সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
১৩ পৌষ ১৪৩২

শুল্ক কমালেও খেজুরের দাম নাগালের বাইরে

উচ্চ শুল্কের কারণে বাড়তি দাম, বলছেন ব্যবসায়ীরা
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:১৬
রতন কান্তি দেবাশীষ, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত
রতন কান্তি দেবাশীষ, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত : ৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:১৬

খেজুর আমদানিতে শুল্ক ছিল ৫৩ শতাংশ, ৮ ফেব্রুয়ারি ১০ শতাংশ কমিয়ে করা হয়েছে ৪৩ শতাংশ। শুল্ক কমানোর পরও দাম কমেনি খেজুরের। উল্টো দাম বেড়েছে। যদিও বন্দর থেকে খেজুর খালাসের পরিমাণও বেড়েছে। গত কয়েক দিনে ৬০৫ কনটেইনার খেজুর খালাসের কার্যক্রম চলছে এবং প্রতিদিনই খালাস অব্যাহত রয়েছে।

জানা গেছে, আগামী ১২ মার্চ পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রমজান মাসজুড়ে সিয়াম সাধনা করেন। দিনভর রোজা রাখার পর সন্ধ্যায় ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে খেজুর। খেজুর ছাড়া এখন আর ইফতারের কথা ভাবা যায় না। প্রায় সব রোজাদারই খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করেন। এ কারণে রমজান মাসে চাহিদা বেশি থাকা পণ্যগুলোর একটি খেজুর। পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে চলতি মাসে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ কমিয়েছে সরকার। এর পাশাপাশি বাজারে তদারকি ও বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও তা কোনো কাজেই আসছে না। গত বছরের তুলনায় বর্তমানে দেশের বাজারে খেজুরের দাম প্রায় ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বেড়েছে।

৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি আদেশে খেজুরের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে আনার ঘোষণা দেয়। এর আগে খেজুর আমদানিতে সর্বমোট ৫৩ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে খেজুরের শুল্কায়ন মূল্য প্রতি টন ১ হাজার থেকে ২ হাজার ৭৫০ ডলার। এর সঙ্গে কাস্টমস ডিউটি ১৫ শতাংশ, রেগুলেটরি ডিউটি ৩ শতাংশ ও ভ্যাট ১৫ শতাংশ। পাশাপাশি অগ্রিম আয়কর ও অগ্রিম কর ৫ শতাংশ হারে দিতে হচ্ছে। এতে বর্তমানে সর্বমোট ৪৩ শতাংশ শুল্ক দিতে হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, গত রোজার আগে মানভেদে প্রতি কেজি খেজুরে শুল্ক দিতে হতো ৫ দশমিক ৪৫ থেকে ২১ দশমিক ৮৪ টাকা। তবে এবার খেজুরকে ‘বিলাসীপণ্যের’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে খেজুরের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৫৩ শতাংশ করা হয়। ফলে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই বেড়ে গেছে। এবার শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫৪ থেকে ২০৮ টাকা। মূলত শুল্কের প্রভাব পড়েছে খেজুরের দামে। গত বছরের তুলনায় প্রতি কেজি খেজুরে জাতভেদে দাম বেড়েছে ১০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত। দেশে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া খেজুরের মধ্যে রয়েছে দাবাস, জাহিদি, বরই ও গলা খেজুর।

চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি গলা বা বাংলা খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, জাহিদি খেজুর ২৪০-২৬০ ও মানভেদে দাবাস খেজুর ৪৫০-৫৫০ টাকায়। এ ছাড়া বরই খেজুর মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪৪০-৫৪০ টাকায়। গত বছর এসব খেজুরের দাম ছিল বর্তমান দরের অর্ধেকেরও কম।

এদিকে অভিজাত শ্রেণির কাছে পছন্দের খেজুরের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবের মেডজুল, মাবরুম, আজওয়া ও মরিয়ম। গত এক মাসের ব্যবধানে এসব খেজুরের দাম কেজিতে ২০০-৩০০ টাকা বেড়েছে। জাম্বো মেডজুল মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, সাধারণ মেডজুল ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০, মাবরুম খেজুর ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৫০০, আজওয়া খেজুর মানভেদে ৯০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে ভালো জাতের মরিয়ম বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়। এ ছাড়া কালমি মরিয়ম ৮০০-৯০০ টাকা, সুফরি মরিয়ম ৭৫০-৮০০, আম্বার ও সাফাভি ৯০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ ও সুক্কারি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৩ সালে রোজার আগে জাহিদি জাতের খেজুরের দাম ছিল কার্টনপ্রতি (১০ কেজি) ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। শুল্ক আরোপের কারণে দাম বাড়ার পর গত বছরের শেষ সপ্তাহেও একই জাতের খেজুরের দাম ছিল কার্টনপ্রতি ১ হাজার ৮০০ টাকা। তবে এখন ১০ শতাংশ শুল্ক কমিয়েও এই জাতের খেজুরের কার্টন হাঁকা হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা।

পাইকারি ও ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি ৫ কেজির এক কার্টন মেডজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার টাকায়। গত বছর এ খেজুর বিক্রি হয়েছিল ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৮০০ টাকায়। অন্যদিকে সাধারণ খোলা খেজুর প্রতি কেজি ফেব্রুয়ারির শুরুতে কেজিপ্রতি পাইকারি দাম ছিল ১২৮-১৩০ টাকা। বর্তমানে দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৫৫ টাকায়।

