রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
৪ ফাল্গুন ১৪৩১

জনগণের নয়, বিদেশিদের সহযোগিতা চায় বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১৯ মার্চ, ২০২৪ ২২:১১

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, এটিই দুঃখজনক যে বিএনপি জনগণের কোনো সহযোগিতা চায় না, বিদেশিদের সহযোগিতা চায়। মঙ্গলবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকরা ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশি বন্ধুদের সাহায্য চেয়েছেন’ এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে গিয়ে বিএনপি নিজেই ধপাস করে পড়ে এখন হাঁটা শুরু করেছে, হেঁটে হেঁটে লিফলেট বিতরণ করছে। দলটাকে টিকিয়ে রাখা, অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্যই মঈন খান এসব কথা বলছেন।

শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে এবং আওয়ামী লীগের ভিত জনগণের গভীরে প্রোথিত বলে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপিই এখন নড়েবড়ে হয়ে গেছে। তাদের নেতাদের ওপর কর্মীদের কোনো আস্থা নেই। মূল নেতাদের ওপর কেন্দ্রীয় নেতাদের আস্থা নেই। তাদের এখন নেতৃত্বের টানাপোড়ন চলছে।

সাংবাদিকরা বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ‘বরই না খেজুর দিয়ে ইফতার হবে- সেটিও সরকার বলে দেবে’ এমন মন্তব্যের জবাবে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘সরকার এটি বলেনি, এটি ব্যক্তিগত অভিমত। বরং সাধারণ মানুষ যাতে সুলভ মূল্যে পণ্যসামগ্রী পায় সে জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা যেন অহেতুক ইফতার পণ্যসামগ্রীরও মূল্যবৃদ্ধি না করতে পারে সে জন্যও নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন রমজানে যেন অহেতুক কোনো ব্যয় না করা হয়, অহেতুক কোনো ইফতার পার্টিও না করা হয় বরং সেই টাকা যেন সাধারণ মানুষের মাঝে দেওয়া হয়। সে হিসেবে আমি আমার এলাকায় এবং সব সংসদ সদস্য ও নেতৃবৃন্দ যার যার এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছি।’

তিনি বলেন, ‘অপরদিকে বিএনপি রমজানের প্রথম দিনেই ইফতার পার্টি করে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখলাম বিএনপি কোথাও কোথাও ইফতার পার্টির নামে চাঁদাবাজিও করছে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের নাবিকদের সুস্থ ফেরত আনার বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টা হচ্ছে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে নাবিক এবং জাহাজ দুটোকেই মুক্ত করা।’

এর আগে মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লা আলী আব্দুল্লা খাসিফ আলমুদি সাক্ষাৎ করেন। সে বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘‘সম্প্রতি আরব আমিরাতে আমার দ্বিপক্ষীয় সফরে সে দেশের পররাষ্ট্র ও কর্মসংস্থান মন্ত্রীদ্বয়ের সঙ্গে সামগ্রিক সব বিষয়ে আলোচনার ‘ফলোআপ’ সাক্ষাৎ এটি। ইউএইর সঙ্গে আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক। সেখানে এক মালিক হতে অন্য মালিকের অধীনে ‘আকামা’ বা কর্মানুমতি হস্তান্তর সহজ করার বিষয়ে এবং দুবাই ছাড়া অন্য আমিরাতগুলোতে বাংলাদেশিদের ‘ওয়ার্ক পারমিট’ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি দেশে ইউএইর বিনিয়োগ বাড়াতে ইকোনমিক জোনগুলোতে আরব আমিরাতকে বিনিয়োগের আহ্বান এবং মাতারবাড়িতে ৩০০ একর জমি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।”


বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উন্নয়নে মার্কিন তহবিল বাতিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ আরও উন্নত করতে দেওয়া মার্কিন সহায়তা বাতিল করা হয়েছে।

আজ রোববার সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এমন তথ্য জানিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অব গভার্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে দেওয়া ২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উন্নয়নে মার্কিন তহবিল বাতিল

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ডিওজিই গঠন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ককে এটির প্রধান করা হয়েছে। বিভিন্ন খাতের বরাদ্দে কাটছাঁট করা এই বিভাগের অন্যতম লক্ষ্য।

ডিওজিই যে ১৫টি অনুদান বাতিলের তথ্য দিয়েছে, তাতে বাংলাদেশের ২৯ মিলিয়ন ডলারও রয়েছে। এক্স পোস্টে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে’ এই অনুদান দেওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে।


১৫ দিনে ১৩১ কোটি ২২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে দেশে এসেছে ১৩১ কোটি ২২ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এতে করে প্রতিদিন গড়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ কোটি ৭৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।

আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুসারে, দেশীয় মুদ্রার হিসাবে (১ ডলার= ১২২ টাকা) ১৬ হাজার ৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা রেমিট্যান্স এসেছে এই অর্ধেক মাসে।

শুধু রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৬ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৮৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭৫ কোটি ৩৯ লাখ ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩০ লাখ ডলার।

