শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
৪ পৌষ ১৪৩২

লোকসান থেকে মুনাফায় অধিকাংশ বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদক কোম্পানি

মেহেদী হাসান সজল
প্রকাশিত
মেহেদী হাসান সজল
প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ২২:৫২

একদিকে বিদ্যুতের চাহিদা প্রতি বছর বাড়ছে, অন্যদিকে চাহিদার সঙ্গে ভোক্তাপর্যায়ে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ব্যয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে এ খাতের কোম্পানিগুলোর ব্যবসার পালে হাওয়া বদল হতে শুরু করছে।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন ২০২৫ সালে বিদ্যুতের চাহিদা বর্তমান সময়ের তুলনায় ৮ থেকে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ফলে সামনের বছরগুলোতে বিদ্যুতের বর্ধিত চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে এ খাতের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি হওয়ার অপার সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বিদ্যুৎ খাতের বেসরকারি অধিকাংশ কোম্পানি ভালো পারফর্মেন্স দেখিয়েছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদক কোম্পানির সংখ্যা ৯টি। সেগুলো হলো- সামিট পাওয়ার লিমিটেড, বারাকা পাওয়ার লিমিটেড, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেড (বিপিপিএল), ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল), শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (এসপিসিএল), ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ইউপিজিডিসিএল), এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড (ইপিজিএল) ও জিবিবি পাওয়ার লিমিটেড।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে সামিট পাওয়ার তাদের আর্থিক প্রতিবেদন এখনো প্রকাশ করেনি। বাকিগুলোর মধ্যে বারাকা পাওয়ার, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, কেপিসিএল ও শাহজিবাজার পাওয়ার আগের অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে লোকসান গুণলেও এবার ভালো মুনাফা লুফে নিয়েছে। বিপরীতে নিজেদের সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ থাকায় মুনাফা থেকে সামান্য লোকসানে পতিত হয়েছে জিবিবি পাওয়ার। আর এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন ও ইউনাইটেড পাওয়ারের মুনাফা চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে সামান্য কমলেও বড় প্রবৃদ্ধি এসেছে ডরিন পাওয়ারের মুনাফায়। কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়জনিত ক্ষতি কমে আসায় এ সময়ে অধিকাংশ কোম্পানি ভালো করেছে।

অন্যদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে, সে তুলনায় চাহিদা কম। চাহিদা কম হওয়ায় এ খাতের বেসরকারি অনেক কোম্পানিকে মাঝেমধ্যে উৎপাদন স্থগিত রাখতে হয়। যদি সামনের বছরগুলোতে চাহিদা বৃদ্ধি পায় তাহলে এ খাতের কোম্পানিগুলোরও ভালো করার সম্ভাবনা তৈরি হবে।

পুঁজিবাজারে বারাকা গ্রুপের তালিকাভুক্ত দুটি কোম্পানি বারাকা পাওয়ার লিমিটেড ও বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেড। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে বারাকা পাওয়ার ও তার সাবসিডিয়ারির সমন্বিত বিক্রি বাবদ আয় হয়েছে ১৪২ কোটি ৪ লাখ টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যেখানে এ আয় হয়েছিল ৮৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির সমন্বিত বিক্রি বাবদ আয় বেড়েছে ৬১ দশমিক ১২ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির সমন্বিত কর পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে যেখানে সমন্বিত নিট লোকসান হয়েছিল ৮ কোটি ৮ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে বারাকা পাওয়ারের কোম্পানি সচিব মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, বিদ্যুতের উচ্চ চাহিদার কারণে এ সময়ে আমাদের আয় বেড়েছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়জনিত ক্ষতি কমে আসায় ব্যয় কমেছে। এতে ভালো মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।

গ্রুপের অন্য কোম্পানি বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার ও তার সাবসিডিয়ারির ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে সমন্বিত বিক্রি বাবদ আয় হয়েছে ৭২৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যেখানে এ আয় হয়েছিল ১ হাজার ৩৫৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানির আয় কমেছে ৪৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির সমন্বিত নিট মুনাফা হয়েছে ২০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যেখানে সমন্বিত নিট লোকসান হয়েছিল ৪৫ কোটি ১২ লাখ টাকা।

বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) পক্ষ থেকে এ সময়ে আমাদের কাছে চাহিদা কিছুটা কম ছিল। এতে পরিবর্তনশীল উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়ার আয় এবং জ্বালানি আয় যথাক্রমে ৪৮ শতাংশ ও ৫৮ শতাংশ কমেছে। যার ফলে সার্বিকভাবে আমাদের আয় কিছুটা কমেছে। তবে মূল কোম্পানি ও সাবসিডিয়ারির জন্য ভারী জ্বালানি তেল (এইচএফও) ও খুচরা যন্ত্রাংশসহ সব ধরনের কাঁচামাল আমদানিতে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়জনিত ক্ষতি কমে আসায় আমাদের ব্যয়ও তুলনামূলক কমেছে। যার ফলে এ সময়ে ভালো মুনাফা অর্জন সম্ভব হয়েছে।

ডরিন পাওয়ার ও তার সাবসিডিয়ারি চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে সমন্বিতভাবে বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ আয় করেছে ৭০৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে এ আয় হয়েছিল ৯৯৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে কোম্পানির সমন্বিত আয় কমেছে ২৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। তবে আয় কমলেও এ সময়ে কোম্পানির নিট মুনাফায় বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে কোম্পানির সমন্বিত নিট মুনাফা হয়েছে ৫১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে যেখানে মুনাফা হয়েছিল ১৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানির সমন্বিত নিট মুনাফা বেড়েছে ২৬৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

ডরিন পাওয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে আমাদের মূল কোম্পানির আয় বেড়েছে। তবে সাবসিডিয়ারি কোম্পানির আয় উল্লেখযোগ্যহারে কমেছে। যার ফলে সার্বিকভাবে আমাদের আয়ে নেতিবাচক প্রভাব প্রতীয়মান হয়েছে। তা সত্ত্বেও আর্থিক ব্যয় কমায় বড় মুনাফা এসেছে আলোচ্য সময়ে। মূলত এ সময়ে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়জনিত ক্ষতি কমে আসায় এ মুনাফা অর্জন সম্ভব হয়েছে।

খুলনা পাওয়ার চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ২১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা বিক্রি বাবদ আয় করেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে কোম্পানিটির আয় হয়েছিল ১৭৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানির আয় বেড়েছে ২৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির নিট মুনাফা হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যেখানে নিট লোকসান হয়েছিল ৭৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

কেপিসিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আলোচ্য সময়ে তারা লোকসান কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। যদিও এ সময়ের মধ্যে তারা তাদের ১১০ মেগাওয়াট বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিক্রয় মূল্য ও বুক ভ্যালুর মধ্যে পার্থক্য সমন্বয় করেছে। এ সমন্বয় না হলে আলোচ্য সময়ে তাদের মুনাফা আরও বাড়ত।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে শাহজিবাজার পাওয়ার ও তার সাবসিডিয়ারির সমন্বিত বিক্রি বাবদ আয় হয়েছে ৬৮৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা হয়েছিল ৩৩৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে কোম্পানির আয় বেড়েছে ১০৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির নিট মুনাফা হয়েছে ৬৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে যেখানে নিট লোকসান হয়েছিল ২২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে শাহজিবাজার পাওয়ারের কোম্পানি সচিব ইয়াসিন আহমেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, আলোচ্য সময়ে আমাদের কাছে বিদ্যুতের ভালো চাহিদা থাকায় বিক্রি বাবদ আয় বেড়েছে। যার সুবাদে আমরা পুনরায় লোকসান থেকে মুনাফায় ফিরতে পেরেছি। যদিও আগের অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে বিশেষ কিছু কারণে আমাদের লোকসান হয়েছিল। আলোচ্য সময়ে আমরা যে মুনাফা করেছি তা বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির অংশ।

