রোববার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

মেলায় জনপ্রিয় লেখকদের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে

ছবি: দৈনিক বাংলা
মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ
প্রকাশিত
মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ
প্রকাশিত : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ২২:৫৭

অমর একুশে বইমেলার দিন যতই অতিবাহিত হচ্ছে ততই এর আকর্ষণ বেড়ে চলেছে। এবার নানাবিধ কারণে প্রাণের মেলা ভিন্নরূপ পেয়েছে। বিশেষ করে নগরে স্বস্তির যান মেট্রোরেলের কারণে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর পাঠক-দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। মেলায় প্রতিদিন শতাধিক নতুন বই আসার পাশাপাশি বেড়েছে দর্শনার্থীর সংখ্যা, সঙ্গে বাড়ছে বিক্রিও। দিন যত যাচ্ছে মেলার প্রাণ আরও বাড়ছে। আগামীকাল বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসে বইমেলা যেন অন্যরকম আমেজ নিয়ে আসবে। বাংলা একাডেমির বহেড়াতলা বটগাছে কোকিলের সুর বলে দিচ্ছে প্রকৃতিতে ফাগুন চলে এসেছে। ঠিক যেমনিভাবে ফাগুনের এই আগুন বইমেলায়ও চলে আসতে শুরু করেছে। সব সময় মেলা ফাগুনের দিনগুলো থেকেই মূলত জমে ওঠে। এবার আরও নবজাগরণে প্রাণের মেলা জমেছে। কেননা গত দুই বছরের ঢিমেতালে চলা বইমেলা এবার পেয়েছে পুরোপুরি জমে ওঠার চিত্র। মেলায় প্রতিবারের মতো এবারও পাঠকদের আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে উপন্যাস। এ ছাড়াও ঘুরেফিরে জনপ্রিয় লেখকদের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, পাঠকরা স্টলে স্টলে গিয়ে উপন্যাসের বই খুঁজে বেড়াচ্ছেন। প্রিয় লেখকের প্রকাশিত বই পেলেই তা সংগ্রহ করে নিজেদের ব্যাগে গুঁজে নিচ্ছেন বইপ্রেমীরা। এদিকে পূর্ববর্তী বছরগুলোর মতো এবারও হ‍ুমায়ূন আহমেদ, হাসান আজিজুল হক, আনিসুল হক, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইমদাদুল হক মিলন, সেলিনা হোসেন, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, আসিফ নজরুল, মুনতাসীর মামুন, মোশতাক আহমেদ, শাহাদুজ্জামান, হরিশংকর জলদাসসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় লেখকের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে মেলায় হ‍ুমায়ূন আহমেদের বই-ই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে প্রকাশনা সূত্রে জানা যায়। জনপ্রিয় এই লেখকের পুরাতন বইগুলো পাঠকরা এখনো কিনছেন। মেলায় প্রতিদিন হ‍ুমায়ূনপ্রেমীরা খুঁজতে খুঁজতে চলে যাচ্ছেন অন্যপ্রকাশে। এই প্রকাশনীতে কিংবদন্তি এই কথাসাহিত্যিকের লেখা উপন্যাস দেয়াল, মাতাল হাওয়া, নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, মধ্যাহ্ন অখণ্ড বেশি কিনছেন বলে অন্যপ্রকাশ সূত্রে জানা যায়।

সরেজমিন ঘুরে এবং বিভিন্ন স্টলের বিক্রয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারও মেলায় বেশি জনপ্রিয় লেখকদের গল্প-উপন্যাস বিক্রি হচ্ছে। নতুন বইয়ের সঙ্গে পুরাতন কালজয়ী বইও বিক্রিতে রয়েছে শীর্ষে।

তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ মুনালিসা জানান, এ বছর ৪৫টি নতুন বই প্রকাশ করেছে প্রকাশনীটি। নতুন বইয়ের সঙ্গে পুরাতন বইও বেশ বিক্রি হচ্ছে। তার মধ্যে হ‍ুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ হিমু, শ্রেষ্ঠ মিছির আলি ও কিশোর সমগ্র বই বিক্রিতে ওপরে রয়েছে।

কাকলী প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী হুমায়ন কবীর জানান, রকিব হাসানের গোয়েন্দা সিরিজ ও সায়েন্স ফিকশন চলছে বেশি। আর হ‍ুমায়ূন আহমেদের ভক্তরা তার বই সমগ্র তো সংগ্রহ করছেই।

অনন্যা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী আসিফ মাহমুদ বলেন, ইমদাদুল হক মিলনের চোর এসে গল্প করেছিল, অন্ধকারে নামতে পারেনি বই দুটোর বিক্রি তুলনামূলকভাবে বেশি। এ ছাড়াও তৌহিদুর রহমানের নিতু বলছি বইটির তৃতীয় মুদ্রণ চলছে। মুনতাসীর মামুনের ঢাকা সমগ্র বইটিও পাঠকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়াও মুনতাসীর মামুনের বঙ্গবন্ধুর জীবন ও লিবারেশন ওয়্যার বই দুটি এ বছর প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলো বিক্রিও হচ্ছে বেশ।