১ ফেব্রুয়ারি রেমিট্যান্স এসেছে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। ২ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি দেশে এসেছে ৬৫ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার ডলার।


সেনাবাহিনী প্রধানের কুয়েত সফর

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ৩ দিনের সফরে আজ কুয়েত গেছেন।

সফরকালে, সেনাবাহিনী প্রধান কুয়েত সরকারের সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সামরিক বাহিনী সংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা উন্নয়নের লক্ষ্যে মতবিনিময় করবেন।

এই সফরের মাধ্যমে কুয়েতে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনবল নিয়োগ এবং অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনে (ওকেপি) নিয়োজিত বাংলাদেশি সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধিসহ কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর সাথে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।


ইউনূস সরকার নির্বাচন দিতে গড়িমসি করছে: রিজভী

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জাতীয় নির্বাচন হওয়ার আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি দূরভিসন্ধিমূলক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ইউনূস সরকার নির্বাচন দিতে গড়িমসি করছে।’

আজ রোববার সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিভিন্ন জেলার বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা নিয়ে ওঁৎ পেতে আছে। দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিয়ে সেই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে হবে।

জাতি এখন অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। এ সময়ে ইউনূস সরকার নির্বাচন দিতে গড়িমসি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

রিজভী বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য এতো জীবন গেলো, সেই গণতন্ত্র ফেরাতে ভোটের জন্য চূড়ান্ত ডেডলাইন দিতে হবে এই সরকারকে।

তার আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত সেরে নেওয়ার কথা বলেন রিজভী আহমেদ।


শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা মস্ত বড় ইস্যু: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২৫ এর উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা প্রশাসকদের সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বা শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা মস্ত বড় ইস্যু। এটা আমাদের এখন এক নম্বর বিবেচ্য বিষয়। এখানে যেন আমরা বিফল না হই, কারণ এটাতেই আমাদের সমস্ত অর্জন।’

আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সকল নাগরিকের সুরক্ষা বিধান করা সরকারের দায়িত্ব উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আমরা এখন থেকে যেসব কর্মসূচি গ্রহণ করবো, সেখানে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার থাকবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও দেশের সকল মানুষকে সুরক্ষা প্রদান করা। নারী ও শিশু এবং সংখ্যালঘুসহ সকল নাগরিকের সুরক্ষা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। কে কোন মতবাদে বা রাজনৈতিক চেতনায় বিশ্বাসী সেটা বিবেচ্য নয়। কারণ সরকার দেশের সকল মানুষের সরকার। তাই তাকে সুরক্ষা দেওয়া আমার কাজ’।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে সজাগ থাকার নির্দেশ দেন তিনি। ড. ইউনূস বলেন, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়া মস্ত বড় দায়িত্ব। এই ইস্যুতে সারা দুনিয়া নজর রাখছে আমাদের উপরে। একটা ছোট্ট ঘটনা সারা দুনিয়ায় চাউর হয়ে যায়।

তিনি বলেন, ‘আমি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে বলেছি আপনারা সংখ্যালঘু হিসেবে কোন কিছু দাবি করবেন না, দেশের নাগরিক হিসেবে দাবি করবেন। কারণ দেশের নাগরিক হিসেবে সংবিধান আপনাকে যে অধিকার দিয়েছে সেই অধিকার রাষ্ট্রের কাছে আপনার প্রাপ্য। এটা দাবি নয়, আপনার পাওনা’।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এটা নিয়ে জেলা প্রশাসকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হতে পারে কার জেলায় বাজারদর কতটা ভাল নিয়ন্ত্রণে আছে। কোনো চাঁদাবাজি বা অন্য যেসব অসুবিধা থাকে সেগুলো দূর করতে হবে’।

পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে বলেন, পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে এখন যে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগছে না, এই তথ্য মাঠে-ঘাটে জনসাধারণের মধ্যে পৌঁছে দিতে হবে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানি হয়, এটি বন্ধ করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম সনদের মত পাসপোর্ট পাওয়া প্রতিটি মানুষের অধিকার।

সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসকদের অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে সৃজনশীল কাজ করার সুযোগ তোমাদের পুরো মাত্রায় রয়েছে। আশা করি তোমরা সেটা গ্রহণ করবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, বাজারদর নিয়ন্ত্রণ, জমির রেকর্ড পত্র থেকে শুরু করে অন্যান্য সেবা অনলাইনে প্রদান, প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধিসহ সরকারি সেবাকে জনবান্ধব করার ক্ষেত্রে সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে সুস্থ প্রতিযোগিতা হতে পারে।

জন্ম সনদ একজন নাগরিকের অবশ্যই প্রাপ্য উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যে কোনো বয়সে এবং যে কোনো সময়ে একজন নাগরিক জন্ম সনদ চাইতে পারে। তাকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। জন্ম সনদ একজন নাগরিকের দালিলিক প্রমাণ যে ওই ব্যক্তি এই দেশের নাগরিক। কারণ এই জন্ম সনদ দিয়েই তার অন্যান্য কাজ করতে হবে। এটা না হলে জাতীয় পরিচয়পত্র হচ্ছে না, পাসপোর্ট হচ্ছে না। জন্ম সনদ পেতে একজন হয়রানির শিকার হচ্ছে কি না সেটা দেখতে হবে।

