অমর একুশে বইমেলার দিন যতই অতিবাহিত হচ্ছে ততই এর আকর্ষণ বেড়ে চলেছে। এবার নানাবিধ কারণে প্রাণের মেলা ভিন্নরূপ পেয়েছে। বিশেষ করে নগরে স্বস্তির যান মেট্রোরেলের কারণে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর পাঠক-দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। মেলায় প্রতিদিন শতাধিক নতুন বই আসার পাশাপাশি বেড়েছে দর্শনার্থীর সংখ্যা, সঙ্গে বাড়ছে বিক্রিও। দিন যত যাচ্ছে মেলার প্রাণ আরও বাড়ছে। আগামীকাল বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসে বইমেলা যেন অন্যরকম আমেজ নিয়ে আসবে। বাংলা একাডেমির বহেড়াতলা বটগাছে কোকিলের সুর বলে দিচ্ছে প্রকৃতিতে ফাগুন চলে এসেছে। ঠিক যেমনিভাবে ফাগুনের এই আগুন বইমেলায়ও চলে আসতে শুরু করেছে। সব সময় মেলা ফাগুনের দিনগুলো থেকেই মূলত জমে ওঠে। এবার আরও নবজাগরণে প্রাণের মেলা জমেছে। কেননা গত দুই বছরের ঢিমেতালে চলা বইমেলা এবার পেয়েছে পুরোপুরি জমে ওঠার চিত্র। মেলায় প্রতিবারের মতো এবারও পাঠকদের আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে উপন্যাস। এ ছাড়াও ঘুরেফিরে জনপ্রিয় লেখকদের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, পাঠকরা স্টলে স্টলে গিয়ে উপন্যাসের বই খুঁজে বেড়াচ্ছেন। প্রিয় লেখকের প্রকাশিত বই পেলেই তা সংগ্রহ করে নিজেদের ব্যাগে গুঁজে নিচ্ছেন বইপ্রেমীরা। এদিকে পূর্ববর্তী বছরগুলোর মতো এবারও হুমায়ূন আহমেদ, হাসান আজিজুল হক, আনিসুল হক, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইমদাদুল হক মিলন, সেলিনা হোসেন, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, আসিফ নজরুল, মুনতাসীর মামুন, মোশতাক আহমেদ, শাহাদুজ্জামান, হরিশংকর জলদাসসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় লেখকের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে মেলায় হুমায়ূন আহমেদের বই-ই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে প্রকাশনা সূত্রে জানা যায়। জনপ্রিয় এই লেখকের পুরাতন বইগুলো পাঠকরা এখনো কিনছেন। মেলায় প্রতিদিন হুমায়ূনপ্রেমীরা খুঁজতে খুঁজতে চলে যাচ্ছেন অন্যপ্রকাশে। এই প্রকাশনীতে কিংবদন্তি এই কথাসাহিত্যিকের লেখা উপন্যাস দেয়াল, মাতাল হাওয়া, নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, মধ্যাহ্ন অখণ্ড বেশি কিনছেন বলে অন্যপ্রকাশ সূত্রে জানা যায়।
সরেজমিন ঘুরে এবং বিভিন্ন স্টলের বিক্রয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারও মেলায় বেশি জনপ্রিয় লেখকদের গল্প-উপন্যাস বিক্রি হচ্ছে। নতুন বইয়ের সঙ্গে পুরাতন কালজয়ী বইও বিক্রিতে রয়েছে শীর্ষে।
তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ মুনালিসা জানান, এ বছর ৪৫টি নতুন বই প্রকাশ করেছে প্রকাশনীটি। নতুন বইয়ের সঙ্গে পুরাতন বইও বেশ বিক্রি হচ্ছে। তার মধ্যে হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ হিমু, শ্রেষ্ঠ মিছির আলি ও কিশোর সমগ্র বই বিক্রিতে ওপরে রয়েছে।
কাকলী প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী হুমায়ন কবীর জানান, রকিব হাসানের গোয়েন্দা সিরিজ ও সায়েন্স ফিকশন চলছে বেশি। আর হুমায়ূন আহমেদের ভক্তরা তার বই সমগ্র তো সংগ্রহ করছেই।
অনন্যা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী আসিফ মাহমুদ বলেন, ইমদাদুল হক মিলনের চোর এসে গল্প করেছিল, অন্ধকারে নামতে পারেনি বই দুটোর বিক্রি তুলনামূলকভাবে বেশি। এ ছাড়াও তৌহিদুর রহমানের নিতু বলছি বইটির তৃতীয় মুদ্রণ চলছে। মুনতাসীর মামুনের ঢাকা সমগ্র বইটিও পাঠকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়াও মুনতাসীর মামুনের বঙ্গবন্ধুর জীবন ও লিবারেশন ওয়্যার বই দুটি এ বছর প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলো বিক্রিও হচ্ছে বেশ।
অন্বেষা প্রকাশনের বিক্রয়কর্মী রাফিজা নওশীন জানান, সুজন দেবনাথের হেমলকের নিয়ন্ত্রণ ও জাহিদ হাসানের দেশভাগ ১৯৪৭ বেশি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের তিন বিচিত্র, চন্দ্রসখা, মিসির আলীর ভুবন, তোমাদের জন্য ভালোবাসা, নীল হাতি, সবাই গেছে বনে উপন্যাসগুলো একটি আরেকটির চেয়ে কম বিক্রি হচ্ছে না। এ ছাড়াও সাদাত হোসেনের আগুনডানা মেয়ে বইটিও বেশ বিক্রি হচ্ছে।
অন্যপ্রকাশের স্টল ইনচার্জ তৌহিদুল ইসলাম জানান, উপন্যাস আর হুমায়ন আহমেদের বইয়ে পাঠকদের চাহিদা- দুই ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়াও রউফুল আলমের দেশ, সফল মন্ত্র, আহমদ ছফার যদ্যপি আমার গুরু, অর্ধেক নারী অর্ধেক ইশ্বরী বইগুলো বেশ চলছে। তবে ক্রেতাদের চাহিদা উপন্যাস।
বইমেলায় ঘুরতে আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শরমিলা জান্নাত বইগুলো ঘাটতে ঘাটতে বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ দেশের সাহিত্য অঙ্গনে যে জায়গা সৃষ্টি করে গেছেন, তা এখনও কেউ পূরণ করতে পারেননি। পুরোনোরা তো বটেই, নতুন প্রজন্মের পাঠকও এসে এখনো হুমায়ূন আহমেদের বই খোঁজ করেন।’
