সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার ও শফিউরসহ ভাষাশহীদদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এই বাংলা ভাষা। এই ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিন শুরু হয় বইমেলা, চলে পুরো মাস। সেই বইমেলায় প্রতিদিন প্রায় শখানেক বই প্রকাশিত হলেও যাদের আন্দোলন এবং রক্তের বিনিময়ে আমরা এই ভাষা পেয়েছি সেই ভাষা আন্দোলন এবং ভাষাশহীদদের ওপর বই প্রকাশ হচ্ছে না বললেই চলে। যদিও প্রকাশকরা বলছেন, এসব বিষয়ে তারা বই প্রকাশে আগ্রহী। কিন্তু ভালো পাণ্ডুলিপি পাওয়া যাচ্ছে না।
বাংলা একাডেমির জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যমতে, গতকাল মঙ্গলবার মেলার ২০তম দিনে ২ হাজার ৯৫টি বই প্রকাশতি হলেও তার মধ্যে ভাষা আন্দোলনের ওপর নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে মাত্র চারটি। এর মধ্যে দুটি বই প্রকাশ করেছে ঐতিহ্য প্রকাশনী আর প্রথমা প্রকাশনী এবং ঝিঙেফুল প্রকাশনী প্রকাশ করেছে একটি করে। এ ছাড়া ঐতিহ্য প্রকাশনী এই বইমেলাতে ভাষা আন্দোলনের ওপর আরও তিনটি বই নিয়ে আসার কথা জানিয়েছে।
বাংলা একাডেমি থেকে পাওয়া তথ্যমতে মেলায় ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রকাশিত নতুন তিনটি বই হলো ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত লেখক-গবেষক বদরুদ্দোজা হারুনের লেখা ‘ভাষাশহীদ আবুল বরকত: নেপথ্যকথা’, প্রয়াত কবি বেলাল চৌধুরীর অমর একুশ-বিষয়ক স্মৃতি ও ভাবনার সংকলন ‘একুশের স্মৃতি ও ভাবনা’ এবং ঝিঙেফুল থেকে প্রকাশিত গাজী হানিফের ‘একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ বইটি। এ ছাড়া মেলায় এসেছে প্রথমা থেকে পুনঃপ্রকাশিত ভাষাসৈনিক মর্তুজা বশিরের লেখা ‘একুশের লেখা, একুশের আঁকা’ বইটি।
বাংলা একাডেমি থেকে পাওয়া তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে বিভিন্ন প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের কথায়ও।
বাংলা একাডেমি প্যাভিলিয়নের বিক্রয়কর্মী লাভলু আলম বলেন, এই বছর ভাষা আন্দোলন নিয়ে বাংলা একাডেমির নতুন কোনো বই নেই। আগের বইগুলোই রিপ্রিন্ট করা হচ্ছে। এই প্রকাশনীর স্টল ঘুরে অমর একুশ নিয়ে কয়েকটি বইয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেগুলো হলো- ড. সরকার আমিনের সম্পাদনায় ‘একুশের প্রবন্ধ ২০২৩’, সাজ্জাদ আরেফিনের সম্পাদনায় ‘একুশের কবিতা-পরিচয়’, জালাল ফিরোজের ‘অমর একুশে বইমেলার ইতিহাস’, আমিনুর রহমান সুলতানের ‘ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক’।
অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাত হোসেন বলেন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং আমাদের দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে আমরা অনেক কাজ করতে চাই। কিন্তু এসব বিষয়ে আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে পাণ্ডুলিপি পাই না। ভাষা আন্দোলনের ওপর পাণ্ডুলিপি নেই বললেই চলে। অনেক বছর আগে হয়তো দুই-একটা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে গবেষণার অভাবে আমরা কোনো পাণ্ডুলিপি পাচ্ছি না। হয়তো গবেষকরা এসব বিষয়ে উৎসাহ পাচ্ছেন না অথবা বিভিন্ন কারণে লিখছেন না। এসব কারণে আমরা এসব বিষয়ে কোনো বইও প্রকাশ করতে পারছি না।
তিনি বলেন, প্রতিবছরই আমাদের ইচ্ছা থাকে ভাষা আন্দোলনের ওপর কমপক্ষে একটা বই প্রকাশ করার। কিন্তু পাণ্ডুলিপি না পাওয়ার কারণে সেটি আর সম্ভব হয় না। পুরাতন যে বইগুলো আছে সেগুলো নিয়েই আমাদের চলতে হয়। বর্তমানে আমাদের ডা. শেখ মেহেদী হাসানের ‘ভাষা আন্দোলনের পূর্বাপর’ বইটি আছে।
পাঠক সমাবেশের স্টল ম্যানেজার লিয়ন বলেন, এ বিষয় নিয়ে নতুন কোনো বই আসেনি। আগেরও কোনো বই নেই। তবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বই আছে।
ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের (ইউপিএল) বিক্রয় প্রতিনিধি মোসাদ্দেক হোসাইন বলেন, নতুন কোনো বই আসেনি। তবে আতিউর রহমান স্যারের সম্পাদনায় ‘ভাষা আন্দোলনের আর্থসামাজিক পটভূমি’ শীর্ষক একটি বই ছিল। তবে সেটা এখন নেই। নতুন করে আবার প্রকাশিত হবে।
প্রথমা প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি আশফাক বলেন, একটা ছাড়া আর কোনো নতুন বই আসেনি। তবে আগের কিছু বই আছে। সেগুলো হলো- আহমদ রফিকের ‘ভাষা আন্দোলন’, ‘একুশের মুহূর্তগুলো’, ছয় ভাষাশহীদদের জীবনগাথা নিয়ে বই ‘একুশের শহীদ’, মতিউর রহমানের সম্পাদনায় ‘একুশের পটভূমি একুশের স্মৃতি’ উল্লেখযোগ্য।
মওলা ব্রাদার্সের স্টল ম্যানেজার তামিম বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের পঞ্চাশ বছর নামে’ একটি বই ছিল। সেটা গত বইমেলায় শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে রিপ্রিন্ট করা হয়নি। তবে এ বছর নতুন কোনো বই আসেনি।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী মেহেদী হাসান রিফাত বলেন, ভাষা আন্দোলনের ওপর নতুন আরও তিনটা বই আসবে। সেগুলো হলো- অমর একুশে স্মরণে ‘একুশের ২১ গল্প’। ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাংলার বরেণ্য কথাশিল্পীদের একুশটি গল্পের এ সংকলন সম্পাদনা করেছেন কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। এ ছাড়া ভাষা আন্দোলনের দুই অগ্রসৈনিক শহীদ মুনীর চৌধুরীর ‘দুষ্প্রাপ্য রচনা’ এবং ‘শহীদ জহির রায়হানের আত্মকথা ও অন্যান্য রচনা’। এই দুটি গ্রন্থের সংকলন ও সম্পাদনা করেছেন কাজী জাহিদুল হক।