সরকারকে একটা ‘খেলার টিম’ অভিহিত করে অধ্যাপক ইউনূস জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বলেন, ‘সরকারকে যদি একটা ক্রিকেট বা ফুটবল টিমের সঙ্গে তুলনা করা হয় তাহলে এটা একটি টিম। এই সরকারের ছয় মাস চলে গেলো, এটাকে আমি বলছি সরকারের প্রথম পর্ব।

প্রথম পর্বের কোন ভুল থাকলে সেটাকে ঠিকঠাক করে এখন আমরা খেলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। এখন কাজ হলো কর্মপদ্ধতি ঠিক করা। খেলা হলো একটা সামগ্রিক বিষয়, একজনের ভুলের কারণে অন্যরা সাফল্য থেকে বঞ্চিত হয়। পুরো টিমের সাফল্যটা গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে। প্রস্তুতির কোথাও ঘাটতি থাকলে সেটাকে পূরণ করা দরকার’।

প্রধান উপদেষ্টা জেলা প্রশাসকদের ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে নিজের মতো করে মাঠ প্রশাসন পরিচালনা করার আহ্বান জানান। একইসাথে তিনি সরকার প্রধান বা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অহেতুক স্তুতি বা প্রশংসা করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ও পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক ছাবেদ আলী বক্তব্য রাখেন।


অপারেশন ডেভিল হান্টে গ্রেপ্তার আরও ৫৬৬

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশে যৌথবাহিনীর বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনা করে আরও ৪৭৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত ৮৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শুক্রবার থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এ নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) থেকে আজ পর্যন্ত এই বিশেষ অভিযানে মোট ৪ হাজার ৪০১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, ২৪ ঘণ্টার অভিযানে ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ৩টি ছুরি/চাকু, ২টি রামদা ও ৩টি হেমার উদ্ধার করা হয়।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এদিন হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের মধ্যে কাশেম খান নামে একজন গত শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ঘটনার পরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের সিদ্ধান্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযান শুরু করা হয়েছে। এর মধ্যে-গত ১৪ ফেব্রয়ারি থেকে গতকাল ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয় ৪৭৭ জনকে। এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয় ৫০৯ জন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয় ৫৬৬ জনকে। এছাড়া গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি এই অভিযানে গ্রেপ্তার হন ৫৯১ জন। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার হন ৬০৭ জন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রেপ্তার হন ৩৪৩ জন। আর ৮ ফেব্রয়ারি শনিবার এ অভিযান শুরুর পর প্রথম ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার করা হয় ১ হাজার ৩০৮ জনকে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘যত দিন ডেভিল থাকবে, তত দিন ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ চলবে।


সংলাপের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাসে প্রথম ইনিংস বা প্রথম অধ্যায় শেষ হয়েছে। এবার রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে দ্বিতীয় ইনিংস (অধ্যায়) শুরু হলো।

শনিবার বিকালে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি।

বৈঠকের সভাপতির বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাস শেষ। আজকের বৈঠকের মধ্য দিয়ে আমরা দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করলাম। সুশৃঙ্খল দেশ গড়তে চাই। স্বৈরাচারী সরকার যে কাঠামো করেছিল, তা থেকে বের হয়ে আসতে চাই।’

এ সময় গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ সার্থক করতে ও তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাই মিলে সবরকম চেষ্টা করবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ড. ইউনূস।

ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে তিনি আরও বলেন, প্রতিজ্ঞা করি আমরা যেন গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি অসম্মান না জানাই। যে কারণে তারা আত্মত্যাগ করেছিল সেটা যেন পরবর্তী সব প্রজন্ম মনে রাখে, তাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে, তাদের আত্মত্যাগকে সার্থক করার জন্য আমরা সবাই মিলে সবরকম চেষ্টা করবো, তাদের সে স্বপ্ন যেন বাস্তবায়ন করতে পারি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, তারা এ ত্যাগ না করলে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকলেও জবাব খোঁজার আমাদের কোনো সুযোগ থাকতো না। প্রশ্ন আমাদের মনে যতটুকু ছিল, বহু বছর ধরে ছিল, সুযোগ পাইনি। অসংখ্য ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা সে সুযোগ পেয়েছি।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আইন করা হয় মেনে চলার কিংবা উপভোগ করার জন্য। কিন্তু আইনকে তামাশায় পরিণত করেছিলো বিগত সরকার।