পাইকারি বাজার সূত্রে জানা গেছে, বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় জাহিদি জাতের খেজুর। এক বছর আগে প্রতি কেজি খেজুর খুচরা পর্যায়ে ১৫০ টাকায় পাওয়া যেত। শুল্ক কমানোর পর বর্তমানে এ খেজুর খুচরায় বিক্রি করতে হবে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের জন্য আমদানি করা খোলা (বস্তায় বিক্রি হওয়া ভেজা খেজুর) রোজা আসার আগেই কেজিপ্রতি পাইকারি দাম ১৫৫ টাকায় উঠে গেছে। ফলে খুচরা পর্যায়ে এ মানের খেজুর বিক্রি করতে হবে কমপক্ষে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়। অবশ্য গতকাল বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল হক টিটু ঘোষণা দিয়েছেন, সাধারণ মানুষের কাছে খেজুর পৌঁছে দিতে বস্তায় আসা জাহিদি খেজুরের দাম কমানো হবে। আজ রোববার (৩ মার্চ) এই খেজুরের দাম কমানোর ঘোষণা আসার কথা জানিয়েছেন তিনি।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ দিনে সবচেয়ে বেশি খেজুর বন্দর থেকে খালাস নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আগে বন্দর থেকে দিনে খেজুরভর্তি ছয় কনটেইনার খালাস হলেও এখন সেটা ৭০ কনটেইনারে গিয়ে টেকেছে। কিন্তু দাম কমছে না।

ক্যাবের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, সরকার শুল্ক কমানোর পর ব্যবসায়ীরা খেজুর খালাসে তোড়জোড় শুরু করেছে। শুল্ক কমানোর পরও ভোক্তারা কম দামে খেজুর কিনতে পারছেন না। শুল্ক কমানোর পর পর্যাপ্ত আমদানি হলেও দাম কেন কমছে না বিষয়টি তদারকি করতে হবে। তদারকি না করলে রোজায় খেজুর কিনতে পারবে না ভোক্তারা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২২ হাজার ৬৬৩ টন খেজুর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খালাস করেছেন আমদানিকারকরা। ১৪৫ দিনের মধ্যে গত ১৫ দিনেই বেশি খেজুরের চালান খালাস হয়েছে। ২৮ ধরনের খেজুর দেশের ৮২টি প্রতিষ্ঠান সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্দান, মিসর, আলজেরিয়া, নামিবিয়া, তিউনিশিয়া ও আফগানিস্তান থেকে আমদানি করেছে।

জানা গেছে, চার মাস আগে খেজুর আমদানি করলেও শুল্ক কমবে এ আশায় ব্যবসায়ীরা পণ্যটি চট্টগ্রাম বন্দরে গুদাম করে রেখেছিলেন। ফলে বেসরকারি ১৯টি ডিপোতে ১ হাজার কনটেইনার (প্রতি কনটেইনারে ২২-২৪ হাজার কেজি খেজুর থাকে) খেজুর পড়ে ছিল। এখন খেজুরভর্তি ৬০৫টি কনটেইনার খালাস চলছে। এখনো খেজুরভর্তি ৩৯৫টি কনটেইনার খালাসের উদ্যোগ নেয়নি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার কাজী ইরাজ ইশতিয়াক বলেন, প্রচুর পরিমাণে খেজুর খালাস হচ্ছে। প্রতিদিনই খালাস করছেন আমদানিকারকরা। তিনি বলেন, খেজুরের শুল্ক ১০ শতাংশ কমানো হয়েছে।

তিনি জানান, খেজুরের চারটি ক্যাটাগরি রয়েছে। একেকটি ক্যাটাগরির একেক রকম শুল্কহার হয়। মিথ্যা ঘোষণায় আমদানির প্রবণতাও রয়েছে। অনেক সময় উচ্চ শুল্কহারে খেজুর এনে কম শুল্কহারে ঘোষণা দেওয়া হয়। এমন বেশ কিছু ঘটনাও ঘটেছে। এ জন্য আমরাও সতর্ক আছি, যেন সরকার রাজস্ব বঞ্চিত না হয়।

উচ্চ শুল্কহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা এনবিআর নির্ধারিত, এ ব্যাপারে আমাদের বলার বা করার কিছু নেই। আমরা নির্ধারিত শুল্ক নিয়ে খালাসের ব্যবস্থা করি। খেজুর বিলাসী পণ্য কি না, এ বিষয়েও তিনি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

খাতুনগঞ্জের ডেটস অ্যান্ড ড্রাই ফ্রুটস আমদানিকারক মো. ওমর ফারুক বলেন, খেজুর আমদানিতে কাস্টমস ট্যাক্স ১০ শতাংশ কমালেও অন্যান্য শুল্ক ঠিক রেখেছে এনবিআর। ফলে উচ্চমাত্রায় ট্যাক্স দিয়েই আনতে হচ্ছে। ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সামান্য এ শুল্ক কমানোয় খেজুরের দামে প্রভাব পড়বে না।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার সুলতান আরেফিন বলেন, শুল্ক কমানোর পর থেকে আমদানিকারকরা খেজুর খালাস নিতে শুরু করেছেন। বর্তমানে খেজুর খালাসের পরিমাণও বেড়েছে। আগে প্রতিদিন গড়ে খেজুরভর্তি ছয় কনটেইনার খালাস হলে এখন সেটি ৭০ কনটেইনার খালাস হচ্ছে।

