প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাপ’ উদ্বোধন করেছেন। এতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী এবং বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
আজ বিকেলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে দরবার টেকনোলজিস লিমিটেডের তৈরি অ্যাপটি উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
অ্যাপটি উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতে জাতির পিতার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের জানার সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘একই সাথে আমাদের মহান স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অ্যাপটি তৈরির মহতী উদ্যোগের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
রাজধানীর গুলশানে ‘জাতিসংঘ হাউস’ উদ্বোধন করেছেন সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস।
আজ শনিবার সকালে এই উদ্বোধন শেষে ভবনটি পরিদর্শন করেন মহাসচিব।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা এমন তথ্য দিয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ-জাতিসংঘ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতিসংঘ ভবন প্রাঙ্গণে আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন গুতেরেস।
তিনি জাতিসংঘের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানেও অংশ নেন। পরে তিনি জাতিসংঘের বাংলাদেশ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয় ও গৃহায়ণ এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। অনুষ্ঠান শেষে দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে একটি গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেবেন গুতেরেস।
এ বৈঠক শেষে তরুণ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠকে অংশ নেবেন তিনি। রবিবার (১৫ মার্চ) সকালে ঢাকা ছাড়বেন জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট ভাগ্যবান। কারণ তাদের একটি সমুদ্র আছে, যা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করে। শুক্রবার কক্সবাজারে বিআইএএম অডিটোরিয়ামে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের একটি সমুদ্র আছে। ব্যবসার জন্য সমুদ্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ সামুদ্রিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটি দীর্ঘ সমুদ্রতীর রয়েছে এবং চট্টগ্রামের সমুদ্রতীরের যেকোনো স্থানে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা সম্ভব।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কক্সবাজারে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটি কেবল একটি পর্যটন শহরই নয়, বরং অর্থনীতিরও কেন্দ্র।
নেপাল ও ভারতের সেভেন সিস্টার্সের কোনো সমুদ্র নেই উল্লেখ করে ড. ইউনূস পারস্পরিক সুবিধার্থে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসা করতে পারলে সবার ভাগ্য বদলে যাবে।’
তিনি লবণ উৎপাদনকারীদের কাছে জানতে চান, বিদেশি আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে আগ্রহী কি না। কেননা কক্সবাজারের কৃষকদের উৎপাদিত লবণ এখন রপ্তানি করার সক্ষমতা রয়েছে।
তিনি পাইলট ভিত্তিতে কক্সবাজারে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বায়ুশক্তির (বায়ুপ্রবাহের শক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন) সম্ভাবনা সম্পর্কে খোঁজ নেন।
স্থানীয় জনগণকে ভবিষ্যতে সুযোগগুলো কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কক্সবাজার অর্থনীতির একটি বৃহৎ শক্তি এবং এটি তথ্যপ্রযুক্তিরও একটি শহর হতে পারে।
তিনি স্থানীয় জনগণের কাছে তাদের ওপর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চান।
মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রধান উপদেষ্টার সামনে বিভিন্ন প্রস্তাব ও দাবি পেশ করেন।
অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে একমত হয়, তবে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে। তবে, তারা যদি ‘বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ’ গ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ঢাকায় সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সাক্ষাতে এলে আলোচনাকালে ড. ইউনূস এ কথা বলেন।
জাতিসংঘ মহাসচিবকে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনার আসার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারত না। আপনার সফর কেবল রোহিঙ্গাদের জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের জন্যও সময়োপযোগী’।