‘এ ছাড়া আগের কিছু বই যেমন সৈয়দ শামসুল হকের ‘বাহান্নের বিজয়গাথা’, মো. নূরুল আনোয়ারের একুশের গুলিবর্ষণ, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর কারিশমা’ রয়েছে যোগ করেন মেহেদী হাসান রিফাত।
তবে আগামী প্রকাশনী থেকে এ বছর ভাষা আন্দোলন-সংশ্লিষ্ট নতুন কোনো বই পাওয়া না গেলেও আগের কিছু বইয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেগুলো হলো- ড. এম আবদুল আলীমের ‘ভাষা আন্দোলনে ছাত্রলীগ- কতিপয় দলিল’, ‘ভাষা আন্দোলনে শেখ মুজিব- কতিপয় দলিল’, ‘রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলনে রফিকুল ইসলাম’, ‘সিরাজগঞ্জে ভাষা আন্দোলন’, ‘আওয়ামী লীগ ও ভাষা আন্দোলন’, ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’, বশির আল হেলালের ‘ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস’ উল্লেখযোগ্য।
সময় প্রকাশনের বিক্রয় প্রতিনিধি আবির হাসান বলেন, ‘আমাদের নতুন কোনো বই আসেনি। তবে আগের তিনটি বই আছে। সেগুলো হলো- আহমদ রফিকের ‘ভাষা আন্দোলন- ইতিহাস ও উত্তরপ্রভাব’, হাসান হাফিজুর রহমানের সম্পাদনায় ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ এবং মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’।
এ ছাড়া সেলিনা হোসেনের ‘যাপিত জীবন’, জহির রায়হানের ‘আরেক ফাল্গুন’, আনিসুর হকের ‘যারা ভোর এনেছিল’, বদরুদ্দীন উমরের ‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি-১’, এম আর আখতার মুকুলের ‘একুশের দলিল’, ‘ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা’, হুমায়ুন আজাদের ‘ভাষা আন্দোলন’, রফিকুল ইসলামের ‘ভাষা আন্দোলন ও শহীদ মিনার’, মুহাম্মদ শফীর ‘ভাষা আন্দোলনের আগে ও পরে’ এবং আহমদ রফিকের ‘ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি ও কিছু জিজ্ঞাসা’ বইগুলো উল্লেখযোগ্য।
২০তম দিনে নতুন বই ৯৯টি
আজ মঙ্গলবার মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং চলে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। এদিন নতুন বই এসেছে ৯৯টি। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ: জামাল নজরুল ইসলাম শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজ্ঞানবক্তা আসিফ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সুব্রত বড়ুয়া এবং আরশাদ মোমেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান।
প্রাবন্ধিক বলেন, অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গাণিতিক, পদার্থবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং বিশ্ববরেণ্য কসমোলজিস্ট। আন্তর্জাতিক মহলে তিনি জে এন ইসলাম হিসেবে পরিচিত।
আলোচকবৃন্দ বলেন, অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামের বিজ্ঞানচিন্তা ও গবেষণার পরিসর ছিল অনেক বিস্তৃত। তিনি আন্তর্জাতিক বুদ্ধিবৃত্তিক পরিমণ্ডলে বিশিষ্ট অবস্থান অধিকার করেছিলেন। তিনি কেবল বড় বিজ্ঞানীই ছিলেন না, একজন সংস্কৃতিবান ও দেশপ্রেমিক মানুষও ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম বড় বিজ্ঞানী হয়েও ছিলেন নিরহংকারী, অত্যন্ত আন্তরিক, সদাশয় ও সরল মনের অধিকারী একজন মানুষ। তিনি বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি আতাহার খান, কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামাল, গবেষক চৌধুরী শহীদ কাদের এবং লেখক ও পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিল।
অমর একুশের কর্মসূচি
আগামীকাল শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। রাত সাড়ে ১২টায় একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে। বইমেলা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল ৮টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর। সভাপতিত্ব করবেন কবি শামীম আজাদ।
অমর একুশে বক্তৃতা ২০২৪
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে অমর একুশে বক্তৃতা ২০২৪। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। অমর একুশে বক্তৃতা প্রদান করবেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