মেলায় এখনো কালজয়ী সব সাহিত্যিকের লেখা বই কিনছেন বইপ্রেমীরা। এর মধ্যে রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শওকত আলী, বেগম রোকেয়া, মীর মশাররফ হোসেন, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, জীবনানন্দ দাশ, স্বর্ণকুমারী দেবী, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, জসীম উদ্দীন, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, আবু ইসহাক, আহমেদ ছফাসহ হুমায়ুন আজাদের লেখা সব বই। গুণী এই সাহিত্যিকদের লেখা বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস ও সমগ্র সংগ্রহে রাখতে মেলায় এসে বই কিনছেন বইপ্রেমীরা।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, এখনো পাঠকরা যেসব কালজয়ী বই মেলায় কিনছেন, তার মধ্যে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা, গোড়া, শওকত আলীর প্রদোষে প্রাকৃতজন, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের খোয়াবনামা, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবি, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর লালসালু, জহির রায়হানের হাজার বছর ধরে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী, সৈয়দ শামসুল হকের খেলারাম খেলে যা ও নিষিদ্ধ লোবান, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম আলো, সেই সময় এবং পূর্ব-পশ্চিম, হুমায়ূন আহমেদের নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার এবং জোৎস্না ও জননীর গল্প, হুমায়ুন আজাদের নারী ও ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল, আবু ইসহাকের সূর্য দীঘল বাড়ি, হাসান আজিজুল হকের আগুনপাখি, মানিক বন্দোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝি ও পুতুল নাচের ইতিকথা, ইমদাদুল হক মিলনের নূরজাহান, সৈয়দ মুজতবা আলীর দেশ বিদেশে, শওকত ওসমানের কৃতদাসের হাসি, আনিসুল হকের চার কিশোর গোয়েন্দা, শহীদুল্লাহ কায়সারের সারেং বৌ, সংশপ্তক, জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি, বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের আদর্শ হিন্দু হোটেল, মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা ফেরা, আহমদ ছফার যদ্যপি আমার গুরু ও শাহাদুজ্জামানের ক্রাচের কর্নেলসহ আরও কিছু বই। এই বইগুলো প্রকৃত বইপ্রেমীরা দেখলেই তা সংগ্রহে রাখার জন্য হলেও কিনে নিচ্ছেন বলে জানান মেলার বিভিন্ন স্টলের বিক্রয়কর্মীরা।
এখনো জমেনি লিটলম্যাগ চত্বর
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে অবস্থিত লিটল ম্যাগ চত্বর ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় নেই মেলার এ অংশে। যদিও বিক্রয় প্রতিনিধিরা বলছেন, মেলার অন্য অংশ থেকে বরাবরই এ অংশে ভিড় কম থাকে। সেখানকার স্টলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লোকজন এ চত্বরে কম যায়। তেমন বিক্রিও হয় না। বইমেলায় একসময় অন্যতম আকর্ষণ ছিল তারুণ্যের এ ‘লিটল ম্যাগ চত্বর’। মেলার এই অংশে নবীন লেখকদের প্রকাশিত বিভিন্ন ম্যাগাজিন পাঠক-দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরেন লেখক, প্রকাশক। কিন্তু সময়ের আবর্তে একসময়কার তুমুল জনপ্রিয় এই চত্বরে এখন কেবলই হাহাকার। বারবার এর স্থান পরিবর্তন হলেও হারানো গৌরবের দেখা পাচ্ছে না এই চত্বর।
জনপ্রিয় সব লেখক, প্রকাশনী ও পত্রিকার ভিড়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে সত্তরের দশকের গণজাগরণের চালিকাশক্তি হিসেবে পরিচিত লিটল ম্যাগাজিনগুলো। বিপ্লবী ধারার এসব ম্যাগাজিনের স্থান দখল করে নিয়েছে পত্রিকাগুলো। কিন্তু এতসব বাধা বিপত্তির মাঝেও এখনো টিকে আছে কিছু ম্যাগাজিন। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে বাংলা একাডেমির বহেড়াতলায় স্থান পাওয়া বইমেলার অন্যতম আকর্ষণ ‘লিটল ম্যাগ চত্বর’ কখনো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাঝখানে, কখনো উত্তর পাশে আবার কখনো কালি মন্দিরের পাশে স্থান বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। তবে এ বছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের উত্তরাংশের অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গায় স্থান হয়েছে লিটল ম্যাগের। ফলে বিগত দিনের ধারাবাহিক খরা তাতে লেগেই আছে।
আজকের বইমেলা :
আজকের মেলা বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে শেষ হয় রাত ৯টায়। ১২তম দিনে মেলায় নতুন বই এসেছে ১১৫টি। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : হেনা দাস শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জোবাইদা নাসরীন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ঝর্না রহমান এবং ফওজিয়া মোসলেম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার।
‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কথাসাহিত্যিক সালমা বাণী, কবি ফারহানা রহমান, গবেষক মিলটন কুমার দেব এবং কথাসাহিত্যিক ইকবাল খন্দকার।
আগামীকালের বইমেলা :
আগামীকাল ১৩তম দিন মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ শীর্ষক আলাচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপনা করবেন আহমদ মোস্তফা কামাল। আলাচনায় অংশগ্রহণ করবন হরিশংকর জলদাস এবং ফারজানা সিদ্দিকা। অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করবেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, সরকার দেশীয় শিল্পের বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি চলমান ব্র্যান্ড সংকট থেকে উত্তোরণের জন্য এটলাসের নিজস্ব ব্র্যান্ড ‘এটলাস ইভি’ ইলেকট্রিক বাইক উৎপাদন ও বিপণনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার সকালে টঙ্গীর এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানায় নিজস্ব ব্র্যান্ড ‘এটলাস ইভি’ নামক ইলেকট্রনিক মোটরসাইকেল বাজারজাতকরণ কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্তিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
