তীব্র গরমে নাভিশ্বাস উঠছে মানুষের। ঘরের ভেতরেও শান্তিতে থাকার জো নেই। সেখানে একে তো মশার উপদ্রব, তার ওপরে ভ্যাপসা গরম। ঈদের পর থেকে গরমের তীব্রতা বাড়ায় রাতে শান্তিতে ঘুমাতেও পারছেন না সারা দেশের মানুষ। এর মধ্যেও মাঝে মাঝে চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। এ কারণে গরমে স্বস্তি পেতে মধ্যবিত্ত চোখ রাখছেন এয়ার কন্ডিশনার বা এয়ার কুলারের দিকে। তারা খুঁজছেন আইপিএসও। আর যাদের সামর্থ্য কম তারা খুঁজছেন ফ্যান, বিশেষ করে চার্জার ফ্যান।
আর ভরা মৌসুমে চাহিদা বাড়ায় নন-ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে যেমন বাড়ছে ভিড়, তেমনই তারা হাঁকছেন চার্জার ফ্যানের ইচ্ছেমতো দাম। অন্যদিকে, ইলেকট্রনিক্সের ব্র্যান্ডের দোকান ও শো-রুমগুলোতে ঈদ পর্যন্ত নানা ধরনের অফার ছিল রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজ ও এসিতে। কোনো কোনো কোম্পানি এখনো সেসব অফার দিচ্ছে। বাকিদের অফার শেষ হওয়ার পর দামও বাড়তির দিকে।
গতকাল স্টেডিয়াম মার্কেট, বায়তুল মোকাররমের নিচতলার মার্কেটের ইলেকট্রনিক্স জোন, পল্টন, বিজয়নগর, খিলক্ষেত, উত্তরা, মোহাম্মদপুর ও নারায়ণগঞ্জের একাধিক এলাকার স্থানীয় দোকানগুলো ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বিশেষ করে, ক্রেতাদের কাছে চার্জার ফ্যান, স্ট্যান্ড ফ্যান ও সিলিং ফ্যানের চাহিদা বেশি। এর মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলেও চলে বলে চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেশি, আর দেশি ও চায়নিজ পণ্যের বিপুল সরবরাহ থাকলেও বিক্রেতারা হাঁকছেন গলাকাটা দাম।
একাধিক বাজারে ইলেকট্রনিক্স দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে চার্জার ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে। বছরের অন্যান্য সময়ে এ সময় ফ্যানের দাম আকার ও সক্ষমতা ভেদে তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে থাকে। এ ছাড়া ১২ ইঞ্চির বিভিন্ন মডেলের স্ট্যান্ড ফ্যান ৪ হাজার থেকে ৫০০০ টাকা এবং আকারভেদে সিলিং ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ থেকে ৩১০০ টাকায়। তবে পাকিস্তানি বেশ কিছু কোম্পানির ফ্যানের চাহিদা থাকায় এসব ফ্যানের দাম আরও বেশি হাঁকা হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য সময়ের তুলনায় চার্জার ফ্যানের দাম অতিরিক্ত রাখা হচ্ছে।
চার্জার ফ্যানসহ অন্যান্য ফ্যানের দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ব্যবসায়ীরাও। মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেটের মা ইলেকট্রনিক্সের স্বত্বাধিকারী শরীফ মাহমুদ বলেন, গরমে চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেড়েছে, বিক্রিও বেড়েছে। কিন্তু পাইকারিতে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরাতেও দাম কিছুটা বেড়ে গেছে।
স্টেডিয়াম মার্কেটের ব্যবসায়ী আবদুল হাই বলেন, গরম আসায় চার্জার ফ্যানের বিক্রি বাড়ছে। এ ছাড়া স্ট্যান্ড ফ্যান, সিলিং ফ্যান এগুলোও বিক্রি হচ্ছে। তবে কোম্পানি থেকে দাম বাড়ায় আমাদেরকেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
রোজ গরমে কষ্ট বাড়ায় বাসায় ব্যবহারের জন্য রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকার মার্কেটে চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছিলেন গৃহিণী মাহমুদা বেগম। তিনি বলেন, এই গরমে একটা চার্জার ফ্যান দরকার, তাই কিনতে আসা। কিন্তু দাম এত বেশি যে, কিনব কি না, সে চিন্তা করছি।
ক্রেতা নাসিম হোসেন বলেন, প্রত্যেকটা পণ্যেরই দাম বেড়ে গেছে। এত দামে কেনা তো আসলে আমাদের মতো নির্ধারিত আয়ের মানুষের জন্য কষ্ট হয়ে যায়। তবুও দেখছি বাজেটের মধ্যে কিনতে পারি কি না।
চাহিদা বেড়েছে এসি-আইপিএসের
চার্জার ফ্যানের পাশাপাশি চাহিদা বেড়েছে এসি এবং আইপিএসেরও। মোহাম্মদপুরের ওয়ালটন শোরুম ঘুরে দেখা যায়, দেড় টনের এসি বিক্রি হচ্ছে ৭৪ হাজার টাকায়, এক টনের এসি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ হাজার টাকায়।
শোরুমের সেলস এক্সিকিউটিভ লুৎফর রহমান বলেন, গরমে এসির চাহিদা বেড়ে যায়। অনেক ক্রেতাই আসছেন, দেখছেন, বিক্রিও হচ্ছে। এ ছাড়া ক্রয়ের সময় কিছুটা ছাড় মিলবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে যমুনা ইলেকট্রনিকসের শোরুম ঘুরে দেখা যায়, ইনভার্টারসহ দেড় টন এসি বিক্রি হচ্ছে ৬৭ হাজার টাকায় ও এক টন এসি বিক্রি হচ্ছে ৪৯ হাজার টাকায়। অন্যদিকে ইনভার্টার ছাড়া দেড় টন এসির বিক্রয়মূল্য ৫৭ হাজার টাকা ও এক টন এসির বিক্রয় মূল্য ৪২ হাজার টাকা। এ ছাড়া যমুনায় চার্জার ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ২৪৪ টাকায় ও সিলিং ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৪০ টাকায়।
