২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ওই বছরের ১১ অক্টোবর সব রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গোপনে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে দেশবিরোধী কিছু মৌলবাদী সংগঠন।
আর তাদের মতের সঙ্গে না মিললেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা বুলিং-র্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি গত ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন হলে ইফতার বিতরণ করার কারণে কিছু শিক্ষার্থীর এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে। শনিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে বুয়েট শহীদ মিনারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা এমন উদ্বেগজনক অভিযোগের কথা জানালেন।
তারা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি বা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেই বা পরিচয় থাকলে তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়; পরিবার নিয়েও অশালীন মন্তব্য করা হয় অনলাইন ও অফলাইনে। বিষয়গুলো নিয়ে কেউ সামান্যতম প্রতিবাদ করতে চাইলে ‘ছাত্রলীগ’ ট্যাগ দিয়ে তাকে বুয়েট থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়।
এমন পরিস্থিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের লাভের গুড় যাচ্ছে কার ঘরে? দেশের অন্যতম মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের এই বিদ্যাপীঠে রাজনীতি বন্ধের সুযোগে তবে কি মৌলবাদের আখড়ায় পরিণত হবে!
আবরার হত্যাকাণ্ডের মতো দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পর ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নসহ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাসে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ করে। তবে ক্যাম্পাসে গোপনে কার্যক্রম চালায় ইসলামী ছাত্রশিবির ও হিজবুত তাহরিরসহ মৌলবাদী ছাত্রসংগঠনগুলো। মসজিদ কিংবা বিভিন্ন আড্ডায় সাংগঠনিক সভায়ও মিলিত হন এসব সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
সুনামগঞ্জের হাওরে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র ও নাশকতার অভিযোগে বুয়েটের প্রাক্তন এবং বর্তমান ৩৪ জন শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তাররা সবাই শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। শিবিরের বুয়েট শাখার বায়তুল মাল সম্পাদক আফিফ আনোয়ারও ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। বর্তমানে তারা সবাই জামিনে রয়েছেন। কিন্তু থেমে নেই তাদের তৎপরতা। হাতেনাতে ধরা পড়ায় এই ঘটনা প্রকাশ্যে এলেও ভেতরে ভেতরে রাষ্ট্রবিরোধী মৌলবাদী, জঙ্গিবাদভাবাপন্ন সংগঠন বুয়েটে বহু কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
তাদের মৌলবাদী ছাত্র সংগঠনগুলোর অনুসারী ও নেতা-কর্মীরা মুখে মুখে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের কথা বললেও আদতে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে চলেছেন সন্তর্পণে। তারা তাদের স্বার্থে আবরার হত্যার আবেগকে কাজে লাগাচ্ছে।
গত ২৭ মার্চ বুয়েট ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার চত্বরে আসেন ছাত্রলীগের সভাপতি ও দপ্তর সম্পাদকসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। এর দুই দিন পর শুক্রবার বিকেলে বুয়েটের শহীদ মিনারের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা লঙ্ঘন করে পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম ছাত্রলীগ নেতাদের ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন। ওই দিন রাতেই হলের সিট বাতিল করা হয় ইমতিয়াজের। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। এর সঙ্গে নতুন করে তারা আরও চারটি দাবি যুক্ত করেন। মোট পাঁচ দফা দাবিতে তারা এখন আন্দোলন করছেন।
ক্রিয়াশীল ছাত্ররাজনীতির স্বর্ণালী ইতিহাস সবার জানা। দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, রক্ষা ও বাস্তবায়নে ছাত্ররাজনীতির ভূমিকা অপরিসীম। শুধু তাই নয়, দেশের সংস্কৃতি, অসাম্প্রদায়িকতা, সমতার সমাজ গঠনে দেশকে বারবার পথ দেখিয়েছে এই ছাত্ররাজনীতি। বুয়েটের ভূমিকাও সেখানে উল্লেখযোগ্য। তবে বারবার বুয়েটে সেই পথ রুদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। দেশের অন্যতম মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিরাজনীতিকীকরণের নামে মৌলবাদ নিজেদের ঘাঁটি গড়েছে সেখানে। যার মধ্য দিয়ে ছাত্রশিবিরের মতো সহিংস সংগঠনের শীর্ষপর্যায়ে উঠে এসেছেন বুয়েটের ছাত্ররা। প্রশ্ন হলো- কীভাবে এটি সম্ভব হয়েছে? দেখা গেছে, বুয়েটে রাজনীতি বন্ধের পক্ষে যারা বারবার বক্তব্য রাখছেন তারাও কোনো না কোনোভাবে মৌলবাদী রাজনীতিরই ধারক-বাহক।
বুয়েটে বর্তমানে মৌলবাদী ছাত্র সংগঠনগুলো বাধার শিকার না হলেও বাধা পাচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তিগুলো।
সাম্প্রতিক আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থী নামধারীরা ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে উচ্চকিত হলেও বুয়েটে শিবিরের তৎপরতার বিষয়ে তারা নিশ্চুপ। এমনকি এই বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলেও, তারা এটি দেখার দায় চাপিয়ে দিয়েছেন প্রশাসনের ওপর; কিন্তু সমালোচনার মুখে শেষপর্যন্ত তারা শিবির ও হিজবুতের নাম নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবি জানালেও এই দুই সংগঠনের নেতা-কর্মী কারা সেটি তারা জানে না বলে জানায়।
বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এই আন্দোলনের পুরো ইন্ধন জোগাচ্ছে ইসলামী ছাত্রশিবির ও হিজবুত তাহ্রীরসহ মৌলবাদী ছাত্র সংগঠনগুলো এবং এক শ্রেণির শিক্ষক।
কিন্তু ছাত্রলীগ বা ছাত্র ইউনিয়নসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত রাজনৈতিক দলগুলো যেকোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাইলেই তার বিরোধিতা করেছে এই গোষ্ঠী।
সাম্প্রতিক তথ্য না পাওয়া গেলেও ২০১৩ সালের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছিল, বুয়েট নিয়ে মৌলবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতার তথ্য। ওই বছরের নভেম্বরে বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলের ২২৩, ৩০২, ৩২৪, ৩৩০ ও ৪১০ নম্বর রুম এবং আহসানউল্লাহ হলসহ বিভিন্ন হল থেকে বিপুল পরিমাণ জেহাদি বই ও শিবিরের সাংগঠনিক কার্যক্রমের বিবরণ-সংবলিত বেশ কিছু গোপন নথি পাওয়া যায়। গোপন কাগজপত্র থেকে জানা যায়, বুয়েটে সেবা নামের একটি সংগঠনের আড়ালে শিবির তাদের কর্মকাণ্ড সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে প্রচার ও প্রসার করত। এ রকম ‘মেধাবীদের খোঁজে’ নামক কর্মসূচিসহ বিভিন্ন নামে বেনামে সংগঠন দাঁড় করিয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের তাদের দলে ভেড়ায় তারা। ওই সময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের অংশ হিসেবে রাজপথে পুলিশের ওপর অতর্কিতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আলোচিত ছিল ছাত্রশিবির।
বুয়েট ছাত্রশিবিরের গোপন নথি থেকে জানা গিয়েছিল, বুয়েটে সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে শিবির বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থীদের পেছনে। ২০১০ সালে বুয়েটে শিবির অর্থ ব্যয় করেছে ৮ লাখ ৭০ হাজার ৩১৪ টাকা এবং ২০১১ সালে খরচ করে ১৩ লাখ ২৩ হাজার ২০০ টাকা। এই তৎপরতা চলমান। শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, ছাত্ররাজনীতিমুক্ত বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রগতিশীল রাজনীতিতে বিশ্বাসীদের দমিয়ে রেখে অন্ধকার রাজনীতি শিক্ষার্থীদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বুয়েটে শিবিরের কার্যক্রম চলছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম। এটি জানার পরও সব শেষ সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। উল্টো কোনো প্রমাণ ছাড়াই শিবিরের সাবেক সভাপতির বক্তব্য দেওয়ায় এর প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে এক শিক্ষার্থীকে। অর্থাৎ শিবিরের সাবেক সভাপতির বক্তব্যও তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না বা আমলে নিতে চাইছেন না।
সম্প্রতি বুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক আউটলুক ই-মেইলে পাঠানো হয়েছে হিজবুত তাহরিরের ই-মেইল। প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট কিছু শিক্ষার্থীর প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইলে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার বার্তা পাঠানো হলেও সর্বশেষ তথ্য অনুসারে সব শিক্ষার্থীর রোল নম্বর ধরে একাধারে প্রেরণ করা হয় এসব ই-মেইল। কিন্তু বর্তমান আন্দোলনকারীরা এর কোনো প্রতিবাদ করেননি।
এদিকে এক রিট আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত ১ এপ্রিল বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে ২০১৯ সালে জারি করা ওই প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের আদেশের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘বুয়েটে এখন থেকে ছাত্ররাজনীতি করায় আর কোনো বাধা থাকল না।’
এদিকে বুয়েটের উপাচার্য ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদার বলেছেন, ‘আদালত যা বলবেন, তা আমাদের মানতে হবে। আদালতের আদেশ শিরোধার্য।’ তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হলে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রশাসনকে পারস্পরিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে এবং এ জন্য আলোচনা জরুরি। জাতি এখন ইতিবাচক ফলাফল দেখার অপেক্ষায়।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ‘বীজের গুণগত মান ও বীজ স্বাস্থ্য’ শীর্ষক ৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর গোলাম আলী ফকির বীজ রোগতত্ত্ব কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে ওই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বাকৃবি ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)-এর যৌথ অর্থায়নে ওই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে বিএসডিসির ২০ জন কর্মকর্তা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, কোষাধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির, বিএডিসির গবেষণা শাখার প্রধান বীজ প্রযুক্তিবিদ ড. মো. নাজমুল ইসলাম এবং উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. ইসলাম হামিম।
প্রফেসর গোলাম আলী ফকির বীজ রোগতত্ত্ব কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. পূর্ণিমা দে। স্বাগত বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কোর্স সমন্বয়কারী কৃষিবিদ ড. মো. মাহমুদুল হাসান চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, কৃষিতে বীজের গুরুত্ব অপরিসীম। কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার ক্ষেত্রে বিএডিসির কর্মকর্তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিএডিসি দীর্ঘদিন ধরে উন্নত ও মানসম্মত বীজের জাত উদ্ভাবন ও সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। তবে বীজের স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা ও কার্যক্রম আরও জোরদার করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ভবিষ্যতে এই গবেষণাগারের সঙ্গে বিএডিসি এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের যৌথ কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হবে।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু নিজের বিচারকাজ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের আবেদন জানিয়েছেন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ তার আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরীর মাধ্যমে তিনি এই আবেদন পেশ করেন। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেল জানিয়েছে, এ বিষয়ে শুনানির পর পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া হবে।
এদিন ইনুর বিরুদ্ধে ষষ্ঠ দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকালে তাকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় এবং তার উপস্থিতিতেই সাক্ষীরা সাক্ষ্য প্রদান করেন। পঞ্চম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন কাশিমপুর কারাগার-২ এর সাবেক ডেপুটি জেলার সাখাওয়াত হোসেন। এছাড়া মামলার চতুর্থ সাক্ষী ও সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের উপপরিদর্শক শাহেদ জোবায়ের লরেন্স তার অবশিষ্ট সাক্ষ্য প্রদান করেন এবং তাকে জেরা করেন ইনুর আইনজীবী। এর আগে মামলার প্রথম সাক্ষী মো. রাইসুল হক ইনুকে হামলার প্রত্যক্ষ নির্দেশদাতা হিসেবে চিহ্নিত করে তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট কুষ্টিয়ায় ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো, উসকানি ও ষড়যন্ত্রসহ মোট আটটি অভিযোগ আনা হয়েছে হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় ছয়জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হন। গত ২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেওয়া হয় এবং ৩০ নভেম্বর প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের সংশয়ের কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, কোনো প্রার্থী যদি ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন, তবে তা তার একান্তই নিজস্ব মতামত, এর সঙ্গে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক নেই। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের বিকেএমইএ ভবনে জেলা পুলিশ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের কাছে ছয়টি টহল গাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কোনো প্রার্থী কেন নির্বাচনে অংশ নেবেন না, তা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। নিরাপত্তার অজুহাতে যিনি সরে দাঁড়িয়েছেন, তিনি আসলে কী ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। তবে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে এমন স্বাভাবিক পরিবেশে কেউ নিরাপত্তাহীনতার কথা বললে সেটি তার ব্যক্তিগত অনুভূতির বিষয় হতে পারে; কিন্তু সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। এ সময় তিনি সাম্প্রতিক হামলায় আহত শরিফ ওসমান হাদির সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
বিকেএমইএর পক্ষ থেকে পুলিশকে ছয়টি লেগুনা ভ্যান উপহার দেওয়ার উদ্যোগকে প্রশংসনীয় ও দৃষ্টান্তমূলক বলে অভিহিত করেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় পুলিশের অনেক যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এমতাবস্থায় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর এমন সহায়তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের গতিশীলতা বাড়াবে এবং দায়িত্ব পালনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এবং বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা বেশ জটিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার মস্তিষ্ক থেকে গুলির অবশিষ্টাংশ বের করতে দ্রুত আরেকটি অস্ত্রোপচার জরুরি; অন্যথায় তার অবস্থার আরও অবনতি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। তবে সমস্যা হলো, তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা এখনো এই জটিল অস্ত্রোপচারের ধকল সামলানোর মতো প্রস্তুত নয়। যদিও তার মস্তিষ্ক ছাড়া শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সক্রিয় রয়েছে বলে জানা গেছে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য হাদিকে যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরের বিষয়ে আলোচনা হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ভ্রমণ তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই আপাতত সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালেই তার পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এবং পরিবারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। বর্তমানে তার দুই ভাই ওমর ফারুক ও আবু বকর সিদ্দিক চিকিৎসার দেখভালের জন্য তার সঙ্গে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন হাদি। দেশে প্রাথমিক অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসার পর গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের তত্ত্বাবধানে ও অর্থায়নে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।
চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র (আইভ্যাক) আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার পর থেকে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইভ্যাক বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে আজ দুপুরের পর আর কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে না। তবে যেসব আবেদনকারীর আজকের স্লট বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নির্ধারিত ছিল, তাদের পরবর্তীতে নতুন তারিখ ও সময় নির্ধারণ করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
মূলত, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণকারী মোর্চা ‘জুলাই ঐক্য’-এর ঘোষিত ‘মার্চ টু হাইকমিশন’ কর্মসূচির প্রেক্ষাপটেই এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের দেশে ফেরত পাঠানো এবং ভারতীয় প্রক্সি রাজনৈতিক দল ও মিডিয়ার কথিত ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আজ বিকেল ৩টায় রাজধানীর রামপুরা ব্রিজ থেকে ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে এই পদযাত্রা বা মার্চ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
শ্রমশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে দালাল চক্র বা মধ্যস্বত্বভোগীদের সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, পুরো খাতটিই এখন দালালদের নিয়ন্ত্রণে, যার ফলে পদে পদে প্রতারণার শিকার হয়ে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, শ্রমশক্তি রপ্তানি খাতকে দালালমুক্ত করতে না পারলে এই খাতের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। দালালদের দৌরাত্ম্য কমিয়ে বিদেশগামীদের নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষায় জোর দেন তিনি।
বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর অপার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তারুণ্যের সংকট চললেও বাংলাদেশ ‘তারুণ্যের খনি’। তিনি এই জনশক্তিকে সোনার চেয়েও দামি সম্পদ হিসেবে অভিহিত করেন। তার মতে, এত বিপুল সংখ্যক তরুণ জনশক্তি আর কোথাও নেই, তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে প্রয়োজনে বাংলাদেশের কাছেই আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলও উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার বক্তব্যে প্রবাসীদের কল্যাণে এবং অভিবাসন প্রক্রিয়া সহজ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত পিস্তল উদ্ধার এবং ঘটনার মূল সন্দেহভাজন শুটার ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা-মাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। মঙ্গলবার ভোরে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের হাসনাবাদ হাউজিং এলাকা থেকে ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০। পরবর্তীতে তাদের ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অন্যদিকে, র্যাব-১১ এর একটি দল নরসিংদী সদর থানার তরুয়া বিলের পানির নিচ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটিই সেই পিস্তল যা হামলার সময় ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে ফরেনসিক পরীক্ষার পরই বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে র্যাব। এছাড়া অভিযানের সময় একটি খেলনা পিস্তলও উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘটনার পর ফয়সাল আগারগাঁওয়ে তার বোনের বাসায় যান এবং আলামত নষ্টের চেষ্টা করেন। তিনি তার ব্যবহৃত একটি ফোন ফেলে দেন এবং অন্যটি মায়ের কাছে রাখেন। তদন্তে উঠে এসেছে যে, ফয়সালের বাবা-মা তাকে পালাতে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন; তার বাবা তাকে সিএনজি ভাড়া করে দেওয়াসহ আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেন। পরবর্তীতে তারা কেরাণীগঞ্জে ছোট ছেলের বাসায় গিয়ে নতুন সিম কিনে ব্যবহার শুরু করেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টনে নির্বাচনী প্রচারণা শেষে ফেরার পথে শরিফ ওসমান হাদিকে মাথায় গুলি করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমানে তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। তদন্তে জানা গেছে, সন্দেহভাজন হামলাকারী ফয়সাল নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এবং তিনি ছদ্মবেশে কিছুদিন ধরে হাদির নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত ছিলেন।
সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে লেখক, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন পেন ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ শাখা। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক সামসাদ মোর্তুজা এবং সাধারণ সম্পাদক কবি জাহানারা পারভীন এক বিবৃতিতে এই ঘটনাকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার গুরুতর লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ ডিসেম্বর কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই আনিস আলমগীরকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয় এবং পরে তাকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়। পেন বাংলাদেশ মনে করে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া একজন সাংবাদিককে এভাবে আটক ও গ্রেপ্তার দেখানো আইনের শাসনের পরিপন্থী এবং অগ্রহণযোগ্য। সংগঠনটি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, অস্পষ্ট ও কঠোর আইনের মাধ্যমে গণমাধ্যমকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে, যা সাংবাদিক মহলে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে এবং জনগুরুত্বপূর্ণ গঠনমূলক বিতর্ক বাধাগ্রস্ত করছে।
আনিস আলমগীরের দীর্ঘদিনের পেশাগত সুনাম ও বিশ্লেষণধর্মী আলোচনার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীন মতামত প্রদান সাংবাদিকতার অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনে সুরক্ষিত। অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকে দমনে নিরাপত্তা সংস্থা ও আইনের অপব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে মুক্ত গণমাধ্যমের কোনো বিকল্প নেই।
লাগেজ না খুলেই ভেতরে থাকা বোমা কিংবা বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্ত করতে দেশের বিমানবন্দরগুলোতে উচ্চপ্রযুক্তি সম্পন্ন ‘এক্সপ্লোসিভ ট্রেস ডিটেকশন’ (ইটিডি) মেশিন বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫টি অত্যাধুনিক ইটিডি মেশিন কেনা হচ্ছে, যা রাজধানী ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের ৮টি বিমানবন্দরে পর্যায়ক্রমে স্থাপন করা হবে।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, ইটিডি মূলত বিস্ফোরক উপাদানের অণু শনাক্তে সক্ষম একটি আধুনিক যন্ত্র। এই প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তাকর্মীরা একটি বিশেষ সোয়াব বা কাগজের মাধ্যমে যাত্রীর হাত, কাপড়, জুতা, ব্যাগ কিংবা ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে নমুনা সংগ্রহ করে মেশিনে প্রবেশ করান। রাসায়নিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই যন্ত্রটি টিএনটি, আরডিএক্স, পিইটিএন, নাইট্রেট ও পারঅক্সাইডভিত্তিক বিভিন্ন সামরিক ও বাণিজ্যিক বিস্ফোরকের উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারে। বিস্ফোরকের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে মেশিনের স্ক্রিনে তাৎক্ষণিক ‘অ্যালার্ম’ বেজে ওঠে।
বেবিচকের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমোডর আবু সাঈদ মেহবুব খান জানান, বিমানবন্দরগুলোর চাহিদা অনুযায়ী এই মেশিনগুলো কেনা হচ্ছে। অতীতে কিছু বিমানবন্দরে এমন মেশিন থাকলেও বর্তমানে সেগুলো অকার্যকর, তাই নতুন করে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, সাধারণ এক্স-রে স্ক্যানার বা মেটাল ডিটেক্টরে অনেক সময় ক্ষুদ্রতম বিস্ফোরক কণা ধরা পড়ে না, যা ইটিডি সহজেই শনাক্ত করতে সক্ষম।
কর্মকর্তারা আরও জানান, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়াও চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজার বিমানবন্দরে যাত্রী ও ফ্লাইটের চাপ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে এই প্রযুক্তির ব্যবহার জরুরি হয়ে পড়েছে। তবে যাত্রীদের যাতে ভোগান্তি না হয়, সেজন্য কেবল সন্দেহভাজন ক্ষেত্রেই এই পরীক্ষা চালানো হবে। এতে একদিকে যেমন অপ্রয়োজনীয় তল্লাশি কমবে, অন্যদিকে যাত্রীদের সময় সাশ্রয় হবে। যন্ত্রটি পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মীদের আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।
রাজধানীর গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়কটি ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’ নামে নামকরণ করা হয়েছে। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২০১১ সালে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের স্মরণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) এই সড়কের নামফলক উন্মোচন করে।
এই নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ সীমান্ত হত্যা বন্ধ চায়। আমাদের বোন ফেলানী কাঁটাতারে ঝুলন্ত অবস্থায় প্রাণ দিয়েছিল। তার ওপর সংঘটিত নিষ্ঠুরতা প্রতিদিন আমাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই সড়কের নামকরণ। একইসঙ্গে আমরা বিশ্বের বিবেকের কাছে তুলে ধরতে চাই, সীমান্ত হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ এখনও বাংলাদেশের সীমান্তে ঘটছে। এই কারণেই বর্তমান সরকার সব ধরনের সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে বিজয় দিবসে ফেলানীর নামে এই সড়কের উদ্বোধন করেছে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে নিজেদের সম্মান বজায় রাখার প্রতীক ও প্রতিবাদ হিসেবেই ফেলানীর নামে এই সড়কের (গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়ক) নামকরণ করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্বের যেকোনও দেশের সঙ্গে কথা বলার সময় আমরা আমাদের মানবিক মর্যাদা ও সম্মান বজায় রেখেই কথা বলবো। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সেই মানবিক মর্যাদার শিক্ষাই দেয়।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন পূর্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম, ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রি. জে. মঈন উদ্দীন, ডিএনসিসি সচিব মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এস এম শফিকুর রহমানসহ ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া-মোনাজাতসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছে বিএমইউ প্রশাসন। এছাড়া জাতীয় এই দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিএমইউ হাসপাতালের রোগীদের মাঝে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
এছাড়াও বিজয় দিবসকে সামনে রেখে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিএমইউ ক্যাম্পাসে স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও বৃক্ষরোপন কর্মসূচী পালন করা হয়। ওই দিন বিএমইউর বি ব্লকের শহীদ ডা. মিলন হলের সম্মুখ প্রাঙ্গণে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী পালন করা হয় এবং পরিচালক (হাসপাতাল) অফিসের উদ্যোগে বিএমইউ এর টিএসসিতে নিম, লেবু, কাঁঠালসহ ফলজ, বনজ ও ওষুধি বৃক্ষরোপণ করা হয়।
বাংলাদেশের জনগণের ঐতিহাসিক শ্রেষ্ঠ এই বিজয়ের দিনে আজ ১৬ ডিসেম্বর সকালে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মাননীয় ভারপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ এর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ডিনবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানগণ, শিক্ষক, অফিস প্রধানগণ, চিকিৎসক, ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও কর্মচারীবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
সেখানে মাননীয় ভারপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজদ, বিজয় দিবসকে জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, মহান বিজয় দিবসের অঙ্গীকার হলো একটি শোষণমুক্ত, বৈষম্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। আমার বৃটিশ শাসন ও শোষণ থেকে, পাকিস্তানী শাসন ও শোষণ থেকে মুক্ত হয়েছি কিন্তু স্বাধীনতা অর্জন এবং বিজয়ের ৫৪ বছর বছরেও আমরা জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী বাংলাদেশ আজো গড়ে তুলতে পারিনি। তাই আমাদের শপথ নিতে হবে একটি শোষণমুক্ত, বৈষম্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার।
জাতীয় এসকল কর্মসূচীতে বিএমইউ এর মাননীয় ভারপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম, প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ ইরতেকা রহমান, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) খন্দকার শফিকুল হাসান রতন, পরিচালক (মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ) মোঃ মাসুদ রানা, মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয়ের একান্ত সচিব-১ নিউরোসার্জন বিশেষজ্ঞ ডা. মোঃ রুহুল কুদ্দুস বিপ্লব, অতিরিক্ত পরিচালক (সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল) ডা. মোঃ শাহিদুল হাসান বাবুল, উপ-রেজিস্ট্রার (আইন, অতিরিক্ত দায়িত্ব) দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন আহমেদ, ডা. মোঃ আকবর হোসেন, উপ-রেজিস্ট্রার সাবিনা ইয়াসমিন, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয়ের একান্ত সচিব ২ মোঃ লুৎফর রহমান, উপ-রেজিস্ট্রার মোঃ ইয়াহিয়া খাঁন, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোঃ হুমায়ুন কবীর, সহকারী পরিচালক মাহামুদুল হাসান, সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবু নাজির, কর্মকর্তা শামীম আহম্মদ, মোঃ ইলিয়াস খাঁন, তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষ্যে ঢাকার পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরসহ বাহিনীর সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটসমূহে বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করা হয়।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: শরীফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়
দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী সকালে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরসহ সারাদেশে বিজিবির সকল স্থাপনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। প্রত্যুষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী (Major General Mohammad Ashrafuzzaman Siddiqui) অংশগ্রহণ করেন। সকাল ০৭:৪৫ ঘটিকায় বিজিবি মহাপরিচালক মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পিলখানাস্থ ‘সীমান্ত গৌরব’-এ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় বিজিবি’র একটি সুসজ্জিত চৌকষ দল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে পিলখানাসহ সারাদেশে বিজিবি’র সকল ইউনিটে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। পিলখানায় আয়োজিত কেন্দ্রীয় প্রীতিভোজে বিজিবি মহাপরিচালক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ সকল ইউনিটের মসজিদে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য, জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং বাহিনীর উত্তরোত্তর অগ্রগতি ও একাত্মতা কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিজিবি সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গ এবং বিজিবি’র স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য বিজিবি সিনেমা হলে বিনামূল্যে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরের জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। বিজিবি পরিচালিত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন ক্রীড়া অনুষ্ঠান যেমন-টি টুয়েন্টি ক্রিকেট, ফুটবল, কাবাডি ও হা-ডুডু টুর্নামেন্ট এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়া সকাল ১১.০০ টা থেকে বিকেল ০৪.০০ টা পর্যন্ত হাতিরঝিলে অ্যাস্ফিথিয়েটারে বিজিবি অর্কেষ্টা এবং ব্যান্ডদল কর্তৃক সংগীত ও বাদ্য পরিবেশন করা হয়।
দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তরসহ সারাদেশে বিজিবি’র বিভিন্ন স্থাপনায় বর্ণিল আলোকসজ্জা করা হয় এবং সকল ইউনিটের গেইট ও গেইট সংলগ্ন সড়কের আশেপাশের এলাকা ও স্থাপনাসমূহে জাতীয় পতাকা, বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করা হয়।
নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি) মহান বিজয় দিবস উদ্যাপিত হয়েছে। ডিএসসিসির মাননীয় প্রশাসক জনাব মোঃ মাহমুদুল হাসান, এনডিসি এঁর নেতৃত্বে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ এবং সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নগর ভবনে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবস অনুষ্ঠানমালার সূচনা হয়।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ রাসেল রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজয় দিবসের সকালে নগর ভবনে আলোচনা, সাংস্কৃতিক, চিত্রাঙ্কন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ডিএসসিসি পরিচালিত সংগীত ও নৃত্য শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে উপর্যুক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ডিএসসিসি প্রশাসক উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রশাসক একাত্তর ও চব্বিশের বীর শহিদগণের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, "বাঙালি জাতি মুক্তিকামী-বীরের জাতি, যখনই অন্যায় হয়েছে, বৈষম্য হয়েছে, জুলুম হয়েছে, তখনই বিপ্লব হয়েছে, বিজয় অর্জিত হয়েছে।" অতীতে বার বার বিজয় অর্জিত হলেও বিজয়ের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল সম্পূর্ণভাবে ভোগ করা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, "বৈষম্যহীন ও বাসযোগ্য নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে একাত্তর ও চব্বিশের ফল ঘরে তুলতে প্রত্যেককে নাগরিক দায়িত্ব পালনের শপথ নিতে হবে।"
এছাড়া, শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য এবং জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে ডিএসসিসি পরিচালিত ৬ টি মসজিদ ও মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি, ডিএসসিসি পরিচালিত মহানগর জেনারেল হাসপাতালে রোগীদের দুপুরে প্রীতিভোজ পরিবেশন করা হয়েছে। এছাড়া, নগর ভবন জাদুঘর ও কলাবাগান শিশুপার্ক জনসাধারণের জন্য দিনব্যাপী বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ রাখা হয়৷