বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিস্ময়কর প্রতিভার জাদুকরী স্পর্শে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য পূর্ণতা পেয়েছে এবং সমৃদ্ধ ও আলোকিত এবং বিকশিত হয়েছে। সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে তিনি বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতিকে বিশ্বপরিমণ্ডলে মর্যাদার সঙ্গে তুলে ধরেছেন।
তার মূল পরিচয় কবি হলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মূলত বাংলা সাহিত্যের প্রাণস্পন্দন। সাহিত্যের সকল শাখায় রয়েছে তার সফল বিচরণ। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, গল্পকার, নাট্যকার, চিত্রকর এবং সংগীত ও সুরস্রষ্টা। তিনিই বাংলা সাহিত্যে ছোটগল্পের প্রবর্তক।
বাংলা ভাষার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বোদ্ধারা ‘গুরুদেব’, ‘কবিগুরু’ ও ‘বিশ্বকবি’ অভিধায় অভিহিত করে থাকেন। কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘সঞ্চিতা’ কাব্যগ্রন্থ উৎসর্গকালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ‘বিশ্বকবিসম্রাট’ বলে সম্বোধন করেছেন।
রবীন্দ্র সাহিত্যের অন্যতম প্রধান উপকরণ হচ্ছে জীবন ও জীবনবোধ, প্রকৃতি ও সৌন্দর্য, মনুষ্যত্ব ও মানবমুক্তি, প্রেম-ভালোবাসা এবং একেশ্বরবাদের বন্দনা করা। পাশাপাশি সমাজের নানা অসমতা, হীনতা-দৈন্যতা ও দুর্দশার কথাও তিনি তার সুতীক্ষ্ণ লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন। গভীর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে তিনি এসবের মধ্যে থেকে সত্যকে আবিষ্কার করে পাঠকের মনোজগতে প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছেন। আর নিজে হয়ে উঠেছেন কবি-সাহিত্যিক থেকে দার্শনিক।
গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। সমগ্র এশিয়া মহাদেশের মধ্যে তিনিই প্রথম এই পুরস্কার প্রাপ্তির গৌরব অর্জন করেন। পরবর্তীতে ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি ‘নাইটহুড’ বর্জন করেন। নাইটহুড প্রত্যাখ্যানপত্রে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমার এই প্রতিবাদ আমার আতঙ্কিত দেশবাসীর মৌনযন্ত্রণার অভিব্যক্তি।’ এর মাধ্যমেই তার দেশপ্রেম ও মানবপ্রেমের পরিচয় পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় রবীন্দ্রনাথের গান-কবিতা বাঙালির মনে সাহস ও শক্তি জোগায় এবং প্রাণের সঞ্চার করে। তার লেখা ‘আমার সোনার বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। অর্থাৎ বাঙালির চিন্তায়, মননে, কল্পনায়, চেতনায় ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছেন তিনি।
প্রকৃতিপ্রেমী রবীন্দ্রনাথের উপলব্ধির গভীরতায় ও ভাষার সহজাত ভঙিমায় শিল্পিত রূপ পেয়েছে বাংলার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
রাবীন্দ্রনাথ তার দার্শনিক উপলব্ধির দ্বারা প্রায় শতবছর আগে সমাজের যে চিত্র তুলে ধরেছেন তা আজও বিদ্যমান। তিনি লিখেছেন, ‘ডিমোক্রাসি আজ যেখানে সেখানে যত টুকরো অ্যারিস্টোক্রেসির পুজো বসিয়েছে - খুদে খুদে অ্যারিস্টক্রাটে পৃথিবী ছেয়ে গেল, কেউ পলিটিক্সে, কেউ সাহিত্যে, কেউ সমাজে। তাদের কারো গাম্ভীর্য নেই, কেননা তাদের নিজের পরে বিশ্বাস নেই।’
রবীন্দ্রনাথের ধর্মদর্শন মানবিকতার জয়গানে মুখর। ধর্মের নামে হানাহানি-মারামারি কবিমনকে ব্যথিত করত। ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে তার অবস্থান ছিল স্পষ্ট। তাই ধর্মান্ধতা সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘ধর্মের বেশে মোহ এসে যারে ধরে/ অন্ধ সে জন, মারে আর শুধু মরে’।
ন্যায়-অন্যায় বোধ সম্পর্কে তিনি মানুষকে সচেতন করা এবং তাদের নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে তার বিখ্যাত দুটি লাইন প্রণিধানযোগ্য: ‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে।’ পাশাপাশি মানুষের সীমাহীন চাহিদার কথা এভাবে বর্ণনা করেছেন: ‘এ জগতে, হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি- রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।’
‘শেষের কবিতা’ উপন্যাসে শিলং পাহাড়ের রোমান্টিক পরিবেশে অমিত-লাবণ্যের প্রেমকে অনবদ্যভাবে ফুটিয়ে তোলেন। ভালোবাসার শব্দটির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘ভালোবাসার ট্র্যাজেডি ঘটে সেখানেই যেখানে পরস্পরকে স্বতন্ত্র যেনে মানুষ সন্তুষ্ট থাকতে পারেনি- নিজের ইচ্ছেকে অন্যের ইচ্ছে করবার জন্যে যেখানে জুলুম- যেখানে মনে করি আপন মনের মতো করে বদলিয়ে অন্যকে সৃষ্টি করবো।’
