মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

মিউনিখ সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

ছবি: ফোকাস বাংলা
আপডেটেড
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১১:৫৭
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১১:৫৭

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, জার্মানির মিউনিখে তার ফলপ্রসূ সফরের ফলে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের শান্তি, সার্বভৌমত্ব ও সর্বাঙ্গীন নিরাপত্তার প্রতি অঙ্গীকার বলিষ্ঠরূপে প্রতিফলিত হয়েছে।

তিনি আজ তাঁর মিউনিখ সফরের বিষয়ে রাজধানীর গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত ভাষণে এ কথা বলেন।

তাঁর ভাষণের পূর্ণ বিবরণ নিচে দেয়া হলো:

“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,

আসসালামু আলাইকুম। শুভ সকাল। গত ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ জার্মানির মিউনিখ শহরে অনুষ্ঠিত ৬০তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করি। মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন মূলতঃ রাষ্ট্র/সরকার প্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিও নেতৃবৃন্দ, মিডিয়া, সুশীল সমাজ, সরকারি এবং বেসরকারি খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিগণের অংশগ্রহণ করেন। এটি সমকালীন ও ভবিষ্যত নিরাপত্তার স্বার্থে উচ্চ-পর্যায়ের নিয়মিত আলোচনার একটি শীর্ষস্থানীয় ফোরাম হিসেবে বিবেচিত। এ বছরের ফোরামে ৩৫-জনেরও বেশী রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান অংশগ্রহণ করেছেন।

বড় শক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দিতা এবং আঞ্চলিক সংঘাত, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, নিউক্লিয়ার নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু নিরাপত্তা, তথ্য নিরাপত্তা, পানি নিরাপত্তা, অভিবাসন, সাপ্লাই চেইন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মহামারি ইত্যাদি বিষয়ে এবারের ফোরামে আলোচনা করা হয়।

সফরের প্রথম দিন ১৬ ফেব্রুয়ারি আমি ‘ফ্রম পকেট টু প্লানেট: স্কেলিং আপ ক্লাইমেট ফাইন্যান্স’ সংক্রান্ত একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করি। এই আলোচনায় আমার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত মান্যবর জন কেরি, বারবাডোসের প্রধানমন্ত্রী মান্যবর মিয়া আমোর মটলে, এবং মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মান্যবর মোসা জামির।

প্যানেলটিতে উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে আমি বক্তব্য প্রদান করি। বক্তব্যের শুরুতেই আমি গাজা ও বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে চলমান যুদ্ধ-বিগ্রহ, অবৈধ দখলদারিত্ব এবং নিরস্ত্র মানুষের, বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের, অমানবিক হত্যার কবল থেকে মুক্ত করে সকল প্রকার যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করার জোর আহ্বান জানাই। আর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার বিরূপ প্রভাব যে যুদ্ধক্ষেত্র থেকেও বহুদূর পর্যন্ত অনুভূত হয়, এ বিষয়ে আমি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করি। এ প্রসঙ্গে আমি অর্থহীন অস্ত্র-প্রতিযোগিতার সমাপ্তি ঘটিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় রসদ ও অর্থায়ন সহজলভ্য ও কার্যকর করার জন্য সকলকে অনুরোধ করি। মানবতার অস্তিত্বের সংটকালে ক্ষুদ্র স্বার্থ যে শুধু অনর্থই বয়ে আনে - এই রূঢ় বাস্তবতা আমি সকলের সামনে তুলে ধরি। আর তাই, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং তা মোকাবিলায় অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানাই।

আমি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সমস্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অর্থায়নের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার জন্য বিশ্বের সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাই। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বহুবিধ নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্থ দেশ ও জনগোষ্ঠীর জন্য অর্থায়নের পরিমাণ বৃদ্ধি, প্রতিশ্রুত অর্থের বাস্তবিক হস্তান্তর, ঝুঁকিপূর্ণ দেশসমূহে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নিশ্চিতকরার উপর আমি বিশেষভাবে জোর দেই। জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক ঝুঁকি মোকাবিলায় আমি ধনী দেশসমূহের রাজনৈতিক অঙ্গীকারের দ্রুত বাস্তবায়ন এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে পারস্পরিক অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার ভিত্তিতে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাই।

এদিন আমার হোটেল স্যুইটে উইমেন পলিটিক্যাল লিডার্স (ডব্লিউপিএল)-এর সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা মিসেস সিলভানা খক্ মেহরিন আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তিনি আমাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানান এবং গত দেড় দশকে বাংলাদেশে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য আমাকে ডব্লিউপিএল-জি ট্রাইলব্লাজের এওয়ার্ড ২০২৩ গ্রহণের জন্য তিনি আমাকে আগামী ২০ মার্চ ২০২৪ তারিখ এথেন্সে অনুষ্ঠিতব্য ডব্লিউপিএল সামিট-এ অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান। আলোচনায় আমি আমাদের সরকারের- বিশেষ করে নারীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত নীতিসমূহের বিষয়ে আলোকপাত করলে এ বিষয়ে পশ্চিমা বিশ্বের বাংলাদেশের নীতি ও কার্যক্রমসমূহ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

একইদিন আমি কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মান্যবর মোহাম্মদ বিন্ আব্দুলরাহ্মান আল-সানি-র সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করি। তিনি আমাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জ্ঞাপনের পাশাপাশি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আলোচনাকালে পারস্পরিক ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, এলএনজি সরবারহ প্রভৃতির পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই ও দ্রুত সমাধানে কাতারের অব্যাহত সমর্থনের ব্যাপারে তিনি আশ্বস্ত করেন। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সহিংসতা বন্ধে একযোগে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কেও আমরা আলোচনা করি।

এরপর আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন নীতি ও অংশীদারিত্ব বিষয়ক জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মান্যবর আক্সেল ভন ট্রটসেনবার্গ। বাংলাদেশে ও বিশ্বব্যাংকের ৫০ বছরের অংশীদারিত্বের প্রেক্ষাপটে আমি মধ্যম আয়ের দেশভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অবদানের আলোকে বর্তমান অর্থবছরে বাজেট সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংক হতে অঙ্গীকারকৃত ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দ্রুত ছাড়ের আহ্বান জানাই। পাশাপাশি আমি জোরপূর্বক স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে এবং এই সমস্যার বিরূপ প্রভাবে আক্রান্ত দেশ হিসেবে বাংলাদশকে প্রদত্ত ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থায়ন সহায়তার জন্যও তাকে ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্যম আয় ও উচ্চ-আয়ের দেশের পর্যায়ে উত্তীর্ণ হবার কাঙ্ক্ষিত পথে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেন।

একই দিনে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক মান্যবর ডক্টর টেড্রস আধানম গেব্রিয়েসাস আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে-বিশেষ করে মৌলিক স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের অর্জনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি আসন্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সমাবেশে আমাকে আমন্ত্রণ জানান এবং বিশ্বের বাকি দেশসমূহকে বাংলাদেশের কম্যুনিটি ক্লিনিক মডেল অনুসরণ করার বিষয়ে অনুপ্রাণিত করার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন।

