রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রথমে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তারা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।
এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী পরে দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে নিয়ে দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
মো. সাহাবুদ্দিন ও শেখ হাসিনা ফাতেহা পাঠ করেন এবং বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার চির শান্তি কামনা করে মোনাজাতে যোগ দেন।
মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি মাজার প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইতেও স্বাক্ষর করেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সমাধি প্রাঙ্গণে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে স্বাগত জানান।
এর আগে সকাল ৭টায় প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রক্ষিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
প্রধানমন্ত্রী পরে ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এখানে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে একটি স্মারক ডাকটিকিট, একটি প্রথম দিনের কভার এবং একটি ডেটা কার্ড প্রকাশ করেন।
বহু বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন আজ জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে সারাদেশে পালিত হচ্ছে।
১৯২০ সালের এই দিনে বাঙালি জাতির নেতা, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার বর্তমানে জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা চেষ্টা করব নিজেরা নিজেদের অর্থের সংস্থান করতে। তবে লক্ষ করতে হবে আমরা যেন পরমুখাপেক্ষী না হই। পরমুখাপেক্ষী হওয়ার বিপদ অন্তর্বর্তী সরকার টের পাচ্ছে। একই সঙ্গে সরকারি খরচ ও অন্য ব্যয় নির্বাহে অর্থ প্রয়োজন।
শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাল্টিপারপাস হলে ‘অর্থ আইন, ২০২৪-এর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে আনীত পরিবর্তন’ বিষয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন তিনি। আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ট্যাকসেশন) অ্যাসোসিয়েশন।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা কমাবো না। আমাদের ঘাটতি বাজেট থাকে। বাজেটের বড় অংশ বাইরে থেকে ঋণ হিসেবে আনতে হয়। দিন দিন ঋণের বোঝা বাড়ছে। আমরা চেষ্টা করব নিজেরা নিজেদের অর্থের সংস্থান করতে। তবে এটা ঠিক যে নিজেদের অর্থে হবে না, বাইরে থেকেও অর্থ আনতে হবে। তবে লক্ষ করতে হবে আমরা যেন পরমুখাপেক্ষী না হই। এ সময় সরকার যেন কোনো অর্থের অপচয় না করে, সেদিকেও লক্ষ রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, একটা কথা আছে- আপনার হাতটা যদি আমার পকেটে থাকে, আমি ডান দিকে গেলে আপনিও যাবেন। আমি বাঁয়ে গেলে আপনিও বায়ে যাবেন। সেটা কিন্তু হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছি। দাতা সংস্থারা যেদিকে বলে যেতে, অবশ্য আমরা চেষ্টা করছি নিজেরা অ্যাসল্ট (প্রতিউত্তর) করতে। ডান দিকে যেতে বললে আমার যাওয়ার কথা বাঁদিকে, বাঁদিকে গেলে আমার যাওয়ার কথা ডান দিকে। সেটা অনেক সময় সম্ভব হয় না। আমরা চাই না তাদের ওপর নির্ভরশীল হতে।
প্রকল্পগুলো মাঠ পর্যায়ের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয় না। ফলে অর্থের অপচয় হয় জানিয়ে সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, যেটা দরকার তার ভিত্তিতে যেন প্রকল্প আসে।
এনবিআরের আইনকে ব্যবসাবান্ধব করার ঘোষণা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট রাজস্ব আদায় করতে পারছি না। আমরা ঘাটতি বাজেট করছি। পরবর্তী প্রজন্মের ওপর বেশি বেশি ঋণের দায় চাপিয়ে দিচ্ছি। করদাতারা তাদের দেওয়া করের অপচয় দেখতে চায় না। প্রতি বছর বড় অঙ্কের টাকা আমরা কর ছাড় দেই। এটার বড় অংশ ঠিক করলে কর আদায় বাড়বে। আমরা সঠিকভাবে কর আইন প্রয়োগ করতে চাই।
সবাইকে অনলাইনে রিটার্ন দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আপনাদের পরিচিতদেরও অনলাইনে রিটার্ন দিতে আহ্বান করবেন। আমাদের আইনকানুন ব্যবসাবান্ধব করতে হবে। ২০১২ সালে আমরা মুসক আইন করেছি, অথচ ১২ বছরে তার ইংরেজি ভার্সন হয়নি। তাহলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা প্রস্তুতি নিতে পারবেন কীভাবে?
সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় স্থান ও সুফি মাজারে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সরকার।
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, ধর্মীয় উপাসনালয় ও সাংস্কৃতিক স্থাপনাগুলো রক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থান এবং সুফি মাজারগুলোতে যেকোনো ঘৃণামূলক বক্তব্য এবং হামলার তীব্র নিন্দা জানায়।’
এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, একদল দুর্বৃত্ত গত কয়েকদিন ধরে দেশের সুফিদের পবিত্র মাজার এবং স্থানগুলো আক্রমণ করছে বলে তাদের নজরে এসেছে।
এতে বলা হয়, হামলার সঙ্গে জড়িত অশুভ শক্তিকে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সরকার তৎপর রয়েছে।
সরকার জানায়, বাংলাদেশ হাজার বছর ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সব ধর্মের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দেশ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলছি, আমরা সম্প্রীতির দেশ হিসেবে থাকব এবং ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক সহিষ্ণুতা ও সম্প্রীতি বিঘ্নিত করার যেকোনো প্রচেষ্টা নির্দ্বিধায় কঠোরভাবে দমন করা হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোরাল অবস্থানের পর বন্ধ করা হলো অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ছাত্র সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তি’র সব কার্যক্রম। আজ শনিবার সংগঠনটির অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাস থেকে এ তথ্য জানা যায়।
শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্গঠন, রাজনৈতিক ব্যক্তি, পরিসর ও সংস্কৃতি নির্মাণ, শিক্ষার্থী কল্যাণ, ছাত্র-নাগরিক রাজনীতি নির্মাণকে ও রাষ্ট্র-রাজনৈতিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে গত বছরের ৪ অক্টোবর আত্মপ্রকাশ করে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ছিলেন এই সংগঠনের সদস্য সচিব আর যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ছিলেন এই সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহবায়ক।
৩১ সদস্যের এই কমিটির অনেকেই বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং সহসমন্বয়ক পদে আছেন। এমন এক সময়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তি তাদের কমিটি ও কার্যক্রম স্থগিত করেছে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সকল ধরণের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে।
গতকাল শুক্রবার শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সব ধরনের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আট দফা বা নয় দফার অন্যতম একটি দফা ছিল ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা। কিন্তু সেই কথাই অনেকেই এখন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বলার চেষ্টা করছেন। সমন্বয়কদের অনেকেই এখন ছাত্ররাজনীতির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। আমরা এটি মেনে নেব না।
আগামী ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ক্যাম্পাস থেকে রাজনীতি নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার কথা জানান এই শিক্ষার্থীরা।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে সারা দেশে ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আজ শনিবার সকালে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন খবর জানানো হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, এটি মৌসুমি নিম্নচাপ। এর প্রভাবে সারা দেশে বৃষ্টি ঝরবে। বিশেষ করে উপকূল অঞ্চলে বজ্র ও ঝোড়ো হাওয়াসহ অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।
শনিবার সকালে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানায়, যশোর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি সামান্য উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘনীভূত হয়ে আজ সকাল ৯ টায় (১৪ সেপ্টেম্বর) একই এলাকায় গভীর স্থল নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর (পুন:) তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে, টানা ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। সৈকত এলাকার হোটেল-রিসোর্ট, কটেজ জোনে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পর্যটকরা। পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন। এছাড়া সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে লাল পতাকা উড়িয়ে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। বৃষ্টিতে শহরের প্রধান সড়ক, সৈকত সড়কসহ অন্তত ৩৫টি উপসড়ক বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। এতে কয়েকশো দোকানের মালামাল নষ্ট হয়েছে। হাজারো ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার মানুষেরা। সব মিলিয়ে জনজীবনে নেমেছে স্থবিরতা।
ঢাকায় পৌঁছেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল। আজ শনিবার দেশটির রাজস্ব দপ্তরের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে দলটি ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তাদের স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম।
তবে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু আজ বিকেলে দিল্লি হয়ে আলাদাভাবে ঢাকায় আসবেন। শনিবার প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় এলেও মূলত বৈঠকগুলো হবে কাল থেকে। আগামীকাল রোববার অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবে প্রতিনিধি দলটি।
এদিন দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলটির সদস্যরা পররাষ্ট্রসচিব এম জসীম উদ্দিনের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। বিকেলে প্রতিনিধিদলের নেতা যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব দপ্তরের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
প্রতিনিধিদলে আরও রয়েছেন ইউএসএইডের এশিয়াবিষয়ক উপ-সহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কৌর।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের চাহিদা মেটাতে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহায়তা করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন থেকে একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার বিকাশে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করবেন।
সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য আলোচনা করতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এজন্যই মার্কিন প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছে।
পররাষ্ট্র সচিব এম জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের আসন্ন ঢাকা সফরে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের আলোচনা বহুমাত্রিক হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আজ শনিবার ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থায়নবিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান। প্রতিনিধিদলে থাকছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। তবে তিনি সরাসরি ওয়াশিংটন থেকে আসবেন না। দিল্লি সফর শেষ করে ঢাকায় আসবেন লু। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জরুরি চাহিদা এবং দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে এই সফরে যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সংস্কারে কীভাবে সহায়তা করা যায়, তাতে গুরুত্ব দেবে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের সন্ধিক্ষণে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সংস্কারপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার এক দারুণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। সে সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের আমলে দুই দেশের সম্পর্ক নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে নেওয়ার পথ উন্মোচিত হয়েছে। ফলে অর্থনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংস্কারে যেখানে যেখানে সহযোগিতার সুযোগ আছে, সেখানেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে। এটা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র যে গুরুত্ব দেয়, তার একটা বড় প্রতিফলন। আমাদের সঙ্গে তাদের আলোচনাটা বহুমাত্রিক হবে। এটা শুধু একটি বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। সেভাবেই আমাদের দিক থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
আলোচ্যসূচিতে কোন বিষয়ে গুরুত্ব পাবে, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলব এবং তার মধ্যে বহুমাত্রিকতা হবে। কিন্তু আমি আলোচনার আগে বা প্রতিনিধিদল বসার আগে কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট আলোচ্যসূচির বিষয় প্রকাশ করে আলোচনাকে প্রভাবিত করতে চাই না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনসহ একাধিক উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন।
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী এলাকার সীমান্তে গত সোমবার ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে জয়ন্ত কুমার সিংহ (১৫) নামে বাংলাদেশি তরুণকে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ভারতের অভ্যন্তরে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ও ভারতের ফুলবাড়ী আইসিপিতে বিজিবি উত্তর-পশ্চিম রিজিয়ন কমান্ডার এবং আইজি বিএসএফ নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার কমান্ডারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এই প্রতিবাদ জানান বিজিবির ঠাকুরগাঁও সেক্টর সদর দপ্তর।
সৌজন্য সাক্ষাতে বিজিবির পক্ষে রংপুর উত্তর-পশ্চিম রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খন্দকার শফিকুজ্জামান পিএলসি, ঠাকুরগাঁও সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মুহাম্মদ তৌহিদুর রহমানসহ অন্যান্য বিজিবি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিএসএফের পক্ষে আইজি নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার কমান্ডার ইন্সপেক্টর জেনারেল শ্রী সুরিয়া কান্ত, শিলিগুড়ি ও কিশানগঞ্জ সেক্টর কমান্ডার এবং অন্য বিএসএফ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল হক। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী এলাকায় গত সোমবার বিএসএফ টহল দল কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিক জয়ন্ত কুমার সিংহকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিজিবি কর্তৃক তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
বিএসএফ নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার কমান্ডার এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে বিএসএফ সীমান্তে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ওপর গুলি চালানো হবে না মর্মে বিজিবি প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করেন। উভয় দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সব নাগরিকের মধ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধকল্পে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কাজ করার জন্য একমত পোষণ করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষ হয়।
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ থাকার তিন দিন পর আবারও উৎপাদনে ফিরেছে একটি ইউনিট। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৩২ মিনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যায় কেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিট।
জানা গেছে, ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ১ নম্বর ইউনিটটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় চালু হয়েছে। তবে রাত ৮টা ৩২ মিনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যায় ইউনিটটি। বর্তমানে এ ইউনিট থেকে উৎপাদিত ৬০-৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হচ্ছে। এটি চালু রাখতে প্রতিদিন ৮০০-৯০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন পড়বে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ১ নম্বর ইউনিটটি মেরামত শেষে ৭ দিন পর পুনরায় চালু করা হলো। উৎপাদিত ৬০-৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিট বন্ধ রয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর ইলেকট্রো হাইড্রোলিক ওয়েল পাম্প নষ্ট হওয়ায় ৩ নম্বর ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যায়। ১ নম্বর ইউনিটটি অনেক দিনের পুরোনো। গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে সংস্কার কাজের জন্য সেটিও বন্ধ করা হয়েছিল। মেরামত শেষে আজ রাত ৮টা ৩২ মিনিট থেকে ১ নম্বর ইউনিটটি চালু করা হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, চীন থেকে মেশিন এলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ৩ নম্বর ইউনিটও চালু করা সম্ভব হবে। এটি থেকে প্রতিদিন ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হতো; যা জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছিল।
জানা যায়, বড়পুকুরিয়া খনি থেকে উৎপাদিত কয়লা দিয়ে ৫২৫ মেগাওয়াট বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রর উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে আসছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল। পাঁচ বছরের চুক্তি মোতাবেক আগামী বছর তাদের মেয়াদ শেষ হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের তালিকা চেয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই তালিকা পাঠাতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (কলেজ মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন দপ্তর) মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
অফিস আদেশে বলা হয়, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সব কলেজ/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্নাতক পাস, স্নাতক সম্মান, স্নাতকোত্তর ও প্রফেশনাল কোর্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় ২০২৪-এর জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়ে সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত হয়। স্ব-স্ব কলেজ থেকে ছক অনুযায়ী শহীদ ছাত্র-ছাত্রীদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।’
এতে আরও বলা হয়, সংযুক্ত ছক অনুযায়ী তথ্য পাঠানোর আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ শহীদ শিক্ষার্থীর পরিচয় সম্পর্কিত সব তথ্য ও ঘটনা যাচাই করে হার্ড কপি সংরক্ষণ করবে। পূরণকৃত ছকের তথ্যাদি অনলাইনে ২৬ সেপ্টেম্বর মধ্যে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
দেশের বন্যার্তদের সহায়তায় বাংলাদেশকে ১০ লাখ ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাপান। আজ শুক্রবার এক ভিডিওবার্তায় ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, জাপান বাংলাদেশিদের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে চায়। এরই ধারাবাহিকতায় জাপান সরকার ইউএনএইচসিআর এবং ইউনিসেফের মাধ্যমে বন্যাকবলিত এলাকায় ১০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, ইতোমধ্যে জাপানি এনজিওগুলোর প্ল্যাটফর্ম ২০ লাখ ডলারের সহায়তা দিয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় বর্তমানে সাতটি জাপানি এনজিও বন্যাকবলিত এলাকায় বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছে।
এছাড়া, ঢাকায় জাপানিজ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন এবং ঢাকায় জাপানিজ অ্যাসোসিয়েশন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিবর্গ ও পরিবারদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে মোট দুই লাখ টাকা দান করেছে বলেও জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা বলেন, আমি আশা করি সরকার, ব্যবসায়িক, এনজিও এবং অন্যান্যদের কাছ থেকে এই সহায়তা বাংলাদেশিদের আবারও ভালোভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
চলতি বছরের আগস্টে অতি ভারী বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে দেশের ১১ জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল। হঠাৎ এমন বন্যায় ভেসে যায় ঘরবাড়ি, স্কুল, গ্রাম, মাছের ঘের, ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট। অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দেখা দেয় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।
বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ সন্দেহভাজন দু’জন নাশকতাকারীকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। আটককৃতরা হলেন, রেজওয়ানুল ইসলাম ও মাহমুদুল ইসলাম। তারা আপন দুই ভাই।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর শাহ আলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। ডিএমপি গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যে বৃহস্পতিবার রাতে শাহআলী থানার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমানে বোমা তৈরীর সরঞ্জামসহ ২ জনকে আটক করেছে ডিএমপির সিটিটিসি ইউনিটি।
তাদের কাছ থেকে, দু’বোতল গ্যাস ক্যান, অটো সুইচ, মরিচ বাতি, ২টা রাম দা, বারুদ, দিয়াশলাই, ক্যাপাসিটর, রিমোট কন্ট্রোল চাবি, ঘড়ি, জিআই পাইপ, সকেট, সুইচ, ওজন মাপার মেশিন, বল বিয়ারিং, তারকাটা, বৈদ্যুতিক তার, স্কচটেপ ও চিমটাসহ অন্যান্য উপকরণ উদ্ধার করা হয়। পরে বোম্ব ডিসপোজাল (বোমা নিষ্ক্রিয়কারী) ইউনিট বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের তালিকা যাচাই-বাছাই করতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে মাঠপর্যায়ে সরেজমিনে গিয়ে শহীদদের তালিকা যাচাই-বাছাইয়ে ৮ সদস্যের একটি কমিটিও করে দেওয়া হয়েছে, যেখানে সভাপতি করা হয়েছে জেলা প্রশাসককে এবং সদস্য-সচিব করা হয়েছে জেলা সিভিল সার্জনকে। আজ শুক্রবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের (সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১) উপসচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে শহীদ ও আহতদের একটি খসড়া তালিকা ডাটাবেজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে বর্ণিত এই শহীদদের তালিকাটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য সরেজমিনে মাঠ পর্যায়ে যাচাই করা বিশেষ প্রয়োজন। এ অবস্থায় মাঠপর্যায় থেকে তালিকা সরেজমিন যাচাই-বাছাই করার লক্ষ্যে নিম্নরূপ কমিটি গঠন করা যেতে পারে।
কমিটিতে রয়েছেন:
১. জেলা প্রশাসক- সভাপতি
২. পুলিশ সুপার- সদস্য
৩. পরিচালক/তত্ত্বাবধায়ক, মেডিকেল কলেজ/জেলা সদর হাসপাতাল- সদস্য
৪. উপজেলা নির্বাহী অফিসার (সংশ্লিষ্ট উপজেলা)- সদস্য
৫. উপপরিচালক, সমাজসেবা অধিদপ্তর- সদস্য
৬. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমন্বয়ক (২ জন)- সদস্য
৭. উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা- সদস্য
৮. সিভিল সার্জন, সংশ্লিষ্ট জেলা- সদস্য সচিব
কমিটির কার্যপরিধি:
১. ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে প্রতিটি জেলার শহীদ ও আহতদের তালিকা সরেজমিন যাচাই-বাছাইকরণ।
২. প্রেরিত তালিকায় কোনো তথ্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ বা অসম্পূর্ণ থাকলে তা সঠিককরণ।
৩. ভুল তথ্য পাওয়া গেলে তা বাতিল করার সুপারিশকরণ।
৪. তালিকাবহির্ভূত কোনো শহীদ এবং তার পক্ষে সঠিক তথ্য পাওয়া গেলে তা বিদ্যমান তালিকায় অন্তর্ভুক্তকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ।
৫. আগামী ১৪ অক্টোবরের মধ্যে প্রেরিত তালিকা সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে পূর্ণাঙ্গ নির্ভুল তালিকা স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বরাবর প্রেরণ করতে হবে।
৬. এ কার্যক্রমে ফোকাল পার্সন হিসেবে (১) উম্মে হাবিবা, উপসচিব, সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং মো. নিকারুজ্জামান, সিনিয়র সহকারী সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবেন।
৭. তালিকায় কেবল গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে শহীদ ও আহতদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত জেলা পর্যায়ের যাচাই-বাছাই কমিটি চূড়ান্তকরণসহ নির্ভুল তালিকা প্রণয়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে সবিনয় অনুরোধ করা হলো।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেছেন, পুলিশের দায়িত্ব পালনে কোনো অপেশাদার আচরণ ও শিথিলতা প্রদর্শন করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। মানুষের সঙ্গে পুলিশের আচরণে বিনয়ী হতে হবে। দায়িত্ব পালনকালে পোশাকে, উপস্থাপনায়, সেবায় এবং দৃঢ়তায় নিজেদের উচ্চতা তুলে ধরতে হবে।
আজ শুক্রবার ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। যেসব এলাকায় বিদেশি দূতাবাস রয়েছে এবং কূটনৈতিকরা বসবাস করেন সেসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং কূটনীতিকদের নিরাপত্তা দেওয়া আপনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদানে আপনাদের সর্বোচ্চ পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে। এমন কোনো অপেশাদারমূলক আচরণ করা যাবে না যাতে করে দেশে এবং বিদেশে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।
তিনি বলেন, বিরাজমান পরিস্থিতিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রত্যেক সদস্য মনোবল বৃদ্ধির মাধ্যমে পেশাদারত্বের সঙ্গে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে চেষ্টা করে যাচ্ছে। পুলিশ আইন ও বিধি দ্বারা পরিচালিত একটি সুশৃংখল বাহিনী।
পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সব পর্যায়ের সদস্যদের নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রেখে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে পুলিশের ওপর জনগণের পূর্ণ আস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, দুঃসময়ে কাঙ্খিত সেবা প্রদান করতে হবে, যাতে তারা মনে করে পুলিশ তাদের বন্ধু।
মতবিনিময় সভায় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মাদ নূরে আলম।
বক্তব্যের শুরুতে ডিএমপি কমিশনার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আত্মাহুতি দানকারী সবার রুহের মাগফেরাত কামনা ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। একই সঙ্গে স্মরণ করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রাণ উৎসর্গকারী ও আহত পুলিশ সদস্যদের। এই অভ্যুত্থানে যেসব পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।
মতবিনিময় সভায় ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার সুনির্দিষ্ট কিছু সমস্যা ও সীমাবদ্ধতার কথা ডিএমপি কমিশনারের কাছে পেশ করেন। কমিশনার তা মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং প্রত্যেকটি সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।
এ ছাড়া তিনি ব্যারাকে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, ফোর্সের খাবারের মান উন্নয়ন ও নিয়মিত খেলাধুলা আয়োজনের মাধ্যমে ফোর্সের যাবতীয় কল্যাণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন।