ঈদের ছুটিতে নাড়ির টানে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুটছে মানুষ। রেল-নৌ ও সড়কপথে ঢাকা ছাড়ছে নগরবাসী। এবার অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক নির্বিঘ্নে ও স্বস্তিতেই যাত্রাপথে মানুষ যাচ্ছেন বলে জানা যায়। গতকাল সোমবার পোশাকশ্রমিকদের ঈদের আগে শেষ কর্মদিন ছিল। ফলে বিকেলে অফিস শেষ করে পোশাকশ্রমিক থেকে শুরু করে এই সেক্টরের মানুষ ছুটে চলেছে বাড়ির পথে। এজন্য গতকাল বিকেলের পর সড়কে বেশ চাপ দেখা যায় গাড়ির। আজ মঙ্গলবার সরকারি অফিস, ব্যাংক সেক্টর থেকে শুরু করে প্রাইভেট সেক্টরের বেশির ভাগ অফিস খোলা থাকায় অনেককেই অফিস করতে হচ্ছে। যদিও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সোম ও মঙ্গলবার ঐচ্ছিক ছুটি নেওয়ার সুবিধা থাকায় অনেকেই গত বৃহিস্পতিবার শেষ অফিস করে আগেভাগেই দেশের বাড়িতে গেছেন বলে জানা যায়। তাই এবারের ঈদে অনেক আগে থেকেই বাড়ির টানে শহর ছেড়েছে নগরবাসী।
তবে গতকাল বিকেলের পর থেকে রাজধানী ঢাকা থেকে মানুষ সড়কপথে বাড়ির টানে ছোটে। এটা মূলত পোশাকশ্রমিকদের কর্মস্থল ছুটি হওয়ার জন্যই হয়েছে। এজন্য ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথ ঢাকার সাভার, গাজীপুরের দুই মহাসড়কে বেশ যানজটের খবর পাওয়া যায়। স্থানীয় প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদের ভিত্তিতে সেখানকার মানুষের যানজটে বসে থাকার খবর জানা গেছে। নৌপথ ও রেলপথে যাত্রীরা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়িতে ফিরলেও শেষ সময়ে সড়কপথের ঈদযাত্রায় যাত্রীদের কষ্ট করতে হয়েছে বলে জানা গেছে।
গাজীপুরে দুই মহাসড়কে ৭ কিলোমিটার যানজট
শিল্প-কারখানা অধ্যুষিত গাজীপুরের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান গতকাল সোমবার থেকে কর্মীদের ছুটি দিয়েছে। ফলে গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের ঢল নামে। অতিরিক্ত যাত্রী ও যানবাহনের কারণে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হয়। যাত্রীর তুলনায় যানবাহনের সংকট তো ছিলই। যানবাহনে ওঠার পরও যানজটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপে উভয় পাশে প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। যানবাহনের গতি বাড়াতে কাজ করছে জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ।
গাজীপুরের শিল্প পুলিশের সূত্রমতে, গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় পোশাক কারখানাসহ ছোট-বড় পাঁচ হাজারের বেশি শিল্প-কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার মধ্যে অধিকাংশ ছুটি হয়েছে গতকাল। বেলা ১১টার পর থেকেই কারখানাগুলোতে ছুটি শুরু হয়। শ্রমিকেরা আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন। তারা ছুটি পেয়েই গোছানো ব্যাগ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। একসঙ্গে দুটি মহাসড়কেই বেড়েছে যাত্রীদের চাপ, দেখা দিয়েছে পরিবহন সংকট ও যানজট। ধারণা করা হচ্ছে, যাত্রীর চাপ আজ রাত অবধি বাড়তে থাকবে। হঠাৎ করে যাত্রীদের ঢল নামায় যানবাহনের সংকট তৈরি হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও যানবাহন না পেয়ে নারী, শিশুসহ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
দুই মহাসড়কে যাত্রীর ঢল, মোড়ে মোড়ে যানজট
ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। এত এত যাত্রীর তুলনায় পরিবহনের সংখ্যা খুবই কম। পরিবহন সংকটে পড়ে বাস, ট্রাক, পিকআপ ও ড্রাম্প ট্রাকে করে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে দেখা যায় অনেকে।
জানা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের চন্দ্রার কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির দীর্ঘ সারি রয়েছে। কবিরপুর থেকে চন্দ্রা পার হয়ে ঈদযাত্রার গাড়িগুলো মহাসড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে। এতে মহাসড়কে চলাচলকারী দূরপাল্লার যানবাহনগুলো গতি হারাচ্ছে। গতি হারিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য যানজট তৈরি হয়েছে।
গাজীপুর ছাড়াও গাবতলী, আশুলিয়া, বাইপাল, সাভার ও নবীনগর এলাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো চন্দ্রা এলাকা পার হয়ে উত্তরবঙ্গের ২৩ জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এ পরিস্থিতি বাড়তে থাকলে ভুগতে হবে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষদের।
অপরদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে যাত্রীদের অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে স্বল্প দূরত্বের চলাচলকারী বাস, মিনিবাস, ট্রাক ও পিকআপ। এসব পরিবহনগুলো দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে ইচ্ছে মতো ভাড়া হাঁকিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। মহাসড়কের ওপর বা মহাসড়ক ঘেঁষে দাঁড়ানোর ফলে গতি হারাচ্ছে দূরপাল্লার পরিবহনগুলো। গতি হারিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে দীর্ঘ যানজটের তৈরি হয়েছে। এছাড়াও মহাসড়কের ওপর দীর্ঘ সময় গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী উঠানামা করানোর কারণেও যানজটের তৈরি হয়েছে। কোনো কোনো মোড়ের যানজট প্রায় কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হলেও যাত্রী ওঠানামা শেষে আবার মুহূর্তেই যানজট মিলিয়ে যাচ্ছে।
সাভারে ২০ কিলোমিটার যানজট
ঢাকার অদূরে সাভারের বিভিন্ন পয়েন্টে গতকাল ২০ কিলোমিটার সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ঈদে ঘরমুখো মানুষ। তবে হাইওয়ে পুলিশের দাবি, কোথাও কোথাও গাড়ির ধীরগতি রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ যানজট নেই। গতকাল বিকেলে সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, নবীনগর চন্দ্রা মহাসড়ক ও ইপিজেড-আশুলিয়া-আব্দুল্লাপুর সড়কে যানজটের চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের হেমায়েতপুর থেকে বলিয়ারপুর পর্যন্ত ২ কিলোমিটার, জাহাঙ্গীরনগর থেকে নবীনগর পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার, নবীনগর থেকে নয়ারহাট ২ কিলোমিটার ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের শ্রীপুর থেকে চন্দ্রা প্রায় ১০ কিলোমিটার এবং ইপিজেড-আশুলিয়া-আব্দুল্লাপুর সড়কে বাইপাইল থেকে নবীনগর পর্যন্ত ২ কিলোমিটার ও বাইপাইল থেকে জামগড়া ২ কিলোমিটার সড়কে যানজট দেখা দিয়েছে।
ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে স্বস্তি
এবার ঈদযাত্রায় ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশের যাত্রায় নেই কোনো যানজট। তাই যাত্রা পুরোটাই স্বস্তির বলে জানিয়েছেন চলাচলকারী যাত্রীরা। সোমবার সকাল থেকে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, সড়কগুলো প্রায় ফাঁকা। যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই তেমন যানজট। ঈদ কেন্দ্র করে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করছেন হাইওয়ে পুলিশের ১৫০ জন সদস্য।
এদিকে চলাচল আরও ঝামেলাহীন করতে মেঘনা সেতুর দ্বিতীয় টোলপ্লাজা উদ্বোধনের ফলে মোট ১২টি টোল বুথ চালু করা হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান গণমাধ্যমকে জানান, ঈদে মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে মেঘনা সেতুতে আরও ৬টি নতুন ইলেক্ট্রনিক টোল কালেকশন (ইটিসি) বুথ চালু করা হয়েছে। এ সেতুতে সবগুলো টোল কালেকশন (ইটিসি) আওতায় রয়েছে। এর ফলে এবারের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও যানজটমুক্ত হচ্ছে।
যাত্রী চাপে সদরঘাটে উপচে পড়া ভিড়
নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা দক্ষিণের জেলাগুলোতে মানুষের পৌঁছে দিতে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই লঞ্চগুলো ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। ঈদের সরকারি ছুটির দুই দিন আগে থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে রাজধানী ঢাকার একমাত্র নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। এদিন নিয়মিতভাবে চলাচলকারী লঞ্চগুলো পাশাপাশি স্পেশাল ট্রিপ দেয়া লঞ্চগুলোও পূর্ণ যাত্রী নিয়ে নির্ধারিত গন্তব্যের উদ্দ্যেশ্যে ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। কিছু দিন আগেও যেখানে যাত্রীর অভাবে নির্দিষ্ট সময়ে লঞ্চ ছাড়ত না, সেখানে এখন লঞ্চগুলো পূর্ণ যাত্রী নিয়ে ঘাট ছাড়ছে। খালি নেই লঞ্চগুলোর কেবিন, ডেকেও দেখা গেছে যাত্রীদের ভিড়। এ ছাড়া বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, হাতিয়া, পটুয়াখালীগামী যাত্রীদের অনেকেই ঈদের আগের দিনের কেবিন বুকিং দিতে এসেছেন। আবার লঞ্চের ডেকে জায়গা করে নিতেও অনেকে আগেভাগে ঘাটে চলে আসছেন।
সদরঘাটের একাধিক লঞ্চের সুপারভাইজার আর টিকিট কাউন্টার থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, লঞ্চগুলোতে ডেকের যাত্রী সংখ্যাই বেশি৷ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের পরিবারগুলোই লঞ্চে যাচ্ছে। সড়ক পথের চেয়ে তুলনামূলক ভাড়া কম ও যাত্রাপথ আরামদায়ক হওয়াতেই যাত্রী চাপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তারা। এদিকে টিকিট বিক্রির চাপে লঞ্চ-সংশ্লিষ্ট কেউ কথা বলারই সময় পাচ্ছেন না।
বরিশাল রুটে স্পেশাল সার্ভিস দেয়া লঞ্চ মানামীতেও দেখা যায় যাত্রীদের ভিড়। এ লঞ্চের সুপারভাইজার মোহাম্মদ রাশেদ জানান, ঈদের ছুটিতে আজই আমাদের প্রথম যাত্রা। সরকারি অফিস ছুটি হওয়ার আগেই যাত্রী চাপ বেড়েছে। প্রায় সবকয়টি কেবিনও বুকিং হয়ে গেছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। এদিকে ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের নিরাপত্তায় নৌ পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাজ করছেন।
ট্রেনে স্বস্তির যাত্রা
ঈদ এগিয়ে আসায় কমলাপুর রেলস্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেড়েছে। এবার স্বস্তিতেই ট্রেনে ঈদযাত্রা করছেন ঘরমুখো মানুষ। গতকাল সোমবার ষষ্ঠদিনের ঈদযাত্রায় ঢাকার কমলাপুর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে চেড়ে গেছে ট্রেন। সকালে কমলাপুর থেকে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ছাড়া বাকি সব ট্রেনই ছেড়েছে সময়মতো।
এবার ভোগান্তি ছাড়াই ঘরে বাড়ি ফিরতে পেরে খুশি যাত্রীরা। আগে ঈদযাত্রা নিয়ে আতঙ্ক থাকলেও, তা এখন অনেকটাই কেটে গেছে বলেও জানান তারা। এদিকে নাশকতার কোনো শঙ্কা না থাকলেও, যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। আগের চেয়ে ট্রেনে এবারের ঈদযাত্রা অনেক আরামের হয়েছে বলেও জানান যাত্রীরা। তবে আজ মঙ্গলবার পাল্টে যেতে পারে এই চিত্র। তখন যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ থাকবে বলে মনে করছেন রেলের কর্মকর্তারা। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই স্ট্যান্ডিং টিকেটের চাহিদা বাড়ছে বলে জানা গেছে। তাই যাত্রীদের চাপ সামলাতে চালানো হচ্ছে কয়েক জোড়া বিশেষ ট্রেন। অন্যদিকে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে তিন স্তরে টিকেট চেক করা হচ্ছে।
ঈদযাত্রার জন্য স্টেশনে আসা যাত্রীদের টিকেট চেক করে ভেতরের যেতে দেয়া হচ্ছে। টিকেট ছাড়া কেউ স্টেশনে প্রবেশ করতে পারছেন না। স্টেশনে ঢুকে প্ল্যাটফর্মের ভেতরে প্রবেশ করতে আবারো দেখাতে হচ্ছে টিকিট। সেসব টিকিট স্ক্যান করে তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পরই ভেতরে যেতে পারছেন যাত্রীরা।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আজ ৯ হাজার ৩৬১ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১১ টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
অনুমোদিত প্রকল্পে সরকারি অর্থায়ন ৬ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা, প্রকল্প ঋণ ২ হাজার ৪২৮ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৫৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৫টি, সংশোধিত প্রকল্প ২টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির ৩টি প্রকল্প রয়েছে।
একনেক চেয়ারপার্সন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে গতকাল রোববার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন।
আজকের সভায় অনুমোদিত ১১ প্রকল্পসমূহ হলো: কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন’ প্রকল্প, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘বাপবিবোর বিদ্যমান শিল্পসমৃদ্ধ এলাকার ৩৩/১১ কেভি আউটডোর উপকেন্দ্রের আধুনিকায়ন ও ক্ষমতা বর্ধন’ প্রকল্প, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘বিএমআর অব কেরু অ্যান্ড কোং (বিডি) লি. (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ স্থাপন’ প্রকল্প, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘৫টি নির্ধারিত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিলেট, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী এবং ফরিদপুর) বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকাস্থ আজিমপুর সরকারি কলোনির ভেতরে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (জোন-সি)’ প্রকল্প, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ২টি বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকা এনভায়রনমেন্টাল সাসটেনেবল ওয়াটার সাপ্লাই (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প ও ‘বান্দরবান পৌরসভা এবং বান্দরবান জেলার ৩টি উপজেলা সদরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন’ প্রকল্প, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ‘উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) (প্রস্তাবিত প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প।
সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক ইতোমধ্যে অনুমোদিত ৯টি প্রকল্প সর্ম্পকে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়। সেগুলো হলো ১. হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন (২য় সংশোধিত), ২. রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে নেসকোর আওতাধীন এলাকায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্বাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, ৩. বরগুনা জেলার ২টি পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ৪. তিন পার্বত্য জেলায় দুর্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৫. লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী পুণ্যস্নান উৎসবের অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত), ৬. তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি (২য় সংশোধিত), ৭. সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৮. কপোতাক্ষ নদ ও তৎসংলগ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত), ৯. বিদ্যালয় বহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতা কেন্দ্রিক সাক্ষরতা (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।
দেশে প্রতিদিন প্রায় ছয় কোটি ডিম উৎপাদন হলেও তা দিয়ে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
পুষ্টি নিরাপত্তা প্রসঙ্গে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমানে দেশে মাথাপিছু গড় মাংস খেতে পারে মাত্র ২০০ গ্রাম। এখনো বহু পরিবার আছে যারা সপ্তাহে বা মাসে একদিন মাংস খায়।”
গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুলে নবনির্মিত ছয় তলা একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন ও এসএসসি-২০২৫ সালের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে
বাংলাদেশ তুলনামূলক ভালো অবস্থানে আছে। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম আমাদের পুষ্টির উৎস। তাই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি পুষ্টির দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হবে।'
তিনি বলেন, ‘চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বহু তরুণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছেন। অনেকে হাত-পা-চোখ হারিয়ে আজীবন পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের ত্যাগকে স্মরণ রেখে এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে মানুষের অধিকার কখনো ক্ষুণ্ণ হবে না।'
তিনি বলেন, “বেগম রোকেয়া মুসলিম মেয়েদের জন্য স্বাধীন পরিবেশ দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন, সেখানে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালিত হতো। কেবল বই পড়া দিয়ে সবকিছু জানা সম্ভব নয়, কারণ ইতিহাস বারবার বিকৃত হয়েছে। তাই শিক্ষকদের দায়িত্ব হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের প্রকৃত শিক্ষা দিয়ে দেশ ও জাতি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।”
নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, 'স্কুলের ভেতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব নিতে হবে। ইভটিজিংয়ের কারণে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে—নতুন বাংলাদেশে এটা হতে দেওয়া যাবে না।