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতি কেজি খেজুর ১১০ টাকায় কিনলে ১৪০-১৫০ টাকা শুল্ক দিতে হয়। ১২০ টাকায় কিনলে ২০৮ টাকা শুল্ক দিতে হয়। গত বছর ৯০ টাকায় ডলার কিনতে পারতাম। এ বছর ১২০-১২২ টাকা দিতে হচ্ছে। কাস্টমস থেকে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ইচ্ছেমতো করা হচ্ছে। এলসি যে মূল্যে খুলছি সে অনুযায়ী শুল্ক নির্ধারণ করা হলে খেজুরের দাম অর্ধেকে নেমে আসে। কিন্তু সেটা করা হচ্ছে না।

বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, পণ্য বন্দরে আসার পর শুল্ক পরিশোধ করে খালাস করতে হয়। এসব কাস্টমসের বিষয়।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ ছগীর আহমেদ বলেন, ডলারের দাম বাড়াতে পণ্যের আমদানি খরচ বেড়ে যায়। এর পরও ব্যবসায়ীরা সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করছেন।


হাদি হত্যাকাণ্ডে ভারতে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি: মেঘালয় পুলিশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে নতুন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ভারতে দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তারের যে দাবি বাংলাদেশ পুলিশ করেছে, তা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে ভারতের মেঘালয় রাজ্য পুলিশ। মেঘালয় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ধরনের কোনো গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেনি এবং বাংলাদেশ পুলিশের দাবিটি সঠিক নয়।

আজ রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেঘালয় পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত কোনো ব্যক্তি তাদের রাজ্যে প্রবেশ করেছে বলে কোনো প্রমাণ নেই এবং এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করা হয়নি।

এর আগে আজ সকালেই ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছিলেন যে, হাদি হত্যার প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম ওরফে দাউদ খানের দুই সহযোগীকে মেঘালয় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তিনি জানিয়েছিলেন, ‘ইনফরমাল চ্যানেল’ বা অনানুষ্ঠানিক সূত্রের মাধ্যমে তাঁরা এই গ্রেপ্তারের খবর পেয়েছেন। ডিএমপির ভাষ্য অনুযায়ী, আসামিরা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে মেঘালয়ে প্রবেশ করেছিল।

তবে শুধু মেঘালয় পুলিশই নয়, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-ও বাংলাদেশ পুলিশের এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছে। বিএসএফ-এর মেঘালয় ফ্রন্টিয়ারের প্রধান ওপি উপাধ্যায় জানিয়েছেন, হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তি মেঘালয়ে প্রবেশের কোনো তথ্য বা প্রমাণ তাঁদের কাছে নেই। তাঁরা এ ধরনের কোনো ঘটনার বিষয়ে অবগত নন বলেও স্পষ্ট করেছেন।

মেঘালয় পুলিশ ও বিএসএফ আরও জানিয়েছে যে, তারা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যেকোনো আইনগত সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তবে বর্তমানে তারা সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার করেছে যাতে কোনো অপরাধী সীমান্ত পার হতে না পারে।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় শরীফ ওসমান হাদিকে মাথায় গুলি করা হয়। দীর্ঘ ছয় দিন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং ইনকিলাব মঞ্চ খুনিদের দ্রুত বিচার ও গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরস্পরবিরোধী এই বক্তব্যের ফলে হাদি হত্যার তদন্ত প্রক্রিয়া এখন এক নতুন মোড় নিল।


ওসমান হাদি হত্যা: হামলাকারীর ২ সহযোগী ভারতে আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বড় ধরনের অগ্রগতির তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম জানান, হাদির খুনিদের পালিয়ে যেতে সহায়তাকারী দুই সহযোগীকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনানুষ্ঠানিক সূত্রের মাধ্যমে মেঘালয় পুলিশের পক্ষ থেকে পুত্তি ও সামী নামে দুই ব্যক্তির গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

পুলিশের তদন্ত ও গ্রেফতারকৃতদের জবানবন্দি অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ফয়সাল ও তাঁর সহযোগী আলমগীর অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশ ত্যাগ করেছেন। গত ১২ ডিসেম্বর পল্টনে হাদিকে গুলি করার পরপরই তাঁরা সিএনজিযোগে আমিনবাজার ও সেখান থেকে মানিকগঞ্জের কালামপুর যান। পরে একটি প্রাইভেটকারে করে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত এলাকায় পৌঁছান। সেখানে আগে থেকেই ফিলিপ ও সঞ্জয় নামে দুই ব্যক্তি তাঁদের সীমান্ত পার করে দিতে অপেক্ষায় ছিলেন। সীমান্ত অতিক্রম করার পর তাঁদের ভারতীয় নাগরিক পুত্তির কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং পরবর্তীতে ট্যাক্সি চালক সামী তাঁদের মেঘালয় রাজ্যের তুরা নামক নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেন। পুলিশ ধারণা করছে, আসামিরা অবৈধ পথেই সীমান্ত পাড়ি দিয়েছেন।

আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি বিদেশি পিস্তল, ৫২ রাউন্ড গুলি, ম্যাগাজিন, একটি মোটরসাইকেল এবং ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৫৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিপরীতে ২১৮ কোটি টাকার স্বাক্ষরিত চেক জব্দ করা হয়েছে, যা এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে বড় ধরনের অর্থায়নের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে মূল অপরাধীদের নাম এখনই প্রকাশ না করলেও পুলিশ জানিয়েছে, আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই এই মামলার পূর্ণাঙ্গ অভিযোগপত্র বা চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইতোমধ্যে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৬ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং ৪ জন সাক্ষী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছেন। হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কারণ সম্পর্কে নজরুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শরীফ ওসমান হাদি অত্যন্ত সরব ছিলেন এবং একটি নির্দিষ্ট আদর্শকে ধারণ করতেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁর এই আদর্শিক অবস্থান অথবা ৫ আগস্টের প্রেক্ষাপটে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁরাই এই সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকতে পারেন।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজ শেষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পথে চলন্ত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হন শরীফ ওসমান হাদি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হলেও দীর্ঘ ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি শাহাদতবরণ করেন। প্রথমে এটি হত্যাচেষ্টা মামলা হিসেবে দায়ের হলেও হাদির মৃত্যুর পর আদালতের নির্দেশে এটি এখন ৩০২ ধারার নিয়মিত হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।


জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে জামায়াতের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ তাজনূভা জাবীনের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট বা আকাঙ্ক্ষাকে কৌশলে জামায়াতে ইসলামীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ তুলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে পদত্যাগ করেছেন দলটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাজনূভা জাবীন। আজ রোববার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক দীর্ঘ ও আবেগঘন পোস্টের মাধ্যমে তিনি এই ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্তও জানিয়েছেন। তাজনূভা জাবীন তাঁর পোস্টে দলটির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসভঙ্গ’ এবং ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ এনে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন।

তাজনূভা জাবীন দাবি করেছেন, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে এনসিপির এই জোট কোনো আকস্মিক রাজনৈতিক কৌশল নয়, বরং এটি অত্যন্ত সুনিপুণভাবে সাজানো একটি পরিকল্পনা। তিনি উল্লেখ করেন, কদিন আগেই সাড়ম্বরে ১২৫ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হলেও শেষ মুহূর্তে মাত্র ৩০টি আসনের বিনিময়ে জোটের সিদ্ধান্তে সিলমোহর বসানো হয়েছে। এর ফলে বাকি প্রার্থীদের নির্বাচনের পথ কার্যত রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে এমন এক সময়ে, যখন কারো পক্ষে স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানোর মতো প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি প্রশ্ন তোলেন, যেখানে চরমোনাই পীরের দল জামায়াতের কাছ থেকে ৭০টি আসন আদায় করতে পেরেছে, সেখানে জুলাই অভ্যুত্থান থেকে জন্ম নেওয়া একটি দল কেন মাত্র ৩০টি আসনে নিজেদের সীমাবদ্ধ করে ফেলল? জাবীনের মতে, জুলাইয়ের রাজনীতি ধারণ করার বদলে পুরো আন্দোলনকেই জামায়াতের কাছে জিম্মি করে দেওয়া হয়েছে।

দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও নেতৃত্বের কড়া সমালোচনা করে এই নেত্রী বলেন, এনসিপির শীর্ষ নেতারা এখন নিজেদের মধ্যে ‘মাইনাসের রাজনীতি’ করতে এত বেশি ব্যস্ত যে, তাঁদের হাত দিয়ে দেশের জন্য নতুন কোনো ‘বাংলাদেশপন্থি’ রাজনীতি করা সম্ভব নয়। তিনি অভিযোগ করেন, যারা আসলেই এনসিপির ঘোষিত মধ্যপন্থা ও নতুন বন্দোবস্তের আদর্শ ধারণ করতে চেয়েছেন, তাঁদের ‘আবেগী’ তকমা দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষমতাহীন করে রাখা হয়েছে। জাবীনের ভাষায়, এনসিপি এখন আর সেই বিপ্লবী সংগঠন নেই বরং এটি জুলাইয়ের স্পিরিটকে কেবল ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মিলিয়ন ফলোয়ারওয়ালা তথাকথিত ‘গণ-অভ্যুত্থানের নেতারা’ বারবার দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙলেও তাঁদের কোনো জবাবদিহিতা নেই, অথচ সাধারণ সদস্যরা পদত্যাগ করলে সেটাকে অপরাধ হিসেবে দেখা হয়।

ব্যক্তিগত দুঃখের কথা জানিয়ে তাজনূভা জাবীন লিখেছেন, তাঁর মা মেয়ের নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এলেও আজ তাঁকে এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে হলো। তবে রাজনৈতিক সততার নজির স্থাপন করে তিনি তাঁর নির্বাচনী তহবিলে সাধারণ মানুষের দেওয়া প্রতিটি পয়সা এক এক করে ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, জামায়াতের সাথে জোট না চাওয়া মানেই বিএনপির পক্ষে থাকা নয়; বরং তিনি চেয়েছিলেন একটি স্বতন্ত্র তৃতীয় শক্তি হিসেবে এনসিপি নিজের স্বকীয়তা বজায় রাখুক। দল ছাড়লেও জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা ও দেশের গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের লড়াই আমৃত্যু চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন এই তরুণ চিকিৎসক ও নেত্রী। তাঁর এই পদত্যাগ নির্বাচনের প্রাক্কালে এনসিপির অভ্যন্তরীণ সংকট ও আদর্শিক বিভক্তিকে জনসমক্ষে আরও স্পষ্ট করে তুলল।


ভেজাল খাদ্যদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও খাস জমি দখল পুনরুদ্ধারে সাহসী অভিযান, ফরিদপুরের এসিল্যান্ড সানাউল মোর্শেদের জনআস্থা অর্জন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা জেলা প্রতিনিধি

