সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা অধ্যায়ের ‘শরীফার গল্প’ বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি।
এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বিশেষজ্ঞ কমিটির এক সদস্য।
তিনি বলেন, সপ্তম শ্রেণির ওই গল্পের বেশ কিছু শব্দ নিয়ে কমিটির কয়েকজন সদস্য আপত্তি করেছেন। পরে গল্পটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির আহ্বায়ক ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রশীদ বলেন, ‘৮-১০ দিন আগে এ সংক্রান্ত কমিটির সুপারিশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। এখন পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।’
গল্পটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
গত ১৯ জানুয়ারি রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে আলোচনায় আসেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস। এরপর বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
এরপর গত ২৪ জানুয়ারি ‘শরীফার গল্প’ নামে গল্পটি পর্যালোচনা করার জন্য উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাঁচ সদস্যের এই কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুর রশীদকে। আর কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মুফতি মাওলানা কফিল উদ্দীন সরকার, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক আবদুল হালিম এবং ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ।
ঢাকার মাঠ ও পার্কসমূহের ব্যবস্থাপনায় ক্লাবভিত্তিক মডেল থেকে সরে এসে কমিউনিটিভিত্তিক ব্যবস্থাপনার দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।
মঙ্গলবার গুলশানের নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসির অষ্টম কর্পোরেশন সভায় এ তথ্য জানান প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ঢাকার মাঠ ও পার্কসমূহের ব্যবস্থাপনায় ক্লাবভিত্তিক মডেল থেকে বেরিয়ে কমিউনিটিভিত্তিক মডেলের দিকে এগোচ্ছে ডিএনসিসি।
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ঢাকার পাবলিক পার্কগুলোতে সর্বসাধারণের প্রবেশ একটি অধিকার। এই অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ক্লাবভিত্তিক মডেল থেকে সরে এসে কমিউনিটিভিত্তিকভাবে পার্কগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। আমরা নতুন করে আর কোনো ক্লাবকে মাঠের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিচ্ছি না।
পর্যায়ক্রমে ঢাকার সকল মাঠ ও পার্ক ডিএনসিসির উদ্যোগে এলাকাবাসীর সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হবে। এর ফলে মাঠ ও পার্কগুলোতে নাগরিক মালিকানার ধারণা তৈরি করা যাবে।
এরই অংশ হিসেবে আজকের কর্পোরেশন সভায় গুলশানের বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ পার্ক এবং ডা. ফজলে রাব্বি পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গুলশান সোসাইটিকে দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসক আরও বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্যই হলো মাঠ এবং পার্কগুলো সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া। আমরা ক্লাবভিত্তিক মাঠ ব্যবস্থাপনা থেকে বেরিয়ে কমিউনিটিভিত্তিক ব্যবস্থাপনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
প্রশাসক জানান, আমরা কোনো মাঠ বা পার্ক ইজারা দেব না। এগুলো কমিউনিটির মাধ্যমে কমিটি করে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হবে, যেন মাঠ ও পার্কগুলো সবসময় সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা যায়।
উল্লেখ্য, গুলশানের শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ স্মৃতি পার্কসহ যেসব মাঠ ও পার্ক পূর্বে সম্পন্ন চুক্তির ভিত্তিতে ক্লাবের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে, সেগুলোর কার্যক্রম মনিটরের জন্য আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে স্থানীয় জনগনের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটির মাধ্যমে পার্ক ও খেলার মাঠ কেন্দ্রিক জনগনের অধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া যথাযথ নিয়মে পার্ক ও মাঠ পরিচালিত হচ্ছে কিনা সেটি এ কমিটি সার্বক্ষণিক মনিটর করবে।
চলমান চুক্তির মেয়াদ শেষে, পরবর্তীতে ক্লাবভিত্তিক মডেলে আর পার্ক ও মাঠ ব্যবস্থাপনা করা হবে না।
মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিচার নিশ্চিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সংস্কারের পাশাপাশি জুলাইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের আইনের আওতায় আনতে আমরা বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, ন্যায়বিচার মানে কেবল শাস্তি নয়—ন্যায়বিচার মানে এমন একটি রাষ্ট্র গঠন, যেখানে রাষ্ট্রক্ষমতা আর কখনও জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার হবে না।
আজ মঙ্গলবার ঢাকায় একটি হোটেলে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনের উপর জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জাতির ত্যাগ, সাহস এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আন্তরিক সহায়তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আজ আমরা একত্র হয়েছি একটি গভীর তাৎপর্যময় ঘটনার—জুলাই বিপ্লবের প্রথম বার্ষিকী—স্মরণে। এটি ছিল এমন এক মুহূর্ত, যখন হাজার হাজার বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ—যাদের অধিকাংশই তরুণ—অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল এবং দেশের মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ পুনরুদ্ধার করেছিল। তাদের সাহস শুধু আমাদের জাতির জন্য নয়, সমগ্র মানবজাতির পক্ষেই উচ্চারিত হয়েছিল।’