শিল্প উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমান সরকার পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবস্থা প্রবর্তনে ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটলাস বাংলাদেশের মতো একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের এই উদ্যোগটি ইলেকট্রিক ভেহিকেল সংক্রান্ত জাতীয় নীতি বাস্তবায়নে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি কেবল আমাদের কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করবে না জীবাশ্ম জ্বালনির পেছনে ব্যয় হওয়া মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান, বাংলাদেশ ইস্পাত প্রকৌশল করপোরেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আলমসহ এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ডিলাররা। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে উপদেষ্টা কারখানা সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
মুক্তিযোদ্ধা কোটায় জালিয়াতি করে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি পাওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. কামাল হোসেনের প্রকৃত বাবা-মা নিশ্চিতে ডিএনএ টেস্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন দুদকের সম্মিলিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এর উপসহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম মিন্টু।
অভিযুক্ত কামাল হোসেন এর আগেও নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইউএনও এবং মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও চাকরি লাভসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগের উদ্দেশে মো. কামাল হোসেন তার জন্মদাতা পিতা-মাতা মো. আবুল কাশেম ও মোছা. হাবীয়া খাতুনের পরিবর্তে আপন চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আহসান হাবীব ও চাচী মোছা. সানোয়ারা খাতুনকে পিতা-মাতা হিসেবে চিত্রিত করে জালিয়াতি করেছেন। এই কৌশলের মাধ্যমে তিনি ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের কোটায় প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি লাভ করেন।
দুদক জানায়, মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি মো. কামাল হোসেনসহ তার প্রকৃত পিতা মাতা ও তার চাচা-চাচীর ডিএনএ টেস্ট করার জন্য কমিশনের কাছে আবেদন দাখিল করেন। কমিশন তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আসামি মো. কামাল হোসেনসহ তার প্রকৃত পিতা মাতা ও তার চাচা-চাচীর ডিএনএ টেস্ট করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে আসামি মো. কামাল হোসেনসহ তার প্রকৃত পিতা মাতা ও তার চাচা-চাচীর ডিএনএ টেস্ট করবেন।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারদের ঠিকানা পরিবর্তনের শেষ সময়সীমা ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, ভোটার তালিকায় ঠিকানা পরিবর্তন বা স্থানান্তরের আবেদন করতে হবে আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জারি করা অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা চূড়ান্তকরণের আগে যেসব ভোটার তাদের আবাসস্থল পরিবর্তন করেছেন, তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নতুন ঠিকানায় ভোটার স্থানান্তরের আবেদন করতে পারবেন।
ইসির আদেশ অনুযায়ী, রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তারা ১৭ নভেম্বরের মধ্যে দাখিলকৃত সব আবেদন যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন বা বাতিলের সিদ্ধান্ত দেবেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা হতে পারে। নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ধরা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, “ভোটার তালিকার সঠিকতা বজায় রাখা নির্বাচনের অন্যতম পূর্বশর্ত। তাই স্থানান্তর ও সংশোধন প্রক্রিয়া শেষ না করে আমরা তফসিল ঘোষণা করব না।”
উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে প্রশাসনিক প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোকেও প্রার্থী বাছাই ও জোট গঠনের প্রাথমিক কাজ শুরু করতে দেখা যাচ্ছে।
হাটহাজারীতে জেলা প্রশাসনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে প্রায় দশ কোটি টাকার সরকারী সম্পদ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালের দিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ট্রেজারী শাখা, ফ্রন্ট ডেস্ক ও ই-সেবা কেন্দ্র)মো.ইসরাফিল জাহান এর নেতৃত্বে হাটহাজারী পৌরসভার কাচারি সড়কে পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান সূত্রে জানা যায়,দীর্ঘ বছর ধরে একটি ভূমিদস্যু চক্র চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের (ছয় শতক) এসব সম্পদ অবৈধভাবে দখল করে দাপটের সাথে স্থাপনা নির্মাণ করে তাতে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলো। ঘটনারদিন সকালে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে জেলা পরিষদের লোকজন পর্যাপ্ত পরিমাণ জেলা ও হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থলে আসলে প্রথমে কয়েকজন দোকানদারের বাঁধার মুখে পড়েন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসার পর উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। এসময় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে নির্মিতব্য স্থাপনা ভেঁঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে টিনের ঘেরা তৈরী করে তাতে জেরা পরিষদের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হয়। এ অভিযানের সরকারী প্রায় দশ কোটি টাকার সম্পদ পুনরুদ্ধার হয়েছে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে কিছু ব্যবসায়ীরা প্রশাসন তাদের গায়ের জোরে আইন বর্হিভুতভাবে তাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন।