ইউনাইটেড পাওয়ারের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে সমন্বিতভাবে ১ হাজার ৮৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিক্রি বাবদ আয় হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যেখানে এ আয় হয়েছিল ১ হাজার ৬৩৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে কোম্পানির সমন্বিত আয় বেড়েছে ১৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ। তা সত্ত্বেও প্রধানত দুটি কারণে এ সময়ে কোম্পানির মুনাফায় ভাটা পড়েছে। আলোচ্য সময়ে সমন্বিত নিট মুনাফা হয়েছে ৪৬২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যেখানে এ মুনাফা হয়েছিল ৫৩৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানির সমন্বিত নিট মুনাফা কমেছে ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ।

এ মুনাফা কমার কারণ হিসাবে ইউনাইটেড পাওয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আলোচ্য সময়ে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়জনিত ক্ষতি কিছুটা বেড়েছে। এর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির কারণে ঋণের বিপরীতে বেশি সুদ দিতে হয়েছে। এসব কারণে আমাদের মুনাফায় ভাটা পড়েছে।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে আয় ও মুনাফা দুটোই কমেছে এমন একমাত্র কোম্পানি এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি বাবদ আয় হয়েছে ১৪০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা হয়েছিল ৩২৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে কোম্পানির আয় কমেছে ৫৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গত জুলাই-ডিসেম্বরে কোম্পানির নিট মুনাফা হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে যা হয়েছিল ৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানির মুনাফা কমেছে ৬৩ দশমিক ৭১ শতাংশ।

আর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদক বেসরকারি খাতের একমাত্র কোম্পানি হিসাবে জিবিবি পাওয়ারের বিক্রি ছিল শূন্য। যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ৩৫ কোটি ০৮ লাখ টাকা। বিক্রিশূন্য হওয়ায় আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটিকে ৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা লোকসান গুণতে হয়েছে। যেখানে আগের অর্থবছরের প্রথমার্ধে ৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা নিট মুনাফা হয়েছিল। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিপিডিবির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় এ সময়ে তাদের সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ ছিল। এ জন্য লোকসান হয়েছে।


হাদির মৃত্যু ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ : জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা: রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি হাদির মৃত্যুকে দেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক পরিসরের জন্য ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ বলে উল্লেখ করেন।

ভাষণের শুরুতেই প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি ‘অত্যন্ত হৃদয়বিদারক একটি সংবাদ’ নিয়ে দেশবাসীর সামনে হাজির হয়েছেন। তিনি জানান, সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান টেলিফোনে তাঁকে এই সংবাদটি জানিয়েছেন।

শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামের এই অমর সৈনিককে মহান রাব্বুল আলামিন শহিদ হিসেবে কবুল করুন—এই দোয়া করি।’ তিনি তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত স্ত্রী, পরিবার, স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

প্রধান উপদেষ্টা ভাষণে ঘোষণা দেন, শহিদ ওসমান হাদির স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে। পাশাপাশি তাঁর অকাল মৃত্যুতে আগামী শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন। ওই দিন দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

ভাষণে তিনি আরও বলেন, আগামীকাল শুক্রবার বাদ জুম্মা দেশের প্রতিটি মসজিদে শহিদ ওসমান হাদির রূহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়গুলোতেও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।

সিঙ্গাপুর সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তারা হাদির চিকিৎসায় ‘অত্যন্ত আন্তরিকতা ও পেশাদারিত’ দেখিয়েছে। বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণানের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন তিনি, যিনি একই সঙ্গে একজন চিকিৎসক।

হত্যাকাণ্ডের বিচারের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকল অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’ এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখানো হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ভাষণে ওসমান হাদিকে ‘প্রতিবাদের অনন্য প্রতীক’ উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তাঁর কর্মের মধ্য দিয়ে তিনি দেশপ্রেম, ধৈর্য ও দৃঢ়তার দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। একই সঙ্গে তিনি দেশবাসীর প্রতি ধৈর্য ও সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে তদন্ত পরিচালনার সুযোগ দেওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্র আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ওসমান হাদি ছিলেন পরাজিত শক্তি ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের শত্রু।’ তাঁর কণ্ঠ স্তব্ধ করে ভয় দেখানোর অপচেষ্টা ব্যর্থ হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তাঁর ভাষায়, ভয়, সন্ত্রাস কিংবা রক্তপাতের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।

গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, শহিদ হাদি ছিলেন এই প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখার ইচ্ছা তাঁর ছিল। তিনি বলেন, ‘তাঁর এই মহতী ইচ্ছা অপূর্ণ রয়ে গেল।’

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই শোকের মুহূর্তে আসুন, আমরা শহিদ শরিফ ওসমান হাদির আদর্শ ও ত্যাগকে শক্তিতে পরিণত করি। ধৈর্য ধারণ করি, অপপ্রচার ও গুজবে কান না দিই এবং যে কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকি। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চান, তাদের ফাঁদে পা না দিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে অবিচলভাবে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এটাই হবে শহিদ হাদির প্রতি আমাদের প্রকৃত শ্রদ্ধা।সূত্র : বাসস


জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কেউ আটকে রাখতে পারবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দেশের জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে তখন কেউ বাধা দিয়ে নির্বাচন আটকে রাখতে পারবে না। নির্বাচন ভালোভাবেই হয়ে যাবে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার ৫টি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন ও এবং ভবন ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে রাজদিয়া আব্দুল জব্বার পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো যদি প্রতিযোগিতায় লিপ্ত না হয়ে সহাবস্থানে থাকে তাহলে দেশ ও জনগণের জন্য ভালো হবে।’

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা গণমাধ্যম কর্মীদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান।

এদিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতার জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ সময় ওই ঘটনার মূলহোতা গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘মূল আসামি গ্রেপ্তার হয়নি সত্যি। তবে তার সহযোগী যারা ছিল তারা গ্রেপ্তার হয়েছে।’

এর আগে তিনি সিরাজদীখান কুসুমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন, কুসুমপুর উচ্চবিদ্যালযের চার তলা একাডেমিক ভবন, ইছাপুরা সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের বিদ্যমান একাডেমিক ভবনের ওপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, বিক্রমপুর কুঞ্জবিহারী সরকারি কলেজের একাডেমিক ভবন ও রাজদিয়া আব্দুল জাব্বার পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের চারতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক সৈয়দা নুরমহল আশরাফী ও পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম উপস্থিত ছিলেন।


রাজধানীর হোস্টেলে ঝুলছিল এনসিপি নেত্রীর মরদেহ  

* হতাশা থেকে আত্মহত্যা, ধারণা স্বজনদের * আত্মহত্যা হিসেবে দেখতে রাজি নই। এটা খুন: এনসিপির নেতা রেজা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর জিগাতলার একটি ছাত্রী হোস্টেল থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম জান্নাত আরা রুমি (৩০)। তিনি ধানমন্ডি থানা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী ছিলেন। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার বাড়ি নওগাঁর পত্নীতলায়। তার বাবা জাকির হোসেন।

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজা ফেসবুক পোস্টে জানান, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের হুমকি ও সাইবার বুলিংয়ের কারণে জান্নাত আরা রুমি আত্মহত্যা করেছেন। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, এটি আত্মহত্যা নয় খুন।

হাজারীবাগ থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এনসিপির নেত্রী জান্নাত আরা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। তিনি জিগাতলার ওই ছাত্রী হোস্টেলের একটি কক্ষে একা থাকতেন।’

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ওই হোস্টেলে যায়। ওসি বলেন, ‘পরিচারিকা ডাকাডাকির পর দরজায় ধাক্কাধাক্কি করেন। এ সময় হার্ডবোর্ডের দরজার ছিটকানি খুলে যায়। পরে পুলিশ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় জান্নাত আরার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।’

একই থানার উপপরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান জানান, রুমীর বাড়ি নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর বাসস্ট্যান্ডে। বাবার জাকির হোসেন। রুমী ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে নার্সিংয়ে পড়ালেখা শেষ করেছেন। এরপর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করছিলেন। তবে বর্তমানে কোথায় চাকরি করতেন, নাকি বেকার ছিলেন তা জানাতে পারেননি তিনি।

তবে রুমীর চাচাতো ভাই মেহেদী হাসান জানান, জিগাতলার ওই বাসার ছাত্রী হোস্টেলে থাকতেন রুমী। তার দুবার বিয়ে হয়েছিল। দুই সংসারই ভেঙে গেছে। দুই সংসারে দুটি সন্তানও রয়েছে রুমীর। দুই সন্তান বাবার কাছে থাকে।