অন্বেষা প্রকাশনের বিক্রয়কর্মী রাফিজা নওশীন জানান, সুজন দেবনাথের হেমলকের নিয়ন্ত্রণ ও জাহিদ হাসানের দেশভাগ ১৯৪৭ বেশি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া হ‍ুমায়ূন আহমেদের তিন বিচিত্র, চন্দ্রসখা, মিসির আলীর ভুবন, তোমাদের জন্য ভালোবাসা, নীল হাতি, সবাই গেছে বনে উপন্যাসগুলো একটি আরেকটির চেয়ে কম বিক্রি হচ্ছে না। এ ছাড়াও সাদাত হোসেনের আগুনডানা মেয়ে বইটিও বেশ বিক্রি হচ্ছে।

অন্যপ্রকাশের স্টল ইনচার্জ তৌহিদুল ইসলাম জানান, উপন্যাস আর হ‍ুমায়ন আহমেদের বইয়ে পাঠকদের চাহিদা- দুই ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়াও রউফুল আলমের দেশ, সফল মন্ত্র, আহমদ ছফার যদ্যপি আমার গুরু, অর্ধেক নারী অর্ধেক ইশ্বরী বইগুলো বেশ চলছে। তবে ক্রেতাদের চাহিদা উপন্যাস।

বইমেলায় ঘুরতে আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শরমিলা জান্নাত বইগুলো ঘাটতে ঘাটতে বলেন, ‘হ‍ুমায়ূন আহমেদ দেশের সাহিত্য অঙ্গনে যে জায়গা সৃষ্টি করে গেছেন, তা এখনও কেউ পূরণ করতে পারেননি। পুরোনোরা তো বটেই, নতুন প্রজন্মের পাঠকও এসে এখনো হ‍ুমায়ূন আহমেদের বই খোঁজ করেন।’

মেলায় এখনো কালজয়ী সব সাহিত্যিকের লেখা বই কিনছেন বইপ্রেমীরা। এর মধ্যে রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শওকত আলী, বেগম রোকেয়া, মীর মশাররফ হোসেন, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, জীবনানন্দ দাশ, স্বর্ণকুমারী দেবী, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, জসীম উদ্দীন, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, আবু ইসহাক, আহমেদ ছফাসহ হুমায়ুন আজাদের লেখা সব বই। গুণী এই সাহিত্যিকদের লেখা বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস ও সমগ্র সংগ্রহে রাখতে মেলায় এসে বই কিনছেন বইপ্রেমীরা।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, এখনো পাঠকরা যেসব কালজয়ী বই মেলায় কিনছেন, তার মধ্যে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা, গোড়া, শওকত আলীর প্রদোষে প্রাকৃতজন, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের খোয়াবনামা, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবি, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর লালসালু, জহির রায়হানের হাজার বছর ধরে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী, সৈয়দ শামসুল হকের খেলারাম খেলে যা ও নিষিদ্ধ লোবান, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম আলো, সেই সময় এবং পূর্ব-পশ্চিম, হ‍ুমায়ূন আহমেদের নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার এবং জোৎস্না ও জননীর গল্প, হুমায়ুন আজাদের নারী ও ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল, আবু ইসহাকের সূর্য দীঘল বাড়ি, হাসান আজিজুল হকের আগুনপাখি, মানিক বন্দোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝি ও পুতুল নাচের ইতিকথা, ইমদাদুল হক মিলনের নূরজাহান, সৈয়দ মুজতবা আলীর দেশ বিদেশে, শওকত ওসমানের কৃতদাসের হাসি, আনিসুল হকের চার কিশোর গোয়েন্দা, শহীদুল্লাহ কায়সারের সারেং বৌ, সংশপ্তক, জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি, বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের আদর্শ হিন্দু হোটেল, মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা ফেরা, আহমদ ছফার যদ্যপি আমার গুরু ও শাহাদুজ্জামানের ক্রাচের কর্নেলসহ আরও কিছু বই। এই বইগুলো প্রকৃত বইপ্রেমীরা দেখলেই তা সংগ্রহে রাখার জন্য হলেও কিনে নিচ্ছেন বলে জানান মেলার বিভিন্ন স্টলের বিক্রয়কর্মীরা।

এখনো জমেনি লিটলম্যাগ চত্বর

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে অবস্থিত লিটল ম্যাগ চত্বর ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় নেই মেলার এ অংশে। যদিও বিক্রয় প্রতিনিধিরা বলছেন, মেলার অন্য অংশ থেকে বরাবরই এ অংশে ভিড় কম থাকে। সেখানকার স্টলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লোকজন এ চত্বরে কম যায়। তেমন বিক্রিও হয় না। বইমেলায় একসময় অন্যতম আকর্ষণ ছিল তারুণ্যের এ ‘লিটল ম্যাগ চত্বর’। মেলার এই অংশে নবীন লেখকদের প্রকাশিত বিভিন্ন ম্যাগাজিন পাঠক-দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরেন লেখক, প্রকাশক। কিন্তু সময়ের আবর্তে একসময়কার তুমুল জনপ্রিয় এই চত্বরে এখন কেবলই হাহাকার। বারবার এর স্থান পরিবর্তন হলেও হারানো গৌরবের দেখা পাচ্ছে না এই চত্বর।