সরকার থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা থেকেই নির্বাচন করার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রোববার কুমিল্লা-৩ আসনের বদলে ঢাকা-১০ আসনের ভোটার হতে ধানমন্ডি থানা নির্বাচন অফিসে গিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এমনটা জানান তিনি।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘যেহেতু ঢাকা থেকে নির্বাচন করবো এটা মোটামুটি নিশ্চিত, সেই জায়গা থেকেই নিজের ভোটটা ঢাকায় নিয়ে আসা। কারণ, ভোটটা যাতে অপচয় না হয়। আমি যদিও ভোটার হয়েছি আগে, কিন্তু কোনও নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি। আমি ভোটার হওয়ার পর দুটি নির্বাচন হয়েছে, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে। আপনারা সবাই জানেন এই সময়ে কেউ ভোট দিতে পারেনি। এই নির্বাচনে যাতে ভোট দিতে পারি, সেটি নিশ্চিত করালাম।’
ঢাকা-১০ আসন থেকে নির্বাচনের গুঞ্জন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কোথা থেকে করবো এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে ঢাকা থেকেই করবো। এখন পর্যন্ত পরিকল্পনা স্বতন্ত্র নির্বাচন করার, তারপরও দেখা যাক কী হয়। আমার কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। কোনও রাজনৈতিক দল কোনও আসন ফাঁকা রাখলো কী রাখলো না, সেটি আমার দেখার বিষয় না। আমি আমার সিদ্ধান্ত এককভাবেই নেবো।’
ভোটার এলাকা পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার সরকার থেকে পদত্যাগ করে ধানমন্ডি এলাকায় থাকার পরিকল্পনা আছে। সেই জায়গা থেকেই যেখানে থাকবো, সেখানেই ভোটার হওয়া। নির্বাচন করার জন্য কোথায় ভোটার হলেন, সেটি গুরুত্বপূর্ণ না, দেশের নাগরিক ও ভোটার হলেই যথেষ্ট। এই জায়গা থেকেই ঢাকায় ভোটার হওয়া, যাতে নির্বাচনের সময় আমার ভোটটা অপচয় না হয়।’
কবে নাগাদ পদত্যাগ করতে পারেন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নিশ্চিতভাবেই বলছি, আমি নির্বাচন করবো। তবে কবে নাগাদ পদত্যাগ করবো সেটি সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্তের ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে। আলোচনা করে সে বিষয়ে দ্রুতই জানাবো।’
জুলাই সনদ নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। সরকার জনগণকে নিয়েই ভাবছে। বিচার, সংস্কার, গণতান্ত্রিক রূপান্তর নিয়ে সমানভাবেই এগিয়ে চলছে। বিচারের বিষয়ে এ মাসের মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হবে। আর সংস্কার কার্যক্রম চলমান। নির্বাচন নিয়ে সরকার খুব স্পষ্ট।’
রপ্তানির আড়ালে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা (৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বিদেশে পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এএসএফ রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৭টি মানিলন্ডারিং মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার বিকেলে রাজধানীর মালিবাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ছিগবাত উল্লাহ।
তিনি বলেন, সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের তদন্তে প্রমাণ মিলেছে ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত ১৭টি করপোরেট প্রতিষ্ঠান বৈদেশিক বাণিজ্যের নামে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করেছে।
তদন্তে জানা যায়, এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে-অ্যাডভান্স গার্মেন্টস, অ্যাপোলো এপারেলস, অটোম্যান লুপ অ্যাপারেলস, বিক্সটেক্স গার্মেন্টস, কসমোপলিটান অ্যাপারেলস, কজি অ্যাপারেলস, ইসেস ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনাল, কাঁচপুর অ্যাপারেলস, মিড ওয়েস্ট গার্মেন্টস, পিয়ারলেস গার্মেন্টস, পিঙ্ক মেকার গার্মেন্টস, প্লাটিউর গার্মেন্টস, স্কাইনেট অ্যাপারেলস, স্প্রিংফুল অ্যাপারেলস, আরবান ফ্যাশন ও উইন্ট্রা ইস্প্রিন্ট গার্মেন্টস লিমিটেড।
এসব প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংকের মতিঝিল শাখা থেকে এলসি খুলে রপ্তানি দেখালেও বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে ফেরত আনেনি। বরং সেই অর্থ দুবাইভিত্তিক আর আর গ্লোবাল ট্রেডিং লিমিটেডের মাধ্যমে আমিরাত, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আয়ারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে।
আর আর গ্লোবাল ট্রেডিং লিমিটেডের মালিকানা রয়েছে সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং চেয়ারম্যান এএসএফ রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের নামে।
২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ৯৬ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮০ মার্কিন ডলার রপ্তানি দেখানো হলেও, এর বিপরীতে কোনো অর্থ দেশে ফেরত আসেনি। যা সরাসরি মানিলন্ডারিংয়ের শামিল বলে সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে।
২০২৪ সালের ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর মতিঝিল থানায় ১৭টি মামলা দায়ের করে সিআইডি। পরবর্তী তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন চাওয়া হলে তা সম্প্রতি অনুমোদন পায়।
সম্পদ ক্রোক ও নিষেধাজ্ঞা