পরিবেশ সুরক্ষায় শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'সপ্তাহে অন্তত একদিন স্কুল ও এলাকায় পরিবেশ রক্ষায় কার্যক্রম চালাতে হবে। পাশাপাশি পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে। কারণ এগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।'
নারী শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'নারী নির্যাতন আইন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে শিক্ষক, অভিভাবক ও সমাজকে একসঙ্গে সচেতন হতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ পরিকল্পনা কমিশনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ, সমন্বিত ও সংশোধিত খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
খসড়াটি সম্পর্কে যে কোনো মতামত আগামী ২০ আগস্ট বিকেল ৪টার মধ্যে কমিশনের কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।
গতকাল (শনিবার) রাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
খসড়া সনদটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে একটি পটভূমি, সংস্কার কমিশনসমূহ গঠন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন ও এর কার্যকলাপের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি, ঐকমত্যে উপনীত হওয়া বিষয়সমূহ এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আট দফা অঙ্গীকারনামা রয়েছে।
পটভূমিতে বলা হয়েছে, '১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বর্ণিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের নীতিকে ধারণ করে সংঘটিত মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠনের আকাঙ্ক্ষা বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে তৈরি হয়েছিল, দীর্ঘ ৫৩ বছরেও তা অর্জন করা যায়নি। কারণ, শাসন ব্যবস্থায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ও সংস্কৃতি বিকাশের ধারা বারবার হোঁচট খেয়েছে।'
বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের নানা কর্মকাণ্ড উল্লেখ করে এতে আরও বলা হয়েছে, 'বিগত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন একটি দলীয় সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে ক্রমান্বয়ে অবশিষ্ট গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে জলাঞ্জলি দিয়ে অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করতে থাকে। তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও সমালোচকদের গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার হরণ, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুম, খুন, নিপীড়ন-নির্যাতন, মামলা, হামলার মাধ্যমে একটি নৈরাজ্যকর ও বিভীষিকাময় ত্রাস ও ভীতির রাজত্ব কায়েম করে।'
খসড়ায় সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে সংসদের নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোট, জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষরের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের বিধান যুক্তকরণ, জরুরি অবস্থাকালীন সময়ে নাগরিকের জীবনের অধিকার ও ৩৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত মৌলিক অধিকারসমূহ খর্ব না করা, রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হওয়ার সময় কোনো ব্যক্তি কোনো রাষ্ট্রীয়, সরকারি বা রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের পদে না থাকা, একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী পদে যত মেয়াদ বা যত বারই হোক সর্বোচ্চ ১০ বছর থাকতে পারবেন এবং প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন ব্যক্তি একইসঙ্গে দলীয় প্রধানের পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন না - এই বিধান সংবিধানে যুক্তকরণ- ইত্যাদি বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে এসেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, 'মেয়াদ অবসানের কারণে অথবা মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙ্গে যাওয়ার পরবর্তী নব্বই (৯০) দিনের মধ্যে সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধানের ৫৮ (খ) সংশোধনপূর্বক সংসদের মেয়াদ অবসান হওয়ার ১৫ দিন পূর্বে এবং মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙ্গে গেলে ভঙ্গ হওয়ার পরবর্তী পনের (১৫) দিনের মধ্যে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ হবে অনধিক ৯০ দিন। তবে দৈব-দুর্বিপাকজনিত কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আরও সর্বোচ্চ ৩০ দিন দায়িত্ব পালন করতে পারবে।'
রাষ্ট্রভাষা, নাগরিকত্ব ও সংবিধান, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত, আইনসভা, বিচার বিভাগ, নির্বাচনব্যবস্থা, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ও মৌলিক অধিকার ইত্যাদি বিষয়ের মোট ৮৪টি প্রস্তাবিত দফা উল্লেখ করে এতে সুনির্দিষ্টভাবে ঐকমত্য, ও নোট অভ ডিসেন্টসহ কোন রাজনৈতিক দলের কি মতামত সেটি উল্লেখ করা হয়েছে।
সবশেষে রয়েছে 'জুলাই জাতীয় সনদ,২০২৫' বাস্তবায়নের আট দফা অঙ্গীকারনামা।