তিনি বলেন, সংস্কার যাতে এমনভাবে হয়, যাতে ভবিষ্যতে এটা গ্রহণযোগ্য হয়। সংস্কার কমিশনের রিপোর্টগুলোতে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। তার যে অংশটুকু আমরা যত তাড়াতাড়ি গ্রহণ করবো ততোটা এগিয়ে যাবো। সে কারণেই আজ থেকে আলোচনার শুরু।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সুন্দর রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যেই আজকের ডায়ালগ (সংলাপ)। কারো ওপর কিছু চাপিয়ে দেয়ার কিছু নেই। গুরুত্ব বুঝতে হবে। এটা একটা সুযোগ। সুযোগ কাজে লাগাতে ঐক্যমতে পৌঁছাতে হবে। আমরা সুপারিশগুলো নিয়ে এসেছি কেবল সেগুলোর ব্যাখ্যা আপনাদের জানাতে। সমাজের কাঠামো কী হবে, কীভাবে হবে তা আপনাদেরই ঠিক করতে হবে।

সবশেষ তিনি বলেন, দ্বিতীয় অধ্যায়েও যদি আমরা প্রথম অধ্যায়ের মতো ঠিক থাকতে পারি তবে, তৃতীয় অধ্যায়েও আমরা সফল হবো। কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়তে পারবো। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।


ছুটির দিনে বইপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড়

শনিবার ছুটির দিনে মেলায় পাঠক-দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। এর সঙ্গে বেড়েছে বিক্রিও। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

দেখতে দেখতে অমর একুশে বইমেলা শেষ করেছে তার অর্ধেক সময়কাল। মেলার শুরুর দিন থেকে প্রতিদিনই মেলায় আসছেন পাঠকরা, কিনছেন বই, করছেন ঘোরাঘুরি আর তুলছেন ছবিও। প্রতিদিনই বিক্রয়কর্মী ও প্রকাশকরা ক্রেতাদের অপেক্ষায় থাকেন। তবে শনিবার ছুটির দিন পাঠক-দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। এর সঙ্গে বেড়েছে বিক্রিও।

সরেজমিনে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, মেলার প্রবেশপথ ও বাহিরপথে উপচেপড়া ভিড়। মেলার ভেতরে ঢুকলেই হারিয়ে যেতে হয় জনসমুদ্রে। বইমেলায় এদিনটিতে ঢাকার বাইরে থেকেও অনেকে এসেছিলেন। এদিন মেলায় যেনো ভালোবাসা দিবস আর বসন্তের রেশ কাটেনি। ক্রেতা দর্শনার্থীদের ভিড়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। অবশ্য এদিন মেলার মূল আকর্ষণ শিশু প্রহরে ভিড় দেখা যায় শিশুদের। বেলা গড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দর্শনার্থী সমাগম। মেলায় দর্শনার্থীরা ভিড় করেন স্টলে স্টলে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের আনাগোনাও দেখা গেছে।

ছুটির দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বইমেলায় টিএসসি সংলগ্ন গেট দিয়েই প্রবেশ করেছেন অধিকাংশ মানুষ। সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে নারী-পুরুষ আলাদাভাবে ভেতরে প্রবেশ করেছে। তবে শুরুতেই পড়তে হয় পুলিশের নিরাপত্তা তল্লাশিতে। মেলায় আসা পাঠক-দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে বরাবরের মতোই মূল ফটকের সামনে অনুসন্ধান, ঘোষণা বুথ এবং মেলার ম্যাপ রাখা হয়েছে। এরপর ভেতরের দিকে বিস্তৃত হয়েছে প্যাভিলিয়ন, স্টল এবং লিটলম্যাগ।

অন্যদিকে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা থাকায় পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরাও ঢুঁ মেরেছেন মেলায়। এদিকে পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবসে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে যারা বইমেলায় আসেননি তাদের অনেকেই স্বজনসহ শনিবার আসেন। অন্যদিনের মতো এদিন বিক্রয়কর্মীরাও অলস সময় কাটাতে পারেননি। সবাইকে বই বিক্রিতে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে।

বিক্রয়কর্মীরা জানান, এবার শুরু থেকেই বিক্রি মোটামুটি ভালো। তবে ছুটির দিনে বইমেলায় বিক্রির ধুম পড়েছে। এদিন শবেবরাতের ছুটিতে সকলে মেলায় ঘুরতে এসেছেন। মেলায় বিকাল হওয়ার পরপরই ব্যস্ততা বাড়তে শুরু করেছে। ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের চাপ। যা সামাল দিতে অনেকটা হিমশিম খেতে হয়েছে বিক্রয়কর্মীদের।

মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থী রুহুল আমিন সরকার বলেন, ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা ছিল। কাজিনসহ টঙ্গী থেকে এসেছি। পরীক্ষা শেষে বইমেলা ঘুরে যাওয়ার ইচ্ছে করলো, তাই মেলায় আসা। এখনো বই কেনা হয়নি। তবে খুঁজে খুঁজে দেখছি, পছন্দ হলে অবশ্যই নিবো।

ঢাকার আজিমপুর থেকে মেলায় ঘুরতে আসা শাহনাজ পারভীন বলেন, মেলায় যে এত ভিড় হবে ভাবতেই পারিনি। দশ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে পরে ঢুকতে পেরেছি। তবে এখন ভালো লাগছে। মেলা ঘুরে দেখছি। দুইটা উপন্যাসও কিনেছি।

এদিকে মেলায় দর্শকের ভিড় থাকলেও ক্রেতা সংখ্যা খুবই কম বলে জানিয়েছেন অনেক স্টলের বিক্রেতারা। একাধিক বিক্রেতা জানান, প্রতিদিনের তুলনায় এদিনও মানুষের ভিড় বেশি, তবে সে তুলনায় আশানুরূপ বিক্রি হয়নি।

জ্ঞ্যানকোষ প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী রাহি আক্তার বলেন, মেলায় ভালোই জনসমাগম হয়েছে। অন্যদিনের তুলনায় ছুটির দিনগুলোতে মোটামুটি ভালো বেচাকেনা হয়েছে।

প্রথমা প্রকাশনীর বিক্রেতা শাহরিয়ার হোসেন বলেন, বিক্রি মোটেই ভালো না। সবাই এসে ছবি তুলে চলে যায়। ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। প্রতিদিনের তুলনায় মানুষ প্রায় দ্বিগুণ, তবে বিক্রি যে খুব বেড়েছে তা নয়।

শনিবার অমর একুশে বইমেলার ১৫তম দিন মেলা শুরু হয় দুপুর ২টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিন নতুন বই এসেছে ১৭৫টি।

এদিন সকাল ১০টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অমর একুশে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন শিল্পী সুমন মজুমদার, শিল্পী প্রিয়াংকা গোপ ও শিল্পী রেজাউল করিম।

বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘জীবন ও কর্ম : সৈয়দ আলী আহসান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুহম্মদ আবদুল বাতেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তারেক রেজা এবং মহিবুর রহিম। সভাপতিত্ব করেন আবদুল হাই শিকদার।

লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন- কবি শহীদুল্লাহ ফরায়েজী এবং কবি ও গবেষক মহিবুর রহিম।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি তারিফ রহমান, কবি জাহিদ হায়দার। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী সায়েরা হাবীব, শারমিন জুঁই ও শাহনাজ পারভীন লিপি। আজ ছিল মো. শহিদুল্লাহ্’র পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শহীদ শিল্পীগোষ্ঠী ও সাংস্কৃতিক একাডেমি’ এবং চৈতী পারভীনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শিল্পবৃত্ত’—এর পরিবেশনা।

রোববারের বইমেলা

আগামীকাল রোববার অমর একুশে বইমেলার ১৬তম দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘জীবন ও কর্ম : জহির রায়হান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন কবি সহুল আহমদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মশিউল আলম এবং আহমাদ মোস্তফা কামাল। সভাপতিত্ব করবেন মাহবুব হাসান।


বদলে গেলো বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের নাম

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের নাম বদলে গেল। নতুন নামকরণ হয়েছে ‘জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা’। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ শনিবার এই তথ্য জানানো হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে এই প্রথম কোনো স্টেডিয়ামের নাম বদল করল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেশ কিছু স্টেডিয়ামের নাম বদল করেছে। উপজেলা পর্যায়ে ১৫০টি স্টেডিয়ামের নাম বদল হয় ১২ ফেব্রুয়ারি। এগুলো শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নামে পরিচিত ছিল। স্ব স্ব উপজেলার নামে এগুলোর নতুন নামকরণ হয়েছে।

দেশের নানা স্থাপনার মতো ক্রীড়াঙ্গনের অনেক স্থাপনাও বিদায়ী সরকার প্রধানের পরিবারের অনেক সদস্যের নামে ছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্রীড়াঙ্গনেও ওই পরিবারের নামে কোনো স্থাপনার নামকরণ না রাখার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে উপজেলা পর্যায়ে স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তনের পর এবার দেশের মূল স্টেডিয়ামের নাম বদল করা হলো।

১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্টেডিয়াম ঢাকা স্টেডিয়াম নামে পরিচিত ছিল দীর্ঘদিন। রাষ্ট্রীয় অনেক ক্রীড়া অনুষ্ঠানও এই স্টেডিয়ামে হয়েছে। ক্রিকেট-ফুটবল এখানে ভাগাভাগি করে হতো। ২০০০ সালে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট এখানেই হয়েছিল। এরপর ক্রিকেট এই স্টেডিয়াম থেকে সরে যায়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর ১৯৯৮ সালে স্টেডিয়ামটির নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম।


সরকারী পদ ছেড়ে রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত নাহিদের

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোহাম্মদ নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সরকারের পদ থেকে সরে গিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোহাম্মদ নাহিদ ইসলাম। তিনি মনে করেন, সরকারে চাকরি করার চেয়ে সরাসরি জনগণের সঙ্গে কাজ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আজ শনিবার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ বলেন, ‘সরকারের (থাকার) চেয়ে জনগণের সঙ্গে কাজ করা, মাঠে যাওয়া যদি বেশি জরুরি বলে মনে হয়, তাহলে আমি সরকার ছেড়ে দেব এবং হয়তো সেই দলের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হব।’

সেটি এই মাসেই হবে কিনা জানতে চাওয়া হলে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘যেহেতু দলের ঘোষণা এসেছে যে দলটি এ মাসেই হবে… কয়েকদিনের মধ্যেই সবাই এ বিষয়ে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাবে।’

