বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
সারা দেশে তীব্র গরম অব্যাহত

দাবদাহ থেকে সহজেই মুক্তি মিলছে না

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০৩

সারা দেশের মানুষ গরমে অতিষ্ঠ বলা যায়। অন্যান্য বছর এপ্রিলে গরম থাকলেও ছিল কালবৈশাখী এবং বৃষ্টিপাত। এ বছর বৈশাখ আসার কয়েকদিন আগে দেশের কিছু অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঝড় ও বৃষ্টিপাত হলেও ১৪ এপ্রিল থেকে তীব্র গরমে সারা দেশের মানুষের হাপিত্যেশ অবস্থা। ঘর থেকে বাইরে বের হলেই রোদের তীব্রতা ও বাতাসে আগুনের ফুলকির ছোঁয়া মানুষকে অস্থির করে তুলছে। দেশবাসী যেন অন্যরকম এক এপ্রিল মাস দেখছেন। এই তীব্র গরম থেকে সহজেই মুক্তি মিলছে না বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।

আজ ও আগামীকাল মঙ্গলবারও দেশে এক রকম তাপমাত্রা প্রবাহিত হবে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। এরপর তাপমাত্রা কিছুটা কমার সম্ভাবনা থাকলেও এই না যে, দাবদাহ শেষ হয়ে যাবে। সেটা হয়তো মাঝারি থেকে মৃদুতে যেতে পারে দেশের কয়েক জায়গায়। তবে দেশের বেশির ভাগ জায়গায় দাবদাহটা চলতি মাসজুড়েই বিরাজমান থাকবে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস।

অন্যান্য সময় এপ্রিলের এ সময়ে বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা থাকে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস; কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে তা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকছে। শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে গেছে। গড়ে সারা দেশের তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ছিল। গতকাল রোববারও চুয়াডাঙ্গায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে এ জেলায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির বেশি থাকছে।

তীব্র এই দাবদাহে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে এরই মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এক সপ্তাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। নতুন করে গতকাল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি)- ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনলাইনে ক্লাস এবং সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ভ্যাপসা এই গরমে সারা দেশের শ্রমজীবী মানুষ বেশি বিপাকে পড়েছে। দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষ যাদের কাজের জন্য বাইরে বের হতেই হয় তারা গরমে বেশ কষ্ট করছেন। বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ভ্যাপসা এই গরমে জনজীবনে অস্বস্তি বিরাজ করছে। তীব্র গরমে ভোগান্তিতে রয়েছেন ভ্যানচালক থেকে শুরু করে হকার, বাইক রাইডারসহ পথচারীরাও।

এদিকে অব্যাহত থাকা তীব্র দাবদাহের কারণে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সারা দেশের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। রোববার সচিবালয়ে সারা দেশের হাসপাতালের পরিচালক এবং সিভিল সার্জনদের সঙ্গে অনলাইনে আয়োজিত এক সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।

তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গরম চরম আকার ধারণ করেছে। তীব্র দাবদাহের মধ্যে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারা দেশের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা এবং একই সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে জরুরি রোগী ছাড়া ভর্তি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ এ সময় তিনি বয়স্ক ও শিশুরা যেন প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে না যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন।

নরসিংদী ও সিলেটে হিটস্ট্রোকে মৃত্যু ২

নরসিংদীর মাধবদী হিটস্ট্রোকে এক যুবক ও সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় এক রিকশাচালকের মৃত্যু হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রোববার দুপুরে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করা যুবকের নাম সাফকাত জামিল ইবান (৩২)। তিনি পেশায় একজন কাপড় ব্যবসায়ী। নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, স্ত্রী এবং তিন বছর বয়সি কন্যা সন্তানকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঈদ-পরবর্তী বেড়ানো শেষ করে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন ইবান। এ সময় তীব্র দাবদাহের ফলে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন। পরে বাড়ি ফিরেও অজ্ঞান এবং অতিরিক্ত ঘামে স্বস্তিবোধ না করায় সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান।

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মাহমুদুল কবির বাশার বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রচণ্ড রোদের মাঝে চলাফেরা এবং প্রচুর ঘামের ফলেই অজ্ঞান হয়ে যায় ইবান। তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় গরমে অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়া রিকশাচালকের নাম আবু হানিফ মিয়া (৩৪)। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান বলেন, বেলা ১১টার দিকে আবু হানিফ নামের এক রিকশাচালক দক্ষিণ সুরমা পুলিশ বক্সের সামনে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসকরা মৃত্যু ঘোষণা করেন।