জনপ্রিয় সব লেখক, প্রকাশনী ও পত্রিকার ভিড়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে সত্তরের দশকের গণজাগরণের চালিকাশক্তি হিসেবে পরিচিত লিটল ম্যাগাজিনগুলো। বিপ্লবী ধারার এসব ম্যাগাজিনের স্থান দখল করে নিয়েছে পত্রিকাগুলো। কিন্তু এতসব বাধা বিপত্তির মাঝেও এখনো টিকে আছে কিছু ম্যাগাজিন। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে বাংলা একাডেমির বহেড়াতলায় স্থান পাওয়া বইমেলার অন্যতম আকর্ষণ ‘লিটল ম্যাগ চত্বর’ কখনো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাঝখানে, কখনো উত্তর পাশে আবার কখনো কালি মন্দিরের পাশে স্থান বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। তবে এ বছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের উত্তরাংশের অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গায় স্থান হয়েছে লিটল ম্যাগের। ফলে বিগত দিনের ধারাবাহিক খরা তাতে লেগেই আছে।

আজকের বইমেলা :

আজকের মেলা বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে শেষ হয় রাত ৯টায়। ১২তম দিনে মেলায় নতুন বই এসেছে ১১৫টি। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : হেনা দাস শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জোবাইদা নাসরীন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ঝর্না রহমান এবং ফওজিয়া মোসলেম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার।

‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কথাসাহিত্যিক সালমা বাণী, কবি ফারহানা রহমান, গবেষক মিলটন কুমার দেব এবং কথাসাহিত্যিক ইকবাল খন্দকার।

আগামীকালের বইমেলা :

আগামীকাল ১৩তম দিন মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ শীর্ষক আলাচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপনা করবেন আহমদ মোস্তফা কামাল। আলাচনায় অংশগ্রহণ করবন হরিশংকর জলদাস এবং ফারজানা সিদ্দিকা। অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করবেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।


বায়তুল মোকাররমের সৌন্দর্যবর্ধনে ১৯৯ কোটি টাকার প্রকল্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সৌন্দর্যবর্ধন ও আধুনিকায়নে ১৯৯ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। রোববার (৭ ডিসেম্বর) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় যে উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়েছে, সেটি হলো বায়তুল মোকাররমের আধুনিকায়ন, সৌন্দর্যবর্ধন ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৯ কোটি টাকা। এরইমধ্যে এ অর্থায়নের সম্মতি পাওয়া গেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মসজিদের মূল কাঠামো ঠিক রেখে অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যবর্ধন ও আধুনিকায়ন করা হবে, আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা এবং বহিরাঙ্গণে আচ্ছাদিত করা হবে, অফিস ভবন ও মিনার নির্মাণসহ অন্য উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, আমরা যথা দ্রুত সম্ভব এ প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারব, ইনশাআল্লাহ। সরকার তথা ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় মসজিদটিতে ইবাদতের যথোপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সচেষ্ট রয়েছে। আমরা সবার সহযোগিতা চাই, পরামর্শ চাই। বিশেষ করে মসজিদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সবার দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করব।

উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা যত্রতত্র নোংরা-আবর্জনা ফেলব না, আমরা ডাস্টবিন ব্যবহার করব। মসজিদের ওযুখানা ও টয়লেট নিজে ব্যবহার করব এবং অন্যের ব্যবহার উপযোগী রাখতে যত্নশীল হব।


ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত কমিশন : সিইসি

সিইসি নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কমিশনারগণ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:৩৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে অবহিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

রোববার (০৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কমিশনারগণ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচন আয়োজনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়াও বৈঠকে যোগ দেন।

বৈঠকে সিইসি নাসির উদ্দিন জানান, নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রস্তুতি সঠিক ও সুন্দরভাবে এগোচ্ছে এবং ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন ও একই দিনে গণভোট আয়োজনের জন্য কমিশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

প্রস্তুতিকালে ইসিকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা।

নির্বাচনের প্রস্তুতিকালে সর্বাত্মক সহযোগিতা করায় তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে নাগরিকরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছেন, যা দেশে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি করেছে।

এ সময় নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে সরকার।’

তিনি বলেন, ‘জাতির জন্য প্রতীক্ষিত এই নির্বাচনে আপনারা (ইসি) চালকের আসনে আছেন। আমাদেরকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতেই হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতিকে আমরা ইতিহাসের সেরা নির্বাচন উপহার দেওয়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলছি।

সূত্র : বাসস


একাত্তরে এইদিনে সাতক্ষীরায় ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ ৭ ডিসেম্বর সাতক্ষীরাবাসীর জীবনে এক মহিমান্বিত দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে সাতক্ষীরা সম্পূর্ণ মুক্ত ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, অসংখ্য ত্যাগ, মুক্তিযোদ্ধার আত্মোৎসর্গ এবং সাহসিকতার ফলেই অর্জিত হয় এই গৌরবময় বিজয়।

১৯৭১ সালের এই দিনে সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা থ্রি নট থ্রি আর এসএলআরের ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে সাতক্ষীরা শহরে প্রবেশ করেন। ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা।