যমুনা শোরুমের সেলস এক্সিকিউটিভ আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের এসির চাহিদা তুলনামূলক ভালো, বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আশা করছি সামনে তা আরও বাড়বে।
এদিকে চাহিদার তালিকায় রয়েছে আইপিএসও। বাজারে বিভিন্ন ধরনের আইপিএসের মধ্যে বহুল পরিচিত হলো রহিম আফরোজ, লুকাস ও লুমিনাস কোম্পানির আইপিএস।
বাসাবাড়ির ব্যবহারের চাহিদা অনুযায়ী মূলত আইপিএস বিক্রি হয়ে থাকে। তিনটি ফ্যান ও পাঁচটি লাইট ব্যবহার করা যাবে এ রকম আইপিএসের সর্বনিম্ন মূল্য রহিম আফরোজ দিচ্ছে ৩২ হাজার টাকায়। ব্যবহার আরও কম হলে খরচ কম পড়বে।
অন্যদিকে, একই সক্ষমতার ব্যবহারে লুমিনাস আইপিএসের খরচ পড়বে ৩০ হাজার টাকা, যা চাহিদা অনুযায়ী বাড়বে বা কমবে।
বায়তুল মোকাররম মার্কেটের জাহান ইলেকট্রনিকসের ম্যানেজার মো. শরিফ বলেন, ক্রেতার চাহিদার ওপরে নির্ভর করে আইপিএসের দাম। আপনি দুই ফ্যান, দুই লাইটের জন্য আইপিএস খুঁজলে যে দাম পড়বে চার লাইট, চার ফ্যান খুঁজলে স্বাভাবিকভাবেই দাম বেড়ে যাবে। সোজাসুজি বলা যায়, যেমন ব্যবহার করবেন, খরচ তেমন পড়বে। আইপিএস ক্রেতাদের চাহিদামতো বানিয়েও নেওয়া যায়। এ জন্য আগাম অর্ডার দিয়ে রাখতে হয়।
মো. শরিফ জানান, গরমে বরাবরই আইপিএসের চাহিদা থাকে। এ বছরও অনেক অর্ডার পাচ্ছি, বিক্রিও ভালো।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত পরিস্থিতি এখন মোটামুটি স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সেখানে কোনো উত্তেজনা নেই। ভারতীয় পক্ষ এখন আর কোনো কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করছে না। সীমান্তে এখন স্থিতাবস্থা বিরাজ করছে।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘আগামী মাসে মহাপরিচালক পর্যায়ে বিজিবি ও বিএসএফের বৈঠক রয়েছে। সেখানে বিষয়টি তুলে ধরা হবে। তাছাড়া সীমান্ত নিয়ে দুদেশের মধ্যে যে অসম চুক্তিগুলো রয়েছে, সেগুলো পর্যালোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্টদের বরাবর চিঠিও দেয়া হচ্ছে,’ বলেন উপদেষ্টা।
সারের সংকট বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেশে সারের কোনো সংকট নেই। কেউ যদি সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
‘সব ডিলাররা সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করবে, তাদের ডিলারশিপ বাতিল করা হবে। তাদেরকে কোনো অবস্থায় ছাড় দেওয়া হবে না।’
মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কেপিআই স্থাপনাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ড ও অন্যান্য দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে সেখানে নিয়মিত মহড়া দিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে অপ্রয়োজনীয় ডেকোরেশন বন্ধ করতে হবে। কেননা, ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কারণে অনেক সময় অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আগামী বৃহস্পতিবার একটি সর্বদলীয় বৈঠক করা হবে। সেদিনই স্পষ্ট হবে কবে ঘোষণাপত্রটি দেওয়া হবে।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আশা করি, আগামী পরশু বৃহস্পতিবার এই বৈঠকের ভেতর দিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি দলিল প্রণীত হবে। সেদিনই স্পষ্ট হবে কবে ঘোষণাপত্রটি জারি করা হবে এবং সরকার কীভাবে ঘোষণাপত্র জারি করার বিষয়ে ভূমিকা রাখবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গেল তিন মাসে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এরপরেই রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের অবস্থান। বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) এমন তথ্য দিয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গেল ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা আসার দিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ছাড়িয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্র।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর—এই তিন মাসের প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এতে দেখা যায়, এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার বাংলাদেশে এসেছে।
এরপরেই রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটি থেকে এসেছে ৯৯ কোটি ডলার। বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসা দেশগুলোর শীর্ষে রয়েছে—সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, ইতালি, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুসারে, আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২৯ কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে সেটা ৩৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৯ কোটি ডলার।