আদালতের নির্দেশে আসামিদের ঢাকার দোহার উপজেলার প্রায় ২ হাজার শতক জমি ও স্থাপনা, গুলশানের দ্য এনভয় বিল্ডিংয়ের ৬ হাজার ১৮৯.৫৪ বর্গফুট ফ্ল্যাট এবং গুলশান ৬৮/এ, রোড ৩১’এর ২ হাজার ৭১৩ বর্গফুট ট্রিপ্লেক্স ফ্ল্যাট ক্রোক করেছে সিআইডি। এছাড়া আসামিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে এবং বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ক্রোককৃত সম্পত্তির বাজারমূল্য আনুমানিক ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা।
মামলাগুলোয় বেক্সিমকো চেয়ারম্যান এএসএফ রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, আহমেদ শাহরিয়ার রহমানসহ মোট ২৮ জন ব্যক্তি ও ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে আসামি করা হয়েছে।
এ বছরের জানুয়ারিতে অটোম্যান লুপ অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াসিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। বর্তমানে কারাগারে থাকা সালমান এফ রহমানকেও এ মামলাগুলোয় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট জানায়, ট্রেড-বেইজড মানিলন্ডারিংয়ের এই জটিল তদন্ত দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করে রাষ্ট্রের আর্থিক স্বার্থ রক্ষায় আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি।
প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক দুই ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) তুহিন ফারাবি ও মাহমুদুল হাসানের সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদেরকে ২১ কর্মদিবসের মধ্যে এ বিষয়ক তথ্য দিতে বলা হয়েছে।
পৃথকভাবে তাদের কাছে সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য গত বৃহস্পতিবার নোটিশ পাঠানোর তথ্য দিয়েছিল দুদক। সংস্থাটির উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চত করেন।
সাবেক দুই পিও এর সম্পদের হিসাব চাওয়ার বিষয়ে কমিশনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, দায়িত্ব পালনকালে অনিয়ম ও অস্বাভাবিক সম্পদ অর্জনের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সম্পদ বিবরণী জমা পড়ার পর তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পৃথক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।
তুহিন ফারাবি ও মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ- তারা চিকিৎসক বদলি, দরপত্র প্রভাবিত করা এবং প্রশাসনিক ‘তদবিরের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ’ অর্জন করেছেন।
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শেষের তথ্য দিয়ে তুহিন ফারাবি ও মাহমুদুল হাসনকে দেওয়া পৃথক নোটিশে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের ‘স্থির বিশ্বাস’ তারা ‘জ্ঞাত আয়ের বহির্ভূত’ স্বনামে/বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ/সম্পত্তির মালিক হয়েছেন।
‘সেহেতু দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ৫ নং আইন) এর ধারা ২৬ এর উপ-ধারা (১) দ্বারা অর্পিত ক্ষমতাবলে আপনি আপনার নিজের, আপনার স্ত্রী এবং আপনার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের স্বনামে/বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও উহা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী অত্র আদেশ প্রাপ্তির ২১ (একুশ) কার্যদিবসের মধ্যে এতসঙ্গে প্রেরিত ছকে দাখিল করিতে নির্দেশ দেওয়া যাইতেছে।’
এছাড়া নোটিশে তাদের সতর্ক করে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করলে বা মিথ্যা তথ্য দিলে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ধারা ২৬(২) অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে দুদকের আবেদনের পর গত ২৭ মে আদালত তুহিন ফারাবি ও মাহমুদুল হাসানের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দেয়। গত ২১ মে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। আমি উপদেষ্টার পিও পদ থেকেও পদত্যাগ করছি।’
সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী গত ২৭ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ এনে দুদকে অনুসন্ধানের আবেদন করেন। এরপর দুদক তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করে।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর অর্ধেক সদস্যকে মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এসময় তিনি ঢাকায় আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচি ঘিরে ‘কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই,’ বলেও উল্লেখ করেন।
রোববার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির সভা হয়। ওই সভার সিদ্ধান্তের বরাতে সেদিন একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকা সেনাবাহিনীর ৫০ শতাংশ সদস্যকে মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্রাম ও নির্বাচনকালীন প্রশিক্ষণের জন্য অর্ধেক সদস্যকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, যা পরের দিন (বুধবার) থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