পাবনার চলনবিল অধ্যুষিত এলাকার এক জনপদের নাম ফরিদপুর উপজেলা। এ উপজেলায় মূলত উৎকৃষ্ট মানের দুগ্ধজাত পণ্য (ঘি ও ছানা) এবং তাঁতশিল্প ও কৃষিপণ্যের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।এটি পাবনা জেলা শহর থেকে দূরে অবস্থিত হাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই অবহেলিত একটি উপজেলা।দীর্ঘ দিন ধরে এই উপজেলা ও উপজেলার মানুষ উন্নয়ন, শিক্ষা,বিভিন্ন আইনি সেবা থেকে বঞ্চিত ছিল। বিশেষ করে, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য (ঘি ও ছানা) সহ ভূমি সেবা ব্যবস্থাপনা ছিল নাজুক প্রকৃতির।

এ উপজেলার ভূমি সেবা থেকে শুরু করে, মাদক, অবৈধ খাস জমি দখল উচ্ছেদ,খাল পুনরুদ্ধার, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ,ইভটিজিং রোধ,দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ, যানযট নিরোসন,নকল দুধ উৎপাদন,ভেজাল ঘি,চায়না দুয়ারী জাল ও আইন শৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন একজন তরুন, দায়িত্বশীল সাহসী, নির্ভিক কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার ভূমি ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সানাউল মোর্শেদ।

গত ১লা জুলাই ২০২৪ এ ফরিদপুর উপজেলায় এসিল্যান্ড হিসাবে যোগদান করেন।যোগদানের পরপর তিনি ফরিদপুর পৌরসভার প্রশাসক এর পাশাপাশি পুংগলী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক হিসাবে ন্যায় নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি বনওয়ারীনগর বণিক সমিতি সভাপতি দায়িত্ব অন্তত দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছেন। ফরিদপুর পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহনের পর বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করেন। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, অনলাইন সনদ বজ্য ব্যবস্থাপনা, মশক নিধন, সড়ক বাতি, উপজেলা মাঠ সংস্কার,প্রেসক্লাব,মুক্ত মঞ্চ,ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিষ্কার সহ শিশু বিনোদন মুলুক পার্ক নির্মান করেন।

গত (১৬) মাসে তিনি বিভিন্ন আইনে ৯৬ টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন।তার মধ্য হতে বিভিন্ন মেয়াদে ২৪ জনকে কারাদণ্ড সহ অনন্যা জনকে মোট ৩১,২২,০৫০০/একত্রিশ লাখ বাইশ হাজার পাঁচশত টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।

নামজারী ও মিস কেস সহ প্রায় (১২০০০) বারো হাজারের বেশি মামলা নিস্পত্তি করেছেন। ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে ব্যপক ভূমিকা পালন করেছেন।গত চলতি বছরে ১,৬৮,০০০০০/= এক কোটি আটষট্টি লাখ টাকা আদায় করেন। ভিপি (ক) তফসিল ভুক্ত জায়গা বকেয়া লিজ নবায়ন রাজস্ব থেকে প্রায় ১৬,৩২০০০/-ষোল লাখ বত্রিশ হাজার টাকা আদায় করেন। হাট বাজার বকেয়া রাজস্ব থেকে ১৫,০০,০০০/- পনোরো লাখ টাকার অধিক টাকা আদায় সহ ২০ একরের অধিক কৃষি ও অকৃষি খাস জমির অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও উদ্ধার করেন যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১২ কোটির টাকার মতো।খাল দখল মুক্ত ১৬,৩২২২৯/= ষোল লাখ বত্রিশ হাজার দুই শত উনত্রিশ টাকা আদায় সহ খাস জমি দখল মুক্ত করেন।

এক ভূমি সেবা গ্রহিতা মো. ঝন্টু মিয়া বলেন, আমি আমার একটি নামজারীর জন্য আবেদন করেছিলাম, আমি সেই নামজারী টা খুব অল্প সময়ের মধ্যে করতে পেরেছি। আরেক ভূমি সেবা গ্রহিতা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, আমার একটা মিস কেস খুব অল্প সময়ের ভিতর শেষ হয়েছে এবং কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করে আমাদের এসিল্যান্ড সাহেব রায় প্রদান করেছেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে, মো. সানাউল মোর্শেদ বলেন, আমি চাই এই অবহেলিত ফরিদপুর উপজেলা সর্ব দিক দিয়ে এগিয়ে থাক। আমার এই ভূমি সেবা পেতে যেন সাধারণ মানুষ কোন প্রকার হয়রানি শিকার না হয় সেই দিক আমার বিশেষ নজরদারি থাকবে এবং আমার মোবাইল কোর্ট অভিযানে যে জরিমানা করা তা শুধু সবাইকে সচেতন তৈরি করা,কোন শাস্তি প্রদান করা নয়। তবে এখানে শুধু আমার একার পক্ষে এমন অপরাধ রোধ করা সম্ভব নয়।এখানে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সামাজের সকলে প্রচেষ্টায় এমন অপরাধ রোধ করা সম্ভব।


দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে জুবায়ের রহমান চৌধুরীর শপথ গ্রহণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। আজ রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে এই শপথ বাক্য পাঠ করান। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, বিশিষ্ট নাগরিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা এই মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী হন। সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের পরিচালনায় এই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

বিদায়ী প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ গতকাল শনিবার তাঁর কর্মজীবনের ৬৭ বছর পূর্ণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরে গেছেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়া বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নিয়োগ আজ শপথ গ্রহণের মুহূর্ত থেকেই কার্যকর হয়েছে। এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে দেওয়া ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি তাঁকে এই পদে নিয়োগ দেন এবং আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। শপথ গ্রহণ শেষে প্রথা অনুযায়ী নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতিকে উপস্থিত অতিথিরা অভিনন্দন জানান। এই রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতার সরাসরি সম্প্রচার করে।

পেশাগত জীবনে দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ১৯৮৫ সালে জেলা জজ আদালতে এবং ১৯৮৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। দীর্ঘ বিচারিক পরিক্রমায় তিনি ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন এবং এর দুই বছর পর ২০০৫ সালে স্থায়ী বিচারপতির মর্যাদা পান। তাঁর নিষ্ঠা ও মেধার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট তাঁকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে উন্নীত করা হয়েছিল। শিক্ষাজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি (সম্মান) ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর যুক্তরাজ্য থেকে আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ে উচ্চতর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর এই নিয়োগ দেশের বিচার বিভাগে নতুন গতির সঞ্চার করবে এবং বিচারপ্রার্থী মানুষের আস্থা আরও সুদৃঢ় করবে বলে আশা প্রকাশ করছেন আইন সংশ্লিষ্টরা।


ওসমান হাদি হত্যার মূল আসামিরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, স্বীকার করল পুলিশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বড় ধরনের তথ্য প্রকাশ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। মামলার প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল এবং তাঁর আরও এক সহযোগী ইতিমধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে স্বীকার করেছে পুলিশ। আজ রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এসএন মো. নজরুল ইসলাম জানান, অভিযুক্তরা ময়মনসিংহ সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডটি সম্পূর্ণ পূর্ব-পরিকল্পিত ছিল বলে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ছয়জন ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে এবং আগামী ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যে, অর্থাৎ ৭ জানুয়ারির মধ্যেই মামলার পূর্ণাঙ্গ চার্জশিট বা অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। পুলিশ আশা করছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

এর আগে গতকাল শনিবার রাতে শাহবাগ মোড়ে ইনকিলাব মঞ্চের অবস্থান কর্মসূচিতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানিয়েছিলেন, হাদি হত্যাকাণ্ডটি বেশ রহস্যজনক এবং এর পেছনে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনে পুলিশ, ডিবি ও র‍্যাবসহ রাষ্ট্রের সকল গোয়েন্দা সংস্থা একযোগে কাজ করছে। তদন্তে সন্তোষজনক অগ্রগতি হলেও অপরাধীদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ নষ্ট করতে এবং তদন্তের স্বার্থে এখনই সব তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। পুলিশ প্রধান আশ্বস্ত করেছেন যে, অপরাধীরা যেখানেই থাকুক, তাদের আইনের আওতায় আনতে সরকার বদ্ধপরিকর। বর্তমানে ইনকিলাব মঞ্চের আন্দোলনের মুখে পুলিশি তৎপরতা আরও জোরদার করা হয়েছে।


নির্বাচন বানচালের চেষ্টা প্রতিহত করা হবে : আদিলুর রহমান খান

আপডেটেড ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০২:২৮
মাদারীপুর প্রতিনিধি

শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, দেশের প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) মাদারীপুরে জুলাই আন্দোলনে শহীদদের কবর জিয়ারত ও স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি আসন্ন নির্বাচনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকার একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করবে। যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে, তাদের কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের কোনো দেশপ্রেমিক মানুষই নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করবে না। দেশের প্রতিটি নাগরিকই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এগিয়ে আসবে এবং সরকারকে সহযোগিতা করবে।

এর আগে তিনি মঠের বাজার এলাকায় জুলাই আন্দোলনে শহীদ নাইমুর রহমান ও শহীদ মামুনের কবর জিয়ারত করেন এবং স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে শিবচর উপজেলায় হাউজিং প্রকল্প ও সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্টের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন।

এ সময় মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আল নোমানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত বিভিন্ন জেলায় গিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শনের পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনের শহীদদের কবর জিয়ারত করা হচ্ছে এবং তাদের পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।


চিংড়ি রপ্তানিতে আন্তর্জাতিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশের চিংড়ির স্বাদ ও মান বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে শুধু আকার বা স্বাদ বিবেচ্য নয়; চিংড়ির স্বাস্থ্যমান, পরিবেশসম্মত উৎপাদন পদ্ধতি এবং অ্যান্টিবায়োটিকমুক্ত অবস্থা কঠোরভাবে পরীক্ষা করা হয়। তাই রপ্তানিকারক ও উৎপাদনকারীদের আন্তর্জাতিক মান ও পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন ও আড়ত মালিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারতসহ বাইরের দেশ থেকে অথবা দেশের ভেতরে অবৈধভাবে পণ্য আসা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ব্যবসায়ীরাও ন্যায্যভাবে লাভবান হতে পারেন না। অনেক ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত পণ্য ফেলে দিতে হয়, যা সরাসরি জাতীয় সম্পদের অপচয়।’

বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘কৃষি খাতে যে ভর্তুকিযুক্ত বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হয়, মৎস্য খাত এখনো তা পায় না। তবে গত এক বছর ধরে এ বিষয়ে কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে শিগগিরই প্রায় ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় যে পক্ষই জড়িত থাকুক না কেন, সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে। নিরাপত্তা ঝুঁকি কমাতে পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরাপদভাবে আয়োজনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে।’

দেশের মৎস্য খাত সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, ‘পদ্ধতিগত ঘাটতির কারণে বাংলাদেশ এখনো এ খাত থেকে পূর্ণাঙ্গ সুফল অর্জন করতে পারেনি। প্রাকৃতিক উৎস থেকে মাছের পোনা আহরণে আইনগত সীমাবদ্ধতা থাকায় পোনা উৎপাদন বাড়াতে দেশে হ্যাচারির সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সরকারের নীতিগত ত্রুটির কারণে চিংড়ি রপ্তানি খাত পিছিয়ে পড়েছে। রপ্তানিতে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাসসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।