তবে গেল কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠানো বাড়িয়ে দিয়েছেন। অক্টোবরে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশটি থেকে ৫০ কোটি ডলার এসেছে। সেপ্টেম্বরের তুলনায় যা ২৮ শতাংশ বেশি।
আর নভেম্বরে ৫১ কোটি ১৯ লাখ মার্কিন ডলার এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
গত ৫ মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার আর রফতানি বেড়েছে ২৫০ কোটি ডলার—এমন তথ্য জানিয়ে গেল ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশের ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি, এখনও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চার মাসের রিজার্ভ রয়েছে। তবে সতর্ক থাকতে হবে।’
গভর্নর বলেন, ‘টাকা-পাচার ও ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ফিরে আসায় অর্থনীতি মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে।’
প্রবাসে বাংলাদেশিদের রাজনৈতিক পরিচয়ে বিভাজন সবচেয়ে বড় সংকট বলেও মন্তব্য করেন আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘সবাইকে বাংলাদেশের পক্ষে লবিং করতে হবে, নয়তো রাজনৈতিকভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো অসম্ভব।’
তিনি বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আনতে ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ায় বছরে সরকারের ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে।
ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার দুটি সরকারি প্লট গ্রহণে অনিয়মের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি কমিশন (দুদক)।
তাদের সঙ্গে জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউকের কর্মকর্তাসহ আরও ২৩ জনকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) এক ব্রিফিংয়ে জানান, দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে।
তিনি জানান, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করে’ পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ হাসিনার নিজ নামে ১০ কাঠার প্লট এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দের অভিযোগে দুটি মামলা হয়। দ্বিতীয় মামলায় প্রধান আসামি জয়ের সঙ্গে শেখ হাসিনাকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় আবাসন সুবিধা থাকার পরও ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিজের ও ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর রোড থেকে ১০ কাঠা করে মোট ২০ কাঠার দুটি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন।
তাদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে দুদক জানায়।
গত ২৭ ডিসেম্বর শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
ইতোমধ্যে পূর্বাচল নতুন শহরে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, বোনের ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী ও টিউলিপ সিদ্দিককে আসামি করে ৪টি মামলা দায়ের করেছে কমিশন।
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দের অভিযোগে গত রোববার শেখ হাসিনাকে সহযোগী আসামি করে ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
গতকাল সোমবার রেহানা, ববি ও রূপন্তীসহ ৪৭ জনকে আসামি করে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় শেখ হাসিনা ও টিউলিপকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলমসহ তার পরিবারের নামে থাকা ৬৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) ও ১৬টি স্থাবর সম্পত্তি জব্দের (ক্রোক) আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
মঙ্গলবার দুদকের উপপরিচালক সিফফাত উদ্দীন এসব সম্পদ ক্রোকের আবেদন করেন। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানি শেষে বিচারক দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
জব্দ করতে আদেশ দেওয়া ১৬টি সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে- গুলশানের এস আলম টাওয়ারে ১০ তলা ভবন, ধানমন্ডিতে এক বিঘা জমিসহ ৬ তলা ভবন, ধানমন্ডি লেক সার্কাসে ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ জমিসহ ৪ তলা ভবন, গুলশানের ২৬৫৮ বর্গফুট জমির ওপর নির্মিত ফ্ল্যাট, গুলশান-২ এর প্লট দশমিক ৭৮৮৮ একর জমি, উত্তরা আবাসিক এলাকায় ৭ তলা ভবন, ভাটারা এলাকায় ১০৩ দশমিক ০৩ কাঠা জমির প্লটসহ বিভিন্ন এলাকায় জমি।
জামিনে কারামুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান ওরফে পিচ্চি হেলাল এবং সানজিদুল ইসলাম ইমনকে দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক।
আজ মঙ্গলবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন।