তবে রোববারের ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এই মুহূর্তে সেনাবাহিনী আগে যেমন ছিল, তেমনই থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর ৫০ শতাংশ সদস্যকে মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না; এ সংক্রান্ত যা ছড়িয়েছে সেটা গুজব, এরকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
এদিকে ১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ঢাকায় যে লকডাউন কর্মসূচি দিয়েছে, ব্রিফিংয়ে সে বিষয়েও প্রশ্ন করা হয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে। জবাবে তিনি বলেন, ‘কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই।’
আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে সরকার শঙ্কিত কি না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, তারা লকডাউন বা শাটডাউনের যে কর্মসূচি রেখেছে সেই বিষয়ে সরকার শঙ্কিত নয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে মাইলফলক।
রোববার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সিইসি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে আমাদের জন্য একটা মাইলফলক। একদিকে সারাবিশ্বে তাকিয়ে আছে। আরেকদিকে দেশবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে। আমাদের তরুণ সমাজ বিশেষত যারা প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন, তাদের যে আগ্রহ, তা আমাদের জন্য অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক। আপনার ভোট আপনার শক্তি। নিজে ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন এবং অন্যকেও ভোটদানে উৎসাহিত করুন।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো, সানাউল্লাহ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, প্রথমবারের মতো প্রবাসী থেকে আপনার ভোট নিশ্চিতকল্পে নির্বাচন কমিশন একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আশাকরি সবার সহযোগিতায় এ উদ্যোগ সফল হবে।
নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ বলেন, নির্বাচনকালীন আপনার দেওয়া একটা ভুল ও মিথ্যা তথ্যের কারণে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। আমাদের সবার দায়িত্ব, যেন কোনো কোনো খবর অন্ধভাবে বিশ্বাস করে যেন বিভ্রান্ত না হই। সত্যিকারের উৎস থেকে খবর সংগ্রহ করতে হবে বা সরাসরি নির্বাচন কমিশন বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, প্রত্যেক প্রার্থী ও সবার প্রতি আহ্বান, আচরণ বিধি ও বিধি-বিধান কঠোরভাবে মেনে চলবেন।
নির্বাচন কমিশনার বেগম তাহমিদা আহমেদ বলেন, নারী পুরুষ প্রায় সমান সমান। ভোট অবশ্যই জেন্ডারবান্ধব হতে হবে। কাউকে অধিকার বঞ্চিত করার অধিকার কারো নেই। তারা যাতে সঠিকভাবে সর্বাধিক ভোট দিতে পারে আমরা সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ভোট একটা সমন্বয়ের ব্যাপার। প্রত্যেকটা মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা অঙ্গীকার করছি জাতিকে একটা ভালো নির্বাচন উপহার দেবো।
আগামী ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল দিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটগ্রহণ করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এজন্য সব প্রস্তুতি গুছিয়ে নিচ্ছে সংস্থাটি।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে ঋণের নামে ৯ হাজার ২৮৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। লভ্যাংশ ও সুদসহ বর্তমানে ওই অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৪৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। পরিমাণের দিক থেকে এটি দুদকের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ দুর্নীতির মামলা বলে জানিয়েছে দুদক।
রোববার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. তানজির আহমেদ এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, স্ত্রী ফারজানা পারভীন, ভাই সহিদুল আলম ও রাশেদুল আলম, এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন কর্মকর্তা, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব উল আলম ও মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তাহের আহমেদ চৌধুরীসহ সাবেক ও বর্তমান পরিচালক ও বিনিয়োগ কমিটির সদস্যরা।
দুদক জানায়, ২০১৭ সালে ব্যাংকটি এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে আসার পর ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বিনিয়োগ কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম সংঘটিত হয়। ব্যাংকের আইটি সফটওয়্যার ‘টর্চ’-এ জালিয়াতি করে অনুমোদন ছাড়া ঋণসীমা বৃদ্ধি, মেয়াদ পরিবর্তন ও বিনিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়।