তিনি গুতেরেসকে সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রায় ১০টি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দলগুলো ছয়টি কমিশনের সুপারিশগুলোর সঙ্গে একবার একমত হলে, তারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে, যা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পাশাপাশি রাজনৈতিক, বিচারিক, নির্বাচনসংক্রান্ত, প্রশাসনিক, দুর্নীতি দমন এবং পুলিশ সংস্কারের একটি রূপরেখা হবে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে নেওয়া সংস্কার কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আশাপ্রকাশ করেন, সংস্কারগুলো একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দেশের প্রকৃত রূপান্তর ঘটাবে। পাশাপাশি দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কক্সবাজারে বসবাসরত দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
চার দিনের সফরে বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, ‘আমি সংস্কার কর্মসূচির প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করতে চাই। আমরা আপনাদের সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে এখানে এসেছি। আমরা আপনাদের সর্বোত্তম সফলতা কামনা করি। যেকোনো সহযোগিতা লাগলে আমাদের জানান।’
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে এই সংস্কার প্রক্রিয়া একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দেশের একটি ‘বাস্তব রূপান্তর’ নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, ‘আমি জানি যে সংস্কার প্রক্রিয়াটি জটিল হতে পারে’।
গুতেরেস বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে তিনি রমজান মাসে বাংলাদেশে এসেছেন।
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত ১২ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা হ্রাস নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘পৃথিবীতে এতটা বৈষম্যের শিকার অন্য কোনো জনগোষ্ঠী আমি দেখিনি’। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ভুলতে বসেছে’।
‘মানবিক সহায়তা হ্রাস করা একটি অপরাধ’ উল্লেখ করে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো এখন প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় দ্বিগুণ করছে, কিন্তু তখন আবার বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তা সংকুচিত হচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের ‘অপরিসীম কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেন গুতেরেস। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতি অত্যন্ত উদারতা দেখিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আমার জন্য একটি বিশেষ বিষয়’।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগিতা চান, যাতে রোহিঙ্গারা সম্মানের সঙ্গে তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে পারে। তিনি বলেন, যতদিন তারা বাংলাদেশে অবস্থান করছে ততদিন পর্যন্ত তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও মানবিক সহায়তা যেন নিশ্চিত করা যায়।
ড. ইউনূস বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের দুর্দশার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি। বিশ্বকে জানতে হবে তারা কতটা কষ্ট পাচ্ছে। তাদের মধ্যে একটা হতাশার অনুভূতি রয়েছে’।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন এবং তাদের জন্য সহায়তা সংগ্রহকে অগ্রাধিকার দেবেন।
গুতেরেস বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম ‘অসাধারণ’ এবং বাংলাদেশ ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব প্রতিষ্ঠার অগ্রভাগে রয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’।
অধ্যাপক ইউনূসও বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের প্রশংসা করে বলেন, এই মিশনে কাজ করার ফলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক অনন্য অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তিনি বলেন, ‘শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কাজ করা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ’।
বৈঠকে ভূ-রাজনীতি, সার্কের বর্তমান অবস্থা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশেগুলোর সম্পর্কের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক ফোরামকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য তার প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য হতে চায়।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলে একাধিক বন্দর নির্মাণ প্রকল্প সম্পর্কেও কথা বলেন, যা নেপাল ও ভুটানসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দেশকে ‘একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন ও জাপানসহ প্রায় প্রতিটি দেশের সমর্থন পেয়েছে।
অর্থনীতি প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তার সরকার উত্তরাধিকারসূত্রে ধ্বংসপ্রাপ্ত ও ভঙ্গুর ব্যাংকিং খাত, সংকোচিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে পড়া অবস্থায় পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি এখন সুসংহত হয়েছে। রপ্তানি কয়েক মাস ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ভালো অবস্থানে রয়েছে’।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অর্থনীতি এমনভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী বছর স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘আমরা এলডিসি উত্তরণের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছি’।
