ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক কোন সংগঠনের সন্ত্রাসী মদদ নেই বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার সাসেক-২ প্রকল্পের আওতায় এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়কে নির্মিত একটি রেলওভারপাস, সাতটি ওভারপাস ও একটি সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্তকরণ অনুষ্ঠানে সচিবালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।
বান্দরবানের রুমায় গত ২ এপ্রিল রাতে সোনালী ব্যাংকে হামলা চালায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। ওই দিন ব্যাংক থেকে তারা কোনো টাকা নিতে না পারলেও পরের দিন দুপুরে থানচিতে সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে হামলা চালিয়ে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা লুট করে সংগঠনটি।
কেএনএফের সঙ্গে ভারতের মিজোরামের সংযোগ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মিজোরামের সঙ্গে সম্পর্ক আছে ঠিক জানি না। সীমান্ত থেকে কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন থেকে মদদ দেয়ার সুযোগ নেই। তদন্ত চলছে। সব সত্যই বেরিয়ে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাহাড়ে যৌথ অভিযান চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা। এখানে গোটা পাহাড় অশান্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
‘চীন ও ভারত সীমান্তের কাছে চিন স্টেট নামে একটা স্টেট আছে। ওখানে কেএনএফের একটি ঘাঁটি আছে বলে মনে করা হয়। তাদের সাথে আগে আলোচনা হলেও কেন তারা বিদ্রোহ করল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
কেএনএফ সংক্ষুব্ধ হয়ে হামলা চালাতে পারে মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘যদি বাইরের কারও সাপোর্ট থাকে, ইউপিডিএফ, সন্তু লারমার জনসংহতি সমিতি বললে আলাদা কথা। এই ক্ষুদ্র বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠীকে কে সমর্থন দেবে? সংক্ষুব্ধ হয়ে তারা এটি করতে পারে।’
ঈদযাত্রা নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘গতবারের ন্যায় এবারের ঈদযাত্রাও স্বস্তিদায়ক। সড়কে গাড়ির চাপ আছে, তবে যানজট থাকবে না।’
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি বলেছেন, বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকার নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনার পক্ষে অবস্থান নেয়নি ভারত। এটিকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য ছোটখাটো ধাক্কা হিসেবেই দেখছেন তারা।
গতকাল বুধবার কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের সভাপতিত্বে পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মিসরি নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দল বা সরকারের সঙ্গে জোটবদ্ধ না হয়ে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে ভারতের মনোভাবের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মিসরি বলেন, শেখ হাসিনা তার মতামত প্রকাশের জন্য 'বেসরকারি যোগাযোগের চ্যানেল' ব্যবহার করছেন। ভারত তাকে তার মাটি থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য কোনো প্ল্যাটফর্ম বা সুবিধা দেয়নি।
অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে ভারতের দীর্ঘদিনের নীতির কথা তুলে ধরেন তিনি।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে শেখ হাসিনার ভিডিও বার্তা প্রচারে পরই এই ব্রিফিং করা হয়।
মিসরি কমিটিকে জানান, এ সপ্তাহের শুরুতে ঢাকা সফরের সময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ‘কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল’ বা নির্দিষ্ট সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ককে ভারত সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয় এবং বর্তমান সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক থাকবে।
পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফরেন অফিস কনসালটেশনসহ বেশ কয়েকটি বৈঠক করতে সোমবার ঢাকায় আসেন বিক্রম মিসরি।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈঠক এবং পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর তিনি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে 'ইতিবাচক, গঠনমূলক ও পারস্পরিক লাভজনক' হিসেবে দেখতে চান বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, জনগণের স্বার্থে এই পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক অব্যাহত না রাখার কোনো কারণ নেই।
এসব বৈঠকে মিসরি একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থনের কথা তুলে ধরেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জোর দিয়ে বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মূল অংশীদার হলো জনগণ।
তিনি বলেন, ভারতের উন্নয়ন সহযোগিতা এবং সংযোগ, বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশের সঙ্গে বহুমুখী সম্পৃক্ততা সবই বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণের জন্য।
সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কোঅপারেশন অনকোলজির (এসএফও) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যুক্ত হন তিনি। এ সময় তিনি সার্ক ফেডারেশন অব অনকোলজিস্টসের (এসএফও) প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. এবিএমএফ করিমের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেন।
এ সময় নিজের ছোটভাই বিশিষ্ট লেখক, সাংবাদিক, সমালোচক ও খ্যাতনামা টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে স্মরণ করেন অধ্যাপক ইউনূস। ভাইয়ের ক্যান্সার শনাক্ত ও চিকিৎসার সময় তাঁর পুরো পরিবারকে কী ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল সেসব অভিজ্ঞতার কথা জানান তিনি। সেসময় ডা. করিম কীভাবে তাঁর চিকিৎসায় সাহায্য করেছিলেন সে কথা উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘ক্যানসার চিকিৎসায় যে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন, তা এখনো আমরা পাচ্ছি না। সার্ক যে ক্যান্সার চিকিৎসাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে এটা অত্যন্ত জরুরি ও অনুপ্রেরণামূলক।’
দক্ষিণ-এশিয়ার দেশগুলো সার্ককে সক্রিয় করে তোলার মধ্য দিয়ে লাভবান হবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সার্ক আমার কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণের পরপরই সার্ককে সক্রিয় করার বিষয়ে বলেছি। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার কিছু ইস্যুর জন্য সার্ক সক্রিয় হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, আমি মনে করি, দুটি দেশের মধ্যেকার সমস্যা অন্য দেশগুলোকে প্রভাবিত করা উচিত না। প্রতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার নেতারা যদি সাক্ষাৎ করেন, একসঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন তাহলে গোটা বিশ্বের কাছে বার্তা যায় যে আমরা একসঙ্গে আছি। এটা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে বিশ্বের কাছে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করবে এবং এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।’
অধ্যাপক ইউনূস আজকের কনফারেন্সের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে সার্ক সক্রিয় করতে আবারও আহ্বান জানান।
স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক ৫ সংসদ সদস্যের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের নতুন কমিশনের প্রথম দিনেই সাবেক ৫ সংসদ সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের বিদেশ যাত্রার এ নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত হয়।
সাবেক এসব এমপি হলেন- ফেনী-১ আসনের আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ভোলা-৩ আসনের নূর নবী চৌধুরী শাওন, হবিগঞ্জ -৩ আসনের আবু জাহির, নোয়াখালী -১ আসনের এইচ এম ইব্রাহিম এবং লক্ষ্মীপুর-২ আসনের নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন।
এর আগে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুদকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় সদ্য পদত্যাগ করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনকে। কমিশনার হিসেবে তার সঙ্গী রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহ্সান ফরিদ।
গতকাল বুধবার বিকালে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়ে দুদক চেয়ারম্যান জানান, আগামী সাতদিনের মধ্যে নতুন কমিশনের স্থাবর-অস্থাবর এবং আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করা হবে।
বাংলাদেশের কিংবদন্তি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পাপিয়া সারোয়ার রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
তার স্বামী সারোয়ার আলম গণমাধ্যমকে জানান, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
তিন বছর ধরে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে চলা একুশে পদকপ্রাপ্ত এই সংগীতশিল্পীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল বুধবার তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
মৃত্যুকালে তিনি স্বামী ও দুই মেয়ে জারা সারোয়ার ও জিশা সরওয়ার পাপিয়াকে রেখে গেছেন।
বরিশালের এক সংগীতপ্রেমী পরিবারে জন্ম নেওয়া পাপিয়া সরওয়ার ভারত সরকারের বৃত্তির মাধ্যমে ১৯৭৩ সালে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রসংগীত শেখেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনিই প্রথম এই বৃত্তি লাভ করেন।
এর আগে তিনি ১৯৬৬ সালে ছায়ানটে প্রখ্যাত গুরু আতিকুল ইসলাম, ওয়াহিদুল হক, সন্জীদা খাতুন এবং জাহিদুর রহিমের কাছ থেকে তার প্রাথমিক সংগীত প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। পরে বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টসে (বাফা) নিয়মিত ছিলেন।
পাপিয়া সারোয়ার তার বর্ণাঢ্য সংগীত জীবনে রবীন্দ্রসংগীতে দক্ষতার জন্য ব্যাপক প্রশংসা এবং অসংখ্য স্বীকৃতি অর্জন করেছেন।