আলোচনাকালে আমি বর্তমান সরকারের সেকেন্ডারি ও টার্শিয়ারি স্বাস্থ্যসেবা, টীকা উৎপাদন, এন্টি-মাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ, নার্সিং ও অন্যান্য স্বাস্থ্যখাতে মানব সম্পদ উন্নয়ন ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপসমূহের কথা উল্লেখ করে এতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তা আশা করি। এ বিষয়ে মহাপরিচালক আমাকে আশ্বস্ত করেন এবং আন্তর্জাতিক অতিমারি চুক্তি-এর দ্রুত সমাপনে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সমর্থন কামনা করেন।

এইদিন আমার সঙ্গে আরও সাক্ষাৎ করেন মেটা-জি গ্লোবাল এফেয়ার্স এর প্রেসিডেন্ট ও যুক্তরাজ্যের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী স্যার নিক্ ক্লেগ্। তিনিও আমাকে পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানান। বাংলাদেশের ডিজিটাল খাতের উন্নয়ন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটাল বাণিজ্যের ক্ষেত্র সুবিস্তারে সরকারের ভূমিকার ভূয়সী প্রংসা করেন তিনি। আমি ডিজিটাল বাংলাদেশ অর্জনে আমাদের সফলতা তুলে ধরি এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ ও তথ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে মেটা-এর সহযোগিতা আশা করি। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে বিভিন্ন মেটা প্ল্যাটফর্ম যেমন ফেইসবুক, হোয়াটস্অ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম প্রভৃতির ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক ব্যবহারকারির সুউচ্চ সংখ্যার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমি বাংলাদেশে মেটা-এর একটি কার্যালয় স্থাপনের পরামর্শ দিই।

প্রথম দিন আমি ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মান্যবর মেটে ফ্রেডরিক্সেন-এর সাথে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করি। বৈঠককালে আমাকে ও আমাদের নবগঠিত সরকারকে উষ্ণ অভিনন্দন জানানোর জন্য তাঁকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আলোচনাকালে বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং আইসিটি খাতে ড্যানিশ কোম্পানিসমূহের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের পাশাপাশি তিনি বিরাজমান রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তাঁর সরকারের মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকার বিষয়েও আমাকে আশ্বস্ত করেন।

সফরের দ্বিতীয় দিন ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে নেদারল্যান্ডস্-এর প্রধানমন্ত্রী মান্যবর মার্ক রুটে আমার সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠককালে নেদারল্যান্ডস্-এর প্রধানমন্ত্রী আমাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানান। আলোচনাকালে আমরা দু’জনই বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়ন, কৃষি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতসমূহে জ্ঞান-প্রযুক্তি-উদ্ভাবন বিস্তারে বিদ্যমান সহযোগিতা আরও গভীরতর করার বিষয়ে ইচ্ছা প্রকাশ করি।

একইদিন সকালে আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী মান্যবর ডক্টর এস. জয়শংকর। তিনি আমাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানান। সাক্ষাৎকালে আমরা উভয়ই দুই বন্ধু-রাষ্ট্রের মধ্যে বর্তমানে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করি এবং দু’দেশের বাণিজ্য নিজস্ব মুদ্রায় পরিচালনার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত পোষণ করি। তিনি আগামী এপ্রিল/মে মাসে ভারতীয় সাধারণ নির্বাচন পরবর্তীকালে দু’দেশের নতুন সরকারের মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত পঞ্চ-বার্ষিক সহযোগিতা বিষয়ক রোডম্যাপ প্রণয়নের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আলোচনাকালে আমরা মায়ানমার ও মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত বিষয়েও পারস্পরিক মতবিনিময় করি।

এরপর আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাইট অনারেবল্ লর্ড ক্যামেরন। সাক্ষাৎকালে তিনি আমাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানান এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রেরিত শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। এসময় আমরা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিমান চলাচল অংশীদারিত্ব, অভিবাসন, রোহিঙ্গা সমস্যা এবং ইউক্রেন ও গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ এবং মায়ানমার ও লোহিত সাগরে বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করি।

একই দিনে আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন জার্মান আর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন মন্ত্রী মান্যবর সভেনিয়া শুলৎজা। আলোচনাকালে আমরা ইইউ-এর জিএসপি+ বাণিজ্য সুবিধাসহ পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে জার্মান বিনিয়োগ এবং সার্বিক জলবায়ু সহনশীলতা অর্জন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বর্ধিতকরণের বিষয়ে ইচ্ছা প্রকাশ করি।

এইদিন ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি মান্যবর ভ্লাদিমীর জেলেন্স্কি আমার সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠককালে আমরা বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করি এবং গম, ভোজ্যতেল ও অন্যান্য কৃষিপণ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সহযোগিতার ইচ্ছা প্রকাশ করি। আমি তাঁকে ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের দ্রুত সমাধানের কার্যকর উপায় অন্বেষণের অনুরোধ করি। এছাড়াও আমরা গাজা উপত্যকায় সংঘাতের বিষয়ে মতবিনিময় করি।

এরপর আমি আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি মান্যবর ইল্হাম আলিইয়্যেভ-এর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করি। বৈঠককালে আমরা পরস্পর পরস্পরকে পঞ্চমবারের মতো পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানাই। আমরা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করি। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে নেতৃত্বদানের জন্য আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি আমাকে ধন্যবাদ দেন এবং এবছর নভেম্বরে বাকু-তে অনুষ্ঠিতব্য কপ২৯-এ যোগদানের জন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানান। আলোচনাকালে আমরা উভয়ই জাতিসংঘ, জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন, ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা প্রভৃতি বহুপাক্ষিক প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করি।

এদিন আমি জার্মান চ্যান্সেলর মান্যবর ওলাফ শোলজ্-এর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করি। তিনি আমাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানান। বৈঠককালে আমরা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও হাইড্রোজেন প্রযুক্তি এবং দক্ষ অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করি। এছাড়াও, আমরা ইউক্রেন ও গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধের প্রসঙ্গে মতবিনিময় করি এবং এসকল সংঘাত দ্রুত অবসানের বিষয়ে কার্যকর উপায় অন্বেষণের জন্য আমি তাঁকে অনুরোধ করি।

এছাড়া ১৬ ফেব্রুয়ারি আমি জার্মান আওয়ামী লীগ আয়োজিত একটি নাগরিক সংবর্ধনা সভায় যোগদান করি এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি আমি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করি।