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনের কথা স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক দিনে, আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষত জাতিসংঘের অবিচল সমর্থনের কথাও স্মরণ করতে চাই, যারা সবসময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে—১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা সংকট এবং গত বছরের জুলাই ও আগস্টের অন্ধকার দিনগুলোতেও।’
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘ সকল মানুষের—জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ বা সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে—অবিচ্ছেদ্য অধিকার সংজ্ঞায়িত ও রক্ষার লক্ষ্য নিয়েছিল। মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা পৃথিবীর একটি নৈতিক দিকনির্দেশক হয়ে ওঠে, এবং তার মূলনীতি বাংলাদেশের সংবিধানেও সুপ্রতিষ্ঠিত। তবুও গত ১৬ বছরে, বাংলাদেশের নাগরিকদের এই অধিকার বারবার খর্ব করা হয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো দখল করা হয়েছে, স্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছে এবং সহিংসতা হয়ে উঠেছিল শাসনের মূল হাতিয়ার।
তবে গতবছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্পষ্টতা, সংকল্প এবং অসাধারণ সাহসিকতার সাথে নিজেদের অধিকার পুনরুদ্ধার করেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গতবছরের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের দপ্তরকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই কয়েক সপ্তাহে প্রায় ১,৪০০ মানুষ প্রাণ হারায়। এই সহিংসতা ছিল পরিকল্পিত, সংগঠিত এবং পূর্ববর্তী সরকারের সর্বোচ্চ স্তর থেকে পরিচালিত। এই সহিংসতা শুধু নিন্দনীয় নয়, বরং তা মানবতা বিরোধী অপরাধ সম্পর্কেও গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য সত্য উন্মোচন শুধু ন্যায়বিচারের জন্য নয়, নিজেদের শোধরানোর জন্যও অপরিহার্য।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই অনুসন্ধানকে আরও সমর্থন করেছে আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা, যার মধ্যে বিবিসি এবং আল জাজিরার রিপোর্টও রয়েছে। জাতিসংঘের হাইকমিশনারের দপ্তরের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ, তারা শুধু এই নিপীড়নের প্রামাণ্য নথি প্রস্তুত করেনি, বরং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন আর কখনো না ঘটে, তার জন্য একটি বিস্তৃত সুপারিশমালাও প্রদান করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমান সরকার মানবাধিকার সুরক্ষায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে—যেমন দণ্ডবিধির সংশোধন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা বিষয়ে আন্তর্জাতিক কনভেনশনে যোগদান এবং জাতিসংঘের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর। এই চুক্তির আওতায় ঢাকায় একটি সহায়তাকারী মিশন গঠিত হচ্ছে, যা সরকার ও সুশীল সমাজকে কারিগরি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দেবে।
তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টার্কসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবিচল সহায়তা এবং একাত্মতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শুরু থেকেই জাতিসংঘ আমাদের রূপান্তর প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ও সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার স্বপ্নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার উপর জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য কাজ করছি—যার লক্ষ্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা। এমন একটি সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই, যেখানে সবাই শান্তি, স্বাধীনতা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, গত বছরের ঘটনাগুলো আমরা স্মরণ করছি, যারা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন এই স্বপ্নের জন্য। তাদের আত্মত্যাগ আমাদের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় রচনা করেছে। তারা একটি নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছেন—এই আশায় যেখানে মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণ দৃঢ়ভাবে থাকবে।
২০২৬ সালের একুশে পদক প্রদানের জন্য মনোনয়ন প্রস্তাব আহ্বান করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে এ বছর ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর/সংস্থা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা প্রশাসক এবং স্বাধীনতা ও একুশে পদকে ভূষিত সুধীজনকে মনোনয়ন প্রস্তাব সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ভাষা আন্দোলন, শিল্পকলা (সংগীত, নৃত্য, অভিনয়, চারুকলাসহ সকল ক্ষেত্র) মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অর্থনীতি, সমাজসেবা, রাজনীতি, ভাষা ও সাহিত্য এবং সরকার নির্ধারিত অন্য যে কোনো ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় ও গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্যক্তি (জীবিত বা মৃত), গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাকে এ পদক প্রদান করা হবে।