তিনি বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের শাসনামলে লুটপাট হওয়া কয়েকশ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত আনার জন্য সরকার চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আগের সরকারের রেখে যাওয়া অর্থনীতির ভঙ্গুর পরিস্থিতি তাকে ১৯৭৪ সালের পর্তুগালের বিপ্লবী দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলিসংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান এবং এসডিজিবিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রাবাব ফাতিমা ও বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইসও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার ভেরিফাইড ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।’
তারেক রহমান শুক্রবার তার ভেরিফাইড ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মাগুরায় ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশু আছিয়া গত কয়েকদিন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে লড়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় মৃত্যুবরণ করে (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)।
নির্মম পাশবিকতায় আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনা দেশবাসীর মতো আমাকেও ব্যথিত করেছে। তার মৃত্যুর সংবাদে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা দেশ। এই মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এ ঘটনা সারাদেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে।’
তিনি লিখেছেন, ‘আছিয়ার ওপর ঘটে যাওয়া নির্মম পাশবিক ঘটনার প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে শহর থেকে গ্রামে। রাজপথ উত্তপ্ত হয়েছে মিছিল আর স্লোগানে। একই সঙ্গে তার ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা ছিল প্রতিটি মানুষের। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সিএমএইচ থেকে আসা খবরে শোক আর ক্ষোভে এলাকার মানুষ ধিক্কার জানাচ্ছে মানুষরূপী কুলাঙ্গারদের।’
তারেক রহমান লিখেছেন, ‘আমি শুরুতে এ ঘটনা জানার পর তার চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলাম। অতীতের ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে ধর্ষণকারীদেরকে বিচারের আওতায় না এনে বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করার ফলে দেশে ধারাবাহিকভাবে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। বিচারের দীর্ঘ সূত্রিতার ফলে আইনের ফাঁক দিয়ে ধর্ষণকারীরা বারবার রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে। যার ফলে ধর্ষণের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে।’
আধুনিক এই যুগে মানব জাতি এরুপ অমানবিক, পৈশাচিক এবং বর্বরোচিত কাজে লিপ্ত হতে পারে তা কল্পানাতীত বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘ধর্ষণ শুধু অপরাধই নয়, মানবতার বিরুদ্ধে চরম আঘাত এবং সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের ভয়াবহ চিত্র। আমাদের সমাজে যে নিমর্ম ও বর্বরোচিত ঘটনাগুলো ঘটে চলছে, তা মানবতা ও নৈতিকতার মৌলিক ভিত্তিকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আমরা দেখছি পবিত্র মাহে রমজান মাসেও ধর্ষণের ঘটনা থামছে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশুদের ওপর চলমান নিপীড়ন, হেনস্তা ও ধর্ষণের মত ঘৃণ্য কাজ রোধে সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।’
তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, ‘গত ৫ আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে নারী হেনস্তা, হয়রানি, ধর্ষণ বা ধর্ষণের হুমকির মতো ঘটনা মানুষ আর প্রত্যাশা করে না। তারপরেও এই ঘটনাগুলো ঘটেই চলেছে। নারী, কিশোরী ও শিশুদের প্রতি যেকোনো ধরণের সহিংসতা বা হয়রানি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদা নিশ্চিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও একটি বিস্তৃত শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ চলাচল, নাগরিক স্বাধীনতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখতে হবে। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিতে হবে আইনিভাবে। এই ধরণের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সমাজে শান্তি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনা শুধু বর্তমান সমাজকে কলুষিত করছে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও এক ভয়ংকর দৃষ্টান্ত তৈরি করছে। এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরণের অপরাধ করার সাহস না পায়।’
তারেক রহমান আছিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারটির সদস্যবর্গ, আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আজ শুক্রবার উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেছেন।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে কক্সবাজার পৌঁছান।