ডিবি প্রধান বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে সে জন্য আমরা বিশেষ নজর দিচ্ছি। কোনও সন্ত্রাসী আইনের আওতা থেকে রক্ষা পাবে না। সে পিচ্চি হেলাল হোক, ইমন হোক। তাদের আইনের আওতায় আনতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে, অবশ্যই তারা গ্রেপ্তার হবেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি এই দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে হত্যা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা হয়েছে। সর্বশেষ ইমনের বিরুদ্ধে এলিফ্যান্ট রোডে দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে আহতের ঘটনায় এক নম্বর আসামি করা হয়।’
রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, কোনো চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারীর ঠিকানা এ দেশে হবে না। পুলিশ তাদের কঠোর হাতে দমন করবে। রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। গেলো ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবিপুলিশ। এ সময় বন্দুক, বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন ও গুলি উদ্ধার করা হয়।’
গোয়েন্দা প্রধান বলেন, কোনো অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে আমি ব্যক্তিগতভাবে রক্তচক্ষুকে ভয় পাই না। যতদিন কাজ করবো ততদিন দেশ ও জনগণের সেবার মানসে থাকবো। অন্যায়ের কাছে মাথানত করিনি, ভবিষ্যতেও করবো না। আমার হারানোর কিছু নেই। দীর্ঘ ১৮ বছর পুলিশে যে অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করেছি, তা থেকে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা আমাদের মুক্ত করেছে। এ জন্য ছাত্র-জনতার কাছে আন্তরিক কৃতজ্ঞ। বর্তমান সরকার প্রধান শুধু বাংলাদেশে না বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তার অধীনে আমরা যেসব পুলিশ কাজ করতে পারছি এ জন্য গর্বিত।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ডিবির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টারের দক্ষিণের যুগ্ম কমিশনার সৈয়দ হারুন অর রশীদ, গোয়ন্দা উত্তর বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া, তেজগাঁও গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মিজানুর রহমান এবং ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ তালেবুর রহমান।
বাংলাদেশ অবস্থানরত অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের আবারও সতর্ক করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সরকার-নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বৈধতা অর্জন না করলে তাদের বিরুদ্ধে ফরেন অ্যাক্ট ১৯৪৬ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরীর সই করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনেক বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন বা কর্মরত রয়েছেন। এমতাবস্থায়, অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত বা কর্মরত ভিনদেশি নাগরিক যারা ইতোপূর্বে জারি করা সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে অবস্থানের বা কর্মরত থাকার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বৈধতা অর্জন করবেন না, তাদের বিরুদ্ধে দ্য ফরেন অ্যাক্ট ১৯৪৬ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশের বৃহত্তর স্বার্থে চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'আমরা মনে করি এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।’
আজ মঙ্গলবার দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক করেন নেতারা।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজনে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং প্রশাসনে আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার গঠিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনও বুধবার তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
ফখরুল বলেন, ‘তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমরা মনে করি না। যত বিলম্ব হবে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট তত গভীর হবে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে, নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই, কারণ এটি গণতন্ত্রের ভিত্তি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।
আগামীকাল বুধবার রায় ঘোষণার জন্য ধার্য রাখা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার আপিলের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য রেখে আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এছাড়াও বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে বিপুলসংখ্যক আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও অনিক আর হক। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মো. আসিফ হাসান।
আপিল শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সর্বোচ্চ আদালতকে বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠনের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া সই-স্বাক্ষর করেছেন এমন কোনো নথি প্রসিকিউশন দেখাতে পারেনি। আর টাকা কোথা থেকে এসেছে, তাও দেখাতে পারেনি। আর যে অর্থ আত্মসাৎ বলা হয়েছে তা ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত আছে এবং সেটা টাকা সেখানে অনেক বেড়েছে। এই মামলার বিচারে সংবিধান ও আইন অনুসরণ করা হয়নি। মামলাটি আইনগত, মৌখিক, এমনকি শোনা সাক্ষ্য প্রমাণহীন। সর্বোপরি অনুমান নির্ভর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই মামলায় বেগম খালেদা জিয়াসহ অন্যদের সাজা দেওয়া হয়েছে।
সিনিয়র এডভোকেট জয়নুল আবেদীনসহ শুনানিতে অংশ নেওয়া আইনজীবীরা মামলায় বেগম খালেদা জিয়া খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় বিচারিক আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার জবানবন্দি সর্বোচ্চ আদালতে শুনানিতে পড়ে শোনাতে গিয়ে কাঁদলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এই সময়ে আদালতে পিনপতন নিরাবতায় উপস্থিত অনেক আইনজীবীকেও আবেগাপ্লুত হতে দেখা যায়।
এরআগে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) গত ১১ নভেম্বর মঞ্জুর করে ১০ বছরের কারাদণ্ড স্থগিতের আদেশ দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বিভাগ।
‘শুনানিতে দুদকের আইনজীবী মো. আসিফ হাসান আদালতকে বলেছিলেন যে, 'জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা কিন্তু আত্মসাৎ হয়নি। জাস্ট ফান্ডটা মুভ হয়েছে। তবে সুদে আসলে অ্যাকাউন্টেই টাকাটা জমা আছে। কোনো টাকাটা ব্যয় হয়নি।’
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এই মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার দেওয়া ৩৪২ ধারায় বক্তব্য তুলে ধরে সর্বোচ্চ আদালতকে বলেন, কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই রাজবন্দীর জবানবন্দির প্রতিফলন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যে উঠে এসেছে। আর খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল সংক্রান্ত কোনো অনুদান গ্রহণ বা বিতরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলা হয়েছে।
বিগত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। একই বছরে ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এরপর সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।
এদিকে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছেন রাষ্ট্রপতি। তবে রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমার পরেও মামলা দুটি আইনগতভাবে লড়ার কথা জানিয়ে বিএনপির আইনজীবীরা বলেন বেগম খালেদা জিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতি তার সাজা মওকুফ করেছেন। তবে সেখানে ক্ষমার কথা আছে। খালেদা জিয়া ক্ষমার প্রতি বিশ্বাসী নন। তিনি অপরাধ করেননি। তিনি ক্ষমাও চাননি। তাই এটা আইনগতভাবে মোকাবিলা করবেন। সে অনুযায়ী আইনি লড়াই চালিয়ে যান বেগম খালেদা জিয়া।
মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের প্রয়োজনে দেশে ফেরত আসার সহজ সুযোগ দিতে মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা ইস্যু করতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুহাদা ওথমান প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন।
প্রধান উপদেষ্টা গত বছরের মে মাসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে কাজে যোগদানের সময়সীমার মধ্যে প্রবেশ করতে না পারা ১৮ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর ব্যবস্থা করতে হাইকমিশনারকে অনুরোধ করেন।
হাইকমিশনার বলেন, গত ৩১ ডিসেম্বর কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি যৌথ কারিগরি কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার একই ধরনের বৈঠক হবে।
গত অক্টোবরে ঢাকায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন যে, মালয়েশিয়া এই প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করবে যাতে পরবর্তী ব্যাচটি কাজের জন্য দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আসিয়ানের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করায় মালয়েশিয়াকে অভিনন্দন জানান এবং আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে এবং পূর্ণ সদস্য হতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রতি মালয়েশিয়ার সমর্থন কামনা করেন।