এ সংক্রান্ত সকল তথ্য ও নীতিমালা এবং মনোনয়ন প্রস্তাবের ফরম সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (www.moca.gov.bd) এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (www.moi.gov.bd) পাওয়া যাবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক আব্দুস সবুরের মুত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও সচিব মাহবুবুর রহমান।
তিনি মঙ্গলবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্তেকাল করেন।
পৃথক শোকবার্তায় বাণিজ্য উপদেষ্টা ও বাণিজ্য সচিব মরহুমের বিদেহ আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
তিন ক্যাটাগরির আহত আরও এক হাজার ৭৫৭ জন জুলাই যোদ্ধার গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার।
সোমবার (২৯ জুলাই) রাতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তালিকার গেজেট প্রকাশ করা হয়।
‘ক’ শ্রেণির (অতি গুরুতর আহত) ১০৯ জন, ‘খ’ শ্রেণির (গুরুতর আহত) ২১০ জন ও আট বিভাগে ‘গ’ শ্রেণির (আহত) এক হাজার ৪৩৮ জন জুলাই যোদ্ধার গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
‘গ’ শ্রেণির মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ২২৬ জন, রংপুর বিভাগে ৯০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১১১ জন, বরিশাল বিভাগে ১১৬ জন, সিলেট বিভাগে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে ১৬৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৩৬ জন এবং ঢাকা বিভাগের ৪০৬ জন জুলাই যোদ্ধা রয়েছেন।
'জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫' এর ৭ (খ) ধারা এবং রুলস অব বিজনেস ১৯৯৬ এর সিডিউল-১ (অ্যালোকেশন অব বিজনেস) এর ক্রমিক নং ২৩-এ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে দেওয়া ক্ষমতাবলে এই গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে পাওয়া তালিকা যাচাই-বাছাই করে প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
এ নিয়ে মোট জুলাই যোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়ালো ‘ক’ শ্রেণিতে ৬০২ জন, ‘খ’ শ্রেণিতে এক হাজার ১১৮ জন ও ‘গ’ শ্রেণিতে ১২ হাজার ৩৮ জন।
এই সংক্রান্ত বিধিমালা অনুযায়ী, ‘ক’ শ্রেণির আহতরা এককালীন ৫ লাখ টাকা পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তাদের ২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বাকি ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এরা প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন।
‘খ’ শ্রেণির আহতরা এককালীন ৩ লাখ টাকা পাবেন। গত অর্থবছরে তাদের এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি ২ লাখ টাকা চলতি অর্থবছরে দেওয়া হবে। তারা মাসিক ১৫ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন।
‘গ’ শ্রেণির আহতরা এককালীনে এক লাখ টাকা দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে এ টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তারা প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, নারী গৃহকর্মীর অধিকার সুরক্ষায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
সোমবার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন অডিটোরিয়ামে গণসাক্ষরতা অভিযান, বিএনএসকে, সবুজের অভিযান ফাউন্ডেশন, আভাস, সহায় এবং আশার আলো সোসাইটির আয়োজনে অক্সফাম ইন বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় আয়োজিত ‘নারী গৃহকর্মী সম্মেলন-২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম সচিব এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে তিনটি কনভেনশনে স্বাক্ষর করার বিষয়ে কাজ করছি, যা বাস্তবায়িত হলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত হবে। ফলে শ্রমিক নির্যাতন বন্ধে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবে।
তিনি গৃহকর্মী নির্যাতন রোধেও সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
সম্মেলনে গৃহকর্মীদের জন্য ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, কর্মঘণ্টা ও ছুটির আইনি স্বীকৃতি, শারীরিক-মানসিক নির্যাতন বন্ধ, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তি এবং বিশেষ আইন প্রণয়নের দাবি জানানো হয়।
শ্রম সচিব উত্থাপিত দাবিগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ আকারে পাঠানোর আশ্বাস দেন। কোনো গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯, ১৬৩৫৭ ও ১০৯২১ নম্বরে যোগাযোগ করারও পরামর্শ দেন তিনি।
এম সফিকুজ্জামান জানান, গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫ বাস্তবায়নে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।
সম্মেলনে মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা এবং জুলাই শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধূরী। আলোচনায় অংশ নেন বিলস-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, নারী সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক, অক্সফামের প্রতিনিধি তারেক আজিজ, বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক এবিএম খোরশেদ আলম প্রমুখ।