মাদক ভাগাভাগি নিয়ে খুলনায় এনসিপি নেতাকে গুলি: র‌্যাব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদারকে গুলি করার রহস্য উন্মোচন করেছে র‍্যাব। র‍্যাব-৬ জানিয়েছে, এই হামলার নেপথ্যে রাজনৈতিক কোনো কারণ নয়, বরং মাদক ব্যবসা ও লুণ্ঠিত মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল কাজ করেছে। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে খুলনার র‍্যাব-৬ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উপ-অধিনায়ক মেজর মো. নাজমুল ইসলাম। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত প্রধান হামলাকারী শীর্ষ সন্ত্রাসী শামীম শিকদার ওরফে ঢাকাইয়া শামীমসহ মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২২ ডিসেম্বর সোনাডাঙ্গা এলাকার ‘মুক্তা হাউস’ নামের একটি ফ্ল্যাটে মোতালেব শিকদারকে মাথায় লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামি শামীম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে যে, ওই ফ্ল্যাটটি জাতীয় যুবশক্তির নেত্রী তানিমা তন্বীর বাসা হিসেবে পরিচিত হলেও সেখান থেকেই মাদকের কারবার ও অসামাজিক কার্যক্রম পরিচালিত হতো। ঘটনার দিন সকালে মোতালেবের কাছে থাকা মাদক বা মাদকের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে শামীম তাঁর কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে মোতালেবের মাথায় গুলি করে। তবে গুলিটি সরাসরি মগজে বিদ্ধ না হওয়ায় অলৌকিকভাবে মোতালেব প্রাণে বেঁচে যান।

র‍্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারকৃত শামীম শিকদার ওই এলাকার একজন চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে এর আগেও মাদক, দস্যুতা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। শামীমের পাশাপাশি এই ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মো. আরিফ, মাহাদিন এবং ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া তানিমা তন্বীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ এবং তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় র‍্যাব নিশ্চিত হয়েছে যে, ঘটনার সময় ওই ফ্ল্যাটে আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন এবং তারা নিয়মিত সেখানে মাদক সেবন ও কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

এদিকে, মোতালেব শিকদারকে হত্যা প্রচেষ্টার এই মামলাটি বর্তমানে ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে। ডিবির ওসি তৈয়মুর ইসলাম জানিয়েছেন, মামলায় ব্যবহৃত মূল অস্ত্রটি উদ্ধারের জন্য জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে এবং গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বাকি অভিযুক্তদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। উল্লেখ্য, প্রথমে এই ঘটনাকে রাজনৈতিক হামলা হিসেবে চালানোর চেষ্টা করা হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিবিড় তদন্তে মাদক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠল। মোতালেবের স্ত্রী ফাহিমা আক্তার বাদী হয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর সোনাডাঙ্গা থানায় এই মামলাটি দায়ের করেছিলেন। বর্তমানে পুরো এলাকায় অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


অতিরিক্ত সিম বন্ধের কঠোর সিদ্ধান্ত: বছরের শুরুতেই নতুন নিয়ম কার্যকর করছে বিটিআরসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মোবাইল সিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। মোবাইল সিমের অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়ম রোধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। নতুন এই নিয়ম অনুযায়ী, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে একজন গ্রাহক তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ৫টি সিম সক্রিয় রাখতে পারবেন। বর্তমানে যাদের নামে ৫টির বেশি অর্থাৎ ৬ থেকে ১০টি সিম নিবন্ধিত রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও পর্যায়ক্রমে সংখ্যা কমিয়ে ৫-এ নামিয়ে আনা হবে বলে কমিশন নিশ্চিত করেছে।

বিটিআরসি জানিয়েছে, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সিমের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ কমিয়ে আনতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদিও দেশের মোবাইল ফোন অপারেটররা এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে পূর্বের মতোই কিছুটা আপত্তি জানিয়ে আসছিল, তবে বিটিআরসি তাঁর অবস্থানে অনড় রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে সিম ব্যবহারের তালিকায় বাংলাদেশ নবম স্থানে অবস্থান করছে, যা অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান ও যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি।

কমিশনের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অক্টোবর পর্যন্ত দেশে মোট মোবাইল সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজারে। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৮ কোটি ৫৯ লাখ। এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রবি (৫ কোটি ৭৫ লাখ), বাংলালিংক (৩ কোটি ৭৯ লাখ) এবং সরকারি মালিকানাধীন টেলিটক (৬৬ লাখ ৭০ হাজার)। দেশে মোট নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা ২৬ কোটি ৬৩ লাখ হলেও বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে প্রায় ১৯ কোটির মতো।

উল্লেখ্য যে, এর আগে গত আগস্ট মাসে এক ব্যক্তির নামে সর্বোচ্চ ১০টি সিম রাখার অনুমতি দিয়ে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অতিরিক্ত সিম বাতিলের নির্দেশনা দিয়েছিল বিটিআরসি। সে সময় প্রায় ৬৭ লাখ গ্রাহকের নামে ১০টির বেশি সিম নিবন্ধিত ছিল। গত তিন মাসে প্রায় ১৫ লাখ সিম গ্রাহকরা স্বেচ্ছায় বাতিল বা মালিকানা পরিবর্তন করলেও এখনো প্রায় ৫০ থেকে ৫৩ লাখ অতিরিক্ত সিম নিষ্ক্রিয় করার অপেক্ষায় রয়েছে। নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পর এখন সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে এই অতিরিক্ত সিমগুলো ধাপে ধাপে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। মূলত একটি সুশৃঙ্খল টেলিকম সেবা নিশ্চিত করতেই নতুন বছরের শুরু থেকে এই কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু হচ্ছে।


