহায়তা অব্যাহত থাকবে। হিন্দু ধর্মাবলম্বী নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় সরকার সবসময় সচেষ্ট।”
এই বছর সারাদেশে প্রায় ৩৩ হাজার ৩৫৫টি পূজা মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে, যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার ১১৯টি বেশি। পূজা উদযাপন পরিষদ এই তথ্য জানিয়েছে, এবং ঢাকা মহানগরীতে এবার ২৫৮ টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
চীনের পরিচিত আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান টপপে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। আজ ২৭ সেপ্টেম্বর গুলশান-১ এ টপপের অফিসে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য সহজ, ঝামেলাহীন ও সুবিধাজনক মোবাইল কেনার সুযোগ করে দেবে।
টপপের মূল লক্ষ্য হলো সহজ পেমেন্ট সুবিধার মাধ্যমে বেশি মানুষের আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করা। তাদের কার্ড ছাড়াই ইএমআই (কিস্তি) সেবার মাধ্যমে গ্রাহকরা খুব সহজ কিস্তিতে মোবাইল ফোন কিনতে পারবেন। এতে ক্রেডিট কার্ডের দরকার হবে না এবং হঠাৎ বড় অঙ্কের টাকা দেওয়ার ঝামেলাও কমে যাবে। ফলে আধুনিক স্মার্টফোন আরও সহজলভ্য হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে টপপে, মোবাইল ব্র্যান্ড অপো, রিয়েলমি ও ওয়ানপ্লাসের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ঘোষণা দেয়। এতে গ্রাহকরা সহজ কিস্তিতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফোন কিনতে পারবেন এবং চাইলে নিয়মিত ডিভাইসও আপগ্রেড করতে পারবেন। বিশেষ করে তরুণ ও পেশাজীবীদের জন্য এটি নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারকে আরও সহজ করবে।
এ সময় টপপের সিইও চেনফেই বলেন –“আমরা ইতোমধ্যে ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি এবং আগামী কয়েক বছরে আরও ২,৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা আছে। আমাদের লক্ষ্য আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে ১৫ লাখের বেশি গ্রাহককে সেবা দেওয়া। শুধু মোবাইল ফাইন্যান্সিং নয়, ভবিষ্যতে আমরা আর্থিক সেবা, পেমেন্ট, সামাজিক দায়িত্ব ও দাতব্য কাজেও যুক্ত হবো।”
বাংলাদেশে টপপে কেবল মোবাইল কেনার পদ্ধতিই বদলাবে না; বরং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ডিজিটাল রূপান্তরেও ভূমিকা রাখবে। সহজ কিস্তিতে ফোন কেনা সম্ভব হলে আরও বেশি মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবে। এতে ডিজিটাল সেবার ব্যবহার বাড়বে এবং সংযুক্ত, প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ গড়ে উঠবে।
টপপের এই উদ্যোগ দেখায় যে তারা শুধু ব্যবসা নয়, বরং বাংলাদেশের টেক ইকোসিস্টেম ও গ্রাহকদের পরিবর্তিত চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে এগোতে চায়।
রাজধানীর আজিমপুরের দায়রাশরীফ এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের একটি বাসভবন ঘিরে রেখেছে যৌথবাহিনী। রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে বাসাটি ঘিরে রাখতে দেখা যায়।
সূত্র জানিয়েছে, ভবনটির আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিংয়ের একটি গোপন কক্ষ থেকে ছয়টি বিলাসবহুল গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভবনের ম্যানেজারকে আটক করা হয়েছে।
গুলশানারা মাসুদা টাওয়ার নামের ওই ভবনটিতে যেসব গাড়ি পাওয়া গেছে তার মধ্যে সংসদ সদস্যের লোগো সংবলিত একটি গাড়ি ছিল। বাড়িটির ম্যানেজার গাড়িগুলো সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
তবে তাৎক্ষণিক বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।