অধ্যাপক ইউনূস ও গুতেরেসকে বহনকারী বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটটি আজ দুপুর ১২টা ৪৮মিনিটের দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফারুক-ই- আজম বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান।
সফরের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস কক্সবাজার বিমানবন্দরের একটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন এবং খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন।
পরিদর্শন শেষে ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে সঙ্গে নিয়ে উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস বিমান বন্দর থেকে সরাসরি উখিয়ায় যাবেন। সেখানে তিনি রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন।
পরিদর্শন ও ইফতার শেষে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব একসাথে সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরবেন।
যৌথ বিাহিনীর অভিযানে গত ৭ দিনে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ডাকাত দলের সদস্য, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী, কিশোর গ্যাং সদস্য এবং মাদক কারবারিসহ মোট ৩৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৬ থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।
গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ৩টি পিস্তল, একটি রিভলবার, দুটি শুটার গান, গোলাবারুদ, ককটেল বোমা, মাদকদ্রব্য, সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র, পাসপোর্ট, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাক, এনআইডি, মোবাইল ফোন, সিমকার্ড ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করে চলেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৬ থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদাতিক ডিভিশন ও স্বতন্ত্র ব্রিগেডের অধীন ইউনিট অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু যৌথ অভিযান পরিচালনা করে।
এসব যৌথ অভিযানে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ডাকাত দলের সদস্য, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী, কিশোর গ্যাং সদস্য এবং মাদক কারবারিসহ মোট ৩৮৩ জন অপরাধীকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
আইএসপিআর আরও জানায়, প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ এবং আইনি কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য গ্রেপ্তার ৩৮৩ জনকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এছাড়াও, দেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনাবশত অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা জনসাধারণের জান ও মাল রক্ষায় নিরাপত্তা প্রদান, উদ্ধার কার্যক্রম ও অগ্নিনির্বাপণে অংশ নেন।
দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সাধারণ জনগণকে যেকোন সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে তথ্য দিতে অনুরোধ জানিয়েছে আইএসপিআর।
বাংলাদেশের সংস্কার ও পরিবর্তন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে এক বৈঠকে এই অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
বৈঠকের পর জাতিসংঘের এক বার্তায় বলা হয়, বৈঠকে সংস্থাটির মহাসচিব ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের চলমান পরিবর্তন ও সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন। মহাসচিব বাংলাদেশের সংস্কার ও পরিবর্তন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
অ্যান্তোনিও গুতেরেস জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশের উদারতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতির জন্যও বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান মহাসচিব।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর একই স্থানে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকার বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
জাতিসংঘের বার্তায় বলা হয়েছে, মহাসচিব ও বিশেষ প্রতিনিধি (ড. খলিলুর রহমান) রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর আসন্ন উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলন নিয়ে আলোচনা করেন।
পরে জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে গতকাল বৃহস্পতিবার ৪ দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে আসেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস। সফরসূচি অনুযায়ী, জাতিসংঘ মহাসচিব আজ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করবেন। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন তারা।