৯নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই সাতক্ষীরা ছিল প্রতিরোধ সংগ্রামের প্রধান ক্ষেত্র। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদররা এ অঞ্চলে ভয়াবহ নির্যাতন, লুটপাট ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে প্রতিটি আক্রমণের জবাব দেন। সংগঠিত প্রতিরোধের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকা টাউনশ্রীপুর, ভোমরা, সাতক্ষীরা সদর শত্রুমুক্ত হতে থাকে।

১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা সমন্বিত আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে সাতক্ষীরা জেলার নিয়ন্ত্রণ নেন। এদিন সাতক্ষীরার আকাশে উড়েছিল স্বাধীন বাংলার পতাকা। মানুষের মুখে ফুটে ওঠে আনন্দের উচ্ছ্বাস-হানাদারমুক্ত স্বভূমিতে ফিরে আসার উষ্ণতার অনুভূতি।

সাতক্ষীরাকে মুক্ত করতে শহীদ নাজমুল, শহীদ কাজলদের মতো যারা আত্মোৎসর্গ করেছেন, তারা জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয়। তাদের মহান ত্যাগের বিনিময়েই আজকের এই স্বাধীন মাটি, স্বাধীন দেশ।

মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান জানান, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য সাতক্ষীরা ট্রেজারি থেকে অস্ত্র লুট আর ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে অলঙ্কার ও টাকা-পয়সা লুটের মধ্য দিয়ে শুরু মুক্তির সংগ্রাম। অষ্টম ও নবম সেক্টরের অধীনে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ট্রেনিং শেষে ২৯ এপ্রিল সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে প্রথম সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয়। এ সময় পাকসেনাদের ২ শতাধিক সৈন্য নিহত হয়। ১৭ ঘণ্টাব্যাপী এ যুদ্ধে শহীদ হন মাত্র ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা। আহত হন ২ জন। এরপর থেমে থেমে চলতে থাকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্ত হামলা। এসব যুদ্ধের মধ্যে ভোমরার যুদ্ধ, টাউনশ্রীপুর যুদ্ধ, বৈকারী যুদ্ধ, খানজিয়া যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। এ সব যুদ্ধে শহীদ হন সাতক্ষীরার ৩৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে রাস্তায় নেমে আসেন সাতক্ষীরার মুক্তিপাগল আপামর জনতা।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাতক্ষীরা ইউনিটের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সম শহিদুল ইসলাম জানান, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ সাতক্ষীরা শহরে পাকিস্তানবিরোধী মিছিলে রাজাকাররা চাপড়া লজের সামনে গুলি করে হত্যা করে শহীদ আব্দুর রাজ্জাককে। আর সেখান থেকে শুরু হয় সাতক্ষীরার দামাল ছেলেদের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া। ২৯ এপ্রিল সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে প্রথম সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা ওয়্যার হাউস উড়িয়ে দেন। এতে ব্যাপক ভীত-সন্ত্রস্ত হয় পাকসেনারা। রাতের আঁধারে বেড়ে যায় গুপ্ত হামলা। পিছু হটতে শুরু করে পাকসেনারা। ৬ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে বাঁকাল, কদমতলা ও বিনেরপোতা ব্রিজ উড়িয়ে দিয়ে পাকবাহিনী সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর জয়ের উন্মাদনায় মেতে ওঠেন সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা।


রায়েরবাজার থেকে ১১৪ জুলাই শহীদের মরদেহ উত্তোলন শুরু

আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪:৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণকারী ১১৪ জনের পরিচয় শনাক্ত করতে, রায়েরবাজার কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করা শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ এ তথ্য জানান।

রবিবার সকাল থেকে মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু করেছে সংস্থাটি। মরদেহগুলো তোলার পর ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা নিয়ে আবার যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাফন করা হবে।

ছিবগাত উল্লাহ বলেন, ‘এই কবরস্থানে যারা নাম-পরিচয়হীন অবস্থায় শুয়ে আছেন, তাদের পরিচয় তখন যাচাই-বাছাই করা হয়নি। তাদের পরিচয় উদঘাটন করা জাতির প্রতি আমাদের একটি দায়িত্ব। আজ সেই মহান কাজের সূচনা হলো।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার (ওএইচসিএইচআর) মাধ্যমে আর্জেন্টিনা থেকে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুইস ফন্ডিব্রাইডার ঢাকায় এসে পুরো কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। এ ব্যাপারে অজ্ঞাত শহীদদের পরিবার আবেদন করেছে। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে এসব কাজ পরিচালিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করে কবরস্থান থেকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য লাশ উত্তোলন করা হচ্ছে।’

সিআইডি প্রধান বলেন, ‘লাশ শনাক্তের জন্য ইতিমধ্যে ১০ জন আবেদন করেছেন। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এখানে শহীদের সংখ্যা ১১৪ জনের বেশি। প্রকৃত সংখ্যা লাশ উত্তোলনের পর জানা যাবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘লাশগুলোর পোস্টমর্টেম করা হবে এবং ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পরে ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করে ধর্মীয় সম্মান বজায় রেখে পুনঃদাফন করা হবে।’