মিউনিখে আমার এই ফলপ্রসূ সফরের ফলে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের শান্তি, সার্বভৌমত্ব ও সর্বাঙ্গীন নিরাপত্তার প্রতি অঙ্গীকার বলিষ্ঠরূপে প্রতিফলিত হয়েছে। দেশের আকার নয় বরং নীতির শক্তিতেই যে মানবতার রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক মুক্তি, এবারের সম্মেলনে আমি এই বার্তাই বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছি। পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকসমূহের মাধ্যমে বন্ধুপ্রতিম দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের সাথে সম্পর্কের ধারাবাহিকতা আরও দৃঢ় হয়েছে এবং সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হয়েছে।

আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।

জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।

বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”


বিরূপ পরিস্থিতির প্রভাব, স্কুলে যেতে চায় না ৩৭% শিশু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০০:৪৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংস পরিস্থিতি, কোভিড মহামারির দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের প্রাথমিক স্তরের ৫৫.২ শতাংশ শিশু ‘ভীত বা আতঙ্কগ্রস্ত ‘হয়ে পড়েছে বলে গণসাক্ষরতা অভিযান ও ব্র্যাক শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের গবেষণায় জানা গেছে।

ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, ৩৬.৯ শতাংশ শিশু শিক্ষার্থীর মধ্যে স্কুল ‘বিমুখতা’ তৈরি হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত 'প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন আমাদের করণীয়' শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

সভায় বলা হয়েছে, জরিপে উঠে এসেছে ৩৬.৫ শতাংশ শিশু শিক্ষার্থী পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে পড়েছে, ২৮.৬ শতাংশ মানসিক ক্ষতির শিকার হয়েছে এবং ৭.৯ শতাংশ শিশুর মেজাজ হয়েছে খিটখিটে।

গণসাক্ষরতা অভিযান ও ব্র্যাক শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউট আয়োজিত সভায় প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা।

জরিপের প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে প্রতিষ্ঠান দুটি বলছে, প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে দেশের ৮টি বিভাগের সর্বমোট ২০৩টি সহয়তা সংগঠনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত নিয়ে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে।

একই সঙ্গে ১২টি আলোচনা, মতামত সংগ্রহ এবং বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে মোট ৪টি সভার মাধ্যমে এ মতামত নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে জরিপের ফল তুলে ধরেন টিচার ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হক ও গণসাক্ষরতা অভিযানের কার্যক্রম ব্যবস্থপক আব্দুর রউফ।

জরিপ বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল ছেড়ে রাস্তায় নামা, মিছিল, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, মারামারি দেখা, রাজপথে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছোড়ার দৃশ্য দেখা বা শোনা, স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং কারফিউ-অবরোধ কর্মসূচির কারণে ঘরে থাকার ফলে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের 'ট্রমা' দেখা দিয়েছে।

জরিপে দেখা গেছে, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের পরিবর্তনের ফলে স্কুলে না যাওয়ার প্রবণতা ও পড়ালেখার প্রতি অনীহা বেড়েছে।

এছাড়া ভয়-ভীতিতে থাকা, ঘুমের সমস্যা হওয়া ও দুঃস্বপ্ন দেখা, বিষণ্ণতা ও হতাশাগ্রস্ত হওয়া, মোবাইল ফোনে আসক্ত হওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, উচ্ছৃঙ্খলতা দেখা দেওয়া বা সহিংস আচরণ করা, পাঠ্যবই বা কারিকুলামে পরিবর্তন নিয়ে ভীত হওয়ার মত প্রভাবও লক্ষ্য করা গেছে।

শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছবি ও খবর দেখে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে।তাদের মধ্যে শিশুসুলভ চঞ্চলতা হারিয়েছে বা একাকীত্ববোধ সৃষ্টি হয়েছে এবং বন্যার কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি বেড়ে যাওয়ার হার বেড়েছে বলে জরিপে উঠে এসেছে।

সভায় জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়ন কমিটির সদস্য এবং শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ বলেন, “কোভিডের আগে যে শিক্ষাক্রম সংস্কার করা হয়েছে, তাতে শিক্ষার অংশীজনদের মতামত নেওয়া হয়নি। এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপর পড়েছে।“

শিক্ষায় দ্রুত পরিবর্তন ‘সম্ভব নয়’ জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন শিক্ষার্থীদের মায়েরাও শিক্ষক। সেজন্য শিশুর সঠিক শিক্ষা নিশ্চিতে প্রয়োজনে অভিভাবকদেরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে।“

এসব সংকট কাটাতে 'স্কুলে স্কুলে সাংস্কৃতিক চর্চা' বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন প্রাথমিকের শিক্ষক নেতা শাহিনূর আল আমিন।

আরেক শিক্ষক নেতা আবুল কাশেম স্কুলগুলোতে খেলার মাঠের ব্যবস্থা করার কথা তুলে ধরে বলেন, “যেসব স্কুলে খেলার মাঠ নাই, কিন্তু জমি আছে সেগুলো সংস্কার করে খেলার মাঠ স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।“

এছাড়াও জরিপে আরও কিছু ফলাফল ও সমস্যা সমাধান বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী। সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিতের জন্য তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হবে। সেজন্য আমরা মতবিনিময় সভা থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলো সরকারের কাছে তুলে ধরব, যাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।“

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সামাজিক পরিবর্তনের তাগিদ দিয়েছেন।

চলতি মাসেই ১০টি দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয় উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “এ স্কুলগুলো আলাদা আলাদাভাবে সাজানো হয়েছে। এছাড়াও আমরা বিদ্যালয়গুলো সাজানোর কাজও আমরা করছি। এগুলো শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে কাজ করবে।“

সভায় বক্তব্য রাখেন গণস্বাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক তপন কুমার দাশ, ব্র্যাক শিক্ষা ইন্সটিটিউটের সিনিয়র এডভাইজার ড. মুহাম্মদ মুসা। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এডুকেশন ওয়াচের আহ্বায়ক ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী।


সাম্প্রতিক ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ প্রক্রিয়া আইনসিদ্ধ নয়: আবদুল আউয়াল মিন্টু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ বা স্থগিত করা হচ্ছে, তা আইনসিদ্ধ হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। তিনি বলেন, ‘আদালতের প্রক্রিয়ার বাইরে অন্যায়ভাবে (ব্যাংক হিসাব) ফ্রিজ করাটা আমি নিজেও পছন্দ করি না।’

সোমবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সদস্যদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভায় দেশের বর্তমান ব্যবসা, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও করণীয় বিষয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন এই ব্যবসায়ী নেতা। অনুষ্ঠানে ইআরএফের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ সংগঠনটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর ব্যাংক হিসাব স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিআইএফইউ)। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘এখন যেটা ঘটছে, ইচ্ছা হলেই আরেকজনের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করে দেওয়া হচ্ছে। এটা আইনসিদ্ধ নয়। বিষয়টি আদালতের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হওয়া উচিত। যদি উপযুক্ত প্রমাণ থাকে, তাহলে অনুসন্ধান করে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে ফ্রিজ করা যেতে পারে। আমার ব্যাংক হিসাবও ফ্রিজ করতে পারে, আপত্তি নেই। কিন্তু যা–ই করুক আইন অনুযায়ী করুক।’