অঙ্গীকারনামার শুরুতেই বলা হয়েছে, 'যেহেতু বাংলাদেশের সাংবিধানিক কনভেনশনের অংশ হিসেবে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে কার্যত কোনো সংবিধান না থাকা সত্ত্বেও ওই সময়ের সব কার্যাবলী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৭২ সালের সংবিধানে সন্নিবেশিত করে এর আইনি ও সাংবিধানিক বৈধতা প্রদান করা হয় এবং একইভাবে যেহেতু ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর গণঅভ্যুত্থানোত্তর সময়ে প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করে উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ, অতঃপর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি পদের দায়িত্ব গ্রহণ এবং পরবর্তীকালে প্রধান বিচারপতি পদে ফিরে যাওয়া সংক্রান্ত কোনো আইনি কাঠামো না থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহের রূপরেখা ও অঙ্গীকারের ভিত্তিতে ওই ধরনের কার্যাবলীকে বৈধতা দিয়ে পরবর্তী সংসদ গণ-অভ্যুত্থানে প্রদত্ত জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে সাংবিধানিক কনভেনশন এবং গণতন্ত্রকে সংহত করে; সুতরাং উল্লেখিত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, জনগণের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং সাংবিধানিক কনভেনশন বজায় রেখে ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে স্বাক্ষরকারীরা এই অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করবেন।'
সমন্বিত খসড়ায় থাকা অঙ্গীকারগুলো হলো-
১) জনগণের অধিকার ফিরে পাওয়া এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুদীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে হাজারো মানুষের জীবন ও রক্তদান এবং অগণিত মানুষের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতি ও ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত সুযোগ এবং তৎপ্রেক্ষিতে জন-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলন হিসেবে দীর্ঘ ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রণীত ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দলিল হিসাবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করব।
২) এই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ; তাদের অভিপ্রায়ই সর্বোচ্চ আইন এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণের অভিপ্রায় প্রতিফলিত ও প্রতিষ্ঠিত হয় রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে। এমতাবস্থায় আমরা রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহ সম্মিলিতভাবে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে জনগণের অভিপ্রায়ের সুস্পষ্ট ও সর্বোচ্চ অভিব্যক্তি হিসাবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ প্রণয়ন করেছি বিধায় এই সনদের সকল বিধান, নীতি ও সিদ্ধান্ত সংবিধানে অন্তর্ভুক্তকরণ নিশ্চিত করব এবং বিদ্যমান সংবিধান বা অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর কিছু থাকলে সেই ক্ষেত্রে এই সনদের বিধান/প্রস্তাব/সুপারিশ প্রাধান্য পাবে।
৩) এই সনদের কোনো বিধান, প্রস্তাব বা সুপারিশের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত যে কোনো প্রশ্নের চূড়ান্ত মীমাংসার এখতিয়ার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
৪) ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ ’-এর প্রতিটি বিধান, প্রস্তাব ও সুপারিশ সাংবিধানিক ও আইনগতভাবে বলবৎ হিসেবে গণ্য হবে বিধায় এর বৈধতা, প্রয়োজনীয়তা, কিংবা জারির কর্তৃত্ব সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না।
৫) ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ এ বাংলাদেশের সামগ্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা তথা সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশি ব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থার বিষয়ে যেসব প্রস্তাব/সুপারিশ লিপিবদ্ধ রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন, লিখন ও পুনর্লিখন এবং বিদ্যমান আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্তন, পরিমার্জন, লিখন, পুনর্লিখন বা নতুন আইন প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন বা বিদ্যমান বিধি ও প্রবিধির পরিবর্তন বা সংশোধন করব।
৬) আমরা ঐকমত্যে স্থির হয়েছি যে, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম এবং বিশেষত; ২০২৪ সালের অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক তথা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
৭) আমরা সম্মিলিতভাবে ঘোষণা করছি যে, রাষ্ট্র ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারগুলোকে যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনে ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।
৮) আমরা এই মর্মে একমত যে, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ এর যে সকল প্রস্তাব/সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য বলে বিবেচিত হবে সেগুলো কোনো প্রকার কালক্ষেপণ না করেই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসমূহ সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জুলাই জাতীয় সনদের আইনী বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা এবং তা বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে তার উপায় খুঁজে বের করার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞজনের সাথে ইতোমধ্যেই আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এদের মধ্যে রয়েছেন দেশ-বিদেশের সংবিধান ও আইন বিশেষজ্ঞরা।
কক্সবাজারে সরকারি সফরে এসে অসুস্থ হয়ে জরুরিভাবে ঢাকায় ফেরা সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা।
শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।
তিশা লিখেছেন, “মোস্তফা সরয়ার ফারুকী কক্সবাজারে মন্ত্রণালয়ের একটি ওয়ার্কশপে উপস্থিত থাকাকালীন সময়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি বর্তমানে হসপিটালে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন অতিরিক্ত কাজের প্রেশারের কারণে তিনি (উপদেষ্টা) অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আপাতত তিনি আশঙ্কামুক্ত। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।”