পুলিশের ক‌্যাম্পের দায়িত্বরত কনস্টেবল তোফায়েল আহমদ জানান, স্থানীয়রা ওই রিকশাচালককে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার ‘হিটস্ট্রোকে’ মৃত্যু হয়েছে।

গতকালও চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল

দৈনিক বাংলার চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধির তথ্যমতে, জেলার ওপর দিয়ে কয়েক দিন ধরে মাঝারি থেকে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। রোববার বিকাল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। শনিবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, আজ বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এপ্রিল মাসজুড়ে দাবদাহ থাকতে পারে।

এদিকে প্রচণ্ড রোদে কৃষকের ফল-ফসল ও সবজি বাগান ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এ ছাড়া জেলায় বিভিন্ন সড়কের রাস্তার পিচ গলে যেতে দেখা গেছে। শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালকরা অস্থির হয়ে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষ। জেলার সকল স্কুল-কলেজ, কিন্ডারগার্টেনসহ কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে।

গরমজনিত কারণে জেলা সদর হাসপাতালে রোগী বাড়ছে। গত কয়েকদিনে শিশুসহ ১৩৭ ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহা. আতাউর রহমান বলেন, তীব্র দাবদাহে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে হাসপাতালে গরমজনিত রোগীর চাপ খুব একটা নেই। হয়ত কয়েক দিন পর থেকে বাড়তে পারে।

ঝিনাইদহে গরমে নলকূপে উঠছে না পানি

দৈনিক বাংলার ঝিনাইদহের প্রতিনিধি জানান, তীব্র গরম আর তাপদাহে জেলার ছয় উপজেলার মানুষ ও পশুপাখি হাঁসফাঁস করছে। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে পানির চমর সংকট। হস্তচালিত নলকূপ এবং শ্যালো বোরিংয়ে উঠছে না পানি। ফলে গৃহস্থালি ও মাঠে কৃষকরা উভয়ই সংকটে পড়েছে।

জানা গেছে, দুই সপ্তাহ আগেও তার সেচ পাম্পে পর্যাপ্ত পানি উঠত। এখন মাটির গভীরে মেশিন বসিয়েও পানি উঠছে না। ভারী বৃষ্টি না হলে ঝিনাইদহের হাজারও কৃষক জমিতে সেচ নিয়ে বিপাকে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন। ভুক্তভোগীরা বলছে, ইরি ধানের সেচ কাজে এবং পুকুর খনন করে মাছের চাষের জন্যে মাত্রাতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করায় পানির স্তর নেমে গেছে। খবর নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার বেশিরভাগ বিল বাঁওড়, জলাশয় ও পুকুর-নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। বিশেষ করে জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীর প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ পানি শুকিয়ে গেছে। এসব নদীর তলদেশে কৃষকেরা এখন ধানচাষ করছেন।

জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, শুধু ঝিনাইদহ জেলাতে না। জেলাজুড়ে কত হাজার বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে নলকূপ রয়েছে, তা আমাদের পরিসংখ্যানে নেই। তবে সরকারিভাবে ঝিনাইদহ জেলায় ১৭ হাজার গভীর ও ১৮ হাজার অগভীর নলকূপ রয়েছে। এসব নলকূপে পানির স্বাভাবিক অবস্থা রয়েছে। প্রকৌশলীদের পরামর্শ নিয়ে নলকূপ স্থাপন করলে শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট কমবে।

বেনাপোলে প্রচণ্ড গরমে বিপাকে হ্যান্ডেলিং শ্রমিকরা

প্রচণ্ড গরমে একটানা বেনাপোল স্থলবন্দরের হ্যান্ডেলিং শ্রমিকরা কাজ করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন দৈনিক বাংলার বেনাপোল প্রতিনিধি। ট্রাকে পণ্য ওঠানামা যেমন ধীরগতি দেখা দিয়েছে, তেমনি কমেছে তাদের দৈনিক আয়।

একটানা কাজ করতে না পারায় আয় কমেছে শ্রমিকদের। স্থলবন্দরের শ্রমিক সেলিম আহম্মেদ বলেন, ‘অন্যান্য সময় সারা দিন কাজ করে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করতাম। এখন ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বেশি আয় করা সম্ভব হচ্ছে না।’

বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারক আবু নিদাল ফয়সল বলেন, ‘গরমের কারণে শ্রমিকরা লাগাতার কাজ করতে না পারায় ভারতীয় ট্রাক থেকে পণ্য খালাস করতে অধিক সময় চলে যাচ্ছে। ট্রাকে পণ্য লোড করতেও তুলনামূলক বেশি সময় ব্যয় হচ্ছে।এতে সময় মতো পণ্য সরবরাহ করা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।’

গত বছরের তুলনায় এবার বেশি গরম পড়েছে। যশোর মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া অফিস বলেছে, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ২টা পর্যন্ত যশোরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল। কিন্তু শনিবার (২০ এপ্রিল) গত কয়েকদিনের সব রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রা দাঁড়ায় ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রোববার বেলা ১টায় তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে এসেছে।

ঢাবি, জবি ও ববিতে ক্লাস-পরীক্ষার নতুন সূচি

দৈনিক বাংলার ঢাবি, জবি ও ববির প্রতিনিধিদের তথ্যমতে, তীব্র দাবদাহের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সশরীরে ক্লাস বন্ধ রাখা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সশরীরে সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করাসহ অনলাইনে ক্লাস ও অন্যান্য কার্যক্রম চলমান রাখা এবং ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) অনলাইনে ক্লাসসহ পরীক্ষা সশরীরে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসন থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, কোনো শিক্ষার্থী ছাত্রবাস অথবা বাসার বাইরে যেতে চাইলে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

এবার ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল বন্ধ

চলমান দাবদাহের কারণে প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার আওতাধীন বিদেশি কারিকুলামে পরিচালিত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ (ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল) বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

রোববার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মোহাম্মদ আবুল মনছুর ভূঞাঁ স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা এর আওতাধীন বিদেশি কারিকুলামে পরিচালিত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সারা দেশের ওপর দিয়ে প্রবহমান তীব্র দাবদাহের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হলো।

চিঠিতে ২৬ এপ্রিল শুক্রবার ও ২৭ এপ্রিল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী ২৮ এপ্রিল রোববার থেকে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু তথা স্কুল খোলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

দাবদাহ থেকে মুক্তি মিলবে কবে

দেশের মানুষ কবে দাবদাহ থেকে মুক্তি পেতে পারে, তা নিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, আজ সোমবার ও আগামীকাল মঙ্গলবার প্রায় একই রকম তাপদাহ অব্যাহত থাকবে।

এপ্রিলের ২৪-২৫ তারিখে একটু কমার সম্ভাবনা আছে, তবে তার মানে এই না যে, তাপপ্রবাহ শেষ হয়ে যাবে। সেটা হয়তো মাঝারি থেকে মৃদুতে আসতে পারে বা দুই-এক জায়গা থেকে কমতে পারে তাপপ্রবাহের হারটা; কিন্তু দেশের বেশির ভাগ জায়গায় দাবদাহে চলতি মাসজুড়েই বিরাজমান থাকবে বলে আবহাওয়াবিদরা উল্লেখ করেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টারআবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানায়, পাবনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ বয়ে যাবে। মে মাসের আবহাওয়ার পরিস্থিতি নিয়ে জানা গেছে, এপ্রিল এবং মে মাস সবচেয়ে উষ্ণতম দুটি মাস।

অতীতের যে ক্লাইমেটোলজি বা রিপোর্টগুলো আছে, তাতে দেখা গেছে যে, কখনো কখনো এপ্রিল থেকে মে মাসেই তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ছিল। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে, এপ্রিলের পাশাপাশি মে মাসেও হিটওয়েভটা থাকবে।


ইবিআর সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধির আহ্বান সেনাপ্রধানের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নিষ্ঠা, একাগ্রতা এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষমতা অর্জন করে একবিংশ শতাব্দীর কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সব সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম সেনানিবাসে দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারে (ইবিআরসি) ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের (ইবিআর) ৩৮তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান।

এ ছাড়াও, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সেনাবাহিনী প্রধান এ রেজিমেন্টের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, গবেষণা, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন।

বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনের শুরুতেই সেনাবাহিনী প্রধান ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা স্মরণ করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

সেনাবাহিনী প্রধান ইবিআরসিতে পৌঁছালে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও চট্টগ্রাম এরিয়ার এরিয়া কমান্ডার এবং দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারের কমান্ড্যান্ট তাকে অভ্যর্থনা জানান।