তিনি আরও বলেন, ‘শুনেছি রুমীর রুমমেট বাড়িতে গিয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে একাই ছিলেন রুমী। তবে একই ফ্ল্যাটে পাশের রুমে অন্য রুমমেটরা ছিলেন। রাতে গৃহকর্মী পঞ্চম তলায় তাদের ফ্ল্যাটের সামনে গেলে দরজা খোলা দেখতে পান এবং ভেতরে আলো জ্বলতে দেখেন। এরপর উঁকি দিলে রুমীকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তিনিই সবাইকে ডেকে তোলেন বলে শুনেছি।’

রুমীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তার স্বজনরা বলেন, ‘সাংসারিক বা পারিবারিক বিষয়ে হতাশা থেকে এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন রুমী। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিস্তারিত তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানান তারা।

এদিকে জান্নাত আরার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভেরিফায়েড পেজে পোস্ট দেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজা। সেখানে তিনি জানান, গত মাসে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায়ের দিন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জিয়ার কবর খুঁড়তে চাওয়া রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের একজনকে পিটিয়ে পুলিশের কাছে দিয়েছিলেন জান্নাত আরা। এর পর থেকে আওয়ামী লীগ জান্নাত আরাকে সাইবার বুলিং, হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছিলেন বলে তারেক রেজা তার পোস্টে জানান। ওই পোস্টে তারেক রেজা আরও লেখেন, এ কারণে জান্নাত আরা রাতে আত্মহত্যা করেছে।

ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টে তারেক রেজা আরও লিখেছেন, ‘এটাকে আমরা আত্মহত্যা হিসেবে দেখতে রাজি নই। এটা খুন। যারা আমার বোনের জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে, তাদের জীবন আমরা শান্তিতে কাটাতে দেব না।’


স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। দুদকের ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।

অভিযোগ অনুযায়ী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তার দায়িত্বকালীন সময়ে অসাধু উপায় ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ প্রায় ২২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেন ও দখলে রাখেন।

এছাড়া তদন্তে দেখা যায়, তিনি নিজের নামে পরিচালিত ৯টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে মোট ৮৭ কোটি ৪৬ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৩ টাকা লেনদেন করেছেন।

এ সব অর্থকে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ উৎস গোপন ও রূপান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলায় তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, ছেলে শাফি মোদ্দাছির খান জ্যোতি এবং মেয়ে শাফিয়া তাসনিম খানকেও আসামি করা হয়েছে।

তদন্ত অনুযায়ী, তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ নামে বাড়ি নির্মাণ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ১৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ অপরাধলব্ধ অর্থের অবৈধ উৎস গোপনে সহায়তা করেন।

দুদকের তদন্তে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মোট নীট সম্পদের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ কোটি ১৭ লাখ ২১ হাজার ৫৪৮ টাকা, যার বিপরীতে বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া গেছে মাত্র ৫ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ৩৮৬ টাকা।

এ ঘটনায় আসাদুজ্জামান খান কামাল ও অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫ (২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় চার্জশিট দাখিল করেছে কমিশন।


শেখ হাসিনা ও ১২ সেনা কর্মকর্তার বিচার শুরু

জেআইসি সেলে গুম
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক  

আওয়ামী লীগের শাসনামলে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) গুম করে নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। সেই সঙ্গে এই মামলার সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগ গঠন করার আদেশ দেন।

এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ এনে প্রসিকিউসন পক্ষে অভিযোগ গঠনের আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার ৩ সেনা কর্মকর্তাসহ আসামিদের নির্দোষ দাবি করে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চান তাদের আইনজীবীরা।

আসামিদের মধ্যে গ্রেপ্তার যে তিন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়, তারা হলেন— প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ এ মামলায় পলাতক অপর আসামিরা হলেন— ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদিন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী ও মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গত ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এরপর ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে ১৫ জন কর্মরত সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়ার কথা জানায় সেনাবাহিনী। আর্মি অফিসার্স মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, দুটি মামলার ৩০ জন আসামির মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত, একজন এলপিআরে গেছেন এবং বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১৫ জন।

ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে গত ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব মো. হাফিজ সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর ধারা ৫৪১ (১)-এর ক্ষমতাবলে এবং দ্য প্রিজন অ্যাক্টের ধারা ৩-এর বি অনুসারে ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোড-সংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত এমইএস বিল্ডিং নং-৫৪-কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো। গ্রেপ্তার সেনা কর্মকর্তাদের পরবর্তীতে এই কারাগারে রাখা হয়।


না ফেরার দেশে জুলাই বিপ্লবী ওসমান হাদি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

না ফেরার দেশে চলে গেলেন জুলাই বিপ্লবী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি। আজ বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে ওসমান হাদির চিকিৎসা দেখভালের সঙ্গে যুক্ত থাকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা রাত ১০টার দিকে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজেও ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরটি জানানো হয়।

পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবেলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।’

গত ১২ ডিসেম্বর মতিঝিলে জুমার নামাজ পড়ে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করেন হাদি।

এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পথে ওই দিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে হাদিকে বহনকারী অটোরিকশা পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলে থাকা দুষ্কৃতকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অপারেশন শেষে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে ওসমান হাদি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছেন বলে জানা যায়। তার পরিবারের পক্ষ থেকে সিঙ্গাপুরেই অপারেশন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এদিন হাদির শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্যের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।

ওই সময়ে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ওসমান হাদি যদি রবের ডাকে সাড়া দিয়ে শহীদের কাতারে শামিল হয় সে ক্ষেত্রে পুরো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মজলুম জনতাকে সার্বভৌমত্ব নিশ্চিতকরণে শাহবাগে জড়ো হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

ইনকিলাব মঞ্চ বলেছে, খুনিরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাহবাগে অবস্থান করব এবং পুরো বাংলাদেশকে অচল করে দেওয়া হবে। খুনি যদি ভারতে পালিয়ে যায় সে ক্ষেত্রে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে যেকোনো মূল্যে তাকে গ্রেপ্তারপূর্বক ফেরত আনতে হবে।


সিঙ্গাপুরে ওসমান হাদির জরুরি অস্ত্রোপচার, পরিবারের অনুমতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম সম্মুখযোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা এই নেতার জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বার্তার মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।

ফেসবুক পোস্টে দেশবাসীর কাছে তার সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়ে বলা হয়েছে, আল্লাহ যেন তাকে হায়াতে তাইয়্যেবা নসিব করেন। একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, যদি ওসমান হাদি মারা যান বা শহীদের কাতারে শামিল হন, তবে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় স্বাধীনতাকামী জনতাকে শাহবাগে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ অবরোধসহ প্রয়োজনে পুরো দেশ অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় ওই পোস্টে। এছাড়া খুনিরা যদি ভারতে পালিয়ে গিয়ে থাকে, তবে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবিও জানানো হয়েছে।

এর আগে বুধবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকেও হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন বলে নিশ্চিত করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ব্যাটারিচালিত রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে স্থানান্তর করা হয়।


খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল: ডা. জাহিদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত ও স্থিতিশীল রয়েছে। তিনি চিকিৎসকদের দেওয়া চিকিৎসা ঠিকমতো গ্রহণ করতে পারছেন, যা নিয়ে আশাবাদী তার মেডিকেল বোর্ড। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব তথ্য জানান তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

ডা. জাহিদ জানান, বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ড প্রতিনিয়ত তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে চিকিৎসার পরবর্তী ধাপ নির্ধারণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, এখন পর্যন্ত ম্যাডামকে যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তা তিনি গ্রহণ করতে পারছেন এবং গত কয়েকদিনের শারীরিক অবস্থা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। চিকিৎসকরা আশা করছেন, তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবেন।

খালেদা জিয়ার বর্তমান অসুস্থতার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ডা. জাহিদ অভিযোগ করেন, বিগত সরকারের আমলে পরিকল্পিতভাবে তাকে যথাযথ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এর ফলেই তার শারীরিক জটিলতা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে এবং বর্তমানে তিনি বেশ কঠিন সময় পার করছেন। তবে তার বয়স ও অসুস্থতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এবং ২৭ নভেম্বর থেকে তিনি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন। ডা. জাহিদ দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি ও সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন, যাতে তিনি আবারও বাংলাদেশের রাজনীতিতে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারেন।


খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফ করবেন ডা. জাহিদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে যাচ্ছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এই প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হবে বলে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘস্থায়ী বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী গত ২৩ নভেম্বর রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তাকে দ্রুত এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকেই তিনি হাসপাতালটিতে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।


কাদের-সাদ্দামসহ ৭ নেতার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ মোট সাতজন নেতার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর রেজিস্ট্রারের দপ্তরে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে এই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।

মামলায় অভিযুক্ত অন্য নেতারা হলেন—আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল এবং ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি আসিফ ইনান। এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, এই সাতজনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। তদন্ত শেষের ১০ দিনের মাথায় তাদের বিরুদ্ধে এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলো।


সাংবাদিক আনিস আলমগীরের মুক্তি দাবি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের পক্ষে কথিত ‘অপপ্রচার’ চালানোর অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি এই গ্রেপ্তারকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত এবং একটি ‘উদ্বেগজনক প্রবণতা’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক গবেষক রেহাব মাহমুদ এক বিবৃতিতে বলেন, আনিস আলমগীরের গ্রেপ্তার ভিন্নমত দমনের চলমান প্রক্রিয়ারই অংশ। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের সমর্থক সন্দেহে বর্তমানে অনেককেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অপব্যবহার বন্ধ করে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তির (আইসিসিপিআর) বাধ্যবাধকতা মেনে চলার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠব্য নির্বাচনের আগে ভীতিমুক্ত পরিবেশ তৈরি এবং বাক-স্বাধীনতা ও সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করার তাগিদ দেন।

গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে ধানমন্ডি থেকে আনিস আলমগীরকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয় এবং পরদিন উত্তরা পশ্চিম থানার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে আনিস আলমগীর বলেন, ‘আমি একজন সাংবাদিক। যারা ক্ষমতায় থাকে আমি তাদের প্রশ্ন করি। দুই দশক ধরে আমি এটাই করে আসছি। কারও কাছে মাথা নত করা আমার কাজ নয়।’

উল্লেখ্য, এই মামলায় আনিস আলমগীর ছাড়াও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন, মডেল মারিয়া কিসপট্টা ও উপস্থাপক ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে অভিযুক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও টকশোতে অংশ নিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রবিরোধী গুজব ও প্রচারণায় লিপ্ত রয়েছেন। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের ফলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা উসকানি পাচ্ছে এবং রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করা হয়।


হাজারীবাগে হোস্টেল থেকে এনসিপি নেত্রী জান্নাতারার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর হাজারীবাগের জিগাতলা কাঁচাবাজার সংলগ্ন একটি ছাত্রীনিবাস থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেত্রী জান্নাতারা রুমীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে তার মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ৩০ বছর বয়সী জান্নাতারা রুমী এনসিপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ধানমন্ডি থানা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার নাজিরপুর এলাকায়। তার বাবার নাম মো. জাকির হোসেন এবং মায়ের নাম নুরজাহান বেগম।

হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জান্নাতারা ওই এলাকায় অবস্থানকালীন সময়ে সক্রিয়ভাবে এনসিপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড, তা খতিয়ে দেখতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।


ঢাকার ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রের কার্যক্রম ফের চালু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিরাপত্তাজনিত কারণে গতকাল দুপুরের পর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার পর আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকে আবারও স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রের (আইভ্যাক)। আইভ্যাক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কার্যক্রম চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

এর আগে চলমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার পর থেকে ভিসা সেন্টারের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে আইভ্যাক বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে একটি জরুরি নোটিশও প্রকাশ করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল, উদ্ভূত নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে বুধবার দুপুরের পর আর কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে না।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, যেসব আবেদনকারীর বুধবার স্লট বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নির্ধারিত ছিল, তাদের পরবর্তীতে নতুন তারিখ ও সময় নির্ধারণ করে জানিয়ে দেওয়া হবে। আজ সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় সেবা প্রত্যাশীরা আবারও যথারীতি সেবা পাচ্ছেন।


banner close