এর আগে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে চারদিনের সফরে কক্সবাজারে আসেন সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। পরদিন শনিবার (১৬ আগস্ট) রাতে অসুস্থতা অনুভব করলে সফর মুলতবি করে জরুরিভাবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, ‘কক্সবাজারে সংস্কৃতি হাব-বিষয়ক এবং জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন সংক্রান্ত কয়েকটি কর্মসূচিতে উপদেষ্টার উপস্থিত থাকার কথা ছিল। অবশিষ্ট কর্মসূচিগুলো বাতিল করা হয়েছে।’
সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে কক্সবাজারে থাকাকালীন স্থানীয় চিকিৎসকরা উপদেষ্টাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন বলে জানান তিনি।
নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে প্রায় ২৮ কেজি ওজনের একটি কোরাল মাছ। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের নামার বাজারে নিলামে ৪১ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি হয় মাছটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের জেলে মো. রাশেদ গত শুক্রবার রাতে মেঘনায় জাল ফেলেন। ভোরের দিকে তিনি লক্ষ্য করেন, জালে একটি বিশাল আকৃতির মাছ ধরা পড়েছে। জাল তুলে আনতেই দেখা যায়, একটি বিশাল কোরাল মাছ। বিশাল এই মাছ দেখে রাশেদ ও তার সঙ্গী জেলেরা বিস্মিত হয়ে পড়েন। পরে মাছটি সকালেই বাজারে নিয়ে যান।
মাছটি দেখতে বাজারে সাধারণ মানুষের ভিড় জমে যায়। বাজারের আড়তজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। অনেকে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে ভিড় করেন। পরে ইব্রাহিম মৎস্য আড়তে নিলামের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রতি কেজি ১ হাজার ৫০০ টাকা দরে মোট ৪১ হাজার ৫৫০ টাকায় মাছটি কিনে নেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম।
ইব্রাহিম মৎস্য আড়তের ম্যানেজার মো. সোহেল বলেন, রাশেদ জীবনে এই প্রথম এত বড় আকারের কোরাল মাছ ধরতে পেরেছেন। এর ওজন ছিল ২৭ কেজি ৭০০ গ্রাম। আমাদের আড়তে মাঝেমধ্যে ১৫ থেকে ২০ কেজির কোরাল আসে, কিন্তু এ বছর এত বড় কোরাল প্রথম ধরা পড়ল।
ক্রেতা মো. ইব্রাহিম বলেন, আমরা খুব কম সময় এত বড় কোরাল মাছ পাই। সচরাচর ছোট কোরাল বাজারে আসে, তবে বড় মাছের চাহিদা সবসময়ই বেশি থাকে। আশা করছি, কোরালটি ভালো দামে বিক্রি করতে পারব।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মেঘনা নদীতে মাঝে মাঝে বড় কোরাল ধরা পড়ে। তবে ২৫ কেজির ওপরে কোরাল সাধারণত খুব কম ধরা পড়ে। তাই এ ধরনের মাছ জালে উঠলেই বাজারে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।
জেলে রাশেদ বলেন, এত বড় কোরাল মাছ জীবনে কখনো ধরিনি। আল্লাহর রহমতে জালে এমন মাছ পেয়েছি। বিক্রি করে ভালো দামও পেয়েছি। এতে পরিবারে অনেকটা স্বস্তি আসবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীদের একটি নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করতে হবে। এতে দিতে হবে ১৪ ধরনের তথ্য।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের জন্য নতুন নীতিমালা জারি করা হয়েছে। এখন থেকেই বিদেশিরা আবেদন করতে পারবেন। ইতোমধ্যে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
কর্মকর্তারা বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। এতে ১৪ ধরনের তথ্য দিতে হবে।
আবেদনকারীর অবশ্যই নিজের নাম, জন্ম তারিখ, সংস্থা বা দেশের নাম, পেশা, অভিজ্ঞতা থাকলে দেশ ও বিদেশের অভিজ্ঞতা, পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্টের মেয়াদ, জাতীয়তা, বাংলাদেশে অবস্থানকালীন ঠিকানা, ইমেইল, ফোন নম্বর, আবেদন তারিখ ও স্বাক্ষর দিতে হবে।
এছাড়া আবেদনের সঙ্গে সদ্য তোলা একটি ছবি, মেয়াদ থাকা পাসপোর্টের কপি ও সিভি সংযুক্ত করতে হবে।
এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আনফ্রেল ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভোট পর্যবেক্ষণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এবারের নীতিমালায় বিদেশিদের অনুমতিদানে পুরো ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নিজের কাছে রাখা হয়েছে। আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর ব্যবস্থা নেওয়া হতো। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ইসির সুপারিশের ভিত্তিতে ভিসা ব্যবস্থা করবে মন্ত্রণালয়।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তফসিল ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অনুমতি পাওয়া ৩৩টি ব্যাংকের তালিকা প্রকাশ করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এসব ব্যাংক হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধন ফির অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ-২ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত তালিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেছেন উপসচিব মো. রফিকুল ইসলাম।