অভিযান পরিচালনার সময় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার, হাটহাজারী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহেদ আরমান,মডেল থানার ওসি মনজুর কাদের ভুঁইয়া, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ এবং সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে অভিযানে নেতৃত্বদানকারী চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ট্রেজারী শাখা, ফ্রন্ট ডেস্ক ও ই-সেবা কেন্দ্র)মো.ইসরাফিল জাহান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এ প্রতিবেদককে জানান, "সরকারি জায়গা কেউ দখল করে রাখতে পারবেনা, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
আজ সন্ধ্যায় আকাশে দেখা যাবে বছরের অন্যতম আকর্ষণীয় পূর্ণচন্দ্র ‘বিভার মুন’ বা ‘বিভার সুপারমুন’। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৯ মিনিটে পূর্ণতা পাবে এ চাঁদ।
নভেম্বর মাসের এই পূর্ণিমা ‘বিভার মুন’ নামে পরিচিত। নাসা জানিয়েছে, এটি ২০২৫ সালের দ্বিতীয় সুপারমুন। এর আগে অক্টোবর মাসে দেখা গিয়েছিল ‘হারভেস্ট সুপারমুন’।
আজকের সুপারমুন সাধারণের তুলনায় বড় ও উজ্জ্বল দেখাবে। এর কারণ হলো চাঁদ পৃথিবীর তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে থাকবে— প্রায় ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮০ কিলোমিটার দূরত্বে।
নাসা জানিয়েছে, আজ চাঁদ বিকেল ৫টা ৩১ মিনিটে উঠবে এবং ঠিক সূর্যাস্তের পরই পূর্ব আকাশে এর সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে। দূরবীন বা টেলিস্কোপ ব্যবহার করলে চাঁদকে আরও স্পষ্টভাবে দেখা সম্ভব।
আজকের পূর্ণিমার সঙ্গে আকাশে আরও কিছু নাক্ষত্রিক সৌন্দর্যও দেখা যাবে। এর মধ্যে রয়েছে প্লাইয়েডস এবং হাইডস নক্ষত্র ক্লাস্টার, ওরিয়ন নক্ষত্রপুঞ্জ এবং বৃহস্পতি গ্রহ।
‘বিভার মুন’ নামের উৎপত্তি নেটিভ আমেরিকান ও ইউরোপীয় ঐতিহ্য থেকে। নভেম্বর মাসে বীবররা শীতের প্রস্তুতিতে বাঁধ মজবুত করত এবং খাবার মজুত করত। তাই এই সময়ের পূর্ণিমাকে তাদের নামে অভিহিত করা হয়। কিছু সংস্কৃতিতে এটি ‘ফ্রস্ট মুন’, ‘ফ্রিজিং মুন’ বা ‘ট্রেডিং মুন’ নামেও পরিচিত।
নাসা জানিয়েছে, যদি আজ আকাশ মেঘমুক্ত থাকে, তবে বাংলাদেশের যেকোনো স্থান থেকে এই উজ্জ্বল এবং পূর্ণ সৌন্দর্যের বিভার সুপারমুন দেখা সম্ভব হবে।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের টানা ৮ম দিনের শুনানি শুরু হয়েছে।
আজ (বুধবার) সকাল ৯টা ৫০ মিনিট থেকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।
আদালতে বিএনপির পক্ষে শুনানি করছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করবেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে গতকাল, ২ নভেম্বর ও ২৯, ২৮,২৩, ২২ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি হয়েছে। ২১ অক্টোবর এই শুনানি শুরু হয়।
তার আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ ৫ জন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।
এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
পরবর্তীতে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।
সারা দেশে ৬টি অঞ্চলের ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এসব এলাকার নৌবন্দরকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলে অবস্থানরত লঘুচাপটি আরো ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের উপকূলে রয়েছে। যে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকতে দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-সহ তিনটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অন্য দুটি দল হলো— বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) ও বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চত করেন।