অনুষ্ঠানে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি, জিওসি, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও চট্টগ্রাম এরিয়ার এরিয়া কমান্ডার, কমান্ড্যান্ট ও পাপা টাইগার, ইবিআরসি; মিলিটারি সেক্রেটারি; অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল; কমান্ড্যান্ট, বিআইআরসি; চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ চা বোর্ড; সেনাসদর ও চট্টগ্রাম এরিয়ার ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা, সব পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার ও ইউনিটসমূহের অধিনায়ক এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।


বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস নৌ-প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় নতুন এমওইউ স্বাক্ষর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) সার্বিক তত্ত্বাবধানে ঢাকা সেনানিবাসে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বাংলাদেশ সরকার এবং কিংডম অব নেদারল্যান্ডস-এর মধ্যে নৌ-প্রতিরক্ষা সামগ্রির সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বাংলাদেশের পক্ষে স্মারকটি স্বাক্ষর করেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান এবং নেদারল্যান্ডসের পক্ষে স্বাক্ষর করেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত জোরিস ভ্যান বোমেল।

স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডস প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নন-রেসিডেন্ট ডিফেন্স অ্যাটাচে ক্যাপ্টেন (আরএনএলএন) জি. (জর্ডি) ক্লেইন, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের অর্থ-বাণিজ্য ও বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক সিনিয়র উপদেষ্টা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের মহাপরিচালকগণ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ-এর পশ্চিম ইউরোপ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন শাখার মহাপরিচালক এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ-এর নৌ-উপদেষ্টা।

ভ্রাতৃত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার চেতনায় প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য স্বাক্ষরিত এ সমঝোতা স্মারকটি নৌ-প্রতিরক্ষা সামগ্রি সম্পর্কিত সহযোগিতার একটি যুগান্তকারী কাঠামো স্থাপন করেছে, যা নৌ-প্রতিরক্ষা শিল্পে পারস্পরিক সহযোগিতা, তথ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিনিময়, প্রযুক্তি হস্তান্তর, শিল্প সুরক্ষা নীতি অনুযায়ী তথ্য বিনিময় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী লজিস্টিক সহায়তা প্রদানের সুযোগ আরও বিস্তৃত করবে।

এই ঐতিহাসিক স্মারকটি স্বাক্ষরের ফলে দুই দেশের মধ্যে সামরিক বিশেষজ্ঞ বিনিময় বাড়বে, যা নৌ-প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ ছাড়াও বাংলাদেশের নৌ-প্রতিরক্ষা আধুনিকায়ন এবং নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত সহযোগিতা আরো জোরদার করবে, এজন্য দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সম্পর্কের ধারাবাহিক অগ্রগতিতে এ স্মারকটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।


জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ১২ ফেব্রুয়ারি

আপডেটেড ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৮:২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি একইদিন দেশে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন জাতির উদ্দেশে ভাষণে এই তফসিল ঘোষণা করেন।


থামছেই না রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ: এক মাসেই নতুন করে এলো আরও ২,৭৩৮ জন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকট যেন কোনোভাবেই কাটছে না; বরং দিন দিন তা আরও প্রকট হচ্ছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসেই দেশে নতুন করে আরও ২ হাজার ৭৩৮ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) প্রকাশিত সংস্থাটির মাসিক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগজনক চিত্র উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতার জেরে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আসার স্রোত অব্যাহত রয়েছে। গত এক বছরে (ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত) নতুন করে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩৭৮ জনে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত কয়েক মাসে এই সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫১ এবং ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬৪০ জন। বর্তমানে কক্সবাজার ও ভাসানচরের বিভিন্ন ক্যাম্পে সব মিলিয়ে ১১ লাখ ৭৩ হাজার ১৭১ জন রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।

ইউএনএইচসিআর জানায়, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে শুরু হওয়া মানবিক বিপর্যয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ৯৪ হাজার ৯৩৭ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ২০২৪ সাল থেকে রাখাইনে সহিংসতা তীব্র আকার ধারণ করায় নতুন করে এই ঢল নামে। ক্যাম্পগুলোতে সদ্য আগতদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে।

সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, নতুন করে আশ্রয় নেওয়া এই জনগোষ্ঠীর বড় অংশই নারী ও শিশু, যা মোট সংখ্যার ৭৮ শতাংশ। এদের মধ্যে ১২ শতাংশ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছেন—যাদের মধ্যে প্রতিবন্ধী, গুরুতর অসুস্থ রোগী, একক অভিভাবক, সঙ্গীহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত সামগ্রিক রোহিঙ্গা জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ নারী এবং ৪৮ শতাংশ পুরুষ।


পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান সেনাপ্রধানের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সেনাবাহিনীর পুষ্টি ও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রিমাউন্ট ভেটেরিনারি অ্যান্ড ফার্ম (আরভিঅ্যান্ডএফ) কোরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি প্রযুক্তির উন্নয়ন, গবেষণা ও পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কোরের সদস্যদের সর্বদা প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

সাভারের আরভিঅ্যান্ডএফ ডিপোতে অনুষ্ঠিত কোরের ‘বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, সেনাপ্রধান তার বক্তব্যের শুরুতে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগকারী বীর শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি আরভিঅ্যান্ডএফ কোরের গৌরবময় ঐতিহ্য ও দেশসেবায় তাদের অবদানের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় আরও অগ্রসর হওয়ার নির্দেশনা দেন।

এর আগে সেনাপ্রধান সাভারের ডিপোতে পৌঁছালে তাকে অভ্যর্থনা জানান আরভিঅ্যান্ডএফ কোরের নবনিযুক্ত কর্নেল কমান্ড্যান্ট এবং ৯ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও সাভারের এরিয়া কমান্ডার। সম্মেলনে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি, সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেলসহ সেনাসদর ও সাভার এরিয়ার ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার ও অন্য পদবির সেনাসদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর আরভিঅ্যান্ডএফ কোরের তৃতীয় কর্নেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মেজর জেনারেল এস এম আসাদুল হক। সাভার আরভিঅ্যান্ডএফ ডিপোর প্যারেড গ্রাউন্ডে সামরিক রীতি ও ঐতিহ্য মেনে তাকে এই মর্যাদাপূর্ণ পদের ব্যাজ পরিয়ে দেওয়া হয়।


আজ সন্ধ্যায় তফসিল ঘোষণা, থামছে নতুন প্রকল্প অনুমোদন ও বদলি কার্যক্রম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ঘোষণা করা হচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল। তফসিল ঘোষণার পরপরই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ কার্যকর হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো—উপদেষ্টা পরিষদ এখন থেকে আর নতুন কোনো প্রকল্প অনুমোদন দিতে পারবে না।

তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনী আচরণবিধি ও প্রশাসনিক কার্যক্রমেও ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর ৪৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আজ তফসিল জারি হওয়ার পর থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের বদলি করা যাবে না। এই কর্মকর্তাদের তালিকায় রয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) এবং তাদের অধীনস্থ কর্মকর্তারা। এছাড়া সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা নির্বাহী বিভাগের বাধ্যতামূলক কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।

সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে আচরণবিধি প্রতিপালনের ওপর জোর দিয়েছে কমিশন। তফসিল ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজনৈতিক দল ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের সব ধরনের প্রচারসামগ্রী, যেমন—পোস্টার ও ব্যানার সরিয়ে ফেলতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা না সরানো হলে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আচরণবিধি তদারকির জন্য আগামীকাল থেকেই প্রতিটি উপজেলা ও থানায় দুজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনের আগের তিন দিন, নির্বাচনের দিন এবং পরের দিন—অর্থাৎ শেষ পাঁচ দিন ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকায় প্রভাব বিস্তার রোধে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী (সোশ্যাল সেফটি নেটওয়ার্ক) কার্যক্রম ছাড়া সব ধরনের অনুদান ও ত্রাণ বিতরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের এক সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এসব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন।


‘খালেদা জিয়া চিকিৎসায় সম্পূর্ন সাড়া দিচ্ছেন’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হলেও তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। বুধবার রাতে হাসপাতাল গেটে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো প্রকার গুজবে কান না দেওয়ার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান।

ডা. জাহিদ হোসেন জানান, গত শুক্রবার খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সে সময় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের কারিগরি ত্রুটি এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা ভ্রমণের অনুকূলে না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তাঁকে দেশেই সর্বোত্তম সেবা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা আশা প্রকাশ করেছেন যে, তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে পরবর্তীতে তাঁকে বিদেশে নেওয়া হতে পারে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশেষ করে ডা. জোবাইদা রহমান লন্ডন থেকে গত ৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরে সার্বক্ষণিকভাবে চিকিৎসার তদারকি করছেন। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন এই বোর্ডে যুক্ত রয়েছেন দেশের বাইরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও।

উল্লেখ্য, ৮০ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ২৭ নভেম্বর ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দিলে তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটে। এরপর থেকেই তাঁকে বিশেষ ব্যবস্থায় নিবিড় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, বুধবার বিকেলে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সেখানে এক ঘণ্টারও বেশি সময় অবস্থান করেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসার খুঁটিনাটি ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।


বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সংলাপ শুরু

দ্বিপক্ষীয় সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আশা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা জোরদারে ১২তম বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সংলাপ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই সংলাপ রাজধানী ঢাকার বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে চলবে।

২০১২ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে এই প্রতিরক্ষা সংলাপ হয়ে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় চলমান বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রতিনিধিদল অংশ নিচ্ছে।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তথ্য জানানো হয়।

আইএসপিআর জানিয়েছে, ওই প্রতিরক্ষা সংলাপ দুই দেশের পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও এই সংলাপে উভয় দেশের সামরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হবে। উল্লিখিত সংলাপ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, দুর্যোগ মোকাবিলা, শান্তি রক্ষা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন, যৌথ অনুশীলন ও মহড়া, কর্মশালা ইত্যাদি ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।

এই প্রতিরক্ষা সংলাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, অপারেশনস ও পরিকল্পনা পরিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আলী হায়দার সিদ্দিকী। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সারাহ রুস। এ ছাড়া সংলাপে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডসহ বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন।

দুই দিনের এই প্রতিরক্ষা সংলাপের মাধ্যমে দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক আরও উন্নত হবে এবং পারস্পরিক আস্থা ও বন্ধুত্ব আরও গভীর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


শ্রমিক পাঠিয়ে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা লুট

* অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ * ৬০ রিক্রুটিং এজেন্সির ১২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত দুদকের
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মালয়েশিয়ার শ্রম বাজারে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত অর্থের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি অর্থ আদায়ের মাধ্যমে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ৬০ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও কর্মকর্তাসহ ১২৪ জনের বিরুদ্ধে পৃথক ৬০ মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

মামলায় ৬০ রিক্রুটিং এজেন্সির ১২৪ মালিকদের বিরুদ্ধে ২ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৬ জনের কাছ থেকে ৪ হাজার ৫৪৫ কোটি ২০ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা, মালয়েশিয়া রিক্রুটমেন্ট প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম, অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং অর্থপাচারের অভিযোগে ৬০টি ওভারসিজ কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী, চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অভিযোগে বায়রার বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনকালে তারা সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট গড়ে চুক্তিভঙ্গ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে শ্রমিকদের কাছ থেকে সরকারের নির্ধারিত ফি’র কয়েকগুণ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী একজন কর্মীর মালয়েশিয়া যাওয়ার ব্যয় ছিল ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা। কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তিরা রাজনৈতিক প্রভাব ও বায়রার অভ্যন্তরীণ ক্ষমতাচক্র ব্যবহার করে এই খরচকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। শ্রমিক বাছাই, অর্থসংক্রান্ত প্রক্রিয়া ও চুক্তিভিত্তিক শর্তাবলি উপেক্ষা করা হয়েছে। মামলাগুলোতে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০(বি), ১৬১, ১৬২, ১৬৩, ১৬৪, ১৬৫(ক), ৪২০ ও ৪০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

এর আগে ৪০টি ওভারসিজ কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী, চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালকসহ ১০৮ জনের বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৪৩৮ কোটি ৯৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৪০টি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে ওই ঘটনায় ১০০টি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে যার মধ্যে আসামি ২৩২ জন। আর আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ ৭ হাজার ৯৮৪ কোটি ১৫ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা।


আর কোনো নাগরিককে রাষ্ট্রের ভয়ে বাঁচতে হবে না : তারেক রহমান  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি প্রতিশোধের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করছে, আমরা সমাধানের পথে বিশ্বাসী। আমরা এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, কোনো বাংলাদেশিকে রাষ্ট্রের ভয়ে বাঁচতে হবে না, তা সে সরকারের সমর্থক হোক বা বিরোধী। মানবাধিকার দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মানবাধিকারই মানুষের দৈনন্দিন বেঁচে থাকার মৌলিক শর্ত। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তারেক রহমান এ কথা বলেন।

তারেক রহমান উল্লেখ করেন, আজ বাংলাদেশের প্রয়োজন রাজনীতির চেয়েও বড় কিছু- একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ, যেখানে সবার জন্য মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে, যেখানে কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, বিরোধী মত যেখানে হুমকি না হয়ে বরং গণতন্ত্রের অংশ হবে। যেখানে ভিন্ন মতের কারণে কাউকে নিপীড়িত হতে হবে না বা গুম হয়ে যেতে হবে না।