এ সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, গৃহকর্মী ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ হিন্দু পরিবারের সার্বিক অবস্থা পরিদর্শন শেষে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ বিস্তারিত জানিয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল গতকাল সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, ২২টি পরিবারের মধ্যে ১৯টি পরিবার বর্তমানে তাদের বাড়িতেই আছে। কটুক্তির অভিযোগে আটককৃত রঞ্জন কুমার রায় এবং তার চাচার পরিবারসহ মোট ০৩টি পরিবার পার্শ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন।
আজ থেকেই জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের বাড়িঘর মেরামত করার কাজ শুরু করা হবে।
তিনি পরিবারগুলোর সাথে কথা বলেছেন এবং তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়োজিত রয়েছে।
এদিকে রংপুরের পুলিশ সুপার মো: আবু সাইম জানান, হিন্দু পরিবারগুলোর ওপর হামলার ঘটনায় মোট ১২ টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই বাড়িগুলোতে ২২ টি পরিবার বসবাস করতো।
তিনি জানান, রঞ্জন আটক হওয়ার পর থেকেই তার বাবা, দাদা এবং চাচার পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আছেন। অন্যান্য ১৯ টি পরিবারের সকল পুরুষ সদস্য তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ই আছেন। ঘরবাড়ি ভাংগা থাকায় কিছু নারী সদস্য মালামাল নিয়ে রিক্সাভ্যান যোগে অন্যত্র চলে গেছে।
স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও এলাকায় সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে প্রশাসন ও পুলিশ এর সাথে কাজ করছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত হলে নারী সদস্যগণসহ সকলেই নিজ নিজ বাড়িতে ফিরবেন বলে জানান তিনি।
এই হামলার ঘটনায় দায়ীদের সনাক্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদমর্যাদার চার কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এতে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষর করেছেন।
যেসব কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে, তারা হলেন ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত ডিআইজি আতিকা ইসলাম, রেলওয়ে পুলিশ ঢাকায় সংযুক্ত ডিআইজি মো. মাহবুব আলম, শিল্পাঞ্চল পুলিশের সংযুক্ত ডিআইজি মো. মনির হোসেন এবং পুলিশ টেলিকম ঢাকায় সংযুক্ত ডিআইজি এ কে এম নাহিদুল ইসলাম।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে তাদের সরকারি চাকরি থেকে অবসরে পাঠানো হলো। বিধি অনুযায়ী তারা অবসরসুবিধা প্রাপ্ত হবেন। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
গত ৬ মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বিভিন্ন দেশের ১৯ হাজারে বেশি প্রবাসীর ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে কালো তালিকাভুক্ত করে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে কুয়েত। ফেরত পাঠানো প্রবাসীদের মধ্যে নারী-পুরুষ উভয়েই রয়েছেন, যাদের কেউ পুনরায় ভিসা নিয়ে কুয়েতে প্রবেশ করতে পারবেন না।
স্থানীয় গণমাধ্যম আরব টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবাসন আইন ও শ্রম আইন লঙ্ঘন, পলাতক আসামি, মাদক বেচাকেনা, ভিসা বাণিজ্য, অবৈধ ব্যবসাবাণিজ্য, পতিতাবৃত্তিসহ বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার প্রবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, ফিলিপাইন, মিসরসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক রয়েছেন।
এর আগে গত রমজান মাসে ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে ৬০ জন প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
দেশের ইতিহাসে প্রথমবার ১ বছরে ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে সরকার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ ঋণ শোধ করা হয়। আসল ও সুদ মিলিয়ে মোট পরিশোধ করা হয়েছে ৪০৮ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে আসল ও সুদ বাবদ প্রায় ৪.০৮৭ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। এটি দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ ঋণ পরিশোধের রেকর্ড।
এটি আগের অর্থবছরে (অর্থবছর-২৪) প্রদত্ত পরিশোধের পরিমাণ ৩.৩৭২ বিলিয়ন ডলার থেকে ২১.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইআরডির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অর্থবছর ২০২৪-২৫ এ আসল পরিশোধ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৫৯৫ বিলিয়ন ডলার। এটি আগের অর্থবছরের (অর্থবছর-২৪) ২.০২ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ২৮.৮ শতাংশ বেশি।
সুদ পরিশোধের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১.৪৯১ বিলিয়ন ডলার, যা অর্থবছর ২০২৩-২৪ এর ১.৩৪৯ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ১০.৫ শতাংশ বেশি।
ইআরডি কর্মকর্তারা জানান, গত এক দশকে বিভিন্ন বড় প্রকল্প ও বাজেট সহায়তার জন্য নেওয়া বিদেশি ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে।
ঋণ পরিশোধ বৃদ্ধি পেলেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নতুন বৈদেশিক ঋণ চুক্তি ও ঋণ বিতরণ উভয়ই কমেছে।