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, কমিশন মনে করেছে— এই তিনটি দল রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে পারে এবং তাদের ব্যাপারে বুধবার আমরা প্রত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেব। আগামী ১২ নভেম্বরের মধ্যে দাবি-আপত্তির সময়সীমা নির্ধারণ করে দিচ্ছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যে তথ্য পাওয়া যাবে, তা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে চূড়ান্তভাবে সনদ দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ইসির শর্ত অনুযায়ী এই তিনটি দলই কোয়ালিফাই করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ১৪৩টি আবেদন পেয়েছিলাম। এর মধ্যে প্রাথমিক বাছাইয়ের পর ২২টি দলের ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে তদন্তের জন্য পাঠিয়েছিলাম। তদন্ত থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে, সে তথ্যের ধারাবাহিকতায় আমরা সাতটা রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের কথা বলেছি যে, না তারা কোয়ালিফাই করে না। একটা রাজনৈতিক দলের বিষয়ে... বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি তাদের ব্যাপারে হাইকোর্টে দায়ের করা একটা অবেদনের রায় পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর বাকি যেগুলো আছে, সাতটা দলের ক্ষেত্রে আমরা বলেছি যে, না তারা কোয়ালিফাই করেন না, মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট ফুলফিল করেন না। এর ধারাবাহিকতা পুনঃতদন্ত করে কমিশন যে সিদ্ধান্তে এসেছে, সেটা আমি বলছি যে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় এবং অংশগ্রহণে অতীত নির্বাচন সংক্রান্ত ধারাবাহিকতায় তিনটা দল প্রাথমিকভাবে বিবেচিত হয়েছিল জাতীয় জনতা পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (শাহ জাহান সিরাজ) এবং বাংলাদেশ জাতীয় লীগ।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু পরবর্তী অধিকতর যাচাই বাছাইয়ে লক্ষ্য করা গেছে যে, তাদের কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নাই। সেজন্য তিনটাকেও বাতিল করা হচ্ছে। আর যে দলগুলো ছিল তার মধ্যে থেকে আম জনতার দল, বাংলাদেশ জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতার পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি এই আটটা দলের সঠিকতা না পাওয়ার জন্য নামঞ্জুর করা হয়েছে।’
আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা তিনটা দলের সঠিকতা পেয়েছি এবং সে তিনটা দল হচ্ছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই তিনটা দলের ব্যাপারে নতুন প্রার্থিত নিবন্ধনের বিষয়ে কমিশন মনে করেছে যে এই তিনটা দল রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে পারে। তাদের ব্যাপারে আগামীকাল পত্রিকায় আমরা বিজ্ঞপ্তি দেব অভিমতের জন্য। এবং ১২ তারিখের ভেতরে আমরা এই অভিমতের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিচ্ছি। এই নির্ধারিত সময় সময়ের মধ্যে যে তথ্য পাওয়া যাবে সেটা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকভাবে এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগকে নিবন্ধনযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছিল ইসি, তবে জাতীয় লীগ নিবন্ধন পাচ্ছে না। জাতীয় লীগের ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ইসি দলটি নিয়ে আবার তদন্ত করে।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, পুনঃ তদন্ত করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের, ভোটে অংশগ্রহণ ও অতীত নির্বাচনসংক্রান্ত কার্যক্রমে জাতীয় লীগের ধারাবাহিকতা পাওয়া যায়নি।
কোনো রাজনৈতিক দলকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অংশ নিতে হলে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হতে হয়। এখন ইসিতে নিবন্ধিত দল ৫৩টি। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত আছে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দল নিবন্ধনের আবেদন আহ্বান করার পর ১৪৩টি দল ইসিতে আবেদন করেছিল। প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়ে ১২১টি আবেদন। ২২টি দলের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে ইসি। শেষ পর্যন্ত তিনটি দল নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ নেজামে ইসলামী পার্টিকে আদালত নিবন্ধন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়ায় আদেশের কপির অপেক্ষায় রয়েছে ইসি।
প্রতীক হিসেবে পেল শাপলা কলি, হ্যান্ডশেক ও কাঁচি
এদিকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেতে যাওয়া নতুন তিনটি রাজনৈতিক দল ইসির প্রতীক পেয়েছে। দাবি-আপত্তি শেষে দলগুলো চূড়ান্ত নিবন্ধন পেলে এই প্রতীকগুলো দলীয় প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে হ্যান্ডশেক, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলকে (মার্কসবাদী) কাঁচি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টিকে শাপলা কলি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়ে কারও কোনো আপত্তি থাকলে প্রয়োজনীয় দলিলসহ এর কারণ উল্লেখপূর্বক ১২ নভেম্বরের মধ্যে সচিবের নিকট লিখিতভাবে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭টি আসনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বিএনপি। তালিকা ঘোষণা অনুযায়ী ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দলীয় প্রার্থী মনোনীত হওয়ার পরে এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুর ১টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বিএনপি মহাসচিব লিখেন, এই নির্বাচন হয়তো আমার শেষ নির্বাচন।
পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও লিখেছেন, মহান আল্লাহর রহমতে বিএনপি আমাকে ঠাকুরগাঁও ১ আসনে মনোনীত করেছে! আমি বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ সকল নেতা ও নেত্রীকে আমার কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানাই। দলের সকল কর্মীকে জানাই আমার আন্তরিক ধন্যবাদ আজীবন আমার সঙ্গে থাকার জন্য!