জমিদারের সন্তান হয়েও জমিদারির দম্ভ, অহমিকা তাকে স্পর্শ করেনি। এক মহান প্রজাদরদি জমিদার ছিলেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মানুষের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে তিনি গভীরভাবে ভাবতেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পত্র-প্রবন্ধ সংকলন ‘রাশিয়ার চিঠি’ বইয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এবারে রাশিয়া ঘুরে এসে সেই সৌন্দর্যের ছবি আমার মন থেকে মুছে গেছে। কেবলই ভাবছি আমাদের দেশ-জোড়া চাষীদের দুঃখের কথা। আমার যৌবনের আরম্ভকাল থেকেই বাংলাদেশের পল্লীগ্রামের সঙ্গে আমার নিকট-পরিচয় হয়েছে। তখন চাষীদের সঙ্গে আমার প্রত্যহ ছিল দেখাশোনা- ওদের সব নালিশ উঠেছে আমার কানে। আমি জানি, ওদের মতো নিঃসহায় জীব অল্পই আছে, ওরা সমাজের যে তলায় তলিয়ে সেখানে জ্ঞানের আলো অল্পই পৌঁছায়, প্রাণের হাওয়া বয় না বললেই হয়।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘চাষীকে আত্মশক্তিতে দৃঢ় করে তুলতে হবে, এই ছিল আমার অভিপ্রায়। এ সম্বন্ধে দুটো কথা সর্বদাই আমার মনে আন্দোলিত হয়েছে- জমির স্বত্ব ন্যায়ত জমিদারের নয়, সে চাষীর; দ্বিতীয়ত, সমবায়নীতি-অনুসারে চাষের ক্ষেত্র একত্র করে চাষ না করতে পারলে কৃষির উন্নতি হতেই পারে না। মান্ধাতার আমলের হাল লাঙল নিয়ে আলবাঁধা টুকরো জমিতে ফসল ফলানো আর ফুটো কলসিতে জল আনা একই কথা।’
পরিশেষে বলতে হয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চিরকাল বাংলা ও বাঙালির বাতিঘর হয়ে থাকবেন।
শরণার্থী ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মানবিক সহায়তার কাজ করে আসছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ অধিকারকর্মী রুহি লরেন আখতার। তার সংস্থা ‘রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড ব্যানানাস’ (আরবিবি) মূলত বাস্তুচ্যুত ও যুদ্ধপীড়িত মানুষের মধ্যে খাদ্য-ত্রাণ বিতরণসহ নানা সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে তিনি গাজার উদ্দেশে যাত্রা করা মানবিক ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র একজন সহযাত্রী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক পোস্টে দেখা গেছে, রুহি আখতার ফ্লোটিলায় যোগ দিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন এবং গাজার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভয়কে পাশ কাটিয়ে মানবতার বার্তা পৌঁছে দেওয়াই তাদের লক্ষ্য।
সারা বিশ্বের মানুষের নজর এখন এই নৌবহরের দিকে। ফিলিস্তিনের গাজার মানুষের জন্য ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৪০টির মধ্যে অন্তত ২৪টি নৌযান এখনো গাজার উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ট্র্যাকার অনুসারে, এসব নৌযান এখনো ইসরায়েলি বাহিনীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই অগ্রসর হচ্ছে।
এসবের মধ্যে ‘মিকেনো’ নামের একটি জাহাজ গাজার আঞ্চলিক জলসীমায় প্রবেশ করেছে বলে জানা গেছে। রুহি এবং তার সহযাত্রীরা ভয়কে পাশ কাটিয়ে মানবতার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে অটল।
রুহি আখতারের পিতার নাম কাপ্তান মিয়া। তিনি বিলাত প্রবাসী বাংলাদেশি।রুহি যুক্তরাজ্যের মরপেথে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং বর্তমানে এলসউইক ওয়ার্ডে বসবাস করছেন। তিনি একজন মানবিক সহায়তা কর্মী এবং অধিকারকর্মী। গাজার মানুষের জন্য জরুরি সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি চলমান ইসরায়েলি অবরোধের প্রতিবাদ জানাতে তিনি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
১৮ সেপ্টেম্বর তিনি তিউনিসিয়ার গামার্থ বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেন। তার নৌকায় ১২ জন রয়েছেন।
তারা তিউনেসিয়া, স্পেন, গ্রিস ও ইতালি থেকে রওনা হওয়া ৪০টিরও বেশি নৌযানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। রুহি ২০২৪ সালে তার অসাধারণ বৈশ্বিক মানবিক কাজের জন্য যুক্তরাজ্যের নর্থ ইস্ট বাংলাদেশি অ্যাওয়ার্ডসে ‘বাংলাদেশি পার্সন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারে ভূষিত হন।
তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি গাজার উদ্দেশ্যে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছি, কারণ অন্যায়ের মুখে নীরব থাকা কোনো সমাধান নয়। বহুদিন ধরে ফিলিস্তিনিরা খাদ্য, পানি, জমি, মৌলিক নিরাপত্তা এবং চলাচলের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। একজন মানবিক কর্মী হিসেবে আমি দেখেছি, এক টুকরো রুটি বা সামান্য বিশুদ্ধ পানি কিভাবে সবচেয়ে অন্ধকার সময়ে আশা ফিরিয়ে আনতে পারে। এই নৌবহর হলো সংহতির প্রতীক, যা মনে করিয়ে দেয় বিশ্ব তাকিয়ে আছে, এবং আমরা গাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে থাকব যতদিন না তারা মুক্ত হয়। কারণ আমাদের কেউই মুক্ত নই, যতদিন না ফিলিস্তিন মুক্ত।’