মো. ছিবগাত উল্লাহ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিচয় শনাক্ত হলে, পরিবার চাইলে লাশ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ডিএনএ সংগ্রহের পর, যে কেউ আবেদন করলে সহজেই শনাক্ত করা যাবে। সিআইডির হটলাইন নম্বরগুলো জানিয়ে দেওয়া হবে, যাতে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারেন।’

গত ৪ আগস্ট মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহিদুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ১১৪টি মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে নিহত অজ্ঞাত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্তের জন্যই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত ১১৪ জন শহিদকে অজ্ঞাত পরিচয়ে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়।


সেন্টমার্টিন থেকে অপসারণ ১৮৫০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য

কেওক্রাডং বাংলাদেশে’র দুইদিনের পরিচ্ছন্নতা অভিযান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলঘেঁষা দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত রাখতে দুই দিনব্যাপী ব্যাপক পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পরিচালনা করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডং বাংলাদেশ। দ্বীপের অলিগলি, সৈকত ও জনসমাগম এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৮৫০ কেজি অপচনশীল বর্জ্য। সংগৃহীত এসব বর্জ্য নৌপথে এনে পরে টেকনাফে পরিবেশবান্ধবভাবে অপসারণ করা হয়।

জানা যায়, শুক্রবার শুরু হয়ে শনিবার বিকেলে শেষ হওয়া এ অভিযানে স্থানীয় বাসিন্দা, বিভিন্ন পেশার মানুষ ও সেন্ট মার্টিনের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মোট পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক অংশ নেন। এই কর্মসূচির সহযোগিতায় ছিল ইউনিলিভার বাংলাদেশ।

কর্মসূচির সমন্বয়কারী মুনতাসির মামুন বলেন, দ্বীপের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা প্লাস্টিক বোতল, পলিথিন, প্যাকেটসহ নানা ধরনের বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তার ভাষায়, “সেন্ট মার্টিন ছোট একটি দ্বীপ। এখানে প্রতিদিন জমতে থাকা প্লাস্টিক যদি মূল ভূখণ্ডে নিয়ে না যাওয়া হয়, তবে তা একসময় সমুদ্রের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি করবে। আমাদের প্রচেষ্টা ছিল সেই ক্ষতির পরিমাণ যতটা সম্ভব কমানো।”

তিনি আরও বলেন, পর্যটনের সম্ভাবনাময় দ্বীপটিতে সারা বছর পর্যটক প্রবেশের সুযোগ রাখা যেতে পারে; তবে সেই সংখ্যা অবশ্যই নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত। এতে পরিবেশের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে না।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছৈয়দ আলম কেওক্রাডং বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “প্রায় ১৫ বছর ধরে তারা দ্বীপে পরিচ্ছন্নতার কাজ করে যাচ্ছে। স্থানীয় জনগণ ও পর্যটক সবাই সচেতন হলে সেন্ট মার্টিনকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।”

একই মত প্রকাশ করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম। তিনি জানান, পর্যটন মৌসুমে হাজারো ভ্রমণপিপাসু এখানে আসেন। তাদের রেখে যাওয়া বর্জ্যই দ্বীপের পরিবেশগত ক্ষতির বড় কারণ। “এ ধরনের উদ্যোগ নিয়মিত হলে প্রবাল দ্বীপের সৌন্দর্য আগের মতোই অক্ষুণ্ণ থাকবে,” বলেন তিনি।

পরিচ্ছন্নতা অভিযানের আয়োজকরা জানান, এর আগেও তারা দ্বীপে একাধিকবার এমন কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। ভবিষ্যতেও পরিবেশ রক্ষায় এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।


সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বাজারে পেয়াজের দাম সহনীয় রাখতে আগামীকাল রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে সীমিত পরিসরে পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমোদন (আইপি) দিয়েছে সরকার।

এতে প্রতিদিন ৫০টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রত্যেকটি আইপিতে সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে ৭ ডিসেম্বর থেকে সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি প্রদান করা হবে। প্রতিদিন ৫০টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রত্যেকটি আইপিতে সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে।

কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, ১ আগস্ট থেকে অদ্যাবধি যেসব আমদানিকারক রপ্তানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, কেবল তারাই আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন।

এ ছাড়া একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন বলেও জানানো হয়।

তাতে আরো জানানো হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।


খালেদা জিয়ার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ফ্লাইটকে ‘ভিভিআইপি’ অনুমোদন সরকারের

আপডেটেড ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:২২
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার জন্য নির্ধারিত এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ফ্লাইটকে ‘ভিভিআইপি’ হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও ফ্লাইটের ল্যান্ডিং ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ।

তিনি জানান, বেগম খালেদা জিয়াকে নিতে ৯ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছাবে এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকা ত্যাগ করবে। ভিভিআইপি মুভমেন্ট বিবেচনায় রেখে ল্যান্ডিং থেকে টেকঅফ পর্যন্ত সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও অপারেশনাল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

রাগীব সামাদ বলেন, “ফ্লাইটের প্রয়োজনীয় রুট ও অবতরণের সময় নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব সংশ্লিষ্ট ইউনিটকে সক্রিয় করে দেওয়া হবে। যেন কোনো ধরনের বিঘ্ন ছাড়াই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের চলাচল সম্পন্ন করা যায়।”