যমুনা ও সংসদ ভবন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি ইনকিলাব মঞ্চের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে চলমান আন্দোলনে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় এবার আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সংগঠনটির সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হলে যেকোনো মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ এবং ‘জাতীয় সংসদ ভবন’ ঘেরাও করা হবে। হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার এবং এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করার দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীরা দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়ে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে আবদুল্লাহ আল জাবের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে চরম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা ভাবছেন ক্ষমতায় মাত্র এক মাস আছেন এবং এরপর বিদেশে পাড়ি জমাবেন, তাঁদের কাউকেই ‘সেফ এক্সিট’ বা নিরাপদ প্রস্থানের সুযোগ দেওয়া হবে না। তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে কেউ বিদেশে পালাতে পারবেন না; বরং এই বাংলার মাটিতেই জনতা তাঁদের বিচার করবে। সরকারের নীরবতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানান, গত দুদিন ধরে রাজপথে অবস্থান করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ বা আশ্বাস মেলেনি। ফলে আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে সংসদ ভবন ও যমুনার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঘেরাওয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হওয়ার পর গত ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি। এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। শাহবাগ এলাকায় আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে। তবে ইনকিলাব মঞ্চ স্পষ্ট জানিয়েছে, খুনিদের আড়াল করার কোনো চেষ্টা সফল হতে দেওয়া হবে না এবং রাজপথের এই লড়াই তারা শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যাবে।


মানবিক দায়বদ্ধতায় বগুড়া থেকে আনসার–ভিডিপির ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের দীর্ঘদিনের নিষ্ঠা ও আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং তাঁদের ও তাঁদের পরিবারবর্গের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে বিশেষ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদের নির্দেশনায় আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বগুড়া জেলার গাবতলী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে এই মহতী কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন করা হয়। বগুড়া জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ সাদ্দাম হোসেন এই ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এই বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের আওতায় আগামী ১৩ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত বগুড়া ছাড়াও পর্যায়ক্রমে জামালপুর, ভোলা ও লালমনিরহাট জেলায় তিন দিনব্যাপী এই মানবিক কর্মসূচি পরিচালিত হবে।

এই মহতী উদ্যোগের আওতায় আনসার ও ভিডিপি সদস্য এবং তাঁদের পরিবারের জন্য আধুনিক চিকিৎসার এক বিশাল সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে চক্ষু ও দন্ত চিকিৎসার ওপর এই ক্যাম্পেইনে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। চক্ষু বিশেষজ্ঞরা উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে চোখের যাবতীয় পরীক্ষা সম্পন্ন করছেন এবং যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ছানি অপারেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি অভিজ্ঞ দন্ত চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করছেন। এছাড়াও সাধারণ রোগে আক্রান্তদের জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পরামর্শের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। বাহিনীর এই দায়িত্বশীল ও মানবিক উদ্যোগ সরাসরি তৃণমূল পর্যায়ের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে বড় ভূমিকা রাখছে।

আনসার–ভিডিপি সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে যে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জাতীয় উন্নয়নে বাহিনীর সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁদের এবং তাঁদের পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা বাহিনীর জন্য কেবল একটি কল্যাণমূলক কাজই নয়, বরং এটি একটি নৈতিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা। এ ধরনের কার্যক্রমের ফলে বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি তাঁদের মনোবল ও কাজের উদ্যম আরও বাড়বে বলে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পাশাপাশি বাহিনীর বিভিন্ন পদমর্যাদার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সরাসরি উন্নত স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পেরে আনসার ও ভিডিপির সদস্য এবং তাঁদের স্বজনরা বাহিনীর এই সময়োপযোগী পদক্ষেপের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মূলত বাহিনীর অভ্যন্তরীণ সংহতি এবং ইতিবাচক ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করাই এই মেডিকেল ক্যাম্পেইনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।


অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং এটি কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষে কাজ করছে না। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ভোলার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত ‘ভোটের গাড়ি’ বা ক্যারাভান কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাধারণ ভোটারদের সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যেই এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে তৌহিদ হোসেন বলেন, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবং সরকার আশা করছে এই নির্বাচন অত্যন্ত উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে। তিনি নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে দেশে সত্যিকার অর্থে কোনো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০০৮ সালের পর এই প্রথম দেশবাসী একটি প্রকৃত নির্বাচনের স্বাদ পেতে যাচ্ছে। বিশেষ করে ৩০ বছরের কম বয়সী তরুণরা, যারা আজ পর্যন্ত কোনো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি, তাঁদের জন্য এবারের নির্বাচন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেন যে, প্রতিটি নাগরিক যাতে নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করাই বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলা রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভোলার জেলা প্রশাসক ডা. শামীম রহমান এবং পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছারসহ স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ‘ভোটের গাড়ি’ ক্যারাভানটি ভোলার বিভিন্ন উপজেলা প্রদক্ষিণ করে ভোটারদের সচেতন করার কাজ চালিয়ে যাবে বলে আয়োজক সূত্রে জানা গেছে।


banner close