তিনি লিখেন, আমরা যারা সারাজীবন রাজনীতি করেছি, জেলে গেছি, আমাদের নিজেদের একটা গল্প থাকে! অনেকেই তা জানে না! আমি যখন ১৯৮৭ তে সিদ্ধান্ত নেই, আবার রাজনীতিতে ফিরব, আমার মেয়ে দুটি একদমই ছোট ছিল! ঢাকায় পড়ত। আমার স্ত্রীর বয়স অনেক কম ছিল! সে প্রথমে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল! বুঝতে পারছিল কী ভয়াবহ অনিশ্চিত জীবনে পা দিতে যাচ্ছে!
পোস্টে মির্জা ফখরুল আরো লিখেন, আমার মেয়ে দুটির হাত ধরে সেই নিয়ে গেছে স্কুলে, ডাক্তারের কাছে! মনে পড়ে আমার বড় মেয়ের একটা অপারেশন হবে, আমি সারারাত গাড়িতে ছিলাম, ঢাকার পথে! যাতে মেয়ের পাশে থাকতে পারি! গল্পগুলো অন্য কোনও দিন বলব যদি আল্লাহ চান! এ রকম গল্প আমাদের হাজার-হাজার নেতাকর্মীর আছে!
পরিশেষে তিনি লিখেন, আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমাদের দলের প্রতিটি নেতাকর্মীর জন্য দোয়া করবেন! আমরা সবাই মিলে আপনাদের পাশে থাকব এবং কাজ করব ইনশাআল্লাহ! বিএনপির সেই যোগ্যতা আছে দেশকে মর্যাদার সঙ্গে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার! ইনশাআল্লাহ! আপনারা পাশে থাকেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ৫ আগস্টের পর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে কাজ চলছে। সম্প্রতি চট্টগ্রামের রাউজানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে ১১টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে এবং বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হয়েছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের জন্য যা যা করা প্রয়োজন তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সব ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ কমিশন গঠন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ কমিশন হয়ে যাবে। এটি হওয়ার পর এর সুযোগ সুবিধা বিস্তারিত জানানো হবে।
বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি তদন্তে কাজ করছেন। তিনি (স্বরাষ্ট্র সচিব) ৪-৫টি দেশে চিঠি দিয়েছেন। অলরেডি দুয়েকটি দেশের বিশেষজ্ঞরা এসে তদন্ত করেছে এবং দেশের তদন্তকারী দলও তদন্ত করছে। তদন্ত শেষ হলে রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।
তিনি বলেন, বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ থেকে হাতিয়ার বা অস্ত্র চুরি হয়েছে কিনা, এ বিষয়ে আমরা তদন্তের পর জানতে পারব। এখনই তো বলা যাচ্ছে না যে চুরি হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নিজেও এ ব্যাপারে তদন্ত করছেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে পুলিশের প্রতি আমার নির্দেশনা হলো নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর। কেউ নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
আসন্ন নির্বাচনে বিগত সরকারের আমলে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিগত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেছে, তাদের বেশির ভাগ কর্মকর্তাকে আমরা চেঞ্জ করব।
আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যেসব ফ্যাসিস্ট পুলিশ অফিসাররা ৫ আগস্টের পর পালিয়ে গেছে, তারা এখন অপরাধী হিসেবে গণ্য হবে, তাদের ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনাদের (মিডিয়া) সহযোগিতা দরকার।
অবশেষে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের (আরপিও) অধ্যাদেশ জারি করল সরকার। এতে জোট করলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট, ফেরারি আসামি ভোটে অযোগ্য, মিথ্যা তথ্য দিলে এমপি পদ বাতিল এমন এক গুচ্ছ নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। থাকছে ‘না’ ভোটও।
নির্বাচন কমিশনের এক অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুচ্ছেদ-২ সংশোধন করে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সংজ্ঞায় সেনা বাহিনী, নৌ বাহিনী ও বিমান বাহিনী রাখা হয়েছে। এতে সেনা মোতায়েনে নির্বাচন কমিশনকে আর আগের মতো বেগ পেতে হবে না। ২০০১ ও ২০০৮ সালের ভোটে এমন বিধান ছিল।
অনুচ্ছেদ-৮ সংশোধন করে ভোটকেন্দ্র (পোলিং স্টেশন) প্রস্তুতের ক্ষেত্রে জেলা নির্বাচন অফিসারের হাতে রাখা হয়েছে। আগে এ ক্ষমতা ডিসির হাতে ছিল।
অনুচ্ছেদ ৯-এর সংশোধনীতে বলা হয়েছে, রিটার্নিং অফিসার কোনো ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বরখাস্ত করতে পারবেন, তবে ইসিকে অবহিত করতে হবে।
অনুচ্ছেদ ১২-তে বলা হয়েছে, কোনো আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি ঘোষিত হলে সংসদ সদস্য হওয়ার অযোগ্য হবে। তিনি আর প্রার্থী হতে পারবেন না।
এছাড়া কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বা অন্য কোনো পদে অধিষ্ঠিত থাকলে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন।
কোনো প্রতিষ্ঠানের কাযনির্বাহী পদকে ‘লাভজনক’ পদের সংজ্ঞাভুক্ত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের কাযনির্বাহী পদে থেকে নির্বাচন করা যাবে না। হলফনামায় দেশে-বিদেশে আয়ের উৎস এবং সবশেষ বছরের রিটার্ন জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে নির্বাচিত হলে এবং তা প্রমাণিত হলে এমপি পদও বাতিল করতে পারবে ইসি।
অনুচ্ছেদ ১৩ সংশোধন করে জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