জাতিসংঘ মহাসচিব দুর্দশাগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ‘আহ্বান’ জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে কক্সবাজার পৌঁছেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস ও গুতেরেসকে বহনকারী বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটটি আজ দুপুর ১২টা ৪৮মিনিটের দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফারুক-ই- আজম বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান।
সফরের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস কক্সবাজার বিমানবন্দরের একটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন এবং খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন।
পরিদর্শন শেষে ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে সঙ্গে নিয়ে উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস বিমান বন্দর থেকে সরাসরি উখিয়ায় যাবেন। সেখানে তিনি রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন।
পরিদর্শন ও ইফতার শেষে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব একসাথে সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরবেন।
চলতি বছর ১৫ বছরের কম বয়সি কেউ হজে যেতে পারবেন না। সৌদি সরকারের হজ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বুধবার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মামুন আল ফারুকের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, সৌদি আরব হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় শিশুদের সুস্থতা ও নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে ২০২৫ সালের হজ মৌসুমে পবিত্র হজ পালনে আগ্রহীদের সর্বনিম্ন বয়সসীমা ১৫ বছর নির্ধারণ করেছে; যা হজযাত্রীর পাসপোর্টের জন্ম তারিখ থেকে ধরা হবে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমে নিবন্ধিত হজযাত্রী, হজ এজেন্সি এবং হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশনা ফলো করতে হবে। ১৫ বছর বয়সি নিবন্ধিত শিশু হজযাত্রী ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শিশু হজযাত্রীর সঙ্গে যাওয়া অভিভাবক হজযাত্রীর পরিবর্তে প্রাক-নিবন্ধিত হজযাত্রী প্রতিস্থাপন করা যাবে। এ বিষয়ে উপসচিব মামুন আল ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, সৌদি সরকারের নির্দেশনা আমাদের ফলো করতে হয়। ১৫ বছরের ওপরে কেউ যদি হজে যেতে চায় তাকে অবশ্যই প্রাক নিবন্ধন, নিবন্ধন করে যেতে হবে। আর তার নিচে তো যাওয়ার সুযোগ থাকছে না।
দেশে নারী ধূমপায়ীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে এমন মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, তামাক কোম্পানিগুলো শুধু নারীদের ধূমপানে উৎসাহিত করতে নতুন ব্রান্ডের সিগারেট বাজারে এনেছে।
ধূমপান নিরুৎসাহিত করতে শুধু কর বাড়ানোর ওপর জোর না দিয়ে সামাজিক উদ্ভাবনীর ওপর জোর দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। বুধবার রাজধানীর অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন প্রেস সচিব।
প্রেস সচিব বলেন, তামাকের ব্যবহার কমাতে সবাই শুধু এনবিআর-এ লবিং করে, অ্যাক্টিভিস্টরা কর বাড়াতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে; কিন্তু এতে কোনো লাভ হচ্ছে না। তিনি বাংলাদেশের ওর স্যালাইন এর উদ্ভাবন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণের মতো উদ্ভাবনী উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, আফ্রিকার দেশ কঙ্গোতে ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণ যুদ্ধ বন্ধে সহায়তা করছে। হঠাৎ করে তামাক উৎপাদন বন্ধ করা সম্ভব নয় এমন মন্তব্য করে প্রেস সচিব আরও বলেন, তামাক চাষিদের বিকল্প চাষের সুযোগ নাই।
কেবিনেটে তামাক ব্যবহার কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং এ বিষয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের কমিটি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবার জন্য উইন উইন পরিস্থিতি তৈরি করতে চাই। বেসরকারি সংস্থা ডরপ ও ইআরএফ এর যৌথ আয়োজিত এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ডরপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী এ এইচ এম নোমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা। ইআরএফ এর সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেমের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডরপের উপনির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান।
বক্তব্য রাখেন এনবিআর এর সদস্য (ভ্যাট) ড. আব্দুর রউফ, সিটিএফকের ড. আতাউর রহমান মাসুদ প্রমুখ। বক্তারা আগামী অর্থ বছর নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেট একত্রিত করে নতুন স্তরে প্রতি সিগারেটের সর্বনিম্ন মূল্য ৯ টাকা করার সুপারিশ জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদে শপথের জন্য আটজনের নামসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অনুমোদনপত্রটি ভুয়া।