রুহি ও তার সংস্থা আগে গ্রিস, গাজা এবং অন্যান্য এলাকায় বাস্তুচ্যুত ও যুদ্ধপীড়িত মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য ও সহায়তা বিতরণ করেছে। সংস্থার অনেক সদস্যই নিজে বাস্তুচ্যুত বা সংঘাত-প্রবণ এলাকার মানুষ, অর্থাৎ শরণার্থী। রুহি ন্যায়বিচারের পক্ষে দৃঢ় কণ্ঠস্বর। গাজার উদ্দেশ্যে নৌবহরে যোগ দেওয়ার আগে তিনি এবং তার সাথীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে ত্রাণের প্যাকেজ প্রস্তুত করেছেন।
এদিকে ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে জানান, আটক হওয়া নৌযানগুলোতে অন্তত ২০১ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে শুধু স্পেন থেকেই ছিলেন ৩০ জন, ইতালির ২২ জন, তুরস্কের ২১ জন ও মালয়েশিয়ার ১২ জন। গাজা থেকে ১২৯ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরে অবস্থানকালে ইসরায়েলি বাহিনী ফ্লোটিলায় বাধা দেয়।
তাদের অন্তত আটটি নৌযান থামানো হয়—দেইর ইয়াসিন, হিউগা, স্পেক্টার, আদারা, আলমা, সিরিয়াস, আরোরা ও গ্রান্ডি ব্লু। তবে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোট ১৩টি নৌযান আটকানো হয়েছে।
‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ গাজার মানুষের জন্য সমুদ্রপথে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ। বহরে প্রায় ৪৪ দেশের ৫০০ মানুষ রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়ামের নাগরিকসহ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধি, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা।
৫০টি প্রতীক থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) নিজেদের মার্কা বাছাই করতে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন সহায়তা শাখার উপ-সচিব মো. রফিকুল ইসলাম দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে ইসির দেওয়া ৫০টি প্রতীকের তালিকায় নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ী শাপলা অন্তর্ভুক্ত নেই।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এনসিপি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে, যা প্রাথমিক পর্যালোচনায় বিবেচিত হয়েছে। আবেদনপত্রে প্রতীক হিসেবে পছন্দের ক্রমানুযায়ী শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোন উল্লেখ করা হয়; যা পরে পরিবর্তন (শাপলা, লাল শাপলা বা সাদা শাপলা) করা হয়। উল্লেখ্য, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৯ (১) অনুযায়ী প্রার্থিত প্রতীক শাপলা অন্তর্ভুক্ত নেই।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার বিধান উল্লেখ করে চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই আদেশ বা বিধিমালার অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কোনও দল মনোনীত সব প্রার্থীর জন্য নির্ধারিত প্রতীক থেকে পছন্দ করা যেকোনও একটি প্রতীক বরাদ্দ করা হবে এবং এইভাবে বরাদ্দ করা প্রতীক দলটির জন্য সংরক্ষিত থাকবে, যদি না তারা পরবর্তী সময়ে নির্ধারিত প্রতীকগুলোর মধ্য থেকে অন্য কোনও প্রতীক লাভের জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করে। দলের নিবন্ধনের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৯(১)-এ উল্লিখিত প্রতীকের তালিকা থেকে বরাদ্দ হয়নি এমন একটি প্রতীক পছন্দ করে নির্বাচন কমিশনকে আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
যে ৫০টি প্রতীক থেকে এনসিপিকে তাদের মার্কা পছন্দ করতে বলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে– আলমারি, খাট, উটপাখি, ঘুড়ি, কাপ-পিরিচ, চশমা, দালান, বেগুন, চার্জার লাইট, কম্পিউটার, জগ, জাহাজ, টিউবওয়েল, টিফিন ক্যারিয়ার, টেবিল, টেবিল ঘড়ি, টেলিফোন, ফ্রিজ, তবলা, বক, মোরগ, কলম, তরমুজ, বাঁশি, লাউ, কলস, চিংড়ি, থালা, বেঞ্চ, লিচু, দোলনা, প্রজাপতি, বেলুন, ফুটবল, ফুলের টব, মোড়া, বালতি, কলা, বৈদ্যুতিক পাখা, মগ, মাইক, ময়ূর, মোবাইল ফোন, শঙ্খ, সেলাই মেশিন, সোফা, স্যুটকেস, হরিণ, হাঁস ও হেলিকপ্টার।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি প্রথমে শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোনের যেকোনও একটি প্রতীক তাদের দেওয়ার জন্য আবেদন জানায়। তার কিছু দিন পর সে আবেদনে সংশোধন এনে শাপলা, সাদা শাপলা বা লাল শাপলা দেওয়ার আবেদন করে।
এদিকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ইসি সচিব বলেছেন, এনসিপি শাপলা প্রতীক পাচ্ছে না। আমাদের ১১৫টার যে শিডিউল করা হয়েছে সেখানে শাপলা প্রতীক নেই। নিয়মটা হলো, সংরক্ষিত প্রতীক যেটা আছে সেটার ভেতর থেকে একটা নিতে হবে। সে প্রতীকে যদি শাপলা না থাকে তাহলে দেওয়ার সুযোগটা কোথায়?
গত ২২ সেপ্টেম্বর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, আমরা আজও শাপলা, সাদা শাপলা, লাল শাপলা চেয়েছি। এই সিদ্ধান্ত থেকে সরছি না। এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু এই তিনটি প্রতীকের মাধ্যমেই নিবন্ধন হতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বন্ধু, বিশ্বখ্যাত প্রাণিবিজ্ঞানী, প্রাইমাটোলজিস্ট, নৃতত্ত্ববিদ ও পরিবেশ সংরক্ষণকর্মী ড. জেন গুডলের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
আজ এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় বন্ধু ড. জেন গুডলের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তিনি ছিলেন বিশ্বখ্যাত প্রাণিবিজ্ঞানী, প্রাইমাটোলজিস্ট, নৃতত্ত্ববিদ ও পরিবেশ সংরক্ষণকর্মী।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিরলস কর্মী হিসেবে জেন শান্তি, টেকসই উন্নয়ন, ন্যায়বিচার এবং পৃথিবীর সব প্রাণের পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘প্রকৃতি আজ তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কণ্ঠস্বরকে হারাল। এ ক্ষতি আমাদের হৃদয়ে গভীর বেদনা তৈরি করেছে। আমি আজ তাঁর অসামান্য অর্জন ও অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি, যা তাঁর পার্থিব জীবনশেষের পরও দীর্ঘকাল ধরে প্রভাব বিস্তার করবে।’
বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু জেন নব্বইয়ের দশকে এই দেশে এসে গ্রামীণ ব্যাংকের নারীর ক্ষমতায়ন কার্যক্রমে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন এবং আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নিজের কাজে সেই নীতিমালা প্রয়োগ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘তিনি আমাদের দেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। জেন আমাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করেছেন এবং আমাদের কাজের প্রশংসা করেছেন। এমনকি সম্প্রতি জুন ২০২৫-এ অনুষ্ঠিত সামাজিক ব্যবসা দিবসের সম্মেলনেও তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তাঁর সমর্থন ও অনুপ্রেরণার জন্য আমি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। তিনি শুধু আমাকে নয়, পৃথিবীর কোটি মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছেন’।
তিনি আরো বলেন, ‘তোমার আত্মা শান্তিতে থাকুক, জেন। পৃথিবী তোমাকে গভীরভাবে মিস করবে।’ সূত্র : বাসস
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির ও হরিজন সেবক সমিতি আয়োজিত মিরন জিল্লা সিটি কলোনি পূজা মণ্ডপ আজ রাতে পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো: রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।
পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এর পক্ষ থেকে শারদীয় শুভেচ্ছা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও ডিএসসিসি প্রশাসক। এছাড়া, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আরতি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও হরিজন সম্প্রদায়ের সাথে মতবিনিময় করেন।
পরিদর্শনকালে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বলেন, "সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ আমাদের বাংলাদেশ। জুলাই পরর্বতী এই বাংলাদেশে ধর্মের নামে, গোষ্ঠীর নামে, সম্প্রদায়ের নামে কোনো বৈষম্য থাকবে না।" তিনি বলেন, মাননীয় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার নির্দেশক্রমে প্রতিটি জেলায় হরিজন সম্প্রদায়ের আবাসন নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া, হরিজন সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়ন ও সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্তির জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
ডিএসসিসি প্রশাসক বলেন, "ডিএসসিসি এলাকায় ১৬৯ টি পূজা মণ্ডপে উৎসবমুখর পরিবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজা উৎযাপিত হচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, পূজা নির্বিঘ্ন করতে মণ্ডপ ও তৎসংলগ্ন এলাকার রাস্তা মেরামত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মশক নিধনের বিশেষ ব্যবস্থা ও আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, ডিএসসিসিতে কর্মরত হরিজন সম্প্রদায়ের সদস্যদের জন্য দশতলাবিশিষ্ট চারটি ভবন নির্মাণসহ সকল নাগরিক সুবিধাদি নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি জানান।
পূজা পরিদর্শনে ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মোঃ মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হবে। সবাই ভোট দিতে পারবেন। ভোট হবে দিনের বেলা, রাতের বেলা নয়। নতুন নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পুরোনো ঠিকানায় চলে যাব। আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। সুযোগ সব সময় আসে না। একবার সুযোগ আসতে ৫৪ বছর লেগে যায়। আবার কবে সুযোগ আসবে জানি না। তাই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যই শক্তি, শক্তিই শান্তি।’
রাজধানীর বকশিবাজারে গতকাল বুধবার সকালে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার ২৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ৫৪ বছর পর সুযোগ এসেছে। এ সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করা যাবে না।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘অতি আধুনিক শিক্ষার নামে মাদ্রাসা শিক্ষায় কোরান-হাদিস থেকে সরে গিয়ে কোণঠাসা হয়ে গেছে। মনে রাখতে হবে মাদ্রাসা শিক্ষা বিশেষায়িত শিক্ষা। আধুনিকতার পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষার মূল ভিত্তি থাকতে হবে কোরান এবং হাদিস, ফেকাহ।’
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আলিয়া পদ্ধতির মাদ্রাসার অবদান স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মতো। অনেক যোগ্য ব্যক্তি এখানে তৈরি হয়েছেন। আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আরবি, ইংরেজি জানলে বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও বৃত্তি পাবেন।’
রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে যুগ যুগ ধরে আলিয়া মাদ্রাসা ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করি। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির নামে দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করতে হবে। এ সময় ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমদের আল্লাহ এক, কোরান এক, কেবলা এক। এই মিল আমাদের এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসবে।’
বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন নৌবাহিনী পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার আজ বৃহস্পতিবার সকালে জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় অবস্থান করছে।
জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের সকাল ৯টার বার্তায় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের উপকূলের পূর্বদিকে এবং কলকাতা থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। সেখানে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৬৫ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ায় ঘণ্টায় ৮৩ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড হয়েছে।
আবহাওয়া সংস্থাটি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘শক্তি’। আজ রাতেই এটি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার মধ্যবর্তী উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর এখনো একে ‘গভীর নিম্নচাপ’ হিসেবেই গণ্য করছে।
ঘূর্ণিঝড় সরাসরি বাংলাদেশ অতিক্রম করবে না। তবে এর প্রভাবে বাংলাদেশসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের উপরে এখনও বর্ষা মৌসুম চলছে। বর্ষা মৌসুম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাধারণত বঙ্গোপসাগরে পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার মতো অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করে না। ফলে বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পূর্বেই ঘূর্ণিঝড় শক্তি সৃষ্টি হওয়া খুবই ব্যতিক্রম একটি ঘটনা। এখানে উল্লেখ্য যে এই বছর বর্ষা মৌসুমে বঙ্গোপসাগরে রেকর্ড সংখ্যক মৌসুমি লঘুচাপ, নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে একের পর এক, যা ছিল বঙ্গোপসাগরে রেকর্ড।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
পাশাপাশি সারাদেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘন হয়ে প্রথমে নিম্নচাপে এবং পরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
আজ ভোরে এটি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে এবং আরও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
সকালে ঢাকায় ঢাকায় বাতাসের গতি ছিল দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিমি। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।
গতকাল (বুধবার) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নরসিংদীতে ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ৫১ মিনিটে।