এর আগে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত জানুয়ারিতে লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে প্রথমে হাসপাতালে, পরে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা নেন। প্রায় চার মাস পর গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় গত ২৩ নভেম্বর দিবাগত রাত থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।


জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আগামী ৭ ডিসেম্বর (রবিবার)।

শহীদদের ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) নমুনা সংগ্রহে রবিবার থেকে কাজ শুরু করবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার লুইস ফন্ডেব্রিডার এবং সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই কাজ শুরু হবে।

এর আগে গত ২ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে অজ্ঞাত শহীদদের কবর পরিদর্শন করেন সিআইডির কর্মকর্তরা।

গত ৪ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদনটি করেন মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম।

আবেদনে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ জীবন দেন।

‎সিআইডির ফরেনসিক ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জুলাই আন্দোলনে অজ্ঞাত শহীদদের মরদেহ উদ্ধারে কবরস্থান এলাকায় তাবু স্থাপন করা হয়েছে। সেখানেই মরদেহ উত্তোলন করার পর প্রক্রিয়াগত সব কাজ করা হবে।

এই অস্থায়ী তাবুতে ময়নাতদন্ত করা হবে। এরপর আবার মরদেহ যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাফন করা হবে।


খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে উঠবেন, গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান

আপডেটেড ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৮:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা আশাবাদী তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে জানান বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, এর আগে এর চেয়েও প্রতিকূল অবস্থায় খালেদা জিয়া সুস্থ হয়েছেন। ডা. জাহিদ দেশবাসীকে আহবান জানিয়ে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গুজবে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ব্রিফিংকালে তিনি একথা বলেন।

ডা. জাহিদ জানান, বোর্ডের পরামর্শক্রমে খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু কাতার সরকার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর যে উদ্যোগ নিয়েছিল সেটা কারিগরি ত্রুটিতে আসতে পারেনি। পরবর্তীতে অন্য ব্যবস্থা নিলেও বোর্ডের সদস্যরা জরুরিভাবে সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওই মুহূর্তে ফ্লাই করা সঠিক হবে না। সেজন্য বিদেশ নেওয়ার বিষয়টি বিলম্বিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়তো শারীরিক অবস্থা বলে দেবে উনাকে কখন ও কবে নেওয়া যাবে।

তিনি বলেন, আমাদের মেডিকেল অ্যাম্বুলেন্স তৈরি আছে। দেশনেত্রীর চিকিৎসা ও শারীরিক অবস্থা ইউকে, আমেরিকা, চীন থেকে তার ফিজিক্যাল কন্ডিশনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। দেশের সব মানুষ তার সুস্থতা চায়। তার স্বাস্থ্যে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

তিনি আরও বলেন, বেগম জিয়ার চিকিৎসায় তারেক রহমানও সার্বক্ষণিক সম্পৃক্ত আছেন। তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এখন ঢাকায় এসে সার্বক্ষণিক দেখভাল করছেন। তিনি নিজেও মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যদের পরামর্শ নিচ্ছেন। এ অবস্থার মধ্যে বোর্ডের সদস্যরা দৃঢতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। খালেদা জিয়া ফ্লাই করার অবস্থায় পৌঁছালেই চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হবে।


তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে দেশের পোশাক শিল্প

* ইউরোপের বাজার দখলে চীন, ভারত * জার্মানিসহ ইউরোপের ১২ দেশে কমেছে রপ্তানি * চাপে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্কিন শুল্ক চাপে পোশাক রপ্তানিতে ইউরোপের বাজারের দিকে ঝুঁকছে চীন, ভারতসহ বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলো। এতে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়ছে দেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা। সুযোগ বুঝে বিদেশি ক্রেতারা দিচ্ছেন দাম কমিয়ে। চলতি বছর ইউরোপের বড় ক্রেতা জার্মানিসহ ইউরোপের ১২টি দেশে কমেছে রপ্তানি। এতে বেশি বিপাকে পড়েছে ছোট ও মাঝারি পোশাক কারখানা।

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দরকষাকষির পর বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে শুল্ক হার ২০ শতাংশে নামলে শীর্ষ রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে কিছুটা স্বস্তি ফিরে। বাড়তি শুল্ক ও মজুরির কারণে চীনের অনেক ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে আসবে এমন প্রত্যাশাই ছিল পোশাক শিল্প মালিকদের। তবে মার্কিন অর্থনীতির মন্দাভাবের কারণে সে আশা পূরণ হয়নি।

অধিকাংশ আমদানিকারক ও ক্রেতা বাড়তি শুল্কের ভার নিতে রাজি না হওয়ায় সংকটে আছেন রপ্তানিকারককরা। ত্রিপক্ষীয় দরকষাকষি নিয়ে টানাপড়নে গত তিন মাসে ধারাবাহিকভাবে কমেছে ক্রয়াদেশ। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। নির্বাচনকে ঘিরে সম্ভাব্য রাজনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কায় অর্ডার দিতে ভরসা পাচ্ছে না ক্রেতারা।

চট্টগ্রামের ক্লিফটন গ্রুপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘মনে করেছিলাম বাংলাদেশ একটি ভালো পর্যায়ে আছে ইন্ডিয়া এবং চায়নার তুলনায়। চাহিদা কম থাকায় আমাদের অর্ডার কম হচ্ছে। আমাদের খুব হার্ড টাইম যাচ্ছে।’