সভায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন আবদুল আউয়াল মিন্টু। তিনি বলেন, শুধু সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করায় অর্থনীতির অন্য ভিত্তিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সুদহার বাড়িয়ে টাকার সরবরাহ কমালে ঋণপত্র খোলার পরিমাণ কমে যাবে। এতে পণ্যের সরবরাহ কমবে। অর্থাৎ মুদ্রা সরবরাহ কমাতে গিয়ে পণ্যের সরবরাহ কমিয়ে মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেওয়া হবে। আর পণ্য সরবরাহের ঘাটতি থেকে তৈরি মূল্যস্ফীতি দীর্ঘস্থায়ী হয়। সুতরাং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার পাশাপাশি দেশের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

তবে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আগের তুলনায় উন্নত হচ্ছে বলে মনে করেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক এ সভাপতি। তিনি বলেন, তবে ব্যাংক খাতে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা এক দিনে ঠিক হবে না। সরকার একদিকে খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধার এবং অন্যদিকে গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। ফলে যেসব ব্যাংককে দুর্বল বলা হয়, তারা ক্রমেই ভালো করছে।

পরিস্থিতির পুরোপুরি উন্নতি করতে হলে গণতান্ত্রিক সরকার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন আবদুল আউয়াল মিন্টু। বলেন, একজন উপদেষ্টা বলেছেন যে তারা দায়িত্বে আছেন, ক্ষমতায় নেই। এটা তো ভয়ংকর কথা। গণতান্ত্রিক সরকারের জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা থাকে। তাই অতিসত্বর নির্বাচন দেওয়া, অন্তত নির্বাচন নিয়ে একটা রোডম্যাপ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

সব ক্ষেত্রে সংস্কার দরকার নেই উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, যেগুলো প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, সেগুলো তারা (সরকার) এখনই করতে পারে। তবে সাংবিধানিক সংস্কারগুলোর বিষয়ে সবার সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি প্রস্তাব তৈরি করে দিতে পারে। তাতে ভবিষ্যতে যে-ই সরকারে আসুক, তারা ওই সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করবেন।

সম্প্রতি বেক্সিমকো গ্রুপের পোশাক খাতের ১৬টি কোম্পানির মালিকানা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের উপদেষ্টা কমিটির এক সভায়। এর বাইরে এই গ্রুপের বেশ কয়েকটি কোম্পানি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘কারা বিক্রি করবে, কেন করবে? কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য বা প্রতিষ্ঠান নৈতিকও না, অনৈতিকও না। এসব প্রতিষ্ঠান যারা চালায়, তারা যদি অনৈতিক হয়, আইন মেনে তাদের বিচার হওয়া উচিত। এ নিয়ে আমি কিছু বলব না। মালিকদের শাস্তি হোক, কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান যেন বন্ধ না হয়।’

তিনি বলেন, ‘বেক্সিমকো গ্রুপের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৮২ হাজার লোক কাজ করেন। কোনো উৎপাদনশীল খাতে সরকারের এমন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না, যাতে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান ব্যাহত হয়।’

পুঁজিবাজারে নতুন কোনো দরবেশের আবির্ভাব হয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি কখনো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করিনি এবং পুঁজিবাজার থেকে কোনো মুনাফাও করিনি। আমি কখনো দরবেশ হব না। আমার এক সময় বেক্সিমকো গ্রুপের স্বত্বাধিকারী সালমান এফ রহমানের চেয়ে অনেক বেশি পাওয়ার ছিল। কিন্তু আমি এর অপব্যবহার করিনি। আমি কখনো সরকারের সঙ্গে কোনো ব্যবসা করিনি। টুকটাক যেটুকু ব্যবসা করেছি, নিজে নিজেই করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিছু কিছু লোক পুঁজিবাজারকে লটারিতে পরিণত করেছে। তারা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ না করে শেয়ার কেনা-বেচা করছে। তারা মনে করে আজ যে শেয়ার কিনব, কয়েক দিন পরেই তার দাম বাড়বে। তখন বিক্রি করে মুনাফা করব।’

ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বর্তমানে ভারতের সঙ্গে আমাদের একটা মন–কষাকষি চলছে। এর কারণ, ভারত দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক ভুলে গিয়ে শুধু একটি দলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছে। এখন সেই সরকার আর ক্ষমতায় নেই, এটা ভারতের জন্য মেনে নেওয়া কষ্টকর। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত নীতি হচ্ছে, আগে আপনি (ভারত) ৫ আগস্ট এর নীতিগত স্বীকৃতি ঠিকমতো দেন। এরপর আমরা ভবিষ্যতের দিকে আগাই। আমিও মনে করি, এটা যথাযথ চিন্তাধারা।’

ভারতকে বৃহৎ প্রতিবেশী দেশ উল্লেখ করে এই ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ভালো হওয়া উচিত। তবে একই সঙ্গে আত্মসম্মান যেন বজায় থাকে।


বিনিয়োগের অভাবে পর্যটনশিল্পের বিকাশ হচ্ছে না: হাসান আরিফ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, বাংলাদেশ পর্যটন ক্ষেত্রে হতে পারে অমিত সম্ভাবনার উৎস। কিন্তু পর্যাপ্ত বিনিয়োগের অভাবে পর্যটনশিল্পের বিকাশ হচ্ছে না। সোমবার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন (বিপিসি) পরিদর্শন শেষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

পর্যটন উপদেষ্টা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে পর্যটনশিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো পর্যটনশিল্প থেকে বিপুল পরিমাণ আয় করতে পারলেও বাংলাদেশের আয় অতি সামান্য। এ সমস্যা উত্তরণে বর্তমান সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

বিপিসি চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানার সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব নাসরীন জাহান, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফাতেমা রহিম ভীনা প্রমুখ।


রাজনৈতিক পরিচয়ে ১৫ বছরে ৯০ হাজার পুলিশ নিয়োগ: ডিএমপি কমিশনার

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, চৌদ্দগোষ্ঠীর রাজনৈতিক পরিচয় খুঁজে গত ১৫ বছরে পুলিশ বাহিনীতে ৮০ থেকে ৯০ হাজার সদস্যকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, গত ১৫ বছরে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগের আগে নানাভাবে তাদের তথ্য যাচাই করা হয়েছে। নিয়োগ পার্থী কোন দলের, তার বাবা কোন দলের, দাদা কোন দলের এবং আরও পূর্বপুরুষ কোন দলের তা খবর নেওয়া হয়েছে। দুই লাখ পুলিশের মধ্যে ৮০ থেকে ৯০ হাজার পুলিশ সদস্য এভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন।