অনুচ্ছেদ-১৯-এর সংশোধনীতে ‘না’ ভোটের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। কোনো আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যদি একজন থাকে, তাহলে ব্যালট পেপারে ‘না’ ভোটের বিধান থাকবে। না ভোট বেশি পড়লে পুনরায় নির্বাচন হবে। ফের একক প্রার্থী থাকলে তিনি নির্বাচিত হবেন।
অনুচ্ছেদ- ২০ এর সংশোধনীতে বলা হয়েছে, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জোটগতভাবে নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিজ দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।
অনুচ্ছেদ ২৬ এর সংশোধনীতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ব্যবহার সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করা হয়েছে।
অনুচ্ছেদ-২৭-এ আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং যোগ করা হয়েছে। প্রবাসী, সরকারি চাকরিজীবী ও দেশের ভেতরে কয়েদিরা এ সুযোগ পাবেন।
অনুচ্ছেদ ৩৬ এ বলা হয়েছে, ভোট গণনার সময় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকতে পারবেন।
এছাড়াও সমভোট পেলে লটারির পরিবর্তে পুন:ভোট হবে। প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ভোটার প্রতি ১০ টাকা, দলের ব্যয় দেখানো, অনুদানের অর্থের হিসাব ওয়েবসাইটে প্রকাশ, উপপুলিশ মহাপরিদর্শক পর্যন্ত বদলিতে ইসির অনুমোদনের বিধান আনা হয়েছে। আবার মিথ্যা তথ্য, অপতথ্য, গুজব ও এআই অপব্যবহার রোধে প্রার্থী ও দলের বিষয়ে অপরাধ বিবেচনা শাস্তির বিধান আনা হয়েছে।
এদিকে নিবন্ধন স্থগিত হলে প্রতীক স্থগিত, অনিয়ম হলে পুরো আসনের ভোট বাতিলে ইসির হাতে ক্ষমতা, আচরণ বিধি প্রতিপালনে ইসি কর্মকর্তাদেরও ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
আচরণবিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ ছয় মাসের দণ্ডের পাশাপাশি সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। দলের ক্ষেত্রেও জরিমানার বিধান আনা হয়েছে।
গত ২৩ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ খসড়ার নীতিগত অনুমোদন করা হয়। এরপর জোটের প্রতীকের সংশ্লিষ্ট ২০ অনুচ্ছেদে সংশোধন নিয়ে বিএনপি আপত্তি তুললেও জামায়াত ও এনসিপি সংশোধন বহাল রাখার দাবি তোলে।
শেষ পর্যন্ত ওই বিধান রেখেই অধ্যাদেশ জারি করা হলো। এর মাধ্যমে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে একাধিক নিবন্ধিত দল জোট করলেও জোট মনোনীত প্রার্থী বড় দলের বা অন্য দলের প্রতীকে ভোট দিতে পারবে না, নিজ দলের প্রতীকে ভোট দিতে হবে।
সংশোধিত আরপিও অধ্যাদেশে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, যদি দুই বা ততোধিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল যৌথভাবে কোনো প্রার্থী মনোনয়ন দিতে সম্মত হয়, তবে কমিশন উক্ত প্রার্থীর দলীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে তার রাজনৈতিক দলের জন্য সংরক্ষিত প্রতীক বরাদ্দ দিতে পারবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-সহ তিনটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অন্য দুটি দল হলো— বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) ও বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চত করেন।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, কমিশন মনে করেছে— এই তিনটি দল রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে পারে এবং তাদের ব্যাপারে বুধবার আমরা প্রত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেব। আগামী ১২ নভেম্বরের মধ্যে দাবি-আপত্তির সময়সীমা নির্ধারণ করে দিচ্ছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যে তথ্য পাওয়া যাবে, তা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে চূড়ান্তভাবে সনদ দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ইসির শর্ত অনুযায়ী এই তিনটি দলই কোয়ালিফাই করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ১৪৩টি আবেদন পেয়েছিলাম। এর মধ্যে প্রাথমিক বাছাইয়ের পর ২২টি দলের ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে তদন্তের জন্য পাঠিয়েছিলাম। তদন্ত থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে, সে তথ্যের ধারাবাহিকতায় আমরা সাতটা রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের কথা বলেছি যে, না তারা কোয়ালিফাই করে না। একটা রাজনৈতিক দলের বিষয়ে... বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি তাদের ব্যাপারে হাইকোর্টে দায়ের করা একটা অবেদনের রায় পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর বাকি যেগুলো আছে, সাতটা দলের ক্ষেত্রে আমরা বলেছি যে, না তারা কোয়ালিফাই করেন না, মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট ফুলফিল করেন না। এর ধারাবাহিকতা পুনঃতদন্ত করে কমিশন যে সিদ্ধান্তে এসেছে, সেটা আমি বলছি যে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় এবং অংশগ্রহণে অতীত নির্বাচন সংক্রান্ত ধারাবাহিকতায় তিনটা দল প্রাথমিকভাবে বিবেচিত হয়েছিল জাতীয় জনতা পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (শাহ জাহান সিরাজ) এবং বাংলাদেশ জাতীয় লীগ।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু পরবর্তী অধিকতর যাচাই বাছাইয়ে লক্ষ্য করা গেছে যে, তাদের কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নাই। সেজন্য তিনটাকেও বাতিল করা হচ্ছে। আর যে দলগুলো ছিল তার মধ্যে থেকে আম জনতার দল, বাংলাদেশ জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতার পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি এই আটটা দলের সঠিকতা না পাওয়ার জন্য নামঞ্জুর করা হয়েছে।’
আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা তিনটা দলের সঠিকতা পেয়েছি এবং সে তিনটা দল হচ্ছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই তিনটা দলের ব্যাপারে নতুন প্রার্থিত নিবন্ধনের বিষয়ে কমিশন মনে করেছে যে এই তিনটা দল রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে পারে। তাদের ব্যাপারে আগামীকাল পত্রিকায় আমরা বিজ্ঞপ্তি দেব অভিমতের জন্য। এবং ১২ তারিখের ভেতরে আমরা এই অভিমতের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিচ্ছি। এই নির্ধারিত সময় সময়ের মধ্যে যে তথ্য পাওয়া যাবে সেটা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকভাবে এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগকে নিবন্ধনযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছিল ইসি, তবে জাতীয় লীগ নিবন্ধন পাচ্ছে না। জাতীয় লীগের ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ইসি দলটি নিয়ে আবার তদন্ত করে।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, পুনঃ তদন্ত করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের, ভোটে অংশগ্রহণ ও অতীত নির্বাচনসংক্রান্ত কার্যক্রমে জাতীয় লীগের ধারাবাহিকতা পাওয়া যায়নি।
কোনো রাজনৈতিক দলকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অংশ নিতে হলে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হতে হয়। এখন ইসিতে নিবন্ধিত দল ৫৩টি। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত আছে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দল নিবন্ধনের আবেদন আহ্বান করার পর ১৪৩টি দল ইসিতে আবেদন করেছিল। প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়ে ১২১টি আবেদন। ২২টি দলের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে ইসি। শেষ পর্যন্ত তিনটি দল নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ নেজামে ইসলামী পার্টিকে আদালত নিবন্ধন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়ায় আদেশের কপির অপেক্ষায় রয়েছে ইসি।
প্রতীক হিসেবে পেল শাপলা কলি, হ্যান্ডশেক ও কাঁচি
এদিকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেতে যাওয়া নতুন তিনটি রাজনৈতিক দল ইসির প্রতীক পেয়েছে। দাবি-আপত্তি শেষে দলগুলো চূড়ান্ত নিবন্ধন পেলে এই প্রতীকগুলো দলীয় প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে হ্যান্ডশেক, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলকে (মার্কসবাদী) কাঁচি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টিকে শাপলা কলি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়ে কারও কোনো আপত্তি থাকলে প্রয়োজনীয় দলিলসহ এর কারণ উল্লেখপূর্বক ১২ নভেম্বরের মধ্যে সচিবের নিকট লিখিতভাবে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জাতিসংঘের বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন (কনফারেন্স অব পার্টিজ-কপ)-এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব শুধু পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ না রেখে মহিলা ও শিশু, কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ সংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে হবে।
মঙ্গলবার সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ-৩০) অংশীজনের অংশগ্রহণ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালার আয়োজন করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা প্রায়শই শুধু পরিবেশের ক্ষতির দিকেই সীমাবদ্ধ থাকে। অথচ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতও এই পরিবর্তনের কারণে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন। কার্বন নিঃসরণে ধনী দেশগুলোর দায় রয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। অথচ ভুক্তভোগীর তালিকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর।
উপদেষ্টা বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে শুধু মানুষ নয়, প্রাণিকুলও বিপদে পড়ে। কৃষিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের কারণে মাছের উৎপাদন কমে যাচ্ছে, যা খাদ্যনিরাপত্তার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
তিনি বলেন, ইতঃপূর্বে ধনী দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ কমানোর দেওয়া কথা রাখেনি। তারা নেট জিরো- এর কথা বলছে। তারা নেট জিরো নাম আনছে অথচ জিরোর আগে কীভাবে হয় নেট হয়? ধনী রাষ্ট্রগুলো কার্বন নিঃসরণ না কমিয়ে অথবা যেমন আছে সেভাবে রেখে গাছ লাগিয়ে বা টেকনোলজি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে দেশীয়ভাবে বা অঞ্চলভিত্তিক এবং আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করে যেতে হবে।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ইমাম উদ্দীন কবীর। ‘বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ-৩০)’ এর ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ।
কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষক, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি এবং ক্লাইমেট অ্যাক্টিভিস্টরা উপস্থিত ছিলেন।