বিজিএমইএ পরিচালক সাইফুল্লাহ মনসুর বলেন, ‘রিটেইলাররা বলতেছে আমি কোনোভাবেই এটি ক্রেতাদের ওপর ইম্পজ করতে পারব না। ২০ শতাংশের অ্যাডজাস্টমেন্ট নিয়েই বড় শঙ্কা আমাদের। আর দ্বিতীয় বিষয়টি হলো বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা।’

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ৪৮ শতাংশ রপ্তানির হয় ইউরোপে। এ মহাদেশে এককভাবে সবচেয়ে বড় ক্রেতা জার্মানি। এছাড়া ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, সুইডেনসহ ১২টি দেশে রপ্তানি কমেছে তিন থেকে সবোর্চ্চ ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত। মার্কিন শুল্ক চাপের কারণে প্রতিযোগী অধিকাংশ দেশ ইউরোপে ঝুঁকে পড়ায় সেখানে মূল্য নিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হচ্ছে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের। এ অবস্থায় কোন কোন দেশ কম মূল্য ক্রয়াদেশ নিলেও বন্দরের ট্যারিফসহ বিভিন্ন খাতে খরচ বাড়ায় বিপাকে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা।

বিজিএমইএ সহ-সভাপতি রফিক চৌধুরী বলেন, ‘আগে যারা ইউরোপ মার্কেটে কাজ করত, ওদের সঙ্গে আমাদের এটি প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। কার থেকে কে কম প্রাইজে অর্ডার নিবে। এতে আমরা বিপদে পড়ে যাচ্ছি।’

বিজিএমইএ পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘ইন্ডিয়া মার্কেট যখন ইউরোপে যাচ্ছে তখন আমরা ইউরোপের অর্ডার কম পাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমাদের টেরিফ কমেনি, লোকাল প্রাইজ বেড়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে কস্টিং এর দিক দিয়ে অন্যান্য কান্ট্রির সঙ্গে আমরা পারছি না। কারণ আমাদের কম্পিটিটর হলো বাহিরের কান্ট্রি।’

অর্ডার না থাকায় আর্থিক সংকটে অনেক কারখানা বেতন দিতে না পারলেও ব্যাংক থেকে সহযোগিতা পাচ্ছে না। সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকারের কাছ থেকে নীতি সহায়তা ও স্বল্প সুদে ঋণ চান উদ্যোক্তারা।

বিজিএমই সহ-সভাপতি রফিক চৌধুরী বলেন, ‘খারাপ সময় যাচ্ছে। বেতন দিতে পারছে না সঠিকভাবে। ব্যাংকগুলোও আর সেভাবে এগিয়ে আসছে না সাপোর্ট দিতে। ৫টি ব্যাংককে একসঙ্গে মার্জ করাতে কোনো ফান্ডই পাওয়া যাচ্ছে না।’

বিজিএমইএ পরিচালক সাইফুল্লাহ মনসুর বলেন, ‘ব্যাংকের যে সহযোগিতা এক্সপোর্টারদের দেয়া দরকার আমরা নতুন কিছুই চাচ্ছি না। পৃথিবীতে এক্সপোর্টদের যেভাবে নার্সিং করে বাংলাদেশে সেভাবে করে না। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের যদি সহায়তা করা হয় তাহলে আমাদের আরও ভালো হবে।’

২০২৫-২৬ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলার। অক্টোবর পর্যন্ত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি হয়েছে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার।


খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিলেই ঢাকায় আসবে কাতারের রয়েল অ্যাম্বুলেন্স

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড সবুজ সংকেত দিলেই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে কাতারের রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। দলের পক্ষ থেকে কাতারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনিই এই বিষয়ে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন।

এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ম্যডামের মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তক্রমে কাতারের রয়েল অ্যাম্বুলেন্স বাংলাদেশ আসবে। তারা এখন সেইভাবে প্রস্তুত আছেন। মেডিকেল বোর্ড যখনই সিদ্ধান্ত জানাবে তখনই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবে এবং বেগম জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নিয়ে যাবে। সবকিছুই কাতার কর্তৃপক্ষ অ্যারেজমন্ট করেছে।’

জার্মানি থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আনার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নই, কাতার কর্তৃপক্ষই জার্মানি থেকে একটি অত্যাধুনিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের অ্যারেজমেন্ট করে দিচ্ছে।

এনামুল হক জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য রয়েল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়নে সবকিছু করা হচ্ছে। এখানে আমাদের কিছু নেই।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শারীরিক অবস্থা আগের মতই আছে। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে বেগম খালেদা জিয়াকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

একাধিক চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন এখনও ফ্লাই করার সক্ষমতা অর্জন করেননি। সেজন্য লন্ডন যাত্রা বিলম্ব হচ্ছে।