২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ঋণসীমা ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা থেকে ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় উন্নীত করে- যা ব্যাংকের মূলধনের ৩৫ শতাংশেরও বেশি। এতে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ২৬ খ (১) ধারা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি সার্কুলার নং-০২/২০১৪ ও ১৬/২০১৮ এর একক ঋণগ্রহীতা সংক্রান্ত বিধান স্পষ্টভাবে লঙ্ঘিত হয়।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, এস আলম রিফাইন্ড সুগার, এস আলম স্টিলস ও এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের অনুকূলে অপ্রতুল জামানত রেখে ঋণ অনুমোদন ও নবায়ন করা হয়। গ্রাহকের ব্যবসায়িক টার্নওভার, আয় ও পারফরম্যান্স সন্তোষজনক না থাকা সত্ত্বেও ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঋণ বৃদ্ধি অনুমোদন করেন।
এছাড়া, ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তাহের আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আইটি বিভাগে সফটওয়্যার ম্যানিপুলেশনের মাধ্যমে প্রায় ৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা অনুমোদন বিহীনভাবে স্থানান্তর করা হয়। ১৩৪টি ডিলের মাধ্যমে আহসান এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক ট্রেডার্স, এপারচার ট্রেডিং, আনসার এন্টারপ্রাইজসহ নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে টাকা স্থানান্তর করা হয়, যা পরবর্তীতে এস আলম গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যেমন গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন, সোনালী ট্রেডার্স, এস এস পাওয়ারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয়।
২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর ইসলামী ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে স্থানান্তরিত ২৯০ কোটি টাকার সমপরিমাণ ২ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার সিঙ্গাপুরের ব্যাংক অব চায়না শাখায় এস এস পাওয়ার-১ লিমিটেডের অফশোর অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়, যা অর্থপাচারের স্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
এ ঘটনায় মোট ৬৭ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪০৯/৪০৬/১০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১২০(বি) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানায় দুদক।
দুদক জানিয়েছে, এ মামলায় তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে আরও নতুন নাম যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের অর্থনৈতিক অনিয়মের এই ঘটনা এখন দেশের সবচেয়ে আলোচিত দুর্নীতির কেলেঙ্কারি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেশের আর্থিক খাতে এস আলম গ্রুপের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় সামনে আসে। এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে দুদকে আরও কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে ‘জালিয়াতির’ অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের করা পৃথক তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকদের বিরুদ্ধে আরও ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
রোববার ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ মো. রবিউল আলম সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
সাক্ষীরা হলেন- ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন, ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ ও আরেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামান, সোনালী ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনির হোসেন, রাজউকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও শাখা প্রধান লায়লা নূর বিশ্বাস, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালক মো. আল মামুন মিয়া, রাজউকের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম অপারেটর মো. জাকির হোসাইন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মো. জহিরুল ইসলাম খান, রাজউকের উপসচিব তানজিলুর রহমান, দুদকের কনস্টেবল আজহারুল ইসলাম, ঢাকার সাব রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান ও গাজীপুরের সাব রেজিস্ট্রার সোহেল রানা।
দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, ‘তিন মামলায় মোট ২২ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে। এর মধ্যে রেহানা যে মামলায় প্রধান আসামি ওই মামলায় আটজন, টিউলিপের মামলায় সাতজন এবং ববির মামলায় সাতজন সাক্ষ্য দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এসব মামলার আসামিদের মধ্যে একমাত্র রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম কারাগারে আছেন। তার পক্ষে তিন মামলার বাদীকে জেরা করার আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন।’
আদালত রেহানার মামলার পরবর্তী দিন ১৬ নভেম্বর, টিউলিপের মামলা ২৩ নভেম্বর ও ববির মামলা ২৫ নভেম্বর ধার্য করা হয়েছে। ওইদিন বাদীদের জেরা করবেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। পাশাপাশি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের সাক্ষ্যগ্রহণও হবে বলেও প্রসিকিউটর বলেছেন।
এদিন শুনানিকালে খুরশীদ আলমকে আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষে আইনজীবী শাহীনুর রহমান জামিন চেয়ে শুনানি করেন। তবে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদেশ দেয়।
প্লট বরাদ্দের তিন মামলায় গেল ২৯ অক্টোবর আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন খুরশীদ আলম। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। গেল ২ নভেম্বর এই তিন মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর। তাই নির্বাচন নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি বা শঙ্কার কারণ নেই।
রাজশাহী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের লিগ্যাল এইড অফিসে বিচারকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ড. আসিফ বলেন, জাতীয় নির্বাচনে বিলম্ব করার কোনো কারণ নেই। এটি নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের সময় শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১৬-১৭ বছরে কোনো জাতীয় নির্বাচন না হওয়ায় মানুষের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ থাকাটা স্বাভাবিক। এই সময়ে প্রায় ৫ কোটি মানুষ কখনো ভোট দিতে পারেননি। তাই আসন্ন নির্বাচন তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষদের মধ্যে ভোট নিয়ে উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে। তারা অধীর আগ্রহে ভোটের জন্য অপেক্ষা করছে।
ড. আসিফ লিগ্যাল এইড অফিস পরিদর্শন করে জানান, আদালতের দৈনন্দিন কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার জন্য একজন বিচারকের জায়গায় এখন তিনজন বিচারক দায়িত্বে থাকবেন। এতে মামলার চাপ কমবে।
তিনি বলেন, ‘আদালত সংস্কারে আমরা নানান উদ্যোগ নিচ্ছি। এর সুফল জনগণ অবশ্যই পাবে।’
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, জামিন দেওয়া শুধু বিচারকের উপর নির্ভর করে না। পুলিশ কী রিপোর্ট দিচ্ছে তার উপরও নির্ভর করে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে কিংবা কণ্ঠ শোনা গেছে এরকম হলে ব্যতিক্রম হয়।
এ সময় রাজশাহী আদালতের বিচারকবৃন্দ ও পিপি-এপিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আগামী ১৩ নভেম্বর ঢাকা লকডাউন নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কা নেই, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম এখন নিষিদ্ধ।
আজ রোববার বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগের ডাকা কর্মসূচি নিয়ে কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই।
মোতায়েনকৃত সেনাবাহিনীর ৫০ শতাংশ তুলে নেয়ার বিষয়ে তিনি জানান, সেনাবাহিনী আগের মতোই মাঠে থাকবে। মাঠ থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার করা হবে না। সূত্র: বাসস
পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নাভিদ আশরাফ ৩ দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। সফরের অংশ হিসেবে গতকাল রোববার বনানীতে নৌবাহিনী সদরদপ্তরে বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এর আগে তিনি নৌবাহিনী সদরদপ্তরে এসে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান তাকে স্বাগত জানান। এ সময় বাংলাদেশে নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। তিনি গার্ড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন।
সাক্ষাৎকালে উভয় দেশের নৌবাহিনী প্রধান পারস্পরিক কুশলাদি বিনিময় করেন। দুদেশের নৌবাহিনীর মধ্যকার পেশাগত ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে এ সময় আলোচনা হয়। এছাড়াও, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রতিনিধি দল, পাকিস্তান হাই কমিশনার, ডিফেন্স এ্যাটাশে ও নৌবাহিনী সদরদপ্তরের পিএসওরা এবং উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধান শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে একাত্তরের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাৎ বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। একই দিনে তিনি সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ সফরকালে বিমান বাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, কমান্ড্যান্ট ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ এবং চট্টগ্রামের নৌ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
একই সময় পাকিস্তান নৌবাহিনী জাহাজ ‘পিএনএস সাইফ’ শুভেচ্ছা সফরে চট্টগ্রামে আসে। জাহাজের অধিনায়কসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও নৌ সদস্যরা চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি, নৌবাহিনী ঘাঁটি এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করবেন। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরাও পাকিস্তান নৌবাহিনী জাহাজ ‘পিএনএস সাইফ’ পরিদর্শন করবেন।
প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নাগরিক অংশগ্রহণ আরও জোরদার করতে স্বেচ্ছাসেবক নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছে বন অধিদপ্তর। এই কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করছে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, ঢাকা।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা, আবাসস্থল রক্ষা, বন্যপ্রাণী উদ্ধার এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রমে যারা ইতোমধ্যে যুক্ত আছেন বা আগ্রহী, তাদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ফরম পূরণের আহ্বান জানানো হয়েছে। সংগৃহীত তথ্য সরকারি কাজে ব্যবহৃত হবে।
স্বেচ্ছাসেবকরা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, অবৈধ বন্যপ্রাণী বাণিজ্য প্রতিরোধ, প্রাকৃতিক আবাসস্থল পুনরুদ্ধার এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন।
এছাড়াও, নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করবে বন অধিদপ্তর। তাদের প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদান বা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হবে।
নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে নিচের লিংকে ফরমপূরণ করা যাবে: https://forms.gle/Hy6kgbpqKdHuv1SY8
প্রয়োজনে- বন সংরক্ষক, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, ঢাকা মোবাইল: ০১৯৯৯০০০০৪২ ইমেইল: [email protected], [email protected] এ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে তরুণ সমাজ ও সাধারণ জনগণকে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণের কর্মযাত্রায় সম্পৃক্ত করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষায় নাগরিকদের সক্রিয় ভূমিকা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও সবুজ পৃথিবী গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগ মুহূর্তের প্রস্তুতিমূলক কাজ দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ বসছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৩ নভেম্বর থেকে শুরু হবে এ সংলাপ। রোববার সকালে এ তথ্য জানা গেছে।
ইসি সচিবালয় থেকে জানা গেছে, নির্বাচনী সামগ্রী সংগ্রহ, আইন সংশোধন, ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ মৌলিক প্রস্তুতির সবকিছুই নভেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে। ডিসেম্বরের শুরুতে নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগেই সব প্রস্তুতি শেষ করবে ইসি।
ইসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ৩৮২ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার রয়েছেন ১ হাজার ২৩০ জন। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দুই মাসে ভোটার বেড়েছে ১৩ লাখ ৪ হাজার ৮৮০ জন।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, আগামী ১৮ নভেম্বর প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। এর আগে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ থাকবে।
ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনের ভোটার হচ্ছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।
রোববার সকালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, আজ বিকেলে ঢাকা-১০ আসনের ধানমন্ডি থানার নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে ভোটার হওয়ার আবেদন করবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এই সমন্বয়ক।
এতে আরও বলা হয়, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বেলা তিনটায় ধানমন্ডি থানা নির্বাচন কার্যালয়ে উপস্থিত থাকবেন। তিনি ধানমন্ডি থানার ভোটার হবেন।
ঢাকা-১০ নির্বাচনী আসনটি ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, কলাবাগান ও হাজারীবাগ থানা নিয়ে গঠিত। বিএনপি এই আসনে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে জামায়াতে ইসলামী এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। জামায়াতের প্রার্থী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জসীম উদ্দিন সরকার।
এর আগে মুরাদনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-৩ আসনের ভোটার ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এই আসন থেকে তিনি নির্বাচন করতে পারেন, এমন আলোচনাও শোনা গিয়েছিল। সম্প্রতি গুঞ্জন তৈরি হয়, বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে সরকার থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা-১০ আসনে নির্বাচন করতে পারেন আসিফ মাহমুদ। বিএনপি এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা না করায় গুঞ্জন আরও জোরালো হয়। এখন আসিফ মাহমুদের এই আসনের ভোটার হতে যাওয়ার মধ্য দিয়ে গুঞ্জনটি আরও পাকাপোক্ত হচ্ছে।