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, আমরা আবরার ফাহাদ, মুশতাক আহমেদ, ইলিয়াস আলী, সাজেদুল ইসলাম সুমন, সাগর-রুনি আর অসংখ্য শহীদের গল্প মনে রাখি। যেন ভবিষ্যতে এমন নিপীড়ন আর দায়মুক্তি আর কখনও ফিরে না আসে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি মারাত্মক ক্ষতি সহ্য করেছে, কিন্তু ভেঙে যায়নি। বরং সত্য, ন্যায়, জবাবদিহি, পুনর্মিলন আর আইনের শাসনে বিশ্বাস রেখে আরও দৃঢ় হয়েছে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে প্রতিটি মানুষের কণ্ঠ, অধিকার ও জীবন মূল্যবান; যেখানে মানবাধিকার আমাদের ভবিষ্যতের ভিত্তি।

তারেক রহমান শুরু করেন, ‘১৬টা বছর ধরে বাংলাদেশ যেন একটা কালো মেঘের নিচে চাপা পড়ে ছিল। কেউ সেই অন্ধকারকে খুব তীব্রভাবে টের পেয়েছে, কেউ চুপচাপ বয়ে বেড়িয়েছে। কিন্তু যাদের রাজনৈতিক অবস্থান তখনকার পতিত সরকারের বিপরীতে ছিল, তাদের জন্য এই অন্ধকার ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা। রাতের বেলা দরজায় কড়া নাড়া, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন, ভয়কে সংস্কৃতি বানিয়ে ফেলা, আর অসংখ্য পরিবার অপেক্ষা করেছে সেই প্রিয়জনদের জন্য, যারা আর কোনোদিন ঘরে ফিরে আসেনি। এই বোঝা বিএনপির চেয়ে বেশি আর কেউ বহন করেনি। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, হেফাজতে মৃত্যু, মিথ্যা মামলা সব জায়গায় বিএনপির নেতাকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানেও সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে বিএনপির ঘরেই।

কিন্তু অত্যাচারের শিকার শুধু বিএনপি ছিল না; ছাত্র, সাংবাদিক, লেখক, পথচারী, সাধারণ মানুষ– সবাই সেই ভয়ঙ্কর পরিবেশের ক্ষত বয়ে বেড়িয়েছে, ন্যূনতম মানবাধিকার হিসেবে বিবেচিত মর্যাদা, নিরাপত্তা, মত প্রকাশের অধিকারের মতো মৌলিক সব বিষয়গুলো ছিল হুমকির মুখে।

তিনি উল্লেখ করেন, এই বছরগুলোতে আমাকেও কথা বলার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। ২০১৫ সাল থেকে আমার কথা বলার অধিকার সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নেওয়া হয়। দেশের কোনও পত্রিকা, টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়া যেন আমার কোনও বক্তব্য প্রকাশ না করা হয়, এমন নির্দেশনা জারি ছিল। তবুও এই চাপিয়ে দেওয়া নীরবতার মধ্যেও আমি অধিকার, গণতন্ত্র আর মানুষের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই চালিয়ে গেছি, কারণ সত্যের স্পিরিটকে আদেশ দিয়ে থামানো যায় না।

তারেক রহমান লিখেন, এই পুরো অন্ধকার সময়টায় খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের ধৈর্য ও প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় প্রতীক। মিথ্যা মামলা, কারাবাস, তাকে রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ করে দেওয়ার চেষ্টা এসবই পুরো দেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এক কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিফলন। তবুও তিনি তার গণতান্ত্রিক আদর্শ থেকে কখনও সরে যাননি।

কিন্তু ইতিহাসের একটা সত্য আছে কষ্ট মানুষকে সবসময় তিক্ত করে না। কখনও কখনও কষ্ট মানুষকে আরও মহান করে তোলে। দেশনেত্রী, আমার মা এটাই প্রমাণ করেছেন। তিনি শিখিয়েছেন, যে অন্যায় আমরা সহ্য করেছি, তা যেন আর কারও জীবনে না আসে। দেশকে বদলাতে হলে, ঘৃণার পথ নয়– ন্যায়, নৈতিকতা আর ক্ষমাশীলতার পথই ভবিষ্যৎ গড়ে, যোগ করেন তারেক রহমান।


আদায় হওয়া ভ্যাট অনেক সময় সরকারের কোষাগারে পৌঁছায় না : অর্থ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজেস্ব প্রতিবেদক