তিনি বলেন, এই ৮০ থেকে ৯০ হাজার পুলিশ সদস্যকে তো বলতে পারি না গো হোম (বাসায় ফিরে যাও)। তবে যারা দুষ্টু, যারা পেশাদারত্বের বাইরে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়েছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ডিএমপির এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যখন পুলিশ ইনঅ্যাক্টিভ হয়ে পড়ে, তখন ঢাকা শহরে ডাকাতি, লুটপাট শুরু হয়। তখন ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি নিয়ে পাহাড়া দিয়েছেন। তখন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ট্রমার মধ্যে পড়ে যায়। এরপর সদ্যবিদায়ী ডিএমপি কমিশনারসহ অন্যরা পুলিশকে সক্রিয় করতে কাজ শুরু করেন।

চাঁদাবাজির বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, চাঁদাবাজ যেই হোক, বাদী হোক আর আমার লোক (পুলিশ) হোক, কেউ চাঁদা দেবেন না। যারাই আসামির কাছে চাঁদাবাজি করছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ, কেউ আপনারা চাঁদা দেবেন না। নগরবাসীর সহযোগিতা ছাড়া আমরা কিছু করতে পারব না।

মিথ্যা মামলা ও মামলা দিয়ে চাঁদাবাজি এবং হয়নারি করা পুলিশ সদস্য ও মামলার বাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানির ঘটনা বেড়েছে। তথাকথিত ব্যক্তিদের আসামি করে যারা চাঁদাবাজি করছে, তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হবে। যেসব লোকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হবে না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে অধিকাংশ মামলা হয়েছে কোর্টের নির্দেশে। আসামি সংখ্যা ছিল ২০০ প্লাস। দেখা যাচ্ছে এসব মামলায় অনেকে জড়িত ছিল না, গুটি কয়েক লোক জড়িত ছিল। কিন্তু এখন যেটা ঘটেছে ওই মামলার বাদী একশ লোকের কাছে গিয়ে টাকা দাবি করছে। তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা আসবে আমরা শুধু তাদের গ্রেপ্তার করব।

এসব মামলার বাদী ছাড়াও পুলিশেরও কিছু লোক কাজ করছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমার সব লোকও যে সব ভালো তা বলব না। আমার কাছে যাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট এসেছে আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি গতকাল অলরেডি একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, যিনি আমার লোক, এই কাজে লিপ্ত ছিল।

ঢাকার ট্রফিক ব্যবস্থাপনার ওপরে জোর দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা শহরের প্রধান সমস্যা ট্রাফিক। এই শহরে বিপুল সংখ্যক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। অটোরিকশা যদি বন্ধ না হয় তাহলে ঢাকা শহরের ঘর থেকে বের হলে আর হাঁটার জায়গা থাকবে না। মানুষের মুভমেন্ট বন্ধ হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে। তবে ট্রাফিকে শৃঙ্খলা ফেরাতে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য নগরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন। বিগত সরকার অটোরিকশার অনুমতি দেওয়ার কারণেই বাড়ছে অটোর সংখ্যা। অচিরেই এটি কমানো না গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে নগরবাসীকে। এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি।

ইদানিং ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, নগরবাসীর কাছ থেকে ছিনতাইয়ের অনেক অভিযোগ আসছে। ছিনতাই প্রতিরোধে ডিবি ও থানা পুলিশকে সক্রিয় করা হয়েছে যাতে রোধ করা সম্ভব হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, থানার ওসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোনো ঘটনা যেন লুকানো না হয়। যে ঘটনায় জিডি হওয়া দরকার জিডি হবে, যে ঘটনায় মামলা হওয়া দরকার মামলা হবে। এছাড়া আমি পদক্ষেপ নিচ্ছি, জিডি হলে এক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ অভিযোগকারীর কাছে যাবে। যদি মামলা হওয়ার মতো ঘটনা হয়, তাহলে অভিযোগকারীকে থানায় এনে মামলা নেওয়া হবে। আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে এই কাজটি শুরু করবো।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঢাকা মহানগর পুলিশ পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে কাজ করেছে বলে মন্তব্য করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এ ঘটনায় আমি ঢাকাসহ দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ওই সময়ের অপেশাদার আচরণের কারণে বদলি ও দোষী সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।


বাংলাদেশ নিয়ে অপতথ্য ঠেকাতে ইইউ কূটনীতিকদের সহযোগিতা চান প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশ সম্পর্কে ব্যাপক অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই মিসইনফরমেশন ঠেকাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের সঙ্গে এক বৈঠক প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা এই মিসইনফরমেশন ঠেকাতে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি।’

১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্বে দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলার। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন।

প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে ১৫ জন প্রতিনিধি তাদের মতামত তুলে ধরেন। বৈঠকে শ্রম অধিকার, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইবুনাল অ্যাক্ট, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে উভয়ের অঙ্গীকার ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বলেন, ‘ডিসেম্বরে গোটা মাসজুড়ে আমরা বিজয় উদযাপন করি। বিজয়ের মাসে আপনাদের সঙ্গে এমন একটি ইনটার‌্যাক্টিভ আলোচনায় অংশ নিতে পেরে আমি খুব আনন্দিত।’

বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন তিনি। এ সময় তিনি গত ১৬ বছর ধরে অত্যাচার, শোষণ, বলপূর্বক গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় সংক্ষেপে তুলে ধরেন। অধ্যাপক ইউনূস অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রের বিষয় উল্লেখ করে দুর্নীতি, অর্থপাচার এবং ব্যাংকিং সিস্টেমকে কীভাবে বিপর্যস্ত করা হয়েছিল সে সব কথা জানান।

বাংলাদেশ সম্পর্কে ব্যাপক আকারে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এই মিসইনফরমেশন ঠেকাতে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি।’

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা যে ব্যাপক টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে তা দিয়ে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।

সম্প্রতি জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের কথা উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে ইইউ প্রতিনিধিদের বিশদভাবে জানান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত রাষ্ট্রদূতদের বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা সেন্টার দিল্লি থেকে সরিয়ে ঢাকায় অথবা প্রতিবেশী অন্য কোনো দেশে স্থানান্তরের অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সীমিত করায় অনেক শিক্ষার্থী দিল্লি গিয়ে ইউরোপের ভিসা নিতে পারছেন না। ফলে তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশের শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। ভিসা অফিস ঢাকা অথবা প্রতিবেশী কোনো দেশে স্থানান্তর হলে বাংলাদেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়ই উপকৃত হবে।’

বৈঠকে উপস্থিত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, ইতোমধ্যে বুলগেরিয়া বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা সেন্টার ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে স্থানান্তর করেছে। তিনি অন্য দেশগুলোকেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণের আহ্বান জানান।

সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে পূর্ণ সমর্থন জানান ইইউ প্রতিনিধিরা। বেশ কিছু পরামর্শ ও সুপারিশ তুলে ধরে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন তারা।