আসন্ন ত্রয়োদশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি অনেক এগিয়ে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেক কাজ সম্পন্ন করেছি। এরমধ্যে বিশাল একটা কাজ ভোটার তালিকা, তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শেষ করেছি। নারী ভোটার ব্যবধান কমিয়েছি।
নয়টি আইন আমরা সংশোধন করছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রস্তুতি নেওয়ার, অনেক কিছু এগিয়ে নিয়েছি।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচনী সংলাপে শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় সিইসি আরো বলেন, সংস্কার কমিশনের আলোচনায় অনেক কিছু হয়েছে।
আর যেটুকু গ্যাপ আছে তা আপনারা (সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা) আজ পূরণ করে দেবেন। আইটি সাপোর্ট পোস্টাল ব্যালট অনেক পরীক্ষা করার পরে আমরা তা হাতে নিয়েছি। ভোটে ১০ লাখ মানুষ দায়িত্বে নিয়োজিত থাকে। তারা ভোট দিতে পারেন না।
আমরা এবার সবার ভোটের ব্যবস্থা করব। যারা হাজতে আছে, তাদের ভোটের ব্যবস্থা করব। আমরা সুষ্ঠু, সুন্দর ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির সিনিয়র সচিবসহ সংস্থাটির অন্য কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবী প্রতিনিধির ১২ জনের মধ্যে রয়েছেন।
তারা হলেন— সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার রাশেদা কে চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাহমুদ হাসানউজ্জামান, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মো. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক আব্দুল ওয়াজেদ, বিজিএমইএ পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি, কবি মোহন রায়হান, পুলিশ রিফর্ম কমিশনের মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জারিফ রহমান, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও টিআইবি পরিচালক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান।
অক্টোবরে রাজনৈতিক দল, সাবাদিক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, পর্যবেক্ষক, নারীনেত্রী, জুলাই যোদ্ধাসহ সংশ্লিষ্ট অন্য সবার সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি।
সিলেটের গোপালগঞ্জে মব সৃষ্টি করে আব্দুল আহাদ নামে এক সাংবাদিককে ‘ডেভিল’ আখ্যা দিয়ে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে কাওসার নামে একজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করেছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর।
রবিবার নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে সাংবাদিক আহাদের লাঞ্ছিতের ঘটনাটি তুলে ধরেছেন।
‘মব সন্ত্রাসের শিকার সাংবাদিক আহাদ’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে আবু জাফর লিখেন, ‘এবার মব সন্ত্রাসীর কবলে সিলেটের গোলাপগঞ্জের সাংবাদিক আব্দুল আহাদ।
তিনি দীর্ঘদিনের সাংবাদিক। মব সৃষ্টি করে তাকে ডেভিল বলে দীর্ঘ রাস্তা দৌড়ে পালাতে বাধ্য করেছে। পরে উপায়ান্তর না পেয়ে খাল সাতরিয়ে প্রাণে বেঁচে আছেন। এই যদি হয় সমাজের মানুষের দ্বারা গণমাধ্যম ও সাংবাদিক নিপীড়নের চিত্র, তাহলে সাংবাদিকরা কোথায় যাবেন? বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে রাষ্ট্র, সমাজ, রাজনৈতিক দল এবং গণমানুষের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম।
দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে পেশাদারিত্বের সঙ্গে সাংবাদিকতা করা একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সু-সম্পর্ক থাকা অপরাধের কিছু নয়। আহাদও তাই করেছেন। এ জন্য কিভাবে তিনি ডেভিল হলেন?’