‘শিক্ষার্থীরা তো এখন রাজনৈতিক দলের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হচ্ছে। তো আমার মনে হয় না যে তাদের আর সরকারে আসার কোনো প্রয়োজন আছে এই মুহূর্তে, বরং জনগণের কাছেই এখন তাদের বেশি প্রয়োজন-অপ্রয়োজন।’

সরকার থেকে তিনি সরে দাঁড়ালে তার স্থলাভিষিক্ত কে হবেন—এর ব্যাখ্যায় সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন কেউ কিংবা বিদ্যমান উপদেষ্টাদের মধ্য থেকে কে দায়িত্বে আসবে—কেবিনেটে (মন্ত্রিপরিষদে) এ বিষয়ে আলোচনা হবে।’

রাজনৈতিক দল গঠন ও ভোটের রাজনীতি যে দুটি ভিন্ন বিষয়, তা জেনেই মাঠে নামা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে গোছানোর ওপরে, সাংগঠনিক কার্যক্রমের ওপর এটা নির্ভর করবে জনগণের সমর্থন তারা কতটুকু ভোটে রূপান্তর করতে পারছে। জনগণের তো তরুণদের প্রতি একটা সমর্থন আছেই, সহানুভূতিও আছে যেহেতু তারা গণঅভ্যুত্থান করেছে।’

৫ আগস্টের পর থেকে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীনভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারছে বলে এ সময় জানান নাহিদ। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সরকারের (অন্তর্বর্তী) দূরত্বও কমেছে বলেও মনে করেন তিনি।

‘এই সরকারকে (অনেকে) অনির্বাচিত, অসাংবিধানিক ইত্যাদি বলছিল; আওয়ামী লীগের নেতারাও এভাবেই বলছিল। তবে পরবর্তীতে আমরা দেখেছি যে বিএনপি তার জায়গা পরিষ্কার করেছে, তাদের নেতৃত্ব আওয়ামী লীগের বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছে যে আওয়ামী লীগের রাজনীতি তারা চায় না; বিচারিক প্রক্রিয়ায় তারা এটার (আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের) ব্যবস্থা তারা চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের তো একটা ভোটব্যাংক আছে, হিস্ট্রিকালি (ঐতিহাসিকভাবে) আমরা দেখি। তবে সেটা কতটুকু বাড়বে বা কমবে, সেটা আমরা এখনই বলতে পারব না। কারণ এবারের ভোটের ইকুয়েশনটাই (সমীকরণ) একটু ডিফরেন্ট (ভিন্ন) হবে বলে মনে হয় আমার।’

আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা রাজনীতির মাঠে ফেরা না ফেরার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসছে কি না—প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা এটা করতে চাই, কেবল নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে আমরা কিছু করে দিতে চাই না।…. বিচারিক কার্যক্রম শুরু হলে, সকল তথ্য-প্রমাণ এলে এবং আদালতের সুপারিশক্রমে আওয়ামী লীগ বিষয়ে আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব।’

সেটি কবে নাগাদ হবে?—জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বছরের মধ্যেই। অবশ্য নির্বাচনের আগে তো আমাদের একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবেই। সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে সেটা সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে।’

ধানমণ্ডি-৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়ি ভাঙচুর নিয়েও তিনি এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন এভাবে, ‘সরকার এই কার্যক্রমকে সমর্থন করে, এমন নয়। তবে ওই সময় যদি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে বল প্রয়োগের মাধ্যমে থামিয়ে দেওয়া হতো, তাহলে সেটি আরও বেশি হটকারিতায় পরিণত হতে পারত।’


মানহীন হাসপাতাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ঝুঁকিতে দেশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বাংলাদেশের বর্তমান স্বাস্থ্যসেবার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতি বাস্তবায়ন থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। যেখানে শহরাঞ্চলে ৫৫ শতাংশ কঠিন বর্জ্য থাকছে উন্মুক্ত অবস্থায়। যা দূষণ, জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

প্রয়োজন মতো আইন প্রণয়নের মারাত্মক পরিণতি এবং একটি সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা—এমনকি বাংলাদেশের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি দেখভালেরও একটি নিবেদিত কর্তৃপক্ষ নেই।

দেশের মেডিকেল বর্জ্য উত্পাদন প্রতি বছর আনুমানিক ৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামগ্রিক বর্জ্য উত্পাদন প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। শুধু ঢাকায় দৈনিক প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যা ২০৩২ সাল নাগাদ বেড়ে সাড়ে ৮ হাজার টনে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিদিন ১৫ লাখ টনেরও বেশি কঠিন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশ সংগ্রহ করা হয় এবং ১০ শতাংশেরও কম পুনরায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

'হেলথকেয়ার ওয়েস্ট ইন বাংলাদেশ: কারেন্ট স্ট্যাটাস, দ্য ইমপ্যাক্ট অব কোভিড-১৯' এবং সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট উইথ লাইফ সাইকেল অ্যান্ড সার্কুলার ইকোনমি ফ্রেমওয়ার্ক শীর্ষক এক গবেষণায় পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে যে, কোভিড-১৯ ও অন্যান্য জরুরি চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা বাদ দিলে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ প্রায় ৫০ হাজার টন মেডিকেল বর্জ্য (প্রতি শয্যায় ১ দশমিক ২৫ কেজি) উৎপন্ন করবে। যেগুলোর মধ্যে ১২ হাজার ৪৩৫ টন বিপজ্জনক হবে।

২০২২ সালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকায় প্রতিদিন প্রতি শয্যায় মেডিকেল বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ ১ দশমিক ৬৩ কেজি থেকে ১ দশমিক ৯৯ কেজি। কোভিড-১৯ মহামারির পরে এটির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

কিছু অগ্রগতি সত্ত্বেও স্থায়ী চ্যালেঞ্জ

আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) ২০১৫ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে কক্সবাজার জেলায় পাঁচটি মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুবিধা স্থাপন করেছে। এ ধরনের উদ্যোগ সত্ত্বেও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ অব্যাহত রয়েছে, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর এলাকায়।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নিয়ে মাসিক গোলটেবিল আলোচনা সিরিজ এসডিজি ক্যাফের ১২তম পর্বের আয়োজন করে ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস (ইউএনওপিএস) বাংলাদেশ।

২০২৪ সালের ৩ অক্টোবরের এই অনুষ্ঠানে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা– বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান অন্বেষণ করা হয় এবং এসডিজি ১১, ১২ এবং ১৩ তুলে ধরা হয়। এর লক্ষ্য হলো- ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিরোধ, হ্রাস, পুনর্ব্যবহার এবং পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে বর্জ্য উৎপাদন হ্রাস করা।

টেকসই সমাধানের উপর বিশেষজ্ঞদের অভিমত

অনুষ্ঠানটিতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. রওশন মমতাজ। তিনি তার প্রবন্ধে বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংকটের বাস্তবতা তুলে ধরেন।

তিনি একটি বড় পরিবারের বর্জ্য পৃথকীকরণ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে উল্লেখ করেন যে, প্রতি ১৫ বছরে বর্জ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, পৃথকীকরণের অভাব এবং দুর্বলভাবে পরিচালিত ল্যান্ডফিলগুলো পরিবেশগত সমস্যাগুলোকে আরও বাড়াচ্ছে।

ড. মমতাজ তিনটি আর অর্থাৎ- হ্রাস, পুনঃব্যবহার এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার ওপর জোর দিয়েছেন। অতিরিক্ত উত্পাদক দায়বদ্ধতা (ইপিআর) অবশ্যই একটি টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাঠামো বিকাশের জন্য বাস্তবায়ন ও প্রয়োগ করতে হবে।

ইউএনওপিএস বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালিধরন বলেন, ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুধু নিষ্পত্তি নয়; এটি আমাদের ভোগের ধরণগুলো পুনরায় আকার দেওয়া এবং স্থায়িত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ও।’

যদিও মেডিকেল বর্জ্য বাংলাদেশের মোট কঠিন বর্জ্যের মাত্র ১ শতাংশ হলেও এর ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা পুরো বর্জ্য প্রবাহকে দূষিত করে এবং বিপজ্জনক করে তোলে।

নিয়ন্ত্রক কাঠামো ও এর সীমাবদ্ধতা

বাংলাদেশ সরকার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অনুশীলন বাড়ানোর জন্য জাতীয় থ্রিআর কৌশল প্রণয়ন করেছে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম উন্নত করতে এসব কৌশল অন্তর্ভুক্ত করেছে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১-এ প্রথমবারের মতো এক্সটেন্ডেড প্রডিউসার রেসপনসিবিলিটি (ইপিআর) চালু করা হয়েছে।

এই বিধিমালা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ এখনও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নিবেদিত কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। এর পরিবর্তে প্রিজম বাংলাদেশ, ওয়েস্ট কনসার্ন, সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (সিএসডি), এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) এবং আইসিডিডিআর,বি'র মতো সংস্থাগুলো মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ করে ঢাকায় নেতৃত্ব দিয়ে থাকে।

মেডিকেল বর্জ্য অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, হাসপাতালের কিছু কর্মী সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনপা নিশ্চিতের পরিবর্তে পুনর্ব্যবহারযোগ্য মেডিকেল বর্জ্য (যেমন কাচের বোতল, সিরিঞ্জ, স্যালাইন ব্যাগ এবং ব্লাড ব্যাগ) অসাধু পুনর্ব্যবহারযোগ্য বর্জ্য সংগ্রহকারীদের কাছে বিক্রি করে। একটি চক্র ওষুধের দোকান, হাসপাতাল এবং ক্লিনিকগুলোতে বিক্রি করার আগে প্রয়োজনীয় জীবাণুমুক্তকরণ ছাড়াই এই উপকরণগুলো পরিষ্কার এবং পুনরায় প্যাকেজ করে বলে জানা গেছে।

২০০৮ সালের মেডিকেল বর্জ্য (ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট) বিধিমালা অনুসারে, হাসপাতালগুলোকে পুনরায় ব্যবহার রোধ করতে প্লাস্টিকের টিউব এবং অন্যান্য বর্জ্য উপকরণগুলো কেটে বা ছিদ্র করে দিতে হয়। তবে টিআইবির গবেষণায় দেখা গেছে, ৩১ শতাংশ হাসপাতালে এই নিয়ম মানতে ব্যর্থ হয় এবং ৪৯ শতাংশ হাসপাতালে সুই ধ্বংসকারী যন্ত্রের অভাব রয়েছে।

২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত 'গভর্নেন্স চ্যালেঞ্জেস ইন মেডিকেল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড' শীর্ষক এক গবেষণায় ৪৫টি জেলার হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন ও পৌর কর্তৃপক্ষসহ ৯৩টি মেডিকেল বর্জ্য কর্মী এবং ২৩১টি প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপ চালানো হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মকানুন মেনে না চলা এবং তদারকির অভাব রয়েছে।

যদিও ২০০৮ সালের বিধিমালা প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও এখনও তা আলোর মুখ দেখেনি। এর পরিবর্তে সিটি করপোরেশন ও হাসপাতালগুলো লাইসেন্সবিহীন ঠিকাদারদের কাছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আউটসোর্স করেছে।

স্বচ্ছতা ও সমন্বয়ের অভাব

ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ইউএনবির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি নিয়ে কথা বলতে চায় না। অনেক হাসপাতাল এখনও উচ্চ বাছাই ব্যয় এবং প্রয়োগকারী ব্যবস্থার অভাবের কথা উল্লেখ করে সাধারণ আবর্জনা হিসাবে বর্জ্য অপসারণ করে।

তাছাড়া মেডিকেল বর্জ্য ট্র্যাক করার কোনো কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ নেই। গবেষণায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মও উঠে এসেছে। সরকারি হাসপাতালে চাকরির জন্য এক থেকে দুই লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব অগ্রগতিকে আরও বাধাগ্রস্ত করছে। আমলাতান্ত্রিক অদক্ষতার কারণে বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির অনেকাংশেই অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে।

জরুরি সংস্কারের আহ্বান

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান পদ্ধতিগত সুশাসন ব্যর্থতা ও দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ খাতে জবাবদিহিতার অভাব রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায় এবং প্রতিটি পর্যায়ে পরিবেশ বিপর্যয়ে ভূমিকা রাখে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেন, স্বাস্থ্যসেবা পরিবেশ ও সেবার মান উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি উভয় হাসপাতালেই কার্যকর মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় সরকার সংস্থা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে অধিকতর সচেতনতা, উন্নত কারিগরি সহায়তা এবং সমন্বয় বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।

কর্তৃপক্ষ, টেকসই মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের জন্য বিদ্যমান নিয়ম-কানুনের কঠোর প্রয়োগ, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) বৃদ্ধি এবং বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলোতে সম্মতি নিশ্চিত করার জন্য আরও ভাল পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার পক্ষে পরামর্শ দিচ্ছে।

অবিলম্বে সংস্কার এবং একটি নিবেদিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা না হলে— মারাত্মক পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ।


ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পবিত্র শবে বরাত পালিত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে পালিত হয়েছে সৌভাগ্য ও ক্ষমাপ্রাপ্তির রজনী পবিত্র শবে বরাত।

এ বছর শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে বাংলাদেশে শবে বরাত পালিত হয়েছে।

আরবি শাবান মাসের ১৫ তারিখ দিবাগত রাতে শবে বরাত পালিত হয়। শব-ই-বরাত একটি উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত হয় যখন মুসলমানরা আল্লাহর ইবাদত বন্দেগি করে এবং তাদের অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।

বিশ্বাস করা হয়, পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এই রাতটি উপযু্ক্ত এবং পুরো বছরের জন্য তাদের সৌভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়।

করোনাভাইরাস মহামারির ভয়াবহ সংক্রমণ থেকে মানবজাতির নিরাপদ থাকা ও মানুষের মুক্তির জন্য মহাগ্রন্থ আল কোরআন তেলাওয়াত ও বিশেষ মোনাজাত করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও এ দিনের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করেছে।

পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) তত্ত্বাবধান আতশবাজি ফোটানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে দেশসহ বিশ্বের সকল মুসলমানকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন।

এদিন বিপুল সংখ্যক মুসল্লি কবরস্থানে গিয়ে স্বজনদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেছেন।

এছাড়া গরীব ও দুস্থদের মাঝে অর্থ, খাবার ও মিষ্টান্নও বিতরণ করা হয়।


প্রধান উপদেষ্টা আগামীকাল ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করবেন

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আগামীকাল রোববার থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলন (ডিসি)। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, রোববার সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টা তাঁর কার্যালয়ের শাপলা হলে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।

ডিসি সম্মেলনে বিভিন্ন অধিবেশন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত, দিক-নির্দেশনা গ্রহণ এবং সমাপনী অনুষ্ঠানসহ ৩৪টি কার্য-অধিবেশন থাকবে।

সরকারের নীতিনির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।


banner close