১৯৯৬ সালে, তিনি উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষার্থীদের মাঝে তার জ্ঞান বিতরণের জন্য গীতোসুধা নামে একটি সংগীত দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তার গাওয়া আধুনিক গান 'নাই টেলিফোন নে রে পিঁও নেই রে টেলিগ্রাম' বাংলা সংগীতপ্রেমীদের মাঝে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
এছাড়া নিয়মিত সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে টেলিভিশন জগতে সুপরিচিত ও প্রিয় ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন তিনি।
দেশের সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য পাপিয়া সারোয়ার ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার, ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ এবং ২০২১ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাদ দেওয়ায় সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটে বড় ধরনের সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত ৮ আগস্ট ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেক উন্নয়ন প্রকল্পকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে তা ছেঁটে ছোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, একনেকের সভায় এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে নেওয়া অনেক উন্নয়ন প্রকল্প ব্যয় অনুযায়ী ভালো ফল বয়ে আনবে বলে মনে হয় না।
একনেক সভা শেষে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর তুলনায় উন্নয়ন বাজেট ছোট হবে।’
চলতি অর্থবছরের চার মাসে রেকর্ড সর্বনিম্ন ৮ শতাংশ উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে। এই নিম্ন বাস্তবায়ন বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রেও হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, তাদের ক্ষেত্রে এ হার ১২-১৩ শতাংশ।
সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের গতি ধীর রয়েছে। যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) সর্বনিম্ন বাস্তবায়নের হার।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই থেকে অক্টোবর) এডিপি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ, যা বিগত বছরগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন।
সংস্থাটির তথ্য বলছে, গত বছরের একই সময়ে বাস্তবায়নের হার ছিল ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। বিশেষ করে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে সরকার।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম একনেক সভায় উন্নয়ন বাজেট কমানোর সিদ্ধান্ত হয়।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, গৃহীত অনেক প্রকল্প রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ব্যয়ের তুলনায় ভালো ফল বয়ে আনবে না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়নি এগুলো কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে। তাই আমরা সেগুলো বাদ দিয়েছি। সাধারণত সংশোধিত উন্নয়ন বাজেট কিছুটা সংকুচিত হয়, এবার অনুপাতটা বেশি হবে।’
তিনি আরও বলেন, বিগত সময়ে একনেকে কোনো প্রকল্প অনুমোদনের পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তাদের দায়িত্ব থেকে মুক্ত হয়ে যেত।
‘তবে এবার বাস্তবায়ন পর্যায়ে দুর্নীতিমুক্ত ও অনিয়মমুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় দায়ী থাকবে’ বলে জানান তিনি।
এ কারণে চলমান প্রকল্পগুলোতে সংশোধন আনা হয়েছে। এমনকি বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোতেও তাদের সঙ্গে আলোচনা করে করা হয়েছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘ঋণদাতাদের ঋণ দেওয়ার সময় কিছু শর্ত থাকে, তাদের বোঝানোর পর সংশোধন করা হয়।’
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতিতে অনেক চলমান প্রকল্প পরিচালক পালিয়ে যাওয়ায় ধীরগতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। ফলে প্রকল্পগুলো সচল রাখতে চরম সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে সরকার।
একনেক ব্রিফিংয়ে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, মন্ত্রণালয়গুলো স্থিতিশীল অবস্থায় নেই, তাই নতুন প্রকল্প প্রণয়ন করে সেই প্রস্তুতিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুরোনো ধাঁচের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্প বাদ দিয়ে উদ্ভাবনী ও নতুন ধরনের প্রকল্পের ওপর জোর দিচ্ছে।
সূত্র জানায়, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গভীর চিন্তা-ভাবনা করে প্রকল্প প্রণয়ন করতে বলেছেন। একই সঙ্গে নির্দিষ্ট প্রকল্পটি ব্যয়ের বিপরীতে একাধিক ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে তাও নিশ্চিত করতে বলেছেন।
তারা বলেছেন, নতুন ধরনের এবং উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রস্তুত করা সময়সাপেক্ষ বিষয়।
সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন করেছে।
এডিপিতে সর্বোচ্চ ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা (বরাদ্দের ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ) বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত।