তিনি হাইকমিশনারকে জানান, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের রেজল্যুশন ৭৯/১৮২ অনুযায়ী ২০২৫ সালে জাতিসংঘে অনুষ্ঠেয় রোহিঙ্গাসংকট-বিষয়ক আসন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশ আসিয়ানের সমর্থন চায়।
প্রধান উপদেষ্টা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে নিয়োগ পাওয়া মালয়েশিয়ার নতুন হাইকমিশনারকে বাংলাদেশে আরও মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং মালয়েশিয়ার কারখানাগুলো বাংলাদেশে স্থানান্তরে কাজ করার আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমি আশা করি, আপনার বাংলাদেশে অবস্থানকালে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক পর্যায়ে নতুন ঘনিষ্ঠতায় পৌঁছাবে। বাংলাদেশ কুয়ালালামপুরে চতুর্থ দ্বিপক্ষীয় পরামর্শ ব্যবস্থায় (বিসিএম) অংশগ্রহণের জন্য মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে একটি সুবিধাজনক তারিখের অপেক্ষায় রয়েছে। বাংলাদেশ ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ‘পঞ্চম যৌথ কমিশন’ বৈঠক আয়োজনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
এ সময় এসডিজি-বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
আইন লঙ্ঘনসহ নানা অভিযোগে সৌদি আরবে অবৈধ প্রবাসীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ২ থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আবাসন, শ্রম ও সীমান্ত সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের দায়ে ১৯ হাজারের বেশি প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে সৌদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই সময়ে সৌদি থেকে বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার ১০ হাজার ৩১৯ জন প্রবাসীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে গালফ নিউজ।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, সাত দিনের অভিযানে ১৯ হাজার ৪১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে আবাসিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ১১ হাজার ৭৮৭ জনকে, নিরাপত্তা লঙ্ঘনের অভিযোগে ৪ হাজার ৩৮০ জনকে এবং ৩ হাজার ২৫১ জনকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে সৌদিতে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় ১ হাজার ২২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪২ শতাংশ ইয়েমেনি, ৫৬ শতাংশ ইথিওপিয়ান এবং ২ শতাংশ অন্যান্য দেশের নাগরিক রয়েছেন। একই সময়ে সৌদি আরব থেকে অবৈধভাবে পালিয়ে যাওয়ার সময়ে ১৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইন লঙ্ঘনকারীদের পরিবহন, আশ্রয় এবং নিয়োগের সঙ্গে জড়িত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া সৌদি আরবে বর্তমানে ৩০ হাজার ২৬১ জন পুরুষ এবং তিন হাজার ৩১৫ জন নারীসহ মোট ৩৩ হাজার ৫৭৬ জন প্রবাসী বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপের মধ্যে রয়েছেন। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ২৩ হাজার ৯৯১ জনকে ফেরত পাঠানোর আগে ভ্রমণের প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহের জন্য নিজ নিজ কূটনৈতিক মিশনে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ৩ হাজার ৮৬৯ জনকে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে চূড়ান্ত নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া১০ হাজার ৩১৯ জনকে নিজ নিজ দেশে পাঠানো হয়েছে। সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কেউ যদি কাউকে অবৈধভাবে সৌদি আরবে প্রবেশে সহযোগিতা করে এবং কাউকে পরিবহন সুবিধা ও আশ্রয় দেয়, তাহলে তাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হবে। এছাড়া ১০ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে। একই সঙ্গে তার সম্পত্তি এবং যানবাহনও বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে।
জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময় গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের গুরুত্বপূর্ণ কল রেকর্ড হাতে পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন। একই সঙ্গে গুমের ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণও মিলেছে। তবে ট্রাইব্যুনালকে তথ্য প্রদানে বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেছে প্রসিকিউটরা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটররা জানান, কল রেকর্ডের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে ব্যবহৃত পরিকল্পনা ও নির্দেশনা সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি গুমের সঙ্গে সম্পর্কিত আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। এই তথ্য-প্রমাণ তদন্ত কার্যক্রমে নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপের জন্য ব্যবহার করা হবে।