বুধবার (১২ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলম তার ভেরিফাইড ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে এমনটি জানিয়েছেন। অনুমোদনপত্রের ছবিটি শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ফেইক অ্যান্ড ফেব্রিকেটেড। অর্থাৎ উপদেষ্টা নিয়োগের খবর ভুয়া ও বানোয়াট। ভুয়া ওই অনুমোদনপত্রে বলা হয়, আগামী ২১ মার্চ শুক্রবার মো. ইমরান আলী, ইকবাল করিম ভূঁইয়া, মো. সেলিম হায়দার, মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, মোসাম্মৎ শামসুন নাহার, মোহাম্মদ আব্দুর রব, ড. মো. তৌহিদুল হাসান, মো. জুলফিকার আজিজকে- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পদে শপথের জন্য কার্যকর করা হলো। প্রধান উপদেষ্টা আদেশক্রমে- ড. শেখ আব্দুর রশীদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রিসভা কিংবা উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের শপথের পরই মূলত প্রজ্ঞাপন জারি হয়। এ ছাড়া এসব নিয়োগ হয় রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে। কিন্তু ভুয়া অনুমোদনপত্রটিতে বলা হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার আদেশক্রমে। এটি পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রতারক চক্র এটি তৈরি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে।
বাংলাদেশে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের ১৩ থেকে ১৬ মার্চ নির্ধারিত সফর রোহিঙ্গা সংকটের আশু সমাধান খুঁজে বের করতে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফরের আগে বুধবার (১২ মার্চ) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ কথা জানায়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, 'বাংলাদেশের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সফর। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই সফর এই সংকটকে বৈশ্বিক নজর কাড়তে সহায়তা করবে। 'আমরা আশা করি জাতিসংঘ মহাসচিব এ বিষয়ে একটি ভালো বার্তা দেবেন।’
শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু থেকেই অন্যান্য বৈশ্বিক সংকট সত্ত্বেও রোহিঙ্গা সংকট যাতে আবার বিশ্বের নজরে আসে—তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট তুলে ধরছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সরকার নিশ্চিত করতে চায় যে, বৈশ্বিক নজর সেখানেই রয়েছে।’
প্রেস সচিব বলেন, সরকার রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধান চায়, যাতে তারা নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে পারে। ‘এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
আলম বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব বৃহস্পতিবার(১৩ মার্চ) বিকাল ৫টায় ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ একসঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের জন্য কক্সবাজারে যাওয়ার আগে শুক্রবার(১৫ মার্চ) সকালে ড. ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা ব্যাপকভাবে কমেছে। আশা প্রকাশ করা হচ্ছে, এই সফরটির মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের কিছু উপায় খুঁজে পেতে সহায়তা করবে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংগ্রহের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করা হবে।
তিনি বলেন, 'আমরা তহবিল সহায়তায় কোনো বিঘ্ন দেখতে চাই না। আমরা তাদের পুষ্টি চাহিদার ঘাটতি করতে চাই না।’
সম্প্রতি জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, জরুরি ভিত্তিতে নতুন তহবিল ছাড়া, মাসিক রেশন মাথাপিছু ১২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে মাথাপিছু ৬ ডলারে নামিয়ে আনতে হবে।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশে তাদের জরুরি প্রতিক্রিয়া কার্যক্রমের জন্য তহবিলের গুরুতর ঘাটতির বিষয়ে সতর্ক করেছে, যা বাংলাদেশে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর খাদ্য সহায়তা ঝুঁকিতে ফেলেছে।
সকল রোহিঙ্গা সহায়তার রশিদ পায় যার মাধ্যমে ক্যাম্পে নির্ধারিত খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে তাদের পছন্দমতো খাবার নিতে পারে। পূর্ণ রেশন বজায় রাখতে ডব্লিউএফপির জরুরি ভিত্তিতে এপ্রিলের জন্য দেড় কোটি ডলার এবং ২০২৫ সালের শেষ পর্যন্ত ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
আলম বলেন, এই সফর সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে সামনে রেখে বৈশ্বিক সমর্থন আদায়ের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। তিনি বলেন, ফিনল্যান্ড ও মালয়েশিয়াও এই আয়োজনের কো-স্পন্সর হিসেবে যোগ দিয়েছে।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, জাতিসংঘ মহাসচিব বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় পৌঁছালেও প্রধানত শুক্র ও শনিবার দুটি কর্মদিবস থাকবে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিজেদের ব্যস্ততার কথা তুলে ধরে আবুল কালাম আজাদ বলেন, তারা আশা করছেন এক লাখ রোহিঙ্গা জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে একসঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন।
মিয়ানমারে নিপীড়ন ও সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের উদারতার স্বীকৃতি হিসেবে গুতেরেস ও ড. ইউনূস শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশিদের সঙ্গে ইফতারে অংশ নেবেন।
প্রধান উপদেষ্টা ও গুতেরেস সকালে (১৪ মার্চ) কক্সবাজারের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং একই দিন সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরবেন।
বার্ষিক রমজান সফরের অংশ হিসেবে গুতেরেস সুশীল সমাজের তরুণ প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার হিসেবে এক দশকের দীর্ঘ মেয়াদে জাতিসংঘ মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বাস্তুচ্যুত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে নিয়মিত রমজান পালন করার জন্য সংহতি সফরকে একটি বার্ষিক ঐতিহ্যে পরিণত করেছেন গুতেরস।
গুতেরেস এক বার্তায় বলেন, 'প্রতি রমজানে আমি বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংহতি সফর করি এবং রোজা রাখি। এই মিশন বিশ্বকে ইসলামের আসল চেহারা মনে করিয়ে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রমজান করুণা, সহানুভূতি এবং উদারতার মূল্যবোধকে তুলে ধরে। এটি পরিবার এবং সম্প্রদায়ের সঙ্গে পুনর্মিলনের একটি সুযোগ...। আমি সবসময় এই মৌসুমে অসাধারণ শান্তির অনুভূতিতে আরও অনুপ্রাণিত হই।
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস সম্প্রতি ড. ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে আশা প্রকাশ করেন যে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন বৈশ্বিক অগ্রাধিকারকে নবায়ন করবে এবং তাদের দুর্দশার বৃহত্তর সমাধানকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে।
গুতেরেস বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সমর্থন দিতে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একত্রিত করতে তার তৎপরতা অব্যাহত রাখবে।
তিনি লিখেছেন, 'রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও স্বেচ্ছায় রাখাইনে ফিরে যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিসহ মিয়ানমারের সংকটের রাজনৈতিক সমাধানে আমি আমার সদিচ্ছা অব্যাহত রাখব। সেই লক্ষে আঞ্চলিক পক্ষ, অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান) ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব রাখাইনের জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা ও জীবিকার সহায়তা কীভাবে সর্বোচ্চ করা যায়—সে বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমগুলোকে দিকনির্দেশনা দিতে তার জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপকদের অনুরোধ করেছেন।
জাতিসংঘ মিয়ানমারের সমন্বয়কারী এবং আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারীর সম্পৃক্ততাকে অগ্রাধিখার দেবে। যার মাধ্যমে রাখাইন এবং পুরো মিয়ানমারে অভাবী লোকদের জন্য জরুরি ত্রাণ, নিরাপদ, দ্রুত, টেকসই এবং অবাধ মানবিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা যায়।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ ব্যবস্থা কীভাবে প্রক্রিয়াটিকে সর্বোত্তমভাবে সমর্থন করতে পারে—তা বোঝার জন্য আমরা সদস্য রাষ্ট্রের পরামর্শের পরে সম্মেলনের সম্মত ফলাফল এবং পরিকল্পনার জন্য অপেক্ষা করছি।’
তিনি চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূসকে তার চিঠির জন্য ধন্যবাদ জানান। যেটি ৭ ফেব্রুয়ারি রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান তার কাছে পৌঁছে দেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের দৃঢ় সংহতি এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বে এই সংস্কার প্রক্রিয়ায় তাদের সমর্থনের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলে রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব এবং রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা সংক্রান্ত বিষয় পর্যালোচনা করতে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে সভাপতি করে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি করেছে সরকার।
আজ বুধবার ছয় সদস্যের এই কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কমিটিতে তিন মাসের মধ্যে সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক আলী আশফাক এবং রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল হুদাকে কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে।
কমিটিকে ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা তদন্তকাজের অগ্রগতি ও এ সংক্রান্ত গৃহীত সরকারি অন্যান্য পদক্ষেপ পর্যালোচনা, এ ঘটনার দায়দায়িত্ব নির্ধারণ এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। কমিটি প্রয়োজনে সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। কমিটি প্রয়োজন অনুসারে সভা করতে পারবে।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সুইফট পেমেন্ট পদ্ধতিতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে এই বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়।