যেসব ব্যাংক আগামী হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অনুমতি পেয়েছে– সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক প্রিমিয়ার ব্যাংক ও শাহাজালাল ইসলামী ব্যাংক।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। প্রাক-নিবন্ধনের অর্থ প্রতি ৩০ দিবসের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের নির্ধারিত হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে। হজযাত্রীর বিপরীতে কোনো হজ এজেন্সিকে ঋণ দেওয়া যাবে না। হজযাত্রীর প্রাথমিক নিবন্ধন বা নিবন্ধনের অর্থ এজেন্সির নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে জমা থাকবে। এ অর্থ ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নির্ধারিত খাত ছাড়া অন্য খাতে ব্যবহার বা স্থানান্তর করা যাবে না। ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২২ (সংশোধিত)’ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান বলেছেন, সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে হজ ও ওমরাহ পালনকে সহজ এবং সুন্দর করতে আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী জাতীয় পর্যায়ে হজ ও ওমরাহ মেলা ২০২৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, গত বছরের হজ ব্যবস্থাপনা চমৎকার ছিল। হজের ব্যয় কমিয়ে আনতে ত্রিশ হাজার টাকা বিমান ভাড়া কমানো হয়েছিল। এবছর হজ যাত্রী পরিবহনে যুক্ত থাকা অন্যান্য এয়ার লাইন্সের সাথে আলোচনার মাধ্যমে আরো সাশ্রয়ী ভাড়া নির্ধারণের চেষ্টা করবো।
শুধু বিমান ভাড়া কমানো হলে হজের খরচ খুব কমে যাবে বিষয়টি এমন নয় উল্লেখ করে বিমান সচিব বলেন, হজের যে আরো চার পাঁচটি খরচের খাত রয়েছে সেটি বিবেচনায় নিতে হবে। এসময় তিনি হজ ও ওমরাহ পালনকারীদের সর্বোত্তম সেবাদানের জন্য হজ এজেন্সিগুলোর মনোযোগ আকর্ষণ করেন।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) তিন দিন ব্যাপী এই হজ ও ওমরাহ মেলার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মু: আ: আউয়াল হাওলাদার, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (হজ) ড. মো: মঞ্জুরুল হক,বিমান বাংলাদেশ এর পরিচালক (বিপনন) আশরাফুল আলম, হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার এবং শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হজ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার।
পরে প্রধান অতিথি হজ ও ওমরাহ মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নে গোয়ালখালি এলাকায় বিসিকের অধিগ্রহণকৃত ৪০ একর জমির উপর নির্মিত হবে 'ভ্যাকসিন প্লান্ট'। যেখানে ঔষধের পাশাপাশি তৈরি হবে অ্যান্টিভেনম।
প্রকল্পটি গোপালগঞ্জে বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।
শনিবার সকালে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে এসে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
এসময় তিনি জমি রেজিষ্ট্রেশন সংক্রান্ত কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
উপদেষ্টা বলেন, গোপালগঞ্জে ভ্যাকসিন প্লান্ট একদম একপাশে হয়ে গেছে। ভ্যাকসিনটা যখন তৈরি হবে তখন এটা ফ্রিজিং করে সারা বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। সেজন্য আমার এমন একটা জায়গা দরকার যেখান থেকে সহজে যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে আমরা পাঠাতে পারবো। সেক্ষেত্রে গোপালগঞ্জটা সেজন্য আমাদের জন্য উপযুক্ত হয় না।
আর এখানে যে সমস্ত টেকনোলজিস্ট, বিশেষজ্ঞ লাগবে এটা সবসময় সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। তাই এটা আমরা এখানে করার চেষ্টা করছি। এবং এখানে ৪০ একর জমি বিসিকের কাছ থেকে নিয়েছি। সে অনুযায়ী আমাদের একটা প্ল্যান্ট- এটা এখানেই হবে যাতে করে আমাদের সমস্ত ঔষধ তৈরি করতে পারি, ভ্যাকসিন আমরা এখানে তৈরি করতে পারি এবং একইসাথে আমরা চিন্তা করছি- অ্যান্টিভেনম যেটা হয়, যেটা আমাদেরকে পাশের দেশগুলো থেকে আনতে হয়। অনেক সময় সাপের ভ্যারাইটি একরকম না, কোন কোন সময় সাপের কারণে যে ভ্যাকসিনটা দেয়া হয় ওটা কখনো কাজ করে, কখনো করে না। কাজেই আমরা এখন চেষ্টা করছি- আমাদের যেহেতু অনেক সাপ আছে, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাপের বিষ এনে এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এন্টিভেনম তৈরি করা হবে। আমাদের দেশের সাপ দিয়ে দেশেই ভ্যাকসিন-অ্যান্টিভেনম তৈরি হবে।
ভ্যাকসিন প্লান্ট নির্মাণে সময় প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এটা সিস্টেমের ব্যাপার। বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে দেশের মধ্যে উৎপাদিত প্রায় ৭০ শতাংশ ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে। কোয়ালিটিতে দেশের বাইরের তুলনায় এটি কোন অংশেই কম না। এটাকে ১০০ শতাংশে উন্নিত করতে হলে আমাদের আরও কিছু মেশিনারিজ আনতে হবে। মেশিনারিজগুলো আমরা চেষ্টা করবো যত দ্রুত আনা যায়। সবকিছু মিলিয়ে এগুলো আনতে প্রায় ৬ মাসের মত লেগে যাবে।
তিনি বলেন, জমি আমাদের নামে রেজিষ্ট্রি করে দেয়া হবে, পাশের নদী শাসন করতে হবে। এরপরে মেশিনারিজ, প্ল্যান এগুলো পাশ করাতে হবে। ধরে নেন আগামী আড়াই থেকে তিন বছর লাগতে পারে। পরে উপদেষ্টা ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ইডিসিল এর গোপালগঞ্জ প্লান্টের ভ্যাকসিন ইউনিট এবং মানিকগঞ্জ প্ল্যান্ট স্থানান্তর করে এখানে আনা হবে। এজন্য ৪০ একর জায়গার সংস্থান করা হয়েছে। এসময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চট্টগ্রামে প্রক্রিয়াধীন এন্টি ভেনম প্ল্যান্টও এখানে স্থানান্তরের নির্দেশনা প্রদান করেন। এটি সামগ্রিক বিবেচনায় লাভজনক হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
এসময় ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সামাদ মৃধাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানা গেছে, ৩ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ভ্যাকসিন প্লান্টটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কারখানায় ১৫ ধরনের টিকা উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্লান্টটিতে ২০২৮ সালের মধ্যে ছয় ধরনের ও ২০২৯ সালে আরও ৯ ধরনের টিকা উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ২০৩০ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
বাংলাদেশে ধর্ম, জাতি ও গোত্রের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বক্তব্যে উৎসবে আমন্ত্রণের জন্য সেনাপ্রধান আয়োজনকারীদের ধন্যবাদ জানান।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সম্প্রীতির দেশ। শত বছর ধরে এখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পাহাড়ি, বাঙালি, উপজাতি সবাই মিলে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। এই দেশ সবার। আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। এখানে কোনো ধর্ম, জাতি বা গোত্রের মধ্যে ভেদাভেদ থাকবে না। এই দেশের প্রতিটি বিষয়ে আমাদের সমান অধিকার। সেইভাবেই আমরা সামনের সোনালি দিনগুলো দেখতে চাই।’
অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানসহ অন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সেনাপ্রধান আরও বলেন, ‘আজকের এই দিনে আমাদের অঙ্গীকার হবে— আমরা সবসময় শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখব এবং সবাই মিলে শান্তিতে বসবাস করব। সারা বাংলাদেশে স্বশস্ত্র বাহিনী মোতায়েত রয়েছে। আমরা সব সময় জনগণের পাশে থাকব এবং এক হয়ে আপনাদের সাথে কাজ করে যাব।’
তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা নিশ্চিন্তে এ দেশে বসবাস করবেন এবং আপনারা আপনারা ধর্মীয় উৎসব আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করবেন। আমরা একসঙ্গে এই আনন্দ ভাগাভাগি করব।’
সেনাপ্রধান আশাপ্রকাশ করেন, ‘জন্মাষ্টমীর এই দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। এই আদর্শের ভিত্তিতেই আমরা একসঙ্গে সুন্দরভাবে বসবাস করব।’
প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের উদ্দেশে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আপনাদের মতে চিকিৎসা খাতে ৪-৫ বিলিয়ন ডলারের একটা বাজার আছে। এই বাজার আপনারা নিতে পারেন না? কেন মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে চায়? ভারত, ব্যাংককে এমন মানুষও চিকিৎসা নিতে যায়, যারা কখনও ঢাকায় আসেনি। তারা বিরক্ত ও নিরুপায় হয়ে যায়। তাদের যাওয়া বন্ধ করেন। এখানে সেবা দিলে মানুষ কখনোই বিদেশ যাবে না। যাওয়ার কোনও কারণই নাই। এই বাজার দখল করলে আপনাদের লাভ, দেশেরও লাভ।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভনেশন সেন্টারে বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক ও বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, অনেক চিকিৎসক অনর্থক টেস্ট দেন। আমার বাসার হেল্পিং হ্যান্ড, গরিব ছেলে, ঢাকার একটি হাসপাতালে ১৪টি টেস্ট দিয়েছে। সে রাগ করে বাড়ি চলে গেছে। সেখান থেকে টেস্ট ছাড়া ভালো হয়ে ফেরত এসেছে। ওখানে তার পরিচিত ডাক্তার ছিল। এই অত্যাচার বন্ধ হয় নাই। গরিব রোগীদের অনর্থক ১৪-১৫টা টেস্ট দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করা দরকার। আরেকটা বিষয় হলো, নির্দিষ্ট ওষুধ কিনতে হবে, কেন? পৃথিবীতে কোন জায়গায় প্রাইভেট ক্লিনিকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির জন্য নির্দিষ্ট সময় থাকে ডাক্তারের। আপনারা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল, এ দেশের বড় বড় হাসপাতালের ডাক্তাররা কি ওষুধ কোম্পানির মধ্যসত্ত্বভোগী? কোন জায়গায় নামান আপনারা নিজেদের!
আইন উপদেষ্টা বলেন, আরেকটা অভিযোগ করা হয়, টেস্টের রেজাল্ট ভুল। অনেক জায়গায় অনেক ভালো রেজাল্ট হয়, আমি খারাপ জায়গার কথা বলছি। একটা জেনারেল কমপ্লেইন যেটা আমার কাছে হৃদয়বিদারক লাগে, নার্সদের ব্যবহার খারাপ। নার্সদের মন খারাপ থাকে, হাসপাতালের কর্মচারীদের মন খারাপ থাকে, তারা ক্ষিপ্ত হয়ে থাকেন, ভালো সেবা দিতে চায় না। কেন চায় না– নার্সদের বেতন ১২ হাজার টাকা, আপনারা কি কম টাকা লাভ করেন? আপনারা যারা অনেকে হাসপাতালের মালিক আছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, আপনাদের কোটি টাকার বাগানবাড়ি থাকতে পারে, নার্সদের ভালো বেতন দিতে পারেন না? নার্স যদি ১২ হাজার টাকা বেতন পায়, তাহলে কি ভালো সেবা দেবে? সে তো বিরক্ত হয়ে থাকবে। আপনারা লাভ করেন কিন্তু ন্যায্যভাবে করেন।
তিনি বলেন, আজ মানুষ ভারত-থাইল্যান্ড যেতে চায় না। আপনাদের চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা আছে। আপনারা করোনাকালে প্রমাণ করেছেন। নিজের জীবন উৎসর্গ করে সেবা দিয়েছেন। কর্মীর যদি বেতন বাড়িয়ে দেন সামান্য লাভ থেকে কতো টাকা চলে যাবে? যদি ১০০ কোটি টাকা লাভ করেন, তাহলে ১০ শতাংশ কম লাভ হয়। ১০ শতাংশ কম লাভের বিনিময় সেই কর্মী যে সেবা দেবে সেটা দিয়ে পূরণ হয়ে যায়। আপনারা এদিকে একটু লক্ষ্য রাখবেন।
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার রাতে দেওয়া এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি সকলের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন।
শুভেচ্ছা বার্তায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, জন্মাষ্টমী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পুণ্যতিথি ও গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এটি শুধু আনন্দ-উৎসবের দিন নয়, বরং ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার এক মহামিলন ক্ষেত্র।
তিনি বলেন, জন্মাষ্টমী সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য অবারিত উৎসবের প্রাঙ্গণ সৃষ্টি করে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশের সমাজ সংস্কৃতির মূল ভিত্তি হলো ধর্মীয় সম্প্রীতি। ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে। আমরা সব ধর্মের মানুষের সমঅধিকারে বিশ্বাসী। হিংসা, বিদ্বেষ, অশান্তি, হানাহানি, বৈষম্য ও অবিচার দূর করে সমাজকে শান্তিময় করে তুলতে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব এ সময় দেশবাসীর প্রতি সম্প্রীতি, শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করার আহ্বান জানান।