তিনি পোস্টে আরো উল্লেখ করেন, ‘সন্ত্রাসী যে ছেলেটা মব সৃষ্টি করেছে, তার নাম কাওসার। সে আব্দুল আহাদকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে অনেক জায়গা দৌড়ে নিয়ে গেছে।
তাকে নিয়ে নানা কটূক্তি করেছে পাশাপাশি ভিডিও করে ফেসবুকে ছড়িয়ে মব সৃষ্টিকারী তার প্রমাণ নিজেই দিয়েছে! মব সন্ত্রাসীর পশুতুল্য আক্রমণে আহাদের এমন অবস্থা হয়েছিল সে দৌড়ে গিয়ে ধানক্ষেত কিংবা পানিতে আশ্রয় নিতে চাইলেও পুলিশ তার চারিদিক ঘিরে ফেলেছে এই ভয় দেখিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আহত এবং লাঞ্ছিত করে।
ছবিটি মব সন্ত্রাসের শিকার সংবাদকর্মী আহাদের। তার অসহায়ত্বের ভিডিওগুলো প্রতিটি বিবেকবান মানুষের হৃদয়ে নাড়া দেবে। আহাদের অসহায়ত্ব যারা দেখেছেন তারা কি কেউ মব সৃষ্টিকারির পক্ষে যাবেন? আইন কারো হাতে তুলে নেওয়ার ক্ষমতা রাষ্ট্র কাউকে দেয় নাই।’
তিনি বলেন, ‘কে এই কাওসার? তাকে এই সাহস কে যুগিয়েছে? তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি করছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর।
আমরা আশা করছি, পুলিশ কাওসারের পরিচয় নিশ্চিত করে একজন সিনিয়র সাংবাদিককে কার স্বার্থে এ ধরনের হেনস্তার ভিডিও প্রচার করে সম্মানহানি ঘটালো, তা বের করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে আজ রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) শুরু হচ্ছে এ দুর্গাপূজা। সকাল থেকেই ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দেবী দুর্গাকে বরণ করে নিতে চলছে নানা প্রস্তুতি। ধূপধুনো, পঞ্চপ্রদীপ আর ঢাকের বাদ্যের সুরে আসনে অধিষ্ঠিত হবেন দেবী দুর্গা। বোধনের ঘট স্থাপনের মাধ্যমেই শুরু হবে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা।
পঞ্জিকা অনুযায়ী আজ রোববার সকাল ১১টা ১১ মিনিট পর্যন্ত ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল শনিবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সন্ধ্যায় দেবীর বোধন সম্পন্ন হয়।
এদিকে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি আর ঢাকের বাদ্যের সুরে দেবীকে বরণ করার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ভক্তরা।
পুরাণ অনুসারে, দক্ষিণায়নে নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য এ বোধনের মাধ্যমে বন্দনা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সে অনুসারে মণ্ডপে-মন্দিরে পঞ্চমীতে সায়ংকাল তথা সন্ধ্যায় বন্দনা পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
সাধারণত দেবী দুর্গার বোধন হয় ষষ্ঠীর সন্ধ্যায়। কিন্তু কিছু বছর যেমন এবার পঞ্জিকার নিয়মে দেখা যাচ্ছে ষষ্ঠী তিথি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী রাত থেকে শুরু হচ্ছে বা পরের দিন বেশিক্ষণ নেই। তাই শাস্ত্রমতে যদি ষষ্ঠীর উপযুক্ত সন্ধিকাল না পাওয়া যায়, তবে পঞ্চমীর দিন সন্ধ্যায়ই বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস করতে হয়। অর্থাৎ এবার ষষ্ঠী তিথি পুরোপুরি সন্ধ্যায় মিলছে না। তাই নিয়ম মেনে পঞ্চমীর সন্ধ্যায় (শনিবার) দেবী দুর্গার বোধন করা হয়। তিথির কারণে এমনটা হচ্ছে।
শনিবার বোধন শেষে আজ দুর্গা দেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠী বিহিত পূজা। জানা গেছে, ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ‘মহাসপ্তমী’, ‘মহাঅষ্টমী’ ও ‘মহানবমী’ পূজা শেষে ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ‘মহাদশমী’ পূজার মধ্য দিয়ে শেষ হবে আনুষ্ঠানিকতা। এরপর সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গোৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটবে। এবার দেবী দুর্গার আগমন হবে গজে অর্থাৎ হাতির পিঠে চড়ে। আর দশমীতে দেবী মর্ত্যলোক ছাড়বেন দোলা বা পালকিতে চড়ে।
ঢাকায় এবার গতবারের তুলনায় সাতটি বেড়ে মোট ২৫৯টি মন্দির-মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর সারা দেশে মোট মন্দির-মণ্ডপের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৫৫টি, যা গতবারের তুলনায় হাজারখানেকের বেশি।