শহিদুল আলম কেমন আছেন- সারা দেশের মানুষের মনে এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাঁক খাচ্ছে। গাজামুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় বাংলাদেশ থেকে যোগ দিয়েছেন আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম। বুধবার (১ অক্টোবর) রাতে এই নৌবহরে হানা দিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এরই মধ্যে ১৩টি জাহাজ থেকে গ্রেটা থানবার্গসহ দুই শতাধিক কর্মী-সমাজসেবীকে বন্দি করেছে ইসরায়েল।
জানা গেছে, শহিদুল আলম কনসায়েন্স নামে একটি বড় জাহাজে রয়েছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেটি আটক হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
ফেসবুকে শহিদুল আলমের সবশেষ পোস্ট দেখা যাচ্ছে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আগে (এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত)। ওই পোস্টে তিনি ইসরায়েলকে ইঙ্গিত করে ইংরেজিতে লেখেন, ‘আমরা বারবার যাত্রা করবো। কারণ এই জলসীমা তোমাদের নয়, ওই ভূখণ্ডও তোমাদের নয়; যতক্ষণ না ফিলিস্তিন স্বাধীন হচ্ছে।’
এর আগে একাধিক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন শহিদুল আলম। এর একটিতে বুধবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, আমার ‘ড্রোন ওয়াচ’ দেখাচ্ছে- আরও এক ঘণ্টা যেতে হবে, যেখানে আমরা সাধারণত সম্ভাব্য আক্রমণের প্রতি নজর রাখি। আমার ওয়াচে এর আগে একটি তুর্কি জাহাজ দেখা গেছে, তবে এখন পর্যন্ত বিপজ্জনক কিছু ঘটেনি।
আরেক ভিডিওতে তিনি বলেন, আজ সন্ধ্যায় সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে, বজ্রপাত হয়, বিপদ আসে। আমরা দ্রুত ঝড়ের আগে যেতে চেষ্টা করি। তখন আরেকটা ব্যাপারও ছিল। আমরা জানতে পারি, আমাদের সবচেয়ে সামনের যে ফ্লোটিলা আলমা, তাতে ইসরায়েলি জলদস্যুরা হামলা শুরু করে। আমরা এই উত্তাল ঝড়ের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। সবার পেছনে সবচেয়ে বড় জাহাজে রয়েছি আমরা। কাজেই আমাদের ওপর কী আসবে তা এখনো বোঝা যাচ্ছে না। ইসরায়েল যেটা করছে, অন্যদের ওপর আক্রমণ করে আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) যোগদান শেষে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল ৯টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বুধবার, বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা ১০ মিনিটে নিউইয়র্ক ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা। সেসময় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে বিদায় জানান।
আজ বিজয়া দশমী। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাঁচ দিনব্যাপী শারদ উৎসবের শেষ দিন। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। দশমী মানেই দেবীদুর্গার ফিরে যাওয়া, আর ভক্তদের অপেক্ষা আরও একটি বছরের।
এদিন সকাল থেকেই বিহিতপূজার মাধ্যমে পালিত হচ্ছে দশমীপূজা। প্রতিমা নিরঞ্জনের পর আলিঙ্গনের মাধ্যমে প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানানোর দিন বিজয়া দশমী।
বিহিতপূজা শেষে দর্পণ-বিসর্জন দেওয়া হবে। বিজয়া দশমীতেই দুর্গা কৈলাসে গমন করেন, তাই দুর্গাকে বিদায় জানাতে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠবেন ভক্তরা। অন্তরে দেবী মাকে রেখে বিদায়ের সুর বাজবে ঢাক ও শঙ্খের ধ্বনিতে। মণ্ডপে মণ্ডপে পুরোহিতের মন্ত্র পড়ার পাশাপাশি ভক্তদের চোখে থাকবে বেদনার জল।
এরপর পূজার সব কার্যক্রম শেষে দেবীদুর্গাকে দেওয়া হবে বিসর্জন। দশমীতে দেবী মর্ত্যলোক ছাড়বেন দোলায় চড়ে। বিসর্জন উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বাড়তি নিরাপত্তা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
মহা ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে গত রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) শুরু হয় পাঁচ শারদীয় দুর্গোৎসব। দশমীর বিহিতপূজা ও দর্পণ-বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় শারদীয় দুর্গোৎসব।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সংবাদের পাশাপাশি তিনি নিজেও গতকাল বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত একাধিক পোস্ট করে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার ইতালির ওট্রান্টো থেকে ফ্লোটিলার বৃহত্তম জাহাজ ‘কনসায়েন্সে’ চড়ে যাত্রা শুরু করেন শহিদুল আলম।