এ ছাড়া স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের প্রায় ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপি অনুমোদন দিয়েছে এনইসি।
২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং বাকি ১ লাখ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে পাওয়া যাবে।
নতুন এডিপিতে ১ হাজার ১৩৩টি বিনিয়োগ প্রকল্প, ২১টি সমীক্ষা প্রকল্প, কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ৮৭টি এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশনের ৮০টি প্রকল্পসহ মোট প্রকল্পের সংখ্যা ১ হাজার ৩২১টি।
স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১১ হাজার ৬৯৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ১ হাজার ৫৮৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
সে হিসেবে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপি নিয়ে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মোট এডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
বরাদ্দের দিক থেকে শীর্ষ ১০ খাতের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা (১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ) পেয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত, শিক্ষা খাতে ৩১ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা (১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ), আবাসন খাতে ২৪ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা (৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ), স্বাস্থ্যসেবা ২০ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা (৭ দশমিক ৮০ শতাংশ), স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন খাত ১৭ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা (৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ), কৃষি খাত ১৩ হাজার ২২০ কোটি টাকা (৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ), পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ খাতে ১১ হাজার ৮৯ কোটি টাকা, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৬ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা (২ দশমিক ৪৫ শতাংশ) এবং বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৪ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা (১ দশমিক ২৫ শতাংশ)।
শীর্ষ ১০ খাতের বিপরীতে মোট বরাদ্দ ২ লাখ ৪২ হাজার ৯৩ কোটি টাকা (মোট এডিপির ৯০ দশমিক ২৫ শতাংশ)।
২০২৫-২২ অর্থবছরের নতুন এডিপি অনুযায়ী, বরাদ্দ গ্রহণকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো স্থানীয় সরকার বিভাগ ৩৮ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা (বরাদ্দের ১৫ শতাংশ), সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ৩২ হাজার ৪২ কোটি টাকা (বরাদ্দের ১২ দশমিক ৩৯ শতাংশ), বিদ্যুৎ বিভাগ ২৯ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা (১১ দশমিক ২৮ শতাংশ), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৬ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা (৬ দশমিক ২৪ শতাংশ) এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ১৩ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা(৫ দশমিক ৩১ শতাংশ), রেলপথ মন্ত্রণালয় ১৩ হাজার ৭২৬ কোটি টাকা (৫ দশমিক ৩১ শতাংশ), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১২ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা (৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ১১ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা (৪ দশমিক ৪০ শতাংশ), নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ১০ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা (৪ দশমিক ০১ শতাংশ) এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ৮ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা (৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ)।
১০টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের বিপরীতে মোট বরাদ্দ প্রায় ১ লাখ ৮৬ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা, যা সামগ্রিক এডিপি ব্যয়ের প্রায় ৭২ শতাংশ।
সূত্র: ইউএনবি
রাজনৈতিক পালাবদলের পর ব্যাংক খাতে সেপ্টেম্বর কোয়ার্টার শেষে কোটি টাকার বেশি ডিপোজিট থাকা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ও ডিপোজিটের পরিমাণ কমে এসেছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংক খাতে কোটি টাকার বেশি ডিপোজিট থাকা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কমেছে এক হাজার ৬৫৭টি। একইসঙ্গে এসব অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট কমেছে ২৬ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন বলছে, সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এক লাখ ১৭ হাজার অ্যাকাউন্টে। জুন প্রান্তিক শেষে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল এক লাখ ১৯ হাজার।
অবশ্য জুন প্রান্তিকে ব্যাংকে কোটিপতির অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছিল প্রায় তিন হাজারের মত। মার্চ শেষে এই সংখ্যা ছিল এক লাখ ১৬ হাজার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুন প্রান্তিক শেষে কোটি টাকার ওপর এসব অ্যাকাউন্টে আমানতের পরিমাণ ছিল সাত লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা যেটি সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকায়।
কোটি টাকার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কেন কমছে জানতে চাইলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালন ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদুর রহমান বলেন, আগস্টে ক্ষমতার পালাবদলের পর অনেকেই তাদের অ্যাকাউন্টের টাকা তুলে নিয়েছে। কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট কমার এটি একটি বড় কারণ। এছাড়া ইনফ্লেশনের চাপ থাকায় পারিবারিক খরচ ও ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। এসব কারণে প্রাতিষ্ঠানিক কোটি টাকার একাউন্টেও টাকা কমতে পারে।
ব্যাংকের প্রতি আস্থাহীনতা কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট কমার একটি কারণ মন্তব্য করে এ ব্যাংকার বলেন, গত কয়েকমাস ধরে ব্যাংক খাত নিয়ে গ্রাহকেরা কিছুটা আস্থাহীনতার মধ্যে আছেন। আমরা সেগুলো ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। তবে এ ধারাবাহিকতায় ডিপোজিট কিছুটা কমতে পারে বড় একাউন্টগুলোতে। একইসঙ্গে সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগে ভালো রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে। অনেক বড় বড় ব্যাংক ডিপোজিটররা সেদিকে ঝুঁকছেন, ফলে কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট কমছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনের খাতভিত্তিক বিশ্লেষণ বলছে, একক ব্যক্তিদের পাশাপাশি কর্পোরেট কোটি টাকার বেশি ডিপোজিট থাকা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কমে এসেছে।
চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ব্যাংকখাতে একক ব্যক্তি কোটিপতিদের অ্যাকাউন্ট সংখ্যা কমেছে ৬২০টি। এছাড়া এসব অ্যাকাউন্টে ডিপোজিটের পরিমাণ কমেছে আট হাজার ৯২৩ কোটি টাকা।
একক ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্ট হিসাবে চলতি বছর সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কোটিপতিদের অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৮৬১টিতে। জুন প্রান্তিক শেষে এসব অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৩৪ হাজার ৪৮১টি।
সেপ্টেম্বর শেষে এসব অ্যাকাউন্টে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৩ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। জুন শেষে ডিপোজিটের পরিমাণ ছিল ৯২ হাজার ৩০৮ কোটি টাকা।
৫ আগস্টে সরকার পতনের পর অন্যান্য খাতের সঙ্গে ব্যাংকিং খাতেও সংস্কার শুরু হয়। কয়েকটি ব্যাংক বন্ধ হওয়ে যাওয়ার গুজবে ব্যাংকখাত থেকে আমানত তুলে নেয় গ্রাহকরা। বিশেষ করে এই গুজবের প্রভাব পড়ে শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলোর ওপর। তাছাড়া প্রভাবশালী কিছু ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন কাজে যোগ দিয়েছেন। বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে প্রথমবার কার্যালয়ে আসেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সদ্য সাবেক সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। একই সময়ে দুদক কার্যালয়ে আসেন নতুন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী। তবে নিয়োগ পাওয়া আরেক কমিশনার হাফিজ আহ্সান ফরিদ এখনো যোগ দেননি। এর আগে গত মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে দুদক চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার নিয়োগের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
এদিকে দুদকে নতুন চেয়ারম্যান ও কমিশনার যোগ দেওয়ার দিনেই তাদের আয়-সম্পদের তথ্য প্রকাশের আহ্বান জানায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সংস্থাটি এক সংবাদ বিবৃতিতে টিআইবি নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে আয় ও সম্পদ বিবরণী এবং দলীয় আনুগত্যবিষয়ক তথ্য প্রকাশের আহ্বান জানায়। বিজ্ঞপ্তিতে সুনির্দিষ্ট ৬টি তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এগুলো হচ্ছে ১. নিজের ও নিকট পরিবারের নামে-বেনামে অর্জিত আয় ও সম্পদের তথ্য ২. আয়ের বৈধ সূত্রের সঙ্গে অর্জিত আয় ও সম্পদের সামঞ্জস্যতার তথ্য ৩. নিরপেক্ষ নিরীক্ষক কর্তৃক আয় ও সম্পদ বিবরণীর যথার্থতা, পর্যাপ্ততা ও সামঞ্জস্যতা যাচাইয়ের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ৪. পেশাগত জীবনের কোনো পর্যায়ে কোনো প্রকার ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের প্রকাশিত বা অপ্রকাশিত তথ্যের বিষয়ে নিজের অবস্থান ৫. প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ দলীয় রাজনৈতিক আনুগত্যের তথ্য ও ৬. উল্লিখিত বিষয়ে কোনো প্রকার অসামঞ্জস্যতার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় তদন্তসাপেক্ষে জবাবদিহি করতে প্রস্তুত মর্মে ঘোষণা।
এছাড়াও দুদকের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের প্রতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মূল চেতনা ও নতুন বাংলাদেশের অভীষ্টের প্রতি অনঢ় থাকার পাশাপাশি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাবোধের সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকারের আহ্বান জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। এর জবাবে গতকাল বিকেলে দায়িত্ব গ্রহণের পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দুদকের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান হিসেবে তার ও কমিশনারদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করা হবে। নিজের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগ প্রসঙ্গে আবদুল মোমেন বলেন, যেসব অভিযোগ আছে, সেগুলো দুদকে এসেছিল ২০০৯ সালে। ২০০৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত এগুলো নিয়ে বহু তদন্ত হয়েছে। ২০২৩ সালে ওই সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে প্রত্যয়ন দিয়েছে দুদক। এটা কিন্তু ৫ আগস্টের পরে নয়, আরও অনেক আগে।
তিনি বলেছেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাব। দুর্নীতি একেবারে নির্মূল করতে পারব, সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া ঠিক হবে না। আমরা যেন সাধ্যমতো কাজ করতে পারি, সেটা দেখতে হবে। ন্যায়নিষ্ঠভাবে আমরা আইন মেনে কাজ করব।’ নিজের রাজনৈতিক পরিচয় প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাববে দুদকের নতুন চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি তিনটি রাজনৈতিক সরকার ও দুটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে কাজ করেছি। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো এই অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো রাজনৈতিক চরিত্র নেই। রাজনৈতিক চাওয়া নেই। এ সরকারের চাওয়া হচ্ছে জনগণকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। এখানে রাজনৈতিক সরকার প্রভাবিত করবে না। আমরাও প্রভাবমুক্ত থেকে ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাব।’
দুদকের হয়রানি, মামলাজট কমাতে পারবেন কি না জানতে চাইলে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের কাজ শুরু করতে দিন। কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করব হয়রানি কমাতে পেরেছি কি না, তদন্তে গতি আনতে পেরেছি কি না, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সহয়তা করতে পেরেছি কি না।’ ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে গত ২৯ অক্টোবর দুদক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মইনুউদ্দীন আব্দুল্লাহ, কমিশনার আছিয়া খাতুন ও কমিশনার জহুরুল হক ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এক সময় ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। ২০২১ সালের ৩ মার্চ তিনি দুদক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য তারা দুদকের দায়িত্ব পেলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেড় বছর আগেই তাদের বিদায় নিতে হয়। ১০ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগে সুপারিশ করতে সার্চ কমিটি গঠন করে সরকার।
এ কমিটির সভাপতি করা হয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হককে। সদ্য সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন ছাড়া কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম ও সবশেষ অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। বাছাই কমিটি, চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগে প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে ২ জন ব্যক্তির নামের তালিকা প্রণয়ন করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর বিধান রয়েছে। নতুন দুদক কমিশন গঠনে বাছাই কমিটি গঠনের এক মাসের মধ্যে নতুন চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার নিয়োগ হলো।
সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। নতুন এ নির্দেশনায় সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
এর আগে ডলার-সংকটের কারণে গত অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ সীমিত করে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল। বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে গত ৯ ডিসেম্বর এ-সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়, সাধারণভাবে বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হবে, বছরের সম্ভাব্য বিদেশ ভ্রমণের একটা তালিকা জানিয়ে রাখতে হবে, বিদেশ ভ্রমণের জন্য মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে, প্রধান উপদেষ্টার অফিস কাঠামো তৈরি করে দেবে এবং এর তথ্য সংরক্ষণ করবে।
আরও বলা হয়েছে, সব স্তরের সরকারি কর্মকর্তারা একাধারে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করবেন, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিব একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ সাধারণভাবে পরিহার করবেন। তবে জাতীয় স্বার্থে অনুরূপ ভ্রমণ একান্ত অপরিহার্য হলে তেমন অপরিহার্যতার বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।
মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অধীনস্থ অধিদপ্তর বা সংস্থার প্রধানরা একান্ত অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থ ছাড়া একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণে যাবেন না। বিদেশে সেমিনার বা ওয়ার্কশপ ইত্যাদিতে অংশ নিতে উপদেষ্টা ও সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশ নেওয়ার প্রস্তাবের ক্ষেত্রে আমন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ কোন পর্যায়ের কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবং অপরাপর অংশগ্রহণকারী দেশ থেকে কোন পর্যায়ের কর্মকর্তারা তাতে অংশ নিচ্ছেন সেই তথ্য জানাতে হবে।
বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব পেশ করার সময়ে ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রস্তাবিত কর্মকর্তার ওই কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টতা ও উপযোগিতার বিষয়টি উল্লেখ থাকতে হবে। কেনাকাটা, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন কিংবা ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপ্টেন্স টেস্ট- ইত্যাদির ক্ষেত্রে কেবল সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ পাঠানোর বিষয় বিবেচনা করতে হবে।
সরকারি অর্থে কম প্রয়োজনীয় ভ্রমণ অবশ্যই পরিহার করতে হবে, সব স্তরের সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশে বিনোদন ভ্রমণ পরিহার করবেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষণ ছুটিতে যাওয়া পরিহার করবেন। বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত কর্মকর্তার আগের এক বছরের বিদেশ ভ্রমণ বৃত্তান্ত সংযুক্ত করতে হবে।
ডলার-সংকটের কারণে গত অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ সীমিত করে একটি নির্দেশনা জারি করেছিল তৎকালীন সরকার।
বাংলাদেশ পুলিশের দুই নবীন অফিসার সাফল্যের সঙ্গে ‘এভিয়েশন বেসিক কোর্স-১৩’ সম্পন্ন করেছেন। তারা হলেন- এএসপি মো. মোহাইমিনুল হক ও এএসপি এইচ এম গোলাম রাব্বি।
আজ বুধবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের এআইজি ইনামুল হক সাগর।
এতে বলা হয়, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান প্রধান অতিথি হিসেবে আজ সকালে আর্মি এভিয়েশন স্কুলে নবীন বৈমানিকদের সার্টিফিকেট প্রদান করেন ও ফ্লাইং ব্রেভেট পরিয়ে দেন। বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের অধীন এভিয়েশন স্কুলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সেনা বাহিনীর ১৮ জন, নৌ বাহিনীর ৪ জন এবং বাংলাদেশ পুলিশের ২ জনসহ মোট ২৪ জন নবীন অফিসার 'এভিয়েশন বেসিক কোর্স-১৩' সম্পন্ন করেছেন।
বাংলাদেশে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা বজায় রাখতে জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমের (ইউএনসিটি) সঙ্গে আরও শক্তিশালী সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।
আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইসের নেতৃত্বে ইউএনসিটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনকে তাদের চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে ব্রিফ করেন।
এতে আরও জানানো হয়, বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় যৌথ পদক্ষেপের বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচিত হয়।
বৈঠককালে পররাষ্ট্র সচিব ইউএনসিটির কাছে বহুপক্ষবাদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশ্বনেতা হিসেবে আবির্ভাবের কথা তুলে ধরেন।
ইউএনসিটি দলে ইউএনএইচসিআর, আইওএম, ইউএন উইমেন, ইউএনএফপিএ, ইউনেস্কো, ইউনিসেফ, এফএও, ইউএনআইডিও, ইউএনওডিসি, আইএফএডি, ইউএনওপিএস, ডব্লিউএইচও, ডব্লিউএফপি, ইউএনডিপি এবং আইএলওসহ বাংলাদেশে কর্মরত জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ন্যায়ভিত্তিক মানব উন্নয়ন, টেকসই, স্বাস্থ্য ও প্রাণবন্ত পরিবেশ, অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন এবং লিঙ্গ সমতাসহ ইউএনসিটির অধীনে বাংলাদেশে পরিচালিত কৌশলগত অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরা হয়।
দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে নতুন নীতিমালা জারি করেছে সরকার। এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের উপ-পরিচালক থেকে উপ-পরিদর্শক পর্যায়ের ৫৭৯ জন কর্মকর্তা অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতিমালা, ২০২৪’ শীর্ষক নতুন এই নীতিমালা জারি করা হয়। এজন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এখন থেকে ৯ মি.মি. সেমি অটোমেটিক পিস্তল টি-৫৪ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়ে এ নীতিমালা জারি করা হয়।
নীতিমালায় বলা হয়, বাংলাদেশে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধকল্পে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নোডাল এজেন্সি হিসেবে কাজ করে। অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত জনবল নিয়মিত মাদক উদ্ধার অভিযান, মাদক চোরাকারবারিদের গ্রেপ্তার, মামলা তদন্ত ও পরিচালনার কাজে নিয়োজিত। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে শক্তিশালী করতে এবং অভিযানকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, অধিদপ্তরের বর্তমান মোট জনবল ৩ হাজার ৫৯ জন। এর মধ্যে মহাপরিচালক একজন, পরিচালক চারজন, অতিরিক্ত পরিচালক ৯ জন, উপ-পরিচালক ৯০ জন, সহকারী পরিচালক ৯৩ জন, পরিদর্শক ১৮৬ জন, উপ-পরিদর্শক ২১০ জন, সহকারী উপ-পরিদর্শক ২৮৫ জন এবং ৯২৮ জন সিপাইসহ মোট এক হাজার ৮০৬ জন কর্মকর্তা/কর্মচারী মাদক অপরাধ দমন কাজে জড়িত। এর মধ্যে মাঠ পর্যায়ে উপ-পরিচালক ৯০ জন, সহকারী পরিচালক ৯৩ জন, পরিদর্শক ১৮৬ জন, উপ-পরিদর্শক ২১০ জনসহ মোট ৫৭৯ জন কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য (প্রাধিকার অনুযায়ী) অস্ত্র সংগ্রহ করা আবশ্যক।
বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কার্যক্রমে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে তাদের অবস্থান অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
আজ বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে জাপানি রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, জাপান সরকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক- এই তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করবে।
কিমিনোরি বলেন, ‘আমরা এই তিনটি স্তম্ভের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’
তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচনী ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সংস্কার কার্যক্রমে টোকিওর ‘দৃঢ় সমর্থনের’ কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ইউনূস উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখায় জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, ‘এই সম্পর্ক সবসময় খুব শক্তিশালী ছিল।’
সরকার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি আমাদের জন্য ইতিবাচক বার্তা দেয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ থেকে জাপানি কোন কোম্পানিও চলে যায়নি। তারা এখানে থাকতে আগ্রহী।’
তিনি নিক্কেইয়ের বার্ষিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান। সেখানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখবেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, ওই সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূস জাপানের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন এবং তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাতে পারবেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার পদক্ষেপের প্রশংসা করে জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, টোকিও এই বৈঠককে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।
অধ্যাপক ইউনূস মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের গ্যারান্টিযুক্ত একটি নিরাপদ এলাকা তৈরির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন, যেখানে সংঘাত শেষ হওয়ার পর বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে তাদের বাড়িতে ফেরার পূর্বে সাময়িকভাবে পুনর্বাসিত করা যেতে পারে।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে বদলি ও রদবদলের ধারাবাহিকতায় একযোগে দেশের বিভিন্ন জেলার ১২ পুলিশ সুপারকে (এসপি) বদলি করা হয়েছে।
আজ বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব আবু সাঈদ সই করা এক প্রজ্ঞাপনে বদলির এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পুলিশ অধিদপ্তরের (টিআর) পুলিশ সুপার আবু সাইমকে রংপুরের পুলিশ সুপার হিসেবে, গাইবান্ধার কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার আবু সায়েম প্রধানকে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমকে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার জাকির হোসেনকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দীনকে বরিশালের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ অধিপ্তরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেককে গাজীপুরের পুলিশ সুপার, এন্টি টেররিজম ইউনিটের ঢাকার পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুনকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার, এপিবিএন সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলাকে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ের পুলিশ সুপার আসলাম শাহাজাদাকে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এহতেশামুল হককে ব্রাক্ষ্মণবাড়ীয়ার পুলিশ সুপার এবং এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ারকে নাওগার পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।