তারা আরও জানান, গত দু’দিনে মেডিকেল বোর্ড কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। সেগুলোর প্রতিবেদনও তারা পর্যালোচনা করছেন। গতকাল (শুক্রবার) দু’দফা মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক হয়। প্রতিদিনই বোর্ডের সভায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার নিয়মিত প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চকিৎসাধীন আছেন বেগম খালেদা জিয়া।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড তাঁর চিকিৎসা দিচ্ছে। তারেক রহমানের সহধর্মিনী ডা. জুবাইদা রহমানও সেই বোর্ডের সদস্য।

বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নিয়ে যেতে শুক্রবার ডা. জুবাইদা ঢাকায় এসে পৌঁছান।সূত্র : বাসস


গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে

আপডেটেড ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, রাষ্ট্র ও সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের নিরলস চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দেওয়া বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, অবিস্মরণীয় একটি দিন ৬ ডিসেম্বর। ১৯৯০ সালের এ দিনে রক্তাক্ত পিচ্ছিল পথে অবসান হয়েছিল স্বৈরশাসনের। এরশাদ বিরাশির ২৪ মার্চ পেশাগত বিশ্বস্ততা ও শপথ ভেঙে অস্ত্রের মুখে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে গণতন্ত্র হত্যা করে জারি করেছিলেন অসাংবিধানিক শাসন; যে সাংবিধানিক রাজনীতি ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা, যার সূচনা করেছিলেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।

তারেক রহমান বলেন, একনায়ক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেন। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ ৯ বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে আপসহীন নেত্রী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। গড়ে তোলেন এক দুর্বার গণআন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় নব্বইয়ের ৬ ডিসেম্বর এই দিনে ছাত্র-জনতার মিলিত শক্তিতে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিল গণতন্ত্র।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, অর্জিত গণতন্ত্রের চেতনায় আবারও ছাত্র-জনতা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক হিংস্র ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করে। ঐতিহাসিকভাবেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ছিল গণতন্ত্রের ভয়ংকর শত্রু। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দুঃশাসনের অবসানের পর আবারও গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ পুনরুজ্জীবন এবং রাষ্ট্র ও সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের নিরলস সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, শেখ হাসিনার দুঃশাসনে ‘গণতন্ত্রের মা’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর জেল-জুলুমসহ নানামাত্রিক নিপীড়ন নামিয়ে আনা হয়েছিল। অবিরাম নির্যাতনের কষাঘাতে অসুস্থ দেশনেত্রীর জীবন এখন চরম সংকটে। আল্লাহর কাছে তার সুস্থতা কামনা করছি। এছাড়া দেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির লাখ লাখ নেতাকর্মীকে সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছিল। সারাদেশ অবরুদ্ধ করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, আজকের এ দিনে আমি ‘৮২ থেকে ৯০’ পর্যন্ত রক্তস্নাত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এ স্মরণীয় দিনে আমি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রের হেফাজতকারী দেশবাসীকে। গণতন্ত্রবিরোধী পরাজিত শক্তির যাতে আর পুনরুত্থান না ঘটে, সেজন্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই।


খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে জার্মানি থেকে আসছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

আপডেটেড ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:৩৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিয়ে যেতে জার্মানি থেকে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় আসছে। কাতার সরকারের ব্যবস্থাপনায় জার্মানি থেকে আনা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে শ‌নিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে খালেদা জিয়াকে নিয়ে চিকিৎসার জন‌্য লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকায় কাতার দূতাবাসের জনসংযোগ কর্মকর্তা আসাদুর রহমান আসাদ বলেন, কাতার সরকারের ব্যবস্থাপনায় জার্মানি থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় আসছে। শনিবার বিকেলে ওই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, কাতার রাজপরিবারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটিতে কারিগরি ত্রুটি থাকায় কাতারের আমির তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অন্য একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছেন, যা শনিবার বিকেল ৫টায় ঢাকায় অবতরণ করবে।

তিনি দাবি করেন, এখন যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আসছে, সেটিও কাতারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কিন্তু জার্মান কোম্পানির তৈরি। কাতার জার্মানি থেকে কোনো এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে না।

ঢাকার এক‌টি কূট‌নৈ‌তিক সূত্র জানায়, জার্মান প্রাইভেট এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কোম্পানি ‘এফএআই রেন্ট এ জেট জিএমবিএইচ’-এর সিএল৬০ (বোম্বার্ডিয়ার চ্যালেঞ্জার ৬০০ সিরিজ) জেটে খালেদা জিয়াকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হবে।

বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জর্জিয়ার রাজধানী তিবলিসি হয়ে সরাসরি লন্ডন যাবে। শ‌নিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটির খালেদা জিয়াকে নিয়ে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে।

খালেদা জিয়াকে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) ভোরে লন্ডনে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কারিগরি সমস্যার কারণে গত বৃহস্পতিবার কাতারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আসেনি।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সব ঠিক থাকলে সেটা শনিবার পৌঁছাতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ম্যাডামের শরীর যদি যাত্রার উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড যদি সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে ইনশাআল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) ফ্লাই করবেন।

এর আগে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত জানুয়ারিতে লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে প্রথমে হাসপাতালে, পরে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা নেন। প্রায় চার মাস পর গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন।

গত ২৩ নভেম্বর রাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষায় ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাকে ভর্তি করা হয়। গত রোববার ভোরের দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে এসডিইউ থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।


banner close