দেশের ভ্যাট ব্যবস্থাকে আরও সহজ ও স্বচ্ছ করার ওপর জোর দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আদায় হওয়া ভ্যাটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ অনেক সময় সরকারের কোষাগারে পৌঁছায় না।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত ‘ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ-২০২৫’ উপলক্ষে সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ভ্যাট ব্যবস্থা এমন হওয়া উচিত, যা সবার কাছে সহজবোধ্য। প্রক্রিয়া জটিল হলে কারচুপির সুযোগ বেড়ে যায়। ব্যবসায়ী বা ক্রেতা ভ্যাট পরিশোধ করলে সেটি যেন নির্ভুলভাবে কোষাগারে জমা হয়— এটাই সবার প্রত্যাশা। কিন্তু বাস্তবে অনেক সময় তা হয় না।

তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। ঋণ বা অনুদান নির্ভরতায় উন্নয়ন কার্যক্রম দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হয় না। ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত না বাড়ালে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক খাতে প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহে চাপ সৃষ্টি হবে।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন এনবিআর সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) মো. আজিজুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সদস্য (মূসক নিরীক্ষা) সৈয়দ মুসফিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফআইসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আজমান, অর্থ মন্ত্রণালয় ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সংশ্লিষ্ট সচিবরা।

সভাপতির বক্তৃতায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান ব্যবসাবান্ধব ভ্যাট ব্যবস্থা গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ভ্যাট হবে সহজ। ব্যবসায়ীরা শুধু বিক্রয়মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দেবেন। আর কোনও জটিল আইন বা বিশাল বইয়ের প্রয়োজন হবে না। আমরা এমন সফটওয়্যার তৈরি করছি, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে হিসাব করে ভ্যাট আদায় সম্পন্ন করবে। কনসালটেন্ট রাখারও দরকার হবে না।

সেমিনারে ভ্যাট ব্যবস্থার সংস্কার, স্বচ্ছতা বাড়ানো এবং ব্যবসায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার বিষয়ে নানা প্রস্তাব উঠে আসে।


কূটনৈতিক পাসপোর্ট জমা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, জানালেন নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আজ বুধবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন। নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তিনি ইতিমধ্যে নিজের কূটনৈতিক পাসপোর্ট এবং সম্পদের বিবরণী জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তার পদত্যাগের সময়সীমা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার বলা মানা। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হবে।’

আসন্ন নির্বাচনে তিনি কোন দলের হয়ে বা কোন আসন থেকে লড়বেন, সে বিষয়টি এখনও খোলাসা করেননি। তবে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, এটা নিশ্চিত। আসিফ মাহমুদ জানান, কোন আসন ও দল থেকে ভোট করবেন, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরও ২-৩ দিন সময় লাগবে। এরপরই সব ধোঁয়াশা কেটে যাবে।

বিএনপি নাকি এনসিপি থেকে ঢাকা-১০ আসনে নির্বাচন করবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই আসনে বিএনপি ইতিমধ্যে প্রার্থী দিয়েছে বলে তিনি জানেন। বাজারে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন গুঞ্জনের বিষয়ে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আসলে অনেক ধরনের কথাই ছড়ানো হচ্ছে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শিগগিরই জানানো হবে।


নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্ট রাষ্ট্রপতি, নির্বাচনে সহায়তার আশ্বাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক
    রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির সাক্ষাৎ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ঠিক আগ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে বঙ্গভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা হয়। কমিশনের প্রস্তুতি জেনে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

সিইসির নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দলে চারজন নির্বাচন কমিশনার ও ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ইসি সচিব ব্রিফিংয়ে জানান, আলোচনায় ভোটার তালিকার ক্রম সংযোজন, রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন এবং প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট আয়োজনের বিষয়গুলো রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া এবারের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পায়।

বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ শেষে নির্বাচন কমিশন প্রতিনিধি দলটি আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ফিরে গেছে। সেখানে সিইসির সভাপতিত্বে কমিশনারদের নিয়ে বর্তমানে একটি বৈঠক চলছে। এদিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার লক্ষ্যে সিইসির ভাষণ রেকর্ড করার জন্য আজ বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতার কর্তৃপক্ষকে ইসিতে ডাকা হয়েছে। দীর্ঘদিনের রেওয়াজ অনুযায়ী, যেদিন রাষ্ট্রপতি সঙ্গে কমিশন সাক্ষাৎ করে এবং সিইসির ভাষণ রেকর্ড করা হয়, সেদিনই সাধারণত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ফলে আজই জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে নির্বাচনের চূড়ান্ত দিনক্ষণ ঘোষণা করা হতে পারে বলে জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে


banner close