ইআরডির তথ্যানুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ৮.৩২৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি সই করেছে, যা আগের অর্থবছরে (অর্থবছর-২৪) এ ছিল ১০.৭৩৯ বিলিয়ন ডলার।
একই সময়ে ঋণ বিতরণও কমে দাঁড়ায় ৮.৫৬৮ বিলিয়ন ডলারে, আগের অর্থবছরে যা ছিল ১০.২৮৩ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ প্রতিশ্রুতির তালিকায় শীর্ষে ছিল বিশ্বব্যাংক, যারা ২.৮৪ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এর মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা। এরপর রয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ২ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি দেয়, যার মধ্যে ১.৫ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা। জাপান ১.৮৯ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, অন্যদিকে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ৫৬১ মিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ঋণ বিতরণে শীর্ষে ছিল এডিবি, যারা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২.৫২ বিলিয়ন ডলার বিতরণ করেছে। এরপর বিশ্বব্যাংক ২.০১২ বিলিয়ন ডলার, জাপান ১.৫৮ বিলিয়ন ডলার, রাশিয়া ৬৭৫ মিলিয়ন ডলার, এআইআইবি ৫২৭ মিলিয়ন ডলার, চীন ৪১৫ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ১৮৫ মিলিয়ন ডলার বিতরণ করে।
রাজধানীর আকাশ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকায় জঙ্গি বিমানঘাঁটি রাখা অত্যাবশ্যক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এয়ার কমডোর শহিদুল ইসলাম। গতকাল সোমবার তেজগাঁওয়ের এভিয়েশন ইউনিভার্সিটির পুরাতন পিএসসি ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ঢাকা থেকে জঙ্গি বিমান প্রশিক্ষণ ঘাঁটি সরানো হবে না উল্লেখ করে শহিদুল ইসলাম বলেন, যুদ্ধবিমান পরিচালনায় বিশাল জায়গার প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি রাজধানীর আকাশ প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতেও এই ঘাঁটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের বহু দেশের রাজধানীতেও এমন ঘাঁটি রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিমানবাহিনীর জরুরি সমন্বয়ক কেন্দ্রের এয়ার কমডোর মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, এই দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের পাশে থাকবে বিমান বাহিনী। প্রয়োজন অনুযায়ী সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া হবে।
দুর্ঘটনার সময় পাইলটের সঙ্গে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের যোগাযোগ ছিল কি না জানতে চাইলে মিজানুর রহমান জানান, এ বিষয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি বিষয়টি তদন্ত করে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবে। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত পাইলট তৌকিরের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, ঘটনার দিন স্কুলে ৭৩৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ৫৩৮ জন। নিচ তলার গ্রিল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘পুরো জায়গাটি একসময় নিচু ছিল। পরে বালু ফেলে মাটি উঁচু করা হয়। এর আগেই ভবনের নিচ তলায় গ্রিল বসানো হয়েছিল শিশুদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই।‘
প্রিন্সিপাল আরও জানান, স্কুল আবার কবে খুলবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তবে যত দ্রুত সম্ভব খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার। সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। সর্বশক্তি দিয়ে আমাদের মাটি থেকে সন্ত্রাসীদের উচ্ছেদ করব।’
আজ সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
৪০ মিনিটব্যাপী ওই বৈঠকে তাঁরা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন, যার মধ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের চলমান শুল্ক আলোচনা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জ্যাকবসন বাংলাদেশের সংস্কার প্রচেষ্টা ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রতি তার সরকারের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন, যা আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে চূড়ান্ত রূপ পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া কমিশনের অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন, যা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মূল সংস্কারগুলোর বিষয়ে ঐক্য গঠনে সচেষ্ট।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, কমিশন খুবই ভালো কাজ করছে। অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সদস্যরা কঠোর পরিশ্রম করছেন।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে সেপ্টেম্বর মাস থেকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতির বিষয়ে এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এই তিন মাসে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।’
তিনি জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় জোরদারের ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
এছাড়া নির্বাচনের সময় ৬০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।