নভেম্বরে ১৭২ কোটি টাকার চোরাচালান সামগ্রী জব্দ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দেশের সীমান্ত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত নভেম্বর মাসে ১৭২ কোটি ২ লাখ ৮ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করেছেন।

আজ সোমবার বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এতে বলা হয়, জব্দ করা জব্দকৃত চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ৮ কেজি ৫৭০ গ্রাম স্বর্ণ, ১৬ কেজি ৭৯৫ গ্রাম রুপা, ১৫ হাজার ৭০৩টি শাড়ী, ২২ হাজার ৮৪০টি থ্রিপিস/শার্টপিস/চাদর/কম্বল, ১৪ হাজার ৪০৬টি তৈরী পোশাক, ২৯ হাজার ৫২৯ মিটার থান কাপড়, ২ লাখ ৯০ হাজার ৯০০টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ৭ হাজার ৬৬১টি ইমিটেশন সামগ্রী, ১৫ হাজার ৬৮৯ ঘনফুট কাঠ, ৬ হাজার ৮২৮ কেজি চা পাতা, ৪ লাখ ১৬ হাজার ৭২৭ কেজি চিনি, ৫ হাজার ৭১৩ কেজি সার, ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩৭০ কেজি কয়লা, ৭২০ ঘনফুট পাথর, ১ হাজার ঘনফুট বালু, ৫৯৩টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৩৬ হাজার ২২৩টি চশমা, ৮ হাজার ৬২৩ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৪৯ হাজার ৭৫৪ কেজি বাংলাদেশী রসুন, ২২ হাজার ৯১৬ কেজি জিরা, ১টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ১০টি ট্রাক, ১টি বাস, ৭টি পিকআপ, ৬টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৭টি ট্রলি, ১৬২টি নৌকা, ৫০ টিসিএনজি/ইজিবাইক, ৭৮টি মোটরসাইকেল, ১১টি ভ্যান গাড়ি এবং ২৩টি বাইসাইকেল।

উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ৬টি পিস্তল, ৮টি গান জাতীয় অস্ত্র, ১টি রাইফেল, ১টি রিভলবার, ৭টি ককটেইল, ৪টি ম্যাগাজিন এবং ৪২১ রাউন্ড গুলি।

এছাড়া, জব্দ করা মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ৯ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১ কেজি ২৫ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ৬ কেজি ৭৩৭ গ্রাম হেরোইন, ২৩ হাজার ৪৪৯ বোতল ফেনসিডিল, ১৫ হাজার ৫৪৯ বোতল বিদেশী মদ, ৩৯৩ লিটার বাংলা মদ, ৮০৫ ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৩০৯ কেজি গাঁজা, ১ লাখ ২৫ হাজার ১১৪ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ১ লাখ ৫০ হাজার ৯২২টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৩ হাজার ২৩৯ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ১৮ কেজি ৮৯৮ গ্রাম কোকেন, ৫৯০ বোতল এমকেডিল/কফিডিল, ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৯৮ পিস বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ও ট্যাবলেট, ১৪ হাজার ৪৩৬ টি এ্যানগ্রো/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, এবং ২৩ বোতল এলএসডি ।

সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০৯ জন চোরাচালানী এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৪৯২ জন বাংলাদেশী নাগরিক ও ১১ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ২ হাজার ৫৯৭ জন মায়ানমার নাগরিককে আটকের পর তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।


দুদক, বিচার বিভাগ বিগত সরকারের দাসে পরিণত হয়েছিল: আসিফ নজরুল

অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, দুদক ও বিচার বিভাগ বিগত সরকারের দাসে পরিণত হয়েছিল, যে কারণে দুর্নীতি লাগাম ছাড়ালেও এর কোন বিচার হয়নি।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর কাকরাইলস্থ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে ‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস ২০২৪’ উপলক্ষে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছে -এটা হাসতে হাসতে তিনি জাতির সামনে বলেছেন। বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি স্বীকৃত আদর্শে পরিণত হয়েছিল। কোন বিচার তো হতোই না, বরং দুর্নীতি যে একটা খারাপ বা নেতিবাচক বিষয় সেটা ভাবার সংস্কৃতি পর্যন্ত চলে গিয়েছিল’।

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে দুদক সংস্কার হয়েছে, বারবার সংস্কারের মাধ্যমে এটিকে ক্ষমতায়িত করা হয়েছে। কিন্ত গত ১৫ বছরে শুধু দুর্নীতিই দেখা গেছে। দুদক তো ছিল, উচ্চ আদালতও ছিল, তাহলে কোন দুর্নীতির বিচার কেন হয়নি? কারণ, কেউ তার (শেখ হাসিনা) সামনে কিছু বলতে পারে নাই এবং দুদক, বিচার বিভাগ তার দাসে পরিণত হয়েছিল’।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘বিচার হতো শুধু খালেদা জিয়ার। শুধুমাত্র মামলায় প্রক্রিয়াগত ভুলের কারণে তাঁকে দশবছরের জেল দেওয়া হয়েছে।’

এসময় উপস্থিত দুদক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘এখন তো সময় পরিবর্তিত হয়েছে, কেউ কোন রকম হস্তক্ষেপ করছে না। প্রায় শতাধিক মন্ত্রী, ব্যবসায়ী গত আমলে চুরি করে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। আপনারা এখন সেগুলোর তদন্ত করে দেখিয়ে দিন, যে ভালো পরিবেশ পেলে আপনারা কাজ করতে পারেন। দেখিয়ে দিন, যে তাদের দুর্নীতি আপনাদের হৃদয় ও বিবেককে দূষিত করতে পারেনি, আর এটাই আপনাদের কাছে এখন সারাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা।’

একাত্তরের ও জুলাই-আগস্টের শহীদদের আত্নত্যাগের মহিমা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্তানেরা নিজেদের রক্ত দিয়ে নতুন সময় আমাদের উপহার দিয়ে গেছে, আসুন, আমরা তাদের কাছ থেকে শিখি, বিবেককে কাজে লাগিয়ে দুর্নীতি থেকে দূরে থাকি ও তাদের প্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধাবান থাকি।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।


তিন খাতে ভর করে সম্প্রসারণ ধারায় দেশের অর্থনীতি

আপডেটেড ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১১:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগের মাসের ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ সমাপ্ত নভেম্বর মাসেও দেশের অর্থনীতি সম্প্রসারণের ধারায় রয়েছে। প্রধানত, তিনটি খাতে ভর করে অর্থনীতির এই সম্প্রসারণ হয়েছে। সেগুলো হলো- কৃষি, উৎপাদন ও সেবা খাত। এ কারণে বেড়েছে নভেম্বর মাসের পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স বা পিএমআইয়ের সার্বিক মান। গত নভেম্বরে এ সূচকের মান সাড়ে ৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ২ পয়েন্ট। অক্টোবরে সূচকটির সার্বিক মান ছিল ৫৫ দশমিক ৭ পয়েন্ট।

গতকাল রোববার নভেম্বর মাসের পিএমআই স্কোর প্রকাশ করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এবং গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ (পিইবি) যৌথভাবে এ সূচক প্রকাশ করেছে। অর্থনীতির মূল চারটি খাতের কার্যক্রমের ভিত্তিতে পিএমআই তৈরি করা হয়েছে। খাতগুলো হচ্ছে কৃষি, উৎপাদন, নির্মাণ ও সেবা। পিএমআই সূচকের মান ৫০ পয়েন্টের বেশি থাকা মানে অর্থনীতি সম্প্রসারণের ধারায় রয়েছে।

অর্থনীতি সম্প্রসারণের ধারায় থাকলেও এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে পিএমআই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, অর্থনীতির নীতি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে এখনো রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা রয়েছে। এ ছাড়া শিল্প খাতসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে আন্দোলনের কারণে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

নভেম্বরের পিএমআই প্রতিবেদন অনুসারে, নির্মাণ খাত ছাড়া অন্য তিন খাতের সম্প্রসারণের হার অক্টোবরের চেয়ে বেশি ছিল। বিশেষ করে কৃষি খাত সম্প্রসারণের গতি ছিল সবচেয়ে বেশি। এ খাতে নতুন ব্যবসা ও ব্যবসায়িক কার্যক্রমের দ্রুত সম্প্রসারণ হয়েছে। যদিও এই খাতে কর্মসংস্থানের গতি কম। নভেম্বরে কৃষি খাতের পিএমআই সূচকের মান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭ দশমিক ২। অক্টোবরে এ সূচকের মান ছিল ৫৩ দশমিক ১।

টানা তিন মাস সম্প্রসারণের ধারায় রয়েছে উৎপাদন খাত। নভেম্বরে এ খাতের পিএমআই সূচকের মান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ দশমিক ৯ পয়েন্ট। অক্টোবরে যা ছিল ৫৬ দশমিক ৬ পয়েন্ট। এ খাতের নতুন ক্রয়াদেশ, রপ্তানি, কারখানায় উৎপাদন-সব ক্ষেত্রেই গতি আগের চেয়ে বেড়েছে। এমনকি এই খাতের আমদানি, কর্মসংস্থান, সরবরাহের ক্ষেত্রেও প্রথমবারের মতো সম্প্রসারণ হয়েছে। এতে অর্ডার ব্যাকলগ সূচক ধীর সংকোচন হার দেখিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অক্টোবরের পর নভেম্বরেও দ্বিতীয় মাসের মতো সম্প্রসারণের ধারায় রয়েছে সেবা খাত। নভেম্বরে এ খাতের সূচকের মান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ পয়েন্ট। অক্টোবরে এই সূচকের মান ছিল ৫৬ দশমিক ৯ পয়েন্ট। সেবা খাতে কর্মসংস্থানেও গতি ফিরেছে গত মাসে। সেই সঙ্গে নতুন ব্যবসা ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম গতি রয়েছে।

কৃষি, উৎপাদন ও সেবা খাত সম্প্রসারণ ধারায় থাকলেও সংকোচনে রয়েছে নির্মাণ খাত। আগের মাসে সামান্য সম্প্রসারণে ফিরলে নভেম্বর মাসে সংকোচনে ফিরে গেছে। মূলত এ খাতে ইনপুট খরচ এবং অর্ডার ব্যাকলগ সূচকের জন্য সংকোচন রেকর্ড করা হয়েছে। তবে নতুন ব্যবসা, নির্মাণ কার্যক্রম এবং কর্মসংস্থান সূচকের জন্য সম্প্রসারণ রেকর্ড করা হয়েছে।

দেশে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে পিএমআই সূচকের মান নির্ণয় করা হচ্ছে। তবে চলতি বছরের মে মাস থেকে যৌথভাবে এই সূচক প্রকাশ করে আসছে এমসিসিআই ও পিইবি। চার খাতের উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের মতামতের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট খাতের সূচকের মান নির্ধারণ করা হয়। মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে পিএমআইয়ের মান নির্ণয় করা হয়।


আগামী বছরের শুরুতে ডাকসু নির্বাচন!

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০০:৫২
ঢাবি প্রতিনিধি

আগামী বছরের শুরুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ নির্বাচন হতে পারে। এ সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ। গতকাল রবিবার প্রক্টর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জানুয়ারি অথবা ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করার কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন আমাদের জন্য খুবই জরুরি। কারণ শিক্ষার্থীদের মতামত আমাদের জানতে বেশ বেগ পেতে হয়। ডাকসু নির্বাচন হলে এই প্রক্রিয়াটি আমাদের জন্য আরো সহজ হবে।’

প্রক্টর এ-ও বলেন, ‘তবে এখানে বেশ কিছু সমস্যা আছে। ডাকসুর রিফরমেশনের প্রয়োজন আছে। গঠনতন্ত্র নিয়ে বেশ কিছু আপত্তি জানিয়েছে ছাত্রসংগঠনগুলো।

উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচনের দাবি বেশ পুরনো। প্রতিবছরই এই দাবি জানিয়ে আসছে ছাত্র সংগঠনগুলো। ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনে ডাকসু নেতারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও দেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের পর শাসক দলগুলোর প্রভাবে এই নির্বাচন প্রায় তিন দশক বন্ধ ছিল।

তবে ২০১২ সালের ১১ই মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ শিক্ষার্থী ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। ২০১৭ সালের ৪ঠা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডাকসু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বলেন, ডাকসু নির্বাচন অত্যাবশ্যক, 'তা না হলে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বশূন্য হয়ে যাবে।’এরপর ছাত্রদের অনশন এবং আগে দায়ের করা রিটটি পুনরুজ্জীবিত হলে ২০১৮ সালের ১৭ই জানুয়ারি উচ্চ আদালত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ডাকসু নির্বাচনের নির্দেশ দেয়। তবে ঢাবি কর্তৃপক্ষ তাতেও ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে উকিল নোটিস পাঠান রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এর জবাব না পেয়ে ১২ সেপ্টেম্বর উপাচার্যসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন তিনি। এরপর উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮'র ১৬ই সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে ঘোষণা দেয় যে ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে ডাকসুর নির্বাচন।

ওই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তদানীন্তন ক্ষমতাসীন দলের ভ্রাতৃপ্রতীম ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের প্রার্থী ও সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে পরাজিত করে ভিপি (ভাইস প্রেসিডেন্ট বা সহসভাপতি) নির্বাচিত হন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি ও ওই প্যানেলের প্রার্থী নুরুল হক নুর। ওই নির্বাচনের পর আবারও বন্ধ হয়ে যায় ডাকসু নির্বাচন। গত ৫ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোন ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতারা আবারও ডাকসু নির্বাচনের দাবি তুলেছেন। তবে এবার ইস্যু গঠণতন্ত্র সংশোধন।


কিছু আইনি প্রক্রিয়ার পর শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের সঙ্গে প্রত্যার্পণ চুক্তি অনুযায়ী কিছু আইনি প্রক্রিয়ার পর শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

রোববার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।

শফিকুল আলমকে উদ্ধৃত করে বাসস জানায়,‘শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে আমাদের সরকারের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমরা তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের সম্মুখীন করতে চাই। যে গণহত্যা হলো, জুলাই-আগস্টে যে ১৫০০ মানুষকে হত্যা করা হলো, এর নির্দেশদাতা তিনি।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘এর আগে যত গুম হয়েছে, তিনি ( শেখ হাসিনা) তো সরকার প্রধান ছিলেন। প্রতি বছর ১৬ বিলিয়ন ডলার করে পাচার হয়েছে, যা দেশের জনগণের টাকা। এটা চুরি করে বাইরে চলে গেছে। এসবের জন্য তাকে আইনের আওতায় আনা আমাদের প্রতিশ্রুতি।’

শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে, যেহেতু ভারতের সঙ্গে আমাদের একটা প্রত্যার্পণ চুক্তি আছে, সেই চুক্তি অনুযায়ী কিছু আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে প্রত্যার্পণের জন্য চাওয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সেই প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করছি। এটা শেষ করে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে তার প্রত্যার্পণ চাইব।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আমরা আশাবাদী। বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে ‘ন্যায় ও মর্যাদার’ সম্পর্ক চায়।’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করব।’

এদিকে, রোববার সকালে ‘নতুন বাংলাদেশ : অর্জন, চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণ’ শীর্ষক এক আলোচনায় অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব। সেখানে ভারতীয় মিডিয়াসহ যারা গুজব ছড়াচ্ছে সত্যতা যাচাইয়ে তাদের বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান তিনি।

প্রেসসচিব বলেন, বাংলাদেশ আফগানিস্তান হয়ে যাচ্ছে বলে অনেকেই প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। তাদের এ দেশের মানুষের সঙ্গে কথা বলে বিভ্রান্তি দূর করা উচিত।

গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংস্কার কমিশন প্রসস্তাবনা জমা দেবে, যা নিয়ে রাজনৈতিক দলসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করা হবে। সংস্কার শেষেই নির্বাচন হবে।

সরকার সঠিক মানুষের হাতে সঠিক দায়িত্ব তুলে দেওয়ার কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অবস্থা, ব্যাংকিংব্যবস্থা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের পাশাপাশি চীন ও রাশিয়া থেকেও গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।


সৌদি আরব ও যুক্তরাজ্যের ভিসা পেয়েছেন খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে ইতোমধ্যে দুটি দেশের ভিসা পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ভিসা পাওয়া দেশগুলো হলো সৌদি আরব ও যুক্তরাজ্য। এদিকে যেকোনো সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা হাতে পাবেন তিনি।

বিএনপি সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়ার পর সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে তিনি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে দেশের বাইরে যেতে পারেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাওয়ার আগে বা পরে ওমরাহ করার জন্য সৌদি আরব যেতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এ জন্য তিনি সৌদি আরবের ভিসা নিয়েছেন। এর আগে তিনি লন্ডনের ভিসা নিয়েছেন।

সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ছেলে তারেক রহমানসহ স্বজনদের সঙ্গে কিছুদিন সময় কাটানো ও বিশ্রাম শেষে তিনি লিভারের জটিল চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন।

চিকিৎসার জন্য প্রথমে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হলেও সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর যুক্তরাষ্ট্রের মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিক্যাল সেন্টারে নেওয়া হবে। সেখানে তার লিভারের জটিল চিকিৎসা করানো হবে।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শে তাকে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয়েছে।


ইউরোপের ৮ দেশের ভিসা দেবে ঢাকার সুইডিশ দূতাবাস

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় সুইডিশ দূতাবাসের সহযোগিতায় বহুজাতিক ভিসা প্রসেসিং সার্ভিস সংস্থা ভিএফএস গ্লোবাল আগামী মঙ্গলবার থেকে বেলজিয়াম, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, স্লোভেনিয়া বা সুইডেনে যাওয়ার জন্য শেনজেন ভিসা আবেদনের জন্য একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট সিস্টেম চালু করবে। আজ রোববার ঢাকার সুইডিশ দূতাবাস থেকে এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বার্তায় বলা হয়, আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে সব আবেদনকারীকে অবশ্যই ঢাকায় ভিএফএস গ্লোবাল সুইডেনের সঙ্গে শেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে আগাম একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে হবে। ‘ওয়াক-ইন’ আবেদন আর গ্রহণ করা হবে না।

অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লটটি আবেদনকারীর ব্যক্তিগত। তাই স্লটটি আবেদনকারীকেই বুক করতে হবে।

অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করার সময় ভিএফএস গ্লোবাল একটি পরিষেবা ফি ধার্য করবে। আবেদনকারী যদি অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য উপস্থিত না হন বা নির্ধারিত সময়ের স্লটের ২৪ ঘণ্টা আগে এটি বাতিল করেন তবে ফি ফেরত দেওয়া হবে না বলে ওই বার্তায় বলা হয়েছে।

ভ্রমণের মূল উদ্দেশ্য যদি বেলজিয়াম, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, স্লোভেনিয়া বা সুইডেন ভ্রমণ করা হয় তাহলে অনুগ্রহ করে শুধু ঢাকায় ভিএফএস গ্লোবাল সুইডেনের সঙ্গে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে বলা হয়েছে।

অনুসন্ধানের জন্য অনুগ্রহ করে ভিএফএস হেল্প ডেস্কে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। সর্বজনীন ছুটি ছাড়া রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত (+৮৮) ০৯৬০৬৭৭৭৩৩৩ বা (+৮৮) ০৯৬৬৬৯১১৩৮২ নম্বরে ভিএফএস হেল্প ডেস্কে যোগাযোগ করা যাবে। এ ছাড়াও https://vfsforms.mioot.com/forms/CFNC/-এ যোগাযোগ ফর্মের মাধ্যমে ভিএফএস গ্লোবালের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে।


থার্টিফার্স্ট নাইট নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশনা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনে এবারও আতশবাজি পোড়ানো ও ফানুশ ওড়াতে নিষেধ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

আজ রোববার বড়দিন ও থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক সময় থার্টিফার্স্ট নাইটে আমাদের তরুণদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। আপনারা যদি আগে থেকে তাদের বুঝান যে, এটা করা ঠিক না, তাহলে তারা সাবধান হবে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক সময় তারা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের পানি-টানি (মদ্যপান) খায়। এ বিষয়ে আপনারা তাদের নিষেধ করতে পারেন।’

থার্টিফার্স্ট নাইটে যে নরমাল বারগুলোর আছে সেগুলো বন্ধ রাখা হবে বলে জানান উপদেষ্টা।

এ সময় তরুণদের পানি-টানি খাওয়ার বিষয় দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, ‘কনফাইন্ড (ঘরের মধ্যে বসে খেতে হবে), রাস্তাঘাটে যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়।’


banner close