গত শনিবার রাজধানী ঢাকার শুক্রাবাদে দৃকপাঠ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম ঘোষণা দেন, গাজা উপত্যকায় চলমান নৃশংসতার বিষয়ে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের নীরবতা ভাঙতে আন্তর্জাতিক সংগঠন ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) উদ্যোগে পরিচালিত ‘মিডিয়া ফ্লোটিলা’ অভিযানে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী পরদিন গত রোববার ইতালির উদ্দেশে রওনা হন বাংলাদেশি এ মানবাধিকারকর্মী। এতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে শহিদুল আলমের বক্তব্য হচ্ছে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে ফিলিস্তিনে, গাজায় মানুষ হত্যা করছে। তার সঙ্গে পাশ্চাত্যের অনেকগুলো দেশ যুক্ত, তারাও সহযোগিতা করছে এবং তারাও এতে অংশীদার। কিন্তু পৃথিবীর অনেক দেশের অনেক মানুষ, সারা পৃথিবীর মানুষ এর প্রতিবাদও করছে এবং এই প্রতিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রেখে তিনি মিডিয়া ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছেন।
নৌবহর সম্পর্কে শহিদুল আলম জানিয়েছিলেন, ‘এবার ৫০টির অধিক জাহাজ যাচ্ছে। আমরা যেই জাহাজে যাচ্ছি, সেটিতে প্রায় ১০০ জন থাকবে। যার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ সাংবাদিক, এক-তৃতীয়াংশ চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত আর এক-তৃতীয়াংশ থাকবে, যারা এটি আয়োজন করেছে। তার সঙ্গে আরও ১০টি ছোট নৌযান থাকবে। ৪৪টি দেশ থেকে এই ফ্লোটিলাতে অংশ নিচ্ছেন।’
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার এই নৌবহর ইতোমধ্যে ইসরায়েল ঘোষিত তথাকথিত ‘বিপৎসীমায়’ প্রবেশ করেছে বলে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে জানান, শহিদুল আলম। পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ এই নৌবহরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বাংলাদেশের খ্যাতিমান এ আলোচ্যচিত্রী ২০১৮ সালে টাইম ম্যাগাজিনের পারসন অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হন। পাশাপাশি প্রথম এশীয় হিসেবে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো জুরির চেয়ারম্যান হন শহিদুল আলম।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের খসড়া ভোটকেন্দ্রের ওপর আসা দাবি-আপত্তি আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরপর পর্যালোচনা শেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২০ অক্টোবর।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। এরপর সে তালিকার ওপর আপত্তি জানানোর শেষ সময় দেওয়া হয়েছিল ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বর্তমানে সেগুলো নিষ্পত্তির কাজ করছেন মাঠ কর্মকর্তারা।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, খসড়া তালিকা অনুযায়ী সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ৬১৮টি। বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৬১ লাখ ৬১ হাজার ২০১ জন ধরে গড়ে প্রতি তিন হাজার ভোটারের জন্য একটি কেন্দ্র রাখা হয়েছে। এ হিসেবে ৪২ হাজার ৬১৮টি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া, পুরুষদের জন্য প্রতি ৬০০ জনের জন্য একটি কক্ষ ধরে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৯টি ভোটকক্ষ, আর নারীদের জন্য প্রতি ৫০০ জনের জন্য একটি কক্ষ ধরে ১ লাখ ২৯ হাজার ১০৭টি কক্ষের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। মোট ভোটকক্ষ দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬টি। তবে এই সংখ্যা কিছুটা এদিক-সেদিক হতে পারে।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল দিতে চায় ইসি। এজন্য সকল কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল আসন্ন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। গতকাল বুধবার তিনি নিজের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। শুধু তামিম নন, সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন আরও বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর সাংবাদিকদের তামিম বলেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করার আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমিসহ প্রায় ১৪ থেকে ১৫ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি। প্রত্যাহারের কারণটা খুবই স্পষ্ট। আমার কাছে মনে হয় না বিস্তারিতভাবে আপনাদের কিছু বলার দরকার আছে। নির্বাচন কোন দিকে যাচ্ছে, এই জিনিসটা এখন পরিষ্কার। যখন যেমন মনে হচ্ছে, যখন যা মনে হচ্ছে, তখন তা করা হচ্ছে। এটা আসলেই নির্বাচন নয়, ক্রিকেটের সঙ্গে এই জিনিসটা কোনো দিক থেকেই মানায় না।’
তামিমের ভাষায়, ‘যারা নাম প্রত্যাহার করেছেন, তারা সবাই হেভিওয়েট, তাদের ভোটব্যাংকও শক্তিশালী। এটা একটা প্রতিবাদ। দিন শেষে এই নোংরামির অংশ হয়ে আমরা থাকতে পারব না। বাংলাদেশ ক্রিকেট এটা ডিজার্ভ করে না। যারা এভাবে নির্বাচন করতে চান, তারা করতে পারেন। তবে আজ ক্রিকেট শতভাগ হেরে গেছে। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আপনারা বড় গলায় বলেন বাংলাদেশে ফিক্সিং বন্ধ করা লাগবে, আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করার চিন্তা করেন। পরে ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করার চিন্তা করেন। এই নির্বাচন বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটা কালো দাগ হয়ে থাকল।’
তামিমের মতোই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এক্সিউম ক্রিকেটার্স থেকে পরিচালক পদে প্রার্থিতার মনোনয়ন প্রত্যাহার করা ইসরাফিল খসরু। নির্বাচনে সরকারের একটি গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘সরকারের একটি গোষ্ঠী এখানে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করছে। আপাতত এটুকুই বলতে পারি। আমাদের পুরো বক্তব্য শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হবে।’
মনোনয়ন প্রত্যাহারের বিষয়ে ইসরাফিল খসরু বলছেন, ‘এখানে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ দেখছি না। খুবই দুঃখজনক ব্যাপার যে, বিসিবির নির্বাচনে এই পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটাই ছিল অস্বচ্ছ।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলা-বিভাগের কাউন্সিলরদের ফোন করে প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে। এ রকম উদাহরণ আমরা বিভিন্নভাবে পেয়েছি। আবার ১৫টি ক্লাব নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা দেখছি। নতুন বাংলাদেশে আমরা এ রকম নির্বাচন দেখতে পারি না। নির্বাচন ম্যানুফেকচার করা হচ্ছে, এমনটা হতে পারে না। তাই নৈতিক জায়গা থেকে আমরা এই অবস্থান নিয়েছি।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ইন্দিরা রোড ক্লাবের হয়ে পরিচালক পদে নির্বাচন করতে চাওয়া রফিকুল ইসলাম। তিনি গতকাল বুধবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সরকারের সঙ্গে সমঝোতা শেষ পর্যন্ত কেন টিকেনি? রফিকুল বলেছেন, ‘আমরা একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চেয়েছিলাম। ২০০৫ সালে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন দেখেছিলাম। আমরা তেমন একটা নির্বাচন চেয়েছিলাম। সমঝোতার কথাটা হাওয়ায় উড়ে বেরিয়েছে, কোনো সঠিক তথ্য ছিল না।’
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিসিবি নির্বাচন থেকে ১১ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। ক্যাটাগরি-১ থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন মির হেলাল, ক্যাটাগরি-৩ থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন সিরাজ উদ্দিন আলমগীর।
ক্যাটাগরি-২ থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন তামিম ইকবাল, সাইদ ইবরাহিম (বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের ছেলে), ইসরাফিল খসরু (বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছেলে), রফিকুল ইসলাম বাবু, বোরহানুল পাপ্পু, মাসুদুজ্জামান, আসিফ রব্বানি, মির্জা ইয়াসির আব্বাস (বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের ছেলে) ও সাব্বির আহমেদ রুবেল।
চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা গতকাল বুধবার দুপুর ২টায় ঘোষণা করার কথা নির্বাচন কমিশনের।
বিসিবি নির্বাচনে যাচাই-বাছাই ও শুনানি শেষে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় নাম ছিল ৫০ জনের। গতকাল বুধবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ১৬ জন। অর্থাৎ ৬ অক্টোবরের নির্বাচনে ২৫টি পরিচালক পদের জন্য ৩টি ক্যাটাগরিতে নির্বাচনে অংশ নেবেন ৩৩ প্রার্থী।
মনোনয়ন প্রত্যাহার করা প্রার্থীরা ‘ব্যক্তিগত কারণে’ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. শেখ জোবায়েদ হোসেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে বিসিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট ১৬টি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য আবেদন জমা পড়েছে। সেই মোতাবেক আমরা প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেছি।’
ইতোমধ্যে জেলা-বিভাগের ক্যাটাগরিতে ১০ পরিচালকের ৬ জনই অবশ্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন। খুলনা বিভাগ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ও সাবেক নির্বাচক আবদুর রাজ্জাক এবং জুলফিকার আলী খান। বরিশাল থেকে শাখাওয়াত হোসেন এবং সিলেটের রাহাত সামসও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই নির্বাচিত হয়েছেন।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম ও রাজশাহী থেকে একটি করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার হয়েছে। এতে করে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর ও আহসান ইকবাল চৌধুরী।