রূপপুরে দুই ইউনিটের আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। বছরের শেষদিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হতে পারে। আজ মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আলোচনা করেছেন রুশ রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ।
আজ রসাটমের স্থানীয় জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এটি জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিয়ে বাংলাদেশ-রাশিয়া কৌশলগত সহযোগিতার বিষয়গুলো স্থান পেয়েছে তাদের আলোচনায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আলেক্সি লিখাচেভ বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাইলস্টোন অর্জিত হতে যাচ্ছে। চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। বর্তমানে আমরা নতুন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করছি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় আরও দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট নির্মাণের ব্যাপারে বাংলাদেশ গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে।’
আলেক্সি লিখাচেভ বলেন, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মাল্টিপারপাস গবেষণা রিঅ্যাক্টর নির্মাণের বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। গবেষণা রিঅ্যাক্টর বিজ্ঞান ও নিউক্লিয়ার মেডিসিনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমাধান দিতে সক্ষম।
গত সোমবার ঢাকায় আসেন রসাটমের মহাপরিচালক। এরপর তিনি নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও গ্রিন সিটি আবাসিক এলাকা পরিদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আজ অ্যালেক্সি লিখাচেভের সৌজন্য সাক্ষাতের ওপর প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশান ফেডারেশনের সহায়তায় রূপপুরে নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে কারিগরি সমীক্ষা পরিচালনা করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রোসাটমের ডিজি নতুন দুটি ইউনিটের নির্মাণ কাজ শুরু করতে উক্ত কারিগরি সমীক্ষা দ্রুততম সময়ে শুরু করার প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারিগরি বিভিন্ন বিষয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন তিনি।
তিনি জানান, এরই মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট (১২০০ x ২= ২৪০০ মেগাওয়াট)-এর নির্মাণ কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রথম ইউনিটের ফিজিক্যাল স্টার্ট আপ চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শুরু হবে। ইউনিট-১ এবং ইউনিট-২ থেকে আগামী ২০২৫ এবং ২০২৬ সালে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।
প্রধানমন্ত্রী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম এবং দ্বিতীয় ইউনিটে ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি রাশান ফেডারেশনে ফেরত নিতে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার জন্য নির্দেশনা দেন।
রোসাটমের ডিজি প্রথম এবং দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদিত ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি রাশান ফেডারেশনে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে রাশান সরকারের পক্ষে নিশ্চয়তা প্রদান করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি রাশান ফেডারেশনে ফেরত নেওয়ার যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা যথাসময়ে সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দেন।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি রাশান ফেডারেশনে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ও রাশান ফেডারেশন সরকার আন্তরাষ্ট্রীয় চুক্তি সই করেছে।
রোসাটমের মহাপরিচালক বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার প্রায় আড়াই হাজার জনশক্তি কাজ করছে এবং তারা এ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোসাটম মহাপরিচালককে বাংলাদেশি এসব দক্ষ মানব সম্পদকে অন্য পারমাণবিক প্রকল্পে কাজে লাগাতে বলেন।
রোসাটম মহাপরিচালকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় ভ্লাদিমির পুতিনকে অভিনন্দন জানান। রোসাটম মহাপরিচালকও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পৌঁছে দেন।
সাক্ষাতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট নির্মিত হচ্ছে। প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। সর্বাধুনিক ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টর স্থাপিত হচ্ছে প্রতিটি ইউনিটে। প্রকল্পের জেনারেল ডিজাইনার ও ঠিকাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে রসাটমের প্রকৌশল শাখা।
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে মোট ১ হাজার ৫১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ (সোমবার) পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ১ হাজার ৩৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য ঘটনায় গ্রেফতার ৪৮২ জন।
অভিযান চলাকালে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পুরাতন রিভালবর, ২টি দেশি পাইপগান, ১টি একনলা বন্দুক, ১টি পাইপগান, ৬ রাউন্ড গুলি, ১টি দেশীয় এলজি, ১টি পুরাতন মরিচাযুক্ত দেশীয় এলজি, ১টি স্টিলের ধারালো চাকু, ২টি সুইচ গিয়ার চাকু, ১টি কাঠের বাট যুক্ত কিরিচ ও ৫টি কিরিচ উদ্ধার করা হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে ৩০০টি আসনে চূড়ান্তভাবে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৭৬১টি। সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আখতার আহমেদ বলেন, “আমরা আজ সারাদেশের ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছি। ৬৪টি জেলার ৩০০টি সংসদীয় আসনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ৭৬১টি। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের জন্য কক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ১৩৭টি এবং নারী ভোটারের জন্য ১ লাখ ২৯ হাজার ৬০২টি। অর্থাৎ মোট কক্ষের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি।”
আখতার আহমেদ আরও বলেন, “অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে ১৪টি রাখা হয়েছে, যেখানে প্রায় ১২ হাজার ভোটকক্ষ থাকবে। একটি ভোটকক্ষে গড়ে প্রায় তিন হাজার ভোটারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ‘ক্যাচমেন্ট এরিয়া’ হিসেবে বিবেচিত। প্রয়োজনে পরবর্তীতে এই সংখ্যা সামঞ্জস্য করা হবে।”
ইসির তথ্য অনুযায়ী, খসড়া তালিকায় ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার ৬১৮টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার ১৪৮টি। অর্থাৎ এবার ভোটকেন্দ্র বেড়েছে, তবে ভোটকক্ষ কমেছে। আসন্ন নির্বাচনে মোট ভোটকক্ষ থাকবে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬টি, যেখানে গত নির্বাচনে ছিল ২ লাখ ৬১ হাজার ৫৬৪টি।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ৯ম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি)-এর বৈঠক চলছে ।
রাজধানীর শের-ই-বাংলানগর এলাকার এনইসি কনফারেন্স রুমে আজ সকালে এ বৈঠক শুরু হয়।
বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং সফররত পাকিস্তানের জ্বালানি মন্ত্রী আলি পারভেজ মালিক নিজ দেশের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
দীর্ঘ ২০ বছর বিরতির পর বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শেষবার ২০০৫ সালে জেইসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বর্তমান সরকারের গৃহীত সংস্কার ও নীতিমালা প্রণয়নের কাজ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সঠিক নয়। বরং সংস্কার কার্যক্রম পুরোপুরি চালু থাকবে। সোমবার অন্তর্বর্তী সরকার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম উপদেষ্টা পরিষদের কার্যক্রম নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সরকারের গৃহীত সংস্কার ও নীতিমালা প্রণয়নের কাজ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার যে কথা বলা হয়েছে, এটা সঠিক নয়; বরং সংস্কার কার্যক্রম পূর্ণোদ্যমে চালু থাকবে।
এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদ নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর না করা পর্যন্ত নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে যাবে এবং উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকও নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ অংশে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’-তে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটি দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থান করছে।
সোমবার সকালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তি নম্বর-৫ এ বিষয়টি জানানো হয়।
অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাত ৩টার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৬০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ১৩০০ কিলোমিটার, মোংলা থেকে ১২৮০ কিলোমিটার এবং পায়রা বন্দর থেকে প্রায় ১২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-পশ্চিমমুখী হয়ে ক্রমশ শক্তিশালী হতে পারে এবং ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যা বা রাতে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র থেকে ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় প্রায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার বেগে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি সাগর বর্তমানে অত্যন্ত উত্তাল রয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
এরই প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে আগে জারি করা ১ নম্বর সতর্ক সংকেত নামিয়ে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে না যেতে এবং উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ স্থানে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সাগরে ঢেউয়ের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় দেশের উপকূলীয় এলাকায় থাকা জেলেদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সোমবার (২৭ অক্টোবর) ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চলতি সপ্তাহের মধ্যে শেষ করা হবে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমনওয়েলথের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
গত ২০ অক্টোবরের মধ্যে ইসির ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল। ছয়দিন পেরোলেও কেন তা প্রকাশ করা হয়নি, জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। কিছু সংশোধনের প্রস্তাব এসেছিল সেটাও করা হয়েছে। সোমবার সকালে ব্রিফ করে দেব।’
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন কবে শেষ হবে, এ নিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘দল নিবন্ধনের বিষয়ে অগ্রগতি নিয়ে মাঠপর্যায় থেকে কিছু বাড়তি তথ্য আসেছে। এটা পর্যালোচনা চলছে। এ সপ্তাহের ভেতরে করে দেব। কারণ, আমাদেরও একটা দায় আছে। আমাদের দিক থেকে তাগিদ আছে।’
ইসি সচিব বলেন, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী শতভাগ সম্পন্ন করতে হবে বিষয়টি এমন নয়। পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে কিছু কিছু জায়গায় সমন্বয় করতে হয়। কিছু কিছু বিষয় আগে করা হয়েছে আর কিছু কিছু বিষয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে এবং কিছু কিছু বিষয়ে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। সময় অনুযায়ী দিনক্ষণ মেপে কোনো কাজ করা সম্ভব নয়।’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত আতঙ্কিত বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমনওয়েলথের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা জানান ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
ইসি সচিব বলেন, ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। রাজনৈতিক দল নিবন্ধনসহ চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা চলতি সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে।
নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মাঠ থেকে দল নিবন্ধনের তথ্য আসছে, তা পর্যালোচনা চলছে। আমরা ইনশাআল্লাহ এই সপ্তাহের ভেতরে করে দেব।’
নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা যেভাবে এগোচ্ছি পরিকল্পনা অনুযায়ী, তো সবকিছু যে শতভাগ করা সম্ভব নয়। এটা আপনারাও জানেন আমরাও জানি। পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে কিছু কিছু জায়গায় এডজাস্টমেন্ট করতে হয়। কিছু কিছু বিষয় আমরা আগেই কমপ্লিট করেছি। কিছু কিছু বিষয়ে আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে। আর কিছু কিছু বিষয়ে আরেকটু হয়তো অপেক্ষা করতে হবে। এখন সবকিছুই মেপে মেপে সময় অনুযায়ী দিনক্ষণ তারিখ অনুযায়ী করা সম্ভব নয়। এই এডজাস্টমেন্ট আমাদের রাখতে হবে। এই ফ্লেক্সিবিলিটি তো আছে এখন পর্যন্ত আতঙ্কিত হওয়ার বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার মতো কোনো কারণ আমি দেখছি না। আমার মনে হয় না আপনারা হয়তো আরও ভালো জানেন আমাদের থেকে যে, আসলে কি আতঙ্কিত বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার মতন পরিস্থিতি হয়েছে। আমার বিশ্বাস হয়নি।’
আরপিও সংশোধন বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বিএনপির চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গে আখতার আহমেদ বলেন, ‘আরপিও নিয়ে বিএনপি থেকে চিঠি দিয়েছে। কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
ব্রিফিংকালে ইসির ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, গত ২০ অক্টোবরে মধ্যে ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের কথা থাকলেও এখনো কেন প্রকাশ করা হয়নি জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রের ওটা চূড়ান্ত হয়েছে। কিছু সংশোধনের প্রস্তাব এসেছিল, সেটাও করা হয়েছে। কাল (সোমবার) সকালে ব্রিফ করে দেব।’
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন কবে শেষ হবে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘দল নিবন্ধনের ব্যাপারে অগ্রগতি মাঠ পর্যায় থেকে কিছু বাড়তি তথ্য আসছে। এটা পর্যালোচনা চলছে। এই সপ্তাহের ভেতরে করে দেব। কারণ আমাদেরও তো একটা দায় আছে, আমাদের দিক থেকে তাগিদ আছে।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আখতার আহমেদ সরাসরি কোনো জবাব দেননি। তিনি বলেন, ‘প্রতীকের ব্যাপারটি আমরা পরে জানাব।’
গত শনিবার রাতে ইসি প্রাঙ্গণের ভেতরে নির্বাচন ভবনের দক্ষিণ পাশে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ইসি মামলা করবে কি না, জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, ‘পুলিশ তাকে আটক করেছে। এটা বাইরে ফেটেছে। ইসিকে যদি মামলা করতে হয়, করব।’
কমনওয়েলথের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, ‘তারা নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। এছাড়া প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন, প্রযুক্তির অপব্যবহার, নির্বাচনকালীন সময়ে নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভা নভেম্বরেই শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। গতকাল রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংস্কার বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরতে গিয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের যে প্রস্তাব, তার মধ্যে মোট ২৩টি প্রস্তাব ছিল আশু করণীয়, যেটা এই সরকারের সময়সীমার মধ্যে করা সম্ভব। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, আমলারা পর্যালোচনা করে মোট ১৩টি প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। এটা খুব শিগগিরই দেখা যাবে। তিনি বলেন, ‘এগুলো যে খুব বড় কিছু, এ রকম নয়। কিন্তু আমাদের যে সময়সীমা আছে, তখন তো ছিল তিন মাস। এখন তো আর হয়তো এক মাস আছে। কারণ, এই যে জিনিসগুলো করা হবে, সেটা ক্যাবিনেটেই করতে হবে। অথবা নীতিমালা বা অধ্যাদেশ প্রণয়ন করে করতে হবে। সেটা আমরা নভেম্বরের পরে আর করতে পারব না। কারণ, নভেম্বরেই ক্যাবিনেট ক্লোজ হয়ে যাবে, ক্যাবিনেট মিটিংটা। এরপর নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেবে। নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর আর সম্ভবত ক্যাবিনেট মিটিং বসে না।’
মিট দ্য রিপোর্টার্সে নামসর্বস্ব সংবাদ পত্রিকা, সাংবাদিকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, নির্বাচনে এআই প্রপাগান্ডাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করেন উপস্থিত সাংবাদিকরা। নামসর্বস্ব পত্রিকার বিষয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয় এসব পত্রিকার তালিকা তৈরি করেছে। সাংবাদিকদের সমর্থন পেলে গত এক বছরে এক দিনও ছাপা হয়নি, এমন পত্রিকাগুলোর বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে।
এ সময় তথ্য উপদেষ্টা বলেন, সরকার সংবাদপত্রের প্রচারসংখ্যা কমানো এবং বিজ্ঞাপনের হার বাড়ানোর পক্ষে। বিজ্ঞাপনের হার যেটা আছে, সেটার দ্বিগুণ করে দেওয়া হবে। কিন্তু সেই ক্ষেত্রে সত্যিকারের প্রচারসংখ্যা দেখাতে হবে। তিনি বলেন, এই সুবিধা পেতে সংবাদপত্রকে সাংবাদিকদের জন্য সরকারের নির্ধারিত বেতন কাঠামো নিশ্চিত করতে হবে। এই বেসিক স্যালারি (মূল বেতন) না দেওয়া হলে কোনো পত্রিকা সুবিধা (বিজ্ঞাপনের হার) পাবে না।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ করে দেওয়া হবে জানিয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তত নবম গ্রেডের কাছাকাছি যেন বেতন হয়, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
ওটিটি-ইউটিউব নিয়ে তিনি বলেন, ‘কনটেন্ট নির্মাণ করলে সেটা তথ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায়। আর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পাবলিশড করলে সেটা আইসিটি বিভাগের দেখভালে চলে যাবে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যে কনটেন্ট আসে, সেগুলোকে রেগুলেট করার চেষ্টা করছি।’
এই সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল, গণমাধ্যমে আওয়ামী লীগের দৌরাত্ম্য কমানো উল্লেখ করে মাহফুজ আলম বলেন, এ কাজে খুব সফল না হলেও যতটুকু করা যায়, সেই চেষ্টা করা হয়েছে। যেহেতু সরকার শেখ মুজিবের মতো মিডিয়া বন্ধ করতে চায় না, তাই কোনো মিডিয়া বন্ধ করা হয়নি।
একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলা রোধে আইন করা যায় কি না? জবাবে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকতার পরিমণ্ডল থেকে যদি ‘ব্যাড অ্যাপল’ (খারাপ মানুষ) না সরানো যায়, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন যদি থেকে যায়, তাহলে অবশ্যই সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ হবে।
এ প্রসঙ্গে আলোচনায় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘যারা ভায়োলেন্স করবে, আজকে যদি সুযোগ পায়, আজকেই আমাদের মেরে ফেলবে, তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে সাংবাদিক পরিচয়ে বা বিভিন্ন পরিচয়ে, বুদ্ধিজীবী পরিচয়ে। টেলিভিশন টকশোতে বসে বসে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলতেছে। ওই সাহস কোথায় ছিল গত ১৫ বছরে?’
এরপরও সরকারের পক্ষ থেকে ‘খুব বেশি’ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়নি উল্লেখ করে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘এ জন্য যে আমরা চাই না যে আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করি।’
সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিয়ে আলোচনায় বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ এসেছে জানিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, তারা প্রশ্ন তুলেছে যে এমন আইন ফ্যাসিস্টের দোসর ছিল, এখন বিভিন্ন হাউসে রয়েছে, তাদের সুরক্ষা দেবে। স্থানীয় পর্যায়ে যারা বিভিন্ন দলের দালালি করে, তারা সুরক্ষা পাবে।
গত ১৫ বছরে ‘অপসাংবাদিকতার’ জন্য কেউ অ্যাপোলজি (ক্ষমা প্রার্থনা) করেনি উল্লেখ করে মাহফুজ আলম বলেন, তাদের ভূমিকার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। তাহলে কাকে ভরসা করে আইনটা করা হবে?
নতুন দুটি গণমাধ্যমের অনুমোদন দেওয়া নিয়ে লেখালেখি হওয়ার কথা তুলে ধরে এ ক্ষেত্রে তথ্য মন্ত্রণালয় কী ভাবছে, তা জানতে চান একজন সাংবাদিক। জবাবে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, দেশে বিকল্প গণমাধ্যম ছাড়া ‘বাকশালী ইকোসিস্টেম’ পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তাই তিনি বিকল্প মিডিয়া দেবেন।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘যখন আমরা মালিকানার ফাইলগুলো দেখি, অধিকাংশ মালিক এখনো আওয়ামী লীগের। এখনো আওয়ামী লীগের মালিকানা পরিবর্তন করা হয় নাই। ওনারা বিদেশ থেকে বসে বসে এখনো এখানে টেলিভিশন চ্যানেলে যে আয় হয়, সেটার থেকে ওনারা পাচ্ছেন। পত্রিকা অফিস থেকে ওনারা পাচ্ছেন।’
মাহফুজ আলম বলেন, পুরোনো বন্দোবস্তের লোকেরা, পুরোনো বড় বড় মিডিয়া হাউস যারা আছে, তারা চায় না যে দেশে কোনো অলটারনেটিভ মিডিয়া (বিকল্প গণমাধ্যম) হোক। সে জায়গা থেকে বিভিন্নভাবে এটাতে (দুই গণমাধ্যমের অনুমোদন) ‘ফ্রেমিংয়ের’ চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনের কারণে যদি তাকে পদ থেকে সরেও যেতে হয়, তাহলেও তিনি নতুন মিডিয়ার লাইসেন্স দেবেন বলে উল্লেখ করেন তথ্য উপদেষ্টা। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মিডিয়ায় ‘ফ্রেশ ব্লাড’ দরকার। যেহেতু তারা কোনো মিডিয়া বন্ধ করছেন না, তাই নতুন মিডিয়া দেবেন।
ডিআরইউর সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যান (সিজেসিসি) জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা গত শনিবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
সাক্ষাৎকালে তারা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
দুদেশের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও জনগণের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করে জেনারেল মির্জা পাকিস্তানের পক্ষ থেকে নানা খাতে সহযোগিতা আরও জোরদার করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য, যোগাযোগ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
‘আমাদের দুদেশ একে অপরকে সহায়তা করবে,’ বলেন জেনারেল মির্জা। তিনি আরও জানান, করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে দুমুখী নৌপথ ইতোমধ্যে চালু হয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা-করাচি আকাশপথও চালু হবে।
দুপক্ষ মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে উত্তেজনা প্রশমনের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি ভুয়া তথ্য এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের মাধ্যমে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার প্রবণতার চ্যালেঞ্জ নিয়েও মতবিনিময় হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিকর তথ্য এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এই বিপদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিকভাবে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।’
সাক্ষাৎকালে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, সিনিয়র সচিব ও এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার উপস্থিত ছিলেন।বাসস
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে।
আজ রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৫তম বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হলে নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা সহজ হবে । আর নির্বাচনের সময় সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে ।
তিনি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আগেও ছিল, এখনও আছে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দেশের পরিস্থিতি ও সার্বিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়া অনেক ঘটনা সত্য নয়, তবে গণমাধ্যমের তথ্য সঠিক থাকে।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে মোবাইল ফোনের সিমকার্ড নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অনেক অপরাধে সিমকার্ড ব্যবহার হয় অন্যের নামে। নির্বাচনের আগেই সিমকার্ডের সংখ্যা কমানো হবে। এক ব্যক্তির নামে ১০টা থেকে ৫টা/৭টা, পরে ২টায় নিয়ে যাওয়া হবে।
এছাড়া বৈঠকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি, সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অভিযান পরিচালনা, মাদক নিয়ন্ত্রণ এবং সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও নির্দেশনা দেয়া হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা কিভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।
নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক দল কিছু সমস্যার সমাধান করলে এবং জনগণ সচেতন থাকলে নির্বাচন সুন্দর হবে। রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান এলাকায় গণ্ডগোল বা অপরাধ প্রবণতা আগের চেয়ে কমেছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'পদায়নের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। নিয়োগের ক্ষেত্রেও সমস্যা নেই।’
নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সূত্র: বাসস
পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যান (সিজেসিসি) জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা গতকাল (শনিবার) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
সাক্ষাৎকালে তাঁরা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
দুই দেশের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও জনগণের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করে জেনারেল মির্জা পাকিস্তানের পক্ষ থেকে নানা খাতে সহযোগিতা আরও জোরদার করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য, যোগাযোগ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
‘আমাদের দুই দেশ একে অপরকে সহায়তা করবে,’ বলেন জেনারেল মির্জা। তিনি আরও জানান, করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে দুইমুখী নৌপথ ইতোমধ্যে চালু হয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা-ুকরাচি আকাশপথও চালু হবে।
দুই পক্ষ মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে উত্তেজনা প্রশমনের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি ভুয়া তথ্য এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের মাধ্যমে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার প্রবণতার চ্যালেঞ্জ নিয়েও মতবিনিময় হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিকর তথ্য এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এই বিপদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিকভাবে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।’
সাক্ষাৎকালে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।
গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলশানের হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ: জোরপূর্বক গুম মোকাবিলায় বিচার বিভাগের ভূমিকা’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মশালাটি গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকাস্থ জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
বিচারকদের উদ্দেশে আসিফ নজরুল বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিচার লিখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাদের শিল্পকর্মই তাদের বিচার। তাদের এই প্রস্তাবটি মনে রাখা উচিত।
তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। তিনি জানান, কমিশন ইতোমধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির জনসংযোগ কর্মকর্তা কে এম খালিদ বিন জামান জানান, কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রেখেছেন, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকারবিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান। ওয়ার্কিং সেশন পরিচালনা করেন কমিশনের সদস্য মো. সাজ্জাদ হোসেন।
কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন কমিশনের সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস। এই পর্বে গুম-সংক্রান্ত মামলায় প্রমাণ সংগ্রহ, সাক্ষ্যগ্রহণ, মানবাধিকার মানদণ্ডের প্রয়োগ ও বিচার প্রক্রিয়ার জবাবদিহি নিশ্চিতের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
আলোচনায় গুম প্রতিরোধে একটি স্থায়ী গুম প্রতিরোধ কমিশন গঠন, গুম প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন, বিচার বিভাগের আওতায় স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা প্রতিষ্ঠা, গুম সংক্রান্ত মামলার জটিলতা নিরসনে মনিটরিং সেল গঠন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, বিচারকদের জন্য বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ আয়োজন, ভিক্টিমদের সাইকোলজিক্যাল ও লিগ্যাল সহযোগিতা নিশ্চিতকরণ, ভিকটিমদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনসহ অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন, অনলাইন জিডি সহজীকরণ, চিহ্নিত মামলাগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে নিষ্পন্ন করা, বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে ভিক্টিমদের সহজে পৌঁছানোর ব্যবস্থা গ্রহণ, ম্যাজিস্ট্রেটদের মিথ্যা মামলা নিরসন সংক্রান্ত ক্ষমতা প্রদান এবং বিচার বিভাগ ও কমিশনের মধ্যে তথ্য বিনিময়ের কাঠামো উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ উঠে আসে।
দেশের বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে কর্মরত বিচারকসহ প্রায় ৯০ জন প্রশিক্ষণার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ সোহায়েলকে কানাডার টরন্টোতে দেখা গেছে– সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এমন তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জেল কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটি স্পষ্ট করেছে, তিনি বর্তমানে কেরানীগঞ্জ কারাগারে আটক আছেন।
শনিবার বেলা ১২টার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কারা কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, কমান্ডার সোহায়েল সংক্রান্ত একটি প্রপাগন্ডা ছাড়ানো হচ্ছে। যা সত্য নয়। তিনি বর্তমানে কেরানীগঞ্জ কারাগারে আটক আছেন।
জনগণকে বিভ্রান্তিকর তথ্য বা গুজবে বিশ্বাস না করতে আহ্বান জানিয়ে জেল কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো এসব পোস্টের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো সম্পর্ক নেই।
এর আগে শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়, যেখানে দাবি করা হয়—রিয়ার অ্যাডমিরাল সোহাইলকে এক সামরিক কর্মকর্তা টরন্টোর স্কারবরো এলাকায় দেখেছেন।