বাংলাদেশের এই ট্রাইব্যুনাল ছাড়াও অন্যান্য আন্তর্জাতিক আদালতেও যাতে এসব তথ্য-প্রমাণ গ্রহণযোগ্য হয়, সে জন্য অকাট্য করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানায় প্রসিকিউশন।
একই সঙ্গে এসব তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে তারা যেসব সংস্থায় গেছেন, সেখানে অসহযোগিতাও করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন।
এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল ভিডিও-অডিও কন্টেন্ট আমাদের হাতে এসেছে। যাচাই-বাছাই চলছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে ফরেনসিক পরীক্ষা করে তারপর জানা যাবে।
সোমবার গণমাধ্যমে ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর তানভীর জ্বোহা বলেন, ‘গুমের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। হত্যাকাণ্ডের আলামত গায়েব করতে সব ধরনের আয়োজন করা হয়েছিল।’
এদিকে জুলাই-আগস্ট গণহত্যা চলাকালীন শেখ হাসিনাসহ অন্যদের পাওয়া কল রেকর্ডের সিআইডিতে ফরেনসিক পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল গতকাল এ আদেশ দেন।
এ বিষয়ে প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া জুলাই-আগস্ট গণহত্যার সময়ে শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের গুরুত্বপূর্ণ কল রেকর্ডের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ফরেনসিক পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।’
এদিকে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় গাজীপুরের পুলিশ কনস্টেবল আকরাম এবং যাত্রাবাড়ীর এসি তানজিলকে ২০ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্য মামলায় তারা গ্রপ্তার থাকলেও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখাতে প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করে ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেয়।
সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে উত্তেজনার জেরে বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে তলব করেছে দিল্লি। এর আগে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে ডেকে সীমান্তে বেড়া নির্মাণ ও হত্যাকাণ্ডের বিষয় নিয়ে কড়া বার্তা দেয় বাংলাদেশ। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করার পরদিনই এ পদক্ষেপ নিল ভারত।
রোববার বিকেলে ঢাকায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান প্রণয় ভার্মা। সেখানে পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে তার বৈঠক হয়। বৈঠকে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার পাশাপাশি সীমান্ত হত্যার ঘটনায় পররাষ্ট্র সচিবের উদ্বেগ প্রকাশের কথা তুলে ধরা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সম্প্রতি সুনামগঞ্জে বিএসএফ কর্তৃক এক বাংলাদেশিকে হত্যার ঘটনা উল্লেখ করে ‘সীমান্ত হত্যার ঘটনার এমন পুনরাবৃত্তিতে উদ্বেগ ও হতাশা’ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্র সচিব।
বৈঠকের পর বেরিয়ে প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘অপরাধহীন সীমান্ত নিশ্চিত করা; চোরাচালান, অপরাধীদের চলাচল ও পাচারের চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে মোকাবিলার জন্য আমাদের নিরাপত্তায় সীমান্তে বেড়া নির্মাণের বিষয়ে বোঝাপড়া আমাদের রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এবং বিজিবি যোগাযোগ করছে।’
সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁর পত্নীতলা, লালমনিরহাটের তিন বিঘা করিডোরসহ পাঁচটি সীমান্ত এলাকায় শূন্যরেখার ১৫০ গজের মধ্যে ভারত বেআইনিভাবে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা চালায়। বিজিবি ও স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধে এসব কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয় ভারত।
সীমান্তের শূন্যরেখায় কোনো ধরনের প্রতিরক্ষা কাঠামো বা উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ১৯৭২ সালের মৈত্রী চুক্তি এবং ১৯৭৫ সালের নীতিমালায় উভয় পক্ষের সম্মতি প্রয়োজন। এসব নিয়ম লঙ্ঘন করে ভারতের এই উদ্যোগ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।
ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সীমান্তে অপরাধ দমনে এ ধরনের নির্মাণ প্রয়োজন। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সীমান্তে বেআইনি হত্যাকাণ্ড এবং নিয়ম ভঙ্গের পুনরাবৃত্তি দুই দেশের স্থিতিশীল সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর।